Saturday, December 30, 2023

প্রতিবাদ ভন্ড কবিতার বিরুদ্ধে ..

শিল্পীর আকাশকে অভ্যর্থনা জানাই 
সৃষ্টির মানুষকে সম্বর্ধনা জানাই 
জানাই অপারমর সাহিত্যের আকাশকে মুক্তির মুহুর্ত, 
সময়ের কলম গর্জে ওঠে
তবুও চুপ করে থাকে এক শিক্ষিত সমাজ,
তবুও আগুনে ঝলসে যায় সময়ের পরাজয়
তবুও সত্যি হলো স্বজন পোষণ
আমাদের   সৃষ্টির   লজ্জা। 
.
সাহিত্য একাডেমি কি? 
কবিতা একাডেমি কি? 
কবিতা উৎসব কি? 
সব কি শুধু সাজানো মঞ্চ, যেখানে নেপোয় মারে দই
সব কি শুধু অঙ্গুলি হেলনে একলা দায়ী একলব্য
সব কি শুধু আমার, তোমার প্রিয় ভাই, বোন? 
.
এখানে সৃষ্টি  কই, এখানে স্রোষ্টা কই,এখানে কবিতারা কই?
এখানে আকাশ কই, এখানে প্রেমিক কই,এখানে জন্ম কই? 
এখানে মুক্তি কই,এখানে বিপ্লব কই, এখানে মানুষ কই? 
শুধু স্বার্থ, শুধু পেশী শক্তি, শুধু রাষ্ট্রের পদাঘাত আর কার্যসিদ্ধি। 
কিন্তু সত্যি কি জানেন
হাজারো অপমানে সুর্য ডুবে যায় না
এক চিলতে আলো অন্ধকার ছিঁড়ে চিৎকার করে
সৃষ্টি ঈশ্বরের রুপ
সৃষ্টি প্রতিবাদের রুপ
সৃষ্টি সময়ের রুপ
সৃষ্টিকে লোকানো যায় না, যেমন সূর্যকে।
.
প্রতিবাদ ভন্ড কবিতার বিরুদ্ধে 
.. ঋষি 





Wednesday, December 27, 2023

হাসুন হাসুন



তোমাকে বলছি, আপনাকে বলছি, আপনাদের বলছি
কি শুনলেন 
সভ্যতা, 
হাসি পাচ্ছে, হাসি পাচ্ছে 
আপনারা হাসুন। 
.
আকাশ থেকে রামধনু চুরি হলো 
দেশ চুরি হতে হতে শিক্ষা চুরি হলো, সাস্থ্য গেছে বহুদিন 
শুধু ছিল মেরুদন্ড, 
হ্যা হ্যা তবে তোমাকে বলছি, আপনাকে বলছি, আপনাদের বলছি 
হাসি পাচ্ছে, হাসুন হাসুন, ক্লাউন, ডিসেম্বর 
মেরুদন্ডটাও গেছে বহুদিন । 
.
কি খুলছেন? 
খবরের, পাতা, নিউজ চ্যানেল 
পাঁচ বছরের মেয়েটা ধর্ষিত,অঞ্জলির গায়ে আগুন 
পালক বলে ছেলেটা চাকরী না পেয়ে আত্নহত্যা করলো
ই-ম-আই বাম্পস,মাসের শেষ তারিখ সংসারে আগুন 
বর্ধিত দ্রব্যমুল্য, চুরি হয়ে যাওয়া মানুষ
কি খুলছেন? 
প্যান্টের চেইন, আপনার শারী। 
নষ্ট সময়, নষ্ট সংস্কৃতি 
নষ্ট তুমি, নষ্ট আপনি, নগ্ন আপনারা
কি করবে,কি করবেন
 তুমি,আপনি,আপনারা হাসুন হাসুন, 
রবীন্দ্রনাথ উল্টেপালটে বলুন, শক্তি বাবুকে বাদামের প্যাকেট করুন 
নবারুন বাবুকে দুষ্কৃতি বলুন,
প্লিজ লজ্জা পাবেন না
প্লিজ লজ্জা পাবার কি আছে 
সংস্কৃতির নামে বড় কবির তদারকি করুন, একটু তেল আর কি? 
না না লজ্জা না 
আপনি যেখানে, আমিও সেখানে 
সুতরাং একে অপরের কাঁধ থাবড়ান কিংবা অন্য কিছুও 
হা,হা, হাসুন হাসুন 
না হলে এই সভ্যতার নামে নষ্টামি করবেন কি করে। 
.
হাসুন 
ঋষি 

