Sunday, May 31, 2020

রক্তের দাগ



রক্তের দাগ 
... ঋষি 

প্রেমিকা দগ্ধ বুকে আতঙ্ক ছুঁয়েছে আজ বহুদিন 
আবোলতাবোল কোনো রুপোলি নদী মেঘ ছুঁয়ে বৃষ্টি হতে চায় ,
ক্যানভাসে পাগলামি রঙে 
ক্রমশ ভিতর গর্ভে রক্ত ক্ষরণ পরিবর্তন চায়। 
ইদানিং দৈনন্দিন গুলো একঘেয়ে রং চটা
দেওয়াল লিখনের মত অবসাদে ভুগতে থাকা আগামীর হাত ছুঁয়ে বাঁচা
রং তুলি ভিজিয়ে চলে অন্ধকারে গতি 
তাই সময়ের গতিপরিবর্তন আজকাল বিরক্তিকর একঘেয়ে। 
.
কাকে বলছি ?
কেন বলছি ?
হয়তো পাগলামী ,হয়তো বাঁচতে চাওয়া ,হয়তো নিশ্বাস। 
ভীষণ ইচ্ছা করছে  নাম না জানা কোনো এক স্বপ্ন 
মেঘ ঝরা রোদে আকাশের পাখি ডানা 
শুধু হৃদয় হতে চাই। 
.
জনবহুল আস্তরণ 
পরোদে পরোদে জমতে থাকা আতঙ্কের আগামী,
তোমার মতো আমারও ভয় করছে ,
ভয় করছে পাখিদের ,গাছেদের ,নদী ,আকাশ আর স্বপ্নদের 
ভয় করছে রাম ,রহিম আর যীশুখৃষ্টের। 
আমরা ঈশ্বর ভাবি এদের 
আমার বড়ো বেশি সবুজ আর সহজ ভেবে নি এদের 
কিন্তু সত্যি এটা সবুজ হওয়া সহজ নয়  
কিন্তু সত্যি এটা এদের মতো একলা থাকা সহজ না 
সহজ না মরতে মরতে বাঁচা। 
অথচ অবাক হলো কোনো ধর্ম মঠের দেওয়ালে 
কোনো ধর্মগ্রন্থে 
কোনো প্রকৃতির সৃষ্টিতে 
রক্তের দাগ নেই 
যত দাগ মানুষের গভীরে ,মানুষের বাঁচায়। 

পাগলা ঘন্টি


পাগলা ঘন্টি 
... ঋষি 

অনন্ত বিশ্বাস 
ট্রান্সফর্মেশনে উঠে আসে কদম কদম বারাতে যা ,
আসলে ভীত সময়ের দরজায় 
মানুষের ভয় হারিয়ে যাওয়া। 
বাবা শেখালো মিথ্যে বলতে নেই ,মা বললো সত্যবাদী হও 
সময় বলছে রিহ্যাবে বাস করছে মানুষ। 
.
পাগলা ঘন্টি 
কি চাইছে সকলে ,
মিথ্যে বলা এই সময় বাঁচার জন্য জরুরী পরিষেবা। 
এম্বুলেন্স এসে দাঁড়ালো 
জীবনের মুহূর্তের গভীরে তোলা হচ্ছে শরীর 
মৃত সব 
মৃত সম্পর্ক ,মৃত পরিচয় ,মৃত প্রেম। 
.
বাঁচার লজ্জা 
জীবন গুটিয়ে গেছে প্রজাপতি হতে গিয়ে বিষাক্ত আকাশে ,
তবুও কদম কদম বাড়াতে যা। 
আমার ,আমার ,আমার 
বোঝাতে পারি নি ,বোঝানো যায় নি এই আমার শব্দের মানে 
শরীরে রক্তের কোষে বাস করা আশা
দোলাচলে ভাসতে থাকা মিথ্যে ভালোবাসা। 
আমার তেইশ তম প্রেমিকার মুখটা আজ আর মনে পরে না 
সময়টাও না,কোনো মুহূর্ত নয়। 
মানুষ মিথ্যে বলে 
তোমাকে আমি কিছুতেই ভুলতে পারবো না 
কিংবা 
তোমায় ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয়,
শুধু ভগ্নাংশে বাঁচে থাকা জীবন নিশ্বাস খোঁজে 
তাই মিথ্যে ফিরে আসা সত্যি ভেবে জীবনের কাছে। 

Saturday, May 30, 2020

হঠাৎ বৃষ্টিতে দেখা


হঠাৎ বৃষ্টিতে 
... ঋষি 

প্রেম লিখতে গেলে খুলে পরে শ্রাবন 
কানের কাছে ফিসফিস করেন ,ঈশ্বর বৃষ্টির জলে তিনি সময়ের হোতা 
তিনি  জন্মের কারণ 
আর প্রেম ,
কিন্তু ফুরিয়ে যাওয়ার আগে নেশা জমে না 
শুধু বসন্তে মন ভরে না 
কেন যেন বৃষ্টিকে তোমার মতো মনে হয় । 
.
চিরকাল এক রৌদ্র মেঘ নিয়ে দাঁড়িয়ে তোমার দরজায় 
অপেক্ষায় 
সুদিন। 
শুধু কবিদের কবিতায় প্রেম শুকিয়ে যায় বেদনায় ,
আমি সৃষ্টি রহস্যের মেঘ ভেঙে শাওয়ারের দাঁড়ায় চুপটি করে 
প্রেম বোধ হয় জলের ফোঁটা 
জানি তুমি বুঝতে পারো।  
.
সব কিছু বৃষ্টির মতো সরল হয় না কেন 
তোমার সাথে কয়েস মাইলস্টোনের দূরত্ব 
হয়তো সময়ের। 
সম্পর্কের বাইরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দি বৃষ্টি ফোঁটায় 
আঙ্গুল চুঁয়ে  নামতে থাকে কষ্ট 
মনে হয় প্রেম শুধু জড়িয়ে থাকা একলা মেঘে 
আর তুমি সেই আকাশে মিঠে  হাওয়া।  
.
জানি বড়ো বেশি রোমান্টিস হলে 
সময় বলবে ফিরে এসো বাছাধন এখনো অনেক কাজ বাকি 
ঈশ্বর মনে করিয়ে দেবেন বাঁচার বর্ণপরিচয়। 
অথচ দুজনেই জানে না 
আমি সময় লিখতে শিখে গেছি একলা বৃষ্টিতে ভিজে 
আর এটাও জানি 
পৃথিবীতে এমন কিছু পাওয়া থাকে 
যাকে খালি চোখে শুধুই পাগলামি ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।  

Friday, May 29, 2020

অভ্যেস




অভ্যেস 
... ঋষি 
সমস্ত স্মৃতির পলেস্তার জুড়ে ফেলে আসা 
ইটের তলায় জমানো জীবন ,
হলুদ হয়ে শুকনো হতে হতে ক্রমশ লোপাট আমাদের বাঁচাগুলো। 
সময় বলছে এখন খেতে হবে বাঁচার জন্য 
সময়  বলছে অনবরত স্পন্দনে বুকের শিশুর কান্না 
ন্যাপি শুকিয়ে  এখন শুধু সময়ের গু ,মুত। 
.
টেবিলের উপর পাউরুটিতে বাটার লাগাতে লাগাতে টিভি পর্দায় 
ঘুম ভাঙছে ক্রমশ সারা বিশ্বের 
ঘুম ভাঙছে সময় শুধু চিরকালীন ঘুমের দেশে। 
টেবিলের পায়ের কাছে অপেক্ষা আমার আদুরে প্লুটো 
কুকুর বটে 
মানুষ যদি কুকুরের মতো অপেক্ষায় থাকতে পারতো। 
.
চলন্তিকা আমার মনে হয় মানুষের নিজের ভিতর বন্দিত্ব অজগর 
ক্রমশ মানুষের পাঁচিল বেয়ে এগিয়ে চলে গিলে খেতে।
পাখির বাসায় যেমন অপেক্ষা ঘুমোয় পাখির ডিমে 
অথচ বোঝার আগেই  অজগর এগিয়ে আসে 
গিলে  খায়,
হয়তো গেলে না 
তবু মানুষের ভয় খোলা আকাশে বাঁচার আকাঙ্খায় । 
.
ঘরের ভিতর ফ্রীজটাকে আজকাল জন্ম হয় 
ফ্রীজের ভিতর জমানো হাড়গোড় ,জল আর তাপমাত্রায় 
মানুষ তো মরে বাঁচতেই পারে।
সময় বলছে এখন অনেক শৈশব মাতৃহীন হয়ে দাঁড়াবে প্লাটফর্মে 
হয়তো অনেক যৌবন প্রেমহীন হয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে নেশার গ্লাসে 
কিন্তু মৃত্যু আগামীতে তুমি  ফুটপাথে পাবে 
পাবে তোমার চারপাশে বেঁচে থাকায় ,
আগামীর অভ্যেসে। 
 

বনমালী



বনমালী
.. ঋষি
 
কি লিখবো তোমায়?  
নেশার সুর জুড়ে শুধু ছড়িয়ে থাকা জুঁই ফুল,
কবে দেখেছি তোমায়? 
ভেবে দেখেছি নারীরুপে কোন আশ্রয় বনমালী আমি। 
কেন ডেকেছি তোমায়? 
বুকের হৃদপিন্ডের ক্ষরণগুলো আজও শান্তি খোঁজে। 
.
কোন শব্দকোষ নয়
 দুরত্ব আজ শুয়ে আছে প্রাচীন প্যপিরাসে লেখা ক্লিয়পেট্রা সুখে। 
কে তুমি চলন্তিকা? 
আমার লুকোনো অভিধানে খোলা আকাশের মুক্তি। 
মৃত্যুকে আজ ছোট মনে হয় বড় 
বুকের ঘুন ধরা আসবাবে আজ অমর কোন সুখ। 
.
শুধু শব্দজুড়ে নয়
আমি মাতাল সৃষ্টি যে শুধু খোঁজে গভীরতা তোমার বুকের গন্ধে। 
জানি না কি বদলাবে আগামী কাল ? 
জানি না কতটুকু বাঁঁচবো আমি? 
তবু হলফ করে বলি, নারী সৃষ্টি বিধাতার এক চাল
যার গভীরে শুয়ে সৃষ্টি,
যার গভীরে শুয়ে জন্ম।
আর 
তুমি চলন্তিকা
কোন এক সময়ের অভিশাপে দিকভ্রান্ত হত্যা
যা শুধু আমার রক্তে শুয়ে পৃথিবী তৈরি করছে,
তৈরি করছে অজস্র বাঁচা। 
.
সময়,সুযোগ, মুহুর্ত ধরে শুধু মাথার ভিতর  টিক টিক
সময় সরছে,
বিশ্বাস করো আমি এই মুহুর্তে আমি দেখতে পারছি তোমায়  
শহর, গলি আর মাইলফলক পেড়িয়ে
আমার অভিমানের মতো। 
প্যাপিরাসে লেখা সভ্যতা আজ জাদুঘর হয়ে গেলেও
মানুষের ভাবনাগুলো চিরকাল আশ্রয় খোঁজে
আর ক্লিয়পেট্রা বলে কোন আশ্চর্য অমর হয়ে যায়।   
 
  
  

 
      
  

Wednesday, May 27, 2020

ফসিল

ফসিল 
... ঋষি 

 সে দিন আর নেই 
পকেট খুলে ঢেলে দেব অনবরত হৃদয় 
বাইপাস করেছে সময়। 
শুয়ে আছি রাত্রি চোখে লেগে যাওয়া সময়ের পলেস্তারে 
আজও বৃষ্টি হলে শব্দ হয় 
কান পেতে শুনি আমি শহরের খবর। 
.
স্বয়ং মৃত্যু এসে দেখা করছে মানুষের সাথে 
খবরের ভাসছে মানুষের হৃদয়গুলো আজকাল চুরি করে বিক্রি করছে সময় ,
ধাপার  মাঠে পুড়ে যাচ্ছে বেওয়ারিশ শরীর। 
সময়ের দোষ 
মানুষ শুধু অবহেলায় সময়কে করে ফেলেছে রাক্ষস 
আজ সময় মানুষের বুক ছিঁড়ে নৃসিংহ অবতার। 
.
চলন্তিকা কখনও আগুন দেখেছো 
নাকি শুধু চিরকাল নিজেকেই পুড়িয়েছো অবহেলায় সময় বাসরে,
সে দিন আর নেই চলন্তিকা 
আমি আকাশের পাখি ,তুমি আকাশ। 
এখন গোটা একটা আকাশ আর গভীরে আকাশে আমাদের গ্রহটা 
শুধু বন্দি সময়ের জালে। 
আমরা সকলেই আজ খাবি খাওয়া মাছের মতো 
ফিরতে চাইছি পুরোনো সময়ে 
পুরোনোই গ্রহতে 
হয়তো আদিম হতে চাইছি। 
আমরা বোধহয় সকলে ঈশ্বরের কাছে আরেকবার প্রার্থনা করছি 
আমাদের ফসিলে বাস করা আদম আর ইভকে, 
আমরাও  ক্রমশ ক্লান্ত আজ সভ্যতার নাটকে 
জীবন নামক নকল এই অন্য স্যানেটাইজিং বেঁচে থাকায়। 



