Saturday, April 27, 2019

দগ্ধ উপত্যকা


দগ্ধ উপত্যকা
......... ঋষি
=====================================
প্রেমিকার বুক আছড়ে পড়া ঢেউ নির্জনতায়
এক বেপরোয়া  উত্তেজক দৃশ্য ক্রমশ মগ্ন করছিল আমায়
আকাশের চাঁদ ,আগুনে চাঁদ ক্রমশ অনেকটা গল্প। 

প্রতিবার রতিক্রিয়ার পর তুমি আরো সুন্দরী
প্রতিবারের মতো হাপরের মতো ওঠা নামা করছিল দু দুখানা চাঁদ।
আমার আড়ষ্ট বুকের জঙ্গলে ক্রমশ  বিপন্ন সময়
এগিয়ে চলেছিল আরেকটু আদরের দিকে ,
ফেটে পড়ছিল হ্যালোজেনের
নীলচে হলুদ চুমু ।

চুমুকে আমি চুমু বলি
আমার সহ্য মাত্রা অন্তরের ছিটিয়ে পড়া মুহূর্তকে উপভোগ করছিল
আকাশের অন্ধকারে কোনো ব্ল্যাকহোলে সময়। 
বিষণ্ণতা,
সারা  শরীরের  সমুদ্রে আছড়ে পড়া ঢেউ ,
তীব্র আলিঙ্গনে একটিমাত্র মাত্র উচ্চারণ স্পর্শ উপলব্ধিতে।
 প্রেমিকা যে  এতই ভয়ংকর সুন্দর হয়ে পড়ে চরমতম বিন্দুতে পৌঁছিয়ে
যেন নেশাতুর হয়ে যায় মহাপ্রকৃতি।

প্রেমিক উন্মত্ত হলে চাঁদ  রাতের দগ্ধ উপত্যকায়
ক্লান্তিতে জড়িয়ে ধরা আকাশ নিরিবিলি কিছু মুহূর্তরা
প্রেম শুধু কল্পনাতে রাতের শিশিরে রূপকথা। 

Thursday, April 25, 2019

Love is God


" Love is God
That's just your touch in my depth".

আমার এই শরীরটাকে ঈশ্বর মনে হয়
যখন এটা তোমার সান্নিধ্যে থাকে।
যেন কোন ঈশ্বর ছুঁয়ে আমাকে বারংবার উপলব্ধি করায়
এ জগতে সবটুকু উপস্থিতি একমাত্র তোমার স্পর্শে।
সুবটুকু বেঁচে থাকা হৃদপিণ্ডের ধুকপুক
শুধু তুমি আছো বলে আকাশের চাঁদ ,সূর্যের দিনবদল।

যেন আমি তখন সম্পূর্ণ
কোনো সতেজ ঘোড়ার হয়ে ছুটে চলি স্বপ্ন ছুঁতে।
পেশীগুলো দৃঢ়তর, সতেজ স্নায়ুরা খবর নিয়ে আসে
উপলব্ধি কোনো মুহূর্তের বাঁধানো ফ্রেমে।
ভালো লাগে তোমার শরীর
অস্থি ,মজ্জা ,মেরুদণ্ড,শরীরের উঁচু নিচু পথ চলা।
যাবতীয় অনুভব ভালো লাগে
ভালো লাগে শরীর লেপ্টে শরীরের ঘামে বারংবার কেঁপে ওঠে।
আমি হাজারোবার  শুধু চুমু খাই
ঈশ্বরের মতো তোমার উপস্থিতি শুষে নিতে থাকি।
শুষে নিতে থাকি সময়ের ব্যস্ততায়
কিছু কাঙ্খিত অতি আপন মুহূর্ত।


আমার এই শরীরটাকে ঈশ্বর মনে হয়
তোমার কোমলতা স্পর্শ করে ,পুড়তে থাকা তোমার নাভিতে।
ক্রমশ আরো গভীরে বিলীন একটা শরীর
এগিয়ে আসা ঘোড়া উদ্দাম তখন।
সময়ের ফুরোতে থাকে ,হৃদপিন্ডে ধুকপুক আশঙ্কা
শুধু তোমাকে জড়িয়ে তখন আমার ঈশ্বর স্পর্শ।

..... ঋষি 

একটু শীতলতা


একটু শীতলতা
.......ঋষি
=================================
প্রার্থনীয় নরম হাওয়া
 হাওয়ায় সাঁতার কেটে  মেঘের কারখানাতে বৈশাখী ঝড়।
আকাশের বিস্তীর্ণতা  জুড়ে ফুটে ওঠা পর্দায়
একটু শীতলতা।
আমি কাকে বলবো ?চলন্তিকা
রাত্রের বাথরুম শাওয়ারে তুমি গড়িয়ে নামও ক্লান্তিতে।
.
মাঝরাত হাওয়ার ঘর,ঘরভর্তি একলা সুবাস
চোখে ঘুম নেই ,
সবুজরাত নামলে আমি বিষণ্ণতায় মাস্টারবেইটের কথা ভাবি
ভাবি তোমার ঘুমন্ত স্তনের নেশায়  ভৌগলিক সেলাই।
সিগারেটের একমুখ ধোঁয়া ছিটিয়ে
আকাশের ক্যানভাসে আরও অযুত নিযুত  নির্জনতা
বুকপকেটের ক্যালেন্ডারে এপ্রিল শরীর জুড়ে ঘাম।
আমি বসি গিয়ে অন্ধকার রাতের জানলায়
আমার বসে থাকার ভিতর রাত নেই, দিন নেই শুধু সময় ফুরোনো ।
জন্মের কিছু ভাঙচুর আটকে রাখি সেফটিপিনে
সময়ের সাথে ,সময়ের পাশে
দূরে কোথাও  উইন্ডচাইমে বাঁচার গান।

উত্তরে আকাশ আরও ঘন হয়
আমার রাফখাতা ভর্তি যে অচেনা হাজারো কবিতা  শুয়ে।
সেখানে ঝড় ওঠে , আবহাওয়ায় সংবাদ
কবিতা আসছে।
একটু পরেই খুব জোরে বৃষ্টি ,খুব জোরে ইচ্ছা
একটু শীতলতা আর শব্দ ঝড়।

সং সা র


সং সা র
....... ঋষি
============================================
একে একে অভাব ঘটে
যেমন ঘটেছে গত ১৭ বছর তোমার জীবন আলাপে।
কি চেয়েছিলে তুমি ?
একটা সং সা র  ,একটু আশ্রয় ,একটা জীবন ,অনেকগুলো সম্ভাবনা।
জাতীয় সড়কের উপর একটা  দুর্ঘটনা ,দৈন্দন্দিন
আমাদের দেশের হাজারো হাঁড়ির খবর।
.
দীঘল ঘুমের ভিতর ষড়যন্ত্র
তোমার রাত  জাগা চোখে একটা সাদা পায়রা খোঁজ ।
আকাশে উড়ছে হাজারো সম্ভাবনা
হাজারো পালকের ইচ্ছারা শুধু ভেসে বেড়াচ্ছে নগরজীবনে।
বিশ্বাস শব্দটা সবাইকে করা যায় না ১০০ শতাংশ
আর সংসার করলে বিশ্বাস শব্দটা মরে চলে রোজ উনুনের আঁচে।
গোল রুটির সাথে আকাশের চাঁদের পার্থক্য
আলো আর খিদে।
জ্যোৎস্না ঠোঁটে গেঁথে অদ্ভুত লিরিক বাড়ি ফেরার গান
" চারটে দেওয়াল মানে নয়তো ঘর "
তখনি অঞ্জনের পুরোনো গিটারে শহরের গান।
ঘুম ভেঙে যায় তোমার ,
ঘেমে ,নেয়ে  উঠে বসো সামাজিক বিছানার চাদরে
জানলার গ্রিল বেয়ে চাঁদ গড়িয়ে যায়।

একে একে অভাব ঘটে
অভাব শব্দটা স্বভাবের সাথে নয় ,খিদের সাথে জুড়ে।
হৃদয়ের দরজার কলিংবেলে প্রেমিক দাঁড়িয়ে
সং সা র শব্দটার অন্তরে স্বপ্নগুলো উনুনে সেঁকা রুটি।
উঠোনে দাঁড়ানো তোমার প্রেমিকের খিদে পায়
খিদে তোমারও কারণ গৃহস্থ্য শব্দটা খালিপেটে সর্বদা। 