Sunday, December 24, 2023

নীল নির্বাসন

উপছে নামছে নীলচে ডিমলাইটের  আলোর মতো তুমি 
আমি নীল রঙের পরাগরেণু  কুড়িয়ে বুক বাঁধছি নতুন বছর 
নীলচে আলো ,নীল মাটি ,কবিতার ঘ্রাণ ,অস্থির সময় 
দুর্বল কাঠামোর উপর তৈরী একখান স্বপ্নের ঘর 
অস্থির কথোপকথন 
নীল নির্বাসন। 
.
দারিদ্রতার শেষ পর্যায় তোমার ঠোঁটের লালায় আজও যে আমি 
তোমার শরীরের নীল পর্যায় আমি 
উপার্জিত শেষ ঘামের গন্ধে ,সমস্ত স্বত্ব জুড়ে সময়ের ঘর 
চামড়ার ভাঁজে আগামী ,চুলের কার্নিশ গড়িয়ে আগামীর সূর্য 
উপস্থিত ক্ষণস্থায়ী আমরা মুখোমুখি 
সুখী এবং নীল আলিঙ্গন। 
.
অনন্ত এক সুখ 
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে। তুমি আজও দাঁড়িয়ে। আমি জানি 
নীল রঙের আকাশ ভেদে আমার কবিতার আহরণ 
অদ্ভুত প্রেম, 
মুক্তি
এক জীবিত শব্দের ফাঁকে আমরা ঘুমিয়ে। 
কি চাইছে জীবন ?
স্যান্টাক্লস,তার ঘোড়া ,লাল রঙের ঘন্টা ,স্যান্টার মোজা 
না চাইছে না ,
শুনতে ইচ্ছে করছে তোমার মুখে 
না  জিঙ্গেল বেলস ,জিঙ্গেল বেলস নয় 
সেই নীল শব্দগুলো যেগুলো নীল প্রজাপতি। 
.
নীল নির্বাসন 
... ঋষি

Friday, December 22, 2023

চক্রবুহ বনাম আমি

হঠাৎ এক চক্রবুহের স্বপ্ন দেখি 
যেখানে একধারে আমি অর্জুন আর অন্যধারে অভিমন্যু 
যেখানে একধারে আমি মৃত্যুর মাঝে 
অন্যধারেই আমি সেই পরিত্রাতা যে নিজেকে হত্যা করে ,
তুমি ঠিক বলেছো বরাবর 
একজন স্বার্থপর মানুষ শুধু দোষের অজুহাতে বাঁচে। 
.
উত্তর মালা বদল হলো 
প্রশ্ন গুলো ধারালো ইন্দ্রজালের মতো মস্তিষ্কের কোষে 
আপাতত কিছু দুঃখকে দোল দিই
তারপর ফিরে তো যেতেই হবে সেই চক্রবুহে 
যেখানে চরম নেশায় যুদ্ধের মাটিতে হয়তো বা একলা দাঁড়াবো আমি 
উল্টোদিকের তুমিটা হয়তো বুকের মাটিতে রক্ত। 
.
চুপ করে যাই  আচমকাই
বুঝতে পারো না তোমার আঙুলের ডগায়,চলা ,বলায় কুরুক্ষেত্র রাখা আছে
যে মাটিতে প্রতিশোধ রাখা দ্রোপদীর ,
সেই আঙুলের স্যোসাল লাল ইমোজিতে আমি হত্যা হই  বারংবার। 
অন্যথায় কথারা দেওয়াল তোলে ,কারণ সময়ের পারদর্শীতা  
কথাদের তাড়িয়ে দেওয়া যায় ,কিন্তু ফেরানো - না ,
 আঙুলের ফাঁক গলে বারংবার আমার গলে যায় কুরুক্ষেত্র 
পরিচয়হীন এক সম্পর্ক তোমার ব্যালকনিতে পাখি হয়ে বসে 
তুমি তাড়িয়ে দেও বারংবার। 
তখন আমার স্বপ্নে অভিমানী অভিমুন্য তোমার মুহূর্তদের দেখতে পায় 
ঘাড় থেকে মাথাটা খসে যায় ,শরীরটা বুকের মাটিতে ছটফট করে 
তোমার ব্যালকনিতে পাখিটা আবার এসে বসে ,
অর্জুন কুরুক্ষেত্রে মাঝখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে 
তুলে নেয় গান্ডীব 
তারপর তোমার নামের একটা তীর আমার বুকে গেঁথে যায়।  
.
চক্রবুহ বনাম

