Tuesday, November 30, 2021

একমাত্র কারণ আমি



 একমাত্র কারণ আমি 

.. ঋষি 

.

তোমার সমস্ত হাতছানির ভাগিদার আমি 

এই যে  দিন ফুরিয়ে যাওয়ার কাব্যে প্রতিবার তুমি লেগে 

এই যে সকাল থেকে রাত মুহূর্তদের ঘড়ির মুখে তুমি ,

সমস্ত চিত্রপটের

সমস্ত কায়নাত জুড়ে তোমার মনখারাপ 

তার কারণ আমি। 

.

সমস্ত দোষারোপের 

সমস্ত আবিষ্কারের শেষে পরে থাকা ফসিল ,

দিন ফুরিয়ে যায় শহরের সমস্ত ল্যাম্পপোস্টে লম্পট পুরুষের গল্প

প্রতিটা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে কাকতালীয় ন্যাকান্যাকা প্রেম 

আজকাল যে কোনো নেশায় আমার মন ভরে না 

আমি জানি এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একমাত্র কারণ আমি। 

.

যদি ঈশ্বর কোনোদিন আগুনের ফলকে লেখে প্রহসন 

যদি মানুষ কোনোদিন সত্যির কলমে লেখে প্রতিবাদ 

তবে বোধহয় আর কিছু পাওয়ার থাকে না ,

সমস্ত প্রলোভনের পর এই যে তুমি একলা বসে মনখারাপ 

এই যে তোমার শাড়ির আঁচলে অজস্র সমাজ 

এই যে তোমার প্রতিমুহূর্তে লালিমার আজকাল চোখে বালি 

আমি জানি 

এই সমস্ত অবস্থানের একমাত্র কারণ আমি। 

তবুও চলন্তিকা এই কুয়াশায় 

তবুও সময় এই নিরাশায় 

আমি জানি ,আমি বড় নির্ভরশীল একটা সমাপ্তি 

যার শেষেরটুকুতে আমিও মৃত। 

 

Sunday, November 28, 2021

গল্প ভালোবাসার

 গল্প ভালোবাসার 

... ঋষি 


দুরন্ত কবিতার পাশে আমি শুয়ে  আছি 

এই শহর জানে না জাগতে 

আজ বহুযুগ শুধু একা একটা জীবন স্বপ্নের খোঁজে ,

আমার ভিতরে এক ডজন গল্প 

আতশ কাঁচে চোখ রেখে আমার দশ বছরের ছেলে বলে 

রৌদ্র ভিজিয়ে আগুন জ্বলে গো বাবা। 

.

গাছের ভিতর শতাব্দী পার করে জীবন সমুদ্রে একা নৌকা 

সময়ের গা ঘেঁষে ক্রমশ অবলুপ্ত এক একটা দিন 

বাঁচার দিন ,

অপেক্ষার শেষ প্রহরে এই শহর থেকে দূরে একটা সাবওয়ে 

কাগজ ছিঁড়ে কুচিয়ে দেয় শহরের উপর 

যারা বোঝে তারা জানে 

এ হলো ফুরিয়ে যাওয়ার গল্প ,পালকের গল্প 

গল্প ভালোবাসার। 

.

এ শহরে খুঁজি ফিরি কবিতা রোজ 

এ শহরে খুঁজি আমি কবিতার ঠোঁট 

স্পর্শ 

অথচ স্পর্শের পাশে শুয়ে আছে আমার গত জন্মের পাপ 

সেই একটা মুখ 

ভীষণ চেনা 

ভীষণ কাছের ,

ওচোখে পাপ ছিল না কোনোদিনই 

বরং আমি সেই পরাজিত অপেক্ষা যে ঈশ্বরের সেজে 

তাকে দিয়েছি এক মৃত পরিচয়।  


Saturday, November 27, 2021

আরেকটা দিন

 আরেকটা দিন 

... ঋষি 


ডানা ঝাপটে শীত এসে বসে এই শহরে মাছরাঙার মতো 

শীতের দুপুরে রোদের অপেক্ষাতে নেমে ঘুমের কথা

আসলে কথা ফুরিয়ে গেলে 

মানুষের ঘুম পায় 

দুটো ক্লান্ত মানুষ উল্টো দিকে পথ হাঁটে বেঁচে থাকার ভয়ে

কিংবা একা থাকার । 

.

আমাদের শান্ত উঠোনে তখন বোমারু বিমানের চিৎকার 

ফায়ার ,হল্ট চিৎকারগুলো ভীষণ চেনা ,

সেই হত্যালীলার সাক্ষী আমি 

যেখানে মৃত্যুর পরেও মানুষকে বাঁচতে হয়  ,

তবে তফাৎ এটা 

মোটা চশমার পৃথিবীতে আমার পায়ের শব্দ পাওয়া যায়। 

.

অথচ এই একলা দুপুরে তুমি হাঁটতে থাকো অ্যালকোহলিক রাস্তায়

আর আমি শ্মশানের স্তব্ধতাগুনি আজকাল ঘড়ির কাঁটায় 

তারিখ ফেটে জন্ম নেয় এক একটা উৎসব 

অথচ বৃদ্ধ আমি 

পুরানো ছাদের কার্নিশে একলা দাঁড়ানো কবিতা ,

সময় আর  উত্তাপগুলো পরিবাহিত হয় না আর

স্তব্ধতা পাগল করে না আর 

আর বলি না আমি ভালো নেই 

শুধু প্রতিদিন রাত হলে বুঝি 

মুক্তি আরেকটু কাছে।  

 


পাখি


 

পাখি 

... ঋষি 

.

পাখির আকাশের সাথে  আমার ঢের মিল

স্যান্ডপাইপার পাখির মতো আমি চষে বেড়াই পৃথিবী

মিলনইচ্ছুক হৃদয়ের  মতো উড়ে বেড়াই এখানে-ওখানে তোমায়  খুঁজে 

আলাদা শহর তল্লাশি করি সহস্রবর্গমাইল।

.

সঙ্গীহীন একটা  বিকেলের গল্প এটা 

তুমি যাকে অবেলার গল্প বলে তুলে রাখো তোমার আলমারির উপর 

              আমি তাকে তোমার হৃদয়ের মাপ বলি 

আমি বলি বিশ্বাসের হাতে তোমাকে ছোঁয়াটা ঈশ্বর 

বাকিটুকু প্রতিহংসা। 

 .

ভালোবেসে যদি সময় ছুঁয়ে দিতো  

ও ঠোঁটে অযুতনিযুত বছর শুধু শুকিয়ে থাকা মরুভূমি ,

কে দেবে জিভ 

           কে দেবে চাহুনি 

আমাদের স্বতন্ত্র ভাবনায় ভগ্নাংশ সামাজিক একটা নিয়ম 

                 সর্বোপরি আমি অধিকারগ্রস্থ 

           তুমি চিন্তায়। .

.

দিন শেষের দিনলিপি 

                 জানি ,

                   ও তল্লাটে প্রেম শুধু খিদের মতো মাটি আঁকড়ে 

ও তল্লাটে এখন পুরোনো জমি ফিরে পাওয়ার লড়াই,

                    সময়ের হিসেবে, এখনো ঘড়ি শুধু একটা নিয়ম মাত্র 

 জানি ,

        সময়ের শেষে দলছুট ,আকাশছুট পাখির সংখ্যা খুব কম না। 


 

Friday, November 26, 2021

ভাবনার পাথর

 


ভাবনার পাথর 

... ঋষি 


রবীন্দ্ৰনাথ বুঝেছিলেন কাগজ আর কলমের সহবাস 

তারপরেও অনেকে বুঝলেন সেই কথা ,

রামকিঙ্কর বুঝলেন পাথরের শোক 

তিনি লিখে ফেললেন পাথরের ভাবনায় সময়ের আলাপচারিতা ,

আমরা কি বুঝলাম তার থেকে 

মূর্খ আগামীর অবলম্বনে শুধু সৃষ্টির প্রহসন ?

.

সব উত্তর দেবো না কখনো 

বলেছি চলন্তিকাকে ,

সব কষ্ট যদি বলে দি তোমাকে 

তুমি ভাববে কাগজ ,কলম আর পাথর শুধুমাত্র পাথেয় 



পথিক যে 

সে ভাবে পৃথিবীটা মানুষের হোক। 

.

জন্ম যেখানে মিথ্যে কথা বলে 

সেখানে তোমার রাত জেগে কি লাভ চলন্তিকা ?

বরং তুমি 

রবীন্দ্রনাথ ভাবো 

ভাবো কোপাই নদীর  সামনে কাকে খুঁজছিলো সেদিন ?

