Sunday, February 27, 2022

হয়তো কোনদিন



হয়তো কিছু করা যাবে না
হয়তো তুমুল ঝড়ে মাঝ নদীতে ঈশান মাঝিকে বলতে শোনা যাবে না 
মেঘের টান বড় বেশি,বাড়ি ফিরে চলুন কর্তা,
তবুও বোকার মতো তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে
ভালো লাগে হঠাৎ বাতাসের সাথে চুপি চুপি তোমার কথা৷ বলতে।
.
হয়তো কিছু করা যাবে না 
হয়তো আমাকে কোনো অন্নপূর্ণা দিদি বলবে না
রাত অনেক হলো,বাড়ি যাস না,
তবুও বাসের জানলার পাশে হঠাৎ সীট পেলে আনন্দ হয়
তবুও ভালো লাগে পথচলতি তোমার দিকে তাকাতে 
হয়তো ভাবি, এই তুমি বল্লে ফাঁকা আছো। 
.
হয়তো কিছু করা যাবে না
হয়তো তোমার বারান্দায়  একলা পাখিটা খাঁচায় থাকবে চিরকাল,
তবুও কেন জানি এই শহরের পথেঘাটে কোন প্রেমিক প্রেমিকা দেখলে বুকটা মুচরে ওঠে।
হয়তো আর চাঁদে যাওয়া হবে না 
হয়তো আমার আর সিনেমার নায়ক হওয়া হবে না 
তবুও সিগারেট খাওয়া স্বাস্থর পক্ষে ক্ষতিকারক জেনেও সুখটান দি 
তারপর ভাবি 
হয়তো এমন কোন সত্যি কবিতা কোনদিনও লেখা হবে না
যেখানে সময় থাকবে না।

Saturday, February 26, 2022

অমরত্ব

 অমরত্ব 

... ঋষি 


হঠাৎ নিজেকে বড় বোকা মনে হয় 

আমার নীল জ্যাকেটের পকেটে লুকনো কিছু ভাবনা 

আমাকে ঈশ্বর করে বোধহয় 

তবু জানি আমি বোকা ,জানি ঈশ্বরের কষ্ট হয় তাই 

প্রদীপের সলতে পোড়ে বুকের আগুনে। 

.

বেশ কিছুদিন লেখা হয় নি কিছু 

প্রেমের কবিতা লিখবো বলে সুখ খুলছি শহরের সন্ধ্যেতে ,

কে পড়বে এই কবিতা ?

নিজের পিঠে থাপ্পড় দিয়ে সাবাস কবি বলাটাতে 

নিজেকে বড়ো বোকা মনে হয়। 

.

সংযত পৃথিবীর আলোয় এবার একটা দিকজয়ী কবিতা লিখতে হবে 

লিখতে হবে তোমাকে নিয়ে বাঁচার কবিতা 

একটানা দীর্ঘশ্বাসে এই শীত ফোড়াবার দিনে কবিত্ব শুকিয়ে আমসত্ব 

ভাবছি আজ রাতে তোমার কাছে আদর চাইতে হবে 

চাইতে হবে একটা ঈশ্বরের আগুন 

যে আগুনে সিগারেট জ্বালিয়ে আমি বলতে পারি 

এই পৃথিবী আমার না 

কিংবা এক পেয়ালা পানীয়তে ঠোঁট রেখে ভাবতে হবে 

তোমার ঠোঁট ,এই তো বাঁচা 

এইভাবে লেখা হয়ে যাবে এক প্রেমের কবিতা

একটা অমরত্ব ।  

Friday, February 18, 2022

কথার কথা

 


কথার কথা 

.... ঋষি 


কাল যাকে বলেছি আজ সে নেই 

কাল যাকে বলেছি শুভ জন্মদিন ,আজ তাকে খুঁজে পাই না 

অতনুকে বলেছিলাম আবার দেখা হবে ,হয় নি

প্রমীলা বলেছিল ফিরে আসবে ,আসে নি 

আসলে সকলেই চেয়েছিল কথা রাখতে ,রাখে নি 

কোনো গোধূলি ,কোনো টেলিগ্রাম ,পুরোনো ডাকবাক্স 

আজ আর নেই। 

.

চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়ানো বয়স্ক  ভিখিরিটাকে ভেবেছিলাম 

কাল থেকে পাঁচ টাকা দেবো 

সন্ধ্যেয়  অফিস ফেরত দেখি সেখানে কেউ নেই

বেশ কিছুদিন পরে সেখানে অন্য কেউ ভিক্ষা করছে  ,

ভেবেছিলাম আমিও অনেক কিছু 

কিন্তু সত্যি অনেককথাই নিজের সাথে রাখা হলো না। 

.

এইভাবে অতনুর বদলে অনিকেত 

প্রমীলার বদলে নমিতা 

শুধুই বদল ,

সকলেই আছে হয়তো , কেউ নেই 

কিংবা সকলেই চেয়েছিল কথা রাখতে ,

                         কিন্তু রাখতে পারে নি কেউ । 

কেউ কথা দিয়েছে ,কেউ কথাই দেয় নি 

 কেউ ভেবেছে কথা রাখবে ,কেউ কোনোদিন ভাবেই নি 

শুধুই অদলবদল 

আজ কারো জন্মদিন ,কাল সে নেই 

অথচ সে আছে ,কিন্তু মাঝে মাঝে নেই 

তবে সকলেই কথা রাখতে চায় ,কিন্তু বেশিরভাগ রাখে না।   

অসময়ের ডাইরি



 অসময়ের ডাইরি

..... ঋষি  


সমস্ত অভিমান নিয়ে দাঁড়িয়ে হাইওয়ের উপর 

সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে সময়ের গাড়ি 

আমার তাড়া নেই 

আমার শুধু সময় 

কারণ সময়ের ওপারে দাঁড়িয়ে আছে অন্য একটা রাস্তা 

বিপদজন আমি রাস্তার মাঝখানে। 

.

