Thursday, March 31, 2022

দূরত্ব

 


দূরত্ব 

... ঋষি 


ট্যাক্সিওয়ালাকে গালি দিলে  কিছু হয় না


কোনো মন্ত্রীকে প্রকাশ্যে গালি দিয়ে দেখো তোমার জন্ম তুলে নেবে ,


যাই হোক এগুলো আমার কবিতার বিষয় নয় 


মৃত্যু নিয়ে লেখার মতো মানসিকতায় আমি নেই ,


বরং সত্যি হলো  নিরাপদ দূরত্ব কে না চায় ?


.


সময়ের থেকে দূরত্ব 


ধর্ম থেকে দূরত্ব 


রাজনীতি থেকে দূরত্ব 


নিজের হাতে নিজের গলায় দড়ির থেকে দূরত্ব 


সমস্ত ষড়যন্ত্রের থেকে দূরত্ব 


ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো থেকে দুরত্ব


গোটা ভারতবর্ষ আজ দূরত্বে আছে আমাদের থেকে 


কারণ আমরা দূরত্ব খাচ্ছি ,দূরত্ব হাসছি ,দূরত্বে বাঁচছি। 


.


এক মহান ট্রেজিডির গল্প এটা 


 সকাল থেকে বিকালের দূরত্ব, জন্ম থেকে মৃত্যুর দূরত্ব,


 মা থেকে মাসির  দূরত্ব, ভাবনার  থেকে কন্ডমের দূরত্ব হিসেবে মতো বেশি না


তবুও কোনো ষোলো বছরের মেয়েকে এক বৃদ্ধ ভাবনায় ধর্ষণ করতে পারে 


তবুও কোনো মেয়ে তার বাবার মতো পুরুষের সাথে মিলিত হতে পারে 


সত্যি এগুলো আমার কবিতার বিষয় নয় 


আমার কবিতার বিষয় দিনের থেকে রাতের দূরত্ব 


চাঁদের থেকে সূর্যের দূরত্ব 


মুম্বাই থেকে কলকাতার দূরত্ব 


এগুলো সব আমরা জানি 


কিন্তু এটা জানি না সম্প্রীতি একটা ম্যাগাজিনের মানুষের দূরত্বের হিসেবে করা হয়েছে 


সেখানে পাওয়া গেছে মানুষের পোশাক 


কিন্তু মানুষ না। 


মিলন হবে কতদিনে

 মিলন হবে কতদিনে 

... ঋষি 

.

রোদ উঠেছে,

কবি একলা কখন চলে গেছে বইমেলা  বিসর্জনে মাঠে 

নারী নিয়ে কথা হচ্ছে নুনের স্বাদে, 

সবকিছু নিভে গেলে প্রহেলিকা 

নারী এক সম্মোহনী গ্রাম, লোভ  দুলছে, 

বাংলা হরফে ন্যাংটো হয়ে গেছে আমার রাজ্য এবং দেশ। 

.

চব্বিশে ডিসেম্বর  জন্ম নিয়েই নেগেটিভ মার্কিং শুরু

কিন্তু তবুও চাই কিছু শ্রেষ্ঠ কবিতা তোমার উরুতে লিখতে 

শরীর বুঝলে বুঝি 

চুমু খেলে ছ্যাকা লাগে,অথচ আমার চুমু জুড়ে বেঁচে থাকে 

আর খাদ্যনালীতে পুরাতন কিছু পাপ 

শরীর নয় হে সময় 

আমার সভ্যতার কথা বলছি। 

.

 ১৪৪ ধারা অমান্য করলে গুলি চালানো হয়

 অথচ ছেলেরা ফুলের মতো নরম  কেউ বলে না

 মেয়েরা মাস্টারবেশন করে জানলেও বলতে নেই । 

একটা নিয়মের দেওয়াল 

প্রতিবছর শিক্ষা মাধ্যম শুধু ছাপিয়ে চলছে সিলেবাসে স্কলার 

প্রধানত বইমেলা হলো হাজারো ভাবনার ছাপানো দলিল 

কি দাম ?

মননের ব্যাপ্তি তো কেউ চায় নি।

শুধু শুধু সময় নষ্ট করা 

একটা সত্যির কবিতায় কবি বিষন্ন মনে ফুরিয়ে যাওয়া বইমেলার মাটি চাটে 

সমাজ চাটে সময়ের যোনি 

নারী শুধুই শরীর ,সভ্যতা শুধুই নারী পোশাকে সেই বৃহন্নলা 

যে বিছানায় শুয়ে ভাবে মিলন হবে কতদিনে। 


আকাশ

 আকাশ 

... ঋষি 


আমি দরিদ্র হতে পারি ,ভিখিরি নই 

আমি কবি হতে পারি ,ঈশ্বর নই 

ফিরে আসার আগে ,কিংবা পরে অনেকগুলো একলা দরজা 

আমি শব্দের পৃথিবীতে ঈশ্বরের সাথে একসাথে ডিনার করি 

রাত্রি হয় 

লাস্ট সাফারের তুলির টানে লিওনার্দো যখন সঙ্গমে ব্যস্ত 

তখন আমার কবিতায় আমি ঈশ্বর হয়ে উঠি। 

.

পবিত্র দেওয়াল খুলে 

যেখানে রাম,রহিম ,জেসাস মিলে মিশে জলসা করে 

সেই জলসায় আমি অনন্ত 

আমার কলমের নিবে ক্রমগত ভেসে ওঠে সময়ের বিরুদ্ধাচরণ 

আসলে  সময়ের সাথে গা ভাসাতে মন চায় না 

মানুষের মতো মানুষের মুখোশে আমার লজ্জা হয়। 

.

আমি দরিদ্র হতে পারি,ভিখিরি নই 

আমি কবি হতে পারি ,ঈশ্বর নই 

কলম্বাসের বাইরের পৃথিবীটা আমার খুব অগোছালো 

সেখানে নিয়মের শিকল ,বন্ধ দরজা আর পায়ের ফোস্কা 

সব কেমন কষ্টদায়ক 

আমার পৃথিবীতে আমি আকাশ ম্যানুফ্যাকচারিং হয় 

সেখানে এই পৃথিবীতে কাঁদতে থাকে সদ্য জন্মানো   সন্তান 

আর হাসতে থাকে মানুষের অবয়বে কিছু  শয়তান।  

আমার ঘৃণা হয়  ঈশ্বরের নাম নিয়ে যারা ঈশ্বর সেজে থাকে 

আমার হিংসা হয় সময়ের নাম নিয়ে যারা সময় তৈরী করে 

তবে গর্ব হয় তখন 

যখন কোনো ফুল ফোটে কিংবা যখন কোনো শিশু মা বলে ডাকে 

আমি সেই স্বপ্নে আকাশ লিখতে থাকি 

কোনো একদিন এই পৃথিবীটা মুড়ে দেব আকাশী মানুষের মুক্তিতে।   

মা বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়

 মা বলে ডাকতে ইচ্ছে হয় 

.. ঋষি 


সীমাহীন আদরের আঁচল 

মাকে মনে পরে খুব 

গরিবের গলি ,গরিবের অলি ,হৃদয়ের গলি 

সব গুলিয়ে যাচ্ছে 

ক্রমশ খেরো পাতায় লেখা হচ্ছে শুকনো গ্রীষ্মের রাস্তা 

মা বলে ডাকবো আরেকবার। 

.

নারীরা নারী হতে পারে ,নারীরা মা 

কিন্তু মা কখনো নারী নয় ,নাড়ি 

মাটির টান 

ভালোবাসার গান 

আজ অবেলায় ছুটে যেতে ইচ্ছে করে মায়ের বুকে 

মা সমুদ্রের কাছে প্রশ্ন করেছি তোমায়। 

.

