Wednesday, March 31, 2021

খেলাঘর

খেলাঘর
... ঋষি 
.
তোমার শিয়রে জেগে থাকি 
শুধু ভালো আছি বলার জন্য 
সকালের রেডিওতে তখন রবীন্দ্রনাথ আমার গভীরে গায় 
"খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে "।
অদ্ভুত তরঙ্গে কল্লোল যুগ নাচতে থাকে 
নাচতে থাকে কতগুলো ফটোফ্রেম, একক, দশক আর বাদশা। 
.
আমি বাদশা হয়ে বসে থাকি মহা তাজে
এলাচ আর দার্জিলিং তোমার মতো আমার সময়ে সকাল খোঁজে,
আমি তাজের পাথরে লিখে এসেছি একটা ভারতবর্ষ 
কারন আমি যে সপ্তম 
যাকে তুমি জড়িয়ে থাকো সারা রাত 
আর আমি সে যে তোমার শিয়রে বসে বলে " ভালো আছি "। 
.
ভালো আছি আমার শহর 
ভালো আছি শহরের ফুটপাথ 
ভালো আছি বোতাম ছেঁড়া ভালোবাসা, হঠাৎ লিফটে লেপ্টানো লিপস্টিক,
ভালো আছি পুবের বারান্দার ম্যানিপ্ল্যান্ট, একলা সিগারেট, 
ভালো আছি শহরের জনরব আর গীতবিতানের একলা গোলাপ। 
শুধু তোমায় বলা হয় নি চলন্তিকা
প্রতিটা ভালো থাকা, মানুষের ভালো থাকতে চাওয়া 
আসলে একটা না বলা,
পরিসংখ্যান বলে ভালো থাকা শব্দটা একটা সামাজিক শব্দ।
আসলে আমরা কেউ ভালো নেই 
আসলে আমরা কেউই কাউকে সম্পুর্ন ভালো রাখতে পারি না
শুধু নিজেদের আয়নায় নিজেদের পিঠ থাবড়ে বলি 
ভালো আছি
কারণ ভালো থাকাটা একটা আর্ট যা আমরা রপ্ত করি ছোটবেলা থেকে । 


Tuesday, March 30, 2021

ফরেস্তা

ফরেস্তা 
.. ঋষি 

দুঃখ সরাই দুহাত দিয়ে
সরিয়ে ফেলতে চাই একটা জানলা যা তোমার আমাত গন্তব্য 
কারণ আমি বিশ্বাস করি গন্তব্যের আবার ঠিকানা কি?  
.
শব্দ সরাই, সরাই বর্ণমালা 
আমার মাথার ভিতর বলির পাঠার মত ছটফট করে একটা জীবন 
কারন আমি ঘাস খাই আবার আগুন ধরাই শুকনো ঘাসে। 
.
আমি যুক্তি সরাই, তর্ক সরাই, সরাই ঝগড়া মাথার ভিতর থেকে 
তারপর হরিনাম খুলে দাঁড়াই গিয়ে হিমালয়ের মুখোমুখি 
প্রশ্ন করি আদিম রহর্স্যকে, দুয়ো দি 
তোমার আর আমার জন্মের মাঝে তফাৎ সীমানায়। 
.
আমি ভগবত গীতা পড়ি, পড়ি কোরান, বাইবেল 
আমি শরদিন্দু পড়ি, পড়ি শক্তি, পড়ি সুনীল ঘোড়ার বকলেস চোখে 
তারপর নিজের শব্দদের মনে করি মাইলস্টোন, 
আসলে ভুলে যাই আমি 
মাইলস্টোন তৈরি করতে নিজেকে ভালো রাখতে হয় 
স্বপ্ন দেখতে হয়,
জানতে হয় প্রেমিকা শব্দটা আসলে কবির মৃতদেহ 
যেখানে কবি হাতড়ায় শব্দদের 
আর প্রেমিকা আঁকড়ে থাকে কবিকে 
কারণ কবির শব্দরা আশমান ছুলে ফরেস্তা নেমে আসে ভাবনায়।

সুড়ঙ্গ

সুড়ঙ্গ 
... ঋষি 
সারারাত ধরে মাটি খুঁড়ে চলেছি 
প্রথম সকাল তারপর রাত্রি, ক্রমশ সুড়ঙ্গ ইসপার, উসপার 
আলো ভালো লাগে না আর, 
অন্ধকার ভালো লাগে না আর 
বাইরের পৃথিবীতে শুধু চালাক শেয়াল আর ঈশপের গল্প 
এখানে আমার মত বোকারা দাঁড়াবে কোথাই? 
.
অন্ধকার আকাশে চাঁদের পাশেও ছায়া
চলন্তিকা দেও না তোমার গভীরে যাই 
নিজের মাথার ভিতর পঞ্চাশ গ্রাম ভেজাটা গর্ভপাত করিয়ে 
জন্ম দি মাটির গন্ধ, 
দেখো চলন্তিকা এই সংসারে সত্যি হওয়াটা বোকামী
আর বুদ্ধিমানরা তাই মিথ্যে বলা অভ্যাস করে। 
.
সারারাত ধরে মাটি খুঁড়ে চলেছি 
মাটির প্রতি স্তরে আমার বাবা, তারপর মা, তারপর সন্তান 
সবাই আছে 
আর আছে ক্লাইমেক্সে শুকিয়ে থাকা তুমি 
আর আমি 
জীবাশ্ম ছুঁয়ে এক বোকা যে ভালো থাকতে চায়। 
সারা শহর ছুঁয়ে আজ আমার হিমঘর 
বসন্ত আসে, আলাপচারিতায় মিথ্যে বলি আমি ভালো আছি 
শীত আসে মেরুদন্ড বেয়ে সময়ের বরফ, বরফকে বলি বেশ আছি 
নাতিশীতোষ্ণ গরমের চাষের জমিতে আমি ধৈর্য্য চাষ করি 
কেউ প্রশ্ন করলে বলি গরমকালে ঘাম হওয়াটা স্বাভাবিক 
শুধু নিজেকে মিথ্যে বলি আমিও 
ভালো আছি।
.
তাইতো সারারাত ধরে মাটি খুঁড়ি আমি
হাঁপিয়ে যাই, নিজেকে চিবোই 
চলন্তিকা তোমায় আস্ত গিলে খাই, মগজ ধোলাই, 
তারপর সকাল আসে 
আলো আজকাল ভীষন চোখে লাগে 
আমি শব্দদের ভয় পাই পৃথিবীর 
লুকিয়ে পরি মাটির নিচে সুড়ঙ্গে।

Monday, March 29, 2021

এক ফালি রৌদ্র

এক ফালি রৌদ্র 
... ঋষি 
আমি কিছুই করতে পারবো না
বুকের উপর পাথর তুলে যে আরাম, সেই আরামের সাক্ষী 
বেশ গোছানো পলাশের মাসে 
আমি সত্যি বলতে পারবো না,
বলতে পারবো না বুকের খাঁজে আটকে থাকা সত্যিটা
তুই ছিলি। 
.
আর আমি শুধু সাক্ষী ছিলাম 
একটা সময়ের, 
যেখানে আমি বলতে পারবো না ভালোবাসা বুকের ভিতর পাথর 
বুকের নিচে ধুকপুক 
আর দুর্বলতায় 
একটা হেরে যাওয়া মানুষ জ্যোৎস্না খুঁজতে জোনাকি ধরে বেড়ায়। 
.
না হে ভালোবাসা 
আমি শুধু তোর শাড়ির বারান্দার তলায় দাঁড়িয়ে তোর ফড়িং ইতিহাসের 
ঘাসপাতা হতে পারবো না, 
কিংবা তোর  ব্রেসিয়ারের স্ট্রাপে লিখতে পারবো না
একটা অভুক্ত রাত শুধু গিলোটিনে রেঁনেসাঁস আঁকে। 
আমার মারাত্নক একটা ভুল 
সত্যি লিখতে হবে বলে তোকে মিথ্যে বলতে পারবো না
বলতে পারবো না
তোর রান্নাঘরের হাতা খুন্তির আওয়াজে আমি অভুক্ত থাকি
তোর সাজানো বাগানে আমি বেঁচে থাকি বিষাক্ত ফলের মতো 
তোর ঠোঁটের ব্যারিকেটে আমি লিপস্টিক হতে চাই না
হতে চাই পাগল জীবন 
যেখানে একফালি রৌদ্র শুধু তোকে ছুঁতে চাই। 
.

আ ইমপারফেক্ট স্টোরি


আ ইমপারফেক্ট  স্টোরি 
... ঋষি 
 
ফিরছি না, ফিরবো না 
বুকের রক্ত কোষে পাটিগনিত জীবন, 
সময়ের সাগরে জীবন্ত কিছু লাশ 
ক্রিটিকাল সম্পর্কের দিশা সামলে হাসতে থাকে, 
গ্যাসবেলুনে পারফেক্ট শব্দটা ফানুস হয়ে বাঁচে
ফি বছর তবু কিছু লাশ ভেসে ওঠে সময়ের ব্যালট বক্সে। 
.
আমাকে এক দলা সায়ানেট দিতে পারো চলন্তিকা 
আমি এই শহরে মৃত্যুর শান্তি চাইছি 
চাইছি সাজানো পাতাবাহার সময়ের সংসারে অলিখিত  মৃত্যুর ভুমিকা, 
জাস্ট নো বডি পারফেক্ট ইন দা লাইফ 
স্বার্থপর দাবার গুটিগুলো এখন মানুষ সামলাচ্ছে, ঠকাচ্ছে
এগিয়ে দিচ্ছে চৌষট্টি ঘরের শেষ মুহুর্ত রাজা কাহিল 
না হে যোগ্যতা এই মৃত্যুতে আমার শোক নেই। 
.
জড়িয়ে যাওয়া চোখের পাতা
চলন্তিকা তুমি ক্রমশ দারুন হয়ে ফুটছো আমার মৃত্যুর ভুমিকায়, 
হাজারোবার বলেছি ও চোখে আমি মরতে পারি ৩৬৫ দিন
তবু বাঁচার খাতায় নিয়মের বারো মিনিট 
পারফেক্ট একটা সভ্যতা, 
যেখানে শাড়ি  তুলে রাস্তায় দাঁড়ায় জীবন। 
আবোলতাবোল ৩০ এম এলের জীবন অসহ্য পানশালার রিফিউজি ক্যাম্পে 
সময় ভাবছে ব্যালট বক্সের রঙিন ছাপ 
সময় আঁকছে একটা অসামাজিক ঈশ্বর তোমার স্তনের নগ্নতায় 
আমি ভাবছি 
মানুষগুলো আমার মতো নিলজ্জ হয়ে বাঁচছে কি করে? 
.
চলন্তিকা সংসার খুলে এই মুহুর্তে কাঁটা চামচ আঁকড়ে বাঁচতে চাইছে
ভীতু সাধারণ যোগ্যতা এই মুহুর্তে দৈনন্দিন নিরিবিলি প্রফিট চাইছে
রাষ্ট্র চাইছে একটা নির্ভরশীল সরকার, 
আমি চাইছি 
সবাই ভালো থাকুক, সকলে সুস্থ থাকুক 
আমাদের সন্তান দেখুক একটা ভারতবর্ষ যেখানে সকলেই রাজা, 
কেউ ক্রিতদাস নয় 
কেউ অসামাজিক নয় 
কেউ দুর্বল সমাজের দাস নয়। 

 


Sunday, March 28, 2021

দোল উৎসব ২০২১

দোল উৎসব ২০২১
... ঋষি 
.
Do Me A Favour Let's Play Holi
কেমন জানি শুনতে লাগলো
বসন্ত বাতাসের সময়ের সারেঙ্গিতে বিষন্ন রোগের ছায়া, 
নীরব অভিমান ক্রমশ পাতার পর পাতা আরেকটা উৎসবের দিন 
আর একটা  একলা কবিতা। 
.
নেশার পাত্র ছুঁয়ে 
কিংবা পাড়ার মাইকে অদ্ভুতুরে শুনতে লাগছে চলন্তিকা 
রঙ বরষে, ভিগে চুনারবালি রঙ বরষে, 
নিজে দাঁড়িয়ে আছি আবিরের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে একলা আয়নায় 
আজ শুধু পথঘাট ভিজে যাওয়া হাজারো রঙে 
সময়ের সঞ্জিবনী ভাঙা মুহুর্ত আর  একবালতি রঙ। 
.
চিনতে পারছি না আমি 
বুঝতে পারছি না 
সামনে রং ভরা বেলুনের একের পর এক হাওয়াই ফায়ার। 
চলন্তিকা জানতে তুমি আসবেই এই কবিতায় 
কারণ আমার হাতের পিচকিরিতে কৃষ্ণের বাঁশি,একলা দাঁড়ানো গোকুল 
আর তুমি রাধা,
এই শহরে কৃষ্ণরা আজকাল বাঁশি বাজাতে ভুলে ভিক্ষাবৃত্তিতে ব্যাস্ত
আর রাধারা শুধু সংসারী নিয়মের ভুমিকায়। 
তবু আজকে একটা অন্য দিন 
তবু আজকে একটা রঙের দিন 
আমার কবিতার ফাগ, আবিরের রঙ তাই আজ সারা শহরে ঢেলে দিলাম 
তোমার হৃদয়ের রঙ আঁকড়ে বললাম 
ভালো থেকো শহর 
ভালো থেকো বসন্ত 
ভালো থেকো তুমি চলন্তিকা আর তোমরা
আজ দোল উৎসব, ২০২১। 



 
.

Saturday, March 27, 2021

নষ্ট বিশ্বাস

নষ্ট বিশ্বাস 
.. ঋষি 

তোরা দুজন ঠোঁট ঠেকালি 
পৃথিবীর দুটো কোকিল খুব দূর দিয়ে চঞ্চু ঠেকালো সম্পর্কে,
তোরা ভাগ করলি সুখ, দুঃখ আর পথের কাঁটা
ওই দুটো কোকিল ডেকে উঠে জানান দিল 
বসন্ত এসেছে। 
.
জানলা খুললো 
সম্পর্ক দাঁড়ি, কমা সহ ক্রমশ আরো অনেক সংকেত বাড়ালো, 
তারপর যা হয় আর কি 
কোকিল দুটো চিৎকার করে অসময়ে জানান দিল 
বসন্ত পুড়ে গেছে, সম্পর্ক আসলে একটা চুক্তির নাম
কোকিল দুটো পিছনো ফিরে বসলো। 
.
তোরা দেখলি, পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে বসলি 
স্পিক্টি নট, 
কেউ তাকালি না কারোর দিকে, পা বাড়ালি পৃথিবীর পথে
কেউ জানলো না
একটা সম্পর্ক ভাঙলো 
শুধু কোন আওয়াজ হলো না।
 কোকিল দুটো এখন সারা আকাশ ঘুরে বেড়ায় একা একা
এ ডালে বসে, ওই ডালে বসে শান্তি পায় না
তারা অপেক্ষা করে বসন্ত আবার আসবে 
আসবে ঠিক, 
আর তোরা খুঁজিস বসন্ত সম্পর্কের ফাঁকে
নষ্ট বিশ্বাসে।  





তোমার অশ্লীলতায়

রত্নদীপা দি তুমি আমার দিদি হতে পারো 
হতেই পারো কবি,
কিন্তু আমার কাছে তুমি এক আশ্চর্য, তোমার কলম যেন আগুন,
অবাক হই তোমার ভাবনায় যখন আগুন ধরে সভ্যতার মাতৃজঠরে
আর সভ্যতা সৃষ্টি বিমুখ হয়ে বিরুপতা করে 
যখন বলে তোমার সৃষ্টি অশ্লীল। 
.
মাঝে মাঝে আমি ঈশ্বর ভাবি 
ভাবি, সে কতটা নগ্ন? 
ভাবি আকাশের ভাষা খুলে আমরা কজন হতে পারি 
বিনয় মজুমদার 
কিংবা 
রত্নদীপা দে ঘোষ। 
.
আদতে আমাদের বিশ্বাস করতেই হবে 
সাহিত্যের ভাষা ধর্ম না, পোষাক না
বরং ভাবনা, 
তাই তোমার সকল অশ্লীল  সুমধুর সৃষ্টিদের আমার শুভেচ্ছা
শুভেচ্ছা নারীর ঋতুরংগে ওই পাঁচদিন 
যেদিন তোমরা আরও সৃষ্টি মুখোর।
.
আমি যদি ঈশ্বর  হতাম, তবে দিদি তোমার আঙুলে চুমু খেয়ে বলতাম 
তুমি সৃষ্টিসুখী নষ্ট নির্বান, 
তোমার সৃষ্টির গভীরতায় আরো অশ্লীল কবিতা জন্মাক 
কারন পৃথিবীর সবচেয়ে অশ্লীলতম দৃশ্য হলো 
মাতা মরিয়ামের স্তনে ঈশ্বরের দাঁত,
কিংবা তোমার কবিতায় 
পৃথিবীর স্তন। 
.
তোমার অশ্লীলতায়...
ঋষি

কথা

কথা 
..,,ঋষি 
কথা বলতে ইচ্ছে করছে 
এই শহরে কি একজনও কি আছে যার সাথে আমি মুখোমুখি আছি 
নাকি 
মুখোমুখি শুধু আমি আর শব্দ 
আর নিশব্দ। 
.
সময়ের পায়ের নিচে জল 
তুমি বোধহয় সদ্য হাঁড়ি, খুন্তি শেষে কাপড় বিছিয়ে ভাতঘুম, 
ভাতঘুম সভ্যতার সুখের দিন 
ভাতঘুম অসভ্যতার কাছে  সুযোগ 
ভাতঘুম আমার গভীরে একটা দিন 
যেখানে আমি, তুমি মুখোমুখি বসন্ত ফুপিয়ে শুকনো পাতা কুড়োয়। 
.
আমার পায়ের নিচে মাটি
তোমার সিন্ধু সভ্যতায় খুঁড়ে চলা রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায়, 
তুমি বোধহয় ব্যাস্ত 
নিরিবিলি ঘর সংসার, মাছ,ভাতে আর স্তনের ডগায় সন্তান 
অথচ আমার আঁকার খাতায় তুমি সেই সাঁওতালি নারী 
যার পায়ে৷ ঘুঙুর, শাড়িতে ময়ুরের পালক 
এত রঙ
আর আমি তোমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সেই বটগাছ 
যাকে তুমি কাজের ফাঁকে প্রেমিক বলে ডাকো। 
.
কথা বলতে ইচ্ছে করছে
আসলে আমার কথাগুলো আমার সাথে বাস করা প্রশ্রয় 
সময়ের গভীরে জল, ফিতে কাটা দূরত্ব, 
সব কথাদের ঠিকানা থাকে না যেমন
তেমনি ঠিক থাকে না কথাদের শরীরে রক্ত
কথারা আসলে প্রাশ্রয়ী, আসলে ঈশ্বর ভক্ত। 

