Sunday, May 31, 2015

ভালোবাসি তোকে

ভালোবাসি তোকে
.................. ঋষি
==============================================
তোর কোলে মাথা রেখে শুয়ে সারা কোলকাতা
চেনা ট্রামরুট ,ব্রিগেড মিছিল ,মোমের সব সাজানো দরবারে।
ধর্মতলা ,বিটি রোড ,শ্যামবাজার ,বিগ বাজার বিছানো চাদরের মেলা
ধর্মের পেগে লেগে থাকে নেশার মত সময়।
আমি শুয়ে তোর কোলে ,সাজানো চোখে কালো কালি
আয়নার শুকনো শহরের বুকে।
বিষাক্ত বারের নৃত্যরত খোলা বুক ,রুপোলি দরগা,জঘন্য যন্ত্রণা
আমি  নাকি ভালোবাসি তোকে।

এমন তো লেখা ছিল খালি আকাশের গায়ে
এমনতর লেখা ছিল ইনবক্সে জমতে থাকা মুহুর্তদের ভিড়ে।
সরতে সরতে, মুছতে মুছতে জীবিত কালি মোটা হরফে লাল রঙে
বুকের মাঝে চিত্কার তোর নাম ধরে।
জানি না তুই কে ,জানি না তুই কেন ,জানি না তোকে
তবু তবু ভালোবাসি তোকে।
তোর খোলা চুল বেয়ে গড়িয়ে নামা সন্ধ্যে আমার শহরে
দাঁড়ানো লাইট পোস্টের  ভেজা আলোয় চৌরা রাস্তা ধরে ,
তুই এগিয়ে যাচ্ছিস  চেনা বায়স্কোপে।
নৃত্যরত চেনা নায়িকা ,চেনা নায়কের বদলানো গল্প
আসলে অস্তিত্ব এক ভালোবাসি তোকে।

তোর নিশ্বাসে লেগে থাকা  গিটার স্ট্রিংএর  সুমেধুর নেশায়
আমার কলকাতার ফুটপাথে চাঁদ ওঠে।
রাসবিহারী ,বিডন স্ট্রিট ,গঙ্গার ফেরির শেষ নৌকায়
আমার শহরে প্রেম তোমাকে ছুঁয়ে ছোটে।
হাত ছুঁতে চাই  ,ছুঁতে চাই জীবন ,গড়িয়ে চলা ঘাম রাত্রের পথে
আমার শহরে প্রেম ফুলের মতো  ফোটে।
বিষাক্ত কবিতায় একলা ছুঁয়ে বাঁচা আবর্তনে তুই
তুই জানিস আমি শুধু ভালোবাসি তোকে। 

প্রতিবাদ

প্রতিবাদ
.................. ঋষি
=============================================
রাস্তার ওপর জমতে থাকা নোংরাগুলো কখন যেন
ডাস্টবিন পেরিয়ে ঢুকে পরছে মস্তিস্কের নিউরনের গুহা দিয়ে।
একটা খালি কোকের ক্যান গড়াগড়ি রাস্তার উপরে
এক লাথিতে ফুটপাথে অন্য লাথিতে সোজা বাসরুটে।
হয়তো চটকে যাবে যে কোনো সময়
প্রতিবাদ করবে অন্য খালি ক্যানগুলো।
এগুলো ব্যবহার করা  ,পরিত্যক্ত সীমানায়
মাথার গভীরে নেশা ঘুমের ঘোরে।

আলো আঁধারিতে মূর্তিমান জ্যোত্স্নার মাঝে একলা দাঁড়িয়ে
আকাশে গোল চাঁদ ,খালি বাটি খিদে।
ছোটো ছোটো জীবনগুলো গদ্যময় ছোটগল্প সারা আকাশে
শান্ত পৃথিবীর অন্যতম প্রিয় ধাম ঈশ্বর আসীন।
ঠিক এই সময় আকাশ চিরে উড়ে যায় লোহার পাখি
নেমে আসতে থাকে মিসাইল।
লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে আসতে থাকে আইরন ট্যাঙ্কগুলো
এক একটা বিশাল বড় জানোয়ার ,,,,,,, ফায়ার।
মাটিতে শুয়ে পড়ছে বাড়ি , ঘর  , দোর, তুমি,আমি  চারিধারে
ঘরে ঘরে বাজতে থাকা টেলিভিশন আর রেডিওর সেটের সাথে।

এই সময় একটা দৈত্যাকার কোকের ক্যান আমার সামনে উঠে দাঁড়াচ্ছে
মাঝরাত্তিরে কোকের খালি ক্যানগুলো এক এক ক’রে।
সাঁজোয়া বাহিনীর মতো ঘিরে ফেলছে রাস্তা
ভেঙ্গে খান খান পৃথিবীর শরীরে ভিতর ঢুকে যাচ্ছে আইরন ট্যাঙ্ক।
কেটে যাওয়া ঘুড়ির মত লোহার পাখিগুলো দিকশূন্যহীন
এই লোহার যুদ্ধ  সারারাত আমার খুলির ভেতরে।
চিত্কার করছে প্রতিবাদ ,,,,প্রতিবাদ ,,,,প্রতিবাদ
আমি জানি ভোরের সূর্যে কেউ আমাকে রেসকিউ করতে আসবে না। 

ধর্ষক আমরা সবাই

ধর্ষক আমরা সবাই
.................... ঋষি
===========================================
এক একটা বাঁকে,
এক একটা না বোঝানো এই সময়।
সময় কি শুধু প্রকৃতির কোলে থাকা নতুন জন্ম
নতুন সূর্য আসলে আলোর জন্মের প্রতীক্ষায় দৈনন্দিন।
আর জন্মের কথা বলি
তবে অবাঞ্চিত নারী নগ্ন যোনিতে আদমের সাথে।
কাঁচা সবুজ দুঃখের পাতা চিবিয়ে খায়
প্রকৃতি ও নারী এক সাথে।
আদমের হাসি মুখ আর নারীর বেঁচে থাকা
শিরা উপশিরায় যোনির গন্ধময় লজ্জার দংশনে ।

স্টিমার ঘাটে ভো বাজে সরে যায় মাটি পাতাল প্রবেশে
ঢুকে যাচ্ছে সীমা ছাড়িয়ে সূর্য সীতা মাটি ছিঁড়ে দুঃখের বুকে,
অথচ কর্ণের জন্ম কুন্তীর কাছে লজ্জা জনক।
হা কুন্তী তুমি কি আলোকস্পর্শা
হা সীতা তুমি  কি সময়দ্রষ্টা।
প্রকৃতির শরীরের প্রত্যেকটা অংশ একটা জানোয়ার হয়ে যাচ্ছে
শুধু খিদে চুষে খাওয়া  জ্যান্ত নরকে অসংখ্য শব।
মৃত সব ,জীবিত ইচ্ছায় লোভাতংকের শিকার যোনিত স্পর্শ
প্রতি কুড়ি মিনিটে দেশের কোথাও কেউ শিকার।
আর ধিক্কার আমাদের বলায় প্রকৃতির প্রেম
ধিক্কার আমাদের বলে আকর্ষণের শরীর।

জল আর জীবনের খোঁজে, অনেকদিন ধ’রে নানান পথ
আমরা জানতে পারছি না নিজেদের অন্তর স্পৃহাকে
নিচু রাস্তা দিয়ে হাঁটছি , ক্লান্ত
ঘরে ফিরবার পথে আদিম প্রাগৈতিহাসিক কল্পনার গন্ধের ভারে নুয়ে।
প্রকৃতির উরুর কাজে ,ধর্ষক আমরা সবাই ধর্ষণ কল্পনায়
ধর্ষিত শুধু একটা শরীর ভেঙে দিচ্ছে আমাদের চামড়াগুলো
শাফল্‌ করছে আর রি-অ্যারেঞ্জ করছে আমার পরিচয়
মেয়েগুলো জঙ্গলে গেছিল মধুর চাক ভাঙ্গতে
ফেরার পথে বললো, মৌমাছি নাকি ভ্যাজাইনাটাকে দেখেছে
একটা প্রজাপতির মত সবুজ প্রকৃতিতে 

Saturday, May 30, 2015

আলোকের এই ঝরনা ধারায়

আলোকের এই ঝরনা ধারায়
..................... ঋষি
===================================
আলোকের এই ঝরনা ধারায় ভরিয়ে দেও
নিস্তব্ধ চুপচাপ অনেকখানি  পথ হেঁটে গেছি।
কান খাড়া করে শুনেছি পদশব্দ
শিউলির উপর দিয়ে ,ভিজে শিশিরের উপর দিয়ে।
আমার খরখরে বুকে শুকনো পাতার শব্দ ,
নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে খান খান।

মনের কোণের সব দীনতা মলিনতা ধুইয়ে দাও
ধুয়ে তো দিতে চেয়েছি নিজের অস্তিত্বের কালিগুলো।
ভাঙ্গতে চেয়েছি টুকরো টুকরো নিজেকে নিজের আয়নায়
আসলে হারাতে চেয়েছি কয়েকশো কবিতার প্রেমে।
আরো গভীরে যেখান থেকে উঠে আসে আগুনের লাভা
ভয়ঙ্কর লাভায় আমি পোড়াতে চেয়েছি নিজেকে।

যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে
নিস্তব্ধতা বুকে নিয়ে সোজা হাইওয়ে ধরে আরো গভীরে।
ক্লান্ত গভীর কালি তোর দুচোখের পাতায় অবচেতনে
স্তব্ধতা এই বুকের মাঝে আরো ভালো থাকার।
কিছু চাই নি ,কিছু চাই না তোকে ছাড়া
সর্বত্র ছড়ানো কাঁচের গুড়োতে প্রাচীন প্রেম।

আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে
চুপি চুপি স্পর্শ ছুঁয়ে থাকা আদরে গভীরে রাখা।
আমি গিয়েছিলাম সেখানে এক পাত্র হৃদয় আমার হাতে
নেশা খুব নেশা এই বেঁচে থাকা আরো স্তব্ধতায়।
চুপি চুপি লুকোচুরি কিছু কথাদের হুরোহুরি
তোমাকে ছুঁয়ে বলতে চাই।

এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও
প্লিস আরো গভীরে যাও আরো গভীরে।
আমি কানখাড়া করে শুনেছি পদশব্দ
চেতনার উপর দিয়ে ,ভাবনার গভীরতায়।
ক্রমশ প্রসারিত বাহু আমার দিকে
আলোকের এই ঝরনা ধারায় ভরিয়ে দেও। 

Friday, May 29, 2015

উপস্থিতি অপেক্ষায়

উপস্থিতি অপেক্ষায়
................... ঋষি
=========================================
আবার তোকে দেখবো আলোক আঁধারিতে
আবার জ্বলে উঠবে বুকের বারুদে স্ফুলিঙ্গ।
ভীষণ বিস্ফোরণে টুকরো টুকরো না পাওয়ারা ছিটকে পড়বে দূরে
ফুসতে থাকবে সময়।
চারিদিকে নিউস চ্যানেল ,অসংখ্য চিত্কার ,পিকচার্স কমেন্টস
ক্লোস ফায়ার ,রাস্তায় জ্যাম ,পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ।
সেই বেজে উঠছে আমার মুঠো ফোন
মুঠো ফোন তুই এক অস্তিত্ব চারদিক ভীষণ শান্ত।

আবার বুকের উপর উঠে যাবে আস্ত একটা ট্রাম
হেলে দুলে শান্ত হাতির মত ভারী হয়ে যাবে হৃদয়।
ফোনটা কেটে যাবে
শোনা যাবে না তোর গলা।
হৃদয় কাঁদতে থাকবে ভীষণ ভারী সময়ের শব মাথার ভিতর
ঘুরপাঁক  খাবে অপেক্ষা আবারও তোর নামে,
চারিদিকে শোরগোল ,খোঁজ খোঁজ  রব হৃদয়ের মাটিতে।

আবার তোকে দেখবো আলোক আঁধারিতে
স্বপ্নের মায়াজাল ঘিরে নেশার চোখ জড়িয়ে সিঁড়ি।
সিঁড়ি শেষ ধাপে তুই দাঁড়িয়ে
আমি নিচে, অনেক নিচে  শুধু অপেক্ষা হাজারো শোরগোলে।
হাজার বাজারী খবরে,হাজারো মৃত্যুর ঠিকানায়
সবকিছু স্থির হয়ে থেমে যাবে।
তুই এসে গেছিস  আমার কাছে
আমার মুঠো ফোনের স্ক্রিনে ফুটে ওঠা তোর নাম।



সবুজ স্পর্শ


সবুজ স্পর্শ
................. ঋষি
============================================
সামনে শুধু সময় নামে এক পৃথিবী
পাঁচ তলার ছাদ থেকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেল্লাম কাগজ।
নীল স্বপ্নের মতো তারা নেমে আসছে তোকে ছুঁয়ে
আরো গভীরে টুকরো টুকরো প্রতিফলিত সময়।
তোর সাথে কাটানো মুহুর্তদের ভিড়ে
নিজেকে ফিরে পাওয়া।