অগোছালো ভাবনা 

ছেঁড়া বুকের আঁচলে আটকানো মমতা 

সময় দুর্বল 

সব ফেলে আসা ,সব বলে আসা ,গভীরে ভালোবাসা 

সীমাহীন আদরের আঁচল 

মাকে খুব মনে পরে ,মা বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়। 

সবকিছু লেখা হলো 

মাকে নিয়ে লেখা হলো না কখনো 

সবকিছুই মোটামুটি পাওয়া হলো 

সম্পর্ক ,জ্ঞান ,শহর ,অভিজ্ঞতা 

কিন্তু কেন যে মনে হয় মাকে ঠিক পাওয়া হলো না 

কেন যে মনে হয় মার সাথে পাশাপাশি হাঁটি হলো না। 

Wednesday, March 30, 2022

ব র ফ যুগ

বরফযুগ
... ঋষি 
সমস্ত নৌকাগুলো উল্টোন পড়ে আছে
জলে নামিনি কোনদিন, সাঁতার না জানার ভয়, 
তুমি অবহেলায় জল ছেটাবে 
আমি ভাববো, এই তো বেশ 
হয়তো একই নদীর ধারে পাওয়া যাবে আমার মৃত ভাবনাগুলো 
সত্যি তো মানুষের ভাবনার মৃত্যুত মানুষ কি আদৌ মরে? 
.
কেন লিখছি, কি হয়েছে
সত্যি বুঝতে পারছি না
তবে এটা বুঝছি একটা জীবন ফ্রীজের ভিতর আছে 
তাজা, তরতাজা।
পৃথিবীর মানচিত্রে সমুদ্র আর সমুদ্র জলে এক ডিঙি নৌকা
জানি খুব সাধারণ। 
.
তোমার কাছে চাওয়া, পাওয়া, ভাবনার হিসেব 
শুধু এইটুকু 
আমাকে একটা দীর্ঘশ্বাস দেও কোন যুবতীর থেকে গভীর
কোন যুবকের থেকে লম্বা। 
আমি আর আমার ভাবনাদের ফ্রীজের ভিতর রেখেছি বেশকিছুদিন 
ক্ষতচিনহে তোমাকে জড়িয়ে রেখেছি ওষুধের ভাবনায়, 
বাকিগুলো বরফ যুগের সাক্ষী 
শুধু তফাৎ আমি এখনো বেঁচে। 

মুখোশ

মুখোশ
... ঋষি 

এই শহরের কষ্টগুলো ইতিহাসের পাতায় ধুলোমাখা
ধুলোমাখা ইতিহাসের পলাশির কলকাতা, 
অভিশাপ এটা সময়ের
মানুষের গলার কাছে আটকানো কষ্টগুলো
মুখোশের দুপাশে ঠিক সময়ের মতো  দেখতে
অথচ ইতিহাস মানুষকে প্রাচীন করেছে বারংবার। 
.
ঠিক বলতে বা বোঝাতে পারা যাবে না
গ্রীষ্মের প্রবল দুপুর কতটা অপেক্ষারত বৈশাখী হাওয়ার
কিংবা শহরের রাস্তাগুলো কেন চাতকের মতো অপেক্ষায় প্রবল উচাটনে 
আমি সাক্ষী হয়ে বলি 
জবচার্নকের শহর আজ তৃষ্ণার্ত ও ক্লান্ত। 
.
আমার কবিতার পাতায় আজ অভাবের ভীড় 
জানি কিছু বদলাবে না তাতে
গড়িয়াহাটের মানুষের ভীড়ে তোমার চোখে রোদচশমা যখন 
তখন আমার মাইনাস কাঁচে ক্লান্ত শহর ইতিহাস লিখছে,
হয়তো ইতিহাসের পাতায় ধুলোবালি মেখে অপেক্ষা করছে 
রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বিনয়, বাদল, দীনেশের দিনবদলের স্বপ্নে। 
অথচ এই শহরের হাইওয়ে দিয়ে ছুটতে থাকা সময়গুলো বড় ব্যাস্ত চিরকাল 
আমি জানি কিছুই বদলাবে না তাতে 
শুধু মানুষের মুখোশের আড়ালে কষ্টগুলো নিরাময়ের 
অপেক্ষায় একদিন ঠিক মরে যাবে
কিংবা হয়ে যাবে অচেনা ইতিহাস। 




Tuesday, March 29, 2022

এটা কোনো প্রেমের কবিতা না

 


এটা কোনো প্রেমের কবিতা না 

... ঋষি 


আমি ভাবতেই পারি 

আমি শারুখ খান ,আমি কল্পনা চাওলা ,আমি শচীন টেন্ডুলকার 

কিন্তু সত্যি তা নয় ,

তুমি ভাবতেই পারো 

সোনার সংসার ,অনবদ্য প্রেমিক স্বামী ,সুসভ্য সন্তান

কিন্তু তাও কতটা সত্যি সেটা ভাবার বিষয়। 

.

সত্যি হলো মানুষের ভাবতে কোনো পয়সা খরচ হয় না 

অথচ পয়সা খরচ হলেই সমস্যা ,

আপনার যদি ভাবতে কিংবা স্বপ্ন দেখতে পয়সা খরচ হতো 

কিংবা বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে খরচ হতো 

দেখতেন আপনি পরিমিত ভাবতেন 

হাজারোবার বাতাস পোড়াবার আগে নিজেকে পোড়াতেন। 

.

সবাই ভাবছে বোধহয় এটা আমার ,তোমার কবিতা 

কিন্তু সত্যিটা কেউ জানে না 

আমার কিংবা তোমার এই দুটো শব্দ একটা ক্রিটিকাল অসুখ

আর আমাদের ভাবনাগুলো অসুখের ঘর ,

আর সেই ঘরেতে আমরা নাগরিক ,আমরা শহর ,আমরা জীবিত ও মৃত । 

আমরা ততক্ষন জীবিত  যতক্ষণ আমরা স্বপ্ন দেখি 

অমরা ততক্ষন মৃত যতক্ষণ আমরা খরচ না করি 

বিক্রি হবে ভেবেই আমাদের জীবনগুলো সাজানো রেস্টুরেন্টের মেনুতে 

অথচ অবিকৃত আমরা দীর্ঘকাল কর্পোরেশনের ডাস্টবিনে অপেক্ষারত।  

আমরা ভাবছি সকাল হবে কবে 

অথচ তোমরা ভাবছো এটা একটা প্রেমের কবিতা  

কিন্তু সত্যিটা হলো 

আমরা কেউ ভাবছি না  সময়  বদলাতে আমাদের নিজেকে বদলানো দরকার 

আর নিজেকে বদলাতে আমাদের সময়কে বদলানো। 

.

বিদ্র : এটা কোনো প্রেমের কবিতা না ,এই কবিতা সময়ের। 

Sunday, March 27, 2022

কমলি



 কমলি 

... ঋষি 


রেল লাইন পেরোলেই ঝোপ ঝাড় মল মূত্র দুর্গন্ধের ভার

ওদিকে খানিক গেলে কাঁচা রাস্তা, দেশি মদ ও কমলির  ঠাঁই

কমলি মদ বেচে, বেচে নিজেকেও।

কমলির  সাঁঝ-কাজল চোখ মৃত স্বপ্নের লাশ ঘর 

প্রতি সন্ধ্যা,সাঁজে কমলি চুল বাঁধে ,

প্রতি রাতে কাস্টমার ফিরে গেলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে 

অভ্যাসে বাঁচে কিছুক্ষন নিজের পোড়া কপালে সাথে । 

.

যখন মহুল ফোটে মাতাল গন্ধ হুল বেঁধায় বোলতার মত

তখন  কমলির মরণ পায়,

তবুও কমলি বেঁচে থাকে সময়ের মরা খালে সুখা দীঘি হয়ে 

ফি বছর শুকোতে গিয়েও বুকে কাদাজল নিয়ে কলমি স্বপ্ন দেখে 

বেঁচে ওঠে ঠিক, 

আর স্বপ্নের ঘোরে যাকে দেখে, তাকে বলে আয়

                                      .. বুকে আয়।

.

গভীর রাতে, ঝিঁঝিঁ ডাকে জঙ্গলে যখন

আকাশ তখন নেমে আসে কমলির  বুকের কাছে ,বুকের মাঝে 

নিঃশব্দরা তখন তারা হয়ে ফোটে সারা আকাশে ,

তখন অন্ধকার পুরুষ কলমিকে আদর করে পাগলের মতো 

তখন কমলির ছোটবেলার সেই গ্রামের মাদলের তালে নাচতে ইচ্ছে হয়। 

কমলি জানে না কতটা প্রেম, ঠিক কতটা আদর পেলে

মরা যায় সুখে ?

