Monday, March 31, 2025

বাড়ি

হুট করে সরে আসার পর স্পর্শের আকাঙ্খা বাড়ে 
আমাদের প্রত্যেকের আলাদা বাড়ি অথচ ঘর একটাই 
সেই ভিতরের ঘরে বাড়তে থাকা আলাপ 
আমাদের আরও কাছে আনে ,
সোহাগ আমাদের  করে তোলে ঈশ্বর দিনের পরে দিন 
কিন্তু অদ্ভুত এ ঈশ্বর যে বাঁচতে  জানে না। 
.
সময়ের আকাশে আমরা দেখি মাকড়সার জাল 
আর সেই জাল দেখলেই আমরা বছর বুনতে বসি 
হিসেবের ঘর ,
সকলেই জানে আমাদের অক্ষরেখায় ছাদ ছাড়া বাড়ি
আর আড়বঁটিতে লুকিয়ে পথ ভুল করা বিপ্লব 
বলবো বলবো করে ভুলে যাওয়া ঠোঁটস্থ কবিতা মঞ্চে। 
.
কতগুলো অমসৃণ দাগ ,ঘরদোর ,বারান্দা ,স্নানের ঘর 
নিয়ম করে আমাদের মন্দিরে ভন্ড প্রতিস্থাপন করে
আমাদের বারান্দায় তখন ঘুঘুর বাসা ,
কি লিখছি ,কেন লিখছি ,কি হবে লিখে ভাবতে ভাবতে 
প্রতিটা দুর্ঘটনার পরে বিছিয়ে ফেলি সাদা পাতা 
শব্দরা সংসার সাজিয়ে ঢেলে দেয়  বিষাদ 
কবিতা হয় 
কবিতা আসে 
অথচ আমাদের এই বাড়িগুলোর শুধুই  ঠিকানা  থাকে
আর ঘরের ভিতর থাকে জন্ম 
তবু তারা খসে গেলে ঘর- বাড়িতে শুধুই মন খারাপ। 
.
বাড়ি 
... ঋষি

Thursday, March 27, 2025

আপনজন

চোখ ভিজিয়ে তাকিয়ে দেখি অন্ধকার খোলা বারান্দা
বেমালুম খোলামেলা ড্রয়িংরুম, ডট পেন,গীতবিতান
দেওয়ালে দুটো টিকটিকি অনবরত চলমান,
আজ চৈত্রের বারো 
সালটা না হয় বদলাবে শহরের প্রতিদিনের কবিতায়
কিন্তু দিন বদলাবে না
রাত আসবে অথচ ঘুম আসবে না। 
.
ক্রমশ সময়ের বয়সে হিজিবিজি ন্যারেশন 
ভয়েজ ম্যাসেজে ক্রমাগত বাড়তে থাকা বার্ধক্য 
চোখের চশমায় তখন আলতামিরার গুহা
আদিমানব দৌড়চ্ছে,দৌড়চ্ছে শতাব্দী ক্রমশ স্পেসে
হাইফেন, দাড়ি, কমা ক্রমশ লুপ্তপ্রায় বাইসন, 
বদলাচ্ছে তো বাঁচার মানে, একার মানে  রোজদিন
অথচ দিন ফুরোচ্ছে কিন্তু রাত্রি ফুরোয় না। 
.
তারপর ভালোবাসি বাড়তে থাকে
আমাদের প্রথম সবকিছু ফুরিয়ে গেছে সময়ের আগে
আমাদের স্কুলের টিফিন বক্সে সেই চৈত্রের রৌদ্র
এখন এক দহন আমাদের তাড়া করছে
সব ফুরিয়ে এক মিথ্যে ছবিতে ক্লাইম্যাক্সে রাত্রি
ঘুমহীন,স্বপ্নহীন, অর্থহীন বিশ্লেষণ  । 
সময়ের বাসনকোসনে ইদানীং মুখ ভ্যাংচানো হাসি
নিয়মিত অকপটে মেনে চলা বাঁচার মত কিছু
শব্দদের সশব্দে ধাক্কা ক্রমাগত কবিতা
আসলে এখনও বুঝি নি
জীবন মায়া না তাগিদ
শুধু নেগেটিভ কমেন্টসে প্রতিদিন বাড়ন্ত আপনজন
আর  এই নির্লজ্জ রাত্রি
ঘুম আসে না। 
.
আপনজন 
... ঋষি