আসলে শরীরের থেকে মনের বাড়টা বাড়ন্ত
হরলিক্সের শিশির কাঁচের ভিতরে থাকা পৃথিবীটা পুষ্টিকর।
অথচ আমাদের সবার ফুচকার জল চায়
মারাত্নক ভিড় ফুচকার দোকানে।
মারাত্নক ঝাল মাখা ফুচকার আলু
উফ্ফ্স ঠোঁট জ্বলে গেল ,বুকের ভিতর জ্বালা।
মন ভরে না তোকে ছুঁয়ে
মন ভরে না তোকে ছাড়া।

সবুজ ঘাসের উপর বিছানো প্লাস্টিক সেলোফেন
সবুজগুলো সব শুকনো হলুদ পাঁজরের মত আটকে কলিজায়।
নীল টুকরো টুকরো স্বপ্নের কবিতা আমার কলমে
সেকেন্ড নিজস্বির মত ডেস্কটপের ওয়ালে।
সবুজ মায়া ,সবুজ পৃথিবীর নিশ্বাসে বেঁচে ফেরা
আবারও হাজারো স্পর্শে তোকে ছুঁয়ে।

মাছরাঙ্গার ঠোঁট

মাছরাঙ্গার ঠোঁট
.............. ঋষি
=========================================
 আমি ক্রমশ সরে যাচ্ছি বিষুব রেখার দিকে
গ্রীষ্মের হাহা রৌদ্রের ছায়ায় আমি স্থির নির্বাক পথিক।
সমস্ত পিচ গলা রাস্তা গিলতে আসছে আমায়
সমস্ত অধিকার পা থেকে মাথা অবধি।
এক শান্ত আবরণ
অদ্ভূত স্থির।

শুধু একটা সিদ্ধান্ত নিতে চাইছি
ফেলে আসা বেলার বোবা রৌদ্রে এখন বিকেলবেলা।
সমস্ত দিঘির সবুজ শেওলা আবরণে মাছরাঙ্গার চোখ
ছো মেরে তুলে নিচ্ছি স্নেহ।
আরেক ছোয়ে তোর অস্তিত্ব
অথচ মন ভরছে না ,অথচ প্রাণ জুড়োচ্ছে না।
শুয়ে আছি চোখ বুজে শান্তির ধ্যানে
একমুহূর্ত তোকে ছাড়ছে না সময়।
যেভাবে ন্যাড়া জলের গায়ে মাছরাঙা বাদামি
আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে
আর কোথাও আমার মেশার নেই তোকে ছাড়া।

এক প্রাচীন গভীর বুকে মাথা রেখে সামনে বিশাল দিঘি
জ্বল জ্বল করছে তোর চোখ।
কথা জমছে বুকে ভিতর ,গলার কাছে আটকে কথাগুলো
ধীর পায়ে আচমকা একটা সমুদ্রের ঢেউ আসে ছুঁলো আমায়।
তিরতির শব্দে বিঁধে থাকলো বুকের ভিতর
মাছরাঙ্গার ঠোঁট। 

একাকিত্ব

একাকিত্ব
........................ ঋষি
====================================
তোমার নেশাতেই থাকবো
দুঃখ এলে জলেরও চোখ লাল হয়ে যায়!
দুঃখ আসলে কিছু নয় ,দুঃখ একটা বোধ
ভিতরে ভিতরে পুড়তে থাকা কারখানার চুল্লিতে ,
আরো খিদে শুয়ে থাকে
তোমায় ছুঁয়ে বাঁচতে চাওয়াটা একটা নেশা।

জীবন যখন ডিঙ্গি নৌকায় ভাসতে থাকে
যদি কোনদিন আবার দেখা হয়ে যায় তোমার আমার।
তুমি জানো জলকে যেভাবে দোলাবে সে দুলবে
যেমন ডিঙ্গি নৌকো মাঝ দরিয়ায়।
আমি দুলি ,নৌকায় ফুঁটো ডুবে যায়
আসলে এই জীবন জানে খুব আন্তরিক অভিনন্দনে।
আমি শূন্য যদি হয় ,না হতে পারে না
শূন্য আমার থেকে বহুদিনের বড়।

তোমার নেশায় থাকবো
একা থাকলে ভাবনারও  পাখা গজায়।
একাকিত্ব আসলে কিছু নয় ,একাকিত্ব একটা বোধ
দুঃখের সাথে গলা জড়িয়ে মিশে থাকা শরীর মাত্র।
সকলে বোঝে তবু
কেন যেন নিজে থেকে একা হয়ে যায়। 

Thursday, May 28, 2015

দেওয়ালে ফ্রেম

দেওয়ালে ফ্রেম
...........ঋষি
============================================
আমাদের নাম দেওয়া হোক দেওয়াল
জড়িয়ে চৌরাস্তা।
চারটে  আবদ্ধ  দেওয়াল একটা ঘর
ঘোরানো পুরনোদিনের সিঁড়ি বেয়ে খোলা বারান্দা।
খোলা আকাশ
অন্ধকার দেওয়ালে দুটো ফ্রেম তোমার আমার।

আমি জানি তুমি
জানলা দিয়ে রোদ দেখতে ভালবাসো।
তোমাকে চিনতে পারেনি কেউ মনে করো?
আমি চিনি অন্ধকার ঘরে টুকরো টুকরো অভিমান।
অসংখ্য প্রাচীন স্তবকে জমানো স্মৃতির ছবি তোমার দেরাজে
তোমার ছেলেবেলা ,তোমার যৌবন পেরিয়ে তুমি, তোমার অস্তিত্ব।
তুমি কলঙ্ক ধোয়া তুলসী পাতা
তুমি মুচকি হেসে কথা বলো লুকোনো ছলে।
ফ্রক পরে দাঁড়িয়ে থাকো পাঁচিল হয়ে
চুষতে থাক নরম ঠোঁটে সময়
অধিকার আর অবস্থান জুড়ে বিমূর্ত তোমার অভিমান।

আমাদের নাম দেওয়া হোক দেওয়াল
দালানের মোটা থাম,
চারটে আবদ্ধ দেওয়ালে আটকানো জীবন্ত নগ্নতা।
মেনে নিতে হয় ,মানতে হয় চুপচাপ দুর্যোগ
ভেজা রাতে ,
অন্ধকার দেওয়ালে দুটো ফ্রেম পাশাপাশি। 

প্রেম এলো অবেলায়

প্রেম এলো অবেলায়
.................... ঋষি
============================================
হৃদয়ের ঢাকনা খুলে গিয়ে ঢুকেছিলাম তোর ভিতরে
তোর বুকের পর্দার আড়ালে অদ্ভূত মোহগুলো ছায়া স্তব্ধ।
আমার অহংকার
আমি গড়িয়ে নামছিলাম তোর কপাল বেয়ে ,ঘাড় বেয়ে ,ঠোঁট বেয়ে।
ঠিক যেন গ্রীষ্মের গরমে বেয়ে চলা বিন্দু বিন্দু  ঘাম
আমি গড়িয়ে নামছিলাম তোর বুকে আমার ঠোঁটে,তোর নাভিতে।
সপ্তমে চড়া অর্জুনের চোখ ছিল তোর হৃদয়ে
তোকে পাওয়ায়।
তোর মাঝে মিশে যাওয়া অনন্ত রুপোলি আলো
প্রেম এলো অবেলায়।

এমন করে আরো গভীরে মিশে গেলাম কখন
তোকে আলাদা করে খুঁজে পাচ্ছি না দূরবীনে চোখ রেখে।
চিন্তাগুলো খামভর্তি নীলের ঠিকানায়
তোর শরীরে গন্ধ লাল রঙের টুপটাপ গোলাবি খুসবু।
সবটুকু অস্তিত্ব অকেজো যন্ত্রের মত সভ্যতার একপাশে
আমি তুই মিলে মিশে।
অস্তিত্বকে  কে শিল্পরূপ দিতে গিয়ে
দিগন্তরেখা টপকে যায় – শব্দ বন্ধ মানে না।
হৃদয় কথা শোনে না
ছুটে যায় দূরে তোর গোলাপী আদরের অন্তর গহ্বরে।

দৃষ্টি ছুঁয়ে যাচ্ছে
ঠোঁট ছুঁয়ে নামছে কোথাও অনন্ত আদরে জীবিত আকাঙ্খায়
এখন নীলাভ ঠোঁটে ওমগন্ধ । নগ্ন নাভি । অনতিদূর মহার্ঘ  পৃথিবী
শব্দগুলো অর্থহীন
কাঙ্খিত বৃষ্টির শব্দে ছুটে যাচ্ছে ট্রেন ।
হুইসলে শীৎকার । প্রশ্বাসিত আলাপন
এই তো   উড়ন্ত  ডানা।  হৃদয়ের মিষ্টি গন্ধ কড়া নাড়ে।
রিংটোন ...  সংশ্লেষে বাহুর বলয় ,,,,, অনন্ত ,,,,,,অবক্ষয়
বৃষ্টি আসছে  ...
রেনকোট  খুলে দিচ্ছে হৃদয়ের লিরিক্যাল হাত ।
            

না জানা মানে

না জানা মানে
.......... ঋষি
======================================
মানে জানতাম না অনেক কিছুর
যেমন জানতাম না অদ্ভূত এই আকর্ষণের মানে
ছোটবেলায় সকালের দরজায় টোকা শুনলে ছুটে যেতাম
মনে হত যাক আজ আর পড়তে হবে না
ঈশ্বররুপী কোনো প্ররিত্রাতা এলেন
আসলে তখন আমি ঈশ্বরেরও মানে জানতাম না

সদ্য ফোঁটা ফুল যেমন স্বপ্ন দেখে নতুন ফুলের
ঠিক তেমন ঈশ্বরও নাকি ধরনীতে থাকে প্রেমের রূপে
আসলে প্রেম যে অস্থির কোনো ভাবনার পোট্রেট নয়
প্রেম যে কোনো অবুঝ কবিতা নয়
সে অসীম বিশ্বে ঘুরতে থাকা ব্রম্হান্ড
মনে হলো একটু  ঘুরে দাঁড়ায় ,খুলে দি দরজা ,জানলা ,ভবিষ্যত
পৃথিবীটাই ঘুরতে থাকে টের পাই না
ঢোকার দরজা ,বেরোবার দরজা বদল হতে থাকে
হাত বাড়ায় জানলার বাইরে
একটা সুরঙ্গ সোজা নীল পথ ধরে এগিয়ে  যায়
সোজা ধাক্কা তোমার ঠিকানায়

মানে জানতাম না অনেক কিছুর
যেমন জানতাম না হরপ্পা সভ্যতার গুহায় প্রাচীন আদিমতার মানে ।
মানে জানতাম ফুলের আর তোমার গন্ধের
আসলে তফাৎ খুঁজেছি পাই নি নিজেকে খুঁজে।
শুধু দেখেছি ঈশ্বর দাঁড়িয়ে জন্মের পাঁজরে অসংখ্য মিশ্রনে
আর ফুল ফুটছে পৃথিবীতে রোজ বেঁচে থাকায়।

ফেলে আসা শহর

ফেলে আসা শহর
.................... ঋষি
==================================================
কথার সকাল খুলে আত্মগত রক্তকে ঝরাই তোমার উপর
মরে যাবো?
রক্ত নাকি বিষ ?
স্বীকৃতি, নিদ্রা আর যা যা বাকি আছে ?
সমস্ত বিষ দাঁতাল হাতির দাঁতের মত ক্রমবর্ধমান
আর তুমি বিষহরি শান্তির করাল ছায়া আমার শহরে।

আমি  ফুঁপিয়ে দেখি সাময়িক সরল ভোর
সোজা পথ ধরে হেঁটে যায় যশোররোড ধরে অনন্ত কুহেলিকার দিকে।
আমাকে জড়িয়ে ধরে মোমের তৈরী প্রেম
আসক্ত চোখের পাতায় নেশা দাঁড়িয়ে থাকে বিপ্লব।
শ্যামবাজারে  রোদে পোড়া মূর্তির দরজায়
খোলা জানলা ,খোলা আকাশ ,খোলা বিদ্রোহ ,খোলা অহংকার।
তখনি দেখি তুমি প্রস্তুত যুদ্ধের বর্মে ,
তখনি দেখি তুমি সম্পূর্ণ নায়িকা বেশে।
চুইংগামে আটকানো শহর ঝলসে ওঠে দুটো কাজলটানা চোখে
কালো টিপ ,সম্পূর্ণ তুমি আমার শহর।

তোমার ঝোলানো ব্যাগে লোকানো থাকে আমার কবিতা
তোমার ঠোঁটে ,বুকে ল্যাপ্টানো প্লেটনিক প্রেম।
বাঁধা চুলে ঘুমোলো বাতাস ,ঝিমন্ত গ্রীষ্মের তৃষ্ণা ঠোঁটে
আমি রক্ত ঝরায় সারা বেলা আমার শহরে।
মৃত আমি নাকি বিষাক্ত  স্পর্শ অন্তর গহ্বরে
নাকি ফেলে আসা আমার শহর।
  