কতখানি সুখের সাথে ঘর করলে মানুষ বলে " ভালো আছি " । 

কমলির  রক্তে বড় নেশা ,রক্তে বড় রাগ

কমলির  ভরা যৌবনে সারা বুকে তাই অদৃশ্য রক্তের ধারা

কমলি  বুকের রক্ত মোছে রোজ , মদ বেচে, বেচে নিজেকেও

বিকিকিনি শেষ হলে কমলি  অন্ধকার মাখে উচ্ছিষ্ট শরীরে 

বেইমান প্রেমের সুখে রোজ বাঁচে, রোজ ভালোবাসে

রোজ মরে সে ।

 


বহুদিন


 বহুদিন 

,,,, ঋষি 


বহুদিন একসাথে পথ হাঁটিনি হে চলন্তিকা 

যাই নি একসাথে ধুলোপথে বগটুই কিংবা সুদূর ইউক্রেনে,

শুধু  সময়ের  মিথ্যে কথায় ভয় পেয়েছি তার জন্য 

সত্যি এখনো মরে যাই নি । 

আমাদের আশেপাশে

ভিড় করে যুদ্ধের ট্যাংক , মিসাইল রকেট ,বোমা বারুদ বিস্ফোরণ 

নিষ্পাপ হত্যা ,অজস্র ধ্বংসলীলা ,চিৎকার 

আর মানুষের অধিকারের খিদে।  


বহুদিন একসাথে পথ হাঁটিনি হে চলন্তিকা 

পথেরা রক্তমাখা, পিচ্ছিল, অশালীন ,অসভ্য ,জান্তব 

জানি তোমার একলা  গাল অসুখ ছুঁয়েছে, আঙুল ছুঁয়েছে অবিশ্বাস

ভালোবাসা এসেছিল কবে জানি না এই পৃথিবীতে 

এখন তো শুধু অবশিষ্ট বাসা 

সময়ের ঘর 

কবিতার পোড়া বাসে শুধু মানুষের অতৃপ্তি। 

.

বহুদিন একসাথে পথ হাঁটিনি হে চলন্তিকা 

আজকাল সময়ের কবলে পরে বসন্ত প্রায় মৃত 

তোমার নিষ্পাপ দৃষ্টি ,অতল গভীরতা আর যা যা আমার প্রানপ্রিয় 

সবকিছু শুধুই মুহূর্তবন্দী। 

স্বপ্ন দেখি তোমার তাঁতের শাড়ি, আচলের গিঁটে ভালোবাসা

এখন শুধুই অস্থিরতা ,

অস্থির সময় জুড়ে মৃতদেহের মিছিলের সারি

যুদ্ধের দামামা 

বিজ্ঞানের অন্ধকার নেমে আসে মৃত্যু হাতে নিয়ে

অজুহাত খোঁজে অন্য এক অভ্যেসের হাত

আর 

সংঘাত। 


পায়ের ছাপ




পায়ের ছাপ 

..... ঋষি 

.

চলো, দুজনে পালাই 

নিজেদের উদযাপন করি কালকের ওই বাঁচার শহরে ,

জানি আমাদের সময়ের শেষে ধুলো,ধূসরিত এই শহর ডুবে যাবে আজকের  মিথ্যেতে। 

চলো আজকেই  পালাই আগুন তাপে না খেলা সমস্ত বসন্তগুলোতে  

আগামীর শহরে তখন না হয়  বিছিয়ে দেব তোমার কালো রঙের শাড়ি,

কিংবা অপেক্ষারত সেই শীতল স্পর্শে 

তুমি আজকেই না হয় আরেকবার বলো কাল বলে কিছু হয় না। 

.

আমি জানি তোমার ট্রান্সলেট করা ঈশ্বর বসে আছেন মন্দিরে  

আমি এও জানি গীতবিতানের পাতা থেকে ঠাকুর শব্দটা সকলকে মুগ্ধ করে বাঁচায়, 

তবুও কি জানো সিলিকন ভ্যালিতে  জন্মানো সমস্ত প্রজন্মের বাজারে 

তুমি শব্দটা বিক্রি হয়ে যাবে খুব সস্তায় ,

অথচ  তুমি জানো  না  রাধা উনি শুধু প্রেয়সী নন 

অপেক্ষারত একটা যুগ। 

.

তাকাও আমার দিকে,

এই দেখো তোমার চাওয়া পাওয়া সব ঘুমিয়ে আছে এই শহরের রাস্তায় ,

তোমার পায়ের পাতার কবিতা লিখবো বলে 

তোমাকে একটা প্রশ্ন করার ছিল 

তুমি হাঁটবে তো আমার পায়ের ছাপের প্রতিটা মৃত্যুতে  ?

বলবে না তো ক্যা হুয়া তেরা ওয়াদা 

ও কসম ও ইরাদা

কি হলো ?কেঁপে উঠছে কেন তোমার ঠোঁটদুটো  

কি হলো ?

সত্যি বলোতো উদযাপন মানে কি শুধুই দুটো শরীর মাত্র ? 

অভিমান

 অভিমান 

... ঋষি 


এতটা দূরে গেলি কি করে 

অবিক্রীত হৃদয়ের দরজায় শহর অধূষ্যিত প্রহসন 

কি চেয়েছিলিস 

সুধী  ভালোবাসা ,কিন্তু আমি ?

প্রশ্ন করেছিলি কখনো নিজেকে 

কতটা মিথ্যে বললে সত্যি মিথ্যে হয়। 

.

অবান্তর লোভী সময়ের দরবারে ভালোবাসা মুক সেই পশুটা 

দরজার বাইরে এসে ভাবছি 

এতটা দূরে চলে এলাম কখন ,

নিজেকে বোঝাতে ,নিজেকে ভাবাতে ,নিজের দুর্বলতায় 

শহরের সাদা কালো মেঘে কোথাও বাষ্প জমে নি 

কেন তবে সামনের পথটা এতটা অস্বচ্ছ। 

.

এতটা দূরে গেলি কি করে 

কিছু সময়ের অভিজ্ঞতা ,কিছু অপমান ,কিছু লাঞ্ছনা 

কিছু অসহ্য মৃত্যু 

বেশ মুহূর্তের ভালোবাসায় কেটে গেলো আমাদের সময়। 

তুই শুধু ভালোবাসা নিয়ে বাঁচ

আমার ঝুলিতে এখনো কিছু অবিক্রিত ভালোবাসা ,খুচরো কিছু মুড়ি মোয়া 

তুই আরো দূরে থাক ,ক্ষতি নেই 

তবে আমি জানি সেখানে কোনো পাপ নেই ,বিশ্বাসঘাতকতা নেই। 

আমি এগোচ্ছি 

আমি হাঁটছি 

তবে মনে রাখিস গন্তব্য আমার ছিল না কখনো।  

  

হাসি কান্না

 হাসি কান্না 

... ঋষি 


কেউ হাসালে হাসতে হবে 

কেউ কাঁদালে কাঁদতে ,

কেউ যদি  মরে যায় ,যদি চোখে জল না আসে 

সকলে প্রমাণপত্র চাইবে ,সকলে বুঝতে চাইবে সম্পর্ক 

ক্যারেন্ট এফেয়ার্স থেকে প্রশ্ন আসবে 

ভালো নেই বুঝি ?

.

তাই প্রমান করতে হবে 

এক হাঁড়ি জল জমিয়ে প্রমান রাখতে হবে আমি দুঃখী 

কিংবা খেজুর রসে মজে গিয়ে দাঁত বের করতে হবে 

কি বলেন ,প্রমান তো রাখতে হবে ,

হেসে গড়িয়ে পড়া ঝুল জমা মনে 

এই লোকগুলো  ঠিক মনে করাবে সুখ ,না হলে দুঃখ। 

.

