Saturday, November 30, 2019

নক্ষত্র হৃদয়



নক্ষত্র হৃদয়
... ঋষি

তুমি বারান্দায় এসে দাঁড়ালেই
নক্ষত্ররা তোমার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়,তুমি সরে আসো আকাশে 
আমি অবাক হই ,
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
তোমার শরীরের জোনাকির আলোগুলো ,নক্ষত্রের আলোর সাথে কাটাকুটি খেলছে
চোখ ঝলসে যায়
মাটির পৃথিবীতে দাঁড়ানো একটা সাধারণ মানুষের চোখ বন্ধ হয়ে যায় ।
.
আমি ছাদের উপর দাঁড়াই
আকাশের দিকে দু হাত তুলে তোমাকে খুঁজে পাই নক্ষত্র বুকে।
আমার চারিপাশে তখন অজস্র জোনাকি
কি যেন বলতে চায় আমায়,
শীতের আকাশ থেকে ঝরতে থাকা উপলব্ধি ,অনন্ত আলো
তোমার শরীরের আলোতে ঝলসে যায় আবার।
তোমার শরীরে গন্ধ
যেন আরণ্যক সভ্যতার পাহাড়ের শীর্ষে অগ্ন্যুপাত ঘটায়
নেমে আসে মাটির পৃথিবীতে ধ্বংস লিখব বলে ।
জানি না ভালোবেসে ধ্বংস করা যায় কি না
কিন্তু আমার তোমাকে ভেবে পুড়ে যেতে বেশ ভালো লাগে। 
.
তুমি বারান্দায় এসে দাঁড়ালেই
নক্ষত্ররা চুপি চুপি তোমার কানের কাছে ভালো লাগার গান শোনায়। 
আমিও এফএম  মির্চিতে শুনতে থাকি সাথে তোমার থাকার গান
তোমার থেকে নক্ষত্র দূরত্বে তোমাকে পাবার। 
প্রতিদিন ঠিক এইভাবে রাত বাড়তে থাকে
বাড়তে থাকে আমার  নক্ষত্র হৃদয়ের জোনাকির খেলা।
জোনাকিরা সারা আকাশ ময়
সারা হৃদয়ে
তোমাকে ছুঁয়ে ,তোমার গন্ধে বিভোর আলোকে কাটাকুটি খেলায় ব্যস্ত। 
আমার ঘুম আসে
আমি ঘুমিয়ে পড়ি,
তোমার আলোর বারন্দায় আলো তখন নিভে যায় বোধহয়
তুমিও তখন ঘুমোও তোমার আকাশে।

রাষ্ট্র

রাষ্ট্র
... ঋষি

লাশ হয়ে গেছে
ঠিক বুঝতে পারি  শরীরটা শুধু বাতাসে দুলছে
আজ বহুদিন ,
সময় সাক্ষী ,
সাক্ষী মানুষ
আর কাঁচের চোখে লাগানো সময়  শুধু  ভোলবদল ,বিছানা বদল 
অন্যায় মানতে শেখাচ্ছে।

লিগামেন্ট ছিঁড়ে বেরিয়ে আসছে সময়
বাড়তে থাকা সবজির দাম ,মাছের বাজারে মাছগুলো চোখ বন্ধ করে
অথচ মাছের যে চোখের পাতাই নেই।
আমরাও মাছের মতো শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি
বিক্রির বাজারে শুয়ে।
লিগামেন্টে ছিঁড়ে গেছে ,না ঠিক তা নয় ব্লেডের ধারালো চুমুতে
বেরিয়ে আসছে কষ্ট
প্রতিটা অঙ্গ, অন্ত্র এমনকি শিরদাঁড়া নিঝুম হতাশ
বিদ্রোহ করছে শরীর
এম্বুলেন্স ডাকতে হবে।

চিৎকার করছে এম্বুলেন্স সময়ের দরজায়
নিঝুম রাষ্ট্রের শরীরটা স্ট্রেচারে করে তোলা হচ্ছে ,
কোথায় নিয়ে যাচ্ছি রাষ্ট্রকে ?
মানুষ থেকে দূরে ,মানবিকতা থেকে দূরে
যেন কোনো অন্য গ্রহে যেখানে লোভ ,হিংসা ,সাম্প্রদায়িকতা আর লজ্জা।
লজ্জা বলতে মনে পড়লো
কিসের লজ্জা
পরিকসংখ্যান বলে যে দেশে প্রতি ৫২ সেকেন্ডে একজন নারী ধর্ষিত।

ডাক্তার আসছে
স্টেথোস্কোপ,প্যাথলজি ল্যাবে ডজন ডজন ডাক্তার
হাজারখানেক প্রেস্ক্রিপ্টশন
তাতে লেখা হাজারো ওষুধের নাম।
মানুষ বেড়ে চলেছে ক্রমশ,
ডাক্তারের ভূমিকায় অনেকটা মানুষের মতো দেখতে একটা জীব
তাদের রজার ওষুধ জানা আছে,
জানা আছে ট্রিটমেন্ট
অথচ কেউ কিছু করছে
সময় বদলাবার নাম মানুষগুলো বদলে যাচ্ছে ভাবনায়
অথচ অদ্ভুত দেখো রাষ্ট্রের শেষ নিশ্বাস উঠছে। 

Friday, November 29, 2019

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তো নয়


প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তো নয়
.... ঋষি

কে প্রিয়াঙ্কা ?
আরে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তো নয়  ,ধুর ছাড়ুন তো ,
আপনার বাড়িতে আগুন লাগে নি।
সুতরাং পিঠ ফিরে  শুয়ে পড়ুন
কি করবেন আপনি ,আপনি অসহায়
এই রাষ্ট্র ,এই সমাজ ,সর্বোপরি সময় সব মেনে নিতে হয়
সত্যি বলতে নেই,
সুতরাং পিঠ ফিরে শুয়ে পড়ুন।

একবার সত্যি বলুন তো
আপনি কি কখনো পথ চলতি প্রিয়াঙ্কাকে এই চোখে ,
বুঝলেন না শরীর হিসেবে দেখেন নি।
ওহ আপনি সাধু পুরুষ
আপনার যৌনাঙ্গ শুধু আপনার সংসার  ধর্মে লিপ্ত।
কি বলছেন মশাই আমতা আমতা করে
আরে ব্রায়ের স্ট্র্যাপ দেখা যাচ্ছিল , আরে অমন করে ঝুঁকলে বুকের  ফাঁক
দরজা ঠিক করে বন্ধ করে নি তাই আর কি উরুর ....
বুঝলাম
আচ্ছা আপনার মা হলে ,বোন হলে ,স্ত্রী হলে কিংবা মেয়ে
ভাবুন তো
কি বললেন একদম বাজে কথা না ,
আচ্ছা চলুন তবে
প্রত্যেকটা মাগিকে ধরে ধরে এমন করে পুড়িয়ে মারি।

মাগি তো বটেই
যে দেশে মেয়েরা খুব সহজে সমাজে মাগি কিংবা মেয়েমানুষ।
যেখানে পথ চলতি রোজ শুনতে হয়
মেয়েমানুষ এমন করে হাঁটে ,এমন জামা পরে কিংবা ভিড় বাসে ওঠে
তাদের কে আর কি করা যেতে পারে।
আরে মাগি না হলে
রোজ শুনতে হয় অমন করে কথা বলতে নেই ,গাছে চড়তে নেই
চুলে তেল দিতে হয় ,রাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হয় ,
অচেনা লেখার সাথে কথা বলতে নেই
সেখানে আর কি করা যেতে পারে অবলাদের ধর্ষণ ছাড়া।

কি আগুন জ্বলছে ?
ধুর বাবা আমার কি ,আমার তো সাত বছরের ছেলে।
কি চামড়া পুড়েছে
ধুর বাবা আমার কি আমি পিঠ ফিরে শুই।
চারজন মিলে একটা শিক্ষিত মেয়েকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে দিলো
আরে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তো নয় হায়দ্রাবাদের প্রিয়াঙ্কা যে ,
যদি আপনার মা হতো কিংবা মেয়ে ?
শালাদের ন্যাংটো করে কেটে দিতাম না। 

মাটির ঘোড়া


মাটির ঘোড়া
... ঋষি

তোমার থেকে আমার দূরত্ব কত
আমার বুকের কাছে তোমার ঠেকে  যাওয়া পিঠ যেমন।
এটা কোনো আশ্রয়ের প্রশ্ন নয়
প্রশ্ন নিজেদের গভীরতার।

একটা নদীর দুপাশে হেঁটে চলেছি আমরা
আজ বহুযুগ।
নদীর উপর একটা সাঁকো যা শুধু পেন্সিলস্কেচে আমাকে ,
দূরে সূর্য ডুবছে বোধহয়।
ঋতু বদলায় ,নদীর জল বাড়ে আবার কমে
কখনো বৃষ্টিতে ভেজা সোঁদা মাটি  ,কখনো শুকনো
তোমার শোয়ার ঘরের জানলা থেকে আকাশ দেখা যায়
সেই আকাশ যা শুধু আমাদের জুড়ে রাখে।

তোমার ঘরের সাজানো সভ্যতা ,সভ্যতায় ড্রেসিংটেবিলে মাটির ঘোড়া
মাঝে মাঝে জ্যান্ত  হয়ে ওঠে ,
ঠিক তখন তোমার মনখারাপ।
ঠিক তখনি তুমি আকাশের দিকে হাত বাড়াও
ফিরে পেতে চাও সেই শৈশব ,আমচুরি ,চড়ুইভাতি
আর আমাকে।
তখন একটা জ্যান্ত ঘোড়া দৌড়োতে থাকে নদীর পাড় ধরে
পেরিয়ে আসতে থাকে পুরোনো তোমাকে ,তোমার ঘরে
ফিরে আসতে থাকে স্মৃতি যেন
লুকোচুরি সময়।
তুমি হঠাৎ হেসে ওঠো হয়তো চোখের কোনে জল
 হাত বোলাও টেরাকোটা মাটির ঘোড়ার পিঠে খুব আদর করে
আর তখনি আমি সামাজিক হয়ে যাই।  

কোহিনুর


কোহিনুর
.... ঋষি

একটা মধ্যাহ্নে আসা অসামাজিক সূর্য অস্ত গেলে
সময়ের কবিতায় কি এসে যায়।
জানি তুমি সেজেগুজে বিয়ে বাড়ি যাবে
সামাজিক মানচিত্র ,
তোমার সাঁঝের পর্দায় সিলিং ভেজানো মন্তাজে
আকাশের নূর
কোহিনুর চিরকালীন সময়ের ছিল।

আমি দাঁড়িয়ে ধর্মতলার মোড়ে
প্ল্যাকার্ড হাতে ,তাতে লেখা  সকলকেই তো চলে যেতে হবে।
কেউ তাকাচ্ছে না আমার দিকে
হঠাৎ অন্ধ ভদ্রলোক গান করতে করতে আমার কাছে ভিক্ষা চাইলো।
আমি আমার ছেঁড়া পকেট হাঁতড়ে
তার হাতে তুলে দিলাম সমাজ।
অদ্ভুত ভাবে তাকালো আমার দিকে একটা আফসোস
শব্দ ভিজিয়ে পেট ভরে না বাছা
বরং দুছিলিম নেশা দিতে পারতে
বাঁচা।

সেদিন নিমতলার ঘাটে অবাক হয়ে দেখলাম গাঁজার ছিলিম
মরা মানুষের গন্ধে ,চোখে ভেজা আত্নীয়রা
নেশায় মত্ত।
অবাক হলাম এই ভেবে সারা সময় জুড়ে নেশা করা অসামাজিক
আর এরা তো সামাজিক
তবে ভন্ড।
সমাজ ভন্ড ,আদলে লেগে আমার শৈশবের চোখ
পথ চলতি লোক
হাসছে
প্রিন্সেস ডায়ানা তার তথাকোচিত ভঙ্গিমায়
সমাজে হাসছে
নগ্নতায়। 

