আমি মিস্টার ভচ্চন নই
... ঋষি
.
আমি মিস্টার ভচ্চন নই
নই কোন আজকের ভারতবর্ষের স্বপ্নের পর্দার উজ্জ্বল মুখ,
আমি সাধারণ
তাই আমার মৃত্যুটাও খুব সাধারণ।
মেডিকেল, এম্বুলেন্, রাস্তায় রাস্তায় ঠোঁকর খেয়ে
মৃত সন্তানের স্মৃতি আগলে আরও সাধারণ আমার মা,বাবা আর আত্মীয়রা।
ভারতবর্ষের অলিতে গলিতে যে উপছে পরা একশো ত্রিশ কোটি
আমি তাদেরই একজন।
.
আমি জানি ঈশ্বর মানুষ হতে পারে না
তাই বলে আমার ছোট্ট পৃথিবীর একশো ত্রিশ নম্বর ঢাকুরিয়া লেনে
যে মানুষগুলো কোভিডের সাথে যুজছে
তারা ভালো করে খেতে পারে না আজ বহুদিন।
কারণ আমার রাষ্ট্রের ঈশ্বরেরা খাবারের বদলে খবর বানাতে ব্যস্ত
ব্যস্ত প্রতিদিনকার গনতন্ত্রে এঁকে দিতে রাজতন্ত্র।
.
জানি আমরা সাধারণ, আমাদের সত্যি বলতে নেই
বলতে নেই খালিপেটে আছি, বলতে নেই ত্রানের টাকা লুঠ হয়ে গেলেও,
বলতে নেই আমার রাষ্ট্র আজ শুধু বেশ্যাদের কবলে
যারা শরীর বদলাবার মতো গদিবদলের ধান্দা করে পার্টিঅফিসে বসে,
যারা ভোটের জন্য মানুষের বদলে মানুষ খুন করে
খুন করে আপনার প্রতিদিন
শুধু মিথ্যে কথায়।
.
কিন্তু তাদের সম্বন্ধে বলতে নেই
বলতে নেই এই সময় আমাদের লজ্জা
বলতে নেই এই রাষ্ট্র মানুষের নয় মৃতদেহের
বলতে নেই সত্যি কথা রাষ্ট্রের ঈশ্বরের নামে।
কারণ তাদের জনগন খেল না মরলো কিছু এসে যায়,
কিছু এসে যায় সেই কুকুরের মতো গ্রামেগঞ্জে ফুটপাথে বাঁচা
কিংবা আমাফানে ঘর হারানো মানুষগুলোর জন্য।
.
শুধু দিনবদল
শুধু সুর্যকে দেখার চেষ্টা লন্ঠনের আলোয়,
আর আমরা সাধারণ
আর আমরা আঁধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রাষ্ট্রের কাছে সংখ্যা।
আর আমি অজানা শবঘরে শুয়ে থাকা কোভিড আক্রান্ত মৃতদেহ
যার সৎকার সময়ের কাছে ভিতী
রাষ্ট্রের কাছে মাথা ব্যাথা,
খবরের পাতায় মুনাফার হেডলাইন
আর আপনাদের কাছে আহা,
কিন্তু তবু আমি সত্যি বলতে পারছি কারন আমার আর মৃত্যুর ভয় নেই।
.
বিশ্বাস করুন
এই সময় যদি মিস্টার ভচ্চনও সিনেমার পর্দায় থাকতেন
নিশ্চয় বলতেন
সাজানো ডায়ালোগে
মেরে প্যায়ারে ভারতবাসীও...
.
( পুনশ্চ ঃ এই কবিতা নিতান্ত সময়কে দোষী ভেবে লেখা, এই কবিতার সমস্ত চরিত্র
কাল্পনিক, সত্যের দায় সময়ের আমার দায় শুধু কলমে।)
No comments:
Post a Comment