একটা বড়ো লরি ব্রেক মারতে মারতে হুমড়ি খেয়ে পড়লো পায়ে 

ভিতর থেকে বিহারি ড্রাইভার চিৎকার করলো 

সুয়ারকা বাচ্চা ,হট ,হট ইহাসে 

আমি হাসছি আর বলছি আমার কেন তাড়া নেই 

শুধু অপেক্ষা 

বিহারি ড্রাইভার পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে বলছে পাগলা কহিকা।

.

তোমরা  জানো কিনা হাসির একটা মাত্রা আছে 

চওড়া হাসি ,বেটে হাসি ,মৃত হাসি ,আনন্দের হাসি ,লজ্জার হাসি ,বোকার হাসি 

আমার মুখে কোনোটাই মানায় না ,

আসলে আমি যে হাসিগুলোর কথা বললাম সেগুলো মানুষেরা  হাসে 

কিন্তু আমার মুখে যেটা সাজানো 

সেটা নিজের উপর হাসি ,

শোনা কথা ঈশ্বৰ নাকি কোন অবেলায় হেসেছিলেন আমার হাসি 

আর পৃথিবীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন 

তোমরা ভালো থেকো 

কারণ তোমাদের জন্য আমি ভালো থাকি। 

যাক সব চুকে গেলো তবে



 যাক সব চুকে গেলো তবে 

,,,, ঋষি 

.

এইবার মরে গিয়ে সোজা ঢুকে যাবো তোমার পেটে  

সমস্ত কষ্ট ,অধিকারবোধ ,বিশ্বাস ,বিশ্বাস ঘাতকতা 

সমস্ত যন্ত্রণারা বেড়ে  চলেছে চক্রবৃদ্ধি হারে   

এইবার ফিক্সড ডিপোজিট  ভেঙে হিসাব মেলানোর সময় হলো 

সময় হলো তোমার পেটে ঢুকে যাবার। 

.

এখনো অবধি আমার বিশ্বাসগুলো মরতে দি নি 

অপেক্ষা করেছি বেঁচে ফেরার 

অথচ তুমি ভেবোছো তোমার গীতবিতানের ১০১ পাতায় শুকনো গোলাপটা 

অনেকদিন মরে গেছে ,

মরে গেছে সেই মানুষটা যার অনুভূতিগুলো গাড়ি চাপা পড়েছে 

চাপা পড়েছে সেই মানুষটা এই শহরের ধুলোর নিচে। 

.

তাই এইবার ঠিক করেছি মরে গিয়ে সোজা ঢুকবো তোমার পেটে 

অসংখ্য স্তব্ধতায়  মিশে তুমি  যখন ব্যস্ত শিরাউপশিরার প্রেমে 

যখন এই শহরের ধুলোয় সত্যিগুলো ভীষণ মিথ্যে ঘেঁষা 

যখন এই মনের হাইড্রেনে বাড়তে থাকে অসংখ্য অবিশ্বাস 

তখন তুমি জানতেও পারবে না 

তোমার গভীরে বেড়ে চলেছে এক ভালোবাসার ভ্রুন 

নষ্ট কোনো দিনে 

তুমি প্রসব করবে একটা মরা শিশু 

তুমি বুঝতেও পারবে না সেদিন আমি সত্যি বেঁচে 

অথচ তুমি ফ্যাল  ,ফ্যাল করে তাকিয়ে সেই মৃত শিশুর চোখে আমাকে খুঁজবে 

মনে মনে বলবে ,যাক সব চুকে গেলো তবে।    

 

Sunday, February 13, 2022

তারপর

 


তারপর 

... ঋষি 


তারপর কোনো একদিন কথা হবে 

তারপর কথা থাকে না কিছু বলার 

প্রতিবার বিষাক্ত শহরের বাতাসে ঘুলঘুলি খোঁজে মন 

প্রতিবারেই আরো বিষাক্ততা ছড়িয়ে পরে নিঃশ্বাসে 

প্রশ্ন প্রাচীন 

ভালোবাসা ?

.

দরজার ওপাশে পরে থাকা একলা মৃতদেহটা যীশু ক্রিস্টের ঝুলছে 

দরজার এপাশে রয়ে গেছে অন্য একটা জাত 

যারা কৃষ্ণের মতো হাসে 

কৃষ্ণের মতো ভালোবাসে 

আর সময়ের স্বরে অগনতি জনগণ পুজো করে তাকে 

কারণ ভালোবাসা ঈশ্বর হলেও 

চরিত্ররা সাধারণ। 

.

তারপর আমাদের কথাগুলো দশদিকে ছড়াবে 

গুজব ,

তারপর আমাদের গোপনীয়তায় দোষারোপ বলে একটা নতুন দেশ হবে 

যে দেশে আমরা নাগরিক বটে 

কিন্তু আমরা কেউ না। 

প্রতিবার হেরে ফেরার পর আমরা বাঁশির শব্দ শুনি 

প্রতিবারই হেরে ফেলার পর আমরা যীশুক্রিস্টকে দেখি 

আর দেখি মেরীমাতাকে 

কারন আমাদের আশ্রয়গুলো মায়ের মতো দেখতে 

কাৰণ আমাদের কষ্টগুলো কৃষ্ণের মতো দেখতে 

এ জীবনে ভগবৎ গীতা পড়ি সকলে 

সকলেই বিশ্বাস করতে চাই তাতে 

তবুও ভুল করি 

ভালোবাসি। 

ভালোবাসার শরীর

 


ভালোবাসার শরীর 

... ঋষি 

.

