Wednesday, January 29, 2025

তারপরে চলন্তিকা

আমরা সবাই অপেক্ষা করছি,
পায়চারি করছিনা নিজস্ব যন্ত্রণার মেটার্নিটি ওয়ার্ডের করিডোরে
প্রতি মুহূর্তে নতুন আশংকা ফুরিয়ে যাওয়া ,হারিয়ে যাওয়া ,খুঁজে না পাওয়া 
প্রতি মুহূর্তে নতুন বিপদ তারপর কিংবা তারপর কি হবে ? 
আমাদের সকলের হাতে ঝুনঝুনি
কারো কারো হাতে এ বি সি ডি পড়ার বই , কারো বা খেলনা বন্দুক
আমরা জানি অথচ বুঝিনা সময় অন্তঃসত্ত্বা।
.
তার পরে কি চলন্তিকা ?
একটা গল্প যখন শুরু হয়েছে শেষ তো হবেই
জানি তো ঠিক একটা সময় হয়তো আমাদের রাস্তা দুই দিকে যাবে  
কিন্তু জানি না আমরা তখন কোথায় যাবো?
আলোর দিকে? ছায়ার দিকে? জন্মের দিকে ? মৃত্যুর দিকে ?
কিংবা জানি না কে থাকবে আমাদের পাশে ? 
কিংবা এযাবৎ আমরা যেমন তেপান্তরের রূপকথাতে আস্থা রেখে দিন কাটালাম
কিন্তু জানি না আগামীতেও আমরা স্বপ্ন দেখবো একই চোখে। 
.
আমরা কি আবার গুছিয়ে নেবো বাক্সপ্যাঁটরা, কাগজকলম ?
জানি তোমার প্রিয় ঋতু গ্রীষ্ম আর আমার সাধের অন্ধকার 
জানি তোমার বৃষ্টিতে একা লাগে ,আমার অসুস্থতায় 
জানি অনেক কিছুই থাকবে পড়ে – ছোট্ট হলেও, গৃহস্থালি
আয়না, আতর, জানলা, দুপুর, মোমবাতি আর অনেক আদর
জানি তো ওসব আর পথে লাগবে না। 
আমরা তো চিরকাল অল্পতেই খুশি হতে চেয়েছিলাম বলো ?
একটা গল্প, একটা নদী, সমুদ্দুরেও আপত্তি নেই
কিন্তু আপত্তি বড্ড এই গল্পের শেষ লেখায় ,
সময়ের মেটার্নিটি ওয়ার্ডের করিডোরে অপেক্ষা আমাদের চিরকালীন 
কিন্তু সময়ের যন্ত্রণার মলম যে তুমিই ছিলে চিরকাল 
আর জানোই তো আমি কবিতা লিখতে পারি 
কিন্তু তুমি ছাড়া যে আমি যে সময় লিখতে পারি না
লিখতে পারি না সময়ের জন্মের শেষ মুহূর্ত। 
.
তারপরে চলন্তিকা  
.... ঋষি

Saturday, January 25, 2025

ষড়যন্ত্র

বারংবার ফিরতে চাই সময়ের কাছে
সময়ও যে নাছোড়বান্দা,  কেন যে ভীড় করে আসে ? 
.
রাতবিরেতে নিয়ম করে একলব্য নি:শ্বাস ফেঁপে ওঠে
ধর্মতলার মোড়,গড়িয়াহাট,একা বাইপাস কাঁদতে থাকে
কাঁদতে থাকে সংবিধানে ২৬ এর তন্ত্র,
কোন এক নরক-ভ্রমর মৃত্যু যজ্ঞের উপর মানুষ
আমি, তুমি, আমরা সকলেই পুড়ছি,সকলেই কাঁদছি
বাঁচছি এক বাঁচার কল্পনায় উলঙ্গ সাজে। 
.
আতংক গ্রেফতার করতে করতে
সংংবিধানে পুড়ে যায় মানুষের রোজকার সাধারণ তন্ত্র
তবুও ভূমিষ্ঠ শিশুর সাজে মানুষ হামাগুড়ি দেয়
এক স্বপ্নের দেশের কবিতায়,
সময়ের শবঘরে জ্যান্ত ঘুমে প্রজাতন্ত্র শব্দে বদহজম
মানুষ মানুষকে গিলে খায় ক্ষমতার ওষুধের সাজে। 
.
বেপরোয়া খুন, রাষ্ট্র সংকেতে চিল আর শকুন
সারা আকাশ জুড়ে "হে স্বাধীনতা "মৃত্যুতে ধুঁকছে
আর একটা রাত
তারপর, আরেকটা মিথ্যা মানুষের দিন 
তারপর আবার সেই উলঙ্গ শিশুটাকে কেউ রাষ্ট্র বলবে
সেই না জন্মানো শৈশবকে কেউ প্রতিদিন বলবে,
মানুষ ভুলবে সময়
কারণ সময় সে আকাশ ছোঁয়া অদৃশ্য সিঁড়িপথ
আর মানুষের তন্ত্রে আজ ষড়যন্ত্র। 
.
ষড়যন্ত্র 
......ঋষি

