Wednesday, September 29, 2021

এক সভ্যতার গল্প

 এক সভ্যতার গল্প 

... ঋষি 

.

হঠাৎ আগুনে পুড়ে গেলো খালপার,বাক্স প্যাঁটরা

চামড়া পোড়ার গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো চারিপাশে 

সাথে কান্নার শব্দ ,

দরিদ্রের গৃহস্থের দরবারে তখন নতুন এক সভ্যতা 

পাশের  বাবু পাড়ার অনেকে খুশি হলো 

যাক বাঁচা গেলো 

অনেক পুলিশ ,পার্বণ করেও ভাঙা যাই নি বস্তিটা। 

.

গনতন্র কাঁদলো না 

সেই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী ভাষণে বললেন 

আজ হামলোগ হর কিসি কে পাস্ রোটি কাপড়া ওর মাকান হ্যা ,

ছুটে এলো বিদগ্ধ, সভ্যতা এবং এনজিও

ফেসবুক জুড়ে তোলপাড় ,খবর জুড়ে সরগরম 

কি করে লাগলো আগুন ? 

কতজন মারা গেলো ?

.

আসলে খবরটা কেউ জানে নি 

অবশ্য সেদিন এনজিও ছুটে গেছিলো সরকারী হসপিটালে

কারণ লতার অর্ধেকটা পুড়ে গেছিলো সেদিন বস্তির আগুনে 

আর তার পেটে  বাকি অর্ধেকটাই ছিল এই সভ্যতার আগামী,

বাহাত্তর ঘণ্টার  আইসিইউতে মারাত্নক যুদ্ধ হয়েছিল সেদিন  লতা আর সভ্যতার  

কিন্তু স ভ্য তা বাঁচে নি 

শুধু লতাই  ফিরেছিল সুর্পণখার বেশে।

আর কি জানেন মশাই এই সভ্যতায়  সুর্পণখার কোনো কদর থাকে না 

তাকে সভ্যতার পুরুষ ব্রাত্য করে 

লতার স্বামীও তাই করেছিল। 

লতা এখন সুর্পণখার বেশে ভিক্ষে করে শিয়ালদের হাইওয়ের নিচে 

আর রাত্রে তার বস্তির ভাঙা চালের আড়াল থেকে চাঁদ দেখতে দেখতে ভাবে 

তার পেটের সভ্যতা বোধহয় চাঁদের মতো দেখতে ছিল। 

হারানো ঈশ্বর

 হারানো ঈশ্বর 

... ঋষি 


ব্রাউন এনভেলাপ খুললেই 

এখনো উড়ে আসে একগুচ্ছ শুকনো গোলাপ

টুপটাপ লাজুক শব্দগুলো পশ্চিমের দেওয়ালে পিঠ করে বসে,

তখন জানলা দিয়ে মেঘ ঢুকে পরে 

আঁচলের আড়ালে এক ঝাঁক পাখি বৃষ্টিতে ভেজে

মেয়েটা ভাবে পুরোনো সেই দিনের কথা । 

.

কথা ফুরোয় 

তবু বাঁচে আনমনে 

মেয়েটা কুড়িয়ে নেয়  সময়ের পাঁজরে লেখা পুরোনো পাণ্ডুলিপি, 

সে টুকরো হওয়া মেঘেদের কুড়িয়ে আনে দৃষ্টির আড়াল থেকে 

ভাঙা স্যুটকেস, ময়ূরপঙ্খী শাড়ি ,বিয়ের সার্টিফিকেট 

গোছাতে গোছাতে মেয়েটা জলপ্রপাত ছুঁয়ে আসে  

পুরোনো দিন 

লিখিত দলিলে, যেখানে কালির স্বাক্ষরে ঘটে গেছে দূরত্ব। 

.

মনের অভিধানে লেখা যত অভিমান 

হেরে যাওয়া মূল্যবোধের সবকটি অনুরাগ

সব মূল্যহীন ,

এখনো দখিন হাওয়ায় সরে যায় মেয়েটার  বুকের কাপড়

হু হু করে ঢুকে পড়ে এনভেলাপে শুকনো  গোলাপের গন্ধ 

উদ্বেলিত ঢেউ, আঁধার চৌচির ক’রে এসে দাঁড়ায় অন্দরচিত্তে।

যেদিন বেডরুমের সব ধুলো সরিয়ে একদল প্রজাপতি ঘরময় উড়ছিল 

মেয়েটা ভেবেছিল 

ঈশ্বর বোধহয় সময়ের আড়াল থেকে পুষ্পবৃষ্টি করছে 

অথচ আজ আনমনা রোদ 

মেয়েটার হাতে ব্রাউন রঙের এনভেলাপে হারানো ঈশ্বর। 


যদি ভালো না লাগে

 


যদি ভালো না লাগে 

... ঋষি 


সাদা রঙের সময় ছুটে চলে রঙিন পৃথিবীর আশায় 

                      রঙিন পৃথিবীর কথা 

বেলুনওয়ালা ,মনের মেলা আর 

                        নিজেকে একলা লাগে। 

.

জীবন তো একটাই মানুষের 

                পরেরবার বলে তো কিছু নেই ,ভালোবাসবে তো ?

আগের মতো পরের মতো ,বৃষ্টি কিংবা সমুদ্রের মতো 

                    যদিও  অসম্ভব এ যাত্রা। 

.

চারিদিকে চুমুর মতো উড়তে থাকে দীর্ঘশ্বাস 

ট্যাগ করে রাখা জীবন উচ্চারণহীন 

                  অনেক  ধুলো-টুলো মেখে দেখলাম,

কবিতার বাইরে এক আশ্চর্য স্বপ্ন বেনামি। 

.

মানুষের সাদা সময় আর রঙিন সময় 

অজস্র বাক্য বিনিময়। 

                   ইয়াদগার কুচ পল ,পল দো পল 

আয়নায় দেখা মানুষ মৃত। 

.

আচ্ছা যদি পরের জন্ম থাকে 

আমি তোমার সেই  দুষ্টু লালন ফকির

মনে আছে আমাদের বাংলাভাষা ঘুঙুর-পায়ে ‘ঝুম্‌’

                  যদি ভালো না লাগে । 


কবি পক্ষ

 কবি পক্ষ 

... ঋষি 


কবিকে  দেখে চমকে উঠলো সাহিত্য পাড়া 

কবির সাথে ছবি তুলতে মারণাত্নক ভীড় 

তারপর কবির তো এখন শেষবেলা 

তাই কেউ একজন  রেগুলেটর বাড়াতে গিয়ে কেউ কেটে ফেলল প্যাঁচ,

অনেকে কাছে এলো 

যারা এলো না তারা দূর থেকে বলতো কবি যে আমাদের মনের কথা লিখতো। 

.

কবি তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে 

কবি যেন এখনো কান পেতে শুনছে মানুষের কান্না 

তার সামনে আজও উড়ছে খবরের পাতা 

তার যে অনেককিছু লেখার ছিল 

তার যে শব্দ দিয়ে বদলাবার ছিল মানুষের দিনরাত 

তার যে আরও সত্যি বলার কথা ছিল। 

.

কবি জানতো এরকম হবে,

এরকম হয়,

তাকে দেখে ছুটে আসবে  এক শহর লোক,

তার চুল ঠিক করে দেবে প্রৌঢ়েরা।

তাইতো আগে মাঝে মাঝে কবির বুক কেঁপে উঠতো 

একদিন আসবে সময়,

লোলচর্ম শক্তিহীন পরনির্ভর বীভৎস সময়

আহা যদি তার আগে পড়ে যায় শেষ নিঃশ্বাস,

সেটাই কাম্য!

.

দেখুন কবি এখন  মৃত্যু শয্যায় 

তার মুখে এখনো হাজারো কষ্ট  মাটি আঁকড়ে আছে 

কবি বাঁচতে চেয়েছিল পৃথিবীর জন্য 

অথচ 

তাকে পুড়িয়ে দেবে  কিংবা কবর দেবে সময় 

যে তার শত্রু 

দেখুন সময়ের মুখে আজ অট্টহাসি। 



কাগজের নৌকো

 


কাগজের নৌকো 

... ঋষি 


বৃষ্টি ভেজা এক সকালের কবিতায় 

আমার স্থাবর অস্থাবর ক্রমান্বয়ে তোমার দোষারোপ 

                         সব লিখে রাখলাম বৃষ্টির জলে ,

আজ খুব মেঘ করুক 

      আজ বৃষ্টির জল দস্তক রাখুক সময়ের খামে 

তোমার লেখা চিঠিগুলোতে। 

.

সময় ভেসে চলা কাগজের নৌকো 

আমার নবছরের ছেলে হঠাৎ ভাসিয়ে দেয় নৌকা আকাশের সমুদ্রে ,

সেখানে কোনো ঘর নেই ,নেই কোনো শৃঙ্খল 

পাখিরা  শুধু বুঝিয়ে দে এই যে আমার ডানা,

আমার ছেলে প্রশ্ন করে 

                         বাবা সম্পর্ক কি ?

আমি বলতে পারি না সম্পর্ক হলো কাগজের নৌকো। 

.

এই বৃষ্টিভেজা সকালের কবিতায় 

বৃষ্টির জলে চান করা রাস্তাঘাট ,বড় বড় স্ক্যাইস্ক্যাপার আর ভিজে ভাবনা 

কোথায় সেই কাগজের নৌকো ?

অনবরত বৃষ্টি এক ফেরারী ঘরের মন কেমন 

            বাউলের মন 

দুহাত তুলে আস্কারা দেওয়া ভাবনারা ছুটে যায় চলন্তিকার কাছে 

সময়ের পাশে । 

চলন্তিকা বলে আরে পাগল বৃষ্টি মানে মন কেমন 

বৃষ্টি মানে তুই 

              বৃষ্টি মানে ভালোবাসা 

আর কাগজের নৌকা সে ভাসিয়ে দিলেই হয়।  

সময়ের ভুল

 সময়ের ভু ল 

... ঋষি 


এই যে দিনরাত তুমি আমাকে তাড়া করছো 

মিথ্যে অহংকারের দিনগুনে তুমি অলীক কুসুম 

প্রেম ভাবছো 

প্রেম খাচ্ছো 

প্রেম তাড়া করে ছুটে বেড়াচ্ছো আমার ঘরের থেকে আগুনে 

কি লাভ পাচ্ছো ?

.

এই যে সাত সমুদ্রে পাড়ে এক রৌদ্রের দিন 

এই যে গঙ্গার ফেরিঘাটে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো 

তুমি দুহাতে চটকাচ্চো 

তারপর গালাগাল দিয়ে ঘুরে ফিরছো নিজের থেকে আমাতে 

কি লাভ পাচ্ছো ?

.

ভালোবাসা আসলে আকাশের পাখির মতো স্বাধীন 

তাকে খাঁচায় রাখাটা একটা অপরাধ ,

দিন বদলায় 

সময়ের দাঁড়ি কমাতে ক্রমশ পাকতে থাকা চুল 

সময়ের ভুল 

আমি তুমি একপাক্ষিক অপরাধী সময়ের ঘরে। 

আর 

সময়ের ঘর 

সে তুমি আমার  পাড়ায় থাকো ,সে আমি আমার গলিতে থাকো 

দিন বদলাবে 

কিন্তু আমার মৃত শরীরে তুমি আর থাকবে না 

কারণ মৃত্যুর পর শুধু মৃতদেহ থাকে 

প্রেম থাকে না। 

  

Tuesday, September 28, 2021

সময়ের ঘর

 .