কে কতটা কার দিকে এগোলো 

কে কতটা কার থেকে পিছোলো। কেন পিছোলো ?

আঠারো বছরের মেয়েটা প্রথমবার প্রেগনেন্সি পিলের স্বাদ পেলো 

স্বাদ পেলো এই গভীর ভালোবাসার সহজে নিষিদ্ধ উন্মোচনের। 

কিন্তু কথা সেটা ছিল না 

কথা ছিল এই শহরের বাতাসে প্রতিটা মনিস্ট্রিতে জ্বলবে ভালোবাসার আলো 

এত ভালোবাসা তবুও এত অন্ধকার কেন এই শহরে?

.

শরীর যায় শরীর আসে 

মন পুড়লে মন আসে না,

অনুভূতির বাগানে আদম দাঁড়িয়ে থাকে নগ্ন পাপের শহরে 

পেপারওয়েটে চাপা পড়ে যায় সম্পর্ক 

বড্ড অল্প দামে 

বড্ড অল্প ঘামে। 

.

আমি প্রশ্ন করবো না 

প্রশ্ন করবে ভাবের শহর দাঁড়িয়ে থাকা সেই যুবকের প্রথম প্রেম 

তার কাছে সব ছিল 

আজ শুধু সে আছে আর আছে তার জামার আস্তিনে এক লুকোনো পাপ 

ভালোবাসা,

আর পার্সের পকেটে সেই চিঠিটা ,যেখানে লেখা 

ইউ নো মোর এক্সিস্ট ইন মাই লাইফ ,

আই এম ভেরি হ্যাপি উইথ মাই হাজব্যান্ড। 

প্লিজ ভুল বুঝবেন না 

কারণের সময়ের  নিয়মবলীতে একটা ষড়যন্ত্র ভালোবাসা 

শুধুই কারণ ..........

        ছেড়ে যাওয়ার 

                   কাছে আসার ,

       ভা লো বা সা র 

তারপর পুড়ে চলার ,ভোলাবার চেষ্টায় মনে রাখার । 

.

কিছু মনে করবেন না 

সত্যি হলো ভালোবাসার শুধু শরীর আছে 

কিন্তু উপস্থিতি নেই।     

                                                                                                           

                                                                                                           

                                                                                                           

                                                                                                           

                                                                                                           

                                                                                       

Saturday, February 12, 2022

পরিচিত

 পরিচিত 

.. ঋষি 

.

ভালোবাসা শব্দটার উপর যেমন আগুন তেমন আকাশ 

ভালোবাসার আগুন মাঝে মাঝে বের করে আনলে 

মানুষ উলঙ্গ ,

একটা সমাজ দীর্ঘ আকাশের সূর্যের তেজে পুড়তে থাকে 

তোমার ছায়াটা ক্রমশ দিনের শেষ ছোট 

আরও ছোট ,

সূর্য ডুবে গেলে সারা আকাশ তখন স্নেহদের  কবলে

তুমি ঢুকে পরো  আমার ভিতর 

ঘুমিয়ে পরো।  

.

ভালোবাসা জেগে আছে  মনে করে সবাই 

আসলে আমাদের মতো ভালোবাসা ঘুমিয়ে মানুষের বুকে 

কেউ নাড়িয়ে দিলে ঘুম ভাঙে 

তবু চোখে ঘুম লেগে থাকে 

ঘুমের চোখে ভালোবাসার কালো শরীরে আলো জ্বলে 

কালো ,সে তো অন্ধকারেও থাকে। 

.

ভালোবাসা পরিণত হতে হতে একটা গাছ মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়ায় 

একটা টলটলে দীঘির উপরে দুর্ভিক্ষ ছায়া ফেলে 

দুটো ঘর পূর্ণ হয় 

দুটো ঘরে দুটো লোকের গল্প ঘুমোয়,

আসলে এই গল্পগুলো মানুষের পরিচিত হলেও 

কেউ বলে না 

কারণ গল্পের সাথে মানুষ একলা বাঁচে না 

বাঁচে একলা।  

.


.


মানুষ বাঁচতে চায়

 মানুষ বাঁচতে চায় 

....ঋষি 


ফোনটা তুমি রেখে দিলে 

বাইরে কতগুলো কাক খাবারের দখল নিয়ে তখন চিৎকার করছে 

সামনের রেলিঙে রাখা খাঁচাটার ভিতর টিয়াটা বলে উঠলো 

ঠিক হয়েছে ,ঠিক হয়েছে ,

সমস্ত দখল নিয়েও বেদখল একটা জমির আইনি তত্বোতলাশে 

আমি হেরে গেলাম। 

.

আমি হেরে যাওয়ার দলে আজ বহুদিন 

বহুদিন মেপে রাখা সাত গজ জমিটায় কোনো ফুল ফোটে নি ,

একুরিয়ামে রাখা গোল্ডফিসটা জলে ঝাপটাচ্ছে 

বুঝতে পারছি খিদে পেয়েছে 

কিন্তু আমি জানি 

বরাদ্দদের বাইরে জীবন শুধু কফিনে শুয়ে ঘুমোয়। 

.

