Sunday, March 31, 2024

ম্যাজিসিয়ান

এরপরও কৈফিয়ৎ দরকার,এরপরও নিস্তব্ধতা, 
তুমি বলেছিলে এশহর ম্যজিকের শহর 
এখানে আলো ফুরোয় না কখনই 
এক ম্যাজিসিয়ান নাকি শহরটাকে সর্বদা আলোয় রাখে।
কিন্তু প্রশ্ন করি নি কখনই তোমাকে 
এ শহরে তবে মানুষ হাসে না কেন? 
সর্বক্ষন এত হতাশা কেন মানুষের মুখে। 
.
প্রশ্ন করি নি, ম্যাজিসিয়ান যখন 
তখন তার ম্যাজিকে মানুষের জীবনে থাকে না কেন কোন আঁকার খাতা
থাকে না কেন রামধনু রঙের ইচ্ছের ঝুলি,
কেনই বা চোখ বুজলে ম্যাজিকে ম্যাজিকে অন্ধকার হয় 
প্রতি রাতে ঘুম নেই কেন মানুষের? 
কেনই বা তুমি রোজ রাত জাগো আমার কবিতার পাতায়। 
.
কৈফিয়ৎ চাই নি কোনদিন তোমার কাছে
বিশ্বাস রেখেছি তোমার চেনা ম্যজিসিয়নের উপর
বিশ্বাস করেছি তোমার ম্যাজিককে
অথচ মানুষ  আজ সারা গায়ে পলিথিন জড়িয়ে বসে আছে
সভ্যতা, নিয়ম, আধুনিকতা
আসবাব, জঞ্জাল আর কথাদের মাঝে বন্দী সকলে।
আর আমি অন্ধকারে দাঁড়িয়ে খুব দূরে
তোমার আলোর শহর দেখছি
খুঁজছি সেই ম্যাজিয়ানকে, তার ম্যাজিককে 
যদি মানুষের গোপন আলো, অন্ধকার ঘরগুলো বদল করা যায়। 
.
ম্যাজিসিয়ান 
.. ঋষি 
 

Saturday, March 30, 2024

চিয়ার্স

উল্টে গেছে স্মৃতিঘর ,শবদাহ ,প্রজ্বলিত মন্ত্র 
উল্টোনো পান পাত্রে লেগে আছে অন্ধকার স্তব্ধতা 
সমস্ত চুমু ,সমস্ত স্পর্শ ,সমস্ত আবেগের পর অন্ধকার টেনে নিয়ে যায় 
সেখানে ,যেখান থেকে ফেরার ইচ্ছে থাকে না মানুষের।
শুধু থেকে যায়  মৃত যোগাযোগের ওপারে এক করুন উপলব্ধি 
সময়ের ঘরে জীবন শব্দটা একটা খেলা 
শুধু জুড়তে চাওয়া আর ভেঙে ফেলা এক অছিলা,
অথচ দিনশেষে মানুষ বলতে চায় চিয়ার্স
এক বাঁচতে চাওয়া ভবিষ্যৎকে । 
.
তবুও যতটুকু অবশিষ্ট 
মৃত সন্তানের শবের মতো আগলাতে চায় মানুষ 
তবুও শেষ কৃত্য করতেই হয় ,
জোড়া সময়ের অপেক্ষায় উত্তপ্ত দিনের  পরে মেঘ জমে আকাশে 
সে যেন বারুদ চিনিয়ে দেয় মানুষের স্পৃহাতে।
পাশাপাশি বসানো পাথরের টুকরোদের মানুষ ঈশ্বর ভেবে বসে
আড়ালে বাড়তে থাকা ঘৃণা অধিকতম বৃষ্টি দিনে 
কখন যেন সত্যি হতে থাকে আকাশের মেঘ,  
কখন যেন মিথ্যে হতে থাকে মানুষগুলোর প্রতিশ্রুতি 
তারপর একলা কোনো রাতে মানুষ নিজের মৃতদেহের সৎকার করে 
প্রবল উল্লাসে 
জীবনকে বলে চিয়ার্স
সামনে পুড়তে থাকা মৃতদেহটাকে একটা ভুল আখ্যা দেয় । 
.
চিয়ার্স 
... ঋষি