অন্য বসন্তের কবিতা



অন্য বসন্তের কবিতা 
.. ঋষি 
.
আমরা যারা বাঁচতে বাঁচতে প্রদীপের তলায়
নিজেকেই নিজেরাই হারাতে পারি, হারতে পারি, ফিরতে পারি
তাদের জন্য কি প্রয়োজন সেটা কথা নয়, 
কথা হল আমি তোমার দিকে তাকিয়ে হৃদয়ে বসন্ত লিখতেই পারি, 
লিখতেই পারি কাদম্বরীকে তুমি  মনে করে
"প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস—
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ। "
.
জানি চলন্তিকা 
তুমি হিংসা করবে না কাদম্বরীকে,
কিংবা হঠাৎ মুড সুইং করে আর  আমার দিকে তাকিয়ে বলবে না কখনো
ভালোবাসা মানে কিছু নয় সে তো পুরুষের খিদে 
তাতে আমার কি কিংবা বসন্তের
সবটাই শুধু টাইমপাস, একটা অভ্যাস। 
.
আমি ঠাকুর নই চলন্তিকা, 
তুমি নও সেই ৬ বি দ্বারকানাথ টেগোর লেনের জোড়াসাঁকো গৃহবধু, 
আমি এই শহরে হঠাৎ তোমার সাথে দেখা হওয়া সেই দমকা হাওয়া
আর তুমি সেই হাওয়ায় ভেসে চলা আমার শহর।  
আমি সেই হতভাগ্য প্রেমিক 
যে প্রেম খুঁজতে খোঁজে না বসন্ত, যার খোঁজ শুধু  একটা মুহুর্তের,
তোমার মুখোমুখি। 
.
যার কাছে তোমার হাসি - ভালোবাসা
যার কাছে তোমার চোখ - ভালোবাসা 
যার কাছে তোমার হৃদয় - হৃদয়ের ঘর 
যার কাছে তোমার অভিমান - শুধু কষ্টের 
যার কাছে তোমার দূরে থাকা - শুধুই রক্তপাত 
যার কাছে তোমার ঠিকানা - একলা আকাশ
যার কাছে তোমার বিশ্বাস - ভোরের বাতাস । 
.
আমি সেই ভালোবাসায় বিশ্বাসী
যেখানে  তুমি চলন্তিকাই শুধু , কাদম্বরী নও, 
আমিও নই সেই  স্বার্থপর কবি
হতেও চাই না আমি কখনো অভিসপ্ত কাদম্বরীর চিঠি। 
শুধু ভালোবাসতে চাই 
কোন বসন্ত নয়, কোন পলাশ কিংবা আবিরের রং নয়
কোন নিয়ম কিংবা ঘরের চোকাঠ নয়, 
শুধু ভালোবাসতে চাই 
না কবির  মতো না বরং সোনাঝুড়ির জঙ্গলের মত
শুধু ঠাকুরের কবিতায় নয় 
প্রতিটা কবিতা যেখানে তুমি আছো, ভালোবাসা আছে 
আর আছে শুভেচ্ছা 
ভালো থাকার। 
.
পুনশ্চ ঃ 
এখানে কোন বসন্ত লাগে না, লাগে নি কোনদিন
আমার মতো যারা নিজেকেই নিজেরা পোড়াতে পারি, বাঁচাতে পারি 
তাদের জন্য ভালোবাসা শব্দটা কোন বসন্ত নয় 
বরং একটা শিক্ষা যা আমার ঠাকুরবাড়ি থেকে পাওয়া। 




Friday, March 26, 2021

সন্ত্রাস



সন্ত্রাস 
.. ঋষি
একহাতে জড়িয়ে ধরেছি তোমায় 
একহাতে জড়িয়ে রেখেছি সন্ত্রাস,
সন্ত্রাস কোন ভাবনায় রাখা শিশুর হাতে এ কে ফোর্টি সেভেন নয় 
এ সন্ত্রাস হলো মানুষের গভীরে শুয়ে থাকা অভিযোগ সময়ের গায়ে,
এ সন্ত্রাস শুধু কোন শব্দ নয় 
এ সন্ত্রাস মানুষের জমাট বাঁধা  আক্রোশ  সময়ের অভিমানে। 
.
তুমি যেয়ো না আমাকে ছেড়ে 
অথচ সেই সন্ত্রাস প্রেমিকার ছল ছল চোখে চোখ রেখে 
যন্ত্রনায় কুঁকড়ে ওঠে, 
বলে যেতে আমাকে হবেই সময়ের বিরুদ্ধে 
না হলে পুড়বে আমার ঘর, পুড়ে যাবে আমার জাত, আমার ধর্ম 
আর ভুলবে তুমিও আমি মানুষ, 
আর পেটের সন্তান অভিযোগ ঠুকবে সময়ের জজসাহেবের কাছে 
মেরা বাপ না মরদ থা। 
.
আমার এই সন্ত্রাস মানুষের জন্য
অথচ মানুষের খুনে নয়,
আমার এই সন্ত্রাস শুধু লোভ কিংবা ধ্বংস নয় 
এ হল প্রতিটা মানুষের বুকের আগুন। 
আমার এ সন্ত্রাস হল একটা প্রমান 
যা আমার প্রেমিকার পেটে বাড়তে থাকা হৃদপিন্ডের আগামী, 
আমার সন্ত্রাস খেতে না পাওয়া মানুষের বিরুদ্ধে না
বরং বাড়তে থাকা পুঁজিবাদ কিংবা গ্লোবালাইজেশনের বিরুদ্ধে।
এ সন্ত্রাস মুখোশ চায়  না, চায়  আরও গাছ আরও সবুজ 
এ সন্ত্রাস শুধু সভ্যতার কাপুরুষ নগ্নতার বিরুদ্ধে 
এ সন্ত্রাস কোন পলিটিকাল ভাষন না 
এ হলো একটা অভিযোগ একটা গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের 
একটা অসংবিধানিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। 
.
এই মুহুর্তে আমার হাতে কলম না একটা এ কে ফোর্টি সেভেন 
আমার টার্গেটে দাঁড়িয়ে মুখোশ ধারী একটা ভোটের সময় 
আমার নিশানায় এই সময়ের কালোবাজারী আর লোক ঠকানো
আমার মাথায় ঘুরছে শুধু  রাষ্ট্রের লজ্জা। 
আমি মনে করতে পারছি না আমার একজন প্রেমিকা আছে
আমি মনে করতে পারছি শুধু তার পেটে আমার আগামীর ভারতবর্ষ, 
আমি ভাবতে পারছি না নিজেকে এক সভ্য দেশের নাগরিক 
বরং আমি চাইছি আমার হাতে এ কে ফোর্টি সেভেন গর্জে উঠুক 
আর ধ্বংস করুক সময়ের এই দালাগুলোকে, 
আসলে ধর্ষক সে নয় যে ধর্ষন করে
ধর্ষক সেও যে খারাপ চোখে লুকিয়ে নারী দেখে।
কিন্তু পারছি না জানো 
সত্যি পারছি না কিছুতেই নিজের ভিতর সন্ত্রাসকে জাগ্রত করতে
পারছি না চিৎকার করে সত্যি বলতে
পারছি না সময়ের মুখোস খুলে মিথ্যাকে নগ্ন করতে। 

Thursday, March 25, 2021

পুরুষ শব্দটা

 পুরুষ শব্দটা 

... ঋষি 

.

সবাই ময়নাকে ভালোবাসে 

কিন্তু প্রতিটা  পুরুষের গভীরে জীবিত সেই কালো মেয়েটা 

না, ভালোবাসে না। 

আগুন নেভাতে মেঘ লাগে 

অথচ যে মেঘের বৃষ্টি চিরকাল ,যে মেঘের যন্ত্রণার ছায়াছবি 

সেই মেয়েটাকে বোধহয় সকলে কালো মেয়ে বলে। 

.

আমি আকাশ খুঁড়ে দেখি 

বুক আগলে শুয়ে থাকা কালো মেয়ে সে যে অদ্ভুত পেইন্টিং 

গণেশ পাইন ,

আকুতি শুধু কালো মেয়ের পাশে এক সবুজ টিয়া 

সবুজ ঘর ,সবুজ সংসার 

সবুজ কিছুক্ষন মুখোমুখি সময়ের ঈশ্বর। 

.

আবিষ্কার শব্দটা বোধহয় পুরুষকে ঋণী করছে মাতৃতান্ত্রিক সময়ের কাছে 

স্তনের বোঁটায় গড়িয়ে নামা শৈশব তাই বোধহয় এত কমদামি আজ ,

পুরুষের ভিতে মাটিতে কুকুরে জিভ 

তাই বোধ হয় কালো মেয়েটাকে ছেড়ে চলে গেলো তার  স্বামী, 

আর কালো মেয়ে স্মৃতি আগলায় 

আগলায় সুখ ,

বুকের মাটি খুঁড়ে ছড়িয়ে দেয় সবুজ শস্য মনের টিয়াকে।  

আরো অধুষ্যিত হলো এই ভাবনা আমার অনুভবে এক কালো মেয়ের জন্ম দেয় 

যে আকাশের দিকে তাকিয়ে শধু দিনবদলের গল্প লেখে ,

গল্প লেখে ঋতুবদল 

অথচ খুব সহজ করে সত্যি লিখতে পারে না ,

কারণ পুরুষ শব্দটা  বিশ্বাসযোগ্য নয় 

বিশ্বাসযোগ্য নয় পুরুষের চোখে কুকুরের প্রেম। 

.


বারুদ

বারুদ

... ঋষি 


তোমার ঘৃণার শব্দগুলো বারুদ হয়ে  নামুক আমার বুকে 

আরো আগুন চাইছি আমি 

চাইছি একুশ শতকের বুকে অপেক্ষামান ঝিমিয়ে থাকা বিশ্বযুদ্ধ ,

ডার্ক ওয়ার্ল্ড থেকে উঠে আসা আমার শব্দরা 

কোনোটাই মানুষের জন্য না 

প্রতিটা শব্দ হোক ধ্বংসের। 

.

আমি আমজনতার কথা জানি না 

প্রতিদিন বাজারের ব্যাগে উঠে আসে সময়ের যুদ্ধের  ট্যাংকার ,

আমার চারপাশে ছড়ানো মুখগুলো সব রক্তাক্ত ,

সময়ের রক্তবমি আজ 

অথচ প্রাচীন রোমের ক্লোয়াক্সা ম্যাক্সিমা নামক বিশাল নর্দমায় আজ শুস্কতার মৌসম,

আমার ১২ নম্বর সুনীলরায় সরণি 

আজ শুধু অপেক্ষামান  যুদ্ধক্ষেত্র। 

.

তোমার শব্দের অবিশ্রান্ত যুদ্ধজেটের বোমাবাজি  

আমি মুক্তি খুঁজেছি ,

খুঁজেছি নিজেকে তোমার ঝুলে থাকা মধ্যে বয়স্ক স্তনে ,

সাজানো চোখের পাতায় ,চোখের কালিমায় 

আমি অবিশ্রান্ত শোক দেখেছি 

দেখেছি একজন ফুর্তিবাজ যুবতী কিভাবে পরিণত একজন সন্দেহপ্রবন নারী। 

তাই আমি উষ্ণতা খুঁজি না সেখানে 

অপেক্ষা করি আসন্ন বিশ্বযুদ্ধের চাদরের আড়ালে 

অপেক্ষা করি বারুদ বুকে বিস্ফোরণের

অপেক্ষা করি ধ্বংসের। 

আমার এই কবিতা সাজানো প্রগতির জন্য নয় 

আমার  এই কবিতা কোনো সময়ের প্রতিবাদ নয় 

আমার এই কবিতা রক্ত 

আমার এই কবিতা সত্যি মানুষ 

আর অবিশ্রান্ত বারুদের যা চোখের আড়ালে অন্ধকারে ঘটে প্রতিটা নির্ঘুম রাতে 

ষড়যন্ত করে একটা বিশ্বযুদ্ধের।    

 

ভালোবাসায় গুলজার



ভালোবাসায় গুলজার 

... ঋষি 


"Bahut mushkil se karta hoon teri yaadon ka kaarobaar,

munaafa kam hai lekin guzaara ho hi jaata hai!"

.

গুলজার সাহেব কলমটা নামিয়ে রাখলেন 

আমার মতো হাজারো প্রেমিক তকদির লিখতে শব্দ বেছে নিলো এই শহরে ,

শহর বলতে সময় বোঝে শক্ত একটা নিয়ম 

আর শহরের বাইরে পুরোটাই বোধহয় 

তোমার মতো সবুজ। 

.

আমি দেখি পদ্মাপাড়ে সেই মাঝি নৌকা 

বিয়াল্লিশের বারুদ থেকে খুঁজে পাওয়া সেই সন্তানের মৃত মুখ ,

ভালোবাসার সুখ। 

ভালোবাসা দেশ 

ভালোবাসা সময়ের সুখে বেঁচে থাকা 

ভালোবাসা সন্তানের মুখের হাসি 

আর 

ভালোবাসা " তুমি " শব্দটার ভিতর লুকোনো সময়ের কাঁটা। 

.

গুলজার সাহেব আবার লিখলেন।...


" Us umra se humne tumko chaha hai,

Jis umra mein hum jism se waqif naa the…!!!"

অদ্ভুত সুর 

স্মরণীয় শব্দদের ভিড়ে প্রেম যেন ঈশ্বর হয়ে নেমে আসে হৃদয়ের স্তরে ,

আমার মাঝে মাঝে মনে হয় হৃদয়ের বোধহয় অনেকগুলো স্তর আকাশের মতো  

যেমন যন্ত্রণার ,

একটা পেরেক যখন ঢুকতে থাকে ,ঢুকতেই থাকে হৃদয়ে 

তখন বোধহয় ভালোবাসা গীর্জার দেওয়ালে ধর্ম বলে খোদাই হয় ,

মসজিদে হয় আজান 

আর মন্দিরে সন্ধ্যা আরতি।  

আর আমরা যারা ভালোবাসার জড়তায় জড়োসড়ো 

মৃত্যু বুকে নিয়ে বাঁচি ,

আসলে ভালোবাসতেই পারি না 

তারা শহরে রাস্তায় জলছবি আঁকি সুখী জীবন।  

.

(গুলজার সাহেবকে স্মরণ করে ,শব্দের জলছবি ভালোবাসায় )


কয়েকশো মাইল

 কয়েকশো মাইল 

... ঋষি 

.

কয়েকশো মাইল হাঁটার পর 

পার করার পর অজস্র মাইলফলক আর দূরত্বের হিসাব 

না কোথাও পৌঁছোয় নি আমি। 

আমার বারোতম প্রেমিকা যাওয়ার সময় গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিল জপের মালা 

আজ অবধি আমি সেই অদৃশ্য মালার জপ করে 

চলন্তিকা কুড়িয়ে বেড়াচ্ছি। 

.

আমার বীর্যের সন্তানরা 

আমি জানি না তারা সংখ্যায়  কত ?

কতজন জীবিত কিংবা মৃত ?

আমি স্ত্রীযোনি নিয়ে কয়েকহাজার সংবাদ লেখার পর 

ব্লকবাস্টার জনপ্রিয় কোনো মুভি কিংবা মরুভূমির ওয়েসিসের কাছে দাঁড়িয়ে 

আজও খুঁজি তৃষ্ণা। 

.

এ  সব কথা বলতে নেই লোকসমাজে 

তাই যন্ত্রনাদের শব্দ আমার দিনলিপি কখন যেন কবিতা হয়ে ফোটে ,

আজ অবধি কোনো নারী আমাকে বলতে পারে নি 

আমি তোমার  সবটা ,

তোমার  ভিতরে বাইরে যত আগুন আমাকে পোড়াও । 

প্রশ্নের চকমকি খুলে তাই আমার কয়েকশো কবিতা 

চলন্তিকা তোমাকে খোঁজে 

খোঁজে আগুনের ভিতর ,

খোঁজে মনের ভিতর 

খোঁজে মুহূর্তের গভীরে  

শরীর নয় ,হৃদয় নয়, আসলে পুড়ে যাওয়া ছাই 

আর মুঠোর ভিতর হাতের রেখা

এই আমি  

বদলাতে চাই না। 

.