সময়ের ঘর

... ঋষি 

বৃষ্টি লিখবো না 

কষ্ট  

      না 

            লিখবো না। 

.

একটা ষড়যন্ত্র যখন এমন একটা বিকেলের আলো নিভিয়ে দেয় 

রাস্তার লাইটপোস্ট গড়িয়ে ক্রমশ আলোর আশিয়ানা ,

এ চোখে বৃষ্টি ঘর করে 

ঘর করে অজস্র না বলা কথাদের টুপটাপ শব্দ। 

.

শহর ভিজে যায় 

বুকের ক্যাবিনেটে এক হাঁটু জল পায়ে তুমি এসে দাঁড়াও 

পাম্প চালানো হয় পুরসভার নিয়মে 

কিন্তু জল কমে না বুকে 

বরং 

সারা শরীর জুড়ে জ্বর 

      সময়ের ঘর। 

.

আমার আক্ষেপ এটা নয় বৃষ্টি ভেজা এই শহর 

আক্ষেপ আকাশের মেঘে সময়ের ঘর ,

শুধু অনবরত গড়িয়ে চলা কথারা মানুষের  দৈনন্দিন 

অথচ বৃষ্টিমুখর এই বিকেল 

না বৃষ্টি লিখবো না 

কষ্ট 

      সে 

         যে সময়ের ঘর।  


Friday, September 24, 2021

কিউ নেহি ভগবান



 কিউ নেহি ভগবান

.... ঋষি 

শেষ রাতে আকাশ সাদা হবার আগে পাহাড়ি চা বাগানের বস্তিতে 

এক সুন্দরীর ঘরে এক তারা জন্মাল

সময়ের তোলাপাড়ে আজব কিছু ঘটনা সর্বদা মানুষকে ভাবায় 

যে জন্মেছে সে মহাপুরুষ 

যে জন্মেছে সে কখনো মদ ছোঁবে না 

গলির মোড়ের নিয়ম করে দাঁড়ানো মেয়েগুলোর দিকে তাকাবে না 

সে হবে মুক্তির পথ। 

.

ওই কুয়াশার সাম্রাজ্যে ঘুম ভাঙা চোখে সকলে দেখতে এলো 

সুন্দরীর কোলের  তারাকে 

এলো ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের বড়ো বাবু 

সদ্য প্রসূতির ছেঁড়া শাড়ির ফাঁকে জিভ রেখে বললো 

তেরা মরদ নেহি রাহাতো ক্যা হুয়া 

ম্যা তো হু  ,

রাতমে আনা একবার মেরে ক্যাম্পমে । 

তারপর এলো চা বাগানের ফ্যাক্টরি ম্যানেজার 

বয়স্ক ম্যানেজার চশমার কাঁচ পরিষ্কার করতে করতে

সদ্য প্রসূতির সুন্দরীর বুকে চোখ ঘষতে ঘষতে বললো 

কুছ জরুরত হোনেসে বলনা 

দফোরকো মেরে অফিসমে আনা মিয়া খালি রেহতা হু। 

.

সেই প্রসূতি তখন তাকিয়ে দেওয়ালে টাঙানো তার মৃত মরদের দিকে

ভাঙাচোরা তার ঝুপড়িতে তখন আকাশের তারা , 

তার বাড়ির  অ্যান্টেনায় বসা কাকগুলো এতক্ষন চুপ ছিল 

এইবার ডেকে  উঠে বাবু মহল্লার সকলকে খবর দিল

 সুন্দরী কিছুদিন  গতর খাটবে না। 

গতবছর একই দিনে শেষ রাতে মারা গেছিলো কানহাইয়া 

অল্প বয়সে  জীর্ণ শরীরে রক্তের বদলে শিরা ধমনীতে তার

খেলা করে চলেছিল চোলাই মদের ধারা,

সুন্দরী একমুখ থুথু ছিটিয়ে দিলো দেওয়ালে টাঙানো ছবিটার দিকে 

তারপর  ডুকরে কেঁদে উঠলো এইবার 

 মুঝে লড়কি কিঁউ নহিদিয়া ভগবান, 

কিউ নেহি কিউ নেহি ভগবান।

.

বাইরে দাঁড়িয়ে তখন সুন্দরীর প্রতিবেশী একজন অন্যজনকে বললো 

বেশরম লড়কি ,পতি নেহি হ্যা তো ক্যা হ্যা ,মৌজ মে হ্যা 

আরেকজন বললো হাসতে হাসতে টিটকিরির সুরে 

উস্কা পতি নেহি তো ক্যা হুয়া 

ওহ তো করোর পতি হ্যা। 


অন্তেষ্টি

 



অন্তেষ্টি

আমার হাতে তিনটে তাস অতীত ,বর্তমান ,ভবিষ্যৎ 

তিন পাত্তি 

আমি একলা ঘরে বসে 

আমার চারপাশে তিন ভদ্রলোক অতীত ,বর্তমান ,ভবিষ্যৎ

তিন হত্যা 

প্রবক্তা, বলছে সে সংসার পেতেছে এক মহাবিশ্বে। 

.

যে চলে গেছে তাকে কে ভাবে, বাকী থাকছে দু’টো তাস

অ 

থ 


চ 

আজকের দিনটা কাটতে চাইছে না 

অথচ আজকের মুহূর্তগুলোতে আগুন জ্বলছে 

তবে যে এতগুলো বছর কাটালাম। 

.

আমি বললাম আমার কোনো দুঃখ নেই ,নেই সুখ 

আমি কি আদৌ জীবিত 

 প্রবক্তা মুচকি হাসলো, বললো মিথ্যে

তোমার কষ্ট হচ্ছে। 

আমি চিৎকার করছি ,গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিতে চাইছি তিন ভদ্রলোককে 

তাসগুলো ছিঁড়ে কুচি কুচি করছি 

তিনজন ভদ্রলোক হচ্ছে 

 আমাকে বোঝাতে চাইছে ভবিষ্যতের স্রোত দ্রুত ছুঁয়ে যায় বর্তমান

আর তারপর অতীতে। 

অসময়ের ছোঁড়া বুলেট বিদ্ধ করে না সময়কে 

শুধু সময়ের ঠোঁটে রক্তঝড়ে অন্তেষ্টির। 


 


শব্দহীন

 শব্দহীন 

... ঋষি 

সময়চিত শব্দহীন কিছু না বলা 

শব্দ দিয়ে  ঢাকা পড়ে যায় ভাবনাদের আগামী 

সব কথা বলা যায় না 

সব হিসেবের  রংহীন আলাপচারিতা আমরা আকাশ খুঁজতে চাইছি 

কিছু অনুভূতি স্তব্ধতাতে প্রকাশিত

নিরিবিলি নির্জনতায় সময়ের আলাপচারিতা। 

 .

ভাবনাদের বাঁধতে চাওয়া ভুল,ছোট ছোট প্রজাপতি হয়ে ওড়ে,

উড়তে থাকে,

       ন

             ব

                  র

                       ত

শব্দহীন ,শরীর কেন কাঁদে মৃত্যুতে। 

.

থামিয়ে দিও না চলন্তিকা ,বলতে দেও 

ভারী হয়ে যাওয়া ঠোঁট মুখবন্ধ সময়ের ঘরে 

হাত ছুঁয়ে দৌড়ে চলে যায় ঝোড়ো হাওয়া

রোদ্দুর চলে যায়- মানুষ চলে যায়,

একের পর এক যায় লোকাল ট্রেন,

দিন শেষের গাড়িটাও চলে যায়। 

অপেক্ষা রাতকুয়াশা 

 তারপর 

চাঁদের দিকে হাঁটা ,রাত পাখিরাও ঘুমিয়ে পরে 

ঘুম আসে না চোখে 

বিভিন্ন সঙ্গতে বেজে ওঠে জীবন 

বিভিন্ন আঙ্গিকে নাচতে থাকে মরণ 

বয়স চলে যায় 

সময় চলে যায় 

অপেক্ষা বাঁচে ,আমি শুনতে পাই শব্দহীন নিস্তব্ধতায়। 


Thursday, September 23, 2021

রাহুলদা তোমার জন্য

 


রাহুলদা তোমার জন্য

.... ঋষি 

মনের মধ্যে কান্নাকাটি,পাগল খঁজছে  ঘর বসত

তোমাকে বলি নি এই কথা রাহুলদা 

বুকের কাছে পরিচিত সেই চোখদুটো ,সেই শ্বাশত হাসি 

মন পাগল 

ঘটনা হলো ঈশ্বরের দরজায় আমরা কজন শুধু অপেক্ষায়  

একের পর এক দেশ পার হয়ে যায় ট্রেন 

ট্র্যান্সসাইবেরিয়ান এক্সপ্রেস।

.

রাহুল দা তাকাও আমার দিকে 

আনন্দের বাইরে আমরা যারা বেঁচে আছি ,তুমি একটু  আলাদা বটে 

ইউ আর আ পার্ট অফ আস বাট স্পেশাল ওয়ান  ,

তুমি একটু মন পাগল 

তোমার নিঃশ্বাসে রয়েছে আমাদের বিশ্বাস 

ফিরে আসা দিনের কাছে এক কাপ চা ,অল্প চিনি 

আর শক্তি চট্টোপাধ্যায় তোমার গলায়  আমরা জানি। 

.

আমরা কি চলে যাবো সন্তর্পণে হেঁটে

চলন্ত কামরার বাইরে ,পা বাড়াবো তোমার সাথে এক আকাশে 

মনে রেখো 

সবটাই একসাথে।

আমি জানি তুমি হাসছো ,শুয়ে  আছো   নিদ্রাকাতর দেহে 

মনে রেখো আমরা আছি তোমার পাশে 

যে কলমের হাত ধরে আমি চিনতে শিখেছি একটা অন্য মানুষ 

একটা অন্য মাত্রা 

সেই মানুষটাকে আমাদের ভীষণ দরকার। 

জানি তোমার যন্ত্রণাসিক্ত মুখ ,চোখের কোনে আটকানো স্বপ্ন

বাইরে তখন ছুটেছে পৃথিবী গাছপালা, বরফ ঢাকা শহর 

আমরা সকলেই ট্র্যান্সসাইবেরিয়ান এক্সপ্রেসের যাত্রী 

সহযাত্রী 

অন্তর্লীন নিজস্ব হ্রদে।


 

হিসেবনিকেশ



 হিসেবনিকেশ 

... ঋষি 


অর্কিড ফুলের চারাগাছটা তোমাকেই উপহার দিলাম


আসলে আমার বাড়ির ঢোকার দরজার ওপাশ থেকে এপাশে ক্যাকটাস  

       আর  


             হিসেবনিকেশ 


সেই হিসেবের ডাইরি থেকে তোমার ভালো থাকাটা জরুরি 


জানি ঘুমের ওষুধ শুধুই তোমার  সাবলম্বী হবার জন্য। 


.


ছোট্ট একটা কবিতার খাতা আছে আমার বুকে 


আছে একটা আঁকার খাতা 


দুটোই তোমাকে দিলাম ,


তোমার ড্রইংরুমে সুন্দর করে সাজানো হাসির দিনগুলোতে 


                      আরেকটু  রৌদ্র দিলাম 


শুধু সময়ের আঁকার খাতার সরু রাস্তা ধরে আমি ফিরছি 


কবিতায় লেখা হলো না। 


.


