Friday, January 31, 2020

তোমাকে ভালোবাসতে

তোমাকে ভালোবাসতে
... ঋষি

প্রেম আর সিগমুন্ড ফ্রয়েড ছাড়া
আমরা কি আর কোনো কথা বলতে পারি না।
শুধু পাশে পাশে হাঁটার জন্য ,শুধু ভালো থাকার জন্য
শুধু বাঁচার জন্য
তোমাকে জড়ানো কি খুব প্রয়োজন ?

তোমার চোখে চোখ রেখে কি কথা বলা যেতে পারে 
বলা যেতে পারে ভালোবাসি।
নাকি তোমাকে ভালোবাসি জানাতে আমাকে  যেতে হবে তোমার কাছে
নিয়ম করে কোনো একলা রেস্টুরেন্টে
কোনো একলা দুপুরে
কোনো একলা কথাতে তোমাকে চুমু খেতে হবে।

আসলে আমি ঈশ্বর দেখি নি 
তবে আমি ঈশ্বর খুঁজেছি বরাবর তোমাকে ভালোবাসতে ,
আমি কারণ নিয়ে ভালোবাসিনি তোমায়
তোমায় শুধু মন্দিরে পুজো করেছি।
তোমার হাত ধরতে চেয়েছি ,ভেসে যেতে চেয়েছি একলা নদীতে
কাগজের নৌকো।
তোমাকে ভালোবেসেছি আকাশের মাঝে এক ঝাঁক পাখির মতো
মুক্তির খোঁজে।
আমার তোমাকে ভালোবাসতে তোমাকে জড়াবার প্রয়োজন নেই
তোমার মুখমণ্ডলে প্রতিটি ধ্রুব তারা আমার খুব কাছে
অন্ধকার আকাশে।
সত্যি বলতে কি আজকাল মনে হয়
তোমাকে ভেবে আমি হেঁটে যেতে পারি কয়েকশো যুগ
তোমাকে ভালোবাসতে আমার তোমাকেও প্রয়োজন নেই। 

ঈশপের গল্প .....


ঈশপের গল্প
.......ঋষি

পড়ন্ত এক বিকেল,
সূর্য কেমন ঈশপের দেশে নিতী বাচক কিছু।
আমি ক্রমশ গোধূলির উষ্ণ রঙে, মিশে যাচ্ছি ক্রমাগত
ভিতর ভিতর ধূলিমলিন সভ্যতায়।
যেন শীতের পর্ণমোচী অরণ্য
আঙুল ছুঁয়ে দেখো, কম্পিত আমি কম্পিত সময়।

ভেবে দেখছি না মানুষ নামক সাজানো সভ্যতা
নিংড়ে খাওয়া সমাজরীতি, মরতে  থাকা মানুষ,
বিপন্ন প্রকৃতি।
আমি থাকবো আমার মতো চোখ বুজে,মুখ বুজে
 ঠোঁটে সেলোটেপ এঁটে
ছিঁড়ে ফেলবো ঈশপের বই।

সন্ধ্যে হবে ফিরবো ঘরে,রাত্রি হলে ঘুম,
পরদিন সং সেজে দৌড়াবো,ঘোড়ার মতো ছুটবো
প্রতিদিন।
শেষে পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের সাজানো  ঈশপের গল্প শুনে
মাথা নাড়বো, গা ভাসাবো
তারপর হাতে তুলে নেবো বাঁচার আগুন,তাতে পোড়াবো নিতীপাঠ ।
তোমার হাতে এখন সময়ের ফুল
আমার বুকে মৃত মুখ,মৃত স্বপ্ন, মৃত কিছু যোগফল,
গড়িয়ে নামছে জল।
আমরা কি বদলে যাচ্ছি সময় ?
কেউ ঘুমিয়ে আছে আমাদের থেকে বহুদূরে
কেউ আসবেনা আর জানি সময়ের ভুল,
তবু এখনও বাঁচতে ইচ্ছে করে
অন্ধকার থেকে  আলোতে লিখতে ইচ্ছে করে  ঈশপের নিতীকথা।

শহরে বইমেলা

শহরে বইমেলা
... ঋষি

শহরে আজ বইয়ের গন্ধ
সময়ে আজ ফেলে আসা কিছু পুরোনো বইয়ের পাতা।
এই সময় ,অসময়
তবু বদলালো কই ,তোমার গন্ধ ,মেলার বই ,
তবু বদলালো কই আমার শহরের মানুষ
আর মানুষের মনে বইয়ের শহর।

অদ্ভুত অনুভব
থরে থরে সাজানো হাজারো কবি ,হাজারো লেখক ,হাজারো ভালো লাগা ,
হাজারো সভ্যতার সৃষ্টি ,মনের কোনের খোঁজ
ভালো লাগা।
এতো আলো চারিপাশে ,
ছড়ানো সুখ ,ভরানো বুক
নতুন বইয়ের পাতা ,নতুনের গন্ধ।

ফিরে আসছি চলন্তিকা তোমার কাছে
তোমাকে আমাকে খুঁজে পাওয়া এই বইমেলার মাটিতে ,বইয়ের সাথে।
তোমাকে আমার সাথে পাওয়া
এই বইয়ে গন্ধে ,সময়ের রন্ধ্রে ,সময়ের সাথে।
অদ্ভুত চাহুনি তোমার
অদ্ভুত আলো ওচোখে যেন সবুজ প্রকৃতি
বাঁচার ঘ্রান।
আমি বাঁচি তোমার সাথে
আমার শহরে রাস্তায় ছড়ানো রোজকার কবিতায়।
আমার বারংবার ফিরে পাওয়া তোমায়
সময়ের আলোয়
বইয়ের পাতায়।
আমার শহরে বইমেলা
চলন্তিকা শুভেচ্ছা  তোমাকে আলোর সাথে ,আলোর মেলায়।   

Thursday, January 30, 2020

কাছে দূরে



কাছে দূরে
... ঋষি

জানি না তোর কতটা কাছে গেলে
তোর কাছে থাকা হয় ,
তবে প্রতিবারে আমি তোর আরো কাছে আরো কাছে।
জানি না তোর থেকে কত দূরে গেলে ,
দূরে থাকা হয়
তবু প্রতিবারে আমি তোর কাছে দূরে।
.
সন্ধ্যে হলে প্রতি সূর্যের পর আমি হারাতে থাকি নিজেকে
হারাতে থাকি আমি দূর সমুদ্রে।
কোনো এক অন্ধকার 
পথচলা ,
বিশাল বিশাল ঢেউ আমার বুকের উপর ,অনেকটা স্তব্ধতা চেপে বসে
আমি আকাশের চাঁদে অবলম্বন দেখি ,
হারিয়ে যাই।
.
জানি না তোর কতটা পাশে থাকলে
পাশে থাকা হয় ,
তবে তোর পাশে থাকলে আমি যেন অন্ধকার আকাশে চাঁদ হয়ে যাই।
রাত্রি যুবতী হলে
জ্যোৎস্না রাত্রিকে আদর করে ,অলংকার পরিয়ে মুগ্ধ করে পৃথিবীকে
আমিও মুগ্ধ হই ,
লিখে ফেলি রাত্রিকে যুবতীর প্রেমে তোর মতো।
রাত্রিও যুবতী হইল ।
জানি না কখন ভোর আসে
সূর্য ওঠে ,আমি বাতাসে কান পেতে নোনা হওয়ার শব্দ শুনি
শুনি তোর বুকের ধুকপুক সমূদ্রের শব্দ
আমি যেন মিশে যাই।
জানি না তোর মধ্যে কতটা মিশলে ,
তোকে কাছে পাওয়া হয় 
তবে প্রতিবারে তোর জন্য আমি কাছে দূরে তোর পাশে। 

সময় ,রাষ্ট্র ,চলন্তিকা



সময় ,রাষ্ট্র ,চলন্তিকা
.... ঋষি

সময় ,রাষ্ট্র আর চলন্তিকাকে  এক লাইনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি
দেশ মানে কি ?
.
সময় চিৎকার করে
চিৎকার করে ঝরে পড়তে থাকে দু দুটো বিশ্বযুদ্ধ ,
ভিয়েতনাম ,প্যালেস্টাইন ,সাউথ আফ্ৰিকাৰ সেই বিখ্যাত ক্ষুদার্থ ছবি
মানুষের পাশে শকুন
মদের দোকানে ভীষণ লাইন ,মানুষ সৎকারের পর নেশার চোখ
ক্ষুধার পৃথিবী ,ক্ষুধার মতো সুন্দর
আর দেশ নরকঙ্কাল ক্রমশ
বুঝতে পারি না ,নারী  না পুরুষ ,নাকি হিজড়া
.
রাষ্ট্র জবরদস্ত
সাদা পাঞ্জাবি ,পায়জামা কিংবা কালো দামি কোট ,কোচকে জুতো ,
চোখের স্যানগ্লাসের আড়ালে চোখগুলো রক্ত চোষা
কার চোখ ? কার রক্ত ?
মানুষ তো স্বাধীন অথচ কেঁচোর থেকে নিকৃষ্ট
সীমারেখা ,কোর্টমার্শাল ,বি এস এফ
দেশের পতাকায় ঝুলতে থাকা ত্রিশূলে মানুষের রক্তের ছোপ
দূর থেকে মাইকে শোনা যাচ্ছে মিথ্যা
বিপ্লবী আমরা আসুন দেশ গড়ি ,মানুষের জন্য ,শৈশবের জন্য
প্রতিবেশী দেশের জন্য
কন্যাকুমারী থেকে শুরু করে সুমেরু শুধু শান্তি ,
রাষ্ট্র হাসছে মানুষকে বোকা বানিয়ে
.
চলন্তিকা সেদিন দেখলাম
তুমি হেঁটে আসছো আমার দিকে মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগানের মতো ,
তোমার গলা শুনতে পারছি
We need justice, No rape, No pain……….
সময় দেখছে ,রাষ্ট্র দেখছে অথচ নির্ভয়ার ঘটনার সংবাদ পরিবেশন
দৈনন্দিন রোজকার
তুমি হাসছো ,তোমার ঠোঁটে কালসিটে ,গড়িয়ে নামছে ঠোঁটের কোনে রক্ত
তবুও হাসছো এই বিশ্বে ,এই সংসারে ,এই জন্মে
চিৎকার করছো
Come on fuck me, come on ………….
আমি চোখ বন্ধ করছি
দেশ মানে তোমার মতো আমিও দেখতে পাচ্ছি
থেঁতলানো  যোনি মুখ 

