Saturday, October 30, 2021

প্রেমিক ২



 প্রেমিক ২

... ঋষি 

ঠিক গল্পটা এই শহরের না 

আমি ততোধিক প্রেমের পাতায় পুরুষ হয়ে রইলাম 

কিন্তু বোধহয় তোমার হৃদয়ে পাথর ,

প্রতিটা বেঁচে থাকা যখন বাইপাসের ধারে সেই চায়ের দোকানে তোমাকে খোঁজে 

তখন কবি অনবদ্য প্রেমে লিখে ফেলে 

কবি সামাজিক না। 

.

প্রেমিক হতে গেলে জানতেও হবে তোমাকে স্পর্শের ছোঁয়া 

কিন্তু কবি স্পর্শ সে যে ঈশ্বরের দত্তক ,

এই অসময়ের শহরে আমরা সকলেই নিজেদের কাছে ঈশ্বর 

শুধু কবিই একমাত্র যে  ঈশ্বর ও প্রেমিক

যার যন্ত্রনায় 

প্রেম শুধু মাত্র একটা কবিতার শব্দ। 

.

বুক খুলছি ,খুলছি মেমসাহেব বইটার  সাহসের পাতাগুলো 

নিমাই ভট্টাচার্য মারা গেলেন 

অথচ শব্দের শহরে ছেড়ে গেলেন তোমার মতো প্রেমিকা  ,

সাধু শব্দের চাতুরীতে তুমি 

অনবদ্য  

" যারা কাছে আছে তার কাছে থাক, তারা তো পারে না জানিতে 

তাহাদের চেয়ে তুমি কাছে আছ ,আমার হৃদয়খানিতে।”

অদ্ভুত বার্তা 

শব্দরা ঈশ্বর হয়ে গেলে ভাবনারা সৃষ্টি 

আর সৃষ্টিতে ঈশ্বর বিলীন 

কবিতারা জানে সে কথা। 

 

সমুদ্র স্পর্শ

 সমুদ্র স্পর্শ 

... ঋষি 


আজকাল কবিতা কুড়োতে কুড়োতে তোমার কাছে এসে পড়ি 

পায়ের কাছে সমুদ্রের স্রোত ছুঁয়ে যায় বসন্ত

ভিজে যায় তোমার শাড়ির আঁচল  ,

তোমার আধুনিকতায় অনিদ্রার রাত্রিগুলো জীবিত তারারা 

সমুদ্রের সফেন 

আমি আছি সেখানে ?

.

এই সমুদ্র ছুঁতে চাওয়াটা মানুষের লোভ 

আকাশ ছুঁতে চাওয়াটা মানুষের অধিকার 

আর বুকের ভিতর আকুতিগুলো মানুষের বোধ ,

আমি সমুদ্র কুড়িয়ে লিখতে থাকি অযুতনিযুত 

সময়ের অনেক নিচে জল 

মানুষ দুর্বল। 

.

ভাবতে ভাবতে ভাব সাগরে আমার গত হওয়া বসন্তরা 

তোমাকে চিঠি দিল 

কখন যেন একটা দীর্ঘপথ এই শহরে শীতের বাতাস নিয়ে এলো ,

তবুও আমরা শব্দরা অবিচল 

তোমার আলমারির প্রতিটা তাকে তখন উলেন শহর 

আর আমার বুকের আলমারির শব্দরা তুমি নির্ভর। 

শীত করছে চলন্তিকা 

এই কথাটা বলতে কখন যেন  ঋতুগুলো ঝরে গেলো 

সমুদ্রের অবিকল স্রোতের মতো বুকের পাথারে 

শব্দরা অনবরত 

হাজারো কবিতা 

তবুও তোমাকে বলা হলো না আমার সমুদ্র স্পর্শ

দিন ফুরোলে আজকেও 

শুধু সমুদ্র ছোঁয়া হলো না । 

Thursday, October 28, 2021

প্রেমিক ১

 


প্রেমিক ১

... ঋষি 


সেটা ছিল ধর্মতলার ফুটপাথ 


একটা মুখবুকের পরিচয় পরিচিত  হয়ে গেলো হঠাৎ আলোতে ,


আমি জীবন দিয়ে বুঝেছি 


আমি কবিতা লিখতে পারি ,ভালোবাসতে না।  


কবি হতে গেলে ঈশ্বর হতে হয় 


জীবিত আকাঙ্খাকে বাজপাখির নখে রক্তাক্ত করতে হয়। 


.


চিরসত্য এটাই 


 যাই ভাবো না কেন আমাকে ,


আমার কবিতারা  আকাশ ছুঁয়ে বাঁচে অথচ সেই আকাশে হাজারো তারা ,


আমার হাজারো প্রেমিকার ভিড়ে তুমি হয়তো ধ্রুবতারা 


তবুও আমি  বারুদের প্রেমিক 


এই শহরের  বিস্ফোরণে আমার উচ্চারণ পুড়ে গেছে বহুদিন। 


.


শুনেছি প্রেমিক হতে গেলে গাছ হতে হয় 


কিন্তু কেউ আজ অবধি বলে যায় নি কবি হতে গেলে কি হতে হয় 


শুধু জীবন দিয়ে বুঝেছি 


প্রেমিকার শাড়ির দখলে  "কি-ওয়েস্ট", শাদা বালু, ঈগল প্রবাল


আর ঠোঁটে লেগে থাকে কবিতার আস্বাদ। 


মিশে গেছে বহুবার  বুঝেলে আমার চলন্তিকা রঙের কবিতারা  সময়ে


ফরমান রঙের ভাবনারা বেহেমিয়ান ইন্তেজার 


সবকিছু হারিয়ে শুরু করে মানুষ বারংবার এই শহরে 


তবু আমি প্রতিদ্বন্বী 


এই শহরের দরজায় দাঁড়িয়ে 


চিরপ্রেমিক কবি ও ঈশ্বর।   


আমরা ,দেশ আর মানুষ

 আমরা ,দেশ আর মানুষ 

... ঋষি 


ময়লা হাফপ্যান্ট পড়া বস্তির ছেলেটা ছুটছিল সেদিন বড় রাস্তা ধরে 

তুমি তার নাম জানতে চাও নি 

                তাকেপ্রশ্ন করো নি কেন দৌড়োচ্ছে সে,

কিন্তু কি অদ্ভুত আজকে ছিন্নভিন্ন শাড়িতে তার মাকে তোমরা চিনলে 

আর কি অদ্ভুত তোমরা তার নামও যেন 

আসলে নিজের দেশের নাম যে সকলকেই জানতে হয়। 

.

সেদিন বড় রাস্তায় সেই ভিখিরিটা কাঁদতে কাঁদতে বলছিল 

ভগবানের নামে দুটো পয়সা দিয়ে যান 

বেশিরভাগ আপনারা এগিয়ে যান নি তার দিকে ,

শুধু সেই ভিখিরীটা আকাশের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বর খুঁজতে খুঁজতে বলেছিল 

এতো শহরে শুধু একটা ঈশ্বর আর তার নাম হলো টাকা 

যা বহুগামী প্রেমিকার  মতো প্রতিমুহূর্তে প্রেমিক বদল করে। 

.

ঘাবড়াবেন না 

আসলে সত্যিগুলো সিংহকে খাঁচায় রাখার মতো সহজ এই সময় 

আর মিথ্যেগুলো এই শহরের ফুটপাথে মানুষের দরে বিক্রি হয়। 

খেতে না পাওয়া লোকগুলোর জন্য চিরকাল একটা বাহানা 

সে হলো ঈশ্বর আর চাঁদ ,

ঈশ্বরের রয়েছে কিছু অবাঞ্চিত হিসেবনিকেশ 

আর চাঁদের রয়েছে রুটির স্বপ্ন। 

এই হিসেবের বাইরে মানুষের গল্প শুনে ভাবি 

কচুরিপানার ভিতর সময়ের সায়া জুড়ে যে রক্তারক্তি ব্যাপার,

সেটা কোনো ভাবনার বিষয় নয়।

ভাবনা হলো, বিজ্ঞ উকিল  যখন ভরা আদালতে দাঁড়িয়ে 

বগল ছেঁড়া ব্লাউজে নিজের ধর্ষিত মাকে চিনতে না পেরে বিধান দেন 

ছুটতে থাকা আমরা নিজেদের নাম জানি না

কারণ আমরা এখন অবোধ শিশু। 

সেন্টেন্স টু ডেথ

 


সেন্টেন্স টু ডেথ

... ঋষি 

.

