Saturday, May 28, 2022

আজ থেকে পনেরো বছর পর

 আজ থেকে পনেরো বছর পর 

... ঋষি 


যে কথা বলা হয় নি আজ  এতগুলো বছর 

সে কথা না হয় বলবো বছর পনেরো পর কোন এক আকাশে

সেদিন আকাশের ঘরে আমাদের ঘর 

প্রতিজ্ঞা করছি সেদিন আমাদের রাস্তার শেষে আমি তুমি দাঁড়িয়ে থাকবো হাত ধরে।   

রৌদ্র ভেজা আমার চামড়া তখন সময়ের জাদুঘর 

তোমার একলা জুলফিতে তখন বরফের পরশ 

তখন না হয় বলবো 

ভালোবাসি। 

.

যে কথা বলা হয় নি আজ এতগুলো বছর 

সে কথা না হয় আজ দাফন হয়ে থাকে কর্তব্য আর সময়ের ভিড়ে 

সেকথা না হয় ঝড় তুলুক বুকে কোনো তুমুল বৃষ্টির পরে 

সে কথা না হয় মনে পড়ুক আমার সিগারেটের চুমুকে ,

তবু মনে রেখো  

আজ থেকে বছর পনেরো পরে

আমি ঠিক দাঁড়িয়ে থাকবো হাজারো মানুষের ভিড়ে 

একইরকম তোমার হয়ে ।  

.

যে কথা বলা হয় নি আজ এতগুলো বছর 

সে কথা তোমায় বলবো সেদিন অনবরত রক্তক্ষরণে 

সেদিন আর কেউ বলবে না 

আকাশের চাঁদ আর ভালোবাসা শুধু কবিতাতে মানায়। 

আজ থেকে পনেরো বছর পর 

আমি তুমি হেঁটে যাবো একই রাস্তায় উল্টো পথে 

আমাদের পাশে আজকের আমাদের মতো কেউ সেদিনও  হাঁটবে 

আমাদের মতো বলবে হয়তো ভালোবাসি 

তোমাকে ছাড়া বাঁচা যায় না। 

আসলে কি জানো এই পৃথিবীতে বদলানো নিয়ম 

আর নিয়মের খাতায় ভালোবাসা সমসময় ত্রস্ত 

ভালোবাসা আকাশ খোঁজে সবসময় বাঁচতে চায় 

হয়তো তোমার মতো প্রতিমুহূর্তে বুকে মাথা রেখে বলে 

এটা আমার। 

পলাতক

 পলাতক 

... ঋষি 


নিরুদ্রপ কৌতূহল বুকে সেই লোকটা পলাতক ?

কোথায় গেলো লোকটা ?

লোকটা তো জানে খানিক দূরে সীমানা কিংবা খাদের ধার ,

লোকটা জানে ওরা চিনে ফেলবে ঠিক ,আর খানিক দূরে নিদ্রা 

তবু লোকটা পলাতক 

আজ বহুবছর লোকটা পলাতক নিজের পালানোর অভ্যেসে। 

.

সাগর আর নারী মিলেমিশে একাকার লোকটার ভিতর 

তবু চিরস্থায়ী কিছু স্বপ্ন লোকটার বুকে 

তুমুল ঝড় ,ভাঙা ঘর ,উড়তে থাকে স্বপ্নের নিশান 

লোকটা পালাতে পালাতে ভাবে 

একদিন সীমানা পেরিয়ে আকাশ 

তারপর আশ্রয় আর পবিত্রতা। 

.

লোকটা পলাতক আজ বহু বছর 

সাথে আছি ,পাশে আছি কণ্ঠগুলো ক্রমাগত দূর থেকে দূরে 

সময়ের সাথে সম্পর্কের ভাঙা সেতু 

লোকটা আছে ,লোকটা বেঁচে। 

অথচ লোকটা জানে সীমানা ছাড়িয়ে পালানোর যে লোভ 

তা সময়ের ঘরে নিয়ন্ত্রণ 

অথচ সীমানার আমন্ত্রণ ,

কিন্তু লোকটা জানে না সীমানা যদি পালিয়ে যায় কোনোদিন 

সেদিন কি হবে ?

Thursday, May 26, 2022

অসময়ের কবিতাগুচ্ছ

 



অসময়ের কবিতাগুচ্ছ 

... ঋষি 

মানুষগুলো আজকাল স্বপ্নের দৌড়ে পিছিয়ে গিয়ে 

স্বপ্ন দেখে বাঁচে। 

নিস্তব্ধতার একটা ভাষা আছে কবিতারা বোঝে 

কবি ভুক্তভোগী ঈশ্বর। 

সময়ের রাংতা মোড়া আস্তরণে মৃত্যুর জলছবি 

আর গ্লোবাল ওয়ার্মিং শব্দটা অহংকারী বড়। 

সময়ের ভিড়ে শব্দ শ্রমিকরা আগুন মুঠো করে দাঁড়িয়ে 

বুঝতে পারি কবিদের কেন মুখ পোড়ে। 

সিগারেটের নিকোটিনে গড়িয়ে নামে ক্লান্তি 

ক্লান্তি বলে মেয়েটা আজও নিঃসঙ্গ  বড়। 

আকাশের ভিড়ে চাপা পড়ে আছে মানুষের স্বপ্ন 

তবুও ক্লান্ত স্বপ্নরা বেপরোয়া আগুনপাখি । 

একটা চল্লিশের নৌকা ,আড়াআড়ি জন্ম হচ্ছে নদী 

আমি মিশে যাচ্ছি চলন্তিকা তোমার আরও গভীরে। 

মাস মাইনের অর্ধেকটার বেশি কেটে নেয় আগামী 

আর বর্তমানের খাতায় নিশ্বাস নেওয়া দায়। 

যারা কাছে থাকে তারা বোঝে শুধু সামাজিক শব্দটা 

অথচ কবি লিখেছেন সামাজিকতা একটা সময় মাত্র। 

১০

মানুষের কাপড়ে লেগে আছে শুধু সময়ের বর্তমান 

আর নগ্নতা ছুঁয়ে বেঁচে সত্যি মানুষ। 


সিনেমা চলছে


সিনেমা চলছে 

... ঋষি 


একটা কৌতূহল 

একটা হরর সিনামের সাজানো সিকোয়েন্স 

স্টেজের উপর সময় দাঁড়িয়ে ,দাঁড়িয়ে সেই মেয়েটা 

আমি দেখছি 

মেয়েটা চিৎকার করছে 

তবুও এগিয়ে আসছে সময়ের কালো হাত। 

.

