Wednesday, September 30, 2020

prithibite dutO jat

পৃথিবীতে দুটো জাত 
... ঋষি
অশোকস্তম্ভ আর আশিয়ানার মধ্যে তফাৎ কি? 
ই এম আই আর ইনট্যালিজিয়েন্টের মাঝে তফাৎ কি?
তফাৎ ওষুধ খাওয়ার কিংবা নিজেকে সুস্থ মনে করার?  
আমি এত বুঝি না শুধু এটা বুঝি 
পৃথিবীতে দুটো জাত 
একজন নিয়ম বানায় আর অন্যরা মানে কিংবা বাকিদের মানতে হয়
এটাই গনতন্ত্র , এটাই হিসেব। 
আর আমি শুধু তাকিয়ে থাকি তেনাদের দিকে যুগের হাওয়া যেদিকে বয়
কমিউনিস্টরা নাকি খারাপ ছিল, চিনে গনতন্ত্র নেই, 
আমি জানি গরীবদের ভীষন খিদে পায় 
তাদের শরীরে প্রচুর ফুসকুড়ি থাকে। 
আমাদের বলা হয় 
চাষীরা চাষের বদলে জমি যদি সরকার দিলে তবে দেশের ভালো
আসলে তবেই না জমে মাদারির নাচ । 
.
আমাদের বলা হয় ভারতীয় মেয়েরা সুন্দরী 
আমাদের বলা হয় খালি পেটে চিৎকার করতে নেই, 
আমাদের দেশের  মেয়েরা মিস ইউনিভার্স হবে 
আমাদের ভারতবর্ষে সেক্স হলিডে সেন্টার হবে
আমরা মেনে নি। 
আমরা মেনে নি এ বছর পুজোর বোনাস হবে না
এ বছর মন্দার কারনে কারখানায় কর্মী ছাটাই হবে, 
আমরা মেনে নি  হঠাৎ একদিন স্কুলে পড়া ছেলেটা
বাবা মারা গেল বলে চায়ের দোকানে কাজ করবে,
আমরা মেনে নি একজন সদ্য বিবাহিত মেয়ের
পতির ঘরের  অত্যাচারে, বাপের ঘরে ফিরে আসা। 

আমরা মেনে নি 
তাই
সকালে চায়ের সাথে খবরের কাগজ খুলি
প্রতি সন্ধ্যেতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে টিভির খবরে চোখ রাখি
নিয়মিত জানি কিভাবে লাল পার্টি গেরুয়াকে দুষছে
গেরুয়া দুষছে লালকে,
চাঁদপুরে পার্টির বোমাতে উড়ে গেছে কোন বৃদ্ধার বাড়ি
কিংবা সেই মেয়েটাকে ধর্ষন করে খুন করা হয়েছে 
যে বড্ড সত্যি বলতো । 
.
আসলে কি জানেন 
এই পৃথিবীতে আজকের সময়ের দুটো জাত
একজন নিয়ম বানায় আর অন্যরা মানে কিংবা বাকিদের মানতে হয়। 
আর আমরা নিতান্ত সেকেন্ড ক্লাসে পড়ি আজও
মাষ্টারমশাই যা বলে তাই শুনি 
কিংবা শুনে চলার চেষ্টা করি 
না হলে কাল হয়তো
আপনার খুন হওয়া শরীরটা উপর মাথা ঠুকে কাঁদবে আপনার স্ত্রী
কিংবা  আপনার কাছে আসতে পারে একটা টেলিফোন 
আপনাকে যেতে হতে পারে থানায়
 গত দুদিন ধরে বেপাত্তা মেয়ের মৃতদেহ সনাক্তকরনে। 

  





.

Monday, September 28, 2020

kotha chil

 


কথা ছিল 

... ঋষি 

.

আমাদের এমন থাকার কথা ছিল না 


কথা ছিল সাত সাগরের পাড়ে কাঁচের জানলায় দাঁড়িয়ে তোমাকে দেখার ,


আমার কথা ছিল তোমাকে ভালো রাখার 


আমার কথা শহরের ছিল শহরের ধুলোয় সেই ভিখিরি মাটার বুক  আঁকড়ে বলা 


এই মা শোন তুই ছাড়া তো আমার কেউ নেই 


কাঁদিস না !


.


তোর কথা ছিল এক সমদ্র রূপকথা বুকে 


চার দেওয়ালে কাঠের দেরাজ খুলে পুরোনো চিঠিতে আমাকে খোঁজার ,


কিংবা তোর কাঠের আলমারির শাড়ির তাকেতে ময়ূরপঙ্খী খুঁজতে খুঁজতে 


আমাকে বলা 


দেখ তো আয়না আমি হাসলে কেমন লাগে  ?


দেখ তো আয়না ময়ূরপঙ্খী না স্বপ্ন  ? 


.


আমাদের সত্যি কি এমন থাকার কথা ছিল ? 


কথা ছিল  বুকের খেলনাবাটি খুলে তোর বুকে একটা আমার  আদরের ঘুমের   ,


কথা ছিল গীতবিতানের প্রেমপর্যায়ের গায়ে হাতবুলিয়ে 


হঠাৎ না ভুলতে পারা গান গুনগুনিয়ে ওঠার। 


কথা ছিল কোন সন্ধ্যা পার্কসার্কাসের পাঁচ মাথায় দাঁড়িয়ে 


কিংবা মনুমেন্টের উপর দাঁড়িয়ে চিৎকার করার 


ভালো বাসি তাই 


আরো কাছে যেতে চাই। 


তুই তখন হয়তো সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে দরজায় দাঁড়িয়ে সিঁথিতে সিঁদুর 


তুই হয়তো আমার সব সম্পর্কের নারী একলা ভীষণ , 


আর আমি 


শুধু অপেক্ষায় সময়ের ভিড় 


শহরের ধুলোয় একলা কবিতায়


আমাদের তো ভালো থাকার কথা ছিল । 

Sunday, September 27, 2020

কবিতার কথা




কবিতার কথা 
... ঋষি
.
প্রশ্ন এটা নয় কবিতা কিভাবে লেখা হবে 
প্রশ্ন এটা নয় কবিতা কেন লেখা হবে
শুধু উত্তর এটা কবিতা লেখা হবে। 
সে কম্পিউটার কিবোর্ড দাবিয়ে আসুক শব্দের পাগলামিতে
কিংবা সাদা পাতা কলম সংযোগে আগুনের ফুল্কিতে
কিংবা সময়ের যন্ত্রনায় হোক অথবা প্রেমে
কবিতা লেখা হবে ঠিক। 
.
প্রশ্ন এটা নয় কবিতা কিভাবে পড়া হবে
প্রশ্ন এটা নয় কবিতা কোন পোশাকে পড়া হবে
সে ধুতি, পাঞ্জাবী,জিন্স, সালোয়ার শাড়িতে
কিংবা ফুটপাঠে দাঁড়িয়ে, পাড়ার স্টেজে,রাতের বিছানায়
কিংবা রবীন্দ্রসদনের মঞ্চে, একাডেমী গ্যালারিতে
কলেজের ক্যান্টিনে কিংবা কলেজস্কোয়ারের আড্ডায় 
কবিতা পড়া হবে ঠিক। 
.
প্রশ্ন এটা নয় কবিতা বোঝা যাবে কিনা
প্রশ্ন এটা নয় আপনি কবিতা আপনি পড়বেন কিনা
শুধু উত্তর কবিতা জন্মাবে প্রেমে, বিপ্লবে,সময়ের পরিবর্তনে
কবিতা জন্মাবে বন্ধ কারখানার শ্রমিকের খিদেতে
কবিতা জন্মাবে মায়ের খোলা বুকে সন্তানে ঠোঁটে
কবিতা জন্মাবে মুহুর্তের দোলাচলে একলা আগুনে
কবিতা জন্মাবে বৃষ্টিতে ভিজে, শরতের রোদে, আঘ্রানের ধানে
কবিতা জন্মাবে পাহাড়ে, নদীতে, প্লাবনে খিদেতে
কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন জন্মাবে কবিতা ? 
কারণ আমার মতো কিছু খ্যাপাটে পাগল
 বেশ্যার বুক থেকে প্রেমিকার যোনিতে শব্দ চাষ করে, 
কারণ আমার মতো কিছু সময়ের বিদ্রোহ
যুগে যুগে সময়ের যন্ত্রনাদের বোঝাতে চায় কবিতার ইতিহাস।
কবিতা বাজের মতো দৃষ্টিতে
কবিতা ঘোড়ার মতো গতিতে
কবিতা ভালোবাসা ঝরনায়
কবিতা অসামাজিক হিংস্রতায় 
না বলা সত্যকে, সত্যি বলতে পারে
বলতে পারে খুব সহজে যারা কবিতা পড়বেন না 
কেটে পড়ুন প্লিস। 
.
এখন আরেকটা প্রশ্ন আমি কে? 
আমি একটা পাগল যে জানে কবিতা লিখে পেট ভরে না,
আমক একটা পাগল যে জানে মানুষ আজকাল কবিতা পড়ে না
পড়ে না কবিতার প্রেমে। 
আমি এটা জানি আমি কোন কবি নই
নই শব্দের ঈশ্বর,
আমি হলাম একটা মাকড়সা
যে সময়ের শব্দদের বুনে চলে নিজেকে বাঁচাবে বলে। 





মারিজুয়ানা




মারিজুয়ানা
... ঋষি
 
আমার একহাতে তোমার স্পেন 
অন্যহাতে মারিজুয়ানা, 
আমার একপাশে হৃদয়, অন্য পাশে সময় 
তবু নেশা হয় 
অসময়ের একলা কবিতায়। 
.
কুরুক্ষেত্র ফুরিয়ে গেছে খুঁজতে থাকা নিজের নারীকে
বাঁশ বাগানে,আকাশের চাঁদে,কলেজ স্ট্রীট, বাংলা বাজার 
সৌজন্যে লেখা আমার দত্তক
তোমার সাথে সঙ্গমের শেষে আমি খুলে ফেলেছি কলকাতার রাস্তা
আমার দুপায়ে ধুলো
অথচ মনে গোলাপ কাঁটা। 
.
সামনে দিয়ে এগিয়ে আসা সময়ের মিছিল 
সামনের সারিতে এগিয়ে আসছে চলন্তিকা বুকে বোমা বেঁধে,
সময়ের বিপ্লবে 
বেড়ে চলা অবৈধ সঙ্গমে সকলেই কাঁটার মুকুটে যীশু সাজছে।
তোমার বিস্ফোরণের জন্মদিন আমার কলকাতায়
জন্ম নিচ্ছ তুমি চলন্তিকা আমার কবিতার নারী,
যে সময় একলা  চিরকাল কবরে শুয়ে প্রেম 
সেখানে কবির চোখ তোমার স্পেনে মারিজুয়ানার নেশা। 
.
তাকে আমি খুঁজছিলাম
কবিতার পাতায়,শব্দের নেশায়
ইতিহাসের পাতা বদলে, ভার্চুয়ালের পোশাক বদলে, একলা আমি
গভীর সঙ্গমে 
শহরের রাস্তায়,রিক্সার সীটে,ট্রামের শব্দে, বাসের হর্নে
পাচ্ছিলাম না। 
.
হঠাৎ আরও একলা আমি 
হঠাৎ চুরি যাওয়া বয়সের আলোয় আমি দেখলাম 
একটা মিছিল এগিয়ে আসছে 
আর সামনের সারিতে বিপ্লব এগিয়ে আসছে চলন্তিকার সাজে
হঠাৎ বিস্ফোরণ
আমি তখন সঙ্গমরত মারিজুয়ানায়। 


  
 

Saturday, September 26, 2020

সম্পর্কের ডিকশনারি

 

সম্পর্কের  ডিকশনারি 

.. ঋষি 

.

পৃথিবীর শেষ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে 

খুঁজে পাচ্ছি না সম্পর্ক বলে একটা ডিকশানারি,

পুরোনো ডিকশনারিতে আলফাবেটিকলি সাজানো সম্পর্কের মানেগুলো 

আজ নিয়ম আর হিসেবের আড়ালে  কারণ খুঁজছে। 

খুঁজে পাচ্ছি  না তাই আগামী পৃথিবীতে  আমি ছাড়া অন্য কাউকে 

সেখানে তুমি ,তোমরা ,আপনি , আপনারা, ব্রাত্য। 

.

বছরের সতেরোর ছেলেটা রোজ নিয়ম করে তার বাড়িতে দেখে 

এক রাক্ষস ,রাক্ষসীর ঝগড়া ,

তার বাবা ঝগড়া করলে আর মানুষ থাকে না

আদিম মানুষের মতো নিতান্ত ছোট কারণে কামড়াকামড়ি করে। 

সম্পর্ক আর ঝগড়া 

ছেলেটা পালাতে থাকে সম্পর্ক থেকে দূরে। 

.

পৃথিবীটা ক্রমশ কেমন পাথরে হয়ে যাচ্ছে 

পাথর মানুষ ,পাথরের মন ,পাথুরে চাহিদা আর বাঁচার কারণ ,

বছর ষোলোর  মেয়েটা তার বান্ধবীকে দেখে ভালোবেসে রক্তাক্ত হতে 

মেয়েটাও পাথর হয়ে যায় 

ভালোবাসা বলে সত্যি কি কিছু আছে ,সত্যি  ?

বছর আটত্রিশের লোকটা পুরোনো সম্পর্কের ডিকশনারি খুঁজে ভাবতে থাকে 

কোথায় সে দাঁড়িয়ে ?

হঠাৎ হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ছুটতে থাকে নিয়মিত জীবনে 

ক্লান্ত ,শান্ত একটা মানুষ পাথর হয়ে যায় বাঁচার চাকরি করতে করতে। 

.

বছর ছাব্বিশের সদ্য বিবাহিত যুবতী 

ছাদের দড়িতে রাত্রের বাসি ভিজে  শাড়িটা নাড়তে নাড়তে আকাশ দেখে 

ভিতর থেকে দুমড়ে মুচড়ে ওঠে কান্না 

বিয়ে আসলে একটা রূপকথা 

তার কাছে যা আজ ভয়াবহ নিয়ম ছাড়া আর কি ?