কাকে খুঁজছিল মাঝ পদ্মার জ্যোৎস্ন্যায় ,

কিংবা তুমি ভাবতে পারো রামকিঙ্কর 

পাথরের ঈশ্বর 

কিভাবে পাথর ভেঙে তৈরী করেন হৃদয় 

কিভাবে তিনি পাথর দিয়ে সময় তৈরী করেন 

কারণ তুমি জানো 

পাথর দিয়ে মানুষ তৈরী হয় না 

সময় তৈরী হয় না 

কিন্তু ভাবনারা পাথর হয় বটে।  q

অনুভূতির পাথর

 


অনুভূতির পাথর 

... ঋষি 


পৃথিবীর সবথেকে দামি পাহাড়টা আমি ছুঁয়েছি 

পোশাকের ভিতর ,পোশাকের বাইরে সবটুকু ছুঁয়ে বুঝেছি  

সময় আসলে অস্থির পাঁজরের টুকরো 

যেখানে আঘাতের পর আঘাতে বেসামাল পাথর তৈরী হয় 

তৈরী করে  মৃত অনুভূতির পাহাড়। 

.

যখন সমস্ত চিঠিরা নিজের ঠিকানা মুছে ফেলে 

তখন মেইলবক্স বাউন্সব্যাক করে 

যখন সমস্ত ফ্রেম অদৃশ্য হতে থাকে 

তখন  নিজের অজান্তেই মৃত সম্পর্কেরা কথা বলে ,

অদৃশ্য মেরুতে সেই কথোপকথন সাক্ষী রাখে আগামীর 

আসলে পৃথিবী  মিথ্যা তখন। 

.

যখন পৃথিবী তার আশ্চর্য আবর্তনে স্পর্শ অকারণে করে 

ঠিক তখন দূরে কোথাও মানুষগুলো পাথর হয়ে যায় ,

তারপর পাথরের পর পাথর জমে 

শেষে কখন যেন পাহাড় 

সে যে অনুভূতির পাহাড়। 

তবে কি পাথর বীতশোক? নাকি এক পাথরের মতো লোক

ক্রমশঃ ডুবতে থাকে পাথরে পাথরে

কান্নার শব্দ 

হাহাকার 

নিরাকার 

অনুভূতিরা যে পাথর তখন। 

নীরবতা

 নীরবতা 

... ঋষি 


নীরবতা কোন সময়ের নাম নয় 

নির্জনতা নাগরিক অভ্যর্থনাপ্রাপ্ত একটা বেরসিক দিন ,

অসম্ভব নামের কোনো ভাবনা সময়ের বাতিস্তম্ভে অন্ধকার নেভায় 

প্রাম্ভিক নামের কোনো সফর ছায়া সঙ্গী,

আমি বলি চলন্তিকা 

তোমরা সময় বলতে পারো। 

.

আগুন নিভে যায় 

জীবন কোনো আগুনের দিকে শেষ অবধি মুখ করে দাঁড়ায় 

উত্তাপ বুকের ওমে মনে করায় 

ঋতুপরিবর্তন ,

দিন কাটে ঠিক এই শহরে প্রতিদিনকার ছলনায় ,

..

একটা ভূমিকা দিয়ে পরিচয় শুরু 

তারপর কাঁটা তার পেরিয়ে সময় গিয়ে দাঁড়ায় ভাবনার ঘরে ,

সকলে মাটি খোঁজে অকারণ 

কিন্তু ভাবনার মাটির তল ,সে কি আর পাওয়া যায় ?

আসলে সব অধ্যায় শেষ হয়ে গেলে 

সকলের উপন্যাসের শেষটুকু লিখতে হয় 

কিন্তু উপন্যাসের শেষে  সময় ছাড়া আর কি থাকে ?

উত্তরটা ঈশ্বর লিখেছেন ইতিহাসে 

     তু 

          ন

পাতা। 

ঠিকানাহীন

 ঠিকানাহীন 

... ঋষি 


ঠিকানাহীনকে উৎসর্গ করলাম এই পৃথিবী 

তোমার ঠিকানায় নিজেকে রেখে দিল গোপন একটা গল্পে ,

সবাই বলে আলপিন ফুটিয়ে জীবন আটকানো যায় না 

অথচ তোমার গল্পে অচিনপুর ছুঁয়ে থাকে। 

.

এখন প্রশ্ন হলো, কেন?

তোমার ঘর কেন  নিশ্চিন্তপুর  নয়

তোমার ঘর নিশ্চিন্ত না হলেও আমার মতো অশান্ত নয় 

আসলে মানুষ একটি বাঁশির জন্য কাটাতে পারে একটা জীবন 

আর বাঁশির শব্দে শুনতে পায় 

বেঁচে থাকা। 

.

ঠিকানাহীনকে উৎসর্গ করলাম আমার এই উপস্থিতি 

এই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমি 

আর আমার গল্পে 

              আগুনের যন্ত্রনায় চলন্তিকা। 

এখন প্রশ্ন হলো, কেন?

যে কোনও নামেই হোক, স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষের অতীতের  চারণভূমি 

ভবিষ্যৎ তৈরী করে 

অথচ আমার ঠিকানায় ভবিষ্যৎ একটা পন্থা। 


Wednesday, November 24, 2021

আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায়



 আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 

/// ঋষি 


আলাদিনে চাঁদ আমি 

হ্যা হ্যা আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 

There's a fine line between genius and insanity

আমাকে দেখো বুঝবে ,

হ্যা আমি ঈশ্বর ,আমি ভাবনা ,আমি প্রগতি 

আমি বারোয়ানার সংস্কৃতি দিয়ে বাংলা জলে নেশা করি। 

.

আমি হাংরি আন্দোলন 

আমি আগুনের  কলম অবনীর বন্ধু

আমি মানে মীনাক্ষী,আমি মানে তিতি 

আমি মানে যুদ্ধ ,আমি মানে সংসার 

আমি মানে ধ্বংস ,আমি মানে বন্ধু  

হ্যা আমি 

হ্যা হ্যা  আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 

আমি মানে কবিতা। 

.

 নিরুত্তরের উত্তর 

ভাবনার দাবানল 

হ্যা আমি 

 " মনে মনে বহুদূর চলে গেছি – যেখান থেকে ফিরতে হলে আরো একবার জন্মাতে হয়

জন্মেই হাঁটতে হয়

হাঁটতে-হাঁটতে হাঁটতে-হাঁটতে "

.

হ্যা আমি ভাবতে পারি ,আমার কলমে বিষ 

আমার কলমে প্রেম ,সময় ,

আমি জানি  "তুমি ধর্মে  আছো জিরাফেও আছো "

আমিই সে যে  তোমার  "সোণার মাছি খুন করেছি "

হ্যা হ্যা আমি "অন্ধকার নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকার " 

আমার বাড়ি  "পাড়ের কাঁথা মাটির বাড়ি  "

আমি চাই "প্রভু নষ্ট হয়ে যাই " 

তবু "সুখে আছি "

আমি আছি 

হ্যা আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 

আজ তোমাদের বলতেই হবে আমাকে 

শুভ জন্মদিন।   


.

( আমার প্রিয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনে আমার কবিতার শ্রদ্ধার্ঘ্য )


Sunday, November 21, 2021

তোমার কথা (১)

 


তোমার কথা (১)

.... ঋষি 


তোমার কাছে ফিরে এলাম 

ফিরে আসা দ্বিতীয় ,তৃতীয় ,চতুর্থ পুরুষ আর আমি ইনফিনিটি ,

পুরুষের চাহনি , অনর্গল নস্টালজিক গলি 

আমি ফুটপাথে,

স্মৃতির দেরাজ খুলে পুরোনো সব তুমি 

আমি ভিখিরি চিরকাল। 

.

আমি এক নারীকে দেখেছি আতশকাঁচের জলে 

অলিভ পাতার মতো পুরুষের ভাবনা মন্তাজ ডুবিয়ে  রাখে সে 

আমি বাকরুদ্ধ পুরুষ ও কবি 

চুপ করে বসি মেঘেদের মুখোমুখি ,

আমি তোমার কথা বলি 

তুমি অবিশ্রান্ত বলে যাও তোমার পুরুষ ভাবনাদের। 

.

তুমি চিরকাল  বিচিত্রতায় 

সমস্ত অধিকারের পরে তোমার উপর আমার অমোঘ ভাবনা 

ভাবনার ক্লিভেজ জুড়ে আমার গোপন বিলাসিতা 

তুমি আমার কাছে পাখিদের গান 

তুমি আমার কাছে আগুনের স্পর্ধা 

আর তুমি তো যেন  স্পর্ধার হিসাবে ব্যতিক্রমী আমি 

তোমার কাছে থাকি 

বাঁচি হাসি 

অথচ  

এতটুকু ফাঁকাই যে নেই যে 

তোমার কাছাকাছি। 

Saturday, November 20, 2021

এ একটা বোকামি

 


এ একটা বোকামি 

... ঋষি 


আমি যখন আমার দুঃখগুলো তোমাকে বলতে চেয়েছি 

তুমি চুপ থেকে গেছো ,

যখন খুব গভীরে প্রশ্ন করেছি ভালোবাসিস তো আমায় ?

তুমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থেকেছো 

আমি যখন গভীর হৃদয়ে অন্ধকারে তলিয়ে যেতে চেয়েছি 

তুমি বলেছো পাগল আমি। 

.

যেদিন ফুটপাতে এককাপ চায়ে আমি রৌদ্র খুঁজেছি 

কিংবা যেদিন আদরের মুহূর্তে তোমার বুকে মুখ রেখেছি 

তুমি স্থির থাকো নি 

তবে আবিষ্কারে আমাকে  পাও নি ,

কোনো গভীর কবিতার পাতায় লিখে দিয়েছো 

এ একটা বোকামি। 

.

মানুষগুলো হারাতে হারাতে যখন নিজেকে খুঁজে পায় 

মানুষগুলো একলা থাকতে থাকতে যখন নিজেকে ভয় পায় 

তখন জীবনের পাতায় খুব প্রিয় মুহূর্ত 

তখন সময়ের কাছে গভীর প্রিয় মুখ 

নিজের কাছে প্রশ্নের মতো। 

আমি যখন প্রশ্নের থাবায় মৃত্যুর মুখোমুখি

আমি যখন সময়ের কবিতায় অবিচল তোমার মতো বাঁচি 

তখন তুমি আগুনপাখি 

ছুটে আসো আমার বুকে 

আমার কপালে ,ঠোঁটে আদর করে বলো 

লক্ষীটি আমিও যে বাঁচতে চাই।  


শুধুই

 


শুধুই 

... ঋষি 


সুখ আর দুঃখের মাঝে একটা সাঁকো 

একটাই পারাপার 

মাপকাঠি জীবনের প্রতিপন্নতায় হঠাৎ পিছিয়ে গিয়ে এগোনো 

এই  যে ছন্দ 

            এই  যে গান ,এই  যে সুর 

                         একেই তো বলে বেঁচে থাকা। 

.

পাখি যদি অভিমান করে, জীবন  যদি তীব্র অভিমানে হাওয়ার পথে হারায় 

তবে এই পৃথিবীতে গান থাকবেনা।

হয়তো এই গৃহদশা, বাজারের দরদাম, জলের শিকড়ে 

সব থেকে যাবে ,

হাঁটুতে হৃৎপিণ্ড গুঁজে, কোমরের ভাঁজে ভাঁজে মাথাটাকে গুঁজে 

মানুষ তখন  নিঃস্ব

শুধু তখন মানুষের বাঁচা থাকবে না।  

.

সুখ আর দুঃখের মাঝে একটা সাঁকো 

                সাজিয়ে চলেছি হেঁটে চলেছি  

পিছনে দেখলেই শুধু স্মৃতি জেগে ওঠে, জেগে ওঠে করুনা

               জীবনের প্রতি 

                                 বাঁচার প্রতি। 

ঠিকানা পোস্ট অফিস, জেলা ও দেশের নাম,ফুটপাত, লাইটপোস্ট 

বিপর্যয়ের সময় , মায়াশ্লোক, তারকাঁটা

বোধন আর বিসর্জনের মাঝে তফাৎ 

হঠাৎ  দুলে ওঠা লন্ঠন

বেশ কয়েকবার ধড়ফড়ানি ,তারপর চুপ,

         পাখি নেই ,গান নেই 

                 নৌকো নেই ,আকাশ নেই 

                             শুধুই  .............

সৃষ্টির দহন

 


সৃষ্টির দহন 

... ঋষি 


কবির কলমে তুমি 

এই তুমি শব্দটা কবির অন্তর্দহনে এক শ্মশান 

এক অনুভব 

সুনীল ,শক্তি ,লোরকা ,ভাস্কর সকলে তোমায় লিখলো 

শুধু কি নারী ,শুধু কি প্রেম 

না এক দহন ?

.

প্রতিটা সৃষ্টির মুলে শুয়ে আছে দহন 

ভিনসেন্ট ভ্যানগগ, পিকাসো, গণেশ পেন তোমার যে ছবি আঁকলো 

সেকি শুধুই ছবি ,তুমি নও ?

সবটাই কি  জল রঙ তেল রঙ ইজেল আঁচড়চারকোল,

রামকিঙ্করের পাথরের খাঁজে আটকানো ভাবনা 

আদিম বপনে যে দহন 

সেই তো তুমিই । 

.

তুমুল বৃষ্টি ,সুপর্ণার জন্য অপেক্ষা 

মেঘবালিকা মেঘের দেশে যে স্বপ্নের  ঘোর 

অলকানন্দা কোনো এক নদীর নাম

সবটাতে তুমি আসলে। 

মানুষ বলে ভালোবাসা অথচ সৃষ্টির ভালোবাসা  

সে তো মানুষের স্বপ্নের ঘর 

মানুষ ভাবে জীবন শুধু এক নিয়মের খাতায় বয়ে চলা নদী 

অথচ সৃষ্টি সে যে বহুতে একের খোঁজ 

এক মায়া  

যেন তোমাতেই শূন্য আর তোমাতেই অসীমের ভিড়

অদ্ভুত 

যুগাবতার তুমি শুধুই ভালোবাসা ঠিক কথা নয় 

বরং বলা ভালো ভালোবাসা সৃষ্টির দহন। 

Friday, November 19, 2021

অন্য ভালোবাসার গল্প

 


অন্য ভালোবাসার গল্প 

... ঋষি 


সম্পর্ক শুয়ে থাকে হৃদয়ে ,গল্পে আর শহরে 

সম্পর্ক মাত্রা সাতপাঁকে বাঁধা 

সিঁদুরের গল্প এটা ,ভালোবাসার হয়তো 

কিংবা ঘুরে দাঁড়ানোর। 

সব গল্পে জুড়ে থাকার স্বভাব কিছুটা চোখের জল 

কিছুটা কষ্ট আর অনেকগুলো জীবন। 

.

কাটাকুটি সম্পর্কের অন্য এক নাম

যে মেয়েটা কাল চোখের জলে সময় সাজাতো 

নিজের সেই  ভালোবাসার পুরুষটার জন্য বাঁচতো 

সে হঠাৎ আজ ঘুরে দাঁড়িয়ে কি অবহেলে বলছে 

কি দরকার তোমাকে ?

তুমি ফিরে এলে তোমাকে দেওয়ার মতো জায়গা বা সময়  

না আজ আর নেই আমার কাছে। 

.

কাল যে মেয়েটা পথ চলতে তার পুরুষের হাত ধরতো 

সে আজ একলা ক্যাট ওয়াকে শহরের বুকে হাঁটতে শিখে গেছে 

খবরের পাতায় তার নাম ,তার সুখ্যাতি 

তার পুরোনো প্রেমিক এবং তার স্বামী  তাকে ফোন করে বলেছিল 

ভুল হয়ে গেছে ,ভালোবাসি 

আর মেয়েটা হেসেছিল  আর বলেছিল ভালোবাসা মাই ফুট। 

মেয়েটার মনে তখনও ছিল কান্না 

তখনও সেই অভিমান 

যখন তার স্বামী তাকে দারুন নেশা করে অত্যাচার করছে 

কিংবা যখন তার প্রেমিক তাকে বলছে তোর মধ্যে আর কি অবশিষ্ট 

সব তো ছিবড়া। 

.

শুধুই কারণ 

শুধুই কারণ 

আর ভালোবাসা ,সে তো অভিধানে লেখা অবলুপ্তির বোকামি ,

 সম্পর্ক সেও এক কারণ 

এক স্বার্থ 

মেয়েটা বুঝেছে ভালোবাসা আসলে স্বার্থসিদ্ধির একটা ফিকির মাত্রা

আর সম্পর্ক স্বার্থের জন্য সভ্যতার একটা পোশাক

যাকে নিয়ম করে পড়তে হয় 

না হলে সভ্যতা মানুষকে নগ্ন বলে।   

 

Monday, November 15, 2021

মৃত্যুর দেশের নাগরিক




 মৃত্যুর দেশের নাগরিক 

... ঋষি 


তুমি ঘুমোলেই আশ্চর্য আলোতে ভরে ওঠে পৃথিবী 

অন্ধকার পুড়ে যায় তোমার আদুরে স্পর্শে 

আমি জানি যে গানটা তোমার আলমারির কপাট খুলে ভাসতে থাকে

তার সাথে খাঁচার পাখির খুব একটা মিল নেই ,

একটা অমিল আমার বুকেও বাজে 

পুরোনো ভায়োলিন ,পুরোনো সুর ,পুরোনো মৃত্যু 

আর ফিরে না আসে। 

সমস্ত অন্য দিনের পর 

আমি বুঝতে পারি বড়োই দেরি হয়ে গেছে 

আমি বুঝি ফিরে আসা মানুষগুলো ভাঙা কাঁচের মতো 

বড্ড দেরি হয়ে গেছে তোমার 

আমারও বলা হয় নি ভালোবাসি 

কারণ আমার গুপ্তহত্যায় শুধু সংখ্যার শরিক 

সময় নয়। 

.