নিঃশব্দরা আকাশের থেকে বড় হয়ে গেলে 

বুঝতে পারি 

এই বিশাল শহরের ঘরগুলো দেশলাই বাক্সের মতো 

আর মানুষের মনগুলো 

ঘুমন্ত বারুদের আগুন। 

.

সময় অনুমতি দিক বা না দিক,মানুষের কথা বোলো না 

আগুন নিয়ে বলো ,বারুদ নিয়ে বলো ,পিস্তল দেখিয়ে বলো 

সব বলতে পারো এই শহরে 

হিংসা ,লোভ ,শরীর ,লাভ - লোকসান ,দাঁড়িপাল্লা 

কিন্তু সত্যি বোলো না 

তবে সময়ের অনবদ্য শব্দরা প্রতিবন্ধী দেশের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে 

সময় বলবে তোমাকে  সেন্টেন্স টু ডেথ। 

.

উদাস ভাবনা 

মানববিক বিকার ,উলঙ্গ সমাজ ,উলঙ্গ স্বত্বায় নিরুপম প্রেমালাপ 

প্রেমিক তুমি ঈশ্বরের খোঁজে শহরের পথে মেগাস্থিনিস 

সময় তুমি উর্বরতার লোভে চেঙ্গিসখান 

আমি নীতিনির্ভর কবি 

সময়ের বাইরে মানুষের নিঃশব্দতা লিখে রাখি। 

আর নিঃশব্দরা আকাশের থেকে বড় হয়ে গেলে 

আমি বুঝতে পারি 

শক্তি বাবু লিখছেন "মানুষ বড় কাঁদছে "

আমি বুঝতে পারি 

সময়ের ঘর ,নীতিনির্ভর 

কিন্তু সকলে তো সংসারী হয় না আমার মতো 

কেউ কেউ 

সপাটে বেঁচে থাকার  থাপ্পড়ের মতো সময়ের গালে পরে। 




ধুকপুক

 


ধুকপুক 

,,,, ঋষি 


ভেঙে চুরমার সময়ের কাঁচ

কাঁচের ওপাশে চেনা মুখ ,খুব কাছের। 

কাছ বলতে আমি বুঝি বুকের হৃদপিণ্ডের লুকিয়ে থাকা ধুকপুক শব্দটা 

আর দূর বলতে হঠাৎ বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে আমার মতো কেউ 

তোমাকে খুঁজছে। 

.

ভেঙে চুরমার পাঁজর

নিহত চশমা, ফেরারী জামার বোতাম শুধু মাত্র উপস্থিতি 

জলের শিকড়

উষ্ণ কবর।

শামুকের ঠোঁট ,ওল্ডেজ হোম , বৃদ্ধ ভাবনা 

ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া আমার স্মৃতিঘর 

কি সহজে বলা যায়, এই জীবন

                                রাস্তা থেকেও তাড়িয়ে দেওয়া। 

.

ছড়িয়ে ছিটিয়ে শব্দের ওম 

পুরোনো পাহাড়ি গন্ধ ,গ্রীষ্মের ছায়া ,শীতের ওভারকোট 

           অথচ বৃষ্টি 

                    বৃষ্টিতে ভেজে সবাই। 

একলা চিলেকোঠা ,এলোমেলো ভাবনার চড়াই পাখি 

সময়ের ঘুরতে থাকা কাঁটা  

বড় খালি খালি লাগে একলা বিকেলের ফিরে আসা পাখিদের। 

তোমাকে পাচ্ছি না 

ঘুমের মধ্যে তন্নতন্ন করে খোঁজা  পচা মরা হৃদপিন্ড 

ধুকপুক শব্দটা আছে এখনো,

এই  শহরের এত অধিকার

একটা গ্রহ পথ , একটা নক্ষত্র , একটাই রাস্তা 

এইখানে শুধু মৃত স্বপ্নদের বাঁচবার বাহানা। 

কবিতার মাটি

 


কবিতার মাটি 

,,,,, ঋষি 


সম্পর্কের থেকে দামি একটা কবিতা লিখতে চাই 

সমস্ত মূল্যবোধ ,প্রায়শ্চিত্ত ,বাস্তবজ্ঞানের অধিক একটা কবিতা লিখতে চাই ,

আসলে এতদিনে বুঝেছি 

যারা কবিকে ভালোবাসে ,তারা কবিতাকে ভালোবাসে না 

ভালোবাসে না কবিতার শব্দে লুকোনো যন্ত্রনাদের 

তারা শুধু মুখোশ বিক্রি করে। 

.

কবিতা লিখতে লিখতে আমি কোনো এলিট সময়ের দরজায় দাঁড়িয়ে 

পৌঁছে গেছি এই শহর থেকে অনেকউঁচুতলার কোনো মজলিশে 

সেখান থেকে শহরটাকে ছোট মনে হয় 

শহরের ঘর ,বাড়ি ,রাস্তাগুলো সব খেলনার মতো দেশলাই বাক্স ,

আকাশটা তখন কত কাছে 

অথচ কেন যে  কবিতাগুলো মানুষের  নয় তখন 

কেন যে কবিতাগুলো মুখোশ পরে দাঁড়িয়ে । 

.

উদাসীন ব্যাগ, অগোছালো চুল,  একলা ফুটপাথ ,নোংরা বস্তি 

ধেনো মদ ,সস্তার চোলাই ,ঠোঁটে  বিড়ি 

এই তো চাই 

এই তো সেই কবিতার মাটি ,

ক্যাপুচিনো কফি না মাটির ভাঁড়ের চা 

 ইটালিয়ান মার্বেলের ফ্লোর না ,পায়ে হাওয়ায় চটি 

 হাই প্রোফাইল লেডি না সাঁওতালি সেই মেয়েটার নাম কবিতা ,

 সিম্ফনি- প্রিলিউড, মোৎসার্ট বিটোফেন ছেড়ে মহুলবনীর নেশা 

 মহুয়ার গান হলো  কবিতা।  

কবিতা হলো আকাশের নাম 

প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের তলায় যে কবিতারা সেলফিতে মত্ত 

তারা আসলে সাজানো  সম্পর্কের মতো দেখতে 

তারা আসলে মুখোশের মতো দেখতে 

কিন্তু তারা কবিতা না

কিছুতেই তারা কবিতা হতে পারে না । 


তোমাকে কেন বলবো

 তোমাকে কেন বলবো 

... ঋষি 

তোমাকে কেন বলবো ?

আমার বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা সাতটা সুর 

তুমি কেড়ে নিলে মুহূর্ত ,

আমার সে মুহূর্তের ভাবনায় সুন্দরী এক নদী ছিল,

তার জলে পা ভিজিয়ে আমি বসে থাকতাম জ্যোৎস্ন্যা রাতে 

আজকাল সেই মুহূর্তগুলো তেতো লাগে। 

.

তবু আমি খুঁজি সেই মুহূর্ত 

হুড়মুড়িয়ে ছুটতে থাকি নিজের থেকে দূরে 

সময়ের লুকোনো  নৌকার পাটাতনে যাই, তন্নতন্ন করে খুঁজি

বিনুদির কেঁপে ওঠা লণ্ঠনের আলোয় জঙ্গলে একা একা ঘুরি  

রাজদ্বীপের মৃত্যুতে দেখি নিজেকে 

অথচ মুহূর্তগুলো নিরুদ্দেশ আজ বহুদিন। 

.