Thursday, November 28, 2019

ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো


ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানোই  ভালো 

.... ঋষি

আমি সেই মেয়েটাকে চিনি
যে তার লম্পট স্বামী সিগারেট ছেঁকা দেবে বলে খুলে দেয় ব্লাউসের হুক।
আমি সেই মেয়েটাকে চিনি
যে সামাজিক বলে প্রতিদিন হয়ে চলে ধর্ষণের স্বীকার।
আমি সেই মেয়েটাকে চিনি
যে নিজের শরীরের পরিবর্তনের লজ্জায় আজকাল খেলার মাঠে যায় না।
আমি সেই মেয়েটাকে চিনি
যে সংসার চালাতে প্রতিদিন শরীর খুলে রাস্তায় দাঁড়ায়।

আমি এরকম আরো অনেক চিনি
চিনি শেফালী দিকে
যে পথচলতি যুবক ধাক্কা মারলো বলে ঘুরে দাঁড়িয়ে চড় মারে।
চিনি ক্রিস্টিনিকে
যে সমাজের বিরুদ্ধে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত।
চিনি রোশনিকে
যে বরের গার্লফ্রেন্ড আছে বলে পরপুরুষের হাত ধরে রাস্তায় ঘোরে।
চিনি কাজের মেয়ের বিধবা কমলাকে
যাকে কাছে পাবে বলে গৃহকর্তা তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি পাঠান।

আসলে গল্পটা কি
পুরুষতান্ত্রিক প্রোফাইলে স্বামীর ফোন ঘন্টার ঘন্টা ব্যস্ত আসতে পারে।
সামাজিক হিসেবে তোমাকে ভালো লাগছে না বলে
পুরুষ বাজারি মেয়েকে ঘরে ঢোকাতে পারে।
শরীরের খিদে এমন খিদে পুরুষের
যে যুগযুগ ধরে সোনাগাছির দরজায় লুটিয়ে পড়তে পারে।
কিংবা আরাম হচ্ছে বলে
নিজের বিয়ে করা স্ত্রীকে ন্যংটো করে চাপকাতে পারে।

সবটাই হিসেবমাফিক ভীষণ সামাজিক
পুরুষ হলেই যুগে যুগে কৃষ্ণ ,তার যৌন থলিতে অবতার লেখা
আর সেখানে রাধা শুধু হারামজাদি,তার যোনিতে অপেক্ষা।
পুরুষ হলেই এই সমাজে হীরের আংটি
আর মেয়ে মানে বিউটিপার্লার ,সুন্দর ঠোঁট ,সুন্দর ফিগার। 
প্রশ্ন একটা থাকে
পুরুষ না নারী ?
কিংবা শক্তি বাবুর লাইন " ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানোই  ভালো  "। 

ভালোবাসা

ভালোবাসা
.... ঋষি

অনেকবার ভেবেছি ভালোবাসা কেমন হয়
ভেবে দেখেছি ভালোবাসা খুব সহজ।
অ , আ , ক ,খ ,বর্ণপরিচয়
শিখতে খুব কষ্ট ,খুব কষ্ট ,যখন তুমি নতুন ছিলে
কিন্তু সয়ে যায়
ধীরে ধীরে নিজের হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে নিজেকে মৃত মনে হয়
তখন বুঝি তুমি ঠোঁট কামড়ে না বললে বুঝতাম না ভালোবাসা কি।
 আমি বুঝতাম না যদি তুমি রেগে গিয়ে না বলতে
মরে যা।
হয়তো আমার গলায় দড়ি দেওয়া শরীরটা একলা ঘরে হাওয়ায়
তুমি যদি না কাঁদতে
তবে বুঝতাম কি করে ভালোবাসা কি।
তুমি যদি অভিমানে  আমার ফোনকল রিসিভ না করতে
আমি সারা রাত জেগে
তুমিও জেগে
তবে বুঝতাম কি করে ভালোবাসা কি।

অনেকবার  ভেবেছি ভালোবাসা কি
পাশের বাড়ি রাজমিস্ত্রি প্রতিদিন এসে বৌকে পেটায়
বৌ রেগে মেগে বাপের বাড়ি চলে গেলে
রাত্রে তাকে একলা কাঁদতে শুনেছি।
আমি অনিতাদিকে দুবেলা  অসুস্থ স্বামীকে খিস্তি দিতে শুনেছি
আবার সেই স্বামীর মৃত্যুর দিনে আঁচল ছড়িয়ে তাকে কাঁদতে দেখেছি ।
আমি গড়ের মাঠ ,ভিক্তোরিয়ায়  হাজারো প্রেমিক প্রেমিকাকে
হাত ধরে হাঁটতে দেখেছি ,
বলতে শুনেছি হাজারোবার তোমাকে ভালোবাসি।
তোমাকেও বলেছি একই কথা
কিন্তু বুঝি নি ভালোবাসার মানে এখনো
তবে এটা বুঝি  ভালোবাসা ভীষণ সহজ আর সরল একটা শব্দ।

গোলাপী গল্প


গোলাপী গল্প
.... ঋষি

একখানা সাদা ক্যানভাস
এক ফোটা গোলাপী গল্প ছড়িয়ে পড়ছে পুরো ক্যানভাসে।
মনের তরঙ্গ রেখা ধরে হাঁটতে হাঁটতে
অজানা সেতুতে।

হৃদয় পাখি হয়ে গেলে খাঁচা খুলে উড়ে যায়
পরে থাকে বুকের পাঁজরা ,মাংস ,রক্ত ,নাড়িভুড়ি আর অন্য হৃদয়
হৃদয় মানে তো ধুকপুক।
সাঁওতালি সেই নারী
টেরিয়ে দেখা তোমাকে বোধহয় পাঁচ ফুটের কাছাকাছি
সরু ঠোঁট
চোখের অন্ধকারে তোমার শ্যাওলা রং ,
আটপৌরে শাড়ি।
ইচ্ছে করে একবার তোমাকে প্রশ্ন করি
তুমি কতটা বিশাল
সত্যি কি আকাশের মতো।

প্রতিটা বিচ্ছেদ শরীরের উপর একটা শোক রেখে যায়
কিন্তু মনের উপর অন্য শোক
ঘর হারাবার।
প্রতিটা বিচ্ছেদের পর মানুষ বেড়িয়ে পরে একলা পথে গভীর জঙ্গলে
খালি পায়ে ,
খালি বাউন্ডুলে চোখে দূরে চক্রাবলের সূর্য ডোবার পালা
হালকা গোলাপি আকাশ।
সেই শ্যাওতালি মেয়েটি আনমনে হেসে ওঠে
একটু সবুজ ,একটু বাঁচার অক্সিজেন
তারপর হঠাৎ দেখা হয়ে যায়
বাঁচার সাথে। 

Wednesday, November 27, 2019

গোলাপের গল্প


গোলাপের গল্প
...... ঋষি

আজকাল গোলাপ খুব দামি মনে হয়
প্রেমের রং।
আজ থেকে না বিবাহ বাসর ,প্রেমিকের মন ,সুন্দর আকাশ
এমন কি  আজকাল শ্রাদ্ধের তোড়ায় গোলাপ বাঁধে  কেউ কেউ।
অদ্ভুত মিল মানুষের সুখদুঃখের
আফ্রোদিতি  দায়ী  বোধহয়
গ্রিক দেবী ,প্রেমের অভ্যুথানের পথে সময়ের কাঁটা।

কাঁটা বিঁধছে
এরপর চাঁদ ,সমুদ্রের গভীর ঢেউ
জানছে না কেউ শরৎবাবুর উপন্যাসের নায়িকা অবাঞ্চিত যেমন।
সিসিলি দ্বীপের আত্মহত্যা  রহর্স্য
কবির শিরায় যখন।
আজকাল গোলাপ খুব দামি
তাই বলে আমি পারবো না লিখতে কবিতা  সিস্টেমে থাকা রাষ্ট্রকে নিয়ে
তারচেয়ে বরং নগ্ন পুরুষ ,ভিজে হাওয়া ,সময়ের অদক্ষতা
আর তুমি ভালো।

আমার ছেলে প্রথম প্রেমিকার হাতে গোলাপ গুঁজে দিক
আমি অবাক চোখে দেখবো।
আমি চাই না ওদের বিয়ে হোক
বিয়ে হলে সময়ের চারিপাশের পরে থাকে শুকনো গোলাপের স্মৃতি
জানি সত্যি বলতে নেই
সমাজ।
কিন্তু এই কবিতা যে আফ্রোদিতি
আমার দোষ কি
বহুবার দেখেছি কোনো অনুষ্ঠান বাড়ির শেষ পাতে
গোলাপগুলো কেমন মুছড়ে পরে,
আসলে মিথ্যের থেকে আমাদের সত্যি ভালো।
আর গোলাপের গল্পে গোলাপগুলো সতেজ ,সুন্দর হলে বেশ
গন্ধটা জানি তোমারও প্রিয়। 

অজুহাত



অজুহাত
......... ঋষি

শহর মুড়ে ফেলে অন্ধকারে
আর আমি অপেক্ষায় কোনো প্রিয়তম শব্দের খোঁজে।
শব্দরা বাউন্ডুলে হলে
হাতে তুলে নেয় একতারা আর মুখে তার সময় শেষের গান ,
খালি পা
ক্ষতবিক্ষত মাটি লেপ্টে তৈরী হয় কবিতার আশ্রয়।
.
সময় যে অজস্র মুখ লিখে চলেছে তোমার
গোপন সমাজের  অভিসার।
ক্লান্ত পথিকের ঘর ,ক্লান্ত বাউলের মতো এই শহরের ছেঁড়া পকেট হাতড়ে
খুঁজে পায় একলা দাঁড়ানো কিছু আলোর ল্যাম্প পোস্ট। 
আলো চারিপাশ
অথচ ছায়া শেষ হলেই অন্ধকার।
মানুষের অন্তরগর্ভে বেঁচে থাকা পাপ এই শহরের রাস্তায়
বিকিয়ে যায় ভালোবাসায়।
কি পায়
কি হারায়
শুধু সময়ের অন্তরে রক্তবমি
মানুষ নিজেরটা নিজেই পরিষ্কার করে।
.
শহর জুড়ে অভিসার
অনন্ত প্রশ্রয়ে এগিয়ে আসা হাত আমার বুকের দেরাজে লুকোনো কাঁটা।
তুমি বলো আমি তো চিরকালীন
আমি তো আছি।
আমি দেখি রোজ নিয়ম করে সূর্য ডুবে যায়
রোজ নিয়ম করে এই শহরের বস্তির পাশের রাস্তায় মিনতি দাঁড়ায় অন্ধকারে।
তারপর একটা লোমশ হাত এক বুক সভ্যতা বিলিয়ে
রোজ সকালে মিনতিকে খালাস করে।
আমি হাসতে থাকি পাগলের মতো
আমি বুঝতে পারি ,
ভালোবাসা একটা অভাব মানুষের
জুড়ে বাঁচবার
অন্ধকার থেকে পালাবার অজুহাত মাত্র। 

ক্যামেরা চলছে


ক্যামেরা চলছে
........... ঋষি

সুমেরু থেকে গড়িয়ে নামা  বরফ
            গড়িয়ে নামা শীত আমার শহরে ,
শীত করছে
ভয় করছে আমার ।

দূরে ডার্করুমে  একের পর এক ছবি ডেভলোপে ব্যস্ত
সিনেমাগ্রাফি
পৃথিবীর শেষ দিন।
মিসিসিপি সভ্যতা ,গ্রিক ঘোড়া ,সমস্ত মাইথোলজি
মাথার ভিতর চেতনার ঘর।
আলো জ্বলছে ,আবার নিভছে
ডুবে যাচ্ছে সময়ের সূর্য।

যে কোনো কথার ভিতর লুকিয়ে থাকে অসংখ্য সম্ভাবনা
মাংসের পিন্ড ,জমানো বোতাম
তোর শরীরে থেকে যাওয়া আমার ঘামের গন্ধ।
লালচে স্বপ্নের দূরাভাষে
ব্যক্তিগত হয়ে যাচ্ছি
ভুলে যাওয়া দরজাটার কাছে এসে ভিতরে অসংখ্য শোক
পিছলা যখন।
ফেলে যাচ্ছে সমস্ত মৃদুজল ও খরজলের শীতরেখা
ফিরে আসা  যৌনতার কথা।
এড়িয়ে যাচ্ছি দৃশ্যগুলো
কাটাছেঁড়া করে তুলে আনছি নিজের হাতের তোর ধুকপুকটা
আর অসংখ্য টানাপোড়েন
হাফছুটির পুরনো রাস্তায়
আমার সময়ে সাদা কালো সিনেমার পর্দার নারী
ধুস ক্যামেরা চলছে । 

