Wednesday, April 24, 2024

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই
আমি তুমি হয়ে যাই
তোমার মতো আটপৌরে শারী পড়ি, হাতে কলম
কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি 
হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল, কড়াইয়ে তেল 
সবকিছু হিসেবমত হয় না আমার মত অনভ্যস্ত হাতে
শুধু মন লিখে ফেলি কবিতার পাতায়। 
.
আমার দুপুরের কবিতায় আমি ভিজে চুল বিছিয়ে 
একটু গড়াই,
মুঠোফোনটা হাতে নিয়ে খুঁজি পুরনো বন্ধু
একটু খবর নি, কুশল বিনিময়ে,
তখন আমার কবিতার পাতায় শব্দরা আমার সন্তান 
আমার পাশে ঘুমোয়
হঠাৎ আনমনে থাকতে, থাকতে
আমিও কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ি কবিতায়। 
.
বিকেলে খোলা ছাদে গিয়ে দাঁড়াই
পড়ন্ত রৌদ্র বুকে মনে করি ভালোবাসার শব্দ
পাখিরা বাড়ি ফেরে তখন, সন্ধ্যে নামে
উলু দিয়ে শাঁখ বাজাই,আমি কবিতাকে প্রণাম করি
তোমার বাড়ি ফেরার সময় হলো তবে। 
তুমি এলে চায়ের কাপটা এগিয়ে খুলে বসি দিনান্তের সংসার
কিছুক্ষন তারপর চোয়ালে হাত দিয়ে বসি
বড্ড ক্লান্ত লাগে,কখন যেন রাত হয়ে যায় কবিতায়। 
.
তারপর সন্তানের পড়া, রাতের খাবার, আমাদের সংসার
কবিতায় মাথা রাখি, 
সারাদিনের ক্লান্তির পর কবিতার পাতার ঘুম নেই
ক্রমাগত চলতে থাকে কলম, 
কখন যেন তোমার মত কবিতাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি
ঘুম ভাঙে, নিজিকে আয়নায় দেখি 
খুঁজে পাই নিজেকে আবার রোজনামচায়
কিন্তু সত্যি হলো আমার কবিতা পেলেই
আমি তুমি হয়ে যাই,আর আমার কবিতারা আমি। 
.
একটা কবিতা আমি তুমি
.. ঋষি


ওয়েল পেইন্টিং

কথাগুলো জটিল নয়, শুধু যন্ত্রনার
আসলে আমার মধ্যে কতটা আমি এখনও অজানা
আর অজানা শব্দটা সত্যিএকটা রোগের নাম,
এ ঠোঁটের তৃষ্ণা নিয়ে ক্রমাগত মহামারী সময়
অথচ স্মৃতির সিঙ্গেল মগের ঠোঁটে তোমার ঠোঁট
এক অপরুপ নির্লোভ পেইন্টিং
যেখানে নিখোঁজ এই গোলক, এমনকি আমাদের উপস্থিতি। 
.
যেদিন কুরুক্ষেত্রকে তুমি বলে জেনেছি
সেদিন দু:খ থেকে হেঁটে গেছি ভালোবাসার ষড়যন্ত্রে, 
তারপর মুগ্ধতার স্যাটেলাইট, তুমি আলো, আলোকবর্ষ
নির্বাসনে আমি,
আজ ঈশ্বর এবং স্মৃতি
দুটোকেই ওয়েলপেইন্টিং এ ফুটিয়ে তুলছি নিজস্ব  কারাগারে
যেখানে তুমুল প্রেমিকের বুকে মুহুর্তরা রঙিন। 
.
আমাকে কিনে নিয়েছো তুমি বহুদিন
সবকিছু এই শহরে ধোঁয়ার মতই একতরফা
আমি স্নান সেরে পাখি হচ্ছি মুহুর্তে 
আর পরমুহুর্তে দুষন ফেরৎ তোমার উপস্থিতি পাখির পালক 
এই হারাচ্ছি, জড়িয়ে ধরছি,
তুমি যুক্তির বারান্দায় তোমার প্রিয় ফুল 
আর আমি লোডশেডিংএ তোমার শরীরে ঘাম 
গড়িয়ে নামছি,আটকে যাচ্ছি তোমার বুকের ফাঁকে।
আমি এগিয়ে যাচ্ছি কারন তুমি যাচ্ছো আমার সাথে
আমি পিছিয়ে যাচ্ছি কারন তুমি দাঁড়িয়ে 
তোমার সমস্ত অবয়বের গন্ধ নিয়ে জড়িয়ে ধরছি নিজেকে
এগিয়ে আসছে ঠোট
বুঝতে পারছি
একটা সম্পুর্ণ পেইন্টিং এর বাইরে দাড়িয়ে আমি লোকটা 
পাগল ও প্রেমিক। 
.
ওয়েল পেইন্টিং
.. ঋষি 