তোমাকে কেন বলবো ?

তুমি তো আমাকে ছেড়ে চলে যাও বারংবার মাঝরাস্তায় 

তুমি জানো  মেঘে মেঘে সাজিয়ে রাখা ছেলেবেলার চিলেকোঠায়  আমি 

সেই একলা দাঁড়িয়ে 

সম্পর্ক  খুঁজেছি  আজ বহুদিন, 

আমার কাছে মুহূর্তরা এসেছে  আবার চলে গেছে 

কেউ দাঁড়িয়ে নেই আমার জন্য। 

তোমাকে তাই আমি কিছুতেই বলবো না আমার কষ্ট হচ্ছে 

তোমাকে বলবো না আমার শহরে কষ্টের মেঘ 

তোমাকে বলবো না আমি একলা ভিজছি 

শুধু রৌদ্র খুঁজছি 

খুঁজছি পুরোনো মুহূর্তদের। 


প্রিহিস্টোরিক

 


প্রিহিস্টোরিক 

... ঋষি 


কারখানা ফেরত প্রতিটা সাদা কাগজ আজকাল তোমাকে চায় 

বন্ধুরা বলে সময়ের ঠোঁটে লেগে আছে রক্ত 

দুঃখ সে তো জলেরও থাকে। 

আমি উজবুকের মতো তোমার মুখে শুনতে থাকি আমার মৃত্যু 

আসলে ফিরতে গেলেও যে যোগ্যতা লাগে 

আমার যোগ্যতায় আমি প্রিহিস্টোরিক। 

.

সবকথা সামান্য মনের হলেও

আমার অফিসফেরত ব্যাগে বৃষ্টি ভয়,

কাদামাখা শহরে 

মেঘেদের ঘরে হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি ভিজিয়ে যায়, 

বিবাহযোগ্য মেঘেরাও জানে সমুদ্রের ওপাশে আমার ঘর 

শুধু স্বপ্ননির্ভর। 

.

আমি ভীত হয়ে উঠি হঠাৎ একলা সড়কের রাস্তায় 

আমার ফেরার পথগুলো সব নিষিদ্ধ কাগজে লেখা কিছু সমাজবিরোধী ,

আমি আগুন কুড়িয়ে তোমার ঠোঁটে শুনি 

আমার চলে যাওয়া 

নিভে যাওয়া আলো হঠাৎ কবিতার খাতায় মৃত্যু লিখতে থাকে ,

কিন্তু হা ঈশ্বর 

মৃত্যুর জন্য যে যোগ্যতা লাগে 

আমি শুধু শুকনো রক্ত কুড়িয়ে তোমার দিকে তাকাই 

খুব গভীরে আবারও শুনি 

বাঁচতে চাই

প্রিহিস্টোরিক মানুষগুলো আমার মতো সভ্যতার অপেক্ষায়। 

 

Wednesday, October 27, 2021

অপরাজিতা

 


অপরাজিতা 

... ঋষি 


ধরে নিলাম মেয়েটার নাম ছিল অপরাজিতা  

কিন্তু আমি জানি তার যন্ত্রণার নাম ছিল ক্লোরোফিল 

ধরে নিলাম মেয়েটার ঘর ছিল সাঁওতাল দীঘি

কিন্তু আমি জানি মেয়েদের কোনো ঘর থাকে না কোনোদিনই 

কিন্তু এতকিছু ধরার পরও গল্পটা বদলালো কি ?

এই পৃথিবীর আলো আঁধারিতে মেয়েটা গাছ হয়ে রয়ে গেল। 

.

তার শরীরে সবুজ পাতা 

খিদে বাঁচতে চাওয়া,

তার ছেড়ে যাওয়া  প্রেমিক যাওয়ার সময় তাকে বলে গেলো 

তুই মুর আদরের পাওনা ,ফিরে আইমুরে 

ফিরলো না সে ,ফিরে এলো শুধু অপেক্ষা

কিন্তু কি জেনেনিন পৃথিবী জানে না গাছের নিঃস্ব হলেও অপেক্ষা করে। 

.

অপেক্ষার দিন ফুরিয়ে যায় না 

যেমন ফুরিয়ে যায় না ঋতু ,ফুরিয়ে যায় না মুহূর্ত 

ফুরিয়ে যায় মানুষের প্রেম 

মানুষের আকুতি আর একসাথে বাঁচা। 

মেয়েটাও বাঁচে ,

হ্যা হ্যা মেয়েটাও বাঁচে আজও 

শুধু গাছ হয়ে তাকিয়ে থাকে দিক্চক্রবালে বাড়তে থাকা অনুভূতিতে 

মেয়েটাও বাঁচে আজও ,

শুধু  কাঁদতে থাকে কোনো  ঝড়ের দিনে নিঃস্ব সময়ের কাছে। 

আমি চিনি সেই গাছটাকে 

আমি চিনি অনুভূতিগুলোকে  

যেগুলোর   অপেক্ষার কোনো গাছ -পাথর নেই 

জেনেও ,ঠকে  যাওয়া একটা জীবন।

.

তবু বলি অপরাজিতা তুমি নীল রঙের আকাশ হয়ে বাঁচো 

তবুও বলি অপরাজিতা তোমার মুক্তি আলোয় আলোয় 

তবুও বলি তুমি ফিরে এসো সময়ের কাছে 

কারণ তোমার গাছজন্ম সময়ের কাছে বোকামি 

মানুষের কাছে প্রয়োজন 

আর তোমাকে যারা ভালোবাসে দেখে 

তাদের কাছে প্রশ্ন ?

                   অন্তর দহন।       

   


Monday, October 25, 2021

চুইংগাম

 


চুইংগাম 

... ঋষি 


সবকিছু জানার পর বুঝতে পারলাম 

আমি 

        কোত্থাও 

  নেই 

একটা বিপ্রতীক কোন আমার ভিতর তোমার চাহুনি ছাড়া কিছু না 

অবশিষ্ট এই শহরের পথঘাটে পাখিদের ঘর 

হওয়ার সাথে। 

.

আমি অবশিষ্ট 

লেখবার খাতায় একটানে ছিঁড়ে দিলাম তোর প্রথম চাহুনি 

একটা বেড়াল কোনঠাসা স্বপ্নদের পাশে দাঁড়িয়ে 

আমার দাঁতে ,নখে শুধু মাত্র আলোর মতো নির্মম হত্যা 

ষড়যন্ত্রের শহরে আমরা কোথাও নেই 

শুধুই পাখি। 

.

সবকিছু জানার পর আমি বুঝলাম 

মানুষের থাকাগুলো না থাকার পাশে দাঁড়িয়ে ভয়  দেখায় নিজেকে 

আর ভয়ের ওপারে তুমি কেমন যেন অন্যমনস্ক 

                  পাখির সংসার। 

এক ভাড় চা-বিস্কুট, আচমকা দু'একটা  চুমু, 

অভাবগ্রস্ত আয়নার সামনে আমরা সকলে জোকার সেজে আছি 

মিথ্যা বলছি নিজেকে ভালো আছি, 

আমি বুঝে গেছি সময়ের আয়নায় তাচ্ছিল্যের কিছু চুইংগাম 

সেখানে আমি 

কোত্থাও নেই। 


বরফ পড়ছে

 বরফ পড়ছে 

... ঋষি 

.

স্যাক্সোফোনের বাতাসের  মতো মুক্ত একটা দিন 

মুক্ত হতে ইচ্ছে করছে একলা শহরের এই প্রতিদিনকার ঝগড়ার সাথে 

এই শহরে অক্সিজেন থাকে না 

মানুষগুলো স্বার্থপর হতে হতে অহংকারী হয়ে উঠছে। 

.

আমি তাকিয়ে থাকি প্রতি সকালে তোমার দিকে 

তুমি কাজলচোখে প্রতিমুহূর্তের জন্মদাত্রী এক সবুজ সভ্যতার 

সময়ের চুইংগামে অবিরত চোয়াল চালাচ্ছে মানুষ 

বলে ফেলছে লুকোনো গোপনীয়তায় কাছের মানুষ। 

.