আরও হাজারো কয়েকশো মাইল আমি হাঁটতে রাজি আছি 

চলন্তিকা তোমার জন্য ,

কোনো ব্রোথেলের দরজা খুলে দমকা হাওয়া 

কোনো কবিতার শব্দ খুঁড়ে প্রতিবাদী জেদ ,

কোনো সময়ে রক্তগঙ্গা পেরিয়ে আবার ক্রুসেড। 

একদিন যদি অপেক্ষায় ফুরিয়ে বিকেল 

তারপর সবসময় 

পৌঁছনো যায় তোমার  পাঁচফোড়নের গল্প গুছিয়ে চলন্তিকা বাঁচার গন্ধে। 


Wednesday, March 24, 2021

ছাইদানি খুঁড়ে রাষ্ট্র

ছাইদানি খুঁড়ে রাষ্ট্র 
..ঋষি 
ঈশ্বর মানুষকে ভাবনা দিয়েই খুশি 
ঈশ্বর মানুষকে এক পৃথিবীর দায়িত্ব দিয়েই কাজ শেষ, 
আমি শহর খুঁড়ে দেখি, 
শহরের মানুষগুলো মরতে অভ্যস্ত রোজ নিয়মের অনিয়মে
অথচ চোখে স্বপ্ন 
" একটা রাষ্ট্র " আর দিন কাটাতে চাওয়া। 
.
জানি না কে রাষ্ট্র ভাবে না 
আসলে আমার এই উপছে পড়া আগুন ছাইদানি খুঁড়ে রাষ্ট্র গড়ে,
ছাইয়ের স্বপ্ন। 
আমরা সকলেই কম বেশি প্রেমিকাকে চুমু খেয়ে শারুখ খান 
অথচ জ্যান্ত শ্মশানে,কিংবা উৎসবের দিনে মদ খেয়ে মাতলামি করি
ভুলতে চাই রাষ্ট্র,মুহুর্ত আর বিষন্নতা।
বলুন তো কিসের এত দুঃখ মানুষের? 
.
তুমি বলেছিলে রাষ্ট্র
তুমি বলেছিলে ভোট 
তুমি দেখেয়েছিলে চিনহ
তুমি স্বপ্ন দেখিয়েছিলে শিক্ষা, কর্মখালি, বলেছিলে বিপ্লব। 
তুমি এগুলো বলেছিলে আমাকে, আমাদের 
বলেছিলে কিনা? 
তারপর,এতগুলো বছর স্বপ্ন খোঁড়া মানুষগুলো ন্যাংটো,ল্যাংড়া।
.
রাজা হাততালি দেয় 
মাননীয় মেয়র রাজার পাথরের জামা খুলে ছুঁড়ে মারে আমাদের চোখে 
অশিক্ষা বাড়ে,বিয়ে হয়ে যায় পাঞ্চালির পাঁচ বছর বয়সে, 
রাজার প্যান্ট  ছোঁড়া হয় আমাদের  সন্মানে
আমার পাড়ার কুকুরের মা পাগলীটা গর্ভবতী হয় বিনা সংগমে, 
রাজার জাংগিয়া বিজ্ঞাপিত বলিউড নায়িকার হাতে
অসলি মরদ কি পেহচান। 
আর রাষ্ট্রের পেহচান খুঁজতে সি বি আই তদন্ত হয় 
প্রশ্ন করা গৃহস্থের হাঁড়িকে 
এত চাল বিলি করার পরও,ভাতের গন্ধ কেন নেই সময়ে? 
কি করে এই গ্রীষ্ম প্রধান দেশে বৃষ্টিতে মানুষের মাথা ভেজে 
কি করে সংগম ছাড়াই আক্রোশ জন্মায় মানুষের মনে? 






ছক্কাপুটের গল্প

ছক্কাপুটের গল্প 
.. ঋষি 
অন্তেষ্টিক্রিয়ায় একটা বেড়াল লোম খাঁড়া করে দাঁড়ায়
তোমার কাশ্মীরি আপেলে, ছক্কাপুটের গল্প, 
বিশাল এক দুপুর দরজা খুলে একলা দাঁড়ায় এসে এক পিৎজা ডেলিভারি বয় 
বিড়ালের খাদ্য 
রমনীর রমনে লেগে থাকা শারীরিক আঠা,মাছের কাঁটা
মিষ্টি ছুঁয়ে মিষ্টিমুখে আমরা। 
.
নির্ভরশীল 
ওহ কি লুক 
দিল বিল পেয়ার ভেয়ার, সবকুছ মর মিট যায়, 
আজ আমার অন্তেষ্টিক্রিয়া,
ক্রিয়াপদ জুড়ে বিকেলের চায়ের কাপে বিনুনী বেয়ে উঠে আসা 
একলা শ্মশান 
তুমিও মৃত থেকে যাও সেই শ্মশানে অন্ধকার চোখে। 
.
বিড়ালের গল্প 
সারা ঠোঁটে মুখে লেগে আছে আগেরবার ভিজে মাটির গন্ধ, 
সারা অস্তিত্ব জুড়ে তোমার পায়ের ছাপ, 
দিন ফুরিয়ে যায় রোজ নিয়ন করে
ক্রমান্বয়ে এই শহরের আদলে দৃষ্টিগুলো আরও পরিনত হয়, 
অপেক্ষায় থাকে বেড়ালের নখ 
আঁচড়। 
হঠাৎ অন্যমনস্কতায় একটা দিন আমার কাছে ফিরে আসে 
বেড়ালটা গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায় 
টুক করে নেমে আসে তোমার শরীর বেয়ে নীচে,
পাশের বাড়ির ছোট মেয়েটা বায়না ধরে পিৎজা খাবার 
তোমার উঠোনে তখন ছক্কা
আমার শেষ গুটিটা ঘুম ভেঙে নিয়ম মানতে থাকে
তুমি পুট ফেলে জিতে যাও বারংবার।

Tuesday, March 23, 2021

অনিন্দ্য(১২)

অনিন্দ্য (১২) 
...ঋষি
অনিন্দ্য আজকাল শরীর আর ভালো থাকে না
তোর বুকে ব্যাথার রোগটা আমারো ধরেছে, 
অনিকেত মারা গেছে এক বছর, বুবুন এখন পাকা সংসারী 
হবে না কেন?  বুবুন যে এখন বাবারে। 
মিরার আঁকা ওই নুড ছবিটা লজ্জার মাথা খেয়ে চেয়ে নিয়েছি আমি মিরার কাছ থেকে 
এখন আমার শোয়ার ঘরে টাঙানো থাকে, 
দু চারজন ঘরে চোখ টাটায় কিন্তু আমার লজ্জা করে না অনিন্দ্য
ভালোবাসলে বোধহয় লজ্জা থাকে না অনিন্দ্য। 
.
আজ দুদিন হলো অনিন্দ্য আমি হাসপাতালে ভর্তি 
বুবুন আসছে,মিরা আসছে,আসছে দাদুভাই 
কিন্তু কেউ আমাকে স্পর্শ করতে পারে না 
তুই সারাক্ষন মাথায় হাত বোলাস, আগলে রাখিস আমায় বুকে করে।
কাল যখন আমি অচেতন,  বুবুন কখন যেন আমার কবিতার ডাইরিটা পড়ে ফেলেছে 
আমার জ্ঞান ফেরার পর প্রশ্ন করেছিল, অনিন্দ্য কে? 
আমি চুপ ছিলাম 
কিছু বলে নি বুবুন, শুধু চলে গেলো গম্ভীর মুখে। 
.
আজ আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি , শরীরটা আর দিচ্ছে না
কাল রাতে সেই বিভ্যস্ত স্বপ্নটা আমি দেখলাম 
দেখলাম তোর ট্রেনে কাটা গলাটা
আর তোর পকেটে সেই রক্ত ভেজা চিঠিটা,
যেখানে লেখা ছিল 
নীরা চল্লাম, আবার দেখা হবে মৃত্যুর পর। 
আচ্ছা মৃত্যু বলে সত্যি কিছু থাকে? 
আমি কিছু দেখতে পাচ্ছি না অনিন্দ্য,চারপাশ অন্ধকার 
বুকে খুব ব্যাথা হচ্ছে, তুই হাসছিস কেন এমন? 
সব অন্ধকার অনিন্দ্য,
শুধু বুবুনের গলা পাচ্ছি, পাচ্ছি বুবুনের কান্নার শব্দ। 
বুবুন বলছে শোন , মা তোমার কবিতার বই ছাপিয়েছি 
নাম দিয়েছি "অনিন্দ্যকে লেখা চিঠিগুলো। "
.
আমি শুনছি তোর কন্ঠ, তোর হাসির শব্দ 
তোর কন্ঠে কবিতা, 
" নীরার চোখের জল অনেক চোখের অনেক
                                 নীচে
                                 টল্‌মল্‌
নীরার মুখের হাসি মুখের আড়াল থেকে
                                 বুক, বাহু, আঙুলে
                                       ছড়ায়
শাড়ির আঁচলে হাসি, ভিজে চুলে, হেলানো সন্ধ্যায় নীরা
                                 আমাকে বাড়িয়ে দেয়, হাস্যময় হাত। "
.
.
অনিন্দ্য তোর  চোখ বেয়ে বোধয় জল গড়ালো এক ফোঁটা। 

অনিন্দ্য (১১)

অনিন্দ্য (১১)
...ঋষি 
অনিন্দ্য আজ ভীষন খুশি 
হ্যা আজ জানিস বুবুনের বিয়ে, মেয়েটা মানে মিরা ওর সহকর্মিনী
অথচ অবাক কি জানিস মেয়েটা একজন পেইন্টার। 
এই তো কিছুদিন আগে মিরার একটা এক্সিবিশন হলো একাডেমীতে,
আমি গেছিলাম, আমরা মানে আমি, অনিকেত আর বুবুন। 
মেয়েটা দারুন সত্যি আঁকে 
একটা নুড পেইন্টংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আমি অবাক হলাম ঁঁক
চমকে উঠলাম, এ তো তুই অনিন্দ্য, 
এই ভাবে জড়াতিস আমায়, 
অনিকেত আমার কানে কানে বললো আজকাল মেয়েরা ভীষন ডেসপারেট
এমন করে সবার সামনে কেউ নিজের প্রেমিককে ন্যংটো করতে পারে। 
.
আচ্ছা অনিন্দ্য তুই কি তবে ডেসপারেট ছিলিস? 
আমাকে জড়িয়ে ধরতিস যখন তখন সবার সামনে, 
নাকি আমি ডেসপারেট ছিলাম 
সেদিন তোর হাত ধরাতে এমন করে নিজেকে মেলে ধরেছিলাম 
রঙিন প্রজাপতি। 
.
অনিন্দ্য বুবুন এখন ফুল শয্যার ঘরে 
আর আমি সেই বারান্দায়, 
কি করছে বুবুন এখন অনিন্দ্য?  নিশ্চয় কবিতা পাঠ 
কিংবা মিরার সারা শরীরে সেদিনের সেই হোটেল ঘরের মতো কবিতা লিখছে,
এ মা ছিঃ ছিঃ এসব আমি কি বলছি। 
অনিন্দ্য চিরকাল একটা জংলী
যখনি আসিস আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাস ঝড়ের মুখে,
দেখ এই বয়সেও বাঁধন মানে না
সময় মানে না, এমন করে পাগল করিস তুই, 
পাগলের মতো হাসিস, আর বলিস আমায় 
" আমার ভালোবাসার কোনো জন্ম হয় না
মৃত্যু হয় না –
কেননা আমি অন্যরকম ভালোবাসার হীরের গয়না
শরীরে নিয়ে জন্মেছিলাম। "

অনিন্দ্য (১০)

অনিন্দ্য (১০) 
.... ঋষি 
সময় বোধহয় থামে না কিছুতেই অনিন্দ্য 
বুবুন যেন আবার তুই হয়ে সেকেন্ড ইনিংস খেলছে আমার জীবনে, 
বুবুন চাকরী করছে এখন 
শহরের এক নাম করা সংবাদপত্রের চিফ এডিটর আমাদের বুবুন, 
তোর মতো ভাবগতিক 
যখন চশমা চোখে খুব গম্ভীর হয়ে বই পড়ে, কিংবা কিছু ভাবে 
মনে হয় তুই যেন আবার আমাকে পাগল করছি। 
.
আমি ভালো স্ত্রী হতে পেরেছি অনিন্দ্য
হতে পেরেছি ভালো মা, 
অনিকেত বুড়িয়েছে তাই বোধহয় একটু বেশি খিটখিটে, 
আমিও আজকাল গ্যাস, বদহজম নিয়ে বেশ ভুগছি।
অনিকেত সেদিন একটা পারিবারিক গেট টু গেদারে আমার প্রশংসা করছে
বলছে হ্যাজবেন্ড হিসেবে সে কতটা গর্বিত 
সু স্ত্রী,সু গৃহিনী, পারফ্যেক্ট বেড পার্টনার,পারফ্যেক্ট মা
আমার হঠাৎ কান্না পেলো তোকে মনে করে অনিন্দ্য
আমি পারফ্যেক্ট প্রেমিকা হতে পারি নি। 
.
বুবুনের পাঁচবছরের জন্মদিনের দিন সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলি
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম 
কিন্তু তোকে বোঝাতে পারবো না আমি সেদিন সময়ে ছিলাম
সমাজে দাঁড়িয়ে ছিলাম একা। 
অনিন্দ্য তুই  সেই পুরুষ যাকে আমি ভালোবাসি নি 
তবে তুই  আমাকে ভালোবাসতিস, 
আসলে আমি সারাজীবন ধরে বুঝতে পারি নি 
কে যোগ্য ছিল না, আমি না তুই? 
তবে এটা কি, আজ এতবছর পর তুই কেন হঠাৎ উড়ে আসিস
পাগল করিস আমায়,
আমি বেশ শুনতে পাই আজও তোর কন্ঠ 
আমারও চিৎকার করে আজ বলতে ইচ্ছে করে 
"নবীন কিশোর, তোমায় দিলাম ভূবনডাঙার মেঘলা আকাশ 
তোমাকে দিলাম বোতামবিহীন ছেঁড়া শার্ট আর 
ফুসফুস-ভরা হাসি 
দুপুর রৌদ্রে পায়ে পায়ে ঘোরা, রাত্রির মাঠে চিৎ হ’য়ে শুয়ে থাকা 
এসব এখন তোমারই, তোমার হাত ভ’রে নাও আমার অবেলা। "

চাকরীটা হয়ে গেছে তাদের

চাকরীটা হয়ে গেছে তাদের 
...ঋষি 
.
ইন্টারভিউ বোর্ডে বসে অনিমা বলে 
আমি দশ বছর বাংলা নিয়ে পড়লাম, ব্যাংএর জননতন্ত্র বলবো কি করে,
অনিমেষ আট বছর আইন নিয়ে পড়ে আজ আর্টটিচার 
আর আমি কিছু পড়াশুনা করি নি মশাই 
শুধু মানুষ চিনতে, চিনতে মশারির ভিতর মশা মারি 
আমার হাতে লাগে রক্ত। 
.
একবার বসেছিলাম ইন্টারভিউতে 
আমাকে প্রশ্ন করা হলো নীল আমষ্ট্রং কে? 
কেমন যেন গুলিয়ে উঠলো আমার বাড়িতে না বিয়ে হওয়া বোন 
বিধবা মা আর পাশের বাড়ির নীলা, 
প্লিজ আমি বলতে পারবো না সন্দীপনের দুঃখ 
খাঁড়াই হয় না। 
আমি বল্লাম আমার পাড়ার দাদার নাম, পঞ্চায়েত প্রধানের নাম
চাকরীটা হয়ে গেছিল কিন্তু হয়েও হলো না
কারণ আমি কবিতা লিখি। 
.
বেশি কথা বাড়ালে শত্রু বেড়ে যায় 
বেশি কথা বল্লে লুংগি খুলে এগিয়ে আসে শতরুপার দিকে রাষ্ট্র
শতরুপার বাবা যে রুলিং পার্টির বিরুদ্ধে। 
যেখানে প্রেম, ভালোবাসার দিনে বেড়ে যায় গোলাপের দাম 
যেখানে রাত্রি হলে চাহিদা বেড়ে যায় ইন্টারনেট পর্নসাইটগুলো 
সেখানে সকলেই বোধিবৃক্ষ, 
সেখানে সকলেই ইন্টারভিউতে টুকে ফেলে মুখস্থদের। 
আমি দেখছি আঙুল নড়ছে হাওয়ায় 
আমি দেখছি শায়ার দড়ি খুলে অনিমা ইন্টারভিউ দিচ্ছে
চাকরীটা হয়ে গেছে রাষ্ট্র তাদের, 
আর সন্দীপন 
তোকে বোঝাতে পারলাম কই খাঁড়া না হলেও 
আঙুল প্রক্সি দেয় এই সময়, 
আমার মা মারা যায় বিনা চিকিৎসায় 
আর পাশের বাড়ির নীলার বিয়ে হয় অনিমেষের সাথে।

Monday, March 22, 2021

ভাতের পাশে ছাই

ভাতের পাশে ছাই 
... ঋষি 

স্বপ্নে দেখলাম সেই পানশালা
অনেকগুলো টাক ওয়ালা লোক জমা হয়ে শোক পালন করছে, 
আমি আর সন্দীপন বসে আছি 
শুনতে পারছি একজন, একজনকে বলছে 
রেটটা একটু বাড়াও ভাই, নিজের বউ বলে কথা 
আমি আর সন্দীপন হাসছি নিজের বউ? 
.
বাইরে বেড়িয়ে এলাম আমি আর সন্দীপন 
ফুটপাথে ভিখিরী জ্যোৎস্না শুষছে, 
আমি সন্দীপনের দিকে তাকালাম, গা গুলিয়ে উঠলো। 
সন্দীপন বললো, মুড ভালো কর, আজকাল খিদের দামে
 জ্যোৎস্না বিক্রি হয় ওই পুরনো কারখানার গোডাউনে,
আমি বললাম দারোয়ান আছে , মারবে, 
সন্দীপন বললো ধুস  বন্ধ কারখানা আজ এক বছর 
আমি বললাম বাড়ি যাবো 
বউ আছে বাড়িতে। 
.
বাড়ি ঢুকলাম বাড়িতে
বউ বললো গিলেছো, বেশ করেছ
খেতে বসো, 
খেতে বসে দেখলাম ভাতের পাশে ছাই 
তার পাশে সাজানো আমার দীর্ঘশ্বাস। 
মনে পড়লো পেঁয়াজ, শাক, সব্জি, গ্যাসের দামের পাশে টাকওয়ালা ভদ্রলোককে
যার ছবি টাকার উপর দেখেছি, 
আমি আবার মুর্খ মানুষ 
তাই বউকে বল্লাম এত ছাই দিলে কেনো বাঁচিয়ে রাখো 
বাবুরা তো খাই নি এখনো। 

