Friday, July 31, 2020

নষ্ট কবি ও সময়


নষ্ট কবি ও সময় 
....ঋষি 
.
মাননীয় সময় ,
.
শব্দরা সহজপাচ্য হলে আপনার বেশ সুবিধা হয়
মানুষের বুকে পেরেক ঠুঁকে খুব সহজে আপনি ভায়োলিন বাজাতে পারেন ,
বাজাতে পারেন মানুষের বুকের পাঁজরের রিডে  সরগম কষ্টের দামে 
রাস্তার ধারে নিজের শীতঘুম ভেঙে আপনি পুঁতে দেন   বসন্তের চারা
ফুল ফোটে 
কিন্তু আপনি বোঝেন না আজকাল রৌদ্রও  বিক্রি হয় বাজারে। 
.
আপনি স্কুলের সিলেবাসে লিখে রাখেন টিবু সুলতান 
অথচ সেই স্কুলের একান্ত বাথরুমে লিখে দেন শুয়োরের বাচ্চা ,
শৈশবকে হস্ত মৈথুন করতে শিখিয়ে 
বিজ্ঞপনে নিয়ে আসেন  লাল  রঙের  শরীর যুগের চাহিদার কন্ডোম । 
আপনি জানেন সবই 
অথচ চোখ বুজে থাকেন 
যে দেশে বাঘাযতীন বলে একটা বাঘ ছিল 
সেই দেশের বাঘগুলোকে  আজ আপনি ছেলেদের প্যান্টের জিপে আটকে রাখেন । 
.
আমার এই  কবিতা আমি জানি অসহ্য আপনার কাছে 
অসহ্য এই সময় তাকিয়ে থাকা শব্দ প্রেমিক ,প্রেমিকারা কবিতার বুকে ,
আসলে যে সময় মাস্টাররা শিক্ষা খুঁজছে স্বার্থে 
সেখানে ফাস্ট বেঞ্চে বসা ছেলেটা হয়তো বলে দেয়  টিবু সুলতান কে ছিলেন 
কিন্তু লাস্ট বেঞ্চের ছেলেটা জানে মেয়েদের কোনো ঋতুতে রক্ত চাষ হয়। 
আসলে মশাই 
আপনি সব জানেন ,
জানেন আইনস্টাইন থেকে ফ্র্যাংক রস কিংবা স্ট্যালোন 
কিন্তু মানুষকে আজ অবধি বোঝাতে পারলেন না 
মনুষ্যত্বের মানে ,
আপনি দেওয়াল খোদাই করে পাথরের বুকে লিখে দিলেন 
ওল্ড টেস্টামেন
অথচ মানুষের বুকে  লিখতে পারলেন কই
ভালোবাসা কিংবা প্রেম। 
শুধু শরীর দিয়ে চিরকাল আপনি সময় সমাজ  সাজিয়ে গেলেন
কিন্তু একবারও কোথাও লিখলেন না 
শরীর ছাড়া আত্মাও  আছে। 
..
পুনশ্চ : জানি আমার এই কবিতা এখন হাততালি পাবে জনগণের  ,আপনিও সময় হয়তো আছেন সেখানে। কিন্তু মশাই হাততালি দেওয়া ছাড়া পরিবর্তন নয় বিবর্তন আপনি করতে পারেন ,সবটাই আপনার হাতে। 
.
ইতি 
কোনো এক নষ্ট কবি    

ইদানিং বুঝেও বুঝি না

ইদানিং বুঝেও বুঝি না 
... ঋষি 
.
আমি ভাবতাম বাঁচার জন্য কিছু লাগে না 
কিন্তু লাগে ইদানিং  ,
বাঁচার জন্য কোনো জেলা ,কোনো গ্রাম ,কোনো শহর না 
একটা সভ্যতা লাগে ,লাগে ইতিহাস। 
লাগে হাওড়া ব্রিজ ,লাগে যশোর রোড,লাগে ধর্মতলা 
লাগে ময়দান ,লাগে ভিক্তোরিয়া ,লাগে গণেশ এভিনিউ ,লাগে কুমোরটুলি 
লাগে  সাঁওতালি সেই মেয়েটাকে ,লাগে বৃষ্টিতে ময়ূরের নাচ। 
.
আমি ভাবতাম বাঁচার জন্য শরীরে লাগে না 
কিন্তু ইদানিং লাগে 
বাঁচার জন্য আমার গ্রীস লাগে ,লাগে  রোমান ভাস্কর্য্য 
লাগে কপিলাবস্তু, লাগে চীনের প্রাচীর ,
পায়ে পায়ে এগিয়ে আসা অন্ধকারে লাগে প্রতিসন্ধ্যায় শহরের লাইটপোস্ট ,
লাগে শহরের পঁচিশ তোলা বিলিডিংয়ের উপর দিয়ে 
ঝাঁপিয়ে পরা পাখিদের মতো ,
তারপর ফিরে যেতে তোমার শরীরের কোষে ,রক্ত প্রবাহে নিজের সাম্রাজ্যে। 
.
আমি ভাবতাম বাঁচার জন্য শুধু জন্ম দরকার 
কিন্তু ইদানিং বুঝি 
শুধু জন্ম না , কয়েকশো মৃত্যুর পর ,কয়েকশো প্রতীক্ষার স্বাধীনতা 
রবীন্দ্রনাথ,ক্ষুদিরাম ,নেতাজি ,বিনয় ,বাদল ,দীনেশ। 
রাষ্ট্রের তিরঙ্গা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় 
জীবিত থাকার মানে,
আজ তাই  আমি বুঝি  জাতীয় সংগীত 
বুঝি জাতীয় ভাষা 
বুঝি চৈতন্য দেব ,আব্রাহাম লিঙ্কন ,গ্যালিলিও ,টলস্টয়
বুঝি রাশিয়া ,বুঝি চীন ,বুঝি পাকিস্তান 
বুঝি জিন্নাহ ,বুঝি লাদেন 
বুঝি আল্লাহ ,বুঝি রাম
বুঝি মন্দির ,মসজিদ ,গির্জা 
বুঝি গীতা , কোরান , বাইবেল 
বুঝি সাম্রাজ্যবাদ , গণতন্ত্র আর রাজতন্ত্র 
কিন্তু আজও বুঝতে পারি না 
মানুষের জন্মগুলো ঈশ্বর কোন কালিতে লেখে ?
আর কি সম্পর্ক মানুষ আর সময়ের যা মানুষকে একলা রাখে ?


সখি ভাবনা কাহারে বলে




সখি ভাবনা কাহারে বলে 
.... ঋষি 

প্রথম রাতের সময়ের শরীরটা আমি পাহারায় আজ বহুযুগ 
আমি পাহারায় এক সামাজিক কারণ। 
ত্রস্ত দিনগুলো এগিয়ে যায় সমুদ্রের বালিতে রেখে পায়ের ছাপ
পিছনে পরে থাকে সময়ের চাওয়া ,পাওয়া 
আর বয়সের বলিরেখা 
চামড়ার সমুদ্রে রাতগুলো ঘুমের মৃত্যু আদেশ জারি করে। 
.
জীবন মানে নিজেকে একলা রাখা 
পাশ থেকে সময় বলে , তবে 
খিদে 
প্রহসন 
সঙ্গম 
মহামারী 
আমি চোখ তুলে তাকাই শহরের সাজানো ইট ,কাঠের বাড়িগুলোতে 
গভীরে দেখি ঘুনপোকা। 
.
জীবনের প্রশ্ন হচ্ছে প্রান্তিকতায় 
আমি শেষ দরজায় দাঁড়িয়ে কলিংবেল টিপি,
দরজা খোলেন ঈশ্বর 
তার হাতে মহাকাল ,চক্রের মতো ঘুরে চলেছে মন্দ ভালোয়। 
চোখ ঝলসে যায় ,
ঈশ্বর বলেন জীবন হলো  পদ্মপাতাটার জল 
টলমল 
তাই শুধু প্রতীক্ষা করো শুভ মুহূর্তের ,সহ্য করো নিজেকে। 
সহ্য হয় না নিজেকে 
শোকেসে সাজানো ঈশ্বরের তবু পুজো করে তবুও মানুষ 
আর আমার মতো নাস্তিকেরা বলে 
সখি ভাবনা কাহারে বলে ?

Thursday, July 30, 2020

গুড ফর নাথিং



গুড ফর নাথিং 
..... ঋষি 
.

অনেকটা জং জমে আছে আমার শিঁড়দাঁড়ায় 
বারংবার নিজের মতো কাউকে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি 
তোর বাড়ির সামনে ,বড়ো চৌ রাস্তায় 
হাজারো লোকের ভিড়ে এই শহরের অপেক্ষামান বাসস্ট্যান্ডে ,
ক্লান্ত চোখগুলো ,ক্লান্ত শরীর 
সবচেয়ে অদ্ভুত হলো এই মানুষগুলো বেঁচে থাকা। 
.
এই শহরে সকলে ছাদ আটা রহর্স্যে থাকে 
অথচ আমার মতো কেউ কেউ থেকে যায় খোলা আকাশের নিচে ,
বেপরোয়া ,একগুঁয়ে ,জেদি কিছু মন্তব্য সময়ের 
এরা গ্রাহ্য করে না ,
আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজের অহং এ খুঁজে নেয় তারা খসা 
নিজের খসে পড়া দেখে আনন্দে হাততালি দেয় 
কারণ এরা জানে 
আকাশ যে চিরকালের ,চিরকালীন 
আকাশের তো বদল নেই। 
.
অনেকটা জং ধরে গেছে সময়ের আয়নায় 
স্থানান্তরিত ভাবনারা হঠাৎ আয়নায় টর্চ মেরে দেখে আলোর প্রতিফলন ,
ফিরে আসা আলো আলাদিন হয়ে জ্বলতে থাকে 
খোলা আকাশের নিচে হাজারো তারাদের দেশে ,
সবকিছু ব্রাত্য  হয়ে যায় 
সবকিছু গুড ফর নাথিং 
শুধু কিছু প্রতিবাদ থেকে যায়। 
থেকে  যায় বুকের রক্তে চান করা সময়ের ফিরে আসা ,
অভিষেক হয় 
অভিষিক্ত নিজের প্রদেশে রাজা ,রানী ,গোলাম 
নিজের ভাবনায় থেকে যায় ,
আসলে দেওয়ালে পিঠ থেকে গেলে 
আমার মতো মানুষগুলোই স্বার্থপর হয়ে যায়
হয়ে যায় গুড ফর নাথিং।  