Wednesday, April 24, 2019

মিস প্রিয়ংবদা


মিস প্রিয়ংবদা
.... ঋষি
===============================
কোনো তপ্ত বিকেলে
মিস প্রিয়ংবদা তুমি নামলে দীঘির জলে।
গোড়ালির নিচে ঘোলাটে জল
মোচড়া দিয়ে ওঠে বুকের খাঁজে।
মধ্যাহ্নের পোষা বেড়ালটা লেজ খাঁড়া করে দাঁড়ায়
সাধের ময়না এসে মনের কোনে উঁকি দেয় অনন্ত পাপ।
.
মিস প্রিয়ংবদা কি করবো  ?
তোমার তৃষ্ণার্ত চাহুনি ,তোমার ভিজে ঠোঁট ,হাঁটার ধরণ,
বাঘে হরিনে একসাথে জল খায়।
কিন্তু  উপোসী ঠোঁটে হৃদয়ের ভাঁজে সেলাই করা রিপু রোগ
তুমি ঝুপুত করে ডুব সাঁতার,
তোমার ঝলাৎ ঝলাৎ বুকের কাপড় ,বুকে কাঁপন।
শরীর গড়িয়ে জল ,তোমার ভিজে চুলের ভাঁজে
ঈশ্বরকে মনে পরে।
ঝিলমিলে দুপুরবেলায় ,অব্যক্ত নুনের হাওয়া
নাকের ডগায় ঘাম,
ঘামবিন্দুতে তোমার  চাহুনি  ,নিশপিশ করে।
পোষা বেড়ালের মতো কিছু যেন হেঁটে যায়
সারা শরীরের ভিতর ,অস্তিত্বে ঘামে।

কোনো তপ্ত বিকেলে
স্নানঘাটে সময় বদলে যায়, একমুহূর্ত তাকাও তুমি আমার দিকে।
সরে যায় এক ফালি বুকের কাপড়
অসময়ে হঠাৎ করে মধ্যাহ্নের পোষা বেড়ালটা ডাকে ম্যাও।
সাধের ময়না বুকের ভিতর লাফিয়ে ওঠে
ঠুকরে খায় মুহূর্ত ,আচ্ছা এমন যদি সত্যি হতো। 

কাদম্বরী


কাদম্বরী
......... ঋষি
====================================
তুমি ভাবছো একটা অদ্ভুত দিনের কথা
বাইপাস ঘেঁষে চলে যাচ্ছে একের পর এক ইচ্ছা।
মৃত চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে তুমি
তোমার প্রেমিকের ঠোঁটে লেগে আছে নিকোটিনে আগুন।
ধোঁয়া  উড়ছে
ক্রমশ ব্যাকফুটে  একের পর এক স্বপ্ন
চোখ জ্বালা করছে।

তুমি শুনেছ নির্যাতিত নক্ষত্রের কথা
একটা সাইকেলের বেল বাজিয়ে চলে যাচ্ছে পোস্টমাস্টার ,
না হে চিঠিপত্র সব বেকার মাধ্যম
এখন তো শুধু নম্বর ডায়াল করো হাতের মুঠোফোনের স্মৃতিতে।
আচ্ছা সব কি শুধু হাওয়ায় ,হাওয়ায়
যদি ছুঁতে ইচ্ছে হয়।

তিথি জুড়ে নকশাকাটা তারা
যেন অন্ধকার আকাশে চন্দ্রগুপ্তের তলোয়ারে নগ্ন প্রেমিকার রক্ত।
লিখে দিলাম স্তবকে কোনো গোলাপ ফুলের সুগন্ধ
খাপছাড়া অগোছালো হাতে বানিয়ে ফেললাম পাথরের তুমি।
পাথর থেকে রক্ত ,শক্ত আর দুর্বলতা
আজকের মিসিসিপি থেকে উঠে আসছে মৃত রক্তের কবিতা।


তুমি ভাবছো অদ্ভুত দিনের কথা
পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে রক্তবর্ণের নদী ,অসংখ্য স্মৃতি।
আমি ধোঁয়াতে উড়াচ্ছি শহর
হাতের তালুতে হাত, প্রয়োজন পৃথিবী ছুঁয়ে ধ্বংসের।
টগবগে আগুন যৌবনে দাঁড়িয়ে রবি
কাদম্বরী দেওয়ালে খুঁজছে সময় আর অনেকটা বিশ্বাস
আর আমার কবিতা রক্ত খুঁজছে।

অবাক পৃথিবী


অবাক পৃথিবী
...... ঋষি
=======================================
ধরো হঠাৎ করে একটা পৃথিবী ছুটে আসছে  তোমার দিকে
ধরো তখন হাতে ধরা দূরবীনে তুমি দেখছো
প্রিয়জন।
.
 সম্পর্কের হাত ধরে এগিয়ে আসছে কিছু অশুভ সময়
পাশ দিয়ে চলে গেলো একটা লাশবাহী  ভ্যান।
 তুমি উদ্ভ্রান্তের মতো হাঁটছো
 তোমাকে প্রশ্ন করছে হাওয়া তুমি কেমন আছো ?
তুমি হাসছো,পাগলের মতো ।

 হাওয়ায় ঢিল ছুঁড়তে ছুঁড়তে ভেসে আসে মেঘ
 প্রচন্ড বৃষ্টি হবে এবার।
 পাশ ফিরে একলা শুয়ে আছে তোমার ছেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে
নক্ষত্র গুনছো তুমি ,
ছেলে বলছে বাবা শুকতারা ,সপ্তর্ষিমণ্ডল
তুমি সময় গুনছো।
 মিথ্যা প্রতিশ্রুতির নিউজ এসে টুল পেতে বসেছে তোমার মগজে
ঢেউয়ের আওয়াজ,
 বাঁধ ভাঙার অংকে সিঁড়ি ভাঙছে ভয়।

তুমি শুনতে পারছো ছেলে ডাকছে
বাবা সকাল হয়ে গেছে ,স্কুলে যাবো কি হলো উঠবে না ,
তুমি চোখ রগড়ে উঠে বসলে
অবাক পৃথিবী।

নিষিদ্ধ এ দেশ


নিষিদ্ধ এ দেশ
....... ঋষি
============================================
প্রতিদিন মৃত্যু হয় আমার
আমি শুয়ে থাকি সময়ের পাশে ,নিষিদ্ধ এ দেশ।
.
মৃত্যু আমার শহর
স্বর্গের দেবতার ফরমান আমার পোড়া শহরে অনাস্থায়ী বেঁচে থাকা।
দেওয়ালে আটকানো পোস্টারে রোজকার গদিবদল
হাতের অনামিকায় কালি সময়ের অধিকার।
এইযে নিষিদ্ধতার আগুনে সময়ে চামড়ার গন্ধ
পুড়ে চলা ধর্ষিত নারী শরীর সামাজিক আদবকায়দায়।
.
ব্লকবাস্টারে চলতে থাকে আই পি এল,খুশিয়োকা তৌহার
খুশি তার পকেটে পয়সা যার বুকপকেটে ।
আর ঘরের কোনে বুকে আগলানো শিশু শুকনো মাই চটকায়
মায়ের খুশিতে নেমে আসে সভ্যতার নর্দমার গন্ধ। 
রোজকার অন্ধকার আমার শহরে
আমি গু ,মুত পাড়িয়ে এসে দাঁড়ায় শহরের লুকোনো ছবিতে।
.
প্রতিদিন মৃত্যু হয় আমার
মানুষের কেনেলে লেগে থাকে মানুষের রক্ত।
রক্ত শুকিয়ে যায় আমার জিভে
মৃত্যু শহরে ঘনিষ্ঠতা যাযাবর কুয়াশার অনন্ত অন্ধকার।
শ্যুট আফটার শ্যুট
ক্রমাগত সময়ের বুলেট ঠেলে দেয় আমাকে মৃত্যুর দিকে।

নিরুদ্দেশ


নিরুদ্দেশ
........... ঋষি
=========================================
কিভাবে নিরুদ্দেশ হবো ?
সকালের চোখে লেখা তিতিবিরক্তি ,নিম স্বাদ।
দূরে কোথাও কারখানার ভোঁ বাজে ,ব্যস্ততা
পান্তা ভাতে নুন ,কিছুটা আশা আর মধ্যবিত্ত ভরসা।
সমস্ত সত্বার বাইরে কোথাও স্বপ্নপরী ,ব্যাঙ্গমা ,ব্যাঙ্গমী 
শৈশবের মৃত কফিনে লেখা রূপকথা। 
.
সময়  খরচ করে ফেলেছি অনেকটা
মুঠোয় ম্যাজিকে রাখা দিনবদলের সম্পর্কের নথি ।
তোমাকে ঠিক মায়ের মত দেখতে
বলেছি বহুবার একলা থাকা সম্বলে ।
কিভাবে পালাবো নিজের থেকে
বয়সের চামড়ায় ক্রমশ লেপ্টে থাকা ঘা ,বেদনা। 
 কবিতা কোন হাতখরচের গল্প নয়
কবিতা আমাদের মতো মানুষের আগুনে পোড়া ।
এদিকে ফুরোনো শহর চুঁইয়ে নামে তোমার ডাক বাক্সের ঠিকানা 
তোমার ঠিকানায় একটা না লেখা চিঠি গিয়ে পৌঁছায়
কি গো ভালোবাসো তো আমায় ?
.
কিভাবে নিরুদ্দেশ হবো ?
কিভাবে দিনবদলের গল্পে আমি লিখে দেব লুকোনো স্বপ্নদের।
দূরে কোথাও শুনতে পাই চলে যাওয়া ট্রেনের শব্দ
আমি একলা দাঁড়িয়ে স্টেশনে একটু অন্যমনস্কতায়।
ফুলের খুব কাছে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ বাঁচা শেখে
কেউ জমা করে খড়কুটো বাঁচার আশায় ।