দেশপ্রেমিক সংবাদ

দেশপ্রেমিক সংবাদ
.. ঋষি 
কেমন আছেন দেশবাসীগন? 
জানেন না বোধহয় দেশপ্রেমিক ভদ্রলোক মারা গেছেন কাল রাতে, 
কি হয়েছিল? 
আর বলেন কেন মশাই 
পিছন উল্টে ছোলা বাঁশ আর অনেকটা পরাধীনতা ঢোকানো হলো 
আসলে খবর ছিল, 
উনি নাকি রাজার জাংগিয়া চুরি করেছেন। 
.
কেন করলেন এসব? 
খবরে শোনা মানুষের নাকি খিদে পেলে কোন বোধ থাকে না
কলা না কনডম কোনটা পাচ্য বোঝা যায় না।
আমি জানি মানুষ আসলে খাবারের পিছনে দৌড়োয় না 
দৌড়োয় পিঠে বালিশ বেঁধে ক্ষুধার পিছনে।
.
শোনা কথা দেশপ্রেমিক চেয়েছিল মাটি আমাদের হবে 
নদী আমাদের হবে 
আকাশে উড়তে চাওয়া পাখিগুলোর চি চি
আমাদের দেশ হবে। 
সোজা সংগম হবে, মুখোশহীন সমাজ, মাছি হীন পুরনো বস্তি 
রাস্তায় পিচ থাকবে, ফুটো থাকবে না।
এই সময় খবর রটলো রাজার জাংগিয়া চুরি গেছে 
তাই কোন দেরী করে নি প্রশাসন, সোজা তুলে নিয়ে গিয়ে পুরে দিলো 
চিৎকারটা শুনেছিলাম দেশ প্রেমিক ভদ্রলোকের কিছুক্ষন, 
তারপর একটা সড়কি করে দেশপ্রেমিকের বডিটা ধাপায় নিয়ে যাওয়া হলো
কেরোসিন তেল ঢেলে বডিটা জ্বালাবার আগে 
ভদ্রলোক জীবিত ছিল 
রাজার লোকেদের বলতে শুনলাম, তারা বলছে
কি দরকার ছিল, 
দেশপ্রেমের বাঁশ নিজের পিছনে নেবার
দেশপ্রেমিক কষ্টের হাসি হেসে বললেন
ওটা যে শুধু একটাই বাঁশ ছিল । 
.
পুনশ্চ ঃ আজ বাঁশ নেবেন না, কাল পুরো বাঁশ বাগান ঝঁপিয়ে আসবে 
সামলাবার জন্য বেঁচে থাকুন। 

Sunday, March 21, 2021

তথাগতকে করা প্রশ্নগুলো

তথাগতকে করা প্রশ্নগুলো
...ঋষি 

আমি নিজের ভিতর তথাগতকে খুঁজছি 
তথাগতকে প্রশ্ন করছি
.
আচ্ছা তথাগত তোমাকে ছাল চামড়া ছাড়িয়ে 
তোমার ক্ষতের উপর নুন দিয়ে, উল্টো গাধার পিঠে চাপিয়ে 
ভারতবর্ষ থেকে তোমাকে বেড় করে দেওয়া হলো, কি করবে তুমি? 
তথাগত অতি শান্ত হয়ে বল্লেন 
ক্ষমা করবো, নিজের ক্ষততে মলম দেবো 
সুস্থ হয়ে ফিরে আসবো নিজের ঘরে। 
.
আবার তথাগতকে প্রশ্ন করলাম 
একজন বেশ্যা না একজন রুপসী যুবতী, কে বেশি সুন্দরী? 
তথাগত হাসলেন, উত্তরে বল্লেন
কারণ ছাড়া কোন রমনী বেশ্যা হতে পারে না 
সেই কারণটা খুঁজে বের করতে হবে,
আর রুপ সে তো চিরকালের নয় 
সুতরাং উত্তর নির্ভর করছে সময়ের উপর। 
.
তথাগতকে আবার প্রশ্ন করলাম 
সংসার না সান্নিধ্য কিসে বেশি সুখ? 
উত্তরে তথাগত হাসলেন, বল্লেন কোথায় তুমি জীবিত 
সে টা তো তোমায় জানতে হবে, 
জানো তো পাখির বাঁচা খাঁচায় নয় মুক্তিতে। 
.
আবার প্রশ্ন করলাম তথাগতকে 
সবচেয়ে বেশি সুখ কিসে পাওয়া যায় আর দুঃখ বা কিসে? 
তথাগত পরম তৃপ্তিতে উত্তর দিলেন 
সবচেয়ে সুখ তোমার সন্তানের সুখে 
আর সবচেয়ে বেশি দুঃখ হলো মানুষের বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ায়। 
.
তথাগতকে আবার প্রশ্ন করলাম জীবন কি চায়? 
তথাগত হাসলেন আবার,বললেন 
জীবন মৃত্যুমুখী, তবে তুমি চাও কি না চাও তোমার কিছু কর্তব্য করতে হবে
চাইলেই তো মৃত্যু পাওয়া যায় না।
মৃত্যু ও একজন ঈশ্বর, কঠিন সাধনা করতে হয় 
মানুষের ইচ্ছা মৃত্যু সম্ভব নয়। 
.
তথাগতকে প্রশ্ন করলাম, কে সবচেয়ে অসহায় এই সময়? 
তথাগত বললেন যে মানুষ তার গন্তব্য জানে না
সে সবচেয়ে অসহায় সময়ের গতিতে। 
এই পৃথিবীতে পাখি থেকে মানুষ, এমন কি কেঁচোও জানে 
তার গন্তব্য, 
আসলে গন্তব্যহীন সময় আর জড়ের মাঝে তফাৎ নেই। 
.
এবার আমি তথাগতকে প্রশ্ন করলাম 
প্রেম কাকে বলে? 
তথাগত বল্লেন প্রেম শব্দটা আসলে স্বার্থপর নয় 
প্রেম শব্দটা ঈশ্বরের সমার্থক, 
তুমি তাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো
যার ভালোর জন্য, তুমি নিজেকেও হত্যা করতে পারো। 
.
আমি প্রশ্ন করলাম তথাগত আলো আর অন্ধকারের তফাৎ কি? 
তথাগত বল্লেন আলো একা আর অন্ধকার একটা গোষ্ঠী, 
তুমি আলোর একটা বিন্দু দিয়ে অন্ধকার দূর করতে পারো
কিন্তু সমষ্টিগত অন্ধকার দিয়ে তুমি আলোকে বন্দী করতে পারো
কিন্তু আটকাতে পারো না
তারপর বললেন সুর্য তো উঠবেই।
.
আমি তথাগতকে প্রশ্ন করলাম দেশ কাকে বলে? 
ধর্ম কাকে বলে? 
তথাগত বললেন কঠিন প্রশ্ন, 
তারপর বললেন তুমি যে মাথা উঁচু করে বেঁচে আছো 
সেটাই দেশ,
আর ধর্ম, সে তো বিশ্বাস 
তুমি যতক্ষন যার উপর বিশ্বাস  করবে, 
সে ততক্ষন তোমার ধর্ম,
সকলের নিজের একটা ধর্ম থাকে, দেশ থাকে জন্মের পর 
কিন্তু কি জানো মৃত্যুর কোন দেশ বা ধর্ম থাকে না। 
.
আমি বললাম তথাগত তুমি কতটা সত্যি
উত্তরে তথাগত বললেন 
ওই যে বললাম যতক্ষন তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখবে, 
আমি ঈশ্বর  নই, আমি নশ্বর নই 
আমি সকলের ভিতরে গভীর বোধিতে আছি, 
তোমার উপর নির্ভরশীল , আমি সত্যি না মিথ্যা। 
.
আমি আবার প্রশ্ন করতে চাইলাম
তথাগত বাধা দিলেন
বললেন আজকে আর প্রশ্ন নয় 
বরং আমার উত্তরগুলো বিশ্বাস যোগ্য কিনা ভেবে দেখো।

মৃত্যুর ফতেয়া চাইছি

মৃত্যুর ফতেয়া চাইছি 
... ঋষি 
.
আমাকে সত্যি, সত্যি ভাবা যায় না 
যে আকাশের উপর বাজি ধরে পা বাড়াতে পারে দশতলার ইমারতের কার্নিশ থেকে 
যে সম্ভাব্য মৃত্যুকে তুচ্ছ করে নেমে আসতে পারে নিচে
পাখির পালকের মতো, 
এত হাল্কা আমি 
তাকে কি সত্যি পাগল ছাড়া কিছু ভাবা যায়। 
.
আমাকে সত্যি, এই সভ্যতায় সভ্য ভাবা যায় না 
যে কারন ছাড়াই এই সময়ে বুরুদ্ধে মুঠিবন্ধ করে দাঁড়ায়, 
যে সহজ এ  বিশ্বাস করে
জীবন হলো অনেকগুলো মুহুর্তের যোগফল। 
যার কাছে এই সংসারের প্রতিটা গৃহপালিত মানুষ হলো জোকার 
যারা হাসতে ভুলে গিয়েও, মঞ্চে হাসতে থাকে। 
.
আমাকে সত্যি ভালোবাসা যায় না
যে সহজ এ ভালোবাসার মুখে আগুন দিয়ে মুক্তি  খোঁজে পাখির বাসায়, 
যে প্রতিটা জন্মে মৃত্যু দেখে
যে প্রতিটা শৈশবে ভয় দেখে 
যৌবনে দেখে কাম, আর মৃত্যুতে দেখে সুখ, 
সত্যি কি ভালোবাসা যায় এমন পাগল বাউলকে? 
.
চলন্তিকা বলে  আমি দারুন প্রেমিক হতে পারি 
কিন্তু সংসার হবে না আমার,
আমি আমার জীবন দিয়ে বুঝেছি 
আমার মতো এমন অকালকুষ্মান্ড জন্মগুলো আসলে সময়ের অভিশাপ 
যারা শব্দের মধ্যে, যারা স্বপ্নের মধ্যে বাঁচে 
যারা ভাতের খবর রাখে না নিজের, মানুষের দুঃখের খবর রাখে 
যারা দেশলাইয়ের খবর রাখে না, রাখে আফুনের খবর
এমন মানুষ কি কোনদিন সত্যি হতে পারে? 
.
আমার পায়ের তলায় পেরেক ভালো লাগে 
আমার সময়ের মুখে অশ্লীল গালাগাল ভালো লাগে 
আমার পোশাক ছাড়া মানুষ ভালো লাগে 
আমার লজ্জা ছেড়ে সত্যি নগ্নতা ভালো লাগে,
 আমার আলতামিরার গুহায় ভালো লাগে বাইসনের সিং 
আমার গ্যালেলিওর চোখ ভালো লাগে 
ভালো লাগে বিনয় মজুমদারের ভুট্টা আর চাঁদের গল্প 
আমার সত্যি বলতে ভালো লাগে 
কিন্তু এমন একটা মানুষকে সভ্যতার সুনাগরিক মানা যায় না। 
.
আমি কারন ছাড়া ভালোবাসতে চাই 
আমি চলন্তিকা তোমার জন্য শুধু  সংসার করতে চাই, 
আমি সৃষ্টি দিয়ে প্রথিবী গড়তে চাই 
আমি খুঁজে পেতে চাই সেই সত্যি মানুষটাকে যে বুক উঁচু করে বাঁচে, 
আমি প্রতিটা কালো বাজারির বিরুদ্ধে 
আমি নকল ভোটের রাজনিতীর বিরুদ্ধে 
আমি সাজানো মুখোশে এই সময়ের বিরুদ্ধে
এমন একটা মানুষকে সত্যি কি সহ্য করা যায়? 
.
বরং আমাকে ধংস করুক সময় 
বরং আমাকে ব্রাত্য করুক এই সভ্যতা
বরং আমাকে লাথি মেরে বেড় করে দেওয়া হোক সংসার থেকে
বরং আমাকে বঞ্চিত করা হোক আমার পিতৃপরিচয় থেকে 
বরং আমার মুখে থুথু ছিটিয়ে দিক সময়ের সন্তান
বরং আনার মৃত্যুর ফতেয়া জারি করুক সকল সমাজ সংস্কারক
তবু জানো চলন্তিকা
আমি বারংবার ফিরবো, কারণ আমার কবিতারা ফেরাবে আমাকে 
ফেরাবে আমার ভালোবাসা,আমার স্বপ্নরা 
একটা সত্যি দেশ গড়তে।

সভ্যতা আর নগ্নতা

সভ্যতা আর নগ্নতা
.. ঋষি 
.
তুমি তোমার নিতম্বে সংসারের উনুন রাখলে 
তূমি আমার হর্সপাওয়ারে হাত দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে দিলে, 
আমি ছুটছি সভ্যতায়
আমি ছুটছি অসভ্যতায়, 
তোমার স্তনের উপর ধর্ম শুয়ে আছে মানুষের মন্দিরের ঘন্টায় 
আর আমার ছ ঘন্টায় শুয়ে আছে বারো মিনিট 
ক্লান্ত ঘোড়া এই মুহুর্তে ঘাস ঘাচ্ছে নিজস্বতায় নির্ভুল আলিঙ্গণে। 
.
তুমি রনক্ষেত্র দেখছো 
আমি দেখছি তোমার টে'বিলে দেহাতি সেই লোকটা গান গাইছে, 
তোমার বিছানা, বালিশে সভ্যতা গালি হয়ে ঢোল,কর্তাল বাজাচ্ছে, 
ধুস আমি ভীষন সত্যি বলছি 
আসলে তোমার থেকে দূরে আমি  একটা মৃতদেহ সনাক্তকরন চালাচ্ছি 
খুঁজে পাচ্ছি ১৯৪৭ এর ভারতের  স্বাধীনতা। 
.
তোমার ঝোপজংগল পেরিয়ে 
রেডিমেট ট্রিমার দিয়ে আমি চাষ করছি অন্য কোন গ্রহে নিরন্তর সত্যি, 
তবু যোগফলে আমি মিথ্যা হয়ে দাঁড়িয়ে 
তোমার আখরোট ঠোঁটে। 
তুমিও সত্যি বলছো আমার মত আজকাল 
আখরোট ভেঙে দিচ্ছো তোমার চেনা লোকজনের কাছে,
তুমিও নগ্নতায় দাঁড়িয়ে সংসার করছো 
যখন তখন উঠে আসছো ঘুমের মাঝে আমার বুকে 
চেপে ধরছো গভীর শিৎকারে, মুখে বলছো
বলছো পারছি না, আর পারছি না।
তুমি ঈশ্বর দর্শনে 
আজকাল সত্যি হয়ে যাচ্ছো 
সভ্যতা আর নগ্নতায়।

চলন্তিকা

চলন্তিকা 
...ঋষি 
.
তারপর শব্দদের ঘর ভেঙে
আমার বর্ণমালার পোষাক পরে তুমি এসে দাঁড়ালে, 
আমার পাঁচ হাজার কবিতা পায়ে ঘুঙুর পরে মহাকাল, 
ত্রিশুল হাতে উঠে দাঁড়ালো, ত্রিনয়নে আগুন নিয়ে
কি তান্ডব নাচটাই না নাচলো। 
.
আমি শুধু দর্শক 
কে একজন প্রশ্ন করলো ভরা অডিয়েন্সে গল্প শুনতে শুনতে
কে ছিল বর্ণের পোশাক পরে,
আনি খুব বিরক্ত হয়ে বল্লাম " চলন্তিকা ", 
তোমরা চলন্তিকাকে চেনো না, আমায় চিনবে কি করে? 
.
তারপর আমার পাঁচহাজার কবিতা যেন উল্কাবৃষ্টি 
কিন্তু অদ্ভুত চলন্তিকাকে কেউ পোড়ালো না, 
শুধু আমার কবিতাগুলোর বুক পুড়ছিল তখন। 
ক্রমাগত আমার গুটি কয়েক কবিতার বই তখন স্রোত্র পাঠ করছে 
চলন্তিকা সময়, চলন্তিকা নারী, চলন্তিকা প্রতিবাদ 
চলন্তিকা মানুষের দুঃখ ,চলন্তিকা প্রেমের ভাষা, চলন্তিকা দরিদ্র ভারতবর্ষ। 
আবার কে প্রশ্ন করলো
আপনি পাগল নাকি?  চলন্তিকা নারী হলে ভারতবর্ষ কি করে হয়? 
আমি বুঝতে পারলাম এদের ভাবনা বোঝানো যাবে না
বরং একটা সস্তা সেক্সের গল্প বলি এদের। 
.
গল্প বলে আমি উঠে দাঁড়ালাম 
অডিয়েন্স হাততালিতে ফেটে পড়লো, কেউ কেউ গল্প শুনে হস্ত মৈথুনে ব্যাস্ত, 
চলন্তিকা এসে আমার কানে কানে তখন বললো 
কি কবি, কেমন ঠকলে? 
আমি হাসলাম বললাম তুমি বুঝলে না 
এই যে সেক্সের গল্পটা আমি বল্লাম তার নায়ক, নায়িকাও যে আমরা 
শুধু নামটা বলি নি আমি ইচ্ছে করে তোমার।

এ কোন সময়

এ কোন সময় 
.. ঋষি 
.
সহজ হিসেবে আগামীতে বারো মিনিট কমে যাবে 
হয়তো আর কোনদিন স্পর্শ কোরবো না কোন নিরন্তর ভালোলাগা,
না ভালোবাসা। 
ভাংচুর একটা সময়ের পর বার্ধক্য আসবে 
আমি মুখোমুখি বসবো তোর হাঁটুতে থুতনি রেখে 
তবে কথা দিচ্ছি সেদিনও দেখবো তোকে আজকের মতো। 
.
হয়তো সেদিন তোর পাকা চুল আর কোমর ব্যথাতে হাসবো আমি 
হয়তো ভালোবেসে বলবো জীবনানন্দ, 
তুই ও হাসবি  চায়ের কাপে ঠোঁট রেখে আমার মুখোমুখি বসে বলবি
চাটা জল হয়ে গেলো আর কবিতা না,
আমি বলবো চলন্তিকা তুই তো আমার কবিতার শব্দে জন্মানো নারী 
কবিতা ছাড়া তুই থাকবি কি করে। 
.
তুই আমার মাথার চুল নেড়ে দিয়ে বলবি 
পাগোল একটা,দেখ এই তো আমি, ছুঁয়ে দেখ আমায়, 
আমার চোখ থেকে হয়তো তখন দু ফোঁটা জল 
তুই জড়িয়ে ধরবি আমায় কানে কানে বলবি 
আমি আর কবিতা না, আমি এখন আর সময়ের না,
আমি শুধু তোর। 
হয়তো তখন আমি অভিজ্ঞ বৃদ্ধের মতো তোর মাথায় হাত বুলিয়ে বলবো 
জানি তো, তবে কি জানিস মিথ্যে বলাটা অভ্যেস হয়ে গেছে,
তুই বলবি আর না, সত্যি  বল এবার।  
.
সহজ হিসেবে আগামীতে বারো মিনিট কমে যাবে
সহজ হিসেবে সময়ের দরবারে আমিও হয়তো বিসমিল্লাহ হয়ে বাঁশি বাজাবো
কিন্তু কৃষ্ণ হতে চাই না 
বরং একটা জীবন কবিতার পাতায় চলন্তিকা তোকে আঁকি
না কোন স্বপ্ন নয় 
বরং একটা ছবিকে জীবন দেবো বলে। 