Thursday, December 21, 2023

বন্ধ দরজা

অতীত থাকে
অথচ দরজাগুলো ক্রমশ বন্ধ হয়ে যায় পিছনের
সামনে ভবিষ্যতের দরজা   
ঠেলা মারলেই খুলে যায়,
খুলে যায় আগামীর পথ, পুরনো হারানোর ভীড়ে
পুরনোর মাঝে কেউ নতুনকে খুঁজে পায়
কিংবা নতুনের মাঝে কেউ পুরনো হারায়। 
.
কেউ কেউ অতীতের বন্ধ দরজার সামনে একমুহুর্ত দাঁড়ায়
তারপর হেঁটে চলে যায় 
তারপর ভবিষ্যত কোন দিনে বন্ধ অতীতের ঝাঁপিটা খোলে
তাতে শুকনো গোলাপ,পুরনো কাঁচের চুরি, পুরনো ঠিকানার চিঠি
কেউ হাসতে হাসতে ছিঁড়ে ফেলে দেয়। 
এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার অতীতের দরজায় মাথা ঠোঁকে 
যদি দরজাটা খুলে যায় কোন ম্যাজিকে 
কিংবা যদি অতীতের পুরনো দরজাটা ভবিষ্যতে আবার খোলে। 
.
অথচ এই দুই মানুষের মাঝখনে 
লুকোনো অসংখ্য গোপন কথা,লুকোনো গোপন কবিতা
তাদের বালিশের কোনায় লুকোনো অসমাপ্ত আশা, 
বারংবার বন্ধ দরজার ছিটকিনিতে হাত সরিয়ে নেওয়া
বারংবার একলা সিলিং-এ তাকিয়ে চোখ বন্ধ করা
তারপর রোজ কত কি না ঘটে যাহা তাহা
শুধু বন্ধ দরজাটা বন্ধই থাকে। 
.
বন্ধ দরজা
ঋষি 

Wednesday, December 20, 2023

লাইভ চ্যানেল

একটার পর একটা, তারপর একটা চ্যানেল বদলাচ্ছি
স্টার জলসা দাঁত বের করছে, সটার মুভিজ হলদেটে লোগো
ডিসকভারি চিতা দৌড়চ্ছে, 
পার্টি মিছিল জবাব চাই, জবাব দাও, বোমা পড়ছে, 
স্কুলটা উড়ে গেলো, বিপ্লব ঘুমোচ্ছে, 
সাদা ভাতের গন্ধে মসগুল বিংশ শতাব্দী,
৷   ৷   তবুও ভনভনে মাছি। 
.
ফোর জি, ফাইভ জি জুড়ে ন্যংটো মেয়েদের কাপড় পরা
রাস্তায় দাঁড়াবো যুবকের দল খুবলে খাচ্ছে রি- রি রিচ 
আমার ভয় করছে,
অবধারিত একজন কর্পোরেট রক্ত শুষছে 
বুকের বা দিকের হৃদপিন্ড হাতে চাকরীর জন্য কেউ কাঁদছে
আমি পালাচ্ছি
আমরা পালাচ্ছি 
কানের গোড়ায় আমাদের আতর, শিরায় কোনো মরনিং ওয়াক নেই 
পকেটে লুকোনো কনডম
সিরিয়াসলি কবিতা লিখছে না কেউ। 
ছবি আঁকার থেকে লাইভ পারফরমেন্স, ডেটলের গন্ধ, জেরক্স মেসিন 
খাটটা দুলছে,দেশটা দুলছে
ভবিষ্যতের কর্মসুচী
আমরা সকলে হিজরার দলে নাম লেখাবো। 
.
লাইভ চ্যানেল
..ঋষি 

