কাঁচের টুকরো
... ঋষি
তখন আমি একুশ নাকি পঁচিশ ,ত্রিশ হতে পারে
মনে পরে না ,
মনে পরে একটা পথ চলতি মিছিলে সামিল আমি
হেঁটে চলেছি অনেকের সাথে।
গলা মেলাচ্ছি ,জিন্দাবাদ ,মুর্দাবাদ
কিন্তু কিসের মিছিল ?
স্লোগানে স্লোগানে সারা সময় জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে রিনরিনে কথকতা
কাঁচের টুকরো ,পায়ে ফুটছে।
.
রক্তাক্ত পায়ের দাগগুলো রাস্তার ধুলোতে
হঠাৎ সামনে পুলিশের ভেন ,
হঠাৎ এলোপাথারি লাঠি চলছে ,চলছে কাঁদানো গ্যাস
কিন্তু মানুষ তো এমনি কাঁদছে ,
তবুও।
আমি পালাচ্ছি অনেকের সাথে ,শহরের সাথে সময়ের সাথে
কিন্তু কেন পালাচ্ছি ?
.
কার প্রতিবাদ ? কিসের প্রতিবাদ ?
আমার মতো লোকটা সেই পালাচ্ছে আর এই পালাচ্ছে
পালিয়ে চলেছে ,
সবচেয়ে আশ্চর্য আজ আমি বুঝেছি সেই মিছিল আমার বিরুদ্ধে
সেই স্লোগান আমার মতো লোকের বিরুদ্ধে
সেই পুলিশগুলো ,সেই কাঁদানো বোমাটা আর কেউ না
আমারি নিজের লোক।
.
তাই তো আজ আমি ধ্বংসকে ভালোবাসি
ভালোবাসি মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং ,কর্পোরেট লাইফ
কিংবা শহরের অলিতে ,গলিতে বিক্রি হওয়া সেই সাজানো শরীরগুলোকে
যাদের শরীরে ব্যাধি ,যাদের হৃদয়ে জখম।
আর যারা ব্যবহার করে ডিওড্রেন তাদের প্রতি আমার করুনা হয়
হাসি পায়
শালারা সময় ঢাকতে অসময়ে লাগিয়ে ফেরে।
আমি বুঝে গেছি বহু আগে
প্রতিটি বিপ্লবের আঙুল আমার দিকে তাক করা
প্রতিটি সময়ের অসুখের জীবাণু আমি
কারণ আমি সময়ের দারিদ্রতাকে মানি নি কোনো দিন
কারণ আমি কচুরিপানা দেখলে মুগ্ধ হই
কারন আমি বৃষ্টি দেখলে একলা ভিজি
কারণ চলন্তিকাকে চিঠি লিখি রোজ আমার দিনান্তে
কারণ আমি ধর্ম মানি না
কারণ আমি রাষ্ট্রের সাজানো নিয়ম মানি না
কারণ আমি গণতন্ত্র মানি আর রাজতন্ত্রের ছেবলামিকে খিস্তি দি
কারণ আমার সাঁইত্রিশ বছর বয়সে আমি জানতে পেরেছি
আমি আদৌ মানুষ না
আর এই পৃথিবী আমার না।
No comments:
Post a Comment