মাঝে মাঝে মনে এইভাবে রাংতায় মুড়ে সম্পর্ক শব্দটা অপ্রয়োজনীয় 

মনে হয় জোকার সাজিয়ে এই লোকগুলোকে ছেড়ে দেব নকল শহরে 

তারপর দেখবো তারা কতটা কাঁদে 

কতটা হাসে ,

সম্পর্কের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়ে বলবো 

ওই যে তাজমহল হাসছে 

নিজের  ভাবনাদের সৎকার করে কাটিয়ে দেব আলুসিদ্ধ জীবন 

বাকি জীবন 

যাতে একদণ্ড শান্তিতে হাসতে বা কাঁদতে পারি। 

 


Wednesday, March 16, 2022

একটা নতুন রঙ

একটা নতুন রঙ
ঋষি

একটা নতুন রঙ খুঁজছি
যে রঙে রাঙালে এই পৃথিবীতে থাকবে না কোন মানুষের শোক 
একটা নতুন রঙ 
যে রঙে রাঙালে কেউ বলবে না এটা ইউক্রেন, এটা রাশিয়া 
যে রঙে মানুষের সীমাবদ্ধতার শিকলগুলো ছিঁড়ে যাবে 
মানুষগুলো বাঁচবে সমস্ত দেশ,ডলার, টাকা ছাড়িয়ে নিজেদের ভালোবাসবে বলে 
এই পৃথিবীকে ভালোবাসবে বলে। 
.
একটা নতুন রঙ খুঁজছি 
যে রঙে আমাদের আগামীর সন্তানেরা পাবে একটা উদার পৃথিবী 
যে রঙে রাঙিয়ে তারা হাসবে ফুলের মতো, 
তারা বাঁচবে কোন জাতি ধর্ম, কোন সমাজ, কোন বর্ণ ছাড়া 
শুধু বাঁচার অধিকারে
শুধু হাসার অধিকারে
মানুষের পাশে, মানুষের সাথে এক স্বাধীন পৃথিবীর বর্ণ পরিচয়ে। 
.
একটা নতুন রঙ খুঁজছি 
যে রঙের রাঙিয়ে কোন দুস্থ শিশুকে মরতে হবে না ক্ষুদার জ্বালায় কিংবা বিনা চিকিৎসায়,
যে রঙে রাঙিয়ে কোন নারীকে হতে হবে না বেআব্রু কিংবা বেইজ্জত। 
যে রঙে থাকবে না কোন তালিবান, মাওবাদী কিংবা হিন্দু, মুসলমান
যে রঙে থাকবে না কোন সাজানো মুখোশ, প্লাস্টিক হাসি
যে রঙে থাকবে না পারমানবিক বোমা,বারুদ কিংবা কোন লকডাউনের চোখ রাঙানি। 
যে রঙে রাঙিয়ে সকালের নতুন সূর্য সময়ের প্রতিটা জাগরণকে আমন্ত্রন জানাবে 
প্রতিজন মুখোশধারী, ধান্দাবাজ, লোভী, সকল সভ্যতার ব্যাপারিকে হত্যা করবে
সেদিন আমি আর লিখবো না কোন কবিতা
সেদিন আমি এমনি কোন রঙের দিনে চলন্তিকাকে মাখিয়ে দেবো আনন্দের রঙ 
আর তাকে বলবো রবিঠাকুরের ভালোবাসার লাইন দুটো 

"প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস 
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ"।  


Tuesday, March 15, 2022

যোগ্যতা

যোগ্যতা 
ঋষি 

জানি ওখানে দাঁড়াতে যোগ্যতা লাগে 
জানি ওখানে চুরি করে দাঁড়ানো সম্ভব নয় 
তবু আমি গিয়ে দাঁড়াই ওই চায়ের দোকানে 
বিকেলে শেষ আলোর সাথে একমুখ সিগারেট ছেটাতে 
জানি তুমিও আসো সময়ের পসরা সাজিয়ে সামনের রাস্তায় 
কিন্তু তোমার পাশে হাঁটার যোগ্যতা আমার নেই। 
.
জানি ভীড়ে মিশে থাকা এই শহরে মানুষের রেওয়াজ 
জানি মনের ঘরের দরজায় তালা লাগানো 
চাবিটা কোন ম্যাজিক কবিতার মতো অপেক্ষা,
সত্যি যখন শব্দ বৃষ্টি হয়৷ 
তখন তোমার ঠোঁট গুলো নড়ে
কিন্তু আমি শুনতে পাই না কিছু। 
.
জানি এই যোগ্যতায় প্রমান হয় না রক্ত ক্ষরন 
জানি এক কবিতায় প্রমান হয় না আমি বেঁচে
শুধু যখন দেখি কেউ তোমায় জড়িয়ে ছবি তোলে
শুধু যখন দেখি কেউ তোমার পাশে নিজেকে ছবিতে দাঁড় করায়
আর তুমি হাসো
তখন বিশ্বাস হয় আমি কেউ নই 
আমি যোগ্য নই। 
তবুও আমি অপেক্ষা করি তুমি আসবে 
তবুও আমি অপেক্ষা করি তুমি শাড়ির আঁচলে আমায় বাঁধবে 
জানি এই চৌরাস্তা, এই চায়ের দোকান সব বাহানা
তোমায় শুধু একবার দেখবো বলে।

কথা ফুরোবার আগে

কথা ফুরোবার আগে 
.. ঋষি 

আমার কথা ফুরোবার আগে 
তোমার কথা বলতে চাই, 
বুকের বাঁদিকে হাত রেখে তোমার পদচিনহ ধরে হাঁটছি 
বালিশের দাগ ধরে, শিমুল, ফাগুনের দিনে তুমিই তো ছিলে 
তবু অনেক বয়স বাকি রয়ে গেছে 
তবুও অনেকটা পথ হাঁটা বাকি রয়ে গেছে। 
.
কঠিন পাথুরে পথ, বরফে ঢাকা, আগুনে পোড়া 
তবু আজো হাঁটছি তোমার দিকে, 
হাঁটতে হাঁটতে মনে পড়ে না কবে যেন পথটাই বুড়ো হয়ে গেছে
তবু প্রতিবার মনে হয় আরেকটু, আরেকটু 
তবু পথ ফুরোয় না
অথচ সময় সে যে গন্তব্যে পৌঁছবার জন্য তাড়াহুড়ো করে। 
.
আমার কথা ফুরোবার আগে 
অন্তত একবার তোমার মুখোমুখি দুদন্ড শুধু তোমার হয়ে বসতে চাই 
আমি আশা করি কোন৷ একদিন তুমি আমার বিকল্প পাবে ঠিক 
কিন্তু তার আগে আমাকে মরতে হবে, 
শেষ সুতো ছিঁড়ে যাওয়ার আগে বাকি পথটুকু
আমাকে কাঁটার মুকুট পরে হাঁটতে হবে 
একবার অন্তত সময় ফুরোবার আগে পৌঁছতে হবে তোমার কাছে। 