Sunday, April 21, 2019

মনের কথা


মনের কথা
...... ঋষি
===========================================
ব্যস্ততা ,সামাজিকতা
না বলা হয়ে ওঠে নি পরিতোষ তোমাকে মনের কথাগুলো।
শুধু সময় পেরিয়ে চলে গেছে বহুদূর
তুমি আরো দূর হয়তো।
মিতালি দির সাথে তোমার সম্পর্কটা এগিয়েছে এতদিনে জানি
কিন্তু জানি না আজও কি তুমি আমাকে মনে করো কিনা।
.
জানি এগুলো বস্তাপচা কাহিনী
এই শহরের রূপ কথায় আমার এই কথাগুলো হাজারো মেয়ের গল্প।
তবু বলবো আজ
পরিতোষ আমি তোমাকে ভালোবেসেছি ,।
সেদিন থেকে যেদিন তুমি প্রথম এলে আমার অংকের টিচার
প্রথম পুরুষ আমার জীবনে যাকে আমি স্বপ্নে এঁকেছিলাম।
তোমার দোষ নেই
তোমার পুরুষালি উগ্রতা ,এক মুখ দাঁড়ি ,
জামার বোতাম খোলা জানলা থেকে উঁকি মারা আমার অসুখ ,
অসুখ বটে ,না হলে আজও আমি তোমার প্রেমিকা।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্টুডেন্ট তুমি ,বিদেশ পারি দিলে
নিয়মিত চিঠি লিখতাম তোমার কুশল সংবাদ ,না উত্তর পাই নি ।
তবুও জানতে ইচ্ছে করে পরিতোষ
একদিনের জন্য,কোনোদিনও তুমি আমাকে স্বপ্নে দেখেছিলে কিনা ।
.
সময়ের পথ ,সময়ের অধিকার
না সাহস করে বলে উঠতে পারি নি মনের কথাগুলো।
শুধু তুমি চলে গেছো অনেকদূর
অথচ আজও ভুলতে পারি নি তোমার গলার স্বর ,চোখের চাহুনি।
পরিতোষ আজ না হয় তোমায় পরিতোষ দা বলে নাই ডাকলাম
ডাকলাম আদর বলে,কিছু মনে করো না প্লিস ।

গল্পগুলো সাদামাটা


গল্পগুলো সাদামাটা
....... ঋষি
================================================
আজকাল আর কিছুই আমাকে  অবাক করতে পারে না
 অবাক করতে পারে এমন কবিতা আমি পাই নি বহুদিন।
অবাক করতে পারে এমন সুন্দরী নারী
না হে আমি দেখি নি বহুদিন।
বহুদিন আমি সবুজ জঙ্গলের গভীরে সঙ্গমরত হয় নি
তাই আমি অবাক হয় নি বহুদিন।
.
শহরের ধুলোতে জমতে থাকা সংস্কৃতি
প্রেম ,অপ্রেম ,পরকীয়া সবকিছু কেমন দায় সারা গোছের এই সময়।
বিষাদ রঙের ছেঁড়া ছেঁড়া অনুভুতির বস্তাপচা সেন্টিমেন্ট,
মূল্যহীন ইচ্ছা
আর সাজানো তাসের ঘর সব গা সওয়া।
বেগম বাদশা মাটি  ছুঁয়ে স্বপ্নের ভেতর হেঁটে চলা
হঠাৎ এক ঝলকে দেখা দেওয়া তোর মুখ
মুগ্ধ করে বারংবার
কিন্তু অবাক করে না আর।
অপেক্ষা যা কিনা চামড়ার  বলিরেখা পার করে চলে যায় বহুদূর পথে
হাতের দাগগুলো সাক্ষী হয়ে থাকে সময়ের।
পরজন্ম খুঁজে বেড়ানো
আমার কবিতা চিরকাল ভীষণ  অসম্পুর্ন,অসামাজিক সময় সময়
কিন্তু কৈ লিখতে পারলাম কি এমন কবিতা
যা অবাক করে।
.
আজকাল আর কিছুই আমাকে  অবাক করতে পারে না
অবাক করতে পারে না হঠাৎ বৃষ্টি  কিংবা ভীষণ চঞ্চল মুহূর্তে তুমি।
এগিয়ে আসা ঠোঁট ,তখন তুমি ষোড়শী
না হে এই সব শুধু ভাবনায় ভালো লাগে।
ভালো লাগে বেঁচে থাকার উত্থান পতন ,হাজারো মানুষের গল্প
কিন্তু গল্পগুলো সাদামাটা ,আর অবাক করে না আমায়।

Saturday, April 20, 2019

হঠাৎ দেখা


হঠাৎ দেখা
........ ঋষি
=====================================
তারপর ধরো অনেক দিন পর দেখা হলো তোমার সাথে
অবাক লাগছে ভাবতে ,
সেদিন সকালের সূর্য রোজকার মতো মাথার উপর
সেদিন শহরের ব্যস্ততা ,ট্রাফিক জ্যাম
কিন্তু হঠাৎ বাসস্ট্যান্ডে তোমার সাথে দেখা।
.
তুমি অনেক বদলে গেছো
চোখে কালো ফ্রেমের চশমা ,কিন্তু গভীর সেই চোখ ,
ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক ,কিন্তু সেই একইরকম অনেক না বলা।

তুমি হঠাৎ চমকে উঠবে আমায় দেখে
এগিয়ে আসবে আমার দিকে  ,বলবে কেমন আছো  ?
বিশ্বাস করো তখন তুমি অনেক বদলে গেছো  ,
সরে গেছো আমার থেকে ,সরে গেছো পাখিদের কলরব থেকে।
ঝরে পড়া পাতা থেকে তুমি সরে গেছো
সরে গেছো বদলানো ঋতুর মৃদুমন্দ কান পেতে শোনা শব্দ থেকে।
তোমার সরে যাওয়াগুলো আমাকে তোমায় অবিশ্বাস করাবে 
আমি তোমার দিকে তাকাবো বলবো
ম্যাডাম আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।
.
এই ঐদিকে তাকিয়ে কি ভাবছো  তখন থেকে
তোমার  সাথে থাকি অথচ তুমি তাকাও না    আমার দিকে।
আমি চুপ করে রইলাম
শুধু বললাম  তোমাকেই ভাবছিলেন হাজারবছর পর
তুমি বললে পাগল একটা ,এই তো আমি।
.

প্রিয় নারী


প্রিয় নারী
.... ঋষি
========================================
প্রিয় নারী ,
তুমি প্রায় জানতে চাও আমি কেমন আছি ?
আছি তো বেশ ,নিজেকে রাঙিয়ে
বিন্দু বিন্দু সূর্যের আলো যা জমা ছিল তোমার নাভিতে
তা সারাদিন চুঁয়ে আসে আমার অন্তরে।
.
হাজারো প্রশ্নের মাঝে তুমি প্রশ্ন করো
দুঃখ কাকে বলে ?
আমি বলি দুঃখ হলো সময়ের সংসারে উৎসর্গিত প্রাণ ?
যার চোখে আলোয় হাজারো স্বপ্ন
যা প্রতিদিন ধ্বংস করে যাপনের হাজারো অনিশ্চয়তা।
একবার মাটিতে পা রেখে হাঁটো প্রিয় নারী
দেখবো কত ধুলো ,কত নিঃশ্বাসে বিষ ,কত ছড়ানো মুখোশ।
.
তুমি আমাকে কবি বলে ডাকো
আমি জানি আমার এই কবিতা সময়ের সৎকারে উঠে আসা গন্ধ
যা শুধু অগুরু,ধূপের গন্ধে ঢাকা।
মনখারাপের অবেলা পার করে ,মধ্যবিত্ত চালের উপর শব্দ হয়
কালবৈশাখী মেঘ ,অগোচালো বৃষ্টি ভেজাতে চায়
আমার প্রিয় নারী তুমি জানো সে কথা
তুমি যেন আমার লুকোনো বুকের ভাঁজে জমানো আদ্রতাগুলো ।

মন কেমন


মন কেমন
...... ঋষি
=================================
শরীর ছুঁয়ে আগুন জ্বলে
সময়ের দাবানলে পুড়তে থাকা অজুহাত।
আচ্ছা চলন্তিকা কেন এমন ?
পলাশের দিন ফুরিয়ে চলা বসন্ত আজও যে পথ খোঁজে।
"ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান"।
.
মনের ভিতরে খোলা বারান্দা
আর বারান্দায় দাঁড়ানো ছায়া যুগল পথের দিকে তাকিয়ে।
পথের পরে পথ মিশে যায়
মিশে যায় মানুষের হৃদয়ের গভীর তারগুলো।
অসময়ে বাজতে থাকে জলতরঙ্গ ,পুরোনো রং চটা গিটার
মনের পাখি উড়ে যায় ,
আঁচল  খোঁজে খানিক প্রশ্রয়ে ,খানিক আবদারে
ছোঁয়ার অছিলায়।
আচ্ছা চলন্তিকা কেন এমন হয় ?
কেন এমন মন কেমন ?
কেন এই পাওয়া শুধু স্মৃতির বুকে দাগ রেখে যায়।
.
শরীর ছুঁয়ে মন ঘষে জ্বলে ওঠা বারুদ
সময় পুড়ে যায় ,তখন তোর ঠোঁটে অজস্র না পাওয়া।
আচ্ছা চলন্তিকা কেন এমন ?
হঠাৎ একফালি মুচকিহাসি ,তোর গন্ধ পাগল করে অসময়।
"তোমার প্রজাপতির পাখা
আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন-স্বপন-মাখা "।