তুমি শিউরে ওঠো নারী সমাজ এই সময় 

ভালোবাসা মানে শেষ অবধি তোমার সঙ্গমে লেগে থাকা লালা 

আমি আগামীর কথা ভাবছি 

একলা এই শহর আর মানুষগুলো বড্ড বেশি প্রেক্টিকাল। 

.

সুইচ অন করছি ,অন্যমনস্ক একটা আলো আমার শিরায় 

আর আমি হাত রাখছি তোমার হাতে 

আমার পুরোনো চামড়ায় ভাঁজ ,চোখের চশমায় জলবিন্দু 

সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে বোধহয় এই শহর বদলাবার মোড়কে। 

.

তোমার  নাভির মতো রাতজাগা লাল উনুন দেখেছো

নারকেল পাতায় ছায়া পড়ছে  অতীতের

শীত আসছে ,এইবার বোধহয় আল্পসের মুখে বরফ জমেছে 

আমি দেখছি বার্ধক্যের অপেক্ষায় কিংবা  হার্ট-এট্যাকের।

.

মৃত্যু, সে একটা গল্প বোধহয় তোমার আমার

আজীবন রোদ দেখা মানুষগুলো কখন যেন বরফ এই শহরে

আমার  আস্তিনে লোকানো  ম্যাক্সিম গোর্কির শব্দরা 

IN MUSIC ONE CAN HEART EVERYTHING 


Sunday, October 24, 2021

অপরাজিত

 অপরাজিত 

... ঋষি 

.

অনেকদিন পড়ি নি তোমাকে 

উৎসবের ঝলকানো আলোতে কোথাও যেন অনবদ্যতা 

তোমার আকাশি রঙের শাড়ি ,সেখানে পাখিদের আকাশ 

তোমার আদর রঙের লিপস্টিক ,আমার তমন্না 

নির্বিঘ্নে ঘুম আসে না বহুদিন 

শুধু উৎসবের আলোয় চোখ জ্বালা করে। 

.

তোমার উৎসব রঙের বারো হাত ভাবনা 

আমার পরিমাপ মতো মাটির তলায় একলা সংসার 

নির্বিঘ্নে ঘুম 

অনবদ্য বিভূতিভূষণ সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন লেখে 

আমার কল্পনায় 

তুমি সেদিন অপরাজিত ।

.

তোমার একলা সময়  দেখিনি

শুধু ছুঁয়েছি , 

হয়তো কোনোদিন হঠাৎ দেখা হবে বড়ো রাস্তার মোড়ে সেই চৌকাঠে 

যেখানে আমার স্পর্শগুলো উৎসবের মতো ছড়িয়ে পড়বে 

অবাক নিরাপত্তায়।  

আমি সর্বদা দেখতে পাই  এমন কিছু 

যা আতশ কাঁচেও ধরা যায় না

তোমার রঙ, গন্ধ,ওষ্ঠের কার্নিশে লেগে সেই বৃষ্টি দিন 

সেই উৎসবের দিন ,সেই অদ্ভুত আলো। 

অন্ধকার পৃথিবীতে আমার উৎসব তুমি

আলোর পৃথিবীতে একটা উৎসবের দিন 

যেদিন নিজের ভিতর অসুরটাকে খতম করে আমি ঈশ্বর হয়ে উঠবো 

সেদিন সারা পৃথিবী জানবে তোমাকে 

পড়বে তোমাকে চলন্তিকা। 

কবিতার প্রথম লাইনে জন্মদিন


 কবিতার প্রথম লাইনে জন্মদিন 

দ্বিতীয় লাইনে বিপ। ..............বিপ।........... ..বিপ।

 ..বিপ........বিপ........বিপ 

তারপর প্রত্যেকে কিছুই থাকে না বলার মতো 

এটাই সত্যি। 

.

এরপর আসি কবিতার ভিতর 

কিছু শব্দ ,কিছু মুহুর্ত্ব,কিছু ভাবনা  আর স ম য়

ঋতু ,শহর ,মানুষ 

অনবদ্য সময়ের হাতছানি ,আকুতি প্রচেষ্টা 

সব মিলিয়ে অনেকখানি একলা থাকা 

কবিতা কি বলে সময় ছাড়া  ?

.

আমি ভাবছি তাহাদের পর 

মানুষের পর ,শুভেচ্ছা বার্তার পর ,প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির পর 

..বিপ........বিপ........বিপ 

তারপর সত্যি কি থাকে কবিতার মতো ?

শুধু একটা থেমে যাওয়া ,ঝিম লাগা মুহূর্ত ,চোখের কোনে কালি 

এই শহর শুধু  পাউডারের মতো ধুলো মাখা 

অন্ধকার রাত্রি ,একলা চায়ের দোকান ,হাইওয়ে 

অন্ধকারে বিড়ালে চোখ 

সব মুহূর্তরা আলো  খোঁজে 

তাই নবারুণ বাবুর ভাষায় বলতে ইচ্ছে করে 

" এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না " । 

 

Friday, October 22, 2021

আদিম

 আদিম 

... ঋষি 


সমস্ত যত্নগুলো গুছিয়ে রেখেছি 

নিজের বুক পকেটে জমা আমার এই শহর 

হাজারো দূরত্ব 

হাজারো মুহুর্ত্বের পর 

যন্ত্রনাদের বলেছি একলা থেকো এই সময়

শুধু ভুলের শহরে ঈশ্বর ধরে রেখো। 

.

মানুষের থেকে শহর 

মানুষের থেকে ঈশ্বর 

ক্রমশ রাস্তার মোড়ে গাড়িটা ব্রেক মারে সজোরে 

কেউ একজন বলে আরেকটা গেলো ,

শুধু সংখ্যা বেশ বদলায় না মানুষের 

বদলায় বোধের শহর। 

.

আমি ঈশ্বর হতে পারি নি 

আমি আদিম হয়েছি 

পাথরে পাথরে ঘষে হাতের চাকায় পোশাক বুনেছি 

সেই পোশাকে তোমাকে দেখতে রাজকন্যা 

আর আমি ভিখিরি এই শহরে। 

তোমার সময় আমার দূরত্ব শুধু সময়ের ঘরে কয়েকটা পাথর 

হাতে গুনে বলতে পারি প্রয়োজনের প্রিহিস্টোরকিল পর্যায় 

আমি আদমি 

যুগের ফসলে দাবানল 

তাই খিদে দরকারি 

দরকারি যত্নে গুছিয়ে রাখা আমার শহর।  

Tuesday, October 19, 2021

সেই লোকটা

 


সেই লোকটা 

... ঋষি 


মানুষটা দ্রাঘিমাংশ ছুঁতে চেয়েছিলো 

ভেবেছিল পৃথিবীর মাপঝোঁকে এই শহরের কোনো কোনায় একটা ঘর 

তারপর যা হয় 

হাজারো মানুষের ভিড়ে সময়ের সমুদ্রে আজ সে নিতান্ত পরিণত 

অথচ বোকা 

শেষ সূর্যাস্তের আলো এখন হাওরাব্রিজে শহর খুঁজতে থাকে তার। 

.

মানুষটা একটা কলম হতে চেয়েছিল 

চেয়েছিল আগুনের শব্দে লিখে দেবে সত্যিগুলো সাদাপাতায় 

তারপর হাজারো বসন্ত কেটে গেলে 

পান ,বালি ,ইট আর লবঙ্গ ,জিলিপি মিশিয়ে 

আজ কেমন মাথায় গোলমাল 

লিখতে গেলেই শব্দরা কলমের নিবে বিষ বৃষ্টি করে। 

.