.

প্লিজ ঘাবড়াবেন না আপনারা 

প্রতিটা বদলের আগে একটা ঝড় ওঠে 

এই কবিতা আগামী সংবাদ পত্রের হেডলাইন হতে চলেছে 

যেখানে মানুষের সাক্ষাৎকারে বলতে শুনবেন 

আগামী প্রজন্ম বলছে 

ভালোবাসা মাই ফুট 

সম্পর্ক মাই ফুট 

আরে বাবা লিভিং করবো 

চাঁদের মাটিতে একলা দাঁড়িয়ে নিজের ললিপপ  চুষবো

বাচ্চাকাচ্চার কি দরকার মশাই।  

 


 

Thursday, September 24, 2020

রেডফ্লায়ার

 


রেড ফ্লাওয়ার 

... ঋষি 


আমার বাবাকে দেখছি  রৌদ্র পিঠে করে বই পড়ছে 

সারা দিন সারা রাত্রি 

আর ঘোড়া ছুটছে দিগন্তে বোধহয় সেই রেড ফ্লাওয়ারের খোঁজ ,

মা রান্না ঘরে তখন থেকে খুটখাট 

আজ এতগুলো দিন প্রায় সাতহাজার বছর 

ওরা একসাথে আছে 

শুধু ওদের মাঝে  রেডফ্লায়ারটা সময়ের সাথে পুরোনো হয়েছে। 

.

জঙ্গলে আগুন 

মোগলির রেড ফ্লাওয়ার আমার বুকে অদ্ভুত একটা আকুতি ,

ছোটবেলায় পাড়ার ল্যামপোস্টগুলোর আলো জ্বলতেই বুঝতাম 

দিনের আলোর ডিপারচারের সিগনেচার পড়ে গেছে।

সেসব পুরনো হয়ে গেছে দিন 

রৌদ্র ,পিঠ ,বই পড়া , আমার বাবা ,পাখিদের ডানা থেকে রৌদ্রের গন্ধ

রান্নাঘরের মেয়ের অবিরত খুটখাট 

সব মুছে অতি আধুনিক ক্ল্যাসিকাল লাইফ স্টাইল থেকে । 

 

তখনও  সন্ধ্যা আর নামেনা আদৌও

হাত পা ধুয়ে সবে পাটিগণিতের পাতায় আমি আগামী জীবন আঁকছি 

মা বলছেন তোর দ্বারা হবে না

সন্ধ্যে হলেই ঢুলে পরা ,আয় আমরা গান করি 

পুরোনো হারমোনিয়াম ,মায়ের গলায় রবিঠাকুর 

আমি বনলতাকে দেখি 

 " চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা  "

চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে 

হারিয়ে যাচ্ছে আমার রেড ফ্লাওয়ার। 

.

ডিজিটাল প্লাটফর্ম জুড়ে সাজানো আসরে কবিতা উচ্চারিত হয়

আমার দিগন্তে উচ্চারণ রেড ফ্লাওয়ার ,

সেই মফস্বল থেকে আমি আজ শহরের পাতায়,

ঘড়ির কাঁটাগুলো কখন যেন বয়সের চুল পাকিয়ে দেয় 

যেন এক অবিচ্ছিন্ন  শোক ,

অন্তরালে বাঁশি বাজে গোধূলির রঙে আলোর ডিপারচারের।

রাত্রির যুবতী দেহে বাহারি পোশাক ঝলকায়

আমি তবু বাবার দিকে চেয়ে থাকি 

শুনতে থাকি মায়ের গলা 

হারিয়ে যায় সব 

খোঁজ আজও রেড ফ্লাওয়ার। 


আমার তুমি

 


আমার তুমি 

... ঋষি 

.

মাঝে মাঝে আগুন লেগে যায় 

পবিত্র সঙ্গমের মতো স্বপ্নে দেখতে পাই  তোমায়,

আজ উত্তরের জানলা খুললে পায় না আর শীতল বাতাস 

ঋতু  বদলায়,

বুকের রক্তে একলা মেশা প্রেম 

শহরের ধুলোয় কালো হয়ে জমে যায় প্রতিটা আত্মহত্যার পর। 

.

মাঝে মাঝে নিজেকে বড়ো অসহায় লাগে 

তোমার বাড়তে থাকা ব্রায়ের মাপে নিজেকে লাগে অপগন্ড ,

অদ্ভুত এক সম্মোহন 

নিরুপায় জীবনের পর্যায় সম্পর্কগুলো টিট ফোর ট্যাট। 

চশমার কাঁচে ধুলো মাখে শহরের ব্যস্ততা 

বাসস্ট্যান্ডে দঁড়িয়ে হঠাৎ একা লাগে। 

.

মাঝে নিজেকে হত্যা করতে ইচ্ছে করে 

আয়নার সামনের দাঁড়িয়ে চেনা মুখটা বড়ো বেশি কীটের মতো ,

মেরুদন্ডহীন একটা সময়ের সাক্ষী। 

তোমার ঠোঁটের লালায় লেগে থাকা আমার তৃষ্ণাটুকু 

অনিয়মের বৃষ্টি হয়ে শুকনো মাটি ভেজায়। 

আসলটা কেউ বুঝতে চায় নি মানুষেৱ বাঁচার জন্য অনেকে থাকে 

কিন্তু মরার জন্য একজনই  থাকে ,

মানুষের সাথে থাকার জন্য চারপাশে হাজারো চোখ 

কিন্তু বুকের ভিতর একজোড়া। 

গূঢ় তত্ব ,আরো গভীর গাছের পাতা 

শিকড়ের মাটি সরে গেলে গাছ দাঁড়াবে কোথায় ,

সবকিছু ব্রাত্য হয়ে যায় 

সবুজ সালোকসংশ্লেষ ,

জীবন অপরাহ্নে নিজেকে বড় অপাংতেয় লাগে 

জানি না এই পৃথিবীটা কজন আছে বুক বাজিয়ে বলতে পারে 

আমার তুমি। 


Tuesday, September 22, 2020

একটি বিয়ের বায়োডাটা

একটি বিয়ের জন্য বায়োডাটা
... ঋষি
.
বুক ভেঙে যাবে ডার্লিং
প্রতিবারে বিশ্বাসে আজকাল বড্ড বেশি ইন্টাল্যেকচুয়াল ভীড়,
আমি খুব সাধারণ
জন্ম কচুপোড়া লেন, রাজ্য পোড়া বাংলা আর দেশ গর্বের ভারতবর্ষ,
চটি আছে পায়ে আজ 
কারণ শেষ শনিবার মন্দির থেকে ঝেড়েছিলাম। 
.
বিশ্বাস করো ডার্লিং
আজকাল ভালোবাসার জন্য বায়োডাটা লাগে জানতাম না। 
হ্যা ভালোবেসেছি তো 
মা মরে গেলো তখন আমি তিন 
বাবা ছেড়ে গেলো অন্য মেয়েছেলের জন্য তখন আমি আট। 
তখন আমি ভালোবেসেছি ওই বেশ্যা পাড়ার পারুলদিকে
যে আমায় দুপুরে ভাত দিতে দিতে বলতো
নান্টু তুই যা সুন্দর দেখতে তুই বড় হলে তোকে সাদি করতাম রে। 
.
আসলে অভ্যেস নেই বায়োডাটা লেখার তাই নাম লেখা হয় নি
হ্যা আমার মতো ছেলেদের নাম নান্টু, বল্টু এসবি হয় 
হ্যা আমার মতো ছেলেদের গায়ের রং কালো,গায়ে নোংরা জামা থাকে।
হ্যা পড়াশুনা করেছি তো
ছোটবেলায় ওই বস্তি পাড়ায় সমাজসেবী সেই দাদা কাছে
দাদা বলতো মানুষের পরিচয় মানুষ নিজে তৈরি করে
কিন্তু সে বছর মুন্না গুন্ডা  দাদাকে পিটিয়ে মেরে দিল 
ব্যাস পড়াশুনায় ফুলস্টপ। 
কিন্তু বিশ্বাস করো ডার্লিং আমি ভুলি নি দাদার কথা
আজ এতগুলো দিন আমি খুঁজে চলেছি নিজের পরিচয়, 
 তোমায় সই করে ভাঙাচোরা অক্ষরে আমি নাম লিখে দেখাতে পারি 
দেখাতি পারি আমি ভারতবর্ষের শিক্ষা অভিজানের সার্থকতা
কিন্তু জানি না  সে অক্ষর তুমি বুঝবে কিনা
আসলে কি জানো আমাদের মতো ছেলেদের আর কজন বুঝতে চায় বলো। 
.
তবে কি জানো ডার্লিং
বিয়ের বয়স হলো এইবার, তাই বিয়ে করতে হবে
বিয়ে করার জন্য ভালোবাসতে হবে
তাই তোমায় সেই কথা জানালাম, 
তুমি চাইলে বায়োডাটা 
তাই আমার এত কথা বলা।
আর শোন পেট নিয়ে ভেবো না ডার্লিং
 আমি তেমন কাজ কারবার না করলেও,
চলে যাবে
যেমন করে চলছে আমাদের মতো লাথখোড় ভারতবাসীর। 

.

ছ হাজার ছশো সতেরোবার



ছ হাজার  ছশো সতেরোবার 
... ঋষি 
এই যে ছ হাজার ছশো সতেরবার আমি তোমার দিকে তাকিয়েছি 
প্রতিবারি ,তারপর  বুঝে উঠতে পারি নি 
কোন দিকে উত্তর, কোন দিকে দক্ষিন, কিংবা নৈঋত। 
আমি শুধু তাকিয়ে থেকেছি তোমার দিকে 
অন্ধকার থেকে আলোতে, সাদা পাতার কবিতায় 
কিংবা গভীর রাতে হঠাৎ মা হারা শিশুর কান্নায়। 
.
এই যে ছ হাজার  ছশো সতেরোবার 
প্রতিবারে তুমি আদম কাহিনী জুড়ে তুলোধনা করেছ পুরুষকে 
আমার কেন যে একবারও মনে হয় নি আমিও যে পুরূষ 
বরং প্রতিবারে কঠিন পাথরের উপর ফুটেছে লাল গোলাপ
আমি হেসেছি, শুধু হেসেছি 
এক পা, দু পা করে এগিয়ে তোমার বুকের সিঁড়ির ধাপে। 
.
কহিনুর থেকে কর্নাটক 
কন্ডোম থেকে শ্লোগান 
পাশে শুয়ে থাকা মিজোরাম ভারতবর্ষের সাথে একি সুরে গাঁথা 
এসব আমি তোমায় কিছু বলতে পারি নি, 
ছ হাজার  ছশো সতেরোবার, প্রতিবার তোমায় দেখার পর
আমি আরও ভিখীরি হয়ে গেছি 
আমি আরও পাগলের মতো লিখে ফেলেছি সাঁরে জাহাসে আচ্ছা,
ভাবনা বদল হয় নি 
শুধু একাডেমিতে কবিতার মানুষগুলো বিক্রি হতে শুরু করেছে 
শুধু সুনীল দা আর স্বাতী দি হেঁটে গেছে ভিক্টোরিয়া ধরে
অথচ ভিক্টোরিয়ার পাথরের রাস্তায় সেই দাগ থাকে নি।  
অথচ ছ হাজার  ছশো সতেরোবার 
প্রতিবার
তুমি আলাদা করে দাগ কেটে গেছো আমার পাথুরে বুকের খননে
যেখানো আজও তুমি ছাড়া কোন শ্রমিক পাথর ভাঙে নি। 


অপেক্ষা

অপেক্ষা 
... ঋষি
আমি কুয়াশা খুঁজতে দাঁড়িয়ে আছি 
আমি বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে আছি
আজ আটত্রিশ বছর বুকের মাটিতে আমি অপেক্ষা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। 
আমার অপেক্ষায় সময় ঘুমিয়ে আছে 
আমার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে আছে আগামী কুড়ি বছর
একটা বিস্ফোরণ দরকার 
শুধু অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে  সোনাঝুড়ি রোদ আজ বড় কষ্টের। 
.
আমি দেখেছি 
রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে একটা শেওলা রং এর শরীর 
আমি দেখছি 
অপেক্ষার ওপরে দাঁড়িয়ে একটা মেয়ে মাথা নিচু করে, 
নিছক তপস্যা নয় 
কারণ এই কবিতায় মুখ ঘুরিয়ে আছে ঈশ্বর  সময়ের নেশায় । 
.
আমি দেখছি আজ ৫৯ বছর আমার মা একটা কালো পাথরে জল ঢালছে
আমি দেখছি আমার মা নিয়ম করে জামা বদলাচ্ছে পাথরের 
হাত জোড় করে ভিক্ষা চাইছে সময়ের। 
আমি হাত পাততে পারি না
আমি অপেক্ষা করতে পারি 
আমি তুলে ফেলে দিলাম সেই নোংরা পাথর রাস্তায় 
আমি নিজেকে নিয়ে  গিয়ে দাঁড় করালাম ফাঁকা রাস্তায়।
দুদিন পরে দেখি কালো পাথরের গায়ে বৃষ্টির জল 
দুদিন রাস্তায় থেকে দেখি  আমি কুয়াশার মাঝে অন্ধ হয়ে গেছি,
আমি ওই দুদিনে বুঝি পাথরও কাঁদতে পারে
আমি ওই দুদিনে বুঝি কুয়াশার মাঝে হাতড়ানোটা বোকামি।
তাই আমি অপেক্ষা করি সময়ের
তাই আমি অপেক্ষা করতে দেখি আমার মাকে
তাই আমি দেখি সেই মেয়েটাকে মাথা নিচু করে। 