সেখানেই চারদেওয়াল ,ঘন নিঃশাস ,শব্দহীন আমি 


এইভাবে ঘুম ঘুম নাটকে বেঁচে আছি  


 আমি 

                     হাঁটছি


             কবিতার ভিতর 


                                কাছাকাছি।  


আমার স্বপ্ন আমাকে নিয়ে যাচ্ছে কোথায় জানি না 


তবু তোমাকে রাস্তা দিলাম 


আমি দাঁড়িয়ে সাবওয়েতে। 


‘ফ্রিজ ফ্রিজ শরীরের বারুদ শানানো নখ


হিসাব যন্ত্রের ব্যর্থতায় বোধগম্যের টান সময় শেষের ঘরে 


শেষ সময়টুকু তাই তোমায় দিলাম ,


জানালার ঘষা কাঁচ দিয়ে ভাঙাচোরা রোদ পড়ে আজকাল বিছানায় 


আমি জানি সেই  ঘুম ভীষণ  আন্টি-রোমান্টিক


তাই রোমান্টিক শব্দটা তুলে রাখলাম আগামীর জন্য।  


Wednesday, September 22, 2021

অন্য ২২ শে শ্রাবণ

 


অন্য ২২ শে শ্রাবণ 

.... ঋষি 

.

তোমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই  প্রতিদিন স্বপ্নে রবিঠাকুর 


এই গল্পটা এখনো লিখছি আমি ,কিন্তু লেখা হয় নি


চোখের ওপাশে দরজা খুলে প্রতিবারে  হুড়মুড় করে বাঁধ  ভাঙে ২২ সে শ্রাবন।


তোমার ওখানে বাউলেরা জানি এখনো এসে ঘুম ভাঙায়


 শিউলিতে ঢাকা লাল মেঠো ভাবনা  


 ঘুম ঘুম চোখে এখনো  জানি রক্তকরবী বাঁচে। 


.


কোথাও  যেন কে গেয়ে নিয়ম করে মনের ভিতর রবিঠাকুর 


সকালের প্রভাতফেরিতে তুমি যেন নিয়মিত হেঁটে  যাও অনন্ত আমার ভিতর 


কত আলো সেখানে ,কত রৌদ্র ,


আমার আচমকা প্রতিবার ঘুম ভাঙে তোমার পলাশ রাঙা ভাবনায় 


পরজন্মে বাউল আমি 


তুমি লাল মাটির দেশ। 


.


প্রযত্নে রবীন্দ্রনাথ


যেখানেই  ভদ্রলোক পা রেখেছেন  সেইখানে  ছলকে ওঠে খঞ্জনা অঞ্জনা


কোপাই শ্রাবণী। 


আমি ওইখানে যাবো 


        আজ শুক্রবার,হাট বসেছে নিশ্চয়ই?


কি পড়েছো তুমি চলন্তিকা ? নিশ্চয়ই শান্তিনিকেতনী।


তোমার হাতে একগুচ্ছ কাশফুল, কৃষ্ণচূড়া লাল


 লম্বা দোহারা সেই প্রেমিক লোকটা জানি তুমি  চেনো আমার থেকে বেশি। 


এখন কথা হলো,


তোমার ওখানে বৃষ্টি হচ্ছে  বুঝি?  


তোমাদের চোখাচোখি মেঘের ভিতর? কেমন যেন মন আনচান ?


এটাও আবোলতাবোল 


তোমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি আজ অন্য  ২২ শ্রাবন।  


আবোলতাবোল

 


আবোলতাবোল 

... ঋষি 

ভাবনার  কোলে শুয়ে শুয়ে পা দোলাই


ঝুপ করে নেমে আসে পাহাড়ের উপর অন্ধকার 


সেই যেবার তুমি হায়দ্রাবাদ  গেলে, আমি কলকাতায়


সেইবার অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ওখানকার নবাবদের আমি ফেন্সিং করতে দেখেছি  


দেখেছি তাদের শরীর দিয়েও রক্ত ঝরে 


রক্ত ঝরে বুকের ভিতর আমার মতো। 


.


সেই সময় আমার চারপাশে বিষণ্ণ রোদ 


তুমি বোধহয় হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছো নবাবের প্যালেস 


আর আমি সারা শহরে তখন বাষ্প জমিয়ে পাহাড়ি রেল চালাচ্ছি 


পাইন ,ফার সব সবুজগুলো দেখতে পাচ্ছি না ঝাপসা কাঁচে ,


হায়দ্রাবাদের বিরিয়ানির সাথে আসলে কলকাতার কোনো মিল নেই 


মিল নেই তোমার প্রথম চুমুর সাথে জীবনের। 



এইসব ভাবতে ভাবতে তোমার কন্ঠস্বর জেগে ওঠে


 আমি গন্ধ পাই শরৎ এসেছে 


পার্লারে গিয়ে তুমি চুল কাটছো আরও কত কি 


চিনতে পারছি না তোমায়। 


 নৈবেদ্য সেজে ওঠে চারপাশে


কে জানে কাহার তরে.... মন কেমন করে


ঝুপ করে নেমে আসে পাহাড়ের উপর অন্ধকার 


সেই যেবার তুমি হায়দ্রাবাদ  গেলে, আমি কলকাতায়


কোন সওগতে ভোরে উঠেছিল পাহাড়ের সন্ধেগুলো


ফিরে যাচ্চি আমি একলা সেই  বিকেলবেলা । 


.


কি আবোলতাবোল বলতো ,এই সব  কবিত্ব আমার ভালো লাগে না 


চলন্তিকা বলে উঠলো 


চলন্তিকার  আঙুলগুলো  আমার সারা মাথায় হাত বোলাচ্ছিল 


আমি দেখতে পাচ্ছিলাম সেই পাহাড়ের উপর অন্ধকার 


সেই অন্ধকারে শুয়ে আছে পাশাপাশি দুটি  দেহ 


আমি বললাম চলন্তিকা আমার ঘুম পাচ্ছে। 

আমি কিসের অপেক্ষায়

 


আমি কিসের অপেক্ষায়

... ঋষি 

আমি কিসের অপেক্ষায় আছি শক্তি দা ?

শীতকালের অপেক্ষায় আছি কি,  ভাষ্করদা ?

পাথরের স্তন থেকে গড়িয়ে নামছে রক্ত ,,,,,মানুষের রক্ত 

 মানুষের  বারো হাত সংসার, তেরো হাত বেঁচে থাকাতে

নাটক আর মুখোশ বাই ওয়ান গেট ওয়ান 

আমার খুব ঘুম পাচ্ছে শক্তি দা। 

 .

এবার শীত এলে আমি বরফের বিছানায়  ঘুমোবো 

আমার শরীর বেয়ে বেড়ে উঠবে মাছেদের চোখ

আমাকে পুড়িয়ে দিও না 

আমাকে দেখতে আসবে লোক 

শুধুমাত্র সময়ের  হাতে বোনা সোয়েটার আর স্বভাব 

আমার সাথে দিও।  

.

আজকাল শহরে ট্রামেরশব্দ শুনি না 

অবনীর দরজায় আজকাল শুয়ে থাকে সময়ের সেই লাথ খাওয়া কুকুর 

আর তার পাশে দেওয়াল ঘেঁষে সংসার করে লোকের বাড়ির কাজ করা টেপি 

তার জন্য যত বিষাক্ত ছায়া

আর মায়া ,মায়ে খেদানো ,বাপে খেদানো তার শরীরটা।  

আচ্ছা শক্তি দা আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি ?

যখন তখন বিনয়দাকে চাকা বানাতে দেখি এই সভ্যতায় 

জয়দাকে দেখি সারা শহর ময় খুঁজে বেড়াচ্ছে মেঘবালিকাকে 

কি হচ্ছে এ সব ?

কলকাতা ঢাকা ঢাকুরিয়া ম্যাডক্স স্কয়ার,নৈহাটি বারাসত

সব কেন ছেলের আঁকার খাতায় কুয়াশা হয়ে যাচ্ছে। 

আমি কিসের অপেক্ষায় আছি শক্তি দা ?

শীতকালের অপেক্ষায় আছি কি,  ভাষ্করদা ?

আমার ভীষণ শীত করছে এই অসময় 

একবার তোমার প্রিয়াকে জিজ্ঞেস করে আমাকে জানিয়ে দেবে, প্লিজ,

শীতকাল কবে আসবে......


আমার কোনো গল্প নেই

 


আমার কোনো গল্প নেই 

... ঋষি 


ছেলেটা সারাদিন আশ্রয় আশ্রয় করে চিৎকার করতো 

আর মেয়েটা তাকে ঠেলতে ঠেলতে গড়িয়ে দিয়েছিলাম পাহাড় থেকে 

ছেলেটা পাহাড় থেকে পৃথিবীতে নামতে নামতেও চিৎকার করছিল ,

মেয়েটা রোজ আকাশের বাইরে তাকিয়ে বলছে ভালোবাসি 

সময় তাকে একটা শাড়ি পরিয়ে বসিয়ে দিয়েছে আকাশের মাঝে 

মেয়েটা আর বলতে পারছে না ভালোবাসি। 

.

আমার আর কোনো গল্প নেই 

এই গল্পের বাইরে পক্ষীরাজ ঘোড়াটা স্বপ্নেই থেকে যায় ,

এর গল্পের বাইরে রাস্তায় এসে দাঁড়ালেই আমি দেখি দারিদ্রতা 

মিথ্যা প্রহসন ,কাপড়ে ঢাকা উলঙ্গ নারী ,ভাবনা ছাড়াই আকাশ চুরি ,

আমি দেখি কুকুরের সঙ্গম মানুষের ঘরে 

মানুষের বিরহ জীবনের ঘরে 

আর সেই নন্দনের গেটে সেই বাঁশিওয়ালকে ,

যে বাঁশি বাজিয়ে ভেবেছিল পৃথিবী বদলাবে। 

.

আমার দাঁড়ি ,কমা ,সেমিকোলন ,হিস্ট্রি ,জিওগ্রাফি 

না কোনো গল্প নেই ,

আমি দেখি কোমর আঁটসাঁট করে বেঁধে উঠে দাঁড়িয়ে পাঁচবছরের সেই ধর্ষিতা 

উনুনে পা ঢুকিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে সভ্যতার মুখোশ ,

আমি দেখি তিন মাসের সেই মৃতমুখ যে দারিদ্রতার কবলে 

হঠাৎ সে চিৎকার করছে বাঁচতে চাই। 

সব গল্পের শেষ হয় না তাই তো কবিতা 

মাঝে মাঝে বুঝতে ইচ্ছের করে  কবি আর কবিতার মধ্যে কে বেশি দরিদ্র 

হঠাৎ তখন শুনতে পাই সেই ছেলেটা চিৎকার করছে 

আশ্রয়। ....... আশ্রয়। 

আর সেই মেয়েটা বলছে ভালোবাসি 

সব গুলিয়ে যাচ্ছে 

হিসেবে মিলছে না 

কবিতার শব্দ গুলো ওলোটপালোট ,

সময়ের  রংগুলো সাদা হয়ে যাচ্ছে 

আমি শুনতে চাইছি না ,না কিছু দেখতেও চাইছি না। 

শুধু একটা প্রশ্ন

 শুধু একটা প্রশ্ন 

... ঋষি 

কথা বলছি তোমার সাথে 

নৈঃশব্দ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে  অথচ আমাদের কণ্ঠস্বর চাঁদে পৌঁছবে এবার  

রঙ ঢালছি

চেষ্টা করছি একটা ছবি আঁকার ,কিন্তু বিবর্ণ 

কিছু দাঁড়াচ্ছে না 

শুনতে  পাচ্ছি পায়ের শব্দ ভিতরের ঘরে 

উল্টো হাঁটছি আমরা। 

.