ক্রমশ হত্যা



ক্রমশ হত্যা
... ঋষি

ক্রমশ হত্যা
একের পর এক ধ্বংসের বাতাসে  ক্যাকটাস ফলছে ,
এই সভ্যতায় পুরুষ রাখবে না।
অদ্ভুত তাচ্ছিল্য ওই দৃষ্টিতে
বুকের উড়তে থাকা সিফনের শাড়ির ফাঁকে তসলিমা দাঁড়িয়ে
বুনে চলেছে পুরুষ বিদ্বেষ।

কিছুটা নিজের কথা
কিছুটা কানে শোনা
পুরুষ মানে কুকুরে লেজ ,শালারা দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় হারেমের দরজায়
অথচ লুকিয়ে।
পুরুষ মানে তথাকোচিত সমাজ
যেখানে তোমাদের দুই উরুর ফাঁকে আস্ত মাথা যায় ঢুকে ,
খুব সস্তা কোনো নোংরা মর্দমার জীব।

দূর কোথাও পাগলাঘন্টিতে বেজে ওঠে সাইরেন
বয়স চল্লিশ ছুঁলেই বুকের আয়না কেঁপে ওঠে ,
ঝুলে যাওয়া বুকে হাত বুলিয়ে
স্বপ্ন খোঁজে অসংখ্য মন্তাজ।
তোমারও তো  ভয় করে ফুরিয়ে যাওয়ার
নীলাকাশ থেকে ঝরে যায় সাবেক সানাই স্মৃতি,
উপাসনালয় জুড়ে মরশুমী ফুল,
পুরুষ নামক ভুল
পুরুষ মানেই ভুল
পুরুষ মানে
যার পায়ের পাতায় দাঁড়িয়ে তুমি ঠোঁটে  ঠোঁট ছোঁয়াও।

তথ্য



তথ্য
... ঋষি

জীবনের বেঁচে থাকা মানে চমকপ্রদ কিছু তথ্য
ঘুম ভাঙা চোখ,
সকালের  রোদ
হঠাৎ বৃষ্টি ,হঠাৎ মেঘ করা ,তুমুল ঝড়
আবার কখনো শীত শীত করে।
.
অনেকটা অন্ধকার করে আসা
একলা বিকেল ,
তুই ছাড়া মায়া  হরিণেরা ঘাস খায় তোর লালচে বৃন্তের পাশে
অসমপ্রেমের কথা
ধার্মিক কাব্য।
যেভাবে সহসা লোডশেডিং হলে মনে পড়ে যায়
জীবনের দ্বিতীয় বা তৃতীয় চুমু ,
কিংবা পুরোনো প্রেম ,
মোটেও সন্দেহ নয় এটা ,মোটেও আমার নয় এটা
শুধু দূর গ্রহে আমার দেখতে পাওয়া অন্য সকাল।
.
বিছানার সকালের  সুখ, বেড টি না হলে তোর ঘুম ভাঙে না
আমি দাঁড়িয়ে দেখি বিছানার চায়ের ঠোঁট।
তোর সুরভিত শরীরে গন্ধে পতঙ্গরা ভিড় করে
আমি একলা দেখি তোর গোপন কথা।
শাড়ির ভাঁজে লুকিয়ে থাকা তোর শরীরটা
আমি দেখি  জড়িয়ে
বেদনার ফান্ডামেন্টাল রাইটস
.
we are in love
we mean it but forgotten the truth  .....

এখন রাত্রি


এখন রাত্রি
.... ঋষি

তুমি রাত্রি মাখার কাজে ব্যস্ত
আমার ঠোঁটের পরাগে লেগে থাকা বন্দি প্রজাপতি
আজ আকাশ খুঁজছে।
আমার, তোমার কবিতায় ঝগড়া ছিল ,ছিল মারামারি
ছিল প্রচন্ড রাগ করে কামড়ানো ঠোঁট
নাকের গোড়ায় ঘাম
কিন্তু মৃত্যু ছিল না কোনোদিন।

কাল আমার শেষকৃত্য
আজ তোমার মুখাগ্নির পর বিন্দু বিন্দু ঘাম তোমার  বুকের ভাঁজে।
আজ আমার জন্মদিন
কিন্তু আজ তোমার সেরিব্রাল ,গড়িয়ে নামা লাল রং
ভিজে মন।
এ আমার আদরের শহর ,
সারা শহর আগামীর ক্রিসমাসে মেশানো সোনালী তারা
তুমি ফিরে এসো প্লিস ,
প্লিস একবার ঠিক আগের মতো হাসো।

তুমি এখন রাত্রি হয়ে দাঁড়িয়ে
তোমার ভিতর একটা গভীর নদী আকাশ ছেড়ে অভিমান হয়ে গেছে।
আমিও আজও  শুধু রাত্রি
কিন্তু সোনালী ভোর অপেক্ষায় আমারদের শিওরে দাঁড়িয়ে।
তুমি ঝগড়া করতে পারো ,কিংবা আবোলতাবোল
নখের আঁচড়ে ছিঁড়ে দিতে পারো আমার বুক
উড়িয়ে দিতে পারো তোমার পতাকা আমার নিউরনে নিজের মতো করে।
কিন্তু তোমার থ্যাবড়ানো চোখের কাজলে নোনতা স্বাদ মানায় না
মানায় না একলা অন্ধকারে মৃত্যুর থাবায়।
তুমি ফিরে এস প্লিজ
তুমি বোঝো না একবার না হয়ে গেলে
আমি বাঁচতে চাইলেও তোমাকে ফেরাতে পারবো না। 

Tuesday, November 26, 2019

লোকটা (শক্তি বাবুকে স্মরণ করে শব্দদের শ্রদ্ধার্ঘ্য )


লোকটা (শক্তি বাবুকে স্মরণ করে শব্দদের শ্রদ্ধার্ঘ্য )
.
লোকটা ধুতি পড়তেন
উদোম খিস্তি দিতেন মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে সমাজকে।
লোকটা কবি ছিলেন
মাঝ সন্ধ্যায় গড়ের মাঠে নেশায় লাট খেতে খেতে
হঠাৎ চিৎকার করতেন বিপ্লব,বিপ্লব করে ।
.
উনি আগুন খেতেন
উনি আগুনে পোড়াতেন নিজেকে ,পুড়িয়ে দিতেন শব্দদের
আরো শুদ্ধ করে লিখে দিতেন খোলা আকাশে।
উনি গুনতেন না ব্রোঞ্চ ,সিলভারের মেডেল
কিংবা পার্লারে গিয়ে চুল উড়িয়ে লিখতেন না প্রোফাইলে কবি।
লোকটা পুকুর থেকে তুলে আনতেন কচুরিপানা
অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকতেন সোফিয়া লোরেনের দিকে।
.
নিষিদ্ধ রেড বুক ,ঊধ্বত নারী বুকের স্পর্ধা ছাড়িয়ে
যিনি খুব অবহেলায় লিখতে পারতেন
.
" ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো।
.
এতো কালো মেখেছি দু হাতে
এতোকাল ধরে!
কখনো তোমার ক’রে, তোমাকে ভাবিনি। "
.
লোকটা নেশাগ্রস্থ ,বেহিসাবি অথচ কবি
যার জন্ম কবিতায়
যার শৈশব কবিতায়
যার বেঁচে থাকায় কবিতা
যার মৃত্যু শুধু কবিতার জন্য।
.
কবিকে সেলাম। .....আমার প্রিয় কবি।
.
..... ঋষি

সর্বনাশী


সর্বনাশী
... ঋষি

তোর সেই চোখের পাতায় আমি জমে
কিংবা জমে শরীরের তিলে ,
হয়তো শিশু ,হয়তো যৌবন কিংবা বার্ধক্যে।
তোর কোলে মাথা রেখে
কাটিয়ে ফেলতে পারি একটা জন্ম অবহেলে ,
সবটাই সর্বনেশে।

সর্বনাশ
তোর জোড়া আলতো করে জড়ানো আমার ঠোঁট।
হঠাৎ লোডশেডিং
বৃষ্টির সন্ধ্যে যদি পার ,সাইকেলের ঘন্টা ,ছুঁয়ে যাওয়া উষ্ণতা
যেন শহর ছেড়ে স্বপ্নে চিরবাসী।
সর্বনাশী
পুরোনো লণ্ঠনের কাঁচে ,আবছা লেগে থাকা কুয়াশা গলে
তোর চোখ
তোর গাল
উড়তে থাকা শাড়ির আঁচল।

তোর ভ্রূ পল্লব
তোর শরীরের লুকোনো সেই আঁচিল।
হাঁ করে তাকিয়ে আছি তোর আয়নার দিকে
তোর গন্ধে
সর্বনাশে।
আমার জন্ম তোকে ছুঁয়ে থাকা হাজারো প্রেমিক শব্দের গভীরে
আজ যেন কাঁচের গুঁড়ো।
জানি হাজারো  শতাব্দী ধরে
আমার হেঁটে চলা কলম তোর উষ্ণতায় ,তোর কোলে মাথা রেখে
শান্তিতে মরতে চায় । 

অর্ধনারীশ্বর


অর্ধনারীশ্বর
.... ঋষি

হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া
হুড়মুড় করে ভেঙে পরা প্রাচীন রহস্যের প্রাচীর।
একটা নারী শরীর অর্ধনগ্ন ভঙ্গিমায় উঁকি মারছে প্রথম দিনে
স্মৃতির পাতাগুলো একইরকম নতুন যে।
এক আদিম পুরুষ
সহাস্যে জড়িয়ে ধরছে গভীরতা
আরো গভীরে মানচিত্র খুলে এঁকে চলেছে বিষন্নতা।

সময়ের প্যারেড
পায়ের শব্দ বুকের উপর যেন কোনো ছাউনিতে অজস্র সৈনিক।
দাবার ঘরে একলা দাঁড়ানো রাজা
আর সামনে বিষন্ন প্রান্তরে অজস্র ছোট ছোট আশা।
কতটুকু অম্ল স্বেদ,কতটুকু সাবানের ফেনা ,কত টুকু তোর লাল সিফনের শাড়ি
এক গাল আকাশ ফেটে পড়ছে খোলা আকাশে।
ক্রমাগত শিস  দিতে দিতে ট্রেন আসছে
ক্রমাগত গভীর কোনো স্টেশনের লাগোয়া শহরে পুনর্বাসন চাইছে সভ্যতা।

আদিম সভ্যতা
যেখানে তছনছ করে গটগট করে হেঁটে চুলচে বর্তমান।
আমাদের ঔরসজাত প্রেম
ক্রমশ স্মৃতির দেওয়ালে শুকনো চুইংগাম
আমাদের ছেড়ে আসা।
হুলুস্হুলুর পর তছনছ হয়ে থাকা বিছানায় পরে থাকা সময়ের রেত
সেটার বাজছে ,
সরোদ বাজছে তানপুরায় আদিম তান
জেগে উঠছে প্রেম অর্ধনারীশ্বর।  

শীত

শীত
.... ঋষি

আমার শহরে শীত
এলিয়ে পড়ছে বুকের ভিতর থত্থরে বৃদ্ধ ,
শুকিয়ে যাওয়া গাছের পাতাগুলো এলোপাথাড়ি উড়ে যাচ্ছে
শুকনো রাস্তায় নিস্তব্ধ লাইটপোস্ট ,
নিষিদ্ধ আমি
আমার প্রেমিকার বুকে আমার হাতের ছাপ।

যন্ত্রনাদের শব্দ হয় না
শুধু একটা অনুভবে বয়ে চলে ব্যাগভর্তি মনকেমন।
শীতের শহর এখন
কমলালেবু ,ফুলকপি ,লাল টমেটো বদলানো শীতের শহরে শুধু
শুকনো রেইনকোট।
ডেস্কটপের স্কিনে লাল রং ,লাল টুপি পরা স্যান্টা ,ঘোড়ার গাড়ি
ক্রমশ এগোচ্ছে
পেরোচ্ছে সময়।
যন্ত্রনাদের কোনো বাড়ি নেই
শুধু এগিয়ে যাওয়া তোমার দিকে , আকাশ জুড়ে স্বপ্ন
যদি সত্যি বরফ পরে শহরে।