Monday, September 21, 2020

টোটেম



টোটেম 
... ঋষি
সে সভ্যতায় ঘুম থাকে না
সে সভ্যতায় টোটেম বুকে শুয়ে থাকে একলা  নারী। 
প্রশ্ন ছিল, আছে,
নারী তোর মরদ কই ? 
গৃহস্থের বধু পোয়াতি হলে মুখে তুলে নেয় না অন্ন 
শুধু বিষ
আর নপুংশক সময়ের খবর  কেউ রাখে না। 
.
গভীরতা খুঁজতে গিয়ে পুরুষ নারী বুকে ধাপ কেটে ঢুকছে 
হাঁপাচ্ছে তলপেটে মুখ রেখে, 
নারী তুমি জিতে গেছো। 
নারী তুমি হাসতে হাসতে চালিয়ে দিয়েছো বোবা তীর 
সোজা পুরুষ জাতির বুকে 
কিন্তু তবু প্রশ্ন ছিল, আছে 
নারী তোর বুকে শান্তি কই? 
.
যে সভ্যতায় ঘুম থাকে না
সে সভ্যতায় নারী তুমি ভাবছো প্রতিটি সময়  আদম বুকে কামুক প্রকৃতি, 
সেখানে যে ঈশ্বরও মাথা নিচু করে
সেখানেও সভ্যতাও থেমে যায় তোমার বিশ্বাসের কাছে।   
আসলে সময় যখন দুর্বল হয়ে দুর্বলতা খোঁজে 
আসলে সময় যখন প্রবল হয়ে সময়ের গভীরে জন্ম খোঁজে,
সেখানেও ঈশ্বর জন্ম হয়
সেখানেও ঈশ্বরও স্বীকার করে নেয় নারী তুমি অসুরদামিনী।
.
কিন্তু সেখানেও কি প্রশ্ন থাকে  ঈশ্বরের? 
কিন্তু সেখানেও কি  আক্রোশ থেকে যায় নারী? 
আদম প্রেমিক নয় 
শুধুমাত্র স্বার্থপর, কামুক কীট
যে মৃত শবের সাথে চরম কামে লিপ্ত।  
.
আসলে সভ্যতা জিততে চেয়েছে ইতিহাস পৌরুষের লোভে
কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী পুরুষ জিততে পারে নি
কারণ
নারী চরিত্রে ছলনায় থাকে চাঁদের কলা
আর সেখানেও ঈশ্বরকেও দাঁড়াতে হয় শয়তানের কাঠগড়ায়।  

 

অভিমানী কবিতা

অভিমানী কবিতা
... ঋষি 
তোমাদের কাছে কতকিছু 
আমার কাছে শুকনো মাটি, আর একলা নদী,
তোমাদের কতো সভ্যতা,কতো সংস্কৃতি, কতো ইতিহাস 
আমার কাছে শুধু আগুন
আর আগুনের একটাই ইতিহাস 
যা দাউ দাউ করে জ্বালিয়ে দেয় সময়ের বায়ুস্তরে নিঃশ্বাস । 
.
তোমাদের কাছে বিশ্বাস আছে
আমার কাছে প্লাস্টিক সভ্যতার সাজানো খেলনা শহর, 
তোমাদের আছে শ্যামবাজার, কলেজস্ট্রীট, গড়ের মাঠ 
আমার আছে পুরনো খামে চিঠি গীতবিতানে লোকানো
আজও ওই চিঠির দু - এক লাইন পড়লেই 
হঠাৎ এই শহরে বৃষ্টি চলে আসে
চলন্তিকা গেয়ে ওঠে " আজি ঝরো ঝরো ধুসর বাদল দিনে "। 
.
আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না এই কবিতায় কে আছে
কে আছে শুয়ে এই শব্দের গভীরে লুকোনো অভিমানে? 
আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না
তোমাদের আছে তাতে আমার কি? 
সকলের যে সব থাকতে হবে এমন কথা তো নেই। 
আমি যে দু - এক মুঠো মাটি নিয়ে গান বাঁধবো
কিংবা মাটি মেখে উঠে দাঁড়িয়ে সময়ের সুরে চিৎকার করবো 
জানি তোমরা শুনবে না,
বরং তোমরা ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের খেলা দেখবে
সুযোগ করে শুনেও ফেলতো পারো বলিউড গসিপ। 
কিন্তু তোমরা কেউ জানতে চাইবে না
সিধু,কানু,আর্য,অনার্য,ঋক, সাম, কিংবা সত্যি ইতিহাস
তোমরা শুধু হাততালি দেবে 
কাউকে তুলবে, কাউকে নামাবে, 
নিজেকে হাসাবে সেকারণে কাউকে কাঁদাবে। 
জানি আমার এই কবিতা কেউ পড়বে না
তাই ঠিক করেছি আমার এই কবিতাগুলো এইবার  পুড়িয়ে ফেলতে হবে
 চলন্তিকাকে জানাতে হবে
আমার সব কবিতায় তুমি রয়েছো কারণ তুমি অন্যদের মতো স্বার্থপর নও।  

 
 

Sunday, September 20, 2020

চলন্তিকা আর চশমা

চশমাটা খুলে ফেলুন 
খুলে ফেলুন আপনার চুলের দক্ষতায় রাখা পাকা স্বভাব, 
কি ভাবছেন প্রেম ? 
প্রেম শব্দটা সতীচ্ছেদে ফেলে ধ্বংস ছাড়া কিছু মনে হয় কি? 
সত্যি বলুন আজ দখিনের বারান্দায় মিঠে হাওয়ায় দাঁড়ালে
সত্যি কি ছুঁয়ে যায়? 
মানুষটা নাকি মানুষের বাইরেটা। 
.
 "সিলি হাওয়া ছুঁগেয়ি
সারা বদন সিল গ্যেয়া। "
আমরা কজন আছি বলুন তো প্রেম নিয়ে হাসিখুশি
তাই বলে কি  ভালোবাসবেন না ? 
ভালোবাসা শব্দটার গভীরে একটা জাদু আছে
আছে একটা ব্ল্যাকহোল 
যেখানে নিজেকে কোন কারণ ছাড়া হারিয়ে ফেলাটাই নিয়ম। 
.
এবার আসি অনিয়মে
কি ছিল প্রথম প্রেমে? 
তার আগে আমার বুঝতে ইচ্ছে হয় প্রেমের কি প্রথম বলে কিছু হয়, 
হঠাৎ ঝরে পরা শুকনো পাতা ঝরার মতো শীতকালে প্রেম আসে
হঠাৎ বৃষ্টিতে একলা ভিজলে  বর্ষাকালে প্রেম আসে
হঠাৎ বসন্তের আবিরে সবুজ রঙের প্রেম আসে 
কিংবা একলা শাওয়ারে,সমুদ্রের গভীরে তাকিয়ে, 
একলা বিছানায় প্রেম চেপে বসে নেশার মতো। 
সত্যি কি তবে প্রেমের জন্য কারণ লাগে? 
আমি বুঝি নি 
আমি বুঝতে পারে নি এতদিনেও 
শুধু চলন্তিকাকে ভালোবেসেছি চিরকাল সব ঋতুতে শুধু ভালোবেসে
শুধু চলন্তিকায় থেকেছি,চলন্তিকাতে বেঁচেছি
খালি পায়ে হেঁটে গেছি আজ এতগুলো বছর চলন্তিকা বুকে। 
এইবার চশমাটা পরে ফেলি কি বলুন
আমার প্রথম শেষ সব প্রেমেই চলন্তিকা বাঁচবে আমার বিশ্বাসে
আমার আর নিজেকে সাজাবার দরকার কি ? 

Saturday, September 19, 2020

ছদ্মবেশে

 



ছদ্মবেশে 

... ঋষি 


লুকিয়ে দেখে যাবি  শহর

আমি বুক ভাঙতে পারি না ,পারি না লিখতে উপনিষদ 

আগামী কোনো দিনে তোর কণ্ঠে আমি শুনবো কি নিজেকে ? 

সব গুলিয়ে যাচ্ছে 

তাসের দেশের বাদশা অদৃষ্ঠের গোলাম সেজে 

তোষোমোদ করছে সময়কে।  

.

জিন্দেগী ইস কদর ডরতি  হ্যা তুঝসে 

জিন্দেগী ইস কদর মহব্বত করতি হ্যা তুঝসে 

সব বিন্দাস 

শুধু ডিকশনারির বাইরে আমার পা রাখতে নিষেধাক্ষা যক্ষের। 

সমস্ত উজাড় করে  ঈশ্বর খোঁজা 

আর ঈশ্বর হওয়ার তফাৎ ভাবনায় ,

আমি পারি না 

তুই পারিস। 

.

এই কবিতায় কেউ কোত্থাও নেই 

এই কবিতায়  কেউ কোথাও আসতে  পারে না কখনো ,

এই কবিতায় আমি তুই দাঁড়িয়ে জীবন নামক ছাদের পাঁচ তলার ছাদে 

আকাশে একলা চাঁদ 

আর আমরা মুখোমুখি একলা যেন হাজারো তারা। 

ভাবনারা বদলে গেলে মানুষ কেমন জানি বেওয়ারিশ হয়ে যায় 

ভাবনারা বদলে গেলে মানুষ আরো একলা হয়ে যায় 

যেমন অন্ধকার আকাশ আর আমরা। 

এরপর ও  শহর খুঁজতে তুই আমার শহরে পথ হাঁটবি হরবোলা 

এরপর ও আমার শহরের বিক্রি মুখোশের কিছু অবিকৃত থাকবে 

এরপর ও কিছু মানুষ একলা হয়েও সঙ্গে থেকে যাবে 

এরপরও কোনো গৃহস্থের ঘরে জন্মাবে সন্তান 

এরপরও রাস্তার কুকুরদের ভাদ্র মাস হবে। 

শুধু জীবন বদলাবে না 

তারা খসাদের দেশে একলা রাত্রে কিছু তারা 

জানিয়ে দেবে তুই আছিস আমার শহরে।  


সুকৌশল

 



সুকৌশল

.... ঋষি 

.

দূর থেকে চুমু ছুঁড়ে মারলে 

আমার পায়ের ফাঁকে ওরাংওটাং  বলে 

আকাশ ভরা বৃষ্টি। 

শব্দ স্রোত বেশ কমিউনিকেশনে লেখা ছিল 

গুলাবী আঁখে মে তেরি  দেখু ,

তারপর ক্রমশ রক্তে মিষ্টির মাত্রা দৈর্ঘ্য প্রস্থ তোর মতে দেখতে 

কথা দিচ্ছি দেখা হলে এক নিঃশ্বাসে চুমু খাবো তোকে। 

.

ভাবনারা বদলায় না সত্যি 

আমার বুকের দেরাজে খামে ভরা চিঠি মনখারাপের ঠিকানায় ,

আজকাল যখন তখন বৃষ্টি নামে শহরে 

শহরের জলের পরিমানের ছোঁয়া লাগে মানুষের চোখে 

টুপ্ করে এক বিন্দু জল 

ঝরে পরে 

তোকে বলা হয় নি তোর চোখটা বড়ো মিস করি আজও। 

.

পাহাড়ি ট্রেনে ঘুরে ঘুরে ,হাজারো বছর পর 

এমনি বাজে টেলিফোন ,

কিছু কথা পরে থাকে রাস্তার পাশে খুব সস্তা মানুষের মতো 

আর কিছু কথা গোপনে তোর কফি কাপে পাহাড় ছুঁয়ে যায়। 

তোকে বলা হয় নি 

তোর কোমরের মাপের একটা শব্দ আমার খুব প্রিয় 

যার প্রতিশব্দ তুই নিজে। 

তারপর আসছি আমি আপনাদের কথায় 

ভদ্র মহোদয় ,মহাশয়া গণ 

ভদ্রলোকের ভাষা মতো  স্ত্রী হলো দেশ আর  স্বামী স্বদেশ 

অতঃপর মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় 

যে শিশু শুয়ে থাকে দুজনের মাঝে 

তার নাম সকলের চেনা 

সুকৌশল,

আর বাকিটুকু তুই জানিস 

যেটা যন্ত্রনা। 


বসন্ত-টসন্ত

 


বসন্ত-টসন্ত

.... ঋষি 


এসব বসন্ত-টসন্ত নিয়ে আর  মাথাব্যাথা  নেই

যতো ব্যাথা এখন হাঁটুর নিচে 

কারণ হাঁটুর নিচে নামলেই মানুষ বুঝতে পারে যন্ত্রনা কাকে বলে 

খিদে কাকে বলে 

কাকে বলে বেঁচে থাকা। 


মানুষের বাঁচার জন্য দুটো ভাবনা কাজ করে 

এক পেট আর এক মেঘ ,

পেট শব্দটা ডিকশনারিতে ছোট হলেও খিদে শেষ হয় না 

আর মেঘ সে যে অসামাজিক 

কখন যে কাকে ভেজায় 

কখন কাকে একলা দাঁড় করিয়ে রাখে মেঘলা বেলায়। 


সত্যি বললে শুধু হয় না 

সত্যিকে যে বিশ্বাস করতে হয় এই কথা আজকে কমিনউনিকেশনে একলা ,

শহরের বিহারি পানোওয়ালেকে প্রশ্ন করুন 

বাঁচা কাকে বলে ?

সে বলবে " গাওমে দু বিঘান জমিন বেচনা পরা লড়কিকে সাদি কে লিয়ে 

ভগবান লড়কি কিউ পেইদা হোতি হে "। 

সেবার গ্রামে  গিয়েই জানতে পেরেছিলাম  

জাঙিয়ার শব্দটা কতটা বেখাপ্পা রহিম চাচার কাছে 

রহিম চাচা বলে " কবুতর যদি বেঁধে রাখো বাবু দানা খাবে কি করে ?"

আমি হাসি আর ভাবি 

আমরা শুহুরেরা কেন যে বেঁধে রাখি সত্যিগুলো ?

.

 ওপাড়ার রাখাদা চায়ের দোকানে বসে ভাঙা গলায় গেয়ে ওঠেন 

 "তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চায় "

আমি হাসি 

রাখাল দা বোধহয় জীবনে কোনোদিন হরিণ দেখেনি 

সেখানে সোনার হরিণ। 

মোদ্দা গল্প হলো সালা জীবন মানে হলো খিদে 

সে   পেট কিংবা মেঘ যায় হোক না কেন 

আর সেখানে 

বসন্ত নিয়ে মাথা ব্যাথা 

খ্যেপার পেট ব্যাথার মতো। 


তাহাদের কথা

 



তাহাদের কথা 

... ঋষি 


সবার আগে জন্ম নিয়েছি আমি পাখি 

তারপর ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে কালো পাহাড়ের গায়ে ,

আমার ভুলে যাওয়াগুলো 

আমার প্রেমিকার মতো পবিত্র রিস্তায় পাথুরে রাস্তা। 

খালি পায়ে হাঁটা 

তারপর ভুলে যাওয়া নিজেকে একলা করে। 

.