অচেনা মানুষ

রৌদ্রজ্বল দিনের শেষে একটা অপেক্ষার বিকেল
তারপর একটা সন্ধ্যের সাথে ঘুরতে ঘুরতে
তোমার বাড়ির সামনে,
সব একইরকম আছে, শুধু তোমার ভেজানো দরজা,
তোমার দরজায় দাঁড়িয়ে মনে হয় আমি প্রথম এখানে 
অথচ স্মৃতি ঘেঁষা রাস্তাটা বলে চেনা গন্তব্য
সময়ের সুর 
অচেনা মানুষ,মানুষের বাড়ি।
.
মানুষের অভ্যেস,
মানুষ চেনা জায়গাতেই খুঁজে পায় ভীষন চেনা অথচ অচেনা মানুষ
মানুষ নিজের অনুভুতিতেই খোঁজে মন খারাপ আবার মনখারাপের ওষুধ,
সত্যিটা হলো মানুষ কিছুতেই মানতে চায় না
প্রতিটা মানুষকে অচেনা করে তার খুব কাছের মানুষ। 
.
মানুষগুলো নিয়ম করে প্রতিদিন যুদ্ধে যায়
দিনান্তে প্রত্যেকে ফিরতে চায় ভীষণ চেনা সেই বুকে 
কারন বাঁচার রসদ 
কিংবা আবারও হয়তো নিজেকে চিনবে বলে।
মুশকিলআসান বলে অন্যকে ভালো রাখার পৃথিবীতে  
নিজেকে ভুলে যাওয়াটাই নিয়ম 
কিংবা নিজেকে সবজান্তা ছোরা মারাটাই নিয়ম
কারন ঈশ্বরের দস্তুর ভালোবাসার মানুষের কাছে
নিজ শব্দটাই অবহেলিত বড়। 
.
অচেনা মানুষ
.. ঋষি




Friday, March 29, 2024

লুকিং গ্লাস

আরো দ্রুত এগিয়ে যাও তুমি 
যাতে তোমার পিছনের ভয়গুলো তোমাকে না ছুঁতে পারে 
ঠিক এখানেই একটা ফুলস্টপ লাগানো আছে ,
স্বার্থক মুক্তি আর মুক্তির মাঝে যে বৈপরীত্য 
তাকে লুকিং গ্লাস বলে 
আর এই লুকিং গ্লাস মানেই 
object in the mirror are faster than life .
.
একটা মানুষ আর আরেকটা মানুষের যাত্রাপথ আলাদা 
সমগোত্রীয় জীবনের বাইরের ছবিটা এক আয়নায় ধরে না ,
অথচ চরিত্ররা থামে না 
গল্প নয় ,চরিত্র নয় ,দুর্ঘটনা নয় ,উন্নতি নয় 
একটা ৱ্যাপিড ফায়ার রাউন্ড ,
অসংখ্য ম্যাগাজিনের গুলি ছুটে আসছে 
তুমি সামনের সিটে বসে জীবন 
নিয়মের সূত্রে তোমাকে তাড়া করছে ভয়। 
আসলে কিছুক্ষনের জন্য নিজের মুক্তির কথা চরিত্রগুলো ভুলে গেছে 
সব কেমন গোলমালে একটা ভবিষ্যতের অপেক্ষা 
লুকিং গ্লাসের দিকে তাকালে স্পষ্ট বুঝি 
পিছনের সিটে বসে থাকা মানুষটাকে আমরা চিনতে চাই না
যাকে চিনি তাকে বোধহয় ভয় বলে । 
.
লুকিং গ্লাস 
... ঋষি

Tuesday, March 26, 2024

কবিতার শোক

লিখতে পারাটা একটা অসুখ 
ভীষণ কষ্ট ,ভীষণ আনন্দ ,প্রেম প্রবাহ ,অসংখ্য শোক,শহর ,মানুষ  
সব কেমন সাদা পাতায় সংসার বুনতে থাকে 
শব্দদের ঘুণপোকার সারাদিন মাথার ভিতর কবিতা লিখতে থাকে 
কখন যেন সাদা পাতা ভরে ওঠে ঠিক 
কিন্তু মন ভরে না ,তৃপ্তি আসে না। 
.
তোলপাড় সময়ের ভিড়ে একটা একটা কবিতা জন্ম দিয়ে 
আগুন খেয়ে ,আগুন বুকে বাড়ি ফিরে রোজ ,
রক্তকে গোলাপে দিয়ে সাজাই 
হতাশাকে খিদের মতো লিখে রাখি 
পাখির মতো আকাশে উড়ি ,ভালোবাসার নীল স্পর্শ করি 
দুম করে পাখির ডানা আবার  হারিয়ে মাটিতে আছাড় খাই 
অদ্ভুত তবু মরি না। .
.
এ এক বিস্ময় জন্ম 
মানুষ লিখবো বলে সময়ের সবুজ মাঠে  বুনি ভালোবাসার বীজ 
ভালোবাসা লিখবো বলে সাদা পাতায় লিখি অসংখ্য শোক 
প্রেমিকার শরীর লিখবো ভাবলে ঈশ্বর ভর করে 
মন্দিরে ঘন্টা বাজে ,
বুঝতে পারি লিখতে পারাটা একটা ভীষণ অসুখ 
যার জন্য সময়ে অসময়ে নারী শরীরে প্রবল কামে ভারতবর্ষ লিখে ফেলি 
আর দেশের কবিতায় লিখে ফেলি তোমার গর্ভপাতের যন্ত্রনা।   
.
কবিতার শোক 
...ঋষি