প্রতিটি মৃত্যুই এক হ্যালুসিনেশন

হাঁটতে থাকে ,বাঁচতে থাকা  , ভালোবাসি , ভালোবাসে 

প্রতিটা একটা মৃত্যুর নাম ,

ক্রমাগত বয়সের সাথে বাড়তে থাকে মানুষের সংগ্রহে 

জ্যান্তের পাশাপাশি ,মৃত একটা মিউজিয়াম। 

মৃত্যু দায়সারা একটা ভাবনা 

দাদু ,দিদা ,ঠাকুরদা ,বন্ধু রাজদ্বীপ,হাজারো কোটি গাছ 

হাজারো ঝর্ণা ,হাজারো ফসিল 

সমস্ত রাতের মৃত্যুর শরিক 

কাটতে থাকা দিন ,বাড়তে থাকা বয়স তার প্রমান ,

আমরা মৃত্যুর দেশের নাগরিক 

নিজের অজান্তেই বাঁচার অভিনয়ে ব্যস্ত। 

ছায়াছবি

 ছায়াছবি 

... ঋষি 


খুব রাত করে জেগে বসি একলা ঠিকানায় 

চোখের অন্ধকারে ভেসে ওঠে অসংখ্য ভাবনার ঢেউ ,

ঢেউয়ের উপর ভাসতে থাকে মৃতদেহ অতীতের 

হঠাৎ কলিংবেল চমকে উঠি মায়ের মুখ ,দিদার মুখ ,দাদু 

একের পর এক চেনা মুহূর্ত 

তারপর হঠাৎ স্ট্যাচু খুশির মুহূর্ত ,আঙুলের স্পর্শে ভালো লাগা 

চেনা আদলে অথচ ভীষণ অচেনা আমি। 

.

প্রথম কিশোরী তুমি, স্কার্ট ফ্রক

সাইকেলের প্যাডেল ,শীতের জানলা বেয়ে চনমনে শিরদাঁড়া .

সাদা কালো স্মৃতি ফুঁড়ে হঠাৎই সামনে আসে  শ খানেক ভিড় করা মুখ

সবার শেষে খিলখিলে হাসি 

চেনা মুখ ,অথচ দেখিনি কোনোদিন।

কত মুখ আবছা,কত নাম মনে নেই,অথচ কি করতো,

কিভাবে তাকাতো হেসে,কি টিফিন আনতো

চেনা অলিগলিতে অচেনা পথিক আমি 

স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে। 

.

হঠাৎ রাতের চাঁদের নিচে স্পষ্ট তোমার মুখ 

হঠাৎ রাতের ঠোঁটে ভেসে ওঠে তোমার মুখের এলাচের গন্ধ 

তুমি উঠে হেঁটে যাও,আমি বসে চুপচাপ

অতীত কি পুরোনো গিটার 

যার অদ্ভুত সুর ,পুরোনো প্রিয় কফিকাপে আদরের ঠোঁট। 

তোমার আঙ্গুল জুড়ে একদল শীতল হাওয়া 

জানলার পর্দা কেঁপে ওঠে ,

ভিতরে চিৎকার করা অশরীর পাশে আমি অচেনা 

তুমি এত চেনা 

ওলটানো স্মৃতিঘরে জমে ওঠা ভিজে খাম

হাজারো নাম 

অথচ অতীতজুড়ে মাথার নিউরনে বসে 

তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো। 


কবিতার দিনবদল

কবিতার দিনবদল 

..... ঋষি 


তিরিশের এক কবির দিকে তাকিয়ে আছি 

যিনি তার প্রেমিকাকে পেটের অসুখে মরতে দেখেছেন 

যিনি তার বৃদ্ধমাকে সংসারের চাপে একলা দেখেছেন 

তারপরও তিনি লিখছেন 

তার কাছে প্রেম মানে দেশ 

আর সংসার হলো আকাশ। 

.

চল্লিশের কবি মাঝরাতে ঘর ভাঙলেন 

জেলের গভীর কোনো পরিখায় প্রাণ হাতে করে বললেন স্বাধীনতা 

বন্দুকের আড়ালে ,প্রাণের বদলে দেশ চাইলেন 

চাইলেন দেশের মানুষের মাথা উঁচু করে বাঁচার অধিকার 

আর অধিকারের বদলে তিনি পেলেন 

শাসকের বুলেট আর রক্তের ইতিহাস। 

.

পঞ্চাশ ষাট আর সত্তরের কবির মনে বসন্ত 

বেলেল্লাপনা,তলায়  হাইড্রেন,চাঁদ ভাঙা প্রেমিকার ঠোঁট 

খিদে ,বিষ ,রেলগাড়ি তারপর সবার শেষে এলো চাকা 

গানের ভিতর আগুনের জিভ। 

আশি নব্বই শ বলতে বলতে ছন্দ ,বন্ধ ,নারী 

কবিতার ঘর উলঙ্গতার সফর 

ইরাক ,ইরান ,তালিবান ,মকবুল ,ফিতর ,জয় ,শ্রীজাত

শুরু আবার এক যুদ্ধ 

আরও মর্ডান পরাধীনতা।

.

আমি সব যুগ  দেখলাম,অদ্ভুত ভাবে ফিরে এলাম মায়ের গর্ভে 

ফলিডল খেয়ে মরে গেলো গাছে পাখি 

আমি মায়ের স্তনে খুঁজে পেলাম বিষ 

দিন বদলাচ্ছে 

চুল্লির স্বপ্ন জুড়ে এখন শুধু কবিতার পাতায় কবিদের মৃতদেহ।   

 


কবি ঈশ্বর

 কবি ঈশ্বর 

... ঋষি 


নষ্ট রূপকথারা চাপা পরে আছে নিয়ন্ত্রণে 

কবিরা সামনে খোলা ডাইরিতে খোপ করে রাখা ভাবনা 

মানুষ ,প্রেম  আর সময় 

উপরোক্ত শব্দের ভাবনাগুলো এদিক ওদিক করে যা থাকে বাকি 

তাতেই কবিতা। 

.

এখন খুব শীত,

তাই হয়তো আমাদের শরীরে প্রাচীন জবরদখল 

বৃদ্ধ রহমান চাচার  প্রিয় ঘোড়াটির ছাইছাই রঙা শরীরে পশমের কম্বল‌

শুধুমাত্র চোখে দেখানো সম্বল

চোখে বা স্পর্শে যা অনুভব করা যায় তাই বাস্তব 

আর তারপরটুকু যন্ত্রনা। 

.

আমি বোদলেয়ার, গোদার্ড, অ্যানা ফ্রাঙ্ক আর আলবেয়ার কাম্যুর সামনে বসি 

আমার যৌবনের,আমার বেঁচে থাকার  একশো আটটা ভুল ,

আমি ভুলে যেতে চাই 

ভুলে যেতে চাই আমার প্রিয় নারী আর চীনের দেওয়াল ,

অথচ কবিতার শব্দরা চিরকাল রহস্যময়ী 

আর কবিতার নারী চিরকাল কেন যে এত সুন্দরী ? 

হয়তো খেয়াল করলে আমার প্রিয় পাঠকেরা বুঝবেন

আমার প্রেমিকারা প্রতিদিন আমার উন্মুক্ত উদাসীন প্রতারক চেহারাটা দেখে 

তন্ন তন্ন করে খুঁজে নিতে চায় আমার স্বেচ্ছা নির্বাসনের ঠিকানা,

তারা হয়তো ভুল বোঝেন 

কবি প্রেমিক 

রডোডেনড্রণ এবং জিনিয়া ফুল, আর লাল রঙের কবির লোভ 

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানবেন 

কবি ঈশ্বর 

শুধু সময়ের লাল রক্তে কবির আদিম কলম। 



মন বান্ধিবি কেমনে

 


মন বান্ধিবি কেমনে

.... ঋষি 


মাথার ভিতর ব্যস্ত প্রশ চিন্হ 

অজস্র উত্তর 

সেই রাঙা শাড়ি পড়া মেয়েটা ,সেই স্কুল ফেরত ছেলেটা 

সেই বৃষ্টিতে ভেজা দিন ,সেই মায়ের বুকে লেপের ওম 

সেই রাতের লণ্ঠন ,সেই একলা হাইওয়ে 

সেই চায়ের দোকানের আড্ডা ,সেই সরাইখানার ভাবনা। 

.

সব ওলোটপালোট 

হাজারো দর্শন ,হাজারো দৃষ্টি ,হাজারো স্বপ্ন ,হাজারো কল্পনা 

একটি মেষপালক, একটি কুটিল ব্যাধ, একটি সরীসৃপ, একটি হরিণী-ঠোঁট, 

একটি দুষ্টু মাছরাঙা ,চোরপুলিশ খেলা ,অকারণে অভিমান 

দিনের শেষে রাত্রি 

তারপর সেই আমি এক দাঁড়িয়ে বিবর্ণ শহরে। 

.