রুদ্রকে উদ্দেশ্য করে

রুদ্রকে উদ্দেশ্য করে
.
যেখানে আগুনে রক্ত পোড়ে 
যেখানে সময়ের ঠোঁটে লেগে যায় রক্ত ,
যেখানে প্রেম জড়িয়ে যেন অজগরের নিশ্বাস
যেখানে প্রেমিকার অভিমানে জন্ম নেয় অবিশ্বাস
সেখানে রুদ্র জন্মায়।
.
যেখানে সময় শুধু  কিছু বুর্জোয়া গণতন্ত্র
যেখানে দেশবাসী কিছু লাথি খাওয়া অসৎ  মানুষ,
যেখানে স্বার্থ হিংস্রতার উর্ধে
যেখানে দেশ মানে ক্রমশ বিষিয়ে যাওয়া  অসহায়তা 
সেখানে রুদ্র জন্মায়।
.
একা একা লাগে তাই সময়ের ফিসফিস
যেখানে আফিম মানে ধর্ম বিষ ,উত্তাল সময়ের অধিকার।
শ্রমিকের মুখে রক্ত ,বুকে লেগে ছুরি
তখন রুদ্র জন্মায় ,
কিন্তু রুদ্র আবার মরতে থাকে দৈনন্দিন সিগারেটের ধোঁয়ায়
হেমলক পান করে প্রেম বুকের নিকোটিনে সময়।
সে যেন স্বপ্ন নতুন ভোর ,
কখন যেন ঘুমিয়ে যায় সময়ের  গভীরতায় বাঁচাটুকু
শুধু স্মৃতি থেকে যায়।
.
আর প্রেমিকা চিঠি লেখে আকাশকে
"  আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে, " ।
.
.... ঋষি

Thursday, April 18, 2019

কবিতার পাতা

কবিতার পাতা
......... ঋষি
=============================================
আসলে কি জানো কবিতার কোনো বই হয় না
আসলে কবিতারা কবিতা হয় না,
শুধু অনুভূতিদের আগুনে পোড়ালে যে চিৎকার বেরোয়
তাই শব্দ শৃঙ্খলে কবিতা।

শুধুই প্রলাপ,
শুধু  যাচিত কিছু ইচ্ছার  কাহিনী।
দিনান্তে সেই সময়ের রক্ত চেটে ঘরে ফেরা
সেই একই গল্পের চর্বিত চর্বন।
রূপকথার রাজপুত্র  কখনো বাস্তবে পক্ষীরাজ চড়ে না
সোনার কাঠি ,রুপোর কাঠি কিছুই বদলায় না
বদলায় না বস্তা পচা জীবনের গল্পগুলো।
মাঝে মাঝে ভাবি কেন লিখি ?
 রাতজাগা চোখে তখন সিলিঙে একঘেয়ে পুরোনো পাখার শব্দ
অন্ধকার জোৎস্ন্যা জানলার কপাট ভেঙে দেওয়ালে আঁকিবুকি ,
বুকের ভিতর হঠাৎ চঞ্চল
তোমায় মনে পরে চলন্তিকা দক্ষিণ বাতাসের মতো ,
আমার কবিতা ,আমার বাঁচা।
হয়তো কবিতা নয় কোনো, তবুও লিখে চলি
শতাব্দী প্রাচীন ঘুম ভাঙা কোনো প্রলাপ তোমায় ঘিরে।
.
আসলে কি জানো কবিতার কোনো পাতা হয় না
কবিতা কারো কারো জীবন হয়ে থাকে।
সঙ্গীত নয়, লিরিকও না, কোনো মেধা নয়
শুকনো কিছু  সময়ের পাতা ঝরা কবিতার পাতাসব।

ফসিল (২)


ফসিল (২)
..... ঋষি
=========================================
জলের আরো অনেক নীচে আরেকটা শহরতলি
মাছেরা নয়, মানুষ নয়,শুধু বাঁচার ইচ্ছাগুলো কিলবিল করছে।
অবিরত ডানাহীন পাখিরা
শিশ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে হারানো আকাশের কথা।
আর আমাদের কথা
শতাব্দী প্রাচীন ফসিল হয়ে শুয়ে আছে ঘুমের দেশে।

কেন খুশি থাকি ?
প্রশ্ন করেছি বারংবার জলের তলায় ফসিল খুঁজতে খুঁজতে।
জংধরা কোনো আদিম নাবিকের ঠিকানায় দূর বন্দরে
নিজেকে পেয়েছি ,হয়তো আনন্দ।
আসলে আনন্দগুলো ফুরোতে থাকে রোজ ঘামে ভেজা শহরে
রোজনামচা ,পান্তাফুরোনোর কথা কাহিনী,
নতুন কিছু নয় এই শহরে।
এই শহরে সূর্য নিয়মিত ওঠে , ওঠে চাঁদ ও
কিন্তু আকাশ দেখতে পাই না।
দমবন্ধ লাগে ,দুহাত দিয়ে সাঁতার কাটি একটু নিঃশ্বাসের আশায়
কিন্তু আশা ফুরিয়ে যায় ,বাঁচা ফুরিয়ে যায়
গায়ের শেওলার বয়স তখন আদিম।

হঠাৎ ঘুম ভাঙে
আমি মোহনার কলকল আওয়াজ শুনতে পাই।
জলের ওপার থেকে কাদের  যেন হাততালি
সম্পর্ক সব।
আমি জলের তলায় বিশ্বাস খুঁজি ,খুঁজি নিশ্বাস
যদি মৃত্যুর পর আমাদের ফসিলে অন্য দিন।

আবহাওয়া সংবাদ


আবহাওয়া সংবাদ
................. ঋষি
========================================
তুই তাহলে তোর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে ,
আজ থেকেই কথাবার্তা বন্ধ।
এত সহজ বিরহ বা বিচ্ছেদ কেউ আজকাল আর করেনা
এক পা তোর  অন্দরমহলে রাখি
আরেক পা তোর নোনা নরম বুকের উপর চেপে ধরি
এমনি বলেছিলাম  বোধহয় ।
.
মুহূর্তের চিৎকার
যদি চিৎকার করে উঠি,যদি আমি মৃত দেহ।
হয়তো কোনো ঘুম ভাঙা শৈল শহরে তখন তুই গরম চায়ে ঠোঁট
যদি বলি ওই ঠোঁট আমার।
যদি হঠাৎ মধ্য রাতে ঘুম ভাঙা চোখে
তোর শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি ,কিংবা অসংখ্য চুমু।
যদি কোনোদিন এক শত গোলাপ পাঠিয়ে
সকাল সকাল তোকে প্রশ্ন করি ভুলতে পারবি আমাকে ?
কি উত্তর দিবি চলন্তিকা ?
অসংখ্য ছবিগুলো হৃদয়ের দেওয়ালে লাগানো স্যাক্সোফোন
তোর চলার পথে পেরেকগুলো আমার স্কেলিটনে লেগে
অনিদ্রার রাত্রি

এ যে সমস্ত নিউটনের তৃতীয় সূত্রের দোষ
কবিতা আর তুই আমার কাছে বেঁচে থাকা।
আমার মস্তিষ্কের অজস্র তারে বাজতে থাকা জলতরঙ্গরা জানে
তোর সহস্র আয়ু শুধু আমার বুকের জঙ্গলে আগুন।
বাকি এই পুড়তে থাকা
তা শুধু কোনো অদৃশ্য বেতারে বাজা আবহাওয়া সংবাদ। 

ডেসডিমোনা


ডেসডিমোনা
...... ঋষি
==========================================
ডেসডিমোনা ট্রাজিডি
তুমি আর চোখ খুলছো না ,খুলবে না।
পৃথিবীর আগুনে পুড়ে যাওয়া মুহূর্তদের নামাবলী
আগুনে ফুটছে সময় ,
পুড়ে যাওয়া সময়ের পদচিহ্নে অসংখ্য ফটোফ্রেম ,
অসংখ্য মুহূর্ত।
.
বাড়তে থাকা অপ্রেমিক
তোমাদের উদ্দেশ্যে সময়ের ত্রিশূল দৃষ্টিতে নৃত্যরত শিব।
ডুমরুর শব্দ ,চারদিক অচেনা
প্রেমের উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে দেওয়া অসংখ্য গালি যখন চোখের জল।
শহরের অন্ধকারে বিলীন শান্তিরা খুঁজছে নেশার চোখ
হয়তো প্রেম তোমার।
.
লাল চোখ ঘুম না আসা অসংখ্য মৃত প্রেম
ছুঁয়ে যাওয়া নিজেদের সিলিঙে ক্রমশ বাড়তে থাকা শকুন।
ঈশ্বর অপদার্থ যেখানে
প্রেম ব্যর্থতায়।
অন্ধকার আজকাল বড় প্রিয় শহরের ধুলোতে
কোথাও প্রেম কাঁদছে।
.
ডেসডিমোনা  দয়া করে আমার দিকে তাকাও
দেখো আমার রক্ত চোখে লেখে আছে ট্রাজিক কিছু অপ্রেম।
পৃথিবীর আগুনে বাড়তে থাকা অপ্রেমিকের দল
সকলে তোমার সেবায় বিলীন।
দয়া করে একবার চোখ খোল ,খোল অধিকারের দরজা
আর তারপর না হয় তুমি মরে যেও আমার সাথে।