Tuesday, April 23, 2024

অবান্তর

একটা নির্জন বিকেলের সাথে আছি  
এইমাত্র ঝুপ করে কফির কাপে সন্ধ্যে নামলো শহরে 
শহরের রাস্তায় ডেসিবেলের হিসেবে এই সব অবান্তর 
অবান্তর শহরের ভিড়ে আমার কবিতা ,
তবুও বলতে চাওয়া এই শহরে প্রতিটা হৃদয়ে পাখিদের ঘর আছে 
যারা নিয়ম করে আকাশ খোঁজে 
 অনিয়মিত সাজানো ওয়াক্তের সাথে বোঝাপড়ার খাঁচায় । 
.
এই শহর ঠুনকো কেচ্ছা আর ধারাপাতে বিশ্বাস করে 
শহরের বোবা পাটাতনে কিলবিল করা হাজারো জনরোষ 
তবু চুপ সব ,
আপনি মন্দিরে ঘন্টা নাড়বে ,বেজে উঠবে ভোরের আজান এখানে 
আপনি প্রতিবাদ করবে ,আপনার মুখ জ্বলে যাবে অনৈতিক এসিডের আগুনে 
আপনি সময়কে ,অরাজকতার ধর্মকে ,মিথ্যাকে শূলে চড়াবেন 
আপনাকে ঘিরে ধরবে নীতি বিহীন ধ্রুপদী ধারাপাত। 
.
এ শহরে আইপিএল ম্যাচ হবে ,গণেশ পুজোতে মাইক বাজবে 
ইনবক্সে সেক্স চ্যাট হবে ,রাস্তায় ঘাম ,কাজের অভাব হবে 
বাসে ভিড় , শ্বাসে নিকোটিন ,পার্টি বদল , নির্মল হৃদয় 
হাজারো সংযমের পরে কন্ডোমে ফুটো হবে 
সব আপনি মেনে নেবেন ,কি করা যাবে ?
এ শহর চলছে গতিতে ,মানুষ ভাবছে আজকের দিন
এ শহরে কাল বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। 
পাশ ফিরবেন ,দেখবেন চটকে গেছে আপনার বিছানার ঘুম 
হাত বাড়াবেন তুমুল নেশায় কিংবা আদরের নিজের বিবাহিত জীবনে 
দেখবেন জীবন মানে সংযম ,
শুধু সহ্য করবেন ইথারে চোবানো এ শহরে যাবতীয় ইলিউশন 
আর অনুভব করবেন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কে বারংবার সময়বিদ্ধ আপনি 
বাধ্য নপুংসক নাগরিক। 
.
অবান্তর কবিতা 
... ঋষি