এই কটা লাইন লিখতে গিয়ে একলা হয়েছে 

একলা হয়েছে আমার বুককেসে রাখা প্রিয় কবিদের ভাবনা ,

একলা দেরাজে তোমার চিঠি 

ভালো লাগে ,

ভালো লাগে মায়ের কাছে বসে তোমার গল্প শুনতে 

কিংবা তোমার যে সব  দু:খ বোধ, 

আমার মতো,তাদের একলা করতে ।


কফিশপে মুখমুখি বসে 

আমি উদ্বাস্তু এক ,মারিয়ানা নেশায় বুদ্ কবিতার পাতায়, 

গল্প হয় তোমার সাথে নদী নিয়ে, 

কিংবা  মরে যাওয়া আমার পুরোনো বাড়ির ভিতের র গাছটাকে নিয়ে। 

সব ফুরিয়ে যায় 

চামড়ার ভাঁজে ক্রমশ ধরা পরে প্রত্নতত্ব 

শুকনো শিরায় শুয়ে থাকে আমাদের কথা পবিত্র গ্রন্থে ।

তারপর কমল কুমার মজুমদার লিখে ফেলেন " তাহাদের কথা "

সেটা নিয়ে সিনেমা করেন বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত

একটা ফিল্ম ফেয়ার এওয়ার্ড জুটে যায় হঠাৎ 

কিন্তু আমাদের কথা বদলায় না 

জনতা হাততালি দেয়।     

ডিস্কো ড্যান্সার




 ডিস্কো ড্যান্সার 

... ঋষি 


হিসেবের  বাজারে ঢুকে নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখি

ভুল নয়

টিকে থাকতে  তোমার মতো আমারও ভালো লাগে। 

চলন্তিকাকে বলা হয় নি 

বেইজ্জত খবর পাতার শেষ অংশে লেখা ছিল দু এক লাইন 

খিদের জ্বালায় স্বামী ,স্ত্রী 

হিসেবের ই এম আর জ্বালায় স্বামী স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে এই শহরে 

পাশাপাশি ঝুলছিল দুটো শরীর।  


সেদিন সময়ের বেগুনওয়ালার কাছে জানতে পারলাম 

সুদিন আসছে 

বিদেশ থেকে ফ্লাইটে চেপে আসছে ও দেশের সস্তা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার 

সুদিন আসছে

রেড কার্পেটের পাশে ফুল হাতে ঢুকে পড়ছে বলিউডের হাজারো সিতারও 

কে কাকে বেগুন গুজলো সে খবর বেগুন ওয়ালার কাছে ছিল না। 

.

দাঁড়িয়ে ভাবছি হিসেবের বাজারে 

আমার পাশে লবন যুগ দাঁড়িয়ে পাশাপাশি  জটলা করছে অমিতের মুদিখানায় মানুষগুলো মুখ খুলছে 

চোখ দিয়ে নুন ঝরলো। 

অথচ পাশের বন্ধ কারখানায় গত রাতে বিশ্বকর্মা পুজোর ফ্যাংশানে শুনতে পেয়েছি 

বাপ্পি দা গাইছে আই এম এ ডিস্কো ড্যান্সার 

আর তার সাথে শুনতে পারছিলাম অবিশ্রান্ত খিস্তি পাড়ার দাদাদের 

মাগীটাকে ছাড়বে না নাকি 

শালা এত বড়ো সাহস এম এল কাছে নালিশ করে। 

.

আমি হিসেবের বাজারে একলা দাঁড়িয়ে ভাবি 

শালা দ্যেশ এগোচ্ছে 

আর আমি কেন এত পিছিয়ে আলু ,বেগুন আর টমেটোর হিসেবে 

এবার বরং একটু মিঠুন চক্রবর্তী হলে হতো 

মিনিমাম সময়ের দাদারা কোমর তো দোলাতো। 


দুটো কুকুর

 


দুটো কুকুর 

... ঋষি 


আমি আমার সময়ে দুটো কুকুর দেখতে পাই 

একটা সাদা ,একটা কালো 

সাদা চায় ভালোবাসা আর কালো চায় স্তূপাকৃত মাংস। 

ঘাবড়াবেন না একদন 

সেদিন এক একুশ বছরের তন্বীকে স্বপ্নে আমন্ত্রণ করলাম 

সে কবিতার সাথে শোয় নি কোনোদিন 

সেখানে আমার সাথে শোবে কি করে ?

.

তারপর কালো কুকুরটা আমাকে তাড়া করলো 

আর অদ্ভুত হলো সাদাটা সোজা দৌড়ে গিয়ে ঢুকে পড়লো 

প্রেমিকার পাহাড়ের খাঁজে ,

আমি স্বপ্নে সব দেখতে পাই ইচ্ছে মতো 

কিন্তু আজ অবধি কেন জানি আমি আমার প্রেমিকাকে নগ্ন দেখলাম না 

দেখলাম একবারও রগরগে সস্তার মাংসের মতো 

অথচ কালো কুকুরটা আমাকে কামড়ায় বারংবার। 

.

আমি সময়ে দুটো কুকুর দেখতে পাই 

তাই আমি সেই একুশ বছরের তন্বীকে স্বপ্নে দেখি পাড়ার রতনের সাথে ঘুরতে 

সেদিন দেখি মেয়েটি মিউজিয়ামের ১১৮ টা কঙ্কাল ঘুরে এসে জানালো

মাটিচাপা লাশের সাথে আমার তফাৎ বিরল। 

নৈতিকতার খৈনি চিবিয়ে পাড়ার বিহারী পানওয়ালা 

তাকে এগিয়ে দিলো পান ,

তারপর মাটিতে থুকলো 

দেখি মেয়েটা শুয়ে আছে উলঙ্গ সভায় দ্রৌপদী হয়ে। 

সময়ের গলা ভর্তি শর্ত 

আর আর শর্তের দালাল সেজে 

দুটো কুকুরের সাথে বাস করি আজ বহুদিন। 


Friday, September 18, 2020

অপ্রত্যাশিত



অপ্রত্যাশিত 
.. ঋষি
আমার ভিতর কেউ বাস করে না আর 
বাস করে না কোন ঈশ্বর, 
পৃথিবীটা যেন  এখন হঠাৎ কেমন হাল্কা বেলুনের মতো ভাসছে 
সেখানে সম্পর্ক, মায়া, প্রেম হাল্কা হয়ে ভাসছে। 
হঠাৎ কেন জানি আমি হাল্কা 
আমার ভিতর কেউ বাস করে না আর তোমার মতো। 
.
পর পর তিনদিন আমি তোমার কাছে গেছি
প্রথম দু দিন দরজা খোলা ছিল কিন্তু দরজার বাইরে তুমুল বৃষ্টি 
কিন্তু তৃতীয় দিন  দরজা বন্ধ ছিল, 
তারপর ধীরে ধীরে আসা, যাওয়া বন্ধ, বন্ধ সম্পর্ক, একলা বিশ্বাস। 
 তারপর হঠাৎ আমার ঈশ্বর উধাও
পৃথিবীটা যেন হঠাৎ বেলুনের মতো হাল্কা
আমার ভিতর কেউ বাস করে না আর তোমার মতো।  
.
আমার ভিতর কেউ বাস করে না আর 
বাস করে না কোন ঈশ্বর, 
আমার সাথে তোমার মনখারাপের সম্পর্ক, সম্পর্ক শূন্যতার 
আমার সাথে তোমার একলা হওয়ার সম্পর্ক, সম্পর্ক একলা হাওয়ার। 
আমি হাওয়ার ভিতর তোমার গন্ধ পাই
গন্ধ পাই নোনতা স্বাদের। 
জানি তোমার পোশাকের ভাঁজে আমি অন্ধকার হয়ে থাকি 
জানি নির্বুদ্ধিতা কোন শব্দ নয় শুধু,শুধু শব্দ জব্দ। 
জানি এই যে ব্যাক্তিত্বের বিসর্জন
এই যে জমানো অভিমান আঁকড়ে বসে থাকা হিংসুটে দৈত্য
সবটাই তোমার বাগানে আমার অপ্রত্যাশিত উচ্চারণ
অপ্রত্যাশিত গোপন বয়ান।  
সবটাই চলন্তিকা তোমার দ্রাঘিমাংসে জমে থাকা লুকোনো কান্না
 তবে জানো কান্না আমারও পায় 
আজকাল কেন জানি অন্ধকার নির্ঘুম রাতে
আমি চন্দ্রকলায় দেখতে পাই তোমার অভিমানী ঠোঁট।   
 
 

.

কার বাপের কি



 কার বাপের কি 

... ঋষি 


 সারাদিন মেধার আশ্রয়ে একলা বেড়েছে  লালন

চেনেন আপনারা মেধা পাটেকরকে ?

আরে রে কি হবে চিনে তাই তো 

  " নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন ", কার বাপের কি ?

আমরা খালি পেটে আছি 

তাতেই খুশি। 

.

 এলাচ দর্পে যখন কোনো প্রতিবেশী বাড়িতে সানাই বাজে 

পাড়ার সকলে নোলা ঝরে ,

আরে পাত্র আসলে পাক্কা জুয়াড়ি ,বিশ্ব মাগিবাজ 

পাত্রী এখনো আঠারো পেরোয় নি ,

তাতে আপনার আমার কি 

আমাদের খালি পেটে খাওয়া ,মোগলাই বিরিয়ানি 

জানি মশাই মশাই জানি আমি সাধারণ। 

.

কত ধানে কত চাল 

বাপ্ ,মা মরা মেয়েটা রোজ নিয়ম করে বিছানা সাজায় ,

বিছানা তোলে কাকুর ঘরে। 

না না বৌদি আপনাকে কেউ বলে নি তার দুঃচরিত্র কাকুর কথা 

কিংবা আপনার ঘরে যে  লোকটা সেও যে  কতটা দুঃচরিত্র। 

অরে কার বাপের কি 

যতক্ষন মিথ্যা অন্ধকারে ধামা চাপা 

ততক্ষন তাই সত্যি। 

দেখুন না অগণন ফেনা শ্যাম্পু সেরে উঠে আসা দুপুরের নিসর্গ রোদ্দুরে 

পাশের বাড়ির সদ্য পাশ করা যুবকের চোখে দূরবীন 

হাতে পুরুষাঙ্গ 

তাতে কি রাস্তার ওপারের মহিলা মায়ের বয়সী। 

বীজগাণিতিক ধারাপাত 

যতক্ষণ নামছে চোখের আড়ালে নামতে দিন 

কিন্তু সত্যিকে বাড়তে দেওয়া যাবে না। 

.

সন্ধেবেলা আলাপচারিতা

ভবিষ্যৎ রোমান ঘড়ির সংখ্যায় বিকোনো মাতৃভাষায় আমরা সভ্য 

প্লিজ ফাক করবেন না 

বরং কথায় কথায় সময়কে বলুন ফাক ইউ ।

 ভবিষ্যৎ প্রাদেশিকতার ভিন্ন মতবাদে সভ্যতার গলি ,মোহল্লা ,পাড়াতে 

আমরা বীজ বুনছি মিথ্যের ভালো থাকায় 

প্লিজ ভালো থাকুন 

আপনার বাপের কি। 


আলো কাহিনী

 আলো কাহিনী 

... ঋষি 

.

উজ্জ্বল রোদ্দুর  চা বাগিচার সামনে আলো এসে দাঁড়ালো 

ফিরে তাকালো কর্মরত সেই জন খাঁটা বস্তি যুবতী ,

গায়ে গতরে বেশ পুরুষ্ট শরীরে সেই যুবতী আলোকে বললো

 " বুঝলে আমার বস্তিতে আলো থাকে না গো 

তুমি বস্তিতে যেও আমার সাথে "।

আলো মুখ টিপে হাসলো ,মনে মনে বললো 

আমি কি মাগনায় আসি ,কি পাবো সেখানে ?


আমি একবার প্রশ্ন করেছিলাম আলোকে 

তুমি কার ?

উত্তর পেয়েছিলাম শ্যামবাজারে সেই কানা,খোঁড়া  জহর ভিখারির কাছে ,

বেশ সে গান করে বলে দিল 

কয়েকটা টাকা দিয়ে যান বাবু ,বাড়িতে ভরন্ত বৌ 

সামনে দাঁড়িয়ে একজন সম্ভ্রান্ত মহিলা এমন করে  তাকালেন 

যেন ভিখিরির বৌ কোনো বৌ থাকতে নেই ,

থাকতে নেই কোনো আলোর গাঁথা বোবা অন্ধকারে। 

.

গৃহস্থের ঘরে কে রে ?

বারবনিতার ঘরে কে রে ?

টাটা ,বিড়লা কিংবা মোগলাইয়ের ঘরে কে রে ?

আলো মুখ টিপে হাসে 

আলোর শরীরে বেশ টিপটপ পোশাক ,গায়ে ফরাসি সেন্ট ,পায়ে দামি জুতো 

সে দর্পে পা বাড়িয়ে হেঁটে যায় এই সভ্যতার লাল জাজিমে ,

মাটিতে পা পরে না তার 

পা পরে না ধুলো জমা এই নোংরা শহরের অলিতে গলিতে। 

লাবণ্যে আলো থাকে 

রূপে আলো থাকে 

আলো  থাকে এই সভ্যতার পাঁচতারা সাজানো হোটেলে, 

অথচ  সাধারণ গৃহস্থের অন্ধকারে রুগ্ন বেড়াল ডাকে

অথচ কারখানার স্ট্রাইকে আলোর পুলিশ হাঁকে ফায়ার 

লুটিয়ে পরে একটা অন্ধকার শরীর একলা কান্নায়।

.