Tuesday, May 26, 2020

তৃতীয় পৃথিবী



তৃতীয় পৃথিবী  
.. ঋষি
 
এক এক করে সত্যিগুলো বলে ফেলবো
আমার অজস্র দোষের মধ্যে একটা হলো আমার  " আমার "খোঁজা, 
আমার রাষ্ট্র , আমার শহর,আমার নারী, আমার প্রেম। 
কিন্তু একটা ষরযন্ত্র চলছে পৃথিবীতে
গান্ধীজীকে গুলি করা হলো তখন তিনি শান্তি সভায়,
বারাসাতে খিদের মিছিলে পুলিশ লাঠি বৃষ্টি করলো
তখন সেই মানুষগুলো চোখে অন্ধকার দেখছে
দেখছে অন্ধকার সময়ে জীবনানন্দের চাঁদ আর খিদে।   
.
তবে আমাদের ষরযন্ত্রের কথা ভাবলে হবে না
আমরা যেখানে তৃতীয় পৃথিবীর  একনিষ্ট জীব 
আমাদের মাটি আঁকড়ে থাকতে হবে।
মাটি হলো আমাদের মা,
অথচ সময়ের রক্তে যদি মা ভিজতে থাকে
তবে আমাদের মাকে বদল অথবা বাবাকে মা ভাবতে হবে। 
.
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজারে যাবেন 
ভুলেও চাপাবৌদির দিকে তাকাবেন না,
বাজার থেকে ফেরার সময় মনে করে দু প্যাকেট দুধ আনবেন   
ভুলেও চাপা বৌদির দুধের দিকে তাকাবেন না।
বরং অফিসের নাম করে চাপা বৌদির হাত ধরে মাঠে ঘাটে ঘুরুন 
বৌদির হাত ধরবেন কিনা শুধু , না আমার কথা শোনার দরকার নেই
বরং এই কথা শুনুন
এই সব আড়ালে চলতে থাকা পরিচয়
না না ষড়যন্ত্র নয়, শুধুই যন্ত্রনার। 
.
আসলে কি জানেন এই সব কোন ধর্মগ্রন্থে লেখা থাকে না
না না এসব কোন সামাজিক আইনে রোখা যাবে না,
গরু থেকে মানুষ সবাইকে খেটে খেতে হয় 
সত্যি সত্যি কোন ধোয়া তুলসীপাতা দিয়ে খিদে মাপা যাবে না
মাপা যাবে না কোন সম্পর্ক কিংবা পেট। 
শুধু সময় থাকবে
বাঁচবে সময়ের নামে ষড়যন্ত্র,
আর এই তৃতীয় পৃথিবীর নাটকে কি আশা করা যায়? 


   

মন হাওয়ায়




মন হাওয়ায়
.... ঋষি  

জীবন বলবেন নাকি যন্ত্রণা
শুনেছি মেয়েরা নিজের পায়ের দাঁড়ানোর থেকে হাওয়ায় দাঁড়াতে ভালোবাসে,
হাওয়ার কথা যখন হলো
তখন বলতেই হয় মেয়েরা আসলে হাওয়ায় ভাসতে ভালোবাসে।
আমাদের পাশের বাড়ির সদ্য যুবতী মেয়েটাকে তাই
বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা মুঠোফোনে ভাসতে দেখি।
.
আসলে কি জানেন ব্রহ্মা যখন পুরুষ তৈরি করছিলেন
তখন নারীদের কথা ভুলে  গিয়ে সমস্ত অধিকার পুরুষকে দিলেন,
তারপর  নারী তৈরি করতে গিয়ে
তিনি হাওয়ার থেকে নিলেন নারীর মন। 
তিনি বৃষ্টি থেকে নিলেন নারী মনখারাপ
নদীর থেকে নিলেন নারী শরীর
সাপের থেকে নিলেন নারীর দংশন 
গাছের থেকে নিলেন স্নেহ 
তারপর সবুজ প্রকৃতি দিয়ে  ব্রহ্মা তৈরি করলেন সম্পুর্ন  নারী
এইভাবে চলন্তিকা তৈরি হলো আমার। 
.
তাই আমি একলা ছাদে তুমুল হাওয়ায় চলন্তিকাকে পাই,
চলন্তিকার মনখারাপের দিনে আমার শহরে তুমুল বৃষ্টি। 
তারপর কোন এক রাত্রে আমি চলন্তিকাকে বলি
 কোথায় তোর নদী? 
কোথায় তোর দংশন? 
কোথায় তোর স্নেহ ? 
আমি খুঁজতে থাকি তাকে  মন হাওয়ার। 
চলন্তিকাকে নিয়ে আমি হাঁটতে থাকি শহরের ক্লান্ত নদী তীর ধরে
না না শুধু সংগম নয়
তখন আমার কান্না পায়, 
আর তখনি আমার মুঠোফোনটা বেজে ওঠে
মুঠোফোনের স্ক্রিনে ফুটে ওঠে চলন্তিকা তোর নাম
আমি জড়িয়ে ধরি হাওয়াকে, জড়িয়ে ধরি তোকে 
কারন মন হাওয়ায়  চলন্তিকা আমি পেয়েছি তোর নাম। 
  


 
   

   

আকাশি মুক্তি



আকাশি মুক্তি 
... ঋষি 
 
প্রতিটা যুগের পর অন্য একটা যুগ 
মাঝখানে স্তব্ধতা ,
আমার হারানোর অনেক কিছু ছিল সেদিন 
চলন্তিকা তোর শুধু ছিল অপেক্ষা। 
সময় কেটেছে 
সূর্য উঠেছে ,নতুন কোন দিনে আবার ফিরে পাওয়া। 
.
মাটি খুঁড়ে পচা ভিটে মাটি 
আমার চারপাশে পুঁতে রাখা কয়েক যুগের জংলী গাছ 
শুধু ছেয়ে রেখেছে আকাশ। 
তুই শুধু না চলন্তিকা 
তোর পাড়া, তোর গলি ,তোর বুকের খাঁজে জমা প্রাচীন রাসায়নিক বিষ 
সবটাই আমার হোক। 
সূর্য ওঠা সকাল কোন একদিন ঘুম ভাঙা চোখে 
তোর আদরে লাগুক আমার জন্ম। 
.
মানুষের মৃত্যু ঘোর থাকে 
থাকে দূরে দিক্চক্রবালে বাড়তে থাকা স্তব্দতার আলিঙ্গন,
নির্দিষ্ট দিনে শেষে মানুষের ফিরে আসা থাকে 
থাকে আকাশের পাখির পরিযায়ী সুখ। 
আমি কোন স্তব্ধতার দিনে দূর  আকাশের পাখি 
জীবনান্দের চোখে  তখন বনলতা ,
ভেজা মেঘ ,ভেজা শোক
নীল আকাশের গভীরে তবু সুখ ঘুমিয়ে আদুরে মেঘে। 
আমি কখনো বলি নি আমার দিকে চাও 
আমি কখনো বলিনি তুমি আমার হয়ে যাও ,
আমি শুধু পাখি হতে চেয়েছি চিরকাল 
চেয়েছি মুক্তি তোমার গভীরে চলন্তিকা আকাশি মুক্তি। 
 

Saturday, May 23, 2020

মহাবিশ্বে একলা




মহাবিশ্বে একলা
.... ঋষি 
পৃথিবীকে আপনি উত্তর, দক্ষিন,পূর্ব, পশ্চিম দিকে 
নাকি ঈশান, নৈঋত,অগ্নি,বায়ু কোনে দেখবেন 
তা শুধু আপনি ঠিক করবেন।  
যেমন পৃথিবীর উত্তরে তাকালে আমি  পেংগুইন দেখতে পাই
আমার বন্ধু সনাতন তার পশ্চিম জানলা খুললে দেখে রাণী বৌদিকে   
আপনারা কি দেখেন বলুনতো ? 
.
একজন মাতাল আমাকে একবার  বলেছিল
সে নাকি তার চারপাশে পৃথিবীতে শুধু মদের দোকান আর ভাটিখানা দেখে,
আমার স্ত্রী আমাকে বিয়ের রাতে বলেছিল
সে নাকি তার চারপাশে আমায় দেখতে চায়।  
মুরগির দোকানের লোকটা যে মুরগি কাটে তার কাছে শুনেছি 
সে নাকি তার স্বপ্নে, জাগরনে এই পৃথিবীতে শুধু মুরগি দেখে।   
.
সেদিন একজন প্রেমিক আমাকে বললো 
পৃথিবীটা নাকি শুধু ভালোবাসার জায়গা, 
সে নাকি কয়েকজন্ম এই পৃথিবীতে ভালোবাসায় বেঁচে  থাকতে  চায়  । 
আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম পৃথিবীতে শুধু দেখবে, বাঁচবে 
কিন্তু পৃথিবীর জন্য কিছু করবে না?  
উত্তর দিয়েছিল আমায় বিহারী পান,সিগারেট ওয়ালা
বললো, মেরা ছোটা মুমে বড়া বাত  ভাইয়া
হাম তো সিরফ পেট কে লিয়ে দৌড়তে হ্যা দিনরাত
দুনিয়া কে বারিমে শোচনেকা টাইম কাহা হ্যা। 
.
আমি কাউকেই বলতে পারি নি
আর মেরে কেটে পঞ্চাশ  বছর, 
এইভাবে চললে পৃথিবীতে পাখি  থাকবে না কোন গাছে
থাকবে না কোন গাছ কোন নদীর কাছে,
নদীর জল এত গরম হবে যেন আগুন। 
তখন শুধু যন্ত্র থাকবে
তখন শুধু মানুষের বৈজ্ঞানিক মন্ত্র থাকবে
গ্লোবালাইজেশন, গ্রীন লাইট এফেক্ট এমন কিছু শব্দ বাঁঁচবে
কিন্তু মানুষ বাঁচবে কি? 
একবার ভেবেছেন পাখি, গাছ, প্রাণ ছাড়া একটা গ্রহ 
 মহাবিশ্বে একলা ঘুরবে
কেমন লাগবে দেখতে বলুন তো ?   



 

Friday, May 22, 2020

লাল রঙের ব্রা আর প্যান্টি




লাল রঙের ব্রা আর প্যান্টি
.. ঋষি 
রাজস্থান থেকে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসা মেয়েটা
গ্রীষ্মের প্রখর রোদে সূর্যের দিকে তাকিয়ে ধর্মতলার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে  বললো
শালা গরম আর পিছু ছারে না রে।
তার প্রেমিক তাকে ফুটপাত থেকে  সত্তর টাকার ব্রা, প্যান্টি কিনে বললো
আরে বিজুয়া এতে তোকে পরী লাগবে রে,
আমরা মেহনত করবো এই শহরে কোন গলিমহল্লায় সংসার পাতবো। 
.
এর কিছুদিনের মধ্যে  যদি আপনি হাড়কাঁটা গলিতে যান 
সেই মহল্লার আটত্রিশ নাম্বার লাল টালির বাড়ির দরজায় আপনি  বিজুরিয়াকে দেখবেন
দেখবেন বাড়ির সামনে কাপড় শুকোনোর দড়িতে  ঝোলানো পরীর লাল রঙের ব্রা আর প্যান্টি
আর দেখবেন তার প্রেমিক ও দালাল জীতেন কে।
যদি ওই ঘরের  দেওয়ালে কান পাতেন শুনবেন বিজুরিয়া তার প্রেমিককে বলছে
কি রে হারামি কত খাবি আর আমার গতর খাটানো পয়সায় বসে  
আর যে গতর চলে না রে
এই গরমে সারা শরীরে গোটা উঠছে রে।
.
এর একবছর পরে দেখবেন
 একি মহল্লার আটত্রিশ নাম্বার সেই বাড়িটার সামনের কাপড় শুকোনোর দড়িতে ঝোলানো
নতুন লাল রঙের ব্রা আর প্যান্টি।
ভালো করে যদি খোঁজ করেন জানবেন 
বিজুরায়া বলে মেয়েটার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না আজ একসপ্তাহ
তবে জীতেন দালালের কাছে একটা নতুন কাশ্মীরী মাল আছে
তার নাকি আপেলের মতো স্বাদ 
নাম চন্দা ।     
চন্দার সাথে দেখা হলে জানতে পারবেন তার বয়স ষোলো
সে নাকি জ্যোৎস্না খুঁজতে এই শহরে এসেছিল
কিন্তু এখন সে জ্যোৎস্না দেখে সকালের শুকনো লাল রঙের ব্রা, প্যান্টিতে
আর প্রতি রাতে অন্ধকারে বুকের উপর খরিদ্দারের মুখে। 
.
আসলে এই শহরে চাঁদ, সূর্য দুটো আছে বটে
পৃথিবীর কেউ বোঝে না তাদের একটাই পিঠ,
আর মেয়েদের কথা
মেয়েরা আসলে অজান্তেই 
পোশাকের নীচে লাল রঙের ব্রা, প্যান্টি পরতে ভালোবাসে,
ভালোবাসে বিজুরিয়া,চন্দার মতো অনেকে
 পৃথিবী নামক গ্রহতে বসে মহাকাশে নক্ষত্র খুঁজতে।       

       

  

        

