কবিতা আর রক্তকরবী
.. ঋষি
.
ইদানীং কবিতা আমাকে কাঁদায়
সে যেন রক্তকরবীর সেই নন্দিনী এক সুন্দরী নারী
যার বুকে রঞ্জন এক মুক্তির নাম,
যার বাহুতে ,যার গলায় জড়ানো রক্তকরবী
সে যেন আগুন ,সে যেন বিদ্রোহ ,সে যেন কবিতা ।
কবিতাকে ইদানীং আমি আর জড়াতে পারি না
কিছুতেই তাকে ছুঁতে পারি না
অথচ নন্দিনীর মত সে আমার বুকের মাঝে আছে
আগুন জ্বালায় ,আমি পুড়ি
জানি সে আমাকে ভালোবাসে।
.
কবিতা আজকাল আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসে
কখন মুখ ভেংচায়,
কখনো বা ঝগড়া করে যক্ষপুরীর রাজার সাথে
................আমার সাথে ,
কখনো বা কবিতা নন্দিনী হয়ে হাসে খিল খিল করে বাচ্চার মত
সেই হাসির শব্দে আমার ভয় লাগে
সেই হাসির শব্দে কাঁপুনি দিয়ে আমার গা গরম হয়
আমি হয়ে উঠি অসময়ের ঈশ্বর ,অসময়ের ভাবনায় আমি একা
সত্যি আমারও ভয় করে।
কবিতা মায়ের সাজে,বন্ধুর সাজে সারা রাত জাগে আমার শুশ্রূষায়
কিন্তু সে আমার মাথায় হাত রাখে না
শুধু অসুস্থ চোখে সে মায়ার মতো ,চোখ খুললেই ম্যাজিক
না সে আর নেই ।
.
আমি বুঝতে পেরেছি কবিতা আসলে রক্তকরবীর নন্দিনী
আমি জানতে পেরেছি নন্দিনী আসলে আমার ভিতরে সুপ্ত মুক্তি
নন্দিনীকে কেউ ছুঁতে পারে না
কারন তার বুকে প্রেম সে যে রঞ্জন
তাকে সকলে পেতে চায় ,তাকে সকলে পুজো করতে চায়
কিন্তু সে যে সকলের নয় ,সে শুধুই রঞ্জনের।
আসলে রঞ্জন কোন পুরুষ নয়
এক বিদ্রোহ সময়, এক তুফানী ঘোড়া,এক হার না মানা উপস্থিতি
আসলে রঞ্জন কোন অধিকার নয় ,সঙ্গম নয়
রঞ্জন হলো নন্দিনীর বুকের ভিতর সেই সবুজ মাঠ
যেখানে শিশির পরে ,যেখানে ফুল ফোটে ,যেখানে মানুষ হাসে
যেখানে মানুষ বাঁচে
আর আমি ?
আর আমি রঞ্জন হতে পাবো না কোনদিনই ।
.
আমি কবিতা লিখেছি, লিখেছি নন্দিনীকে
হয়তো ভালোবেসেছি
কিন্তু আমার ভালোবাসায় কোন মুক্তি নেই
আছে প্রশ্নচিন্হ ,
আছে এক দমবন্ধ করা চার দেওয়ালে আটকানো আকাশ
সেখানে শব্দরা সব দমবন্ধ ,সেখানে সম্পর্কগুলো মৃত
সেখানে ক্ষমা নেই ,সেখানে শোক নেই ,সেখানে ব্যাপ্তি নেই ,নেই ব্যাকুলতা
সেখানে শুধু কিছু শব্দ ভালোবাসা খুঁজতে থাকে
সেখানে আছে কিছু মুহূর্ত যা শুধু মুক্তি খুঁজতে থাকে ,
তাই বোধহয় কবিতা কোনদিনই আমায় হয়ে ধরা দেয় নি
হয়তো সে তাচ্ছিল্যের চোখে তাকিয়েছে
আমি ভেবেছি কবিতা
কিন্তু সত্যি হলো আমার কবিতারা কখনো নন্দিনীকে বুঝতেই পারে নি।
No comments:
Post a Comment