যেহেতু আলোর কোনো শব্দ থাকে না 

সেহেতু আমি তুই সব বিশাল বড়ো বোদ্ধা হয়েও শ্যাম্পুর ফেনাতে এল খুঁজি 

চামড়া উপর ঘষে তুলে ফেলি অন্ধকার। 

আসলে আলো এমন করে আসে না 

আলোকে আনতে হলে সকলকেই সত্যি বলতে হবে 

আর আলো জানে সে কথা।  

ঘুম আসছিলো না


 

ঘুম আসছিলো না 

... ঋষি 

.

ঘুম আসছিলো না তোমার কথা ভেবে 

ঘুম আসছিলো না আমার রাষ্ট্রের কথা ভেবে 

মুঠো ভরা তাপমান

 হঠাৎ শরতের রোদে মেঘ করে আসা অন্ধকার আকাশের কথা ভেবে।  

ঘুম আসছিলো না তোমার কথা ভেবে 

সভ্যতার দূরে একটা অসভ্য সময়ের মুখোশে আমি নিতান্ত সামাজিক। 

.

আলগোছে সরিয়ে রাখা সম্পর্কের ভার 

শহরের প্রতিটা প্রাঙ্গনে , সিঁড়ি পারে কেঁপে ওঠে বহুতল ঘুম,

অন্ধকার এই সভ্যতায় বড় একান্ত 

 কাছে আসে বাসরাস্তা শব্দের রাজপথ ধরে কোনো বিষণ্ণ রাত্রি ,

হাইওয়ের ঘুম হারিয়ে যায় 

খোঁজে সবুজ বুক ,খোঁজে সবুজ রাষ্ট্র। 

.

ঘুম আসছিলো না 

সংকেতে শেখা অনুভূতির চিত্রমালা শুধু কাছে দূরে ,

কতটা জটিল হয় শৈশবে  ফিরে আসা অন্য শৈশবের হাত ধরে?

 শিশু তো সরল অর্থে সারাদিন শব্দে থাকে 

এবং জটিলে সুখ ও স্বপ্ন লেখে কাঁপা কাঁপা হাতের অক্ষরে। 

কতটা জটিল হয় একান্ত যৌবন যদি শুয়ে থাকে মাইলফলক বুকে নিয়ে 

যদি যৌবনের অধিকার দীর্ঘ ছায়া ফেলে জলে নেমে যায় 

যদি যৌবনের ব্যাভিচার ঠোঁটে তুলে নেয় মোম 

অকাল বিপ্লব 

অকারণ তাপমানে ডুবে যায় তোমাকে লেখা চিঠিগুলো 

ফিরে আসে চেনা রিংটোন রাস্তা বন্ধ করে। 

.

ঘুম আসছিলো না 

ঘুম আসবে না আর কোনোদিন আমার চোখের পাতায় 

জীবন শব্দটা  হতভম্ব করে দেয়,

 কবিতা লেখার মতো শব্দগুলো ডানা ঝাপটে পাখি হয়ে বসে রাষ্ট্রের ডালে ,

এখন তো সভ্যতায় গাছ শব্দটা বোকামির নাম 

এখন তো সভ্যতায় গাছ শব্দটা বাড়ন্ত শহরে মৃত্যুর নাম ,

পাখি আকাশে বসে গাছ পায় না 

শুধু ডানা ঝাপটায় 

হ্যাঁপিয়ে যায় একসময় 

তুমি বলো চলন্তিকা শান্ত ,সম্মোহনের ঘুম আসবে কি করে এই সময়। 

এখন শেষ সন্ধ্যায়

 


এখন শেষ সন্ধ্যায় 

... ঋষি 

.

সমুদ্র এত সহজে পেরিয়ে যেতে  পারি

এত প্রেম কুড়িয়েছি  রৌদ্র দগ্ধ জীবনের জলছবিতে  নিস্তরঙ্গে । 

এত বাতাসের গন্ধ

এত বাতাসের কটু গন্ধ সারা সময় জুড়ে ,

তবুও দাঁড়িয়ে আমি বড়ো অসহায় তোমাকে শুনবো বলে 

এখন  শেষ সন্ধ্যায়। 

.

 মন খারাপের ইশারায় ফিরে এসেছি বিকেলে সাদা পাতায় 

জনশ্রুতির  কলরবে পা ফেলে হেঁটেছি সারা শহর 

বয়সের কাঁচা পাকা চুলে আজ বাড়ন্ত শৈশব 

তোমাকে দেখতে চায়   বিশ্বাসে

 এবং 

অগাধ  ত্রিভুজের গড়ে ওঠা নিঃশ্বাসে 

জীবনের অন্যমস্ক  স্বভাব আজ নতুন দিনে।

.

ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানো ভালো 

চলে যাওয়া বসন্তের  আশ্বাসে, ছড়ানো কফির কাপে 

সেই মেয়েটি দিনলিপি লিখে নিজের মতো করে 

সেই মেয়েটা একলা এসে দাঁড়ায় যেখানে সমস্ত মুহূর্তরা জড়ো করা।   

 ইদানিং আর সকাল দেখতে ইচ্ছে করে না 

এখন সন্ধ্যাতে আমি গিয়ে দাঁড়ায় ,

যদিও ভোরের গন্ধ কড়া নাড়ে সদর দরজায়,মনে হয়, জেগে উঠি

মনে হয় এইবা বুঝি জীবনের স্যাক্সোফোনে নতুন সুর 

নতুন সরগম।  

.

প্রিজমের পরত পেরিয়ে আরও ঝুঁকে যায় আলো

 কুড়নো শব্দের রাশি স্তূপাকৃত আমার লেখার  টেবিলে

মাথা নিচু করা রাইটিং ল্যাম্প 

যেন আমি দাঁড়িয়ে। 

আর সেই মেয়েটা প্রতি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যায় আজও 

আমাকে সম্বল করে 

প্রতিদিন 

একই সন্ধ্যায় আমিও গিয়ে দাঁড়ায় ভাবনার মোড়ে। 

Thursday, September 17, 2020

কবি আর ঈশ্বর



কবি আর ঈশ্বর
.. ঋষি  
দাঁড়িপাল্লাতে দাঁড়িয়ে আছি
একদিক নেমে যাচ্ছে, আমি সরে যাচ্ছি দুর থেকে দুরে, 
 পরিচিত বাতাসের সুরে
রান্নাঘর থেকে শুনতে পাওয়া আগমণী সুর 
বড় বেশি অসময়ের এই সময়। 
.
বুকের বাগানে বেদানা খাচ্ছে ঈশ্বর
আর আমি নিজের বেদনায় কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছি জীবন, 
 ঠিক এই সময়  স্টেথিসস্কোপ গায়ে নিয়ে সাদা চামড়ার ঈশ্বর
বর্ণপরিচয় খুঁজছে চামড়ার পোড়া গন্ধে, 
হা ঈশ্বর এই বুকে কিছু পাবেন না 
নিকোটিন ছোবল আর অজস্র মৃত কবিতার লাশ ছাড়া। 
.
 কবি ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে একলা বারান্দায় 
ভালো করে খবর নিয়ে জানবেন কবিদের বারান্দা শূন্য চিরকাল। 
ঈশ্বর চলে যাচ্ছেন সিঁড়ি বেঁয়ে 
 সিঁড়িঘরে জমানো আছে একটা গোটা জীবনের ধুলো
পুরনো বইয়ের টেবিলে রাখা অসংখ্য অনুভুতিতে ভরা খাম বন্ধ চিঠি। 
কবি ছাদের উপর দাঁড়িয়ে এখন 
সকালের একলা আর্তনাদ, বিকেলের না বলা কথা
আজ এতগুলো বছরে ঝগড়া ছেড়ে কবি  দেখছে ঈশ্বর এগিয়ে যাচ্ছে
ডাক্তারের জামা পড়ে।  
ডাক্তারের কাছে কবি এক রোগী, কবির কবিতা সব পাগলামি
অথচ কবি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে 
হঠাৎ আকাশের শরতের মেঘ থেকে অসময়ের বৃষ্টি নেমে এলো
কবি দেখছে এতগুলো বছর সে ভিজছে, 
কবি দেখছে ঈশ্বররুপী প্রেম রাস্তা দিয়ে একলা যেতে যেতে ভিজছে 
অথচ কবি ভিজছে একলা প্রেমে 
শব্দের গভীরে অন্য কোথাও।

খোঁয়াড়




খোঁয়াড়
... ঋষি 
 
আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছে
আমার মাথায়  মহিষের মাথা, দুটো সিং আর দুর্বলতা,
আমি মায়ের কাছে গিয়ে  দাঁড়িয়েছি 
আমার সারা গায়ে কালো, কালো লোম, 
বাবা বলতেন 
ধর্মের ষাঁড় তোকে দিয়ে কিছু হবে না। 
.
ঘুম ভাঙলো সকালে
দেখি ভাই রেডিও স্যিগনাল ধরে অক্সিজেন নিচ্ছে পৃথিবীর, 
কিন্তু আমি তো  পৃথিবীর গায়ে খিদে  গন্ধ পায় চিরকাল 
সে যে আরও মারাত্নক। 
আমি উঠে গেছি রান্নাঘরে মায়ের কাছে
কারন মায়ের গায়ে কেন জানি ভাতের ফ্যানের গন্ধ। 
.
কখন যেন আমি বড় হয়ে গেছি 
বাবাকে দেখি একলা মাঠে পায়চারি করছে সারা দিনরাত 
আরও অদ্ভুত বাবার বুক পকেটে মায়ের রান্নাঘর। 
রান্নাঘর বদল 
আমি সন্তানের কাছে গেছি 
সন্তান আমার বুকপকেটে খুঁজছে অধিকার, 
আমি স্ত্রীর কাছে গেছি 
স্ত্রী আমার গলায় অর্ধচন্দ্রাকারে পড়িয়ে দিয়েছে ফুলের দড়ি, 
আরও অদ্ভুত 
এখন বাবা আর আমার দুজনের আয়নায় নিজেদের মাথার বদলে মহিষের মাথা 
একই রকম দেখতে,
শুধু তফাৎ 
আমি এখন বাবাকে দেখি খোঁয়াড়ে 
আর নিজেকে সংসারে, 
আর আমি মাকে দেখি ঘাস কাটছে
আর স্ত্রীকে নিয়ম করে আমার মুখের গোড়ায় এগিয়ে দিতে  দেখি
এক জাবনা ঘাস।

সমুদ্রে মুখোমুখি ঈশ্বর



সমুদ্রে মুখোমুখি ঈশ্বর
...ঋষি  
সমুদ্রের মুখোমুখি বসে আমি আর ঈশ্বর
ঢেউ ভাঙছে, ঈশ্বর স্থির তাকিয়ে আমার চোখে 
ভারতবর্ষ খুঁজছে। 
আমার আর ঈশ্বরের মাঝের টেবিলে এক বোতল ভালোবাসার সুরা
ঈশ্বর গ্লাস তুলে নিলেন 
আমি চুষছি নেশার গ্লাসে পাচ্ছি সমুদ্রের নোনতা বাতাস। 
.
ঈশ্বর তাকালেন 
ঈশ্বর হাসলেন, 
আমি হাসতে পারছি না,পারছে না ভারতবর্ষ হাসতে। 
আমার বুক পুড়ছে
ভারতবর্ষের তিনদিকে ক্রমশ  একলা অপেক্ষায় সমুদ্র, 
ঈশ্বরের সাথে বসলে আমার একলা লাগে
তেমনি একলা আমি সমুদ্রের মুখোমুখি বসে। 
.
আমাকে ঘিরে মাথার উপর রান্নার কড়াতে লাগানো তারাগুলো
সাদা ঠোঁটে হাসছে 
আমি হাসতে পারছি না
হাসতে পারছে না ভারতবর্ষ, 
তারাদের তবু আকাশ আছে, আমার আকাশ সেই মেয়েটা। 
ঈশ্বর ক্রমাগত ঢলে পড়ছে ভালোবাসায়,নেশায় 
আমি দেখছি সমুদ্রের অন্ধকারে দুরে মাঝি নৌকা
একলা ভাসছে 
ভারতবর্ষ বলে দেশটা ওই মাঝি নৌকায় লন্ঠনের আলো।  
আমি দেখছি মাঝিরা জাল ফেললো
একলা সমুদ্রে 
জল থেকে জালে জড়ানো আমার চেনা মেয়েটা নোনতা বাতাসে, 
ঈশ্বর হঠাৎ নেশার ঘোরে ভালোবেসে বললেন 
ওরে তোর চোখে ভারতবর্ষ দেখতে পাচ্ছি
দেখতে পাচ্ছি একটা মাছ আর ভালোবাসা।

সমুদ্রে মুখোমুখি ঈশ্বর



সমুদ্রে মুখোমুখি ঈশ্বর
...ঋষি  
সমুদ্রের মুখোমুখি বসে আমি আর ঈশ্বর
ঢেউ ভাঙছে, ঈশ্বর স্থির তাকিয়ে আমার চোখে 
ভারতবর্ষ খুঁজছে। 
আমার আর ঈশ্বরের মাঝের টেবিলে এক বোতল ভালোবাসার সুরা
ঈশ্বর গ্লাস তুলে নিলেন 
আমি চুষছি নেশার গ্লাসে পাচ্ছি সমুদ্রের নোনতা বাতাস। 
.
ঈশ্বর তাকালেন 
ঈশ্বর হাসলেন, 
আমি হাসতে পারছি না,পারছে না ভারতবর্ষ হাসতে। 
আমার বুক পুড়ছে
ভারতবর্ষের তিনদিকে ক্রমশ  একলা অপেক্ষায় সমুদ্র, 
ঈশ্বরের সাথে বসলে আমার একলা লাগে
তেমনি একলা আমি সমুদ্রের মুখোমুখি বসে। 
.
আমাকে ঘিরে মাথার উপর রান্নার কড়াতে লাগানো তারাগুলো
সাদা ঠোঁটে হাসছে 
আমি হাসতে পারছি না
হাসতে পারছে না ভারতবর্ষ, 
তারাদের তবু আকাশ আছে, আমার আকাশ সেই মেয়েটা। 
ঈশ্বর ক্রমাগত ঢলে পড়ছে ভালোবাসায়,নেশায় 
আমি দেখছি সমুদ্রের অন্ধকারে দুরে মাঝি নৌকা
একলা ভাসছে 
ভারতবর্ষ বলে দেশটা ওই মাঝি নৌকায় লন্ঠনের আলো।  
আমি দেখছি মাঝিরা জাল ফেললো
একলা সমুদ্রে 
জল থেকে জালে জড়ানো আমার চেনা মেয়েটা নোনতা বাতাসে, 
ঈশ্বর হঠাৎ নেশার ঘোরে ভালোবেসে বললেন 
ওরে তোর চোখে ভারতবর্ষ দেখতে পাচ্ছি
দেখতে পাচ্ছি একটা মাছ আর ভালোবাসা।