প্রতিদিন নিয়ম করে মহোৎসব করছি 

পাথর ভাঙছি রোজ 

এই দুপুরগুলো টেরাকোটা স্তব্ধতায় সেতারের শব্দ খুঁজছি 

পাচ্ছি না সুর ,শুধুই রেওয়াজ 

টের পাচ্ছি তুমি যাচ্ছো,আমি যাচ্ছি উল্টোদিকে 

শহরের থেকে দূরে বোধহয় কোনো ভিন্ন গ্রহে। 

.

তুমি জলের ভিতর যাও ,আমি যাবো গাছের শাখা প্রশাখায় 

তুমি মাটির ভিতর যাও ,আমি যাবো পাহাড়ের ভিতরে 

তুমি রৌদ্রের ভিতর যাও ,আমি যাবো আরো অন্ধকারে 

তুমি মাটিতে পা দিয়ে চলো ,আমি যাবো হাওয়ায় ভেসে। 

সময়ের কথা মনে পরে 

আমার বুককেস ,তোমার রান্নাঘর

তোমার চিৎকার আমার স্তব্ধতা 

কথা বলছি তোমার সাথে নৈঃশব্দ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে শব্দের ভিতর

 অন্ধকার ছড়িয়ে যাচ্ছে আলোর ভিতর

 মৃত্যু ছড়িয়ে যাচ্ছে মনের  ভিতর

প্রেম ছড়িয়ে যাচ্ছে ঘৃণার ভিতর

তুমি ছড়িয়ে যাচ্ছো তোমার ভিতর

আমি ছড়িয়ে যাচ্ছি আমার ভিতর

জীবন ছড়িয়ে যাচ্ছে শূন্যের ভিতর।

.

শুধু একটা প্রশ্ন ?

তারপর    ...............


স্ট্রেস নেবেন না কাকা

 


স্ট্রেস নেবেন না কাকা

... ঋষি 

অন্ধকারই ভালো 

এইবার বারো থেকে  চোদ্দো ,কিংবা ষোলো   লাইনের কবিতায়

একশো আটবার  অন্ধকার লিখবো।

 কারণ আলো এখন ধোপদুরস্ত সাদা পাঞ্জাবী 

আলো এখন রোমান্টিক ইমাজিনেশন এর এলিট বস্ত্রবহরণ। 

চারিপাশে এখন উৎসবের মেজাজ ,হুল্লোড়ে প্রেম 

গড়িয়ে যাওয়া বোতল 

তবুও প্যান্ডেলে হাসিমুখ ,স্ট্রেস নেবেন না কাকা। 

.

আলো এখন অন্ধকারকেও  স্বর্গ বানায় , লাশ কাটা ঘর 

 ম্যানহোল আর হাইড্রেনের পাশে ডুবে আছে সেই মানুষগুলোর চিন্হ ,

শহর জুড়ে মোমের মিছিল  ,ধর্ষণ প্রতিবাদ 

তবুও চোখ জাগা রাত 

শপিং মলে , নাইট ক্লাবে , ল্যাম্পপোস্টের গা জড়িয়ে আলোর বন্যা। 

তবুও আমার অন্ধকার লিখতে ইচ্ছে করছে 

 লিখতে ইচ্ছে করছে এই কবিতা অপাংক্তেয় আজ , শব্দের এ রোশনাই , অনর্থক  অবান্তর ।

.

বর্ণমালার এই আহাম্মক চিৎকার 

একশো তিরিশ  কোটি শব্দ আজ মেরুদন্ডহীন ঈশ্বরের ভূমিকায় উলঙ্গ নাচছে ,

আলোয় বেহায়া খ্যামটা নাকি  তবুও নগ্ন আমি। 

এ কবিতা পুড়ে গেছে  ধ্বংসের ১১/৯ এ লাভায় 

 এ কবিতা মুমূর্ষু উৎসবজাত অহংকার কিংবা আনন্দ নয় 

শুধু অন্ধকার ,

অন্ধকার ,অন্ধকার  আর কিছুই  সত্য নয় , এই মৃত গ্রহে 

না  ঈশ্বর

না একশো আট ভোলবদল চিৎকার , 

তবুও বলবো আনন্দ করুন 

ফালতু স্ট্রেস নেবেন না কাকা।  

Monday, September 20, 2021

তবুও বৃষ্টি হবে

 


তবুও বৃষ্টি হবে 

,,,, ঋষি 


তুমি এক ধাপ করে এগিয়ে আসবে আমার দিকে 

আমি এক সময় মিশে যাবো নিজের লাগানো আগুনে। 

তোমার বোহেমিয়ান ভালোবাসা ইন্তেহা নিতে চাই 

নিতে চাই উত্তর 

অথচ আমি বৃষ্টির মতো বাউল 

একলা সমুদ্র। 

.

গড়িয়ে নামা শেষ বিকেলের বৃষ্টি ভেজা মেঘে আমাদের কথাগুলো এক যখন 

তখন আমার বারান্দায় ছুঁড়ে ফেলা সিগারেটের শেষটুকু

সেইটুকু শুধু চাই 

সময়ের একাকিত্বে যোগ্যতা চাই ,

যখন জানলার কাঁচে একলা গড়িয়ে নামা  মুহূর্ত 

তখন আমি বৃষ্টির জমা জল তোমার কবিতায়। 

.

বহুদিন হল  শুধুমাত্র রাত্রি হয় এই পৃথিবীতে 

সকাল, দুপুর কিংবা সন্ধ্যে সব শুধু দাঁড়ি ,কমা ,সেমিকোলন 

বরফের ঘর 

সত্যি বরফের মত   আশ্চর্য  ন্যুব্জ প্রতিটা চরিত্র,

আমার দিকে তাকাও

দেখো আমি আজও তাকিয়ে আছি মৃত্যুর গভীরে মৃত শিরদাঁড়ায় 

আসলে বাঁচতে শেখা 

আর বেঁচে থাকা এক নয় 

আর শুধু আমার  শব্দে কখনো মেঘ করবে না আকাশে 

তবুও বৃষ্টি হবে নিয়ম করে।   

কেপ অফ গুড হোপ

  কেপ অফ গুড হোপ

.. ঋষি 

যেভাবে দাঁড়াক না কেন 

আমি তোমার সাথেই শোবো ,

যে ভাবেই এগিয়ে আসো না কেন 

আমি ঢুকবো ঠিক ,

ফরেনসিক গবেষণায় জীবন বলবে আধ্যাতিক ফর্মুলা 

আর ফর্মুলা বাঁচায় আমি  লিখবো তোমার নাম। 

.

আঁচল সরে যাবে 

তোমার সামনে পেছনে সব ভাবমূর্তিগুলো তখন মিথ্যে ,

আমি অনবদ্য তুলিতে একের পর এক সোহাগ ছিঁড়বো 

শুনবো চিৎকারে আল্পসের কবিতা 

বরফ জমতে দেব না 

শুধু আখরোটে ঠোঁট রেখে খুঁজে নেবো গোটা জীবন। 

.

তুমি বলেছিলে লেখ না

আমি লিখে দিলাম আমি শুধু তোমার সাথে শোবো ,

সম্পাদকীয় কলমের প্রথম লাইনে লিখবো রাষ্ট্র 

তারপর প্রেম 

তারপর নারী। 

না তুমি নারী হতে পারো নি 

শুধু আমাকে জন্ম দিয়েছো এক ভিখিরীর অবস্থানে 

না  তুমি নারী হতে পারো না 

শুধু আমাকে কাছে টেনেছো পর্তুগিজ নাবিকের দলে ,

তোমার নৌকো 

পুড়তে থাকা সমুদ্র 

আমি শুধু থেকে যাবো  কেপ অফ গুড হোপ। 

শুভেচ্ছা বার্তা

 শুভেচ্ছা বার্তা 

... ঋষি 


ওচোখে রোদ্র মুছে গেছে 

লুকিয়ে রাখা চোখগুলো বন্ধ চোখে কথা বলে 

এক শতাব্দীর দেখা হয় মেয়েটির 

আগামী শতক ,

সেই কবিতায় আমি চঞ্চল আবিষ্কারের মতো ডুবে যেতে চাই 

ভূমিকা বদল। 

.

ঝরে যায় সময়ের নিয়মে 

অসময়ের কিছু ফুল আজ ঈশ্বরের পায়ে কথা বলে 

সেই মেয়েটি প্রশ্ন করে,ঈশ্বরের পায়ে কেন?

হৃদয় ভাঙে সত্যি ফুরিয়ে শৈশবে 

মৃত্যু বেঁচে থাকে 

আগামীর কবিতায়। 

.

এই কবিতা তোমার জন্য লেখা একুশ শতক

মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে অপেক্ষায় বুকের পাটাতনে খোবলানো বেঁচে থাকা 

শ্যাওলা রঙের ভাবনাগুলো লোহার জীৱন চাই 

কিন্তু জীবন একটাই। 

আমি কবিতার কোথায় শতক লিখি এই শহরের পথে ঘাটে 

আমার কি বোর্ডের ফন্টে তখন জলতরঙ্গ 

জল গড়িয়ে যায় সময়ের মতো 

সময় গিয়ে যায় জলের মতো 

কোনটা সত্যি ,

ও চোখে রৌদ্র মুছে যায় 

মুছে যাওয়া ইচ্ছা 

চিৎকার করে একুশ শতক তোমাকে শুভেচ্ছা।  


একটা বৃষ্টি দিন

 


একটা বৃষ্টি দিন 

... ঋষি 

এক বৃষ্টি ঘরের ভিতর 

এক বৃষ্টি মনের ভিতর ,

.

জীবন নিয়ে হাজারো বায়না 

একলা ভেজা শহরে একলা দাঁড়ানো সময় অদ্ভুত 

তুমি হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির জল ছুঁতে চাও 

একলা গিয়ে দাঁড়াও তোমার ছোটবেলায় সেই দস্যি মেয়েটাই ,

আমি দেখি নতুন সকাল ফুল ফুটছে 

আমি দেখি এক সভ্যতা জলের তলায় মাছেদের ঘর। 

.

সারা শরীর বেয়ে নেমে চলে বৃষ্টির ফোঁটা 

অথচ আমার বৃষ্টি ভয় 

তবুও ভিজতে ইচ্ছে হয় 

নিজের শৈশবের কাছে ,যৌবনের কাছে ,জীবনের কাছে 

অনবরত কয়েক ফোঁটা জল যেন কোনো স্পর্শের নতুন দিন 

এই শহর জানে না সেকথা 

তবুও ডুবে যায় বৃষ্টির জলে। 

.

এসো চলন্তিকা আমার হাত ধরো 

কবিতার পাতা থেকে শব্দরা হয়ে যাক একটা বৃষ্টি দিন 

সারা শহরের শব্দ থেমে যাক 

শুধু শোনা যাক ভালোবাসি................... ভালোবাসি । 

অনেক কথাই বলার থাকে তোমাকে 

তবুও সব কথা বলা হয় না 

বুকের টিনের চালে  অসময়ের বৃষ্টি যেন রাতজাগা চোখ

তোমার স্নানের ঘরে নামতে থাকা বৃষ্টি দিন 

সে শুধু আমাদের  কথা। 

তুমি ভেবেছো কখনো চলন্তিকা  এই শহরে বৃষ্টি মানে শুধুই  মনখারাপ 

মানুষের কাছে বৃষ্টি মানে শুধুই  একটা নষ্ট সময় কিংবা খিচুড়ি আর ডিম্ ভাজা , 

তবে কেন বলো বৃষ্টি এলে আমার কবিতা আসে 

তবে কেন বলো  বৃষ্টি এলে তুমি আসো এক হাঁটু জল ভেঙে আমার কাছে 

কানে কানে বলো 

আমি আছি ....আমি আছি।   

.