Thursday, May 21, 2020

সাদা পাতায় শূন্য

সাদা পাতায় শূন্য
.... ঋষি   
মানুষের মৃত্যুকালীন পরিস্থিতিতে  রাখা জন্মগুলো
নীরব বাঁচা
সময় সাময়িকী, সামাজিক অধ্যায়। 
নীরব চুক্তি 
অনবরত ভাবনার মেঘ শহর ভাঙে প্রহসনে 
কালো মেঘ পরিচয়ে বারংবার এইসান ফরামোস।
.
বিকৃত সময়,জন্ম,সম্পর্ক 
বিকৃত রাষ্ট্র , সমাজ,অঞ্চল 
সব শুধু খবর তৈরি করা চাঞ্চল্যকর ভোল বদলানো নাটক।
পরিস্থিতি মাটি চাপা দেওয়া মুখোস 
অথচ সকলেই জানে কারোর জন্য কিছু থেমে থাকে না
মুখোশগুলো বদলায় ঘোর দুর্যোগে। 
.
কখনও কি ভেবে দেখেছো তুমি কে? তুমি কেন ? 
কেন তোমার, আমার সকলের পাখির ঠোঁটে বাঁচা? 
কেন তোমার অধিকার খুঁজছে প্রশ্ন? 
সব কারণ, যোগফলগুলো একসাথে করে নিজের বুকে আগলে
কিসের কারণে বেঁচে তুমি? 
 কিসের কারণে তোমার হৃদ স্পন্দন? 
সবটাই একটি শূন্য,শূন্য ছাড়া কিছু নয়। 
যদি একটা এক্সরে মেসিনের নীচে রেখে তোমার কার্বণ কপি বের হয়
 দেখবে সেটা সাদা পাতায় শুন্য
বিনাকারণে কতগুলো  শূণ্য নিয়ে আমরা প্রত্যেকে টাইমপাস করছি। 
.
আমাদের জন্মের পর থেকে 
সমস্ত অপ্রিয় প্রশ্নের উত্তরে নিজেকে সাজিয়ে
লিখছি বেঁচে থাকা সময়ের মত করে
কিন্তু কেউ সময় লিখতে পারছি না শূন্য ছাড়া।  

Wednesday, May 20, 2020

একটা দুর্যোগের দিন

একটা দুর্যোগের দিন
... ঋষি  
তুমুল দুর্যোগে ভিতর থেকে যে শব্দগুলো কানে আসছে
তা বড় অচেনা এখন, 
সম্পর্কের নামে আমি যা বুঝছি তা শুধু উড়ে চলা জীবন একা । 
গাছ উবড়ে চলেছে,শিকড় খুঁজছে জল
উড়ে যাওয়া টিনের চাল, সময়ের কংকাল
খোলা আদুল গায়ে মানুষের সংসার। 
.
আমিও আজ নগ্ন 
ইচ্ছেরা তুমুল ঝড়, বৃষ্টিতে একলা দাঁড়িয়ে শুধু ভিজে চলেছে যন্ত্রনায়।
ঝড়ের খবরে নদীরাও গর্ভবতী আজ
অভিমানী পৃথিবীর দুর্যোগের তুমুল অধ্যায়ে শুধু খুঁজে চলেছে বুক,
স্নেহের বুক
আশ্রয়ের বুক
সর্বোপরি শান্তি খুঁজছে সময়।
.
আমি তাকিয়ে আছি দূরে
কান পেতে ঝড়ের শব্দে শুনতে পাচ্ছি বোবা পৃথিবীর কান্না,
পাখিদের কান্না,গাছেদের কান্না, 
ক্রমশ বাড়ছে অন্ধকার
আমার পড়ার টেবিলে কবিতার সাদা পাতায় ভিজে শব্দদের একলা ঘর
জানলার বাইরে সব আবছা ক্রমশ এই সময়।     
.
বুকের ভিতরের শব্দগুলো সব দলা পাকিয়ে উঠে আসছে  
বুঝতে পারছি মানুষের ভিতরের পৃথিবী ভাঙার আগে এমনি ঝড় ওঠে 
পাখিদের ঘর ভাঙে ঠিক মানুষের ঘরের মতো। 
এমনি বৃষ্টি আসে সমদ্রের জলচ্ছাসে 
ভেসে যায় মানুষের স্বপ্ন,মানুষে বাঁচা আর অধিকার
শুধু পুরনো পৃথিবী সাক্ষী থেকে যায় জীবনের অন্ধকারের। 
আসলে প্রতিটি দুর্যোগ শুধুই মৃত্যুর সাক্ষী
খালি চোখে দেখা যায় না ঠিক
কারণ মানুষের প্রাচীন মুহুর্তের মৃত্যুগুলো আসলে অন্ধকারে লুকিয়ে
আর অন্ধকারে মানুষগুলো চিরকাল  একা    ।    
 

   
 
    

Tuesday, May 19, 2020

দুর্যোগের সতর্কতা

দুর্যোগ সতর্কতা
... ঋষি 
ধেয়ে আসছে যে এই সময় তাকে আমরা কি বলি
ঝড়, বৃষ্টি, দুর্যোগ, সাইক্লোন কি এসে যায়, 
আমরাই তো নামকরণ করি বুলবুল,সুনামি,আমফালি 
কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। 
কিন্তু মানুষের মন খারাপের আলাদা নাম হয় না কেন 
কেন বলুন তো মনখারাপ মাপা যায় না।
.
এই যে এতগুলো দিন আমি চলন্তিকার হাত ধরে হেঁটে চলেছি
এত দুর্যোগ,
কোথায় যাচ্ছ উত্তরে চলন্তিকা চিরকাল অন্যকে বলে থাকে জাহান্নামে 
কিন্তু আমি ভেবেছি জাহান্নাম কি ঈশ্বরের থেকে দুরে কোন অন্ধকার উপত্যকা
কিংবা একটা সময় মনখারাপ। 
.
জীবনবাবুকে বলতে শুনেছি সময় তিনরকম বেলা,অবেলা, কালবেলা
কিন্তু তিনি সঠিক করে তিনি কোনদিন বললেন না কোনটা কি
শুধু উদাহরণে বললেন 
এই যে আমি নাকি পাঁচিল টপকে সময় পেড়িয়ে  তোমার দিকে ছুটি 
সেটা বেলা।
উত্তর প্রদেশের না খেতে পাওয়া মানুষ যখন নিয়মের পাঁচিল ভাংগে খিদের জ্বালায়  
সেটা অবেলা,
পূর্ব মেদিনীপুরে পাঁচিলের ওপাশে ঝুপড়ির চালটা
নিয়মিত দুর্যোগের ঝড়ে উড়ে যায় 
সেটা কালবেলা।    
.
আমি জানি  প্রতিটায় মনখারাপ থাকে
কিন্তু কেন বলুনতো আমাদের আগাম সতর্ক করতে পারে না 
 আমাদের হৃদয়ের আবহাওয়া দপ্তর। 
কেন বলুন তো আমরা প্রকৃতির বিপদকালীন পরিস্থিতির মতো
নিজেদের সতর্ক রাখতে পারি প্রতিবার মনখারাপের আগে,
কেন বলুন তো মনখারাপ হয়? 
 প্রতিবার আগত দুর্যোগের আগে কিছুতেই কেন বুঝতে পারি না। 
   


    
   
   

Monday, May 18, 2020

নালিশ

নালিশ
... ঋষি 
প্রায় দুহাজার বছর নেয় আলো পৃথিবীতে আসতে
আমি আলোর অপেক্ষায়।
মাঝে ভেবেছি অপেক্ষার থেকে মরে যাওয়া বেশ
তাই আমি দেশলাই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছি শহর, 
পুড়িয়েছিলাম ঘুম বহুদিন আগে এইবার দোকান, বাজার, বাস
সব পোড়াবো তাই বারুদে আগুন। 
.
শহরের ভিতর একটা পুরোনো মরচেধরা টিউবকল 
আজ বেশ কিছু বছর,
 বহুদিন কোন দিন মুসাফির এসে ঠোঁট ঠেকায় নি,।
আসলে জানি পুরোনো হলে তৃষ্ণা শুকিয়ে যায়  
ফেয়ারিটেলের কাক জল খায় পাথর কুচি ফেলে
তবু সেই পুরনো টিউবকলে মুখে দু এক ফোঁটা রক্ত
আজও গড়ায়। 
.
 বহুদূর হতে পরিযায়ী পাখি আকাশ খুঁজে চলে আসে
জানি না তুমি আলো কি ভাবে আসবে। 
আমার কষ্ট, আমার অভিমান 
আজ ছড়িয়ে শুধু আমার মৃত শরীরের গন্ধে
তুমি কি সেই গন্ধ শুকে আমায় চিনে নিতে পারবে। 
.
সমুদ্রের ঢেউ নিয়ে যায় সময় একে ওপরের কাছে
বিশাল স্রোত আছড়ে পরে পৃথিবীর শান্ত পাড়ে,
ঘুম ভাঙাতে শহরের পাখিরা ফিরে চলে বাসায়
রোজ নিয়মিত ঝগড়া
সম্পর্ক গড়ে আর ভাঙে।  
.
জানি না আলো তুমি আসবে কবে 
কবে গড়বে সময়, আলো নিজের মতো হবে, 
আমি শুধু অপেক্ষায় মুখে তুলেছি বিষ
দেশলাই বন্দী শহর 
সময়ের নালিশ।  









  

সত্যি করে মিথ্যে



সত্যি করে মিথ্যে
.. ঋষি 
একজন মানুষ একজীবনে কতবার মিথ্যে বলে
ওই যে ফল, ফুল সাজিয়ে যে রমণী মন্দিরে যাচ্ছে
সেও মিথ্যে বলবে।
যে লোকটা ওষুধের দোকান থেকে কনডোম কিনছে
সে কি মিথ্যে বলে না,
অফিসের বড়বাবু মেয়েকে গোয়ায় পাঠাচ্ছে ভালো জায়গা বলে
সেটা কি মিথ্যে নয়। 
.
অনেকগুলো মিথ্যে জুড়ে তৈরী হওয়া রাষ্ট্র আজ সত্যি হয়ে গেছে
অনেকগুলো সত্যি আজ আইপিলের মতো মিথ্যে। 
সাহাবাবুরা বাগানে বুবাই তাদের পুরনো লক্ষীকে ফেলে গেছে  
যার আবার একটা হাত গলে গেছে রোদ,বৃষ্টি, জলে, 
তবে কি এই মাটির লক্ষী মিথ্যে
না কি মিথ্যে বুবাইয়ের বাবা রেশন দুর্নীতি করে আজ বড়লোক। 
.
বারংবার দাঁত ঘষলে দাঁত সাদা হয় না
কিন্তু বারংবার মিথ্যে বললে, মিথ্যে সত্যি হয়ে যায়। 
আমরা আমাদের শিশ্ন বারংবার ওঠানামা করাকে ভালোবাসা ভাবি
অথচ সত্যি হলো ছ- ইঞ্চি ওঠানামায় ভালোবাসা হয় না,
আমাদের শিশ্নের কিছুটা ওপরে হৃদয় থাকে
তার ভিতরে থাকে রক্ত প্রবাহ,
সেই রক্তে থাকে নুন 
আর সত্যি হলো সেই নোনতায় যন্ত্রনা মিশলে
তবেই ভালোবাসা যায়। 
আমরা জানি সে কথা
অথচ সত্যি মানি শিশ্ন জুড়ে মানুষের ভালোবাসার কথা
 অথচ মিথ্যে ভাবি হৃদয়। 
.
একজন মানুষ একজীবনে তাই অজস্র মিথ্যে বলে
আর এই মিথ্যেগুলো জুড়তে জুড়তে মানুষগুলো কখন যেন 
মিথ্যে হয়ে যায় তা বুঝতেই পারে না।
বুঝতে পারে না 
মানুষের মিথ্যেগুলো সত্যি দুনিয়ায় 
কখন যেন অনেকটা অন্ধকার তৈরি করে 
আর সেই অন্ধকারে মানুষগুলো মিথ্যের ভুমিকায়। 

.
  

