অচেনা
... ঋষি
..
এইভাবে গল্পটা হাঁটি হাঁটি পায়ে গৃহপালিত হয়ে গেছে
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে তুমি যে মুখটা দেখে পাগল হতে
আজ আর হও না অরিত্র ,
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে পাশের তোমার মায়ের সাথে ঘরে শুলে
তুমি আমাকে মাঝরাতে ফোন করে ডাকতে
আজ আর সেই ডাকটা শুনতে পাই না
বরং মাঝরাতে আমি শুনি তোমার নাক ডাকার শব্দ পাশের ঘর থেকে।
.
আমি এখনও অপেক্ষায় থাকি প্রতিবছর
আর কেউ না আমার জন্মদিনটা তুমি ঠিক মনে রাখবে ,
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক যখন বারোটা
আগের মতো তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খাবে ,
কিংবা কোনো বিয়ে বাড়ি অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময়
শাড়ি পছন্দ করে দেবে ,কপালের টিপটা ঠিক করে বলবে
তোমাকে ঠিক পরীর মতো লাগছে।
.
অরিত্র তুমি জানো না আমি আজও তোমার ঘামের গন্ধটা
তোমার সিগারেট পোড়া ঠোঁটের স্বাদটা আমি খুব মিস করি ,
মিস করি তোমার অফিস থেকে ফিরে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে চুমু খাওয়া
কিংবা বারংবার আমার চোখের তলায় কালি দেখে প্রশ্ন করা
তুমি ভালো আছো তো সোনা।
অরিত্র আমি জানি আজকের আমিটা দেখতে আর আগের মতো নেই
তোমার সংসারের দায়িত্ব ,তোমার সন্তানের দায়িত্ব
কখন যেন আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে,
কখন যেন আমি নিজের থেকে তোমাকে তোমার সংসারকে প্রাধান্য দিয়েছি ,ভালোবেসেছি
কিন্তু আমি হারিয়েছি আমার সেই সুন্দর চেহারাটা
যেটা তুমি ভালোবাসতে।
.
অরিত্র বিশ্বাস করো আজকের এই আমি
আর পুরোনো সেই আমিটার তফাৎ শুধু এটাই
যে দিনে দিনে আমি তোমার আরো কাছে গেছি ,
তোমাকে আরো ভালোবেসেছি।
আর তুমি দিনের পর দিন শুধু সরে গেছো আমার থেকে অনেক দূরে ,
আজকের বালিশের ফাঁকে দূরত্ব দেখে মনে হয়
আমরা দুজনে দুটো আলাদা অন্য গ্রহের বাসিন্দা।
দুটো আলাদা পৃথিবীতে আমাদের বাস
আর আমাদের যোগাযোগের,একসাথে থাকার একটাই কারণ
সমাজ
আমার মাথায় সিঁদুর
তোমার সন্তান
আর তার বাইরে আমরা বহুদিন অচেনা।
.
No comments:
Post a Comment