Wednesday, January 29, 2020

বৃষ্টি ভেজা সংলাপ


বৃষ্টি ভেজা সংলাপ
.... ঋষি

যে কোনো সময় তোমাকে গাছ
 কিংবা মিথোজীবী ভাবতে ভালো লাগে।
ভালো লাগে কবিতার পাতায় শুকনো গোলাপের পাতা
কিংবা তুমুল হট্টগোলে লিফটে বন্ধ তোমাকে জড়াতে।
তোমার শহরে গভীরে  একলা দাঁড়িতে নির্জন বাসস্ট্যান্ডে
আমার আলোর নিয়নে ভাসতে ভালো লাগে।
.
তোমার থেকে বেরোতে পারি না
তাই হঠাৎ পথ চলতি সাউথ ক্যালকাটার বাসে উঠে পড়ি খালি পকেটে।
অদ্ভু লাগে ভাবতে একটা শহর
অথচ তার নর্থ ,সাউথ ,ইস্ট আর ওয়েস্ট
আরও  অদ্ভুত
চলন্তিকা তুমি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকো শহরের প্রতি রাস্তায় ,প্রতি গলিতে ,
হঠাৎ পথ চলতি বাসের জানলায়
কিংবা ধরো মাঝরাস্তায় দাঁড়ানো তুমি , তোমার অপেক্ষায়।
.
 মাঝে মাঝে নিজেকে অবাক করে
তোমাকে সরিয়ে রাখি নিজের থেকে ,পার্টিশানের দেওয়াল ,কিংবা দুর্গ।
কিংবা সেখানে রাখতে পারি না গাছ ,পালা ,সমুদ্র , নদী কিংবা বাঁচা
সেখানে শুধু নাটকের মঞ্চ ,সাজানো শহরের মুখোশ
আরও অদ্ভুত আমিও থাকতে পারি না।
তোমার মতো আমার শহরে বেঁচে থাকাগুলো  নিতান্ত সাধারণ
জলছবির শহর থেকে শুধু ছবিগুলো তুলে নিলে
জলে মতো,
নিতান্ত সাধারণ।
আমার শহরে জল ঝরে ,আমি বলি বৃষ্টি
তুমিও বলো।
আর আমাদের বৃষ্টি ভেজা সংলাপগুলো
যখন শহরের হাওড়া ব্রিজের মাথায় কালো মেঘের মতো জড়ো হয়
তখন আমার তোমাকে মনে পরে
হয়তো তুমিও মনে করো আমায়।


ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে
অন্য ভাবনায় ...ঋষি

ধ্বংস নিরুপম ,শিক্ষা অনুপম
ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
ভাবনার নিরিখে আজ ২০২০ জানুয়ারী ফুরোনোর গল্প।
পচা গলা সভ্যতা
সভ্যতার হাতে লেগে থাকা অজস্র যুগের অন্ধকার
বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখতে পাওয়া শৈশব স্কুলফেরত আমাদের। 
.
কেন লিখছি এমন
বিদ্যে চাই না মা আর মিথ্যে দেব না ঢপ
ডিগ্রি নিয়ে শেষ মেষ  তো ভাজতে হবে আলুর চপ।
কেন ভাবছি এমন
ফুটো পাতে আজও দারিদ্রতায় শুয়ে আমার আমজনতা জনগণ
আমরা করেছি পুজো ,রিমিকি মনোরঞ্জন।
.
ধ্বংস নিরুপম ,শিক্ষা অনুপম
কোন শিক্ষার কথা বলছে এই সময় শহরের মুখে সদ্য ফোঁটা ফুল ,
আমাদের ভুল
বোঝার ভুল ,
বিদ্যে দিয়ে কি হবে মা পড়ার শেষে চাকরি নেই
উন্নয়নের জোয়ার তাই ,বিদ্যাদেবী ভ্যালেন্টাইন।
ফিরে আসছে সময় শিক্ষা শুধু বস্তা চাপা কিছু কাগজের সার্টিফিকেট
পিঠ থাপড়াচ্ছে সময় শিক্ষা লাভ শুধুই কারণ।
কিন্তু কজন আমরা শিখতে চাই
কজন আমরা বুঝতে চাই
শিক্ষা মানে আলো ,শিক্ষা মানে জ্ঞান ,শিক্ষা মানে সুস্থতা।
শিক্ষা মানে মানুষের পাশে দাঁড়ানো
শিক্ষা মানে প্রতিবাদ ,
শিক্ষা মানে আর ধর্ষণ নয় ,মৃত কন্যা ভ্রূণ নয়
শিক্ষা মানে আলোর অগ্ন্যুপাত।

Tuesday, January 28, 2020

একটা প্রেমের গল্প





একটা প্রেমের গল্প
... ঋষি
একটু পরেই সবাইকে চলে যেতে হবে
যেমন যায় একলা ট্রেন,শহরের বাস,মানুষের বেঁচে থাকা।
নাগরিক জীবন
 মাথা উঁচু করে তাকিয়ে থাকা সিঁড়িদের দিকে,
সময়ের দিকে
 সময়ের  বারান্দাটা একা।
 দেওয়ালগুলোও তাকিয়ে বোধহয় তোকেও প্রশ্ন করে 
একা।

আমার নির্দিষ্ট জায়গা নেই
ঘর নেই,সময় নেই, তবু্ও  স্থির
আজ বহুযুগ স্থির শেওলা জমানো পাথর।
তোর রান্নাঘরের টেবিলে কয়েকটি সবুজ অপেক্ষা ,
প্রচুর বেদানা, ন্যাসপাতি-কমলা লেবুও
আর মাইনাস ফিগারে থাকা একটা মৃত রুপোলী মাছ।

আমার সদর দরজায় একলা দাঁড়ানো কিছু অপরিচিত মুখ
ফোন আসছে বন্ধুত্বে,  সময়ের ।
আমি অন্ধকার রাখছি ঘর
আমার পড়ার টেবিলে সময়ের হুটোপুটি
সিঁড়ি থেকে নাগরিক নিয়ম , নিয়মিত ওষুধের যাওয়া আসা।
যারা চলে যাবে বা গেছে
তাদের ভোলবার প্রয়োজন নেই,তারা ফিরে আসে
আত্মার মৃত্যু ছিল না কোনদিন ।
আগামী কয়েকঘন্টা আমাদের পৃথিবীতে ভালোবাসা শব্দটা শবঘরে থাক
বুঝি ভীষন  মনোটোনাস আমি।আমার চাওয়া আর পাওয়া।
আগামী কয়েকঘন্টা তোর ঘুলঘুলিতে চাঁদ বসুক
চরকা লাগানো বুড়ির মতো
 চিয়ার্স বলি আমি এবং আমার অন্ধকারে চুমকে ফুটে উঠুক হেমলক।
আকাশ একবার বাতাসের প্রেমে পড়েছিল
কিন্তু আকাশ জড়াতে পারলো কই
অথচ এই প্রেমের গল্পটা এর আগে কেউ লিখলো না ।

Sunday, January 26, 2020

সুইসাইড নোট


সুইসাইড নোট
... ঋষি

আচ্ছা তোমার আমার বাঁচাটুকু যদি নিয়ম মাফিক না হয়ে
যদি কিছুটা জঙ্গলে হয় ,যদি কিছুটা মাঝরাস্তায়।
যদি ধরো তোমার হাত ধরে আমি নন্দন ,ময়দান না করে
পাহাড়ের সেই সুইসাইড পয়েন্টে হাঁটতে চাই।
ধরো আমাদের প্রথম চুমু খাওয়াটা কলেজের গেটে না হয়ে
সকালের প্রথম সূর্যের সামনে হয়।
.
অবাক হচ্ছো
ধরো আমাদের ডেটিংগুলো কে এফ সি কিংবা ক্যাফে কফি ডে না হয়ে
রাস্তার পাশে সেই চায়ের দোকানে হয় ,
ধরো যদি আমি বহুদিন দাঁড়ি না  কামায়
আমার গায়ে ময়লা তেল চিটচিটে কাপড় ,চোখে ১৯৭৩ এর চশমা
পারবে মেনে নিতে।
.
ধরো কোনোদিন পথ চলতি  সমাজ বিরোধী মিছিলে আমি পথ হাঁটছি
তুমি এসে দাঁড়ালে আমার পাশে ,
আমি বললাম চলো আমরা একটা সমাজ গড়ি
যেখানে নেই কোনো শৃঙ্খল ,
তুমি সেদিন ছেড়ে চলে আসবে তোমার এতদিনের বেঁচে থাকা।
নাকি সেদিনও তুমি আজকের মতো বলবে
আমাদের  পথ হাঁটা এতটুকু
এরপর শুধু অপেক্ষা।
জানো তো আজকাল আমার ভীষণ ভয় করে চলন্তিকা
তোমাকে হারাবার ভয়
তোমার থেকে দূরে থাকার ভয়।
তাই মাঝে মাঝে আমার নিয়ম ভাঙতে ইচ্ছে করে
সময়ের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে
আচ্ছা আমি কি এখনো বেঁচে?
আমরা কি বেঁচে ?


রোমাঞ্চকর ,রহর্স্যময় ,রোমানস্


রোমাঞ্চকর ,রহর্স্যময় ,রোমানস্
.... ঋষি

সকলে চলে গেলে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি
যখন আমি ভীষণ একলা আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
সকলে চলে গেলো কোনো উৎসবে
আমি ব্যস্ত তখন আমার কবিতায় ,
ওখানে কালো কফি ,প্রেমিকার গ্যালাক্সী মাখা ঠোঁট , তৃষ্ণা
জঙ্গলে দাবানল ,
মিথ্যার ওরফে কাটানো শৈশব।
.
সাইলেন্ট যুগ চলে গেছে আজ বহুদিন
তবু আমি কপিরাইট আইন ভেঙে পালাই আমার লুকোনো প্রেমিকার সাথে।
বিশ্বাসঘাতক কোনো প্রেমিকা তার স্বার্থের লোভে
ঢুকে পরে অন্য পৃথিবীতে।
লাল রঙের পোড়া ইটের শহরে ছোট ছোট ঘর
গল্প লেখে আমার সাথে
আমার একলা দিনে।
.
রাস্তায় রাস্তায় রিমোট কন্ট্রোল কার
বাচ্চা দের  হাতে সময়ের চকোলেট।
চকোলেট চুষছে সময়ের বাবা মা ,এমনও হয় সত্যি
আমার গা রি রি করে।
মৃত হরিণীর বুকে মহাকাব্য লিখে যুদ্ধ থেকে ফেরা সৈনিক
খসখস করে পৃথিবীর বুকে লিখে দেয় তিনশো কোটি ভারতবাসীর মুখ।
পরিসংখ্যান আলাদা
আলাদা আমার এই কবিতা আমার ব্যস্ততায়।
এমন নিলিপ্ত প্রেমের রাতে বিছানায় শোয়া সহধর্মিনীর বুকে আঁচড় টানা
ঈশ্বরের শব্দ বোনা
দাঁড়াচ্ছে না।
আপেক্ষিকতা পবিত্র ইতিহাস আপদকালীন সময়ে
অর্ডিয়েন্স বসে থাকা পাঠকদের ঝুলন্ত সভ্যতায়
দাগ টানছে কিনা বুঝছি না ,
তবু ভালো লাগছে
এই রোমাঞ্চকর ,রহর্স্যময় ,রোমানস্ কবিতার সাথে। 