মানুষটা কোনো অফিসের টেবিলে পেপার ওয়েট হতে চেয়েছিল 

ভেবেছিল, যে মানুষেরা সারা জীবন সাধারণকে দাবিয়ে রেখেছে,

তাদের নাম লেখা কাগজগুলোর বুকে চড়ে বসবে

তারপর খুব গভীর করে গর্ব করে বলবে 

এই তো আমি সময় ,আমাকে সরাও দেখি 

হয় নি তার মনোস্কামনা পূরণ। 

.

মানুষটা কোনো লাশকাটা টেবিলের কাঠ হতে চেয়েছিল 

ভেবেছিল হাজারো  যকৃৎ, হৃদয়, পাকস্থলীর ভিড়ে

খুঁজে নেবে সে ভালোবাসার বাসা শরীরের কোন কোনায়

কিন্তু সে বোঝে নি এই পৃথিবীর দ্রাঘিমাংশে সবটাই হিসেবের 

তাই সেই লোকটা আজ সময় ছাড়িয়ে লাশকাটা ঘরে 

চুপ করে শুয়ে নতুন সূর্যোদয়ের আশায়। 

 


একটা ধার্মিক প্রতিবেদন



 একটা ধার্মিক প্রতিবেদন 

... ঋষি 

ভা - এর মুন্ডু কাটা গেলো
বা - আবার উঠে পরে লাগলো ধর্মের সন্ত্রাসে ,
আগুন আর ধর্মের মাঝে তফাৎ কি ?
মানুষকে আগুনে পোড়ানো যায় আর ধর্মকে পড়ানো
অথচ মানুষের ধর্ম বোঝে না সে কথা
সে শুধু পোড়াতে ব্যস্ত,ব্যস্ত ধ্বংসে ।
.
আমি অনন্ত দিন ভিখিরি
কোরান থেকে গীতা ,ত্রিপিটক ,বাইবেল সব একসাথে রাখি
আর সবার আগে রাখি মানুষকে
অথচ ধর্মের আগুনে আজ ধীকধীক করে জ্বলতে থাকে মানুষের বোধ
সুযোগ পেলেই মানুষ মানুষকে পোড়াতে পারে
আর সুযোগ বুঝে ধর্মকে ব্যবহার করতে পারে।
.
শুনতে পারছেন চিৎকার মশাই
ভদ্রমহিলাকে ধর্ষণ করা করা হচ্ছে ,ভদ্রলোককে আগুনে পোড়ানো
আপনি চুপ আছে
চুপ আছে ভা - গণতান্ত্রিক দেশের হাজারো জনগণ
কি ভাবছে মশাই ?
আপনার কি ,এ আগুন তো আপনার ঘরে না।
আসলে মানুষগুলো পিছন বাঁচাতে বাঁচাতে ভুলে যাচ্ছে মানুষকে
আমি ধর্মের জন্য বলছি না এ কথা
আমি দেশের জন্য বলছি না এ কথা
আমি বলছি মানুষের জন্য
মশাই ধর্ম মানুষকে তৈরী করে নি
মানুষ তৈরী করেছে মন্দির ,মসজিদ ,গির্জা শান্তির জন্য
আগুনের জন্য না
পোড়াবার জন্য না
স্বার্থের জন্য না
শুধু মানুষের জন্য।

Monday, October 18, 2021

তবুও ঘুম পায়

 


তবুও ঘুম পায় 

... ঋষি 


পাঁজর খোঁড়া গাছটা আকাশ খুঁজছে 

আমার  ফুটো পকেটের  সম্বলে অলীক ঘুম ,

বড্ডো ঘুম পায় আজকাল 

ইচ্ছে করে এক ঘুমে পার করে দি মানুষজন্ম 

পরজন্মে না হয় ইচ্ছা হয়ে জন্মায়। 

.

সব প্রশ্নের ঊত্তর হয় না 

সব উত্তরে ঠিক শান্তি থাকে না এই পাথরের শহরে ,

সময় স্বাভাবিক দৃশ্যের মতো পর্দা দিতে থাকে 

আর পর্দার আড়ালে থাকে অযথা একলা কথা 

আর তারপর ঘুম 

সে যেন বুকের ক্লোরোফিলে খিদে লুকিয়ে রাখে। 

.

আঁচড়ের গল্পে আজকাল অসুস্থ সময় 

শহরের গল্পে আজকাল সেই ছেলেটা বেল বেলেটা 

তোমার গল্পে একটা ক্লান্ত মেয়ে পথ হারায় বারংবার 

ঘরে ফেরে 

সংসারের ডাল ,ভাত সামলে বসে থাকে জানলার গা ঘেঁষে 

তারপর একলা পথ 

তারপর একলা শহর 

আর ঘুম 

           আসে না। 

তবুও ঘুম পায় আমার এই শহরে আকাশ থেকে দূরে 

কোনো একলা ঘরে 

আমার সমস্তটাই শধুই  চলন্তিকা 

এই চির সুখ।  

Saturday, October 16, 2021

বারো বছর আগে

 


বারো বছর আগে 

... ঋষি 

.

বারো বছর আগের সেই ছেলেটাকে খুঁজছি 


মুখে চারমিনার ,এক গাল দাঁড়ি ,উস্কখুস্ক চুলের সেই ছেলেটা 


মুখটা দেখতে পারছি না 


না দেখতে চাইছি না বোধহয় , জানি না ,


তবুও লিখছি 


কারণ সময় লিখতে শুধুই রক্তক্ষরণ হয়


খরচা তো হয় না। 


.


বারো বছর আগের ছেলেটাকে কাল খুঁজেছি সারারাত 


একটা নোংরা জিন্স ,পায়ে পেরেক লাগানো জীবন আর উদাসীনতা, 


উদাসীনতা আসলে একটা বড্ড বোকা শব্দ 


যেটা লিখতে আজকাল আর আমাকে চালাক হতে হয় না ,


শুধু বুকের দেরাজে এই শহরের ধুলো ওড়ে 


আর চাপা পরে যায় আত্মার অহংকারী চাহিদা। 


.


সেই ছেলেটার মুখটা কিছুতেই আমি দেখতে পারছি না 


কিন্তু কি অদ্ভুত 


আমি দেখেছি গাঢ় অন্ধকার  জঙ্গলের বুকচেরা পথ


গোয়েন্দার চোখের মতো কতগুলো চোখ তাকে খুঁজছে 


একসময় হঠাৎ একটা চিৎকার 


—হল্ট!


সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড আওয়াজ করে সময় ছিটকে পড়ছে  


সময়ের বুকে যেন জ্বলন্ত ইচ্ছা 


আর ছেলেটার বুকে সময় 


চিৎকার করছে,


তার মুখটা আমি দেখতে পারছি না 


তবে বুঝতে পারছি আমার এই কবিতা তাকে ছাড়া অসম্ভব ছিল না । 


রিসাইকেল

 রিসাইকেল 

... ঋষি 

.

জলে ডোবা মৃতদেহ খুঁজি 

খুঁজি নশ্বর ভাবনায় মায়ের প্রিয় মুখ ,

খড় ,বাঁশ আর মাটির দখলে সব 

জলের শহর ,

তবুও রিসাইকেল ব্যস্ত সেই সাইকেলের চাকা 

স্পোকে লাগানো মানুষের সময়। 

.

কেন ?

কি কারণ ?

সমস্ত মন্দিরে পরে থাকে বাসি ফুল 

পুঁথি ,শাস্ত্র ,মত ,পূজারীর সময় 

সব হারিয়ে যায় কিভাবে ?

কিভাবে মানুষের ঘরে সময় বাস করে। 

.