প্রশ্ন ,উত্তর ,দংশন ,প্রহসন 

মাথার ভিতর অন্ধকার রাত 

সারা সিলিংজুড়ে ছুঁটতে থাকে ভবিষ্যৎ অতীতের জামা পরে 

পুরোনো ফ্যানের একঘেয়ে ঘ্যান ঘ্যান 

সুইচ অফ পাওয়াগুলো পুরোনো সেই খেলার বাক্সে 

হারিয়ে গেছে সময়ে। 

আমি নশ্বর থেকে ঈশ্বর ,কিংবা ঈশ্বর থেকে ভূত 

একটা বাউল একতারা বাজিয়ে হঠাৎ গেয়ে ওঠে 

" আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি

মন বান্ধিবি কেমনে?

আমার চোখ বান্ধিবি, মুখ বান্ধিবি

পরান বান্ধিবি কেমনে? " "

সমস্ত হিসাবের শেষে



 সমস্ত হিসাবের শেষে

... ঋষি 


একদিন সমুদ্রের জলে দাঁড়িয়েছি 

যতবার পায়ের পাতা ছুঁয়েছে  জল ,ততবার তুমি এসোছো ,

একদিন একটা শূন্য কাগজ উড়িয়ে দিয়েছি এই শহরের মাথায় 

দিনের শেষে সাদা পাতায় ভরে উঠেছে তোমার নাম 

একদিন সকাল সন্ধ্যে চেষ্টা করেছি তোমায় মনে না পড়ে 

বৃথা চেষ্টা ,প্রতিবারেই তুমি এসে কথা বলেছো আমার কানে কানে। 

.

এই যে একদিন,একদিন করে এতগুলো দিন 

হিসেবে করলে হাজারো মুহূর্ত ,হাজারো সেকেন্ড ,হাজারো ঘড়ির কাঁটা 

আমি শুধু তোমাকে খুঁজেছি 

খুঁজেছি নিঃস্বতা ,

আসলে আমার জমারখাতায় জমে আছে ঋণ 

হিসেবে নিকেশ ব্যালেন্সশিট পরে তুমি ছাড়া কিছুই ছিল না কোনোদিন। 

.

যতবার আমি লিখি 

প্রতিবারেই তুমি বন্যা হরিণীর মতো ছুটতে থাকো আমার সারা হৃদয়ে ,

যতবারই কলম ধরি 

আমার বুকের ভিতর প্রতিটি রক্তকণা যেন তুমি হয়ে যাও। 

আসলে কি জানো তোমাকে নিয়ে লিখতে চাওয়াটা 

একটা বোকামি 

একদিন ,একদিন এই যে কাটতে থাকা দিন 

সেখানে তোমাকে দূরে রাখাটা আমার স্পর্ধা 

আমি লিখি কি না লিখি 

তুমি  থাকো প্রতিমুহূর্তে আমার সাথে 

তাই তো 

শূন্য কাগজ আর আমার কবিতার পাতার কোনো তফাৎ পাই না 

সবটাই যেখানে তুমিময় 

সেখানে সারা পৃথিবীটা আমার কাছে ২২ শে শ্রাবন। 

Friday, November 12, 2021

কবি ও ঈশ্বর

 


কবি ও ঈশ্বর 

... ঋষি 


সমস্ত গুপ্তহত্যা সেরে আমি তখন ঈশ্বর 


গভীর রাত তখন 


খোলা আকাশের নিচে আমি যখন এই  বিপ্লবের তারাদের খুঁজি  ,


এই পৃথিবীর অন্ধকার আমার দিকে তাকিয়ে থাকে 


ওরা জানে আমি কারো নই 


এমনকি যার জন্য আমার এই রাতজাগা চোখ সেও বোঝে না 


ভালোবাসা অন্ধকার পাখি। 


.


সমস্ত ইচ্ছা বিপ্লবদের আমি মাটিতে রোপন করি 


আগামী কোনো দিন এক গাছের জন্ম পাবো বলে ,


আসলে ঈশ্বর হয়ে বুঝেছি 


মানুষ শব্দটার কষ্ট ,


আর কষ্টের বিছানায় আমার শব্দরা অদ্ভুত এক আলো 


যারা বলে দেয় তুমি কবি। 


.


আমি জানি অন্ধকার গায়ে মেখে, ছায়ারা অদৃশ্য 


নাটকেরা দৃশ্য ছেড়ে চলে যায় কুশীলব 


ঈশ্বর কখনো  দর্শকের তোয়াক্কা করে না


আমার হত্যারা  আমার আগামীর বার্দ্ধক্যকে একলা করে। 


আমার আস্তিন থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসে জোনাকিরা 


যারা বিপ্লবের মানে খুঁজতে 


খুঁজে পায় ঈশ্বর ,


তারা বোঝে না ঈশ্বর নামে একজন 


আজ বহুযুগ আলোর খোঁজে কবি হয়ে বাঁচছে। 


 

কেন

 


কেন এত কথা বলো সারাক্ষণ? 

কেন এত মিশে থাকো সারাক্ষন 

এত গাঢ় বিশ্লেষণ ,

                এত বোধ ,

                               এত সংশয়  

দাও অন্ধকার,পরম স্তব্ধতা

দেও এক মানুষ জন্ম আলোর যোনিতে। 


... ঋষি 


রেসিপি

 


রেসিপি 

... ঋষি 


রাতের  ঘুমের আদরে বন্ধ করেছি নিজেকে 

আমি তোমার হাতের রান্নার স্বাদ পাচ্ছি আমার বুকের কাছে 

রান্নাঘরে হাতা খুন্তি কড়াই নিয়ে গড়ে তুলছি সংসার 

সন্তানের চোখের ভিতরে আত্মারা  

টিনটিন ক্যাপ্টেন স্পার্কের মতো এডভেঞ্চারে মেতে উঠছে 

আসলে আমি একটা রেসিপি খুঁজছি। 

.

আমি  আকাশের গা থেকে নেমে তোমার ঠোঁটের স্বাদে 

সমস্ত কথোপকথনেরা পুরোনো এসময় , চোখে চোখে মেঘের গল্প 

আঙুল ছুঁয়ে গড়িয়ে নামছে স্নেহ ,

পৃথিবীর অসংখ্য অজস্র অগনিত মুহূর্তের থেকে তোমাকে আলাদা করে 

ঠোঁটের গন্ধ, সদ্যস্নাত চুলের গন্ধ ,ভাবনার বাতাস 

আমার কবিতায়  পরিণত তুমি।

.

ভাবনা হয় 

কোনো একদিন লিখতে চাইলেও পারবো না আমি 

আমার অন্ধ শব্দরা সেদিনও তোমায় খুঁজবে আজকের মতো 

সেদিন কি তুমি থাকবে একই রকম  ?

তাই ভাবি 

তোমার রান্নাঘর তোমার স্নানের ঘর তোমার আঙুল ঠোঁট 

সবকিছু  চিবিয়ে তবেই আমি মরবো 

আমার মৃতদেহের উপর ফুটে উঠবে  আলো 

সেই আলোর রেসিপিতে তৈরী হবে সুস্বাদু এক ভাবনা 

তুমিও অমর হবে আমার কবিতায় 

আমার মৃত্যুর পরে। 

Thursday, November 11, 2021

বেড়াল যখন ডাকছে

 



বেড়াল যখন ডাকছে 

... ঋষি 


নীতা বৌদি বলেছিল 

ওইপাশে ঝোপের পাশে একটা গর্ত 

তারপর শান্তি ,

আমি মৃণালিনীকে তাই শেষবার টেনে নিয়ে গেছিলাম ঝোঁপের ভিতর 

তারপর বুঝেছিলাম নীতাবৌদি আর তার মেয়ের মধ্যে তফাৎ 

শুধু শাড়ি আর ফ্রকের। 

.

মিথ্যা বলিনি 

বুকের দেওয়ালে নারী শরীরে ফ্রোয়েডে ভালো লাগে 

তারপর কেমন একটা মৃত মাছ কড়ার তেলে ,

বিচ্ছিরি স্বাদ ,

মিথ্যা বলছিল নীতা বৌদি 

সব আগুনে বুক পোড়ে। 

.

আমি নাভির নিচে কবিতায় নারী খুঁজতে গিয়ে 

নাড়ি পাই নি 

আমি শরীরে লেখা কবিতায় যৌবনের গান শুনেছি 

কিন্তু সুর আর তাল মেলে নি ,

তাই শরীর শব্দটা    বেড়ালের মুখে শুনতে আমার দারুন লাগে 

কিন্তু তাতে  এক অদ্ভুত জ্বালা ,

জ্বালা শব্দটা ভেঙে দেখেছি 

বুক পুড়ে গেছে 

চাইনি শরীর ,শুধু মন ,শুধু আমার,শুধু মিশে থাকা ,

কোনো ফ্রোয়েডের সূত্র নয় 

অনেকটা ভালো থাকা। 


সিলেবাসে নেই

 



সিলেবাসে নেই 

... ঋষি 


বাস্পে ভেজা একটা মধ্যবয়স্ক ভাবনা 

শীতে ভেজে আসন্ন ভাবনার বইয়ের পাতা 

পাঠ্যের বাইরে জীবন 

সে কখনো ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে আমায় 

কখনো বলে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। 

.