বারান্দার নিচে চায়ের দোকানে এফএম বাজছে 

" হ্যামে ওর জিনে কি চাহত না হোতি ",

আমি জানি চাহত শব্দটার দার্শনিক তত্বে একলা শহর ঘুমোয় ,

ঘড়ির কাঁটায় এখন সকাল নটা 

একটা  ব্যস্ত ঘুম ভাঙা শহর এখন সময়ের পিছনে দৌড়োচ্ছে 

এ যেন এক বেঁচে থাকার লড়াই 

সময় শব্দটা টুকরো করে ভেঙে দেখেছি 

শুধু তিনকাল নয় অনেক কাল শুধু মানুষ বাঁচতে চাই। 

প্রশ্ন করেছি বহুবার তোমাকে 

আমাদের বাঁচার মানে কি শুধুই আকর্ষণ 

তুমি বলেছিলে 

মানুষের খিদে পায় কারণ দুর্বলতা 

আর মানুষের ঘুম আসে না ,কারণ মানুষ বাঁচতে চায়। 

                                                                                                                                               

Friday, February 11, 2022

সত্যি মিথ্যা

 সত্যি মিথ্যা 

... ঋষি 


আলতো কোনো প্রলেপ ছিল তোমার গালে 

সত্য না কি মিথ্যা আমি সময় জানে ,

ভিক্তোরিয়ার ছাদের ওপর একলা পরী 

সময় দিয়ে মিথ্যে ধুলোয় সত্যি গড়ি। 

.

আমার কথা আগুনসুখ সময় জানে 

এমন কিছু বলার ছিল ইমন টানে 

ভালো আছি ভালো থেকো শুধুই বলা 

বলার কথা হাজারো সুখ কত ধানে। 

.

অব্যক্ত এই অর্থগুলো পৃথিবী কল 

চোখের পাঠায় শুকিয়ে আছে চোখের জল 

দরজা খুলে পিছন ঘুরে সময় খোঁজা 

সময় আর মানুষে আজ আদমের কল। 

.

সবকিছুতে ফুরিয়ে যাওয়া বলাই সোজা 

ফুরিয়ে গিয়ে ফিরতে চাওয়া সময় খোঁজা 

আমার কাছে ইচ্ছে মতো তোমার এ সুর 

চোখের স্বপ্নে লেগে আছে মৃত্যু সাজা। 

.

আলতো করে সাজিয়ে নেবো নিজের তালে 

ভুল ভাঙলে ,ভুলগুলো সব সত্যি জানে 

এবার তবে চুকিয়ে দেওয়ার অন্য মেলা 

জীবন তবু মিথ্যেগুলো সত্যি মানে। 

রোদচশমা

 রোদচশমা 

... ঋষি 

.

এসেছিলে যাওয়ার সময় ধরে 

চোখে রোদচশমা  অন্ধকার থেকে আলোতে 

কিন্তু তোমার বুক ভিজে ছিল। 

.

আগুন খুলি নি 

শুধু মাথার খুলির সমস্ত নিয়ন্ত্রণগুলো আজকালের সময়ের আলোয় 

আলোর কোনো দরজা থাকে না 

তাই আমার নেই দরজার বাইরে যাওয়া। 

.

সব প্রশ্নের উত্তরগুলো বাতিকগ্রস্ত 

অনিবার্য প্রেম রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুহূর্ত খোঁজে চোখে আলোয় 

তোমার চোখে রোদচশমা 

আমার চালশেতে একটা ছবি ধরা পরে 

পিছিয়ে গিয়ে শুরু করা যায় না 

কিন্তু অন্ধকার থেকে আলোতে হাঁটা যায়। 

Thursday, February 10, 2022

প্রমিস ডে

 

প্রমিস ডে 

..... ঋষি 

.

আচ্ছা চলন্তিকা কি প্রমিস করলে আজ  ?

একটা ছুরি নিয়ে চড়ে বসবে নাকি আমার বুকে 

তারপর বিশ্বাস করবে 

                     ভালোবাসা অবশিষ্ট ।

 .

অজান্তে কিছু প্রশ্নের উত্তর সকালের পাখির মতো কিচিরমিচির করে 

অজান্তে কিছু উত্তরের মানে অনাহুত মৃত্যুতে মিলিত হয় 

অজান্তে ভাবতে ইচ্ছে করে আমার মৃত্যুর কারণ তুমি 

আমার জন্মের কারণ তুমি 

আমার শব্দের কারণ তুমি 

আর আমার যন্ত্রণার ,

                     সেও তুমি। 

.

পৃথিবীতে অবশিষ্ট বলে কতটা আছে 

               . এই বেঁচে থাকা টুকু। 

পৃথিবীতে সত্যি বলে কতটুকু আছে 

                এই শহরের ধুলোয় সাজানো শব্দটা ভালোবাসি বলায় ,

সবকিছু কেমন গোলমাল হয়ে গেলে অনুভূতিগুলো মিক্সিতে চটকে 

একটা অবয়ব হয়ে ওঠে 

জানি না কেমনতর সেটা নর্দমায় পরে থাকা অবশিষ্টের মতো 

নাকি ডাসবিনে। 

তবে যাই হোক সবকিছুর পরে জটায়ুর ডানায় আটকানো কবিতাটা 

স্মরণীয় 

কারণ সেই দিনটা আর আজকের দিনটা 

দুটোতেই একটা প্রমিস থেকে যায় 

প্রমিস 

সাথে থাকা। 


ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইন




 ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইন 

... ঋষি 

.