Wednesday, May 27, 2015

তোমার নাম

তোমার নাম
.............. ঋষি
=============================================
সামান্য সময়ের মধ্যেই কি অদ্ভূত
আমার গলাটা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ হয়ে গেলো।
তোকে ভালোবাসি অথচ তুই প্রশ্ন করিস কাকে
রাষ্ট্রসংঘ বেবাক হয়ে গিয়েছিলো।
আর গরীব ছেলেটা কাঁদছিল একঘেয়ে ভনভনে মাছিতে
আপনাদের স্যাটেলাইট কি ঘুমোচ্ছিলো।

ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনায়ক ধরা ধরা গলায় জানালো-
এটা আর কোন একটা দেশের সমস্যা নয় ,
সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
আমেরিকা যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ আয়োজনে ,জানালো আমরা প্রস্তুত
অন্য দেশের সমস্ত রাষ্ট্রনায়ক জানলার ধারে ধরে কাঁদছিল।
ভারতবর্ষ বললো আমাদের কৃষ্ণের সুদর্শন চক্র ছিল
এখন আর টেকনোলজি নেই।
পৃথিবী ধংসের  দিকে এগিয়ে চলেছে
দেশে দেশে পুলিশ হিমসিম তোমাকে খুঁজতে।

অদ্ভূত, সামান্য সময়ের মধ্যেই কি অদ্ভূত
আমার গলাটা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ হয়ে গেলো।
আমি দেখে উঠলাম প্রেম আমার বিশ্বে
আমি বললাম প্রেমিক সকলে গর্বিত হৃদয়ে।
আমি সম্পূর্ন  হয়ে ভালোবেসে তোমার নাম নিলাম
যুদ্ধ থেমে গেল শুধু শান্তি ,শান্তি ,শান্তি সারা বিশ্বে।  

আতসকাঁচে তুমি

আতসকাঁচে তুমি
................. ঋষি
=============================================

তোমার হৃদয় ছোঁয়ার বাসনা ছুঁয়ে থাকে
ঢুকে পড়ো যখন-তখন স্বপ্নে আমার।
গরম বালিতে লুটোপুটি খাও, তৃষ্ণা ঢেলে দেও শিরা উপশিরায়
ছঁড়ে মারো বালি আমার গায়ে,ঝরতে থাকে উষ্ণতা তোমার।  
আমার স্বপ্নের ভেতর তুমিই শেষ কথা
আর আমি ভীষণ অরক্ষিত ,মোটেই প্রেকটিক্যাল নই  .
আর তাই ফিরে আসি কল্পনায় , জাগরণে...
এখানে তোমার জাড়িজুড়ি খাটেনা।

তোমাকে ইচ্ছেমতো আঁকতে থাকি
ক্যানভাসের প্রতি টানে তোমার শরীর রঙিন আমি।
শেষমেষ যখন তুমি ঘুমিয়ে পরো
আমি ক্লাসিফায়েডের পাতায় খুঁজি জীবন।
পেজ থ্রি ,পেজ ফোর,অসংখ্য অবিরত তৃষ্ণার রাতজাগে
তুমি ঘুমোয় স্বপ্নে আমার ঘোরে,
আর আমি আতসকাঁচে  জড়িয়ে রাখি তোমায়।

তোমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি
আর তুমি স্বপ্নে খেলতে থাকো খেলনাবাটি ,আদর করো আমায়।
যেন কোনো লংড্রাইভে আমি তুমি উইকএন্ডে
এগিয়ে চলে দ্রুত গতিতে রকেটের পিছনে পেখম।
ঘুম ভেঙ্গে যায় ,চোখ খুলে দেখি
জরুরী অবতরণ দরকার ,আকাশের গায়ে অবস্ট্রাক্ট ময়ুর পেখম।
আমি হাসতে থাকি ,আরো ছবি আঁকতে থাকি
আরো আরো অনেক ভালোবাসতে থাকি তোমায়। 

আমি আর আমার ছায়া

আমি আর আমার ছায়া ............... ঋষি ================================================ আমি আর আমার ছায়ার মাঝে একটা অমিল আছে যেটা হলো দূরত্ব কিংবা দুর্বলতা আছে যেটাকে এককথায় এভাবে বলা যায় আমরা ভোগসুখের ঢেউ ভাঙতে ভালোবাসি..., ভালোবাসি...চেরিরঙে জন্মাতে, ছেঁড়া মেঘের পালকে চুপকে-ছুপকে দুষ্টুমি করতে ...... ভালোবাসতে। আমি আমার ছায়াকে প্রশ্ন করি ইন্টারভিউয়ের ছায়াময় মুখটাকে আয়নায় দেখি। বয়স কত ? অভিজ্ঞতা কত দিনে ? কি করতে পারেন আপনি আমাদের জন্য ? অদ্ভূত ফোবিয়া চেপে ধরে দমবন্ধ অন্ধকারে। নিজেকে সংযত করি প্রশ্ন করি সামনে থাকা অবয়বকে আপনার হাইট কত ? আপনার গার্লফ্রেন্ড ওয়াল্ড এন্ড আটরাকটেড কিনা ? আপনি সেক্সে পারদর্শী তো ? উত্তর থাকে না মুখে কথা হারিয়ে যায় কালো মুখ করে ইনবক্সের জানলায়। জানেন আমি বুড়ো হয়ে গেছি আমার কাছে বেঁচে থাকাটা নগ্নতা নয় একরকম ভালোলাগা আচার যা বহুক্ষণ ধরে ভালোবেসে চিবিয়ে খেতে হয় আর ভালোবাসা হৃদয়ের ডিকসানারির খোলা জানলা।

জেনারেশন

জেনারেশন
............ ঋষি
==========================================
সেই থেকে বলে যাচ্ছি
শুনছেন সকলে, আমি কোন জেনারেশনের নই।
ভীরু ,উন্মাদ ,নষ্ট ,গলিত
বিষাক্ত ,কোমল, অন্ধ ,যোনি জনিত।
আমার কোনো পাপ নেই ,নেই রাষ্ট্রের অন্ধকার
শুধু শব্দের শূলগুলোতে আমি বিদ্ধ,
বলা যায় এক একটা বাঁশ আমার পিছনে ঢুকে যাচ্ছে।

আমি পাগল প্রতিভাবান দুটোর কোনোটাই নই,
কারণ এই শব্দগুলির অর্থ আজো আমার কাছে পরিষ্কার নয়।
নোংরা পৃথিবীর বায়বীয় আঁধার শুন্য  কল্পনায়
এখানে ঈশ্বর আর শয়তানের পার্থক্য নিরত অভিযান।
অফিসটাইমের বাসের দরজা জানলায় লেপ্টানো শরীরগুলো
এককটা মৃত শব।
যাদের জন্ম আছে অথচ মৃত্যু দৈনন্দিন
যাদের শরীর আছে ,রিপু আছে ,কলঙ্ক আছে ,বেঁচে থাকা আছে।
অথচ কোথাও প্রতিবাদ নেই ,নেই শিরদাঁড়া
নেই উপযুক্ত ভিত মানুষের কনসেপ্ট আমার কাছে।
সত্যি বলতে কি এই বেঁচে থাকাটা একটা প্রহসন
যেটা নিজস্ব কলমে  আউটডেটেড হয়ে গেছে।

পৃথিবীর সবুজনীল মাংসে দাঁড়িয়ে একজন কবি
দেশছাড়া হতে পারে ,খুন হতে পারে ,বিখ্যাত হতে পারে।
সবকটা সম্ভব এই জেনারেশনে
শুধু সম্ভব নয় বই পড়া,সময় নেই ,কৃপণ দৈনন্দিন।
কবিতা জীবিত কবির রক্তে শিরদাঁড়া বেয়ে অভিমান
বিক্রি নেই কবিতা ,ভিখিরী  কবি ট্রাম লাইনে মৃত
শুধু শব্দের সবুজ বাঁশ গুলো এখন  জেনারেশন হয়ে গেছে। 

এক ফোঁটা তৃষ্ণা

এক ফোঁটা তৃষ্ণা
.............. ঋষি
============================================
সবটুকু আমি ফোরাবার আগে
একবার অন্তত বলিস আমার কানে প্রেম আমি আছি।
সবটুকু ফোরাবার আগে আমার চিতাকাঠের প্রতি দমকে আগুনে
প্রেম আমাকে ভালোবাসিস।
ঠিক যেমন সোনালী দিনে তোর হাত ধরে হেঁটে যাওয়া তেপান্তর
প্রেম আমাকে আরো অনেক হৃদয়ের কাছে রাখিস।


যেদিন তোর খোলা বুকে বট,সুন্দরী ,হিজলী  সবুজের ভিড়
সেদিন আমি আদম হয়ে তোর ধ্যানে।
সামনে চেয়ে দূর বহুদূর মিশরীয় পিরামিডের অদ্ভূত আকর্ষণ
চারিদিকে হলুদ মরুভূমি।
তৃষ্ণার্ত জমি হাহাকার করে
অথচ আমি সবুজের কবিতা লিখি।
আসলে প্রেম তোকে সবুজ করে রাখি
যেমন জীবন ও জীবিত কল্পনায় আরো গভীরে প্রেম,
তুই জানিস তোকে বাঁচিয়ে রাখি।
তোর কবিতার পাতায় আজকাল আমার অহংকার হয়
প্রেম তুই জানিস আমি তোর মাঝে বেঁচে থাকি।

সবটুকু আমি ফোরাবার আগে
একবার অন্তত বলিস আমার কানে প্রেম আমি আছি।
আমার চিতার লাল রঙের আগুনের অনুভূতিতে প্রেম জানাস আমায়
আমি বেঁচে আছি।
ঠিক যেমন বাঁচে সবুজ হৃদয় অনন্ত ধু ধু কিরণে মরুভূমি
অনন্ত অপেক্ষায় তোর এক ফোঁটা তৃষ্ণার। 

এটা সিনেমা না




এটা সিনেমা না
............. ঋষি
==================================================
দূরত্বের ফাঁকে একটা হিংস্র পাখি বসে
ছো করে নেমে আসে বুকে ,তুলে নেই ভাবনাদের আদিম আস্ফালন।
জাদুঘরে রাখা রঙচটা পুরনো তলোয়ার আজও  ভাবে
সাহসী কোনো আদিম রক্তের গন্ধ।
অথচ হৃদয়  বলে থেমে যা ,থেমে যা ,থেমে যা
মুহুর্তে মুহুর্তে করজোড়ে প্রনাম বাঁচার লোভে।

কয়েকশো মুহূর্ত জুড়ে একটা ছবি চিরকালীন চলে সিনেমার অবচেতনে
জীবনের এই গতির সিনেমায় সবটাই কোথাও স্থির।
একমাত্র নিষ্ঠুর সময় ছাড়া
সকলে বদলে যায় বিনা কারণে ,বিনা বাঁধায় ইচ্ছে মত।
অথচ অদ্ভূত দূরত্ব বদলায় না
বদলায় যন্ত্রনায় রাখা টুকরো টুকরো সিনেমা মুহুর্তগুলো।
জমা হৃদকোষে আতঙ্ক বাড়তে থাকে
বাড়তে থাকে আপদকালীন সাইরেনের জোর।
উফ্ফ্স যদি হারিয়ে যায় ,যদি হারিয়ে যায়
সব তো আর সিনেমা নয় ইচ্ছেমত জীবিত আকাঙ্খায় নায়কের বুক ,
কখনো বুক পোড়ে জীবনের টুকরো ছবিতে অনামী নায়কের।

দুরত্বের ফাঁকে জমা টুকরো টুকরো হাসি কান্না
কোনো হিস্র পাখির আতঙ্কে জড়ানো ভাবনারা লুকিয়ে বাঁচে।
রোজ প্রতিদিন তৈরী হয় নতুন তলোয়ার হৃদ কোষে
বয়ে যায় যাতনার রক্ত ক্ষুদ্র ধুকপুকে অবচেতনে।
অথচ সময় সে যে থামে না চামড়ার ভাঁজে লুকোনো অস্তিত্বের ওঠবোস
আসলে সময় ভালোবাসতে জানে না স্থির হয়ে।

Tuesday, May 26, 2015

পিতৃত্বের সুখ

পিতৃত্বের সুখ
................ ঋষি
============================================
নিজেকে জাগ্রত করতে
আকাশের গায়ে অসংখ্য ছোটো বড় স্নেহ।
শুনেছি স্নেহরা সর্বদা নিম্নগামী
আকাশ থেকে বাড়ানো হাত শুধু কবিতার পাতা।
জন্মানো পিতৃত্বের নতুন অধ্যায়
ঈর্ষানিত সভ্যতার ঝংকারে ফুরিয়ে যাওয়া।