প্রতি বৃষ্টি ফোঁটায় তুমি থাকো স্পর্শের আদরে 

প্রতি বৃষ্টি ফোঁটায় তুমি ছবি আঁকো একলা আদরে। 


Sunday, September 19, 2021

পিকাসোর তুলি

 


পিকাসোর তুলি 

,,,,ঋষি 

ভালোবাসা প্রথম শিক্ষা 

তাকে ভালো রাখতে আপনাকে ক্ষতবিক্ষত হতে হবে 

দেখবেন রক্তের স্বাদ একসময় জলের মতো রংহীন হয়ে যাবে। 

যারা কবিতাকে আতলামি বলে এতদিন পেটভরিয়েছে 

তাদের বলা হয় নি 

জল খেতে হবে বেশি করে ,না হলে বদ  হজম হবে যে। 

.

রাতের ঘুমে হঠাৎ চমকে ওঠা

পাবলো পিকাসোর ছবির ফ্রেমে আটকে পড়ি আমি 

আয়নার দুপাশে আমরা  

 ফ্রেমের বাইরে দূরে দিগন্তরেখায় মিশেছে সবুজ ক্ষেত

আর বিশ্বাস ,

আজ ডিকশনারিতে আগুন লেগেছে ক্ষেতে 

আমি মোটেও বিশ্বাসী নই। 

.

ভিতরে কাঁচ ভাঙছে রোজ দিনে -রাতে 

মুখোমুখি আমি আর প্রশ্রয় 

ফ্রেমটাকে আছড়ে ফেলে ভাঙবো ,আমারি ক্ষয়। 

একটা  যুদ্ধ চলছে 

যুদ্ধ চলছে পৃথিবীর ভিতর বাস করা দুই পৃথিবীতে 

জীবনের  সুড়ঙ্গ থেকে ধীর গতিতে আমরা এগিয়ে চলেছি নিজেদের অবস্থানে 

একটা  সিনেম্যাটিক শট যেন পৃথিবীর পথে। 

আমাদের  রুকস্যাকে রাখা জলের বোতল খালি পড়ে 

আমাদের বারুদের ব্যাগে খিদেগুলো ঘুমন্ত স্থবিরতা

তবু বিস্ফোরণ হচ্ছে রোজ 

আমাদের মুখ আর মৃত পাণ্ডুর চেহারা আপাতত আমাদের আয়না 

 তবু  জ্যান্ত মানুষের তৃষ্ণা লেগে আছে পিকাসোর তুলিতে। 


গোপনীয়

 গোপনীয় 

.. ঋষি 

.

গোপনীয় পাপ থেকে  বাঁচিয়ে নিয়ে আছি এক জন্ম 

নির্লোভ কবিতার ঢেউ আঁকড়ে ভেসে আছি 

খোঁজ করি 

জীবন 

কোনো বিজন দুপুরের একাকিত্ব খুলে 

দাঁড়িয়ে আছি মাঝ রাস্তায়।  

.

জানি তুমি এই কবিতারও কারণ খুঁজবে 

জানি তুমি পড়তে পড়তে আমাকে দুচারটে অশ্রাব্য থুথুতে ডোবাবে 

আমি বলবো ক্ষমা করো 

পথ পারাবারের  রোদটুকু আমার বুকের সময় শুষে নিক 

তুমি ভালো থাকো 

তোমরা ভালো থাকো। 


একটি কথা অনর্গল চিৎকার চুবিয়ে বলি 

বাঁচতে চাই 

অথচ  তিন রাস্তার মরে ল্যাম্পোস্টটাতে নিয়ম করে ঝোলে জীবনে লাশ 

অনবদ্য ক্লান্তিতে আমি তাকিয়ে দেখি 

গোপন কিছু অভিব্যক্তি।

তুমি হাততালি দিয়ে উড়িয়ে দিও সব 

এসো আমরা নিয়ম করে দোষারোপ করি ,

কাগজ-কলম বিস্তারিত ফিচার লিখি একটা মৃতপ্রায় গল্পের 

ফুরোনো কথা 

দিনপ্রতিদিন 

শুধু বেঁচে থাকা ,

কিছুতেই বোঝানো যায় না বেঁচে থাকা যারা 

তারা বাঁচতে চায় না বারংবার।  


কাপালিক

 কাপালিক 

... ঋষি 


সময়ের  কাপালিক পৃথিবীর প্রতি ভ্রম 

চারিপাশে ছড়ানো টুকরো টুকরো ভাবনা অনবদ্যতা 

বিড়ালের ইচ্ছা চুরির বাইরে পুকুর চুরি 

কায়দায় ভেজানো বিনয় মজুমদার আর ভুট্টা সিরিজ 

ভিজে থাকা তোমার চুল 

পোড়ামাটির খোদাই করা মুখ কষ্টনির্ভর। 

.

অসংখ্য শব  গায়ে গায়ে লেগে থাকা পচা ,মরা গন্ধ 

মার্জনার জন্য বেঁচে থাকা 

ভোর ভোর ঘুম ভাঙা সাপের আদপকায়দা 

খোলশহীন শরীরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা 

কিছু দাঁড়াচ্ছে না 

বিনা কারণে আঁশটে গন্ধ ,সময়ের বদনাম। 

..

নীরব শব্দের পুকুর চুরি

ভাবনার ভিতর প্রাণহীন আত্মার উপলব্ধি অনবদ্য শ্রুতি 

আকাশে বিছানা পাতছে চোখ

এ শ্যাওলা ঘরে জমতে থাকা অনবদ্য পরকীয়া ,

বাতাসে জাহাজের গল্প ছোটবেলার কাগজের নৌকো 

আধফালি চাঁদ

মশলার গন্ধ 

সমুদ্রের ঢেউয়ে খুঁজতে থাকা ভালোলাগা শীৎকার। 

একলা রাত্রি ভাটিয়ালি সুর 

দুরন্ত মাঝি 

বন্ধ সমুদ্রের দরজায় পচতে থাকা অস্তিত্ব 

.

ছেঁড়া খবরের কাগজ রক্ত নিন্দুর জমতে থাকা সম্পর্ক 

ঝকঝকে ব্যাকরণের বাইরে 

এক কাপালিকের চোখ 

ভারতবর্ষ তালিবান হতে বেশি দূরে নেই। 


Friday, September 17, 2021

জালিয়াতি

জালিয়াতি 
.. ঋষি 
চারটে চকোবার আইস্ক্রীম 
সবকটা তোমাকে দিতে হবে, 
পুরুষমাত্র একটা কুকুর যার শুধু অন্ডকোষের দোষ 
পুরুষমাত্র একটা প্রজাতী যাকে সহজ বিশ্লেষণে সহজিয়া বলে। 
আমি উত্তর খুঁজি নি 
শুধু রাংতা মুড়ে প্রেসেন্ট টেন্স। 
.
দৃপ্ত কন্ঠ, ঘোড়ার কেশর, ভাবনার হাল 
স্বপ্নের জালিয়াতি 
আমি নিশ্চিত হতে পারি কই হারিয়ে যাওয়া থেকে 
আমি একলা হতে পারি কই কাগজের খবর থেকে 
খবর বলছে
আমার গলায় আটকে আছে কাঁচের বিশ্বাস। 
.
বিলকুল একটা হ্যালুয়েশন 
মন্ডপময় ছড়ানো দেবীপক্ষ থেকে আর কিছুদিন বিসর্জন 
আগলাতে পারলে না
মাটির কলস হাতে শ্রাদ্ধের দুধ খই। 
আমি হাসছি তবু 
প্রেসেন্ট ইনট্রোডাকটরি ফ্যাক্টরে লিখছি 
জা
লি 
য়া
তি 
মানুষের মিশ্রনের মিছরিতে অহংকারী ছুড়ি 
মেনে নিতে হয় 
না হলে পুরুষেত অন্ডকোষগুলো নির্বাসনে যাবে।

ভালোবাসি বলে

ভালোবাসি বলে 
.. ঋষি 
কোন স্পেশাল এফেক্ট দরকার নেই 
ভালোবাসায় বিশ্বাস আছে বলে তোমার বুকের খাঁজে হাত রাখি 
পাশে জড়িয়ে ধরি পাশবালিশ 
শুধু ভালোবাসি বলে। 
.
ঝালমুড়ির একলা ঠোঙার মত এই শহর হিসেবের বাইরে 
বুকের কেবিনেটে পুরোনো ভুগোলের দিদিমুনি 
আমি তখন ছোট 
ভারতবর্ষে সিং, নখ, আর চালচিত্র 
কেন আশ্রয়  খুঁজেছি? 
দরিদ্র ভারতবর্ষ। 
.
ফ্রয়েডের পাগলামী খুলে অনবরত বিকলাঙ্গতা 
 একলা দাঁড়িয়ে একপায়ে 
নগ্নতা দরকার! 
তুমি বলেছিলে সবটা দরকার। 
ভালোবাসি বলে মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় আমার শরীর খারাপ হোক 
শরীর খারাপে আমি ভুলভাল বলি 
সত্যি বলি, 
সব সভ্যতা যখন হিসেবের বাইরে দাঁড়িয়ে ভীষন একলা 
তখন কেন যে মনখারাপ? 
তুমি বলেছিলে আমি আছি তো 
আমার দরজা খুলে ঢুকতে দেরী হয় 
তোর মতো দরজা ভাঙতে পারি না। 

Wednesday, September 15, 2021

সমুদ্র থেকে শুরু

 সমুদ্র থেকে শুরু 

...ঋষি 


আমরা কি খুঁজে পাবো বসন্ত এ বাতাসে 

ধরো, সমুদ্র যেখানে শেষ হয়ে যায় সেখানে মাটি শুরু 

আদতে তা না 

মাটি তো সমুদ্রকে ধারণ করে 

তবে কেন বলা তিনভাগ জল এক ভাগ স্থল 

শুধু চোখ দেখে বলে। 

.

সারা শহর যখন হুমড়ি খেয়ে পড়ে নিরাপদ বেলাভূমিগুলিতে 

কয়েকটা উইকেন্ডে ভিড় বাড়ে সমুদ্র শহরে 

সেই দগদগে ভালো লাগা!

আশ্চর্য পায়ে ছুঁয়ে যাওয়া জল প্রত্যেক মানুষকে আলাদা করে একা করে 

তবু ভালো লাগে তোমাকে 

সমুদ্রের গভীরে কি তবে মানুষের মনের উত্তর লুকোনো ?

.

আমরা কি খুঁজে পাবো বসন্ত এ বাতাসে 

তবু সমুদ্র, তবু বসন্তকাল, তবু রোববার, তবু মাইক হাতে চিৎকার 

ম এর থেকে মা 

ম এর থেকে মন্দির তারপর মসজিদ 

ম এর থেকে মন 

 আমি তুমি আমরা হয়তো সব্বাই যেন গেট পেরিয়ে পেরিয়ে যাচ্ছি 

একের পর এক অদ্ভুত অজানা ,

ছেনি হাতুড়ি দিয়ে কেটে মানুষের বাইরেটা তৈরী করা যায় 

কিন্তু ভিতরটা 

সমুদ্রের মতো গভীর কিছু কাব্য 

এক আস্ত বেলাভূমি -স্থলভূমিতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পরে 


স্তূপাকার হয়ে থাকে মৃত মাছেদের মতো। 

জীবন 

আর সমুদ্র,

মন 

তাকে কোথায় খুঁজব?   