Sunday, May 17, 2020

সময়ের রুপ



সময়ের রুপ
... ঋষি 
শোওয়া একটা ঝামেলার ব্যাপার চিরকাল
দুটো ছেলে শুলে ভাবনার, দুটো মেয়ে শুলেও ভাবনার এখন 
দুটো ছেলে,দুটো মেয়ে একসাথে শুলে গেল গেল রব ওঠে । 
ছেলেটা শুয়ে আছে তার মা, বাবার মাঝে কোনো বৃষ্টি দিনে
মেয়েটা শুয়ে আছে তার মা, বাবার মাঝে কোনো বৃষ্টি দিনে
এগুলি সমস্যা নয়
শুধু সমস্যা বিধবা মায়ের পাশে তার ভাই শুলে
শুধু সমস্যা একি মায়ের পেটের ভাই বোন পাশাপাশি শুলে।  
বুঝতে পারি সমস্যা শোয়া না 
সমস্যা সময়ের বিরুদ্ধাচারন।
.
আমি আমার প্রেমিকাকে প্রশ্ন করি
কে বেশি সুপুরুষ, কে বেশি সক্ষম, কে  বেশি প্রেমিক? 
আমার জানতে ইচ্ছে করে কোথায় কোথায় সে ছুঁয়েছিল 
কতটা ছুঁয়েছিল, সেটা কি ভালোবাসা? 
কিন্তু আমার প্রেমিকা তখন  মাথা নিচু করে কুলের আচারে ব্যস্ত হয়ে যায়
কিংবা জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকে বৃষ্টির দিকে,
দেখতে দেখতে বৃষ্টি আসে, আমাকে জড়িয়ে সে বুকে, মিশে যায়
আমি বুঝতে পারি না আমার সমস্যা কি? 
কিন্তু বুঝতে পারি সমস্যা অসময়ের।     
.
রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাগলটা খালি পেটে নেতাজীকে  উদোম গালাগাল দেয়
কিন্তু শুধু গালাগালিতে তার পেট ভরে না,
আমার বন্ধুকে তার প্রেমিকা ছেড়ে গেল বলে সে মদ খায়, কাঁদতে থাকে 
কিন্তু আঠারো তলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে পারে না।
বিহার থেকে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসা বউটা
কেন জানি তার আগের স্বামীকে ভুলতে পারে না,
ভুলতে পারে কুমারী  মেয়েটা চিরকাল তার  নষ্ট করা সন্তানের কথা
ভুলতে পারে  না মা তার মৃত সন্তানের মুখ। 
আমি বুঝতে পারি না কেন 
শুধু বুঝতে পারি সবটাই সময়

আর সবটাই সময়ের রুপ। 

স মা জ আর আমরা



স মা জ আর আমরা
... ঋষি 

কাকে কি রকম দেখতে,কার চরিত্র কেমন
কার বাড়িতে কতজনের ভাত চাপে আর তারা নুন ভাত খায় কিনা
এই সবকিছুতে আমাদের আগ্রহ। 
.
আমাদের কাছে খবর থাকে ওই বাড়ির মেয়েটা কখন বাড়ি ফেরে
কিংবা কতক্ষন বাড়ির বাইরে থাকে,
কিন্তু আমরা জানতে চাই না ওই মেয়েটা সাঁতারু  কিংবা কোন গায়িকা কিনা
আমরা জানি না মেয়েটা সায়েন্সে গোল্ডমেডেলিস্ট কিংবা ডাক্টার কিনা। 
তবে আমরা জানি মেয়েটা ডিভোর্সি কিংবা সন্তানহীন কিনা
আরও জানি মেয়েটার নিতম্ব কিংবা বুকের মাপ। 
.
আমাদের কাছে পুরুষ মাত্রই সতী সমাজ 
বউ পেটায় না,মদ খায় না,বেশ্যা বাড়ি যায় না
শুধু দুধে ভাতে থাকে, 
অথচ আমরা জানতে চায় না কার দুধ আর কার ভাত। 
অথচ আমরা জানতে চাই না সকাল বেলা যে পুরুষ অফিসের নামে বেরোয় 
সে আদৌ অফিস যায় কিনা,
কিংবা বিকেলে  পার্কে বসা আকাশের দিকে তাকানো ভদ্রলোক পাগল নয়
নিতান্ত কবি। 
.
আমরা শুধু পেটের কথা জানি
কিন্তু কার পেট? 
কিসের পেট? 
রাস্তায় পেট ফোলা ভিখারি মহিলাকে যদি প্রশ্ন করি কার পেট 
উত্তর হয় তোর বাবার, 
অথচ পাশের বাড়ির অবিবাহিত মিলির পেট দেখে আমরা ফিসফিস করি
কখনই প্রশ্ন করি না কার পেট
কারন তার বাবা এম এল এ।
.
আমরা শুধু চরিত্রের কথা জানি
তাই রাত্রে কোন পিতৃহীন মহিলার পাশে শ্মশান বন্ধু হয়ে দাঁড়াবার জন্য
কোন ভদ্রলোককে তার বউয়ের কাছে শুনতে হয় 
কাল রাত্রে নাকি লোকটা ওই মেয়েটার সাথে শুয়ে এসেছে। 
অথচ কোনো বেশ্যা বাড়ির থেকে দেরী করে ফেরা লোকটা যখন মিথ্যে বলে
তার সমাজ তাকে গুছিয়ে ভাত দেয় 
তার মা মাথায় হাত বুলিয়ে বলে " বাবু তোকে ভীষন রোগা লাগছে "। 

  
 

নি র ন্ত র

নি র ন্ত র 
.... ঋষি 
এই যে আমি আমার হাত তোমার দিকে এগিয়ে দিয়েছি
তুমি তাকে লোহা গরম করে ছেঁকা দিতে পারো
কিংবা রাখতে পারো তোমার কষ্টের বুকে।
এই যে আমার হৃদয় হঠাৎ খোলা জানলার পাশে আকাশ দেখে চিৎকার করে
বিনাকারণে ছুটতে থাকে শহরের  গলি ধরে
তাকে তুমি খাঁচায় রাখতে পারো কিংবা আকাশে। 
.
কেউ দরজার ভিতরে কাঁদে 
কেউ দরজার বাইরে থাকে
চলন্তিকা জানো সকলেই দরজার বাইরে বা ভিতরে থাকে। 
কোনো আঁচলে বাঁধা চাবিকে কেউ মা ভাবে
কোনো দরজায় দাঁড়ানো লক্ষীর ঝাঁপি দেখে ভাবে সংসার,
কিন্তু কোনটা সত্যি 
আর কোনটা মিথ্যে
জানলার  বাইরে পাখি দেখে সকলেই আকাশ ছুঁতে চায়। 
.
আমি অবাক চিরকালী
কারন সময়ের অভিমানগুলো বরাবর আকাশ ছুঁয়ে মুক্তি খোঁজে। 
আমি মানুষের দিকে তাকাই
দেখি তোমার শরীর বেয়ে বেড়ে ওঠা সামাজিক হিসেব 
দেখি আমার চারপাশে ক্রমশ বেড়ে ওঠা সময়ের জংগলী গাছ।
আমার অভিমান হয় 
আমি ঘর ছেড়ে পালাই খালি পায়ে,নগ্ন শরীরে বহুদুর
আর তখন তোমার বাড়ির থেকে পোড়া মাংসের গন্ধ পাই
দেখতে পাই আমার শরীরে পোড়া দাগ। 
জানি সম্বল ফুরিয়ে গেলে মানুষ রাস্তায় এসে দাঁড়ায়
আমার মতো কিছু আছে 
যারা সময়ের পাশে সম্বলহীন মাইলস্টোনে দুরত্ব মাপতে চায়
আর কোন বিকেলের  কবিতায় লিখতে চায় 
শুধু তুই,তুই ছাড়া কেউ না। 
 

মাঝরাস্তা




মাঝরাস্তা
... ঋষি 
এই যে দুমদাম আমরা একে অপরকে আঘাত করছি
কিন্তু কেন? 
ট্যক্সী থেকে নেমে ওই যে ভদ্রলোক সটান চড় মারলো ড্রাইভারকে
আমরা কি চিনি তাকে? 
ওই যে ভদ্রমহিলা দুতলায় একরকম বললেন,চারতলায় একরকম 
তুমি কি চেন তাকে? 
কে বা কারা যেন ডাক্টারের মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুরাত্রি পর ফেরত দিল
আমরা কি জানি সে কথা?    
.
আমরা সব জানি,সব বুঝি 
 কারন আমরা একতলায় থাকি না আবার দশ তলায় না
আমরা নোংরা বস্তিতে থাকি না আবার তাজমহলে না
আমরা মিটিং মিছিলে থাকি কিন্তু প্রতিবাদে না
আসলে আমরা মাঝখানে থাকি
থাকি আমরা ভয়ে
না আকাশে না মেঘে।  
.
আমাদের ভয় হলো এখন অবধি যা কিছু আছে যদি কেউ কেরে নেয়
আর সন্দেহ হলো যদি কেউ আমাদের আগামী স্বপ্নের ভাগ বসায়।  
তাই আমরা সামান্য রোগে ডাক্টারের কাছে ছুটি
তাই আমরা বেশ্যা বাড়ি যাই আবার সময়ে লুকোচুরি খেলি,
আমরা ভোট দি রাজনীতি করি না 
অথচ রাত করে মেয়েটা বাড়ি ফিরলে তাকে নোংরা বলি।
আসলে আমরা সন্দেহ করি
যে যার মতো নিজের গভীরে পাপ করি
আমরা কল্পনায় পাড়ার উঠতি সেই যুবতীকে ধর্ষন করি
আমরা স্বপ্নে নিজের কোনো সুন্দরী  আত্মীয়কে চুমু খাই
সন্দেহ করি নিজের বউকে,নিজের প্রেমিককে।
কিন্তু আমরা কেউ সত্যি বলতে পারি না
শুধু অন্ধকারে মাঝরাস্তার লাইটপোস্টের তলায় দাঁড়িয়ে
  খুশি হই নিজের ছায়া দেখে
ভাবি আমার কি, আমি তো বিন্দাস। 

Saturday, May 16, 2020

কহিনুর

কহিনুর 
.... ঋষি
মেয়েটির ভিতরে দুঃখ নদী
ক্যানভাসে ফুটে ওঠা সেই মেয়ে, 
ঠিক যেন গড়িয়ে নামা জল
ক্রমশ বদলানো দিন মেয়েটার চোখ ছলছল। 
.
ক্রমশ আকাশ ভরা মেঘ
ক্রমশ মেয়েটা মেঘলা গাছ, 
ক্রমশ গাছের ভিতর ঘর, ঘরের ভিতর চোখ 
ক্রমশ ইটের ভিতর স্বপ্ন,মেয়েটার আকাশের রোগ  । 
.
ওইখানে সে কিশোরী, ওইখানে তার ভোর 
সে বেঁচেছে বৃষ্টি বুকে,তবুও সময় চোর,
চুরি হচ্ছে বাঁচা,জলতরংগের সুর
তবু মেয়েটা একা, একলা কহিনুর। 
 

Wednesday, May 13, 2020

অহল্যা

অহল্যা 
.... ঋষি 
এই সময় দুর্ভিক্ষ এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের দরজায়
কার হাত ধরে জানি না,
এ যেন আগে থেকে জানা ছিল আমাদের সকলের 
কে সময় গুনে বলেছিল জানি না।
.
আমরা সকলেই দাঁড়িয়ে সময়ের কাছে ভিক্ষা পাত্র হাতে
আমি দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়ে আমার বাবা,পিছনে আমার মা। 
আমি জেনেছিলাম  সকলের কাছ থেকে আগেই
বাবা হলো পৃথিবী আর মা হলো ভাতের হাঁড়ি
কিন্তু থিওরিটাই ভুল ছিল
আসলে সময় হলো সকল মানুষের  বাবা,মা দুটোই।  
.
দুপুর তিনটেয়, পার্কস্টিট
ধর্ষন, জতুগৃহ তারপর কুপিয়ে খুন সব পুরনো খবর।
নতুন খবর বাংলা, বিহার, ঝাড়্গ্রাম 
মনুমেন্টের তলা দিয়ে, হুগলী সেতুর নীচ দিয়ে, ফাঁকা বাইপাস দিয়ে
আমার মতো হাজারো ঋষি আজ ঘরবন্দী।    
দিল্লির লালকেল্লা থেকে,আগ্রার তাজমহল থেকে খবর
তোমার মতো হাজারো মমতাজ আজ নজর বন্দী
উড়িশ্যার জগন্নাথ মন্দির থেকে,গোয়ার চার্চ থেকে
ঈশ্বরের হাজারো নাম আজ শুধু পাথর। 
আমরা সকলেই পাথর
আমি 
আমার মা,বাবা
তুমি, তোমরা শুধু আজ অহল্যা সময়ের শাপে।    

  

ওল্ড ইউসলেস মেটেরিয়াল


নারী তুমি সবার কথা জানো
নারী তুমি তোমার নুপুর পড়া পা ফেলো পিতা, পুত্রের মাঝে,
নারী তুমি সভ্যতা দর্শন করাও
শিক্ষক আর ছাত্রের মাঝে। 
.
নারী তুমি শাক দিয়ে ঢেকে রাখো,
তোমার ভারত বিখ্যাত স্তন,তোমার আলিঙ্গন,তোমার অহংকার।
তুমি সময়ের কথা ভাবো
সময় থেকে তিন কাল, তোমার তিন পুরুষ
তোমাকে  আকাশে নিয়ে যায়
এটাই তোমার প্রথম আকাশ অভিযান। 
.
গড়িহাটের মাথায় আকাশে মই বেয়ে উঠতে থাকে লোক
নন্দন চত্তরে তোমাকে ছুঁতে সকলে শিক্ষা ছুঁয়ে ফেলে,
শান্তিনিকেতনে তোমার চুলে গীটার বাজায় ছাত্র
কবি লেখে কবিতায় তোমায় দিনরাত্র।
.
নারী তুমি সব কথা জানো
জানো ভবাণীপুরের সেই পরিচালকের আত্মহত্যার কারণ
জানো সেই সাহিত্যিকের উপন্যাস লেখার কারণ।
তুমি জানো তোমাকে সকলের প্রথম ছোঁয়ায় চায়
তারপর গল্প ফুরোয়
তারপর তুমি  ওল্ড ইউসলেস মেটেরিয়াল। 
তারপর তোমার সেই তিন পুরুষ তোমাকে আকাশ থেকে নামাতে থাকে
টুকরো টুকরো করে প্রথমে চুল
তারপর ঠোঁট,তারপর গলা, বুক, কোমড় , জংঘা,নাভী
তারপর সম্পুর্ণ ফুরিয়ে যায় কারণ
কোন এক রাতে সেদি  খুব বৃষ্টি শহরের প্রতিটা সড়কে, প্রতিটা গলিতে
প্রতিটা ভালোবাসায়,প্রতিটা সম্পর্কে,প্রতিটা চারদেওয়ালে
অথচ তখনো তুমি সব জানো নারী
সব বোঝো।

