Sunday, May 30, 2021

A story of Rainy Morning

মেঘ সকাল 
.. ঋষি 

কোন এক মেঘ সকাল 
মেঘ বালিকার কাব্য লেখে মনে, 
ভাবনার দেওয়ালের পাশে দাঁড়ানো কোঁকড়াচুলো ছেলেটা
এই শহরে জীবন খোঁজে, খোঁজে গাছ। 
খোঁজে কোন বন্য নদী,প্রাচীন কোন হৃদয়ের গল্প
মেঘ হোক, বৃষ্টি হোক 
শুধু ভিজে যাওয়া সময় একলা দাঁড়িয়ে গাছ হয়ে যাক। 
.
সব গল্প পুরোনো হয় না
হৃদয়ের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে সেই অলিভ মাখা মুখটা 
আজ শুধু স্থাপত্য সবুজের ঘরে,
এই শহরে ছোট, ছোট পায়রার খোঁপ 
একের পর এক গুয়ে, মুতে, রোগাক্রান্ত জমি, নিরুপায়। 
আমি শুধু ভাবতে পারি মনে 
সব গল্পের সীমানায় একটা ক্ল্যাসিক এন্ডিং দরকার 
তবে জীবন হাসে, 
তবে সময় ভালোবাসে। 
.
কোন এক মেঘ সকাল 
এই কংক্রিটের শহরে একলা দাঁড়ানো হৃদয়
বৃষ্টিতে ভিজে যায়, 
দূরে দাঁড়ানো যে গাছটা ঠিক আমার মতো দেখতে।
তার শেওলা পরা বুকে এক শতাব্দীর  শহর, নগর, বন্দর 
আর কিছু মুহুর্ত 
ছায়াছবি।
আমি ঠিক ভাবতে পারি মানে 
আমি ঠিক  লিখতে পারি মনে 
মেঘবালিকা তুমি বৃষ্টি হয়ে যাও আর আমি গাছ 
মেঘবালিকা তুমি হৃদয় গড়িয়ে নামো আর আমি সবুজ ঘাস
বাকিটুকু গল্প 
A story of Rainy morning। 



Wednesday, May 26, 2021

তাদের খবর



তাদের খবর 
... ঋষি 
যে ছেলেটা প্রথম তোমায় বলেছিল ভালোবাসি 
যে সন্ধ্যায় তুমি কাউকে জড়িয়ে বলেছিলে ভালোবাসি 
যে দুপুরে সেই একলা বৃষ্টিতে দাঁড়ানো ঝাউগাছ
যে রাত্রে সেই আকাশে একলা চাঁদ, 
তুমি কি তাদের খবর রাখো 
কেমন আছে তারা? 
.
সেই যে জোড়া বাগানের মুখে পাগলা নিতাই 
সেই যে কবিতার ঠোঁটে সেই পাগলা জগাই
সেই যে বই পাড়ায় অশোকদার তিন পুরুষের দোকান 
সেই যে মোক্ষদা আর বিনয়, বাদলের স্ট্যাচু 
তুমি কি তাদের খবর রাখো 
কেমন আছে তারা? 
.
সেই বার সেই  স্টেজের পিছনে সেই বৃদ্ধ চোখদুটো
সেই যে নন্দনে দেখা সেই বাঁশীওয়ালা 
সেই যে পাঁচমাথায় সেই একলা আলোর স্তম্ভ
সেই যে খেলার মাঠ আর স্কুলের টিফিনের গল্প
তুমি কি তাদের খবর রাখো 
কেমন আছে তারা? 
.
দেখো সময়ের বুকে আজ মৃত্যুর নোটিশ
দেখো সময়ের মুখে আজ মৃত্যুর কথা 
কিসের জন্য অপেক্ষা, সেই কি  একটা নোটিশ? 
নাকি দূঃখের? 
দেখো এই গ্রহটা বড় দুঃখী হয়ে যাচ্ছে 
ফোন কর, খবর নেও 
কেমন আছে তারা?  

পাগলী একটা



পাগলী একটা
..ঋষি 
একটা মেয়ে দুপুরের সাথে জেগে আছে
তার বুকের কাছে লেগে মল্লিকা সেনগুপ্ত,সুনীল কিংবা নজরুল 
ভ্যান গগের কোন ছবির ভিতর সে একলা তাকিয়ে
দূরে খুব দূরে
নক্ষত্রের খোঁজ, পাগলী একটা। 
.
আমি ইচ্ছে হলেই দেখতে পাই 
আমি ইচ্ছে হলেই শুনতে পাই 
খুব দুরের থেকে যেন একটা ট্রেন স্টেশনে এসে থামলো 
বাঁচা নির্ভর 
এলোমেলো ঝড়ো হাওয়া, পাগলী একটা। 
.
আমি ইচ্ছে হলে সেই মেয়েটাকে ছুঁতে পাই 
যার চোখে প্রতিবাদ আর যার ঠোঁট ছুঁয়ে অভিমান 
যার আঁচলে আঁকা হাজারো নিষিদ্ধ  প্রজাপতি 
ছায়া ছায়া রঙ,
সেই মেয়েটাকে আমি চিনি
যার বুকের গভীরে নিলজ্জ সমাজ আর নীল রঙের আকাশ
পাশাপাশি হাত ধরে হাঁটে
এক অদ্ভুত চেনা পথ, পাগলী একটা।
নেশা হয় 
আকাশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে, জনপদ পেড়িয়ে
অক্ষর বিন্যাস
বুনোফুল, ঝাউপাতা, মেহগনি গাছ, আমার কবিতার মেয়ে
পাগলী একটা।

রেসিপি

রেসিপি
... ঋষি 
অনবদ্য সময়ের অসুখ, কবির অসুখ 
সেই মেয়েটার সাথে একলা বাস কবির, মেঘবালিকা 
মেঘের কবিতা, 
আজ তুমি বৃষ্টি দিনে খিঁচুড়ি বানিয়েছো, সাথে পাঁপড়
তোমার গা ভর্তি ধুলো 
কবিতার পাতা ছড়ানো, ধুলো, ধুলো,ধুলো
.....  শব্দ। 
.
স্নান নেই কবির 
সারা গায়ে ব্যাথা,মাথা ভার, কবির গা গরম, 
সামনে দাঁড়িয়ে নার্স 
ঠিক তোমার মতো দেখতে, 
বুকের ব্যাথাটা বাড়ছে, সাথে ডিসপ্রিন আর ক্যালপোল
আর ভাবছে বেঁচে থাকলে মেঘেদের বইটা কিনতে হবে।
.
 কবির এখন মুখ তেতো 
তবুও কবির জিভের নোনতা স্বাদ, 
সামনে দাঁড়িয়ে সেই নার্স আর নরম, গরম খিচুড়ি । 
দারুন সময় এখন 
কবি আর সেই মেয়েটা মেঘবালিকা 
আর কেউ নেই 
কবি এবার মুখ ধুয়ে নেবেন  আকাশের জ্যোৎস্নায় 
তারপর লিখতে বসবেন কলম আর মনখারাপ, 
একটা রেসিপি
যেখানে মিলেমিশে মেঘবালিকা,চলন্তিকা
আর একটা অনবদ্য কবিতা তুমি । 


শূন্য থেকে শুরু

.