নামতা

ঠিক কতটা হাঁপিয়ে উঠলে বিদায় নিতে হয় 
ঠিক কতটা যন্ত্রনা বাড়লে হাঁপিয়ে উঠতে হয় 
কোনো সমীকরণ নেই 
নেই কোনো হৃদয় মাপার যন্ত্র ,
শুধু চশমার জমানো কাঁচে আজকাল বয়স ধরা পরে 
যেখান থেকে নিজেকে দিকশূন্য মনে হয়। 
নিশ্চয় দিগন্তরেখায় চাঁদ ওঠে ,ঢেউ ভাঙে জীবন 
আমি পুরোনো ইটের গায়ে খোদাই করতে থাকি জীবনের নামতা 
জীবন এক কে জীবন ,জীবন দ্বিগুনে জীবন 
এইভাবে ক্রমশ চল্লিশ পেরোয়,
কখন যেন এইভাবেই পেরিয়ে ফেলি  তোমায়। 
.
উল্টো নামতা মানুষের জানা থাকে না তাই 
রিংটোনে বাজতে থাকে মরফিন ,অসংখ্য সিগারেট আর স্যারিডন 
সময়ে অসময়ে জীবন গাইতে থাকে বেসুরা ভৈরবী
সব কেমন প্র্যাকটিকাল জিওগ্রাফি লাগে 
উঁচুনিচু পথ হারাতে হারাতে 
নিজেকে দেখি ভার বাড়তে থাকে জীবনের 
সমতলে পৌঁছনো হয় না আর ,
ভালোবাসা গোছাতে গোছাতে ভোর হয়ে ওঠে 
আবার একটা অন্য দিন 
ছুটছে সবাই ,আমিও ,শুধু আশ্রয় শব্দটা হারিয়ে যায়। 
.
নামতা 
.... ঋষি

প্রেমিক

প্রেমিকদের বিক্ষোপ বসলে 
এ শহর নিশ্চয় নাম বদলে দেবে নিজের প্রেমিকার নামে 
হওয়ার ভিতর নিশ্বাস শূন্য হাইওয়ে জুড়ে তখন মারাত্নক জ্যাম শহরে।
পুলিশ আসবে ,
আসবেই তখন কোনো প্রেমিকের খোঁজে
ভালোবাসার নামে একটা কেস জমা হবে নিকটবর্তী থানায় 
অথচ প্রেমিক শব্দটা সর্বদা সময়ের বিপক্ষে থেকে যাবে। 
.
কে জানবে ,কে মানবে ?
কতজন ,জনগণ ,সাক্ষী ,প্রমান ,কেনা বেচা ,লোপাট 
প্রেমিক নিশ্চয় কাঠগড়ায় তখন ?
প্রশ্ন আসবে ,প্রশ্ন ছিল ,প্রশ্ন চিরকালীন 
বলো হে প্রেমিক ! ভালোবাসার হত্যার দায়ে কি শাস্তি তোমার বরাদ্দ ,
মানুষের দৈত্য তখন স্বপ্ন দেখবে ,বাড়ন্ত ভাত ,ডাল ,সংসার। 
তুমি তখন বলবেই কই তোমাকে তো আমি চিনি না 
প্রেমিক হাসবে ,খুব হাসবে 
জনগণ চিৎকার করবে বলবে, পাগল 
কিন্তু তোমার মানুষটা তখন বিড়বিড় করে বলবে 
প্রেমিক কখনো রোদ্র বিক্রি করে না 
বরং মৃত্যু চিবিয়ে নিজেকে হত্যা করে ভালোবাসায়। 
.
প্রেমিক 
... ঋষি