খালি পা। ছোটো ছোটো সর্বত্র আঁকড়ে থাকা আহরণ
বাবা আমি আকাশ ছুঁয়ে যাবো।
আকাশ ছুঁতে তো চেয়েছি আমি পূর্নিমা রাতে
অন্ধকার ছিঁড়ে ঝলসে ওঠা চাঁদের মুখ।
সন্তানের সুখ
আদিম  থেকে আদিমতর গ্রহে সর্বত্র কোলাহল।
পৌনপুনিক কোলাহল ছোটো ছোটো পায়ে এগিয়ে আসা স্মৃতিরা
আমি সে মিলেমিশে একবার ,
অন্তত আগামী একশোবার আমি বলে যাব
পিতা আর পুত্রের মেলবন্ধনে জন্মান্তর।

আমি চলে যাব
আকাশ থেকে যাবে ,যেমনতর অণুপরমাণু সমাবেশে।
একের পর এক স্পর্শ প্রাচীন মাটিতে আদিম আগ্রহে বিচরণ
বেঁচে থাকা চেতনার পরে মৃত্যুর অদ্ভূত আকর্ষণ।
আমি হারিয়ে যাব
তুই বেঁচে থাক বাবা সমস্ত অধিকার অনন্ত মাঝে। 

একটু আলোর জন্য

একটু আলোর জন্য
.............. ঋষি
=========================================

একটু আলোয় আয় তোকে দেখি একটু
বহুদিন ত্রিমাত্রিক কল্পনায় ডোবে নি চোখের আলো।
আজ ডুবতে চাই
সত্যি আমি বুঝতে পারছি না তোকে কেমনে চাই।
মনে হয় আটলান্টিকের ভিজে মাটি স্পর্শ করে দেখি
মনে একবার , অন্তত একবার তোকে ভালোবেসে দেখি।

আদরে আদরে জীবিত আকাঙ্খার মেঘে জমা তোর চোখ
কাজল কালো পাগলপারা জোড়া চোখের ফাঁকে।
একটা কালো টিপ
আমার অস্তিত্ব কেঁপে যায় ভাঙ্গা জোত্স্নায়।
আকাশে চাঁদ মাটিতে নেমে আসে
জীবিত প্লাবন আমাকে ভাসাতে থাকে আদিপ প্রশ্রয়ে।
দূকুল ভেসে যায়
জমে ওঠে এক দ্বীপ ,স্বপ্নের চোখে আলোর প্রদীপ।
বড় করুন এ আলো ,জীবিত যন্ত্রনাময়
আসলে যন্ত্রনায় তোকে কি ভালোবাসা যায়।

একটু আলোয় আয় তোকে দেখি একটু
বহুদিন জীবিত কল্পনায় এ চোখে আসে নি কোনো সুখের স্বপন।
একটু বাঁচতে চাই ,একটু হাসতে চাই তোর সাথে
আবারও বৃষ্টি যদি  আসে।
একটু ভিজতে চাই ,তোকে ভিজিয়ে আমার ভিতরে বাহিরে
আমি আবারও বাঁচতে চাই মাতাল সুখে।

চেনা ঠিকানায়

চেনা ঠিকানায়
................ ঋষি
=========================================
জানি না আজকাল দিনগুলো কেমন কেটে
আমি আছি তো,
চিমটি কেটে দেখে নি সময়ের ফাঁকে।
চেনা ইনবক্সে জমতে থাকা বাস্পরা সব স্টিম ইঞ্জিন
ছুটতে থাকে কু ঝিক ঝিক রেলগাড়িতে ,
এক কল্পনায় আবার কোনো নতুন ঠিকানায়।

শহর থেকে শহরে ঠিকানা বদলায়
চেনা বুকের ব্লাউসের ফাঁকে জমতে থাকে ধুলো মাটি ঘর।
চেনা আদরে জীবন ঘুরে দাঁড়ায়
নতুন  স্টেশন ,জীবনে নতুন মোড়।
সবটুকু অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না
প্রতি মুহুর্তে তোকে ভুলে থাকা যায় না।

এক বার ভাব ,একবার ভেবে দেখ আমি নেই
আমি নেই কোনখানেও
কেমন লাগছে তোর ?
চেনা আদরে রুপোলি মোড়কে অভিশাপ হারিয়ে যাওয়া
আর একটা ব্যাথা  ছুঁয়ে যাওয়া।
ভাবা যায় না তোকে ছাড়া আর, আর  না।

জানি না আজকাল দিনগুলো কেমন কাটে
ঘুমের ঘোরে অবচেতনে।
তোর হাত ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা এই বেঁচে থাকা চিরকাল
জানি জীবন থামে না ,থামতে জানে না।
তবুও কোথাও ,কখনো ,কোনোদিন চেনা তুই
আমার দরজায় ,আমার চিতার কাছে। 

নেশাতুর দিন

নেশাতুর দিন
................ ঋষি
==============================================
যতটুকু  ছিল সবটাই নিরীহ আস্তরণ বুকের ভিতর
আর বিষগুলো বিস্ময় জীবনের কান্না বারংবার।
তোমাকে বুঝি নি কিংবা তুমি বুঝতে দেও নি
তোমাকে বোঝার মত অধিকার আমার ছিল
আর তোমার কান্নার রুমালে ছিল আমার মনখারাপ।

গঙ্গার নীল নৌকার মাঝে
কিছুটা সময় পাশাপাশি ঠোঁটে সিগারেটের জ্বলে যাওয়া বাসনার।
নিত্য অনিত্যের মাঝে তোমাকে ছুঁতে চায়
বুঝি নি ,আজকাল বুঝতে পারি না পাগল প্রেমের আত্মায়।
নেশার সুর, গড়িয়ে নামা ঠোঁট ঠান্ডা বিষাক্ত যন্ত্রনায়
হাজার ডেসিবেলের পৃথিবী থেকে দীর্ঘশ্বাস।
বিষাক্ত বাস্পরা সব চ্যাট চ্যাটে ঘাম তোমার শরীরে প্রতি ভাঁজে
আমি অবাক হয়ে যায় ,অবাক চোখে দেখি।
চেনা বিস্ময় ,চেনা শরীরের ভাঁজে আদিম আকর্ষণ
কখনো হয় নি ,কখনো বুঝি নি আগে ,
কি এক আদম ঘোড়া দুরন্ত এই নেশাতুর দিনে
দৌড়চ্ছে সীমা ছাড়িয়ে অসীম কল্পনার।

যতটুকু ছিল সবটুকু বেঁচে থাকার লোভ বুকে মাঝে
আর চেনা বিষগুলো অচেনা পাত্রে লোভাতুর মৃত্যুর সুখ।
তোমাকে বুঝতে চাওয়ার যন্ত্রনাটা এক আদিম লোভ
তোমাকে কাছে পাওয়ার ইচ্ছা ডানায় চাতকের কল্পনা
আর তোমার জমা অভিমান আমার রুমালের প্রতি ভাঁজে।

Sunday, May 24, 2015

তোকে ছুঁয়ে

তোকে ছুঁয়ে
............... ঋষি
====================================
তোর বুকের মাপে আমার ভালোবাসার জায়গা আছে
সংখ্যাগুলো শুধু তত্ব দিয়ে  বেঁধে রাখা।
আমি তো বাঁধতে চাই না ,শুধু বাঁচতে
অযুত নিযুত ওয়াল মানে নীল দেয়ালের নগররাষ্ট্র ,
আমি সেই রাষ্ট্রের আজব নাগরিক।
গালেহাত জমে বরফ গলে গিয়ে পুরো জল
আমি ঠিক কতটা সত্যি তুই আমাকে বল।

স্যাঁতসেতে পথ মাড়াতেই
চমকে ওঠে বুক।
স্পর্শ শুধু শরীর চেনে ,না চেনার সুখ
আমি শুধু হৃদয় দেখি ,হৃদয় মানে পাখি।
খাঁচার ভিতর  অচিন পাখির  মিথ্যা ডাকাডাকি
সত্যি কি তুই পারদ ছুঁয়ে বাড়তে থাকিস স্রোতে
আমার মতো তোকেও কি
পাগল বলে লোকে।

উদভ্রান্ত সব সঙ্গীত যাবতীয় দাপাদাপি
তোর বুকের সবুজ নিয়ে আজব মাপামাপি।
আমি শুধু জীবন খুঁজি স্পর্শ করি বুক
তোর বুকেতে লুকিয়ে থাকা আমার জীবিত সুখ।
রাস্তায় সেই ল্যাম্পপোস্ট শুধু আদর ছুঁয়ে যায়
তোর বুকেতে আমার কবিতা জীবিত থেকে যায়
আর ইচ্ছা ঘুড়ি বাতাস বাউলে একলা হয়ে যায়।  

বদলানো সময়

বদলানো সময়
............ ঋষি
==============================================
জীর্ণ ফটোগ্রাফ তবু দারুণ এক সুইসাইড নোট হতেই পারতো
ফের এ অপেক্ষার প্রলম্বন।
নিশ্চিত মৃত্যু থেকে দূরে আত্মদহনের অভিধানিক মুহুর্তে
কয়েকশো কবিতার পাতার কোঁচকানো আকুতি।
কেউ আমায় সেলফিস বলতে পারবে না
শুধু বিকেলের স্যান্ডুইচের জানলায় আঁকা
তোর মিষ্টি ঠোঁট।

যেহেতু আমার নির্জনতা তোর কাছে বিস্ময় হয়ে পৌছোচ্ছে না
শুকনো পাতা ভরে যাচ্ছে তোর স্পাইসি ইমেজ নিয়ে।
দেওয়ালের হাততালি দিয়ে পিঠ থাপড়ারাচ্ছে দেওয়াল
আমার কানে কেউ বলছে
ওদেরও কান আছে।
তুই শুনছিস  খুব কাছে আমার বুকের কাছে কান নিয়ে
ধুকপুক ,ধুকপুক শব্দের অদ্ভূত অন্মেষণ।
সময় খুঁজছে জীবন আবারও আরেকবার তোর কাছে
শুধু আরেকটা এস.ও.এস তোর কাছে আমার ফ্লাগ
আমি বেঁচে আছি তুই আছিস বলে।

অথচ সিমবোলিক শটে কী চমত্কার শকুনের ঠোট
ডুবে যাচ্ছে  তোর মাংসের বুকে।
শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে এলো সভ্যতার ঠোঁট
সমস্ত অধিকার চিত্কার করছে সমাজ ,দেশ ,রাষ্ট্র।
কিছু ধুসর কোলাহল
অদ্ভূত আকর্ষণে সময়ের দেওয়ালে লেখা হচ্ছে হৃদয়ের নাম
তুই জানিস আমি বদলে যাচ্ছি। 

কি করে বোঝাই

কি করে বোঝাই
............... ঋষি
==========================================
কি যেন মধু ঢেলে দিলি কানে
নারীর নারীত্ব পুরুষের আদরে গভীর প্রেমে।
কি করে বোঝাই তোকে আমার না বলাটুকু
জ্বলন্ত আগুন আমার প্রাণে
কি যে মধু ঢেলে দিলি কানে।

বুকের গভীরতায় বাড়তে থাকা সুখ
সুখের পারদে চোখ রেখে হিসেব কমে যায়।
সময় কমে যায়
জীবিত আকাঙ্খায় বাঁচার ইচ্ছাটুকু টুকরো টুকরো ছবি.
ভাঙ্গা কাঁচের জানলায় সার্সি লাগানো অবুঝ বেঁচে থাকা
সার্সির কাঁচে এক একুশের চোখ।
দূরে খুব  দূরে আকাশে চোখ রেখে যায়
তুই তখন ষোলো আমি তখন একুশ
হৃদয় গভীরে আরো গভীরে ছুটে যায়।

কি যেন মধু ঢেলে দিলি কানে
নগ্নতা শুধু মানুষের চোখে ,মনে শুধু মুগ্ধতা থেকে যায়।
কি করে বোঝাই তোকে আমার না বলা দহন বেলা
আমার মৃতদেহ ছুঁয়ে জীবিতের স্লোক
সত্যি বুঝি আমি কিনা কিংবা আমার মতন অন্য লোক।  

কি চাস তুই ?