সত্যি মিথ্যা



সত্যি মিথ্যা
.... ঋষি

সত্যের একটা রং ,আর মিথ্যের প্রিজম জুড়ে রঙের ফোয়ারা
তবু এই জীবনে জানা হলো না
সম্পূর্ণ সত্যি বা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে কিছু হয় কিনা।
একের ভিতর বহু ডানা মেলে উড়ে যায়
প্রতিটা অচেনা গল্পে ঈশ্বরের রং,
ঈশ্বর আঁকেন ,ঈশ্বর ইরেজার ঘষে তুলে ফেলেন
মানুষের মন
সত্যি ,মিথ্যা।

প্রতিদিনকার বাঁচা ,খুনসুটি ,লুকোনো চিঠি ,আগুনের রং
পুড়ে যাওয়া বুক ,জ্বলতে থাকা সিগারেট ,ঈর্ষার ধারাপাত ,
প্রেমের সবুজ ঠোঁটে পেখম লাগানো স্বপ্ন ,
কি আবোলতাবোল
এমন করে সত্যি বলতে নেই
এমন করে মিথ্যে বলতে নেই।
এমন অনেককিছু থাকে যাতে গা ভাসাতে হয়
ভেসে যেতে হয়
জঙ্গলের হরিণীরা কাগজের নৌকায় অভ্যস্ত হয়ে গেলে।

মিথ্যে তো সত্যি নিজের অবুঝ মেঘে নিজেকে লুকিয়ে রাখা
নিজেকে সত্যি বলা ,কিংবা মিথ্যে।
আলোর স্তম্ভ গুঁড়িয়ে মাঝে মাঝে জীবন একলা দাঁড়ায়
একলা দাঁড়াতে হয় জীবন অন্ধকার রাস্তায়।
রাস্তা চলে যায় না শেষ হওয়ায়
সময় বয়ে যায় মহাজীবনের কাছে।
ভালোবাসার সমুদ্রে ঝড় ওঠে ,মাস্তুল ভাঙা পরে
একলা সমুদ্রে পথ হারানো ,
মিথ্যের সব কথা
আবহাওয়া বদলে সত্যি আঁকড়ে ধরে বিছানার চাদর। 
বৃষ্টি হয়
খুব বৃষ্টি সেদিন
কলঙ্ক মাখা কিছু সত্যির পাশে
মিথ্যেগুলো সত্যি বলে সাজিয়ে রাখতে হয়। 

অন্য আয়না


অন্য আয়না
.... ঋষি

অনিন্দ আমার কলিগ
শেফালি ওর বৌ ,আমি বৌদি বলে ডাকি।
আমার বৌ আর ওর বৌ এক গাঁয়ে থাকে ,এক গাঁয়ের মানুষ
তবু কেন জানি আমি শেফালির মধ্যে একটা গ্রাম দেখতে পাই
দেখতে পাই চকচকে একটা দীঘল পুকুর
সবুজ ঘাস ,আর একটা বিশাল আকাশ।

চোখ এগোলেই অনিন্দের সংসার
আয়নার পর্দা সরলেই দেখতে পাই বারান্দায় টেবিল
ঘরের ভিতর খাট ,ছাদের ওপর  দড়িতে  লাল ব্রা ,প্যান্টি নাড়া।
ভাবছি সামনের শীতে আমি আমার বৌয়ের গায়ে যাবো
সুযোগ বুঝে চোখ লাগাবো
অন্য আয়নায়
ডুব লাগাবো পুকুরের জলে ,একটু উড়বো বিশাল আকাশে।

আসলে সাধারণ মানুষ জানে না স্বপ্ন বুনে পেট ভরে না
চাল লাগে ,আর বাচ্চা বড়ো করতে টাকা।
এই সব ডিপ্রেশন ছেড়ে একটু পথের ধুলোয় হাঁটি আসুন
মোদ্দা গল্প
একজন মধ্যবিত্ত ঘরে এমন গর্জাস বৌ।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে অনিন্দকে বলি আড্ডার ফাঁকে
চিকেন ফ্র্যায়ের ফাঁকে
শ্যাম্পেন বা নেশার চোখের ফাঁকে
চল রে আমরা ফিলিংসগুলো সার্কাসের সময়ে লাগাই ,
তবে দুপয়সা
তবে শান্তি
শেফালির সবুজ গাঁয়ে নয়
মানুষের ভাবনায় আরেকটু ডেটল ফায়ারিং দরকার। 

শুধু ভালোবাসা


শুধু ভালোবাসা
...ঋষি
ভাবছি ঘুরে দাঁড়াতে হবে
ভাবছি আর প্রেম, পীরিত, ভালোবাসা নয়,এইবার মানুষ,রাষ্ট্র আর সময় লখবো।
ঘোড়া ছুটছে
রক্ত ছুটছে সময়ের অধিকার খুঁজছে।
সুযোগ খুঁজছে সকাল
চাঁদ অবলীলায় অন্ধকারকে বলছে ক্যায়া বাত।

মহানগরের রাজপথ, দোকানপাট হাততালি দিল
তোর বাড়ির জানলা থেকে দেখতে পাওয়া প্রাক্তন মুখটা হাততালি দিল।
তোর বারান্দায় ঝুঁকে পড়া আয়েশি গাছটা আনন্দে নেচে উঠলো
নাগরিক প্রতিদন্দী নাটকগুলো আনন্দে নেচে উঠলো।
খাট পালঙ্ক বিছানা বালিশ বিপ্লবের গন্ধে বুঁদ হয়ে গেল
আমির খানের লগন সিনেমাহলে খুব চললো।

কলমের আগুন মুঠোফোন মিডিয়ায় খুব চললো
উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপতে লাগল সদ্য ফেলে আসা যৌবন।
ঘুমিয়ে ছিলাম
স্বপ্নগুলো ছায়াছবি হয়ে চলতে শুরু করলো।
প্রোজেক্টরের যান্ত্রিক শব্দ-লাল নীল রঙের রুপকথা
সাদা ডানার পায়রার চোখের পাতায় পৃথিবীর সমস্ত বিপ্লবের ম্যানিফেস্টো ছুঁইয়ে দিল।
হঠাৎ টের পাচ্ছি ভোর হচ্ছে
ছুটে গেলাম আমি কলমের কাছে, কাগজের কাছে
লিখতে শুরু করলাম শুধু ভালোবাসা
বদলে গেলাম। আবার
একমুঠো বৃষ্টি  ঝুরঝুর করে নেমে এল মাথার ভিতর-
অস্ফুটে বলে উঠলো-
ভালোবাসা লেখা হয়নি আজও।
যদি ভালোবাসা লেখা হতো তবে রাষ্ট্, সময়, মানুষ সব বদলাতো
বদলাতো ম্যাজিক বেঁচে থাকার। 

Thursday, January 23, 2020

প্রেমিক বুকে অন্ধকার



প্রেমিক বুকে অন্ধকার
..... ঋষি

প্রৌঢ় লোকটি আরও একটু হাসে
হাসিতে চামড়ার ভাঁজ খুলে নেমে যায়  বটগাছের শিকড়গুলো।
গভীর শিকড়
গভীর ভাবনায় পিছনে এসে দাঁড়ায় লোকটার প্রিয় প্রেমিকা।
মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
মনে আছে ,
লোকটা হাসে খুব মনে মনে
বলে মনেতেই তো  আছে।
.
কি চমৎকার মনেতে থাকা ডোরাকাটা জেব্রাক্রসিং
আলোর পথে হাত ধরে হাঁটা
তবু প্রেমিক বুকে অন্ধকার।
সংসারের ভিতর ,প্রসূতির ভেতর, চালের হাঁড়ির  ভেতর খুব খিদে
সময় বড় হচ্ছে ,সন্তানরাও
আর প্রেম ক্রমশ হাঁপিয়ে চলেছে হাঁটার পথে।
.
তবু ছুটি আসে
তবু ছুটে আসে
সময়ের ইতিহাসে অজস্র চুপকথা
নিজস্ব বেওয়ারিশ লাশে লোকটার ক্রমশ অজস্র জলপ্রপাত
আসলে প্রেম শব্দটার পাখিদের মতো মুক্তি চায়
চায় গভীর আকাশ।
প্রৌঢ় লোকটি আরও একটু হাসে
খুনি কোনো একলা জানলা লোকটার দিকে পাহার খুলে দেয়
খুলে দেয় অজস্র ভালোবাসার দিন
অজস্র কাছে আসার দিন
পাহাড়ের ধাপ ,সূর্যোদয় ,সূর্যাস্ত ,ঢালু পথ ।
প্রৌঢ় আরও একটু হাসে
রূপকথা ভাবতে চায়
অথচ কোনো অভ্যস্ত অভিশাপ সময়ের রূপকথা বাঁচে না।
প্রেমিকা আবার বলে
কানে ফিসফিস ,ভালোবাসি
লোকটা একবার ফিরে তাকায় ,তাকিয়ে থাকে দূরে সূর্যাস্তের দিকে।




মাছরাঙার ডুব


মাছরাঙা ডুব
... ঋষি

ছুড়ি দিয়ে কেটে ফেলা সভ্যতা
তোমার ঠোঁটে চায়ের কাপ চিনেমাটির উষ্ণতা ,
কেউ দেখছে না ,পান করছি আমি তোমার ঠোঁট অবেলায়।
কেউ দেখছে না শুধু তোমার স্নানেরঘরে
এক ফোঁটা চিন্হ গড়িয়ে নামছে রবিঠাকুরের সুরে ,
শুধু রাত করে ফেরে রক্ত
শুধু সকাল করে ফেরে তোমার গলার স্বর
আর মাংসের ভেতর টপ টপ করে ঢুকে পড়ে
মাছরাঙার গভীর জলে ডুব।
.
ধান নিয়ে  স্বর্গে  যাবো, ভুলে যাবো ঈশ্বরকে
ট্রেন লাইনের ক্রসিং-পয়েন্টে কোনও ঝান্ডাই শেষাবধি ঝগড়া এড়ায় না
গারদের দু-পারে সমান, একে অপরকে যে পাগলই বলে।
আমার গভীর ভিক্ষার ঘরে ভবঘুরে
কিংবা বাউন্ডুলে  নামের একটি  মাত্র দরজা
দরজার চাবিটা ঈশ্বরের বাড়িতে বন্ধক রাখা।
.
জানি, বিশ্বাস হবার কথা নয় তোমার পায়ের কাছে বসে
তোমার হৃদয়ের খুব কাছে বসে
আমার কান কামড়ে ধরছে কোনো নিরিবিলি অন্ধকার
কোনো নগ্ন সভ্যতার উত্থান হচ্ছে।
ধনুকের মত বেঁকে যাচ্ছে ধামসামাদল বাজা লাল মাটির দেশ
কত যে ছবি এঁকেছি আমি
কত না শুনলাম  ড্রাম-বিউগল-স্যাক্সোর একলা রাজ্য
এখন আমি শহর তৈরী করছি
তৈরী করছি বাড়ি ,ইটের পর ইট
শুধু আর একলা থাকতে পারছি না। 