অন্ধকার ঈশ্বর

বেশ কয়েক প্যাকেট সুগারেটে পুড়ে হয় প্রাচীন শোক 
সোনালী ঈগলের চোখে তখন এই শহর 
তোমায় খুঁজছে কোনো প্রেমিক ,তোমায় খুঁজছে কেউ 
আমার কবিতার ঈশ্বর তখন চিৎকার করছে ,
আমি বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষায় 
তোমার স্বপ্নের চুলগুলো নেশায় তখন ঢলে পড়ছে 
অন্য কোন প্রেমিকের বুকে কিংবা অন্য কাঁধে। 
.
একতরফা বিছানায় আগুন লাগাবার পরে 
ঘুম চোখে ঈশ্বর ঢেলে দেন আবোলতাবোল কিছু অন্ধকার ,
ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় তখন ঈশ্বর প্রদীপ জ্বালেন 
বিন্যস্ত প্রাচীর ,ঘোমটা টানে কাজলমাখা দুটো চোখ 
বুক পুড়ে যায় বারংবার ,
সে চোখে যখন পা টিপে টিপে ঢুকে পরে অন্য পুরুষ 
আমি ঈশ্বর খুঁজি নি 
তবে প্রেমিক চিনি 
প্রেমিকের বুকে একশো আটের এক গল্প রাখা আছে 
যা পুড়ে গেলে 
পৃথিবী রক্তবমি করে প্রেমিকার বুকে জমা গচ্ছিত অন্ধকারে।
.
অন্ধকার ঈশ্বর 
... ঋষি

নগ্ন নক্ষত্র

একটা উপলব্ধি
ক্রমশ মুহূর্তগুলো মারাত্নক ভাবে শিখিয়ে যাচ্ছে 
সময় এক দীর্ঘ কবিতার নামান্তর যার শেষে জীবন বারংবার বলছে  
লাজবাব কিংবা বোগাস কিছু ,
অথচ জীবন শেষ হয়েও হয় না কোনো বিন্দুতে 
শুধু বৃত্তাকারে আবর্তন করে সেই সময়কে মাঝে রেখে। 
.
শুনেছি ভালোবাসলে জীবনের আয়ু বেড়ে যায় 
সারা শহর ,আবেগ ,বিস্ময় সব জুড়ে তখন জ্যোৎস্না খেলা করে 
অথচ সময়ই  হারিয়ে যায় বারংবার  ,পাখিদের অভ্যেস 
চিনতে পারি কি তখন আমরা একে অপরকে ?
.
ভেবেছিল তোমার কাছে যাবো 
গর্ভবতী কুয়াশা ছিঁড়ে নিজেকে মুক্ত করে দেবো শীতের কোনো সকালে 
কিংবা  শিশিরের মতো ছড়িয়ে থাকবো শহরের সবুজ ঘাসে।
ভাবনারা বারংবার সমুদ্রে তীর ছুঁয়ে আসে যায় 
অথচ তুমি বুঝতে পারো কিনা জানি না 
ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছি আমরা 
সত্যি হলো 
বারংবার  অগ্নুৎপাতের পর নক্ষত্রকে নগ্ন হতে হয়। 
.
নগ্ন নক্ষত্র 
... ঋষি

সহবত

সরে থাকার মধ্যে যে যত্নটা থাকে 
তাকে আমি সহবত বলি 
তুমি বলেছিলে কথা দিলে কথা রাখতে হয় 
সে ভেঙে যাক ,সে শরীর খারাপ হোক কিংবা মন 
কিন্তু সহবত শেখায় 
ভালো যদি নাই রাখতে পারি ,খারাপ রাখবো কেন। 
.
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া 
অসংখ্য স্মৃতি জোঁকের মাঝে নিজেকে একলা পাওয়া 
যেন সেই একলা চড়ুই ,
আমার মনে হয় এইসময় দুমদাম পাগল হওয়া ভীষণ জরুরী 
দুমদাম নিজেকে ছাপিয়ে তোমার হাওয়ায় ভাসতে চাওয়া 
আনুগত্য মানুষে মানুষে ,শরীর সে তো ননভেজ ডিসে। 
.
আমরা যাকে ইচ্ছে বলে জানি 
সে তো আসলে সমুদ্র ,কি ভাবে মাপি ,কিভাবে জড়াই 
কাগজে কলমে কথা থেকে যায় 
শব্দরা ফিসফিস করে ,
ওবেলার ফ্রীজে থাকা কাঁচা মাছ ,এবেলায় নাহয় কিছু একটা 
দিন কেটে যায়। 
আমি কলার খোসায় সংসার খনন করি 
শব্দদের জিভ বেরিয়ে আসে ,নালিশ 
অবেশেষে অনেকটা আদর লেখার পর বুঝলাম 
সময়ের গভীরে এখন পুড়তে থাকা কড়ার তেল 
মানুষ আপেক্ষিক অথচ আফসোস চিরস্থায়ী। 
.
সহবত 
..ঋষি