লোকটা পাহাড় ভাঙে



লোকটা পাহাড় ভাঙে 
... ঋষি 
.
একটা লোক সময় ধরে  পাহাড় কাটছে 
সময় কারণ সময়ের কোনো গাছ ,পাথর থাকে না ,
থাকে না সময়ের ভাঙার কাছে লোকটার 
ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়। 
কোনোদিন 
কোনো একদিন এই পাহাড়ি সভ্যতায় লোকটা 
নদী নিয়ে আসবে,এই আশায় । 
.
আজ যেখানে সৃষ্টি আটকে অপেক্ষায় 
আজ যেখানে মানুষগুলো লোকটাকে দেখে হাসছে মনে মনে ,
ভাবছে লোকটা মরে  যাবে ঠিক এমনি  
কেউ কেউ ভাবছে নেহাত পাগলামি ,
অথচ লোকটা হাসছে 
এক না একদিন সে হাসবে এই পাহাড়ি শহরতলিতে দাঁড়িয়ে 
সামনে দিয়ে নদী বয়ে যাবে 
সামনে দিয়ে চোখের জল ,লোকটা জিতবে ঠিক। 
.
কেউ জানে না 
লোকটা জানে মরে যাওয়া মানা নকল মানুষ 
আর হেরে যাওয়া মানে মৃত্যু 
আর পাহাড় হলো জীবন। 
পরিশ্রম করতে হয়,
প্রতিদিন পাথরের সাথে যুদ্ধ করে ফিরে আসতে হয়
ফিরে আসতে প্রতি রাত্রে নরম নদীর স্বপ্ন বুকে, 
যার ঝর্ণার মতো চুল 
যার গায়ে শ্যাওলার গন্ধ 
যার গভীরে চিকচিকে জ্যোৎস্ন্যা স্বপ্ন আঁকে বেঁচে থাকার 
যার তিরতির বয়ে যাওয়ায়  বেঁচে থাকার গান।   
লোকটা মাঝরাতে প্রতিদিন স্বপ্নে দেখে ঘুম ভেঙে আঁতকে ওঠে 
একটা শান্ত গভীর নদীর চোখে ,নরম  জ্যোৎস্ন্যা 
আর মৃত একটা শরীর হাত ডুবিয়ে জলে 
লোকটা পাগলের মতো হাসে নিজের ম্রৃতদেহ দেখে ,
তারপর রাত থাকতে উঠে পরে ছেনি ,হাতুড়ি আর স্বপ্ন নিয়ে 
লোকটা পাহাড় ভাঙে সময় ধরে 
কারণ লোকটা শোনে প্রতি মুহূর্তে  
নদীর তিরিতিরি জল ধাক্কা মারছে লোকটার বুকে। 

Wednesday, July 29, 2020

জোড়াসাঁকোর গল্প

জোড়াসাঁকোর গল্প
... ঋষি 
ছড়িয়ে ফেলেছি কয়েক মুঠো ভাবনা
আর কিছু অনন্য অদ্ভুত আব্দার তোমার গভীরে,
হঠাৎ আজ  নিজের রোবটিক্স ওয়ারল্ডের ডিকশানারি খুলে
লিখে ফেলেছি সেই মেয়েটাকে
যে গতকাল আমার জন্য  বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ভিজেছিল। 
.
একরাত না ঘুমিয়ে 
একরাত কেবল মাত্র কবিতা লিখে আজ অবধি কেউ প্রেমিক হতে পারে নি ,
প্রেমিক হতে হলে ঈশ্বর হতে হয়। 
এই যে সময় বলে  কবিরা সকলেই প্রেমিক
এই যে জনতা বলে কবির কলমে ঈশ্বর 
ডাহা মিথ্যে 
কারণ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ছাদে  আজও একটা মেয়ে ভেজে 
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে
একলা প্রেমে। 
.
আসলে কি জানো কবিরা ভীষন স্বার্থপর
এদের ভীষন হাঁচি-কাশি আরও অনেক মনের রোগ, 
এদের পৃথিবীতে শব্দরা পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করে
কিন্তু যোগ্যতার পৃথিবীতে এরা কেউ মানুষ হতে পারে না,
পারে না হতে ঈশ্বর 
এরা শুধু স্বার্থপর 
শুধুই কবি। 
সেকারনে যুগে যুগে কবি  প্রেমিকাকে দিয়েছে জন্ম শুধু সাদা পাতায় 
দিয়েছে অলংকার শব্দের আছিলায়  
কিন্তু সাহস করে আজ অবধি খুব কম আছে
যে বৃষ্টিতে দাঁড়ানো প্রেমিকার মাথায় ছাতা  ধরে বলেছে 
জোড়াসাঁকোর প্রেমের গল্পটা মিথ্যে ছিল । 

মমি



মমি
.... ঋষি
আমাকে ঈশ্বর গুলে আকন্ঠ পান করালে
তবু  আমি অহংকারী ঈশ্বর  , 
ঈশ্বর শব্দের মেমব্রেনে আসলে স্বার্থপর মানুষ ঘুমিয়ে
ঘুমিয়ে আছে শুধু পাওয়া,শুধু অমৃত 
আর আমি বিষাক্ত  বিষ
যে শুধু সময়ের ঈশ্বরদের ধ্বংস করতে চায়। 
.
শুধু বিষ 
শুধু বিষ 
পানপাত্রে ঢালা আছে নীলনদ, আর এলিজাবেথ টেলর 
স্ক্রীনশটে সাদাকালো ছবিতে  স্থির ভাবে ধারালো আতংক,
মরুভুমির কবিতা এটা
প্যাপাইরাসে লেখা আছে  মৃত্যু বিধর্মি চিরকাল। 
.
সময় পুরনো হয়ে যায় 
ইতিহাস গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে থাকে আগামী মৃত্যুর গভীরে
তবু জন্ম আসে 
তবু জন্ম হয় 
প্রাচীন নীলনদের কালো জল  শুয়ে থাকে সভ্যতার  বালির শহরে । 
 তবুও আমি অহংকারী ঈশ্বর
আকন্ঠ পান করি বিষ সময়ের মন্থনে 
দূর থেকে ক্লিওপেট্রা দাঁড়িয়ে দেখে বুকের পিরামিডে দাঁতের দাগ, 
নখের ক্ষত রেখে যায় কাগজের ঘর, বাড়ি, 
এই শহরে কিছু আশ্চর্য চিরকাল মানুষের মনে 
মমি হয়ে বেঁচে থাকে। 
 


 

স্পর্ধা করি উচ্চারণে

স্পর্ধা করি উচ্চারণে
.. ঋষি
কারো কারো নামটা উচ্চারণ করতে হলেও 
স্পর্ধা করতে হয়, 
স্পর্ধা করতে হয় সময়কেও সেই সব আলোর জন্ম দিতে। 
চোখ ঝলসে যায় 
সময়ের সুর্যে প্রাকাশিত কয়েকশো যুগ 
শুধু মাত্র স্পর্ধার, শুধুমাত্র আলোর প্রকাশের। 
.
শুধু মাত্র বর্ণপরিচয় নয় 
শুধু মাত্র অ আ ক খ, না তাও নয় 
এ হলো সম্বল আমি বাঙালী তাই, 
এ হলো সম্বল আগামী সন্তানদের যুগে, যুগে একটা 
আলোর পথ 
চোখ ধাঁধিয়ে যায় জানি 
আসলে ঈশ্বরকে আবিষ্কারটা ঠিক এমনি হয়। 
.
আমি ঈশ্বর দেখি নি
আমি ধর্ম খুঁজি নি 
শুধুমাত্র সময়ের বুকে শুয়ে থাকা সেই সব স্পর্ধাদের কাছে 
আমি মাথা নত করে দাঁড়ায়। 
যুগান্তরের প্রতিটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে 
স্পর্ধা
না শুধুমাত্র বিধবা বিবাহ, নারী শিক্ষা নয় 
শুধুমাত্র পরাধীন ভারতবর্ষের পুরাতন অগ্নিশিখা নয়, 
যুগে যুগে ফুটন্ত আগুনে সময়ের মাঝখানে
অন্ধকারে আলোর নবজাগরন তুমি 
স্পর্ধা
সাগর, 
বিদ্যাসাগর 
কোনো এক অগ্নিশিখার নাম। 


 


Tuesday, July 28, 2020

সত্যি এটা



সত্যি এটা 
.. ঋষি
প্রতিবার উনিশ-বিশ
কিছু কম কিংবা বেশি   ,  সবটাই কম কিংবা বেশি, 
সবটাই আবর্তন কিংবা প্রবর্তন 
একমুহুর্ত কি ছেড়ে থাকতো পারো না তুমি? 
এক মুহুর্ত তুমি কি আমাকে ছাড়তে পারো না 
এক মুহুর্ত। 
.
বদলানো সময় গত শতাব্দীর 
পুরনো ইতিহাসে ছুঁয়ে ধ্বংস বদলাতে পারি না,
বদলাতে পারি না সহ্য,
তবু অসহ্য তুমি আমার মৃত্যু ছুঁয়ে 
আমার বেঁচে থাকাকে পাগল করে যাও 
অন্ধকার যেন সমুদ্রের সফেনের মতো একলা আলো।
.
ভালো লাগছে না
শহর ছুঁয়ে বিশাল হোডিং জুড়ে তোমার মুখ, 
সত্যি বলতে পারছি না
নেশার চোখে লেগে আছে স্বপ্ন যেন সময়ের মৃত্যু হোক। 
এ ও কি সম্ভব 
একটা জীবিত চোখ সারাদিন তাড়া করে
নিজের জাগরণে, নিজের মৃত্যুতে পিছু ছাড়ে না
শহরের পর শহর 
সময়ের প্রতি মুহুর্তে 
শুধু একটা মৃত্যু যেন জীবিত হয়ে যায় 
ফিরে আসে বারংবার ফিরে আসবে বলে
ভালোবাসবে বলে
শুধুমাত্র তোমাকে ছুঁয়ে 
এ ও কি সত্যি? 