কি চাস তুই ?
,,,,,,,,,,,,, ঋষি
===================================
পাগল করবি আমায়
তোর ওই ঠোঁট ছুঁয়ে বিকেলের শেষ সূর্যে  
হারানোর রেশ।
হারিয়ে দিবি আমায়  তোর মাঝে আরো গভীরে
যেখানে তোর বুকের গন্ধ ছুঁয়ে যাবে আমায় স্নেহে।

কি চাস তুই
মাতাল করবি আমায় তোর ওই নেশার চোখ।
আমার শহর জুড়ে মারাত্মক ভাবাতঙ্ক
তোর খোলা বুকে উজার করা সামুদ্রিক ঢেউ।
বাড়তে থাকা উষ্ণতার পারদে
একটা গরম দিন।

কি চাস তুই
আমি আরো পাগল হই তোর আদরে।
তোর নাভিজুড়ে  বাড়তে থাকা কলমে পদ্ম
কয়েকশো সভ্যতা প্রাচীন  তোর  উপকথা।
বাড়তে থাকা সীমানায় সুখে
একটা  আদুরে দিন।

পাগল করবি আমায়
তোর মিষ্টি হাসি এক ঝাঁক স্বপ্ন ঘোর
আমার চোখে।
হারিয়ে দিবি আমায় তোর মাঝে পাগল প্রেমে
আরো গভীরে এই সন্ধ্যে বেলা। 

সত্তরে এক পুরুষ

সত্তরে এক পুরুষ
.................... ঋষি
========================================
কড়িকাঠ গুনে-গুনে প্যাঁচানো সিঁড়ি নেমে যায় রাস্তায়
বাড়িটা খুব পুরনো।
একধারে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় মহীরুহ
বারান্দার রেলিঙে দাঁড়িয়ে প্রায়  সত্তরে এক পুরুষ।
সেও কোনদিন যুবক ছিল
সেও ছিল এই ব্যস্ত শহরের মাঝে ব্যস্ত কোনদিন।

পুরোনো হেলান থুতনি রাখা প্রেত কথারা
গরাদে উঁকি মেরে যায় কপোত ,কপতি।
তার চোখে আজও রঙিন আভা
তার প্রেমিকাকে সে দাঁড়িয়ে দেখে রোজ.
দীর্ঘশ্বাস কিঙবা স্বভাবে শ্বাসের ভুল
কিন্তু সে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিদিন তার অপেক্ষায় ,
যদি একবারও তাকে ফিরে পাওয়া যায়।

মৃত্যু আসে নি কখনো মানুষের স্বইচ্ছায়
সেই সত্তরে দাঁড়ানো পুরুষ মৃত্যু কল্পনা করে না আজও।
শুধু ভাবে যদি ফিরে যাওয়া যায়
শুধু ভাবে যদি আরেকটু  জীবিত থাকা যায়।
তার প্রেমিকা আর প্রেমিকের ঠোঁট
হাত পুড়িয়ে লেখা যেকোন নাম ,
আবার হয়ে পড়ে ভুলপ্রবণ অক্ষর কয়েক।  

কড়িকাঠ গুনে-গুনে প্যাঁচানো সিঁড়ি নেমে যায় রাস্তায়
বাড়িটা খুব পুরনো ছিল।
আজকের সকালে হেডলাইন  বাড়িটা আর নেই
সে বারান্দার রেলিঙে দাঁড়ানো ভদ্রলোক আজ মৃত।
আমি উঠে দাঁড়ালাম ,ছুটে গেলাম সেই বারান্দায়
বারান্দা দিয়ে দেখি আমার শহর বদলাচ্ছে রোজ। 

অরিত্র আমার বন্ধু (৭)

অরিত্র আমার বন্ধু (৭)
.............. ঋষি
=======================================
অনেক দিন তোর খবর নেওয়া হয় নি অরিত্র
কেমন আছিস তুই ?
তুই কি আগের মতন আছিস
নাকি সময়ের প্রলাপে তুই বদলে গেছিস।
অরিত্র তোর মনে আছে ইস্কুল পালিয়ে সেই আমবাগানে
তুই গাছে উপরে আমি বলছি তুই পরে যাবি।
তুই বললি মানুষকে কখনো ভয় পেতে নেই
অরিত্র তুই মানুষ হতে চেয়েছিলিস।

কাল রাতে স্বপ্ন দেখলাম তুই আমার শিয়রে
বলছিস কিরে কেমন আছিস ?
শোন অরিত্র আমি ভালো আছি
বয়সের ভারে পেটে চর্বি ,চোখে একটু কম দেখি বটে।
অফিসে আমাকে সবাই স্যার স্যার ডাকে
আমি হাসি অরিত্র।
আমি তোর মতো মানুষ হতে পারলাম না ,
শুধু স্যার হয়ে গেলাম ,জীবিত রয়ে গেলাম
কিন্তু আমার মানুষ হওয়া হলো না।

জানিস অরিত্র
বন্ধুদের মধ্যে আমার কারো মুখ তেমন মনে আসে না।
কিন্তু তোরটা আমার মাঝে মধ্যে স্বপ্নে আসে
রেল লাইনে কাটা তোর মাথাটা।
তোর বুকের মধ্যে লুকোনো কথাগুলো যেগুলো আমি জানি
কিন্তু তুই কখনো মাধবীকে বলিস নি।
মাধবী ভালো আছে ,আমরা সকলে ভালো আছি
শুধু তুই নেই ,তোর কথা খুব মনে পড়ে অরিত্র। 

বলতে নেই এসব কথা

বলতে নেই এসব কথা
...................... ঋষি
============================================
একটা কাঁটা ,মাছের কাঁটা
অনেক কাঁটা ,ভীষণ ব্যাথা।
না আমি বলতে পারছি না ,আসলে বলতে পারবো না
মেয়ে আমি ,কন্যা আমি ,স্ত্রী আমি ,মাতা আমি।
কি ভাবে বলি ,
আমার লজ্জা করবে না।

বুকের কাছে আটকে আছে শুকনো রজনীগন্ধার বাসি গন্ধ
কবেই শুকিয়েছে ফুলগুলো।
শুধু তার  নির্মম অধিকার ছেড়ে গেছে আমার ভিতরে বাহিরে
শুধু অধিকারটুকু রাখা আমার রান্নাঘরে ,আমার পুজোর দালানে ,
আমার ভাঁড়ারে ,আমার বিছানায় ,আমার আলমারিতে।
কিন্তু আমি কোথাই সেখানে
কিন্তু আমি কোথাই ?
কোথাই আমার খোলা আকাশ ,কোথাই আমার ইচ্ছা
শেষ কবে হেসেছি আমি মন থেকে,
শেষ কবে কেউ বলেছে আমাকে ভালোবাসি।
আসলে কখন যেন নিজেকে বিলোতে বিলোতে
আমি ভিখারী হয়ে গেছি।

সন্তানের জন্য আমি আছি ,পতি সেবায় আমি আছি
সমাজের নাটকে আমি আছি ,বিছানোর চাদরে আমি আছি।
কিন্তু আমার ইচ্ছা ?
ছোটবেলায় মা বললো একদিন তুই বড় হয়ে গেছিস
আমি অবাক হলাম নিজের পরিবর্তনে ,.
হয়ত খুশি হলাম বেশি আমিও মা হয়ে যাচ্ছি।
ফ্রক ছেড়ে শাড়ি পরলাম ,স্কুল ছেড়ে কলেজ গেলাম
প্রথম প্রেম ,চোখে চোখে কথা ,প্রথম চুমু ,
আমি ভাবলাম আমি প্রেমিকা হয়েছি।
তারপর সেই রজনীগন্ধা ,বিছানার চাদর ,স্বামী
আমিও মা হলাম ,খুব খুশি হলাম মনে মনে ,
আমার সংসার ,আমার স্বামী ,আমার সন্তান।

আমার আমিত্বের মাঝে আমি বিলীন
কি করে যেন আমি একটা অধিকার হয়ে গেলাম সবার কাছে।
কিন্তু সত্যি বলছি কখনো বুঝতে পারলাম না নিজের অধিকার
হয়ত এই ভাবে একদিন শেষ হয়ে যাবো।
না বলবো না মেয়েদের বলতে নেই এসব কথা
এগুলো লুকোনো থাক ,যাওয়ার সময় সাথে নিয়ে যাবো। 

Saturday, May 23, 2015

bangla lotipha


আপন হিয়ায়

আপন হিয়ায়
................ ঋষি
=================================================
ছায়া মুছতে মুছতে ,ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে  বেড়ে যাচ্ছে ক্ষত
আদরের ঠোঁটে নিচ্ছে কাক ও কলাপাতা।
ক্রমশ বিলীন মেঘলা মিশে যাওয়া নাটকে
রবিঠাকুরের গান ,
মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় মাতালো
দোলে মন ,দোলে অকারণ। .............

নার্সিংহোম আস্ত একটা শরীর শুয়ে আছে
বায়ু শূন্য ইনজেকসনের সিরিঞ্জে আস্ত এক স্বপ্ন প্রবেশের অপেক্ষা।
আমি বলছি চামড়া মোটা হয়ে গেছে
চামড়ার প্রতি স্তরে বাড়তে থাকা সময়গুলো শুকিয়ে আছে।
পান ,সুপুরি ,জর্দা সমস্ত মুখে পুরে
তোমার লাল ঠোঁটে একটা আস্তরণ লেগে আছে।
জমে যাওয়া অবক্ষয়ের পাতায় নিশ্চিন্ত সময়ের পাতায় অলংকার
তোমায় বলি নি নার্সের বুকে চোখ লাগাতে নেই।
আসলে আজকাল লাগে না
পুরো চোখ তোমাকে শুষে নেয় নিশ্চিত জীবিত কল্পনায়।

অসুখের ডেসক্রিপসন  শোনাতে শোনাতে আসল কথাটা বলা হলো না
আসলে সব কথা বলা হয় না গোল পোস্টে একলা দাঁড়িয়ে।
ক্রমশ গোল খেতে খেতে পিছোতে পিছোতে মনে পরে
সেই রবিঠাকুরে গান ,
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে
দেখতে আমি পাইনি তোমায়। ..............
  

স্বপ্ন দেখবো না

স্বপ্ন দেখবো না
........... ঋষি
====================================
যেমন করে স্বপ্ন লেখা যায় ঠিক তেমন না
ঠিক তেমনে চাই না তোর ঠোঁট।
ঠোঁট চাইবো ঠিক ,চাইবো তোর সবটুকু যখন
একলা বৃষ্টিতে ভিজে আমি তোকে ছুঁয়ে যাব,
কিংবা  চুঁয়ে নামব বিন্দু বিন্দু ঘাম গ্রীষ্মের বিকেলে
তোকে ছুঁয়ে জড়িয়ে চুমু খাবো।

খুলে ফেলবো তোর সোনালী ব্লাউসের দূরত্ব
এক আকাশ চাদরে তোকে জড়িয়ে আমি ডুবে যাব
গভীর সমুদ্র মাঝে।
যেখানে প্রেম তৃপ্ত এক কবির খেয়ালে
যেখানে প্রেম আগুন আমাদের হৃদয়ের দেওয়ালে।
তোর মত আমি জ্বলে যাব ,পুড়ে যাব
এক জীবিত ইচ্ছায় আমি তোকে পেয়ে যাব।
অথচ স্বপ্ন দেখবো না
আসলে  স্বপ্নরা সব বাসি ,মিথ্যে হাসাহাসি
আমি তোকে একলা করবো না।

যেমন করে স্বপ্ন লেখা যায় ঠিক তেমন না
স্বপ্নরা হেঁটে যাবে তোর ঠোঁট ছুঁয়ে আগুনে স্পর্শে।
তোর লুকিয়ে রাখা অভিমানে আমি ইচ্ছা দেব না
শুধু আদর করে তোকে কোলে তুলে নেব।
কিংবা তোর ঠোঁটে ঠোঁট ঘষে বলবো
শোন আমরা আর স্বপ্ন দেখবো না।

ধর্ষিত মা

 ধর্ষিত মা
......... ঋষি
====================================

জল লুকিয়ে এগিয়ে গেলাম প্রগতির দিকে
আমাকে  তুলে নিয়ে গেলো তারা।
নগ্ন করার আগে জানানো দরকার
আমার শরীরে কিন্তু তাদের মায়ের অঙ্গ,
আমার শরীরে কিন্তু তাদের জন্ম
আমি মা আর কত নগ্ন করবি ।

একটা অন্ধকার গলিতে তারা ছিঁড়ে  খেতে এলো
একটা মই ভাসানো দেশ কান্না ঠেলে দিল।
উগরে উঠলো অন্ধকার চুল্লি ,লিঙ্গ ,যোনি কতকিছু
সকলে নগ্ন ,আমরা সকলে নগ্ন।
নগ্ন সভ্যতা ,নগ্ন দেশ
নগ্ন আমি ,নগ্ন পৌরুষ।
আউদিপাস নাটকের শেষ দৃশ্যে
সভ্যতা মায়ের সাথে সঙ্গমে আরো নগ্ন।
হা ঈশ্বর ধর্ষণের শুরুতে ,ধর্ষণের শেষে ,সঙ্গমের শীর্ষে
আমি চিত্কার করে গেলাম আমি মা ,আমাকে চেন তোরা।

রক্তে ভেসে যাচ্ছে শরীর ,আমার দেশ তোদের মা
মায়ের যোনিতে চান করা সভ্যতার অন্ধকার।
মায়ের উরুর ফাঁকে জন্ম অঙ্গের সাথে তোদের সংঘর্ষ
কি চাস তোরা ,কিভাবে চাস তোরা।
আর কত নগ্ন সভ্যতা ,আর কত নগ্ন করবি আমাকে
আমি মা , আর কত শরীর করবি। 

প্রথম আলো

প্রথম আলো
............... ঋষি
===============================================
তাদেরকে জানানো দরকার
ভোরের কুয়াসার পর সামনের রাজপথে নতুন দিন।
তাদের জানা দরকার দেওয়ালের তৈরী পাঁচিলগুলো মোটেই উত্তর নয়
ঐকান্তিক প্রয়াসে শুধু উঠে আসে মুখে রক্ত
দেওয়ালের সাজানো বাড়ি মোটেই নিরাপদ নয়।