চুমু


চুমু
..... ঋষি
=====================================
তোকে একটা চুমু খাবো ,অদ্ভুত ভাবে তাকালাম
তোর অভিব্যক্তি খানিকটা নিরলস
বললি  ইচ্ছে হলো তাই বললাম।
.
সত্যি বলতে কি চলন্তিকা
এই শহরে ভালোবাসার বাস নেই ,নেই কোনো ঠিকানা।
গরম প্যাচ প্যাচে ঘাম ,গড়িয়ে নামা বিরক্তি
অথচ এই শহরে পানকৌড়ির ডুব নেই।
শুধু ডুব সাঁতার দিয়ে কিছু অদ্ভুতুড়ে সম্পর্ক মানে খুঁজছে
বাঁচার ,
একটু ভালো থাকার। 

এই শহরে  বিনবিনে এসির ভিতরে স্ট্যাটাস চালাচালি
 নাগরিক পাঁচালি,
কিন্তু সত্যি কি বলতে চলন্তিকা এই শহরে
কারোর চুমু খাওয়ার সময় নেই ,নেই দরকার স্পর্শের ,
শুধু তালে পা বাড়িয়ে এই শহর মেহফিলে ব্যস্ত
নরম মেয়েছেলের শরীর
শুধুই যান্ত্রিক ,শধুই মনোরঞ্জন ,ভালোবাসাহীন টাইম পাস্।
.
তাই একটু অবাক হওয়া আর কি চলন্তিকা
আমি তাকালাম তোর চোখের দিকে ,তোর স্পর্শের গভীরে
তারপর মিশে গেলাম ,চুমু। 

অভিমান


অভিমান
... ঋষি
=====================================
কেউ কথা বলবে না বড় অভিমান
বুকের পাথর ভাঙবে ,শেওলা ডিঙানো নদীতে প্লাবন।
আচ্ছা সময় কি শুধু দুঃখের কথা লেখে ?
কই  হাজারোবার  শোনা "ভালো আছি "শব্দটাই আজ অবধি কখনো
সত্যি খুঁজে পেলাম না।
.
ঘর ছাড়া পাখিদের ডানা গুলি ক্লান্তি মাখানো
তবুও কেমন যেন বাড়ি ফেরার তাড়া।
ঠিকানা খুঁজছে সময়
হয়তো অভিমানে কেউ কেউ ঠিকানা হারাতে চাইছে।
হৃদয়ের নরম ঠিকানা
মনের অভিব্যক্তি গুলো সার দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছে
কথা বলবো না যা ,আর কথা হবে না।
মন আর শরীরের পুড়ে চলা সময়ের শহরে
একলা পা বাড়াচ্ছে জীবন
আর  সময়ের পকেটে রাখা অজস্র অচল আধুলি।
জীবন যে এমনি হয়
বড় একলা ,বড় নিরাকার ,পবিত্র ঈশ্বরের অভিশাপ সময়ের
তুই কথা বলবি না
আর সময় শুধু হাহাকার।
.
কেউ কথা বলবে না বড় অভিমান
বুকের গভীরে কোথাও লুকোনো ক্ষতগুলো আজ বড় জ্বালাময়।
আচ্ছা সময় কি শুধু একার কথা লেখে ?
কই  হাজারোবার তোর নাম ধরে ডাকা সত্বেও
তুই তো কই আমার সামনে এসে দাঁড়ালি  না। 

তোকে দরকার

তোকে দরকার
..... ঋষি
============================================
খুঁজে পাওয়া ইচ্ছাদের চলন্তিকা ছাদ দরকার
দরকার তোর মতো প্রেমিকার।
দরকার স্নেহশীল ছায়ার মতো কিছু আবদার
না বাঁচা ভুলগুলো বড় বদলাবার।
বদলানো পথে পা মিলিয়ে
জীবনের বাকিটুকু একসাথে হাঁটার।
.
চলন্তিকা তুই  আমাকে প্রশ্ন করেছিলি
প্রেম ,প্রেমিকা আর শরীরের মাঝে তফাৎ কি ?
আমি বলেছিলাম প্রেম হলো ঈশ্বর
শরীর হলো মন্দির ,
আর  প্রেমিকা হলো পুজোর ডালা কিংবা উপলব্ধির নামকরণ।
.
 তুই  জানতে চেয়েছিলি
আমি তোকে ভালোবাসি কিংবা পুজো করি কিনা  ,
আমি হেসেছিলাম  ,বলেছিলাম
এক রৌদ্র ফুরোনো বিকেলে একলা দাঁড়াবো কোনো পাহাড়ের শৃঙ্গে
হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরবো আকাশ, তোর আভরণ।
আর হাত খুলে উড়িয়ে দেব স্বপ্ন
যা শুধু তোকে জড়িয়ে,কোনো স্বপ্ন আকুলতা ।
.
সত্যি বলতে কি চলন্তিকা
বাঁচার সব ইচ্ছাগুলোর আজ শুধু তোকে দরকার।
দরকার একটা ছাউনির ,একটু উষ্ণতার
যা শুধু আমাকে বাঁচাবে ,আরো গভীরে যাবে বলে।
বদলানো সময়ের দৃষ্টান্তে
জীবনের বাকিটুকু যত্নে জড়িয়ে রাখবে বলে।
  

Saturday, April 13, 2019

ভালো থেকো(৯)


ভালো থেকো(৯)
...... ঋষি
====================================
কে বলেছে সব গেছে ?
এখনো বাঁচা বাকি ,বহু বাকি।
.
তোমার অভিমানটুকু তোলা থাক বিকেলের শেষ রৌদ্রে
আমার মনের ইচ্ছে লুকোনো কোনো ইচ্ছে গাছ।
বদলানো সময়ের অভিমান ,
বাড়তে থাকা অংকুর থেকে ,আমাদের সহবাস।
বহুদিন পরে ওই চেয়ে দেখো আবার বোধ হয় নতুন শুরু
নতুন বছর ,
ভালো থেকো।
নতুন কিছু প্রাপ্তি তোমার ,আমার সাজানো ফোটোগ্রাফস
বহু ফটোফ্রেম ,হাজারো মুহূর্ত ,
আরো বেশি চঞ্চল হোক হৃদয় ,আরো বেশি তুমি।
আমার ইচ্ছে গাছ ,
রঙিন সম্বল ,সবটুকু জুড়ে তোমার ভালোথাকা
নীল আকাশ
হঠাৎ বৃষ্টি ,আমাদের ভিজতে থাকা।
.
এখনো বহু বাকি ,আরো বাকি
ফিরে আসা কাছাকাছি ,জড়িয়ে হাজারো মুহূর্ত। 

Friday, April 12, 2019

ক্রমশ একলব্য


ক্রমশ একলব্য
.............. ঋষি
=========================================
ক্রমশ একলব্য
নিজস্ব দুনিয়ায় বাসা বোনা মাকড়সার জাল।
একটা দেশ ,চরিত্রগুলো প্রতিচ্ছায়া
প্রতারণায় দেখতে পাওয়া ক্লান্ত আতশ কাঁচে সময়ের মুখ।
বিপ্লব এখন বিজ্ঞাপনে বিক্রি হওয়া
নাটকীয় বায়োস্কোপ।
.
সভ্যতা গুমড়োচ্ছে
হরপ্পা ,মহেঞ্জোদড়োর প্রাচীন মন্দির গাত্র থেকে বেরিয়ে আসছে ,
নগ্ন নারী ,আরো নগ্ন
উন্মুক্ত স্তন ,যোনিপথে বসে  যাচ্ছে কালের চাকা।
দেশ ক্রমশ বিবস্ত্র
যানজটের গা ঘেঁষে ক্রমশ বেড়ে চলেছে মানুষের হাতের কালি।
অন্ধকার যাত্রী সব
স্বার্থপর ,হিংসুটে ,ভীতু একটা সভ্যতার সাক্ষী আমরা।
বিক্রি হওয়া বিপ্লবের স্লোগানগুলো বড়ো একঘেয়ে
পার্টিঅফিসে নাচতে থাকা বেশ্যাগুলো
আজকাল সিফিলিস আক্রান্ত।
.
ক্রমশ একলব্য
আরো ক্রমশ আমরা জড়িয়ে যাচ্ছি নিজেদের জালে।
একটা দেশ ,যার চৌদ্দপুরুষ আমরা
শুধু নাটক করছি সভ্যতার সাথে ,সম্পর্কের সাথে ,নিজের সাথে।
বিপ্লব আজ বস্তাপুরোনো ইতিহাস
যা শুধু রক্তের কালিতে লেখা আমাদের ইতিহাসে।
.
(বিদ্রো :এই কবিতা বিশেষ কাউকে উদ্দেশ্য করে নয় ,শুধু সময়ের স্বার্থে মানুষের আয়নায় লেখা )