ব্লটিং নেশায় শুয়ে থাকা খালি মদের বোতল 

ইচ্ছাগুলো সাদা রঙের সত্যি লিখতে চায় ,

সাদা রং কেন ?প্রশ্ন করে চলন্তিকা 

আমি উত্তরের দিকে তাকিয়ে দিন ফুরিয়ে যায় 

ভাবের পাতায় 

শুধু ফুলস্টপ। 

.

শহরের রেলিং বেয়ে আমি উপরের থেকে উপরে 

নামতে চাই না পা বাড়িয়ে,

আমি মরে যেতে দেখেছি আমার বন্ধুকে 

আমার পড়শীর মুখে শুনেছি পরকীয়া 

তাই উত্তর খুঁজি নি।

দাঁড়িয়ে দেখেছি এই শহরে রাত্রি নামে অন্ধকার গায়ে মেখে 

আর আমি সাক্ষী 

মিথ্যে লাইটপোস্ট চাপা দেওয়া সত্যিরাও বাঁচে 

শুধু সকালের অপেক্ষায়। 

উড়ন্ত খৈ

 


উড়ন্ত খৈ 

... ঋষি 


উড়ন্ত  খৈ 

পড়ন্ত  বিকেল 

মৃত্যুর সাথে দেখা ,হে ঈশ্বর কবিতা শব্দ নয় 

অনেকটা জীবনের মতো দেখতে,

শুনে  রাখো হে সভ্যতা 

এখানে দুঃখ বাঁচে আর আনন্দ মানুষের শব্দের দুঃখ। 

.

শাখা সিঁদুরে , নাগপাশ

        ....বর্ষবরণ , মৃত্যুর রঙে আরো গাড় রক্তের ভূমিকায় 

 সময়ের পেন্ডুলামের মৃত্যুর গল্প । 

সে তুমি তাকে কাহিনী বলো ,বলো উপন্যাস 

শেষ তো লিখতে হবেই 

সে পাহাড় হোক ,সমভূমি কিংবা মরুভূমি। 

.

কার জন্য এই বিদ্বেষ ? 

বিকেল টুকে উঁকি মারা আমার সভ্যতায় ধুলোর কফন

কার জন্য এত দুঃখ ?

মানুষ শুধু পোশাকি নামের একটা জীবন মাত্র 

যার তৃপ্তিতে শয়তানের  বাস 

আর মৃত্যুতে ঈশ্বরের। 

কাকে তুমি ভালোবাসো ? শয়তান না ঈশ্বর 

কার জন্য বাঁচো ?

হাতের আঙ্গুল গড়িয়ে ফুরিয়ে যাওয়া জীবন ,

কি খুঁজছো 

পবিত্রতা ,ধর্ম ,মানসিকতা 

শুনে রাখো হে জন্ম 

মৃত্যুর থেকে বড় কবিতা আর হতে পারে না 

আর জীবনের থেকে  বড় উপন্যাস। 

নির্ভরশীলতা



 নির্ভরশীলতা 

... ঋষি 


বাহ্ রে কলকাতা 


একটা সাক্ষীর খবর ছাপছে শহর ,


শহরের দূষণমাত্রা মাপতে সময়ের ধুলোবালির সাথে শরীর বড় দরকারি 


আমি জানি আমার নগ্নতা মিশ্রিত উচ্চারণগুলো এই শহরের কলিজায় ধোঁয়ার বুক 


অথচ আমার বুকে নিকোটিন সভ্যতা ঘুমিয়ে 


সেখানে নারী প্রেমিকার শরীর নয়  শব্দের চাতুরী। 


.


আমি কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তোমাকে স্মৃতির লাইনে 


কিছু পুরোনো ভক্তদের মুখে এখন ঈশ্বর অপবিত্র 


ভালোবাসা সঙ্গম 


জীবন অক্ষাংশ 


কোলকাতা  একটা শহর যা ব্যস্ততার অন্য নাম 


অথচ আমার মুখে ঈশ্বর ছাড়া ছিল না কিছু ,কোনোদিন। 


.


সমস্ত দুর্বলতা মাথা পেতে নেবো 


চেটে নেবো এই শহরে ধুলোবালি আর তোমার ৩৬ এর স্তন ,


সমস্ত মিথ্যেগুলো দরকারি কবিতায় সত্যির অংশীদার 


আমি ছুঁয়ে দেবো তোমায় 


পরম প্রিয় মৃত্যু। 


জানি এই শহরে শতাব্দী ঘুমিয়ে খুব সাধারণ আছিলায় 


জানি এই শহরে আমার প্রেম শুধু মৃত্যুর ভূমিকায় 


কিন্তু আমি ঈশ্বরের বিছানায় শুয়ে 


সঙ্গমের বদলে মৃত্যু খুঁজি 


লিখে রাখি আগামী 


লিখে রাখি  তোমার রুমালে চিরকাল আমার রক্ত।  

ভীতু দেশবাসী

 ভীতু দেশবাসী 

... ঋষি 


সবকিছু বলো 

ভাষা বলো ,খারাপ বলো ,রাজনীতি বলো 

কিন্তু প্রতিবাদ বোলো  না,

 আমি যা পারি না তাতে দুঃখ নেই 

দুঃখ যেতে পারি

সেটা করা পারমিশন নেই এই সময়। 

.

মানুষগুলো আজকাল সময় হজম করে 

মোদী হজম করে 

মিথ্যা  হজম করে 

মমতা হজম করে

অথচ মানুষগুলোর সত্যি হজম করতে লজ্জা করে না 

প্রতিবাদ করতে লজ্জা করে 

অথচ লজ্জার শাড়ি খুলে রাস্তায় দাঁড়াতে লজ্জা করে না। 

.

কাউকে নালিশ করছি না 

শুধু সুযোগ খুঁজছি সময়ের থেকে দূরে পালাবার 

এই জুতো ,জামা সব ছেড়ে পালাবার হিসেব খুঁজছি,

এই যে ছেলে আমাকে বাবা বলে 

এই যে আমার গলার ভিতর জমতে থাকা কষ্টের রক্ত ,পুঁজ 

না কাউকে বলতে চাই না 

শুধু পালতে চাই 

কে আটকাবে আমাকে ?

সময় ,৪৭ ,৭৬ ,৭৮ না কি এই রাষ্ট্র। 

আসলে ভীতু দেশের নাগরীক আমরা 

আমাদের ভয় 

আমাদের লজ্জা 

আমাদের বাঁচা শুধু আমাদের স্বার্থে 

দেশ সেখানে একটা শব্দ মাত্র 

আর আমরা ভীতু দেশবাসী। 

 



 

সংঘাত

 


সংঘাত 

,,,, ঋষি 


সময় পেরিয়ে কাঁটাতার 

তারপর চাঁদপুরের ভুতুড়ে মাঠ 

তারপর নদীর পাশে একটা গ্রাম ছিল একসময়  ,

নবীন মুদির দোকান ছিল আর ছিল কিছু গ্রামের মানুষ 

এখন সেখানে একটা হাল ফেশানের মল 

আর নদীর জল এখন কালো। 

.

কি ফিরে এলো 

প্রশ্ন  করবেন না ?

সভ্যতা ,প্রগতি ,এগিয়ে যাচ্ছি আমরা ,

আসলে একটা অজগর গিলে খাচ্ছে সভ্যতার মাথা 

দিন ফুরোচ্ছে ,রাত নামছে 

আর তারপাশে নবীন মুদির অন্ধকার দোকান। 

.