ব্রাত্য

 


ব্রাত্য 

.... ঋষি 


আসলে আমার কি মনে হয় জানো 

আমাদের কথাগুলো ফুরিয়ে চলেছে একে ওপরের কাছে ,

তুমি আমাকে জড়িয়ে আছো ,আবার আলগা করে ছুঁয়ে আছো 

অনেকটা পড়শী রাজ্যের কাঁটাতার 

বিদেশ দপ্তরের চিঠি 

দাঁতে দাঁতে চেপে সহ্য করছো হয়তো। 

.

দূরত্বের গন্তব্যে আজকাল ঝাপসা হতে থাকা প্রত্যুত্তর 

কাঁচের ওপাশে পৃথিবীটা বদলানো একটা আলোড়ন 

'ভাতের থালায় লেগে আছে অপ্রাপ্তি 

পেট ভরে না, 

মাঝে মাঝে মনে হয়ে দাঁড়িপাল্লার দুদিকে ভাবনাগুলো ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে 

বদলানোর পৃথিবীর কাছে মানুষগুলো ভয় পাচ্ছে। 

.

আমি জানি আমি শক্তি চট্টোপাধ্যায় নই 

আমি জানি আমার যোগ্যতার কাছে এই পৃথিবী বড় বেশি দয়ালু ,

আমি জানি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আমি  প্রতিবেশী খুঁজছি

রক্তাক্ত হচ্ছি রোজ 

রক্তাক্ত হচ্ছে তালিবান ,ইরাক ,ইরান আর আমার ভারতবর্ষ। 

আসলে মানুষের স্বার্থের কাছে মানুষগুলো অপ্রতিরোধ্য 

আর বাঁচতে চাই শব্দটা বড্ড ইরেগুলার মানুষের ডাইরিতে 

তাই বোধহয় আমি পুরোনো হয়ে চলেছি সময়ের কাছে 

তবু চলন্তিকা জানো 

বেঁচে থাকাটা একটা আর্ট ততক্ষন 

যতক্ষণ বাঁচতে ইচ্ছে করে।  

.

কিছু গল্প কখনো ফুরোয় না 

যেমন কিছু গল্প চরিত্ররা ব্রাত্য চিরকাল। 


একটা ক্যাকটাসের গল্প

 .

একটা ক্যাকটাসের গল্প  

... ঋষি 


আমি যে কোথাও নেই 

এটা একটা বাক্য ,শেক্সপিয়ারের ইংরেজি নয় 

বুঝতে হবে। 

.

অনবদ্য দাম্ভিকতা ,অনবদ্য আগুনের পরশমনি 

প্রাপ্তি জীবনের অঙ্গনে অলিখিত চুক্তি ভালো থাকতে চাই 

এই আমার সম্বল ,

অথচ আমাকে বুঝতেই হবে বিজ্ঞাপনের ধারক এই পৃথিবীতে 

সকলেই শান দিচ্ছে বোঝাপড়ায়

অথচ আমার কোনো লক্ষ্য নেই 

বুলসাই চোখে শুধু একটা ক্যাকটাসের গল্প।  

.

কর্পোরেট লেভেলের ভাবনারা আজকাল মাথায় আসে না 

বিজ্ঞপনের দাঁতে আমি নগ্ন বরাবর ,

সকলেই ছুটছে। ......কি যেন লক্ষ্য 

অথচ সিন্ধুসভ্যতার প্ৰাচীন সেই এক শিং হরিণটাকে আমি দেখতে পাচ্ছি না

তুমিও বুঝতে চাইছো না আমি 

ইলিয়ড ,ওডিসি থেকে শক্তি চট্টোপাধ্যায় সকলেই একটা ভাবনা 

আর ভাবনার কোনো দেওয়াল থাকে না 

শুধু আকাশ ছাড়া।   

Tuesday, September 14, 2021

ভালো থাকার ব্যাকরণ হয় না

 ভালো থাকার ব্যাকরণ হয় না 

,,,, ঋষি 


উড়ন্ত পাখি 

ব্যবসায়ী চোখে লেগে থাকে মাংসের লোভ ,

রক্তক্ষয়ী বিপ্লব 

শুধু প্রফিট এন্ড লসের খাতায় শুধু বিজ্ঞাপন শুয়ে 

আচ্ছা বলুন সূর্যের অক্সিজেন দরকার হয় ঠিক 

কিন্তু সূর্যকে কি ঘুম থেকে তুলতে হয়। 

.

আকাশ আর সময়ের মাঝে দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে 

কারণ মানুষগুলো শুধু ছুঁয়ে থাকতে চাইছে মানুষের বাইরের জামাগুলো ,

বড় বড় কংক্রিটের বিলাসে জামা পরিয়ে মানুষগুলো ভাবছে 

ভালো আছি ?

অথচ সত্যি ভালো থাকাটা ছশো টাকার মাইনের গৃহস্থ্য জানে 

যাকে ঘুমোবার ঘুমের ওষুধ খেতে হয় না। 

.

আচ্ছা চলন্তিকা ভালো থাকা কাকে বলে ?

তোমার বাড়ির রেলিং বেয়ে পশ্চিমের জানলায় ম্যানিপ্ল্যান্ট গাছ 

নিয়ম করে জল ঢালো তুমি তাতে ,

আকাশে পাখি দেখে হাসতে থাকি " মুক্তি " ,

একটা প্রতারণা এই একজন ষড়যন্ত্রের নাম ঈশ্বর 

বুকের ব্যাবিলনের দঁড়িয়ে থাকে নক্ষত্র খেকো লোভ 

না ভালো নেই শহর। 

শুধু মাত্র বাহ্যিক একটা জানলা খুলে মানুষগুলো অক্সিজেন খুঁজছে 

কিনে চলেছে বাঁচার মানে সস্তায় বিক্রি হওয়া আধুনিকতার কাছে 

অথচ তারা শান্তিতে নেই 

কারণ ভালো থাকার কোনো ব্যাকরণ হয় না 

শুধু জরুরী ভালো থাকা। 


একটি মেয়ের তৃতীয় উত্তর

 একটি মেয়ের তৃতীয় উত্তর 

.... ঋষি 


প্রথম :

কি যেন ছিল বুঝলেন

শিরশিরে বেলার মতো ঝরে পড়েছিল কোনো এক মুহূর্ত 

আমি চমকিত 

কিশোরী আত্মায় লেখা হচ্ছিল খোদাই করে আগামী ভালো থাকা। 

মুহূর্তরা মনে  হয় খোলা চিঠি 

তারপর দৃশ্যের ভিতর ফুটে ওঠা ছলছল চোখ

বালিশ জড়িয়ে সারাবেলা। 

.

দ্বিতীয় :

উত্তর ছিল না ,তবু এই সমাজের হ্যা আমি 

বিলাস ব্যাসন ,ফুলসজ্জার খাটের মাস্তুল বেয়ে গড়িয়ে নামছিল খিদে 

একটা সাপ সারা শরীর বেয়ে ,

অথচ কি জানেন সাপেরা এমনি হয় মুহূর্তের 

তারপর একটা নিয়ম আর মেনে চলা অনিয়ম ,

দৃশ্যগুলো সাজিয়ে দেশলাই দিয়ে জ্বালিয়ে দি 

চিৎকার ফুরোয় না 

আসলে কি জানে গায়ে কেরোসিন তেল দিলেই মানুষ পোড়ে না। 

.

তৃতীয় :

 যে মুখোশটা পরে আছি, সেটা আলগা হয়ে গেছে  মুখোশের রং বিবর্ণ 

আঁট করে রাখি 

আসলে কি জানেন সব প্রশ্নের উত্তর অপেক্ষা করে না 

সময় সাজিয়ে নেয় নিজের মতো করে। 

জীবনকে 'না' বলে দিলে কত যে সুবিধা হতো

সুখ দিয়ে

          দু:খ দিয়ে

                           যে খেলা খেলতে হয়

সেটা অজস্র মুহূর্ত ,

তবুও মাঝে মাঝে আলোর খোঁজে আমারও না বলতে ইচ্ছে হয়। 

  

আচ্ছা যদি বৃষ্টি না হতো

 


আচ্ছা যদি বৃষ্টি না হতো 

...ঋষি 

.

আমি যখন লিখছি 

তখন হয়তো এই শহরে  হাজারো নারী বৃষ্টির মতো গড়িয়ে নামছে 

তুমি কি করছো চলন্তিকা ?

দ এর মতো চাদর টেনে শুয়ে শুয়ে ভাবছো 

আমি ভালো নেই ,ভালো নেই শহর। 

.

সমস্ত আব্রু আর বেআব্রুর মাঝে এক দক্ষতার নাম সমাজ 

খুব সহজে যাকে ছুঁয়ে দেওয়া যায় জেরুজালেম 

সেখানে ফরিয়াদি মাটিতে কুমোরটুলির দুর্গারা ভিজে চলে 

গায়ে মাখে কাদা ,গায়ে মাখে সফর 

সুজলা ,সুফলা সাজানো সময়ের গায়ে অবিরত একটা প্রতিষ্ঠান 

দুর্গাদের সামাজিক হতে হয়। 

.

আমি যখন লিখছি 

তখন বাইরের সময়ে অকাল বৃষ্টিফেরত কিছু কথারা তোমাকে খুঁজছে 

তোমার হাঁড়ির ভিতর খিদে 

অথচ তুমি চা আর পকোড়ার কথা ভাবছো 

আমি ভাবছি 

এইভাবে কি গড়িয়ে বাঁচা যায় কিংবা জড়িয়ে। 

সব পবিত্রতা যখন 

আগামী পুজোর প্যান্ডেলে দুর্গার  অসুরদামিনী রূপে মাতাবে 

তখন তুমি মাতবে অজান্তে 

ভাববে সময়টা বড় বেরসিক ,সময়টা বড় বিরক্তিকর 

আচ্ছা যদি বৃষ্টি না হতো ? 


সমস্ত উচ্চতায় যদি ভালোবাসা ছোঁয়া যায়

 


সমস্ত উচ্চতায় যদি ভালোবাসা ছোঁয়া যায় 

... ঋষি 

.

আমি বৃষ্টি গায়ে এঁকে দেব এক গ্রাম 

এক সবুজ রহস্য 

আমার কবিতায় তুমি গিয়ে দাঁড়াবে একলা সেই পাহাড়ি টিলাতে 

যেখান দিয়ে ঝাঁপ দেওয়া মানে জন্ম 

যেখান থেকে বৃষ্টির জল নেমে আসবে তোমার শরীরে 

হয়তো কোনো জ্বরের দিনে। 

.

চলন্তিকা আমার দিকে এইভাবে তাকিও না 

আমারও যে বাঁচতে ইচ্ছে হয় ,

আমারও যে হাসতে ইচ্ছে হয় কোনো বৃষ্টিতে ভেজা একলা সেই পাহাড়ের জন্য 

একলা সেই গ্রামটার জন্য 

চলন্তিকা তোমার জন্য আমারও যে বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে হয়। 

.