জীবন মশাই আমার দিকে তাকান 

মেয়েটা ভয় পাচ্ছে ,প্লিজ ওকে বাঁচান 

ঠিক এই সময় এক সুদীর্ঘ পুরুষ মেয়েটাকে বাঁচাতে মঞ্চে আবির্ভূত 

জানি জীবন মশাই এটা জীবন নয় 

এটা নাটক কিংবা অভিনয়,

আর আমি এই নাটকের বাইরে দাঁড়ানো মৃত পরিচয় 

জানি ,শুধু সিনেমার পর্দা বদলাচ্ছে রোজ 

একই জায়গায় ,একই সময় ,একই ক্যামেরায় ,সিকোয়েন্স বদলাচ্ছে। 

.


জীবন মশাই সত্যি বলি 

             কতদিন তোমায় জড়িয়ে বাঁচি নি 

অবাক হচ্ছেন ?

সেই মেয়েটার আকুতি আমার বুকের ভিতর কাঁপন ধরাচ্ছে 

জীবন মশাই  সত্যি সেই মেয়েটাকে বাঁচাতে পারে নি ,

শৈশব মেয়েটা বই পেয়েছিল  ,যৌবন লুঠ হয়েছে সময়ের হাতে তার 

বার্ধক্য,হ্যা মশাই আজ  বার্ধক্য মেয়েটাকে ভয় দেখাচ্ছে 

.

         কি ভাবছেন ?

.

গভীরতা ,এ সব কিছু নয় 

আমি বলতে চাইছি 

মানুষের লুকোনো গল্পগুলো নিয়েই সিনেমা হয় 

কিন্তু জীবনকে জেতানোটাই সেখানে বিজ্ঞাপন

এই জীবন মশাই সেখানে নিতান্ত সাজানো সিনেমার হোডিং  । 


ঘেন্না করি তোকে

ঘেন্না করি তোকে 

... ঋষি 


আমি ঘেন্না করি তোকে 

আমি ঘেন্না করি মারান্তক তোর ওই সাজানো সংসারটাকে 

ফিরে আসতে চাই 

জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে আকাশে পা দিয়ে 

যদি মৃত্যু আসে 

সে তো স্বাভাবিক। 

.

কি দিবি আমাকে

এঁচোড় চিংড়ি ,ভাত ,বিউলির ডাল ,আলুভাজা 

মন ভিজছে না ,

পরম সোহাগে সেজে উঠে বলবি ভালো থাকছি না 

আমিও না 

আমি কবিতা লিখতে চাই 

আরও কবিতা ,যা এতদিনে লিখে উঠতে পারি নি। 

.

আমি ঘেন্না করি নিজেকে 

প্রতিদিন আমার ভাঙা চাঁদে আকাশ একলা দাঁড়ায় 

পূর্ণিমা ,অমাবস্যার তফাতে দিন ফুরোয় ঠিক 

আমি ফুরোয় না 

আমি লিখে ফেলি একটা জঘন্য ঘৃণার কবিতা। 

ফিরে গেছে নির্লিপ্ত কিছু বোঝাপড়া 

ফিরে গেছে যাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছি 

তবু ভালোবেসেছি 

তবুও জড়িয়ে বেঁচেছি তোকে 

অবাক চোখে চেয়ে দেখেছি তোর মুখের দিকে 

তোর ভাবনায় 

জুতো পরে ,জুতো খুলে বারংবার দাঁড়িয়েছি তোর মুখোমুখি।  

 

বৃষ্টি কষ্ট

 বৃষ্টি কষ্ট 

.... ঋষি 


মানুষের অর্থ কষ্ট হয় 

মানুষের খাদ্য কষ্ট হয় 

আমার কষ্ট তবে সেটা অন্যরকম বৃষ্টি কষ্ট। 

.

ভাবুন একটা খেতে খাওয়া মানুষ ভিজে তার রুজিরোজগার করছে 

ভাবুন বনগাঁ থেকে বারাসাত শহরে গতর খাটানো মেয়েটা বৃষ্টিতে ভিজছে 

আর ভাবতে হবে না 

এবার ভাবুন আপনি একা ভিজছেন বৃষ্টিতে 

কেমন লাগছে মশাই ?

কষ্ট হচ্ছে ? আমারও হয়। 

.

আকাশের দিকে তাকাবেন ভাববেন মেঘ করেছে 

আপনি বিবাহিত পুরুষ ,

আপনার সাত বছরের মেয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে অন্ধকারে 

অপেক্ষা ?

কি করছেন আপনি হন হন করে বৃষ্টিতে ভিজে এগিয়ে চলেছেন

সামনে ঈশ্বরের মোড় 

ওইতো জানলায় বসে আপনার মেয়ে ,

আমি দেখতে পাচ্ছি 

বৃষ্টি পড়ছে 

আপনার গভীরে ,সেই প্রেমিকের গভীরে ,এই শহর জীবনে 

প্রতিটা মানুষের ভিতরে 

কষ্ট হচ্ছে 

আমার হচ্ছে 

বৃষ্টি কষ্ট। 

Wednesday, May 25, 2022

সুরোজকা সাতমা ঘোড়া

 সুরজকা সাতমা ঘোড়া 

... ঋষি 

.

.

ছাদ শুনলেই ভাঙা কার্নিশে আমি মৃতদেহ দেখি 

দেখি প্রেমিকার শাড়িতে ঝুলন্ত একটা শরীর ,

অথচ বাইরের বারান্দায় তখন সবুজ বসন্ত। 

আমি অবাক হয়ে ভাবি 

ভাবনারা পা পিছলে প্রতিদিন পরিবেশিত হয় সামাজিক কাব্যে 

অথচ ভাবনারা বাথরুমে থাকে। 

..