যন্ত্রনা শুধু এই হা হাভাতে দেশে
সত্তরঊর্ধ সংবিধানের পাতায় জমে থাকা রক্তের দাগ।
থার্মোমিটারে মাপা হচ্ছে হ্যাংওভার
জন্মদিন ,বিসর্জন ,মৃত্যুদিন ,সহজপাঠ আরো অনেক উৎসব।
চুপ আমি
চুপ তুমি
বুকের পাঁজরে জমে অজস্র চিৎকার।
চিৎকারগুলো কোনো বরফঘরে জমে থাকা আমাদের নিশ্বাস
স্যাক্সোফোন ,সেক্সি টোন
সঙ্গম শেষে না উঠে দাঁড়ানো সমাজ।


অভিমান

অভিমান
......... ঋষি

ভালোবাসাকে ক্রমাগত মেশিনগানে
                       ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পরে থাকতে দেখেছি।
তাই আমি কবি আজও
          মনেতে প্রেমিক।
.
ভালোবাসতে গিয়ে অদ্ভুত ভাবে অবাক হয়েছি বারংবার
তুমি ,তোমরা অদ্ভুত মোহাচ্ছন্ন মোহনায়
মাইল ব্যাপী শুধু  একা থাকা।
কোন এক দিন তোমার জন্মদিন সেদিন
আমি পুড়ে গিয়েছি তোমার নতুন জন্ম দেখে ,
বিশ্বাস ছিল
যে জামায় আমার হাত
সে জামা শুধু আমার।
.
মর্মাহত শব্দের ভিড় তোমার  নশ্বরতা শুধু  ঈশ্বর সাক্ষী
ঈশ্বরের সিঁড়িতে পা রেখে ক্রমশ নেমে গেছি
তুমি বদলে গেছো।
ভালোবাসতে ভালোবাসতে তোমার আমার শরীর জুড়ে জমানো প্রেম
স্তূপাকৃত ক্ষোভ সময়ের
উপচে উঠছে সময়ের দরজায় ছায়া ফেলা প্রশ্রয়।
কথা প্রায় বন্ধ
শুধু ব্যস্ত দরজার দুপাশে দুটো সময়ে জমানো অভিমান
ক্লান্তিতে হাঁপাচ্ছে।
একদিন ঠিক করেছি তোমায় মা বলে ডাকবো
ফিরে যেতে চাই জন্মের অভিমানে
শুধু তফাৎ
আমার আঁতুড়ঘরে। 

Sunday, November 24, 2019

ছুটি



ছুটি
... ঋষি

ব্যস্ত ভাবনার ভিতর বাঁশি ভরে দিলে
কেমন ছুটি ছুটি শব্দ হয়।
হাঁড়ের পাঁজরের ভিতর যদি অনেকটা আকাশ ভরে দি
নিঃশ্বাসে বুদ্ধ আসে।
খোলা পথ বাউলের পায়ের ছাপ
বহুদিন না কামানো দাঁড়ি ,ছেঁড়া চটির ফিতে ধুরতেরিকা খালি পা ,
অন্যমনস্ক আমি
কেতাদুরস্ত  শহরের থেকে খালি হাত।
.
তোর আখরোটের ভিতর অসীম বৃত্তে আমি থাকবো
সময়ের মৌতাত থেকে সাজানো সিকোয়েন্স ,সবটাও বাধ্যবাধকতা ,
চোখের বালিতে আটকে যাবো অসমাপিকা।
যতবার তোকে চান করতে দেখবো ভাবি কিংবা আরো নিচে
চমকে উঠি
চোখের সামনে গর্জন তেলে  মাখা কোনো মায়াময়  চোখ
অদ্ভুত দুরুদুরু।
শব্দ খুঁজতে লাগে
আমার কবিসত্বার ভিতরে গুমড়িয়ে কাঁদা তুই।
কতবার ভেবেছি আত্নহত্যার কথা
অথচ বুকের আগুনে দেখতে পাই তোর কঙ্কালে লাগানো জেদটা
ফিরে আসি
কারণ এই শহরে তুই একলা প্রেমের উপপাদ্য।
.
ব্যস্ত শহরের ভিতর হঠাৎ সাইরেন বেজে উঠলে
ভীষণ খালি একটা ভীত শহর।
রক্তের ভিতর যদি বেঁচে থাকা  ইনজেক্ট করা যেত কৃত্রিম পদ্ধতিতে
তবে পৃথিবী জুড়ে শোরগোল ,আনন্দ।
সব ঠিকঠাক চলছে তো
মাথার ভিতর অযাচিত উঁকি মারা তোকে জড়িয়ে বাঁচা
কি মুশকিল ,
তোর কোনো ছেলে বন্ধু যদি তোর সাথে দু পা হাঁটে
তবে পৃথিবীতে কি বদলায়
শুধু মনের লালমাটিতে খালি পায়ে  লালন ফকির
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি ,,,,,
ছুটি।



Friday, November 22, 2019

ডেডবডি

ডেডবডি
... ঋষি

লোকটা একলা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে
চারিপাশে অসংখ্য আসা যাওয়া ,চিৎকার ,জন্ম ,মৃত্যু
তবু কেন যেন লোকটার চারপাশে শূন্য।
পথ চলতি লোক তাকে দেখে কেউ মসকরা করে ,কেউ কেউ থুথু ছেটায়
কেউ কেউ পথ চলতি ছুঁড়ে দে একটা ,আধটা পয়সা ,
লোকটা হাসে
মাঝে মাঝে চিৎকার করে কিন্তু তার কোনো মানে নেই।

লোকটার ঘুম পায় না আজ বহুদিন 
মাঝে মধ্যে খিদে পায় ,
কিন্তু লোকটা বেঁচে থাকার খিদেগুলোকে তাচ্ছিল্য করে মনে মনে।
লোকটার জন্ম দিতে শখ হয় কখনো কখনো
লোকটা অবিশ্রান্ত গালাগাল দেয় ,পৃথিবী মুছতে চায়
একটা নতুন পৃথিবী গড়বে বলে।
সবকিছু ধরা পরে লোকটার চোখের বাতিঘরে
দূরে সমুদ্রের জলে অবিরত ঘটে চলা হালচাল
মাছেদের চোখ ,মাছেদের সংসার তাদের আঁশটে গন্ধ ,
পৃথিবীর মেরুশীর্ষে গলতে থাকা পাপ
সব বোঝে সে।

লোকটা একদিন গর্ভবতী হতে চায়
তাই সে ঈশ্বরের বীর্যে নিজের হৃদয়ে ফুটিয়ে দে হুল ।
তারপর গালাগাল দেয় ঈশ্বরকে
নিজের আগামী সন্তানদের সুসজ্জিত করে তোলে পৃথিবী ধ্বংস করবে বলে।
মুখোমুখি ঈশ্বর রণাঙ্গনে লোকটার মাথায় হাত রাখে
বলে কি খঁজিস তুই ?
লোকটা চিৎকার করতে থাকে ধ্বংস ,ধ্বংস।
সময় ফুরিয়ে যায়
আমার এই কবিতার শব্দে লাগে সময়,
লোকটা চোখ বন্ধ করতে থাকে
ধীরে ধীরে অন্ধকারগুলো মুছতে থাকে
পথচলতি লোক দেখে নর্দমার পাশে একটা ডেডবডি পরে। 




মা !!


মা !!
..... ঋষি

সময় সময়  যখন খুব মনখারাপ হয়
আমি মায়ের কাছে যাই।
মা তখন অন্য কারো ঘরে খেলনাপুতুলে ব্যস্ত
মাকে লুকিয়ে দেখি আমি ,খুব ভালো লাগে মনে মনে
ভালো আছে মা।

মনখারাপে মা আসে না কোনোদিন আমিই যাই মার কাছে
মাকে  তখন নদী মনে হয় ,
আমি বসি নদীর পাড়ে ,মনখারাপে মা আমাকে গল্প শোনায়
আকাশ ,মাটি আর ঘর ছাড়া সেই পাখিদের গল্প।
আমি গল্প শুনি
আকাশ থেকে নেমে আসে স্বপ্ন পালক
আমাকে আদর করে ,মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়
ভালো লাগে আমার।

কখন যেন ঘুম ভাঙে অন্ধকারে
আমি চিৎকার করি মাকে ডাকি। মা !! মা !!
শুনি মা বলছে বাবাকে দেখো খোকা কেমন দুষ্টু হয়েছে
কখন  থেকে ঘুম পারাচ্ছি  বারংবার ঘুমোচ্ছে না কিছুতেই  ,
বাবা আমার মুখের দিকে তাকায় গোল গোল চোখে বলে
এইবার না ঘুমোলে আমি চলে যাবো তোর মাকে নিয়ে
আর পাবি না মাকে।
আমি কাঁদতে থাকি ,অন্ধকারে হাতড়াই
কিছুতেই বোঝাতে পারি না নিজেকে
সকলের তো মা থাকে না ,কেউ কেউ   .......


আকাশি পাঞ্জাবী

আকাশি  পাঞ্জাবী
.... ঋষি

কলমের নিবে তোমার মুখোমুখি দাঁড়াতে আমার বেশ লাগে চলন্তিকা
বেশ লাগে নিজেকে তখন তোমার  প্রেমিক ভাবতে।
বহুদিন পর তোমায় লিখতে ইচ্ছে হলো
ইচ্ছে হলো তোমার হাতে কাজ করা নীল পাঞ্জাবীটা গায়ে দিতে।
কেন জানি প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করলো পাঞ্জাবীটাকে
কেমন আছে সে ?
ইচ্ছে হলো একবার তোমার গলার স্বর শুনতে।

চলন্তিকা তোমাকে রেখে এসেছি অলকানন্দা তীরে
শহরে উঠে লোকালয় হয়ে কখন যেন পোশাক বদলেছি সময়ের করুনায়।
শরীরে ভাঁজ থেকে নিজস্ব মেজাজে  নগ্ন করেছি নিজেকে
কিন্তু তোমাকে বলে আসা হয় নি
আমাদের ঘরকন্না ,টেরাকোটা সেই ঘোড়া ,তোমার উইন্টার ক্রিম
তোমার দেওয়া আকাশি পাঞ্জাবীটা
সব ছেড়ে এসেছি আমি দশ বাই দশ মনের না পাওয়া ঘরটায়।
আর ওই পাঞ্জাবীটার তিন নম্বর বোতামঘরে
আজও যে প্রশ্নচিন্হ রাখা
তার উত্তর খুঁজতে তোমাকে উদ্দেশ্য করে লিখে চলেছি অগুনতি কবিতা।

স্মৃতি দুলবে পেণ্ডুলামে
তুমি  জানো আমাদের দেখা হয় ঠিক হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়ানো চায়ের ভাঁড়ে
কিংবা ট্রেন লাইনের ধারে একলা থাকা সেই বেঞ্চিতে ,
তুমি তো নিয়মকরে ফিরে আসো আমার কাছে
কিংবা আমি যায় তোমার গন্ধে বিভোর কোনো প্রজাপতি
আকাশে উড়ি।
সেই আকাশি রঙের পাঞ্জাবীটা।কি করছে এখন ?
আমার ওয়ারড্রপে,যেখানে আমার সাজানো সেন্টের  গন্ধে
গুঁড়ো গুঁড়ো অবহেলা মেখে গুমড়ে উঠছে
ফুঁপিয়ে কাঁদছে সময় যেন।
জানোতো চলন্তিকা চোখের জলের কোনো আশ্রয় থাকে না
যেমন নো ম্যানস ল্যান্ডের উপর বসে
আমার এই কবিতা একলা এখন।

আর তুমি
আমার এই কবিতা পরে মনে মনে হাসছো কিংবা কাঁদছো
ভাবছো কি করবে এই পাগলটাকে নিয়ে। 