এক থালা ভাত



এক থালা ভাত
... ঋষি
 


নিরুপায় না চাইতে আপলোড হয়ে চলেছে সম্পর্ক 
ডাউনলোড হচ্ছে অসংখ্য ছায়া, আবেগ, আর মুহুর্ত,
এর মাঝে  বিষাদের রিংটোন 
শব্দরা ঝনঝনিয়ে ওঠে দাঁতে ব্যাথার মত কোন প্রিয় কবিতায়, 
বেঁচে আছি 
খোলা জানলার শেষে, শেষ দরজায়। 
.
অনুভুতিরা ভেসে আসে 
পাহাড়ের সেই একলা কোলে আজকাল শীতলতার ঘর বাড়ি, 
শুন্যে একা মেঘ
একলা অভ্যেস। 
কুয়াশায় ঢাকা সেই পাহাড় সরিয়ে সময়ের কোলাহল 
আমার ডেস্কটপে শরতের ভীড় তবু একলা শহর । 
কি বোর্ডের বেয়ে চলা আঙুল গুটি গুটি স্মৃতিদের স্পেস 
শুন্য পৃথিবীতে ভীড়, তবু একলা অবশেষ। 
তারপর সেই কাব্য 
স্তব্ধ পৃথিবীতে কবিতা বারোমাস, 
নদী আর ভাটিয়ালি গান
 সময়ের অবকাশ।
.
তবু না চাইতে ডাউনলোড হচ্ছে সন্ধ্যে
আপলোড হচ্ছে অন্য একটা নতুন দিন, 
রিমেকি গান 
স্তব্ধ শহর 
শহরের গলি, মোহল্লায় আজ একলা খিদের গন্ধ,
এরপর যদি মনে পড়ে তোকে 
খিদে পেটে থাকবো 
মনিটরে শরত বদলে লাগাবো গরম এক থালা ভাত। 

Tuesday, September 15, 2020

পাহারাদার




পাহারাদার 
,... ঋষি
 
নিজের ভিতর অনেকগুলো ছায়া টের পাই
ছায়ার ভিতর খুঁজে পাই না ফুরোতে চাওয়া জন্মগুলো, 
সব বুঝি
সব বুঝেও না বুঝি, 
বুঝি আলাপচারিত, বুঝি সামাজিক দায়,  বুঝি সৌজন্য বিনিময়
তবুও তোমার ছাদে অন্য পায়রা উড়লে রাগ হয়
তবুও অন্যের বাকুমবাকুম আমার কাছে সময় নষ্ট
তবুও তোমার ঠোঁটে অন্য নাম শুনলে সারা শহরময় বিরক্তি। 
.
এসো প্রেম লিখি চলন্তিকা
অসময়ের ছায়ার খোঁজে বৃদ্ধাশ্রমে পাশাপাশি ঘর, 
এসো পাথর লিখি
পাথরের গায়ে খোদায় করে লিখি অকারনে মনের তারিখগুলো,
আমি চোখ ভিজিয়ে বসি
তুমি বসো আমার চোখের জলে পা ডুবিয়ে। 
.
তারপর বারংবার
এস্রাজে বেজে উঠুক পুরনো সেই দিনের কথা,
তোমার কাঁচা- পাকা চুলে খেলনাবাটি খেলুক ফ্রক পরা সেই মেয়েটা
আমি না হয় মেঝেয় বসি তোমার পায়ের কাছে
তোমার উরুতে মাথা রেখে খুঁজি সময়ের শ্রাবণ। 
ভালোবাসা শিখতে আমি বৃক্ষ আর সাদা কাগজ জেনেছি
পেয়েছি অহংকার বৃক্ষের হৃদয়ের 
তারপর সাদা পাতায় লিখছি আগামীর শব্দদের
যাদের ঘুম নেই 
আছে অপেক্ষা 
তাইতো তোমার ছাদের পাহারাদার আমি
কিংবা তোমার শহরে শ্রাবণ। 

রুপকথার শহর



রুপকথার শহর 
... ঋষি
আমরা যারা মরতে মরতে রোজ মরছি নিজের সাথে
আমরা যারা রোজ হাঁটছি একি শহরে মুখোসের সাথে,
আমরা যারা রোজ রাত জাগছি 
রোজ কাঁদছি 
নিজের সাথে, 
তাদের জন্য শুধু একলা থাকে বাথরুমের শাওয়ারের জল
তাদের জন্য শুধু একলা চাওয়া একটু বেঁচে থাকা। 
.
ফিরতে চাওয়া কবিতারা যদি সময়ের বুক হয়ে যায়
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভেজা শহর
সেই বাসস্ট্যান্ড
কলেজের ক্যান্টিন 
চিনে বাদাম, আলু কাবলি, চেনা হাসি, উষ্ণ ঠোঁট
রুপকথা 
রাংতা মাখা এই শহরে স্মৃতিদের ভীড়।   
.
আমরা যারা নকল হাসিতে রোজ বাঁচছি
একলা রেসকোর্স, ভিক্টোরিয়া,শ্যামবাজার, কলেজস্ট্রীট,
মিমিক্রি করা আমরা 
আওয়াজে চেনা শহর অচেনা লাগে, 
অচেনা লাগে আয়নায় দেখা মুখ হঠাৎ এখন নিজের কাছে। 
সব বদলায়
বদলায় শহর রোজ 
বদলায় সময়ের জনসংযোগ। 
তবু কিছু থাকে
মনের ঘরে,ঘরের মনে, ইচ্ছে ডানায়
একটা মেইল করবি প্লিস
একটা ছবি। 
জানি ছোঁয়া যাবে না পুরনো সেই হাসি 
তবু হয়তো রোমন্থনে উঠে আসবে চেনা মুখ
চেনা সময় । 
 
 

Sunday, September 13, 2020

তুমি ছাড়া (২)




তুমি ছাড়া (২)
... ঋষি
এক ছুট্টে সময় গিলতে ইচ্ছে করছে
ইচ্ছে করছে হঠাৎ একলা সেই মেয়েটাকে হাত ধরে বলি
পালাবি আমার সাথে ? 
আনারস নিংরে গ্রাইন্ডারে ফেলে
আমার ইচ্ছে করছে চোখের আলোয় লেগে থাকা মুহুর্তগুলোকে
খেয়ে ফেলতে ফলের রসের মতো। 
.
আমি কি তবে পাগল হয়ে গেলাম চলন্তিকা
একটা অদ্ভুত রোগ আমার সময়ে তোমার উষ্ণ উপস্থিতি যেন দাবানল 
আমি পুড়ে চলেছি ক্রমাগত নিজের ভিতর 
আমি মিশে গেছি শহরের ধুলোয় ক্রমাগত আমার বুকের উপর তোমার পায়ের শব্দ।
এ কি কল্পনা? 
নাকি দুর্ভিক্ষে প্রেম অসময়ের সময়ের দুর্বলতায়। 
.
আমি কিছু বুঝতে পারছি না
আমি কিছু শুনতে পারছি না সময়ে শব্দ
শুধু এগিয়ে আসা পায়ের শব্দ, চোখ বুজে পাওয়া হ্যালুয়সান, 
ছায়া ছায়া মেঘ
ছায়া চোখ 
নাকি সমুদ্র। 
আমি কি তবে পাগল হয়ে যাচ্ছি ? 
আমি কি তবে একলা হয়ে যাচ্ছি আরও ? 
আমার কবিতার শব্দগুলো হঠাৎ কেন তোমার মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছে ?
আমি কিছু শুনতে পাচ্ছি না সময়ে কোলাহল
আমি কিছু বুঝতে পারছি না সময়ের কেন আজ নিজের পোড়া গন্ধ। 
পুড়ে যাচ্ছি আমি
হারিয়ে ফেলছি নিজেকে
তুমি ছাড়া এইবার বোধহয় আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। 





তুমি ছাড়া


তুমি ছাড়া
.... ঋষি 
রৌদ্রের ভিতর, দিগন্তের ছায়ার ভিতর 
তোমার উষ্ণ উরু পুড়ে যায় সময়ের কবলিত শহরের বুকে,
বুক বলতে আমার মনে পড়ে 
আমার কবিতার শব্দরা যখন তখন তোমাকে চায় চলন্তিকা, 
ঠিক যেমন দিকশূন্য পাখি হঠাৎ চিৎকার করে ওঠে মধ্যরাতে
ঘুমিয়ে থাকা শহর তখন অভিসম্পাতের মতো। 
.
দিন কিংবা রাত,,,,,,  বিশ্বাস করো 
আমার কবিতায় কেউ ছিল না কোনদিন একমাত্র তুমি ছাড়া,
তুমি বলতে মনে পড়লো 
যখন আকাশের চাঁদ মুখ থুবড়ে পরে শহরের শেষ রাত্রির শোকে 
কিংবা সকালের পাখিগুলোর কিচিরমিচির ঘুম ভাঙায় নতুন দিনের  
তখনও কেউ থাকে না আমার কাছে
তুমি ছাড়া আর কেউ আসতে পারে না । 
জানি না আমার এই কবিতায় প্রেম কাঁদছে কিনা
জানতে ইচ্ছে করে না আজকাল আর মানুষ কাঁদছে কিনা, 
জানতে ইচ্ছে করে না অন্য কোন কথা 
তুমি ছাড়া। 
.
বিশ্বাস করো 
 ইদানিং আর তোমায় ছাড়া আর কিছু মনে করতে চায় না আমি
ইদানিং তুমি ছাড়া আর কিছু ভাবতে চায় না আমি, 
সময়ের ঘরে প্রহসন
একলা ঘড়ির মতো দেওয়াল আঁকড়ে টিক টিক
ঠিক যেন ঘন ছায়া অন্ধকার  আমার সারা শহরে
তুমি হাসছো। 
.
বিশ্বাস করো তুমি ছাড়া আর কিছু ভাবতে ইচ্ছে করে না আজকাল
তুমি ছাড়া বাঁচতে ইচ্ছে করে না,
আজকাল  ঋতু পরিবর্তনগুলো কেন জানি তুমি হয়ে যাও
আজকাল পথচলতি একলা বাতাসে তুমি ছুঁয়ে যাও
বারানসী থেকে কোলকাতা
চিতোর থেকে চন্দ্রবিন্দু 
তুমি ছাড়া কিছু খুঁজে পাই না আমি। 
 
  

Thursday, September 10, 2020

একলা বৃষ্টি

 


একলা বৃষ্টি 

... ঋষি 


বৃষ্টি পড়ছে ওখানে

আমি জানি ,আমাকে জানতে হয় সময়ের তাপমাত্রা 

খুব কালো করে আকাশ ঢেকেছে মেঘ

কিন্তু এ মেঘে বৃষ্টি,,, হবে না। 

সময় কই 

বৃষ্টি চিরকাল মেঘেদের সই 

আমার তো আর মেঘ হওয়া হলো না এ জীবনে। 

.

আমার এখানেও বৃষ্টি হয় চলন্তিকা 

রং ছাড়া ,গন্ধ ছাড়া বৃষ্টি। .......ডিসগাস্টিং ,অনবরত। 

তুমি কোথায় থাকো চলন্তিকা? 

বৃষ্টির কি ঘর থাকে ?

সে তো শুধু মানুষের ভাবনায় অদ্ভুত এক স্বপ্নিল উপলব্ধি। 

সত্যি কি তাই ?

তোমার ঘর আমার সাথে মিশে গেছে ,,,,,ঘর বদল।  

.

ঘরে তো থাকা হয় না কোনোদিন আমার 

আমার তো হৃদয়ের গভীরে পুকুরে বাস ,স্মৃতিতে বাস 

শহরের চ্যাটচ্যাটে চেতনায় মানুষ কৃত অন্ধকারে আমি থাকি

চিরকাল। 

সে হোক না বৃষ্টির ছাতা 

কিংবা শীতের কমলালেবু  অথবা তোমার সেই চোখ 

যা আমাকে ডাকে 

বলে ঘরে আয় বাউন্ডুলেপনায় জীবন কাটে না। 

দুপাশে নদী ,সময়ের ঘরদোর 

সারা শহর হারিয়ে যায় বসন্তের সাথে নির্দ্বিধায় চুক্তিতে 

অথচ আমি নিরুদ্দেশ 

আমি বানভাসি তোমার বুকের প্লাবনে খয়েরি রঙের তিলে। 

.

বৃষ্টি পড়ছে ওখানে 

আমি তোমাকে শুনতে পাচ্ছি মনের গভীরে নিরিবিলি জীবনে। 

এই বৃষ্টি চিরকাল 

কথা বলতে ইচ্ছে করছে ,

হাতের মুঠো ফোন ইশারায় তোমার সেই আদিম গন্ধ। 

শুনতে পারছো আমায় ?

কন্ঠ পেলে মুখোমুখি বসা যায় ? 

গভীরে গভীরে দুঃখকে ছোঁয়া যায়?

আমার একলা মেঘে। 

একলা রৌদ্র





 একলা রৌদ্র 

... ঋষি 


বেড়াতে যাবো 

রৌদ্র হবো ,ভাঙা বাড়িটার চালে একলা আমি  ,

হ্যা একলা রৌদ্র। 

বহুদিন সীমানার বাইরে পা দি নি 

আজ বহুদিন তাই বোধ হয় মন ভালো নেই 

আজ বহুদিন তোমাকে ছাড়া কেমন একলা লাগে। 

.