শূন্য থেকে শুরু 
.... ঋষি 
ইচ্ছে করে তোমার কাছে পৌঁছে যাই
ভালোবাসার উচ্চারন, 
তারপর, তারপর
    তারপর............. পাখিদের ঘর। 
শূন্য  থেকে শুরু করি একলা একটা ভাষা
মানে? 
মেয়েটি জানলা খুলে দাঁড়িয়ে
জানলা দিয়ে আদিম হাওয়া
তারপর........... 
মেয়েটাকে ভালোবাসি সে জানলেই অহংকারী হয়ে ওঠে
হয়তো ঈর্ষা প্রবল, 
    এসব প্রাগৈতিহাসিক প্রবচন 
আমি কবিতা বুঝি, বুঝি মেয়েটাকে 
জল্লাদ এসে দাঁড়ায়, উপড়ে নেয় হৃদপিন্ড 
..…...................ভালোবাসা জল্লাদ তাই। 
ইচ্ছে করে তোমার কাছে পৌঁছে যাই
মেয়েটি কবির চোখের দিকে সোজাসুজি তাকায় 
        কাজল লাগানো ডাগর চোখ, প্রতিবাদী রঙ
.…..............................ভালোবাসা চিরন্তন 
কেঁপে ওঠা ঠোঁট, আনমনে তাকিয়ে ঈশ্বর 
মেয়েরা ভালোবাসলে ছোট হয়ে যায়। 
সত্যি বলতে কি 
মেয়েটা জানলা খুলে দাঁড়িয়ে, সিলিংএর দিকে চোখ 
ক্যাচ করে জানলা বন্ধ হয়, 
মেয়েটা নাভিজল ছুঁয়ে, সব আগুনে পুড়িয়ে 
              আমার দিকে তাকায় 
               তুমি জানো আমার কষ্ট হয়। 





ভালোবাসা গাছ

ভালোবাসা গাছ 
.. ঋষি 
সময়ের কোন বর্তমান নেই 
একটা গাছ একলা দাঁড়িয়ে স্বপ্ন বুনে যায়, 
ছেলেটার কোন ভবিষ্যত নেই 
একটা জীবন ফাঁকা ফুটপাতে, পুরনো সেই ভাত কুঁড়িয়ে 
একলা হেঁটে যায়।
শোনা কথা 
মেয়েটা ভালো নেই 
সব সিঁদুর গাঁথা, আকাশ পানে লুকোনো সেই রুপকথা,
মেয়েটা নিয়ন করে সিন্দুকে ঢোকে
পুরনো ভিজে চিঠি আর সময়ে মাথা খোঁটে,
দিকনির্ভর 
মেয়েটা নিয়ন করে বেঁচে ওঠে। 
সময়ের কোন অতীত নেই 
আছে স্মৃতি, 
মেয়েটার হাতে অনেক পুরনো স্বপ্নে লেখা চিঠি 
যাতে লেখা দেখা হবে। 
কে লিখেছে?  কেন লিখেছে?  কাকে লিখেছে? 
এসব পুরনো কথন 
একটা গাছ একলা দাঁড়িয়ে আকাশে মাথা রেখে 
সত্যি কথন। 
সময়ের কোন ভবিষ্যত নেই 
প্রেম তাই মৃত্যুর থেকেও নিঁখুত 
ছেলেটা ভাত খেলো কিনা?  মেয়েটা চিঠি লিখলো কিনা? 
এসব জানতে চাই না
শুধু জানতে চাই এটা কি গাছের কবিতা
তবে কি ভালোবাসা গাছ কিনা? 


ভাসছে, শুধু ভাসছে

ভাসছে শুধু ভাসছে
...ঋষি 
মানুষের চোখের জল আর সমুদ্রের জলের তফাৎ কি? 
এটা সুন্দরবন, এটা মৌসুমী, 
এটা কুলতলি,এটা দীঘা 
ভাসছে শুধু ভাসছে 
মানুষ, কুকুর, দোকান, বাজার, রাস্তা, জমি
মানুষের ভিটেমাটি শুধু ভাসছে। 
.
সব হারিয়ে ঘর ছাড়া আজ হাজার হাজার মানুষ 
আয়লা, বুলবুলু, যশ প্রতিবছর, বারংবার 
শুধু ভেসে যাওয়া
ভেসে চলা মানুষের চোখের জল। 
কোনটা রাস্তা, কোনটা জমি, কোনটা উপকুল,কোনটা ব্রীজ
কোনটা লকগেট, কোনটা পশু, কোনটা শুধুই জল। 
.
ভাসছে শুধু ভাসছে 
মানুষের চোখের জল 
গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর সব শুধু ভাসছে, 
এন ডি এফ, জাতীয় সড়ক, সাগর থেকে গোসাবা 
আজ শুধুই ভাসছে। 
মানুষের ভিটেবাটি, মানুষের চাষের জমি, মানুষের সব ভরসা
আজ শুধুই ভাসছে, 
আজ তো প্রথমবার নয়, 
প্রতিবছর এমন প্লাবন বারংবার হয়। 
.
বিদ্যাধরী, কুলতলি, মাতলা, রায়মঙ্গল 
কোনটা নদী, কোনটা সমুদ্র, কোনটা মানুষ, কোনটা পশু 
আজ শুধু ভাসছে। 
এটা কোন দেশ, এটা কোন রাজ্য, এটা কোন অঞ্চল
মানুষ এত অসহায় 
মানুষ এত দরিদ্র 
আমরা করছি কি? 
বারবার প্রশ্ন, বারংবার প্রশ্ন 
মানুষের চোখের জল আর সমুদ্রের জলের তফাৎ কি?

কিডন্যাপিং



কিডন্যাপিং
.. ঋষি 
আজকাল আমি ঘুমোতে বড় ভয় পাই 
কারণ আমি ঘুমিয়ে পড়লে যদি কেউ চুরি করে আমার মুখ 
কিংবা মুখোশ,
তোমার কাছে শোনা ম্যাকাও একটা পাখি 
কথা বলতে পারে 
অথচ মন বড় অদ্ভুত, সে যে ঘুমিয়ে গেলেও কথা বলে। 
.
আমার ঘুমের ভিতর হিমালয় তলায় স্বপ্ন
গোদাবরী সমান জল 
তুমি বলেছিলে টেমস একটা ভিন মহাদেশের অন্য নদী 
কিন্তু আমার ভয় 
ঘুমের ভিতর স্বপ্ন চুরি হয় 
তোমার দেশের বাড়ির হেঁসেল, তার সামনে বসা সময়
জানি আমি নই, জানি আমি নই। 
.
সংবিধান বদলে দেবো ঘুমের ও প্রেমের 
সমস্ত দেশ, বিজ্ঞান ভেঙে নোলক দেওয়া সেই গাঁয়ের মেয়ে, 
ঘুম একটা মেয়ের নাম 
নতুন আবিষ্কারে আমি ঘুমের মানে বদলে দেবো। 
মৃত্যুর আগে ও পরে
সত্যি চোখ বন্ধ হবার আগে 
আমার তাপমাত্রা, আমার ব্যার্থতা, আমার অবসাদ 
প্রবেশ নিষেধ দরজা খুলে দাঁড়িয়ে
তোমার শহরে লকডাউন 
আমার মুখে মাস্ক, স্যানেটাইজ শরীর, কোন সংক্রমন নয় 
না কোন দুঃখ নয় 
ঘুমের ভিতর কিডন্যাপিং, আমার পরিচয়। 

Tuesday, May 25, 2021

ঈশ্বর আর ভাস্কর্য



ঈশ্বর এবং ভাস্কর্য 
.. ঋষি 
দরিদ্র ভাস্করের হাতে অনিবার্য কৃপনতা
কবি লিখলেন ঈশ্বর তুমি মানুষের দরজা খুলে দাঁড়াও 
আরো একা হও, 
আরো একা এই চোখ, আরো একা এই বুক 
আর মারাত্নক মেঘ। 
.
সারা পৃথিবী জুড়ে ধেয়ে আসছে মারাত্নক জল 
জল যখন আকাশ ছুঁয়ে আসে 
তখন মহাপ্লাবন, ভেসে যাওয়া বুকে আজ হিংস্র আলাপন। 
আকাশের চাঁদ আরো কাছে আসে, ঢেকে যাওয়া মেঘ 
স্টিলের বাটি হাতে মানুষ গিয়ে দাঁড়ায় রিলিফের লাইনে, 
সময় এখানে ভিখারী করেছে
করেছে মানুষকে ব্রাত্য। 
.
কবি আবার লেখেন 
তুমি আকাশের কথা লেখো, লেখো অহংকারী শব্দে তোমার বেঁচে থাকা
মানুষের হেরে যাওয়াগুলো এই শহরের বুকে ঈশ্বর। 
আমি ঈশ্বর  দেখিনি 
শুধু বুকের স্থাপত্যে এক ঘেয়ে চলতে থাকা হাতুড়ি, ছেনি
মাথার ভিতর ক্রমাগত একটা ঘর অন্ধকার।
কবি লিখলেন 
মানুষ তুমি প্রকৃতির কাছে অসহায় 
মানুষের তুমি ঈশ্বরের কাছে অসহায়।
ঈশ্বর  তোমাকে ভিখারী করেছে
দাঁড় করিয়েছে তুমুল জলপ্লাবনের সামনে
অথচ আমি খুব সাধারণ, 
ঈশ্বর  দেখিনি 
দেখেছি মানুষ আর দেখেছি সময়ের ঈশ্বরের রুপ। 