দৃশ্যাবলী


দৃশ্যাবলী
... ঋষি

জীবন -১

বিছানার ওপর অকর্মন্য পঙ্গু এক পুরুষ শুয়ে আছে
কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী
পরুষকে পঙ্গু হতে ,হতে নেই নির্ভরশীল।
ফলস্বরূপ তার স্ত্রী ভর দুপুরে পাশের ঘরে শুয়ে নিজের দেওরের সাথে
পয়সাওয়ালা দেওর ,
সংসারে এতো খরচ ,ওষুধ ,ছেলে ,নিজের জ্বালা
কি করবে সে।

জীবন -২

জানলার  খিড়কির দিয়ে ছেলেটা অবাক হয়ে দেখেছে মাকে আর কাকুকে
কি করছে কাকু ,মাকে জড়িয়ে ,এ মা মায়ের শাড়ি ব্লাউস সব উদোম
ছেলেটার চোখে জল।
মা হাসছে ,কাকু হাসছে ,মা হাঁপাচ্ছে ,কাকু হাঁপাচ্ছে
 ছেলেটা ভয় পাচ্ছে
বুঝতে পারছে না কি করবে সে ?
ছুটে চলে গেলো ছেলেটা পাশের ঘরে পঙ্গু বাবার কাছে।

জীবন -৩

স্বামী বললো কি খাওয়াচ্ছো আমায় ,এর থেকে বিষ দেও না মরি
সব জানি আমি ,সব বুঝি ,আমার অবস্থার সুযোগে তুমি ফুর্তি করছো ,
কিন্তু ও তো আমার ভাই।
স্ত্রী ফুপিয়ে চিৎকার করলো মরো তো বাঁচি
আমার হয়েছে জ্বালা ,অসুস্থ স্বামী ,সংসারের হা মুখ ,আর ছেলেটা
কি করবো আমি ?আর কি উপায়  ?
ওগো ফুর্তি না গো ,তোমায় বাঁচিয়ে সুস্থ করে তুলতে হবে।

 জীবন -৪

ছেলেটা দেখছে বাবার মৃতদেহ মেঝেয় চাদরে ঢাকা
মা কাঁদছে পাগলের মতো  ,বাবার মৃতদেহ আগলে। 
কাকু এসে ঢুকে গেলো পাশের ঘরে,
মা বললো যা  কাকুকে ডেকে আন শ্মশানে নিয়ে যেতে হবে তো।
ছেলেটা গিয়ে বললো কাকুকে ,মা ডাকছে
কাকু বললো যা গিয়ে পাঠিয়ে দে তোর মাকে ,
মা ঢুকলো ওই ঘরে ,আস্তে আস্তে দরজার পাল্লাটা বন্ধ হয়ে গেলো। 

প্রবৃত্তি


প্রবৃত্তি
... ঋষি

আমি কোনোদিন পাউডার মাখি না
আমি বিশ্বাস করি প্রতিটা মানুষ তার আদিমতায় সুখী।
কিন্তু এটা কোনো বিপ্লব নয়
প্রতিটা মানুষের নিজের ইচ্ছে আলাদা,
বেঁচে থাকা ,খেতে চাওয়া ,চশমার ফ্রেম, এমনকি সঙ্গমের ভঙ্গি
চুমু খাওয়ার প্রবৃত্তি সব আলাদা হতে পারে।
.
আসলে আমার মনে হয়
আমার শরীরে একটা অরণ্য বাসা বেঁধে আছে ,
আর আমি সেই অরণ্যে একলা কোনো জন্তু ,যে শুধু প্রাচীন প্রবৃত্তিতে ব্যস্ত
হয়তো এইটা পাগলামি ,
কিন্তু এগুলো আমার কাছে ভীষণ দামি।
কিন্তু এগুলো  কোনো অভিযোগ নয় ,শুধু আমার ইচ্ছা
এখন দেখুন আমার প্রেমিকা ক্লিভেজ দেখিয়ে কেমন একটা আদুরে হাসে
আমার জড়াতে ইচ্ছে করে ,
কিন্তু কি করে বুঝবো অন্যদের ইচ্ছে করে না।
আমি যদি বলি তুমি এমন শর্ট হাতা ব্লাউস পড়ো না
সেটা ঠিক না
কারণ প্রতিটা মানুষের নিজের আলাদা স্পেস আছে
যাকে সন্মান করা বাঞ্চনীয়।
.
আমি পারফিউমের গন্ধ সহ্য করতে পারি না
কারণ আমার ঘামের গন্ধ কেন জানি আমার ভীষণ প্রিয়।
অথছ বাসে ,ট্রামে ,পথচলতি হঠাৎ হঠাৎ পারফিউমের গন্ধ নাকে আসে
আমার বমি আসে
কিন্তু আমি তো কাউকে বলতে পারি না
কারণ আমাদের প্রত্যেকের আলাদা ইচ্ছে আছে।
আমার বাস অরণ্যে ,আমার চারপাশে সবুজ শ্যাওলার গন্ধ
তাই বলে তো আমি পাগল সবাইকে করতে পারি না ,
কিংবা তাকেও বলতে পারি না
তোর ঘামের গন্ধটা আমার বেশ লাগে।

Escape Route


Escape Route
..ঋষি

অন্ধকার দেখলেই আমার কাছে যেতে ইচ্ছে করে
আর ঠিক তখনি একটা বিদ্রোহ লাল সেলাম  ঠোঁকে।
অনেকটা থিতিয়ে গেলে
যেমন জলের ভিতর ময়লাগুলো দেখা যায় ,
ঠিক তেমন অন্ধকার এই বুক জ্বলে
জ্বলে ওঠে বুকের প্যারোডিতে বাড়তে থাকা শিঁড়দাঁড়া।
.
ছোটবেলায় নিয়মকরে বিপ্লবকাকু  মাকে একলা পেলে জড়িয়ে ধরতো
প্রশ্ন করলে মা বলতো জ্বালা ,
বাবা বাড়ি এলে সেই মা হঠাৎ লক্ষী ঠাকুর সেজে ঘরকন্নার ব্যস্ত।
আবার প্রায় রাতে ঘুম ভাঙলে বাবাকে দেখেছি মাকে হাঁপাতে হাঁপাতে
বলতে সব জানি
সবজানি আমি শরীর ঠাপাতে লোক লাগে
আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি।
সেই মাকে বাবা মারা যাবার পর দেখেছি মরাকান্না কাঁদতে
তারপরও বিপ্লব কাকু বাড়িতে আসতো। 
.
তখন আমি সদ্য যৌবন
একদিন কনকদি আমাকে বুকে চেপে ধরে বললো
বললো জানিস তোকে জড়ালে ইচ্ছে করে,
আমি তখন কনকদি দাবড়াবুক দুহাতে মুচড়ে প্রশ্ন করেছিলাম
কি ইচ্ছে করে ?
কনক দি আমাকে ছিটকে ফেলে এক থাপ্পড় লাগালো
বললো জ্বালাগুলো তুই বুঝবি না।
কিছুদিন পর কনকদির বিয়ে হলো
আর তারকিছুদিন পর কনকদি বিধবা।
.
তাই আজও আমার অন্ধকার দেখলে কাছে যেতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে মায়ের না বলাগুলো জানার।
ইচ্ছে করে কনকদির বুকের মতো মুচড়ে দিতে সাজানো আলোগুলো
অন্ধকারকে মায়ার মতো শিরদাঁড়ায় জড়িয়ে নিতে।
মানুষ জানে না মানুষের অন্ধকারে অনেকটা আলো থাকে
থাকে অনেককিছু না বলা।
মানুষের জানে বেঁচে থাকায় অনেক জ্বালা থাকে
কিন্তু চিৎকার করতে পারে না ।
Escape Route  দরকার
দরকার বুকের আগুনে সময়কে পুড়িয়ে
সত্যির জামায় অন্ধকার ঢেকে রাখার।

Thursday, November 21, 2019

চাষাভুষো মানুষ


চাষাভুষো মানুষ
... ঋষি

নদীর ভিতর দিয়ে হেঁটে আসছে একলা মেয়ে
আমি হেঁটে যাচ্ছি আলোকের ঝর্ণা ধারায়।
নিষিদ্ধ নগরী হেঁটে চলেছে  পা টিপে টিপে সময়ের পাশে
সময় শুকনো জমিতে ভবিষ্যৎ চাষে ব্যস্ত।
চাষাভুষো মানুষ
একলা দাঁড়িয়ে রাতের টার্মিনাসে জোনাকি গুনছে।

মেয়েটা গম্ভীর হচ্ছে ক্রমশ
বলছে কবির রক্ত কলম ,রাস্তায় দাঁড়ানো বিদ্রোহ
আর খুঁটে তোলা নিজের চামড়া।
স্বভাব
ঘুঙুর বেঁধেছে পায়ে ,অন্ধকারে রাত পাখি খুঁটে চলে অনবরত সময়।

একলা মেয়ে বলছে
ভাগ্যিস তুই আমার না ,সময় বলছে ভাগ্যিস তুই সময়ের
রাতে চাঁদের শরীরে ভিজে যাচ্ছে
ভগ্নাংশে  বাঁচা।
আশ্রয়টুকু খুঁজে নিচ্ছে সময়ের চলাপথ
ঘড়ির কাঁটা।

নদীর ভিতর দিয়ে হেঁটে আসা একলা মেয়ে
আমি লিখে চলেছি তোমাকে আজ সহস্রযুগ কবিতার খামে।
নিষিদ্ধ এই নগরী বুকের ভিতর হাহাকার করে যন্ত্রনা 
সময়কে সহ্য করতে হয়,
সহ্য করতে হয় আমাকে নিজে।
নদীর বুক থেকে হেঁটে আসা সেই একলা মেয়ে
বড় বেশি একলা অন্ধকার রাতে
ভিজে শরীরে পা টিপে টিপে হাঁটে সময়ের পাশে
সময়ের শুকনো জমিতে সদ্য জমানো সবুজ ঘাসে।



ধর্মাশোক


ধর্মাশোক
....... ঋষি
,
বউটুপি পরে শীত এলো শহরে
জাকিয়ে বসছে শহরের অন্তরে লুকিয়ে থাকা মানুষের কনকনে শোক ,
কবি কবিতা লিখছে আজ কয়েকশো যুগ।
কবির মৃত্যু নেই
আছে অজস্র শোক ,সময়ের শোক।

ভন ভন করছে মাথার ভিতর ধর্মাশোক
রাত্রির আকাশ থেকে নক্ষত্রের বুকের থেকে কুয়াশারা নেমে আসছে
ঢেকে দিচ্ছে পৃথিবী ,
যেন সারি দেওয়া অপেক্ষা।
পৃথিবীর জন্য সকাল ,ক্রমশ আগুন বুকে দাবানল
মুখ খেঁচিয়ে ,মুখ বেঁকিয়ে সাজানো সময় ঢাকছে বিউটিপার্লারে
প্লাস্টিক স্মাইল।
শীত খুঁজছে প্রচেষ্টা ,সোয়েটারের পশমে লেগে আছে
পুরোনো প্রেমিকা।
কবি বাঁচছে রাজার মতো ,কবির শুকনো ত্বকে থর মরুভূমি
কবি হাঁটছে যুদ্ধ সফরে
লুটিয়ে পড়ছে রক্তনদী মুহূর্তদের ভিড়ে।

বিপ্লবীরা জিরিয়ে নিচ্ছে রাইটার্সবিল্ডিঙে ঝোলানো নো পার্কিং
কিলবিল করছে বিষপোকা ,
কবি রক্ত খুঁজছে ,বুলেটের বারুদ প্রেমিকার বুকে
দুহাতে তার নগ্ন স্তন যেন হাত বোমা,
ফিরে আসে ,পিষে দিচ্ছে সময়ের তাবড় তাবড় অসহযোগ
খালি পায়ে রক্তের পদচিহ্নে।
কবির কলম যেন পরিযায়ী প্রেম
ঠিকানা খুঁজছে ,খুঁজছে ঘর
বাঁচার স্বয়ংবর।
কবির মৃত্যু নেই, আছে শোক
মাথায় শুধু ধর্মাশোক। 