মানুষ ভীষণ একা



মানুষ ভীষণ  একা
.............. ঋষি
=====================================================
একটা সামাজিক ভোরের উদ্দেশ্যে বলা
কেমন আছো মানুষ ?
হাসি পায় ভাবতে নির্দিষ্ট পয়ঃপ্রণালী ,নির্দিষ্ট সামাজিকতা থাকা সত্বেও
মানুষ ভীষণ মেকি নিজেদের প্লাস্টিক স্মাইলে।
বিজ্ঞাপন,ক্রয় বিক্রয় ,মূল্যস্ফীতি ,অধিকার ,ন্যায়বোধ ,প্রতিবাদ
মানুষ ভীষণ  একা।
.
মুখ থেকে রং গড়িয়ে পড়া
সামাজিক হিসেবে নিজেদের বুকে যায় নিয়মের ছুরি।
সব মেনে চলা
রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখা সেই বৃদ্ধ ভিখারির কান্না
কিছু দিয়ে যান বাবু ,অনেকদিন পেট ভোরে  খায় নি।
কিংবা সেই মেয়েছেলে সস্তার মেকআপে  রাস্তায় দাঁড়িয়ে খিদে খোঁজে
তুলে দেয় সন্তানের ,পঙ্গু স্বামীর মুখে ভাত।
সব নিয়ম ,সব নিয়মিত রোজ নামতা
দুঃখ এক্কে দুঃখ ,সুখ এক্কে সুখ ,আর জীবন এক্কে একা
সত্যি মানুষ ভীষণ একা।
মানুষ প্রতিদিন কমফোর্ট জোনের ভান করে মাংস সভ্যতার জানলা খুলে
হাসতে থাকে রিকশার পাদানি থেকে নামলে এক হাঁটু জল।
.
একটা সামাজিক ভোরের খোঁজে  বলা
কেমন আছো হৃদয় ?
মুঠো মুঠো পাথরে স্তনের  দরজায় দাঁড়িয়ে প্রেম মাথা খোঁটে
আর হৃদয় খোঁজে মন।
একলা রাস্তায় দাঁড়ানো অন্ধকার চাঁদ ঘুম কেড়ে নেয়
আজকাল মানুষ ভীষণ  একা।  

যদি ভালোবাসো



যদি ভালোবাসো
............... ঋষি
=================================================
যদি ভালোবাসো ,তবে বাসো
সবে সেটা পৌরুষের হোক।
তবে সেটা সত্যি কোনো অধিকারের মতো সামাজিক হোক
কোনো অজুহাত না।
যদি ভালোবাসো তবে সেটা বিবেকের কাছে পরিষ্কার কাঁচ
সকালের শিশিরের মতো পবিত্র হোক।
.
পবিত্র ,বলতে মনে পড়লো
আমরা  পবিত্র ততক্ষন যতক্ষণ সমাজের আমরা ফিল ইন দা ব্ল্যাঙ্ক,
আমরা সামাজিক ততক্ষন যতক্ষণ তুমি আমার অচেনা পুরুষ।
যখন তুমি আমার ঘরে আসো
ভীষণ নগ্ন তুমি ,তার থেকে নগ্ন আমি ,,এটা অসামাজিক।
কারণ এই নগ্নতার কোনো সামাজিক নাম নেই
আমাদের পার্থিব চাহিদার বাহিরে আমাদের চাওয়াটুকু অপার্থিব।
আর অপার্থিব কোনোকিছু পৃথিবী মানে না
মানে না এই সমাজের অধিকারে বাস করা আমি তুমি আর আমাদের প্রেম।
এবার অনেক হলো
এবার আমাদের চাওয়া  সামাজিক হোক।
.
যদি ভালোবাসো ,তবে বাসো
শুধু  চোরের মতো চারদেয়ালে আমাদের শরীরের তৃপ্তি তে নয়।
শুধু নগ্ন নয় ,শুধু এই শীৎকারে আলোড়ন কিছু মুহূর্তের না
আমি চাই তা সামাজিক হোক।
কোনো অজুহাত না
যদি ভালোবাসো তবে  ভালোবাসা  পরিচিত হোক। 

জীবানন্দের প্রকৃতি



জীবানন্দের প্রকৃতি
................... ঋষি
=====================================================

আলো ,আয়না আর প্রেমিকার রূপ
চলন্তিকা এই পথ দিয়ে সবুজ  প্রকৃতির ফাঁকে উঁকি মারে সোনালী রোদ।
কোনো শঙ্খ চিল তখন  প্রকৃতির যোনিতে আকাশের জন্ম দেয়
ধুস এটা জীবননন্দ নয়।
ছোটোলোকের  কবিতা
সবুজ  ধ্বংসতে যেখানে রক্ত গড়ায় আর  কবিতা সৃষ্টি হয়ে ।
.
চলন্তিকা সেই মেয়েটা
আজ ইস্কুল যাচ্ছে না তিন মাস শুকিয়ে আছে রক্তে।
তার ইট ভাঁটা  ফেরত বাবা
গলা পর্যন্ত রক্ত গিলে রক্ত বমি করছে মায়ের আধপেটা ফোলা নাভিতে।
নিরন্তর এই কাব্য সর্বদা বাপবাপান্তর করে
আর জীবনানন্দ আকাশের চাঁদ দেখে বলেন " পোড়া রুটি " ।
 পোড়া কপাল !
চলন্তিকা হৃদপুরের খালের পাশে খুবলে খাওয়া শরীরটা
চাঁদ দেখে নি ,বিশ্বাস করেছে খিদেতে ,
বিশ্বাস করেছে গভীরতায় 
জানো তো চলন্তিকা জীবনানন্দ মারা গেছেন তাই অবিশ্বাসী হয়ে  । 
.

অন্ধকার ,জীবন আর যন্ত্রণার নিয়ন্ত্রণ
চলন্তিকা এই জীবনের হাজারো সুড়ঙ্গের ফাঁকে জীবন আজ ঘুমন্ত কবিতা।
কোনো স্থবিরতা প্রাচীন কোনো ভাবনায়
ঈশ্বরের ভেকধারী অধিকার।
জীবানন্দ শহরের ফুটপাথে ট্রামের স্বপ্ন দেখছেন
যেমন আমি দেখি চলন্তিকা। 

মিসেস পরকীয়া


মিসেস পরকীয়া
............ ঋষি
================================================
মিসেস পরকীয়া নামটা আজকাল সকলের প্রিয়
কেন ,কেন এই কথা বললেন ?
জেন্টেলমেন মহাশয় হাসতে হাসতে বললেন
হাত বাড়ালে মোয়া পাওয়া যায়।
কি যে জাতা  বলেন
মানে বুঝি নি।মিসেস পরকীয়া জায়গা বদল করলেন।
.
কিন্তু গভীরতায় কি থাকে ?
নিজের গভীরে লুকোনো দুঃখগুলো ছুঁয়ে দিয়ে যদি কেউ মলম দেয়
সেটা কি পরকীয়া ?
মিসেস পরকীয়া হাসলেন স্পর্শ মানে কি জানেন জেন্টলমেন ?
খুব কঠিন প্রশ্ন।
আচ্ছা ধরুন আপনার স্ত্রী আপনার সাথে থাকেন
আপনি তাকে ছুঁতে পারেন ইচ্ছে মতো ,কথা বলতে পারেন।
কিন্তু ভাবুন ওটা শুধু পোশাকি
আসলে আপনার স্ত্রী অন্য কোথাও থাকেন ,অন্য কোনো পুরুষকে ছুঁয়ে।
কি জাতা বলছেন  ?
আসলে আমরা সামাজিক আর পরকীয়া অসামাজিক
কিন্তু হৃদয়  তাকে তো আপনি আর আপনার সমাজ বন্দী করতে পারে না।
.
মিসেস পরকীয়া সবাই তো আপনার মতো বেশ্যা হয় না
হাসি পাচ্ছে জানেন জেন্টলম্যান ,আপনি বেশ্যা শব্দের মানে জানেন না।
কারোর সাথে শরীরে শুলে সমাজ বলে বেশ্যা
অথচ সেই শরীরে আপনার ডিপোজিটে যদি থাকে ,
কিন্তু হৃদয়ের স্পর্শ গুলো অন্য কোথাও। কি বলবেন তাকে ?
জাতা জাতা জেন্টলম্যান মশাই উঠে গেলেন ।
.
পুনশ্চ :এই কবিতা নিতান্ত আমার ভাবনার প্রতিফলন। কারোর যদি খারাপ লাগে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। 

রাক্ষস



রাক্ষস 
.... ঋষি 
জীবনে তো বেশি কিছু চাই নি
বাঁচার জন্য দুটো ভাত আর এক একবার নৌকা যাত্রা 
শুধু এত টুকু। 
কিন্তু এই শহরে জলের বড় অভাব
অভাব  বৈশাখী রৌদ্রে শুকিয়ে যাওয়া  বাঁচায়, 
শুধু জীবন যাপন  এখন নিয়মের ভুমিকায়। 
.
তবুও দেখো মশারি টাঙানো রোজ 
বাঁচার চারহাতে এখন সময়ব্যাপী ব্ল্যাকহোল, 
মশারির ভিতর বসে ভাবা সুরক্ষিত আমরা 
অথচ বারংবার ভুলে যাই বায়ুচলাচল দরকার।
তাই আমাদের  বায়ুর সাথে সহবাস একলা মধ্যরাতে
বারংবার হোঁচট খাওয়া জীবন আর যাপনের সাথে। 
.
 তাই মাঝে মাঝে  ভাবি এইবার অন্ধ হয়ে যাই
পার্কস্ট্রীট রেস্তোরাঁয় সেই অন্ধ মিউজিসিয়ানের মতো 
লাঠি খুঁড়িয়ে পৌঁছে যাই কোন অন্ধ দ্বীপে,
 যেখানে চারপাশে আলো। 
আর ব্ল্যকহোল নয় 
মিথ্যা চৌম্বকীয় সম্পর্কের মায়া কাটিয়ে কোন যাযাবর
যেমন খুঁজতে থাকে ঈশ্বরের স্বপ্ন,
ঠিক তেমন নিজেকে নষ্ট করতে বড় ইচ্ছে করে। 
কোন মৃত্যু নয় 
তবু মৃত নদীর শরীরে জলস্রোত যেন রক্তের  ধারা,
মিথ্যে নৌকোযাত্রা।
আমার অন্ধ চোখ আর অন্ডকোষ খুলে রাখা থাকে
আকাল লাগা সময় নামক রাক্ষসের কাছে,
তবু বাঁচি, কারন আমার রাক্ষসী গর্ভবতী আজ
আমার ভাবনাদের সন্তানের সাথে।


জন্মস্থান



জন্মস্থান 
... ঋষি 
আমি আমার জন্মের বিরুদ্ধচারণ হাজারোবার করবো
হাজারোবার আমি বেশ্যার যোনিতে ঠোঁট রেখে বলবো
এ জন্ম অহেতুক
এজন্মের বীজ আগামী শতকে রাক্ষস জন্ম দেবে,
আপনারা ঠিক জানেন জানি
রাক্ষসের শুধু সংখ্যা থাকে এই পোড়া দেশে
কিন্তু জন্মের নাম থাকে না। 
.
আমার জন্য জন্ম হলো সেই প্রতিষ্ঠান যার বাথরুমে আমি অপকর্ম করে
খুব সহজে প্রমান মুক্ত করেছি নিজের মায়ের শাড়িতে,
হঠাৎ বাথরুমের দরজা খুলে আমার অন্যভাইকে আমি জন্মাতে দেখেছি 
আমার জন্মস্থানে। 
স্মৃতি মোছে নি, ঠোঁটের উপর কাটা দাগটা সাক্ষী
চুরি করে স্বপ্ন দেখলে স্বপ্ন দোষে এই সভ্যতা শুধু বয়স বাড়িয়ে দেয়
কিন্তু স্মৃতির রক্তের দোষটা যে বদলায় না। 
.
বদলায় না সিংহের  কেশরে লুকিয়ে থাকা লাল  চোখ, 
হিংস্র দাঁত, নখ ,
আসলে বাবার দোষ নয় পুরুষ মাত্র চিরকাল অহংকারী সিংহ
যে তার গুহার মুখে ইঁদুরকেও দোষী বলেই ভাবে। 
.
আমার জন্ম হলো সিংহের দেশ আফ্রিকায়
যেখানে বেঁচে থাকা মানে প্রতি মুহুর্তে যুদ্ধ
যুদ্ধ নিজের সাথে
যুদ্ধ সময়ের সাথে
যুদ্ধ  সময়ের  সম্পর্কের  সাথে।
তবু আপনারা জানেন আমাকে প্রতিদিন যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরতে হয়
ডিজিটাল বেতার মাধ্যমে আমাকে নিয়ম করে শুনতে হয়
 দেশের খবর,দশের খবর, 
কারণ আমার জন্ম আফ্রিকায় হলেও আমার সন্তান ভারতীয় 
আর আমার বীর্য রাক্ষসের হলেও 
জন্ম আমাকে রাক্ষস করতে পারে নি। 