পাহাড়িয়া নুপুর

পাহাড়িয়া নুপুর 
... ঋষি 
বিশ্বাস শব্দটার ভিতর একটা ছুরি ঢুকে গেলে 
হঠাৎ বৃষ্টি নামে কোন পাহাড়ি নুপুরে, 
নিঃশ্বাস শব্দটার ভিতর যদি কোন একলা বিকেল বাসা বাঁধে
পাখিগুলো বাড়ি ফিরে আসে 
চলন্তিকা তুমি বারংবার প্রশ্ন রাখো 
যাতনা একা বাড়ে না কমে? 
.
যে ছবির ভিতর আমি নেই 
যে ছবির ভিতর আমি শুধু বারোয়ারী খেলাঘর, 
বিষের ব্যাথা, 
যে পথে মানুষ বাঁচে 
সেখানে মানুষ শব্দটায় মানুষই একা। 
.
চলন্তিকা তুমি লিখে ফেলো কুকুর, বেড়াল  সভ্য মানুষের গায়ে
তোমার মতো আমিও জানি 
মানুষ স্বার্থপর, মানুষকে ভুলে যায়, 
অজুহাত এটা নয় আমি তুমি ব্রাত্য
প্রশ্ন এটা আমরা মানুষের জাত তো ?
বিশ্বাস সেটা নয় যেটা ভেঙে ফেলা যায় 
বিশ্বাস সেটা যাকে মনে রাখা যায় 
জানি খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে উড়ে যায় 
জানি একলা বিকেলে পাখির বাসায় আকাশ থেকে যায় 
তারপর নিঃশ্বাস 
না কোন শব্দ নয় 
একটা বিশ্বাস, আমি সেখানে পাহাড়িয়া ঘুম । 

ধুকপুক

ধুকপুক 
..ঋষি 
যখন আর কিছু থাকবে না
তখনো ভালোবাসা থাকবে আর থাকবে ভালোবাসার কবিতা,
যখন পৃথিবীতে কেউ থাকবে না 
থাকবে না বুকের যন্ত্রনায় ফাঁকা ঘর দোষ 
তখন তুমি থাকবে 
আর থাকবে বুকের পাশে একটা আফসোস। 
.
যখন কোন শব্দ থাকবে না
পৃথিবী থেমে যাবে পিন ড্রপ সাইলেন্ট 
তখনো কবিতা থাকবে, আর থাকবে নিশব্দ এগ্রিমেন্ট
একার ঘর 
নিজের বাসর 
আর তুমি আমার সেন্টিমেন্ট। 
.
সবকিছু ফাঁকা হয়ে যায় 
সব পাখি বাড়ি ফিরে আসে 
দেওয়ালে হেলান দেওয়া চেতনার ঘর 
আর তুমি শুধু বেঁচে থাকা, একা নির্ভর। 
জানি যখন কিছু থাকবে না 
তখনো ভালোবাসা থাকবে আর থাকবে জমানো কিছু সময় 
জানি যখন তুমি আর ডাকবে না
তখনো আমার এই কবিতা থাকবে আর থাকবে কবিতায় আমার তুমি। 
ভালোবাসা বেওয়ারিশ হলে 
নিজেই মরে যায় 
আর যদি তোমার মতো হয় 
তবে বেঁচে থাকবে 
আমার একলা বুকে লুকোনো ধুকপুকে।

তুমি আর একুশ শতক



তুমি আর একুশ শতক 
..ঋষি 
তোমাকে ভালোবাসি মানে রক্ত, মাংস, জমি নয়
তোমাকে ভালোবাসি মানে জীবন মরুভূমি নয় 
সবটুকু চাই,
আমি চাই আমার সন্তান হোক নারী 
আমি চাই একুশ শতকের বুকে লেখা থাকুক নথি 
নারী সম্পত্তি নয় 
হোক অধিকারের নাম। 
.
তোমাকে কাছে চাই মানে আমার বুকে জন্ম নয় 
তোমাকে ছুঁয়ে থাকা মানে তোমার বুকের পিরামিড নয়
সবটুকু চাই, 
আমি চাই আমার পথের নাম হোক নারী 
আমি চাই একুশ শতকের বুকে ভালোবাসা হোক আকাশের বাড়ি
আমি হই ঘর 
শুধু তোমার জন্য আমার বাঁচার স্বয়ংবর। 
.
তোমার সবটুকু চাই মানে বর্তমান, অতীত আর ভবিষ্যৎ 
তোমার সাথে থাকা মানে এ জীবন যেন বাউলের ঘর
আমি একলা প্রেমিক 
কবি এবং নাগরিক।
আমি চাই তোমার কথা লেখা হোক একুশ শতকের জরায়ুতে নয় 
শুধু মায়ের মুখে, 
আমি চাই হৃদয়ে রোজ বৃষ্টি হোক 
ভেঙে পড়ুক মানুষের ভাবনায় তুমি সুন্দরী, তোমাকে চাই,
না, না, না
আমি চাই তুমি আরো গভীর হও
আমি চাই তুমি হও অহংকারী শুধু আমার প্রেমে,
শক্তি, সুনীল, কিটস নয় 
তোমার কবিতা লিখুক লোকে
আমি লিখি চলন্তিকা তুমি ভালো থাকো 
একুশ শতকের পাথুরে বুকে 

উনচল্লিশ আর আমার শহর



উনচল্লিশ আর আমার শহর 
...ঋষি 

একটা ঈশ্বরের চিনহ আঁকা আছে তোমার বিছানা, বালিশে
পাশে সে আলমারী আর আয়না 
কে যেন প্রশ্ন করছে, কে বেশি সুন্দর 
উনচল্লিশ না সময়? 
আমি শুনছি তোমার বুকের বারুদে ঈশ্বরের প্রশ্নচিনহ
তুমি ছাড়া আমি ভাসছি আকাশ গঙ্গায়। 
.
চলন্তিকা জানো,
 তুমি শব্দটার ভেতর আমি ঘুমিয়ে আজ বহুযুগ
যে দিন ভিনদেশ থেকে এদেশে ঘোড়া আমদানী হলো 
যেদিন ফ্রয়েড সাহেব লিখলেন নারীদের হীনমন্যতার কথা
সেদিন বুঝেছি আমি 
তুমি আদিম  সভ্যতার নারী 
তোমার গর্ভে আমার জন্ম বারংবার। 
.
ভালোবাসি আমি 
আসলে ভালোবাসি শব্দ চোখ ভেজানো নাটকের ড্রপসিন 
আর সিনের ওপারে  আনসিন 
আর ঠিক হচ্ছে না, তোমার মুখের অভ্যেসে অক্সফোর্ড ডিক্সানারি লেখা।
সময় বলে সমাজ একটা ডিকসানারী 
আমি ভাবি  সমাজ একটা ঝাঁচকচকে তরবারী 
উল্টোদিকে আমি 
আমার হৃদয় উপড়ে বারংবার প্রশ্ন করা হোক 
কে বেশি সুন্দরী ?
উনচল্লিশ আর আমার, হ্যাঁ আমার শহর। 

যাকে তুমি ভালোবাসি বলো

যাকে তুমি ভালোবাসি বলো
... ঋষি 

যাকে তুমি ভালোবাসি বলো
যার সাথে সহবাস করো 
তাকে তুমি মিথ্যা বলো না, মিথ্যা মহীরুহ এক আয়না 
যেখানে তুমি, আমি অহংকারী 
শুধু সময়ের বায়না। 
.
যাকে তুমি একা করে ভাব নিজে একা হবে 
যাকে জড়িয়ে ধরে ভাবো, আরো দুরে রবে
তাকে তুমি সত্যি বলো না
মিথ্যা সংসার করো। 
.
আকাশের গায়ে বাজে নুপুর 
নুপুরের ভিতর একটা গোটা জীবন বসে 
রিনিঝিনি রিনিঝিনি, 
যাকে তুমি দূরে রেখে বলো ভিজে পায়ের ছাপ 
চারিদিক সমুদ্র 
চুপ, 
তোমার বিছানা বালিশে আমি লেগে কোথাও? 
আমি শুনতে পাই 
যাকে তুমি ভালোবাসি বলো তাকে মিথ্যে বলো 
ভালোবাসা হলো কাঁটার গোলাপ 
একলা পথে চলো। 