নিরামিষ কবিতা


নিরামিষ কবিতা
... ঋষি

মাৎস-ন্যায় মনে আছে
ন্যায় কিংবা দর্শনের কিছুই মনে নেই আমার।
হাড়িকাঠে দু-পা সজোরে টেনে ধরেছিলাম ,কেটে ফেলবো বলে
কোনো সময়ের অদ্ভুত ব্যবহার রাখবো না তাই ,
বাঁধা-মেয়েমানুষ কেমন সহজেই দেখি হাত পা ছড়িয়ে চিৎ
ঢুকে যাবার আগেই।
রাতের পরে দিনই আনবো হাঁটিয়ে বা ছুটিয়ে
হরিণ মায়ের বাচ্চা হওয়া, বা বাচ্চা বাঘের প্রথম শিকার
দুটোই নিরামিষ।

এ কবিতায় আমি কোনো নর্দমা টানবো না
টানবো না প্রেম বা দেশপ্রেম।
জেলে পাড়ার সেই মেছুনির দিকে তাকাবো না সমাজের বাইরে
বাসনায় টনটন ,কন কন ছেড়ে
বিপ্লবে কেরোসিন ঢেলে দেশলাই জ্বালাবো না।
শিলনোড়া ,শব কাটাইয়ের কল ছেড়ে
মাইরি বলছি আর যৌনতা ঘাঁটবো না।

কবিতায় আঁকবো জাদুঘর
মমির দীর্ঘশ্বাস সিনেমাগ্রাফিতে ফুটিয়ে তুলবো অন্য গ্রহে।
মায়ের কোলে শুইয়ে দেব স্নেহ
খুব কাছ দিয়ে ছোটবেলায় মায়ের মুখে তেজ দেখেছিলাম গর্জন তেল মাখা।
কবিতায় আমি আর   কীট বা কীটনাশকের কথা বলবো না
পাপের আপেলটা সভ্যতাকে খাওয়াবো না
লাট্টু ঘুরিয়ে পৃথিবী ঘোরাবো না ইন্টারনেট বাফারিংয়ে।
কবিতায় আমি সবুজ মাঠের পাশেই রাখবো ওয়াশিং পাউডার
বিপদের আন্তর্জাতিক সিম্ফনি।
ফিল্ম ফেস্টিভেলে কোনো ক্লোরোফিলের চাষ করা পর্দা দেখে
ফাটিয়ে ফেলবো না সময়ের বেলুন।
আমি কবিতা জন্ম দেব
জন্ম দেব সময়ের শিশ্নে বাঁচার যোগফল
তবে আমি মিথ্যে বলবো না আর কবিতা তো না। 

স্পর্শ


স্পর্শ
... ঋষি

ফিলামেন্টে হাত দিয়ে বুঝি অনেকদিন সহ্য করা হয় নি
এই দেহের মৃত রক্ত প্রবাহে লেখা আছে সময়
প্রতিবাদের ভাষাটা বোধহয় অভিমানের।
পুরোনো জামা ,বাক্সবন্দী স্পর্শ
এক ঝটকায় কাছে টেনে নিলাম ঘড়ির পেন্ডুলামকে
আমার ঠোঁটে ঠোঁট মুছে নিলো লিপস্টিকের কমলালেবু ফ্লেভার।
.
আগুন জ্বলছে সর্বত্র
তবুও আগুন জ্বালা থাকে না কোথাও ,কখনো
তাই একবার স্পর্শ দিয়ে দেখো।
দেহের মধ্যে বিদ্যুৎ ?
ফ্রিজে রাখা বহুদিনের পুরোনো বাসি সবজি
আজ রাতে তাই খাবে বোধহয় সময়।
.
সুরক্ষা বলয় থেকে বানভাসী বাউন্ডুলে  আমার আগুন
আতংকে ঝুলে থাকা তোমার মধ্যবয়স্ক স্তন,
আল্পসের বরফ।
অথচ দেখো  দিনে দিনে ক্রমশ  ম্যাচিওর হচ্ছে ব্লাউজের কাট
কি ভাবে উস্কে আনছে স্বাধীনতার সংগ্রাম
ক্লিভেজে লাগছে সবুজ নিশ্বাস ।
আজাদী আমার রক্তে
আমার খুনি চোখ বৃষ্টির মতো গড়িয়ে নামছে তোমার ফটোফ্রেমে।
রুটির কথা ভুলে যায় সহ্য
ইটে ইটে উঠে যায় বহুতল ফ্লাট
রাস্তা কামড়ে পড়ে থাকে জেব্রা ক্রসিং
তোমার খালি গা
আমার শরীরে কাপড় থাকে না কোনো
কিংবা লজ্জা।
স্পর্শ
একটা থ্রিডি কল্পনায় স্পর্শ ফুটে উঠছে।

ন হন্যতে


ন হন্যতে
... ঋষি

সময়ের কোনো নাভি নেই,
তবু প্রতিরাতে অজস্র স্পর্শে নিভে যায় শহরের বাতিগুলো।
রাস্তার লাইটপোস্টের হলুদ আলো লম্বা ছায়া ফেলে
পা মেপে হাঁটে
তারপর গিরগিটির মতো বদলে গিয়ে অন্ধকার হয়ে যায়।
শহরের রাজপথে তখন একলা দাঁড়িয়ে সময়
অপেক্ষা করে সকাল হবার।
.
 বাসের খোলস বেয়ে  নাগরিক স্পন্দন
এলোপথ ঘুরে আসে,শহরের কালো ধোঁয়া মেখে অন্য সময়।
ফিরে আসতে  হয়
মহানগরের  শিহরণ  বুকে নিয়ে
তোমার দুই হাতের মধ্যে,নিজেকে গুছিয়ে রেখে,
যে পথ হাঁটা শুরু,
শেষ অনিবার্য ট্রামলাইন,
আর ন হন্যতে প্রিয় শরীরে।
.
ওরা আলোকে  কবর দেবে বলেছিলো,
ওরা আলো নিভিয়ে শহরের রাস্তায় নীলডাউন করে আমাকে রেখেছিল ,
আমি সিঁড়ির কোণে দাঁড়িয়ে
গুনছিলাম জুতো ,তোমার আর তোমার অধিকারের।
তারপর দেখা হয়ে গেছে হঠাৎ চলে যাওয়া শীতে
আমার বুকে জমতে থাকা কফ।
হঠাৎ ঝিনুকের মার কথা আমার মনে পড়ছে
সেই বিহারি ,ইতর ভদ্রমহিলা
আর ঝিনুক সেই মেয়েটা যে  ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখাতো আমায়।
দেশে থাকতে হয়
দশে থাকতে হয়
মহানগর থেকে উধাও হওয়া আলো খুঁজছি।
অথচ কারোর হুঁশ নেই
কী যেন হয়ে উঠছে সব,কবিতার মত
ঝিনুক আর ঝিনুকের মা বড্ড নিলজ্জ তাই না। 

Wednesday, January 22, 2020

২৩ শে জানুয়ারি

আমরা যারা হাঁটতে হাঁটতে রোজ পড়ছি
উঠে দাঁড়াচ্ছি আবার  ,
স্বভাবে লেগে আছে বাঁচার অধিকার।
কলারের কাছে ,হাতের কাফলিং জুড়ে শুধু যোগ্যতার খোঁজ
শব্দ নয় ,শুধু রাষ্ট্র জুড়ে আজ বাঁচা লেগে
শুধুই বাঁচা।
.
২৩ শে জানুয়ারি ,ছুটির দিন ,পার্টির দিন ,দিন একটা সাধারণ
তবু মনে করে
তেইশ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঝুলছে শহরের মলে। 
কাকে মনে করছে সময় ?
কেন মনে করছে সময় ?
আসলে কিছু মৃত্যু শুধু কেঁচো হয়ে থেকে যায়
আর কিছু সময়ের অধিকারের দাগ ,
রক্তের  দাগ।
.
আজও যারা সত্যির সামনে অনায়াসে মাথা নিচু করে 
আজও যারা বন্দুকের নলের সামনে অনায়াসে সত্যি বলতে পারে
তাদের জন্য ২৩ শে জানুয়ারি।
রাজপথ আজও রাষ্ট্রের নাটকে সাজানো
তবু সেখানে আজও দাঁড়ায় কিছু মশাল মাথা উঁচু করে
সেই মশালদের জন্য ২৩ শে  জানুয়ারি।
রাষ্ট্রের প্রতিটা প্রতিবাদ
প্রতিটা মোমবাতি মিছিল
প্রতিটা সময়ের বিদ্রোহের জন্য ২৩ শে জানুয়ারি।
২৩ শে জানুয়ারি শুধু একটা দিন না
২৩ শে জানুয়ারি একটা প্রতিবাদের নাম
২৩ শে জানুয়ারি একটা জন্মের নাম
আজ জন্মের সেই বিদ্রোহী মানুষটাকে সেলাম
সেলাম বীর সুভাষ। 

বাঁশিওয়ালা



বাঁশিওয়ালা
... ঋষি

লাল মাটির সভ্যতা ছাড়িয়ে হেঁটে চলেছি
হেঁটে চলেছি বাঁশিওয়ালার খোঁজে ,
কাগজ কুচিয়ে তৈরী করেছি ঘর,কাগজের নৌকো ,কাগজের পুতুল
বাঁচার স্বয়ংবর।
ঈশ্বর হতে চেয়েছি তাই আমার পেয়ালায় উপছে ওঠা বিষ
শুধু সময়ের নেশা ,শব্দের নেশা
বর্ণদের আকাশের উড়িয়ে ,নীল আশ্রয় অহর্নিশ।
.
পায়ে হেঁটে ,ট্রাম লাইন ঘেঁষে মেঘদুতকে খুঁজে পাওয়া
আচমকা শহরের নদী ,খোঁপা ভাঙা ফুল ,অজস্র জীবনের ভুল ,
ভালোবাসা বললে বোকারা বোঝে
ভালোবাসা বললে জল্লাদদের জিভে এক ফোঁটা রক্ত।
ভালোবাসি তাই আমার হৃদয় চেটে নেবে রঙিন শকুন
ভালো বাসি তাই জীবনের এত ভুল।
.
হেঁটে চলা
শহরের প্রতিটা রেস্তোরায় ,প্রতিটা চেয়ারে রাখা
লুকোনো কিছু অন্তর্বাস ,ভালোবাসি ভালোবাসি খেলা
সাপ  লুডু খেলা
সময়ের গীতবিতান চটচটে প্রেম।
দেখেছি সময় ,দেখেছি প্রেমিকার মুখ ,দেখেছি সন্তানের
বুকের ভিতর হাহাকার ,দুটো কারণ
এক সন্তান আর এক তুমি অধিকার।
ভালোবাসি তবুও মরছি রোজ ,এই সময়ে পুরোটাই ফাঁকি
তবু বাঁচা বাকি
খাদের ভিতর থেকে হাত বাড়িয়েছি চাঁদের দেশে
তোমার বেশে
ক্রমশ পরিণত পূর্ণিমার চাঁদ
এক জ্যোৎস্ন্যায়
বাঁশিওয়ালা বাঁশিতে মত্ত। 