সঙ্গম


সঙ্গম
... ঋষি

কুচকুচে কালো অন্ধকারে ভালোবাসার লালচে জিভ
ছড়িয়ে পড়ছে বিলাসী স্বপ্নের ঘোর।
মিথ্যে ঘর বাঁধা সত্যি শহর জুড়ে
সত্যি যদি সত্যিগুলো এই শহরে মিথ্যে হয়ে যায়।
আড়মোড়া অভ্যেস ,আরবী  ঘোড়া চড়েছে বুকের উপর
আচমকাই নিমিত্তের জীবন
আরেকটু মৃত্যু জড়াতে পারলে ভালো হতো।

অন্ধকার বিছানা হাঁতড়ে খুঁজে পাওয়া একটা আদিম শরীর
দেওয়ালে ভাঁজ ,কার্ভে লেগে থাকা জাদু টোনা
মন্ত্রমুগ্ধ শরীর এগিয়ে যায় শরীরের গভীরে।
প্রাচীন গহ্বর
অন্ধকার নিরুপায় ধ্বংসের জামা ,আসলে আলোর খোঁজ
ক্রমশ আরো গভীরে
নদীপাড়ে শুকনো কিছু পাতা ,পা টিপে টিপে হাঁটা
শিরদাঁড়া  জুড়ে মৃদু স্পন্দন ,
কান পেতে শোনা ডুগডুগি।
তুই ক্রমশ আমাকে পাগল করে তুলিস উথলে ওঠা দুধ
দুধের সর
ক্রমশ
একলা ঘর।

কুচকুচে অন্ধকার তোর ঠোঁট ছুঁয়ে লেগে থাকা লালা আমার বুকে
দাঁতের ক্যানেলে লেগে ভালোবাসার রক্ত।
আমি মুখ গুঁজে ঢুকে পড়ি কোনো রোমান ভাস্কর্যের বুকে
সেখান থেকে উঠে আসে শব্দ ,
শব্দ সঙ্গম
সৌজন্য আর ভদ্র লিপির আলোক রেখা সোজা তোর শীর্ষে
তুই কাঁতরে উঠিস যন্ত্রনায়
তবু ভালোবাসিস নিবিড় প্রশ্রয়ে
ছেড়ে যাস প্রতিবার নিজের দাঁতের দাগ
নখের টুকরো আমার সারা সঙ্গম জুড়ে । 

সাদা শাড়িটা

সাদা শাড়িটা
... ঋষি

ছড়িয়ে পড়ছি আমি সময়ের উপদ্রপে
আমার সাত বছরের ছেলে যেন দেশ খুঁজছে আমার ভিতর।
আর আমি ক্রমশ কুঁকড়ে গিয়ে ঢুকে পড়ছি ভাতের হাঁড়িতে
জল ফুটছে
কিন্তু সেদ্ধ হচ্ছে না আমার দেশ।

ভাতের হাঁড়ির উপর সাদা ধোঁয়া স্যাক্সন করে টেনে নিচ্ছে কিচেন চিমনি
ছাড়ছে খোলা আকাশে ,
যেন একটা সাদা শাড়ি ছড়িয়ে পড়ছে সময়ের দেওয়ালে
সেই শাড়িটা যেটা যেটা প্রায় বাহাত্তর বছরের পুরোনো।
এখনো আমি বুঝে উঠতে পারি নি
স্বাধীনতা কেনা হয়েছিল কোন পথে।
আদর করে ,যত্ন করে শাড়িটা পড়ানো হয় নি কোনোদিন
আজও মাঝে মধ্যে সরে যায় শরীরে আঁচল
আলুথালু অবহেলায় বেড়ে চলা ভারতবর্ষ নামক মেয়েটা অর্ধ নগ্ন আজও।

ছড়িয়ে পড়ি আমি এই সব ভাবলে
আমার বুকের উপর দিয়ে বয়ে চলে দেশভাগ ,হাজারো দেশ ছাড়া মানুষ।
তাদের কান্না ,তাদের বিছানা বালিশ
তাদের অজস্র ক্ষোভ আজও চিৎকার করে সীমানায় লাগানো বারুদের গন্ধে।
আজও সেই বাহাত্তর বছরের বুড়োটা খোঁজে ফেরে চট্টগ্রামের শৈশব
আজও বরিশালের সেই বৃদ্ধা শোকনুভব করে নিজের সিঁদুরের।
কি বলি আমার সাত বছরের ছেলেকে
এই অর্ধনগ্ন ,লগ্নভ্রষ্টা  মেয়েটা আমার ভারতবর্ষ।
কি করে বোঝায়
হাঁড়িতে জল ফুটছে ,আধ সেদ্ধ ভাত সেখানে
কার জন্য
দেশের মানুষ
মানচিত্র
সমাজ
নাকি
সেই সব ছোঁক ছোঁক করা হুলোগুলো। 

Wednesday, November 20, 2019

সাপ

সাপ
... ঋষি

তুমি কষ্ট লিখলেই একটা আস্ত নদী  ঢুকে পরে আমার মাথাতে
তারপর শাখা প্রশাখা ,
হঠাৎ এলার্ম বাজে আমার এসাইলামে   ,পাগলা ঘন্টি।
তুমি শুন্য লিখলেই
আমার সিগারেটের গোল রিং বেয়ে নিকোটিন মেঘ
হঠাৎ দূষিত করে আমাকে।
তুমি নিজের মনে হঠাৎ একটা আকাশ খুঁজছো মুঠোফোনে
শব্দ বুনছো
আমি আকাশ হয়ে যাই তখন ।

তোমার বাড়ির ছাদে ,আমার বাড়ির ছাদে দুটো আলাদা চাঁদ
দুটো আলাদা আকাশ।
মাঝখানে একটা যোগাযোগ সেতু আলোর জ্যোৎস্না
একটা আলোর মই।
আমি হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে ফেলি
কিন্তু নেমে আসি মাটিতে,
সত্যির মাটি।

এতকিছুর পরেও হাজারো বছর পরে বরফের  শহরে আমরা 
দস্তানা বাঁধা একটা হাড় কাঁপানো শীতল হাত
তোমাকে ছুঁতে যায় ,
বুকের রক্ত হিম হয়ে যায় আমার ,অন্ধকারে সাপ ফনা তোলে
জড়িয়ে ধরে প্রাগৈতিহাসিক তোমাকে।
আমার হাতে তখন সময়ের বন্দুকের নল
মাথায় রক্ত
পাইথন জামা বদল করে ,আমি মশাল ধরায়
পুড়িয়ে ফেলতে চাই 
ফায়ার,
খুঁজে পাই একটা মৃতদেহ জড়িয়ে ধরা ফসিল
তোমার আমার ,
যার পুরোটাই ইতিহাস।

নগ্ন


নগ্ন
.... ঋষি

মৃত সময়কে তালপাতার মতো সারি দিয়ে দাঁড় করিয়ে
খুলে ফেলছি লাবণ্যময়ী আকাশের শাড়িটা
নগ্নতা লিখবো তাই।
মৃত নাগরিক ,মৃত নাগরিকত্ব ,ওয়াটারকালারে রঙিন সমাজ
ক্রমশ ছিঁড়তে থাকা আঁকার খাতা।
বোবা লোম
আর অনেকটা রহর্স্য।

সময় আর সমাজের মধ্যে বেসিক একটা তফাৎ আছে
যেমন আছে ভালোবাসা আর যৌনতায়
সবটাই পরিপূরক নয়।

ভালোবাসা বেশ্যা না হলে ভালোবাসা হয়ে ওঠে না
আবার শরীর ভালোবাসা না পেয়ে বেশ্যা হয়ে যায়।
সময় চিরকাল বাসরঘরে চিৎকার করতে থাকা শৈশবের চিৎকার
আর সমাজ চারদেয়ালে মুখ চাপা দিয়ে ধর্ষণে ব্যস্ত।
ব্যস্ত মানুষ  সাজানো ভদ্রতায়
আরো ব্যস্ত কারণ সময় মধ্যস্থতায় বেড়ে চলা বাঁচার মেডেল চোরা সম্ভ্রমে।
আসলে ভালোবাসার কোনো ক্লাস হয় না
যেমন হয় না বাঁচার ,
ভালোবাসা আসলে স্বচ্ছ কাঁচের ওপারে দাঁড়ানো তুমি।

সমাজ আর সময় দুজন নিউজ রিপোর্টার
সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠানের ফোটগ্রাফার  ,ভাঁড়া নেওয়া বিছানা বালিশ।
সময় এখানে খবর লেখে সাতদিন
রাতদিন 
নিউটাউনে ঘর ফিরতি মহিলা ধর্ষণ ,
গড়িয়ায় মাঝরাতে পাওয়া গেলো একটা শৈশবের থ্যাঁতলানো মাথা,
অমুক নামক সরকারি হসপিটালে শিশু চুরি
পরীক্ষায় ফেল করে প্রবল মানসিক কষ্টে আত্মঘাতী যুবক।

ব্রাভো
মাইন্ডব্লোয়িং

নগর নামক ক্যানভাসে লাল রঙের  লোভ ,হিংসা ছড়িয়ে পড়ে
ছড়িয়ে পড়ে মানুষের ষড়রিপু ,
একটা ছবি তৈরী হয়
ছবিতে দেখা যায় নগ্ন সময় সমাজ  দিয়ে মাছ ঢাকা দেয়।
 
 

এটা কবিতা না



এটা কবিতা না
.. ঋষি

কে কে জেগে আছে আমার সাথে
চোখের নেশায় আলোগুলো ক্রমশ ছোট ছোট ঘর।
কে কে পড়েছেন যামিনী রায়
মাফ করবেন যামিনী রায় পড়বার না তবে অনেকটা রঙিন কিছু ক্যানভাস।
শিশির ঝরছে বাইরে  লাস্যময়ী প্যাটায়া কিংবা সমুদ্র
গরম উষ্ণতায় কবিতার শহর খুলে দিচ্ছে বুকের আবরণ
গড়িয়ে নামা নাভি।
.
এই রাতে শরীরের সাথে শরীর
গড়িয়ে পড়ছে নেশা পাত্র তোমার জিভের স্বাদে।
জানি তুমি ঘুমোওনি
কিন্তু তুমি জানো না কবিরা লম্পট হলে কবিতা অশ্রাব্য হয়ে যায়।
ভিজে যাচ্ছে  শহর আবছা  কুয়াশা
ঋত্বিক ঘটক মেঘে ঢাকা তারা
সত্যজিৎ রায় তিনকন্যা ,আমি দেখেছি যেদিন তোমায় চিনলাম।
ফেলুদার হাতে কম্পাস
কম্পাস ঘুরছে আমার সমান্তরাল তোমাতে ,
তুমি সমান্তরালের মাত্রা লিখতে চাইলে
আমি লিখলাম তোমায়।
.
এই রাতে কত আলো ,অনেক বড়ো বড়ো হোটেল ,বড় বিষাক্ত হোডিং
তুমি হাসছো
তোমার কাঁধ থেকে খুলে যাচ্ছে তোমার ব্রায়ের কাঁধ
আমার কাঁধ ঝুঁকে পড়ছে।
দৃষ্টির কাছে ঝুঁকে পড়ছে ক্রমশ লালচে হতে থাকা তুমি
নিঃশ্বাসে লেগে আছে নাইট ল্যাম্প ,ল্যাপটবে ওয়ালপেপারে দীর্ঘশ্বাস
সারি দেওয়া বড় বড় ল্যাম্পপোস্ট
একটানে খুলে ফেলি তোমার সময়ের পেটিকোট ।
আমার কবিতা তোমায় শুঁকছে ঠিক ফুটপাথে কুকুর
আমার নেশায় লাগা শরীর।
তোমার চোখ ,চোখের থেবড়ে যাওয়া কাজল
আমি পাগল ,আমি পাগল
তুমি হাসছো
জড়িয়ে ধরছো
বলছো শান্ত হ ,এটা কবিতা না।

Tuesday, November 19, 2019

এইভাবেও ফিরে আসা যায়

এইভাবেও  ফিরে আসা যায়
... ঋষি

ঘুম ভাঙে তবু  রাত্রি শিওরে দাঁড়িয়ে থাকে
শেষ হয় না,
সিলিঙে দৌড়োনো ঘোড়া
শহরের গলিপথ
অন্ধ বাঁচা।