একটা চিঠি, জীবনকে

প্রিয় জীবন,
.
ঠিক কতটা কাছে গেলে, কাছে যাওয়া হয়
ঠিক কতটা দূরে থাকলে, দূরে থাকা হয় 
জানি না। 
জানি না কেন?
হঠাৎ  এক পশলা বৃষ্টি এই শহরটাকে ভেজায়? 
হঠাৎ কেন এক চিলতে হাওয়া তোমায় ছুঁয়ে যায়? 
.
 ঠিক কতটা দূরে থাকলে, দূরে থাকা হয় 
ঠিক কতটা কাছে গেলে তোমাকে কাছে মনে হয় 
জানি না। 
জানি না কেন? 
হঠাৎ তুমি এসে দাঁড়াও আমার একলা দিনে কবিতার মতো 
হঠাৎ কাছে দূরে তুমি ছুঁয়ে যাও কোন রাত জাগা পাখি যেন। 
.
মনখারাপ,
হঠাৎ মনখারাপ , 
এক চিলতে মেঘ তোমার বাড়ির ছাদে পায়রা হয়ে ওড়ে।
জানি না কেন? 
এই উতল হাওয়া তোমার শাড়ীর আঁচলে আমায় ছুঁয়ে ঘোরে।
সবটাই যেন কোন প্রতিবাদ 
যেন কোন রিভিউলুসন এই ঘুমন্ত শহরের  বুকে, 
যেন কোন নারী 
যেন সুনীল, শক্তি, জীবনানন্দ কিংবা
মানুষের সুখে । 
.
আচমকা একটা দমকা হাওয়া তোমায় ছুঁয়ে যায় 
আচমকা একটা আনমনা বিকেল, শহর থেমে যায় 
তারপর হঠাৎ  বৃষ্টি 
ঝড়ো হাওয়া,।
জানি না কেন? 
বুঝতে পারি না 
কোনটা দূরে, কোনটা কাছে। 
.
ইতি 
তোমার  ঋষি 




Monday, May 17, 2021

সুবিনয়



সুবিনয় 
...ঋষি 
হঠাৎ হঠাৎ তুমি অহংকারী হয়ে ওঠো 
বুঝেও বুঝে ফেলো এতকিছু, যা কিছু সুবিনয়, 
হঠাৎ আমি পথ চলতি ভিড়ে নিজের ছেঁড়া পকেটে খুঁজে পাই 
অকারণ 
নিজেকে কেমন অপ্রস্থুত লাগে 
মনে হয় আমার শুধুই কবিতায় আমিই দাঁড়িয়ে আছি সারাক্ষন। 
.
সময় সময় তুমি অভিমানী হয়ে ওঠো
আমি দেখি সময়ের দক্ষিনে মেঘ, আমি হাসির একমাত্র কারণ, 
সবাই হাততালি দেয়, সময় কামড়াতে আসে
এতবড়ো শহরে আমার সারাক্ষন তোমার শাড়ীর আঁচলে আকাশ 
কিন্তু বন্দী 
বন্দী সময় থুথু দেয় গায়ে। 
.
হঠাৎ হঠাৎ তুমি ধারালো ছুরি 
চিরে ফেলো বুকের মাঝখান দিয়ে গোটা একটা শহর, 
সারা শহর জুড়ে তখন চিৎকার 
আমাদের দাবী মানতে হবে, বলতে হবে ইতিহাস মিথ্যা 
বলতে হবে ভালোবাসা কোন কারণ নয় 
শুধুই উত্তর। 
তুমি সব বোঝ প্রতিবার, তুমি সব জানো প্রতিবার 
তবু তুমি পিছোতে থাকো প্রতিদিন সময়ের প্রেমে 
আর আমি এগিয়ে যায় তোমার দিকে 
আরো দু এক পা 
কারণ আমি বুঝি তুমি সবসময় আমারি ছিলে,
আর তোমার সুবিনয় আসল একটা মিছরির ছুরি।

Thursday, May 13, 2021

বোধ

বোধ 
..ঋষি 
একটা বিশাল মাঠের  মতো একটা জীবন চেয়েছিলাম
 উজ্জ্বল। সতেজ। 
জীবন ছুটে বেড়াতো একটা  মাঠে। 
সারা মাঠ জুড়ে সকালের শিশির,সন্ধ্যের পর মৃদুমন্দ হাওয়া 
কিন্তু দুপুর
কিন্তু খাঁ খাঁ করা দুপুরের রৌদ্র, মাথা পুড়ে যায়
জীবনে সবুজ ছাড়াও শুষ্কতাও থাকে। 
.
সারাটাদিন কাজের ফাঁকে রাখি তোমাকে
দিনান্তে জিজ্ঞেস করি, এবার অবসর?
তুমি হাসো 
আমার মাথার চুলে বিলি কেটে বলো, তুই তো অবসর আমার।
আমি চুপ করে যাই, কারণ বুঝি 
অবসর ছাড়া বাকি সময়ে তুমি সব্জী কাটো। 
.
দুম করে একদিন  মরে যেতে পারি ভেবে
তোমাকে একটা চুমু খেতে চাই
তোমার চুলে হাত ডুবিয়ে বসে থাকতে চাই না মরা অবধি। 
তুমি সেদিন আমার গন্ধটা তোমার চারপাশে পেয়ে আৎকে উঠলে
জানি আমার কামড়ে তোমার বুকে জ্বলছিল
তাও তুমি শান্ত ছিলে
ভাবছিলে তোমার ছাদে নতুন কুঁড়িতে চন্দ্রমল্লিকার কথা, 
আমার একটা প্রশ্ন ছিল 
অন্তর বুকে থাকে? নাকি ইচ্ছেয়?
 তোমাকে পেয়েও খালি মনে হয়, অন্তর মানে হৃদয় ছাড়াও দূরত্ব হতে পারে।

ভালোবাসার গান



ভালোবাসার গান 
...ঋষি 
মুখ ধুয়ে নেবে মায়াবী বেসিনে
মানুষেরা এমনই অদ্ভুত এক ঈশ্বর, 
প্রকাশ্যে চোখ আর আবডালে হাত মারে তারা
মেরে ফেলে নিজের গভীরে শুয়ে থাকা নিজের পরিচয়, 
নিজের বুকে হাত রাখো চলন্তিকা
কাস্তে, হাতুড়ি, তারা
নাকি শুধু আমি? 
.
হঠাৎ একলা লিফটে থর থর করে কেঁপে ওঠা শরীরটা
আকাশ পথে  খসে পড়ে চুমু
দুধের ওপর সর
 তার পাশে যত্নে লুকিয়ে থাকা তোমার মুখে লবঙ্গ, 
মিষ্টি,
তুমি আকাশের দিকে বুক রেখে শুয়ে পড়
কি দেখছো আকাশে, 
অন্ধকার না আমাকে? 
.
আমরা যারা  ক্লিওপেট্রা কাঁধে নিয়ে ছুটে চলেছি
কফিন থেকে কফিনে
তাদের কাছে যুদ্ধ কোন প্রশ্ন নয়, শুধু উত্তর মাটি।
কাঁধের ওপর পা ঝুলিয়ে বসা আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে
তারপর
নিজের কফিন নিজের কাঁধে,
হে মহামান্য যীশু তোমার মৃত্যুতে কোন শোক নেই 
শুধু আছে পরিচয় 
কারন ভালোবাসার মৃত্যু একমাত্র ভালোবাসার মাটিতে।

কি ভাবছো চলন্তিকা? 
বাক্স,প্যাটরা,বোধ
কিংবা একের পর এক চোখের পাতায় সরতে থাকা ছবিগুলো 
চেয়ে দেখো চলন্তিকা কফিনেরা গান গাইছে
সে গান ভালোবাসার 
বোধহয় মৃত্যুর পরও ভালোবাসা একইরকম, ভীষন সরল। 