      

সিনেমা চলছে




সিনেমা চলছে 
... ঋষি 
কলিঙ্গ এই দিকে চলে আসুন
রাষ্ট্রের সমস্ত বৃদ্ধ, বৃদ্ধা,যুবক, যুবতী, কাচ্চা, বাচ্চা সমেত চলে আসুন,
এই যে দিক নির্দেশ করা আছে, 
এই যে তীর দিয়ে দেখানো
এইদিকে 
চলে আসুন। 
.
চলে আসুন,
দেখুন অপ্রতিরুদ্ধ সম্রাট অশোক দাঁড়িয়ে
দেখুন আপনার প্রতিক্ষায় ফিরে আসা সময়ে কয়েকলাখ মৃতদেহ দাঁড়িয়ে
 দেখুন রক্তে ভাসা দয়া নদী আজ রৌদ্রে শুকিয়ে দাঁড়িয়ে।
আপনার প্রতিক্ষায় 
দেখুন হাজারো নগ্ন উপজাতি যুবতীর শব ভেসে উঠছে
দয়া নদীর লাল জলে। 
.
আসুন দেখুন 
সম্রাট অশোকের চোখে জল 
আসুন দেখুন ফিরে আসা সময়ে অজস্র মানুষের চোখে জল। 
দেখুন কি বলছে সেই বৃদ্ধা এই সময় আরেকবার 
কেউ বেঁচে নেই,
স্বামী, পুত্র, আত্মীয়, চারিধারে মৃতদেহ স্থুপ,
দেখুন কিচ্ছু অবশিষ্ট নেই
আর না,এইবার মৃত্যু চাই । 
.
দেখুন কলিঙ্গর সম্রাট অশোক যেন সময়ের সাজে অসহায় 
বাড়তে থাকা মৃত মানুষের স্থুপে উনি বসে আছেন 
ক্লান্ত, অবসন্ন 
তার হৃদয়ে আজ শান্তির খোঁজ 
 "  বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি-ধম্মং শরণং গচ্ছামি-সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি’। 
কি মশাই, কি দিদি সিনেমা দেখছেন 
জাগুন এইবার। 


 
 

শৈশব,কৈশোর,যৌবন




শৈশব,কৈশোর,যৌবন
,,,,,,,,,,,ঋষি
******************************************

যেখান থেকে শৈশব ম্লান
কৈশোর কেশর বিছায় অন্য স্বপ্ন,গল্পটা শুরু।
মশাই পবিত্রতা কাকে বলে
এই বয়সে এসে বুঝেছি শরীর শুধু কালকেউটে।
বিষ উগড়ান ইচ্ছেগুলো শরীরের শুধু সাবমেরিন,
ডুব সঁাতারে বঁাচে।বাকিটুকু শুধু মানসিক।

.

ওই যা  হয় মশাই,
এসময় সমবয়সী মেয়েরা সঙ্গী হলে খেলার একটা আলাদা মজা ।
সংকেত আর রহস্য ভাবলে স্থিমিত অধিকারে
বড়ো হওয়ার আরো স্বচ্ছ্ব বিস্তার।
আমি  কৈশোর মানে বুঝি কিছু নতুন খেলা
শৈশব শেষে কৈশোর চাবি দিয়ে যৌবনের দরজা খোলা।
কি মশাই ভাবছেন ডেপো ছেলে
একবার ভাবুন যেভাবে দূর্গা-আপু শীত-দুপুরে শিউরে ওঠে রেলগাড়ি ঝমঝম
মুদ্রাময় নাচ - দূর-দূর ছুটে আর অস্ত যাওয়া বিকেল।
পাঠশালা - গুরুমশায় আর টিফিনের ফাঁকে গোত্র লুকোনো মার্বেল - গুলতির নির্ভুল টিপ্।
পকেট ঝনঝন।

.

যেখান থেকে শৈশব ম্লান
শুরু ইশপের গল্প শুধু রুপকথা,কৈশরের চাবিতে যৌবনের সুত্রপাত।
কি  ভাবছেন মশাই,
অপু, দুর্গা নাকি লুকনো  সেই প্রেমপত্র।
একপাশে কাশফুল অন্য পাশে পানা পুকুড়ের শালুক
আসলে জলাশয়,,,,,,,মনে পরছে।

অসমাপ্ত ভুমিকা




তুই জানিস চলন্তিকা আমি তোকেই খুঁজি সারাক্ষন 
যা আমি বলতে পারি না কাউকে,
বুকের বালিতে শুয়ে থাকা সেই মেয়েটাকে আমি চিনেছিলাম গতজন্মে
এই জন্মেও শুধু চিনেছি তোকে,শুধু জানাতে পারি নি কাউকে। 
বুকের পাথর ভেঙে তৈরি করা আমার নিজস্বতা এক অপরুপ কল্পনা
বড্ড দেরী হয়ে গেছে জানি 
তবু সময়কে না করতে পারি নি। 
.
অথচ আমি চিৎকার করতে চেয়েছিলাম শহরের উঁচু বাড়িটার ছাদ থেকে,
বলতে চেয়েছিলাম সামনে একলা দাঁড়ানো সন্ধ্যেকে,
আমার কষ্টে ভেজা সময়ের গেঞ্জিকে,
তোর ব্রায়ের স্ট্রাপকে,তোর গায়ের গন্ধকে,তোর বুকের তিলটাকে,
আমার, তোর চারপাশে প্রতিটা জীবিত ও মৃতকে
প্রতিটা ঋতুকে,সময়ের ঘড়ির কাঁটাটাকে
সকলকে
আমি তোকে  চিনি শুধু
,এইবার শুধু বাঁচতে চাই। 
.
বাঁচতে চাই তোর হাত ধরে
তোর থেকে কাছে, দুরে, 
তোর শহরের গলিতে,শহরের প্রতিটা মোড়ে,প্রতিটা দোকানে,প্রতিটা তোর পথ চলায়,
তোর বাড়ির কার্নিশে,তোর কবিতার খাতায়,তোর রান্নাঘরে,তোর বারান্দায় 
তোর একলা বিছানায়,তোর বাথরুমের শাওয়ারে 
তোর ভেজা চুলে,তোর আনমনা গানে
শুধু তোর সাথে 
তোর হৃদপিন্ডে আমার ঘর। 
.
চলন্তিকা জানিস তো তোর সাথে যারা, তোর পাশে কারা
তোর হাতের রেখায় কারা, তোর বেঁচে থাকায় যারা 
সব আমার ভীষন মেকি মনে হয়,
মনে হয় এ জীবনে ছেঁড়া তারগুলো এইবার গিঁট মারার সময় এলো
মনে হয় নিয়মের ঘুড়িটার এইবার ভোকাট্টা হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়ার সময় হলো
মনে হয় ঘড়ির কাঁটাটা উল্টো ঘুরিয়ে বলি
হাত ধর, চল পালাই
আমাদের অসমাপ্ত গল্পটার ভুমিকা লেখা বাকি
দেওয়া বাকি মুখেভাত, নামকরন তোর সাথে বাঁচার নামে ।

 
 

Monday, May 11, 2020

চ্যাপলিন

চ্যাপলিন
.... ঋষি
জানি না জীবন্ত বেঁচে থাকা কি
জানি না মানুষের আদলে আমি কেন ক্রমশ পাথর হয়ে যাচ্ছি,
ঠিক জানি একটা টানা বারান্দা,লম্বা শব্দবহুল রাস্তা
অনেকগুলো ঘর  পাশাপাশি  সম্পর্কের, সামাজিক সভ্যতার দত্তক।
পায়রার ক্রমশ বকরবকর, মাথা যন্ত্রনা
পুরনো বাড়ির ভীতে আজ কেন জানি এক অসহায় বোধ
আমি খুব সাধারণ,
আর সাধারণ বাঁচার গল্প গুলো পুরনো সাদা কালো পরর্দায়
খিদের পৃথিবী আর চ্যাপলিন।
.
ফিরে আসা পরিযায়ী রাষ্ট্র মেখে পাখি হতে পারে না
ফিরতে চাওয়ার রাস্তাটায় বহুদিনের অবহেলায় কেউ হাঁটে না,
শুনশান ট্রেনের লোহার রাস্তায় আজকাল রক্ত শুয়ে থাকে
তোমার নাকমুখ দিয়ে উপছে উঠতে থাকে অযত্ন আর অভিমান।
আমার বড় অসহায় লাগে,
কেন জানি  পরে থাকতে দেখি আমার কাটা পাগুলো,আমার হৃদয়
তোমার ট্রেন লাইনের পাশে।
.
মানুষের নিষিদ্ধ বাঁচা
তবু রুটি ছড়িয়ে থাকে সারা সময়ের খিদেয়,
ট্রেন লাইনে,রেশন লাইনে,কাজের লাইনে, সর্বপরি বাঁচার লাইনে।
কিছুই বদলায় না
তবুও  চ্যাপলিন হাসে সাদা কালো  খিদেতে অন্ধ নারীর চোখে।
তবুও জানো নিয়মকরে হারাতে থাকা টেলিফোন মাঝের মধ্যে বাজে
বুকের ভিতর ক্রিং ক্রিং
কোন ঈশ্বর যেন পৃথিবীর বুকে যন্ত্রনা বুনতে থাকে।
আমি বসে থাকি ঈশ্বরের কবরের পাশে 
আমি অপেক্ষা করি চ্যাপলিনের কাঁদতে চাওয়া হাসির পাশে,
রঙিন সাজানো আয়নায়
সমস্ত অভিনয় রাষ্ট্রের ধরা পরে যায়,
আর আমি মিল পাই  চ্যাপলিনের সাধারণ বাঁচা সাদা কালো পৃথিবীতে
ঠিক আমাদের আয়নার পাশে। 



Sunday, May 10, 2020

পৃথিবী আছে বেঁচে



পৃথিবী আছে বেঁচে
... ঋষি
আমি নিশ্চন্তে ঘুমিয়ে তোমার চুলে
তুমি কি বুঝতে পারছো,
আমি দাঁত দিয়ে চেপে ধরছি তোমার বুকের অর্ধচন্দ্রাকার
তুমি কি মিল পাচ্ছো।
তুমি কি চিনতে পাচ্ছো প্রেমিক আর সন্তান দুজনেই বড় শারীরিক
আলাদা করে তুমি উত্তীর্ণ হচ্ছো নারী।
 .
তুমি কাকে খুঁজছো এসময়
তুমি কাকে চাইছো জড়াতে তোমার বুকের ভাঁজে,
ভালোবাসার শব্দটায় অনেকটা সঞ্চয় তোমার শীতের শহরে রাখা
আর গ্রীষ্মে একলা বারান্দা,মনখারাপ,
কিন্তু নারী তোমার শরীরে বৃষ্টি সে কি শুধুই কষ্ট
নাকি ভালোবাসার ডালপালা।
.
আমি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছি তোমার নাভীতে
তোমার প্রতিটা জন্ম নারী শুধু তোমার একার নয়,
আমিও থাকি তোমার গভীতে ফসলের ঘুমে সবুজের মাঝে।
নারী তুমি মাছেদের মতো জলেই জেগে থাকো
নারী তুমি স্বপ্নের মতো প্রতিটি পুরুষের বুকে থাকো,
এই পৃথিবীর তিনভাগ তাই জলে ডুবে থাকে
আর পুরুষ শুধু একভাগ তাও স্বপ্নে বেঁচে থাকে।
.
আমি নিশিন্তে বেঁচে থাকি নারী তোমার দিনে রাতে
তোমার আয়নায় কিংবা রান্নাঘরে
যখন শব্দ হয় আমি বুঝি বাঁচছে আমার আগামী,
যখন দেখি একগুচ্ছ বিনুনী বাঁধা কিচিরমিচির রাস্তা দিয়ে চলেছে
আমি বুঝি আগামী পৃথিবীতে বাড়ছে আরো গাছ
আরো নিঃশ্বাস।
তুমি কি বোঝো এসব
তুমি কি জানো প্রতিটা পুরুষ প্রতিদিন  কাজের শেষে ফিরে আসে
নারী তোমার জলরেখা ধরে পরম তৃষ্ণায়। 