একটা দুর্যোগের রাত
শন শনে হাওয়া ,এলোপাথাড়ি বৃষ্টি ,একটা ট্রেন ছুঁটে আসে নৈঃশব্দ ছিঁড়ে।
অনেকখানি পুড়লে মেঘ জমা হয়
মেঘ পুড়লে একলা সমুদ্রে জমা হয় সফেনের ইতিকথা।
নিভে যায় মৃত্যুকাঠি ,নিভন্ত চুল্লি
মিথ্যে কাঠ
মিথ্যে অভিমান।
শত সহস্র জমতে থাকা সত্যিগুলো সময়কে মেনে নিতে হয়
ব্যস্ততা নাকি তাচ্ছিল্য।

বৃষ্টি সুখের কথা।
দুঃখের কথা স্বপ্নে জমতে থাকা তোর অজস্র হাসি।
পিছনে ফিরে আসা যায় না ,পিছোতে আর জীবন চায় না।
বৃষ্টি অস্থি ভেজায় ,ঘর পুড়লে চিত্রনাট্য
সুখের কথা ,
বৃষ্টি ধান্ধাবাজ
যখন তখন ভিজিয়ে যায় গোপনে।
মেঘের দেশে রাত বাড়লে ভালোবাসা উপোসি হয়ে ওঠে
বৃষ্টি বাড়ে
ছিন্নপত্র ,এক কারসাজি
তোমার স্নানের ঘরে
মুখোশ উদোম নগ্নতা নিজের আয়নায়।
এইভাবেও  ফিরে আসা যায়
প্রতি রাত্রে বৃষ্টি আসে ,সাথে তুমুল ঝড়।

আমরা


আমরা
... ঋষি

চাই তো অনেককিছু
সিয়াচেনে নেমে আসুক গভীর সুখ ,
সীমান্তে থেমে যাক গোলাগুলি ,মানুষের বুকে আগুন
শিক্ষা মানুষের পুস্তকে নয় হৃদয়চিত হোক ,
তুই থামিয়ে দিলি আমায়
অনেকটা বিরক্তির সুরে  বলে উঠলি  কিন্তু তুই চাস না
আমি ভালো থাকি।

আঁতকে উঠলাম
প্রতিবাদে নেমে হেঁটে গেলাম সারা শহর জুড়ে সময়ের শোকে।
এই বুঝলি  সোনাই তুই আমায়
তোর জীবন হাসানুহানার গন্ধে ভোরে উঠুক
তোর সকালে চেরাপুঞ্জি নামুক ,মিটে যাক তোর তৃষ্ণা পাহাড়ি সভ্যতায়।
ওদের সংসার আরো শুভ হোক
আরো ভালো থাকুক ওরা।
তুই আগুনের চোখে তাকালি আমার দিকে।  বললি সেলফিস
আমি অবাক হলাম
বললি সব আছে আমরা  কই ?
আমরা কই কবি ?

আকাশ ছেঁড়া গেলো ,সময় ছেঁড়া গেলো
আমার বুকের দুচারটে সুতো অদ্ভুত ভাবে পুড়ে গেলো।
আমি বললাম ,আমরা তো আছি
যেমন এই শহরের ঋতুবদল ,পড়ন্ত বিকেলে কৃষ্ণচূড়া।
তোর নদীর দিকে তাকিয়ে সেলফি
আমার কাজের ফাঁকে অনিয়ম,বেহিসেবি ভাবনা।
যেমন ইনবক্সে বাড়তে থাকা প্রশ্ন
যেমন সবার সাথে ঘুমিয়ে পরা বেঁচে থাকা।
আমরা আছি তার প্রমান
এই যে এখন তুই কাঁদছিস। 

অনেকটা না বলা



অনেকটা না বলা
... ঋষি

বলে ফেলছি আমাদের যা কিছু গোপন
বলে ফেলছি শর্তহীন ভালোবাসায় লেগে গেছে অভিশাপ।
সময় চ্যুত একটা তীর
ঢুকে যাচ্ছে বুকের গভীরে।
.
ভালোবাসি বলেছি অনেকবার
কিন্তু প্রশ্ন করিসনি তুই ,কতদিন ভালোবাসবি ?
যেদিন তোর বুক ঝুলে যাবে ,যেদিন তোর পেটে স্ট্রেসমার্ক ,
অবধারিত যেদিন তুই সংসারে ব্যস্ত ,
যেদিন তুই একবারও ফোন করার প্রয়োজন বোধ  করবি না
কিংবা সারাদিনে একবার জড়িয়ে বলবি না আমি  আছি।
হাসছিস
অদ্বুত প্রেমিক
তুই বলেছিলি হাতের নাগালে পৌঁছে মানুষের চাওয়াপাওয়াগুলো অস্থির।
তুই বলেছিস স্থির হতে
মা বলেছিল আমার এই ছেলে ভীষণ অস্থির
শিক্ষক বলেছিলেন আর কবে ,লক্ষ্যে ভুল হবে যে এবার ।
.
অনিশ্চয়তা
তুই ঢুকে পড়েছিস  বৃত্তাকার মনের আস্তরণে।
যেখানে ভুল বলে কিছু নেই ,
যেখানে ঠিক বলে কিছু নেই
যেখানে কোনো চরিত্র নেই ,নেই বেঁচে থাকা।
আছে অনেকটা না বলা
যেখানে মৃত্যু আসে প্রতিদিন হাসি মুখে।
সময়ের আবর্তনে আমি দাঁড়িয়ে থাকি একলা নগ্ন তোর কাছে
তুই ঘাঁটিস খানিকটা মাংস ,আমিও ঘাঁটি
ঘাঁটি হৃদপিণ্ডের ধুকপুক
তারপর
সময় চলে যায় ,বেলা বয়ে যায় ,মনখারাপ।
তোর গলা শুনতে আমাকে ছিঁড়তে হয় হিসেবের সময়কে
আর তোর না বলতে পারা  প্রশ্নগুলো। 


Sunday, November 17, 2019

দুটো মানুষ



দুটো মানুষ
......... ঋষি

দুটো মানুষ হেঁটে চলেছে বহুদিন পাশাপাশি
কখন যেন ক্লান্তি এসেছে তাদের মাঝে ,ঘুমিয়ে পড়েছে  ওরা।
হাঁটছে ওরা
ওদের পা নেই ,নেই পথ
আর পদচিন্হ।
.
কোথাও হয়তো ভুল ছিল
কোথাও হয়তো বিষাক্ত হাওয়াতে উড়ে এসেছিল কাগজের এরোপ্লেন।
স্বপ্ন দেখছিল মানুষ দুটো
আকাশ জোড়া স্বপ্ন
কিন্তু তারা ভুলে গেছে তাদের পদচিন্হ কোথাও নেই,ছিল না কোনোদিন
সাদা কাগজে আলতা লাগানো পা ,
শুধু দেওয়ালে টাঙানো স্মৃতি হয়ে থাকে সর্বদা।
তারা ভুলে গেছিল  মানুষের কান্না ছাড়া সময়ের বৃষ্টি নামে না
নদী ,নালা ,সমুদ্র সব শুকিয়ে যায়
তৃষ্ণা শব্দটার জন্মাবার জন্য চোখের জল ও আছে ।
.
সময়
নিজেই একটা বিশাল বড় প্রহসন ,একটা গোলক ধাঁধা।
দুটো মানুষ
অনেকটা নিঃশ্বাস হয়ে বিশ্বাসে জড়িয়ে পড়েছিল
যেমন ভালোবাসায় হয়,
হঠাৎ জনশুন্য সময়, ঠিক একলা দাঁড়ানো নেমেসিস্।
দুটো মানুষ হাঁটতে চেয়েছিল এই শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে
দুটো মানুষ আকাশের গায়ে লিখতে চেয়েছিল সম্পর্ক।
কিন্তু তারা হাঁটতে পারে নি
শুধু তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে গেলে আজকাল শোনা যায়
বাসন ছোড়াছুড়ি ,বিষাক্ত গালাগাল
আমি হাসি
বুঝতে পারি দুটো মানুষ অনেকদিন মরে  গেছে
তবুও একসাথে আছে ।   

তিনটে পথ


তিনটে পথ
... ঋষি

সকালের ঘুমে তিনটে পথ
একটাতে যেতে হবে ,
আবার একটা জ্যান্ত রাত ভালোবাসতে ভালোবাসতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমোচ্ছে
ঘুমোচ্ছে দেহ ,
দূরে কোথাও নিঃশব্দতা ভেঙে উঠে আসছে ট্রাম
শহরের বুক ছিঁড়ে তখন কেমন একটা সকাল হওয়া লেগে।

কুয়াশা গড়াচ্ছে
সকালের ঘুমে নগ্ন বিষাক্ত প্রেম একমনে উপন্যাস লিখছে
ভালোবাসা ,ভালোবাসা।
ফেন্সুই মেনে মাখানো উপন্যাসের পাতায়
উঠে আসছে হাজারো চরিত্র।
চরিত্র বিন্যাসে কখনো ভুল করে নি ঈশ্বর
মানুষের ফাঁকা ঘরগুলো ভাড়া দিয়ে চলে গেছে অনেক্ষন
সম্পর্ক।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে অন্য মেজাজ শহরের
রাষ্ট্র দৌড়ে আসছে ,সময় গা চুলকোচ্ছে ,পাহাড়ি শীত
এই শহরে ভালোবাসা পাওয়া দুস্কর।
বৃষ্টি আসে নি বহুদিন
অনবরত শহর লিখতে লিখতে ক্লান্ত কলমের নিবে আজকাল ধ্বংস
মাঝে মাঝে পালাতে ইচ্ছে করে আমার  নিজেকে ছেড়ে
হয়তো তোমাকে ছেড়ে
খুব দূরে।

সকালের ঘুমে তিনটে পথ
তুমি এসে দাঁড়ালে ,ফিরে তাকানো যায় না তোমায় ছেড়ে
অন্য পথে।
পথ ভুল হয় ,ঠিকানা ভুল হয়
চরিত্র বদল।
পুরোনো শহরের স্মৃতি হিসেবে আজ শুধু এই ট্রাম গাড়ি রয়ে গেছে
সব বদলেছে।
ঝাঁ চকচকে  বড় বড় দোকান, শপিং মল
এখন শুধু সাজানো ম্যানিকুইন।
ঈশ্বর দাঁড়িয়ে ভালোবাসায় একলা
অথচ ভালোবাসা ফুরিয়ে যায় একলা হওয়া এই  শহরে।

Thursday, November 14, 2019

জিগোলো যন্ত্রনা সার্ভিস


জিগোলো যন্ত্রনা সার্ভিস
... ঋষি

আকাশের  মেঘ গর্ভবতী হলে অনেকেরই হিংসা হয়
সেই হিংসা থেকে তৈরী হওয়া কাম ,
হাঁড়িতে চড়ানো ভাতের গন্ধ
গোপনে কাঁদা শরীর
আর
অনেকটা নেশা।

ভদ্রলোক জানলার পর্দা সরিয়ে দেখালেন একটা চাবুক চেবানো তরুণী
তরুণীর সারা শরীরে রক্তের স্বেদ ,
পঞ্চাশ পেড়িয়ে বিপত্নীক ভদ্রলোক উন্মাদের মতো হাসছেন
এটা হাসি নয় যন্ত্রনা
তরুণীর শরীরে চাবুকের দাগ নয় ওগুলো
ওগুলি তরুণীর খিদের হাসি
আর ভদ্রলোকের গত যৌবনের যন্ত্রনা।

মাড়োয়ারি ভদ্রমহিলা হাতপা বাঁধা সেই ছেলেটার পুরুষাঙ্গে দিয়ে চলেছেন
সিগারেট ছেঁকা।
ভদ্রমহিলা হাসছেন যন্ত্রনায়
তার স্বামী সারাজীবন গোপনে বিছানা খুঁজে গেলেন নিজের বৌদিকে
চুন্নি ,মুন্নি মেয়েগুলো মানুষ হলো না।
পঁয়তাল্লিশ পার এই ভদ্রমহিলা এখন রাক্ষসী
আর ছেলেটার পেটে খিদে সংসারে সাড়ে পাঁচজন মানুষ।