Monday, April 22, 2024

আমরা যে বড় হয়ে গেছি

আমরা সকলেই আমাদের কাজ করছি 
ইচ্ছেদের নিয়ম করে খুন করছি 
জানলার লোহার রড চেপে ধরে অসহায় আকাশ দেখছি 
খুঁজছি আকাশে উড়তে থাকা পাখিদের ,
নিজের ভিতর শৈশবটাকে হাততালি দিয়ে উঠতে দেখছি প্রায়শই 
                 তবুও  হঠাৎ মুহূর্তগুলোয় 
 চুপ থাকছি আমরা যে সকলেই বড় হয়ে গেছি
তাই তো একাও। 
.
চরাচরে তীব্র ক্লান্তি 
শহর জুড়ে দূষণের কাফনে নিজেকে জড়িয়ে 
আমরা বৈধতা খুঁজছি ,
চোখমুখের চাপা আগুনকে বশ্যতাস্বীকারে বাধ্য করে ,
আমরা সকলেই ঈশ্বর কিংবা ভন্ড 
নিজে ঠকছি অথবা নিজেকে ঠকাচ্ছি। 
.
সকলের স্বপ্ন আছে 
অথচ স্বপ্নের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এ শহরে কবিতারা বিধবা 
সারা আকাশ যেন ব্ল্যাকবোর্ড 
কুয়াশা জড়ানো কবিতায় ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা ফুটে উঠছে  
কম্প্রোমাইজ,হঠাৎ মেঘলা মন। 
আমরা সকলেই উত্তরের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করছি নিজেকে 
              একটা কনফিউশান 
অন্ধকারে মশারি ঢাকা ঘর্মাক্ত শরীরটাকে 
এগিয়ে রাখছি সময়ের থেকে 
কারণ আলাদিনের প্রদীপখানি খুব কম লোক পেয়েছে 
আর সেই পারস্যের মাদুরখানি  ,
                            সত্যি কি পালানো যায়। 
.
আমরা যে বড় হয়ে গেছি 
... ঋষি

পরকিয়ার গল্প

নিখুঁত খানিকটা মুহূর্ত 
আজ ,কাল ,পরশু কিংবা সময়ের পারাপারে মাঝামাঝি কোথাও
একলা মাঝি হাঁক দেয় 
জীবন বাবু কোথাও কি তুমি আছো ?
আর কোন যাত্রী বাকি আছে চড়তে ,চলে আসুন তাড়াতাড়ি।
আজ  আমি আম ডাল আর ভাত , কাল  তুই
কথাগুলো ভুখা মানুষের রেড কার্পেটে হাঁটার মতো 
সময়ের এমাথা থেকে ওমাথা সিসি টিভি পর্দায় ফুটে ওঠে
তোর পরিপাটি  আতর, জাফরান আর  কিছু মশলা।
.
সময়কে কতক্ষন ম্যারিনেট করতে হয় 
কোনো রেসিপি লেখা হয় নি মানুষের ভাবনায় 
লেখা হয়নি কতটা সুখ ,কতটা দুঃখ ,কতটা অনুভূতি মিশিয়ে 
তৈরী হয় সময়ের মুহূর্তগুলো ,
সূর্যাস্তের লালচে ঝোলে
তোর ঠোঁটের একপাশে লেগে থাকা কালোজিরে
বড্ড বুক কামড়ায়  ।
.
নিখুঁত খানিকটা মুহূর্ত 
নিখুঁত ভাবে  নদীর তীরে হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এসে দেখি
মাঝি উধাও 
      এখন শুধু দূরে পার ,
আম আঁটির ভেঁপু আর বনফুলের সুবাসে 
যদি কোনো প্রেজেন্টেশান না লিখে কবিতা লিখি 
জীবনের সিসিটিভি ক্যামেরাতে ফুটে ওঠে 
সামাজিক এলিবাইয়ে তৈরী অতঃপর 
এটা একটা বিশুদ্ধ পরকিয়ার গল্প। 
.
পরকিয়ার গল্প
... ঋষি