কুত্তার মতো ভালোবাসতে চাই



কুত্তার মতো ভালোবাসতে চাই 
.. ঋষি 
ভালোবাসতে গেলেই আমার তোমাকে দরকার পরে
ঘুমোতে গেলে আমার তোমাকে দরকার পরে 
দরকার শব্দটা একটা কারণ, একটা মেঘ, 
হঠাৎ আনছান করা দুপুরে শেষ চিঠিতে অসময়ের আকাশ 
অন্ধকার ফর্সা মুখে অভিমানের ভাঁজ
তারপর তুমুল বৃষ্টি। 
.
অনেক কাঠ-খড়-কলেজ-লাইব্রেরি পুড়িয়ে আজ শেষের লক্ষে
বাড়ি পৌঁছোলাম। 
বাড়ি মানে কী? 
যেখানে মাথার উপর চাল , যেখানে বৃষ্টিতে ভিজতে লাগে না,
 বিষ-পিঁপড়ের কামড় খেয়ে, মুখের দাবানলে জঙ্গল পুড়ে যায় 
আমি চিনি হতে চাই 
আমি মিষ্টি হতে চাই। 
.
বাকশো-পেটরা মাথায়-বগলে নিয়ে গড়াতে গড়াতে নারী-পুরুষ-শিশুরা এগিয়ে চলেছে
তাদের সকলের হাতে  অসময়ের নিশানা, 
 যেন উদ্বাস্তুরা  শরণার্থী শিবিরের দিকে ছুটছে।
বড় রাস্তা থেকে হাঁটতে হাঁটতে দেখি তুমি দাঁড়িয়ে আছো বারান্দায়
তোমার উদাসী চোখের কবিতায় ইতি লাবণ্য,
শেষ বিকেলের অদ্ভুত আলোয় তোমার মুখটা আগুনের মতো ঝলমল করছে।
.
ভালোবাসতে গেলে আমার তোমায় দরকার পরে
আমিই তোমাকে কুত্তার মতো ভালোবাসতে চাই,
উদোম ড্রেনের জলে দুপুর গড়িয়ে যায়
ফুটন্ত চায়ের কাপে  শুনি চামচের হাসি,দুধের ওপর সর
সাঁওতালপল্লিতে আগুন লাগে,
তার ছাই দিয়ে দাঁত মেজে উঠে দাঁড়াই আমি 
ঘুমের আগে আর ঘুমের পরে প্রতিমুহূর্তে আজকাল তোমাকে দরকার পরে
তোমাকে সবটুকু চেটেপুটে কুত্তার মতো ভালোবাসতে চাই। 

আপোয়েনমেন্ট



                       ভূমিকা
.
ভালোবাসা নেই কোনোখানে
ম্যাথুস বলে সেই ক্রিশ্চান মেয়েটা পর্তুগীজ নাবিকের প্রেমে
ঘুম ভেঙে শুনি
চার্চের ভিতর আমার মতো কেউ প্লাস সংকেতে জুড়ে,
সমাজের দেওয়ালে তখন চাপা আক্রোশ
ভুমিকায়
প্রেম নাকি মানুষের শরীরেই উত্তেজক অনিবার্যতা।
.
জানোয়ার
.
নাম নিয়ে কাড়াকাড়ি, পোশাক নিয়ে মারামারি
আমি তোমায় জানোয়ারের মতো ভালোবাসতে চাই ,
এসব জানি বলে লাভ নেই
বরং সোমত্ত শর্মিলাকে বলি, আমি তার বৌদির প্রেমিক
আত্মসমর্পণ করতে এসেছি
আর বলতে এসেছি আগামীর পৃথিবীতে আমরা কুত্তার জন্ম দেব।
.
বিড়াল
.
একটা বিড়াল ঢুকেছে কবিতার ঘরে
ম্যাও,
উপরের দিকে তাকাও,থুথু নিজের গায়ে
মাথা ঠান্ডা, শরীর বোধ হয় নর্থপোলে বন্দগী রাখা।
তুমি কী খবর রাখো, শর্মিলা ?
তোমার বৌদি আমাকে বলেছে সে নাকি বনলতা সেন নয়
আর আমি শত জন্মে বাংলার মুখ হতে পারবো না।
.
আপোয়েনমেন্ট
.
শর্মিলা তোমাকে জানানো হয় নি
তোমার বৌদির প্রেমিক আমি, আগন্তুক সময়ের দর্শক,
ভাবছি ভালোবাসার সকল নথি জমা রাখবো তোমার কাছে
তোমাকে দিয়ে বলাবো এই সময়কে,
ঐভাবে তাকিয়ো না শর্মিলা
সময়ের আপোয়েনমেন্টে বরং লিখে রাখো ভিক্টরি।

Wednesday, May 12, 2021

আর্যপুরুষকে আবিষ্কার

আর্যপুরুষকে আবিষ্কার 
..ঋষি 
আমি রৌদ্র খুঁজি নি শুধু 
নিজের বুকের পাষানে লুকিয়ে রেখেছি লজ্জা
আর্যপুরুষ আমি 
যার পরিকল্পনা ছুঁয়ে আগামীর পৃথিবীতে একটা
রৌদ্র ঝকঝকে দিন। 
তুমি ভালো করে জানো চলন্তিকা পেন্ডুলামে আমি বন্দী
তুমি ভালো করে জানো চলন্তিকা আকাশের বৃষ্টির নোনতা স্বাদ, 
আমার কল্পনায় তুমি মিশরীয় সভ্যতার নারী 
তোমার বুকের পিরামিডে রাখা
আমার সময়ের ছাপ। 
আমি, তুমি কোন কবিতা নয়, শুধুই ভালোবাসা
কবি তো শুধু সময়ের, 
আমার বুকের মলাটে কয়েক মেট্রিকটন সভ্যতার শীতলতা
সব মৃতদেহ 
কবি লিখছেন আর্যপুরুষ তোমার শান্তি কোথায়। 
প্রতিটা আঠাশদিনে তুমি নতুন করে আবিষ্কার করবে আমায় 
আমার মৃত্যুদিন আর তোমার শুভেচ্ছার বৃষ্টি আমার বুকে
বেঁচে ফেরা এক কলসী অঙ্গুরোদগম 
নতুন গাছ 
ভালোবাসা ফুরিয়ে গেলে, গাছ মরে যায় বুঝি? 
মিশরীয় বালুতটে আজ তোমার একলা পায়ের ছাপ 
আমার বুকে সভ্যতা লুকিয়ে নীলনদ হয়ে।
আমি আর্য হতে পারি 
তোমার রক্তে মিশে যেতে পারে মরুভুমির শুষ্কতা 
তবুও আমি সভ্যতার নাগরিক, আলোর মাসিহা।


অসময়ের বৃষ্টি

অসময়ের বৃষ্টি 
... ঋষি 
বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি 
মৃত মানুষের মতো আমিও অপেক্ষায় বক্সার, উত্তরপ্রদেশে
লাশগুলো এখন কি ভাসছে পবিত্র গঙ্গায়, 
নাকি রাজভবনের সামনে বিদ্যুতস্পর্শি সেই মানুষটা 
এখনও কি সাক্ষী সেজে আছে 
আমরা কেউ ভালো নেই। 
.
আমরা কেউ ভালো নেই 
আমরা কেউ ভালো থাকতে পারছি না 
বুকের ভিতর অস্থির অসময়ের বৃষ্টি টিনের ছাদে বাজছে, 
একটার পর একটা মৃতদেহ 
হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষের কান্না
কানের এয়ারড্রামে চিৎকার " আমরা কেউ ভালো নেই। 
.
ভালো নেই গুজরাট, কর্নাটক, কেরল, বিহার, রাজস্থান 
ভালো নেই মধ্যমগ্রাম, বসিরহাট, হানা পাড়া, ময়দান, ভিক্টোরিয়া 
রাস্তা ঘাটে ভীত সন্ত্রস্ত ক্ষুদার্ত  মানুষের মুখ
খবরের পাতায় প্রতিদিন বাড়তে থাকা মৃত লাশ 
আর আমরা অপেক্ষায় 
আমরা কেউ ভালো নেই। 
আত্মীয় পরিজনের কান্না, ফুটপাথে পড়ে থাকা মৃত বৃদ্ধের লাশ
মন্দারমনির সমুদ্র সৈকতে সেই করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধা 
জেলে পাড়ায় একটা তেইশ বছরের সদ্য যুবক মৃতদেহ 
অক্সিজেন সংকট 
কর্ম সংকট 
খাদ্য সংকট 
আমি শুনতে পারছি না আর মানুষের কান্না 
আমি এখন বুঝতে পারছি বাইরে এই অসময়ের বৃষ্টি 
সত্যি কি প্রাকৃতিক 
নাকি মানুষের চোখের জল 
শুধুই শোক, নাকি উপলব্ধি আমরা সকলেই এখন 
আশ্রয়হীন, অসহায় 
আমরা সকলেই ভিজছি অসময়ের বৃষ্টিতে। 