ক্রিস্টোফার মাদাস্কার

ক্রিস্টোফার মাদাস্কার
... ঋষি 
.
ক্রিস্টোফার মাদাস্কার মতো আমি বলতে পারবো না
জীবন একটা সামুদ্রিক একলা দ্বিপ, 
আর আমরা সেই সামান্য মাটির অধিকারি। 
বরং আমি ভাবি জীবন একটা না শেষ হওয়া কবিতা 
যার প্রতি স্তবকে ভাবনাদের ভীড়, মুখের ভীড় আর চরিত্রের। 
.
চরিত্র শব্দটা বড় একটা  গোলক ধাঁধা 
বড় মিস্টেরিয়াস এই চরিত্র শব্দটা, 
চরিত্রের মাটি খুঁড়লে আমি শুনতে পাই মানুষজন বলে 
কবির কোন চরিত্র নেই, কবির কোন নির্দিষ্ট নারী নেই, 
অথচ আমি ভাবি সত্যি কি কবির কোন জন্ম আছে 
সত্যি কি কবির কোন মাটি আছে, 
শুধু সময় আঁকড়ে শব্দ দিয়ে ছবি আঁকে যে মানুষটা 
তার আবার বদনাম। 
.
আমার স্ত্রী বলে পুরুষের নাকি চরিত্র থাকে না
আর নারীদের মতো নির্ভরশীল কিছু হয় না, 
অথচ আমি যখন সেই প্রেমে দাগা পাওয়া পুরুষকে পাগল হয়ে যেতে দেখি 
কিংবা অন্যের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া সেই মহিলার পতিকে 
সন্তানের জন্য একলা বাঁচতে দেখি 
অবাক হই আর ভাবি
আকাশের নক্ষত্রের মাঝে দু একটা নক্ষত্র ঝরে পরলে আকাশের কি দোষ। 
.
ক্রিস্টোফার মাদাস্কার সেই ভদ্রলোক 
যিনি নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন স্বার্থপরের মতো
কিন্তু জীবন শব্দটা পালিয়ে বাঁচার জিনিস নয় 
বরং জীবন শব্দটা হলো হরেক সম্পর্কের ফেরিওয়ালা ভদ্রলোক 
যে নিয়ন করে প্রতিদিন সময়ের বুকে সম্পর্ক ফেরি করে, 
প্রতিদিন ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরে 
হয়তো সে ক্রিস্টোফার মাদাস্কারকে মিথ্যে প্রমানিত করতে চায়।

সংসারের দাঁড়িপাল্লা

সংসারের দাঁড়িপাল্লা
.. ঋষি 
দাঁড়িপাল্লার একপাশে খুলে ফেলছি তোমার রান্নাঘর,পুজোর ঘট,
 দেওয়ালে টাঙানো বিজ্ঞাপন, আর হাসি,কান্না
অন্য পাশে আমরা। 
.
কিছুতেই বুঝতে পারি না কোনটা ভারী
কোন দিকটা ঝুলে, 
রবিবারে তোমার রান্নাঘরে মাংসের গন্ধ, তোমার ব্লাউজ লেপ্টে রান্নার হলুদ, 
উপছে ওঠা তোমার রান্নাঘরে সন্তানের দুধ, কপালে সিঁদুর
সব তো আছে 
কিন্তু কেন খুঁজে পাই না তোমায় সেখানে 
কেন পাই না নিজেকে বালিশের সংগমে একলা বিছানায়। 
.
সব তো আছে 
চারটে দেওয়াল, সমাজ, লোক লজ্জা, তোমার শাড়ির আলমারী
আমার বুক কেস, ল্যাপটপ, সন্ধ্যের ধুপের গন্ধ
ঘরের প্রতি কোনায় সাজানো নিয়ম 
কিন্তু আমি? কিন্তু আমি কোথায়? 
অদৃশ্য দাঁড়িপাল্লার সমতা কিছুতেই আসে না 
সেখানে আমরা আর থাকি না বহুদিন 
শুধু আমাদের মতো দেখতে কেউ নিয়মের দেওয়ালে ক্যালেন্ডার হয়ে থাকি 
পাতা ওল্টায়, দিন বদলায়, 
হয়তো চামড়ার গায়ে ভাঁজ পড়ে,চোখে চশমা
কিন্তু আমরা সামলে রাখি সম্পর্ক 
নিয়মের হিসেবে আমরা সংসার করি এক শান্তির খোঁজে। 
.
দাঁড়িপাল্লায় নিজের ভাবনাদের রাখলে আমি ভীষন সাধারণ
সংসার শব্দটা শুধুই নিয়ম, 
অন্য মানুষের মতো আমারও হয়তো ঈশ্বরের খোঁজ 
কিন্তু সত্যি বলতে কি সংসারের দাঁড়িপাল্লায় 
ঈশ্বর  থাকে না, ঈশ্বর  বাঁচে না
শুধু নিয়মগুলো থেকে যায়
আর মানুষগুলো বাঁচে তবে হাসতে ভুলে যায় ।

ভায়োলিনের সুর

ভায়োলিনের সুর 
... ঋষি 
.
একটা দ্রুত মিসাইল এসে পড়ে আমার রাজত্যে
আমি অসুস্থ হয়ে যাই,হয়ে যাই ক্রাচ ভর করা সেই বৃদ্ধ ভাইয়োলিন বাদক, 
আমি জানি ভায়োলিনের সুর পৃথিবী মাতাল করে না
যতটুকু সময় মাতাল হতে চায় প্রয়োজনে
ঠিক ততটুকু। 
.
এমন বিস্ফোরণ মাঝে মাঝেই ঘটে 
বুকের পহেলিতে থাকা সেই পাথরটা চাপা পরে থাকে মাটিতে,
সরানো হয় না। 
ভেসে আসে মিস প্রিয়াংবদার কন্ঠ 
বলছে শুনি সবাই এই পৃথিবীতে সতী আর আমার বুকে কাপড় থাকে না বলে
আমি নষ্টা, আর যারা বেগনভিলিয়ায় পুজো করে,
তারা কি? 
আমি চিনি সেই গোলাপি বলে মেয়েটাকে নিজের বুকের পাথরে 
যার চোখে পৃথিবী একটা মজা, আর যে কোন ঘটনাই দৈনন্দিন। 
.
আমি চলন্তিকাকে প্রশ্ন করি 
এই যে তুমি দিন রাত ঝগড়া করো আমার ভিতর 
প্রতিটা ধবংসের সাক্ষী থাকো থাকো,
এই যে সতীর ৫২ তীর্থ খুলে তুমি বারংবার দেখাও আমাকে ৫২ রুপ 
কেন? 
চলন্তিকা হাসে, বলে 
তুমি কবি সতীর ৫২ পীঠ দেখতে চাও 
দুঃখ পাও রোজ, 
আসলে নারী শব্দটা নাড়ী শব্দের সমার্থক 
তুমি বুঝবে না, 
তুমি প্রেমিক ছিলে, প্রেমিক থাকো 
এই সব চর্যাপদ তোলা থাক পুরুষদের জন্য। 
তুমি বরং সেই ক্রাচ ভর করা সেই বৃদ্ধ ভাইয়োলিন বাদক হয়ে থাকো
সৃষ্টি  করো তোমার সুর 
কে শুনলো,কখন শুনলো তাতে তোমার কী?

আরব্য রজনী

আরব্য রজনী
.. ঋষি 
.
ঘুম আসছে না 
আমার আরব্য রজনী খুব গতিতে দৌড়চ্ছে তোমার বিছানায়, 
তুমি বালিশ টেনে বুক খুঁজছো, খুঁজছো আশ্রয়
আর আমি তোমার বুকে বালিশ। 
.
নখ খুলে স্খলন লিখতে পারবো না
পারবো না আমার  শেষ দুটো দিন তোমার স্পর্শে পেন্সিল স্কেচে আঁকতে, 
বরং আমি খুলে ফেলি আমি স্পর্শের পোশাক, 
বরং খুলে ফেলি আমি তোমার সাজ পোশাকে লেগে থাকা অভিমান,
মুখোমুখি আমি তুমি 
অভিমানি 
একইরকম, শুধু তোমার বালিশে তুলো ভরা নেই। 
.
মুখোমুখি আমরা 
ঘড়ির কাঁটায় প্রায় সোয়া তিনটে,
 হাল্কা একটা লিপস্টিক আমার ঠোঁটে নিকোটিনে পুড়ছে, 
তুমি বোধহয় প্রোটোকল খুঁজছো 
আমি খুঁজছি একটা বিছানা, একটা স্নানের ঘর।  
লিখছি আরব্য রজনী, 
আমার চার পা ওয়াকা খাট দিয়ে উড়ে যাচ্ছে একটা স্বপ্নের উড়ান 
কি যেন নাম গড়াচ্ছে তোমার উরু বেয়ে
কি যেন একটা দীর্ঘশ্বাস, 
প্রশংসায় বেড়ে চলা আমার আশ্রয় 
তোমার স্তনে হঠাৎ  নেমে আসছে আকাশ থেকে আস্ট্রনট
আর আমি হেলমেট খুলে নেমে চলেছি 
আশ্চর্য আবিষ্কার ।

রং মিলান্তে

রং মিলান্তে
.. ঋষি 
.
ক্রমশ জয়ধ্বনি শুনতে পাই 
কান পেতে শুনি খুব দুরে ঘোড়ার পায়ের শব্দ, 
আর বিরক্ত করবো না তোমায়। 
.
জয়ধ্বনি, 
মানুষ এখানে বড় কাঁদছে, 
না গো শংখ স্যার আমি তোমাকে টুকে কাব্যিক হতে পারবো না
বরং ক্যালাইডোস্কোপে  খুলে ফেলবো রং মিলান্তে,
পাখিদের খবর 
তোমার গোলাপী ঠোঁটে আজকাল বিষন্নতা 
সবুজ পাতার পোশাকে তুমি হ্যাংরি আন্দোলনের স্রষ্টা। 
.
এই শহরের আজকাল নেহাত যোগাযোগ বিপ্লব 
মাটি খুঁড়ে মোটা মাথা মেট্রো সাপ ছড়ায় শহরের নাভীতে, 
আমি বাজারে গিয়ে দাঁড়াই
মাটিজরিপ করি খিদের দামে বিপ্লব 
দূর থেকে শুনতে পাই পৃথিবীর বাড়তে থাকা আবর্তনের শব্দ। 
দিন ফুরোয় রোজ 
একটা কাঁটার মুকুট আমার মাথায়
একটা ট্রয় আমার বুকে 
অথচ শহর রোজকার ইহুদী স্থাপত্যে ক্রুসবিদ্ধ 
আর আমি অতিথি এই শহরে।

তোমাকে ভালোবাসতে

তোমাকে ভালোবাসতে
... ঋষি 

এখন আর বলবো না শুধু  " ভালোবাসি "
এখন বলবো " ভালোবাসি " তাই ভালো আছি। 
.
এখন আর বলবো না সময়ের সাথে সময়ের কাছে 
আমি 
এখন শুধু বলবো সময়ের অন্যপাশে দাঁড়িয়ে আয়নায়
আমরা। 
.
এখন আর তোমার দিকে তাকিয়ে দিন কাটাতে পারবো না
এখন টিভিতে খবর শুনতে শুনতে 
বা ভীষণ  ব্যাস্ততায় 
যখন তখন দেখতে পাবো তোমায়। 
.
এখন আর আমায় তোমার নাম ধরে ডাকতে হবে না বারংবার 
কারন আমি শুনতে পাই সবসময় 
কারন আমি দেখতে পাই চোখ বন্ধ করে, বুঝতে পারি 
তুমি তাকিয়ে আমার দিকে, সর্বদা কানে কানে বলছো " ভালোবাসি "। 
.
এখন আর হঠাৎ আকাশে মেঘ করলে, বৈশাখী হাওয়ার দিনে
আমার আর মনখারাপ করবে না, 
কারন আমি জানি তুমি ও সেই সময় জানলার পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছো 
আমি আছি। 
.
এখন আর কোন অনুষ্ঠানে,কোন জনকলরবে 
আমি তোমাকে মিস করবো না,
 তখন আমি  অনুভব করে  এই তো আমার হাত ধরে 
এই তো বুকের বাঁদিক ঘেঁষে কথা বলছো তুমি। 
.
এখন আর তোমাকে পাওয়ার জন্য, তোমাকে ছোঁয়ার জন্য 
তোমাকেও আর প্রয়োজন নেই আমার
কারন আমি বুঝতে পারি ভালো, আমার শরীরের রক্তে 
আমার প্রতি মুহুর্তে তুমি থাকো আমার বাঁচার মধ্যে। 
.
এখন আর কোন ভালোবাসার দিন নেই আমার 
নেই কোন ছেঁদো বসন্ত, টসন্ত,  ভালোবাসতে শরীর লাগে না আমার 
বরং আমার ভালোবাসা তোমায় ছুঁয়ে ঈশ্বর হয়ে গেছে
আর আমি ঈশ্বরের  পুজারী। 
.
এখন আমি " আমি "শব্দটার ভিতর তোমাকে খুঁজে পাই 
এখন আমি বুঝতে পারি ভালোবাসা আর ঈশ্বরের সম্পর্ক,  
এখন আলাদা করে আমার অনুভবে তোমাকে দরকার পরে না
কেন জানি তোমাকে ভালোবেসে বদলে গেছি আমি 
.
তাইতো এখন আর বলবো না তোমায় ভালোবাসি 
কারন তোমাকে ভালোবাসতে তোমাকেও আর দরকার নেই আমার। 

Thursday, March 18, 2021

অসহায়

 অসহায় 

... ঋষি 


আমার বুকের শৈশবের গাণিতিক ভুল 

আমার মাথার উপর তাই  পাথরের মোটা  মাথা। 

আমার হৃদয়ে আইনস্টাইন  পথ রেখে পথ বাতলায়, 

এই সভ্যতায় রাবন সত্যি হতে পারে 

সত্যি হতে পারে পাঞ্চালি 

কিন্তু ধর্ম 

কিন্তু বিভেদ 

কিন্তু বৈষম্য সত্যি নয়। 

.

সত্যি হতে পারে সোনাগাছির দালালের কাছ থেকে খুঁজে পাওয়া কাশ্মীরি মেয়েটা 

সত্যি হতে পারে বনগাঁ লোকালের ডেলি প্যাসেঞ্জারট্রেনের সেই ফেরিওয়ালা 

কিংবা গড়িয়াহাটের সেই বাচ্চা ভিখারি ছেলেটা যে ফুল বিক্রি করে 

কিন্তু আমার কাছে ভীষণ মিথ্যা মানুষের নপুংসক বেঁচে থাকাগুলো 

টেস্টটিউবে পালিত সেই সব ভয়গুলো 

যেগুলো মানুষ মেরে ফেলে দৈনন্দিন ,

মানুষ ওয়াশিং মেশিনে কাপড় পরিষ্কার করে 

অথচ মানুষের মন পরিস্কারের পদ্ধতি মানুষের জানা নেই। 

.

প্রেম ,বিশ্বাস ,ঈশ্বর শব্দগুলোকে মানুষ প্রশ্রয়ে গাছ করে 

সময়ের কুত্তাগুলোকে মানুষ প্রশ্রয়ে জংলী চিতা বানায় ,

আমি অবাক হয়ে দেখি মানুষের কোনো ভবিষ্যৎ নেই 

লাথ খাওয়া মানুষগুলো বড় অসহায়। 

বড় অসহায় এই সময় সদ্য স্বামী হারানো সেই যুবতী সকলের সংসারে 

বড় অসহায় ডবলশিফট করা রাত  করে ফেরা মেয়েটা ,

বড় অসহায় সেই সন্তান যার পিতৃপরিচয় অজানা 

সময় সবচেয়ে বড় অসহায় ধৃতরাষ্ট্র,  এই সময় 

অসহায় বাংলা ,বিহার ,উড়িষ্যা ,চব্বিশ পরগনা ,

আর অসহায় মানুষ 

ঈশ্বরের সাধনায় 

পাপ আর পুণ্যের আরাধনায় জীবন কাটায় 

অথচ বোঝে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো মিথ্যে 

আর ভয় 

যা মানুষ শব্দটাকে উল্টো দিশা দেখায়। 


কলকাতা সাক্ষী

 কলকাতা সাক্ষী 

... ঋষি 


তোমার ভাবনার সমস্ত বিপদসীমা পার করে 

অবশেষে তুমি এসে দাঁড়াবে আমার পাশে ,

একটা ঝাঁ চকচকে ছুরি ,তুমি যদি এফোঁড় ওফোঁড় না করতেই পারলে 

তবে কি ভাবে বললে ভালোবাসি ?

সাজানো পোশাক ,সাজানো হাসি ,ধোপদূরস্থ তোমার বাইরেটা 

আজকাল নকল হয়ে যায় আরো 

ভালোবাসির মতো মিথ্যে কথা আর কি হতে পারে ?

.

এ ক লাইন লিখে কবি গিয়ে দাঁড়ালেন টেমস নদীর ধরে 

লন্ডনের এই জায়গাটায় গঙ্গা খুঁজে পেতে পারে কবি ,

কিংবা ওল্ডটেস্টামেনের গল্পটা লেখা যেতে পারে 

সত্যি বলতে কি কেউ জানে না ,

কবির কলম থেমে যায় অপার মুগ্ধতায় কিংবা ভালোবাসায় 

কিন্তু কবির কলম থামে না ভালোবাসা বলে মিথ্যা কল্পনায় । 

.

চলন্তিকা আমি তোমায় বলি 

আমার সারাজীবন কেটে গেছে জীবনের চিলেকোঠায় একলা এই শহরে ,

এই কলকাতার অলিতে গলিতে আমি একলা চড়াই 

যার চড়াই ,উৎরাই ,ফুঁ উড়ে যাওয়া 

ভাবনা !

আচ্ছা সত্যি কি ভাবনা বিক্রি হয় এই শহরে ?

