Monday, October 27, 2025

দিওয়ানা

যেন কোনো অসহায় বিকেলে
সমস্ত দুঃখের  শব ব্যবচ্ছেদ হয় প্রকৃতির আকর্ষণে 
কিছু শিহরণ ছুটে যায় স্নায়ু বেয়ে ট্রাফিকস্যিগনাল ভেঙে ,
জমাট বাঁধতে চায় নিঃশ্বাসে অমোঘ ঘোর। 
কাল যদি খবরের কাগজের হেডলাইনে এক মৃত্যু লেখা হয় 
যদি লেখা হয় কবি তুমি প্রকৃতির প্রেমে পাগল দিওয়ানা 
তবে অবাক হবার বিশেষ কিছু নেই। 

যেন কোনো অসহায় বিকেলে
ঈশ্বরকে আজ  মনে হয় এক অপটু ইন্টার্ন
সদ্য ঘুম ভাঙা স্বাধীনতা আজ চলন্তিকার ঠোঁটে 
সমস্ত রাজপথ ,শহরের কোলাহল  হঠাৎ যেন এ শহরে নিস্তব্ধতায় 
শত সহস্র হুডিনি শেকল খুলে আজ যেন আমার শব্দরা 
আরেকবার জীবিত 
আরেকবার চলন্তিকায়। 
.
যেন কোনো অসহায় বিকেলে
মন ভালো নেই 
মন ভালো থাকে না লিখতে লিখতে যখন সকল কবিরা হাঁপাচ্ছে 
তাদের জন্য মোক্ষম দাওয়াই ছবির ভিতর ঈশ্বর 
আর এই  ঈশ্বরের ঘরে তোমার  কবিতা। 
খুশি-বিষাদ-হিংসা-দ্বেষ সব ছাড়িয়ে যাচ্ছে যে অনুভূতি  
মনে হচ্ছে হঠাৎ এক ট্রান্সপারেন্ট মুহূর্ত  জাপটে ধরছে সময়কে  
আমার হাতে কলম 
আজ  প্রানপণে বলছে আমি ভালো আছি 
চলন্তিকা ভালো আছে 
এক মুহূর্তের তার  হাসির  ঝলকে  আমি দিওয়ানা 
আর এই শহর আর ক্লান্ত নয়  যেন হাসিখুশি ভেনিস। 
...
দিওয়ানা 
ঋষি

Sunday, October 19, 2025

তাহাদের কথা

কারা ? 

.

কারা হাসে রোজ মোগলাই আর চাউমিনে? 

কারা আরও ভিখিরি দিন প্রতিদিনে। 

.

কারা কাজ করে?  কারা দেখায় কাজ করে

কারা সময় গড়ে?  কারা দেখে সময় গড়ায়

আমি তাদের কথা লিখি, আমি তাহাদের কথা লিখি। 


আমার শহরে কারা কাঁদে?

আলোকমন্ডিত প্যান্ডেলের গ্ল্যামারে  কারা ভাসে? 

বছর বছর সুখের অসুখ

শুধু স্বপ্নের দিন গোনা ক্যালেন্ডারে প্রতি মাসে । 

.

কারা ঘুমের বালিশে হারায় পথ মিনিবাসের ভিড়ে?

ভগ্নপ্রায় শহরের জানলায় চরা মেকআপে

কারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্বপ্ন বাঁচাতে সংসার ঘিরে? 

কাদের দৃষ্টিতে দীর্ঘশ্বাস আর বিশ্বাস সুদিনের

এ শহর বাঁচে কিন্তু মরে হাজারোবার প্রতিদিনে ?

.

আমাদের প্রবল উদযাপন,

একাকিত্ব মধ্যবিত্তের, আনুগত্য গোপনীয়তার

আমাদের সুখের অসুখ আর দিনযাপন। 

এক শহর উষ্ণতা ছুঁয়ে কারা হাতে  হাত দিয়ে বসে

কারা দেখে ?কারা হাসে? ভালোবাসে কারা?

কারা মনমিলান্তি খেলা করে ময়দানের ঘাসে।

.

কারা উদাসীন আমাদের সশব্যস্ত শহরে?

সম্পর্কের ফুটপাথে কারা দাগ টানে বাঘবন্দি খেলা?

কারা পোশাক পরেও উলঙ্গ শহরের পথে 

কারা পোশাক ছাড়াও রাজা এ শহরে সারা বেলা ? 