কার কাছে যাবো



কার কাছে যাবো
... ঋষি
মাঝে মাঝে মনের মাঝে প্রশ্ন জাগে 
কার কাছে যাবো? 
আকাশের চাঁদের কাছে একটা প্রশ্ন বোধহয় আজও অর্বাচীন 
উত্তরগুলো লেখে সময়ের মানুষ,
তবুও প্রশ্ন থাকে আমি কার কাছে যাবো 
এই পৃথিবীতে কি কোথাও কি  আমার আমিটা আছে? 
.
ইদানীং আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সেই মেয়েটা
হয়তো দুঃখ করে 
ঈশ আকাশে চাঁদের বুড়িটাও আজকাল গত শতাব্দী হয়ে গেছে। 
শতাব্দীর থেকে দূরে দাঁড়িয়ে আমি 
চাঁদের বুড়িটাকে দেখি 
প্রশ্ন করি বুড়ি , তুমি তো নিশ্চয় জানো আলো আঁধারি আর মেঘেদের কথা
আর মানুষের বুকে চাঁদের ব্যাথা
আর বৃষ্টিদের কথা  । 
.
উত্তরগুলো ঠিক হজম হয় না
প্রশ্নগুলোও কেন জানি শেষ হয় না, 
আকাশের গায়ে দুটো ঘুড়ি একটা কালো, অন্যটা সাদা
পৃথিবীতে ঠিক একই 
কালো আর সাদা। 
হঠাৎ বিকেল ফুরিয়ে অন্ধকার নামতে থাকে পৃথিবীতে 
ঢেউএর পর ঢেউ আছড়ে পরে ক্রমাগত সময়ের গায়ে,
নিস্তব্ধতায় নোনতা  সময়ের বালি মেখে হেঁটে যায় দুটো শরীর
বালির উপর, 
দুজনেই হাঁটতে থাকে পাশাপাশি। 
আছড়ে পরে সাগরের জল 
ভেঙে যেতে থাকে শরীরদুটো 
ঢেউএর আঘাতে ভাঙতে থাকে,
ভাঙতে থাকে সময় 
তারপর সংসার,শহর আর বাড়িঘর ভেঙে 
তারা গিয়ে দাঁড়ায় সমুদ্রের মুখোমুখি
সত্যির মুখোমুখি 
তাদের  আর  সত্যি কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। 

   

Monday, July 27, 2020

অসহ্য

অসহ্য 
... ঋষি 
.
জানি আমাকে সহ্য করা
অসহ্য মিথেন গ্যাসের মতো কিছু, 
জানি আমাকে সহ্য করা
রাস্তার কুকুরের চিৎ হয়ে আদর চাওয়ার মতো কিছু। 
কিংবা একটা পাগলের চিৎকার 
যার কাছে পৃথিবীটা আজ মৃত্যু ছাড়া কিছু নয়। 
.
দিনটা মনে পড়ছে না ঠিক 
দৃষ্টিটা চোখের বাইরে শুয়ে অনবরত খোদাই করছে 
মাথার ভিতর নেমেসিস, 
আরব্য রজনীর নোনতা শরীরে সবটাই যখন পায়ের ফাঁক হয়ে যায় 
হয়ে যায় মানুষের  বেঁচে থাকা তাসের শহরে
রাজা, রাণী আর গোলাম
সেখানে আমার মতো পাগলগুলো বাঁচবে কোথায়। 
.
ক্রমশ বিলুপ্তপ্রায় সভ্যতায়
মানুষের চাকা আজ মানুষকে ছাড়িয়ে আরও জোরে ছুটছে, 
সেখানে আমি পিছনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু খুঁজছি
আসলে এ সভ্যতায় মৃতদের কোন সংসার নেই। 
আমার এখন সত্যি হাসতে ইচ্ছে করছে
আমার এখন সত্যি বাঁচতে ইচ্ছে করছে
কাঁচের সভ্যতার অন্যপাশে দাঁড়িয়ে আমারও এখন ইচ্ছে করছে
দুহাতে ভেঙে ফেলি সময় 
আর আমি রক্তাক্ত মৃত সময়ের বুকে দাঁড়িয়ে বলি 
আমি মৃত হতে পারি
হতে পারি রাস্তার কুকুরের মতো নিকৃষ্ট
কিন্তু আমি কোনদিন দয়ার পাত্র ছিলাম না
ছিলাম না নিজের কাছে অসহ্য। 



ভারতবর্ষের দর্শক

ভারতবর্ষের দর্শক 
... ঋষি 
.
আমরা দর্শক খুঁজছি 
আমি দর্শক, আপনি দর্শক 
দর্শক সময়, দর্শক সমাজ, দর্শক রাষ্ট্র, দর্শক আমরা।
দ্রবীভুত ভারতবর্ষের একশো ত্রিশ কোটি ভারতবাসী
শুয়ে আছে একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে 
অসহায়, অপারক আর স্বার্থপর  
আর বিছানার উপর শুয়ে ভারতবর্ষ, আমাদের মায়ের অসুস্থ শরীরে। 
.
আয়নায় মুখ দেখছি
খবরে মুখ দেখছি 
ভিডিও রেকর্ডিং চলছে পার্কস্ট্রীটে ফুটপাথে নগ্ন ধর্ষনের, 
আমরা দর্শক তাই 
হাসপালের সামনে চিৎকার করছে আমাদেরি কারো  সন্তানহারা মা
আমরা দর্শক বলেই
রাস্তার ফুটপাথে বিনা ওষুধে মারা যাচ্ছে 
আমাদের মতোই হাজারো মানুষ। 
.
আমরা সত্যি বলবো না
আমরা জানি, 
আমরা কাগজে পাবো না প্রতি বাহান্ন সেকেন্ডে এই দেশে ঘটে চলা
নির্যাতিত নারীদের খবর, 
আমরা খবরে পাবো কোনো সিংহের মর্মান্তিক মৃত্যুর ফুটেজ
কিন্তু সেই একই ফুটেজ আমরা পাবো না
গত ছমাসে আত্মহত্যা করা চাকরী হারানো সেইসব যুবকের খবর 
কিংবা মধ্যপ্রদেশের  দেনার দায়ে গলায় ফাঁস লাগানো চাষীটার খবর। 
আমরা পারি সহ্য করতে
একটা স্বপ্ন দেখা  যুবতীর টুকরো করা  শরীর 
আমরা পারি লুকিয়ে রাখতে 
আমাদের লজ্জাগুলো বেওয়ারিশ ঘটনা বলে
আমরা পারি তাই 
কেঁচোর মতো বাঁচতে 
আমরা পারি 
আমাদের  মায়ের শরীরটা ন্যাংটো করে রাস্তায় দাঁড় করাতে
তার দর হাঁকতে 
এবং বিক্রি করতে ভারতবর্ষ প্রগতির নামে।   
.
কি লজ্জা হচ্ছে
ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছে সত্যিগুলো নিজেদের জীবিত ভাবনায়,
আরে মশাই এত ভাবছেন কেন
ওরা কেউ ছিল না যারা আপনাকে ছেড়ে চলে গেলো
যারা আছে তাদের কথা ভাবুন। 
কিসের সময়?  কিসের সমাজ?  কিসের রাষ্ট্র? 
এইসব ছাড়ুন তো 
দর্শকই ভালোই
মশাই আপ বাঁচলে বাপের নাম
আর আপ  যদি বাঁচে তবে না রাষ্ট্র। 
 

মেটামরফোসিস



মেটামরফোসিস
... ঋষি 
বুক খুলছে না 
সুখ খুলছে না
শুধু মেটামরফোসিসে ক্রমশ অবলুপ্ত সভ্যটা যান্ত্রিক ডেসিমেলে। 
.
বুকের খোঁজ
সুখের খোঁজ
খুব হিংসা হচ্ছে জানিস  একটা পথ আমায় ছেড়ে রেখে গেলো
একটা পথ আমায় একা করে গেলো,
তবুও হাত কাঁপবে না কখনও সামাজিক তোর সিঁদুরে
তবুও মুখ খুঁজবে বুক সময়ের মাটিতে। 
.
বুক ভাংছে 
সুখ ভাংছে
ভাংছে অবচেতনে বেঁচে ওঠা সুখের ঘর
হাঁড়িকুঁড়ির শব্দ, শব্দ হাতা খুন্তি, শুধু কাঁচের  ঘর। 
জানলার ওপাশে বৃষ্টি
লেপ্টে যাচ্ছে সারা শরীর জুড়ে গভীর কোন ক্ষত   
দিয়ে যাচ্ছে সারা বুকের ভিতরে মেটামরফোসিস। 
সারা আকাশে বৃষ্টি
হাজারো প্রজাপতি ছূটে আসছে তোর শরীরের গন্ধের মতো
ঢেকে দিচ্ছে আমায়, 
জ্বালা করছে খুব, 
আমি বুকের  আগুনে বৃষ্টি পোড়াচ্ছি
পোড়াচ্ছি প্রজাপতির ডানা অন্য আগুনে। 
    

সময়ের বিপ্লব



সময়ের বিপ্লব
... ঋষি
আমার বুকের ভিতর সময়ের  বিপ্লব
নবান্ন বিল্ডিংয়ে দাঁড়িয়ে দুহাত তুলে জেহাদ ছিঁড়ছে,
সময় ছুটে আসছে বুলেটের মতো
ঔপনিবেশিক মাটিতে বাস করছে হাজারো সময়ের  গৃহবন্দী। 
শহর জুড়ে হতাহতের খবর শোনা যাচ্ছে
খবরে বলছে জাগতে রহো 
শুধু জাগতে রহো, 
আমার মতো হাজারো মানুষের বুকে আজ সময়ের ঘর। 
.
মিথ্যা আর সত্যির মাঝে একটা  স্তর আছে
সেই স্তরটা কালাহান্ডি মরুভুমির কোন আদুল শরীরে একলা ভাবনারা, 
ভাবতে ভালো লাগে শিউলি ফুলের গন্ধ
কিংবা বাগানের ফুল, 
আমি মালী হতে পারি নি, শুধু মরুভুমির উট হয়ে 
জমিয়েছি তৃষ্ণা উটের শরীরে। 
.
জানি এই কবিতা শরীরের প্লাজমায় আন্টিবডি তৈরী করবে না
করবে না শকুনির পাশা খেলা সময়ের আক্ষেপ , 
শুধু কিছু কথা  ছিল বাকি 
আরও কিছুক্ষন সাথে থাকা ছিল বাকি,
বাকি আছে আমার কবিতার রক্তে জন্ম নেওয়া সময়ের বৃষ্টিতে
তোকে চান করানো। 
সময়ের বিপ্লব, 
বিপ্লবীরা চিরকাল পা রেখেছে সময়ের বাইরে, 
তারা এগিয়েছে সময়ের বিরুদ্ধচারনে সত্যি করে সত্যি কিছু বলতে
অথচ আমি উটের শরীরে দাঁড়িয়ে ঘাস চিবোচ্ছি
 আমার সামনে কেলিয়ে শুয়ে আছে মিথ্যেগুলো
লাইভ টেলিকাস্টের মতো । 