ডিসেম্বরের শীত

এক সন্ধ্যের কনকনে শীতে আমি বরফ হয়ে আছি
আমার সমস্ত অস্তিত্ব ছুটে চলেছে তোমার দিকে, 
ফুঁ দিয়ে মৃত শরীরে ল্যাম্প পোস্টের আলো 
দু এক পেগে এই শহরের সমস্ত কালো 
মেখে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছি ভবিষ্যতের দিকে
তোমার প্রতিটা অনুতাপে এখন ডিসেম্বরের শহর। 
.
মনে হচ্ছে এই শহরে আমার একটা বাড়ি ছিল সাজানো
আজ কেন জানি সেই বাড়ির দেওয়াল স্যাতস্যাতে
কাল রাতের স্বপ্নে আমি শুয়ে ছিলাম সেই বাড়ির ভিতর
অদ্ভুত আমার মৃত সাদা মুখে তখন এক শোক, 
আমি ঘুমিয়ে উঠে দেখি 
মা ডাকছে বেলা হলো অফিস যাবি না
কেন যে প্রতিটা শোকে আমার মা এসেই পড়ে
আর আনন্দে তুমি। 
.
দু তিন পেগ মদ - আমার মুখে ক্লাউনের হাসি
খুব হাততালি দিচ্ছে শহর 
শুধু তুমি চাইছো আমায়, 
কেন যে নেশা হলে সত্যি বলে ফেলি
কেন যে নেশা হলে মন্দিরের দেওয়ালে হিসু করি,
ঈশ্বর ও কি আমার মতো হাসেন 
নাকি প্রতি শ্বাসের সাথে ক্রমশ আবছা হতে থাকে ডিসেম্বরের শীত 
আর ক্রমশ প্রকট হয়ে পরে তোমার আবছায়া
আর এক জ্বলন্ত চিতা
ভালোবাসো বুঝি।

.
ডিসেম্বরের শীত
.. ঋষি 

Monday, December 18, 2023

bhul

ভুল 
... ঋষি 
.
যে ভুল করেছে বুক 
তাকে চোখে রেখে গড়িয়ে রাখি সুখ। 
.
আলগোছে তুলে রাখি পুরোনো হিসেবের খাতা 
শেষে কিছু নিশ্বাস ,তোলা কিছু পাতা। 
.
সন্ধ্যে তারার মতো কাজলে রাখা চোখ 
হাঁটিনি বহুদিন ,গিলছি তো ঢোক। 
.
আদরে মেশা ধুনোগন্ধ ,শরীরে জমা কিছু শ্বাস 
শোক বাড়ে নিত্যদিন ,হারানো বিশ্বাস।

স্থাপত্য

আঙুল জড়িয়ে কাটতে থাকে বাড়তে থাকা দিন 
তুমি যদি পাথর হয়ে যাও 
আমি তবে তোমার পায়ের কাছে জড়ো রাখি অবশিষ্ট জীবন 
সমস্ত শুকনো পাতাদের ফাঁকে লুকোনো গোপনীতাকে নির্যাস করি 
বলি ওমেয়ে তোকে ভালোবাসি 
আমি যে তোকে ভালোবেসে পাথর হতে চাই। 
.
যদি নগ্ন হয়ে কখনো পাপ দেখাতে পারি সময়  
কিংবা যদি পারি সাবানের ফেনায় নিজেকে শুদ্ধ করতে ঈশ্বরের চান ঘরে  ,
কিংবা রান্নার কড়াইতে যদি একবার ভেজে নিতে পারি মুহূর্ত 
সেই মুহূর্ত ,
যে মুহূর্তে তোকে বলা যাবে 
ওমেয়ে তুই পচা ,তুই গন্ধ তবুও ভালোবাসি,বড্ড ভালোবাসি । 
.
জানি তোমার ঘরখানা ইদানিং  গুছিয়ে রেখেছে অজস্র মুহূর্ত 
জানি ধোয়া-মোছার পরেও সে ঘরের দেওয়ালে আজও ক্যালেন্ডারের তারিখ 
তবু নিজেকে অতিথি মনে করতে আজও ভাবনারা সূর্যে পোড়ে 
আবর্তনের সাথে দিন আসে 
বিবর্তনের সাথে কি অদ্ভুত ?
                           এত অন্ধকার।  
আমি বদলানো মানুষের শিল্পে আজ তোমার সৃষ্ট শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য
আর তুমি আমার সেই না আঁকা ছবি , 
তুই কি জানিস মেয়ে ,জীবন হলো ঈশ্বরের সৃষ্ট অদ্ভুত প্রতিচ্ছবি 
যেখানে নিজেকে নগ্ন করে প্রত্যেকে স্নান ঘরে 
তারপর হয়তো নিজের আয়নার দিকে তাকায় কোনো অসম ভাবনায় 
হঠাৎ করে দেখে ফেলে সেই পাথর 
যে পাথরের গোপনীয়তায় ঈশ্বর মানুষ গড়ে। 
.
স্থাপত্য
ঋষি