কারা কবিতা লেখে?  কারা কবিতা রক্ত দিয়ে লেখে

আমি তাদের কথা লিখি,আমি তাহাদের কথা লিখি

যাদের না লিখলে এ শহরে দিনবদলায় না।


তাহাদের কথা

ঋষি 


Wednesday, October 15, 2025

অ নি শ্চ য় তা



কি অনায়েসে ভাগ হয়ে যায় মানুষগুলো
ভাগ হয় দেশ, ভাগ হয় সম্পর্ক,ভাগ হয় ইতিহাস
হিস্যা বয়ান করার জন্য ভাগ হয় মা, বাবা 
অনায়েসে ভাগ হয়ে যায় উপাসনালয়,
ফুটবল মাঠ থেকে পুরনো জমিদারি,সময়ের হাঁড়িকুঁড়ি 
সবার মাঝে ভাগ হয়ে যায় ঈশ্বর 
ইদানীং তো প্রেমাংশু আর প্রিয়ংবদারও ভাগের সংসার।
..
ভাগাভাগি হয়ে যায় সরিকি বাড়ির হেঁসেল,
ফুটপাথে হকারির টেবিল, নেতাদের হিস্যা
উঁচুতলার কুর্সি থেকে নিচুতলার রুটি
আম থেকে আমসত্ত্ব,  
অনায়াসে দেওয়াল ওঠে জীবনে
ভাগ হয়ে যায় সম্পর্কের পুকুর আর বাঁশবন
ভাগ হয় মি-টু,  উই-টু আর লাল নীল আকাশ।
.
সমস্ত ভাগ হয়
তবু ভাগ করা যায় না মনের মানুষ
তবু ভাগ করা যায় না স্বপ্নের মুহুর্তের গন্ধগুলো।
ছেলে বেলায় রামদিন ফকির বলতো 
হামলোগ খুদাকে বন্দে হ্যা
লেকিন খুদাকে হিস্যেমে ভি লকিড় খিচতে হ্যা। 
আসলে অনায়াস এই ভাগাভাগিতেই আমরা জীবন্ত
কবিতার ভাগে তো ইদানীং বেবুশ্যা লেখা হয়
সময়ের কালিমায় শব্দরা সীমানার ভাগাভাগিতে।
সত্যি হলো,  জানি না আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে
তবু তোমাদের মুখে আমার শোনা
হ্যাম সাথ সাথ হ্যা,
তবু  কোন গোপন মুহুর্তে তোমার ঠোঁটে শোনা
আমি তোকে কাউকে দেবো না
না ভাগ,না যোগ, না বিয়োগ
সবটাই আমার। 
.
তবে আমি জানি ভাগের পৃথিবীতে জীবন ভগ্নাংশের
আর তার প্রতিটি অংশে লুকিয়ে অনিশ্চয়তা। 
.
অ নি শ্চ য় তা
...ঋষি 

Thursday, October 2, 2025

শেষ শব্দটা

শেষ শব্দটা 
... ঋষি 
.
শেষ শব্দটা লিখতে লিখতে ইদানিং এক  বিষন্নতা 
একে একে শেষ হওয়া প্রতিবাদ ,প্রতিফলন ,অভিমান 
কিছুই স্থির হয় না এক জীবনে ,
বাড়তে থাকা দূরত্ব ,ক্রমশ এগিয়ে আসা নৈকট্য 
মৃত্যু ,জন্ম ,ভয় কিছুই ফুরোয় না। 
.
বছরান্তে সেই কাশফুল,মায়ের মুখ ,ধূসর হতে থাকা স্মৃতি 
হাজারো ভুলের মাঝে একলা দাঁড়িয়ে দেখি 
পৃথিবীটা চলছে চলন্তিকা  ,
শুধু থেমে যাওয়া মুহূর্তে নিরন্তর কিছু আকুলতা 
কাঁচের গা বেঁয়ে গড়িয়ে নামা বদলানো কেউ 
ভালো লাগে না কিছুই ,
তবুও বলা ভালো থাকতে হবে কোনো কবিতার মতো 
চিরদিন তো আমি শুধু সত্যি হতে চেয়েছিলাম। 
.
বড্ড ব্যস্ততা মোড়া এই পৃথিবীতে কেউ দাঁড়ায় না 
সকলেই শুধু এগিয়ে যাওয়ার জন্য হাত বাড়ায় 
সাদা কালো দিনের মতো কিছু মুহূর্তরা স্থির 
কিছু অস্থির 
হাজারো মুখের মিছিলে ,কিছু মুখে শুধু অপ্রাপ্তি 
কিছুতে অশান্তি। 
এইবার একলা পরে থাকা সব পুজোমন্ডপ  
রাস্তায় বাঁশের ব্যারিকেড ,মায়ের সিঁদুর মাখানো মুখ 
সব হারাবে ,আবার হয়তো বদলাবে মুখগুলো 
কিছুই দাঁড়াবে না 
থামবে না 
শেষ শব্দটা লিখতেই হবে ,
তবুও তো চলন্তিকা তোমাকে বলতেই হবে শুভ বিজয়া 
বলতেই হবে তোমাদের ভালো থেকো সকলে 
শুধু মানুষের অপেক্ষেরা বদলাবে না।

এলিয়েনেশন

বোধহয় এক তরফা এলিয়েনেশন চোখের বিষন্নতায় ডিমলাইটের নিস্তব্ধ আস্তানা নেমে আসছে দ্রুত এই কবিতা কৃত্রিম আলোর নিচে হলুদ ট্যাক্সি ফেরা আর না ফেরা...