Monday, March 25, 2024

অসময়ের বৃষ্টি

এই যে জানলার ওপাশে টুপটাপ বৃষ্টি 
এই যে  চুপ করে যাওয়া আবহাওয়া সময়ের মতো 
এই যে বাঁচার বাহানায় কাটিয়ে দেওয়া রান্নাঘর
পাঁচিল অথবা ফোনের এপাশ-ওপাশ দুপাশেই বৃষ্টি, 
বুকের ভিতর টুপটাপ শব্দ
এগুলো তো আমরা বেঁচে আছি বলে বলো
নিজস্ব  নীরবতার সাথে কথপোকথন 
এগুলো তো শুধু জুড়ে আছি বলে বলো । 
.
কেন দূরে আছি? 
দূরে আছি ক্লান্ত হবার ভয়ে,মনে রাখার ভয়ে
অথবা উত্তর দেওয়ার মতো কথা ঠোঁটে আটকানো তাই
কিংবা কাছে থাকার কারন খুঁজতে হবার ভয়ে।
আসলে পরিস্থিতির ওপর সমস্ত দায় চাপিয়ে 
দিনের পর দিন নিজেকেই পিছিয়ে দেয় মানুষ 
কারন ইদানীং মানুষ পায়ে চাকা লাগিয়ে ছুটতে চায়
কিন্তু এই দৌড়ে কেউ খেয়াল রাখে না
নিজের মানুষগুলো কখন যেন কোন ফাঁকে হারিয়ে যায়। 
.
এই যে জানলার ওপারে টুপটাপ বৃষ্টি
এই যে বাইরে গাছেদের কথাগুলো আমি শুনতে পাচ্ছি
এই যে আমার পাশে অগুনতি মানুষ কিংবা কেউ নেই, 
বেশ বুঝতে পারছি নিঃসঙ্গতায় যতটা কষ্ট 
তার থেকে বেশি কষ্ট  একান্ত বোঝাপড়াতে 
তবুও  ভালো লাগা,তবুও ভালো থাকা ছড়িয়ে থাকে
অসময়ের বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে গোপন প্রতিশ্রুতি
তুমি ভালো থাকবে কিংবা দূরে। 
.
অসময়ের বৃষ্টি 
... ঋষি 
 



রঙের পৃথিবী

এ এক অচেনা রঙিন বসন্ত
এ এক নতুন অভিধানিক ফিরে আসা আবিরের রঙ
কোনোদিনই বসন্তের কোন দায়বদ্ধতা ছিল না ভালোবাসার প্রতি
শুধু এক উৎসব, উদযাপন লেগেই ছিল 
জীবনের উঁচু নিচু উপত্যকায় আত্মীয় ঘাম 
রিংটোন বেজে গেলো, ওপার থেকে শোনা গেলো না প্রিয়কন্ঠ
শুধু একটা অভিমান থেকেই গেলো। . 
.
চারিদিকে আবির, পলাশ আর আনন্দ
অথচ এখানে মোছা মোছা অন্ধকারে অভিশাপ
হাসছি আমি, হাসছে শহর, হাসছো তুমি
তফাৎ শুধু রঙিন রঙের।
কেউ কাউকে চিনছি না,আসলে চিনবো না
শুধু একটা জীবন কাটবে জীবনের রঙের আড়ালে
যেখানে যাপনের অর্থ জীবন,সেখানে জীবনের অর্থ বেঁচে থাকা 
আর বাঁচার অর্থ একলা,
সেখানে তোমার চিলেকোঠার ছাদে আমাদের ভালোবাসার চাঁদ আজ আর ঈশ্বর খুঁজবে না
হয়তো সময়ের ঈশারায় আজও তুমি হাসবে কিংবা কাঁদবে ।
.
এমনটাই তো হবার ছিলো
নাভিশূন্য আকাশ যে তলিয়ে যেতে যেতে অন্ধকারেই মেশে
সেখানে আর প্রেম থাকে না, আদর থাকে না 
পাশ ফিরে শুয়ে থাকে রাংতা জীবন। 
একটা যাপন যেখানে মৃত্যুর থেকেও কালো
সেখানে প্রতিটা উৎসব বুঝিয়ে দেয় আত্মনির্ভরশীলতার মানে,
কাকে তুমি আঁকড়ে ধরবে এবার? 
আমার না হয় চলন্তিকা আছে, চলন্তিকা থাকবে
শুধু আমার মতো আর তোমায় কেউ বলবে না 
রঙের পৃথিবীতে তুমি ভালো থেকো
আবির রঙের আদরের শুভেচ্ছা তোমাকে। 
.
রঙের পৃথিবী
,,,,ঋষি 