Sunday, March 23, 2025

জানি,সব জেনে ফেলেছি

জীবনের লুকনো অর্থ কি? 
জানি,জেনে ফেলেছি বেমালুম সবকিছু
হাফ প্যান্ট,বাবার সাইকেলের ব্যাকসিট, 
খেলার বন্ধুরা, কাদা মাঠে ফুটবল, আমতলা
প্রথম ক্রাশের বেনুনী,মুখটিপে হাসি, প্রথমবার কবিতা ডায়েরিতে চিপকানো কাগজ কুড়োনো টেন্ডুলকার
কালি ফুরোনো পেনের রিফিল, কাগজের ক্রাফট 
স্বপ্ন দেখতে দেখতে স্ট্যালন,মাইকেল আঞ্জেলো আমার ফেলে আসা হৈচৈ, হাসিঠাট্টা, আনন্দ, অভিযোগ, রাগ, অভিমান আর স্বপ্নের কোলকাতা আমি শহরটাকে ভুল বুঝেও সত্যি বুঝে ফেলি । 
.
অসময়ের বৃষ্টি, ধুলো ঝড় আসে
কেমন সোঁদা গন্ধ পুরোনো কবিতার বইয়ের পাতায়  বৃষ্টি শেষে শহর গড়ানো দিন ভীষন আদুরে,
হুহু হাওয়ায় ভাসে ভেতর ঘর বারান্দা জানলার পর্দা
যেন একটুকরো অ্যাডোলেসেন্স 
পার করে ফেলেছি
সব জেনেছি, জেনে ফেলেছি সত্যি। 
এখন ঘরের দরজা খুলি,দরজার বাইরে ভিতরে আমি
ভীষণ অচেনা 
কবিতার পাতা থেকে উঠে আসা অনুভূতিরা স্বপ্ন
কচি কলাপাতার উপর জলের বিন্দু গড়িয়ে চলে
আমি সত্যি স্পর্শ করি, তবু মিথ্যেই বলি 
ভালো আছি, ভীষণ ভালো
কাউকে বলি না জানি, সব জেনে ফেলেছি। 
.
জানি,সব জেনে ফেলেছি
... ঋষি 

Monday, March 17, 2025

কঙ্কাল

কাকে বলে কঙ্কাল?
কাকে বলে কবিতা?
কাকে বলে এই বসন্ত কিংবা শ্রাবণ? Pp
কতটা ঢেঁকুর তোলার পর পেট ভরে মানুষের?
কতটা রক্তে ভিজলে শব্দরা কঠিন হয়ে ওঠে? 
কে দেবে উত্তর, ঈশ্বর, নশ্বর না সময়? 
.
মাঝে মাঝে ভাবি কেন লিখছি তোমায়?
কেন লিখবো কবিতা? 
মাঝে মাঝে ভাবি কী দিয়ে লিখবো তোমাকে
কী দিয়ে মুছবো সময়ের বদ রোগ, ধুলো, রক্ত? 
সময় নামক আপদের সাথে সংগ্রামে আমরা নিধিরাম
আর সত্যযুগ পারম্পরিক বলতে শেখায় হে রাম। 
.
এ সবকিছুই অতিলৌকিক মনে হতে পারে
মনে হতেই পারে বিস্ময়ের বালিয়াড়ি হাতড়ে 
সময় যেন প্রজাপতি,
আর আমরা প্রজাপতির ডানায় বিস্মিত সম্বল। 
তবুও ধর্ষন বাড়ে, বাড়ে কবিতার বিরহ, বাড়ে মৃত্যুযোগ
তবুও চলন্তিকা দেখে অজানা বাঁচার স্বপ্ন
তবুও  মানুষের জীবন নিয়ে মানুষ গল্প লেখে
তবুও ঈশ্বর, নশ্বর না সময় সকলেই বৃত্তে বারংবার। 
এরপরও মানুষ কি সহজ জীবন পড়তে চায়
এরপরও মানুষ ভালোর মুখোশে বাঁচতে চায়
আসলে সময় সেভাবে তো দূরত্ব বা  বিয়োগ টানে না
শুধু গভীর চোখ, ভেজা পথ,
শুধুই স্মৃতি ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা অন্ধকারের ভয়
পথ হারায়
আর সময়ের কঙ্কালরা কবিতা হয়ে যায়।
.
কঙ্কাল
... ঋষি 