হয়তো



হয়তো  
.. ঋষি 
হয়তো কখনো চাঁদের গায়ে পা রাখব আমি 
হয়তো বা তখন আমার পা পড়বে না আর পৃথিবীর মাটিতে  
হয়তো তখন হাত বাড়িয়ে আকাশ থেকে নামিয়ে আনবো আমি দু একটা নক্ষত্র,
তখন মাথার ঝাঁকড়া চুলে ঢেকে দেবো এই মহাকাশ 
হয়তো আজ অবধি  তুমি কোনোদিন প্রশ্ন করো নি আমাকে   
হয়তো তখন আমাকে আবারও ভুল বুঝে প্রশ্ন করবে কিভাবে ভালোবাসি? 
.
ভালোবাসা একলা হলে বিদ্রোহ হয়ে যায়
ভালোবাসা একলা হলে ভুল বোঝাবুঝি
ভালোবাসা একলা হলে প্রশ্ন থাকে,উত্তর নয় 
ভালোবাসা একলা হলে অভিমান হয় 
ভালোবাসা একলা তাই এই গ্রহে দুর্ভিক্ষ 
ভালোবাসা একলা তাই চেনা এজলাসে অচেনা মানুষ। 
.
হয়তো তখন আমার সমস্ত স্নেহ গুঁড়ো গুঁড়ো করে ছিটিয়ে দেবো আমি মানুষের উদ্দেশ্যে
দুমদাম বড় বড় অক্ষরে সেদিন ঘোষণা করবো  বিদ্রোহ, 
ভুল বোঝাবুঝি
উত্তর সাজিয়ে মিথ্যা কল্পনা
অভিমান 
সব কেমন একলা হয়ে যাবে হয়তো সেদিন। 
হয়তো সেদিন সময়ের নিয়মে আমরা আজকের মতো একলা থাকবো 
হয়তো বা জড়িয়ে বাঁচবো সেদিন আমাদের ফোটোফ্রেমের মুহূর্তগুলো ,
হয়তো সেদিন আমাদের চামড়ায় ভাঁজ ,চোখের চশমার ফ্রেমে অতৃপ্তি 
হয়তো বা আমরা আবারও সেদিন জীবনে  ভুল করবো একটা 
তুমি তাকাবে আমার দিকে ,আমিও ফিরে তাকাবো 
কিন্তু বলতে চাইলেও 
কেউ কারোকে কিছুই বলতে পারবো না 
শুধু  দেখবো ছেলেটা হঠাৎ করে কেমন বড় হয়ে গেছে
সে হয়তো বলবে আমাকে  বাবা এইবার ওষুধটা খেয়ে নেও ,বাঁচতে হবে। 

সুগার

সুগার 
.. ঋষি 
এক কঠিন রক্তচাপ, চিনিতে ভিজিয়ে ভারতবর্ষ ভালো আছি,
কষ্ঠ হচ্ছে
একটা পারফেক্ট ইজেক্সন দরকার 
বড্ড বেশি সুগার 
তুমি কৃষ্ণ আমি রাধা, পুরো বেশ্যা পাড়া জানে 
শুধু আমরা জানি না। 
.
ভারতবর্ষ ঠেকিয়ে আগামীর সন্তানরা আমাদের নাভীতে 
মড়া অন্ধকার ট্রামরাস্তা পাড়িয়ে আগামীর অপেক্ষায় ভাবি কালটা দারুন 
অথচ আজ শুকিয়ে যায়
আমরা ভাবি কলকাতা শুধু আমাদের দেশ। 
.
রোজকার হিসেব কুড়িয়ে সময়ের যৌনাঙ্গ বাঁচিয়ে আমরা কিনে রাখি কন্ডোম
খাট না হয়ে, খাটিয়াতেও চলবে 
খাটিয়া না জুটলেও নিদেনপক্ষে একটা চাদর। 
সমস্ত দখল বেদখলের আনন্দের পর 
উলঙ্গ দুনিয়ার খোদামতে আমরা ভাবি এই তো ভালো আছি 
ভালো আছে ভারতবর্ষ 
আদতে মরা ট্রামলাইন আর চিত করে শুয়ে থাকা শহরটার গোপনে মৃত্যুমুখী 
আমরা সকলে সত্যিটা জানি 
তবু মিথ্যা বলি। 

ঝগড়া



ঝগড়া
.. ঋষি 
ওপাড়ে কিছু মন খারাপ করা আমি
এপাড়ে আমি দাঁড়িয়ে শতাব্দীর শেষ পাতে খই ছড়াবো বলে 
আমি কবিতা লিখছি, অথচ বসন্ত ডাকছে না কেন 
এও সম্ভব? 
.
দরজার বাইরে কতকাল একলা দাঁড়িয়ে কিছু মনখারাপ 
কতলোক তো মাথা নিচু করে বাঁচে 
কতলোক তো শুধু তোমার অপেক্ষায় দিন কাটায় 
অথচ আমি মন ভালো করার অপেক্ষায় থাকি 
তোমাকে বলি ঝগড়া কোরো না
অথচ তুমি ঝগড়া করো 
আমার সাথে না, অন্য কারো সাথে। 
.
আমার জানলার বাইরে গেয়ে চলে একলা বাউল 
অথচ রক্তক্ষরণের ভয়ে আমি দরজা খুলি না
খুললে যদি কেউ আগ বাড়িয়ে বলে বাঁচার কথা 
কিংবা প্রবল ঘৃনায় যদি ছুঁড়ে দেয় খিদে 
পচা নর্দমায়
এ সব কেন?  
এ সব কি সত্যি তোমার জন্য নয়? 
সত্যি কি আমি জন্তুর মত চিৎকার করি না তোমার জন্য
সত্যি কি এই মনখারাপগুলো অজুহাত? 
.

একদিন বিশ্বাস করো জানলাটা খুলবে 
তুমি দেখবে সেখানে আমার বদলে তুমি দাঁড়িয়ে 
আর জানলার বাইরে 
আমার মৃতদেহ তোমার অপেক্ষায় পাথর হয়ে গেছে। 

Sunday, March 13, 2022

পোশাক



পোশাক 
.. ঋষি 
জীবন বস্তুটা এত ছোট, আবার এত বড়
আমি জীবন শব্দটা প্রতিদিন জলে গুলে খাচ্ছি, খেয়েছি
বুঝেছি জল ঘোলা 
তবুও ফুরোয় না, 
এ যেন হারানো প্রেম শুধু বারংবার পোশাক বদল করে
জিততে চায় 
কিন্তু অদ্ভুত হলো কিছুতেই ফুরোয় না। 
.
আমার শিক্ষক আমাকে শিখিয়েছেন জীবনে জিততে শেখো 
আমি মেরুদণ্ড খাঁড়া রেখে বিপন্ন বিড়ালের মতো দাঁড়িয়েছি
জীবন টা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছি 
কখনো হেসেছি, কখনও পায়খানার ফ্ল্যাশ টেনেছি
কিন্তু বুঝেছি জীবন ফুরোয় না শুধু জামা বদলায়।

.
আমার চেনাশুনা অনেকে আমার মত জীবনটাকে গুলে খেয়েছে
গা গুলিয়েছে 
তবু দিন শেষে বাড়ি ফিরে দেখেছে 
জীবনের আলনায় সাজানো শাড়িগুলো একইরকম 
একইরকম ভালোবাসাহীন ঠোঁটে ঠোঁট রাখা ফটোফ্রেম 
একইরকম দেওয়ালের হুকে জামা, বাথরুমে রাখা তোয়ালে, ব্রাশ, সাবান 
সব ঠিকঠাক 
শুধু জীবন বাবু কোথাও নেই 
রয়ে গেছে জীবনের পোশাক। 


একটা সকাল

একটা সকাল 
... ঋষি 
ভীষণ ভাবে চেয়েছি, চাইছি
একটা সকাল 
তোমাকে বলেছি বটে এই শহরের ধুলোয় আমার দম বন্ধ লাগে 
কিন্তু তোমাকে বলা হয় নি
এই শহরটা বেশ আছে নিজের মতো 
পুরনো ট্রামলাইন জড়িয়ে, গঙ্গার গ্যালন গ্যালন ব্যাকটেরিয়ার সাথে " অভ্যাসে "। 
.
তুমি বললে ডেকে নাও আমায় 
বেঁচে নাও আমার সাথে 
কিন্তু আমার বাঁচাটুকু শুধু মুহুর্ত জমিয়ে হোক আমি চাই না 
বরং মুহুর্তরা এই শহরের মতো চলতে থাকুক 
আমি বরং তোমায় জড়িয়ে,জীবন জড়িয়ে বাঁচি। 
.
তুমি আমাকে বোঝাতে চাইছো 
এক সৈনিক তার ঘরে ফেরার স্বপ্ন নিয়ে মরে যায় 
তার দেহটা ফসিল তখন 
তার রাষ্ট্রীয় সম্মানে তোপধ্বনি তার কফিনের অন্ধকার স্বাদ চেটে নিতে 
কিন্তু তার স্বপ্নগুলো তার একটু একটু করে লাল বরফে মেশে
আমি বললাম 
কি লাভ 
আমি সৈনিক নই, আমি ভীষন সাধারণ
আমি ভাবে চেয়েছি, চাইছি 
একটা সকাল। 