Saturday, December 16, 2023

বার্ধক্য

সময়ের কাছে নতজানু
অথচ আমাদের পাশাপাশি যুদ্ধগুলো কম ছিল না কখনো,
ঈশ্বরের অস্থি, ছাই বুকে নিয়ে ঘুরি 
তবু গতজন্মের অভিশাপ বৃদ্ধ হয় না কিছুতেই
তোমার জুলফিতে জমতে থাকে কলকাতার বরফ
ইদানিং সময় ঢেকে দেয় ধুলোয়। 
.
ঘুম থেকে রাত ধুয়ে উঠে বসি
তুমি তো সর্বত্র এক কুয়াসা হওয়া সকাল 
ছটফট করে তোমার চোখের পাতায় ক্লান্তিরা,
সময়ের বৃদ্ধ যৌবন হঠাৎ ভিক্টোরিয়ার সেই বেঞ্চিটা খোঁজে
যেখানো আজও এসে বসে সেই শালিখগুলো
যাদের ধুলো চোখে আজও কলকাতার রোমন্থন। 
.
ঈশ্বর  হতে চেয়ে যারা এককালীন পাথর
তাদের খোঁজ পায় মানুষ কলকাতার প্রতিটা অলিতেগলিতে, 
আমরা মানুষের ভুমিকায় বার্ধক্য ছুঁতে চাই, 
বুক মানলেও সুখ মানে না,সুখী সাজে দু:খ মানে না
তবুও দুটো শালিখ আলপনা দেয় নিয়ম করে এই শহরে
অথচ নতজানু ভালোবাসা ঈশ্বর মানে না। 
.
বার্ধক্য
,,,,ঋষি 

Friday, December 15, 2023

শব্দ শরীর

দলছুট হয়ে ঘুরে বেড়াই 
সময়ের বাউন্ডারির বাইরে দাঁড়িয়ে আকাশের তারা গুনি 
ছাদের কাপড় শুকোনোর দড়িতে ঝুলিয়ে রাখি 
শব্দ শরীর ,
আমার ভিতর কবেই পুড়ে গেছে অনন্ত স্বপ্ন 
এখন স্বপ্ন পুড়িয়ে দুবেলার ভাত জোগাড় করি। 
.
আমাদের সকলের ভিতর একটা নিজের ঘর থাকা ভীষণ দরকার 
দরকার নিজস্ব মুহূর্ত ,বাড়ি ফেরার তাগিদ 
অথচ  অধিকাংশ সেই ঘরের অভাবে অন্য কোনো বাড়ির ভাড়াটিয়া হয়ে থাকি 
অধিকাংশ নুন আনতে পান্তা ফুরোনো শহরে পেট পুরে খাওয়ার স্বপ্ন দেখি 
একদিন যারা সব পাওয়ার শহর থেকে বিতাড়িত হয়
আকস্মিক গিয়ে দাঁড়ায় রাস্তায় 
তারা যে খুব সহজে মুখস্থ করে ফেলে বাঁচতে চাওয়ার গান। 
ইদানিং ঘুম না আসলেও প্রতিদিন নিয়ম করে বিছানায় শুই 
ইদানিং কান্না পেলে তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি 
ভালো লাগে ভাবতে 
আলো ফোটার আগে এই অন্ধকারটারও যে একটা শরীর আছে। 
..
শব্দ শরীর 
... ঋষি

Thursday, December 14, 2023

পাতাঝরা মরসুম

আমার প্রতিদিনকার ধুলোর রাস্তায় গতজন্মের বাঁচা
তুমি হিসেব ভুল করো আজকাল, তারিখ ভুল করো 
তুমি স্মৃতি ভুলে যাও বড্ড।
নিশ্চুপের পায়ের ছাপ  সঙ্গী হয় না
নির্বাকের সাথে দ্বন্দ্ব,মুহুর্ত,,,,
মুহুর্তরা ভুল করে, মানুষ করে, 
তবে ঈশ্বর কি ক্ষমাহীন ? 
.
পাতা ঝরা মরসুমে অপেক্ষারা বেড়ে চলে
বেড়ে চলে যুদ্ধ,
এমন তো মনখারাপ রোজই গতজন্মের স্মৃতি আঁকড়ে,
বলো দেখি এতগুলো সময় চলে গেলো
ঘুমের ওষুধ কিছুতেই কারণ পেলো না
যুদ্ধনাশক কিছু বের হল না কেন ?
.
কিছু মুহুর্ত কবিতা হতে হতেও হয়ে গেল শবযাত্রা
কিছু কথপোকথন ভুল হয়েও পাথর হয়ে রইলো
আমরা যেন  যোদ্ধা  সাজতে সাজতে 
কখন যেন যুদ্ধক্ষেত্রে একলা হলাম,
আচমকাই কেন যেন লিখলাম আমি
তুমি ওই শত্রদের একজনকে চিনতে
হয়তো বা ভালোওবেসেছিলে,
যদিও পাতাঝরার মরসুমে,
এসব হয়েই থাকে।