আমি রাত্রে ঘুমোয় না 

ঘুম আসে না দিনের পর দিন একলা এই শহরের সমুদ্রে ,

তাই বোধ হয় আর শরীর চলে না 

চলে না বুকের ভিতর স্পন্দনে হঠাৎ বেড়ে ওঠা একলা আকাশ। 

পাখি খুঁজছি 

কিন্তু জানা নেই কবিরা পাখি হয় কিনা 

কি কখনো আমি নবারুণ ভট্টাচার্যকে  পাখির খোঁজ করতে দেখি নি।

.

তবে কি আমি পাথর হয়ে গেছি 

পাথরের গায়ে দাঁত দিয়ে টেনে চলেছো অসংখ্য কবিতার মতো কিছু, 

অথচ  আমার কেন যেন পাখি হতে ইচ্ছে হয় 

রোদদুপুরে আমি হঠাৎ গামছা ছড়িয়ে পাখি হয়ে যায় 

হয়ে যায় রৌদ্র ,

ভোর সন্ধ্যাতে আমি পাখি ঝাঁপটায় 

আর রাত্রি হলে কেন যেন বন্দি আমি এই শহরের খাঁচায়। 

মাঝে মাঝে মনে হয় পাখিদের কি সংসার থাকে 

মনে হয় পাখিরা সত্যি দাঁড়িপাল্লায় জীবন মাপে আমাদের মতো 

নাকি আকাশের মাঝে উড়ে চলে গন্তব্যের ইশারায়। 

তাই তো আমার কোথাও যাওয়া হয় না 

তাই তো আমার অপেক্ষায় গন্তব্য থমকে নিয়মের বাড়িতে 

আর আমি রৌদ্র চিরকার 

সেই ভাঙা বাড়িটার  চালে একলা আমি। 


হেডলাইন

 



হেডলাইন 

... ঋষি 


মুখ লুকিয়ে রাখবে বলে ছদ্মবেশ নিল যে মেয়েটি

তাকে আমি চিনি ,

তার বুকের ভিতর কাঁচের বয়ামে বন্ধ প্রজাপতিগুলোকে 

আমি আয়নায় দেখেছি ,

দুঃখ আসে নি তার জন্য 

ফিরে এসেছে আমার গোধূলিবেলায় একলা শহর 

 সেই মেয়েটা আমি দেখেছি শহরের কোনো অজানা বাস স্ট্যান্ডে। 

.

আগুনের তাতে হাত সেঁকে নিচ্ছে মানুষ

শহরের ছোট ছোট গর্তে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে মানুষের ছোট আনন্দগুলো ,

শ্মশানে  ডোম তুলছে ঘেমো শরীর মৃত উত্তাপ 

অথচ মৃতদের আঙ্গুলগুলো  দিচ্ছে আগুন। 

শহরের কোনো ডিনার টেবিলে তোলা হচ্ছে ঝলসানো পাখি 

পাখিটি ঝলসে উঠেছিল সংসারে আসার আগে 

সংসার গিলছে 

গিলছে পাখি  

.

সামান্য দামে বিক্রি হওয়া মুখোশ ওয়ালার স্বপ্ন 

দেওয়া টাঙানো ,

আমি সেই মেয়েটাকে চিনি মুখোশ ছাড়া,

যে নিজের ঘরের খোঁজে হন্য হয়ে ঘর খোঁজে শহরের মুখোশওয়ালার ঘরে। 

সেই মেয়েটা একলা দাঁড়িয়ে অজানা বাস স্ট্যান্ডে 

অপেক্ষা করে গন্তব্যের। 

.

আমার শহরে একটা নদী আছে 

একবার মরে যাবার আগে সেই মেয়েটাকে আমি জড়িয়ে ধরবো  ,

জড়িয়ে ধরবো  নিয়মের ডিনারে সার্ভ হওয়া সেই পাখিটাকে 

নেশার চোখে। 

আসলে নেশা ছাড়া তাকে ছোঁয়ার স্পর্ধা আমার নেই 

স্পর্ধা নেই বয়ামের প্রজাপতিগুলোকে  আকাশ দেবার। 

তাই মাঝে মাঝে অসহ্য আমি 

এই শহরে বড় কোনো বিজ্ঞাপনী বোর্ডে পড়ে ফেলি 

লুকোনো হেডলাইন  

সেই মেয়েটাকে আমি ভালো রাখতে পারি নি। 


ট্রেন আর ট্রেন লাইন

 


ট্রেন আর ট্রেন লাইন 

... ঋষি 


সবার ভিতর একটা ট্রেন লাইন পাতা 

সেই জন্ম থেকে সকলেই শুনতে পায় ট্রেনের ভোঁ 

দেখতে পায় একটা খালি স্টেশন ,

ট্রেন থামলো 

মুহূর্তের কোলাহল 

আবার শান্ত স্টেশন। 

.

ট্রেন আসে ঝালমুড়ি ওয়ালা ,সিঙ্গাড়া ওয়ালা ,লজেন্স ,টফি ,কাবুলিওয়ালা 

কত শব্দ 

গরম চায় ,বাবু বিরিয়ানি ,জলের বোতল ,গ্রিন স্যিগনাল ,রেড স্যিগনাল 

স্যিগনাল ম্যান 

ট্রেন আর পাঁচ মিনিট প্ল্যাটফর্মে  .

তারপর 

হঠাৎ ফাঁকা ,শুনশান ,মানুষহীন 

যেন হঠাৎ পৃথিবীটা থেমে যায় এমন করে। 

 .

সবার ভিতর একটা ট্রেন লাইন পাতা 

সেই লাইনে আসা বিশেষ ট্রেনটাকে সকলে ধরতে চায় ,

রাতের  আকাশের নীচে কাশের হিল্লোলে ডুবে যাওয়া সেই ফটোফ্রেম 

অপু ও দুর্গাকে দেখতে পায় সকলেই ছুটতে  

ঝমঝম ছুটে যাওয়া রেলগাড়িদের পিছনে। 

বিকেলের নিভু নিভু আলো মেখে বাগানের নারকেল সুপুরি আর জাম গাছ

সময়ের শৈশবে সকলে ফিরতে চায় 

ছুটতে চায় পিছন ফিরে। 

আমার একার গভীরে  জানালা জুড়ে আজও রোজ আমি সেই স্টেশন দেখি 

ছেলেবেলা জুড়ে সেই বৃষ্টিকণারা

মেঘের দল ,নরম মেঘ ,

গা ভর্তি তুলোর মতো হাসি নিয়ে ভেসে আসে সোনালী রোদ। 

বাইরে বাইরে সকলে ছুটছি, উড়ছি ,পুড়ছি তবুও 

গভীরে  ট্রেন ছুটছে বুকের উপর পাতাটি লোহার পাত ধরে 

প্রতিদিন 

আর আমরা সকলে সেই ট্রেনটা ধরতে চাই। 


কাঁচের টুকরো

 


কাঁচের টুকরো 

... ঋষি 


তখন আমি একুশ নাকি পঁচিশ ,ত্রিশ হতে পারে 

মনে পরে না ,

মনে পরে একটা পথ চলতি মিছিলে সামিল আমি

 হেঁটে চলেছি অনেকের সাথে। 

গলা মেলাচ্ছি ,জিন্দাবাদ ,মুর্দাবাদ 

কিন্তু কিসের  মিছিল ?

স্লোগানে স্লোগানে সারা সময় জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে রিনরিনে কথকতা 

কাঁচের টুকরো ,পায়ে ফুটছে। 

.

রক্তাক্ত পায়ের দাগগুলো রাস্তার ধুলোতে 

হঠাৎ সামনে পুলিশের ভেন ,

হঠাৎ এলোপাথারি লাঠি চলছে ,চলছে  কাঁদানো গ্যাস 

কিন্তু মানুষ তো এমনি কাঁদছে ,

তবুও। 

আমি পালাচ্ছি অনেকের সাথে ,শহরের সাথে সময়ের সাথে 

কিন্তু কেন পালাচ্ছি  ?

.

কার প্রতিবাদ ? কিসের প্রতিবাদ ?

আমার মতো লোকটা সেই পালাচ্ছে আর এই পালাচ্ছে 

পালিয়ে চলেছে ,

সবচেয়ে আশ্চর্য আজ আমি বুঝেছি সেই মিছিল আমার বিরুদ্ধে 

সেই স্লোগান আমার মতো লোকের বিরুদ্ধে 

সেই পুলিশগুলো ,সেই কাঁদানো বোমাটা আর কেউ না 

আমারি নিজের লোক। 

.

তাই তো আজ আমি ধ্বংসকে ভালোবাসি 

ভালোবাসি মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং ,কর্পোরেট লাইফ 

কিংবা শহরের অলিতে ,গলিতে বিক্রি হওয়া সেই সাজানো শরীরগুলোকে 

যাদের শরীরে ব্যাধি ,যাদের হৃদয়ে জখম। 

আর যারা ব্যবহার করে ডিওড্রেন তাদের প্রতি আমার করুনা হয় 

হাসি পায় 

শালারা সময় ঢাকতে অসময়ে লাগিয়ে ফেরে। 

আমি বুঝে গেছি বহু আগে 

প্রতিটি বিপ্লবের আঙুল আমার দিকে তাক করা

প্রতিটি সময়ের অসুখের জীবাণু আমি

কারণ আমি সময়ের দারিদ্রতাকে মানি নি কোনো দিন 

কারণ আমি কচুরিপানা দেখলে মুগ্ধ হই 

কারন আমি বৃষ্টি দেখলে একলা ভিজি 

কারণ চলন্তিকাকে চিঠি লিখি রোজ আমার দিনান্তে 

কারণ আমি ধর্ম মানি না 

কারণ আমি রাষ্ট্রের সাজানো নিয়ম মানি না 

কারণ আমি গণতন্ত্র মানি আর রাজতন্ত্রের ছেবলামিকে খিস্তি দি 

কারণ আমার সাঁইত্রিশ বছর বয়সে আমি জানতে পেরেছি 

আমি আদৌ মানুষ না 

আর এই পৃথিবী আমার না। 

তুমি হাসলে বলে

 


তুমি হাসলে বলে 

... ঋষি 

.

শব্দরা অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে হঠাৎ 

হঠাৎ নিয়ম ছাড়া বুকের ভিতর  পাখিদের কিচিরমিচির,

ছায়া ফেলে রৌদ্র বিকেলের বারান্দার টবে রাখা ম্যানিপ্ল্যান্টে 

সবুজ বেড়ে ওঠে মনে গভীরে ,

আঁচড়ে ফুটে ওঠে শব্দমাফিক একটা স্কেচ সাদা পাতায় 

তুমি হাসলে বলে। 

.

তুমি হাসলে বলে 

সারা শহর জুড়ে  হঠাৎ ছড়িয়ে পরে  গন্ধ ও রঙ,

লুকোনো  বেদনাগুলো  ঝরে গোটা পৃথিবীর  বেরঙিন বৃষ্টির মতো। 

তাকিয়ে থাকা দৃষ্টান্তস্বরূপ 

ফুরোনো সূর্যের আলোর গাছের সবুজ পাতাগুলো আনন্দে মাতোয়ারা  

আমার দুঃখের গবেষণা, সময়ের  মাপজোক

সব অকারণ মনে হয় তোমার মুখের হাসিতে। 

.

শব্দরা অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে 

দায়হীন নিয়ম বহির্ভূত একটা আয়নায় নিজেকে কেমন সুখী মনে হয় ,

আল্পসের শিখরে তখন সূর্যের শেষ বিকেলের  আলোকরশ্মি 

তখন আমাকে  আনমনা করে। 

তুমি হাসলে বলে 

হরিণীর কস্তুরী গন্ধ , সদ্য জন্ম নেওয়া আকাশের তারাগুলো 

যেন জন্মের মতো মনে হয় 

ক্ষণজন্মা। 

জানি না এই পৃথিবীতে কে এসেছিলো প্রথম এমন প্রশান্তি নিয়ে 

জানি না আমার রাত জাগা স্বপ্নগুলো আজকাল কেন জানি সত্যি মনে হয় 

অপার ঢেউয়ের স্তনে,ঢেকে রাখা বরফ 

এমন করে শীতল করো না আমায়। 

.

জানি ভালোবাসা সময়ের  মরশুম কিনা 

এই মুহূর্তে আঁচলে পেতেছে চাঁদ, শব্দের অদ্ভুত  অনুবাদ

ঠোঁট, আঙ্গুল ,সারা মুহূর্ত জুড়ে তুমি 

ছাই লোভী ভিখিরি আমি 

তাকিয়ে আছি খুব দূরে যেখানে এই শহর শেষ 

এই নগর শেষ ,এই দূরত্ব শেষ 

শুধু তুমি হাসলে বলে। 


Tuesday, September 8, 2020

বরফের কবিতা



বরফের কবিতা
... ঋষি 
তোমাকে ঈর্ষা করি রোজ দিন প্রতিদিন 
ফিনফিনে হাওয়ায় উড়তে থাকা তোমার আঁচল 
উড়তে থাকে আমার শহরে,
তোমার মত ভালোবাসতে পারি না আমি পাথর বুকে রেখে
আঁধার চোখে,
আমি অন্ধকার দেখি 
কিন্তু নিয়ম করে সকাল আসে রোজ কবিতার মত। 
.
প্রেমিকার তাপমাত্রায় শহর ডুবে যায় 
ডুবে যায় ঠোঁট, 
ডুবে যায় দিন রাত নিয়ম করে হঠাৎ দুম করে লোডসেডিং
অন্ধকারে দুটো ছলছলে চোখ 
কাছে ডাকে
বুক পুড়ে যায় যন্ত্রনার কবিতার মতো মৃত শব্দে। 
.
 তোমাকে ঈর্ষা করি রোজ দিন প্রতদিন 
তুমি বেঁচে ওঠো আমার কবিতা লেখার সময় সাদা পাতার মুখোমুখি,
তারপর কবিতা লেখা শেষ হয়
আমি মরে যায় প্রতিবারে তোমার হাত ধরে
সমুদ্রের গভীরে। 
ভাসতে থাকে আমাদের সবুজ নগ্ন শরীর নিরিবিলি জ্যোৎস্নায়
পাশাপাশি মেঘ ভেসে যায়
পাশাপাশি ভেসে যায় আমাদের পাশে হাজারো বেঁচে থাকা। 
ঘুম ভাঙে
ঘোর ভাঙে
আমি দেখি তুমি খুঁজতে এসেছো আমার শরীর বরফঘরে
আজ থেকে হাজারো বছর পরে,
আমার ঈর্ষাটা হঠাৎ বদল হয় অভিমানে
আর কবিতারা তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে বরফ হয়ে যায়।
 