ভাবনা বিক্রি করে ,কবিতা লিখে টাকা 

তথাস্তু 

শব্দের হারিয়ে যাওয়া আমার শুরু থেকে শূন্যস্থান 

সবটাই তোমায় দিলাম,

কথা দিলাম 

আমার মৃত্যুর পর আমার কবিতারা বিক্রি হবে হৃদয়ের দামে ,

সেদিন কেউ কথা বলবে না

শুধু কলকাতা সাক্ষী  

চলন্তিকাকে আমি হত্যা করবো এক ঝাঁ চকচকে ছুরি দিয়ে 

শেক্সপিয়ারের ওথেলো নাটকে।  



মানুষ বদল

 মানুষ বদল 

... ঋষি 


এই শহর 

এই সময় কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে চাই নি 

আমি অবলীলায় ছুঁড়ে ফেলেছি আমার যৌবন তোমাকে স্মরণ করে ,

গঙ্গার ফেরিঘাটে একলা দাঁড়িয়ে 

যেদিন ফিরে এসেছিলাম আমি নিজের মৃতদেহে আগুন দিয়ে 

সেদিন বুঝছিলাম 

এই শহরে ,এই সময়ে ,এই সভ্যতায় 

আমি ছাড়া কেউ সত্যি নয় ,সবটাই ক্ষণস্থায়ী। 

.

আমাদের ভাবনাদের তুমি শাড়িতে মুড়ে ওয়াশ ডাস্টবিনে ফেলে দেও রোজ 

আসলে এক শাড়ি পরে কেউ দিনের পর দিন থাকতে পারে না ,

ভাবনার পটে চিরকাল শিল্পীর আঁকা ছবি 

একই থাকে না ,

সময়ের সাথে রঙের গভীরতা  কমে

কমে যায় মানুষের জীবন থেকে একটা করে দিন সময়ের বালিঘরে। 

.

এই শহরের প্রতিটা ফুটপাথ  

প্রতিটা চায়ের দোকান ,প্রতিটা ভিক্ষার ঝুলি ,প্রতিটা মানুষ 

শুধু দৌড়ে চলেছে নিজের থেকে দূরে 

দিন প্রতিদিন বাড়তে থাকা গঙ্গার জলে দূষণমাত্র 

মানুষকে মনে করাতে চাই মৃত্যু ,

অথচ মানুষ খেলে চলে খেলনাবাটি নিজেদের নাটকে। 

সেদিন ফেরিঘাট ছেড়ে চলে গেছিল সময় 

সেদিন ফেরিঘাটে আমি ফেলে এসেছিলাম গত পুজোর দুর্গার কাঠামো 

আমি নিজেকে , 

আর সেই মেয়েটাকে। 

তোমরা যাকে ভালোবাসা বলে পুজো করো রোজ 

আমি তাকে সময় বলি,

আমি ভাবি যুগের গর্ভে শুয়ে থাকা মানুষের চোখের জল 

আর মানুষেরা ভাবনারা 

মানুষকে বদল করে।  

কুত্তা কাওয়ালি

 কুত্তা কাওয়ালি 

... ঋষি 


চলন্তিকা 

আমি যখনি ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছি ,সরে আসতে চেয়েছি 

প্রথম বুলেটটা ছুটে এসেছে তোমার রিভলভার থেকে। 

পয়েন্ট রেঞ্জে আমার শহর 

দুপ করে জ্বলে উঠে মরবার আগে জল চেয়েছিল 

অথচ আমার সারা শহরের দেওয়ালে কপাল লিখন। 

.

গভীর রাতে  তোমার অভিমানের কাঁচগুলো কুড়িয়ে নেবো বলে 

আমি নেমে এসেছি এই শহরের ফুটপাথে ,

অবাক হয়ে দেখেছি কিছু অশরীরি এই শহরের অন্ধকার ঈশ্বর 

শুধু গদি বদল করে 

অথচ তাদের দেওয়া কথায় সময়ের বদল কই 

সব বকবাস হ্যা 

ইস দুনিয়ামে কুত্তা হোনা জরুরী হ্যা 

নেহিতো মত তুম্হারে দরবাজেমে। 

.

চলন্তিকা 

ঘুম হয় না আজকাল ,

প্যান্টের যে জায়গাটায় পুরুষের ধর্ম রাখার সম্ভাবনা 

সেখানে আজকাল অন্যের দখলদারি ,

মনের যে আইল্যান্ডে হেলিক্যাপ্টারে জেনিফা লোপেজের  নামবার কথা ছিল 

সেখানে আজ এক সাধারণ গৃহস্থ রাষ্ট্র ভিক্ষা করে। 

মিশনারি কলেজের সেই মেয়েটাকে তাকিয়ে দেখতো বেঙ্গলি মিডিয়াম ছেলেটা 

কিংবা বাবাই যাচ্ছে স্কুলে অবাক চোখে তাকিয়ে অনাথ  কাজের মেয়েটা,

এই সব ওপর নিচ 

তলঠাপ জীবন 

শালা বাপি বাড়ি যা বলে ওড়ানো যায় না 

শুধু উড়ে যায় পাশের বাড়ির মিরা বৌদির আঁচল 

টিভি সিরিয়ালের চোখে।    

.

চলন্তিকা 

আমি ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছি ,আসলে পালতে চেয়েছি

তুমি বলবে ভীতু গৃহস্থ বাঙালি 

সে ভালোবাসা কিংবা যুদ্ধ দুটোতেই রবীন্দ্রনাথ সেজে থাকে 

কিন্তু বুকের পাঁজরে কি সেই দম আছে 

বুকে পেতে হজম করতে পারে সময়ের বারুদের গরম।  

পারছি না

 পারছি না 

...ঋষি 

মাঝ শহরে একলা দাঁড়িয়ে আছি 

ভেসে আসছে সাধারণ ঢেউ একটা প্রতিবাদী ঝড় 

মানতে হবে ,মানতে হবে 

আমাদের দাবী মানতে হবে ,

কৃষকের জন্য ,শ্রমিকের জন্য ,মানুষের জন্য 

সর্বোপরি ঈশ্বরের জন্য। 

.

আমি ত্রস্ত তখন 

আমি শুনতে পাচ্ছি সেই অসহায় যুবতীর চিৎকার 

বাঁচাও। ..বাঁচাও। 

আমি দেখতে পাচ্ছি চার ,পাঁচটা নেকড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে যুবতীর টুকরো শরীর 

ওই যে স্তনটা হলো বিহার ,ওই যে উরুযুগল  ঝাড়খন্ড 

ওই তো ,ওই তো গলাটা ,আমার  পশ্চিমবঙ্গ। 

.

আমি কান চেপে বসে আছি একলা ফুটপাথে 

আমি শুনতে পারছি রশিদ কাকার ঘরের ভিতর থেকে একটা তীব্র দহন ,

কান্নার শব্দ ,কাকিমার আকুতি 

লাগছে তো ,খুব লাগছে ,আর পারছি না 

আর ... পারছি   ...... না।

রশিদ কাকা বলছে শালী গলা টিপে মেরে দেব 

ভাত ,কাপড়ে পুষি ,তোকে পুষতে টাকা লাগে না। 

.

আমি আর পারছি না 

চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে 

দূর থেকে দেখতে  পাচ্ছি অনেকগুলো মুঠোবন্দি হাত আকাশের দিকে ,

শুনতে পাচ্ছি শব্দগুলো 

মানতে হবে ,মানতে হবে 

আমাদের দাবী মানতে হবে ,

কৃষকের জন্য ,শ্রমিকের জন্য ,মানুষের জন্য 

সর্বোপরি ঈশ্বরের জন্য।

গলার কাছে খুব কষ্ট হচ্ছে ,কে যেন চেপে রেখেছে গলা 

চোখ খুলে দেখি পাড়ার তারা গুন্ডা আমার গলাটা চেপে রেখেছে 

বলছে দেখবি প্রতিবাদ কাকে বলে ,

আমার মায়ের গায়ে  হাত দিচ্ছে ,মায়ের বুকের দিকে .....

পারছি না ,পারছি না 

পারছি না ......

আমার ঈশ্বর মৃত ,আমি মৃত ,আমরা মৃত 

এই সময়ে। 


 

অনুভব

 অনুভব 

... ঋষি 


বৌদিতে  ডুব দিলাম 

চলন্তিকা বললো কুত্তা ,

তোমাকে ছেড়ে দিলাম মাঝ রাস্তায় ঘুমের ঘোরে 

তারপর পাথর ভেঙে শাবল খুঁজছি আমি ,

চলন্তিকা বললো দুঃখ পাস না বাবু 

আসা যাওয়া সেই তো জীবন। 

.

পরশু গেছিলাম বন্ধুদের কাছে 

পচা বললো তুই ফাটাফাটি স্মার্ট হয়ে যাচ্ছিস ,

অরিন্দম বলেছিল কোনো এক সময় 

আমার জীবন একটা গল্প ,সাতরঙা আকাশের রামধনু। 

শুনেছি মানুষের নাকি দুটো জীবন আছে 

অনেকটা কয়েনের এপিঠ আর ওপিঠ ,আলো আর অন্ধকার। 

.

চলন্তিকাকে প্রশ্ন করি নি  কোনোদিন 

বৌদি শব্দটা  অন্ধকার না আলো ,

শুধু মনের ভাঁজে যখনি আমি ৰামধনু দেখি ,দেখি তোমায় চলন্তিকা  

তুমি কি তবে ?

শুনেছি নারীরা যার কাছে আশ্রয়  খোঁজে সে হলো পুরুষ 

তবে পুরুষ কেন আশ্রয়হীন থাকে।  

কাল রাতে আমার স্ত্রী বলছিল তুমি  এবার আমার খামারে ঘোড়া হয়ে যাও 

দিনকাল ভালো না ,

আমি বলেছিলাম জুতোর কালি মাখিয়ে দেও আমার গালে 

আমি বিচ্ছিরি হতে চাই। 

.

বৌদি শব্দটা বড় অশ্লীল চোখে 

কিন্তু কি করি বলতো আমার কাছে নারী যে বড় অশ্লীল ,

ছি ছি জন্মের নগ্নতা কি বলা যায় ,

জানি ভুল ভাবছে সময় 

সত্যি বলতে কি আমার বাইশতম প্রেমিকা গভীর সঙ্গম কালে 

আমার কাছে চেয়েছিল শুধু শরীর ,

তাই শরীরটা দান করেছি তাকে 

আর অনুভবগুলো এতদিন জমানো ছিল চলন্তিকা তোমার জন্য। 


Wednesday, March 17, 2021

বসন্ত

 বসন্ত 

... ঋষি 


বসন্ত এসেছিস 

বেশ তো ,বোস না ভাত ,কাপড়ে 

বোস না দরজা খুলে ফাগ ,আবিরের কাব্যে নিরিবিলি একলা ,

হাঁটু ছুঁয়ে থাকা থুঁতনি " দ " এর মতো হৃদয়ের জানলায় উঁকি মারা মুখ 

একার সফর 

নির্ভেজাল অনন্তের ফাঁকে অন্য দিন। 

.

বসন্ত এসেছিস 

রেডিওতে বেজে চলেছে পুরোনো সে রাজকাপুরের গান 

সরগম আর সঙ্গম ,

অনবদ্য সময়ে বসন্ত তুই আসলে সবচেয়ে ভিখারি 

তবে তুই ফুটপাথে থাকিস রাজার মতো 

অন্য সাম্রাজ্যে। 

.

প্রসেনজিৎ স্যারের কথা মনে আছে 

বাদ দে আজ মন ভালো নেই ,

নৈঃশব্দের বুকে কখনো সখনো শব্দের জলকণা ভাসে মায়াবী নৌকো 

মনে পড়ে প্রেম মানে মায়াবী চোখ

দ্যাখ, উজ্জ্বল  আকাশে তাকালে এখনও কত ছায়া

ফাগুন, আগুনটা উশকে দে

হাত পুড়িয়ে আজ সেঁকে নেবো হৃদপিন্ডে রুটি 

খিদে। 

এখন তো কোনো কবিতা নেই

ধ্বনি নিয়ে খেলে লোকে, আরো কতশত অ্যাজেন্ডা

নদীনালা ,শরীর ছুঁয়ে 

আজ শুধু কবিদের মনখারাপের কাব্য,

বসন্ত তুই চারালি আটত্রিশ 

এখন শুধু দেন ফুরোবার গান 

সে যাই হোক 

এলি তাহলে তবে , এসেছিস ... একটু বোস্ ...

পোশাক

 পোশাক 

,.... ঋষি 


পোশাক নিয়ে যত সমস্যা মানুষের 

কোত্থেকে কেনা হলো ,কোন ব্র্যান্ড ,কত দাম,ফিট হলো কিনা 

কত সমস্যা ,

তাই মাঝে মাঝে মনে করি বেকার  পোশাক খুলে রেখে 

হৃদপিন্ড নিয়ে ছুট্টে পালাই। 

.

মানুষগুলো সব আফ্ৰিকান উটপাখির দেশে একলা থেকে যায় 

পোশাকের ওঠাবসা ,পোশাকের কথা বলা ,পোশাকের আসা  যাওয়া

সমস্যা আর সমস্যা 

পাখির কাছে খোলা আকাশ সে খাঁচায় থালেও থাকে 

খাঁচার বাইরে থাকলেও থাকে 

কিন্তু মানুষ বসছে আকাশের মাহাত্ত। 

.

নিয়ম করে সকলে বাজারে যায় ,অফিসে যায় ,বসে চাপে 

সময়মতো কপাল করে কেউ কেউ বাসের জানলার ধরে সিটটা পেয়ে যায়,

পোশাক শুধু উপস্থিতি খোঁজে 

অথচ হৃদপিন্ড খোঁজে বাসের জানলার বাইরে সেই ফুটপাথ 

হয়তো স্মৃতি 

কিংবা বিস্মৃতি। 

স্মৃতিদের আবার ভীষণ দোষ 

ওরা পুরনো হলেও বারংবার ফিরে আসে হ্যাংলার মতো 

আর উৎপাত। 

আসলে মানুষের সমস্যা হলো

মানুষের পোশাক নিয়মিত একটা ডেইলি জার্নি 

আর মানুষের হৃদপিন্ড শুধুই বাঁচার লোভ। 

.

কি মশাই বুঝলেন না তো 

আমি যে পোশাকের কথা বলছি তার বয়স হয় 

চামড়ায় ভাঁজ পরে 

কিন্তু পুরনো হলেও সেলাই করে প্রত্যেককে মানিয়ে নিতে হয় ,

না মশাই বদলানো যায় না ,

আর হাজার বিরোক্তিতেও খুলে ছুঁড়ে ফেলা যায় না। 

মাস্টার স্ট্রোক

 মাস্টার স্ট্রোক 

... ঋষি 


চলন্তিকা  আমি মাটি ফুঁড়ে একটা বল্লম ঢুকিয়ে দিলো  

আমার কষ্ট হলো ,আমি চুপ 

আমি চলন্তিকার ভিতর ফিট করে দিলাম একটা টাইমবোম

চলন্তিকা অপেক্ষায় থাকলো ,কিন্তু সেও চুপ ,

আসলে ভালোবাসলে কষ্ট বলতে নেই কাউকে 

শুধু একসাথে থেকে অনুভব করতে হয়।  

.

আমি শুধু চুপ থেকে দেখলাম চলন্তিকার গম্ভির মুখ 

আমি হাসাতে চেষ্টা করলাম 

বললাম জানো তো এতক্ষন বৃষ্টি হচ্ছিল শহরে ,পশ্চিমে মেঘ ছিল 

এখন পরিষ্কার 

চলন্তিকা হাসলো একটু বললো 

কষ্ট লুকোতে হবে না আমার কাছে ,অভিনয় দরকার নেই। 

.

আমি চুপ

কি করবো ভাবছি 

ভালোবাসলে এমন কিছু পাওয়া যায় 

যেমন আমার মাটিতে একটা বল্লম চির কাল রক্ত বৃষ্টি ঘটে 

চলন্তিকার ভিতর একটা টাইমবোম সারাক্ষন ভয় দেখায় ,

এ এক অদ্ভুত ঘটনা ,

ভালো না বাসলে, এইসব অদ্ভুত ঘটনা কি ঘটতে পারে?

চলন্তিকা  বললো,চলো তবে আরো ভালোবাসা যাক 

ভালোবাসার আরো ,এটাও প্রশ্ন ?

সময় আরো অদ্ভুত 

আরো বেশি অদ্ভুত কি ঘটায় দেখা যাক

"দেখা যাক"

‘দেখা যাক’

দেখি সেই বল্লম আর টাইমবোম পাশাপাশি বসে আছে 

রক্তাক্ত হচ্ছে 

মাটির শিকড়ে লেগে আছে প্রাচীন কোন মৃত শব 

আমি আর চলন্তিকা এইবার ভাবছি 

 এবার নিশ্চয়  মাস্টার স্ট্রোক ভালোবাসার 

এইবার নিশ্চয়। ...


পুরুষের চোখে

পুরুষের চোখে

... ঋষি 


নারীরা ততক্ষন সম্মানীয় যতক্ষণ সময়ের চোখ 

নারীরা ততক্ষন সুন্দরী যতক্ষণ পুরুষের চোখ 

নারীরা ততক্ষন পর্দানশীন 

যতক্ষণ সময় আর পুরুষের চোখে 

ভালোবাসা থাকে। 

.

অদ্ভুত এই কাব্য 

মুহূর্ত থেকে ঝরে যায় সময়ের বিষ 

তোমাকে ছুঁয়ে যায় আঙুলগুলো আসলে পুরোনো বাড়ির কার্নিশ 

জানি এই কাব্যের লুকোনো অভিশাপ তোমাকে ছোঁবে না 

আমি চাও না ছুঁক তোমায় 

কোনো সময়ের পুরুষের অভিলাষী চোখ। 

.

আমার চোখে লাম্পট্য ছুঁয়ে আছে 

বাঁকুড়ার সেই আদিবাসী ঘোড়া যে লাল মাটির দেশে ধুলো উড়িয়ে 

অন্ধকার করে পৃথিবী।

সেই সুযোগে আমি সিঁদ কেটে  চলে যাই তোমার পূর্ণাঙ্গ চাঁদে 

কান পেতে শুনে নি 

নারী ও পুরুষ তফাৎ।  

একদিন আমিও ছুঁয়েছিলাম তোমাকে

অভিলাষী বৃষ্টির জলধারায় তখন পাহাড় থেকে গড়িয়ে নামা নুন 

তোমার সময় থেকে চুষে খেয়ে নিয়েছি তোমার শেষ রক্ত সেদিন 

আর কোনোদিন আহত হবে না তুমি। 

জানি, এ কবিতার  ভেতর লুকিয়ে থাকা মরণরোগ

একফোঁটাও ভেজাবে না সময়ের  রহস্যময়ী মায়াবী চোখ,

তবু আমি জানি 

তুমি ততক্ষন সুন্দরী 

তুমি ততক্ষন প্রেয়সী 

যতক্ষণ পুরুষের চোখে প্রেম থাকে। 


ছায়ানট

 ছায়ানট 

... ঋষি 


অনন্তকাল ধরে এই পরিচয় 

আজও আমাকে বলে সেই  ছায়ানট তোমাকে কি বলে ডাকবো ,

প্রেমিক যখন তার পরিচয় হারায় 

প্রেম যখন গভীরে ছত্রিশ কোটি ঈশ্বর ছুঁয়ে আবদার করে 

সাথে বাঁচার 

তখন প্রেমের কি সত্যি পরিচয় থাকে। 

.