একটা রিভলভার ,ছটা বুলেট 

বারুদ ,হৃদয় ,সিসে ,রক্ত 

গুলি করছি ,এক ,দুই ,তিন ,চার পাঁচ ,ছয় 

যা শালা ,,, সব সম্পর্ক 

আর গুলি নেই ,তবে আরও অন্তত দুটো বুলেট দরকার

চুমু দিবস আর ভ্যালেন্টাইন দিবস বেঁচে গেলো। 

.

সম্পর্ক 

পরিধির বাইরে দাঁড়িয়ে আকাশ ছুঁয়ে দেখেছো কখন 

কারণ ছাড়া সুতোগুলো একসাথে একটা শীতের সোয়েটার 

শীত শেষ 

সম্পর্ক তুলে রাখা হলো সস্তা ফটোএলবামে আলমারীর ভিতর ,

নিতান্ত প্রিয়জন ছাড়া কজন মনে রাখে সম্পর্ক 

কারণ ছাড়া সম্পর্কে থেকেছে কজন ?

.

ঈশ্বর হাজার সরগমে ছুঁয়েছেন প্রেম 

শুনতে ভালো লাগে ,পড়তেও ভালো ,স্পর্শে ভালো 

শধু অনুভব ?

যন্ত্রনা এই ধুলো মাখা শহরের পাতায় পাতায় নিঃশ্বাসে কষ্ট হয়। 

আমি অন্য গ্রহের বাসিন্দা 

তাই তোমাকে চুমু খেলে খানিকটা বাঁচার মানে পাই ঠিক 

কিন্তু দুঃখ থেকে যায় তখনও  

ক্ষনিকের ভগ্নাংশে ভালোবাসা বোধহয় হিসাবি ব্যবসায়ী।

তবু একটা দিন আসে 

                     ভালোবাসার ,

সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম করে উদযাপন হয় 

নিয়ম মাফিক প্রেমিক ,প্রেমিকা বলে ভালোবাসি 

তারপর দিন ফুরিয়ে গেলে 

ভালোবাসা ফিরে আসে নিজের ডেরায় 

ক্লান্ত ,একা থাকা অনুভবের মতো। 

 

 

Wednesday, February 9, 2022

ভালোবাসার শহর

আজকাল ভালোবাসা জুড়ে আক্রোশ, অবসাদ, অবহেলা 
আর বিশ্বাস? 
না নেই,এই শহরে 
শুধু অধিকারের গল্পে  একলা দাঁড়ানো গাছটা  প্লস্টিকের 
সেখানে সবুজ শব্দটা ড্রয়িংরুমের নকল ফটোফ্রেম। 
.
আমি ক্লোরফিল খুঁজেছি 
সময় মাটির নিচে শুয়ে থাকা অতীতের প্রশ্ন তুলে এনেছে 
অনায়াসে শুনছি প্লাস্টিকে মুড়ে চারিপাশে একে অপরের মুখে ভালোবাসি 
কিন্তু শান্তি?
না নেই এই শহরে,
শুধু সারা শহর আজ নকল প্লাস্টিকে ভালোবাসার কারখানা। 
.
প্রতিদিন কারখানায় প্রোডাকশন  হচ্ছে ভালোবাসা 
প্রতিদিন বদল হচ্ছে ভালোবাসার মানে 
আসলে কেউ কারোর ভিতর বাঁচতে চাইছে না 
শুধু মরতে চাইছে মিথ্যে ভালোবাসার মোড়কে। 
তাই আজ সারা শহর জুড়ে মৃত কতগুলো ভালোবাসার গাছ 
প্লাস্টিকের, 
হাসছে, খেলছে, হাত ধরে ঘুরছে 
অভিনয়ে শরীর শরীর খেলতে খেলতে বলছে ভালোবাসি 
কিন্তু বিশ্বাস করুন 
বেশিরভাগ কেউ ভালোবাসছে না এই শহরে 
শুধু ভালোবাসাকে প্লাস্টিক ভেবে 
নিজের প্রয়োজনে ব্যাবহার করছে
সত্যি বলতে কি এখন ভালোবাসা কার্বনডাইঅক্সাডের থেকে বিষাক্ত এই শহরে
মনখারাপের কারণ
 সম্পর্কে আজ ক্লোরোফিল নেই বলে। 



Sunday, February 6, 2022

বস ও আওয়াজ ওর নেহি রেহি



 বস ও আওয়াজ ওর নেহি রেহি 

.... ঋষি 

.

জাত কি জানি না 

মারাঠি ,পাঞ্জাবি ,বাঙালি না কি মুসলমান 

শুধু জানি যে চলে গেলো 

সে একটা ভারতবর্ষ ,

শুধু জানি সময়ের ওপাশ থেকে শুনতে পাওয়া আওয়াজটা 

আমাদের ভীষণ প্রিয়। 

.

গান কি জানি না ,গান কি বুঝি না 

শুধু জানি অনেকগুলো শব্দ একসাথে উনার গলায় ঈশ্বর হয়ে যেত 

সে ঈশ্বর মানুষের কর্ণকুহরে এক অনুভব 

যে চলে গেলো ,মনে হয় নি একদিনও সে যাবে 

কারণ কেউ কেউ তার মতো 

চলে গিয়েও থেকে যায় সময়ের প্রতি ভাঁজে অমরত্বের সাথে। 

.

