অনিন্দ্য (১০)
.... ঋষি
সময় বোধহয় থামে না কিছুতেই অনিন্দ্য
বুবুন যেন আবার তুই হয়ে সেকেন্ড ইনিংস খেলছে আমার জীবনে,
বুবুন চাকরী করছে এখন
শহরের এক নাম করা সংবাদপত্রের চিফ এডিটর আমাদের বুবুন,
তোর মতো ভাবগতিক
যখন চশমা চোখে খুব গম্ভীর হয়ে বই পড়ে, কিংবা কিছু ভাবে
মনে হয় তুই যেন আবার আমাকে পাগল করছি।
.
আমি ভালো স্ত্রী হতে পেরেছি অনিন্দ্য
হতে পেরেছি ভালো মা,
অনিকেত বুড়িয়েছে তাই বোধহয় একটু বেশি খিটখিটে,
আমিও আজকাল গ্যাস, বদহজম নিয়ে বেশ ভুগছি।
অনিকেত সেদিন একটা পারিবারিক গেট টু গেদারে আমার প্রশংসা করছে
বলছে হ্যাজবেন্ড হিসেবে সে কতটা গর্বিত
সু স্ত্রী,সু গৃহিনী, পারফ্যেক্ট বেড পার্টনার,পারফ্যেক্ট মা
আমার হঠাৎ কান্না পেলো তোকে মনে করে অনিন্দ্য
আমি পারফ্যেক্ট প্রেমিকা হতে পারি নি।
.
বুবুনের পাঁচবছরের জন্মদিনের দিন সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলি
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম
কিন্তু তোকে বোঝাতে পারবো না আমি সেদিন সময়ে ছিলাম
সমাজে দাঁড়িয়ে ছিলাম একা।
অনিন্দ্য তুই সেই পুরুষ যাকে আমি ভালোবাসি নি
তবে তুই আমাকে ভালোবাসতিস,
আসলে আমি সারাজীবন ধরে বুঝতে পারি নি
কে যোগ্য ছিল না, আমি না তুই?
তবে এটা কি, আজ এতবছর পর তুই কেন হঠাৎ উড়ে আসিস
পাগল করিস আমায়,
আমি বেশ শুনতে পাই আজও তোর কন্ঠ
আমারও চিৎকার করে আজ বলতে ইচ্ছে করে
"নবীন কিশোর, তোমায় দিলাম ভূবনডাঙার মেঘলা আকাশ
তোমাকে দিলাম বোতামবিহীন ছেঁড়া শার্ট আর
ফুসফুস-ভরা হাসি
দুপুর রৌদ্রে পায়ে পায়ে ঘোরা, রাত্রির মাঠে চিৎ হ’য়ে শুয়ে থাকা
এসব এখন তোমারই, তোমার হাত ভ’রে নাও আমার অবেলা। "
No comments:
Post a Comment