কবিতা ও রাষ্ট্র
... ঋষি
আমি এখন প্রতিটি মৃত্যুর ভিতর চরম উদাসীনতা দেখতে পাচ্ছি
দেখতে পাচ্ছি উদাসীন রাষ্ট্র, সময়, সমাজ আর মানুষ
হ্যাঁ, আমিও প্রতিবাদ আর প্রতিরোধে ক্লান্ত এই পৃথিবীতে
যদি একমুহুর্ত আমি নিরালায় পালাতে পারতাম
সাথে এক টুকরো খিদে, আমার শব্দরা
আর একদম পাগলী সেই মেয়েটা।
.
জানি সম্ভব নয়
আমি কবি, আমি কোন দিনবদলের কবিতা কিংবা ম্যাজিসিয়ান নই,
কিন্তু আমি চাই আমার কবিতারা চরম উদাসীন রাষ্ট্র, সময়, সমাজ আর মানুষের
ঔদাসিন্যের এই শক্ত বর্মে ফাটল ধরাক।
আমি চাই আমার অক্ষরগুলো মানুষের হৃদয়ে জন্ম দিক ঈশ্বর
আমি চাই স্বরবর্ণগুলো অসহায় সময়ের মানুষের ঘুমের গভীরে
ভেসে ভেসে উঠুক মুক্তির ভুমিকায়,
আমি চাই আমার ব্যঞ্জনবর্ণরা দৃষ্টিহীন রাষ্ট্রের চোখের পর্দায়
ছুঁড়ে দিক লজ্জা,
আমি চাই পঙক্তিগুলো দশ হাজার ডেসিবলে চিৎকার করুক
মৃত মানুষগুলো কান্নার পাশে,তাদের আত্মীয়পরিজনের হয়ে
প্রশ্ন ছুঁড়ুক রাষ্ট্রকে
কেন?
.
কেন এই মৃত্যুমিছিল?
কেন এই ভন্ড গনতন্ত্র?
কেন মানুষের অধিকারবোধে চাপা দীর্ঘশ্বাস?
কেন?
আমি চাই এমন ছন্দ যা আম, কাঁঠাল নারকেল গাছের ঘুম ভাঙিয়ে
মানুষকে দেবে অক্সিজেন
আমি চাই এমন স্তবক যা সময়ের হাতে গুঁজে দেবে
একটা আস্ত স্টেনগান
সামনে দাঁড়ানো করোনা নিপাত যাক
নিপাত যাক ভন্ড রাষ্ট্রপিতাদের ষরযন্ত্র।
আমি চাই প্রতিটা ছেদ,যতি চিহ্ন,দাঁড়ি, কমা আর সেমিকোলন
ভাত, গম, শাক সব্জী
ঈশ্বরের দানা হয়ে ঝরে পড়বে বুভুক্ষুর মুখে।
.
আমি চাই আমার কবিতার বইয়ের পাতা থেকে
লাফিয়ে নামুক শান্তি,
প্রচ্ছদ ছিঁড়ে ফেলে কুচকাওয়াজ করুক আধা জাগ্রত মানুষের সমুদ্রে
সব বিশেষ্য, বিশেষণ, অব্যয়,
সময়ের চিৎকারগুলো থেকে হারিয়ে যাক
মানুষগুলোর কান্না
এই আমার আঘাত
এই আবার পেট
ওরা আমায় মেরে রক্তাক্ত করেছিল।
আর মৃত্যু নয়
এইবার মানুষগুলো বাঁচুক মানুষের ভুমিকায়, সময়ের মুক্তিতে।
No comments:
Post a Comment