Thursday, January 23, 2025

দুটো মানুষ

কথা ছিল, এমন এক সময়ের জন্য বাঁচবো
যেখানে জীবনের উপস্থিতি জন্মাবার গল্প লিখবে
যেখানে শেষ সূর্যের পর শুধু দুটো মানুষ বাঁচবে 
আর বাঁচবে সম্পর্ক কারণ ছাড়া, 
কিন্তু আলো যে বারংবার ফুরিয়ে যাওয়ার গল্প লেখে
লেখে দুদন্ড কোলাজে বিরল একলা রোগ।
ভাংচুর ইতি-উতি, হলুদ বনফড়িং, বেপরোয়া জীবন
প্রচ্ছদে রং ঢালি, অবাক কাটাকুটি
তুমি বলেছিলে নিবিড় জন্মদাগে ফিরে আসে কথারা
একলা দেউলিয়া মন শুধু নীরবতা।
.
কথা ছিল পাইনের বনের উপর দিয়ে এক শীতসকালে
আমরা পাখি হবো, উড়ে যাবো
কুয়াশার প্রজননভুমিতে এমন এক দৃশ্য লিখবো 
যেখানে বার্ধক্য হেঁটে যাবে ঈশ্বরের দিকে। 
অথচ ভালোবাসার গভীরে এক স্বার্থপর শয়তান 
ইদানীং তোমার মতো অবিকল মিডিয়ায় হাসে 
হয়তো হাসতে পারে , 
আমি দেখি নি,জানি না,বুঝি না এমন না
কিন্তু এটা কখনও বুঝি নি
ভালোবাসা শয়তান হলে ঈশ্বর কি শুধুই কল্পনা
আর মানুষ ? 
আর মন সে কি শুধুই খেলনা ? 
.
দুটো মানুষ
..ঋষি 



Monday, January 20, 2025

তুমি শব্দটা

কিছু মুহুর্তের প্রহসন বার্তায় স্বভাববিরুদ্ধ নীরবতা
আখরোট ঠোঁটে গুছিয়ে রাখা ক্ষতের কবিতারা
ইদানীং লিপস্টিকে গুছিয়ে হাসছে,
আমার স্বভাববিরুদ্ধ তুমি এই শহরে গোপন গাছ
এক সামিয়ানায় বিলীন 
স্তোত্র পাঠ চলছে কবিতার পাঠকের মনে
আর কদিন পরে বইমেলায় আবারও থাকছি আমি। 
.
ছিন্নভিন্ন শীতল হাওয়ায় ইদানীং উদাসীন শহর 
সময়ের প্রতি রন্ধ্রে জখমের সুর
কি ভীষন এলিয়ে দিচ্ছে চুল,নখ , দাঁত,ঠোঁট আর মায়া,
আমি জখমের সীমান্তে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি
ঠিক যেখানে তুমি প্রথম জড়িয়েছিলে আমায়,
অথচ তোমার দোষ কি বলো
যতবার জড়াতে চাইছি তুমি ছুঁড়ে ফেলছো আশ্রয়। 
.
ক্রমশ ক্ষয়ে চলা সময়
ভাঙ্গনের পরে দূরে দাঁড়ানো শেষ মিছিল,
শেষে দাঁড়াতে চাইছি
যেভাবে সকাল নিলামে তুলে আকাশ বিছায় কাঞ্চনজঙ্ঘা
সেইভাবে আবারও জন্ম খুঁজছি আমি।
এক একটা মৃত্যু পেরোবার পর প্রতিবারে বুঝি
যে সকল কবিতা লিখেছি তার অধিকাংশ মিথ্যা
সত্যি হলো দিকচিহ্নে আসলে কোন ঈশ্বর নেই
ঈশ্বর শুধুমাত্র একটা বিশ্বাস মাত্র
আর আমার বিশ্বাসে তুমি শব্দটা মিথ্যা নয়।
.
তুমি শব্দটা
... ঋষি 