আসলে আকাশের মেঘে এখন দূষিত ভাবনা
মানুষ জিগোলো হয়ে উপশম করে মানুষের যন্ত্রনা।
অদ্ভুত মানুষ
ক্যানিং এর কল্পনা রোজি আর পার্কসার্কাসের আফজল ব্ল্যাক ক্যাট এখন। 
আর যন্ত্রনা
মানুষের খিদে অপারক মানুষ।
আপনিও যোগাযোগ করতে পারেন
ছিয়াত্তর খিদে পাড়া লেন ,পিন কোড  -কলকাতা মন্বন্তর, 
কিংবা হাওয়ায় সার্চ মারুন
জিগোলো যন্ত্রনা সার্ভিস
আমাদের কোনো শাখা নেই সবটাই মানুষ। 

জেদ


জেদ
... ঋষি

ভোরবেলা চোখ খোলে
কিংবা আধভাঙা ঘুম অবিরত রক্ত বমি।
তুই আসিস
সঙ্গে একটা বিড়ালের নরম ছায়া ,একটা নোনতা জিভ
একটু মায়া, সামান্য স্পর্শ,
মনে হয়,
ক্রমশ ঘুমিয়ে পড়ছি আমি তোর গভীরে ,তোর বুকে।
আর একটু ভালোবাসা ,
নোনতা চুমু পেলে
স্বর্গের দরজা খুলে আমি গিয়ে দাঁড়ায় কমফোর্ট জোনে
যেখান থেকে তোর গলা শোনা যায়।

তোর সাড়ে তেত্রিশ সাইজের বুকে মুখ ঘষে তখন আমি বেড়াল
খুব চুপি চুপি কেমন একটা শৈশব চলে আসে।
জীবনের জামাতে আঁশটে গন্ধ লাগানো অসংখ্য মুহূর্তের ফাঁকে
আমি কেন জানি হাতা গুটিয়ে
নেমে পড়ি দুষ্টুমিতে।
আসলে তখন একটা খিদে পায় আমার ,
সঙ্গে একটা জেদ যেন জমা বারুদ।

সময় প্রতিটা মানুষকে একটা জেদ উপহার  দেয়
উপহার দেয় অজস্র মুহূর্ত ,
কেউ জেদ করে অন্যের ভিতরে নিজেকে খুঁজে পেতে চায়
কেউ জেদ করে ঘর ভেঙে ,আকাশ হয়ে যায়।
আর আজকাল আমার জেদ হলে ঘুম আসে না
আমার সমস্ত আবরণে তুই আসিস
যেন একটা বেড়াল ,
খুব সাবধানী পায়ে আমার বুকের উপর
তারপর মুখ ঘষিস 
তখন মনে হয়,
আমি স্বর্গের পারিজাতে একমাত্র জীবিত ঈশ্বর। 

মুখাগ্নি


মুখাগ্নি
....ঋষি

কি লিখছি ,কেন লিখছি
ভাবনার দেওয়াল জুড়ে অজস্র পোস্টার ,অজস্র মুহূর্ত।
টানেল দিয়ে পরিবাহী ভাষা
উধারণস্বরূপ কোনো বাউন্ডুলে আকাশে অনন্ত বাঁচতে থাকা। 
ভাবনার কিছুদূরে পরে থাকা মৃতদেহ
যেন ঘরের দরজা পেরিয়ে
অজস্র দরজা
ঘর।

জেগে আছি অভিশাপ।  ভাঙ্গাচুরা মাটির কলসির গড়িয়ে নামা তৃষ্ণা
স্বপ্নে লুকোনো  উপড়ানো চোখ।
একটি কালো গোলাপ,
বেশ্যার মৃতদেহ জুড়ে অজস্র ভনভন করা মাছি
সভ্যতার নর্দমার গল্প
আর সময়ের মৃতদেহ।

বারংবার মৃত্যু ফিরে আসে
মৃত পাপড়ি। মৃত সন্তানের মুখাগ্নি করছে সময়।
বড় ধারালো কোনো যন্ত্র  শরীরের হাজারো ক্ষতবিক্ষত টুকরো
সংগৃহীত বৈঠকখানায় শব্দের বমি। 
জেগে উঠছে নিজস্ব আঁধারে অজস্র মৃত অধ্যায়
প্রেমিকার লিপস্টিকের দাগ মৃত্যুর জামায়।
আলো ফুটবে না ভেবে
কাঁদছে না সময় ,সূর্য পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে হস্তমৈথুনরত
কারো মুখে জ্বলন্ত শেষ শব্দ।
কষ্টগুলো এরকমই হয়। না বলা ইতিহাসটুকু লুকোতে লুকোতে
জমাট বাধা রক্ত শব্দের কলিজায়।
মধ্যাহ্ন সময়
অপ্রকাশিত শৈশবের বাতিঘরে মৃত্যুর পায়ের ধ্বনি 
মুখাগ্নির সাহ্নিক ফল। 

ম্যাসেজ


ম্যাসেজ
.... ঋষি

কি হয়েছে ?
মনখারাপ। হঠাৎ তুই তুই লাগা বিনিময় ,
খুব সম্ভবতঃ তির্যক একটা সুড়সুড়ি নিজের শহর ছুঁয়ে
তোর শহরে ,
চারপাশে ল্যাভেন্ডারের গন্ধমাখা প্রেম ,অবিরত বিশ্বায়ন।
সদ্য ছাপা খবর কাগজের গরম উষ্ণতা
প্রেম খুঁজছে শহর
আর শহরের লোকাল গার্জেনের হাতে অনেকটা বিনিময়
চুমকি বসানো গ্রিটিংস কার্ডে
ছোট তিন অক্ষরের ম্যাসেজ।

কথা বলছিস না তুই
যুদ্ধ শেষে  সময় ফিরে গেছে চারিপাশে ফেলে রেখে কিছু সময়
ভনভন করছে স্মৃতি ,
রঙিন রুমালে গিঁট খুলে নগ্ন সভ্যতায় আমি দাঁড়িয়ে।
সময়ে আমার রুপোলি আত্মা
হাতের চেটোয় নরম স্তন ,ঠোঁটে অক্ষরে লেগে খনিজ উষ্ণতা।
আসলে আহত  পথিকের পথ সর্বদা ১৪৭ ধারা 
তোর ধারালো নখের আদরে চুমু আমার বুকে।
কি হয়েছে
কথা বলছিস না কেন ?
মাইলের পর মাইল জেরক্সের দোকান
হাজারো হাসির লিরিক ,সভ্যতার হাজারো কপিতে গোপন নীরবতা
এই তো ছাপতে নেই সব
মনের কোনে এফ এম তীব্রতায়
শুধু দিন কাটানো।

অদ্ভুত কিছু মুহূর্ত
স্টারডাস্ট ঝরছে আনাচে কানাচে আচমকা খুঁজে পাওয়া তোকে
আমার গভীরে কোনো ঝড়।
প্রশ্ন করি নি কখনো ,জানতে চাই নি
আমার কি হবে ?
সমস্ত সময়  জুড়ে ঘুরে মরছে কিছু অনবরত  দখলদারি
লিরিকাল হতে হতে তুই  ও  মেলোডি
আমি কানা, কালা, সবকিছু হাতছাড়া ,শুনতে পাচ্ছিনা অনেক্ষন 
বড় বেশি তছনছ ,

যেন কবিতায় নাইট্রাস আর হ্যালোথেন .....
শুনতে পাচ্ছি না কেন,
 হ্যালো?? হ্যালো!

কমলালেবু

কমলালেবু
... ঋষি

শীত খুঁজছে শহর
আসতে আসতে বেরিয়ে পড়ছে কম্বল ,চাদর ,দস্তানা।
বিছানায় জড়িয়ে থাকা ওম
কমলালেবুর শহর থেকে নেমে আসছে  অজস্র নিশ্চুপ কুয়াশা।
লেপ্চা রমনীদের হাতে বোনা সোয়েটার
মেঘের ঘর থেকে কেমন একটি শীত শীত শিহরণ।

আমি আছি আমার মতো
তোমার বোনা নীল সোয়েটারের পাখিগুলো আজও আকাশ খুঁজছে অবিরত।
সময় পেরিয়ে নেমে আসছে কালো ধোঁয়া উড়িয়ে পাহাড়ি ট্রেন
আমার মুঠোয় বন্দী কিছু সবুজ চা বাগান।
পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উঠতে থাকা রাস্তাগুলোতে
আজও হঠাৎ পিছল।
পশমি সুতো ,আদুরে আঙ্গুল জড়িয়ে  রোদ
হঠাৎ আমার শহরে।

শীত খুঁজছে শহর
মফস্বলের মতো আজকাল ঝুপ করে সন্ধ্যে নামে শহরে।
তোমার গালে উইন্টার  ক্রিম ,লিপবামে চা পাতার গন্ধ
আবেশ খুঁজছে শীতে।
সেঁটিয়ে যাচ্ছে অবিরত যেন পাহাড়ি ঢেউ
আমার মনে তুমি যে লেগে আর ঠোঁটের কফিকাপে তোমার ঠোঁট।
আজকাল ভীষণ শীত শীত করে জানো
খোসা ছড়ালেই নিজেকে মনে হয় পাহাড়ি ঝর্ণা।
এবার শীত আসবে বহুদুর থেকে
কমলালেবুর মত মন,
বদলানো অভ্যেসে। 

সিঁদুর

সিঁদুর
.... ঋষি

সিঁদুর মানে কৌটো বন্ধ নিজের চেতনা
অনেকটা ঠুলি পরা ঝিমিয়ে থাকা দুপুরের ভোজ।
সিঁদুর মানে পরপুরুষ  দেখতে নেই
সত্যি বলতে নেই,
সিঁদুর মানে  মেঘ ডাকলে যদি বৃষ্টি নামে দু উরুর মাঝে
অপেক্ষা করতে হয়।
সিঁদুর মানে পথচলতি নিজের প্রিয় ইচ্ছাগুলো প্রতিদিন ,প্রতিমুহূর্তে
হত্যা করতে হয়।

সিঁদুর মানে ভালোবাসতে নেই নিয়ম ছাড়া
নিয়মছাড়া একলা পথে হঠাৎ মনে আসা প্রিয়মুখটা হত্যা করতে হয়।
সিঁদুর মানে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সংসারের কথা ভাবতে হয়
রোদে পিঠ পুড়িয়ে সংসার ঢেকে রাখতে হয়।
সিঁদুর মানে দুপুরের পাতে কিছু উচ্ছিস্ট
সময়ের ডাস্টবিনে বিরক্তিগুলো জমা রাখতে হয়।
সিঁদুর মানে চোখের জলে লুকিয়ে কবিতা লিখতে হয়
টিভি সিরিয়ালে জমিয়ে ঝগড়া করতে হয়।
সিঁদুর মানে হঠাৎ গুটিয়ে গিয়ে নিজেকে সম্পর্ক প্রমান করতে হয়
কিংবা ধরো  নপুংসুক সময়ের সন্তান ধারণ করতে হয়।
সিঁদুর মানে সারাদিন খাটনি ,শুধু সংসার চাল, ডাল ,নুন
তবুও সেই পুতুলখেলা ,জেনেও করা ভুল।
সিঁদুর মানে বিছানার চাদর ,রাতের শরীর ,সন্তানের স্তন
তবুও কোনো মেঘলা বিকেলে আনচান সেই মন।
সিঁদুর মানে একলা বাঁচা
তবুও নাটক সময়ের খাঁচা।

সব সত্যি ,সব মিথ্যা
তবুও সময় মুখ বন্ধ ,কান বন্ধ , শাড়ি পরে সন্ন্যাসিনী।
ইচ্ছেগুলো উপোস করে মরা
কোনো স্বপ্নে দেখা বিদ্রোহিনী।
সিঁদুর মানে শুধু নামেই ..
" যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম।
যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব।।" ...
আর বাকিটুক সামাজিক  ...........



আমরা যে বড় হয়ে গেছি

আমরা সকলেই আমাদের কাজ করছি  ইচ্ছেদের নিয়ম করে খুন করছি  জানলার লোহার রড চেপে ধরে অসহায় আকাশ দেখছি  খুঁজছি আকাশে উড়তে থাকা পাখিদের , নিজের ভি...