Sunday, April 21, 2024

ঈশ্বররূপী


কবিতা থেকে মৃতদেহে 
বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে কবিতা আর 
আর কবিতার বলতে চাওয়া সময় 
একটা মৃতদেহের কবিতা ,
তুমি সত্য না আংশিক ,তুমি সত্য না অবয়ব 
জন্মের থেকে মৃতদেহের কবিতা তোমার থেকে শেখা। 
.
হাতের উপরে ভালোবাসার হাত আজও প্রাসঙ্গিক 
কিন্তু ভালোবাসা ?
আমি কাকে বলছি 
কিসের দুঃখের প্ৰকাশ আজ  মৃত্যুর তিন বছর পর  ?
ছোটোখাটো মধ্যবিত্ত চশমা পড়া টাকমাথা ভদ্রলোক অনেকেই আছে শহরে 
কিন্তু কলম 
কিন্তু কলমের দোষ কজনের 
কজনের সত্যি বলার রোগ ?
.
আমি ঈশ্বরের কবিতায় আলাদিন খুঁজেছি 
আমি তোমার মধ্যবিত্ত কবিতা থেকে শব্ধহীন হতে শিখেছি 
লিখতে শিখেছি আয়ু ,
আমি তোমার কাছে শিখেছি কিভাবে নষ্ট হতে হয় 
কিভাবে ঈশ্বরকে বলতে হয় 
সব "নষ্ট হয়ে যায় প্রভু, নষ্ট হয়ে যায়।"
জানি তোমার নাম 
অথচ এও জানি তোমার  কোনো নাম তো নেই, নৌকো বাঁধা শুধু 
তোমার কোনো ধর্ম নেই
যা কিছু তোমার  চার পাশে ছিল
সমস্তটাই নির্বাসন,
জানি এ শহরের নির্বাসিত ঈশ্বর আজ আর নেই 
তবে রয়ে  গেছে  কিছু বহিরাগত 
যারা আমার মতো তোমাকে কবিরূপে ঈশ্বর মানে 
মাথা নিচু করে বলে " কমরেড তোমাকে সেলাম "। 
.
ঈশ্বররূপী 
... ঋষি 
.

কিছু একটা

তুমি বারংবার গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেও আমায়
তবুও আমি বারংবার গিয়ে দাঁড়াই নিলজ্জের মতো তোমার দরজায়
মনে হয় কিছু একটা আছে 
কিছু একটা অবশিষ্ট,
কিছু একটা আমার সারা মুহুর্তে কিলবিল করে
ঘুনপোকার মতো শব্দ করে মাথার ভিতর। 
.
এই কিছু একটাই তোমার বাড়ির কলিংবেল মানে না
যখন তখন বিনা নোটিশে উপস্থিত হয় তোমার বাড়িতে
দরজা ঠেলে হাজির হয় বসার ঘরে
সোফায় জমিয়ে বসে, পা নাচায়,তোমার কাছে চা চায়
জানি তুমি নিরুপায় হয়ে আমাকে গালাগাল করো
গলাধাক্কা দিয়ে আবার তাড়িয়ে দেও আমায়।
তখন রাস্তা দিয়ে আমার মতো কেউ ফিরতে থাকে
নিয়ম করে ভাবে সত্যি কি আমার কোন লজ্জা নেই 
সত্যি কি আমার তুমি ছাড়া কিছুই নেই 
কান্না পায়,  বিষপান করে চলে প্রতি পদক্ষেপ
আর ঠিক তখনি আবার সেই কিছু একটা
আমাকে জ্বালায়,আমাকে পোড়ায়
আবার সেই কিছু একটা সূর্যাস্তে সূর্যোদয় ঘটায়
সিসের হৃৎপিন্ড আবার স্পন্দিত হয়
আবার আমি গিয়ে দাঁড়াই তোমার বাড়ির দরজায়।
আসলে সমস্ত জৈবিক ঋতুতেই এই কিছু একটা বাঁচে
তোমার হাজারো গঞ্জনায় কলার উঁচু করে হাঁটে
মনে করায় আমি বেঁচে আছি
ভীষন অসভ্য এই কিছু একটা
শিস দিয়ে গান গায় আনমনে
ভালোবাসি,ভালোবাসি সেই সুরে.......। 
.
কিছু একটা
... ঋষি 

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শারী পড়ি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল,...