পাশাপাশি


পাশাপাশি
.......... ঋষি
=================================
বুকের ভিতর ক্রমাগত দুমদুম
স্বপ্ন যদি হঠাৎ মুখোমুখি এসে বসে।
স্মিত হাসি ,
আখরোট ঠোঁট ,ভিজে চোখ
তোর গন্ধ।
.
বহু জন্মের কোনো আকাঙ্খা
একলা থাকা নিয়মিত নিঃশ্বাসে ছুঁয়ে থাকা যাপন।
যদি হঠাৎ ভোর হয়
যদি হঠাৎ চোখ খোলা আলোয় এগিয়ে আসিস তুই
আমি ঘুম চোখ ,যেন কোনো স্বপ্ন।
হাতে ঘষে কুড়ি মিনিট কিংবা মুহূর্ত হয়তো স্বপ্ন
আসলে স্বপ্নরা এমনি হয়
আসে যায়,দোলা দিয়ে যায় আমার তুই।
অদ্ভুত এক গন্ধ
অদ্ভুত কোনো ভালোলাগা ,একটু বেঁচে ওঠা
কবর থেকে উঠে আসা আমরা
পাশাপাশি।
.
বুকের ভিতর ক্রমাগত দুমদুম
হঠাৎ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙা চোখে এখন পড়ন্ত রৌদ্র।
ভালো লাগা গুলো এমনি হয়
তোকে ছুঁয়ে ভালো থাকার আকুতি
এখনো বড় আদুরে মনে হয়। 

Wednesday, April 10, 2019

বৃষ্টি কথা


বৃষ্টি কথা
............. ঋষি
===============================================
শেষ বেশ কিছু বছর তুমি আমায় জুড়ে
আমাকে ছুঁয়ে যেন জলতরঙ্গ।
আমি নিজের মনে হাসি ,নিজের মনে ভাসি
আর নিজের মাঝেই কথা বলতে থাকি।

দুপুর ছুঁয়ে মাঝবয়সী রোদ  আচমকা বদলে যায় আজকাল
বৈশাখী ঝড় ,মনের খবরগুলো তোলা থাকে।
হঠাৎ মেঘ ,বৃষ্টি দের মিষ্টি কথা
টাপুর টুপুর তুমিও ভিজে চলো আমার সাথে।
ঝাঁকড়া চুলের মেয়ে ,আমার সাহস এবং প্রিয় মুখ
লুকোনো ঠোঁট ,
প্রেম ছলছল ঘুমহীন রাত
ঠিকানা খোঁজা হাতড়ানো সময়ের হাত।

সব সত্যি
তবু কেন জানি ঝড়ের মাতন প্রশ্বাসে আকাশে চমকে ওঠে বিদ্যুৎ
তুমি খিলি খিলি হেসে ওঠো।
আমার মতো তুমিও ভালো থাকো আজকাল
আমায় ভেবে ,তোমার মতো।

শেষ বেশ কিছু বছর তুমি আমায় জুড়ে 
আমায় ছুঁয়ে ঝিলিক মেয়ে, হঠাৎ বৃষ্টির ইচ্ছেকথা।
আজ সন্ধ্যাতে বৃষ্টি হোক 
চোখ ছুঁয়ে যায় বুক কাঁপিয়ে জলের কাব্যে বৃষ্টি কথা।

Tuesday, April 9, 2019

পাগলি (৫)


পাগলি (৫)
......... ঋষি
=================================================
তারপর প্রতিবাদ শেষ হয়ে গেলে
বড়রাস্তার ধারে সেই পাগলিটা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
চেয়ে থাকে সদ্য চলে যাওয়া স্লোগানের দিকে
চেয়ে থাকে নিজের ভিতরে বেড়ে ওঠা অবাঞ্চিত সন্তানের দিকে।
পৃথিবী হাসে আর বোবা দুপুরের রোদে
এক ফোঁটা  রক্ত ঝরে পরে পাগলির চোখে।
.
এক দীর্ঘস্থায়ী বরফের চাঁই নেমে আসে
সভ্যতার ধ্বংসের উদ্দেশ্যে।
আমি তুমি শুধু সাধারণ গরম কফির কাপ আর লেপ কম্বলের ওমে
আহ্লাদী ঢেকুর তুলি নিজের পরিবারের মা বোনের সামনে।
আর ভাঙা ঝুপড়িতে
সেই পাগলিটা আয়নার সামনে দাঁড়ালে
ভৌতিক উচ্ছ্বাসে ডুবে যায় চিৎকারে কোনো ক্রমাগত ধর্ষণে।
রাস্তায় পথ চললে লোকে হাসে
ছুটে আসে পাথর  ,কটূক্তি সভ্যতার সংস্কারে।
আর ঠিক সেইসময় সামনে দিয়ে চলে যায় স্লোগান
সভ্যতা বদলাবার ,সভ্যতার সংস্কারের।
পাগলিটা চিৎকার করে ,গালাগাল দিয়ে উদ্ধার করে সমাজ
তারপর নিজের পেটের উপর হাত বোলায় পরম স্নেহে। 
.
তারপর প্রতিবাদ শেষ হয়ে গেলে
বড়রাস্তার ধারে সেই পাগলিটা ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
মাংসের দোকানের  দাঁড়িয়ে, কুচি কুচি করা মাংস
রক্ত ছিটকে আসে তার শরীরে  — ইস, কি যে ভালো লাগে।
নিজের পেটের উপরে অগোছালো চড়,ঘুষি ,থাপ্পড় চালায়
বসে পরে মাটিতে ,,,মাটি ভেসে যায় লাল রূপকথায়।

একরাত্রির গল্প


একরাত্রির গল্প
............. ঋষি
===============================================
বিষন্ন ভাঙা চাঁদের মতো তুমি এলে
একরাত্রির গল্প।
যেন ডুবে যাচ্ছি আমি কোনো মৃত অন্ধকার নদীর মাঝখানে
মৃত নদীর বুক  চিরে তোমার মেধাবী পৃষ্ঠাতে
অনবরত রাত্রি লিখছে স্নেহ ,বাঁচার অকারণ কারণগুলো।
.
তোমার ঘুম, ঘুমের বাজপাখি,
 সারা আকাশ জুড়ে অন্ধকার লোভ
আঙুলের স্পর্শে রাত্রি বাতাসের টোপ ক্রমাগত জ্যোৎস্নায়।
উড়ে উড়ে ফুটছে টেরাকোটা রঙের স্বপ্নরা
ধোঁয়া ধোঁয়া সম্বল।
বুকের এই পাতাল ফুঁড়ে উঠছে ক্রমাগত বাঁচার আকর
ভালোবাসা সর্বনাশা হায়।
তোমার হাসি
তোমার চোখের চাহুনির ভিতর অতল সাগর।
তলিয়ে যাচ্ছি আমি মৃত্যু নদী
নদীর বুকে অসংখ্য ভাঙ্গন ,পার ভাঙা শব।
নগ্ন রাত্রির দেহ বেয়ে বেয়ে চাঁদ নিভে গেলে
মৃতদেহ জেগে ওঠে বর্তমান ফসিল।
.
বিষন্ন ভঙ্গ চাঁদের মতো তুমি এলে
একরাত্রির গল্প।
যতসব নিরুত্তাপ খসে পড়া জলের পালক আকাশের বুকে লেগে
ঠিক তোমার চোখের  জলজ্যোৎস্নাকাজল
অনবরত রাত্রি লিখছে সময় ,বাঁচার কারণগুলো মৃত নদীতে। 

Sunday, April 7, 2019

ছায়া শরীর




ছায়া শরীর
.... ঋষি
================================================
সম্পর্কের ভিতর একাধিক ছায়া শরীর
ক্রমশ এগিয়ে আসা রোদ বিশাল  ছায়া ফেলে নিজেদের বৃত্তান্তে।
কিছু বিভ্রান্ত ঘুম ভাঙে
নড়ে ওঠে বুকের  ওঠবসে অসংখ্য  শাখা প্রশাখা।
"তোমার ঘরে বাস করে কারা,ও মন জান না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।"

মন জান না
উপলব্ধির তলানিতে ,দূরত্ব থেকে দৃষ্টান্ত ক্রমশ ৷
দুজনের মধ্যেকার শূণ্যতায়
বাড়তে থাকা প্রতিবিম্ব মুখ একে ওপরের সান্নিধ্যে।
তুমি অবিশ্বাসী পর্বতচারিনী
কিছুতেই পেরতে পারবে না সেই উচ্চতা ,
আর আমি পর্বতের খুচরো নদী
শুধু স্বপ্ন দেখবো সমুদ্রের।

সম্পর্কের ভিতর একাধিক ছায়া শরীর
ভালোবাসার তীব্রতা বেড়ে ওঠার আগেই প্লাবন আসে।
ভেঙে পড়তে চায় সম্পর্কের বাঁধ
কিত্নু বিভ্রান্তের ঘুম ভাঙে না ,ভেসে যায় পারাপার।
পুরুষরা আলো চায় , তুমি উৎস হয়ে  উঠতে পারো না
তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা।