.

সিংহের সাথে চাঁদ মিশে গেলে 

অনবরত তুমি ভুল বলতে থাকো তোমার স্খালনে ,

আমি কাব্য করলেও সত্যি বলি 

কবিতার পাতায় ছেঁড়া চাঁদ লুকিয়ে রাখে সূর্যকে 

সকাল হবে 

প্রশ্রয়ে জেগে উঠবে সময় দুশ্চিন্তার ফাঁকে। 


.

.

নির্বাসিত স্রোত,  তোমার ঘুমের মধ্যে

আমার মতো কেউ দাঁড়িয়ে আজ বহুযুগ আবছা ভাবে ,

তোমার কিশোরী বেলার শব্দবন্ধ নৌকা বানায় 

ভাসিয়ে দেয় সময়ে ,

আমি বুঝি নৌকার মাঝি ,প্রবাহমান ধারায় 

তবে সকলেরই পাড়ে ওঠা দরকার। 

.

.

ঠোঁটে তোমার অমৃত লোভ লবঙ্গের গন্ধ খোঁজে 

নির্বাসনের প্রসঙ্গে বারংবার চোখে জল আসে 

বুকের লাবডুবে তখন পুঁজ রক্ত আর আশা ,

জখম সময়ের এক মাধুর্যতা আছে 

স্মৃতির পললে 

তোমার সিঁড়ি বেয়ে একলা দাঁড়ায় আমার সময়ের কবিতারা। 


.

.

আমি সাঁতার জানি ,তুমি জানো না 

তাই বারংবার ডুবে মরতে চাও 

অথচ আমাদের অনুভূতিরা চিৎসাঁতারে বেশ সাবলীল এই সময় ,

আলুথালু একঅজ্ঞানতা 

দুর্ভিক্ষের অভিমানে সময় গিয়ে দাঁড়ায় পড়ন্ত বেলায় 

গভীর রাতে চাঁদ আর সূর্যের সঙ্গমে জন্ম হয় মুহূর্তদের। 

.

.

আমার কোনো লজ্জা নেই 

তাই আমি পড়শী পাড়ায় দাঁড়িয়ে থাকি মিষ্টির দোকানের সামনে ,

আমার কোনো শিক্ষা নেই 

তাই শেক্সপিয়ার আর মার্কসবাদকে মুড়ির ঠোঙা মনে হয় 

কিন্তু আমার যা আছে তা সকলের নেই 

আমার ভিতরে বাউলের বাস ,যা সময়ের নেই। 

.

.

আমার ঘরের পচ্ছিমের দেওয়ালে একটা সমাজ দাঁড়িয়ে 

আর বারান্দার বাইরে সূর্য 

আমার শব্দরা সূর্য স্পর্শ করে রোজ 

হয়তো পুড়ে যায় নিয়ম করে 

তবুও রাত্রি আসে ,তুমি ,আমি জেগে থাকি সিলিঙে 

কারণ সুরজকা সাতমা ঘোড়া দৌড়োয়। 



Friday, May 20, 2022

কুড়ি লাইনের কবিতা


কুড়ি লাইনের কবিতা
... ঋষি 

চির আবেদন 
কবিতা হতে হবে মেদ, চর্বিহীন, ছিমছাম 
জাত, পাত, কাল
না হে পাঠককুল কবিতা ভার্জিন নয় কখনো। 
.
চির নিবেদন
আগুন জ্বালা বুকে,মানুষ পোড়ে, পোড়ে রাষ্ট্র 
শব্দ,স্তাবকতা,বায়বীয় স্তর 
গোত্রান্তরে কোন নারীকে ধর্ষন করা যায় না। 
.
চিরকালীন
এক্সরে বিমের নিচে সময়, বাপ বাপান্তর ভিতরের ঘর 
আলাদিন,আরবী ঘোড়া, চেতনায় ইভ 
সব ঘুমিয়ে পড়ে, মানুষের ভিতর মানুষ মরে। 
.
চিরদিন
প্রেম লিখবো বলে প্লেবয় খুঁজছে সময়ের ভীড়
শরীর, মন, স্পর্শ
কবিতার শব্দে আপ বাঁচলে বাপের নাম। 
.
চির কৃতজ্ঞ
কবিতার শব্দরা ভীত সন্ত্রস্থ, আকুল আবেদনে 
লোহার ব্যারিকেড দিয়ে শহর গোছানো যায় 
কিন্তু কুড়ি লাইনে জীবন লেখা৷ যায় না। 
 

Wednesday, May 18, 2022

আকাশী




আমি কার সাথে কতবার শুয়েছি? 
আমি কার কার থ্যেতলানো যোনিতে মাথা রেখে কবিতা খুঁজেছি 
আমি কি বিকারগ্রস্থ? 
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি নিরন্তর বিকলাঙ্গতা 
আমি আমার ধমনীতে খুঁজে নি মৃত্যুসুখ 
তবু প্রশ্ন ফুরোয় না। 
.
ঈশ্বর  মহামারি ছুঁয়ে, ছুঁয়ে দেয় কবিমৃত্যু
জনতা জনার্দন পানের পিক ফেলে সময় নোংরা করে
আমি হাঁপিয়ে উঠি,
ঈশ্বর তখন কবিতায় লেখেন 
লিখতে থাকেন এই পৃথিবীর এক আশ্রয়হীনতার গল্প
তখন আমার তোমার কথা মনে পড়ে
মনে পড়ে আমার কবিতারা মিথ্যে বলেছে এতদিন। 
.
শরীর ছাড়িয়ে প্রেম 
পাগলাগারদের ওপারে মানুষগুলো নিজেকে সুস্থ বলে
আমার হাসি পায়,
আমার হাসি পায় যখন তুমি আকাশের গায়ে থুথু দেও
যখন তুমি চিৎকার করে আমায় আগুনে পোড়াও
আমার কিছুই বলার থাকে না।
মনে পড়ে সেই লাইনগূলো 
এটা গল্প কার?  এটা লিখছে কে? 
আমার তখন পাগলের মত হাসতে ইচ্ছে করে 
তখন আমার পাগলের মত কাঁদতে ইচ্ছে হয়
জানতে ইচ্ছে পাগল কে? 
যে আকাশের অপেক্ষা করে,নাকি যে নিজেই আকাশী। 