মুঠোবন্দী



মুঠোবন্দী
... ঋষি
কার পুরুষ, কার সন্তান,কার ঔরস
শুনেছি পৃথিবীর হাজারো যুদ্ধ ঘটেছে শুধু নারী তোমাকে নিয়ে,
শুনেছি নারী তুমি ঘুমোলে তোমার সারা শরীরে ফুটে ওঠে নক্ষত্র
অজস্র নক্ষত্র তখন সারা অন্ধকার আকাশে।     
সময়  তখন জ্যোৎস্না হয়ে সারা পৃথিবীতে আনন্দ
আমি জানি আমি সবুজ মানূষ, লেবু ফুলের গন্ধ।
.
আমি কখনো অন্যের নারীকে প্রার্থনা করি নি মনে মনে
আমি কখনো অন্যের নারীকে স্বপ্নে কামনা করিনি,
সে অল্প সময়ের রোগ
হস্তমৈথুনে আমি খুলে ফেলেছি তখন সারা ভারতবর্ষের সমস্ত নারীকে।
সে ভুল নয় অসুখ
সময়ের অসুখে ঈশ্বর যে অতৃপ্ত তখন।
.
কোন বাছ বিচার করি নি বন্ধুর বোন, অন্যের দিদি,সহ পাঠিনী
তখন ভারতবর্ষের প্রতিটি নারীকে নগ্ন করেছি রোজ,
পরে বুঝেছি চাঁদের জ্যোৎস্না নিয়ম করে শুধু আমাকে মাতাল করে নি সেই সময়
পুরুষ মাত্র  নারীর কাছে  ভিখারি চিরকাল। 
আমি কখনো কোন নারীর কাছে দাঁড়িয়ে সেই সময় মুগ্ধ হই নি
শুধু নগ্ন হয়েছি, নগ্ন করেছি
চাঁদের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সুর্যকে মিথ্যে বলেছি জানো
কারণ ভালোবাসা সম্বল আমার ছিল না কোনদিন।
.
একদিন মাঝরাতে আমি নর্দমার পাইপ বেয়ে উঠে গেছিলাম তিনতলার ছাদে
সেদিন মা আর মেয়েকে নগ্ন করে দেখছিলাম নক্ষত্র 
বিশাখা,রোহিনী, চিত্রা,
তারপর সকালের আলোয় মুখগুলো হারিয়ে যেতে থাকলো।
বুঝতে পারি নি সেদিন
আজ বুঝি জ্যোৎস্নাকে কখনো মুঠোবন্দী করা যায় না
করা যায় না হস্তমৈথুনের কারণ। 
 

Saturday, May 9, 2020

দেশলাইয়ের শহর


দেশলাইয়ে শহর
... ঋষি
লোকালয় থেকে পালিয়েছি  আজ বহুযুগ আগে
এখন আমার আগুন জ্বালাবার সময়,
ফস করে দেশলাই কাঠি জ্বালি, আগুন দি শহরের মুখে
পুড়ে যায় রাত্রির হাঁড়ির ভাত।
আবার চেষ্টা করি এইবার স্কুল, কলেজ আর শেখানো রাষ্ট্র
 হঠাৎ তখন একটা বিস্ফোরণ ঘটেই
প্রতি সেকেন্ডে এদেশে ধর্ষিত হয় ৫২ জনে।
.
আমি পুড়তে থাকি
তোমার শরীর থেকে সরাতে থাকি পুরনো শুকনো পাতা
আমি সরাই কিন্তু বারংবার বেড়ে যায় সবুজ পাতা
আমি কেন নগ্ন করতে পারি না তোমায়।
হঠাৎ স্বপ্ন ভেঙে নেমে আসে এক যুবতী পরী
বেশ্যা পাড়ায় ধর্ষিতারা নাম লেখায় নিয়ম করে।
.
কুড়ি তলার ওপর কেন ফোটে গোলাপ গৃহস্থের জানলায়
জানতে ইচ্ছে করে,
জানতে ইচ্ছে করে সেই গোলাপ মানে  কি   ?
শুধু কি ভালো লাগা না কামুকতা।
.
তোমাকে কেন বুঝতে পারি না চলন্তিকা  ?
তোমাকে কেন বুঝতে পারি না নারী ?
কোথায় তোমার অভিমান, কোথায় তোমার কান্না
কোথায় তোমার ভালোবাসা, কোথায় তোমার ঘৃণা।
ভাবতে ভাবতে মুখে তুলে নি পোড়া ভাত
আর বাঁচার ইচ্ছা,
হঠাৎ কেন যেন আগুন জ্বালাতে ইচ্ছে করে নতুন করে
মনে হয় পুড়িয়ে ফেলি এই শহর, পুড়িয়ে ফেলি সময়
শুধু তোমার হাত ধরবো বলে।
  

Friday, May 8, 2020

অরণ্যের অধিকার




অরণ্যের অধিকার
... ঋষি
আজ বহুদিন তোমায় নিয়ে চলেছি একলা নির্জন রাস্তা ধরে
আজ বহুদিন তোমার হাত ধরে হাঁটছি সময়ের রাস্তা ধরে।
তোমার যখন অসুখ,
তোমার যখন একলা শহর
আমি তোমার মাথায় হাত রেখেছি অনেকটা ছায়ার মতো,
তুমি যখন ভুল বুঝে দূরে সরে গেছো বারংবার
আমি বুঝেছি তোমার অভিমান পৃথিবীকে অভিশপ্ত করেছে।
.
আমি মায়ের কথা শুনিনি,শুনি নি বাবার কথা
শুধু শিরদাঁড়ার পাঁচিল ধরে হেঁটে গেছি বহু শতাব্দী ধরে।
আর উপার্জন
কারোর পা ছুঁয়ে আমি হয়ে যেতে পারি নি ক্রীতদাস,
তুমি ভালো জানো চলন্তিকা
শালা অন্নের খোঁজে আমি দিতে পারি নি সাজানো মতবাদ।
.
শুধু আমি হেঁটে গেছি তোমার হাত ধরে
তুমি জানো
আমার কোন শিক্ষক ছিল না যে পড়াবে আমাকে ভুগোল
বলবে পৃথিবী গোল।
তুমি জানো
আমার কোন ইতিহাস ছিল না কোনদিনও
যা পড়ে বুঝবো ভারতবর্ষ একটা সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র
আর আমি একজন স্বাধীন নাগরিক যে সত্যি বলতে পারে।
আমি হাঁপিয়ে পড়েছি চলন্তিকা আজকাল
শুধু শব্দের মতো আমাকে ঘিরে অজস্র সম্পর্কের নাম
শুধু পরিচয় মেখে আমাকে ঘিরে হাজারো চরিত্র।
.
শুধু আমি হাঁটতে চেয়েছি তোমার হাত ধরে
আজকাল জানো চিনতে পারি না নিজেকে
ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে এই মুহুর্তে  আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেটা একটা অরণ্য
আমার চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে বণ্য জন্তুদের আঁচড়ানো, কামড়ানো
হাজারো শরীর।
সেখানে মৃত চামড়ার ভীড়ে কিছু কিছু মুখ আমার ভীষণ চেনা
কিছু অচেনা
শরীরগুলো চিৎকার করছে, বাঁচতে চাইছে।
জানি আমিও পথ হারিয়েছি চলন্তিকা
তবু জানো এখনও আমি পথ হাঁটি তোমার হাত ধরে গন্তব্যের আশায়।



গাছ জন্ম




গাছ জন্ম
--------------ঋষি
তুমি জড়িয়ে নামছো আমাকে বহুদিন
আমি বহুকাল গাছের মতো বেঁচে আছি, শুধু শরীরে,
আমাকে পুরুষ যদি মনে হয়, যদি মনে হয় তোমার প্রেমিক
তবে আমাকে ভুলে যাও।
আমি গাছের শরীরে হয়ে আজ বেড়ে উঠছি তোমার রান্নাঘর
ক্লোরোফিলিয় পদ্ধতি,
তুমি আমাকে খেয়ে ফেলতে পারো  রান্না করে
কিংবা জল ঢেলে এগিয়ে দিতে পারো আগামী মৃত্যুর দিকে।
.
তুমি আমাকে জল ভাবতে পারো
ভাবতে পারো নদী বা সমুদ্রে তোমার চোখের নোনতা স্বপ্ন,
জানি কালরাতে তোমার শরীরে বান ডেকেছিল
তোমার শিয়রে সারারাত দাঁড়িয়ে ছিল কালপুরুষ।
কালপুরুষ তুমি তাদের চেনো
বেদ ব্যাস আর বাল্মিকী।
.
তুমি জড়িয়ে নামছো আমাকে চিরকাল
আমি বহুকাল গাছের চোখে সুর্যের দিকে তাকিয়ে আলো খুঁজছি,
যদি তুমি আমাকে তুমুল ভাবে ভালোবাসতে চাও খবর দিও কোন কাঠুরেকে
যে ঈশ্বরের কুড়ুলে আমাকে কেটে আবার জন্ম দেবে। 
আমি জানি খুব  হাস্যকর আমার গাছ জন্ম
আমি জানি  খুব অশান্তির আমার জল জন্মা
কি ছিল তোমার আখরোট ঠোঁটে, আমার নবজন্ম
কি ছিল তোমার  নাভীর কস্তুরী গন্ধে , অরণ্যের গন্ধ
তোমার বাঘের চোখ
বড় গভীর কোন অরণ্য।
.
তবু আমি গাছ হয়ে রয়ে গেছি এসময় সামাজিক থানে
আমার চারপাশে ঘেরা নগর কীর্তন, অজস্র পূর্ণাঙ্গ কাহিনী,অজস্র কান্নাহাসি
জানো এখন ঝড় উঠছে আমার চারপাশে
দুর্যোগ
তোমার মতো কেউ সিঁদুর পরা, খোলা চুলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে
আমাকে বলছে তার  মনের কথা
তাকিয়ে দেখো মেয়েটা কেমন জড়িয়ে কাঁদছে আমায়
আমার গাছ জন্ম।



Thursday, May 7, 2020

লহ প্রনাম


মুসাফির


মুসাফির
... ঋষি
এক ঝড়ের রাতে জড়িয়ে ধরেছি তোমাকে চলন্তিকা
এক ঝড়ের রাতে সমুদ্রের ধারে কাঁচের ঘরে শুধু স্বপ্ন,
পায়ের সাথে পা জড়িয়ে ধরে বালুচরে
আকাশের চাঁদে জ্যোৎস্না এসে ধরা দেয়  কবিতার মতো।
আছড়ে আছড়ে  পড়ে বুকে শব্দ ঘোর
পাগল প্রেমিকের মতো আমি আর আমার বালি ঘর।
.
তুমি ঠিক বলেছো চলন্তিকা
আমার সংসারী হওয়া হলো,
হাতের দোতারায় প্রেম যেন ছুঁয়ে থাকে পাগল বিশ্বাস
আঙুল গড়িয়ে নামে ইচ্ছা সংবেদনশীল চেতনার মতো।
শুধু স্তব্ধতা ধরা দেয়
যখন জড়িয়ে ধরি তোমায় একলা আমি বুকের ভাঁজে। 
.
এসেছিল জল দস্যু সাজে সমুদ্রের হাওয়া
ছুঁতে ছেয়েছিল তোমায়,
সেই থেকে আমি পাগলপারা মুসাফির পালিয়ে এসেছি নদীতে,
নদীর পাশে তোমার হাত ধরে প্রতিজ্ঞা করেছি
নারী আমি গাছ হয়ে থেকে যাবো।
নারী আমি হয়ে যেতে পারি কোন একলা বাঁশির শব্দ 
কোন মন আনছান বাঁশির সুর
পাগল করছে আমায়,
হায়ছানি দিয়ে ভুলে যাওয়া সমুদ্র ক্রমশ মুখ লুকোচ্ছে
নদীর মিষ্টি জলে।
আমি আরও গভীরে তলিয়ে তোমার মত মুখ দেখছি নদীতে
ক্রমশ এগিয়ে চলেছে নদী সম্পর্কের সাজে
তুমি ঠিক বলেছো চলন্তিকা আমি প্রেমিক হতে পারি
কিন্তু সংসারি না
শুধু মুসাফির আমি তোমার প্রেমে ।  

ক্ষনিক জন্ম



ক্ষনিক জন্ম
... ঋষি
এসো আলো এসো, আমি তোমার দিকে তাকিয়েছি যেই
এসো নিস্তব্ধে এসো, আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়েছি যেই
বুঝে গেছি
যোগ্যতা ছুঁয়ে আমার মৃতদেহে শুধু অধিকার।
আমার মৃত শরীর পড়ে আছে কাঁটাঝোপে রাখা পুরোনো পচা গন্ধে
আর বুকের ভিতর ভয়
নারী তুমি চির বেদনাময়।
.
বিপ্লবী যারা তারা সব আজকের সময় ধান্ধাবাজ হয়ে গেছে
বেশ্যা বলয়ে বসে খুবলে খাওয়া চিৎকার চিরকাল ধান্ধাবাজের।
নারী তুমি কার সাথে পা বাড়াবে জানি না
পুরুষ তুমি কার সাথে বাঁচবে জানি না,
শুধু দুজনে একে অপরকে বলবে  বিষ খাবো তাই একসাথে আছি
শুধু দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলবে
তুমি আমার জন্য মরতে পারো
কই বাঁচতে পারো না তো।
.
সারা শহর জুড়ে বৃষ্টি
রাস্তায় প্রায় এক হাঁটু জল
নারী তুমি হাল্কা শাড়ি তুলে আলগোছে পার হচ্ছো তোমার অভিজ্ঞতা,
তোমার গাল চূঁয়ে নামা নোনতা জল
তুমি উদ্দেশ্যে হাঁটা ক্যাফেটেরিয়ায় বসা পুরুষটার প্রতি
কাল রাতে তুমি ভিজেছিলে একি অভিজ্ঞতা।
.
কাল রাতে তোমাকে স্বপ্নে ছুঁয়ে জানতে চেয়েছি
বলো কাকে বলে ভালোবাসা?
তুমি থুথু ছিটিয়ে আমাকে বললে ছোঁবে না আমাকে একদম,
আমি হাসি নি, আমি কাঁদি নি
শুধু অপেক্ষা করেছি ভোরের
কোন ধান্দাবাজ নয়,শুধু তোমার প্রেমিক হয়ে নারী
মিলিত হয়েছি আলোর সাথে
আর তখনি হাতঘড়িটা পড়ে ভেঙে গেছে।