Sunday, March 24, 2024

এটা গল্প কার

অনেকগুলো দিন হলো বলো 
ভালো আছি ,ভালো থেকো একটা অনুভূতির পাঁচিল 
তবে এখন দিন ফুরিয়ে রাত ,রাত ঢের হলো বলো  
আমার না হয় আটশো তোমার না হয় হাজার স্কয়ারফিট 
ছক কাটা পুনারবর্তন 
ফিরে যাওয়া দিনের শেষে ,সেই কারাবাস। 
.
বেহায়া রাগ , রাগিণী বাজে,বেহায়া সব উৎসব 
নামেই সেই মহিষাসুর ভালোবাসা 
দেবী উদয় হন  ,হয় মহিষাসুর বধ 
সময়ের উলুধ্বনি ,সময়ের নাম ,আবেগের ডাকনাম
সব কেমন কারণছাড়া ,বড্ড ন্যাকামি 
আমি ,তুমি আর আমাদের গল্পে শুধু ব্যথাদের বাস। 
উপার্জিত অনুভূতিগুলো বড়ো মিথ্যা 
ক্ষমা লিখে চলি চলন্তিকা তোমার সমাপ্তিতে 
জ্বলন্ত চিতায় ঢালি স্নেহভষ্ম ,অদম্য খিদে ,
তবুও তো কিছু  বাকি থেকে যায়
ভাবনার গভীরতা জুড়ে কে বা কারা পুড়ে চলে  ?
আমি ,তুমি কিংবা আমাদের গল্পটা অন্যরা পড়ে
কেউ বলে নিদারুন ,কেউ বলে সময়চিত নয়। 
.
এটা গল্প কার 
... ঋষি

Friday, March 22, 2024

সাংস্কৃতিক মঞ্চ

আগুনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের খোঁজ 
এ তো মানুষের স্বভাব 
মোমবাতি জ্বালিয়ে মৃত মানুষের জঘন্য শোক 
সে তো অনাদায়ে মানুষ 
কখনো সূর্যের চোখে চোখ রেখে দেখেছো 
শুধু কি পোড়া দাগ চোখে পরে না ?
.
রাত্রির সাথে বাঁশীর করুন মিল 
সারাদিনে ১৭ মিনিটের ভাগ্য নিয়ে ইদানিং দিন শেষ হয় ,
আজ যাকে কবিতার মতো মঞ্চস্থ করছো সংস্কৃতি 
ইদানিং সেই সাংস্কৃতিক  মঞ্চে শুধুমাত্র নাটকের ভিড়। 
ধীর শব্দের শরীরের দেওয়ানেওয়া একটা প্রশান্ত সাগর 
ঢেউ ওঠে কবিতার  ,নোনতা শরীর ভিজে যায় 
জানি তোমাকে মনে পরে। 
হা কবিতার ঈশ্বর তুমি কি জানো না  কবি কবিতায়  মনের কথা বলে 
আর কবিতা শোনায় সময়ের মৃত্যুর পদধ্বনি 
আর তার বাইরে একটা অদ্ভুত প্রহসন মঞ্চস্থ হয় সাংস্কৃতিক মঞ্চে 
কবিতা কাকা ধরে ,মামা ধরে। 
.
সাংস্কৃতিক মঞ্চ 
..... ঋষি