  
 
  

Sunday, July 26, 2020

বিবর্তনবাদ



বিবর্তনবাদ 
... ঋষি 
.
আমি যে বৃত্তের মাঝখানে দাঁড়িয়ে
কেন যেন মনে হয় দিকচক্রবালে আমার তুমিটা হাল্কা হয়ে যাও বারংবার, 
আমার বৃত্তের জীবন 
মানুষের ডারউইনে মরণ। 
স্কেলিটনে লেগে থাকা জেদ আমার 
বাদরের মতো লাফাতে থাকে তোমার শহরের তোমাকে জুড়ে
আমার তিলোত্তমা বিক্রি হয়ে ভালোবাসার দরে।   
.
বারংবার প্রতিবার 
আমি মৃতদেহ আগলে বেঁচে উঠি একটা চৌম্বকীয় ফিল্ডে, 
ঘুরতে থাকে কাগজের তৈরি নাগোর দোলা তখন  শৈশবের হাতে,
খুব জোরে ঘুরছে 
আমি উপরে উঠি নেমে আসি 
আবার উঠি নেমে আসি 
ক্রমশ সেই মেলার জীবন শেষ হয়ে যায়
পড়ে থাকে মেলার মাঠে স্মৃতির মতো কিছু আদুরে আলাপ। 
.
আমি যে বৃত্তের মাঝখানে দাঁড়িয়ে
এক একএকটা দিন, দিন প্রতিদিন 
ফিরে ফিরে আসে। 
কিছু বদলায় না, কিছু বদলাবার থাকে না আমাদের তিলোত্তমায় 
শুধুমাত্র অপেক্ষা ছাড়া,
সাইকেলের স্পোকের ইতিহাস লিখে চলে সম্পর্ক 
অথচ আমি দাঁড়িয়ে থাকি রাস্তায়। 
আমার ভিতর ডারউইন সাহেব হাসতে থাকেন 
হাসতে থাকে উনিশ শতক 
মানুষের বিবর্তনবাদ পুরুষ হয়ে যায় প্রতিবার তোমার কাছে
আর আমি মৃত্যুর তিলত্তমা তখন । 

Saturday, July 25, 2020

নিকোটিন শোক




নিকোটিন শোক 
... ঋষি
বারংবার বলেছিস আমাকে বাবাই এত সিগারেট খাস না
অথচ আমি তোকে বোঝাতে পারলাম কই
সিগারেটের প্রতি টানে আমি তোকে ছুঁয়ে আসি মৃত্যুর দরজায়,
আমার পোড়া ঠোঁটে, জীভে একসার হয়ে থাকা কালের চাকা
স্পর্শসুখে পাগল করে আমায় 
বলে আমার মৃত্যুতে লেখা ইতিহাস 
আমার বুকের মতো ঝাঁঝরা। 
.
বুকের বুলেটিনে স্যাতস্যাতে বারুদের খোল 
ছড়িয়ে, ছিটিয়ে থাকা মৃত সম্পর্কের মুখ
রাষ্ট্র্বের শোক 
এই মুহুর্তে মৃত মানুষগুলোর আত্মা আমাকে ডাকে তোর গভীরে,
হ্যালুয়াসনে অসংখ্য মুহুর্তে ছবি হয়ে ভাসে
সিগারেটের ধোঁয়ায় আমার মৃত বুকে স্বপ্ন।    
.
বারংবার বলেছিস আমাকে বাবাই  এত সিগারেট খাস না
পোড়াস না নিজের বুক  নিকোটিন শোকে,
প্রতিবারে আমার উত্তর থাকে
ঠোঁট দে, 
কিন্তু তোকে বলতে পারি না কই সিগারেটের ১২০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যে
১০ মিলিমিটার ব্যাসে একটা জীবন শুয়ে আছে
যা আমি পোড়াই রোজ আগামীর স্বপ্নে,
যা আমি সিগারেটের প্রতি টানে বারংবার মরতে দেখি 
তুই কি বুঝিস না আমি শুনতে চাই তোর মুখে
বাবাই এখনও অনেকদিন বাঁচতে হবে তোকে
এখনও যে আমাদের পথ চলা বাকি। 
 

বৃষ্টি র চিঠি


বৃষ্টির চিঠি
.... ঋষি
.  
আমি বৃষ্টির শব্দে তোমার পায়ের শব্দ পাই
শুনতে পাই ডাকহরকরা চিঠি বিলোচ্ছে শহরের অলিতে-গলিতে ,
আর সমস্ত ডাকঘরে শীল মোহর পড়ছে তোমার ঠিকানায় , 
তোমার উদ্দেশ্যে লেখা শব্দগুলো শহরময়
জমা জলে 
প্যান্ট গুটিয়ে, শাড়ি কোঁচা দিয়ে কিলবিল করে হেঁটে বেড়াচ্ছে 
আমার মাথার ভিতর। 
.
বহুবার বৃষ্টিতে ভেজার পরও
কেন যে মনে হয় আমি বৃষ্টিতে ভিজি নি কোনদিনও, 
একা রাস্তায় শহরের বৃষ্টিতে আমার বাইকের গতি
আমার আনমনে বাইকের ফ্ল্যাশলাইট আবছা হয়ে যায়, 
করে ফেলি একটা এক্সিডেন্ট রোজ নিজের সাথে,
আর আমি জানি তখনি তুমি বৃষ্টি হয়ে আসো
শহর ভেজাও 
অথচ  বৃষ্টির কোন রং ছিল না কোনদিনও। 
.
আমি বৃষ্টির রংএ তোমার সময় পাই 
একলা সময়ে আমার ঘুমের বিছানায় যেন সিলিংময় বৃষ্টি,
আমার বুকের কাছে ভিজে ভাব 
আমার সারা শরীর বেয়ে কর্পোরেশনের জল আমার শাওয়ারে  
আমার শয়নে, আমার জাগরনে 
বৃষ্টির ফোঁটা যেন তুমি।
জানি না কেন জানি আমার সারা শহর যখন তুমুল বৃষ্টিতে ভেজে 
আমি তখন তোমার ঠিকানায় 
তোমার বিছানায় কান পেতে শুনি বৃষ্টির শব্দ তোমার বুকে 
আর ডাকহরকরা তখন আমার দরজায়
পৌঁছে দেয় আগামী জন্মের চিঠি।   

প্রিয় ইভ




প্রিয় ইভ
... ঋষি
আমার ভাবনারা ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশ
ক্রমশ অন্ধকারে রাত্রের  বিছানা বালিশ ল্যাপ্টালেপ্টি করে
ক্রমশ ছিঁড়ে ফেলছি বালিশ,কোল বালিশ,অস্তিত্ব 
আমার চারপাশে শিমুল তুলো উড়ছে বরফের দেশে। 
শীত করছে খুব
ক্রমশ একটা হাতমোজার ভিতর আমি শীতঘুমে 
হাতরাচ্ছি ভালোবাসার স্তন। 
.
ঘুম নামছে আমার চিঠির ভিতর 
আমার শব্দের গভীরে তুমি শুয়ে ঠিক ঘুমের শব্দ নিয়ে, 
পৃথিবীটা ক্রমশ শব্দহীন হয়ে যাচ্ছে দিন প্রতিদিন
অজস্র আত্মার ঘরে তুমি প্রথম নারী ইভ। 
সমস্ত সততার গভীরে শুয়ে থাকা যুগ 
বেইমান আদম 
বিশ্বাস করো নারী আমি সেদিনও প্রেমিক ছিলাম। 
.
ধর্মের সাত খাতা খুলে 
জন্মের পাঁচ পাতা পড়ে
এই সময়, এই মুহুর্তে আমি ক্রমশ মহুয়ার নেশায় আকন্ঠ প্রেম
জড়িয়ে যাচ্ছে জীভ।  
জড়াতে ইচ্ছে করছে তোমায়  
আমি দেখছি নিশব্দে এগিয়ে যাচ্ছে ট্রেন 
এগিয়ে আসছে শতাব্দী প্রাচীন তৃষ্ণা এই বুকের মরুভুমিতে,
ক্রমশ আমি হারাচ্ছি নিজেকে ভাবনার অন্ধকারে
আমার মৃত্যুর ফলকে লেখা 
প্রিয় ইভ তুমি আরো সত্যি হতে পারতে। 
 

জোড়াসাঁকোর গল্প

জোড়াসাঁকোর গল্প
... ঋষি 
ছড়িয়ে ফেলেছি কয়েক মুঠো ভাবনা
আর কিছু অনন্য অদ্ভুত আব্দার তোমার গভীরে,
হঠাৎ আজ  নিজের রোবটিক্স ওয়ারল্ডের ডিকশানারি খুলে
লিখে ফেলেছি সেই মেয়েটাকে
যে গতকাল আমার জন্য  বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ভিজেছিল। 
.
একরাত না ঘুমিয়ে 
একরাত কেবল মাত্র কবিতা লিখে আজ অবধি কেউ প্রেমিক হতে পারে নি ,
প্রেমিক হতে হলে ঈশ্বর হতে হয়। 
এই যে সময় বলে  কবিরা সকলেই প্রেমিক
এই যে জনতা বলে কবির কলমে ঈশ্বর 
ডাহা মিথ্যে 
কারণ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ছাদে  আজও একটা মেয়ে ভেজে 
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে
একলা প্রেমে। 
.
আসলে কি জানো কবিরা ভীষন স্বার্থপর
এদের ভীষন হাঁচি-কাশি আরও অনেক মনের রোগ, 
এদের পৃথিবীতে শব্দরা পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করে
কিন্তু যোগ্যতার পৃথিবীতে এরা কেউ মানুষ হতে পারে না,
পারে না হতে ঈশ্বর 
এরা শুধু স্বার্থপর 
শুধুই কবি। 
সেকারনে যুগে যুগে কবি  প্রেমিকাকে দিয়েছে জন্ম শুধু সাদা পাতায় 
দিয়েছে অলংকার শব্দের আছিলায়  
কিন্তু সাহস করে আজ অবধি খুব কম আছে
যে বৃষ্টিতে দাঁড়ানো প্রেমিকার মাথায় ছাতা  ধরে বলেছে 
জোড়াসাঁকোর প্রেমের গল্পটা মিথ্যে ছিল । 