Tuesday, May 11, 2021

বাজিগর




বাজিগর 
..ঋষি 
আজকাল সবাই আমাকে জিতিয়ে দিচ্ছে 
আজকাল সবাই আমাকে এগিয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর দিকে, 
আমি জীবনের শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি জিতে যাওয়ার 
 আমি বিশ্বাস করি 
হারকে জিতনেবালেকো বাজিগর কেহতে হ্যা। 
.
তুই এগিয়ে যাবি 
আমি রাস্তার ধারে অপেক্ষায় তোর সুদিনের প্রার্থনায়, 
তুই ফেলে যাবি 
আমি মুহুর্তগুনে কুঁড়িয়ে রাখবো স্নেহে, 
তুই বলবি এইবার আমার ভয় করছে, আর না 
আমি তোর হাত ছেড়ে একাই এগিয়ে যাবো মৃত্যুর দিকে। 
.
বাঞ্চনীয় 
কারবারি হৃদয়ের কল্পনায় যে শহরে মানুষ শুধু খোলশ দেখে, 
আমি সেখানে কাঁকড়ার জীবন 
শুধু খুঁড়তে থাকি হৃদয়, 
আমার বিশ্বাসের কাছে আমি জিতে ফিরি রোজ 
কিন্তু প্রতিদিন চলন্তিকা তোর কাছে মরে যাই। 
এই সময় আমার নয় জানি 
এই বেঁচে থাকা আমার নয় জানি 
আমি কলমের নিবে হৃদয়ের রক্তে লিখতে থাকি প্রেম 
আমার বুকের ক্যাবিনেটে উনচল্লিশটা আলমারীর প্রতিটা 
আজ শুধু মৃত্যুপুরী 
খাঁখাঁ করে। 
তবুও আমি বিশ্বাস রাখি সময়ে
তবুও আমি বিশ্বাস করি তোমায় চলন্তিকা
কারণ আমি জানি 
হারকে জিতনে বালেকো বাজিগর কহতে হ্যা। 



Saturday, May 8, 2021

আসবে তো সেদিন



আসবে তো সেদিন 
.. ঋষি 
সত্যি হোলো  এটা
মানুষের শোক আর জন্মের তারিখ জন্মের পর মনে থাকে না, 
চলন্তিকা তোকে জড়িয়ে চুমু খাওয়া হয় নি বহুদিন 
আজকাল কেন জানি ভালোবাসাকে নাবিক মনে হয় 
তুই সমুদ্র 
আমি ছোট পাল তোলা জাহাজ 
আর নাবিক শুধু বালিঘড়ির দিকে তাকিয়ে। 
.
এমন হয় 
সামনে দিয়ে এই শহরে মৃত্যুমিছিল 
হাজারো জেল যেন সারা শহরকে আসামী করেছে, 
আজকাল চলন্তিকা আমার বড্ড বেশি ভালোবাসা পায় 
আর বেশি ভালোবাসা পোশাকী পোশাকে হয় না
পাতার পোশাকে হয়। 
.
এখন  আমার শহরজুড়ে ছোঁয়াছে রোগ  ঘুরে বেড়াচ্ছেন
তাই মৃত্যুমিছিল, 
আমি তাকিয়ে আছি মিছিলের দিকে 
না কল্পনাতেও তোকে ছাড়া কোন মিছিলে হাঁটি নি। 
আজকাল ওষুধের দোকানে লম্বা লাইন 
হাসপাতালের বেডে সব মারাত্নক ভয় শুয়ে 
এখন হাসপাতালে মানুষের সাতটা ফুটোয় লোহার রড 
আর গলায় ভিক্ষার পাত্র,
চলন্তিকা আজকাল ভীষন আমার ভয় করছে 
আবার কবে পাতার পোশাকে তোকে জড়িয়ে চুমু খাবো আমি
আবার কবে... আসবে তো সেদিন।

এটাই ডেমোক্রাসি



এটাই ডেমোক্রাসি
.. ঋষি 
কথা বলা বারণ, কান্নাকাটি বারণ 
বারণ বাবার চোখের জল, মায়ের চোখের দৃষ্টি 
ছেলেটা মারা গেলো, টু পয়েন্ট টু নট একটা বুলেট ছিটকে দিয়েছে 
ছেলেটা মাথার ঘিলু লেগে ল্যাম্প পোস্টের গায়ে
না দেখবেন না 
না বলবেন না 
শুনতে পারছেন ডেমোক্রাসি চলছে। 
.
কথা বলা বারণ চোখের জল বারণ 
বাঁচাতে হবে সন্তানকে 
তিনটে পাড়ার মাতাল মাঝরাতে নেমে এলো বাড়ির টালি সরিয়ে 
সামনে দাঁড়িয়ে দুই সন্তান 
একের পর লাইন লাগিয়ে ধর্ষিত হচ্ছে মা 
প্লিজ বাচ্চারা শব্দ করবে না 
চিৎকার না, চোখ বন্ধ 
মায়ের কোঁকানিতে ডেমোক্রাসি চলছে। 
.
কথা বলা বারণ, চোখের জল বারণ, বারণ সংগম, চুমু খাওয়া 
মা বলে ডাকবে না, 
বাবাকে দেখতে পাবে না, 
বাবা চিৎকার করছে না আমি ভিখারী না,না আমি ভিখারী না
টাকা দিয়ে বৌ পাবো না 
টাকা দিয়ে ছেলে পাবো না 
না চাই না, না চাই না, ভিক্ষা। 
.
মুখ বন্ধ 
কথা বলা বারণ, চোখের জল বারণ, বারণ চুমু, বারণ সংগম 
না দেখবেন না
না শুনবেন না 
বাঁচতে চান 
এটাই ডেমোক্রাসি।

ভারতবর্ষের লোগো



ভারতবর্ষের লোগো
.. ঋষি 
শাসক আর দেশের মাঝে 
আমি দাঁড়িয়ে, 
ঠিক একটা ভাংগাচোরা ব্রীজ যেন কোনভাবে টিকে, 
আমার পিঠে অশোক স্তম্ভ 
আমার বুকে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা 
অথচ আমার পায়ের তলায় শ্মশান, অসংখ্য মৃতদেহ। 
.
প্লিজ ঘাবড়াবেন না
আমি জানি পদ্ম আমার জাতীয় ফুল 
আমি জানি ময়ুর আমার জাতীয় পাখি, 
কিন্তু আজ অবধি কোন বর্ষায় আমি পেখমতুলে নাচি নি 
বরং ভিজেছি আমার ফুটো সিলিংএর নিচে 
এক সংসারে। 
.
আমার বাড়িতে এক হাড় জিরজিরে বারোমাস চুলকানি বৌ 
পাঁচ বার মাধ্যমিকে ফেল করা এক অকালকুষ্মাণ্ড ছেলে,
এক মেয়ে ছিল বহুদিন হয়েছে পালিয়েছে শহরে গরুর পিঠে চড়ে 
সে বেঁচে আছে কিনা জানি না, 
জানি না আমরা কতটা বেঁচে আছি। 
প্লিজ ঘাবড়াবেন না
শেষ ইলেকসানের বোমাবাজিতে আমার ডান হাততা উড়ে গেলো
এখনো বেঁচে আছি বহাল কর্পোরেশনের হাসপাতালে
কেন্তু কেন? 
এটা শুধু জানি আমার বুকে ভারতবর্ষের লোগো। 
.
প্লিজ ঘাবড়াবেন না আপনারা
আপনাদের কাছে অনুরোধ, সমস্ত করর্পোরেশন, বিধায়ক 
এলাকার সকল মানুষের কাছে অনুরোধ 
আমি মরে গেলে, 
আমরা মরে গেলে প্লিজ আমাদের বুক থেকে জাতীয় পতাকা খুলে নেবেন 
এই ভাবে কুত্তার মতো মৃত্যু তো আর অশোকস্তম্ভের হতে পারে না।