মঞ্চ

মঞ্চ
.. ঋষি 
মঞ্চ ছেড়ে  চলে গেছে কলাকুশলীরা
তবুও পরিত্যক্ত বিছানায় ছড়িয়ে রমনের গন্ধ,,
ক্রমাগত দোষারোপ 
ক্রমাগত বুকের বিষে মুখ মিশে নীলকন্ঠ,
আকাশের নীলে অনবরত দাগ টানে খড়িওঠা শহর 
মিথ্যের এই শহরে তবু কিছু সত্যি বাস করে। 
.
আমাদের মাঝের দেওয়ালে আজকাল বিষন্নতা
অবিশ্বাস থেকে উঠে আসে প্রশ্ন বারংবার
তবুও একসাথে থাকতে চাই, 
দিন ফুরোয় নিয়ম করে সময়ের বালিশে মাথা রেখে
আমাকেও ফিরতে হয় রোজ 
তবু কনফুসিয়াস ছায়ার মত দরজার বাইরে থাকে। 
.
কেন যে আজকাল জেহাদের গভীরে ঢুকতে ইচ্ছে হয়
কেন বুকের কোষে জেদ জমে
পালিয়ে বাঁচা, 
তোমার মত অসামান্য কবিতা আমার ঠোঁটে সিগারেট 
ভুল উচ্চারণেও জীবন ব্যাকরণগত। 
ভাঙা অনুষ্ঠানের পরে পরিত্যক্ত চেয়ারে আমি বসি
ফাঁকা হলঘর, তুমি একলা দাঁড়িয়ে মঞ্চে
আমি তোমার মুখেই আবৃত্তি শুনতে চাই 
আমি তোমার মুখে জীবন শুনতে চাই 
শেষ না হোক জীবন, 
সময় হাততালি দেয় 
আমি সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে তোমার তারিফে লিখি
বাঁচতে চাই। 


Tuesday, May 17, 2022

অ নি র্বা ন

অ নি র্বা ন
.. ঋষি 
রহর্ষ তুমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলে হিরোগ্লিফিক লিপিতে
আমি মেনে নিলাম ইতিহাস, 
ইতিহাস যদি কবিতা লেখে
তবে মিশরের শেষ সম্রাট শুয়ে থাকবো নিতান্ত সময়ে
আমি সময় লিখতে পারি 
কিন্তু বদলানো কবিতায় লিখতে পারি না বালির শহর।.
.
একমুঠো মাটি গলে যায় বৃষ্টি হলে
আর বালির শহর শুকিয়ে যায় অনবরত নীলনদে
তুমি বলো বৃষ্টি তো নিয়ম করে আসে 
কিন্তু বৃষ্টির কবিতায় নিয়ম কোথায় 
সে যে শব্দসুখ
সে যে মনের দুঃখ
আমি তুমি ব্রাত্য আজকের কবিতায়। 
.
রহর্ষ এটাই তুমি ঘৃনা খোঁজ 
আমি খুঁজি কবিতার পাতায় ফিরে আসা জীবন
আমি তফাৎ খুঁজি না
খুঁজি না টাইম মেশিন
লিখতে ইচ্ছে হয় দিনগুলো মোর সোনার খাঁচায়। 
আমি রবি ঠাকুর লিখতে চাই নি 
লিখতে চেয়েছি একটা গল্প 
যেখানে বাঁচতে চাওয়াটা অবাধ্যতা 
যেখানে একলা থাকাটা কবিতা
আর আমি 
শুধু এক অনির্বান যে ঈশ্বরের স্তবকে লিখে দি 
রহর্ষ শুধু একটা নির্বান। 

জীবন ত্থেকে পাওয়া

জীবন থেকে পাওয়া
..ঋষি 

শব্দগুলো গলার কাছে আটকে যাচ্ছে
গল্পগুলো শেওলাধরা শেহেনশা
আমি কাব্য করি, রাত বারোটায় কবিতায় লিখি 
বাঁচা মানে বেঁচে থাকা নয় 
বাঁচা মানে প্রহসন 
আর আয়োজনে লেখা জীবন থেকে পাওয়া৷। 
.
শেষ বারোবছরে সুর্যের বারোশো ঘোড়া ছুটেছে নিয়ম করে
নিয়মের বাইরে সময় দৌড়োয় নি 
নিয়মের ঘরে সময় থামে নি
নিয়ম ২৪ ইনটু সাত আমি ছুটেছি মানুষের ভীড়ে
কিন্তু বিশ্বাস করো আমি মানুষ সাজতে চাই নি 
চাই নি কবিতা লিখতে। 
.
বাঁচার গল্প এটা
গল্পের শুরুতে লিখি বাঁচতে চাই ৩৬৫ মানে, 
একার গল্প এটা
গল্পের শেষে লিখি বাঁচতে চাই আকাশের কবিতায়,
সব শব্দ শেষ হয়ে গেলে 
জীবন প্রহসন
নতুন করে শেষের শুরু হলে জীবন আয়োজন। 
আমি বাঁচতে চাই 
শব্দহীন অন্য আকাশে আমি সত্যি বলতে চাই
ভালোবাসা মানে বন্ধন নয়
ভালোবাসা মানে সমাজ নয় 
ভালোবাসা মানে নিয়ম নয় 
ভালোবাসা মানে মুক্তি
যেখানে নিজেকে বলা যায় ভালো আছি 
কারণ তুমি আছো সাথে
একান্ত ব্যক্তিগত আমি শুধু বাঁচতে চাই। 