সময়ের অং ক



সময়ের অংক
... ঋষি 

ঠিক কতক্ষন তোমায় দেখি নি চলন্তিকা
তবুও জানো কয়েক হাজার বছর, কয়েক লক্ষ্য ঘন্টা, কয়েক কোটি যুগ
আমি বেঁচে আছি যেন তোমাকে ছাড়া
জানি না মুহুর্তদের ঘর বাড়ি ছেড়ে আজ আমি কতদিন বেঁচে আছি। 
আমার আর মনে পরে না, 
আমার জীবনের অংকগুলো বরাবর এত জটিল তাই হয়তো বুঝতে পারি না
তাই মাঝে মাঝে সমস্ত অংকের পিছনে দাঁড়িয়ে 
আমারও  আজকাল সময়ের   অংক শিখতে ইচ্ছে  হয়। 
.
ঠিক কতক্ষন 
অবধারিত মুহুর্তদের ছায়াছবি নিয়ে ভুতের মত আমি একা শহরে,
শহরের অলিতে গলিতে অজস্র ফটোফ্রেম 
আমার মত আধপাগলা লোকগুলো কেন যে মুহুর্তে বাঁচে, 
জানতে ইচ্ছে করছে তুমি কি করছো এখন ? 
বিকেলে চুল আঁচড়াচ্ছো, ঘুমোচ্ছ না ফিরে আসছো আবার অংকের পৃথিবিতে
নাকি হাঁটছো সময়ের অযুত নিযুত সম্পর্ক ধরে। 
.
 ঠিক কতক্ষন তোমায় দেখি নি চলন্তিকা ? 
সদ্য ফুরোনো আলোয় শহরের লাইটপোস্টগুলো মিথ্যে পোশাকে দাঁড়িয়ে
একা রাস্তা দেখাচ্ছে । 
অথচ তোমার আমার মাঝে একলা সাঁকোটা দুলছে অন্ধকারে
আমলকী ঘ্রাণ, লেবুপাতার গন্ধ 
সকালের ফুলগুলো রাস্তায় পরে থেকে এতক্ষন যেন শুকিয়ে গেল
ঠিক যেন আমাদের সময়। 
হাঁড়্গুলো শব্দ করছে, সময় করছে জব্দ
তোমাকে না দেখে, তোমাকে না পেয়ে, আমি ভেসে বেড়াচ্ছি দেহহীন, 
মন্দিরে শোনা যাচ্ছে সন্ধ্যা আরতি,
চতুর সানাই, আজ প্রায় হাজারো যুগ,মরচে পড়া হলদে ফটোফ্রেমে
অংকের সিঁড়ি।
আমি অংকতে চিরকাল কাঁচা সম্পর্কের
 তাই হয়তো কয়েক হাজার বছর, কয়েক লক্ষ্য ঘন্টা, কয়েক কোটি মুহুর্ত
আমার একলা থাকতে কষ্ট হয়  
সময়ের অংকে। 




নতুন কি আর




নতুন কি আর 
... ঋষি
অশ্লীলতার তকমায় মোড়া আমার শহর
আরেকটা ধর্ষন,
প্রতিবার মেয়েটাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হয় 
আজ না হয় গাড়ির ভিতর। 
নতুন কিছু নয় 
শুধু মানুষের বোধে আসে না সভ্যতা আর ধর্ষনের তফাৎ
একটা আত্মা আর শরীরের তফাৎ। 
.
অজস্র অনুবাদ
মণিপুরের মা আজও  দাঁড়িয়ে তোমার আমার মায়ের পাশে,
সেই রাস্তায়
নগ্নতার পাশে। 
নতুন কিছু নয় শুধু নিজের মা, বোনের লজ্জা আছে
তাদের লজ্জায় আমাদের সন্মান 
আর অন্যের মা- বোনের শুধু শরীর আছে । 
.
না না বুঝছি না
বুঝবো না
অর্ডার অর্ডার হাতে তুলে নেও উষ্ণতার মাংস, 
মোবাইল স্ক্রীনে শরীর দেখা, ওয়াটসাপ শেয়ারিং 
না না লজ্জা না,গোপনীয়তা 
আপনারও তো ইচ্ছে হয় কামের সাথে গরম শরীর 
প্রেম প্রেম ভাবতে। 
প্লিজ লজ্জা পাবেন না যেখানে সেখানে নিজের প্যান্ট খুলতে 
প্লিজ লজ্জা পাবেন না 
পাশের বাড়ির সদ্য কুঁড়ি ফোঁটা মেয়ের বয়সী শরীরটাকে লুকিয়ে দেখতে,
আরে মশাই বৌদি মানে রগরগে ব্যাপার
সেখানে মা আশে কোথা থেকে। 
.
আপনি ততক্ষন সভ্য যতক্ষন আপনি সু্যোগ পাচ্ছেন না
দো দিন কি জবানিমে 
প্লিজ একবারও ভাববেন না
 আপনার মতো কোনো সভ্য নাগরিক হয়তো সুযোগ বুঝে
আপনার মাকে, হয়তো বৌকে কিংবা মাকে.... 
প্লিজ আপনি ভাবছেন কেন 
খুলে ফেলুন 
লেগে পড়ুন 
নতুন কি আর? 
ভাবার কি আছে ?  মা বলে কি শরীর নেই? 


 
 
  

Monday, September 7, 2020

সৌজন্যে সুনীল বাবু

সৌজন্যে সুনীল বাবু
এই শহরে বদলেছে অনেক কিছু, আরো বদলাবে,
কিন্তু এই শহরে নীরা বুকে নিয়ে বেঁচে থাকবে আজকের পরে বহু্যুগ 
আমার মত আরো অনেকে।
সত্যি বলতে কি হাতপাখা বদলে কখন সিলিং ফ্যেন,এসি হয়ে গেল
কিন্তু মনের গভীরে আজও বয়ে চলে এই শহরে অন্য হাওয়া। 
.
আজকাল " প্রথম আলো "তে কেউ বিশ্বাস রাখে না
রাখে না বিশ্বাস  তোমার মতো চির যুবকের ভাবনায়, 
দিন বদলায় শহরে রোজ খালি পায়ে হাঁটে হাজারো কবি বুকে নিয়ে হাজারো ভাবনা
অথচ কারোর "  অর্ধেক জীবন " ও স্পর্শ করে না কবির যন্ত্রনা,
স্পর্শ করে না যন্ত্রনা নীরার। 
তুমি মিথ্যে ছিলে না  সুনীল বাবু 
নীরা তোমার ছিল তোমার আছে
 কারণ 
তোমার মত এই শহরে নীরাকে ভালোবাসেনি কেউ আর।   
.
সৌজন্যে সুনীলবাবু
তুমি বা তোমাদের মত তিন যুবকের অভাব আজ এই শহরে,
কফি হাউস আর নেই 
আড্ডা আছে কিন্তু বদলে গেছে টপিক আলোচনার,
আজ শহরে প্রেম আছে অথচ বদলে গেছে স্পর্শের সম্পুর্ন মানেটাই। 
এই শহরে আজ লাখ খানেক কবি 
বুক বাজিয়ে লিখে চলেছে কবিতা শুধু নিজেকে বাজাবার আশায় 
তাই বলে ক্ষুন্ন হওয়ার কিছু নেই সুনীল বাবু 
কবিতা আছে, কবিতা থাকবে, কবিতা চিরকাল
কারণ যুগে যুগে তোমার মত কিছু ক্ষেপাটে পাগল কলম ছুঁয়েছে
নীরাকে লিখবে বলে 
সময় লিখবে বলে
রাষ্ট্র লিখবে বলে
লিখবে বলে প্রেম কবিতার শব্দে তোমার শহরে।

Sunday, September 6, 2020

 তোমাকে বলছি  শোনো 

আমার হাতের সিগারেটে আমার  বুক পোড়ে নি কখনো ,

বুক পুড়েছে বারংবার আমার 

তুমি যখনি অন্ধকারে বসে হাতে তুলে নিয়েছো অন্ধকার সিম্ফনি ,

তখনি মহাকাল কেঁপে উঠেছে 

প্লাবনে ভেসে গেছে বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে হাজারো চাষির সংসার। 

.

প্রশ্ন করতে পারো চাষি কেন  ?

আমার উত্তরে দাঁড়াবে আমি সারাদিন কি করি বলোতো 

হিসেব করে প্রতি ইঞ্চিতে তোমাকে চাষ করি ,

জানো তো কলকাতায় লেজ মোটা কবিরা ভাবে 

শব্দের চাষে তারা খুব সহজে খুলে ফেলতে পারে সময়ের অন্ডকোষ 

অথচ আমার মাথায় তুমি সবুজ জমিতে একলা দাঁড়িয়ে খুলে ফেলো ডালপালা 

আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি আলোর জন্ম। 

.

এমন হয় কখনো কখনো 

এই শহরের রাস্তায় তুমি পাথরে মাথা রেখে শুয়ে খোঁজ আমার বুক 

মৃত সন্তান




 মৃত সন্তান 

... ঋষি 


প্রতিটা বিপ্লবের পিছনে একটা কুঁড়েঘর থাকে 

প্রতিটা সন্তানের অভিভাবক ভাবে 

আগামীতে হয়তো তাদের জন্মটা অনেক ইচ্ছার সুবাদে হবে ,

সময় বদলায় 

মানুষের স্বপ্নের কুঁড়েঘরে স্বপ্ন  বোনে ইচ্ছা 

আর জানোতো  ইচ্ছেরা কখনো সতন্ত্র হতে  পারে না। 

.

আবছা চোখে হাজারো ভিড়েতে হারানো শৈশব সকলে সন্তানের গভীরে খোঁজে ,

খোঁজে মিথ্যে হলেও একটা দিন বদল সন্তানের বুকে ,

অদ্ভুত গন্ধ না 

অদ্ভুত ওম না 

অথচ আজ আমার পাড়ার ভিখিরিনী মা ভীষণ কাঁদছে 

কারণ তার বুকে স্থির ,পাথর হয়ে গেছে তার সন্তান। 

.

আমি সময় খুঁজছি না 

শুধু ভিখিরিনীর খোলা শাড়ি সরে যাওয়া বুকে দেখতে পাচ্ছি নিজেকে 

আর ভিখিরিনীর চোখে দেখছি মৃত ভারতবর্ষ ,

তিলতিল গড়ে ওঠা স্বপ্নগুলো যদি হঠাৎ ভেঙে যায় 

নিজের বুকের মাটির সন্তান যদি হঠাৎ হারায় 

কি ভাবছেন ?

বিপ্লবের মৃত্যু হয়  প্রতিবার মানুষের ভাবনায় 

.

ভিখিরিনীর আবার সন্তান !

বিপ্লব যখন স্পর্ধা নিয়ে আকাশে কাগজের এরোপ্লেন ওড়ায় 

তখন আমরা বড়রা বলি খাতার পাতার ছিঁড়িস না এমন করে 

অথচ বিপ্লব ভাসতে থাকে আকাশে 

সন্তান বাঁচতে থাকে 

অথচ আমরা সময়ের মা বাবা কুঁড়ে ঘরে ফেনা ভাতে 

দুঃখ খুঁজি 

খুঁজি হিসাব 

আমরা কি আদৌ জানি মৃত সন্তান কখনো ফিরে আসে না। 

.


Saturday, September 5, 2020

প্রেম ফুরোয় না

প্রেম ফুরোয় না
... ঋষি
আজ থেকে কুড়ি বছর পরে
যখন তোর চুলের মাটিতে অভিজ্ঞতা বাস করবে, 
আজ থেকে কুড়ি বছর পরে
যখন আমার চামড়ার ভাঁজের অপেক্ষা শেষ হবে
তখন তুই আমি  মুখোমুখি বসবো একবার, 
আজকের মতো মাটি আঁকড়ে সেদিনও তুই আমায় বলবি
তুই ভীষন বোকা রে। 
.
আমি হাসবো না, আমি কাঁদবো না
তবুও আমি হয়তো তোর বুকে মুখ গুঁজে ফেলবো দু - এক ফোঁটা জল, 
তারপর হঠাৎ তোকে  বুকে পিষে নিয়ে বলবো  
তাহলে চলে গেছিলিস কেন আমায় ফেলে ? 
তাহলে আমাকে একা রেখে বাঁচলি কি করে এত গুলো বছর? 
তুই তখন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলবি
সময়কে সময় দিতে হয়, কবে বুঝবি তুই?  
আমি তো তোর  অপেক্ষায় আছি এতগুলো বছর। 
.
আজ থেকে কুড়ি বছর পরে
সেদিও দিন আসবে আজকের মতো 
সেদিনও রাত্রি হবে আজকের মতো,
তুই জানিস সেদিনও এই শহরে একইরকম  কোলাহল থাকবে
সেদিনও এই শহরে মানুষ বদলাবে রোজ 
বদলাবে মুখোশ।
সেদিনও শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার পাতা দিয়ে তৈরী ঝালমুড়ির ঠোঙা
সেদিনও মানুষগুলো  কনফিউসানে থাকবে সমরেশ বসু না সমরেশ মজুমদার, 
সেদিনও ধর্মতলার মোড়ে অধর্ম চিৎকার করবে আমার রাষ্ট্র 
সেদিনও ফুটপাতে এসে দাঁড়াবে
 আমার মতো উস্কোখুস্কো চুলে অন্য কোন লোক, 
কিছু বদলাবে না
কারন কিছু বদল হয় না কখনো। 
শুধু সেদিন  উড়তি কোন প্রেমিক প্রেমিকা আমাদের পাশ দিয়ে যেতে যেতে
পার্কের বেঞ্চে দুটো বুড়োবুড়ি দেখে মনে মনে হাসবে আর বলবে
মরার সময় হলো 
তবুও দেখ এদের প্রেম  ফুরোয় না। 

.

  

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...