অ্যাশট্রেতে জমানো ছাই



অ্যাশট্রেতে জমানো ছাই
.... ঋষি

আজ বিকেলের রৌদ্র ফুরোনো  নিঃশ্বাস বেয়ে একটা অবচেতন  সিঁড়ি
তোমার বাড়ির ড্রইংরুমে আটকে গেছে।
সেখানেই শুরু হাইওয়ে,ক্রমশ আসা যাওয়া ,অন্তিম নিশ্বাস
বিশ্বাসে  প্রাচীন উপন্যাস।
অনেকটা সন্নাসীর মতো বাঘ ছাল আঁকড়ে জমানো যন্ত্রনা
কিছু এসপিরিন পোড়ানো ঘুমের ওষুধ ,
অসংখ্য  নাস্তিক অসভ্য রক্তপ্রবাহ ছিঁড়তে চাইছে সময়ের পাঁচিলটা।
এই স্নায়বিক আন্দোলন ছিঁড়তে চাইছে
তোমার জালিকাযুক্ত রক্তপ্রবাহ ,নিঃশ্বাসের বিষ
শেষ আট বছর তোমার শরীরে শুধু সাজানো আতরের গন্ধ।
.
কতগুলো মন খারাপের ঠিকানা আমার ব্যস্ত জানলায়
তোমার স্নানের ঘরের আয়নাটাতে  ফিরতে চাইছে 
এক মায়াবী সকালে।
আশেপাশে অসংখ্য প্রজাপতি গুঁটি ভেঙে ক্রমশ আকাশ ঢেকে দিচ্ছে
এমন কখনো ভাবিনি আগে
কিছু পাশ না করা সার্টিফিকেট
আমাকে ভেজাচ্ছে আজ  মেয়েটির  আঙ্গুল বেয়ে ক্রমশ নদী।
.
গর্ভাশয় থেকে রুপোর কাঠি গড়িয়ে
আমার লোমকূপ ছেড়ে উঠে আসছে গুঁড়ো গুঁড়ো থার্মোমিটার।
আমার শরীরে স্নান করছে সেই আদিম যুবতী
যার জন্ম আদমের হাড়ে শুধু বিস্তীর্ণতায়।
ঘুম আসছে না আজ বহুদিন
লাল হয়ে যাচ্ছে গ্রীষ্মের নাভিকূপ ,মায়াবী থালার শীতার্ত পরিবেশন
খৃষ্টপূর্ব লাল স্তন,পিন্ড পিন্ড যৌনতা।
রূপকথার সালোকসংশ্লেষ বসেছে
রাক্ষস তাল ,সুর আর সময় ,
তোমার মাংসল ড্রয়িংরুম থেকে আমি ঢুকে যাচ্ছি আমাদের বিছানায় 
আমার হাতে  পোয়েটিক অ্যাশট্রেতে  ,জমানো ছাই
আজ বাদে কাল রাতে আবার পুড়বো
যেমন পুড়ি রোজ তোমায় নিয়ে ,পুড়তে চাই।

চোখ থেকে দর্শন


চোখ থেকে দর্শন
... ঋষি
.
চোখ
.
জানি কোন এক দিন ঠিক স্মৃতিকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টায়
সময়কে বৃদ্ধ ,পুরাতন  হতে হবে।
সময়ের  সেই সব গানে যৌবনে থাকবে ঝিমিয়ে
শীত ঘুম দেবে জীবন ,চামড়ার বয়সের দাগে ।
সময়ক ব্যস্ত করছে শহর এই সময়
ব্যস্ত নাগরিক যাপনে দূরবীনে রাখা তাহাদের কথা।
কবির ঠোঁটে যন্ত্রনা , চোখে রোদ চশমা
বুদ্ধদেব বাবু একলা দাঁড়িয়ে
বার্ধক্যের দোরগোড়ায় আকাশের শেষ সীমানায় কামনা
হয়তো আশা।
মৃত্যুকে  খুঁজে ফেরে অধিকার এক একটা ধুরন্ধর অন্ধকারে
আবার প্রথম থেকে শুরু ।।
.
কারণ
.
রং আর আলোর মাঝে  টাইম মেশিন বসানো থাকে
বনবন ঘোরে ইতিহাস ,পর্যুদস্ত এই সময় ,
সব রং সাদা হতে চায়
সাদা রং আলোর মতন অধিকার খুঁজতে থাকে ।।
.
দৃষ্টি
.
বিচ্ছিন্ন ভীড়ের একলা বারান্দায় শব্দের মরশুমে হঠাৎ গর্ভবতী গাছ
প্রেম জন্মাচ্ছে মৃত্যুকে ঠোঁটে নিয়ে।
দূরে কোথাও মেঘ জমছে ,স্বচ্ছ কাঁচে অভিমান ঠোঁট কামড়াচ্ছে
কামরস
এরপর,
কথা শুরু হল চলন্তিকা তোমার ।।
.
দর্শন
.
বেকায়দায় মাটি খুঁড়ে সভ্যতা আবিষ্কারে ব্যস্ত ব্যাপকতা
প্রাচীন মন্দিরের গাত্রে প্রশ্ন চিন্হ তুমি
তোমার উপত্যকা।
ঋষিরা ধ্যানে মগ্ন আজ বহুযুগ ,রামের অহল্যাকে সাক্ষী রেখে
একযুগ শ্রমের ধারায় ,খুঁটে তোলা তোমার স্তন
সভ্যতা সৃষ্টির অঙ্গীকার।
 স্তরের আদিম ভোরে আঁকা থাকে
মানুষের বাইসন ,সৃষ্টির চাকা ,বসতি স্থাপন
নদী মাত্রিক সভ্যতা।
তাই তো সভ্যতা নারী ,তাই তো সভ্যতা সৃষ্টিতে
আকাশমোড়া বিস্ময়
তোমাকে আমার নদী মনে হয় চলন্তিকা
 এখানে ইতিহাসকে নাটক মনে হয়
মনে হয় শেষের শুরু  ।।


Tuesday, January 21, 2020

তবুও আমার কান্না পায়.....


তবুও আমার কান্না পায়.....
... ঋষি

তুই আমায় ভালোবাসিসনি কোনোদিনি
তাই আমার শরীরটাই কোনোদিন জামা পড়াতে পারলি না,
তাই নগ্ন করে রাস্তায় ছেড়ে রেখে গেছিস।
না তোকে বিরক্ত করতে চাই নি আমি কোনো দিনি
তোকে মনে করতেও চাই না
শুধু তোর দেওয়া ছেঁড়া  চিরকুট, তোর চিঠি
তোর মেলার থেকে  কিনে দেওয়া ভাংগা কাঁচের  চুঁড়িগুলোর দিকে তাকালে
আমার কান্না পায়।
.
সেদিনি ছিঁড়ে ফেলেছিলাম,ভেংগে ফেলেছিলাম তোর সব স্মৃতি
কিন্তু ফেলতে পারলাম কই?
কিন্তু ভুলতে পারলাম কই?
পাগল বোধহয়
হঠাৎ বৃষ্টি আসে,হঠাৎ ঋতু বদল, স্নানের ঘরে লুকোনো আয়নায়
আমার কান্না পায়।
প্রেমিক বোধহয়
হঠাৎ পথচলতি পার্কের পাশে,হঠাৎ বাসের জানলায়,হঠাৎ চকোলেটের রাংতায়
আমার কান্না পায়। 
প্রেম বোধহয়   
হঠাৎ কলেজের স্মৃতিতে, হঠাৎ বইমেলার গেটে,হঠাৎ চিনেবাদামের খোসায়
আমার কান্না পায়।
.
আমি কান্না গিলতে থাকি  , নিজের গায়ের গন্ধে তোকে মুছতে থাকি
আমি পাগলের মতো পালাতে থাকি, আমি নিজেকে বোঝাতে থাকি
তুই নেই আর,তুই ছিলিস না কোনদিনি।
তোর একটা শরীর ছিল, ছিল তোর শরীরের খোঁজ
তোর অনেক চুমু ছিল,ছিল তোর নির্জনে জড়িয়ে ধরা
আমরা ছিলাম না কোনদিন,শুধু আমাদের শরীর ছিল।
ভালোবাসা  ছিল না , শুধুমাত্র শরীর ছিল
তুই ছিলিস না কোনোদিনি,শুধুমাত্র শরীর ছিল।
তবু আমার কান্না পায়
তুই ছিলিস না কোনোদিন, তবু আমার কান্না পায় ,
আমি জানি তুই আমায় ভালোবাসিসনি কোনোদিনি
তাই আমার শরীরটাই কোনোদিন জামা পড়াতে পারলি না,
তাই নগ্ন করে রাস্তায় ছেড়ে রেখে গেছিস।
তবু আমার কান্না পায়
আমি জানি তুই ঠক,শয়তান, তোর কোন মন নেই
তোর শুধু শরীর
তবুও আমার কান্না পায়.....


মন খারাপ


মন খারাপ
...ঋষি

ভাবছিলাম আজ লেখা হবে না
ভাবছিলাম এত অন্ধকারে লেখা যায় না।
কিন্তু গভীর অন্ধকারে না লিখলে আলো ফুটবে কি করে? 
বিষন্নতা ছড়িয়ে দি জানলায়
সুদূরের দেবদারু বনে, পাখিদের নিরিবিলি চোখে,
একটা কংক্রিট সলিউসান দরকার
দরকার  শব্দদের  মেঘে মেঘে কান্নার নকশায় পাখির শব্দদের বোনার।

মাঝে মাঝে ভাবছি লিখব না
এখন আরোগ্যের কথা, এখন আরও যত বাকি পথ, বাকি গান সব বাকি থাক।
এখন আদমকে  পড়ি। উনি পুরুষ। 
এখন ইভের কথা ভাবি। উনি নারী।
এখন সঠিক জন্মের কথা ভাবি
মন ভালো রাখতে যত আলো, যত জল নদী ও আগুন।

এখন মামা ভাগ্নে পাহাড়ের সাথে কথা বলিয়ে দিই আল্পস আর আমাজনের
এখন নায়াগ্রা থেকে সুমেরু . মরক্কো থেকে মানিকতলা,
 শিয়ালদা থেকে একরোপলিশ
এখন শুধুমাত্র হেঁটে যাওয়ার কথা।
এখন পৃথিবীর সমস্ত প্রেমিকের জন্য, পৃথিবীর সমস্ত পথচারীর জন্য,
পৃথিবীর সমস্ত তুমিদেরদের জন্য,চলন্তিকার জন্য
বাকি একটা জীবনের  আলো লিখে রাখতে চাই।
আলো আলো
আরো আলো
মন বন্ধ করা, দম বন্ধের  গল্প,মনখারাপ
না আর না
অন্ধকার ভালো বন্ধু হলেও,
আলো না লিখলে বাঁঁচবো কি করে।