দেয়ালের বাইরে থেকে দেয়ালবন্দী দৃশ্যগুলো বিকিরিত হচ্ছে
এবং তা মুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছে।
গভীর অরণ্যের মাঝে শেওলা ধরা বুকের মাঝে
খোলা আকাশে এক ঝাঁক পাখি উড়ে যাচ্ছে আরো গভীরে।
ইচ্ছার দরবারে গাওয়া হচ্ছে ভালো লাগার সুর
মেঘলা দুপুরে একলা বাসনাগুলো  মৃত্যুমুখী অন্তরের ধোঁয়ায়,
বিছানার চাদরে শুধু বিলোনো নাটকের সঙ্গম।

তুমি যতই দীর্ঘজীবী হও এবং
একটি বৃক্ষের ছোটবেলা সেজে বনসাই করে রাখো।
যতই মৃত সাজো না কেন
ব্যাপারগুলো মৃত মানুষের দাঁত নখ কিংবা ,
মরে যাওয়া কবিতাদের হারিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু নয়।
সবটাই সাজানো দিনের আলোর মত পরিষ্কার
অনেকটা দিনের প্রথম আলো।

আবার যে কোনো জননীর লুকোনো সন্তান কর্ণ হবে প্রতিবার
তা যেমন সম্ভব নয় ,
তেমনি প্রতিটা প্রতিবাদ আগুন ধরানো ব্যতিক্রম হবে ,সম্ভব নয়।
কিছু প্রতিবাদ মরে যাবে ,কিছু প্রতিবাদ আকাশ পাবে
তবে তাদের জানানো দরকার বাড়িগুলোর ভিত যে নরম। 

বদলানো পরিচয়

বদলানো পরিচয়
............... ঋষি
=========================================
ঈশ্বর যেখানে পরাজিত ভূমিকায়
সেখানে তুই কাঠের পুতুল অন্য হওয়ায়।
এমন হয় না ,আসলে হওয়া যায় না
তুই মানুষ, রক্ত মাংসের অধিকার বুঝে নিতে হয়।
কেউ ছারে না ,ইতিহাস সাক্ষী ,কুরুক্ষেত্র সাক্ষী
অভিমানে হৃদয় পোড়ে,জীবন বাঁচে না  .

নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মানে ভাঙ্গন না
নিজেকে সরিয়ে রাখার মানে উত্তর না।
প্রশ্ন একটা থেকেই যায়
কখনো ,কোথাও ,কোনদিন স্পর্শ গুলো ছুঁয়ে যায়।
একলা ,সত্যি বড় একলা করে যায়
যখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে হৃদয় দেখে খোলা আকাশ ,নীল চাদর
সবটুকু দুম করে হারিয়ে যায়।
বড় নগ্ন ,বড় নগ্ন লাগে নিজেকে
না বলা প্রশ্নদের ভিড়ে উত্তর খোঁজার পালা ,
অথচ উত্তরহীন প্রশ্নগুলো একা করে যায়।

ঈশ্বর যেখানে নিশ্চিত ভীরুতায় লাজুক কামনা
সেখানে তুই ভাঙ্গাচোরা প্রাচীন ভগ্ন স্থুপ।
এমন হয় না ,আসলে বাঁচা যায় না
তুই মানুষ ,রক্ত মাংসের পরিচয় জেনে নিতে হয়।
কিছু বদলে না নিজে থেকে
শুধু নিজের অস্তিত্বের পরিচয় বদলে নিতে হয়।

নিশ্চিত তুই

নিশ্চিত তুই
.............. ঋষি
=============================================
ছুঁয়ে যাওয়া আদুলে হাওয়ায় তুই
আমার ভিতরে ,বাহিরে স্পন্দিত হৃদয়ে তুই,
নিশ্চিত অধিকার অভিধান তুই।
জানি জীবন কেটে চলা সার্কাসের অন্য মানে
একটু মিষ্টি স্পর্শ তুই।

আসলে তোকে ছুঁয়ে দেখিনি কখনো
সস্তার ফুটপাথে তোর চায়ের ভাঁড়ে ঠোঁট রাখিনি কখনো।
শুধু হেঁটে গেছি তোর পাশে পাশে
মাঝে মাঝে ছুঁয়ে শরীরের শিরা উপশিরায় আগুন।
তোর কালো টিপ ,পাতলা ঠোঁট ,এক ঝলক জ্বলন্ত লাভা
আমাকে পুড়িয়ে গেছে খুব গভীরে।
হৃদয়ের ভিতর যুদ্ধকালীন তত্পরতায় বেজে উঠেছে সাইরেনের মানে
আসলে জানিস তো আমার হৃদয় জানে ,সত্যি জানে
পুড়ে যাওয়া সময়ে একা থাকার মানে।
আর কিছু নয় শুধু তুই ,তোর সত্বা,তোর অধিকার
সম্পূর্ণ অভিধানে সম্পূর্ণ বাঁচার অর্থ নিশ্চিত তুই।

ছুঁয়ে যাওয়া আদুলে হাওয়ায় তুই
আমার সামনে কেটে যাওয়া সন্ধ্যার শঙ্খ ধ্বনি তুই ,
নিশ্চিত সমস্ত একাকিত্বের উত্তর তুই।
জানি জীবন চলে যাওয়া সময়ের মৃত শব ঘর
যেখানে অবিরত রক্তক্ষরণে শেষ শান্তি তুই।  

Friday, May 22, 2015

বাঁচতে ইচ্ছে হয়

বাঁচতে ইচ্ছে হয়
.............. ঋষি
===================================
কফিনের ভিতরে আমি আর তুই
ইচ্ছাগুলো ঝুরঝুরে মাটি বুকের উপরে
পাশাপাশি
বাঁচতে ইচ্ছে হয়
আজকাল আমার বাঁচতে ইচ্ছে হয়
আয়নার দেখানো মুখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
উত্তাল কবিতার পাতায় ইচ্ছারা একলা ঘুড়ি
উড়ি ,উড়ি হৃদয়ের পাতায় তোকে ছুঁয়ে

নৌকার মইয়ের উপরে আমি ,তুই
চারিদিকে চিকচিকে জলের তোড় হৃদয়ের ঘরে
ভেঙ্গে যায় আসলে ভাঙ্গতে ইচ্ছে হয়
শক্ত সব পাঁচিল ,সিমেন্ট ,বালি ,কংক্রিট
ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে কখনো ,কোথাও,কোনো মুহুর্তে
ইচ্ছেদের পেটে খিদে
একটা জীবন
আমার ভীষণ বাঁচতে ইচ্ছে হয়  .

কফিনের ভিতরে আমি আর তুই
আশে ,পাশে ছড়ানো ছেটানো বালি চোখের
খুব দূরে
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে ইচ্ছাদের চোখে আলো.
আসলে জীবনের পাতায় কালি কালো
আরো আরো ইচ্ছাদের সাথে আমি তুই পাশাপাশি
স্বপ্নের নৌকোয় ঘুমের ঘোর

অবচেতনে তোকে জড়িয়ে ভালোবাসতে ইচ্ছে হয়।  

Thursday, May 21, 2015

ঈশ্বর পরাজিত

ঈশ্বর পরাজিত
................... ঋষি
===============================================
আমি বৃষ্টি শেষে একগলা জলে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুঁজছি
জংলা ,জঙ্গল ,জমা পাঁকের ভিতর জীবন।
এখনই জল থেকে চাঁদের আলোয় বেছে বেছে
শাপলাফুল কুড়োবার সময়।
অথচ আমার পাঁজরে বিষ
পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছে নীরবে জনতা।

যারা প্রতিরাতে, জলে নেমে চাঁদের শরীরে-স্বপ্নে পা দিয়ে
নিজেকে বাঁচাতে চাই উপযুক্ত ফর্মুলায়।
সেই তো আমাদের জীবনের  প্রকৃত চিত্র শিল্পী
ঈশ্বর তুমি চিত্রকলায় পটু।
ক্যানভাসের জীবিকায় রক্তাক্ত অবয়ব প্রকৃত আবহাওয়ায়
আজকের বিশেষ খবর।
শরীর বদলে যায় ,জীবন বদলে যায় ,সম্পর্ক
শুধু লুকিয়ে থাকা পুকুরের তলার মাটিতে  জঞ্জাল,
শেওলা বাড়তে থাকে।

আমি বৃষ্টি শেষে একগলা জলে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুঁজছি
সারারাত জলের কোমর জুড়ে যে ব্যথায় কেঁপেছে বাতাস।
আলো ফুটছে সকালের ঈশ্বরের চোখে পাশাপাশি
গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে আলো।
পুকুরের তলায় ঝলমলে সব স্বপ্নের পাশা খেলা
শেষ দানে ঈশ্বর পরাজিত।

ভীষণ খিদে

ভীষণ খিদে
,,,,,,,,,, ঋষি
===================================
আমি শেষ কবে খেয়েছি মনে নেই
মনে নেই আমার দেশের গল্প  আর শেষের গল্পটা।
শুধু মনে আছে খিদে পায় ,
খুব খিদে পায়।

বারান্দার রেলিঙে শুয়ে থাকে বাপ ঠাকুরদার স্পর্শ
সবুজ মাঠে ঘুমিয়ে থাকে বাঁচার ইচ্ছা।
বৃষ্টি হয় ,আমি ভিজি
ছাতা থাকলেও ভিজি ,না থাকলেও ভিজি।
মাথার ভিতর চলতে থাকে ট্রাম
বুকের ভিতর গুমড়ে মরে অন্ধকার।
অদ্ভূত আত্মারা আমাকে ঘিরে থাকে
ঝনাত ঝনাত শব্দে ভেঙ্গে পরে চীনের প্রাচীর।

আমি চীন চিনি না ,চিনি চাউমিন
আমার দেশ ,রাষ্ট্র ,সমাজ বোধ নেই।
নেই বোধ কোনো অনুষ্ঠানের
বিয়ে বাড়ির ,জন্মদিন ,প্রেমের দিন ,আরো কত।
কেউ আমাকে স্পর্শ করে না
কোনো সম্পর্ক দাগ কাটে না।
শুধু খিদে পায়
ভীষণ খিদে আমার শরীরে কালসিটে।

আমি শেষ কবে খেয়েছি মনে নেই
মনে নেই শেষ কবে চুমু খেয়েছিলাম তোমার ঠোঁটে।
আমার খিদেগুলো আমাকে একলা রাখে
আমি দাঁড়িয়ে থাকি বারান্দায়, সময় হাসে। 

ফেরা যাবে না

ফেরা যাবে না
.......... ঋষি
======================================
ফেরা হচ্ছে অ  প  রা  ধ  মূ  ল   ক
এই যে
বেঁচে থাকছি।
বেঁচে যাওয়ার চেয়ে কিছু  মূল্যবান নয়
বিচারাধীন বন্দীর শাস্তি চার দেওয়ালে।
বেঁচে থাকায় অজস্র ইচ্ছা
ইচ্ছার নামান্তর জীবন  জীবিত কবিতায়।

দেওয়ালে কার্নিশে চোখ আঁকছে খোলা আকাশ
বুকে নিয়ে সভ্যতার শেষ শব্দগুলো হিংসা নয়।
না কষ্ট নয়
না অভিমান নয়।
না একা থাকা নয়
বেঁচে আছি তোর সাথে তোর জানলায় চোখ।
একটু আদর ,আলতো করে তুলে নেবো বুকে
যেমন নীল আকাশের পাখি  আকাশের বুকে,
শুধু ফেরা যাবে না
কোথাও একমুহূর্ত আমাকে ছেড়ে অনেক দূরে।

ফেরা হচ্ছে অ  প  রা  ধ  মূ  ল   ক
এই যে
বেঁচে আছি।
একফালি আলো জানলা দিয়ে বুকে
নিঃশ্বাসে লোকানো অবুঝ প্রতিজ্ঞা।
বিচারাধীন বন্দীর আশা আবার পৃথিবী
কখনো ,কোথাও কোনদিন তোর সাথে। 

লুকোনো অভিমান

লুকোনো অভিমান
.............. ঋষি
======================================
যোজন অবধি এই আড়াআড়ি বিস্তারে
এতখানি অহংকার।
ছুঁয়ে থাকার লোভ আমার
বেঁচে আছি ছুঁয়ে থাকায় তোমাকে জুড়ে।
অদ্ভূত আহরণের মানে নিলোজ্জ খোঁজ আমার
সবটুকু অস্তিত্ব ছাড়িয়ে বাঁধানো ভিতে।

অহংকার বল তুমি ,বলে তোমার অহংকার
ছেড়ে গিয়ে, স্মৃতি নিয়ে বাঁচার অধিকার।
স্মৃতিরা সব চুলকানি মত ছড়ানো রোগ হৃদয়ের ভাঁজে
চুলকিয়ে আরাম।
অথচ তুমি আমি শুয়ে একসাথে কফিনের ভিতর
মাঝখানে রাখা এক আকাশ অধিকার।
শুধু স্পৃষ্ট স্পর্শের  লাবণ্য
শুধু অসুখ পেরোনো ট্রাফিক।
সবটুকু শুধু পাশে থাকা আর জড়িয়ে বাঁচা
আর স্মৃতিদের কবিতায় আসন্ন বৃষ্টি।