আমি বৃষ্টি নিয়ে লিখবো যখন 

সদ্য যারা যুবতী তারা দূরে থেকো ,

যে বয়সে আকাশে মেঘ হওয়ার সময় ,যে বয়সে একলা ভেজার সময় 

সেই সময় তোমরা দূরে থেকো 

না হলে সর্বনাশ 

কারণ কবির কলম পুড়তে পারে ,কবির কলম শুধু বিরহ জানে 

কিন্তু সে যে ভালোবাসতে জানে না। 

সেই চেনা চাহুনি 

সেই এঁদো পাড়ার সবুজ গ্রামটায় আমি যাকে দেখেছিলাম বৃষ্টিতে ভিজতে 

এই শহরে বৃষ্টি দিনে বাসস্ট্যান্ড একলা দাঁড়ানো মেয়েটার সাথে তার তফাৎ কি 

তফাৎ শুধু সবুজ রহস্য 

যেখানে বুক পোড়ে জলের ফোঁটায় 

যেখানে আকাশের মেঘ ধরা  দেয় কবির কলমে 

সেখানে ভালোবাসা না ,সেখানে কোনো অনুভব না 

শুধু এক দর্শনে থাকে বৃষ্টি  আর চলন্তিকা

আর জ্বর !

যদি নিয়মের কবিতায় অনিয়ম হয় ভালোবাসা।    


Sunday, September 12, 2021

লাইট ক্যামেরা আকশন



লাইট, ক্যামেরা,আকশন
.. ঋষি 
স্ক্রিপ্টটা রেডি হয়ে পড়ে আছে আপনাদের সকলের কাছে
প্রোডাকশন টিম,লাইট,  ক্যামেরা, মেকআপের লোক রেডি 
রেডি লোকেশান 
শুধু শর্টটা রেডি হয় নয় 
শুধু আকশন বলার দেরি।
.
আমি মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছি সিনেমার শেষ সিনটা
একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আসে 
মেয়েটা অন্তঃসত্বা 
তার পাদুটো হাওয়ায় ভাসছে 
হাওয়ায় ভাসছে তার শরীর এই সময়ের থেকে দূরে
সকলে সিনেমাহলে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে।
.
কি ভাবছেন? 
মেয়েটা অবিবাহিত, কার সন্তান তার পেটে? 
কি ভাবছেন? 
মেয়েটা রেপড, মেয়েটা অত্যাচারিত, সমাজের মুখ দেখাবে কি করে 
তাই গলায় দড়ি দিয়েছে। 
আপনারা একে ওপরের সাথে আলোচনা করছেন 
সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজ পড়ছেন 
উইকএন্ডে সাধ্য মতো বেড়াতে যাচ্ছেন 
প্রেম করছেন, ঝগড়া করছেন, ঝালমুড়ি খাচ্ছেন
কিন্তু যে রেডি হয়ে পড়ে আছে আপনাদের কাছে
আর যে মেয়েটা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে 
তাকে চেনেন কি? 
হ্যা ভারতবর্ষ, সেই মেয়েটার নাম 
আর খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সকলেই দেখবেন সিনেমাটা
চোখ রাখুন সময়ের আপডেটে। 

Saturday, September 11, 2021

স্পর্ধা



স্পর্ধা 

... ঋষি 


তোমার দিকে তাকাতে আমার স্পর্ধার দরকার

স্পর্ধা দরকার আমার বেঁচে থাকতে ,

কোনো অকাল ভিজে যাওয়া ইচ্ছার গায়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য 

অনবরত একলা দিনে তোমাকে ভাবার জন্য স্পর্ধার দরকার। 

স্পর্ধা শব্দটার আস্পর্ধা এতটা 

যে তোমাকে আমার কাছে যাওয়া থেকে আটকায়। 

.

আমি কবিতার গায়ে পুরনো মৃত্যুকে লিখে রাখি   

তোমার অলিভ গ্রিন শাড়ি ,

আমার  বেগুনভেলিয়া স্বপ্ন ,

উচ্চাঙ্গে বেঁধে রাখা অনবরত মাটি দিয়ে তৈরী আমার চলন্তিকা 

সেখানে আস্পর্ধা 

হাসতে থাকা সেই ছোট্ট শিশুটা জানে না মৃত্যুভয়। 

.

তোমার এগিয়ে যাওয়া ভাবনাদের এই শহরে

তোমাদের চাওয়া ,পাওয়া আর পুরনো রবিবাবুর কাদম্বরী 

খিড়কির জানালা 

কই আমি তো  বলতে পারি " আমি চিনি গো চিনি তোমারে "

আস্পর্ধা বাঁচার। 

হিসেবের বাইরে গিয়ে দাঁড়ালেই এই শহরে মৃত্যু স্বাভাবিক 

সময়ের বাইরে হৃদয় নিয়ে দাঁড়ালে এই সময়ের  মৃত্যু স্বাভাবিক

তোমার কাছে যেটা আস্পর্ধা 

আমার কাছে সেটা জীবন 

তোমার কাছে মেরুদন্ড শব্দটা আজকেও এই পৃথিবীর 

আর আমার মেরুদণ্ডে পৃথিবী লেখা থাকে ,

চলন্তিকা আস্পর্ধা শব্দটা অভিধানে একটা  অন্ধকার শব্দ  

আর ভালোবাসায় অন্ধকার থাকে না 

শুধুই স্পর্ধা ।  

.

ফিরে আসা সময়ের স্পর্ধা তোমাকে পাওয়া 

আমাকে ক্ষমা করো চলন্তিকা আমি মানুষ হতে পারি নি। 

  

Friday, September 10, 2021

আকাশ একটা খাঁচা

 


আকাশ একটা খাঁচা 

... ঋষি 


তুমি বাড়িতে একটা পাখি পোষো 

তাকে তুমি আদর যত্নে খাইয়ে অনবদ্য  হাসতে থাকো ,

তুমি একটা পুতুল 

রান্না করো ,পনির রোলের ভিতর হয়তো কখনো ভুল করো।  

কিন্তু ভুলগুলো একা থাকে না  হৃদয়ের  

কারণ হৃদয়ের ভুলগুলোর সাথে জড়িয়ে থাকে কিছু মুহূর্ত। 

.

তুমি হাসছো 

তুমি পোষা পাখিটাকে জল দিয়ে চান করাচ্ছো 

পাখি বলছে মুক্তি 

তুমি বলছো চুপটি করে থাক,

এই তো বেশ 

তোমার দুঃখের কনিকায় পাখি আকাশ ভুলছে ধীরে ধীরে। 

.

এই কবিতায় পাখির একটা বাড়ি আছে 

এই কবিতায় পাখির পোশাকে লুকিয়ে আছে কিছু নগ্নতা 

এই কবিতায় পাখির ডানায় লেগে আছে সভ্যতা। 

তুমি হাসছো 

পাখিটা তাকিয়ে আছে তোমার মুখের দিখে 

পাখিটা ভাবছে 

তুমি একটা পুতুল ,

শুধু  ভালো থাকতে চাইছো 

কিন্তু পাখিটা যে আটকে আছে ভুলের খাঁচায়। 

সম্পর্ক

সম্পর্ক 
... ঋষি 
ব্যাক্তিবিশেষ  ষড়জমিনে অস্তিত্বর তো ঘুম পায় না
সে যে ঘুনপোকা তোমার পুরনো আলমারীর গায়ে, 
তুমি শুনতে পাবে সবসময় 
তবে তুমি হঠাৎ দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকাবে 
খুঁজে নেবে হেলান দেওয়া তোমার রাস্তা ঘেঁষা দেওয়াল 
যদি একবার!
.
আসলে সম্পর্ক মানুষের কোন জন্ম দাগ নয় 
আসলে সম্পর্ক কোন পিতৃপুরুষ থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি নয়
সে হলো এক অধিকার বোধ 
সে হলো খোলা আকাশের পাখি সময়ের আকাশে
শুধু অনুভুতিসিক্ত স্বপ্নঘোর 
তুমি তাকিয়ে থাকো আমার দিকে। 
.
আমি চে গুয়েভার ডাইরি খুঁড়ে পেয়েছি মানুষ 
আমি নবারুন বাবুর কবিতায় দেখেছি মানুষ 
আসলে মানুষ  একটা সম্পর্কের নাম 
তার জন্য কারণ না, হৃদয় দরকার 
আসলে মানুষ কোন লেনদেন না, নয় কোন গোপন পংক্তি
মানুষ হলো এক আগামী সম্পর্কের দাবীহীন উক্তি 
আমি অরণ্যে না, সম্পর্কে আছি। 
তুমি ঝগড়া কোরো, চুপ থেকো না কখনো 
তুমি আঁচড়ে, কামড়ে দিও, একা থেকো না
প্রতিটা সম্পর্কের মাঝে এক স্বচ্ছ কাঁচ আছে 
ঘষে দিও না
সম্পর্ক যে গভীর মুক্তির নাম।

তোমার চলন্তিকা

তোমার চলন্তিকা 
... ঋষি 
রবীন্দ্রনাথ তোমার প্রেমিক হতে পারতো
হতেই পারতো তসলিমা আমার প্রেমিকা
হয় নি, 
.
যুক্তরাষ্ট্র আমার দেশ হতে পারতো 
ইসলামাবাদ আমার মাটি হতে পারতো 
হয় নি। 
.
খ্রীশ্চান তোমার ধর্ম হতে পারতো 
পাঞ্জাবী আমার ভাষা হতে পারতো 
হয় নি। 
.
তোমার নাম চলন্তিকা না হয়ে ফরিদা হতে পারতো 
তুমি আমাকে থামিয়ে দিলে 
বললে সবকিছু হতে পারতো আমি জানি 
কিন্তু কবি আমার নাম চলন্তিকা,
আমার মেরুদণ্ড চলন্তিকা
পৃথিবী ধ্বংস হতে পারে, সত্যি মিথ্যা হতে পারে
কিন্তু তোমার চলন্তিকা তোমারই 
বদলাবে না। 

Thursday, September 9, 2021

অন্যদিন

অন্যদিন 

... ঋষি 


একদিন তুমি ভালোবেসে বলেছিলে আমি আছি 

একদিন আকাশের চাঁদে এক্সরেতে ধরা পড়েছিল কালি। 

.

একদিন অন্ধকার থেকে নেমে এসেছিলেন বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি 

একদিন হিরোশিমা পুড়েছিল পারমানবিক জ্বালায়। 

.

একদিন অস্তিত্ব রক্ষায় মানুষের হাজারো বিপ্লব ,রক্ত ফোঁটা 

একদিন অস্তিত্ব বিক্রিতে ধর্ষিত মানুষ আর অধিকার। 

.

একদিন শহরের পথে প্রভাতফেরি আর রবিঠাকুর 

একদিন শহরের ধুলোয় ক্লান্ত মানুষ আর ক্লান্ত সফর। 

.

একদিন স্বাধীনতা মানে মানুষের বোধ আর মানুষের অধিকার 

একদিন বেঁচে থাকা মানে মানুষের মুখে রক্ত। 

.

একদিন কবিতা মানে নবারুণ বাবু ,সুনীল দা আর জয়দাদের কফিহাউস 

একদিন কবিতা মানে ফেসবুকে টুকে চলা বিজ্ঞাপনী বিপ্লব। 

.

একদিন শহর মানে আমার কলকাতা ,আমার হৃদয় 

একদিন শহর মানে শহরের থেকে দূরে চাকুরীজীবি দাসত্ব। 

.

একদিন সম্পর্ক মানে বেঁচে থাকা অধিকারবোধ 

একদিন সম্পর্ক মানে আতি কে খান্ডালা ওয়ান নাইট  স্ট্যান্ড। 

.