Friday, March 15, 2024

khudartho manush

মানুষ বড়োই অখুশী এই শহরে 
বড্ড ক্ষুদার্থ 
একটা ভার্চুয়াল ছবি ,কিছু মুহূর্তের মাংস দেখে মানুষ লোলুপ 
অনেকটা জন্তুর মতো মানুষের গোঙানি। 
ক্রমাগত নারীর প্রতি পুরুষের যৌন দৃষ্টি ,যৌন আকাঙ্খা 
আমাকে বিস্মিত করে বটে 
তেমনি নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে জড়ানো 
আমাকে বরাবর উন্মাদ করে । 
.
পুরুষ কিংবা নারী একে ওপরের প্রতি আসক্তি বহু প্রাচীন 
আরও প্রাচীন আমার দেশে যৌনতা 
কিন্তু সেখানে লোলুপতা ,সেখানে যৌন ভিক্ষা ,সেখানে কাঙালিপনা
ইদানিং চারপাশে জংলী জন্তুর মতো সময়ের  যৌন ক্ষুদার্থতা   
এ কিসের নামান্তর ?
অসংখ্য যৌনকাতর মানুষ আমাদের চারপাশে 
অসংখ্য মুখোশে ,সম্পর্কে ,বন্ধুত্বে শুধু একটাই লক্ষ্যে 
শরীর ,শরীর ,শরীর 
কিন্তু তারপর ?ভেবেছে কেউ। 
.
জঞ্জালের মতো বেড়ে চলেছে সময়ের ভালোবাসার কলঙ্ক 
ভালোবাসা মানেই শুধুই কি একটা  শরীর ?
ভালোবাসা মানে শুধুই কি একটাই  ধান্দা ?
ভালোবাসা মানে শুধু ওই ক্ষনিকের যৌন সুখ ?
ঘৃণা লাগেন ভীষণ 
বড্ড করুনা হয় মানুষের প্রতি,সময়ের প্রতি  ,
ঈশ্বর প্রদত্ত সঙ্গম সে শুধু ভালোবাসার প্রতীক 
কিন্তু এই যে বাড়তে থাকা যৌন খিদা সে শুধু পাশবিক
ভালোবাসা কখনো টাইমপাস বা শরীর নয় 
সে যে নিজেই নিজের ভিতর একজন ঈশ্বর । 
.
ক্ষুদার্থ মানুষ 
.. ঋষি

Wednesday, March 13, 2024

ছায়া মানুষ

নির্দ্ধিধায় হেঁটে চলে ছায়া মানুষেরা এই শহরে
অচেনার মতো,সম্বলহীন,প্রত্যাশাহীন
প্রজাপতিদের আর দেখা পাওয়া না মনের বাগানে
স্বপ্নরা আর কথা বলে না মানুষের সাথে,
ইট, কাঠ, পাথরের শহরে মাংসের দর বাড়ে প্রতিদিন
চীৎকার বাগাবত করে,শব্দরা ঘর ছাড়ে
এক অসৎ সহবাসে। 
.
মানুষেরা বাসা খোঁজে ভেঙে দিতে নির্ভেজাল সম্পদ
দায় বাড়তে থাকে প্রতিদিন, প্রতিবেলা,প্রতি নেশা
সিঁদুরে মেঘ জমে অনন্ত দহনে বেঁচে ফেরা রাত্রি
কোথাও ফুল ফোটে,কোথাও আলো নিভে যায়,
অন্ধকার ফুটপাতে না পাওয়াগুলো ছায়া ফেলে
লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটতে থাকে উদ্দেশ্যহীন 
এক নিরুপায় জীবন, আরও নিরুপায় মানুষ। 
শুধু নাটকের জাগলিংএ জমে ওঠে সংসার 
তুমি বলো এগিয়ে যাও, ভালো থাকো 
অথচ আমি পিছোতে থাকি নিজের থেকে, সময়ের থেকে,
জীবন আর জৈবিক চাহিদার সমীকরন মেলে না কিছুতেই
উদবাস্তুর শহরে আশ্রয় শব্দটা বিলুপ্তপ্রায়
নির্দ্ধিধায় বলা যেতেই পারে
ইদানীং মানুষের শহরে ছায়াদের বসবাস। 
.
ছায়া মানুষ 
.. ঋষি 