পৃথিবীতে এমন কিছু আছে যা সকলকে বুঝতে হবে এমন কথা নেই 

কিন্তু এই দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন উনি একজন 

তাকে সকলে চেনেন ,

জাতি ধর্ম নির্বিশেষে যখন স্মৃতি সময়কে ছাড়িয়ে যায় 

তখন সে সময় ঈশ্বর হয়ে যায়। 

আমি খুশি যে আমি ঈশ্বরের সময়ের বাসিন্দা 

আগামী খুশি কারণ সেই ঈশ্বর চিরকালীন এক আশ্রয় ,

কিছু অনুভব করার মতো সময় এটা নয় 

শুধু বুঝতে পাওয়া

"ও আওয়াজ ওর নেহি রেহি "। 

Saturday, February 5, 2022

খালিপায়ে


 খালিপায়ে 

... ঋষি 


ঈশ্বর আর চলন্তিকার মাঝে তফাৎ 

শুধু সময়ের যোগাযোগ ,

কেউ এগিয়ে যায় সময়ের সরণিতে নিজের ভবিতব্য 

ঈশ্বর দাঁড়িয়ে থাকে আকাশে মাথা রেখে, 

সময়ের ঘরে ঈশ্বরের বোকামির কোনো চটিজুতো নেই 

ঈশ্বর ধুলোমাখা   তাই খালিপায়ে। 

.

আমি আকাশ খুলে দেখি 

হৃদয়ের বাক্সে রাখা ঈশ্বর হাসতে থাকে নিজের ভূমিকায় 

চলন্তিকা আকাশের ঘরে থাকে 

নিজের বাঁচার গল্পে ঘাসের সুতোয় সেলাই করে হৃদয় বারংবার 

তার কাছে বেঁচে থাকা মানে 

       শুধুও কালকের গল্প। 

.

আসলে সব গল্পের শেষে একটা ফুলস্টপ থাকে 

কিন্তু ঈশ্বর কোনো ফুলস্টপে বিশ্বাসী নয় 

ঈশ্বর কোনো কবিতার সকালে চলন্তিকার কুঁড়োনো ফুলে তুষ্ট হয় 

কিংবা সকালের শিশিরে পা ডুবিয়ে  ভাবে 

                        ...... একটা দিন। 

কিন্তু নিয়ম করে দিন ফুরিয়ে যায় 

আকাশের হাজারো নক্ষত্রের বুকে মাথা রেখে ঈশ্বর ওপর থেকে পৃথিবী দেখে 

ঈশ্বরও অবাক হয় 

পৃথিবী কতো সুন্দর ,কতো সাজানো প্রলোভন 

ঈশ্বর বুঝতে পারে বাঁচার মানে 

ঈশ্বর দেখে চলন্তিকা ঘুমিয়ে তার নিজের গৃহস্থে রানীর মতো 

আসলে মেয়েরা ঘুমিয়ে থাকলে পৃথিবী এমন শান্ত হয়,

ঈশ্বর হাসে মনে মনে 

                        .... এমন করে হৃদয় হেরে যায়।  


Friday, February 4, 2022

আমার ভালোবাসা

 


আমার ভালোবাসা 

.. ঋষি 


ভালো  বাসি তোমাকে কবিতার মতো 

তাই তো আমার ভালোবাসার কোনো বোধ থাকে না,

থাকে না সময় ,থাকে না নিয়ম।  

তাই তো তোমাকে ভালোবাসতে আমি কুকুরের মতো চাটতে থাকি 

তাই তো তোমাকে ভালোবাসতে দিন কিংবা রাত্র লাগে না 

তাই তো যখন তখন তোমাকে জড়িয়ে ধরি 

ভালোবাসি পাগলের মতো। 

.

তাই তো আমার ভালোবাসার কোনো বাড়ি থাকে না 

তাই তো আমার ভালোবাসার কোনো লজ্জা থাকে না 

শুধু তোমার গভীরে আমার হৃদপিন্ড থাকে 

আর থাকে অজস্র বোধ 

যেগুলো আমাকে মনে করায় বারংবার 

আমি বেঁচে আছি কারণ তোমাকে  ভালোবাসি তাই। 

.

তাই তো তোমাকে আমি জড়িয়ে ধরতে পারি বইমেলার ময়দানে 

তাই তোমাকে ছোট বাচ্চার মতো কোলে করে ঘুরতে পারি সারা পাড়া 

এই শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে তাই তো আমি কবিতা লিখি 

লিখে ফেলি তোমায় নিজের মতো করে। 

কিন্তু আমি জানি, তুমি জানো না 

তুমি ভাবো আমি পাগল কবি ,আমি প্রেমিক কবি 

আমার ভালোবাসা শুধুই শব্দময় ,শুধুই স্বপ্ন 

কিন্তু আমি জানি 

আমার প্রতিটা কবিতা শুধু জন্মায় তোমার জন্য 

আমার প্রতিটা শব্দ শুধু লিখতে চায় তোমার কথা 

শুধু সময় বোঝে না 

সময় শুধু আড়চোখে তাকায় 

তারপর বলে কবি চলন্তিকা ছাড়া লিখতে পারে না । 


 

কবিতার ঘরবাড়ি

 কবিতার ঘরবাড়ি 

... ঋষি 


সময়ের কালঘড়ি শুধু মানুষকে নিয়ম দেয় 

কিন্তু কবিতা দেয় না ,

আসল কথাটা হলো  কবিতা সময়ের খুঁজে নিতে হয় 

কবিতা কাউকে ধরা দেয় না। 

.

মানানসই শব্দদের  সাথে নিয়ে সময়ের সন্ধান

বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির কবিতা ,মিথ্যের দিনে সত্যি কবিতা 

আসল কথাটা হলো এক ঠোঁট থেকে অন্য ঠোঁটে কবিতার ঘরবাড়ি 

কবিতার জন্ম সত্যি হলেও ,কবিতার যে মৃত্যু হয় না। 

.