হৃদয়পুর

হৃদয়পুর 
... ঋষি 
.
এখনও মাঝে মাঝে হৃদয়পুরকে খুব মনে পড়ে
কলকাতার লোকেরা হাসবে শুনলে, বিশ্বাস করবে না
এই গ্রহে হৃদয়পুর বলে কোন জায়গা আছে। 
মনে হয় ওই তো হারুনদা এখনও বসে আছে মিষ্টি নিয়ে হাটে
ওই তো পলাশদা বাঁশি বাজিয়ে বাঁশি বিক্রি করছে
আচ্ছা এখনও বোধহয় পালেদের সেই ভাঙা বাড়িটা আছে?
আর আছে সেই দালানের গাছের গুড়িতে র + ম লেখা? 
বোধহয় শ্যাওলায় ঢাকা পড়ে গেছে সব। 
.
অর্জুনগাছ নিয়ে যে কবিতা লেখা যায় 
একবার অমিতাভ লিখে দেখিয়েছিল, 
হৃদয়পুরে বৃষ্টির স্বাদটাই আলাদা
জিভ বার কর, জিভ বার কর,,,,,,  মনে পড়ছে অসীমা,
তোমাকে আরও নিঁখুত হতে হবে 
চলে এলাম শহরে। 
.
সেই শেষবার অমিতাভকে দেখেছিলাম মাঠের উপর
সে বলেছিল, তুই আর আসবি না, তাই না? 
সত্যি আর যাওয়া হয় নি 
হৃদয় পুর, 
স্ত্রী,পুত্র, পাকা বাড়ি আঁকড়ে একটা পুরো জীবন
একটা যেন শেষ, 
.
আজ আমার বড় চিন্তা হয় অমিতাভ এখন কি করে?
আমার মত সেও হারিয়ে ফেলে নি তো আপজন 
সেও আমার মত কোন বৃদ্ধাশ্রমে নেই তো?  

Thursday, March 10, 2022

রূপান্তর

 রূপান্তর 

... ঋষি 


ধীরে ধীরে গভীর হলো ভাবনা 

আমরা দৃশ্যের গভীরে ছোঁয়াছুঁয়ি ফটোফ্রেম 

গল্পগুলো লেখা হয় নি বহুদিন 

একটা ঘোড়ায় টানা গাড়িতে লেগে থাকে শহরের মেজাজ 

ভিক্তোরিয়ার পরীরা তখন স্বপ্ন 

স্বপ্ন কবিতার শব্দে নিজেকে ঘুম পাড়ানো। 

.

এমন করে আবোলতাবোল তাকিয়ো না 

ভাবনারা  গলে পড়বে তোমার শব্দহীন ঠোঁট থেকে বিষন্নতায়  

সাথে মিশে আছে নীরবতা 

তোমার দু কামরার স্তন থেকে মাসুল গুনছে শৈশব 

আমি ভীত হয়ে তাকিয়ে 

সত্যি যদি পাগল আমার শহর। 

.

এবড়োখেবড়ো রাস্তার ওপর থেকে এগিয়ে চলা 

বুকের ভিতর ভিক্ষা করে শিয়ালদা স্টেশনের অপেক্ষার দূরত্ব 

দ্রুত আমি হারিয়ে যেতে চাই 

       মিথ্যে এই শহরের শব্দদের অন্ধ করে 

সমস্ত ধর্মগ্রন্থের পুনরায় স্থাপন করতে চাই শান্তি। 

ক্ষয় আর ক্ষয় 

রূপান্তর 

ছায়ার আশ্রয়ে জীবন বোধহয় ছায়ার মতো দেখতে 

আর আমার কবিতার ছায়াহীন 

শুধু সহবাস শব্দ 

দর্শন  ,না আর সাহস হয় না ভাবতে। 

চরিত্র



 চরিত্র 

... ঋষি 


চরিত্র লিখছে নারী 

খোলা স্তনের মুখোশে সমাজ লিখছি পরম্পরা 

যদি তুমি চারিত্রিক হও 

তবে সম্বলে তুললে নিও  একাধিক অধিকার 

আর যদি ভালোবাসো 

তবে খোলা আকাশ জড়িয়ে রাখো নীল বিবর্ণ শরীরে। 

.

ধ্রুপদের গতিতে 

নিজস্ব অবলম্বনে আয়নারা চরিত্রের গাছ খোঁজে 

গাছের পাতায় শুকিয়ে যায় সময়ের শীতে 

জানো তো শীত করে 

শীত করে সম্বল ,বুকের ওমে অসংখ্য বাঁচা 

তবুও তুমি বেওয়ারিশ হও নিজের চরিত্রে। 

.

চরিত্র লিখছে শীতলতা কিংবা গড়িয়ে নামা ঘামে 

বুকের কেবিনেটে জমা হচ্ছে রিসাইকেলে তোমাকে ছোঁয়া 

তুমি আঙ্গিক 

তুমি সাহ্নিক 

তবুও তোমার মধ্যে বয়স্ক ভাবনার বায়োস্কোপে সাদা কালো ছবি ।

ভালো থাকতে গেলে 

জানি না কেমন বাঁচে মানুষ ?

শুধু জানি কেমন থাকে শহর একলা থাকায় 

অন্ধকারে শুয়ে থাকে চরিত্র 

বারংবার 

জানি নারী তুমি আজও অপেক্ষায় ঠকে যাওয়ায়। 

কথাকলি

 সব বুঝে গেলে কষ্ট হয় ,সব জেনে গেলে আরোও কষ্ট 

কোনখানে সুখ 

              কিসের দুঃখ ?

শুভ নহবতে লেখা আছে মুহূর্ত 

              মু 

                  হু 

                       র্ত 

কথাকলি আমরা আর নির্যাসে শুধু অন্ধকার শহর 

                              তোমার চিৎকারগুলো এই শহরের দেওয়াল লিখন 

                                    সত্যি হলো ভালোবাসা নিজেই বড় অগোছালো। 

.

কথাকলি 

ঋষি 

ভালোবাসার অপেক্ষায়

 

ভালোবাসার অপেক্ষায় 

... ঋষি 


ধুলো ওড়া ,বইয়েরগন্ধ 

টেবিলে ছড়ানো উৎসবে কথা বলে শব্দরা 

গভীরে বলে শব্দহীন হও ,

আরো গভীরে খোঁজ ,আরো গভীরে বোধ 

ঈশ্বর আর শব্দমণ্ডলীর বৈঠকে আর কদিন 

এই শহর 

নুন লেকে রেখে এসো তোমার ধুলোমাখা কিছু আশ্রয়। 

.

আমি সেখান থেকে বলছি 

যেখান অন্ধকারে কোনো এক ছাপাখানায় অনবরত শব্দ 

রঙিন মলাটে ,ভাবনা ,

প্রকাশকের দায় নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় 

সকলেই ভাবনা বিলোতে চায় 

অথচ ভাবনারা বছর বছর অপেক্ষা করে বইয়ের উৎসবের । 

.

যারা আসো নি ,তারা ঘুরে এসো 

যারা ভালোবাসোনি ,প্লিজ একবার তাদের কাছে এসো,

সেখানে বসে হাজারো হৃদয় 

ভাবনার আশ্রয় 

আর শব্দদের বিছানায় তাদের জড়িয়ে দেখো একমুহূর্ত 

সে এক সঙ্গমের সুখ 

সে এক ভাবনার সুখ। 

সবকিছু বলা যায় না ,অনুভূতিদের বোঝোনো বড়ো কষ্টকর 

ছড়ানো ছেটানো হাজারো বুকস্টল ,হাজারো কবির হৃদয় 

আজও তোমার অপেক্ষায়। 

.

(যারা এখনো যায় নি ,প্লিজ ঘুরে এসো আন্তর্জাতিক কলকাতা  বইমেলা ২০২২ ।) 

যদি ভালো না লাগে

 


যদি ভালো না লাগে 

... ঋষি 


যদি ভালো না লাগে ,ফিরে তাকাও 

যদি রাতের ঘুম ভেঙে যায় আচমকা ,ফিরে তাকাও 

ভবিষ্যৎ পড়ে আছে অনেক দূর 

অতীত ফেলে আসা ছোট হয়ে যাওয়া একলা জামাগুলো

ফিরে তাকাও আজকে। 

.