Friday, July 24, 2020

তুমি হাসলে বলে

তুমি হাসলে বলে 
.... ঋষি 

আমি আজকাল একটা  গাছের স্বপ্ন দেখি 
দেখি অনন্ত  আকাশের মাঝে ছড়ানো শাখা ,প্রশাখা 
আর একটা জানলা ,
তুমি জানো চলন্তিকা উপরে আবহাওয়ায় কোথাও ধ্বংস লেখা নেই 
নেই শহরের বাড়তে থাকা পলিউশন 
নেই বাড়তে থাকা মানুষের জনসংযোগে অসংযমী লোভ 
সেখানে সবটাই শুধু পবিত্র ঈশ্বর। 
.
তাই বলে আমি ঈশ্বর দেখেনি কখনো 
শুধু ঈশ্বরের  মতো কিছু অনুভব করেছি   পৃথিবীর মাটিতে দাঁড়িয়ে 
সকালের সূর্যের  হাফ ওমলেটে ,সন্ধ্যের শঙ্খের শব্দে 
মানুষের শৈশবের পবিত্র চিৎকারে 
কাগজে বানানো এরোপ্লেন ,নৌকা আর পাখিদের পৃথিবীতে
নদীর স্রোতে ,সমুদ্রের শব্দে  
আমার সাত বছরের ছেলের হাসিতে
আমি খুঁজে পেয়েছি ঈশ্বর । 
.
 আমি আজকাল একটা  গাছের স্বপ্ন দেখি 
যে হাত পা ছড়িয়ে একলা দাঁড়িয়ে আছে সমস্ত শতাব্দীর ওপারে ,
যার চোখে স্বপ্ন ,অবুঝ মন শুধু ছুঁয়ে থাকে সোনালী মেঘ 
যার শাখা প্রশাখায় খুশি ,যেন উড়তে থাকা প্রজাপতি আকাশের গায়ে। 
আর আছে সেই জানলা 
যেখানে ঈশ্বরের মতো কেউ প্রতিদিন উঁকি মারে 
উঁকি মারে ,কথা বলে 
বলে যায় জীবনের গভীরে কিছু স্পর্শ 
মেঘ তখন লুকোচুরি খেলে 
জীবন তখন পালকের মতো হালকা 
আমি তখন গাছের মতো দাঁড়িয়ে মাথা নাড়ায় তোমার দিকে তাকিয়ে 
তুমি হাসলে বলে। 

সিধু কানু বুকে




সিধু কানু  বুকে 
.... ঋষি 

সমস্ত সকালে কাছে ,সমস্ত দিনের কাছে ,
দিন প্রতিদিনের কাছে 
আমি গিয়ে দাঁড়াই খোলা জোস্ন্যায় ভিখারীর মতো। 
আলোর পৃথিবীতে 
শহরে প্রতি অলিতে ,গলিতে ,বৃষ্টি দিনে 
জমা জলে 
আমি গিয়ে দাঁড়াই অপেক্ষার মতো। 
.
সময়ের অনবরত পাথর বৃষ্টি ,সময় বৃষ্টি ,আগুন বৃষ্টি 
না আমি শেষ করতে পারি নি নিজেকে ,
রুখে দাঁড়ানো আমার বুকে সিধু কানু আজ সাঁওতাল বিদ্রোহের স্রোত 
আমি চিৎকার করেছি কালো রক্তের মাটিতে।
প্রতিটা সময়ের  মৃত্যুর আগে আমি  রক্ত চানে নিজেকে পবিত্র করে বলেছি 
 আবার আসব। বারংবার প্রতিবারে 
আমি অসবোই  ফিরে 
যতক্ষণ না ধ্বংস করছি লজ্জা। সময়ের পরাধীনতা। 
.
সমস্ত সময়ের কাছে ,সমস্ত হৃদয়ের কাছে 
সমস্ত অধিকারের কাছে 
প্রশ্ন করেছে আমার সারা দেশ ,
প্রশ্ন করেছে আমার রক্তে ভেজা সাতচল্লিশ 
প্রশ্ন করেছে আমার  রুগ্ণ মা 
প্রশ করেছে আমার এমপ্লয়মেন্ট একচেঞ্জ  লাথি খাওয়া ভাই 
স্বাধীনতা শুধুই কি কিতাবী ,স্বাধীনতা কি মানুষের মৃত্যু ?
স্বাধানীতা নাকি গণতান্ত্রিক 
স্বাধীনতা নাকি জনগণের আলোর দিকে চলা। 
.
আমার পোড়া দেশে যখন কোনো ধর্ম কাঁদে 
আমার পোড়া দেশে যখন কোনো রমণী খালাস করে তার বেজন্মা প্রেম 
আমার পোড়া দেশে যখন যুদ্ধ ফেরত মৃত পতাকা স্বপ্ন খোঁজে 
আমার পোড়া দেশে যখন না জন্মানো হাত ভিক্ষে করে 
ভিক্ষে করে আমার মা শহরের পতিতা বস্তিতে 
ভিক্ষে করে আমার বোন সমাজের সিঁথিতে লাগানো সিঁদুরে 
ভিক্ষে করে আমার প্রেম আকাশের দিকে তাকিয়ে রক্ত ভেজা যোনিতে 
তখন আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করে 
তখন আমার বলতে ইচ্ছে করে সময়কে 
সালা বেজন্মা ,
মানুষের দুঃখ যদি না বোঝো 
তবে বৃথা স্বাধীনতা আওড়াতে এসো না। 

Thursday, July 23, 2020

মৃত সংলাপ



মৃত সংলাপ
.... ঋষি 

যেখানে দেশ ভাবতে গিয়ে
মানুষের বুকে জন্ম নিচ্ছে নিস্তব্ধ এক একলা শহর,
যেখানে প্রতিদিন মানুষকে সহ্য করতে হচ্ছে
নিজেদের লাশ,
জানি সেখানে খিদে শব্দটা ভালোবাসার মতো ক্যামোফ্লেজ করছে
ক্রমশ গড়িয়ে নামছে শহর দিনের থেকে রাত। 
.
মানুষ ছুঁয়ে দিচ্ছে রোজ
মৃত ফুটপাথ, 
মেয়ে মানুষের বুকে শুধু হাহাকার 
শুধু কান্না
জন্মানো সমাজে আজ অজস্র মানুষের পাপ, 
তবু মৃত সন্তানের মুখ কাঁদছে গাছেদের মতো একলা দাঁড়িয়ে
যেন গৃহস্থের শুন্য হাঁড়িতে শোক পুড়ছে চিতাকাঠে। 
.
দিন কাটছে 
যেমন কাটে রোজ,
শোক বাড়ছে, 
মৃত শহর আজ দাবানল বুকে এগিয়ে চলেছে 
ফুটন্ত হাঁড়িতে মৃত মানুষের চামড়ার গন্ধে। 
মানুষ স্বপ্ন দেখছে আবার জন্মাবে বলে
মানুষ কাঁদছে নিজেকে হারাবে বলে,
মৃত আগামীর বুকে শুয়ে থাকা প্রেম 
সীমান্তে গোলাবারুদে পুড়তে থাকা দেশ,
কিছু হচ্ছে না, কিছু বদলাচ্ছে না
শহরে বাড়তে থাকা জল, মৃত মানুষের কোলাহল 
মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে কবির পুরোনো  সংলাপ
আবার আসবো ফিরে।

কালবেলায়

কালবেলায় 
... ঋষি
.
বুকগুলো ছিঁড়ে গেছে
ভিন্ন হাজারো মহাদেশের মতো আমাদের  প্লেটনিক ভাবনায়
আজ স্বপ্নের ঘরে উচ্চতার কয়েকফুট। 
নদীগুলো সব মিশে গেছে
একের পর এক ভাংগাচোরা সম্পর্ক রেশ
আমাদের প্রতিফলিত ভাবনাকে বিচ্ছুরিত করেছে আগামীতে
আমাদের অনন্ত নিরিবিলিতে। 
.
যেখানে  কেউ কোত্থাও নেই
যেখানে কোনো শব্দ নেই, 
যেখানে  সহস্রপ্রাচীন ভাংচুর বুক শুধু অনন্ত অপরাধ, 
সেখানে আর কিছু নেই 
জন্মের তিন পুরুষ ছুঁয়ে সময়ের কালবেলায়
আমরা পাথরে লিখেছি নাম। 
.
বুকগুলো সেলাই করে 
কষ্টগুলো খোদাই করব ক্রমশ দাবদাহ, 
অনন্ত ভাবনাদের বুকের উচ্চতায় স্বপ্নের কয়েকফুট
জানি দিনগুলো ঠিক কেটেই যাবে গত জন্মের মতো। 
জানি আগামীতে জন্মাবে আমাদের মতো মুখ 
আমার মত কেউ তোমার বুকে দাঁত দিয়ে খোদাই করবে অক্ষর 
মাত্র চারটে অক্ষর, 
তারপর সেখানে ফুটবে স্নেহ, ফুটবে স্পর্শ। 
জানি সবকিছু মুছে যাবে একদিল 
সিলখোদাই করে আকাশের বুকে ফুটে উঠবে দুটো নক্ষত্র
আমাদের মতো ।  