Sunday, January 19, 2020

জীবন যাপন


জীবন যাপন
.... ঋষি

চায়ের কাপে সময় শুরু করে
বন্ধ করছেন খবরের পাতায় অজস্র শুয়ে থাকা দৈনন্দিন ,
আপনাকে ছুটতে হবে ,
আপনাকে হতে হবে অলিম্পিক কোয়ালিফাই রাম সিং যাদভ। 
সত্যি আপনি তো পুরুষ
আপনাকে সামলাতে হবে অফিসের টাই ,
করপোরেট সিস্টেম ,আনাস্টেসিয়া নিয়ে আপনাকে যেতে হবে কোমায়
আপনার এক্যুরিয়ামের জীবন যাপন।
.
কেননা আপনাকে সম্মুখীন হতে হবে কসবায় ট্রাফিক জামের
কেননা আপনাকে রেডরোড ছেড়ে যেতে হবে  বন্ধুর স্ত্রীকে এড়াতে।
কেননা আপনি বিবাহিত ,বাড়িতে আপনার চৌদ্দবছরের বনবাস
কেননা আপনি একমাত্র ভরসা আপনার সদ্য জন্মানো শিশু
কেননা আপনি গৃহপালিত সংসারি জীব
আপনাকে ঐশ্বর্য রায়কে স্বপ্নে ভাবতে হবে
আর নিজেকে মনে করতে হবে যোদ্ধা।
.
অতঃপর আপনার জীবনে ভাবার সময় নেই
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে রাখা ম্যাল রোডের একাংশ
দার্জিলিং থেকে লেপচাদের পরিশ্রমে বাঁচার গল্প
তাদের প্রেমিকার নাক থেকে তারা তুলে আনছে বরফে  কাঞ্চনজঙ্ঘা।
আপনার জীবনে পিছনে ফেরার উপায় নেই সাদা কালো দৃশ্যাবলী
টাইগার হিলের সূর্যোদয় ,একসাথে চাদরে জড়ানো উত্তাপ ,
একজোড়া নতুন কাপল
স্বর্গের হানিমুন বিছানা ছেড়ে আপনার বারংবার ক্রাশ করা বাঞ্চনীয়।
আপনি এখন ভাবতে পারেন
মিস হয়ে যাওয়া অফিসের ফোনকল আর চিরাচরিত মুখাভিনয়
ম্যাণ্ডিভিলা গার্ডেনের ফ্ল্যাট ও আগামী  রাজস্থান ট্যুর নিয়ে
কিংবা আপনার মিস হওয়া ই এম আই , বসের চিৎকার।
এইভাবে দৈনন্দিন
আপনি হারাতে থাকবেন আপনার প্রিয় গান ,প্রিয় কবিতা।
আপনার পুরোনো প্রেমিকার মুখ
আপনার পুরোনো বন্ধুদের।
আপনি ভুলতে থাকবেন আপনার ভালো থাকাগুলো
আপনার বেঁচে থাকাগুলো।
ক্রমশ আপনি ব্যস্ত
খুব ব্যস্ত
অথচ সম্পূর্ণ একা এই পৃথিবীতে।




চা পাতার কবিতা


চা পাতার কবিতা 
... ঋষি 

উজ্জ্বল রোদ্দুর আর গাঢ় চা বাগানের সামনে 
সবুজ চোখ ,আলোর চোখ। 
 ফিরে তাকালে চলন্তিকা একটা সৃষ্টির দিনযাপনের শেষে 
নিজের শাড়ির আঁচল সামনে আড়চোখে জেনে নিলে স্নেহ। 
একটা দিন কখন প্রতিবেশি হয়ে কেটে গেলো অনবরত ভালো থাকায় 
সেখানে শহর সাক্ষী 
সাক্ষী হৃদয়ের তকমায় লেখা অন্য নাম। 
.
ওই হাতের নাগালে মাথা তোলা ছায়াগাছ, 
শান্ত সময় বেয়ে তোমার ঠোঁটে লেগে যায় লাল লিপস্টিক। 
আলোর শব্দ 
মনের শব্দ 
তোমার বাথরুমে  দেখি অগণন ফেনা শ্যাম্পু সেরে উঠে আসা দুপুর
অদ্ভুত রৌদ্র আমার পালকে ।
এক দিন দূরবীনে চোখ রেখে  এবং চোখে চোখ রেখে 
কেটে যাওয়া আড়ষ্টতা কবিতার উৎসবে। 
.
ফেরত আসার তোমার  পাড়ায় পাহাড়ি ঢাল ভেঙে লেগে যাওয়া চা বাগান 
ধাপে ধাপে নেমে আসা সভ্যতার প্রথম সকাল। 
মাথার ভিতর জেব্রাক্রসিংএর নিয়মে সাদা ,কালো মুখ 
অথচ আমার ডুব। 
তোমার ফিরে আসা একটা দিনে ,
গভীর দিনে। 
.
পাথরের প্রাতঃভ্রমণ , ছুটিঘাস লিখে রাখছি আমার এই কবিতায় 
এরপর খুদকুশির সময় হলে 
আমি আবারও ডুবে যাবো গভীর নেশায় ,
শহরের পথে তোমার পাহাড়ি ঢালে তখন খুব সাধারণ আমি।    
ভবিষ্যৎ রাস্তায় । ভবিষ্যৎ অন্তরমহলে 
 ভবিষ্যৎ ঘন সময়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা মেঘে ঢাকা তারা,
পাহাড়ের উপরে তখন অনিয়মের বৃষ্টিপাত  
তবুও  আমার প্রিয় ভাষা,প্রিয় নারী  আঁকাবাঁকা  পাহাড়ি সরল রাস্তায়
আমার চা পাতার কবিতা । 

অন্য সকাল



অন্য সকাল
... ঋষি

মুঠো ভরা রৌদ্র
আঁকিবুকি  লিখেছে রৌদ্র পৌষের গুঁড়োর  অক্ষরে হৃদয়ের পাতায়।
নিরিবিলি  সিঁড়ি পারে কেঁপে ওঠে বহুতল ঘুম
সভ্যতা থেমে যায় ,
সভ্যতার চাকায় উঠে আসে অভিশপ্ত কর্ণের গাঁথা।
.
কাছে বাস করা বাসরাস্তা শব্দের রাজপথ ধরে সংকেত শেখায়
সকাল হচ্ছে শহরে।
 অনুভুতি ছায়াছবিতে  হলে কতটা সহজ হয়
 কতটা জটিল হয় শৈশবে ফিরে আসা অন্য শেষের সময়ের হাত ধরে।
আমার সাত বছরের জন্ম পাশ ফিরে শোয়
শৈশব  কঠিন অসুখ স্বপ্ন লেখে কাঁপা কাঁপা হাতের অক্ষরে
জন্মের অধিকার।
.
অন্ধকার দীর্ঘ হলে ঘুম আসে না চোখে
চোখের  ছায়ায় একের পর এক সাজানো সভ্যতার লাশ।
প্রেমিকার  ঠোঁটে লেগে থাকা মোম
সময়ের রক্তবমি ছড়িয়ে থাকা সাজানো শহরের বাস জানলার বাইরে।
 অকারণ অপমান   কালো হরফের গঙ্গা নোংরা হয়ে যায়
গ্যালন গ্যালন ব্যাকটেরিয়া মানুষের চামড়ায়।
খামে বন্দী হয়ে শেষ পর্যন্ত এসে পৌঁছয় সকালের আলো আমার বিছানায়
শুরু হয়ে যায় রোজকার গল্প।
 ডানার ঝাপটে এক সুন্দর শৈশব খুঁজতে থাকে আশ্রয়
উড়ে যায় ঘাসপাতা
উড়ে যায় অন্যসকাল
আমার শৈশব গলা জড়িয়ে বলে বাবা। 

কলকাতা ২০২০



কলকাতা ২০২০
... ঋষি

চলে যাওয়া স্মৃতি কুঁড়োচ্ছি
তুমি ধীরে ধীরে ঢলে পড়ছে সভ্যতার শেষ সূর্যে।
সমুদ্র পেরোতে পারি, এত প্রেম কুড়িয়েছি এককালে  নোনতা জলে
তবু  বাতাসে আজকাল নগ্ন প্রেম।
ইশতেহার খুঁজছে সভ্যতা পাতায় পাতায় মনখারেপের বিপ্লবীরা স্ট্যাচু সেজে
আসলে সময় সুযোগ বুঝে হিটলারকেও সন্ধি করতে হয়েছিল,
কিছুই বদলায় নি ২০২০ এর কলকাতায়
শুধু মানুষ খুব কমে গেছে।
.
 জনশ্রুতিতে পা ফেলেছি
হেঁটে চলেছি কল্লোলিনি কলকাতার শোরগোলে অন্য গ্রহে,
ক্রমশ বাড়তে থাকা নিরোধক  শব্দবোধে বয়স  ,
হাঁটছি ত্রিভুজের কোন ধরে শহরের অলিগলি
কমতে থাকা নিঃশ্বাসে সাথে।
.
চলে যাওয়া শীতের বিশ্বাস ছড়ানো কফির কাপে
নিঃশ্বাসে লেগে আছে আমার কলকাতা।
দৈনন্দিন শুধু একটা হিসেবে হয়ে রয়ে গেলো বেঁচে থাকার
সরগমে কিছু আনকোরা সুর।
ইদানিং সকাল দেখি না
যদিও আলোর  কড়া নাড়ে সদর দরজায় আমার কলকাতা ।
মনে হয়, জেগে উঠি
মনে হয় একবার অন্তত ,অন্তত একদিন নিয়ম ছাড়া বাঁচি
 একবার ব্যক্তিগতে ডানার ওপর থেকে শহরটাকে দেখি।
প্রিজমের পরত পেরিয়ে আরও ঝুঁকে যায় আলো
মধ্যাহ্নের সূর্য বোধহয় নড়েচড়ে উঠে মুখ ভ্যাংচায়।
শহরের প্রতিদিনা কুঁড়োনো শব্দের রাশি স্তূপাকৃত সাদা পাতায়
আমি  কবিতায় লিখি আমার কলকাতা।
স্বাগতকে বেছে নিই
 স্বাগত সাজিয়ে তুলি
আর তুমি হয়তো তখন কোনো কবিতার মঞ্চে তুমুল পাঠে ব্যস্ত।

Saturday, January 18, 2020

নোংরামি

নোংরামি
......ঋষি

আমি  নিজের ভিতর শহর খুঁজছি
খুঁজছি শহরের নোংরা মাটিতে দাঁড়ানো সেই নোংরা বাচ্চাটাকে,
বলতো তোর মা কে ?
মেহেরবান কাদারদান সাজানো সভ্যতার মুখে বাচ্চাটা নুনু ঘষে মুতে দেয়।
কি অশ্লীল না,কি খারাপ ভাষা
কখনো সভ্যতার ছাদ থেকে তুমি ঝাঁপ দিয়েছো
তবে জানবে কি করে।

মাদুরাই সিল্কের খসখস তুলে হেঁটে চলে গেলো একটা সাজানো গোত্র
আমি দাঁড়িয়ে সেই বাচ্চাটার পাশে,
কোথা থেকে সভ্যতা প্রশ্ন করলো বলতো তোর বাবা কে ?
বাচ্চাটা একমুখ থুথু ছুঁড়ে দিল সময়ের বুকে
তারপর ছুটে পালিয়ে গেলো শহরের বেশ্যা পট্টির দিকে
কি খারাপ ছেলেটা।