তবুও, 
কিছু রক্তাক্ততা কবিতা হলে ক্ষতি কি।
.
পাতাঝরা মরসুম 
.. ঋষি 


Wednesday, December 13, 2023

কতক্ষন

আপাতত ভাবনাদের ঘরে শিকল দি 
তারপর ফিরতে হবে 
জীবন গাঢ় হয় ,ভাবনারা ঘোর বন্ধ না ঘর ,
মেঝেতে গড়ানো জল 
কতক্ষন ?
.
কে জানে ক দিন ,ক ঘুরন্ত ঘড়ির কাঁটা 
আপাতত নিজেকে আটকে রাখি 
তারপর বারান্দায় পাতা সংসারে সুখ পাখি 
আকাশের চাঁদ 
কতক্ষন ?
.
সুখের কাছে খালি পায়ে গিয়ে দাঁড়াই
বুক ভরে শ্বাস নি 
অজান্তে কখন জীবনের গাঢ় পর্যায় সেই মুখখানি 
একদণ্ড দাঁড়াবো ,জড়াবো অসুখ ,ঠোঁট রাখবো কপালে ,ঘুম 
কতক্ষন ?
.
কেউ কেউ জীবনটাকে শিকল দিয়ে বেঁধে 
ফিরতে চায় 
জীবন গাঢ় হয় ,তোমার শরীরে জ্বর 
আমার নিঃশ্বাসে ,পারি না আর পারি না 
কতক্ষন ?
.
কতক্ষন 
... ঋষি

Tuesday, December 5, 2023

মুশকিল আসান

হৃদয়টা যে আসলে মুশকিলআসান নয়
তাও আবার কবির হৃদয় 
যে বিশ্বাস করে প্রতি  মুহূর্তেই জীবনের কবিতা লেখা যায় ,
কবি জানে হৃদয়ের আগুনের নাম হৃদপিন্ড 
আর তার জ্বালানি অনুভূতি 
আর অনুভূতিরা পাথর হতে চাইলে কলমের রক্ত বিদ্রোহ করে 
আর সাদা পাতায় ছড়িয়ে দেয় সময়। 
.
কবির বিশ্বাস তার বুকের ভেতরে এক আদিম উষ্ণ উপত্যকা আছে
তাতে আজও আদম আর ইভ পাপ করে 
পাশের বাড়ির জানলার রেলিঙে দুটো শালিখ যেমন ঠোঁটে ঠোঁট ডোবায় 
ঝগড়া করে ,
কবি বিশ্বাস করে কেউ কাউকে ছেড়ে যায় না 
যারা ছেড়ে চলে যায় তারা নেহাত হৃদয়হীন  
পৃথিবী যে বায়ুশূন্য নয় কেউ একজন ঠিক হাত ধরে সময়ের চরম দারিদ্রে। 
.
কবি তাই বোঝে না আগাম জলবায়ুর খবর 
কখন যে মানুষের হিংস্রোতা  অন্য একটা মানুষকে হত্যা করে 
কখন যে তুমুল স্রোতস্বীনি নদীর বাঁধ  ভাঙে 
কখন এক দেশ অন্য দেশকে পায়ের তলায় রাখতে চায়। 
কবি কাঁদতে থাকে 
কবি লিখতে থাকে  
সবাইকে বোঝাতে চায়  ভালো থাকার মানে 
বোঝাতে চায় একলা প্রজাপতি দেখতে বড্ড খারাপ 
গোলাপ ফুলে কাঁটা আসলে অভিমান ,
সময়ের মৃত্যু হয় তাই মানুষ কাঁদে 
কারণ নিজ হাতে মানুষ খুবলে নেয় নিজের মানুষের মাংস। 
কবির মৃত্যুতে বিশ্বাস নেই 
কবি বিশ্বাস করে আদম আর ইভের পাপ আসলে একটা সময় 
যা শুধু মানুষকে চিনতে শেখায় 
ভাবতে শেখায় যে হৃদয় আসলে ভাঙাচোরা সময়ের ঘর নয় 
একটা ঘর যার সিলিঙে স্বপ্নরা বাঁচে। 
.
মুশকিল আসান 
... ঋষি