ভুল মানুষ



ভুল মানুষ 
.. ঋষি 
কার কবিতা লিখবো? 
শিঁড়দাড়াহীন মানুষের,মানুষ বানান ভুল করা মানুষের,
কার কবিতা লিখবো? 
সম্পর্কের, শুধু নিয়মিত সম্পর্কের, 
ব্ল্যাকম্যাজিক করা মনখারাপী সময়ে 
কাকে মনে করবো? 
তোমাকে,রাষ্ট্রহীন একটা মহব্বতের জন্য। 
.
আমি আগুন খুঁজছি 
অথচ রোজ মাথা নিচু করে দাঁড়াচ্ছি সময়ের কাছে
আমি সেই কবিকে খুঁজছি
যার শব্দগুলো মানুষের শিঁড়দাড়ায় মানুষ  খুঁজবে
খুঁজবে  বহুদিনের ভীত সমাজের পুঁজ, রক্ত আর অন্ধকার
তারপর সেগুলো একসাথে পোড়াবে মানুষের জন্য।
.
আমি কার কবিতা লিখছি?
পার্কস্ট্রীটের সেই  বৃদ্ধ গীটারওয়ালার 
যাকে সুর বিকোতে হয় রোজ সেই অপদার্থ সময়ের কাছে,
আমি কার কবিতা লিখছি? 
সেই অসুস্থ পিতার
যার সন্তান সুদূর আমেরিকা থেকে মাঝে মাঝে বিশ্বাস জাগায় সে ফিরবে একদিন, 
আমি কার কবিতা লিখছি? 
সেই চাকরীহীন প্রেমিকের, যার চাকরির স্বপ্ন খুব সহজএ বদলায় মৃত্যুর গদিতে।
আসলে ক্লান্ত একটা পরাজিত সময় প্রতিদিন হেঁটে চলে মানুষের পাশে 
মানুষগুলো বারুদের স্বপ্ন দেখে ঠিক 
কিন্ত বিস্ফোরণের ভয় পায় 
তাদের স্বপ্নের বারুদ সত্যি কথা বলতে পারে না
কিন্তু আমি যে মিথ্যে মানুষ লিখতে পারি না
কষ্ট হয় 
তাই 
ভুল মানুষ লিখি। 


Friday, May 13, 2022

ভালো থাকার জন্য

 ভালো থাকার জন্য 

.. ঋষি 


এইরকম ভাবে দিন কাটে রোজ 

ভাত, ডাল, সিগারেট, ফুটপাত ,পুরোনো বালিশে মাথা রেখে 

আর নাগাড়ে মাথার ভিতর ঘুরতে থাকে প্রশ্রয় 

আর আশ্রয় 

তুমি কাছে ,আরো কাছে 

যেখান থেকে আমার কিছুতেই আর ফেরা সম্ভব না। 

.

অথচ এককালে চেয়েছিলাম 

একদিন ঠিক মরে যাবো কবিতা লিখতে লিখতে 

একদিন ঠিক আমার কবিতার পাতায় চলন্তিকা সময় হয়ে দাঁড়াবে 

কিন্তু এখন 

ঝিরিঝিরি পাতায় ঋতু মেনে খেলা করতে থাকে সাদা রঙের বিষন্নতা 

দুনিয়া বদলাবার কবিতাগুলো কখন যেন হিসেবি বড়। 

.


ভালো থেকো। ভালো থেকো

আমিও ভালো থাকবো 

গভীর রাতে ইদানিং আমি দেখি আমার লেখা কবিতায় চাপা পড়া একটা মৃতদেহ 

 দেখি তুমি কর্পোরেশনের গাড়ি ডেকেছো 

তোমার বিছানায় শুয়ে থাকা জঞ্জাল সরাবার জন্য

আমি অবাক হই না মোটেও 

আমি জানি সময়ের মৃত্যুগুলো এমনি হঠাৎ করে আসে 

প্রতিটা অন্ধকারে সময় যখন কথা বলে 

তুমি হাসো 

বলো ভালো থাকার জন্য একটাই জীবন দরকার।   


Thursday, May 12, 2022

শুন্য


তোমার স্পর্ধার কাছে হারতে চাওয়ার সুখ 
তুমিই নিশানাতে, আমার  ভীষন অসুখ। 


বিষন্নতা লেখা আছে মেঘ পিয়নের ঘরে 
মেঘের ঘরে বৃষ্টি শুধু একলা থাকতে পারে। 


সবাই বলে কবি তুমি সবার হয়ে লেখো 
আমি বলি একদিন ঠিক বাঁচবো আমি দেখো। 


হাসির কথা কান্না জুড়ে সময়ের প্রহসন 
বিক্রি হচ্ছে সময়ের কাছে বাঁচার আসন। 


আমার সাথে বৃষ্টি আছে, রৌদ্র যে বিপ্পব
শুঁয়োপোকায় নিন্দা করে, সময় করে রব। 

৬ 

তোমার সকল বাঁচার সাথে তর্ক যে বহুদুর
আমি বাঁচি, তুমি বাঁচো, বাঁচায় আসল ভুল।


সাপ্তাহিকি গল্প লিখি, করি আগুন নিয়ে ঘর 
মেঘগুলো সব আমার সাথে,সময় শুধু পর। 


সময়গুলো অন্ধকারে টিকটিকি সব ডাকে 
বুঝতে পারি অন্ধকারে সত্যি বলবো কাকে। 




কান্না পায়

কান্না পায়
.. ঋষি 
ভালোবাসা শব্দটার গাছ পাথর নেই 
আজকাল তোমার কাছে থাকলে আমার কান্না পায় 
কেন যে বুকের কাছে কষ্টগুলো দুমড়ে মুচড়ে ওঠে 
কিছুতেই বুঝতে পারি না 
কোনটা গাছ 
কোনটাই বা পাথর। 
.
গাছ বলতেই আমার মনে পড়ে একটা চলৎশক্তিহীন জীবন 
আর পাথর বল্লে আমার মৃত্যুর কথা মনে পড়ে, 
গাছেদের পাতা ঝড়ে, বয়স বাড়ে 
তবে আকাশ ছুঁতে চায় 
অথচ পাথরের গায়ে লাগে শেওলা 
যেন মাটিতে মিশে যেতে চায়। 
.
অথচ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারি না
ভালোবেসে জন্ম না মৃত্যু কোনটা শ্রেষ্ঠ 
ভালোবেসে আকাশ খোঁজা না মিশতে চাওয়া কোনটা জরুরী 
মাথা ধরে আসে, চোখের দৃষ্টি হারাতে চায় 
বুঝতে পারি না
কেন কান্না পায়। 
কেন বারংবার আকাশের দিকে আমার চাতকের চোখ 
কেন বারংবার অসময়ের বৃষ্টি শুকনো মাটি ভিজোতে চায়৷ 
মায়াবী গন্ধ 
বাঁচার স্বপ্ন
আমার কান্না পায়। 