Tuesday, July 21, 2020

বৃষ্টির স্যিগনেচার



মৃত বৃষ্টি ,
.
গৃহপালিত চাদরের আড়ালে শুয়ে থাকা সামাজিক বুক।
ভিজে মাটি  
ভিতরে সান্ত্বনা ছিল
সময় আছে ,যেমন ঘড়ির কাঁটার চলার শেষ নেই 
যেমন শেষ সময়ের  ফিরে আসা নতুন ঋতু বৃষ্টি 
তোমার শরীরে। 
.
বেলফুলের গন্ধমাখা অনেকগুলো দিন 
জানি হাজারো মৃত পুরুষ শুয়ে  তোমার বুকে ,
ভিজের মাটি 
পুরুষ মানুষের ভিড়ে ভিড়ে হাঁপিয়ে ওঠা সম্বল তোমার গরম কড়াতে 
সদ্য পাঁক দেওয়া নারকেলের পুর 
তারপর দুধপুলি। 
.
হয়তো গভীরে প্রাণ নেই , তবু হাত, তবু মুখ
জীবনেরে পাশবালিশ জড়িয়ে এক বিশাল আকাশ তোমার সুখ। 
মানুষ জানে না সময়ের গভীরে শুয়ে থাকা সত্যটা 
মানুষ  মৃত্যুকে ভালোবাসে সেকারণে 
ভালোবাসে মৃত সময়ের রোমন্থনের হাহাকারে যন্ত্রণার দামামা বাজাতে। 
চিরস্থায়ী বলে মানুষের সভ্যতায় কিছু নেই 
ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তরা তাই তো দামী এতো 
দামি এতো সন্তানের মুখে লেগে থাকা জীবিত প্রাণ 
আর মুহূর্তের বাঁচাটুকু।
.
মৃত বৃষ্টি আমার এই চিঠি চিরকাল বেহিসাবি আকাশের মেঘে 
তোমার  বেরঙা ভিজিয়ে দেওয়া শহর , 
অজস্র নিস্তব্ধ কলরব 
বুকের ভিতর রক্তক্ষরণ 
মনে হয় 
যদি প্রতিটা বৃষ্টি ফোঁটা রক্তের মতো হয়ে লাল হয়ে যেত 
যদি হয়ে আমার এই  একলা বৃষ্টিতে ভেজা মৃত্যুর মতো। 
তবুও শুভেচ্ছা তোমায় 
শুভেচ্ছা তোমার প্রতি জন্মের পর আমার মৃত্যুর বৃষ্টিতে,
আমার স্যিগনেচার 
রক্তের বৃষ্টিতে। 
.

ইতি 
ঋষি 


Rain is another reason of LOve


Rain is another reason of LOve
.... ঋষি 

কত কিছুর মানে হয় না 
বিকেলের জানলার শার্শিতে গড়িয়ে নামা জল আমার আগামীতে ,
সারা শহর ভিজে গেছে ,  স্নেহের বারান্দায় মেঘ 
তুই ভিজছিস 
আমি ভিজছিস 
ভিজে চলেছে সারা শহর যখন ভাবনায়। 
.
আমি রৌদ্র হতে পারি নি 
দুঃখ নেই মোটেই 
আসলে সত্যিটা কি জানিস চলন্তিকা আমি রৌদ্র হতে চাই নি ,
হতে চেয়েছি এমনি শহরের বৃষ্টি ,
ফিরে আসা ব্যস্ত শহরে  যখন ব্যাস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে একলা ভিজছে 
আমি হতে চেয়েছি বৃষ্টিমেঘ। 
.
জানিস  তো চলন্তিকা মানুষ বৃষ্টিতে ভেজে না আজকাল 
শুধু মজা দেখে বারান্দায় দাঁড়িয়ে 
কিংবা ঘরের জানলা দিয়ে বাড়িয়ে  দেয় মনের হাত ,
সকলেই বৃষ্টি দেখতে চায়,ছুঁতে চায়  
কিন্তু ইদানিং কেউ আর বৃষ্টিতে ভিজতে চায় না তেমন করে । 
আবার অনেকে বিরক্ত হয় 
স্যাতস্যাতে মেজাজে কফি কাপে চুমুক দিয়ে 
ঢুকে পরে শুকনো একটা একলা রেজিস্তানে 
যেখানে উটের সফরে 
তারা খুঁজতে থাকে পিরামিড কিংবা মৃত শহর। 
.
আসলে মানুষের ভাবনার বারান্দা দিয়ে এখন আর আকাশ দেখা যায় না 
দেখা যায় না বুকের ভিতর জমানো  কয়েকশতকের  জমা মেঘ ,
মানুষগুলোর আজকে শুধু ভয় পায়  
ছাতা কিংবা রেইনকোট গায়ে পালাতে চায় বৃষ্টির থেকে দূরে 
নিজের থেকে দূরে 
সত্যি বলতে কি ইদানিং তাদের মধ্যে খুব কম কেউ আছে 
যারা বৃষ্টির বিকেলে আমার মতো তোকে ছুঁয়ে ভেজে 
কিংবা মনে করে 
Rain is another reason of LOve । 


Monday, July 20, 2020

মহেঞ্জোদাড়ো


 
মহেঞ্জোদাড়ো
... ঋষি 
.
তোমাকে ছুঁতে চেয়ে আমাকে ছোঁয়া 
সে যেন অলীক স্বপ্ন মেঘেদের ঘরে ধ্বংস মহেঞ্জোদাড়ো ,
বিশ্রামে ছুঁয়ে আছে পোড়া মাটির তুমি 
ক্রমশ  ক্ষয়িষ্ণু ভিতের উপর অজস্র টেরাকোটার কাজ ,
ফুলে ঢাকা সভ্যতা আজ 
সলিল সমাধিতে। 
.
প্রতিটা মৃত্যু নিয়ে আমার শ্রাবনের শব্দরা পাখি হয়ে উড়ে বেড়ায় আকাশে 
অজস্র কণ্ঠ জুড়ে মেকি মহেঞ্জোদড়ো নিজেকে প্রকাশ করে 
শুধু তোমাকে ছোঁবে বলে ,
আমি আকাশের গায়ে পরম স্নেহে  গড়ে তুলি স্থাপত্য 
দর্শকগণ তোমরা মুগ্ধ হতে পারো 
কিন্তু তোমাকে ছোঁয়ার অধিকার তাদের কে দিল। 
.
তোমাকে ছুঁতে চেয়ে আমাকে ছোঁয়া 
ওম বিষ্ণু নমঃ,আমার প্রাণ পাত্রে  ক্রমাগত ধ্বংস সভ্যতার ভিত ,
মৃত্যুকে ভয় করো হে সভ্যতা 
যে নারীর নাভিতে জন্মে গেছে অজস্র  ইতিহাস 
সেই ইতিহাসকে ভয় করো। 
ভয় করো ইতিহাসের পুরনো পাতায় শিবের তান্ডব 
কিংবা সমুদ্রমোন্থনে উঠে আসা পাপ আজ আমার গলায়। 
আসলে আমি পিছনে ফিরে দেখতে ভালোবাসি 
খুঁজতে ভালোবাসি আমার নারীর পিঠে সিংহের মোহর,
এ কোন দাসত্বের অধিকার নয় 
অধিকার আমিত্বের। 
 রাখালদাস বাবু যদি  বেঁচে থাকতেন  
তবে হয়তো নতুন করে আবিষ্কার হতো আজ হারানো পাথরের শোক ,
কিংবা উনি লিখতেন আমার  মহেঞ্জোদাড়ো  শুধু আমারি 
ঠিক যেমন  তোর  শরীরে ভাঁজে  লুকোনো অজস্র  তিল  
আমার চিৎকারে। 

Sunday, July 19, 2020

ব্রাত্য



ব্রাত্য
... ঋষি
আমি কখনো গ্রাম খুঁজি নি
আমি কখনো শহর খুঁজি নি 
খুঁজেছি নিজের বুকে ভিতর  পা দিয়ে একটা চাষের জমি
এক মুঠো আশা। 
এক সহস্র নাটুকে অভিমান বীজ বপন করে
ফলিয়েছি ব্যাস্ত থাকা। 
.
আমি কখনো ঈশ্বর দেখি নি 
আমি কখনো মানুষ দেখি নি 
আমি দেখেছি প্রাগৈতিহাসিক আদিমতা 
যা সৃষ্টির আনন্দে পরিবর্তন করেছে সভ্যতা খড়, কুঁটো থেকে। 
জানি এই দর্শনের কোন লাভ নেই
লাভ নেই খনিজ প্রয়োজনে মানুষের ষড়রিপু সিদ্ধান্তের। 
.
মানুষ যাপনের নামে খুলে ফেলেছে বিস্ময় 
স্লোগানে লিখেছে বিষ কর লে দুনিয়া মুটঠিমে। 
হাতের মুঠোফোনে সময়কে করেছে ব্রাত্য
আর দর্শনকে পাগলামী। 
কাগজের পাখিগুলো আজ সারা বাড়ির সিলিং বেয়ে ওড়ে
কলম্বাসের স্ক্রিনে ধরা পরে পৃথিবী মনিটর স্ক্রিনে 
আবর্তনের মহিমায় বিবর্তনের ভুমিকায়,
আমি জানি মানুষ আজ  অবাক হতে ভুলে গেছে
ভুলে গেছে কান পেতে শুনতে নিস্তবদ্ধতায় ঝরনার শব্দ। 
তাই আমি গ্রাম, শহর কিছু খুঁজি না
খুঁজেছি আনন্দ অংকুরিত ভাবনায়।  
  

স্বপ্ন ছুঁয়ে



স্বপ্ন ছুঁয়ে 
... ঋষি 
.
স্বপ্নে আমি তোমার বাড়ির দিকে এগোই 
তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে -হলুদ শাড়ি ,
স্বপ্নে আমি তোমার পাড়ার গলিতে যাই 
তোমার পাড়ায় রাস্তায় বিতানের দোকানের পাশে 
সিগেরেট পোড়াই। 
.
স্বপ্নে আমি তোমার দরজায় দাঁড়াই 
তুমি পা বাড়াও দরজার বাইরে। 
তারপরে তোমার দুয়ারে দাঁড়িয়ে চিৎকার করো 
বেড়িয়ে যা ,যা বেড়িয়ে 
ভীষণ অচেনা আমি। 
.
স্বপ্নে আমি তোমার চারিপাশে ঘুরি 
বাইকের স্টার্টে আমার গতি তখন আশি ,নব্বই ,
তুমি মাঝখানে দাঁড়িয়ে 
সময় স্বপ্ন তৈরী করে আমার পৃথিবী 
আর একলা আমি। 
.
স্বপ্নে আমি দেখতে থাকি তুমি পাহাড়ী নদী 
চঞ্চল তোমার বুক ,তুমি নৃত্যরত স্বয়ংবরা,
দরজা খুলে যায় 
আমি আৎকে উঠি একলা আকাশে অন্য চাঁদ 
আর বিছানায় চোখ বুজি। 
.
স্বপ্নে আমি উইকেন্ড 
কিংবা পাহাড়ের চূড়ায় বরফ ঠোঁটে  আগুন ,
মুখে লাগে হিমেল হাওয়া 
বুক ছুঁয়ে যায় তোমার বুকে 
আর তারপর সেই আমি। 