সেই তুমি

যদি এই মুহূর্তে আমি এমন না হতাম 
কি হতাম ?
সত্তরের দশকের সেই এক ফালি ঘর ,লণ্ঠনের  আলো 
কোনো চায়ের দোকানে দূর থেকে ভেসে আসতো রেডিওতে  গান 
" চুরালি লিয়া হ্যা তুমনে যো দিলকো,নজর নেহি .... ",
আমি বিরক্তিতে দুরদার জামাটা গলিয়ে বেরিয়ে পড়তাম শহরের রাস্তায় 
পাশ দিয়ে ট্রাম গাড়ি চলে যেত শব্দ করে 
অলস ষাঁড় পরম তাচ্ছিল্যে তামাম পথচারীদের দেখতো 
আমি গিয়ে দাঁড়াতাম তোমার বাড়ির সামনে। 
.
বাইরে তখন ব্যস্ত অথচ ব্যস্ত নয় জীবনের একটুকরো নিস্তব্ধ ঘর  
কানে তখন তালা লাগা পৃথিবী 
সব শব্দ, গন্ধ মিলে শ্বাসরোধী অসংখ্য মুহূর্ত ,
এক মাথা উস্কোখুস্কো চুলে আমি ,হাতে সিগারেট পুড়ছে 
বুকের ভিতর পুড়ে যাচ্ছে স্পর্ধা ,
সেই সময়টা ঠিক কোন ঋতু আমি বলতে পারবো না 
বলতে পারবো না ঠিক তখন তুমি কি করছো ,
শুধু একগোছা অভিমান তখন আমার বুকের সিঁড়ি বেঁয়ে উপরে উঠছে 
তুমি বলছো আমি শুনতে পাচ্ছি 
অভিমান শুধুই কি তোর হয় ।
.
I know your pride is real time
I know your distance is actually time
I know love is not a lie
Time is a moment that only lies.
​.
সেই তুমি 
... ঋষি

ওই লোকটা

নিমতলার সেও লোকটাকে  আলাদা করে চোখে পরে না ঠিক 
তালিমারা ঢলঢলে প্যান্ট। মুখভরা গোঁফ দাড়ি
তবুও লোকটা হাসতে পারে 
বুকের উপর আঙ্গুল দিয়ে কি সহজে দেখাতেতে পারে লুকোনো নামটা ,
যদি আমিও ওই লোকটার মতো বৃষ্টি নামাতে পারতাম 
আনপ্রেডিক্টেবল আকাশের ভূমিকায় একটা কবিতা লিখতে পারতাম 
জানি তুমি হাসতে খুব। 
.
অথবা ওই দোকানি কাকুর  মতো যদি তোমার হাতে গুঁজে দিতাম একমুঠো লজেন্স 
তুমি বলতে কত ?
আমি বলতাম,যা তো তুই না রানী 
তোর কাছে আবার পয়সা।
আমি জানি কিছুতেই পূর্ণ হবে না ,তাই এই বুকে বৃষ্টি ফোঁটা 
সেই পাগলাটে লোকটার মতো পৃথিবীর উপস্থিতিগুলো বড় মূল্যহীন আজ 
মানুষগুলো বোধহয় বড় অহংকারী এই পৃথিবীর। 
.
কিংবা ধরো বর্ধমান লোকালে সেই অদ্ভুত সাঁজগোজ করা সেই দিদিটার মতো 
লোকে যাকে  হিঁজড়া বলে ,
যে দেখা হলেই বলে দাদা কত দিন পরে , তুই খুব সুখী হবি 
তোর গোলা ভরা ধান ,তোর বুকের সন্তান ,তোর অতীত ,বর্তমান
আমি হাসি  
কিন্তু কাঁদতে পারি না  ,আমার অহংকার 
পকেট থেকে পাঁচ থাকার একটা কয়েন গুঁজে দি হাতে। 
সত্যি আমি বৃষ্টি নামাতে পারি নিসেই অদ্ভুত পাগলাটে লোকটার মতো 
তালিমারা ঢলঢলে প্যান্ট। মুখভরা গোঁফ দাড়ি
যাকে তুমি ভালোবাসো 
আমি বোধহয় বর্ধমান লোকালের সেই হিঁজড়া দিদির মতো 
চিরকাল একটা স্বপ্ন দেখতে পারি 
কিন্তু কিছুতেই শেষ বিকেলে গঙ্গার ঘাটে সেই প্রেমিকের মতো 
বিশ্বাস করাতে পারি না 
আমিও আমার বুকের উপর লুকোনো নামটা ঈশ্বরকে দেখাতে পারি। 
.
ওই লোকটা 
... ঋষি