একদিন দেশ মানে মানুষের চোখে স্বপ্ন ,সময়ের চোখে মানুষ 

একদিন দেশ মানে একটা ষড়যন্ত্র ,মানুষের কাছে মানুষের দাসত্ব। 

.

একদিন ভালোবাসা মানে শুধুই তুমি,তুমি চলন্তিকা 

একদিন ভালোবাসা মানে জীবনে থেকে দূরে ভালো থাকা। 

.

একদিন কবির কলমে দুঃখ ,সমস্ত একদিনের যোগফল হতাশা 

একদিন কবির কলমে প্রত্যাশা ,সমস্ত একদিনের বদল অন্যদিনে।  

তেরে বিনা জিন্দেগীমে

 তেরে বিনা জিন্দেগীমে 

.... ঋষি 


ক্রমশ হত্যার ঠিকানায় মাইলস্টোন 

নীতিনির্ভর জীবন ,

চলন্তিকা আজকাল সম্পর্কের বাইরে কিছু অজানা ঠিকানা 

অজানা কথারা ওৎ পেতে বসে ,

কে কতটা সত্য 

জীবনের বাইরে পঞ্চমস্বর্গ নিত্য ফেরারি। 

.

তেরে বিনা জিন্দেগী সে কোই সিকবা তো নহি 

অদ্ভুত এই  লিরিক্স 

 নিন্দুকেরা বলে ডাহা মিথ্যে একথা 

আসলে মৃত্যু বড় সত্যি। 

অথচ আমি মানি না সেকথা 

কারণ কবির কথাতে 

জীবনের থেকে সত্যি,মিথ্যের থেকে অন্ধকার কিছু হয় না। 

.

আলোতে বাঁচতে গিয়ে সময় তাকিয়ে আছে আগামীর দিকে 

আর বর্তমান মৃত্যুর চাদরে চলন্তিকা অসংখ্য আসক্তি লুকিয়ে 

অধিকার 

অন্ধকার 

লোভ 

আচ্ছা চলন্তিকা মানুষগুলো সত্যি হতে পারে না কেন ?

আচ্ছা বাঁচাগুলো এত মিথ্যে কেন ?

তবে আলো বোধহয় ভীতু 

কিন্তু 

মনে রেখো কচ্ছপ আর খরগোশের দৌড় 

আর ঈশপ মিথ্যে লেখে নি। 


Tuesday, September 7, 2021

না ম তা

নামতা
.. ঋষি 
অনবদ্য মৃত্যু উপত্যকায় দাঁড়িয়ে 
আমি লিখে ফেললাম এক দু - গুনে দুই, 
শব্দ পল্লীতে যন্ত্রনাদের আলাদা বাড়ি আছে 
যেখানে কেউ যায় আসে না,
যেখানে অন্ধকার 
মাথার নিউরনেও বোধহয় কিছু মৃত্যু উপত্যকা
হু হু তোমার মতো দেখতে। 
.
আমি আগামীর কথা জানতে চাই 
উত্তরে ভাসে ফেলে আসা একাত্তরের অন্য ভারতবর্ষ, 
আমি বর্তমানের কথা জানতে চাই 
উত্তরে ভেসে আসে পদ্মা নদীর কাঁটাতার 
আমার সারাজীবনেও লেখা হলো না
বাংলা দেশের মানুষগুলো বাংলাতে কথা বলে। 
.
অনবদ্য মৃত্যু উপত্যকায় দাঁড়িয়ে 
আমি শব্দ দিয়ে জীবন লিখতে পারি না, 
আমি লিখতে পারি না
ভালো থাকা মানে একটা পর্যাপ্ত অক্সিজেন মুখোস 
আর সেই মুখোস কিনতে দাম দিতে হয়। 
কে বেশি দামী? 
সময় না বেঁচে থাকা, 
কি ভালো থাকা? 
মৃত্যু উপত্যকায় রাখা একটা অনবদ্য ভাবনা 
না সাতচল্লিশে তৈরী  অন্য ভারতবর্ষ 
যেখানে বেঁচে থাকা মানে দৈনন্দিন বোঝাপড়া।
.
আমি আগুন চিবোতে পারি 
আমি বারুদের বুকে নিজেকে পোড়াতে পারি 
কিন্তু আমার ভারতবর্ষ! 

বদলানো দিনের কবিতা



বদলানো দিনের কবিতা
... ঋষি 
.
সমস্ত ইনভেস্টমেন্ট, ইন্সুয়রেন্সের কাগজ খুলে দেখি 
আমি বড্ড বোকা রয়ে গেলাম, 
এ যাবৎ দরজার খিলানে আটকানো সিংহগুলো পরাক্রম ভুলেছে 
পুরনো জমিদারী পল্লিতে ফাটল ধরা গেট বলে দেয় 
এখানে নিঃশ্বাস ছিল কোনোদিন। 
.
আজ কবিতার গায়ে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আমার শৈশব, যৌবন 
নিসন্দেহে আমার বার্ধক্যের কবিতারা বোধহয় বর্তমান 
আর মৃত্যুর শব্দগুলো বোধহয় তোমার জন্য রাখা,।
চিৎকারগুলো আটকানো পুরনো প্রতিপত্তি আর অধিকার 
আমি অন্যদের মতো চিরকাল বুদ্ধিমান হতে পারি নি 
পারি নি হতে সময়ের। 
.
সব কথা শেষ হয়ে গেলে পুরনো দেওয়ালে ফাটল ধরে
সব কথা বলা হয়ে গেলে নিঃশব্দে মানুষ পোড়ে 
আর আমি আগুনরুপী জীবন 
যার কাছে যোগ্যতা বেঁচে থাকার প্রশ্ন? 
যার বিশ্বাস প্রেমিকার ঠোঁটে রক্ত 
যার অধিকার পুরনো বইয়ের শ্রুতি। 
আমি চলে যাবো বলি নি, আমি ভেসে যাবো বলিনি 
আমি একলা তাও বলিনি 
শুধু বলেছি ভালোবাসা বদলানো দিনের কবিতা না
একটা নতুন কবিতা যা কখনো পুরনো হয় না। 





Sunday, September 5, 2021

মিথ্যা কথা

 মিথ্যা কথা 

... ঋষি 


আগুন লাগা ইতিহাসগুলো সাদা পাতায় ডারউইন তত্ব 

তত্বের উপর দাঁড়িয়ে আমি হেঁটে গেছি প্রাগৈতিহাসিকে ,

দেখতে দেখতে তুমিও শব্দ নিয়ে খেলতে শিখেছো 

শিখে গেলে আগামীর শব্দঘরে একা থাকার মানে ,

আমার ইতিহাস জানে এই শহরে 

কবিতারা বড় দুঃখের। 

.

আলতামিরা গুহা থেকে তেড়ে আসা বাইসন 

অন্ধকার ধোঁয়া থেকে জন্ম নেওয়া অন্ধকার কন্যা 

প্রশ্নটা মিলে গেলো 

চোখের অন্ধকার না কাজকে কে বেশি তৃপ্ত 

মিথ্যে যদি না বলি 

অন্ধকারের নিজের একটা শব্দ থাকে 

কিন্তু কাজলের ?

.

বিষাক্ততা স্ট্রিটলাইটের আলোতে এ শহর ভেসে যায় 

ভেসে যায় ভালোবাসা শহরের ধুলোয় 

মিথ্যে যদি না বলি 

সকলে কবি হয় না 

কেউ কেউ হয়। 

শব্দের অরিগামিতে  শব্দ মুখর চিৎকার 

আমি নিস্তব্দ থাকতে ভালোবাসি ,

পিছনে ফিরে চাওয়াটা অনেকটা পাগলের প্রলাপ 

মিথ্যে যদি না বলি 

আমি একা এই শহরে একমাত্র ক্লোরোফিল 

যে বেঁচে আছে শব্দের অক্সিজেনে

সকলে তো মিথ্যা হতে পারে না । 

Saturday, September 4, 2021

আচ্ছা স্বপ্নরা কি তবে এমন হয়



আচ্ছা স্বপ্নরা কি তবে এমন হয়
.. ঋষি 
সেদিন থেকে অগোছালো আমি 
বারান্দা দিয়ে তাকিয়ে আছি সামনে এক সমুদ্র 
আচ্ছা স্বপ্নরা বোধহয় এমন হয়! 
সামনে ভেসে উঠছে ঢেউএর সাদা ফেনাল অনুভব 
আকাশ চাঁদ সাক্ষী রাখছে নীরব প্রেমের 
অথচ আমার সাদা পাঞ্জাবীর দুঃখগুলো সব সৎকার হচ্ছে। 
.
সেদিন থেকে একরোখা ধারাল আমি 
আমার বুকের মাটিতে প্রাচীন একটা বট যেন আকাশ ছুঁতে চাইছে 
আচ্ছা স্বপ্ন কি তবে এমন হয়! 
সদ্য অংকুরিত বিচ্ছেদের গায়ে লেগে আছে হাজার কুড়ি বছর 
পুর্ব, পশ্চিমের মাটি ধরে আমার বর্তমান 
বৈশাখী পাগলামীতে সুনীল হয়ে উড়ছে। 
.
উৎসর্গ লিখতে হবে এবার 
সম্পাদকীয় কলম থেকে একটা অনুভব নিরন্তত রক্তাক্ত
আচ্ছা স্বপ্নরা কি এমন হয়! 
সামনে সমুদ্রের নোনা জলে ভেসে উঠছে আকাশের তারাগুলো
একের পর মুহুর্তগুলো সব হঠাৎ ভেসে উঠছে
মৃতদেহ 
ভালোবাসা
এবার সময়ের পেটফোলা নষ্টভ্রনে উঠে দাঁড়িয়ে 
খুঁজবো নিজেকে, 
বারান্দার বাইরে সমুদ্রটা আবছা হয়ে যাচ্ছে 
ক্রমশ আবছা
আচ্ছা স্বপ্নরা কি তবে এমন হয়। 

মৃত পরিচয়

মৃত পরিচয় 
... ঋষি 
বোতলের মধ্যে মাথা দিয়ে বসে আছি 
সাবাস দুনিয়া! 
হাতের হ্যারিকেনে লেগে অন্ধকারের তীরন্দাজী।
নিতী নির্ভর বাঁচা 
ক্লোরোফর্মে ভিজে মুহুর্তগুলো বাতিস্তম্ভে হলুদ আলোয় 
অকপটে  পরিবর্তন। 
.
পরিবর্তন ধর্ম 
দোষী আমি,আমার বুকের পাথরে একশো আট রজনীগন্ধা 
আজকাল ঘুমের মধ্যে একটা জীবিত স্বপ্ন চিৎকার করে 
হাজারো কবিতায় ফাঁসি চায় জীবন, 
বুকের ভিতর ঘুনপোকা, মাথার ভিতর অচেনা গন্ধ
সবটুকু নির্বাসিত দৈনন্দিন। 
.
হাতের আঁকিবুকি, অকপট ভবিষ্যত 
আমার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে আছে নেমেসিস
নির্মল হৃদয়, সাদা চাদর জড়ানো একটা মৃতদেহ আমি দেখি 
নাকে লাগে মরা মানুষের গন্ধ।
সবটুকু বলা হয়ে গেলে মানুষগুলো কেমন মৃত শহরের বাসিন্দা
সম্পর্কের আগুনে যদি কাঁচ ভাঙে তবে সে ভাঙা কাঁচে মানুষ অচেনা
অচেনা আমি মৃত পরিচয় পরিবর্তিত পর্যায়ে।

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...