সভ্যতা হাসছে
ছেলেটা হাসছে সভ্যতার মুখে,সময়ের মুখে  ,কি সাহস।
সভ্যতার গ্যাসে দাউ দাউ করছে রমনীয় শরীর
সভ্যতার বিছানার চাদরে ভারজিনিটির রক্ত লেগে আসুরিক প্রথায়।
রেম্প ওয়াক করছে ছেলেটার মা
ক্যাট ওয়াক করছে সভ্যতার নোংরা শরীর
 আজকের শোর শো স্টপার  সেই পুরুষের বিছানায় দাঁড়ানো পা
কি দারুন আমরা দৃষ্টির আসনে ।
মাদুরাই সিল্কের খসখসে আওয়াজ তুলে শারী খুলছে ছেলেটার মা
ছেলেটা হাততালি দিচ্ছে কি দারুন
অথচ সময় বলছে নষ্ট ছেলে,বেশ্যার ছেলে।
আচ্ছা তোমরা কি নাটকেও কখনো নষ্ট হয়ে দেখেছো
যাতা এটা মাফ করবেন নোংরা ভাবনা,নোংরামি।

Friday, January 17, 2020

একসাথে আছি


একসাথে আছি
... ঋষি

দুটো নিশ্বাস ,দুটো পা।
দুটো বিশ্বাস ,দুটো চাঁদ।
শহর ভরছে সময় এক মুঠো শেষ সময়ের শীত।
আর বাকিটুকু
চলন্তিকা জানে।
.
সময়ে চারিদিকে বারুদের গন্ধ
অথচ আমাদের সময়ে কোনো বারুদ নেই ,
আছে আগুন
পোড়ার গন্ধ নেই,আছে পোড়ার  সুখ
 আর পুড়তে থাকা কিছু শতাব্দী প্রাচীন  শুকনো দুঃখ।
পবিত্রতা শব্দটা বোধহয় আজকাল ভীষণ বাজারী
বরং সময়ের ভাষায় বলতে হয়
আয় আমরা সময়ের গল্প লিখি।
.
শুয়ে শুয়ে সিলিঙের দিকে তাকিয়ে আছি
ঈশ্বর ঘোড়া ছোটাচ্ছে ,চারিপাশে ইচ্ছার ওড়াওড়ি।
শুয়ে শুয়ে ইট ,পালঙ্ক ,ঘড়ির পেন্ডুলাম থেকে ধোঁয়া ওড়াচ্ছি
চারিপাশে সিগারেটের ধোঁয়া
আচ্ছন্নতা
অনুভূতিরা এমনি হয় বোধহয়।
আমাদের সূতোয় ঝুলিয়ে সময় নামক ঈশ্বর লিখে চলেছে উপাখ্যান
পুতুল নাচের ইতিকথা।
আমাদের ঠোঁটে ,আমাদের চামড়ায় আজকাল সময়ের দাগ
আর নিঃশ্বাসে পরীক্ষা করলে হয়তো অপেক্ষা।
দুটো জীবন ,দুটো পথ
দুটো বাঁচা , দুটো শব্দ
একসাথে আছি।



Wednesday, January 15, 2020

কবিতার সাথে


কবিতার সাথে
... ঋষি

কবিতাকে ভালোবেসো
কবিতা পড়ার সময় কবিকে মনে রেখো না।
মনে রেখো না কোনো সন্ধ্যা অনুষ্ঠানে যেখানে কবি তুমুল পাঠে  ব্যস্ত
মনে রেখো কবিতাকে ,
কবিতা পড়ার সময় মনে করো ডাকঘরের গভীর কুয়াশার কথা
চিঠিদের হারিয়ে যাওয়ার কথা।

কবিকে মনে রেখো না
কবির জন্ম থাকে না ,কবির মৃত্যু নেই ,কবি ঘুমিয়ে থাকে কবিতায়। 
প্রাচীন পাথরের মতো
প্ৰাচীন বটের শাখায় ঝুলতে থাকা সভ্যতায়।
কবি বাঁচতে চায় বাজের মতো আকাশে রাখা শুন্যতায়
কবি হাঁটতে থাকে শুয়োপোকা হয়ে ,প্রজাপতির ডানা মেলবে বলে ,
শুধু কবিতায় বাঁচে কবি
তাই কবিতাকে মনে রেখো ,কবিকে মনে রেখো না।

বাজারে বিক্রি হওয়া সাজানো সভ্যতায় কবিকে দেখো না
ঝর্ণার শব্দ ,নুপুরের সহবাস ,সদ্য স্নান করে ওঠা সেই সাঁওতাল রমণীর বুকে
কবিতাকে দেখো।
কবিকে মনে রেখো না কবিতা পাঠে
হাজারো বছর বেঁচে থাকা গাছদের নিঃশ্বাসে কবিদের বাঁচিয়ে রেখো।
বাঁচিয়ে রেখো কবিকে তোমার বাবার প্রেমিকার বুকে
সিগারেটে পুড়িয়ে ফেলা যন্ত্রনায় নয়
শুধু চিতাকাঠে মনে রেখো।
কবির চোখের দিকে তাকিয়ো না ,
বাড়িও না ঠোঁট কবির কবিতায়
বরং তুমি চুপটি করে কবিতাকে আদর করে জড়িয়ে ধরো
বরং তুমি কোনো কবিতায় কল্পনায় শব্দদের আদর করো 
করে ফেলো প্রেম কোনো একলা দিনে
কবিতার সাথে।

সময়ের ঘর



সময়ের ঘর
.... ঋষি

ঠিক এখনো সময় লিখলে কেমন একটা বিদ্রোহ জাগে
আর প্রেম লিখলে বুকের বাঁদিকটা টন টন করে।
টনটন করে খালি ছাদে আকাশের দিকে তাকিয়ে
একলা তারাটাকে দেখলে।
ভীষণ কান্না পায়
প্রতি সন্ধ্যায় একলা রাস্তা থেকে বাড়ি ফিরতে নিয়ম মাফিক
ফিরে  আসতে ইচ্ছে করে সময়ের ঘরে।
.
যেখানে সবুজ ঢুকে পরে প্রকৃতি সেজে হিসেব মাফিক
নদী নিজের ধারায় ভাসিয়ে  দেয় মানচিত্র,
আমাদের আকাশের  ঘর ,মেঘেদের আবদার
বারংবার ভাসায় এই মন ক্লান্তি হয়ে।
আমার হাসতে ইচ্ছে করে
আমার ভাসতে ইচ্ছে করে
সময়ের ডানায় ভর দিয়ে অন্য ভোরে।
.
সিঁড়ি ভাঙা অংকের দেওয়াল ভেঙে তাকিয়ে থাকে একলা সময়
যেন আমার প্রেমিকা ,
প্রেম একলা সেই বাঁশিওয়ালা নীল শরীরে সুর তোলে
মনে আকাশে ময়ূর পঙ্খী
আর সময়ে হরতাল।
আসলে সময় তার অধ্যায়ে লিখে রেখেছে প্রেম
আর অপ্রেমে দাবানল।
মানুষের অন্ধকার চোখ ,আলোর মুখোশ
তবু কিছুক্ষন।
জলক্রীড়ার প্রাচীন শ্লোক ,মানুষ মরেছে  রোজ
নিজস্ব স্নানের ঘরে গুপ্ত শোক
নারীদের `আবার প্রজাপতি রং
একলা বিভ্রম।
সব সত্যি
তবু কেন আমার মরতে ইচ্ছে করে।

শুন্য থেকে দশ সবাই একা



শুন্য থেকে দশ সবাই একা
... ঋষি


শূন্য থেকে শুরু পথচলা
পাখিদের ঘর
নিস্তব্ধতা
একা।

ক্রমশ নেমে আসছি তোমার ঠোঁট বেয়ে
বুকের সীমানায় ঊধ্বত আমি
চুপ কোনো শব্দ যাতে না হয়।
নদীর গায়ে ঝর্ণা ,
গাছদের শিকড় আঁকড়ে বাঁচবার কথা
পাহাড়ি ঢাল
সবুজ নিশ্বাস
মাইল ব্যাপী প্রতিবাদ শহরের ঘরে
ঘরগুলো
বড় একা।

সিগারেটে টান ,গিটারের সুর ,ফিরে আসা মেঘলা পথে
পাহাড়ি ট্রেন ,গড়িয়ে নামা চোখের জল ,
কফিশপ
স্যিগনালে সবুজ আলো
এগিয়ে যাওয়া তোমার দিকে
কেউ জানতে না পারে
একা।

কলেজ রঙের অবিন্যস্ত স্মৃতিভার
সূর্যের প্রখর ভালোলাগায় সাজানো ফটোফ্রেম
সময়ের চুমু
প্রেমিক
প্রেমিকা
সব একা।

দিনগত অধিকার ,পাপ ছুঁয়ে বাঁচা
মোনোটোরাস পথে হঠাৎ দেখা,
পরস্পরের দিকে বাড়ানো হাত
সেন্ট্রালিক লাইফে ছুঁয়ে যাওয়া অনুরণন
একা।

মৃত্যু নামক পিয়ানোতে ছোঁয়ানো  আঙ্গুল
জীবন নামক দত্তকে বাঁচার আগুন
সবটাই
একা। 
 ৬
গড়িয়ে যাচ্ছে নেশা
অন্য জীবন শুধু আগুন্তুক হয়ে জানলার আকাশে তাকিয়ে
একা।

একাকিত্বের লম্বা পথচলায়
নীরবতা ঢোল বাজায় ,বজায় মানুষের হৃদয়ে দোতারা
আমি তুমি
একা।

সময়ের শুধু কোলাহল
তবু একা।

জন্ম শুরু নয় হয়তো শেষ লেখে মানুষের জীবনে
তাও একা।
১০
কবিতা ,চলন্তিকা ,তৃতীয় তুমি
একা।


পুতুল খেলা


পুতুল খেলা
... ঋষি

অজস্র চিৎকার
শেষ আটাশ বছর শুধু চিৎকার করে যাচ্ছি সময়ের কাছে ,
হিসেবের ভিড়।
সময়ের  শহর ,সময়ের  মানুষ,নাগরিক জীবন
সামাজিক অধ্যায়ে লেখা হিসেবের শৃঙ্খল ,তুমি ,আমি আর সংসার ,
 আর আমরা সাংসারিক।
.
দিন ফুরোলো আজ চল্লিশ উর্ধ আমি  আর উনি আটান্ন
বাকিসব হিসাব মাফিক নিজেদের সাথে ব্যস্ত।
আজকাল ওনাকে দেখলে ভালোবাসা জাগে না ,জাগে মায়া
হাজারো অন্যায় করলেও লোকটা ,হাজারো ঝগড়া করলেও লোকটা
ছেড়ে যায় নি ,
সাথে ছিল ,হয়তো হিসেবে মাফিক ,হয়তো সময়ের মাফিক
কিংবা .দায়িত্বে।

পুতুল ঘরে আয়না রেখেছি আমি ,শুধু সুতোয় বাঁধা আসা যাওয়া
কাছে আসা ,দূরে যাওয়া ,আর প্রেম !
তারারা নেচেছিল ,জোনাকি রাতে স্বপ্নরা জেগেছিল
তারপর অন্যমনস্কতা
হয়তো সংসারে
ফড়িংটা মরে গেলো অসময়ের সকালের সবুজ ঘাসে।
আমার মেয়েবেলা ভিজে গেছে হিসেবে কষতে কষতে
লোকটাও কেমন বুড়িয়ে গেলো ছেলে মেয়ে মানুষ করতে করতে।
পুতুলে চোখ ,পুতুলের আয়নায়
শুধু সুতো বাঁধা আমি ,হয়তো লোকটাও সারা জীবন নাচলাম।
শুধু আজকেও জানতে ইচ্ছে হয়
ঠিক কি  হয়েছিল আমার সাথে ,
ঠিক কি হয়েছিল লোকটার সাথে
যে আমরা শুধু নাচলাম পুতুল সেজে
কখনো জানতে চাইলাম না ঠিক কতটা বাঁচলাম।
শুধু পুতুল সাজলাম
শুধু পুতুল খেললাম
কিন্তু  একটা জীবন আমরা কি করলাম।



হাজার চুরাশিকে


হাজার চুরাশিকে
... ঋষি

ব্রতী চ্যাটার্জিকে  চেনেন ? চেনেন নামটা ?
কাঁটা পুকুর থানা ?
না আমরা কেউ চিনি না সেই শয়তানকে
আমরা চিনি না এমন কাউকে যে বা যারা সত্যি বলেছিল ,
বলেছিল সময়ের কথা ,মানুষের কথা
আর চেয়েছিল একটা স মা জ
আজকে সময়ের দাঁড়িয়ে মানেটা জানেন বোধহয় সমাজের ?