কিউমুলাস মেঘের নিতম্ব ছুঁয়ে এ শহর  আজ দ্বিধাগ্রস্থ 

তোমারে কি নামে ডাকব, 

ঈষৎ রোমশ আভা তোমার স্তনের পরিচয়ে ,

তোমার চোখের বিদ্যুৎ বলে দেয় 

আমার মৃত্যুর কারণ ,

মানুষ তো জানে সত্যাভিলাষে কোনো ষড়যন্ত্র নেই 

শুধু সময়ের ষড়যন্ত মানুষকে গ্যালিলিও করে। 

.

তবুও তো উত্থান থাকে 

তবুও তো আঘাত থাকে 

হঠাৎ শহর বুক ছুঁয়ে কোনো উষ্ণ মেঘ 

উড়িয়ে নিয়ে যেতে চায় তোমার খোলা চুল ,শাড়ির ভাঁজ ,

আসলে প্রকৃতি শুধু বুক বোঝে 

বোঝে ঝর্ণার নগ্নতায় ভিজে ধরা শ্যাওলা ধরা পাথর 

তপস্যা। 

আজ আমাকে বলে সেই  ছায়ানট তোমাকে কি বলে ডাকবো

নিহত ডায়েরী জুড়ে পুনরায় জেগে ওঠে  গুল্ম ও লতা

হঠাৎ পরিচয় খোঁজে 

প্রেম থেকে প্রেমিকার দূরত্ব 

দূরত্ব সময়ের থেকে ,দুর্বলতার 

সেখানে আমার মতো কেউ কেউ দেশলাইকাঠিতে সময় পোড়াতে পারে ,

খুব অনায়াসে মৃত মুখে আগুন দিয়ে 

ফিরে আসতে পারে জন্মান্তরে অন্য শরীর নিয়েছে 

কারণ শরীর হলো পরিচয় 

কিন্তু শরীরের পরিচয় প্রেম নয় কখনো। 


সর্বনাশী কবি

 সর্বনাশী কবি 

... ঋষি 

.

গুগল ইমেইল বক্সে লুকোনো ছবিগুলি 

বৌদি নিজের সমস্ত দেওয়াল আলমারিতে পাট করে রাখে ,

মমতা শব্দটা নারীদের দত্তক। 

বাথরুমের দরজাখুলে শাওয়ারের উষ্ণতা খুলে দেয় 

আমার কবিয়াল গানে তখন 

সর্বসুখ ,

না কোনো ফুটো থাকে না কবির দেওয়ালে 

বা বাথরুম টাইলসের ওপাশে 

থাকে চোখ। 

.

সর্বনাশ হলো কবি সব দেখতে পায় ,

স্নানাগারে কবি তখন একলা দাঁড়িয়ে ঘামছেন 

অদ্ভুত দৃশ্য 

বুড়ো শালিখের দরজায় আজকাল অদ্ভুত ভাবে রৌদ্র এসে পরে। 

প্লিজ ভুল ভাববেন না কবিকে 

ছবি আঁকতে গেলে প্রকৃতিকেও নগ্ন হতে হয় 

যা সবাই দেখেতে পায় 

অথচ কবি চশমা চোখে দেখতে পায় স্নানরত বৌদিকে। 

.

পাপ ,পুন্য ,মুলাকার ,মহব্বত ,কাম ,রব 

না হে পাঠক কবির চোখে শুধু শব্দের চালচিত্রে অদ্ভুত সব ছবি ,

কবির স্ত্রী আছে স্ত্রী নেই' সেই তর্কে না গিয়ে লাভ নেই আজ;

আমরা বরং ঘুরে আসি  বৌদির স্নানের ঘরে। 

নীল আকাশে বৃষ্টি কি করে একজন পূর্ণাঙ্গ নারীকে ভিজিয়ে চলে ,

মতবাদ চলতে পারে 

টমেটো ডাল ,চিংড়ি পোস্ট ,পাকা মাংসের গন্ধ  

হঠাৎ বৃদ্ধ কবি চোখ বোজেন 

যেনো কবি  কৈশোরের পানকৌড়ি 

 ডুবে যান হঠাৎ  তার নিজস্ব সম্পর্কের নারীগুলোয়। 

তারপর চোখ খুলে দশ হাতে লিখতে থাকেন দর্শন 

ভেজা চুল,ঝোলা  বুকের মধ্যে ধুকপুক,

ইশ বড় অশ্লীল দাদারা ,মেরে চোখ খুলে নিতে চান কবির 

প্লিজ একবার নিজের ঘরে দেখুন বৌদি সুরক্ষিত। 

.

শুধু কবির চোখের শ্লীলতা শব্দটা বেমানান 

শুধু শব্দের ঝংকারে কবি নগ্ন করতে পারে সময়কে যখনতখন 

কিংবা ছবি আঁকতে পারেন 

কি করবেন ভাবছেন ?

কবিকে জেলে পাঠাবেন বৌদিবাজির দায়ে 

নাকি ব্রাত্য করবেন ,

কিন্তু কলম তো থামবে না দাদা 

সে তো লিখেই ফেলবে দৃশ্যের ভিতর লুকোনো দর্শন। 


Tuesday, March 16, 2021

ডিলো

ডিলো 
..ঋষি 
.
আমি " ডিলো " বলে সেই আফ্রিকান সেই পুরুষকে চিনি
যে সুদুর আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় এসেছিল
শুধু ভালোবাসতে। 
সময় ভোলে নি সে, দেওয়াল ভাংগে নি সে 
সভ্যতা তোলপাড় করে পরিবর্তিত সময়ের মানুষ বলে নিজের
শুধু একটা দাগ রাখতে চেয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক ইতিহাসে। 
.
আমি " ডিলো " বলে সেই আফ্রিকান সেই পুরুষকে চিনি
যার ভাষা তখনকার কেউ বুঝতো না , 
বুঝতো না তার বুকে বেঁচে থাকা এক সমুদ্র ভালোবাসা।
সে যখন বাঁশি বাজাতো ছুটে আসতো সময়ের জানোয়াররা, 
পুর্নিমার চাঁদে তার বাঁশীর সুরে 
পৃথিবী নেচে উঠতো, নেচে উঠতো ভাষা
পাখিরা হঠাৎ ঘুম ভেঙে  সুর মেলাতো তার বাঁশীর শব্দে। 
.
আমি " ডিলো " বলে সেই আফ্রিকান সেই পুরুষকে চিনি
যে খুব সুন্দর ছবি আঁকতো পাথরের গায়ে
সে এঁকে ফেলতো সময় খুব সহযে পাহাড়ের গুহায়, 
তার ভাষা কেউ বুঝতো না 
তবে তার ছবিগুলো কথা বলতো।
আজ শতাব্দী পরও "ডিলো" র সেই ভালোবাসা আপনারা খুঁজে পাবেন 
এশিয়ার বিভিন্ন গুহায়, 
ডিসকভারি চ্যানেল, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে। 
.
কিন্তু আমি দেখি শুধু " ডিলো" র প্রচেষ্টা
" ডিলো " ভালোবাসা তার ভাষার জন্য, তার সৃষ্টির জন্য 
সে চেয়েছিল অমর করতে তার ভাষাকে, তার সৃষ্টিদের 
কিন্তু আমরা? 
আমার তো ভয় করে আমার ভাষা হারিয়ে ফেলার
বাংলা সংস্কৃতি, সুর, সভ্যতা যদি হারিয়ে যায়, 
কারণ আমাদের মধ্যে আমরা " ডিলো "কে দেখতে পাই না
দেখতে পাই অপসংস্কৃতি।

হঠাৎ সুখে

হঠাৎ  সুখে 
.. ঋষি 
যখনি দেখি এই শহরের রাস্তায় 
আমি একটা পথ দেখতে পাই তোমার ভিতর অন্ধকার রঙের,
এত ধোঁয়া চারিদিকে 
এত আওয়াজ, এত মানুষ, মানুষের পরিচয়, 
নির্বাসিত শহরের রাস্তায় আমি মানুষ খুঁজি 
খুঁজি মানুষের মেরুদণ্ড তোমার ভিতর। 
.
একলা সে পথে হাঁটি 
হেঁটে চলি ধর্মতলা, পার্কসার্কাস, রাসবিহারী হয়ে আহিরীটলা, 
আমি শুনে চলি রবীন্দ্রনাথ থেকে কৃষ্ণর বাঁশী
হিটলার থেকে সংলাপ পাড়িয়ে তোমার চোখের ভিতর একটা কষ্ট দেখতে পাই 
দেখতে পাই সবুজ মাঠের শোক 
সেই মাঠের থেকে এই শহরে তোমার শৈশব, যৌবন খুঁজে চলে। 
.
তোমার সাথে নিরিবিলি পার্কে বসে আমি খুঁজে পাই 
পাখিদের ঘর, 
পাশাপাশি গাছগুলো, পাশা সম্পর্কের বালিশের রং 
দিকনির্দেশ করে এই অন্ধকার শহর। 
দূরে কোথাও
রাস্তা নয়, বাউলের একতারার সুরে হাঁটতে হাঁটতে 
হাহাকার আর ঘুমের বড়ির মাঝে এই শহর স্বপ্ন আঁকে, 
অন্ধকার তুলিতে ভেসে ওঠে সময়ের সংসার 
চেনা মুখ অচেনা লাগে 
চেনা দুঃখ, হাহাকার নয় অভ্যেস। 
কোন দুষন মুক্ত পৃথিবীতে তুমি খোলা চুলে চিরুনি ঘষো
তোমার খোলা পিঠে হাসতে থাকে প্রাগৈতিহাসিক পাথর
আমি পাথর ঘষি,  ঘষি চকমকি 
সময় গায়েব হয়ে যায়, ম্যাজিক এসে দাঁড়ায়
এই শহরের রাস্তায় 
মনটা ঝলমল করে, হেসে ওঠে সুখে। 



.

ঠিক এতটুকু

ঠিক এতটুকু 
... ঋষি 

ঠিক এতটুকুই আছে 
আমি তোমার শরীর থেকে সরিয়ে দিলাম ঝোপ জংগল 
আমি তোমার বুক থেকে সরিয়ে দিলাম কোজাগরী চাঁদ 
আমি তোমার ঠোঁট থেকে শুনতে পেলাম সংসারে শ্লোক 
আমি তোমার শরীরের বন্দরে জাহাজের মাস্তুল পুঁতলাম,
তারপর তোমায় তুলে আনলাম কবর থেকে 
তোমার চোখে চশমা, তোমার ঠোঁটে ঈশ্বর। 
.
তোমার শরীর থেকে আরবী উপন্যাস, উপন্যাসের ঘোড়া সরাবার পর 
তোমাকে আমি নগ্ন করতে পারলাম কই,
তোমাকে উন্মুক্ত করতে কেটে গেছে আমার যৌবন 
তোমাকে বিষাক্ত করতে করতে আমি আর ডি এক্স
এতগুলো ধর্মের বিস্ফোরণ হবার পরও
আমি ধার্মিক হতে পারলাম কই। 
.
আমি নাছোড়বান্দা এবং নচ্ছার 
আমি উত্তর সভ্যতা এবং প্রাগৈতিহাসিক 
আমার বুকের লাভায় আজও শ্লোক আগলায় মাউন্টেন ফুজি। 
কি ঘর বানিয়েছে মানুষ 
এখন চাঁদকে দরকার পরছে মানুষের পৃথিবী  ধ্বংসের পর শুক্রাণু সংরক্ষনের জন্য।
এ আমি কোথায় চলেছি তোমাকে নগ্ন করে
এ আমি কোন পথে চলেছি তোমাকে একলা করে 
কি খুঁজছি তোমার নগ্নতায় আমি? 
এসো তুমি আমার ভিতর ঢোকো, আমি ঢুকি তোমার 
প্রথমে তুমি এখানে গুল্ম পাবে, পাবে আফিম আরও গভীরে।
এসো শৈশব, এসো যৌবন, বা বার্ধ্যক্য নয়
না সংগম নয় 
শুধু নগ্নতা
না প্লিজ তুমি আবার বলো না ছোটলোক 
আর না, আয় আমার ভিতরে আয়। 


গান্ধীজির বাঁদর

গান্ধীজির বাঁদর 
..ঋষি 
.
আমি গ্রামে জন্ম নিয়ে দেখেছি 
মশা কামড় আর মাটির দুঃখ আমি নিতে পারি নি,
নিতে পারি নি কুসংস্কার আর নিরক্ষরের তকমা। 
গ্রামের সেই কালো দিদিমনিকে জাপটে ধরে সাঁওতাল পরগনায় দেখেছি 
পঞ্চায়েত বসেছে, 
পঞ্চায়েতের মনিবরা কালো দিদিমনিকে ন্যাংটো করে গাছে বেঁধেছে,
তারপর তার চুলগুলো আগুনে পুড়েছে 
বুনোট প্রাকৃতিক স্তনে হাত রেখে সারা পঞ্চায়েত বলেছে 
মেয়ের শিক্ষা রান্নাঘরে ভালো, রানাঘাটেও ভালো 
কিন্তু ভালো না পুরুষের দাবনায় 
তবে নাকি মেয়েদের রান্না করতে অসুবিধা হয়। 
.
আমি শহরে জন্ম নিয়ে দেখেছি 
ফান, ফ্যান্যাসি আর মস্তি, সাথে আছে সোনাগাছি। 
আমি শহরের কনডোমের গায়ে খুঁজে পেয়েছি সেই কলেজ যুবতির 
ভার্জিনিটি হারানো ভার্চুয়াল সুরসুরানি, 
শহরের রাস্তার পাশের পাবে আমি খুঁজে পেয়েছি সেই অন্ধ মিউজিসিয়ানকে
যে রিমেকি রবীন্দ্রনাথের সুরে পিটবুল বাজাতে  ব্যাস্ত 
আর জনতা মদের নেশায় প্রাচাত্যের কনডম ব্যাবহারে। 
.
একটা রঙিন কুকুরকে গুলি করে খুন করা হয়েছে 
মানবঅধিকারের শহর তখন কুকুরের গলায় চিৎকার করছে, 
রাস্তার মিছিলে সাধারন জনগন 
পুলিশের ভ্যানে তোলা হলো সুন্দরী রিপোর্টারকে 
থানার ভিতর শ্লীলতাহানি সত্যি বলার জন্য 
আমি চিৎকার করে উঠেছি 
এটা অন্যায়। 
পুলিশ প্রথমে আমাকে ব্যাপক লাঠিপেটা করলো আমার পিতৃপুরুশের জমিতে
হাত দিয়ে আমার পিতৃপুরুষ মুড়ে বলেছে 
শালা, সুরসুর করছে নাকি।
আমি চুপ 
কারন আমি বুঝতে পেরেছি 
সাধারন মানুষের কোন প্রতিবাদ থাকতে নেই 
থাকতে নেই নিজের কোন শহর বা গ্রাম 
শুধু চুপ থাকতে হয় 
আর গান্ধিজীকে স্মরন করে বাঁদর সাজতে হয়।

আমার কিছু করার নেই



আমার কিছু করার নেই 
..ঋষি 
কলকাতা ,  ভারতবর্ষ আমার হাতের বাইরে চলে গেছে 
আমার কিছু করার নেই। 
আমরা কথা বলি, আমরা একে অপরের কথা শুনি না
আমার কিছু করার নেই। 
আমি পলাশ আর বসন্ত দুজনকেই চিনি প্রতিবারে নতুন করে 
আমার কিছু করার নেই। 
আমি সময়ের বালিঘড়ি আর গোলটেবিল মিটিং দুটোই জানি 
তবু আমার কিছু করার নেই। 
.
আমি একটা ফুটবলের ভিতর ঢুকে একটা কান্নার শব্দ শুনতে পাই
জানি সে কান্না আমার হলেও, মাঠের না। 
আমার প্রেমিকা থেকে প্রতিটা রিক্সাওয়ালার হাতে মোবাইল দেখেছি 
কিন্তু সত্যি হলো, যখনি আমি যখনি ফোন করেছি 
ফোন চলে গেছে হিউয়েন সাংএর কাছে 
চলন্তিকা ছিল না সেখানে, শুধু সময়ের পথে সেই পরিব্রাজক ছিল। 
.
আমি হাত ঢুকিয়েছি সময়ের ভিতর উঠে এসেছে চিতল মাছ 
আমি হাত ঢুকিয়েছি বাজারের ব্যাগে উঠে এসেছে টু বি এইচ কে 
আমি হাত ঢুকিয়েছি শহরের রাস্তায় উঠে এসেছে মুঠো ভর্তি ধুলো
আমি হাত ঢুকিয়েছি আজকের কবিতায়, শুধু খিদে খিদে, 
সবটাই খিদে 
মানুষের, সময়ের,চাকার, আগুনের, মনের। 
.
জানি না আজকাল আমার চারপাশে টেস্টটিউবে নারী 
আমার কলমের শব্দদের চলন্তিকা বলে গতজন্মের পাপ 
আর আগামীর অধিকার।
আমি চলন্তিকার দিকে তাকাই 
এগিয়ে চলি চলন্তিকার দিকে 
ভারতবর্ষ খিদেয় মরে,কলকাতায় বেড়ে যায় জনস্রোত
রাস্তা জ্যাম হয় 
গাড়িঘোড়া থেমে যায়। 
আমি চলন্তিকার নাভিতে একটা মাছ ওয়ালার হাঁড়ি দেখতে পাই 
পুরুষগুলো সব মাছের মতো ওই হাঁড়ির ভিতর খলবল করে
চলন্তিকা হাত ডুবিয়ে মাছেদের সান্তনা দেয় 
আমি কাঁটা ফুটিয়ে দি চলন্তিকার হাতে। 