Saturday, July 18, 2020

মিসিং লিংক



মিসিং লিংক 
..... ঋষি 

জন্মান্তরে আগুন ছুঁয়ে আমি নেমে এসেছি আমার পৃথিবীতে 
একটা দুস্তর তফাৎ আমার জন্ম আর জন্মস্থানে। 
জন্ম বলতে আমি বুঝি একটা জ্বলন্ত কবিতার চিৎকার 
একটা অর্ধেক জন্মানো শরীর 
যদি কখনো কমপ্লিট জন্মাতে চায় ,কিংবা মরতে 
তখন জন্মরা বেওয়ারিশ হয়ে যায়। 

বাবাকে দেখছি চিরকাল মুখের কাছে বই গুঁজে 
আমার হৃদয়ে গুঁজে দিয়েছেন অজস্র সৃষ্টির যন্ত্রনা ,
আর মাকে যতদূর মনে পরে 
তিনি প্রতিদিন বাবার পকেটে নিয়ম করে ভরে দিয়েছেন দুঃস্থ সংসার। 
প্রতিদিন খাবার থালায় ছোট হতে হতে মাংসের টুকরো 
আমার জন্মকে বাবার মতো নিরামিষ করে তুলেছে। 

এই যে এখন যে লোকটা বুকের কাশি নিয়ে সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকে 
আমাকে দেখলে বলে এত সিগারেট খেও না 
ছেলেটার মুখের দিকে তাকাও ,
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি বাবার মতো কেউ 
আমাকে বলে 
জন্মের সৃষ্টি মর্মের গায়ে। 

বিভীষিকা বলে জীবিত কিছু হয় না 
সকলকেই পুড়ে যেতে হয় নিয়মিত চিতায় মানুষের অভ্যেসে ,
মৃত্যু যেখানে শুয়ে থাকা কাল্পনিক প্রেমে 
সেকানে জন্ম শব্দটা শুধু মাত্র অভিমানের 
বাবাকে বলিনি কোনোদিন 
আমারও অভিমান হয় আকাশটাকে ছিঁড়ে রক্ত দিয়ে খুঁজতে ইচ্ছে করে 
পরিচয়। 

বাবা  মাঝে মাঝেই স্বপ্নে  ডেকে বলেন, 
" ওই যে খোকা দেখ দেখ আমার অতীত কেমন আমার ওপর অভিমান করেছে   " l
বাবা অতীত খুঁজছেন প্রতিনিয়ত 
আর আমি খুঁজছি একটা সমীকরণ, 
একটা মিসিংলিংক  l

কোয়ান্টাম থিওরি পড়েছি আমি,  তার সাথে বাবার চলন গমন মেলেনি 
অপরাহ্ণে বুভুক্ষের মতো থালা পেতে বসে আছি 
মায়ের মুখে শুনেছিলাম আকাঙ্খা কখনো ব্যর্থ হয় না l
তবু একটা প্রশ্ন ছিল  তোমাদের কাছে  জানো 
প্রতিটা জন্ম মানুষের নিজের নয় যখন 
তবে প্রতিটা মুহূর্তের মৃত্যু নিয়মিত কেন ?

অন্ধকার প্রেম

অন্ধকার প্রেম 
.... ঋষি 
.
রাত্রের একটা অদ্ভুত রং আছে 
মুখোমুখি অন্ধকারগুলো দাঁড়িয়ে গল্প করে সুখ দুঃখের  ,
আর অন্ধকারের মাঝে আলো 
একটা জ্বালার মতো জুড়ে থাকে হঠাৎ একফালি হয়ে।  
.
চলন্তিকা জানিস এই গোলোকে মাঝখানে যেখানে আলো ,অন্ধকার মিলিত 
সেখানে একটা হৃদয় বাস করে ,
বাস করে বেঁচে থাকা বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা হয়ে। 
জীবন যেখানে জীবিত পর্যায়ে লিখে দেয় সরগম বুকের রিডে 
ঠিক সেখানে জন্ম নেওয়া ঈশ্বর অন্ধকার লিখতে থাকে 
লিখতে থাকে মুখোমুখি অন্ধকার যুগের ধ্বংস হয়ে। 
.
মুখোমুখি অন্ধকারের মাঝে আমি ছড়িয়ে দি বিভিন্ন রঙের খেলা 
খেলারা  সব ফুটে ওঠে অন্ধকারে 
চোখে ঝকমক করে 
আমি হাসতে থাকি 
শুধু কালো রং অন্ধকারে হারায় মুখোমুখি প্রেমে। 
রাতের সাথে নৈশব্দের একটা অদ্বুত রং 
নৈঃশব্দ যেন আমার প্রেমিকা যে আকাশের কান্নার সাথে দিনযাপনে ব্যস্ত 
আকাশের তারারা নিস্তব্ধ তখন 
জোনাকিরা নেমে আসে সারা শরীর বেয়ে আলোর স্রোত। 
আমি চুপচাপ চেয়ে থাকি সমুদ্রের খালাসি হয়ে 
নারীদের সমুদ্রের চিরকাল ভীড় ব্যবসায়িক জাহাজের 
কিন্তু অন্ধকার সমুদ্রের 
নারীরা অন্ধকার খোঁজে আমার মতো 
বাঁচার তাগিদে 
আমারও যে অন্ধকারকে প্রেম মনে হয়। 

সময় দরকার



সময় দরকার 
.... ঋষি 
.
ভালোবাসতে এসে দেখলাম 
জীবন আসলে পরে পাওয়া চৌদ্দ  আনা ,
ক্রমশ বৃষ্টি মুখরিত ত্রাণ  শিবিরে দাঁড়িয়ে তুমি অসাধারণ সাংসারিক বিপ্লব  
আমি খুব সাধারণ একটা মুখ এই শহরে। 
ক্রমশ আবছা হতে থাকা  শহরের দৃষ্টি বলে  দেয় 
দূরত্বরা কাঁচের ওপাশে বৃষ্টি হয়ে নামে। 
.
ভাঙা শৈশব ,কুঁড়িয়ে পাওয়া ভাঙা হাঁড়িকুঁড়ি নোংরা ভাগাড়ে 
অবাঞ্চিত কিছু স্মৃতি ,
জন্মদিন ঠিক যেন নর্দমার পাশে পড়ে থাকা না জন্মানো শিশুটা 
যার রাষ্ট্রের নাম ফুরিয়ে আসা ভারতবর্ষ। 
অন্ধকার বিশ্বের কাছে ঈশ্বর শুধু একটাই " খিদে "
আর বাকিটুকু বেঁচে থাকা অন্ধকার হাতড়ানো। 
.
একবিংশ শতকে দরজায় দাঁড়িয়ে কোনো ক্ষুদার্থ প্রেম খোঁজে ফেরে 
তার পুরোনো প্রেমিকাকে ,
সেই একই সময় এক শিক্ষিত যুবক চাকরি ভিক্ষা করে অশিক্ষিতের কাছে। 
বোবার পৃথিবীতে দর্শক আসনে সময় 
হাততালি দেয় 
প্রতিবার হেরে বাঁচার আগেই মৃত্যুর সম্পর্ক সেজে 
গেঁথে দেয় দেওয়াল বুকের প্রতি কোষে আর শিরায় । 
কাঁচগুলো সব অস্বচ্ছ হতে থাকে 
হতে থাকে চিৎকার 
আমার মতো কেউ রাষ্ট্রের বুকেতে তেরেঙ্গা গেঁথে রক্তাক্ত করে বর্তমান 
আর তোর মতো কেউ চলন্তিকা জড়িয়ে ধরে আমায় 
কানে কানে বলে ফিসফিস করে 
বোকা ছেলে 
আমি যদি তোর প্রেমিকা হতে পারি 
তবে হতেই পারবো মা ,শুধু সময় দরকার। 

Friday, July 17, 2020

অচেনা




অচেনা 
... ঋষি 
..
এইভাবে গল্পটা হাঁটি হাঁটি পায়ে গৃহপালিত হয়ে গেছে 
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে তুমি যে মুখটা দেখে পাগল হতে 
আজ আর হও না অরিত্র ,
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে পাশের তোমার মায়ের সাথে ঘরে শুলে
তুমি আমাকে মাঝরাতে ফোন করে ডাকতে 
আজ আর সেই  ডাকটা শুনতে পাই না 
বরং মাঝরাতে আমি শুনি তোমার নাক ডাকার শব্দ পাশের ঘর থেকে। 
.
আমি এখনও অপেক্ষায় থাকি প্রতিবছর 
আর কেউ না আমার জন্মদিনটা তুমি ঠিক মনে রাখবে ,
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক যখন বারোটা 
আগের মতো তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খাবে ,
কিংবা কোনো বিয়ে বাড়ি অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় 
শাড়ি পছন্দ করে দেবে ,কপালের টিপটা ঠিক করে বলবে 
তোমাকে ঠিক পরীর মতো লাগছে। 
.
অরিত্র তুমি জানো না আমি আজও তোমার ঘামের গন্ধটা 
তোমার সিগারেট  পোড়া ঠোঁটের স্বাদটা আমি  খুব মিস করি ,
মিস করি তোমার অফিস থেকে ফিরে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে চুমু খাওয়া 
কিংবা বারংবার আমার চোখের তলায় কালি  দেখে প্রশ্ন করা 
তুমি ভালো আছো তো সোনা।   
অরিত্র আমি  জানি আজকের আমিটা  দেখতে আর  আগের মতো নেই 
তোমার সংসারের দায়িত্ব ,তোমার সন্তানের দায়িত্ব 
কখন যেন আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে, 
কখন যেন আমি নিজের থেকে তোমাকে তোমার সংসারকে প্রাধান্য দিয়েছি ,ভালোবেসেছি 
কিন্তু আমি হারিয়েছি আমার সেই সুন্দর চেহারাটা  
যেটা তুমি ভালোবাসতে।
.
অরিত্র বিশ্বাস করো আজকের এই  আমি
আর পুরোনো সেই আমিটার  তফাৎ শুধু এটাই
যে দিনে দিনে আমি তোমার আরো কাছে গেছি  ,
তোমাকে আরো ভালোবেসেছি। 
আর তুমি দিনের পর দিন শুধু সরে গেছো আমার থেকে অনেক দূরে ,
আজকের বালিশের ফাঁকে দূরত্ব দেখে মনে হয় 
আমরা দুজনে দুটো আলাদা অন্য গ্রহের বাসিন্দা। 
দুটো আলাদা পৃথিবীতে আমাদের বাস 
আর আমাদের যোগাযোগের,একসাথে থাকার  একটাই  কারণ 
সমাজ 
আমার মাথায় সিঁদুর 
তোমার সন্তান 
আর তার বাইরে আমরা বহুদিন অচেনা। 
.