বৃষ্টিসম্ভাবনার মত অনিশ্চিত মেঘ নামানোর খেলাছলে
আকাশের বুকে আনাগোনা তোমার মুখ ভার।
জমানো তাপমাত্রা বেড়ে চলা পারদে
শ্বাস ফেলে খুলে দিলো জানলা-কপাট।
হা হা দুপুরের
তোমার অহংকার লুকোনো অভিমান। 

মুহুর্তদের কবিতা

মুহুর্তদের কবিতা
.......... ঋষি
=====================================
মুহুর্তদের কবিতা লিখবো বলে
কলমের নিবে আঠালো আঠা তোকে জড়িয়ে।
মুহুর্তদের জমে থাকা ঠান্ডা লড়াইয়ে
নিজেকে বড় ক্লান্ত মনে হয়।
তোর সাথে কাটানো মুহুর্তদের ভিড়ে অবিরত ঝংকার
কেঁপে উঠছে আমার ভিতরে বাহিরে।

আজকের কবিতায় কোনো স্পর্শ নেই
শুধু তোর ঠোঁটে আটকানো লুকোনো কবিতাগুলো।
তোর ব্লাউজের বোতামে আটকানো দীর্ঘশ্বাস
নিয়মিত বিশ্বাস আর আশ্বাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।
শহরের কোনো কোনো জমা মুহূর্ত
ফুটপাথে গরম চায়ে চুমু।
ঠোঁট পুড়ে যায় ,পুড়ে যায় সময়
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দেখা কপোতকপোতী।
একাকার ,লুকিয়ে পথচলা আমার শহরে
অলিতে গলিতে জমে থাকা তোর আমার মুহুর্তের ভিড় ।

মুহূর্তগুলো জমে আছে তোর কালো শাড়ির আঁচলে
কালো টিপের আড়ালে লুকোনো অন্য মুখ।
ভীষণ চেনা এক অচেনা সড়কের দরজায় অবিরত
কে যেন দরজা খুলতে চায় আমার শহর।
বুকের প্রাচীরের আড়ালে লুকোনো ধ্বংসস্থূপ
শহর বদলাচ্ছে নিজের প্রতিষ্ঠায়।
 

আমার মাঝে

আমার মাঝে
........... ঋষি
===========================================
তুই জানিস না শেষ বলে কিছু নেই
যেদিন শ্রাবনের তুমুল প্লাবনে মেঘের কোনে হাসি।
যেদিন তোর হাতধরে ,ভিজে ফুটপাথ ধরে এগিয়ে যাওয়া
অনিত্য ,নিত্যর পথে।
একবারও জানিস ,একবার ও মনে হয় নি পথ ফুরিয়ে যাবে
মনে হয়েছিল পৃথিবী  থামবে থামুক।
জীবন থামবে থামুক
শুধু আমি আর তুই হেঁটে যাব যুগ ধরে যুগান্তরে।

প্রাগৈতিহাসিক পর্যায়ের কোনো শিশু সুলভ হাসি
তোর মুখের কোনে লাগানো হালকা আভা।
অবিতর অবিরাম বয়ে যাওয়া তিরতিরে নদী
আমার বুকে।
তুই জানিস ওই নদীর তলায় কোথাও আমি জমা শেওলা
তোর বুকের উপর এক আস্তরণ।
গভীরতায় থাকা কোনো না বলা কবিতা
স্যাক্সফোনের মধুর সুর ,মধুর ছন্দে ,
হেঁটে যাওয়া তোর হাত ধরে।

তুই জানিস না আমি হেঁটে চলেছি যুগান্তরে
শ্রাবনের তুমুল ঝরনায় আমি ভিজে চলেছি তোতে।
তুইও ভিজিস আমি জানি
আমার মতন তোর কাছে কেউ নেই আমি জানি।
শুধু জানি না তোর গলার কাছে জমে থাকা অভিমানের কারণ
আমি তো বলি নি কখনো তুই আমার নোস।
বরং বারংবার তোর হাত ধরে চেয়েছি
তুই শুধু যাতে আমার হোস। 

Wednesday, May 20, 2015

সবটুকু ছাই

সবটুকু  ছাই
..............ঋষি
==================================================
আগুন যা ক্রমে ক্রমে নিভে আসছিল
শেষ বৃষ্টির আসায় ,এসে চলে যাওয়ায় শ্মশানের ছাইটুকু।
ভিজে শরীরে ঠিক আমার মত নিস্তব্ধ
এক অবসরপ্রাপ্ত পৃথিবীর সামান্য চলাচল ওই আগুন
আর কিছুক্ষণ তারপর সবটাই ছাই।

মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নে ভাসছি
ছেলেবেলার সেই লাল ,নীল সব রঙিন পেন্সিল।
আমি ঘষে চলেছি মিশিয়ে দেওয়ার আশায় আরো রং
মা বলছে নষ্ট করিস না ,
ইশ দেখো নতুন পেন্সিলগুলো সব ছাই করে দিল।
আমি তখন সদ্যজাত পাখি
উড়তে চেষ্টা করছি পাখিদের সমাজে সবার সাথে ,
তার ওঠাপড়া ,ভাঙ্গাগড়া ,শেষে সেই ছাই।

পুড়ে যাওয়া কবিতার ডায়রির হাড় বের করা আকাশটুকু একটা জানালা
আমি জানালার বাইরে হাত বের করছি ক্রমাগত।
দূরে আরো দূরে সরে যাওয়া ম্যাজেন্ডা রঙের সময়গুলো ছেলেবেলা
নিচে গঙ্গা এই ছবির মতন একটা গোঙানি।
কেন জানি না জন্ম থেকে মৃত্যু আর মৃত্যু থেকে ছাই
সবটাই সমাপ্তি আমাদের চাই।
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে  দেখি আকাশটাকে
আবারও  বৃষ্টি এলো পোড়া যে এখনো বাকি।

আগুন যা ক্রমে ক্রমে নিভে আসছিল
আমি বুঁদ হয়ে বসে আছি দীর্ঘক্ষণ , চোখ বন্ধ।
আসলে অন্ধ, বুঝি না এই পোড়ার মানে বারংবার
জংলা রঙের পৃথিবীর জীবনে আবারও আমি ,
পুড়ছি কারণ মৃত্যুর পর তো সবটুকু ছাই। 

অ্যাশট্রের ভিতর

অ্যাশট্রের ভিতর
................. ঋষি

অ্যাশট্রের ভিতর থেকে উঁকি মারছে ক্লান্ত যোদ্ধা,
ক্লান্তই বটে।
জীবনের কবিতাগুলো কখন যেন শরীরময় রক্তের গন্ধ
টেরাকাটা বাঘের মুখে মিষ্টি স্বাদ।
বিস্বাদ বদলানো পর্যায়ের কবিতার পাতায়
খড়ি ওঠা দেওয়াল আর মৃত ঘরবাড়ি।

বাড়ির ভিতর শিশুত্ব জোর গলায় পড়ছে
আয় আয় চাঁদমামা টি দিয়ে যা।
আমি বলছি,আসলে শেখাচ্ছি
আয় আয় একটা জীবন স্পর্শ করে যা।
উঁকি মারছে অনাহার,বাসি-পোড়ারুটি, আর
সন্তানের স্তব্ধ মুখচ্ছবি-
আসলে প্রতিচ্ছবি।
পান্তা ভাতে জীবন বাই ওয়ান গেট ওয়ান প্রসেসে
বাড়তে থাকা তলপেটে চাপ।
রক্তবমি ,মহামারী জীবিত কবিতার পাতায়
উত্থিত শিশ্নের শেষ চিত্কার।

অ্যাশট্রের ভিতর থেকে উঁকি মারছে ক্লান্ত যোদ্ধা,
ছাইয়ের ভিতরে শুয়ে আছে  ,
জীবনের কবিতাগুলো যেগুলোর জন্ম আছে বেওয়ারিস শরীরে
অথচ নাম হীন ,গোত্রহীন  অজস্র ক্রন্দনে।
ছড়ানো ছেটানো ফিল্টার অ্যাশট্রের ভিতর
নিজস্ব গোপনীয়তায় আপন হিয়ায়। 

Tuesday, May 19, 2015

স্পর্শ সুখে

স্পর্শ সুখে
........... ঋষি
==============================================
মৃত্যুর ক্যানভাসে স্পর্শসুখ
কুয়াসার ভিতরে শুয়ে স্লিপিং পিলের নিস্তব্ধতা।
অদ্ভূত আকর্ষণ মোহময়ী সুন্দরী রাত
সোনালী জ্যোত্স্নার ক্যানভাসে আঁকে অন্তহীন ভাবনা।
রঙের উপর রং আরো গভীরে অনন্ত
অদৃশ্য নিস্তব্ধতা আমাকে ছুঁয়ে।

খোলা আকাশের বুকে দুচারকথা তোমার আমার রুপকথা
জ্যোত্স্নারা সব স্পর্শ বৃষ্টি আমাকে ছুঁয়ে।
নিদ্রাহীন সড়কের মত অবিরত আমার বুকে
কম্পিত হৃদয় তোমাকে ছুঁয়ে যায়।
ছুঁতে চাই কবিতারা বোবা শব্দের মত আকুলতায়
নেশা হয় ,নেশা হয় মৃত্যু।
আমার শহর থেকে অনেক দূরে
জানলার রেলিং বেয়ে স্পর্শগুলো তোমাকে ছুঁয়ে যায়
ভিজিয়ে যায় অনন্ত অবিরত একলা পাওয়ায়।
আমাকে ছুঁয়ে থাকে ,ছুঁয়ে যায় যন্ত্রণা তোমার মত
অনেক দূর আকাশের চাঁদ আর মাটির তফাৎ।


মৃত্যুর ক্যানভাসে  ফুটে ওঠে তোমার মুখ ,তোমার ঠোঁট
অস্তিত্ব অর্বাচীন কোনো বনসাইয়ের আকাশ ছোঁয়া লোভ।
তোমাকে স্পর্শ করার আনন্দে মাতোয়ারা বাঁচাটুকু
চোখের পালকে ছুঁয়ে যাওয়া তুমি ,তোমার ঠোঁট।
আমি ঘুমিয়ে পরি  মৃত্যুর পালঙ্কে তোমার স্পর্শে
আবার জন্মাবো আমি অন্য একদিন স্পর্শ সুখে। 

সত্যি কবিতা

সত্যি কবিতা
............. ঋষি
============================================
আমি কিছু জানি না ,জানি না সত্যি
 বাতাসের সঙ্গে খেলে সন্তানসম্ভবা উঁচু-পেট...।
আমি তো চেয়েছি লিখতে
অজস্র স্পর্শ আর নীরবতার নেম প্লেট।
নিশ্চিন্তে নিজস্ব পারদে বাড়তে থাকা ঘুম ঘোর
আমি জানি না আমি জীবিত না মৃত শোরগোল ।

আমি তো চেয়েছি লিখতে শীতের সুন্দর এক রাত...
আমার দুখের দিনে বাসি ব্যঞ্জন আর নুন ভাত ।
আমার বাড়া ভাতে কে দিয়েছে ছাই
সমুদ্রের মতো নারী- আমি যাকে স্পর্শ করতে চাই ।
বাতাসের সঙ্গে তার সন্তানসম্ভবা উঁচুপেট
মনে পড়ে,লেখা হয় না তোমার কথার অবশেষ।

আমি কিছু জানি না ,জানি না সত্যি
বাতাসের সঙ্গে খেলে সন্তানসম্ভবা উঁচু-পেট...।
আমি তো চেয়েছি লিখছি
হৃদয়ের ঘরে চেতনা ।
নিশ্চিন্ত চিতায় পোড়া অন্ধ কিছু বাসনা
আমি জানি শুধু বলি নি তোমায় কবিতা তুমি এসোনা। 

শব্দ বেশ্যা

শব্দ বেশ্যা
...................... ঋষি
===============================================
ঢেউ ভাঙার ইঙ্গিত
অদৃশ্য শব্দমন্ডলীর আলো ভাঙ্গার ছলে।
চেতনার বাস
শব্ধগুলো যখন অদৃশ্য মায়াজাল পেড়িয়ে  গভীরে কোথাও হানা দেয়
তখন আমি তাদের বেশ্যা বলি ,শব্দ বেশ্যা।

রাস্তায় ,ফুটপাথে ,চায়ের দোকানে ,পাড়ার মোড়ে
কলেজ ফেরৎ তরুনীর উদ্দেশ্যে।
মাইকে চিত্কার দেশের উদ্দেশ্যে
খবরের পাতায় বড় হরফে জনগনের উদ্দেশ্যে।
মহাজনী কারবার লোভের উদ্দেশ্যে
অন্ধকার প্রার্থনা সভায় ঈশ্বরের উদ্দশ্যে।
মিথ্যা বানভাসি শব্দগুচ্ছকে শপথ দেশের আইনি হুজুরদের
সমস্ত জনগনের উদ্দশ্যে আমার কলমে শুধু দিনরাত
শব্দ বেশ্যাদের নগ্নরূপ।