তাই প্রতিদিন তার অপেক্ষায় থাকা 

দিনের থেকে রাতের থেকে প্রহরজুড়ে  অজস্র আঁকিবুকি 

আসল কথাটা  হলো কবিতার জন্মস্থান ,কবিতার গর্ভ 

পৃথিবীর মুখ ছুঁয়ে কবিতা কখনো মিথ্যে হয় না। 

.

তাই তো আমি তোর দিকে তাকিয়ে থাকি দূর থেকে 

এক প্রস্থ সংসার আমার কবিতার ঘরবাড়ি 

আসল কথা হলো তোর সাথে যদি বহুদিন দেখা না হয় 

আমার যে আর কবিতা আসে না। 

 


আলাপ পরিচয়

 


আলাপ পরিচয় 

... ঋষি 


এক একজন সুন্দরী রমণীর সাথে আমার পরিচয় 


প্রতিটা পরিচয় পর্বের শেষে আমি দেওয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়াই  


ওরা চলে যায় ,


চেনা ছন্দ ,চেনা গন্ধ ,সমস্ত ভালোমন্দ গুলিয়ে গেলে 


আমি কবি হয়ে যাই  


আর ওরা সেলাই মেশিন 


                শুধু কবিতা সেলাই করে। 


.


আমি ফুটপাথে গিয়ে দাঁড়াই 


ওরা সকালের প্রাতঃরাশ ছেড়েই রাস্তায় বেরিয়ে পরে 


ওদের শৈশব ,যৌবন আর জীবন পার করে কখন যেন কবিতা সবাই 


সময় চিৎকার করে ,চিৎকার করে ওদের বাসর ঘর ,রান্নাঘর 


ওদের ওঠাবসা ,ওদের স্নানের ঘর 


আমি চুপ করে দেখি 


আমার শব্দরা সব চষে ফেলে ওদের সময় 


তারপর কবিতা সে যেন ওদের চিৎকার আর ধিক্কার । 


.


ওরা মিশে থাকে কুয়াশায় ,বৃষ্টির জলে 


আমি দেখতে পাই একের পর এক সুন্দরী রমণী হেঁটে চলে যায় 


নিয়ম করে আমার সিগারেটের আগুন ফুরিয়ে গেলে  


আমি নিকটনবর্তী রমণীর কাছে চাইতে থাকি 


কিন্তু আমি ভুল করি 


রমণীরা  যা কিছু পায় সব নগদে 


                  কিন্তু যা কিছু হারায় সব বাকি।  

শুধু শব্দের জন্য

 

শুধু শব্দের জন্য 

... ঋষি 


আমার সমস্ত তোমাকে দেব ঈশ্বর 

আমার হাতঘড়ি ,চশমা ,পড়ার টেবিল ,রাস্তার স্ট্রিটলাইট 

একলা বিকেল ,ঘুম ভাঙা চোখ ,এক ইচ্ছে রৌদ্র 

সকালের শিরশির ,এই শহর ,বড় ,বড় মাইল স্টোন 

আমার জামা ,জুতো ,মানি ব্যাগ ,নাটকের টিকিট 

বদলে শুধু এক রাশি শব্দ বৃষ্টি করো আমার উপর 

বদলে শুধু এক পেহলি শব্দের কাপড়ে মুড়ে দেও আমাকে 

আমি জন্ম দেখতে চাই না আর। 

.

আমার লেখার জন্য সোনার কলম দরকার নেই 


দরকার নেই কোনো নামি পত্রিকায় আমার নাম 

দরকার নেই অসহজীয়া সময়ের কাছে মাথা নিচু করার 

শুধু আমাকে মুক্তি দিও 

এই বিশাল আকাশে ,এই সময়ের যন্ত্রনায় 

অজস্র কবিতায় আর কবিতার পাতায়। 

.

সব তোমাকে দিয়ে দিতে পারি ঈশ্বর , শুধু শব্দের জন্য 

কিন্তু বিনিময়ে চলন্তিকাকে চেয়ো না তুমি 

তাহলে আমি লিখতে পারবো 

কিছুতেই চিৎকার করে বলতে পারবো না সময় আর মানুষের কথা 

কিছুতেই নিজেকে লুকিয়ে বাঁচতে পারবো না এই অন্ধকার শহরে,

শুধু শব্দ আর চলন্তিকা 

শুধু চলন্তিকা আর কবিতা 

                              বাঁচিয়ে রেখেছে আমাকে।  


স্থপতি

 



স্থপতি 

... ঋষি 


স্থপতি হতে পারি নি 

তাই মাঝে মাঝে রাগ হয় নিজের এই সাজানো শহরের দেশলাইয়ের ভিতর

হিংসা হয় তাই আমার রামকিঙ্কর বেজের চোখগুলোকে 

হিংসা  হয় তাই সোমনাথ ঘোষ ,সতীশ গুজরাল এমন সব স্থপতিকে। 

.

অদ্ভুত চোখ 

অদ্ভুত সাহস ,সময়ের উপর দাঁড়িয়ে সময়কে দুমড়ে মুচড়ে ,নিজের মতো সত্যি 

অবাক লাগে ভাবতে মানুষ না ঈশ্বর 

ওগুলি সব সৃষ্টি না আশ্চর্য ,

আমি শুধু সুরের  নাগরিক সময়ের ভায়োলিনে কেতাবি সুর বাজাই 

কিন্তু আমার আর ঈশ্বর হওয়া হলো না। 

.