লহ প্রণাম

 লহ প্রণাম

.... ঋষি  


যে মৃত্যুর মৃত্যুর মৃত্যু ছিল না কোনদিন 

যে জন্মের সৃষ্টিরা শুধু অন্ধকার আকাশে নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল 

আমি সেই সময়ের উদ্দেশ্যে বলছি 

আমি সেই সময়ের গভীরে শুয়ে থাকা অজস্র সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বলছি 

"আমরা ঈশ্বর দেখিনি কোনোদিন 

আমাদের হৃদয়ের তুমি চিরকাল ঈশ্বর সৃষ্টিতে আসীন"। 

.

কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া 

তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া 

সত্যি বলছি এমন কোনোদিন থাকে না 

এমন কোনো মুহূর্ত থাকে না যেদিন তুমি থাকো না সাথে। 

তোমার ঈশ্বরের কলম ছুঁয়ে ,রঙের হাজারো সৃষ্টি ছুঁয়ে 

তোমার গানের বাণী ছুঁয়ে আমরা চিরকাল তোমাকে স্মরণ করেছি 

আর ইচ্ছে ছুঁয়ে মনে 

"শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু ,হে প্রিয় 

মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিও"। 

.

অদ্ভুত মানুষের জীবন 

তোমার কলম ছুঁয়ে আকাশ দেখে অসুস্থ সেই অমল নামের ছেলেটা 

তোমার ভাবনারা আজও প্রেমিকের গভীরে না বলা ভাষা ,

তোমার আলোর দিশায় সময়ের অন্ধকারে মানুষ খোঁজে প্রাণ 

তোমার কলম শয়তানের সমন সময়ের ভগবান। 

তোমাকে ছোঁয়ার স্পর্ধা নয় 

তোমাতে ভক্তের চোখ 

শুধু মাছের দিকে তাকিয়ে অর্জুনের প্রতিজ্ঞা 

মৃত মানুষগুলোর হৃদয় শুধু সৃষ্টির হোক। 

Wednesday, May 11, 2022

নাবিক

 নাবিক 

.. ঋষি 

নাবিকের কম্পাসে আজ ভাঙা সমাজ 

বিষয়বস্তুর ভিড়ে হারিয়ে যেতে চায় তোমার মুখ 

আমি আঁকড়ে ধরে রাখি মুহূর্তদের 

কোনো ঘুম ভাঙা ভিড়ে ,যেদিন জেগে উঠবে এই শহর 

শহরের পাড়ায় পাড়ায় সেদিন মুক্তি 

আর চুক্তির খাতায় লেখা থাকবে সমাজ। 

.

সমীকরণ বদলাবে এই আশায় 

আমি দূর সমুদ্রে তাকিয়ে থাকি বাতিঘরের দিকে 

আমার জাহাজের মাস্তুলেরা  বাস করা চেতনারা পার খোঁজে 

আমি দেখি আয়নার মুখ 

সমান্তরাল সমাজ 

নারী ,পুরুষ সকলেই ঈশ্বরের মসিহা। 

.

জানি এমন করে সমুদ্র ভালোবাসলে নোনতা হতে হয় 

বুকের সরজমিনে পা জমিনে পা জমিয়ে দিক্চক্রবালে অপেক্ষা ,

কে যেন বলেছিল 

ঈশ্বর ধান ভাঙে 

আমি বলি কি ঈশ্বর খিদে ভাঙে 

তাই ভেঙে ফেলে সমুদ্রের গভীরতায় টাইটানিকের মতো জাহাজ। 

সব কথা শেষ হয়ে গেলে 

মানুষ ভাবে মুহূর্তরা বোধহয় সমুদ্র

আমি সেই ভাবনার সমুদ্রের নাবিক 

যে ঈশ্বর খুঁজতে তোমায় খুঁজে ফেলে।  


জাগরণ

জাগরণ 
... ঋষি 
.
কেন না সমস্ত পতনের শব্দ হয় না 
কেন না অন্ধকার সময়ের সিঁড়ি বেয়ে সভ্যতা গিয়ে দাঁড়ায় উলঙ্গতার পর্যায় 
কেন যে রত্না রশিদ মহাশয়া একজনই জন্মায়
কেন না নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আর এই সময় জন্মায় না 
কেন না জনগন জাগে না?  
কেন না  কেউ প্রশ্ন করে না রাজা তোর কাপড় কোথায়? 
.
কেন যে এই সময় সত্যি জন্মায় না
কেন যে ব্রাত্যের সাহিত্য পরিষদে  নেপোয় মারে দই 
কেন যে সুবোধের মতো বালকেরা এখনো সুবোধ হয় না 
কেনও অনাদির ইস্তফাতেও জনগনের ঘুম ভাঙে না 
কেন যে  মানুষের শিরদাঁড়া জাগে না  
কেন যে মানুষের ভিতর আগুন একবার ঘুরে দাঁড়িয়ে কেউই  প্রশ্ন করে 
রাজা তোর কাপড় কোথায়? 
.
হাজারো প্রশ্নের উত্তর হয় ,হাজারো প্যাজল সলভ হয় 
কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর ঘুমিয়ে থাকে সময়ের যোনিতে ,
কেন যে কেউ বুঝতে চায় না 
                    সাহিত্য নিয়ে রাজনীতি হয় না 
                     তবে সাহিত্য দিয়ে রাজনীতি হয়। 
কেন 
             কেন 
                         কেন 
                                  কিসের ভয় ?
রাজা যদি নিজ হাতে তুলে নিতে পারে সাহিত্য সন্মান 
যদি হিং টিং ছট হয়ে যায় শ্রেষ্ঠ কবিতা 
               তবে লজ্জা কার ?
আপনার ,আমার না আমাদের বাঁচার লজ্জার 
আমরা কি তবে আগামীকে শেখাবো 
            রাজনীতি করো তুমি কবি হয়ে যাবে
তোমার গলায় ঝুলে যাবে সময়ের শ্রেষ্ঠ মেডেল। 
.
ওঠো জাগো 
জাগ্রত হও আমার রবি ,নজরুলের দেশ 
ঘুরে দাঁড়িয়ে  নিজের ভিতরের ঘুমন্ত আগুনকে প্রশ্ন করো 
আমরা কি সত্যি মরে গেছি 
আমরা শুধু কি মৃত সভ্যতার দেশের নাগরিক 
নাকি এখনো আমাদের বুকের পাটায় জীবিত বারুদ
তবে প্লিজ একবার ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করো 
রাজা তোর কাপড় কোথায় ? 