Saturday, April 6, 2019

অর্ধনারীশ্বর


অর্ধনারীশ্বর
.............. ঋষি
================================================
তুমি নারী নও ,কোনো অন্তরাত্মা আমার
আমার কোনো নারী নেই ,ছিল না কোনোদিন।
শুধু তুমি ছিলে  তাই আমার ষড়রিপু ও জরা-ব্যাধি
সব আশ্চর্য হয়ে তোমাতে মুগ্ধ ।
আমার কোনো জন্ম ,
আর মৃত্যু সে তৃষ্ণাতে বাড়তে বাড়তে আকাশচুম্বী তুমি।
.
আমার সারা দিন শুধু তোমাকে ছুঁয়ে থাকা
আর রাত্রিগুলো রাক্ষস হয়ে তোমাকে গিলে ফেলে কামে ও স্নেহে।
তোমার স্তনে মুখ ঘষে খুঁজতে থাকা বাঁচা
মধ্যরাতে তুমি তখন আমাকে জড়িয়ে যত্নে কোনো রূপকথা।

রোজদিন আমি যাদের সাথে আমি কথা বলি
তারা আমার কেউ নয়।
সমাজ জীবনে ভন্ড আমি শুধু সাক্ষাতে  হাসতে থাকি
আসলে বুকের ভিতর তুমি থাকো  তখন।

আমি ভালোবাসি সেই শরীরকে
যে শরীরটা আমার ভিতর থাকে ঠিক তোমার মতো দেখতে।
একটা বিবেক। এক স্বাধীনচেতা নারী ,এক অনন্য তুমি
যে আমার ভিতরে বাঁচে।
.
আমার ভিতর নারী ছিল না কোনোদিন ,শুধু তুমি ছিলে
নিভৃতে পরম যত্নে বাঁচা আমার খোলা আকাশ।
আমি রোজ নিয়ম করে তোমাকে ছুঁতে চাই
আরো কাছে যাই চলন্তিকা ,মিশে যাওয়ার আশায়।
কখন যেন খুব একান্তে আমি,তুমি  হয়ে যাই
হয়ে যাই আমরা অর্ধনারীশ্বর।  

Wednesday, April 3, 2019

বন্দি শহর


বন্দি শহর
........ ঋষি
==============================================
বিকেল গড়িয়ে নামছে
বাইরে চামড়া পোড়া আগুনগুলো আগাম বৈশাখের খবর।
যেখানে সমুদ্রের ওইপার তুমুল ঢেউ
আমি কাঁচের এপারে বসে ক্রমাগত হৃদয় লিখছি।
দূরে দেখতে পারছি চলন্তিকা তোর ছাদে দড়িতে ঝুলতে থাকা অন্তর্বাস
আর চারদেয়ালে কোনো বন্দি শহর।
.
এরপর সন্ধ্যে গুটিগুটি পায়ে রাত্রি
রাত্রি গুটিয়ে আমার লুকোনো বুকের কাছে নিশির ডাক।
তুই জানিস   চলন্তিকা
সারা শহর যখন ক্লান্ত ,মানুষগুলো যখন  ক্লান্ত সময়ের ভারে
তখন শহর কাঁদে  একলা রাত্রে।
মাঝরাত হাওয়ার ঘর,ঘরভর্তি অসংখ্য সংশয় ... টালমাটাল
মাথার উপর প্রাচীন সিলিং ফ্যান জানান দেয়
আমার বেঁচে থাকার কথা।
তোর আখরোট ঠোঁটের  পাশে, তোর অমৃত  স্তনের পাশে
আমার  কয়েকটা আদর সেলাই
আমাকে একলা করে দাঁড় করিয়ে রাখে শহরের চৌরাস্তার মোড়ে।
ঘুম আসে না
তবু সময়ের টিকটিকিটা বলে রাত্রি। 
.
বিকেল গড়িয়ে নামছে
আমি কাঁচের এপাশে বসে মাপতে চেষ্টা করছি শেষ রৌদ্রের তাপমাত্রা।
আমার এই অবস্থানের পিছনে  দিন নেই,নেই রাত
আছে সেফিটিপিন দিয়ে আটকানো তোর পরিচয় ।
দূরে দেখতে পারছি অফিস ফেরত তুই বিষন্ন মুখে রাস্তা খুঁজছিস
যেখানে শহর শেষ ,শেষ পরিচয়। 

হারিয়ে পাওয়া


হারিয়ে পাওয়া
.......... ঋষি
================================================
ভেবেছিলাম আমার মৃত্যু কাল্পনিক হবে
কিন্তু জীবিত মৃত্যু।
চলন্তিকার বারান্দা দিয়ে দেখা সেই শুকনো গাছটা যেটা একলা।
চলন্তিকা মৃত্যু কাকে বলে ?
তুই হাসিস প্রতিবার বলিস ওরে পাগল
মৃত্যু সে তো মানুষের মনের আর বাকিটা শুধু বেঁচে থাকা।
.
আমি এমনভাবে তাকাই তোর দিকে
যেন তোর চোখ আমার কাছে মৃত্যু সমান।
এ জীবন তোর চোখের মাঝদরিয়ায় ঘুমিয়ে থাকা মাছ
যার  বুক চিরলে সাদাকালো টিভির পর্দায় শুধু অসংখ্য মুখোশ ।
চলন্তিকা মুখোশ কাকে বলে ?
তাই হাসিস আর বলিস মনের উপর নোংরা পর্দাটাই তো মুখোশ।
আমি তোর দিকে তাকাই আর অবাক হই
যেন প্রাচীন মৃতের বুকে লুকোনো আকর।
স্বাভাবিক স্বপ্ন থেকে হঠাৎ যদি মানুষের ঘুম ভাঙে
একটা  ভয় আর ডিপ্রেসন চেপে ধরে ,
কিছুটা হারাবার শোক ,কিংবা হারিয়ে পাওয়ার।
.
ভেবেছিলাম আমার মৃত্যু রূপকথা  হবে
সেটা শুধু তোর সাথে।
কিন্তু এই যে অস্থিরতা এ যে মৃত্যু সমান চলন্তিকা
তুই হাসছিস।
যোনির বদলে খুলে দিচ্ছিস সংবিধান আর তার হাজারো ধারা
কিন্তু চলন্তিকা এই মৃত্যুতে আমার শোক নেই।

its time



"সময়ের কাছে ভালোবাসা মানে শরীর

আর শরীরের কাছে যে ভালোবাসা ঈশ্বর। "

সম্ভব (১)
.
মেয়েটা অপলক তাকিয়ে ছিল ছেলেটার দিকে
প্রথম দেখা ,প্রথম প্রেম,
আর ছেলেটা
তার সাতনম্বর শিকার করা মেয়েলি নরম মাংসের দিকে।
মেয়েটা জুল জুল করে তাকিয়ে ছিল ছেলেটার দিকে
খুঁজে চলেছিল তাদের প্রেমের ভবিষ্যৎ,
আর ছেলেটা ভালোবাসার নামে মেয়েটার শরীর হাতড়াচ্ছিল
চরম কামে।
.
সম্ভব (২)
.
ছেলেটা বহুক্ষণ বাসস্ট্যান্ডে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো
তার ভালোবাসার মেয়েটার  অপেক্ষায়।
বাস এসে থামলো ,মেয়েটা নামলো তার বান্ধবীদের সাথে
একটা মুচকি হাসি ,ছেলেটার পাগলাটে চাহুনি।
খুব হাসছে মেয়েটা তার বান্ধবীদের সঙ্গে
বান্ধবীরা বলছে কিরে ও তো লাট্টু কি বল ,কি করবি ?
মেয়েটা তাচ্ছিল্লের সাথে বলছে
ছাড় তো ভালো টাইমপাস ,ভালো কাটবে সময়।
.
আজকাল 
.
আজকাল গল্পগুলো এমনি হয়
আজকাল প্রেম শুধু একটা বাহানা ,কিংবা টাইম পাস।
দামি ব্যস্ত সময়ের  থেকে চুঁইয়ে পড়া সময়
টাইমপাস।
একদিন প্রেম ,
প্রেমিক ,প্রেমিকা  দেখলে কাঁদতে চাইবে।
কিন্তু চোখের শুকনো নালা বেয়ে জলের পরিবর্তে
টপটপ করে ঝরবে রক্ত।
.
সম্ভবত একদিন 
.
একদিন ভালোবাসি বললে অদৃশ্য প্রেমের আত্মা
হাত বাড়িয়ে গলা  টিপে দেবে মানুষের।
হাসির কোরাসে আর ভাসবে না কোনো প্রেমিকা  ভালোবাসি বলে
কিংবা কোনো প্রেমিক করবে না অপেক্ষা তুমুল প্রেমের ।
সেদিন স্তনে নূপুর বাজবে,শিশ্নে আওয়াজ তুলবে গিটার,
আর  সেদিন প্রেম মানে শুধু শরীর ।
শহরের অলিগলি পেরিয়ে শহরের চওড়া রাস্তায় চলবে প্রেমের মৃতদেহ
একদিন সত্যি প্রেম বলে কিছু থাকবে না।
.
................ ঋষি 

Stop chield labour


Stop child labour
................ ঋষি

============================================

শুয়োরের বাচ্চা চায়ের কাপটা ভেঙে ফেললি

পয়সা কি তোর বাবা দেবে ,

একটা ভাঙাচোরা ,কান্নামিশ্রিত গলা শুনতে পারছি

আর হবে না ,আর হবে না।

.