শেষ বেলায় মায়ের সাথে ডুবে গেছিল তার পুত্র ,কন্যা 

আমরা  ভুলে যাই  

ঘুরিফিরি রিসাইকেল শহরের দরজায় 

খুঁজি নতুন ,

হয়তো উৎসব ফুরোয় বলে আনন্দ ফুরোতে চায় না 

হয়তো মানুষ কাঁদে বলে হাসি ফুরোতে চায় না। 

তবু জলে তোলার অন্ধকার 

ভাসতে থাকা পুজোর ফুল ,তেল রং ,বিল্বপত্র ,পুজোরমন্ত্র

সব কেমন মৃত দেহ আজ 

দিন ফুরোয় 

উৎসব ফুরোয় 

কাল যেখানে প্যান্ডেল 

আজ সেখানে খেলার মাঠ ,কিংবা রাস্তা ,

সত্যি হলো বিসর্জনের পর মায়ের মুখের মাটি গলতে থাকে 

গলতে থাকে ব্যস্ত শহরে মৃত উৎসবের মৃতদেহ।   


Friday, October 15, 2021

শুভ বিজয়া

 



কি শুনতে চাইছে সময় ?

শুভ বিজয়া ,

নিজের গভীরে এক তাল মাটি কাঠামো চাইছে ,

বেঁচে থাকা শব্দটা সময়ে কাছে অধিকার 

মানুষের কাছে সম্পর্ক 

আর আত্মার কাছে প্রিয় মুখ। 

.

সময়ের ঘর 

মায়ের মুখটুকু কাল রাতে জলে মিশে যাচ্ছিল যখন 

চাইতে পারি নি নিজের স্বার্থ 

শুধু চেয়েছি 

ভালো থেকো ,ভালো রেখো 

যদি সময়ের গভীরতায় মাটি থাকে কাঠামোতে লাগবে ঠিক। 

.

সমস্ত সৌজন্যবাসী 

সমস্ত সম্পর্ক ,সমস্ত অধিকার 

সকলকে জানাই শুভ বিজয়ের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন,

আর চলন্তিকা  তোমাকে তো বলতে লাগে না কিছু 

তুমি তো আছো 

কাছে ,পাশে। 

.

শুধু বেঁচে থাকা শব্দটা সাংবিধানিক যখন 

তখন শুধু সহ্য করতে হয় 

হাসতে হাসতে সময়ের মুখে তুলে দিতে হয় মিষ্টি 

তারপর বলা বাঞ্চনীয় " শুভ বিজয়া "

ভালো থেকো সকলে 

ভালো থেকো তুমি। 


Tuesday, October 12, 2021

ছবি



ছবি 

,,,, ঋষি 


চারিপাশে উৎসব চলছে 

আর চলছে ক্লিক ,মোবাইল ফোনে ,ক্যামেরায় 

অথচ এই কলকাতা আজও তৃতীয় বিশ্বের কিছু বিখ্যাত ছবির ঠিকানা ,

শাড়িটা ঠিক করলে তুমি ,পরিমিত হাসি 

তবুও মনের মতো না 

ফটোশপে এডিট করে পোস্ট করে স্যোশাল বিছানায় 

তোমার ঘুমে স্বপ্নে তখন টুপটাপ টুপটাপ লাইক ,কমেন্ট ইমো 

তুমি হেসে উঠলে ঘুমের মাঝে। 

.

তুমি গাছ লাগাচ্ছো ছবি তুলছো 

তুমি পশুপ্রেমিক ,তুমি দেশ প্রেমিক ,তুমি প্রেমিক 

সব জমানো আছে তোমার মুঠো ফোনে ,

তোমার বুকে শুকনো হাসি 

আর তোমার মুখে সাজানো। 

.

 সাজানো ফটোফ্রেমে আজকাল আর মানুষগুলো সত্যির মতো দেখতে 

তুমি ফিতে কাটো ,ছবি তোলো 

তুমি মানুষের পাশে দাঁড়াও ,ছবি তোলো 

এইভাবে একদিন সারা পৃথিবীটা ছবি হয়ে যাবে। 

আসলে মানুষগুলো ছবি তুলে প্রমান রাখতে চাই সম্পর্কের 

সে ভালোবাসার হোক কিংবা প্রকৃতির,

তার থেকে বড় কথা ভালো করে করে ভেবে দেখবেন 

পৃথিবীর শ্রেষ্ট ছবিগুলো সবসময়ের দুঃখের 

কাৰণ মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর থেকে 

ছবি তুলতে পছন্দ করে। 

   

Monday, October 11, 2021

কাল্পনিক

 কাল্পনিক 

একমাত্র দীর্ঘশ্বাস 

বুকের পরতে জমে আছে টেলিকম পাউডারের মতো কালি 

দুর্ভাগ্যগত এক পাল মুহূর্ত 

তাড়া করছে। 

কানে গাড়ির হর্নের শব্দ 

মুখোশ শব্দটা ঘুমোচ্ছে এই শহরের অলিতে গলিতে। 

.

উৎসব মাখা শরতের রোদ 

গা ধুয়ে উঠে বসা আগামীর শীত ,

সাপেদের ঘুম 

আমি তো আর লিখতে পারি না ভাস্কর বাবুর মতো 

" শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা "

কারণ আমার সমস্তটা জুড়েই আজকাল শুধু গাড়ির শব্দ। 

.

রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘুম ভেঙে যায়  এই সভ্যতায় 

পাশের বাড়ির কাজের ঝিটা চিৎকার করে খাটতে খাটতে গতর শেষ 

গরীর বলে তো মানুষ না ,

আমি তখন আকাশের  দিকে তাকাই 

যেন কোনো গভীর চোখ আমাকে আশ্বাস দেয় আজ শরৎ 

আমি বাতাসে পাই মানুষের গন্ধ 

মানুষের কান্না 

আর অবান্তর কিছু প্রশ্ন ?

বেঁচে থাকাটা প্রহসন ,একটা নাটক

এখানে চরিত্ররা সব কাল্পনিক 

শুধু সাজানো মুখোশে। 

Saturday, October 9, 2021

ফিনিক্স

 


ফিনিক্স 

... ঋষি 


আমার সমস্ত কবিতার মঞ্চস্থ হবার পর 

আমি ফিনিক্স হয়ে খুঁজে নেবো আগুনের পরব 

তারপর কোনো এক বিকেলে 

কবিতার খোলা পাতায় আমার সমস্ত দগ্ধতা 

জীবন লিখবে 

হয়তো গত হয়ে চলা সময়ের কবিতায়। 

.

আমি কবিতারা যখন এই শহরের উৎসবের মেজাজে তোমাকে খুঁজবে 

তখন হয় অষ্টমীর লাইনে দাঁড়িয়ে কোনো যুবক খুঁজবে চলন্তিকাকে ,

চলন্তিকা তখন সদ্য যুবতী

দুরন্ত আগুনে ঘাম মুছে নেবে পুরোনো রুমালে ,

জানি সেই রুমালে আমি থাকবো না 

থাকবে কবির কবিতা। 

.

প্রতিটি উৎসব নিজের আদলে যখন মানুষের মনে ভালো থাকা জন্ম দেবে 

তখন আমার কবিতারা ফিনিক্সের ডানায় ভর করে খুঁজে নেবে সকালের সূর্য ,

খুঁজবে গভীরতা 

খুঁজবে প্রাচীন কোনো রোমান সভ্যতার সেই প্রাচীন স্থাপত্য 

যেখানে প্রেম শরীর নয় 

শুধু হৃদয়ের ভাষা। 

এই মুহূর্তে আমার কবিতারা আগুন খুঁজছে 

খুঁজছে তোমাকে চলন্তিকা ,

চলন্তিকা মুহূর্তরা দাগ রেখে যায় পুরোনো ফটোফ্রেমে 

হারানো ফটোফ্রেম 

আর একঘেয়ে জীবন 

জানি সকলে আগুনে পুড়তে পারে না। 

.

তবু এটা বেঁচে থাকার কবিতা 

সকলের মৃত্যু কবিতায় মঞ্চস্থ হতে পারে না।  

Friday, October 8, 2021

মার্ডার



 মার্ডার 

... ঋষি 

কোথায় আছো তুমি ?

দৃষ্টির বাইরে আজ বহুদিন তোমার কবিতারা  আমাকে গালাগাল করে না 

মনে করিয়ে দেয়  না আমি পাপী ,আমি দুষ্ট কোনো দুর্বৃত্ত।

শুধু মাত্র দিনগুলো আশিকি অনন্যতায় শহর খোঁজে ফেরে 

আর খোঁজে মুহূর্তদের।  

.