Monday, March 15, 2021

গৃহপট

গৃহপট 
... ঋষি 
গুছিয়ে  রাখা গৃহপট 
গৃহতুলিতে ইজেলের কালিতে রাখা হাজার দোষারোপ, 
ভাবতে শিখে বুঝতে পারি 
উন্মাদ ঘোড়ার সফরে শুধু সর্বনাশী নেশা আমার রক্ত কনিকায়, 
ক্লোরফর্মিয় আত্মায় আজ শুধু ধবংসের  সভ্যতা 
নির্বাসিত জীবন দিশাহারা কোন রক্তবর্ন পলাশ। 
.
পলাশ বল্লেই বসন্ত চলে আসে মনে 
পলাশ বল্লেই তুমি চলে আসো চলন্তিকা
নির্লজ্জ আমি, ভিখির মতো পৃথিবীর দরজায় হাত খুলে রাখি 
চোখ খুলে রাখি বনসাই গাছের দিকে, 
আমার এক গ্যালাক্সি  প্রেম ব্ল্যাকহোল খোঁজে 
তবু সময় আমাকে পারমিশন দেয় না সাথে থাকার। 
.
গুছিয়ে রাখা গৃহপট 
খেলনা পুতুলের ঘাড় নাড়া 
ইজেলের শুন্য গর্ভে আহুতি খোঁজে বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি 
ধম্মং শরণং...  কিন্তু চলন্তিকা,
চ ল ন্তি কা........ 
      সাজানো সময়ের বুকে কিছু রক্তক্ষরণ।
.
তোমার রান্নাঘরে দপ করে জ্বলে ওঠে গ্যাসওভেন
তাতে রান্না হয় আমার হৃদ পিন্ড রোজ,
সাজানো ডিশে সাজানো হয়  গোলমরিচ চিকেন, চিকেন তন্ডুরী 
আমার হৃদপিন্ডের স্বাদ 
তোমার জিভ ছুঁয়ে হজম হয় রোজ 
তাই তোমার ঠোঁটেও আজকাল পাই আমি আমার রক্তের স্বাদ।

মেরা নাম্বার কব আয়েগা

মেরা নাম্বার কব আয়েগা 
.... ঋষি 
চারিদিকে ঢাক, ঢোল 
দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা আর মুখোশের শহরে 
খুব অনায়াসে আমি বিশ্বাস লিখবো " এ ভাবেও বেঁচে থাকা যায় "
তুমি শুধু পাঠিকার মতো হৃদপিন্ড  সাজিয়ে একলা থেকো, 
স্মৃতির শহরে মুহুর্তরা বাবুইয়ের বাসা 
অথচ ভীষন জোনাকি নির্ভর। 
.
মুহুর্ত,মুহুর্ত, মুহুর্ত
অনাদেয়ি আদায়ে বিস্তির্ন পটে দেবী মুর্তির বিসর্জন, 
হৃদয়ের মাটিতে পড়ে থাকা খড়, ভাবনা আর কাঠামো, 
ভালো থাকাটা একটা আর্ট 
কিন্তু সত্যি এটা খড়কুঁটো আগলে সকলে ভাষান্তর নই আমরা
সকলে বেঁচে থাকতে পারি না। 
.
তুমি বলো চলন্তিকা এই শহরে কজন বেঁচে 
তুমি বলো চলন্তিকা এই শহরে অজস্র আকাশ ছোঁয়া বাড়ি 
কিন্তু বাঁচার চারদেওয়াল কজনের আছে,
আমরা মুঠো আগলে বাঁচতে অভ্যস্ত মানুষগুলোর 
মুঠো খুললেই সব জিরো। 
জিরো, জিরো, জিরো 
সামনে কোন নিউমরিক নাম্বার নেই 
অথচ আমরা সবাই নাম্বারে দাঁড়িয়ে বাঁচার লাইনে 
সকলেই বলছি মেরা নাম্বার কব আয়েগা 
আর ভিতরের একলা বাঁচাগুলো বলছে আয়েগা 
জরুর আয়েগা। 
আমরা মুহুর্ত আসার অপেক্ষায় মুহুর্ত জড়িয়ে বেঁচে 
শুধু ভাবনায় গড়ি বাবুইয়ের বাসা 
অন্ধকার জোনাকির খোঁজে। 

Sunday, March 14, 2021

বারো ইঞ্চি

বারো ইঞ্চি
.. ঋষি 
.
মারো মারো কৃষকের ভাত মারো 
আরো জোরে ঠাপ মারো শ্রমিকের মজুরিতে,
যদি কম মনে হয় কোন পথ চলতি যুবতীর বুকে হাত রাখো 
শুধু যুবতীর বুকের হুক খুলো না 
তুমি সাধু, তুমি আইন অনুযায়ী সুবোধ নাগরিক 
আর আমি তুমি বোকা... 
শুধু বোকা। 
.
মারো মারো গৃহস্থের পেটে লাথি মারো 
লাথি মারো কোন প্রেগনেন্ট মহিলার পেটে 
মাতাল হলে রাষ্ট্রের দোষ থাকে না, 
দোষ তো কনডমের, কনডম কারখানা যে কম এই দেশে
বরং খুলে ফেলো মদের কারখানার পাশাপাশি 
কিছু কনডম কারখানা। 
.
আরে হাঁপালে হবে 
পথে ঘাটে সাজানো শরীর,মৃতদেহ সব 
আংগুল গোঁজো, গুঁজে দেও তোমার ধনতন্ত্র
কোন স্টিং অপারেশন করে। 
ওই সব সাহিত্য টাহিত্য বাদ দেও
যদি বিভুতিভুষনকে, রবীন্দ্রনাথ বলো 
যদি কোন গুন্ডাকে জাতির জনক বলো 
কি এসে যায় তাতে? 
পুলিশ কাছারি, লোকবল সব তোমার 
মাঝরাতে কোন নির্দোষ মহিলাকে পুড়িয়ে 
তুমি হয়েই যেতে পারো ক্লিন চেক। 
.
আরো জোরে, আরো জোরে
না কোন শব্দ করবে না কোন সাধারন মৃত শরীর, 
পেট্রলের দাম বাড়াও, পেঁয়াজের দাম বাড়াও 
তোমার তো আবার নেষার চোখে পেঁয়াজি লাগে, 
তুমি বরং এক কাজ করো 
জনগনের ঋতুবদলের রক্ত দিয়ে নিজের সংসার গড়ো 
ভয় নেই তোমার মার্সিডিজের তলায় প্রতিবাদ আসবে না,
যদি আসেও 
চাপ নেই 
তুমি তোমার বারো ইঞ্চির ক্ষমতায় কাউকে ডরাও না জানি।

নারীবাদ

নারীবাদ 
... ঋষি 
দু ছত্রে নারীবাদ লিখে ফেললেন আপনি
গুছিয়ে পুরুষচক্রকে সাব্যস্ত করলেন নারী পাচারকারী চক্র হিসেবে, 
কিন্তু আপনি কি চেনেন সেই মহিলাটিকে 
ভদ্রলোক বেড়িয়ে গেলে যিনি  গুছিয়ে বসেন পর্দার ওপারে 
আপনাকে লাল, নীল রং দেখাবে বলে
আরও অদ্ভুত সেই ভদ্রমহিলা রাতে নিজের পুরুষ্টিকে জড়িয়ে বলেন 
তোমায় ছাড়া কেমন খালি খালি লাগে জানু। 
.
মাননীয় নারীতন্ত্র কিসের দাঁড়িয়ে আছে? 
শুধু কি পুরুষের বিরুপতায়? 
আপনি সেই ভদ্রমহিলাকে চেনেন, 
 যিনি নিজের সংসার ছেড়ে, সন্তান ছেড়ে 
অন্য পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যায় বিলাসবহুল জীবনের জন্য, 
তারপর রাস্তায় ওই ভদ্রমহিলার সাথে দেখা হলে বলেন 
ওটা আমার পাস্ট ছিল 
আজকের দিনে ওইসব লো-কালচার্ড লোকের সাথে 
আমার সম্পর্ক কি। 
.
দু ছত্রে নারীবাদ লিখে ফেললেন আপনি
টি আর পিতে কিছু সংসারী গৃহিনী চোখের জল ফেললো, 
আপনার ইনবক্স ভরে গেলো 
বেশ কিছু শেয়ার আর ক্যা বাত জুটে গেলো। 
তারপর আপনাকে কোন রাতে আপনার প্রোফাইলের কোন নারী বন্ধু 
ইনবক্স করলো
 জানো তো রাতে আমার শরীর গরম হয়ে যায় 
কি করি বলো তো? 
আপনি কি ভাববেন, আপনি কতটা গরম হবেন 
একবার ও আপনার মনে হবে না তো 
চুলোয় যাক নারীবাদ, আমি বরং গরমে একটু.... 
.
 মশাই এই সব নক্সামি ছাড়ুন 
এই সব নারীবাদ টারিবাদ ছেড়ে যদি করতেই হয় 
নারীদের সন্মান করুন 
সন্মান করুন আপনার মাকে, বোনকে, স্ত্রীকে। 
আপনার নিজের প্রেমিকার হাতটা চেপে ধরে ভরসা দিন 
আমি আছি 
তারপর তো সময় রইলো অন্যকিছু ধরার। 
কোন ভন্ডামি না
ওই সব নারীবাদ টারিবাদ শুধু কোন শব্দ না 
প্রতিটা নারীকে বিশ্বাস দিন আপনি আছেন অসময়ে 
শুধু ভোগে না 
সময়ের ভাগে।
.
আর রইলো অবিশ্বাসের কথা 
সে তো নারী,পুরুষ প্রতিজন যে ভদ্রলোক হবে 
প্রতিজন যে সুবোধ বালক, বালিকা হবে 
তেমন তো না, 
সুতরাং মশাই নারীবাদ চটকাবেন না
বরং আপনার চরকায় তেল দিয়ে দেখুন 
আপনি কতটা ভদ্রলোক।

কেয়ার অফ শৈশব

কেয়ার অফ শৈশব 
.. ঋষি 
শৈশবে ফিরতে হলে 
ফিরে আসতে হলুদ শাড়ি পরা দিদিমনি তোমায়, 
ক্লাসরুমে অন্যমনস্ক হলে শুনতে চাই তোমার কন্ঠে 
তোকে দিয়ে কিছু হবে না, 
ক্লাসে মারত্নক দুষ্টমি, অংকের ক্লাসে ব্যাকরণ খুললে 
তোমার নির্দেশে দাঁড়াতে হবে বেঞ্চের উপর। 
.
সব ঠিক আছে 
শুধু শৈশবে ফিরতে হলে গুছিয়ে নিতে হবে শহরের বাস স্ট্যান্ড 
টু বি এইচ কে ফ্ল্যাট ছাড়িয়ে,ল্যাপটব, দাঁড়ি কাটার ব্লেড ছেড়ে 
খুঁজে পেতে হবে পুরনো বাক্স প্যাট্রার তলায় গ্যালিভার ট্রাভেলস
পুরনো হাফ প্যান্ট, ক্রিকেটের ব্যাট, কাঁচের গুলি খুঁজে পেতে হবে
আয়নায় খুঁজে পেতে হবে সেই কোঁকড়াচুলো ছেলেটাকে। 
.
অনিমেষ  কাকার ঘুঘনি পাউরুটি, বন্ধুদের আড্ডা 
সেই খেলার মাঠে কাদায় নেমে গড়াগড়ি, 
কোচিং ক্লাস, কাঠি আইস্ক্রিম, পড়ার বইয়ে লুকিয়ে অবাক শরৎচন্দ্র 
ইন্দ্রনাথ, ফেলুদা,প্রফেসর শংকু 
সবাইকে ফিরে আসতে হবে। 
পুরনো সাইকেলের ক্রিংক্রিং, টিফিন বক্সের চাউমিন 
আকাশের চাঁদে ঘুড়ি, স্কুলের পাশে ঝালমুড়ি 
সবাইকে ফিরতে হবে, 
আজকের এই কাটাকুটি ছেড়ে আমাকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে 
তোমাদের অপেক্ষায় 
কেয়ার অফ শৈশব তোমার জন্য 
আবার একটু নিস্তব্ধতায়, চোখের পাতায় 
পুরনো সেই ঠিকানায় আজ মনকেমনের ভরসায়। 

Saturday, March 13, 2021

মুক্তি

মুক্তি 
... ঋষি 
আপনি জানেন রহিমচাচা কোথায় ভাত খেতো? 
কোথায় খেতো জল? 
কবুতর, কবুতর খেলতে খেলতে রহিমচাচা দারুন হাসতো
বলতো ঋষি আগুন নিয়ে খেলতে হয় 
তাই লুংগি পড়ি। 
.
আমি বুঝিনি তখন ওই বয়সে 
সমুদ্রের ব্যাখ্যান লিখতে অসিত বলেছিল 
বুঝলি ঋষি পুরুষরা আসলে দুহাত দিয়ে আগলায় আমার বলে
তারপর প্রতি রাতে ওম নম শিবায় 
সব অর্পন করে 
আসলে প্রতিটা পুরুষ সমুদ্ররের কাছে বড় অসহায়। 
.
সে বার সমুদ্রে গেলাম বন্ধুরা 
সকলে জলে নেমে জলকেলি করছি, ঢেউগুলো লাফ মেরে ডিঙিয়ে চলেছি 
নোনতা জল আমরা সকলেই খাচ্ছি 
আমরা সকলেই সমুদ্রের সাথে সহবাস করছি 
মেনে নিচ্ছি সমুদ্রের শতাংশ সহজ সিদ্ধান্ত। 
এটা ঠিক রহিম চাচার মতো পুরুষেরা কবুতর পোষে
যেখানে সেখানে ভাত খায়,
অসিত আমার বন্ধু শিবের মন্ত্র বলে সমুদ্রে অর্পিত 
আর আমি ঋষি চিরকাল সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে 
সমুদ্র ঢাকা আকাশে কবুতর দেখি,
বুঝতেই পারি না 
কবুতর না সমুদ্র কোথায় মুক্তি।

গরম কাল

গরমকাল
...ঋষি 
হঠাৎ  ব্রেক কষলে হড়কে যাবার স্বভাব 
হঠাৎ গরম পড়ে গেলো, 
আমসেক, কোল্ডড্রিংস, চকোলেট সেক,কাঠি আইসক্রীম 
উফফস ভাবছি ঘুড়ে আসি পাহাড়ে, পাহাড়ি ঢালে
নদী সভ্যতার দেশে। 
.
তারপর ফিরে আসবো বাড়ি 
বাড়ির টবের ফুলগূলো,বাগানের বেগুন টমেটোগুলো শুকিয়ে যাবে 
শুকিয়ে যাবে এই গনতান্ত্রিক সভ্যতার আগের নিয়মগুলো,
আমার বউ আমার ভাতের পাশে ছাই দিয়ে বলবে 
উফফস তুমি কত রোগা হয়ে গেছো 
নদীর পাশে ছিল মনে হয় চান, টান করো নি বহুদিন 
তোমার গায়ে বোকা মানুষের গন্ধ। 
.
আমি দাঁড়ি কাটবো, আফটার শেভ লাগাবো 
ল্যাপটপের দরজা খুলে খুঁজবো নদীতান্ত্রিক সভ্যতার আরামগুলো,
এসি ঘরে অফিসের চেয়ারে হেলান দিয়ে লিখবো  
আমার দেশ,আগত বসন্ত, ঝড়ের দিনের কথা 
ফাগ,আবিরে রবীন্দ্রনাথ লিখে দেবো প্রেমের কবিতায়, 
আদতে কিছু বদলাবে না
আমার বউয়ের মতো অনেকে প্রতিবাদ শিখবে গৃহস্থের খাঁচায়
তারপর শিকেয় আগুন দিয়ে রান্নাকরবে সময়ের খিদে
আমি আরো ভাবুক হবো 
সত্যি করে মিথ্যে লিখবো
লিখবো পুরনো সেই দিনের কথা 
আর সত্যি করে লিখবো ব্যাথা
আমার দেশ 
প্রেম 
আর গরমকাল।

সুন্দরীলাল



সুন্দরীলাল 
.. ঋষি 

কে বেশি সুন্দর? 
বাবা বলেন সুন্দরীলাল সময় তো হলো পিছনে ফেরবার, 
শালা প্রগতীর নিশান গেঁথে 
ভাষা দিবস মাড়িয়ে মঞ্চ কাঁপিয়ে 
কিষান আমার ভাই, সময় আমার নাটক আর মাগিবাজী সাহিত্য 
বাবা ডিগবাজী খায় সুন্দরীর শাড়ির নিচে পঞ্চমির গন্ধ। 
.
আমার বুলসাই চোখে 
রাজতন্ত্র বন্দুক ঠেকিয়ে বলে পৃথিবী  গোল মা, 
আমি রক্তবীজের বংশধর সুন্দরীলাল।
তোমার ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি আর ধুতির নিচে 
তোমার রিমেকি চশমার ফাঁকে চিকচিকে লোভ 
দেশটাকে চুষে ছিবড়ে করবে আমার। 
.
শুধু বলিনি কোনদিন কোলকাতা ভালো নেই, আমার রাজ্য 
বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা সব জায়গায় বালাতকারি 
সিন্দুকের ভিতর নোটগুলোতে বোকা মানুষের রক্ত 
আর কতগুলো মেয়েছেলে 
শালা সত্যি কি সময় ছাড়া সাহিত্য লেখা যায়।
সংসার ভাত খায়, আমার বোন মশকরা করে 
আমি বিড়ি টানি 
আমাকে তুলে নিয়ে যায় পাশের থানায় সুন্দরীলালের দাপট 
সত্যি বল্লে চুলকে যায় সভ্যতা। 
আমি বোবা নই, শব্দ দিয়ে ছবি আঁকি 
অথচ মিথ্যে ভয় পাই 
তিলে তিলে গড়ে ওঠা স্বপ্নরা আমার ধর্ষিত না হয়, 
তাই সস্তা পিড়িত করি না 
সত্যি দেশ লিখি, 
শুধু কথা হুশিয়ারি  দি না
দরকার হলে সুন্দরীলাল সময় বদলাতে পারি আমরা।

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...