কিন্তু কেন



কিন্তু কেন 
... ঋষি 
যুদ্ধ মাত্রই ধর্মের হবে, এমন তো নয় 
সময় মাত্রই প্রগতীর হবে, সেটা ঠিক নয় 
ঠিক নয় স্বার্থের  পৃথিবীতে আপনি মৃত্যুর অপেক্ষায়,
অনেকগুলো প্রশ্ন নিজের বুকে হাত দিয়ে উঠে আসছে 
কেন? 
.
এটা কোন ভারতবর্ষ? 
একজনের জন্য সুইমিংপুল, অন্য জনের পানা পুকুর
একজনের সন্তান দুধে ভাতে, অন্য জনের পেটে ভাত নেই 
একজনের জন্য ওষুধ, বারুদ আর  কমপ্লিট প্রোটেকশান 
অন্যজনের গলিতে ম্যালেরিয়া, ডেংগু, হাতে পায়ে হাজা 
এটা কোন ভারতবর্ষ? 
.
আপনি আকাশ বিক্রি  করলেন 
আপনি বাতাস বিক্রি করলেন 
আপনি ট্রেনের লাইন, ব্যাংকিং সিস্টেম আর বসন্ত বিক্রি করলেন, 
ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন গেল 
ব্রিজের নিচে একদল মানুষ তখন সংসার বানাচ্ছে,
আকাশের নীল ছিঁড়ে ছুটে গেল প্রগতীর জেট
আর মাটিতে দাঁড়িয়ে কিছু ন্যংটো শৈশব হাততালি দিল 
এটা কোন প্রগতী? 
.
আপনি ভারতবর্ষ অনলাইন করে দিলেন 
আপনি মানুষের খাওয়া, পড়া, বাঁচা সব অনলাইন করে দিলেন, 
মানুষের হাতে দিলেন ৪ জি মোবাইল, 
আপনি জানেন কি মোবাইলে সব পাওয়া যায় 
কিন্তু পাওয়া যায় না রুটি। 
মোবাইল পর্নসাইটে আপনি উত্তেজনা দিলেন 
অথচ উত্তেজনা ছাড়াই এ দেশের গরীব মেয়েগুলো মা হয়ে গেলো 
আপনি উন্নয়নের নামে ক্লাবগুলোকে দিলেন কাঁচা টাকা
তাতে ভারতবর্ষের যুবকেরা সব নেশাড়ু হয়ে গেলো, 
আপনি চাকরী দিলেন না
আপনি শিক্ষা দিলেন না 
দিলেন না এই দেশের মানুষগুলোকে মানুষের অধিকার 
কিন্তু কেন? 





Friday, May 7, 2021

কবিতা ও রাষ্ট্র



কবিতা ও রাষ্ট্র
... ঋষি 

আমি এখন প্রতিটি মৃত্যুর ভিতর চরম উদাসীনতা দেখতে পাচ্ছি 
দেখতে পাচ্ছি উদাসীন রাষ্ট্র, সময়, সমাজ আর মানুষ 
 হ্যাঁ, আমিও প্রতিবাদ আর প্রতিরোধে ক্লান্ত এই পৃথিবীতে
যদি একমুহুর্ত  আমি নিরালায় পালাতে পারতাম
সাথে এক টুকরো খিদে, আমার শব্দরা 
আর একদম পাগলী সেই মেয়েটা। 
.
জানি সম্ভব নয় 
আমি কবি, আমি কোন দিনবদলের কবিতা কিংবা ম্যাজিসিয়ান নই, 
কিন্তু আমি চাই আমার কবিতারা চরম উদাসীন রাষ্ট্র, সময়, সমাজ আর মানুষের
ঔদাসিন্যের এই শক্ত বর্মে ফাটল ধরাক।
আমি চাই আমার অক্ষরগুলো মানুষের হৃদয়ে জন্ম দিক ঈশ্বর 
আমি চাই স্বরবর্ণগুলো অসহায় সময়ের মানুষের ঘুমের গভীরে
ভেসে ভেসে উঠুক মুক্তির ভুমিকায়,
আমি চাই আমার ব্যঞ্জনবর্ণরা দৃষ্টিহীন রাষ্ট্রের  চোখের পর্দায় 
ছুঁড়ে দিক লজ্জা,
আমি চাই পঙক্তিগুলো দশ হাজার ডেসিবলে চিৎকার করুক 
মৃত মানুষগুলো কান্নার পাশে,তাদের আত্মীয়পরিজনের হয়ে
প্রশ্ন ছুঁড়ুক রাষ্ট্রকে
কেন? 
.
কেন এই মৃত্যুমিছিল? 
কেন এই ভন্ড গনতন্ত্র? 
কেন মানুষের অধিকারবোধে চাপা দীর্ঘশ্বাস? 
কেন? 
আমি চাই এমন ছন্দ যা আম, কাঁঠাল নারকেল গাছের ঘুম ভাঙিয়ে
মানুষকে দেবে অক্সিজেন
আমি চাই এমন  স্তবক যা সময়ের হাতে গুঁজে দেবে
 একটা আস্ত স্টেনগান 
সামনে দাঁড়ানো করোনা নিপাত যাক 
নিপাত যাক ভন্ড রাষ্ট্রপিতাদের ষরযন্ত্র। 
আমি চাই প্রতিটা ছেদ,যতি চিহ্ন,দাঁড়ি, কমা আর সেমিকোলন 
ভাত, গম, শাক সব্জী  
ঈশ্বরের  দানা হয়ে ঝরে পড়বে বুভুক্ষুর মুখে। 
.
আমি চাই আমার কবিতার বইয়ের পাতা থেকে
লাফিয়ে নামুক শান্তি,
প্রচ্ছদ ছিঁড়ে ফেলে কুচকাওয়াজ করুক আধা জাগ্রত মানুষের সমুদ্রে
 সব বিশেষ্য, বিশেষণ, অব্যয়, 
সময়ের চিৎকারগুলো থেকে হারিয়ে যাক 
মানুষগুলোর কান্না
এই আমার আঘাত
এই আবার  পেট
 ওরা আমায় মেরে রক্তাক্ত করেছিল।
আর মৃত্যু নয় 
এইবার মানুষগুলো বাঁচুক মানুষের ভুমিকায়, সময়ের মুক্তিতে।

কুয়াশা ও প্রার্থনা




কুয়াশা ও প্রার্থনা 
.. ঋষি 
আগত আর বিগতের মাঝে 
এক মার্জিন তফাৎ,
দুটো বিপরীতগামী ট্রেন স্টেশন আলগা রেখে চলে যায়, 
ঘুমের পরে অসম্ভব  চেতনায় 
তাড়াহুড়ো পড়ে ট্রেন ধরবার, বিকলাঙ্গ ভাবনায়। 
.
কুয়াশা আর প্রার্থনার গন্ধ এক নয়
– যে বলেছিল, সে এখন নিজেই কুয়াশার আড়ালে,
মাকড়সার জাল বেয়ে,ধুলোজমা  পুরনো বইয়ের পাঁচিল পেরিয়ে
সিঁড়ি বেয়ে তার পায়ের শব্দ
দরজার ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢোকে হঠাৎ উপস্থিতি নামক একটা প্রশ্ন
আর আমি কাঁপতে থাকি। 
.
আলো আকাশ থেকে আসে
কয়েক আলোবর্ষ দূরে এক আলোর বিন্দু 
৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷৷  এর মধ্যে কোনো চালাকি নেই। 
লোকে বলে 
– প্রার্থনার সময় মানুষ চোখ বুজে ফেলে 
কারণ সেই আলো ছাড়া কেউ অন্য কোনো ঈশ্বর ভাবতে চাই না, 
বাঁচার খাতায় আলো ক্লোরোফর্মিয় কবিতার মতো। 
আমি যে কবিতা লিখতে চাইছি না  সেটা কেউ বিশ্বাস করে না 
আমি জাস্ট নিজের চারপাশের অর্থ বুঝতে চাইছি,
 আর যা বুঝছি, তা নিজের ভাষায় লিখে রাখছি । 
আমার এই পান্ডুলিপি বিশ্বাসের
প্রার্থনার আমাকে মানায় না, 
আমার শার্টের  আস্তিনে ময়লা, লুকোনো ছুরি
আমি আলো ভাবতে পারি 
আমি ঈশ্বর  ভাবতে পারি 
এমনকি তাকে খুন করতে পারি 
কিন্তু তাকে ছাড়া বাঁচা আমার স্টেশনে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সামিল।   
 

একটা অন্ধের কবিতা

একটা অন্ধের কবিতা
.. ঋষি 
অন্য মানুষেরা আমার ভাষা বুঝতে পারেনি
 আর ভাষা আমার  শুধুমাত্র প্রকাশমাধ্যম নয়, অস্তিত্বও সে,একটা স্পন্দন,
 তারা আমার দু পা হাঁটুর ঠিক নিচ থেকে কেটে ফেলে
তারা আমার হাতের আঙুলগুলোকে পাগল আখ্যা দেয়।
 আসলে সমউচ্চতায় চোখে চোখ রাখা যায়, আর মুখের গন্ধ শুঁকে তারা বুঝতে পারে
গতরাত্রে আমি কী কী খেয়েছি, মাংসের  কুচি দাঁতে লেগে কি না। 