Thursday, March 13, 2025

প্রতিবিম্ব

ভাঙা মধ্যহ্নের কোলাজ খুলে পড়ছে
তার সাথে ক্রমশ বাড়ছে এ শহরের তাপমাত্রা
ক্রমশ আগুনের পরিসরে
তুমি ফিরছো,
আর ফিরছে এ শহরের সাধারণের সত্যিগুলো
খিদের শহরে সাদা ভাতের পরিসংখ্যানে
মানুষের বুক পকেটে ভালোবাসা আজ শুধু সত্যিটুকু। 
.
বিশ্বাস করো আমি আর কোনদিন শরীর লিখবো না
কিন্তু তুমি জানো কবিরা মিথ্যেবাদী 
তাই বিছানায় শুয়ে থাকা রক্তমাংসের তুমিটুকু সিম্বলিক
সে তো শরীর নয়,
এক শান্তি উপত্যকায় শুয়ে থাকা বাস্প ঢেউ
আমার মতো কেউ
হাতড়াচ্ছে। 
.
বুক আর সুখের মাঝখানে একফালি স্পেস
ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টে একটাই পাওনা
সে তুমি যেখানেই যাওনা,
ক্রমশ এক ফ্ল্যাসব্যাক স্টেজে আমি মুখ থুবড়ে
তোমার বুকের উচ্চতায় আমার ক্লান্তি লুকোনো
লুকোনো এই ক্লান্ত শহরের ঘুম। 
সে এক অভিজ্ঞতার ভ্রমণে আমি আলেকজেন্ডার
আমাত ঘোড়ার লাগামে রক্তাক্ত দৈনন্দিন 
কে জিতছে, কে হারছে আমি জানি না
শুধু জানি শরীরে ভালোবাসা লিখলেই ঈশ্বরের মুখভার
আর ভালোবেসে শরীর লিখলেই,
                হা ঈশ্বর! 
সুতরাং আর শরীর নয় 
এবার ভালোবাসা পৌরাণিক নগ্নতায়
সত্যিটুকু গোপনেই থাক না........ 
.
প্রতিবিম্ব 
.. ঋষি 





লড়াই করি এসো

এখন কবিতা থাক একপাশে শুধু সত্যি লিখি এসো
এখন জল মাপি,নাব্যতা মাপি, সময় মাপি এসো 
এখন স্বপ্ন নয়,ছন্দ নয় শুধু প্রতিবাদ করি এসো
এখন কবিতায় আর প্রেম নেই তাই আগুন লিখি এসো 
এখন ভুল মাপি অন্যায়ের, সহ্যের মাশুল গুনি এসো
এখন কবিতা নয়,জীবন নয়,রাস্তায় দাঁড়াই এসো
এখন রাত জাগা বিচারের অপেক্ষা করি এসো।
.
একজন নারীর জন্যই এই জন্ম 
একজন নারীর জন্যই এই স্বপ্ন 
একজন নারীর জন্যই এই সংসার
একজন নারীর জন্যই এই লড়াই
একজন নারীর জন্যই এই সৃষ্টি 
একজন নারীর জন্যই এই প্রলয় 
একজন নারীর জন্যই দেবীপুজো।
.
সুতরাং এখন প্রতিবাদের মাটিতে দেবী গড়ি এসো
সুতরাং এখন মাথা নীচু করা ভুলগুলি বদলে ফেলি এসো
সুতরাং এখন কবিতা,কন্ঠে,রঙের তুলিতে প্রতিবাদ করি এসো
সুতরাং এখন সুখের ফিনিক্স উড়িয়ে দিয়ে আগুনে ঝাঁপাই এসো
সুতরাং এখন উৎসবকে থমকে আমরা রাস্তায় হাঁটি এসো
সুতরাং এখন ন্যাংটা রাজ্যে সেই ন্যাংটা নারীর পুতুল পোড়াই এসো
সুতরাং এখন তিলোত্তমার বিচার চেয়ে প্রদীপ জ্বালি এসো
সুতরাং এখন চটি চেনা মুখগুলোকে ব্রাত্য করি এসো
.
সুতরাং, সুতরাং, সুতরাং......  দমবন্ধ এ শহরে
তিলোত্তমার বিচার চাই
তাই আপোষহীন লড়াই করি এসো।
.
লড়াই করি এসো
... ঋষি 

.


বাড়ি

হুট করে সরে আসার পর স্পর্শের আকাঙ্খা বাড়ে  আমাদের প্রত্যেকের আলাদা বাড়ি অথচ ঘর একটাই  সেই ভিতরের ঘরে বাড়তে থাকা আলাপ  আমাদের আরও কাছে আনে , ...