Saturday, January 18, 2025

সোনাগাছি

সোনাগাছির দরজা খুলে গেছে
তবু তীরন্দাজী সেরে আমি আয়না হতে পারি নি
পুরুষ হতে পারি নি,
শুধু সকালের ঘুম ভাঙা চোখে আঁকড়েছি তোমায়
নুনপোড়া খেয়ে তেল মেখে উঠে রৌদ্রে দাঁড়িয়েছি
সমুদ্রের নোনা জলে আমার দিবানিশি
তবু সরে আসিনি, ঘড়ির কাঁটারা সরেছে। 
.
সবাই কবিতা লিখতে পারে না
কারণ সবাই একলা হতে পারে না সমাজ অরণ্যে
সবাই পারে না সত্যি বুঝতে,
যে ষাট শতাংশ সুস্থতা আমার দেওয়ার ছিল 
দিয়ে দিলাম জীবন,
এবার সোনাগাছির দরজা খুলে আমার আসা যাওয়া
মিথ্যেকে সত্যি ভেবে আমার কবিতা। 
.
এইবার তবে বন্যতা জুড়ে থাক শুধু শরীর
এইবার শুধু ভালোবাসা জুড়ে থাক সাজানো মিথ্যা
এইবার শুধু সম্পর্ক জুড়ে থাক মুখোশের কবিতা
আর  মুখোশের আড়ালে থাক চেনা রক্ত।
তবু ভালো থাকাগুলো থাক বেঁচে এক আকাশ তুলিতে
সময়ের ক্যানভাসগুলো কোন মন্দিরে ঈশ্বর হয়ে বাঁচুক
আমি বাঁচি কি না বাঁচি তাতে কি
এ শহরে সোনাগাছি ছিল, থাকবে 
এ শহরে ভালোবাসা ছিল, সে বাঁচবে,
শুধু ঈশ্বরের কবিতায় বারংবার লেখা হবে
পুরুষ আর পৌরুষের তফাৎ। 
.
সোনাগাছি
... ঋষি 







Friday, January 17, 2025

প্রাক্তন

অন্তরঙ্গ কুয়াশা ছিটিয়ে দেওয়ার পর 
সারা শহরজুড়ে স্তব্ধতার সূত্র লিখে ফেলা যায়
সমস্ত রাত আগডুম বাগডুম ভাবার পর
কবিতার স্তব্ধতায় শীতল শবঘর লেখা যায়,
কী লিখবো আর কী লিখবো না কবিতায়, ভাবলেই খেই হারাই, সব কথা অসাড় হয়ে আসে
সব নদী, মেঘ, পাখিদের কথা তখন কাল্পনিক মনে হয়।
.
কি সেই ফুলের নাম ?  মনে নেই
শুধু মনে থাকে কফির তলানিতে দু'চারটে অনুভুতি,, 
সংসারের মহড়ায় আমরা গুছিয়ে রাখি নিজেদের
অথচ কবিতায় পাতায় স্বপ্নে লিখি আদর
বারংবার তেতো কফিকাপে নিজেকে জাগ্রত করি
ভাবি তুমি ছিলে বলেই এতোটা আয়ু
আর না থাকলে জোনাকির শহরে মৃত সব কবিতারা। 
.
অথচ সেল্ফিলোভী শহর তখন মুখ টিপে হাসে
যারা ভালোবাসে তারা জানে এ শহরে মুখের অভাব
অভাব নিজস্ব আলাপচারিতার।
কথা ফুরিয়ে যায় যখন
তখন জীবিত আর যুদ্ধের মাঝে তফাৎ কই
তফাৎ কই কফি, কফিন আর কাফনের কাহনে। 
ওদিকে বেহিসেবী রোদ ক্রমশ বাড়িয়ে দেয় শীতকে
অস্থির সম্পর্কের খাপে হাঁসফাঁস স্মৃতিলেখা
ভালোবাসা আপাতত মুক্তির ইশারায় নিজেকে খুঁজছে
অস্থির সিলেবাসে লিখছে অসহ্য,
ক্রমশ সন্ধ্যে নামছে একলা শহরে
অন্তরঙ্গ কুয়াশার আগামী শব্দটা বোধহয় প্রাক্তন। 
.
প্রাক্তন 
... ঋষি 
.