আলো আছে। আলো পাশে 

কিন্তু আলো যে কার ? তোমার ,আমার ,সবার 

প্রশ্ন ছিল ,প্রশ্ন আছে 

সভ্যতা মানে সদ্য দাঁত গজানো শিশুর গলায় স্ল্যাং ইংরেজি 

সভ্যতা বুকে হাত দিয়ে জাতীয়সংগীত বটে

কিন্তু সভায় নাগরিকের ছাতার তলায় ফুরিয়ে চলা আমাদের কথা। 

 সময় পেরিয়ে কাঁটাতার 

তারপর বাংলার মাটি ,বাংলার জল ,বাংলার বায়ু ,বাংলার ফল 

কেমন যেন মিথ মনে হয় ,

এগিয়ে যাওয়া সভ্যতার হাত ধরে আমরা বোধহয় শেষ করছি অন্য সভ্যতা 

যেখানে সবুজ ছিল ,মাটি ছিল

খারাপ ছিল ,ভলোও ছিল

আজও আছে 

তবে বোধ হয় কেমন যেন বড্ড সাজানো। 

Wednesday, November 10, 2021

লোহার শহর

লোহার শহর 
.. ঋষি 
অনেকটা ছুটি পাওয়া গেলো
কিন্তু মুশকিল হলে ছুটির শহরে আমি স্পর্শিল বাসিন্দা, 
নিত্য ছুটোছুটি
তোর আদর রঙের শহর, 
আর আমি  বোবা কামার যে লোহা পিটাচ্ছি দিনরাত 
লোহার শহর গড়বো বলে। 
.
ইতিহাস সাক্ষী ভাস্কর্য  চোখ টানা বিছানা 
কালো রঙের কবিতায় প্রতিবাদ দীর্ঘজিবী হোক, 
এই কবিতা কখনো পৌঁছবে তোর কাছে 
ঈশ্বর জানে বুকের ভিতর মরুশহরে 
জল জীবন 
বেঁচে থাকা জীবন। 
.
তিন মিনিট তেত্রিশ সেকেন্ড 
তারপর ছুটি আর হাইওয়ে 
এক কাপ বড় ভাঁড় চা, পায়ের কাছে লুটিয়ে থাকা  কুকুর
কিছুটা ক্লান্তি 
এ যেন ছুটির ঘন্টা বেজে গেলো। 
একটা কবিতা এমনি কোন চৌরাস্তার মোড়ে ঈশ্বর খোঁজে
লাইটপোস্টের চঞ্চল আলো কিছুতেই বোঝে না
অন্ধকার সত্যি 
আর ঈশ্বর ছুটির কবিতায় সময় খুঁজতে থাকে 
লোহার শহরে যদি হৃদয় কথা বলে।



পাগলাটে



 পাগলাটে 

... ঋষি 

.


বানাও সময় 


তোমার রঙিন রুমালের আড়ালে


তোমার শাড়ির আঁচলে ,তোমার চোখের কাজলে 


আঙুলের ফাঁকে, থুতনির কার্নিশে, কানের লতায়,তোমার কথায় 


অদ্ভুত প্রশান্তি 


চোখবন্ধ করা ভিড়ে এই শহর শান্ত ভীষণ। 


.


নামাও, ছুঁ মন্তরে


ঝমঝম করে অনবরত বৃষ্টি  বৃষ্টি ,মেঘের আদর  ,মেঘের আঁচল 


ডেনিম জিন্স ,লেভিসের বিলাসিতা 


ভিখিরি আমি 


অথচ তুমি জাদুকরী ,


শহরের পাথরের ভিতে তোমার চোখ এঁকে দেয় ভালো থাকা 


অভাবের কিলবিল মুহূর্তরা ,সময়ের এগ্রিমেন্ট


গোপনে পচে চলা দৈনন্দিন জীবন হঠাৎ ভালো থাকা। 


.


আজ সারাদিন গোপনে কেটবে  উৎসব 


একটানা ডেকেছে মাথার প্রতিটা কনায় আনন্দের ঘোর ,


প্রথম বৃষ্টির  আগমনী সুর 


উৎসব এখানে ,

তবুও মন কেমন ,কেমন ঝিরি ঝিরি সুর 


এই কবিতায়  বৃষ্টিফোঁটার ঝরে পড়ার  আর্তনাদ নেই 


নেই ব্যাথার বন্দিশে ঘুম ভাঙা বিরক্তিকর সকাল। 


হঠাৎ যেন বৃষ্টি  ভেজা নোনতা হাওয়ায় তুমি ছুঁয়ে যাওয়া 


হঠাৎ যেন অন্ধকারে আলোর সুর 


হঠাৎ কেন ভালো আছি আমি ?


বুঝতে পারি না 


শুধু বুঝি আমার ভালো থাকাগুলো


 ........... পাগলাটে পাওয়া। 












  




 

বাঁচা

 বাঁচা 

... ঋষি 

তোমাকে না বলাগুলো আমার গভীরে বলা 

তোমাকে না পাওয়াগুলো আমার গভীরে পাওয়া 

অভিমান শব্দের ভীত জেরুজালেমের মতো গভীর 

কষ্ট শব্দের ভীত মাটির মতো সরল। 

.

জীবনের  অজস্র নাকে নিয়ে তোমার কাছে যাওয়া 

জীবনের অজস্র নাকে নিয়ে তোমার সাথে বাঁচা 

জীবন শব্দের বাহান্ন এপিসোডের শেষে 

কোনো এক মুহূর্তে আমার বাঁচাগুলো হঠাৎ সমস্ত নিষেধ ফুঁড়ে 

 ব্যস্ত সময়ের হিসেবে ছুঁয়ে 

ভালোবাসি পুড়ে সিক্ত এক অবশিষ্ট বৃদ্ধের ভূমিকায়। 

.

তোমাকে না বলাগুলো আমার গভীরে বলা 

তোমাকে না পাওয়াগুলো আমার গভীরে পাওয়া 

তবু এক অবুঝ বিকেল 

বুকের ভিতর বৃষ্টি জমাট  

অজস্র সব দাঁড়ি কমা  ,অজস্র সব ভুল উচ্চারণ 

তোমায় ঘিরে একলা শহর 

মুগ্ধতা আর উপাসনা। 

.

তবুও এই আঙ্গুল ছুঁয়ে তুমি আসো 

তবুও এই চোয়াল  বেয়ে একলা তুমি ভাসো 

যখন দূরে, উঠোন খুঁড়ে আমার অতীত বর্তমানে

তোমার জন্য উধাও হাওয়া

তোমার জন্য উধাও শহর 

তোমার জন্য এই কলকাতা 

আমার কবিতা বাঁচার বহর। 


Monday, November 8, 2021

আধুনিকতা



আধুনিকতা
.. ঋষি 
কিছু ব্যাস্ততা একলা গোল্ডফ্লেকের ধোঁয়াতে সম্পর্ক গড়ে
কিছু স্তব্ধতা একলা শহরের রাস্তায় সখ্যতা গড়ে, 
কষ্ট হচ্ছে 
এইটুকু বলতেও আজকাল কেন যে তোকে লাগে, 
সময়ের কবিতায় মরা ফুটপাত বলে যায় 
এই শহর ভালো নেই। 
.
নির্ভরশীল একটা চওড়া বুক 
মুখের কার্বনে মানুষগুলো নিজের নিজের নাটকে ব্যস্ত 
আমি, তুই শুধু আংশিক ভগ্নাংশ 
যেখানে মুহুর্তরা মেঘে ঢাকা তারা
আসলে ব্ল্যাকহোল 
ক্রমশ আবছা হতে থাকে বেঁচে থাকার মায়া। 
.
বিস্তির্ন একটা সমাজ, অজস্র নিয়ম বুকে ছুরিকাঁচি
প্রতিদিন কারো না কারো পোস্টমাটম রিপোর্টে কষ্টের উল্লেখ থাকে 
তবে অনবদ্য ব্ল্যাকহোল মানুষকে টানে 
মানুষকে মিথ্যে বলে............. তুমি বেঁচে। 
বেঁচে থাকার স্বার্থ  
নিয়মমাফিক ছক কষে রাশিফল 
নিয়মমাফিক সাজিয়েগুছিয়ে কিছু মিথ্যেকে সত্যি করি 
স 
ম্প
র্ক,
হিসেবের ক্লোরোফর্মে রাখা তোমাকে হাস
কষ্ট হচ্ছে বলা যাবে না এই আধুনিকতায় 


তুমি চলন্তিকা

 


তুমি চলন্তিকা 

... ঋষি 


সঞ্জয়কে আমি চিনতে চাইনি 

জানতে চাইনি তোমার ছেঁড়া  সুতোর গাঁট 

শুধু বাঁচতে চেয়েছি 

হাসতে চেয়েছি 

এক বুক কবিতা নিয়ে লিখে ফেলতে চেয়েছি শহর 

শুধু দারিদ্রতায় জীবন কাটে না যে। 

.

তুমি বলবে কোন সঞ্জয় ?

আমি বলবো যার পারদর্শিতায় তুমি দ্রৌপদী, 

আমি ভিন্ন গ্রহের অর্জুন 

ভাগের দুনিয়ায় তুমি দাঁড়িয়ে ঘড়ির কাঁটা 

আমি কুরুক্ষেত্রের অর্জুন 

শুধু কলমে পরিদর্শী আর সম্পর্কগুলো কৌরব। 

.