সময়ের বর্ণমালা


  

সময়ের বর্ণমালা 

... ঋষি 

.

অ ,আ ,ক ,খ   

তারপর বর্ণগুলো প্রতিবাদ করতে শুরু করছে মশাই,

আজ সব অদ্ভুত কান্ড

বাজারে গেলাম 

দেখলাম একাডেমিক পুরস্কার বিক্রি হচ্ছে বাজারে 

তাজ্জব ব্যাপার 

কি দিনকাল সিংহ  ,ছাগল ,কুকুর সকলেই  সমান। 

.

আসুন একটু বিরক্ত হই 

কবিতা আসছে না ,আসলে কবিতা ধর্ষিত হচ্ছে ক্রমশ বাজারি লাইনে 

সে লাইনে রাজা থেকে মস্তান ,মস্তান থেকে রবীন্দ্রনাথ 

সকলকে দাঁড় করানো হচ্ছে সময়ের  ভাঙা শিরদাঁড়ায় ,

বিবেকানন্দ নিবেদিতাকে বলছেন শুনছি বুঝলে রবিবাবু থেকে সাবধান 

চারিদিকে আগুন জ্বলছে আর ব্যাটা কিনা প্রেম লিখছে। 

.

সাহস ,মশাই সাহস 

সত্যি বলতে যে সাহস মানুষ শুধু সিনেমার পর্দায় দেখতে ভালোবাসে 

তাকে আস্পর্ধা বলে না 

 আসল আস্পর্ধা এটা যখন একটা ছাগল রবীন্দ্রনাথ লিখতে চায় 

কিংবা যখন কতগুলো এপাং অপাং ঝপাং কবিতা হয়ে যায় ,

সেই একই  সময়ের মহামান্য আদালতে দাঁড়িয়ে পাবলিক হাততালি দেয়

সংস্কৃতি ন্যাংটো হয় 

ন্যংটো হয় ভারতবর্ষ বিশ্বের দরবারে। 

আমি ,আপনি চুপ  থাকি 

কারণ আমাদের ঘরে মা ,বোন আছে 

সময় চুপ আছে 

কারণ সময়ে বুকে রাজার সমনের ভয় 

কিন্তু কি করবো মশাই কলমের অপমান তো আর  সহ্য হয় না

আর আপনারা জেনে রাখুন  

চলন্তিকা পুড়লে আমি পুড়িয়ে দিয়ে পারি দেশের মন্ত্রীকেও সময়ের বর্ণমালায়। 

  

 

 

Tuesday, May 10, 2022

তারা কথা বলে

 


তারা কথা বলে 

... ঋষি 


তারা কথা বলে 

তারা রবীন্দ্রনাথ বলে ,নজরুল বলে ,সময় বলে 

মা ,মাসির গল্প বলে 

কিন্তু শহর বলে না ,মানুষ বলে না 

বলে না কবিতা। 

.

তারা কথা বলে 

তারা তোমার ঘরে হাঁড়ির খবর ,নাড়ির খবর 

সবকিছু রাখে ,

তারা আকাশের গায়ে থতুথুতু ছিটিয়ে ,থুতু মোছে 

কিন্তু কেন যে কবিতায় থাকে না ,মুগ্ধতায় থাকে না 

অসময়ের কবিতায় মানুষ লেখে না। 

.

তারা কথা বলে 

কথায় কথায় বুঝিয়ে দিতে চায় অজস্র টেলিফোনিক সৌজন্য 

তারা নিজের নারীকে পণ্য করে 

বন্য ভাবে তাকায় অন্যের কোনো সুন্দরী নারীর দিকে।

তাদের বুক পোড়ে ,তাদের মুখ পোড়ে 

তবুও কথা শোনে না মানসী   ,

প্রজন্ম মুছতে চেয়ে তারা সাহিত্যের দরবারে কবিজাত। 

তারা শুধুই কথা বলে 

তারা সাহিত্য প্রজন্মকে ভুল দিশায় চালনা করে 

নিজেকে প্রকাশ সর্বশ্রেষ্ঠ ,লেজ বিশিষ্ট কবির পর্যায়, 

কবিতা লিখতে ভুলে গিয়ে 

তারা লিখে ফেলে পুড়তে থাকা সময়ে গল্প ,

আমি গন্ধ পাই 

তবু কেন যেন তাদের বলতে ইচ্ছে হয় 

কবিজাত এবার কবিতা লেখো 

সময়ের মা পিসিমার গল্প না।  

.

বিদ্রঃ :নিতান্ত সত্যি ,কাউকে আঘাত করা উদ্দেশ্য নয়। 

Friday, May 6, 2022

রবীন্দ্রনাথকে খুঁজছি


 রবীন্দ্রনাথকে খুঁজছি 

... ঋষি 


রবীন্দ্রনাথ খুঁজছে শহর 

আমি খুঁজছি রবীন্দ্রনাথকে এই শহরে অন্য কোনো দিনে ,

গীতবাতান ,সঞ্চয়িতা ,কবিতা ,নাটক 

সবই তো হলো 

তবু আজও  রবীন্দ্রনাথকে খুঁজে ফিরতে হয়  

শহরের লুকোনো মানুষের মনে। 

.