Friday, March 8, 2024

নষ্ট মেয়েছেলে

আগুন বুকে জন্ম নিয়েছি বলে 
নারী বললেই আজও মনে হয় অসহায় একটা জাত
যাদের ছোটবেলা থেকে শেখানো হয় 
তোমাদের মানতে হবে, না হলে থামতে, 
না হলে তোমার ফসিলে লেখা হবে চরিত্রের সেলাই করা দাগ 
না হলে ডাকা হবে তোমাকে নষ্ট মেয়েছেলে। 
আর সেখানে নারীদিবস
একটা বিজ্ঞাপন, একটা ভুল ধারনা, একটা গিমিক
নারীকে বোকা বানাবার জন্য স্পেশাল একটা দিন 
এক সামাজিকপন্থা। 
.
ছোটবেলার সেই মালতীদিকে মনে পরে
সেই মালতীদি যে পড়াশুনাতে ভালো ছিল
হয়তো সম্ভাবনাও ছিল, 
কিন্তু স্কুল শেষ করেই যাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হলো 
স্বামী গরভমেন্ট সার্ভিস অথচ আঙুল সইয়ে অভ্যস্ত,
বিয়ে হলে বাচ্চা হয়, মালতী দির হলো তিনটে। 
অথচ আজ মালতীদিকে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি
শুনেছি স্বামী আবার বিয়ে করেছেন কারণ মালতীদির তিনটেই মেয়ে। 
.
আমি তো আজও জানি পৃথিবীতে দুটো জাত
যেখানে নারী শুধু সামাজিক একটা যোনি
যেখানে নারী শুধু সংসারে সাজানো একটা আসবাব 
যেখানে নারী শুধু পুরুষের প্রয়োজনীয় অভ্যাস
যেখানে স্বামী,যেখানে সন্তান, যেখানে সমাজ নিয়মিত পতাকা তোলে
আর এর বাইরে যারা তারা নষ্ট মেয়েছেলে।
আমি তো আজও মানি 
পুরুষ স্বামী, প্রেমিক, সন্তান ততক্ষন, যতক্ষন নারীরা
প্রচন্ড সামাজিক  যন্ত্রনাতেও হাসতে পারে
বলতে পারে ভালো আছি। 
.
আমরা নারীকে দেবী মানি অথচ মানতে পারি না
নারী স্বাধীনতা
কারণ এই দুনিয়ায় শুধু নারীকেই প্রশ্ন করা যায়
তোর গর্ভে কার সন্তান ? 
অথবা চুন থেকে পান খসলে তাকে বলা যায়
নষ্ট মেয়েছেলে। 
.
নষ্ট মেয়েছেলে
.. ঋষি

Tuesday, March 5, 2024

শহরের ডাইরি

মানুষ বলেই বোধহয় কষ্ট হয় 
মানুষ বলেই বোধহয় আজও তুমি ভাবলেই মন কাঁদে
অথচ তুমি তো আছো ,তুমি তো থাকো 
তোমার বুকেই মাথা ঘষে আমি শিশু হয়ে উঠি 
তোমার আগুনে জ্বলতে জ্বলতে আমি দস্যু হয়ে উঠি 
তোমার হাতে হাত রেখেই তো আমি মানুষ  
কিংবা হয়তো অমানুষ। 

এখন তো বসন্ত
এলোমেলো হাওয়া, পাতাঝরা পথ, সাজানো শিমুলের আশীর্বাদ
কেমন যেন মন কেমনে বেলা।
তবে কি ভেবেছো কখনো ,মানুষ বলেই তো আমাদের  মন আছে 
তাই তো যখন তখন তোমায় ছুঁয়ে দেয় উদাসী হাওয়া একলা জানলায়  ,
যে চোখ খোঁজে তোমাকে এই শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে পাগলের মতো 
তার কাছে পৃথিবীতে সবকিছু অকারণ শুধু তুমি ছাড়া। 
.
আমি জানি তুমি আছো ,এইটুকু পরিচয় এই শহরের 
তাই তো সকাল হয় এখানে ,বিস্তর শোরগোল মহানগরের পথে 
তাই মনের ম্যানড্রেকের জাদু বাক্স খুলে বারংবার বেরিয়ে আসে অনুভূতি 
সারা আকাশ জুড়ে শহরের হাজারো কষ্টগুলো তখন পাখি 
অথচ একমাত্র আমি জানি তুমিই আকাশ এই শহরের
তোমাকেই খুঁজেছে সবাই । 
বোকারা মুগ্ধ হয় তোমার প্রতি, শুভাকাঙ্খীরা ডরায় ,প্রেমিকরা নতমুখে  
আর আমি তো এদের কেউ নই তাই এ শহরে আমার অজ্ঞাত পরিচয়পত্র
শুধু আমার গভীরে তুমি  
শুধু নিয়মকরে লিখতে চাই তোমায় আমৃত্যু 
শহরের ডাইরিতে যাতে ভালোবাসা কম না পরে। 
.
শহরের ডাইরি 
... ঋষি

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...