আগুন খুঁজতে চেয়েছি 

তোমার প্রথম চুমু ,গঙ্গার গায়ে ঝুঁকে থাকা সূর্য 

জানি মিথ্যা নয় ,

মিথ্যে নয় তোমার থমকানো সকালে হঠাৎ পরিচয়বদল 

হঠাৎ পুরুষ 

প্রথম 

দ্বিতীয় 

তৃতীয় 

শুধু ভেলকি ,শুধু বুকের স্পর্শে ছুঁয়ে থাকা কষ্টের দাগ। 

আমি জানি আমি প্রথম হতে পারি নি 

তবুও আমি অর্জুন 

আমার কলমের নিবে 

তুমি দ্রৌপদী নও ,তুমি নারী নও ,তুমি চলন্তিকা। 


Saturday, November 6, 2021

ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা

 


“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,

যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা...."

তারপর সম্পর্ক ,

সম্পর্ক শব্দটা কাঁটা ছেঁড়া করে বারংবার আমি অবাক হয় 

কেমন যেন স্বার্থপর ,স্বার্থপর মাছের গন্ধ 

আর মানুষগুলো সব বেড়াল। 

.

দুঃখ এটা নয় আমার কোন বোন নেই 

দুঃখ এটা সম্পর্কের  একটা পুরো শহর জুড়ে যুগসই একটা কারণ 

আর নিয়ম মানুষের বাঁচাগুলো স্বার্থনির্ভর ,

সাবেকি ঘড়ির কাঁটা ,বদলানো ক্যালেন্ডারের পাতা নিয়মমাফিক 

আপনি এসে দাঁড়ান ভাইফোঁটা কিংবা অন্য উৎসবে 

কিন্তু বছরের বাকিসময়টা ?

.

আমি মানুষের কথা লিখি 

লিখতে লিখতে আমি বুঝেছি ওপাশের খগেন এপাশের গ্রামের  মৃনালের কাছে ছোটবেলা থেকে ভাইফোঁটা নেয় 

তারপর মৃনালের বিয়ে হয়ে যায়

আর ভাইফোঁটা ফুরিয়ে যায় ,

বুঝতে বুঝতে আমি লিখছি চরণদাস তার মা মরা বোনকে অনেক কষ্ট করে শহরে বিয়ে দেয় 

আর শহরে বিয়ে করা বোন কোন একদিন গ্রামে এসে বলে 

তোদের মতো ছোটোলোক ইতরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। 

সেদিন খবরের পাতায় পড়ি ভালো চাকরি হবে বলে 

কোনো এক ভাই তার বোনকে পাঠিয়ে দেয় রাত্রিবেলা স্থানীয় বিধায়কের কাছে 

তারপর সকালে সেই ভাই চরিত্রহীন বলে বোনকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। 

.

এমন তো কতকিছু ঘটে ,এমন অনেক কিছু রটে 

তবুও সম্পর্ক বদলায় না 

তবুও মানুষের সম্পর্কের বিশ্বাস অটুট ,

আমি ঈশ্বরবিহীন কবি অন্ধকার পৃথিবীতে আলো খুঁজি 

খুঁজি বাঁচা 

আর বিশ্বাস করি ভাই আর বোন এই সম্পর্কটা ,ঈশ্বরের বন্ধন,

আর “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,

যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা...."

এ হলো বিশ্বাসের আশ্বাস। 


Thursday, November 4, 2021

উৎসব


 উৎসব 

... ঋষি 

আবার উৎসব লিখতে গিয়ে মানুষ লিখে ফেলবো 

আবার তোমায় লিখতে গিয়ে কষ্ট লিখে ফেলবো 

লেখার কথা যখন এলোই 

তখন আমি লিখি প্রতিটা অন্ধকার দিনের পরে আলো থাকে 

আর তুমি লেখো শরণ্যের জীবন 

ইন্তেকাল জরুরী। 

.

সবকথা যেখানে আজকের উৎসবের আনন্দে মানুষকে শুভেচ্ছা 

সবকথা যেখানে আজকের উৎসবের রোষে বারুদের গন্ধ 

নিয়ম নিরাময় 

আনন্দের সাথে সকলকে বলতেই হয় 

দীপাবলির শুভেচ্ছা 

সকলে ভালো থাকুক। 

.

শধুই নিয়ম 

অথচ ভালো থাকার শহরে মানুষের বাঁচতে চাওয়াগুলো বেনিয়ম,

শুধুই সম্পর্ক 

অথচ সম্পর্কের ভিতর ঘুমিয়ে বহুদিনের পুরোনো বিস্ফোরণ ,

বিস্ফোরণ শব্দটা কাঁটাছেঁড়া করে দেখলে 

আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করে 

ইচ্ছে করে সেই নোংরা ফুটপাথে হাফ প্যান্ট পরা ছেলেটাকে বলতে  

কি প্রয়োজনের এই উৎসব ?

কিংবা রাস্তায় বেলুন বিক্রি করা আটবছরের মেয়েটাকে বলতে ইচ্ছে করে 

খুব কি প্রয়োজন ছিল এই উৎসবের ?

শুধুমাত্র কিছু আনন্দ যখন আলোর মতো ঝরে 

শুধুমাত্র কিছু আকুতি যখন চিৎকার থেকে বদলে যায় মানুষের বাঁচায় 

তখন মানুষ এমনি ভালো থাকে 

তারজন্য উৎসব কি প্রয়োজন ?

  

Wednesday, November 3, 2021

ঐশীর উদ্দেশ্যে এক বেজাত কলম



ঐশীর উদ্দেশ্যে এক বেজাত কলম 

... ঋষি 


অনিবার্য শব্দ বসত আমি প্রেমিক ও কবি 

কিন্তু ঈশ্বর হওয়ার যোগ্যতা আমার নেই ,

আমি বেজাত ,আমি অশ্লীল 

আমার উরুর ফাঁকে প্রতিমুহূর্তে জন্ম নেয় অজস্র বেজন্মা 

আমার কলমের কালিতে নাভিশ্বাস ওঠে জন্মের 

তবু আমি লিখি 

কারণ লেখার জন্য আমার যন্ত্রনা ছাড়া কিছু লাগে না। 

.

এই মানুষ জন্ম 

শুধু চলন্তিকায় ভর করে আগুন জ্বালা বুকে ,

তুই বুঝিস 

প্রতিটা সমুদ্রের পরে যদি কিছু থাকে ,আরও গভীর 

সে নারী 

অথচ কি জানিস আমার কোনো নারী নেই ,শুধু শরীর 

শুধু শব্দ ,শুধু সভ্যতা আর আমার মৃত যোগ্যতা। 

.

জানি এ কবিতা রেনেসাঁস আনবে না 

কোনো একলা দিনে আমার মৃত্যুর পরে জন্ম দেবে বারুদ 

গর্জে উঠবে সভ্যতার সেই উলঙ্গ বালক 

বলবে এই পৃথিবী আমার না ,এই জন্ম আমার না 

সেদিন গর্জাবে বুকের ভিতর শুয়ে থাকা চলন্তিকা 

কোনো সেলফিতে না 

কোনো অনিবার্য পরিচয়ে না 

শুধু আমার মতো বেজাত জন্ম দিতে দিতে বলবে বেশ করেছি

পুরুষ না প্রেমিকা চাই 

সংসার না মুক্তি চাই 

সিঁদুর না ,শুধু তোমাকে চাই।  

 .

জানি সেদিন তুই হাসবি ঐশী 

বলবি তোর প্রতিটা জন্ম বেজাত হোক 

তোর প্রতিটা মৃত্যু মানুষের হোক ,শান্তির হোক 

শরীর কিংবা সঙ্গমে না ,

শুধু বুকের খাঁজে মানুষটা না থাকার যন্ত্রণার হোক। 

Monday, November 1, 2021

তিতুমীর

 


তিতুমীর 

... ঋষি 

একই শহরে, একই আকাশের নিচে আছি 

অথচ এই শহরের মুখোশের মেলায় তোমাকে হারাচ্ছি রোজ । 

সকাল হচ্ছে 

সূর্যের প্রাপ্তির সাথে তোমার মাঝে নতুন আলো 

আমি সংবিধান খুলে খোদাই করছি 

ভুল মুখস্থগুলো। 

.

সময়ের প্রাপ্তি ছিল ,ঢাল ,তলোয়ার আর দুর্গ 

অথচ নড়বড়ে গঠনের কোনো এক আলাপচারিতায় 

আমি তিতুমীর ,

নির্ভুল কিছু শরীরের গঠন 

ভুল  কিছু সঙ্গমের ৫১ পর্বে লেখা আমার প্রেমিক শরীর 

শুধু কবিতায় নারী তুমি সুন্দরী প্রেমিকা। 

.

অযথা মুখোশের শহরে 

রকমফের কিছু চকোলেট বিকেল তোমার  উপস্থিতি ধন্য করে যায় 

কানে কানে বলে যায় 

তুমি আছো ,আমি আছি তাই ,

আর তারপর 

একই শহর ,একই আকাশের তলায় ভিন্ন মুখোশের মেলায় তোমায় খোঁজা। 

একটা নিয়ম  

শুধু একটা নিয়ম সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে নির্ণয় করে 

কাল আবার একটা দিন। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...