Tuesday, January 7, 2025

ক্রাইসিস

সময় অভ্যাস জুড়ে  ইদানীং ৭৬ গল্প লেখে
গল্প মানে সাদা ভাতের ফ্যানের গন্ধ, কঙ্কালসার উপস্থিতি
উপস্থিতি মানুষ, খিদে, সত্যি,
উপস্থিতি হলো কবিতার ঠোঁটে লেগে থাকা ক্রাইসিস।
বারংবার কল্পতরুকে প্রশ্ন করি, কেন? 
উত্তর পাই 
সব্বাই বলে সবসময়,  সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। 
.
জানি তো বনলতা এক ক্রাইসিসের নাম
জানি তো চলন্তিকা এক ক্রাইসিসের নাম
জানি তো দেবদাস এক ক্রাইসিস লেখকের
জানি তো কবিতা এক ক্রাইসিস পাঠকের
তবু শহর থেকে শহরতলি, অসুর থেকে অবতার
একমাত্র সত্যি মানুষ আর মানুষের দিমাগে সেলাই করা রিপু। 
.
আমি যদি ব্রথেল থেকে বেড়িয়ে ঈশ্বরকে প্রশ্ন করি
কেন? 
আমি যদি অভিশপ্ত ভালোবাসায় দাঁড়িয়ে তোমাকে প্রশ্ন করি 
কেন? 
আমি যদি প্রতিটা সৃষ্টি থেকে নলেন গুঁড়ের রসগোল্লা থেকে
যদি ভীমসেন যোশী থেকে রবি ঠাকুর কিংবা টলস্টয়
কিংবা সবুজ কচুরিপানা থেকে বিছানার চাদর
অথবা লাস্টসাপার ছবিটার প্রতিটা রংএর কনাকে প্রশ্ন করি কেন ? 
উত্তর আসবে মিলে সুর মেরা তুমহারা
শুধুমাত্র ক্রাইসিস,ক্রাইসিস আর ক্রাইসিস।
সময়ের অভ্যেস, অকৃতজ্ঞ মানুষের ঘরে বেনে
বেনে শব্দের মানেটা তুমি বলো ব্যাবসায়ী
আর আমি বলি একটা লুকোনো এডজাস্টমেন্ট
সম্পর্কের মুনাফা
ডেভলপমেন্ট অফ হিউম্যান ক্রাইসিস। 
.
ক্রাইসিস 
.... ঋষি 

Friday, January 3, 2025

ক্রাইমসিন

শহরে শীত বাড়ছে
এটা কোন বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইন হতে পারতো
কিন্তু  মানুষের সত্যি আর সাধনার মাঝখানে 
একটা সুক্ষ্ম বোঝাপড়া আছে
আছে মানুষগুলোর  টগবগে রক্তে অচল কিছু শান্তি,
এসবের প্রয়োজন ছিলো না জেনেও সব বোকাবাজি
গনতন্ত্র পোশাক বদলে নিয়েছে রাতারাতি
আর আমার হাতের সিগারেটে জ্বলন্ত শহর। 
.
এশহরে মানুষগুলো  আগুন নিয়ে দৌড়াচ্ছে
পেটে পিঠে লাথি খেয়ে তাদের রূপকথা দিয়ে কুলকুচি  অথচ ভয়ানক স্পষ্ট শীতকাল,
যেখানে যৌবন শীতঘুম জানে না
শুধু জানে কমলালেবুর খোসা আর  নারীর শরীর, 
জানে না জলপট্টি, ক্যালপল,রিপাবলিক সত্যি
জানে মনের অসুখ
আর জানে ফুরিয়ে গেলে কেমন যেন বোকা লাগে। 
.
শহরে শীত বাড়ছে
একটা লাল চাদরে লুকিয়ে নন্দন থেকে কবিতাপাঠ
আসন্ন বইমেলার ভীড় এখন প্রতিটা প্রিন্টিং প্রেসে
আসলে শীতকালে বরাবর বড্ড আলুথালু হয়ে থাকে
তাই এ শহরের মানুষ থাকে সস্তা ট্রাডিসনের উৎসবে। 
তবু নতুন বইয়ের গন্ধ
কমলালেবুর খোসায় খোদাই করে রাখা প্রিয় নারী কফি হাউজ, লাইব্রেরি শেষে একটা অসমাপ্ত শীত 
যা কিছু সংখ্যাহীন, বাৎসরিক তা অনিশ্চিত সম্পর্ক। 
কেউ জানে না গভীর রাতে সিগনাল ভাঙার পর
তুমি ঘুমিয়ে থাকবে আমার বুকের কাছে
অথচ আমার আঙুলের ফাঁকে তখন জ্বলন্ত শহর
শহর বুঝবে না কিছু  কিন্তু বুক পুড়বে
সময় মতো ক্রাইমসিনে তখন মৃত শীতকাল।
.
ক্রাইমসিন 
.. ঋষি 

ভুল-ভুলাইয়া

আধভাঙা উপলব্ধি আর ডিজিটাল সময়ের মধ্যে ইদানীং আমি, তুমি, আমরা সকলেই, আমাদের সকলের হিসেবগুলো কমবেশি একই কবিতা লিখতে শব্দ চায়, সকাল...