Wednesday, May 6, 2020

শব্দহীন


শব্দহীন
... ঋষি
একদিন ঝুপ করে লাফ মেরে পাড় করে দেবো গোল মধ্যবিত্ত আমার পৃথিবী
সোজা ঢুকে যাবো তোমার দু উরুর ফাঁকে,
কোন শব্দ করবো না, শুকনো পাতা মাড়াবো না
শুধু হাঁটবো।
জানি সেখানে কোন সিঁড়ি থাকবে না উপর বা নীচের
থাকবে না জ্যামজট কিংবা উড়তি কোন ঝামেলা
শুধু উত্তর থাকবে।
.
জানো তো জীবনানন্দ মারা গেছেন অনেকদিন
কিন্তু আমার মাথার ভিতর ছেড়ে দিয়ে গেছেন নীল আকাশ আর সোনালী চিল,
আমি জানি না সেখানে আকাশ থাকবে কিনা
কিংবা সোনালী চিল,
কিন্তু আমি সেই চোঙের ভিতর দিয়ে হাঁটতে পৌঁছে যাবো পারিজাতে
ঈশ্বর হয়তো থাকবেন সেখানে আমার ভিতর
কিন্তু কোন প্রশ্ন থাকবে না।
.
আজ থেকে কুড়ি বছর পরে
যখন তোমার চোখে চশমা, মেরুদন্ডে জমবে আমার ইচ্ছে,
সেদিন তুমি আমাকে আদর করে আয়নায় দাঁড়িয়ে খুঁজবে নিজেকে।
ভীষন মজা তখন
আমি থাকবো না সেদিন অথচ থাকবো তোমার ভীতর
শুধু তোমার গভীরে থেকে হাসবো আর হাসবো
এতগুলো বছর।   
সেদিনও কোন শব্দ হবে না
পড়ন্ত রৌদ্রের শেষ সুর্যে দাঁড়িয়ে আমি শেষ সামুরাই
সেদিন সারা আকাশ জূড়ে সোনালী স্বপ্নের চিল
সারা মাথা জুড়ে আমাদের গত হয়ে যাওয়া যৌবন
শুধু উড়বে,
তুমি বলবে " এই জীবনটা ঠিক বাঁচা হলো না "।


সন্ধ্যে নামছে পৃথিবীতে




সন্ধ্যে নামছে পৃথিবীতে
.... ঋষি 
কি ভাবে তৈরি হলো এই পৃথিবী
মনে পড়ছে না?
হঠাৎ দুরে পুকুরের পাশে আমগাছটায় বসা মাছরাঙা দেখে 
মনে হলো মাছরাঙা পাখিটা আসলে অপেক্ষায়,
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছি
তোমাকে বারান্দায়।
.
একটা বাচ্চা ছেলে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে বারান্দায়
পাশে গড়াচ্ছে একটা বল,
আমি চমকে উঠি বাইরে হাওয়া দিচ্ছে
বলটা একলাই গড়াচ্ছে নিজের মতো করে অন্য হাওয়ায়।
দরজা খোলা সিঁড়ি  বেয়ে গড়িয়ে নামছে বলটা
আমি পৃথিবীর শৈশব 
ভয় পাচ্ছি আমি যদি আরো নীচে নেমে যায়।
.
তুমি কি ভাবছো চলন্তিকা?
এটা কি পৃথিবী আর সেই বাচ্ছা ছেলেটার কবিতা,
আমি শুধু বারান্দায় দেখছি তোমায়।
তোমার খোলা আকাশ, হাজারো ভাবনা, রান্নাঘরের হাতা খুন্তি
আমার বারান্দায় স্তব্ধতা,
স্তব্ধতা বলতে তুমি কি বোঝ চলন্তিকা?
না তোমার বারান্দা চুরি করে নেওয়াটা আমার উদ্দেশ্য নয়
বরং তুমি এর সাথে যোগ করতে পারো কফি মগ, ইজি চেয়ার
ঘুমের ওষুধ,চুলের ক্লিপ,সাবানের গন্ধ,কবিতার খাতা
শুধু কল্পনা
কিন্তু আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না
কি ভাবে পৃথিবী তৈরি হলো?
শুধু দেখতে পাচ্ছি হঠাৎ মাছ রাঙা পাখিটা ঝুপ করে ঝাঁপ মারলো
পুকুরের জল থেকে ঠোঁটে গেঁথে নিলো খিদে ,
আমি সিগারেটের ধোঁয়া আকাশের দিকে ছেড়ে মুচকি হাসলাম
এই মুহুর্তে সন্ধ্যে নামছে পৃথিবীতে। 

আলোর খোঁজ


আলোর খোঁজ
... ঋষি
মিসেস ত্রিবেদী আপনি রীনা ব্রাউনকে চেনেন?
আরে সেই মেয়েটা যাকে আপনি ওথেলো নাটকে দেখেছিলেন।
কেন প্রশ্ন করছি ?
আপনি জানেন কিনা জানি না
ওথেলো শুধু একটা নাটক ছিল না, ছিল একটা আলোর খোঁজ
আপনি শোনেন নি কৃষ্ণেন্দু বলছে ডেসডিমোনাকে
" পুট আউট দ্যা লাইট ............ "।
.
আপনি ছেলেটাকে দেখছেন না অনেকদিন রাস্তায়
অনেকদিন আপনি মেয়েটাকেও দেখছেন না,
দেখছেন না বোবা লাইটপোস্টের নিচে দাঁড়ানো পাগলা জগাইকে
যে চিৎকার করে গাইতো ভর সন্ধ্যেতে
" আমার মুক্তি আলোয় আলোয় "।
অবাক কান্ড মিসেস ত্রিবেদী আপনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হেডফোন কানে
শুনছেন একি গান রবিঠাকুরের
তাকিয়ে আছেন একলা দাঁড়ানো খালি রাস্তার লাইটপোস্টের দিকে।
কি ভাবছেন?
.
রাস্তা এখন শুধু একা
একা পড়ে আছে হ্লুদ ট্যাক্সির জানলা,অঞ্জলদার পানের দোকান,
নিরুপমের হোটেল , সঞ্জয়দার খাতা,কলমের দোকান,
আপনার কেমন লাগছে মিসেস ত্রিবেদী?
শুনেছি আপনার স্বামীর সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো না
আপনার স্বামী এখন আমেরিকায়।
প্রায় চল্লিশ দিন তাই না
শেষ দেখেছেন তাকে ফেসবুক আপলোডে অন্য কারোর সাথে,
  কি ইচ্ছে করছে উড়ে যেতে।
 না এই মুহুর্তে আপনাকে ডানা দেওয়া যাচ্ছে না
দেওয়া যাচ্ছে না আলো,
আরে কাঁদছেন কেন?  আসুন না আরেকবার আমরা সপ্তপদী  দেখি
কিংবা পড়ে ফেলি ওথেলো
যদি এইভাবে ওই ছেলে মেয়ে দুটোকে, পুরনো সময়টাকে ফিরে পাওয়া যায়
কিংবা কাটিয়ে ফেলা যায় নষ্ট এই সময়টাকে। 




সময়ের খবর


সময়ের খবর
... ঋষি
আবার শুরু করা যাবে, কি বলো?
শহরের গলিগুলোতে বিষন্ন দিনগুলো কার?
তোমার, আমার।
সামনের পার্টি অফিসে নেতাজীর বাঁধানো ছবি,রবীন্দ্রনাথও আছে
সামনে বিশাল লাইন
উচ্ছে,বেগুন, পটল,মুলো, সংস্কৃতি চটকানো বড় রাষ্ট্রের বেটারা
টিভি পর্দায়  বিলি ব্যাবস্থা বুঝে নিচ্ছে।
.
রাষ্ট্র
পকেটে দলা পাকানো কয়েকখানা গান্ধীজী ।
তৃতীয় শ্রেণীর লাইনে  মৃত্যু শব্দটা ঈশ্বরের থেকে বেশি আসে মুখে
আর অশ্লীল শব্দগুলো ঈশ্বরিক মনে হয়।
আমি,তুমি কে চলন্তিকা?
শুধুই সাধারন
আর পরিচয়ের মানপত্রে লেখা আমাদের দাগ নম্বর, গলির নম্বর
আর ভোটার সংখ্যা।
.
রাস্তার মোড়ের কালুদার চায়ের দোকানটা প্রায় দুমাস বন্ধ
ছোঁয়াছুঁয়ির একটা পুরনো রোগ বাতাসে,
আসলে কালুদা স্যানিটাইজ করা চা বিক্রি করতে পারলো কই।
উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে
আর আমাদের ঘাড়ে সাধারণ মাথা,
কালুদার মাথায়ও তাই।
তবে  কালুদার বৌ চীৎকার করছিল বিছানায় শুয়ে  রাষ্ট্রের গলায়
কাল রাতে শুনলাম বলছে
পেটে ভাত না থাকলে মরবে না,
কিন্তু বুধোর সাথে না শুলে,না চো...লে মরে যাবে
কারন দমবন্ধ রাষ্ট্রের সত্যিগুলো শুধুই মিথ্যে জুড়ে সাজানো
.
আচ্ছা চলন্তিকা এখন কি  তোমায় চুমু খাওয়ার জন্যও
আমার  ঠোঁট  স্যানাটাইজ করতে হবে,
এই যে সারা পৃথিবীতে শুনেছি ২২ রকমের চুমু
এখন কি তবে সব চুমুর পদ্ধতিগুলো বদলাতে হবে।
জানো তো চলন্তিকা ছোটবেলা থেকে আজ অবধি
আমাদের হাজার টেনেও কেউ বড় করতে পারে নি
কারন রাষ্ট্রের মরজির কাছে আমরা চিরকাল নগন্য।
তাই আমাদের খিদে পেলে কি এসে যায় রাষ্ট্রের
শুধু খবর আর রাজনীতি ছাড়া।
.
( এই কবিতা নিতান্ত সময়ের মনোভাবের ছবি।অশ্লীলতার দায়
আমার কিন্তু কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্য নয়,উদ্দেশ্য নয়
কোন রকম রাজনীতির।)

Monday, May 4, 2020

তুমি আর আমি


তুমি আর আমি
... ঋষি
তুমি
.
তোমার স্বপ্ন, আমার বেঁচে থাকায়
শুধুমাত্র তোমার হাসিমুখ।
.
হঠাৎ জীবিত থাকার জানলাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে
হঠাৎ দরজার বাইরে যদি যদি জীবন দাঁড়িয়ে থাকে
তুমি কি বুঝবে আমায় সেদিন?
.
 সত্যি কথা বলবে আমাকে ঈশ্বর ছাড়া মানুষের ধর্ম কি ? 
সত্যি কি তুমি জানো না আমার তুমি, কে ধর্ম,
কে আমার ঈশ্বর ?
কে নি'শ্বাস ?
.
ফিরে আসা খালি হাতে, দূরে মাঝি নৌকা তীর খোঁজে
জানি বাঁচার জন্য মাটি দরকার গাছের,
আমি শুধু কাব্য করে লিখে ফেলি স্বপ্নদের আকাশী রঙে
আমি শুধু দিন গুনি তোমার সাথে দিন কাটাবো বলে
কিন্তু হঠাৎ ঝড় জলে মাঝি নৌকা মাঝ নদীতে ভেঙে যায়।
.
আর উত্তর দেব না তোমায়
আমি জানি আমার উত্তরগুলো তোমার নাভীতে শিকড় নিয়েছে,
মানুষ বোঝে গাছ কাটা ক্ষতিকারক
তবু কৃত্রিম গুজব এই সভ্যতায় গাছ কেটেই ফেলে।
.
হঠাৎ মেঘলা আকাশে যদি বৃষ্টি নামে, তুমুল দুর্যোগ,ঝড় ওঠে
হঠাৎ পথ চলতি তোমার স্পর্শরা যদি ছুঁয়ে যায়  মিষ্টি হাওয়ায়
আমি বুঝি আকাশ জড়াতে চাইছে তোমায়।
.
ঈশ্বর সাক্ষী শুধু তুমি
আর বাকি রোজকার।
.
আমি



পরকিয়ার গল্প

নিখুঁত খানিকটা মুহূর্ত  আজ ,কাল ,পরশু কিংবা সময়ের পারাপারে মাঝামাঝি কোথাও একলা মাঝি হাঁক দেয়  জীবন বাবু কোথাও কি তুমি আছো ? আর কোন যাত্রী বা...