অদৃশ্য আঙুল আলো জ্বালাবার
শব্দগুলো মিথ্যে  বারুদ ঘষে নিজেদের পাছায়।
শেষ বেঞ্চের ইতিহাস পিপাসা সাধুদের ভন্ড ছাই ভস্ম
গাঁজার টান ,ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
ক্লাসের বেঞ্চহীন  ছাত্রদের মিথ্যা শপথ দেওয়া
মিথ্যা বলো না ,মিথ্যা বলতে নেই।
নাটক আর নাটক
সভ্যতার নরকে শরীরগুলো দাঁড়িয়ে থাকে বিক্রির আশায়
মিথ্যা ভালোবাসায় শব্দ বেশ্যা।

টুকরো কুড়োতে মূলবাগানে  ধর্ম জল
আদমের বিষ ফল শব্দ বেশ্যার  বুকে।
উত্থিত সভ্যতার রুমাল নাড়া ইশারায় রাস্তার পাশে
শব্দ বেশ্যা নগ্ন ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকে
চেতনার ভিতে সমস্ত মিথ্যা আশ্বাস আমার কাছে শব্দ বেশ্যা।

আমার ভাবনারা


আমার ভাবনারা 
............. ঋষি
=============================================
কিপ্টে হয়ে গেছি আজকাল
বুকের বোতাম খোলা ভাবনাদের আগলাতে আগলাতে। 
সত্যি বলতে নেই এই বোবা পৃথিবীতে 
আসলে কথা বলতে নেই এই বোবা পৃথিবীতে। 
সবাই ভাবে অতিরিক্ত 
যেমন অতিরিক্ত আমি তোর ভাবনায় চিরকাল। 

নিশ্চিন্ত আমি ভাবনাদের সাথে 
তোর কপালের অতিরিক্ত আঁচিলটা আমার বিউটি স্পট। 
তোর বুকের মাঝে  একটা ঘর আছে আমি জানি 
তুই বলিস নি ,তুই বলবি না কখনো। 
ওগুলো তোর জমা বেদনা ,জমা অভিমান ,লুকোনো কালি
তুই কিছুতেই উজাড় করতে পারবি না আমার মেঘলা শহরে। 
এখানে বৃষ্টি চিরকাল আমার হৃদয়ের লুকোনো ব্যাথা
আর লুকোনো কথাগুলো চিরকালীন লুকোনো। 
ঠিক যেমন চামড়ার শরীরটা 
আমরা ঢেকে রাখি অত্যন্ত অবহেলে। 

কিপ্টে হয়ে গেছি আজকাল
বুকের টপ ফ্লোরে দাঁড়িয়ে একলা বারান্দায় কেউ আমার মত। 
অত্যন্ত সহজে ভেসে যেতে পারে সবুজ পৃথিবীতে 
যেখানে জন্ম নেই ,নেই মৃত্যু। 
সবটুকু বেঁচে ফেরা নিজের ভাবনায় 
যেমন আমি একা কোনো না বলা কবিতা। 

লুকোনো কবিতা

লুকোনো কবিতা
.................... ঋষি
===============================================

এই মুহুর্তে আমার মনে হচ্ছে
পৃথিবীর চাঞ্চল্য থেমে যাক ,থেমে যাক সমস্ত চেতনার গতি।
আমার চোখের সামনে তুই ,আমার বুকের কাছে তুই
তোর গন্ধ খেয়ালী নেশার মত বয়ে যাচ্ছে বন্য হৃদয়ে।
সমস্ত সত্তার মাঝে অলৌকিক গতি
আমার হৃদয়ের তরঙ্গ আন্দোলিত।

আমি হাসছি আজ একলা হৃদয়ে
সমস্ত সত্তার ভিতরে নাড়া দিচ্ছে তোর বুকের গন্ধ।
তোর শাড়ির ভাঁজে লুকোনো শরীরের প্রতিটা টুকরো
তোর পায়ের নখ থেকে চুলের গোড়া অবধি সবটুকু
আমাকে চঞ্চল করছে।
নাড়িয়ে যাচ্ছে আমার ভিতরে বাহিরে
তোর নাভি বেয়ে নেমে যাওয়া জলপদ্ম
তোর নগ্ন শরীরের আয়নায় লুকোনো আমার আমিত্ব।
মনে হচ্ছে সবটুকু আমার না বলা কবিতা
মনে হচ্ছে তুই যেন আমার  লুকোনো কবিতা।
সত্যি আজ পাগল নেশায় ছড়ানো ছেটানো বারুদের স্থুপ
বিস্ফোরণ প্রয়োজনীয় আজ তুলকালাম হৃদয়ের।

এক  মুহুর্তে আমার মনে হচ্ছে  শান্ত পৃথিবী
সমস্ত হৃদয়ের সাথে মিশে যাওয়া তোর উপস্থিতির সঞ্চিত স্বপ্ন।
সবটুকু উজাড়  করে আকাশে আজ আদুরে মেঘ
তোর বুকের গন্ধে আসন্ন বৃষ্টির উদ্দাম শঙ্খ ধ্বনি।
বৃষ্টি এলো বলে,,, ভিজবো আজ তোর খোলা বুকে
পাগলের মত খুঁজবো নিজেকে। 

মাঝে মাঝে

মাঝে মাঝে
............... ঋষি
==============================================
মাঝে মাঝে মনে হয়
আমি বোধ হয় ,তোকে শুধু বোকার মতন দেখি।
ক্রমশ বদলানো ঋতুর প্রকৃতির মত
তোর  পরশে বাঁচি।
মাঝে মাঝে নিজেকে ভিখারী মনে হয়
কি আছে আমার কাছে, তোকে দেওয়ার।
মাঝে মাঝে নিজেকে প্রকৃতি  মনে
সময়ের কবিতায় কেন আবার সবুজ হওয়ার।

তোর কালো রঙের শাড়ি,চোখের  চশমার আড়ালে অবুঝ চাহুনি
আমি নিজেকে খুঁজিনি কখনো তার মাঝে।
শুধু বদলানো দিনের ডায়রির পাতায় তোর ঠোঁটের লিপস্টিকে
নিজেকে লুকিয়েছি ভিড়ের মাঝে।
বারংবার খুঁজেছি তোর না বলা কথাগুলো
স্পর্শের বদলানো রঙে অবুঝ অভিমানে।
নিজের বেকারত্ব আর গভীরতার মানে
তোর টানে,
আরো গভীরে তোর হাত ছুঁয়ে প্রতিশ্রুতি
নির্বাক ,,,নিশ্চিন্ত অবচেতনে।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমি হাওয়ার মত
তোকে ছুঁয়ে যায় ,তোর শরীর বেয়ে শিরশিরে কাঁপুনি।
আমি ঢুকে যায় তোর অমরত্বের গভীরে ,আরো গভীরে
যেখানে প্রশ্ন গুলো জিজ্ঞাসা চিন্হের মত হৃদয়্গামী।
মাঝে মাঝে নিজেকে একলা মনে হয়
শেওলা দুপুরে ফুটে ওঠা প্রথম নিশ্চিন্তের মানে।
তোর সাথে বেঁচে ফেরা একসাথে ,অবুঝ মনে
তোকে ছুঁয়ে বেঁচে থাকায়।

Saturday, May 16, 2015

" অসামাজিক "


" অসামাজিক "
,,,,,,,,,,,,, ঋষি
==========================================
হো-হো করে হেসে উঠলো মধ্যরাত্রে তিনজন বেশ্যা
বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর প্রথম ক্রেতা সামনে।
বলেন কি ভদ্রলোক
তোমাদের ভীষণ দরকার।
ওরা ভাবছে রাত্রে তো ওরা দরকারী বটে
মরদ্দের শরীরের রক্তে সাপেদের বাস।
একটু কামড়াবে তার আগে কত মশকরা ,কত তোয়াজ
ওরা জানে ভালো এই সব সাপেদের ,
কিছুক্ষণে মূল্য রাতের আঁধারে।

অধ্যাপক মৃদু হাস্যে চশমাটিকে রুমালে মুছলেন
মুখতুলে দেখেন সামনে দাঁড়ানো তিন অসামাজিক জীব।
ওদের জানা ভীষণ দরকারী
থিসিসের শেষটুকু বাকি পরে আছে।
বল্লেন আমার তোমাদের তিনজনকে দরকার
হাসির রোল  উঠলো।

গলির ভিতর একটা ছোটো ঘরে চারজন
তিনজন নগ্নিকা, অন্যজন নগ্ন সমাজের অঙ্গ,
তিনজনের  নগ্ন শরীরে কালসিটে, অন্যজন জ্ঞানী সমাজ ।
কি ভাবে চাই বলুন,বললো নগ্নিকারা
উত্তর তোমাদের নাম ,তোমাদের বাড়ি ,তোমাদের পেশার কারণ ?
হো-হো করে হেসে উঠলো তিনজন।
কি বোকা ভদ্রলোক ,এই কথা কি কেউ  জানতে চায়
এখানে তো সবাই শরীর চায় ,দলাই মোচড়াই শরীরের মাংস
কি বোকা উনি জানেনে না উত্তর " অসামাজিক " ।

Friday, May 15, 2015

যদি স্পর্শ করে দি

যদি স্পর্শ করে দি
............ ঋষি
======================================
যদি স্পর্শ করে দি তোর অন্তরের স্পৃহাগুলো
যদি স্পর্শ করি তোর না বলা কথা।
তবে নিস্তব্ধতা ভাসবে আমার শহরে
তোর দু চোখে দেখা মরুপ্রান্তরে চেতনার বিষ
সেই বিষ পান করে আমি একা।

কোথাও নিরালা  নির্জনে আকাশের কবিতায়
দুচার ফোঁটা বৃষ্টি তোর শুকনো বুকে।
মাটি ভিজে যায় ,মেটো গন্ধ চেতনার পাড়ে
কয়েকশো পৃথিবীর বায়বীয় ভিতে দৌড়বে ইচ্ছা ঘোড়া।
আপন মনে ,আরো দূরে,দূরে দূরে
কোথাও নিশিন্তে বেজে যাবে উইন্ড চার্ম আদরে সুখে।
আর তোর বুক বেয়ে গভীরতায় স্পর্শ
ঠিক এক আদরের ঘোড়া দৌড়চ্ছে প্রানপনে গভীর নীলে।
হারিয়ে যায় ,হারিয়ে যায়
আসলে হারিয়ে যেতে চায়।

যদি আমি স্পর্শ করে দি তোর গভীর সোনালী রৌদ্রে
যদি আমি স্পর্শ করি তোর ঋতুবতী ইচ্ছাগুলো।
তবে গোপন নদী আপন খেয়ালে স্পর্শ সুখে
তিরতির বয়ে যায় চেতনার সুখ
আর তোর গভীরতায় অভিমান লুকোনো দুঃখ।


তোর বুক

তোর বুক
.............. ঋষি
======================================
তোর আটত্রিশি বুকে হাত রেখে পুরুষ ভাবে
তুই নাকি তার উরুতে আছিস।
অথচ আমি জানি এই মাংসের পিছনে লুকোনো কোথাও
একটা ফাঁকা ঘর আছে ,
অনেকটা সেই সাপ লুডোর ঘরের মতো।
কখনো ইচ্ছা নামে কখনো উঠে যায় শিখরে অবস্থানের আশায়
অথচ স্থির হতে পারে না।

তোর বুকের কথা লিখছি বলে
হয়তবা জীবিত আকাঙ্খায় পুরুষের চোখে লোভি কামনা।
কিংবা তোকে নগ্ন পাওয়ার আশায় কেউ ভাবে তুই তৃষ্ণার্ত জমি
তোকে বীর্যবতী  করতে চাই কত কেউ।
তোর জ্ঞানে ,অজ্ঞানে হৃদয়ে প্রতি পাতায় লেখা অভিমান
সে কথা হৃদয় জানে।
আর চুপিসারে তোকে আনমনা করে যায় স্পর্শ সুখ
উপলব্ধিতে জীবন ফুরিয়ে যায় ,
অথচ জীবিত আকাঙ্খায় হৃদয়ের ঘ্রাণ।

তোর আটত্রিশি বুকে হাত রেখে পুরুষ ভাবে
তুই বুঝি সহজলভ্য শিশুদের বর্ণ পরিচয়।
অথচ তোর সরে যাওয়া আঁচলের প্রতি ভাঁজে লুকোনো কান্না
মাংসের গোলকের বাইরে আকাশের চাঁদ ঋতুবতী ,
ঝরতে থাকে জ্যোত্স্না তোর শরীর বেয়ে।
স্পর্শ সুখে হৃদয় বলে যায় হৃদয়ের কথা
আর পুরুষ তুই বীর্যবান কামনার দাস।

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...