আমার ব্যস্ততায় আজকাল বেরসিক বেলাল্লাপনা 

সময়ের পাতার পর পাতা শুধু এক ঘেয়ে একটা জীবন ,

কথা ছিল একটা উপন্যাসের মলাটে লিখবো তোমার নাম 

আর উপন্যাসটা শেষ করবো তোমার বুকে মাথা দিয়ে 

অথচ এই শহর দিব্যি আজও চলমান 

শুধু তোমার আমার উপন্যাসটা আগুনে পুড়ছে। 

.

এই বুকের ভিতর কয়েকশো হিমবাহ আজ নেমে আসছে 

নেমে আসছে অসংখ্য মুহূর্তের হাঁটার দৃশ্য 

মাঝখানে একটা সমাজ 

একটা 

নি 

    য় 

          ম 

আর বেরসিক কিছু বেলাল্লাপনা। 

আমি শহর থেকে দূরে ,তুমি সময়ের থেকে দূরে 

নিজের প্লুটোর রহর্স্য খুলে 

তুমি আবিষ্কার চাইছো 

আমাদের গ্রহ 

আর আমি চাইছি হত্যা 

একটা পারফেক্ট মার্ডার। 

ভূমিকায় নির্বাণ

 


ভূমিকায় নির্বাণ 

... ঋষি 


বেশ কিছুদিন কলমের সাথে আমার আড়ি 

বেশ কিছুদিন চলন্তিকা তুমি দৃষ্টির বাইরে, 

বুকের ভিতর এই শহর 

নিজের চারতলার বারান্দা থেকে ছুঁড়ে ফেলা সিগারেটের আগুন

আসলে আকাশের গায়ে পা দিয়ে হাঁটাটা মারাত্নক 

মারাত্নক আমার শব্দের ভূমিকায় নির্বাণ। 

.

অনির্বান আমার বন্ধু নয় 

আমার মনে পরে না আমার কোনো বন্ধু ফ্যাক্টরিতে কাজ করে কিনা ,

আমি কোনো পলিটিকাল ভিউতে নেই 

কিছু বুঝি না মানুষ ছাড়া 

আর বুঝি না চলন্তিকা তোমাকে ছাড়া এই জীবনে 

শুধু দ্রাব্যতাই আমার বাঁচার মাপকাঠি। 

.

বেশ কিছুদিন আমি ঘুমোয় নি 

কারণ আমার ঘুমের দেশে আমার মতো কেউ সিগারেট পুড়িয়ে 

পুড়িয়ে ফেলে নিজেকে ,

বেঁচে থাকা মানুষের আসলে কোনো দেশ না 

শুধুমাত্র একটা পরিচয় এই সময়। 

বেশ কিছুদিন আমি নিজের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে দাঁড়ায় মহাভারতে 

ধর্ম খুঁজতে খুঁড়ে ফেলি হাজারো চরিত্র 

কিন্তু চরিত্রগুলো সব কেমন জানি লোভী 

তাই বোধহয় কুরুক্ষেত্রের মাঠে আমি হত্যা করি ভীষ্মকে 

কারণ নিজের ভিতর আর আমি 

নিজেকে খুঁজতে চাই না।  


ইটের দেওয়াল

 


ইটের দেওয়াল 

... ঋষি 


দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছি 

প্রতিটা দেওয়াল বলে দিচ্ছে নিজের প্রাচীনত্বে 

জীবন শব্দবহুল একটা পরিচয়, 

মানুষগুলো সব মরুভূমির মাটি খুঁড়ে উট পাখি 

খুঁড়ছে 

শুধু খুঁড়ছে 

সময়ের প্রাচীনত্বে দেওয়ালগুলো একলা দাঁড়িয়ে। 

.

আমি অসম্ভবকে সম্ভব করার কল্পনায় 

বুকের আগুন খুঁড়ে খুঁচিয়ে দিচ্ছে নিজের কয়লার আঁচ 

গরম রাখছি নিজেকে 

বোঝাতে চাইছি বেঁচে থাকা একটা সম্ভবনা নয় 

বেঁচে থাকাটা সত্যি 

আর মানুষগুলোর বুকে সব নতুন ঝাঁ চকচকে দেওয়াল। 

.

তুমি বুঝতে পারছো প্রাচীনত্ব 

এই বুকের দাগে সার দিয়ে ইট গাঁথা কিছু অবলম্বন 

বুক ভাংছে 

ভাংছে সারি দেওয়া কিছু অধিকার। 

কনফুসিয়াসের কিতাব খুলে উইকিপিডিয়ায় ধরা পরে শুধু দর্শন 

কিন্তু সেই দর্শনের কোনো বাড়ি নেই ঘর নেই 

আছে শূন্যতা ,

আসলে সত্যি হলো আবরণের ভিতর আমরা সকলেই দরজার বাইরে 

আর ভিতরে খুব কম আছে 

যারা আকাশ খুঁজতে মৃত্যু খোঁজে না 

বরং খুঁজে ফেলে ইটের দেওয়াল। 


Wednesday, October 6, 2021

শুভ মহালয়া

 


শুভ মহালয়া 

... ঋষি 


মা আমাকে তোমার মতো একটা হাত দিও

সমস্ত অন্ধকারকে হত্যা করে আমি যাতে অমর হতে পারি

মা আজকে তুমি আমাকে এমন এক চক্ষু দিও

যে চোখে আমার তিনকাল শান্ত হয়ে পড়ুক ,

সমস্ত সময়ের অসুরবধের পরেও

আমি যাতে সময়ের আদরের গল্প হতে পারি।

.

সমস্ত পিতৃপুরুষের মুখে তর্পন করে

আজ দিনটা যাতে একটা নতুন দিনের আলো নিয়ে আসুক

 বাজলো তোমার আলোর বেণু...

” আজ পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনা"

সমস্ত আগুনের পথের পর

ধংস হোক অন্ধকার ,মানুষ আবার উঠে দাঁড়াক।

.

মা আমাদের আরো ধৈর্য দিও

অস্ত্রের বদলে দিও আরো সহ্য ক্ষমতা

সময়ের সাক্ষী মানুষের চোখে আতংক ,বেঁচে থাকা আগামী

সন্তানের মুখে হাসি

মা আমাদের এক আলোর জীবন দিও।

আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জি

বেজে উঠলো সকাল সকাল রেডিওতে 

আমি শুনলাম আপনাদের মতো 

মনে মনে বললাম 

শুভ মহালয়া 

শুভ হোক সকলের। 

Monday, October 4, 2021

এই দূর্গা সেই দূর্গা

 


এই দূর্গা সেই দূর্গা 

... ঋষি 


এই যে এত দূর্গা শ্লোক ,এই যে এত উৎসব 

এই যে নারী পুজো ,শক্তি শ্লোক 

কে এই দূর্গা ?

সেই দূর্গা যে বিভূষণের খুব প্রিয় মৃত্যুর ছায়াছবি 

কিংবা আজকের সমাজে আপনার ,আমার ঘরে 

রোজ তিলে তিলে মরতে থাকা সেই মেয়েটা। 

.

আপনি চেনেন সেই দুর্গাকে ?

যে প্রতিদিন পাড়ার টিউবকলে চান করে 

যাকে দেখে আপনি তৃপ্ত করেন আপনার চরম কাম ,

কিংবা সেই মেয়েটা যে রোজ আপনার কাছে চকোলেটের জন্য ছুটে আসে 

তাকে আপনি আদরের ছলে ছুঁয়ে দেন আপনার গোপনীয়তায় 

সেই মেয়েটা বলে কাকু আমার লাগছে 

সেই দূর্গা। 

.