একাজ তারা চৌকি বা চেয়ারে উঠেও করতে পারত
কিন্তু তা ঐতিহ্যবিরোধী,
মানুষের স্বার্থে জনগনকে বোকা বানানো যায় রবীন্দ্রভাষ্যের সুমেদুর উচ্চারনে, 
কিন্তু কথা হলো ছোকড়া
তুমি ভাষার কি বোঝ? 
আর মানুষগুলো কি বোকা সব, নিজের ভালো বোঝে না। 
.
আমার শেকড় নেই, 
ফলে মাটির সঙ্গে আমার যোগাযোগ সংস্কারবিহীন
শুধুমাত্র সময়ের গতিসূত্র অনুযায়ী আমার সমস্ত নড়াচড়া,
 ফলে আমার মাথায় অ থেকে অজগর 
ক থেকে কেওড়াতলা, বর্নপরিচয়,বর্ণমালা আর ছাতিমতলা। 
অন্য মানুষেরা বলে , এ লেখা ভারতচন্দ্র লিখলে শ্রতিমধুর 
কিন্তু আমার  হাতে পাগলামির তলোয়ার।
বর্ণমালায় উপনিবেশ হোক 
আর ব্রায়েরর বিজ্ঞাপণ সমস্তই অশ্লীল লাগে,
আমি, যে অস্থিরতা  চাই না – ফোরপ্লে শুধু 
 কন্ডোমে ব্রেইল লিপিতে বর্ণমালায় কবিতা লিখে যাই
নবান্নে কনফারেন্স লিখি, এপিটাফ।
জানি এক বর্ণ  অসম্ভব
 বিশ্বাস রাখো ভালোবাসা,বিশ্বাস  রাখো অসম্ভব
সম্ভব তখনি বাঁচা
যখন তর্ক না করে ভালোবাসতে পারো ।

শব্দের ধাঁধা



শব্দের ধাঁধা 
.. ঋষি 
ভ্রমণের গল্প লিখতে আমার কোনদিন ভালো লাগে নি
ভ্রমণের গল্প বলতে আমার কোনদিন ভালো লাগে নি
আমি মানুষের গল্প লিখি, খেটে খাই 
আমি হাঁটি, হেঁটে যাই 
মানুষ আর তাদের অযাচিত ভালোবাসার গল্পে।
.
গোভিন্দপুর গ্রামের সেই  বৃদ্ধা মহিলার কথা আমার মনে পড়ে
যার ছেলে শহরে গেছে, কিন্তু ফিরে আসে নি, 
আমার মনে পড়ে গোপন শর্মার কথা
যিনি স্ত্রীকে হারাবার দুবছরের মাথায় বিয়ে করেছেন,
কিন্তু তার সুন্দরী স্ত্রী আজকাল রাত হলেই 
পাগলের মতো হাসে। 
.
যার সাথে মুর্শিদাবাদের সীমান্তে সীমান্তে ঘুরে আমি ইতিহাস শিখছি 
সে বলে ইতিহাস কখনো বদলায় না,
চলন্তিকাও একই কথা বলে
অথচ আমি বিশ্বাস করি ইতিহাস কখনো থামতে শেখে নি
সময়ের বালিঘরে তাই পরিবর্তিত ইতিহাস। 
 আমার কাছে ভ্রমণ মানে চীনের প্রাচীর,  আইফেল টাওয়ার বা তাজমহল নয়
তা হল আইফেল টাওয়ারের নিচে দাঁড়ানো মানুষের গল্প, 
হিমাচলে হঠাৎ দেখা হওয়া অচেনা সময়ের মানুষ ,
 চীনের ফুটপাতে সেই একলা দাঁড়ানো সেই ভিখীরির গল্প। 
 আমার প্রায়শই মনে হয় ৯০ ডিগ্রি  নটে যদি আমি ঘুড়ি ওড়াতে পারি 
তবে মেরুদণ্ড  প্রশ্ন করবে না
আমি ভ্রমণ বিলাসী না কবি 
এটা গল্প না কবিতা,
নাকি একটা শব্দের ধাঁধা 
যেখানে চলন্তিকা ইতিহাস বই পড়ছে  বারংবার 
আর আমি আবিষ্কারে মত্ত মানুষ। 

Monday, May 3, 2021

মানুষগুলো ভুল করে

মানুষগুলো ভুল করে 
... ঋষি 
.
আমি মানুষের ভিতর আজকাল শুধু থেমে যাওয়া দেখি 
আমি সময়ের ভিতর আজকাল একটা হসপিটাল দেখতে পাই 
আমি জীবন বলতে এখন শুধু গাছ বুঝি 
আর জানলা 
সে তো শুধু অপেক্ষা।
.
সমুদ্রের বালির উপর শৈশব তৈরী করে বালিঘর 
সময়ের স্পন্দনে যৌবন উপহার দেয় কিছু ভুল, 
ভুলের সুদ গোনে ভুল
আবারও ভুল। 
কখন যেন মানুষগুলো ভুল হয়ে যায়
ভুল হতে থাকে সময় 
বার্ধক্য ধিক্কার দেয় নিয়মের দুনিয়ায়। 
.
সবটাই জীবন চলন্তিকা
অনেক কিছু হতে পারে, যদি মানুষ গাছ হতে পারে, 
অনেক কিছু হতে পারে,যদি সময় নিরর্থক হতে পারে 
এক মুহুর্তে জীবন বদলায় যেমন 
তেমন মানুষ স্বার্থপর তাই গাছ কাটতে পারে।
মানুষ ইতিহাস বুকে নিয়ে চলে
তবু মানুষ ভুলতে চায় ইতিহাস, বারংবার ভুল করে
সিন্ধু থেকে মহেঞ্জোদারো সাক্ষী
সাক্ষী গ্রীক, রোমান, মুঘল অজস্র সভ্যতার পালাবাদল,
অজস্র ধর্ম, সংস্কৃতি, লোকগীতি, বাউল, প্রফেট, কবির কলম 
বলে চলে
মানুষের ভুল 
সময়ের ভুল 
আসলে মানুষ তো ঈশ্বর নয় তাই বারংবার ভুল করে
তারপর বেলাশেষে মানুষ গৃহপালিত দৈনন্দিন 
ঈশ্বরের  সন্তান। 




Sunday, May 2, 2021

আকুতি



আকুতি
... ঋষি 
.
একটা যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে আছি 
একটা সময় যেখানে শুয়ে থাকা অজস্র  মৃতদেহ মানুষের ভিতর,
ভয় পাচ্ছি ঠিক 
অথচ বারংবার নিজেকে বলা 
বেঁচে আছি 
এই তো বেঁচে আমার আত্মীয় পরিজন আর তুই। 
.
ক্রমান্বয়ে প্রিয় মুখ, প্রিয় শব্দকোষে, 
নিজের রক্তকোষে, তুই, 
হাসতে হাসতে গিয়ে দাঁড়ানো সাজানো সময়ের আয়নায় 
বারংবার নিজেকে বোঝানো " এই তো ভালো আছি "
তবু চিনতে পারি না নিজেকে 
তোকে ছাড়া, তোর মুহুর্তে ছেড়ে আসা নিজেকে 
না চিনতে পারি না সময়। 
.
মাথার ভিতর ক্রমশ ফাইটার জেটের শব্দ 
সময়ের ভিতর ক্রমশ মৃত শরীরগুলোর কনভয়
বেঁচে থাকার ভিতর অদ্ভুত আকুতি, বারুদের গন্ধে ভাসা আমার শহর
একের পর এক গুলির শব্দ 
ক্রমশ ঝাঁঝরা আমি মৃত্যুর সাথে লড়ছি। 
একের পর এক অসহায় মানুষগুলো নিঃশ্বাস খুঁজছে 
খুঁজছে অক্সিজেন অসহায় সময়ের দাপটে আমার রাষ্ট্র 
আমিও হাঁপাচ্ছি তোমার মুখোমুখি চলন্তিকা, 
মুক্তি চাই
মুক্তি খুঁজছে রাষ্ট্র ,মুক্তি খুঁজছে সময়,  মুক্তি খুঁজছি আমি আর আমরা।
.
আবার একটা দিন 
যেদিন মুখোমুখি সময়
রোগমুক্ত একটা রাষ্ট্র শুধু নয় , আমার বাংলা,
না যুদ্ধ ক্ষেত্র নয়, নয় কোন ব্যালটের হিসেব 
না না কোন হারজিত নয়, নয় কোন ধর্মের নামে কারচুপি। 
শুধু আমরা 
ফিরে আসতে চাই আবার একটা রোগমুক্ত দুনিয়ায় 
যেখানো ব্যাস্ত শহর, ব্যাস্ত মানুষ, হাজারো ব্যাস্ততার ফাঁকে 
সকলে মুক্ত এই পৃথিবীতে শুধু জীবনের অহমায়। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...