দুটো বুলেট গভীর ভাবে ঢুকে গেছিল ব্রতীর বুকে
হাজারো নিয়ম বদলাতে চেয়ে  ব্রতী চ্যাটার্জি নামটা লোপাট হয়েছিল ,
শুধু আমার মতো কিছু লোক হয়তো জানে সেই নাম্বারটা
হাজার চুরাশি।
শুধু আমার মতো কিছু বেকার ভাবনা
সেলাম করে হাজার চুরাশিকে
একটা প্রতিবাদের জন্য সময় বদলাবার।

সময়কে সেলাম
সেলাম মানুষকে  ,
রাষ্ট্রকে সেলাম
সেলাম স্বাধীনতা নামক রাজনৈতিক উত্থানকে।
অথচ হাজার চুরাশি সংখ্যাটা কোথাও দেখা যায় নি খবরের পাতায়
শুধু একটা গর্ভমেন্ট নথি হয়ে রয়ে গেলো ব্রতী ।
অথচ হাজার চুরাশি সংখ্যাটা স্বীকার করে নি ব্রতীর বাবা ,ব্রতীর আত্নীয়রা
শুধু তার মা তিপ্পান্ন বছরের সুজাতা আজও তাকে মনে করে।
সময় চিৎকার করতে পারে নি ব্রতীর জন্য
সম্পর্ক দিতে পারে নি কোনো মানে সময়ের ঠিকানায়
শুধু হাজার চুরাশি একটা সংখ্যা মাত্র ।
শুধু আমার মতো কিছু ঘরের ভাত খেয়ে সময়ের মোষ তাড়ানো লোকেরা
মাঝে মাঝে মনে করে হাজার চুরাশি সংখ্যাটা 
সেলাম করে ব্রতীর মতো হাজারো নীল হয়ে মর্গে পচা শরীরকে।
যাদের কোনো পরিচয় দেয় না সমাজ
যাদের কোনো নাম দেয় না সময়
শুধু একটা সংখ্যা থাকে তাদের
একটা মৃত শরীরের  নাম।
সেলাম
হাজার চুরাশি।
 .
পুনশ্চ : বাড়ি ভর্তি সংসার ,বাঁচার খিদে ,সত্যি বলা অপরাধ এই সময়।

((মহাশ্বেতা দেবীর হাজার চুরাশির মা অবলম্বনে ,দুঃসাহসের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী পাঠকদের কাছে  )
             
             

Tuesday, January 14, 2020

ফিরে আসছি ধুকপুক



ফিরে আসছি ধুকপুক
... ঋষি

তবু এক প্রেম ফিরিয়ে এনেছে আমাকে সময়ের অভিশাপ থেকে
প্রেম আমাকে বাঁচিয়ে এনেছে আগুন মার্কা নষ্ট সময় থেকে
জীবন থেকে আরো দূরে।
তবু এক প্রেম আমার সমস্ত অন্তরাত্মাকে ঢেকে রেখেছে
শরীর হয়ে ,সময় হয়ে
হয়ে সর্বত্র আমার শ্মশানের মুখে এক ফোঁটা জল
আমার তৃষ্ণার কারণ হয়ে।
.
নিষ্কৃতি খুঁজছে সময়
আকাশের বুকে আমরা ছায়া ডানারা যেন আগুনপাখি।
তবু মৃত্যুর চুমুর আলিঙ্গনে উঠে আসছে স্নেহ
বাঁচা যেখানে ,
ঝাউপাতা আর দেবদারু গাছেদের সাথে ফিসফিস
জোনাকির আলোয় 
একসাথে কয়েক পা হাঁটা যেখানে।
.
আমার পিতার অহংকারের মতো কিংবা আমার মায়ের হারানো আঁচল
খুঁজে পাওয়া শৈশব প্রেমের দানাপানিতে
সবটাই বড় স্নিগ্ধ ,
আমার ফিরে আশায় আজ তাই কোনো শব্দ নেই
নিঃশব্দের সাথে সহবাসে ব্যস্ত সময়।
সকালের সেই অদৃশ্য বাঁশির শব্দ থেকে গড়িয়ে নামছে তৃষ্ণা
স্তনবৃন্তে ছুঁয়ে অমৃত ,
আমার এই প্রেম আবদার
এক নারী জন্ম নিচ্ছে ,খড় ,বিচুলি ,আমার কাঠে। 
তবু প্রেম পুড়ছে আজও
সময়ের উরুতে ,লোভের বিচরণে মানুষের নগ্নতায়
আমি স্তব্ধ। 
আমি ঈশ্বর বানাতে ব্যস্ত নিজের মতো মাটিতে
শুধু ধুকপুকটা প্রেমের হোক
এই কামনায় ।

Sunday, January 12, 2020

কার সময় এটা



কার সময় এটা
.... ঋষি

আমি কত বোকা
সময়কে একটাকার একটা কয়েন দিলে খুশি ,আমি কবিতা দিচ্ছি
দিচ্ছি রক্ত পাতায় পাতায় ভরে।
ভাবি আমার কি লাভ ? ভাবি সময়ের কি লাভ ?
কি লাভ আমার ভালোবেসে  সময়কে ?
অনেকে চেষ্টা করলাম  এর আগে ,কি লাভ হলো
মানুষেরর কি ঘুম ভাঙলো ,রাষ্ট্রের ঘুম ভাঙলো কি ?
.
এই শহর ,এই গ্রাম ,এই রাষ্ট্র ,এই সড়ক
এগুলো কার ?
এগুলো নিশ্চয়  সেই পাগলিটার নয়
যার পেটে আজ পালিত নাম না জানা বেজাত।
এগুলো সেই ভিখারিটার নয়
যার সময় জানে না আগামীকাল তার খাবার জুটবে কিনা।
শুধু সময় জানে খিদে পাবে ঠিক
ওদেরও পায় ,তাদেরও পায় ,আমাদের পায়
অথচ রাষ্ট্র জানে না ,জানে না রাষ্ট্রের দুধেভাতে থাকা মানুষগুলো
যারা বিছানার চাদরে রাষ্ট্র জন্ম  দেয় রোজ।
.
কাদের লিখছি ,কেন লিখছি
যাদের লাস ভেগাসে নিরিবিলি রাত কাটে প্রাইমারি স্কুলের ভাতায়।
যাদের বাচ্চারা হাই  প্রোফাইল ইংলিশমিডিয়াম স্কুলে পরে
হাজারো শৈশবের শরীর বিক্রির টাকায় ।
কি জানবে তারা ?
সত্যিটা জানে রক্তে চান করা সেই মুটে মজুরগুলো
সত্যিটা জানে এই শহরে কালীপদ সান্যাল যার স্ত্রী আজ কোমায়
সত্যিটা জানে এই শহরের প্রতিটা রিকশাওয়ালা
অন্ধকারে সাক্ষী শহরের রাস্তায় লাইটপোস্ট গুলো
কার সময় এটা ?
কিন্তু কার হওয়ার কথা ছিল ?
সত্যিটা, সত্যি জানে না আমাদের  বিজ্ঞাপনে লাগানো রাষ্ট্র
কিংবা এই সড়ক
কিংবা যারা সময়কে ধর্ষণ করে  রাষ্ট্র তৈরী করে
আর জন্ম দেয় সময়ের নামে অজুহাত ।

শীত করছে


 শীত করছে
... ঋষি

ধোঁয়াশায় ডুবে যাচ্ছে শহর
নারী মৃতদেহ আগলে বসে আছে শীতার্ত নারী এই সময়।
সময় খাতা খুলে লিখে চলেছে কাব্য শীত করছে শহরে
শীত নামছে শহরে কুয়াশার মতো
কিছু দেখা যাচ্ছে না
শুধু বুঝতে পারছি মানুষ ক্রমশ আরও পাপে ব্যস্ত।

যুদ্ধবিরোধী বলে সত্যি লেখা যাবে না
এমনটা ঠিক নয় ,
রাক্ষসকে রাক্ষস না বলাটা অত্যন্ত অপরাধ যেমন
তেমনি অপরাধ পুরুষের পৌরুষ  না থাকলে আর নারী শরীরে লজ্জা ।
বাবাকে বাবা না বলে ,মামাকে মামা না বলে
এই সময় সেই ছোট ফুলের মতো মেয়েটা
কাকুকে বলছে কাকু এমন করো না কষ্ট হচ্ছে।

ধোঁয়াশায় ভেজা বেহায়া শহর
আমার সিগারেটের নিবে ছুঁয়ে থাকা কবিতারা শান্তি খুঁজছে ,
আমি তুমুল নেশায় লাল দেখছি বড়
রক্তে ভেজা আমার শহর।
বসন্ত বিক্রি করে সময়ের উল্লাসে আজকাল মন ভরছে না
আমি কবিতা পুড়িয়ে প্রেমিকার শরীরে প্রেম খুঁজছি
খুঁজছি শান্তি।
ক্রমশ আমি তরল হতে হতে গড়িয়ে নামছি সারা সময় জুড়ে
সারা শহর জুড়ে।
যদি ধোঁয়াশা সরে তবে মানুষ  দেখবে
চাপ চাপ রক্ত জমে রয়েছে সময়ের শরীরে।
শীত করছে
সময়ের শরীরে ক্রমশ আমিও ঈশ্বরের ভেকে মানুষ।   

অবান্তর

একটা নির্জন বিকেলের সাথে আছি   এইমাত্র ঝুপ করে কফির কাপে সন্ধ্যে নামলো শহরে  শহরের রাস্তায় ডেসিবেলের হিসেবে এই সব অবান্তর  অবান্তর শহরের ভিড়...