বিশ্বাস করো চলন্তিকা সে চোখ যদি  আমি পেতাম  

তোমাকে আমি গড়ে নিতাম নিজের মতো করে 

বিশ্বাস করো আমার চোখের স্বপ্নরা  তিলতিল করে তোমাকে তৈরী করে 

কিন্তু রূপ দিতে পারে না রোমান ভাস্কর্যের মতো ,

কিছুতেই সত্যি বলতে পারে না 

এই মিথ্যা সাজানো শহরকে সৃষ্টির পায়ে মাড়িয়ে 

উঠে দাঁড়িয়ে বলতে পারে না 

ঈশ্বর আসলে স্রষ্টার অন্য নাম 

ঈশ্বর আসলে সত্যির ওপর নাম 

ঈশ্বর আসলে সময়ের সৃষ্টির চোখ 

একটা দর্শন 

যা স্রষ্টা সময়কে নিগড়ে সৃষ্টি করে। 


 

 


Thursday, February 3, 2022

হারানো পথ



 হারানো পথ 

... ঋষি 

লোকটা ট্রাম লাইনের ওপারে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যের শহরে  

সামনে দিয়ে জনকোলাহল  ,গাড়ির হর্ন ,হকারের চিৎকার 

লোকটা নির্বিকার 

লোকটার একমাথা ঝাঁকড়া চুল ,না কামানো দাঁড়ি ,ছেঁড়া পাঞ্জামী 

কে জানে ,লোকটা চান করে নি কতদিন ?

.

এক সদ্য বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীকে প্রায় বুকের কাছে আগলে 

লোকটার উদ্দেশ্যে বলে 

এই পাগলা ,যা এখান দিয়ে যা ,

এক নারীকণ্ঠ পাশ দিয়ে বলে ওকে ভিক্ষে দেও ও চলে যাবে ,

লোকটা পকেট দিয়ে একটা পাঁচটাকার কয়েন বের করে বটে 

লোকটা দুলতে দুলতে চলে যায় পাশের পার্কের দিকে 

লোকটার মুখে ঈশ্বরের হাসি যেন। 

.

তখন বোধহয় রাত বারোটা 

লোকটা পার্কের বেঞ্চের থেকে গড়িয়ে নামে  ঘাসের উপর 

ভিজে ঘাস ,সে যেন আকাশের নক্ষত্রের মাঝে  সন্তানের কথা

অশ্বিনী ,মৃগশিরা ,উত্তরফাল্গুনী ,চিত্রা ,বিশাখা 

কি বেশ নাম তার সন্তানের 

কে সেটা ছেলে না মেয়ে ,

চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে লোকটার 

পথ হারিয়েছে সে 

কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছে না বাড়ির পথ ,

ঠিক একটা সময় চোখের অন্ধকার সরিয়ে এগিয়ে আসে একজন যুবক 

কাঁদতে কাঁদতে লোকটাকে বলে বলে বাবা বাড়ি চলো 

লোকটা বলে কে তুমি ?

যুবকটি উত্তর দেয় আমি অশ্বিনী 

      বাড়ি চলো ,মা আর নেই !!

ঢ্যামনার বাচ্চা

  ঢ্যামনার বাচ্চা

............ঋষি 


এই ঢ্যামনার বাচ্চা ছ নম্বর রেঞ্জটা নিয়ে যায় 

ঐদিকে তাকিয়ে কি দেখছিস 

জুলফিকার এগিয়ে যায় গ্যারাজের যন্ত্রপাতির দিকে 

জুলফিকার পিছিয়ে যায় তার বয়সী পাঞ্জাবী পরা ছেলেগুলো থেকে

আজ স্বরস্বতী পুজো জুলফিকার শুনতে পাই মাইকে 

            পুজোর অঞ্জলীর মন্ত্র

ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।

বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।

.

এই ঢ্যামনার বাচ্চা  কাজে মন থাকে না রে 

পিছনে একটা লাথি খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পরে জুলফিকার 

,কখন থেকে রেঞ্জ চাইছি ,

হাতে মুখে কালি মাখা আট বছরে জুলফিকার এখন কি মনে করছে 

তার কপাল ,

আর সময় তখন নিজের মনে তা দিয়ে অদ্ভুত ভাবে ভাসছে 

জুলফিকার দেখেছে স্কুল ফেরত পাঞ্জাবী পরা সেই ছেলেগুলোকে 

বাসন্তী শাড়ি পরা সেই মেয়েগুলোকে যারা ভদ্র জাতের। 

.

এই ঢ্যামনার বাচ্চা ওদিকে তাকিয়ে কি দেখছিস রে তখন থেকে 

ওসব আমাদের না রে ,ওতো  ভদ্রলোকের

যা রেঞ্জটা রেখে আয়  আর মোবাইলের ট্যাংকটা দে,

কই রে ,কোথায় তুই ,এই ঢ্যামনার বাচ্চা। 

ঠিক সেই সময় স্কুলের মাইকে ঘোষণা শোনা যায় 

প্রসাদ বিতরণ হচ্ছে ,যারা পান নি নিয়ে যান 

জুলফিকার মনে মনে ভাবে কিসের প্রসাদ 

ছোটবেলায় মার্ কাছে সে শুনেছিল স্বরস্বতী হলো বড় লোকের দেবতা 

গরীবলোকের কোনো দেবতা নেই

শুধু খিদে আছে ,

জুলফিকার বুঝতে পারছিল তারও খিদে পেয়েছে এই সময় 

সে দৌড়ে ছুটে গেলো স্কুলের দিকে 

পিছন থেকে শুনতে পেলে এই ঢ্যামনার বাচ্চা  ............ 


 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...