আমি রৌদ্র খুঁজি সমুদ্রের ইচ্ছার ভিতর 

টলমল করে ওঠে কোনো গভীর নারীর সুখ 

আমি অনিচ্ছায় বাঁচি 

                         ফিরে তাকাবার লোভ ,

দূর থেকে হারিয়ে যাওয়া শৈশব ,বন্ধুদের মুখ 

আশ্রয় বাঁচা ,অনাবিল আকাশে। 

.

যদি ভালো না লাগে ,ফিরে তাকাও 

পার করে আসা শেষ শীতের সোয়েটারগুলো গুছিয়ে রাখো 

গুছিয়ে রাখো মুহূর্তদের আছিলায় 

                 আসলে ভুলতে চাওয়া মানেই পাপ নয় 

                             আসলেই ভালোবাসলেই পবিত্রতা নয়। 

শ্মশানের গন্ধে 

ছাই মাখা এই পুরোনো শহরের দেওয়ালে ভালো না লাগাগুলো ম্যাজিক 

সেই ম্যাজিকগুলো বড় একলা 

একলা এই শহরের দিনক্ষণ ,মুহূর্তের হাসি 

দেখো তুমি দাঁড়িয়ে ,তোমার থেকে দূরে 

সুখ খুঁজছো 

ফিরে এসো 

যদি ভালো না লাগে ফিরে তাকাও। 

Wednesday, March 9, 2022

এটাই আগামী



এটাই আগামী
.. ঋষি 

থামো নারী, থামাও তোমার মহীরুহ 
এই পৃথিবীর সমস্ত পুরুষ ভোগের বস্তু, সমস্ত পুরুষ ক্লীব 
তুমি আগ্নেয়গিরি, 
তুমি জানো এই পৃথিবীর সমস্ত পুরুষ তোমার যোনিজ 
তুমি তাকে করতেই পারো ক্রীতদাস
অসম্মানে তাকে ছুড়ে দিতে পারো দুটো রুটি কিংবা সময়ের রক্ত।
.
সারারাত তুমি আঁচড়ে কামড়ে বিবর্ন করো  পুরুষের পুরুষাঙ্গ
তারপর দীঘল চোখে তাকিয়ো পুরুষের দিকে
পুরুষ মগ্ন হলে , 
          ছুঁড়ে ফেলে দিয়ো তাকে অন্তস্থ প্রশ্নের মুখে 
তারপর আবার না হয় ব্যস্ত তুমি 
                 আবার তোমার মহীরুহ। 
.
জানি কলিঙ্গ থেকে ভবিষ্যতের রাস্তায় তোমার মুখে বিজয়িনী হাসি 
প্রতিটা পুরুষ তখন শুধু বিদ্রোহ, 
হে নারী... 

           তুমি থামিয়ে দিলে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে
আমাকে প্রশ্ন করলে,কবি এটা আবার কোন সময়ের কবিতা
আমি মুচকি হাসলাম 
তোমার ঠোঁটে চুমু খেলাম 
তারপর মনে মনে ভাবলাম " এটাই আগামী "।


অমলেন্দু ঘোষ

অমলেন্দু ঘোষ 
.. ঋষি 

অমলেন্দু ঘোষ বড় ভালো মানুষ 
উনি যা করেন ভালো করেন, ভালো খান, ভালো হাসেন
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান, মঞ্চ কাঁপান 
উনি পায়ে হাঁটেন, মাথায় তেল দেন। 
.
তবে তার ভালো কাজের গল্পরা আমরা
উনি গল্প লেখেন, উপন্যাসের চরিত্র সাজান
আমরা তার গল্প পড়ি,সাহিত্য বলি
আমরা হাততালি দি 
তারপর তার উপন্যসের চরিত্র হয়ে যাই। 
.
অমলেন্দু ঘোষ ভালো কাজ করেন 
অমলেন্দু ঘোষ অনেক পুরষ্কার পান 
অমলেন্দু ঘোষের অনেক টাকা
অমলেন্দু রথে চড়ে ঘোড়েন। 
আমরা উনি এলে রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াই 
আমরা উনি এলে লালায়িত চোখে তাকাই 
আমরা রাস্তাই চেন খুলে দাঁড়াই, 
আমরা দিন শেষে, আমেজ শেষে বাড়ি ফিরে আসি। 
.
আমরা মার্গারেট নোবেলকে বুঝতে পারি না
আমরা পিকাসোর ছবি বুঝি না
এগুলো কি ওনাদের দোষ? 
অমলেন্দু ঘোষ বড় ভালো লোক 
আমরা বুঝি না 
আমরা বংশ পরম্পরায় মানি, মানি অভ্যাসে
অমলেন্দু ঘোষ বড় ভালো লোক। 
 

Wednesday, March 2, 2022

অন্য মানুষ



অন্য মানুষ 

... ঋষি 


তুমি তোমার জায়গা আঁকড়ে থাকো 


আমি আমার জমিতে একটা নতুন গ্রামের পত্তন করবো 


প্রতিজ্ঞা করছি সেই গ্রামে আমিই  নির্বাচিত তখন  ,


যেখানে সকাল সন্ধ্যে সময়েরা ইতিহাস খুঁড়বে না 


শুধুই বর্তমান থাকবে 


           আর শুধুমাত্র  বর্তমানই বাঁচবে। 


.


তুমি সময় করে ঘুরে যেতো পারো সেই গ্রাম্য 


দেখবে সেই গ্রামে কোনো হিজড়া ,কোনো সমকামী থাকবে না, 


থাকবে সমস্ত শক্ত সামর্থ নারী ,পুরুষ 


যারা চুম্বনের মাঝে খুঁজে নেবে জীবনসাথী ,


সমস্ত শীত ,গ্রীষ্ম ,বর্ষা ,সকল ঋতুতেই তারা জড়িয়ে বাঁচবে 


                         জড়িয়ে থাকবে। 


.


সেখানে কোনো ধর্ম থাকবে না 


থাকবে না ধর্ম কিংবা সময়ের মুখোশে ঢাকা সময় ,


সেখানে কুকুরের মতো কামড়াকামড়ি করবে না কেউ শাসন নিয়ে  


সেখানে আজকের সময়ের ঘরে সকল  অবাঞ্চিত,অপমানিত মানুষগুলো বাঁচবে  


তারা তখন তাদের  রক্ত থেকে লাঞ্ছনা ,দোষারোপ সমস্তটাই ফেলে এসেছে 


ফেলে এসেছে স্মৃতির দাগে পুরোনো সব কালসিটে। 


সে গ্রামে মানুষ শুধু বাঁচতে আসবে 


মুখোশকে হাতিয়ার করে না 


সময়কে বিক্রি করে না 


                      শুধুমাত্র বাঁচতে চাওয়ায়। 


.


আমি সমস্তক্ষণ সেই গ্রামে কুয়াশা ঢাকা মাঠের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবো  


আজকের মতো তোমার দিকে তাকিয়ে 


                  কখনও  হাসবো কখনবা  কাঁদবো। 


আমি জানি 


তুমি সেদিনও দেখতে পাবে ঠিক আমাকে ,ঠিক চিনতে পারবে 


বেয়ারা ,অযোগ্য ,অসামাজিক ,বোকা এই  মানুষটাকে 


আর মনে মনে সেদিনও আজকের মতো তুমি বলবে 


                           অসহ্য। 



 

কালাশনিকভ

 কালাশনিকভ 

... ঋষি  


সমস্ত পারা না পারার ভিতর ভিতর অহংকার শুয়ে 

সময়ের অহংকার মানুষকে অপারক করে 

তোমার হাতে কালাশনিকভ ,অসংখ্য বুলেট আমার দিকে 

ছুটে আসছে 

    ভেদ করতে চাইছে বুকের পাঁজরে বেঁচে থাকা 

আমি পালাচ্ছি হাজারো মানুষের সাথে রোজ 

হাজারো শহর তবুও রক্তাত্ব। 

.