মানুষ হয়ে মানুষের সামনে দাঁড়াতে লজ্জা

লজ্জা এই বেঁচে থাকার বুকে এক বাপমা মরা শৈশবের সামনে দাঁড়াতে।

কেমন করে লিখব পৃথিবী

কেমন করে লিখবো মানুষ সময়ের গায়ে।

একদিন শৈশবের হাড় দিয়ে তৈরী করবো মানুষ

কারণ শৈশবের চামড়ার  আর্তনাদ লেগে গেছে মানুষের লোভে।

পশুরা ক্রমশ বেরিয়ে আসছে মানুষের চোখে

সমাজের  কোটরে ক্রমশ জমা হচ্ছে চুঁয়ে নামা মলিন শৈশব।

একদিন একটা ছোরা বসিয়ে দেব সমাজের বুকে

যদি  কলজে কাঁদে ,

যদি একবার হারানো শৈশবগুলো মুক্ত পায় খোলাআকাশে ।

যদি একবার ফিরিয়ে দিতে পারি

শৈশবের হাসি সময়ের কাছে।

.

মানুষের নখে লেগে আছে রক্তপোস্টার

শৈশব সমাজের ব্যবহারের নাম।

একদিন মানুষের ভিতর মানুষগুলো সাহসী হবে

পোস্টারে লিখবে "stop child labour "।

কিন্তু অভিমান


কিন্তু অভিমান
........... ঋষি
============================================
আমার ক্ষমাগুলো ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে ওঠে
বুকের জঙ্গলে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসে দাবানল।
শহর ঘুমিয়ে থাকে রোজকার মতো
অথচ আমার রোজনামচায় জড়ো করা দুর্বলতা।
চটি ,জুতো ,জামা সব বিক্রি হয় দোকানে
অথচ লাভ লিখতে লিখতে জীবন কখন ব্যর্থতা লেখে।
.
নিরুত্তর পুরুষের দিকে
উত্তাল সমুদ্রের বুকে ক্ষুদ্র নৌকা ,
ফেলে আসে জটিলতা,তোমার কাছে ধার নেওয়া দেড় হাজার
যন্ত্রনা ঘূর্ণির মতো কালবৈশাখী হয়ে আমার শহরে।
 নেমে চলা নিজের কাছে
প্রতিটা উপহারে জমা হতে থাকে আদর অথচ কিছুটা আগুন।
একদুপুরে একটা চিঠি আমার ঠিকানায়
রেখে আসে লোকাচার,
কিন্তু অভিমান।
.
সবকিছু বলা হয়ে ওঠে না শুধু ভালোবাসা ছাড়া
শুধু ভালোবাসি বলা হয়ে ওঠে না।
দূর থেকে শুনতে পারি চুমুর শব্দ ,দেখতে পারি তোমার ঠোঁট
তবু তোমাকে ছোঁয়া হয়ে ওঠে না।
.
আমার ক্ষমাগুলো ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে ওঠে
টিকিট কেটে ফেলি একলা কোনো বাসে  ,একলা গন্তব্যের।
শহর ফুরোতে থাকে ,রোজকার আমি
শহরের শেষ মাইলস্টোন হঠাৎ দেখিয়ে অনেকটা নিশ্বাস।
কিন্তু চটি ,জামা ,জুতো সবই সত্যি
শুধু সত্যি নয় আমার বেঁচে থাকা। 

কবিতায় আগুন


কবিতায় আগুন
.............. ঋষি
=================================================
অনেককিছু বলার আছে  ,আর শোনার তারও বেশি
এক নিশিরাতে প্রেমিকার ঠোঁট চুরি করে
কবিতা লিখবো।
অদ্ভুত অহমিকায় চলন্তিকা তোর বুকে হাত দিয়ে
মেপে নেবো সময়ের ব্যর্থতা
তারপর শুধু ঘুম আসবে না।
.
ঠিক এতবার
মস্তিষ্কের পাড়ায় ঘুরে ঘুরে ক্রমশ ক্লান্ত আমি পেঁচার চোখ।
বিশ্বাস  চুরি হলে
পরে থাকে বাসি পাউরুটি চলন্তিকা তোমার যোনির মতো।
ইউনিভার্স জুড়ে একটা  মস্ত জিহ্বা
পেঁচিয়ে ধরে অস্তিত্ব ক্রমশ সংজ্ঞাহীন সংশয়।
আরশোলা প্রজাপতি হতে চায়
সাদা জামায় দাগ পরে যায় পুরোনো অসস্ত্বিকর ঘামের।
তারপর  চোখ মুছে নেয় ,এই সময়
তারপর চোখ খুলে পরে থাকে বিবর্তনের বীজ আবর্তনের গায়ে।
অদ্ভুত এই অসহায়ত্ব শালা চিনচিন করে
গর্জে ওঠে ভবিষ্যতের মরুভূমি কামান
হারানো  চাবি খুঁজতে থাকে সম্বল জীবন
তারপর  আবার অনিদ্রা।
.
অনেককিছু বলার ছিল ,আর ছিল শোনার আরো অনেক
এক নিশিরাতে তোমার সম্বলে অনেকটা আলোর দুর্গ
কবিতায় আগুন।
আগুনে পুড়ে যাবে আমাদের জমানো অস্তিত্ব অহমিকায়
তারপর ব্যর্থতা পালিয়ে যাবে
আর কখনো কবিতায় লিখবো না জীবন।


.




Tuesday, April 2, 2019

জাগতে রহো


জাগতে  রহো
..... ঋষি
=========================================
অদৃশ্য দরজা
ব্যস্ত রঙের ছবিগুলো আজকাল দরজার বাইরে।
দরজার ভিতর প্রাচীন মৃত ফসিল
মৃত শহরের বুকে অসংখ্য চিৎকার তবু আমরা ঘুমিয়ে।
অন্য কোন পৃথিবী
আর দরজার ভিতর কিছু এবস্ট্রাক্ট  ছবি।
.
আচ্ছা আকাশে ভাসা যায় ?
কিংবা ধরো সমুদ্রের বুকে পাল তোলা নৌকা ,
ফিরে এসো কবিতা মৃতের এই বুকে
বেঁচে থাকো মৃত ফেরিওয়ালার আদিম শহর ।
এক পাও যায় না ,দু পাও না
তবু থেমে যায় মুহূর্ত।
.
সময় নির্ভর কোনো ঠিকুজির আদিম রহস্য নিয়ে পথ চলা
আচ্ছা আমাদের কি জাত  ?
আচ্ছা সম্পর্কেরা বুকের কেবিনে কেমন আছে বন্দি ,
বুকের ভিতর লালন বলে
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়
আমি ধরতে পারলে মন বেড়ি ,দিতাম পাখির পায়।
.
অদৃশ্য দরজা
একদিন দরজা খুলে প্রচুর আলো আমাদের মুখে।
আর দরজার ভিতরে সেও শেওলা খড়িকাঠ
অন্ধকার রাত্রি।
বাইরে পাহারাদার হেঁকে চলে যায় বারংবার
নেশা ,জাগতে  রহো। 

একলা যখন

একলা যখন
.......... ঋষি
===========================================
তুমি তোমার অজ্ঞাতবাসে তোমার ছাদে এসে দাঁড়ালে
অন্ধকারে চারিপাশ ,নিঝুম।
দূরে কোথাও একলা দঁড়ানো সেই গাছটা
পর্বত  প্রাচীন অন্ধকারে ,একটা ছায়া।
ঘুম ভেঙে যাবে চলন্তিকা
বুকের পাথর ভেঙে তৈরী এই অন্ধকার।
.
বুকের উপর পা দিয়ে দাঁড়াবে
পা দিয়ে বুকের গভীরে কোনো শেওলা মাখা সিঁড়িতে।
প্রাচীন দারিদ্রতা
নিঃশ্বাস নেবে বুকে সময়ের নাম করে।
হয় তো  অভিমান
হয় এমন বেকসুর ছুরি ঢুকে যায় বড্ডো অভিমানে।
কথা হবে না
সময় হবে না ,দূরত্বের বেতার তরঙ্গে  প্রাচীন অমনিবাস।
সময় ফুরোনো দূরত্ব বেড়ে যাবে
অথচ ঘুম চোখে স্বপ্নগুলো বড় বেশি মৃত তখন।
.
তোমার একলা ছাদ।একলা আকাশ ,আর অজস্র কথন
সময়রের মুখভার একলা যখন।
তোমার রাস্তার পাশে সেই গাছটা ছায়া ফেলে যাবে
অন্যমনস্কতায় তুমি এক অন্য তখন।
জানি চলন্তিকা সময় বদলাবে
কারণ প্রাচীন অমনিবাসগুলো সব ধ্বংসস্তূপ আজ।   

কবিতার শোক

লিখতে পারাটা একটা অসুখ  ভীষণ কষ্ট ,ভীষণ আনন্দ ,প্রেম প্রবাহ ,অসংখ্য শোক,শহর ,মানুষ   সব কেমন সাদা পাতায় সংসার বুনতে থাকে  শব্দদের ঘুণপোকার স...