অবাক হচ্ছেন 

আজ রবীন্দ্রনাথ আছে ,কাল থাকবে না 

ধুলো ভরা তার ফটোফ্রেমটা খাটের তলায় তুলে রাখতে হবে অনুষ্ঠানের পরে ,

আজ অনুষ্ঠান ভাষণ দিতে প্রধানমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ বানান ভুল লিখছেন 

কাল আপনার ছেলে আমার ছেলে ভুল লিখবে 

কারণ রবীন্দ্রনাথ পুরনো হতে হতে আজ শুধু উদযাপন হয়ে গেছেন। 

.

কিন্তু এমন করে কি সত্যি আমরা রবীন্দ্রনাথ চেয়েছি ?

আমি তো রবীন্দ্রনাথকে চেয়েছি মানুষের  প্রতি ওঠা পড়ায় 

মানুষের  প্রতি মনে রাখায় 

সে বসন্ত হোক ,শ্রাবন হোক ,শরীর খারাপ হোক ,বিদ্রোহ হোক 

সত্যি কি রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আমাদের ভাবা যায় ? 

রবীন্দ্রনাথ মানে শুধু বাঙালি না 

রবীন্দনাথ মানে শুধু জোড়াসাঁকো না 

রবীন্দ্রনাথ মানে শুধু বাইশে শ্রাবন ,পঁচিশে বৈশাখ না

রবীন্দ্রনাথ মানে শুধু ভারতবর্ষ কিংবা বাংলাদেশ না  

আমার মতে রবীন্দ্রনাথ মানে মানুষ। 

রবীন্দ্রনাথ মানে মানুষের চেতনায় বইতে থাকা  ময়ূরাক্ষীর কোপাই    

একটা আলোকময় ভাবনা ,এক সৃষ্টির বৃষ্টি 

যেখানে মানুষের বোধ ,মানুষের আগামী 

চিৎকার করে 

প্রতিবাদ করে 

মানুষের জন্য মানুষকে ঘুম থেকে তোলার।    


Thursday, May 5, 2022

স্পেকট্রাম

 স্পেকট্রাম 

... ঋষি 

 

আলোর স্পেকট্রাম ভেঙে পরে ,

ভাবি বিশল্যকরণী নেই 

রুপোলি স্তবক তবকে মুড়ে এক খিলি ব্যাথা 

ভাবি জীবিত নেই 

গল্পের গরুগুলো চিরকাল মানুষের হাত ধরে বিখ্যাত 

বিখ্যাত মানুষ আজ শুধু অন্ধকারের হাত ধরে। 

.

প্রশ্ন করি নি তোমায় 

কেন ? বা কি ? কিসে পুড়ে যাচ্ছে ও বুকে প্রেম 

শধু নাটকে ,শুধু বন্ধনে 

নাকি লোক হাসাতে,

আমি কলকাতার আবহাওয়ার খবর লিখতে পারবো না 

বরং তোমার অকৃতজ্ঞতার গল্প লিখতে পারি। 

.

এই পৃথিবীতে কেউ কেউ আত্মার  দত্তক নিতে পারে 

কেউ কেউ কল্পনায় ভেবে নিতে পারে সে এক জনপ্রিয় লোকাচার 

কেউ কেউ ল্যাভেন্ডারের গন্ধে কষ্ট খুঁজে পায় 

কেউ কেউ সন্ধ্যের দালানে বসে ঈশ্বর নয় 

পিশাচ সাধনা করে। 

এই পৃথিবীর ব্যাপারগুলো আসলে গোলমেলে 

তাই গোলমেলে লাগে আমার আলোর মতো দেখতে ,শুনতে 

আমি আলোয় আছি 

আমি অন্ধকারেও থাকতে পারি 

কিন্তু মুখোশ 

'না হে বসন্ত 

এখন এই শহরে  বৈশাখ  আর রবীন্দ্রনাথ।  

Wednesday, May 4, 2022

দ্যা সিটি অফ মাস্ক

 দ্যা সিটি অফ মাস্ক  

... ঋষি 


মুখোশের এক দুই তিন 

আর শহর কলকাতার ধাক তিনা তিন 

আয়নার সামনে শহর ,নিতান্ত নিরুপায় 

তবু দিন বদলায় 

শহরের রঙে রঙিন হয়ে সময়েরা  আজ কূপমণ্ডুক 

আর মুখোশের বড় একলা নিজেদের আয়নায়। 

.

কখনো দাঁড়িয়েছো এই শহরের সামনে 

কখনো দাঁড়িয়েছো ধর্মতলার মেট্রোর সেই গভীর সাপটার কাছে 

এঁকে ,বেঁকে চলে যাওয়া শহরের বয়স 

ঘোড়া ট্রাম বদলানো শ্যামবাজার 

সব কেমন মেনে নেওয়া ছাড়া কিছু নয় 

ভারাক্রান্ত বার্ধক্যে এই শহর এখন চশমায়। 

.

আমি রবীন্দ্রনাথ খুঁজেছি 

খুঁজেছি সত্যজিৎ ,মৃনাল সেন,জীবনানন্দ ,সুনীল ,সমরেশ 

অথচ কফিহাউস হারিয়ে গেছে 

হারিয়ে গেছে শঙ্খ ঘোষ ,শম্ভু মিত্র ,মহাশ্বেতা।  

তবু মানুষ মুখোশে এই শহরে 

আজ কেমন হাসছে কাঁদছে 

দ্যা সিটি অফ মাস্ক  

বদলাচ্ছে কিছু 

কিন্তু বদলাচ্ছে না মুখোশের আদল 

বদলাচ্ছে না সময় 

শুধু সময়ের অন্তরে আজ শধু ভাঙা গোপন আয়না। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...