ভুল বোঝা 

এগিয়ে হারানো  হাত 

বোকা মাস্তুলে রেখে আসা জাহাজের দিক হারাবার দিন 

বুকের কেবিনেটে তছনছ হচ্ছে সময়ের ঝড় 

পথ হারাচ্ছে  নাবিক 

পথ হারাচ্ছে ক্রমশ দিশাহীন দিক। 

.

নির্বিকার বোঝাপড়া 

দিনে রাতে চর্বিতচর্বনে ক্যালেন্ডারের পাতায়  পুরোনো রাশিয়া 

ক্যালেন্ডারের পাতায় কালাশনিকভ  

                       এ কে ফর্টিসেভেন আবিষ্কার এক পাপ 

এক পাপ ষড়যন্ত্র মানুষের বুকে শুয়ে থাকা বাঁচার বিরোধিতায় ,

তবুও ফেস্টুনে লেখা 

বিপ্লবী অমর রহ ,

কিন্তু এমন যোনি কি যার উত্তরে লেখা যেতে পারে 

আরেক প্রজন্ম 

মানুষের বাঁচা।  

চলন্তিকা তুই এলে

 


চলন্তিকা তুই এলে 

... ঋষি 

.

চলন্তিকা তুই এলে সাড়ে তেত্রিশ কোটি মোমবাতি জ্বালাতাম 

তুই এলে একশো আটত্রিশ কোটি পরিসংখ্যান খুলে এই দেশে নতুন মানুষ ধর্ম বানাতাম 

বানাতাম এক সাধের গড় ,সময়ের স্বর 

                                      আর বাঁচার স্বয়ংবর। 

.

গোলাপি মেঘে স্বপ্ন জুড়ে জলফড়িং ঘাস 

তুই এলে খালি পায়ে হেঁটে যেতাম মেঘেদের ঘরে 

বৃষ্টি হতো ,টুপটাপ 

তুই এলে চুপচাপ কিছু কথা বলতাম চোখে। 

কখনো রাস্তায় ,কখনো বিছানায় ,কখনো দলা পাঁকানো শরীরের কাঁটায় 

হয়তোবা সাহস করতেন যীশুর জন্ম দেখার। 

.

অথচ চলন্তিকা তুই এলে জোনাকির ঘর বানাতাম 

আকুল কান্নায় তোকে জড়িয়ে আঁকড়ে বলতাম " ভালো নেই রে "

অজস্র চিৎকারে গিটারের সুরে গাইতাম 

আমার কলকাতা ,হাতে হাত ,হাজারো রাত। 

তবু জানি এই কবিতা ফোড়াবে না 

এই কবিতায়  প্রাকজন্মের ইতিহাস লেখা দুটো ছোট হাত 

তোকে আঁকড়াতে  চাই

          একটু হাসতে হয়তো  ,

                      তোকে ভালোবাসতে 

                                     একটু বাঁচতে। 

Tuesday, March 1, 2022

ঘর ছাড়া



ঘর ছাড়া
.. ঋষি 
জন্ম নিয়ে আমি অবাক হয়ে দেখলাম 
ঈশ্বর যেন  দাঁড়িয়ে আমার মুখোমুখি  মিটিমিটি হাসছেন 
কিন্তু কিছুই  বললেন না তিনি, 
আমি যখন  হামাগুড়ি  দিয়ে সন্তানের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম
সন্তানকে যেন বলতে শুনলাম কড়াইয়ে দুধ ফুটছে, 
কোনরকম লগবগে পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম
বন্ধুরা বললো সিগারেট খাবি? 
মায়ের কাছে গেলাম, মা বললো খুব ক্লান্ত লাগছে তোকে, রাতে ঘুমোস না, 
প্রেমিকের কাছে গেলাম সে বললো চুল, দাঁড়িগূলো কাট এবার,,,,, 

আমি ছিটকে সরে এলাম সবার থেকে
অবাক হয়ে ভাবলাম আমি কি এতই অপদার্থ,
আমি কি এতই অমানুষ, 
আমি কি শহরের নর্দমার কীটের থেকেও ঘৃন্য 
আমি কি কোনোদিন আর মানুষের মতো দেখতে হবো না 
আমাকে কেউ  কি কখনো প্রশ্ন করবে না আমি বাঁচবো কি করে? 
.
সবাই শুধু আমার বাইরের ভাবনায় আছে
আমার শরীরের ভাবনায় আছে
আমার চারপাশে ঘুরতে চাইছে 
কিন্তু। ...কিন্তু 
কিন্তু ভিতরের ঘরটা খালি রয়ে গেলো চিরকাল 
কেউ বুঝলো না 
সকলেই ঘরের মালিক 
আর আমি ঘর ছাড়া। 

তুমি বনাম ঈশ্বর




তুমি বনাম ঈশ্বর 
.. ঋষি 
মনস্থির করেছি সারারাত ধরে আমি অত্যাচার করবো 
তুমি বারংবার বোঝাতে চাইবে তুমি নারী
তোমার বিয়ের আংটিটা গড়িয়ে পড়বে কোন অন্ধকার অঞ্চলে, 
নিজেকে বারংবার দ্রাঘিমাংশে নিয়ে যেতে যেতে চিৎকার শুনবো তোমার 
তুমি বোঝাতে চাইবে আমি নারী 
আমি হাসবো তুমি নারী হতে পারো কিন্তু আমি ঈশ্বর। 
.
আমি ভোররাতে উঠে দেখবো তোমার সিঁদুর লেগে বালিশে, মায়া
তুমি ঘুমোচ্ছো 
তোমার উন্মুক্ত যোনি আমাকে মনে করাবে আমার জন্ম 
অথচ আমি তখন ঈশ্বর,
আমি চুপি চুপি তোমার কানে বলবো ভালো থেকো। 
.
তারপর বেরিয়ে পড়বো তোমার থেকে
সময়ের চরের উপর হেঁটে যাবার সময় প্রহরীরা হাঁকবে কে যায় এত অন্ধকারে,
আমি বলবো না তাদের আমি ঈশ্বর 
কারন কেউ জানে না  ঈশ্বরকে বন্দী রেখে মানুষ সময় সাজায়। 
আমি এগিয়ে যাবো চুপি চুপি
জানি এ পথের শেষে অন্ধকার রাতের বাগান 
জানি এ পথের অন্ধকারে কেবল কিছু জোনাকির আলো 
শুধু কাঁটার মুকুট পরে ঈশ্বর এগিয়ে যাবে 
জানি তুমিও তাড়া করবে আমার রক্তমাখা পায়ের ছাপ 
কিন্তু আমাকে ফেরাতে পারবে না
কারণ ঈশ্বর হওয়া সহজ 
কিন্তু মানুষ সেজে থাকা না । 

আসুরিক



আসুরিক 
.. ঋষি 
একবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করে নিও 
কোথাও কোন আঁচড়ের দাগ তুমি পাবে না, 
আসলে আমি অতটাও পশু নই 
যে তোমার বুকে, পিঠে দাগ টেনে যাবো,
বরং আমি দাগ টানতে চাই বটে
সে দাগে তোমার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হোক বারংবার। 
.
সত্যি হলো 
সময় সম্পর্কে আমার কোন বোঝাপড়া নেই তোমার সাথে 
আমার সিন্দুকে জমানো কিছু রাখা নেই 
আসলে সিন্দুকি নেই 
আমি তানসেন নই যে সুরের ঝংকারে বৃষ্টি নামাবো
তবে আমি বরাবরই কাঁদতে পারি তোমাকে জড়িয়ে। 
.
তোমাকে ভালোবাসি বলে 
আমাকে অপেক্ষা করতে হয় না মেট্রোর সিঁড়িতে, কলেজের গলিতে
আমাকে ঘন্টায় ঘন্টায় ফোন করে জানতে হয় না তুমি কি করছো 
বরং আমাকে ফোন করে জানতে হয় 
তুমি ভালো আছো কিনা, 
তোমার অপেক্ষায় আমাকে ধ্যান করতে হয় দৈত্যগুরু শুক্লাচার্যের মতো 
আসুরিক লোভে 
তোমাকে গিলে খাবো বলে। 
.
 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...