আমি চিনি সেই দুর্গাকে আপনার মতো 

যে চোখের জল চেপে রেখে নিজের অসুস্থ স্বামীর সেবা করে 

যে নিজের সমস্ত বিলাসিতা বিসর্জন দিয়ে সন্তান মানুষ করে 

যে মদ্যপ চরিত্রহীন স্বামীর কাছে মার্ খেয়েও সংসার করে 

যে রোজ রাতে সভ্যতার রজনীগন্ধা 

যে দিন প্রতিদিন আপনার বাড়ির সাজানো আসবাব 

যে কৃষ্ণের অপেক্ষামান প্রেমিকা 

পুরুষের অহংকার 

সভ্যতার পর্দা 

সহনশীলতার প্রতীক 

সেই দূর্গা। 

.

আমি প্রশ্ন করি আপনাকে 

যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা।

নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ॥

যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেণ সংস্থিতা।

নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ॥

এই শ্লোক কতটা সত্যি 

কতটা মিথ্যে 

যদি  পুরুষ হন ,যদি সভ্যতা হন ,যদি মানুষ হন 

নিজের আয়নায় চোখ রাখুন 

প্রশ্ন করুন নিজেকে 

কে আসলে দূর্গা ?

এই উৎসব

 


এই উৎসব 

... ঋষি 


এই উৎসব কার ?

সেই চৌদ্দ পেরোনো অন্ধ মেয়েটার যার শরীরে অনাকাঙ্খিত ভ্রূণ 

কিংবা 

সেই ছেলেটার যে চাকরির খোঁজে হন্যে হয়ে আত্মহত্যা করেছে

যার মা ,বাবা আজ শুধু অপেক্ষা করছে মৃত্যুর । 

.

প্রশ্ন ছিল উৎসবমুখর শহরের কাছে 

এই উৎসব কার ?

সেই দুঃখিনী মায়ের যাকে সন্তানের জন্য পরের বাড়ির কাজ করতে হয়

সহ্য করতে হয় গৃহস্থ গৃহকর্তার নোংরা চাহুনি  

কিংবা 

সেই অনবদ্য ভদ্রলোকের যে তার কাজের মেয়েটাকে নষ্ট করতে ডরায় না

 হাসতে হাসতে যে খুন করতে পারে ল এন্ড অর্ডার। 

.

প্রশ্ন ছিল সময়ের কাছে

এই উৎসব কার ?

যন্ত্রনা বুকে বেঁচে চলা সেই বোকা মানুষগুলোর 

যারা জানে না তাদের আগামী ?

যারা জানে না তাদের সন্তান থাকবে কি আবারও দুধে ভাতে ,

নাকি সময়ের মতো কোনো অতিমারী 

কোনো অবাঞ্চিত বন্যা ,অতিবৃষ্টি ,অনাবৃষ্টি ,নিত্য প্রয়োজনে মূল্যবৃদ্ধি 

পিষে ,নিংড়ে ,ছিঁড়ে খাবে তাদের অতীতকে। 

.

প্রশ্ন ছিল সভ্যতার কাছে 

এই উৎসব কার ? 

আমি জানি আমার না ,আমি জানি আপনাদের না 

এই উৎসব তাদের 

যারা সকালবেলা খবরের পাতা চিবোতে চিবোতে প্ল্যান করে শপিংয়ের 

যারা বিকেলবেলা  বিউটিপার্লারে চামড়া ঘষে তফাৎ করে সাধারণের সাথে

যারা রাত্রিবেলায় কোনো দামি রেস্তোরায় ডিনার করতে করতে বলে 

জানু আজকে কোথায় তোমার না আমার ফ্ল্যাটে। 

আমি ,আপনি সাধারণ 

মধ্যবিত্ত ভাবনায় মা দুর্গাকে অষ্টমীর দিন অঞ্জলীর প্রণামে  বলি 

সবাই যাতে ভালো থাকে 

আর ওরা বলে 

আমি যাতে ভালো থাকি।

.

এই উৎসব আমাদের হতে পারে না 

এই উৎসব শুধু কিছু মানুষকে বোকা বানাবার ষড়যন্ত্র 

এই উৎসব শুধু কিছু মানুষের মুনাফা লাভের হাতিয়ার 

এই উৎসব ধর্মকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষের সাজানো হাসি 

এই উৎসব  কিছুতেই আনন্দের না 

শুধু মাত্র একটা প্রহসন। 

  


Sunday, October 3, 2021

অসমাপ্ত কবিতা

যন্ত্রনা লিখতে লিখতে হাত ফুরিয়ে গেলো 
আকাশের চাঁদে একলা কবিতা রাত্রি দিয়ে গেলো, 
সামনে পুজোমাস, 
কেউ বলে আমি বারংবার হোঁচট খাই যন্ত্রনায়
কেউ বলে আমি বারংবার একলা ঘুরিফিরি ভুগোলে
আর তারপর সেই চলন্তিকা। 
.
চলন্তিকা সত্যি বলে কি আছে পৃথিবীতে? 
পাতা ঝরা, একলা মাতৃত্বের কান্না, একলা উৎসব 
শুধু ব্যস্ত থাকা
শুধু ব্যাস্ত রাখা 
মাথার খুপড়ির ভিতর অজস্র রাতজাগা যিশুখ্রিস্ট 
জেরুজালেমের মাটি ভিজে যায় বুকের গভীরে কান্নায়। 
.
আমার পা ফুরিয়ে গেছে,আমার হাত ভেঙে গেছে 
আমার ভাঙা আঙুলে আজকাল কবিতা লিখতে কষ্ট 
কবিতা কেন? 
উৎসবের আনন্দে সকলের বাঁচায় একটু আকাশ 
আকাশের টুকরো মেঘ বলে দেয় মায়ের মুখ 
মা কেন? 
নতুন বই, সম্পর্ক, ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া ঝালমুড়ির ঠোঙা
নিশুতি রাত ঘুম নেই 
সম্পর্ক কেন? 
সব মেঘ ভেঙে যায় মানুষের কান্নায় 
কিছু কিছু বক্তব্য শেষ হয় না
যেমন কিছু কবিতা অসমাপ্ত থেকে যায়। 

Friday, October 1, 2021

জানলার ওপাশে



 জানলার ওপাশে 

... ঋষি 


জানালাটা খোলা হয়নি অনেককাল,

জং ধরেছে আংটায়, কবজায়,হাড়ে ,পাঁজরে ,

বুকের গলিতে জমেছে কাদা ,

জানলাটা খুলতে যেতেই সম্মোহিত চল্লিশের পাঁচিলে দাঁড়ানো লোকটা 

থমকে যায় 

পোড়খাওয়া মুখে গভীর বলিরেখা,

কোটরে ঢুকে যাওয়া চোখে আজকাল বীভৎস্যতা খেলা করে। 

.

একটু জোরে জানলাটা হ্যাঁচকা টান দিতেই একটা আওয়াজ

দুটো মায়াময় চোখ ,গায়ের গন্ধ, হলুদ নতুন শাড়ি 

আমি ঢুকে পড়ি সময়ের খাঁচায়। 

বুকে জ্বলছে আগুন ,সেই আগুনে শ্মশান 

চোখে দেখি মরুভূমি ,সেই মরুভূমিতে তৃষ্ণা 

 ধোঁয়া হয়ে যাচ্ছে চারদিক

অথচ সময়ের পেন্ডুলাম দুলছে  ক্রমাগত।

.

তোমাকে বলা হয়নি,

কালরাতে সেই বাঁশিওয়ালার বাঁশিতে ছিল মোহন সুর 

বিছানার পাশে বালিশের স্তব্ধতায় 

ঘুম ছিল না চোখে। 

সারারাত আমি তাকিয়ে ছিলাম সিলিঙে 

এক আরবী ঘোড়া ছুটে যাচ্ছিল মরুভূমি দিয়ে  

আর একই সাথে আমি শুনতে পারছিলাম বাঁশির শব্দ 

বুঝতে পারছিলাম এটাই  আমার অসুখ

আমি একদিকে বাঁচতে চাই 

আবার মরতেও যে চাই। 


অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...