একটা ভালোলাগা

নেই কোথাও,নেই 
অসম্ভব হালকা একটা শিরশিরানি সারা মেরুদন্ড বেঁয়ে 
একটা ভালোলাগা ,
এই প্রথমবার নিজেকে খুলে রেখেছি অভিমানী সম্ভ্রমের বাইরে 
আমার ঘাসের উপর পা ,সারা শরীর জুড়ে মাটি মাটি গন্ধ 
চুলে কেমন এক তোমার মোহময় ঘ্রান ,সারা আকাশজুড়ে তারা 
না ঈশ্বর হয় না ,
প্রথমবার অনুভবে অন্ধকারে ঠিক যেমন শিশির ঘাসের বুকে 
আমিও সম্পূর্ণ তোমার আশ্রয়ে। 
.
অনুভূতিতে আর মিথ্যারা নেই 
মাথার ভিতর কোনো স্লাইডশো নেই 
শীতের একলা বিছানায় বসে সম্পূর্ণ এক পাগলাটে আমি 
চোখের কোনে লেগে থাকা জলের মানেদের আবিষ্কার করছি 
এক অবুঝ শীতের অন্ধকারে নিজেকে খুঁজে পাচ্ছি 
অথচ আর আমি কিছুই  খুঁজছি না 
কেন যেন তুমি জিতিয়ে দিচ্ছো আমাকে  নিজের ভিতর। 
একটা উদ্যত তলোয়ার আমাকে কেটে ফেলেছে আমার থেকে 
আমার আজীবন জমা আর খরচের ব্যবধানে কিছুই নেই 
শুধু আছে এক অনভূতি তোমার প্রশ্রয়ে 
আমি আবারও বেঁচে উঠছি 
ক্রমশ তোমার খুব কাছে 
অথচ দূরে। 
.
একটা ভালোলাগা 
... ঋষি

Friday, December 1, 2023

ভিতরের ঘরটা ফাঁকা থেকে যায়

নিস্তব্ধে যেতে চাও ,যাও 
কেউ যাতে না শুনতে পায় তোমার পায়ের শব্দ 
দরজা খোলার শব্দ করো না যেন  ,
শুধু দরজাটার পর্দার গায়ে ছেড়ে যেও তোমার শরীরের গন্ধ 
কিছু না থাকার মধ্যেও কিছু তো থাকে 
যা দিয়ে চাপা দেওয়া যাবে আমার কান্নার শব্দ। 
.
দুঃখের কথা আর  বলতে আর ভালো লাগে না 
যে  শাড়ির আঁচল আমার  বুকের সাথে মিশে যাবার কথা ছিল 
কথা ছিল  বিশ্বাস আর মাটি দিয়ে তৈরী করবো ঘর 
কিন্তু  তোমার শহর বদলালো  ,
একটা আদরের মুহূর্ত পুষেছিলাম  বুকের প্রতিটা খাঁজে 
এতদিন সেই  মুহূর্তদের সাথে  ঘুরেছি  ,ফিরেছি  
তারপর কেন যেন বড়ো হয়ে গেলো মুহূর্তগুলো ,আর আমি এত ছোট 
চলে গেলো তারা  
কার দোষ ,কার গুন এসব আজ রূপকথা। 
.
তারপর সেই আমাদের বাড়িটা ,পুরোনো স্মৃতিরা 
নিচু নিচু ঘর ,মাটির দালান ,মেঝেতে মাদুর ,এ কথা ,সে কথা 
আজ ঝাঁটা পড়ে নি বহুদিন সে ঘরে  ,
বন্ধ তালাটাতে মরচে ধরেছে কালের হিসেবে 
তবুও জানলার পাল্লাগুলো বন্ধ করা হয় নি আজও 
কারণ সাহস হয় না ,আশা  যে  মরেও মরে  না। 
সেই  একটা দিন মনে পরে যেদিন তুমি এসে দাঁড়িয়েছিলে রাস্তায়  
আমার ভুল ,আমি আসতে পারি নি সেদিন 
অথচ তারপর থেকে আমি এসে বসে থাকি সেই রাস্তার মোড়ে 
দেখি তুমি যাও রোজ নিয়ম করে 
ভিতরের ঘরটা ফাঁকা থেকে যায়। 
.
ভিতরের ঘরটা ফাঁকা থেকে যায় 
... ঋষি

bhabnar shohor

এই পারদের বেলায় প্রস্তাবিত শহরে স্লোগান দিন বদলাবার  যেখানে পিচ গলছে ,মানুষ গলছে ,গলছে রাতের বিছানায় ভাবনা  গড়িয়ে নামছে ঘাম  সব কিছু কেমন হা...