মানুষ জন্ম
... ঋষি
.
লোকে বলে বড় গম্ভীর হুমদোমুখো আমি
আমি বলি সময়ের হিসেবে আমার বয়স নিতান্ত কম না।
চোখে চশমা নেই বটে
বুকে ব্যাথা আছে,
আছে এক পাহাড় সময়ের শোক এই বুকে পাথর
আর একটা জ্যান্ত নদী চলন্তিকা তুমি।
.
সত্যি বলতে কি চায়ের দোকানে আমি শুনতে পাই
রাষ্ট্রের খবর,ঝড়, বৃষ্টি মেঘের খবর, অনবরত মৃত্যু আর মানুষের খবর,
বাড়ির মহিলাদের কাছে আমি শুনতে পাই
নিজের ছাড়াও অন্যদের হাঁড়ির খবর, হাজারো গসিপ আর নিয়মের ভালো মন্দ,
বন্ধুদের আড্ডায় আমি শুনতে পাই হা, হুতাস আর অভাব
সেখানে আমি বুঝতে পারি মেয়েরা কি করে বৌদি হয়ে যায়।
শুধু সময়ের কাছে দাঁড়িয়ে আমি ধাতস্থ হতে পারি
বুঝতে পারি আমি কোথায় দাঁড়িয়ে
কে আমি
আর কি আমার যোগ্যতা।
.
শুধু সময়ের দরজা খুলে আমি ঢুকে পড়ি সেই বাড়িটায়
যেখানে আমার চারপাশে হাজারো মানুষের চিৎকার,
সন্তান হারা মায়ের কান্না,ধর্ষিতার যুবতীর কান্না
কান্না সেই সাংসারিক মহিলার
যাকে নিত্য ব্যাবহার করে সমাজ তার নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে,
যাকে নিয়মিত নিসব করে সম্পর্ক দায়িত্বের আছিলায় ।
আমার ছাকনি চোখে উঠে আসে অসহায় মানুষের হাহাকার
হাহাকার কর্মহীনতার, হাহাকার খালিপেটে মিডডে লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলোর
হাহাকার সেই সন্তানের যার হাতে স্লেটের বদলে সমাজের পাপ
হাহাকার সেই ছেলেটা যে জানে না তার পরিচয়।
.
এর পরও আমি জানি আপনারা বলবেন আমি হুমদোমুখো গম্ভীর
অনেকেই বলবেন আমি দুতিন কলম আঁচড় কাটি বলে আমি কবি,
আসলে কি জানেন এই সব যন্ত্রনার আমার উপশম নেই
তাই আমার চিৎকার, চেঁচামেচি আর ভালো লাগে না
ভালো লাগে না অন্যের মতো বিনা কারণে দাঁত কেলিয়ে হাসতে।
তাই আমি সময়ের বাড়িটার দরজা বন্ধ রাখি
জুতোগুলো খুলে রেখে আসি রাষ্ট্র নামক নিচের তলার সিঁড়িতে,
আর পোশাক সব খুলে পড়িয়ে দি আমার রাষ্ট্রের হাভাতে মানুষগুলোকে ,
তারপর চলন্তিকাকে বলি দেখ আমি নগ্ন
দেখ আমি শিশু ।
চলন্তিকা আমার হাতে তুলে দেয় কলম
বলে লেখ সময়
নিজের মতো করে
বলে লেখ ধ্বংস সময়ের পাপের আর মানুষ জন্মের ।
No comments:
Post a Comment