 

আদুরে বেড়াল



আদুরে  বেড়াল
.... ঋষি 
মধুমিতা দি কেমন আছো তুমি ?
সময়ের ব্যালকনিতে কি আজও তুমি আসো বিড়ালের মতো ?
যৌবনে কি দেখতে ছিলে তুমি 
তোমার পশমে মেঘ ,সে সব থাক,
তোমার এক সমুদ্র মেঘের মতো চুল 
অসময়ের বৃষ্টি। 
.
বিয়ে হয়ে গেলো তোমার 
যেমন প্রতিটা দিনের শেষে রাত্রি আসে ঠিক তেমনি তুমি 
আজ ফিরে এসেছো বাপের বাড়ি। 
সময়ের সংসার 
তোমার বর নাকি দ্বিতীয় সংসার পেতেছে 
তুমি এখন বড়ি দেও ,কাপড় কাচো  ,পূজা পার্বণে ভাবের ঘরে থাকো। 
জানলা দিয়ে মানুষ দেখো 
আর আমি দেখি তোমায় ঠিক চিড়িয়াখানার পাখিদের মতো। 
.
মধুমিতা দি কেমন আছো তুমি ?
ঠিক আগের মতো কোনো এক একলা দুপুরে তুমি কি কাউকে জড়াও,
ঠিক আগের মতো তুমি কাউকে বলো 
যদি তুই ছোট না হতিস তোকে আমি বিয়ে করতাম। 
সময়ের ব্যালকনিতে এখন লম্বা রৌদ্র ছায়া ফেলে হেঁটে যায় একলা বিকেলে 
একটা সাদা বেড়াল আজকাল তোমার খুব প্রিয় ,
আমিও এখন আর বিড়াল ছানা নই। 
.
সময়ের দরজায় তোমার কালো চুলের পাশে সাদা চুল 
আর ঠিক মাঝখানে একটা লাল নদী 
লাল সিঁদুর। 
প্রশ্ন করি নি আমি ,ওটা আর কেন ,
কারণ জানি এখন ওটাই তুমি 
খাঁচার ভিতর বন্দী আকাশ সময়ের দরজায়।  
.
এতটা সময় বদলালো ,
বদলালো গান্ধারীর  একশো সন্তান আজ প্রায় একশো ত্রিশ কোটিতে 
কত শহরের নাম বদলালো ,বদলালো কত দেশের মানচিত্র 
কিন্তু সত্যিটা কি জানো 
বদলাও নি তুমি মধুমিতা দি ,
একই রকম তোমার রূপ ,তোমার গন্ধ ,তোমার ভাবনা 
ঠিক আগের মতো ,
আর আমি সেদিনকার তোমার আদুরে বেড়াল।  

.
  

মুখোমুখি




মুখোমুখি 
... ঋষি 
.
ধীরে ধীরে আমি ঠিক তোমার মুখোমুখো বসি 
পাড়ার মোড়ে বুড়ো অশ্বথ্থটা আজও কেন আশ্রয় দিয়ে যায় রৌদ্রে  ?
ধীরে ধীরে আমি তোমার পাশে  বসি 
যেমন লালুভুলু বসে থাকে পাড়ার ভোলাদার চায়ের দোকানের সামনে ,
ধীরে ধীরে আমি নামতে থাকি সিঁড়ি বেয়ে তোমার গভীরে 
কিছু কথা অজস্র স্বভাবে একলা হয়ে যায়। 
.
বলেছিলে আসবে ফিরে 
ছেড়ে যাওয়া জেটি ,গঙ্গার ভোঁ ,কানের কাছে তোমার গলার স্বর 
আজ আসছি রে ,
আমি জানি যারা চলে যায় তাদের খুব কমই ফিরে আসে 
সময়ের ঘরে ,
আমাদের পাড়ায় ভবা নাকি পাগল হয়ে আজকাল চিৎকার করে কাঁদে 
কিন্তু ভবা কখনো ফিরে আসে নি নিজের কাছে। 
.
ধীরে ধীরে আমি তোমার মুখোমুখো বসি গঙ্গার ঘাটে 
শেষ সূর্যটা ডুবে যাওয়ার আগে ,ঘরফিরতি সাধারণ ঘরে ফেরার আগে 
রোজ দিনটা সেদিনকার মতো শেষ হয়ে যায়। 
অন্ধকার সন্ধ্যা নামে কালো বিড়ালের মতো ধীর পায়ে
তুমি হাসতে থাকো সন্ধ্যামালতী। 
হঠাৎ এই পথে ঘুরতে-ঘুরতে কীভাবে এসেছো সন্ধ্যামালতী তোমার বাড়ি কোথায় ?
জানি সুদূর পেরু থেকে তুমি হাঁটতে হাঁটতে আমার জন্য এসেছো। 
এইবার পিছন ফিরি  
তোমার গায়ের গন্ধ নাকে এসে লাগে
আজ এই বয়সে এসেও সবকিছু  কেন জানি নতুন মনে হয়।
প্রশ্ন করি কেমন আছো তুমি? 
রাত  বাড়তে থাকে 
দেখি তুমি প্রতিবারের মতো তুমি ফিরে যাও অন্ধকারে। 
 

Thursday, July 16, 2020

তোমার কবিতা



তোমার কবিতা
... ঋষি
.
তোমার মাথার ভিতর উড়ে গেল একটা এরোপ্লেন
আমি স্বপ্নে দেখি
একটা পাখির ছায়া তোমার উপর দিয়ে চলে গেল। 
অসংবিধানিক সংকেত
বুকের স্কেলিটনে লেগে থাকা বারান্দায় তোমায় দেখি রোজ
বাসন্তি রংএর শাড়ীতে।  
.
এই একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে আমার ভয় করে
ভয় করে রৌদ্র ছায়া, 
বুকের ভিতরে গাছটায় যেখানে অজস্র পাখিদের কলরব 
অজস্র সবুজ যেখানে নিজেকে খুঁজতে ব্যাস্ত,
সেখানে তোমার কবিতা 
কখন যেন আকাশ হয়ে যায় পাখিদের। 
.
আমি তো স্বীকার করি সর্বদা কত কম জানি আমি
কত কম আমার দাঁড়িপাল্লার জীবন।
আমরা কতটা বুঝি একটা গাছকে, গাছেদের শোকগুলি 
ঠিক কতটা বুঝি একটা পাখির জীবন
কিংবা পাখির পালকে। 
আমরা শুধু গাছ খুঁজি নিজেদের আশ্রয়ের খোঁজে
আমরা খুঁজি পাখির ডানা, 
সারাজীবন আমাদের থেকে যেতে ইচ্ছে পাখিদের মাঝে
কোনো গাছের আশ্রয়ে।
আমারতো মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তোমার মাথার উপর 
গাছ হয়ে বাঁচি, 
কিংবা পাখির ঠোঁটে তোমাকে কুড়িয়ে নি 
 গাছেদের সালোকসংশ্লেষ লিখবো বলে   । 

কো লা জ


কো লা জ 
.... ঋষি 
.
জন্ম আর মৃত্যুর মাঝে তফাৎ কি জানো 
দুটোই সত্যি ,
বিজ্ঞাপনে যারা সমুদ্রের শঙ্খ দেখিয়ে জলকেলি করে ,
তাদের নোনতা শরীরে রক্তের ছোপ। 
.
মানুষ ঠিক ততটুকু বোঝে 
যতটুকু চোখের আয়নার গভিরে শুয়ে থাকা পথ ,
তারপর অনেকটা ঈশ্বর শুধু কল্পনায় ভালোমন্দ চায় ,
মানুষ বদলায় 
কারণ মানুষ নিজের অভ্যেস উপকূলে বদলাতে চায়। 
.
মৃত্যু দেখলে তোমার ভয় করে চলন্তিকা 
আমি আকাশের ভিড়ে অজস্র শহরের মুখে মৃত্যু দেখি রোজ ,
সময়ের গায়ে দেশলাই ঘষে 
নিয়মিত আমার রাষ্ট্রে ,মুখাগ্নি করি প্রয়োজনীয় সমাজ ,
সেখানেও জন্ম থাকে তুমি জানো  বোধহয় 
পুরনো হলদেটে চিঠি সেখেনেও লোকানো থাকে বুকের ভাঁজে।
.
জন্ম মৃত্যুর কাব্যে 
একটা কমন ফ্যাক্টর হলো যেখানে আমি তুমি কেউ দায়ী নই ,
জন্মানো সত্যির মতো 
প্রতিটা বেঁচে থাকাকে বারংবার মরতে হয় সময়ের কাছে। 
কেউ হাতে তুলে নেয় রক্ত 
কেউ অভিমানে ভরে রাখে এক বুক আকাশে,
উড়িয়ে দেয় নিজেকে আকাশের ডানায় 
তারপর সত্যিটা সবাই জানে
 ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।
  

Wednesday, July 15, 2020

মানুষ জন্ম



মানুষ জন্ম 
... ঋষি 
.
লোকে বলে বড় গম্ভীর হুমদোমুখো আমি 
আমি বলি সময়ের হিসেবে আমার বয়স নিতান্ত কম না।
চোখে চশমা নেই বটে
বুকে ব্যাথা আছে, 
আছে এক পাহাড় সময়ের শোক এই বুকে পাথর
আর একটা জ্যান্ত নদী চলন্তিকা তুমি।
.
সত্যি বলতে কি চায়ের দোকানে আমি  শুনতে পাই 
 রাষ্ট্রের খবর,ঝড়, বৃষ্টি মেঘের খবর, অনবরত মৃত্যু আর মানুষের খবর, 
বাড়ির মহিলাদের কাছে আমি শুনতে পাই 
নিজের ছাড়াও অন্যদের হাঁড়ির খবর, হাজারো গসিপ আর নিয়মের ভালো মন্দ,
বন্ধুদের আড্ডায় আমি শুনতে পাই হা, হুতাস আর অভাব 
সেখানে আমি বুঝতে পারি মেয়েরা কি করে বৌদি হয়ে যায়। 
শুধু সময়ের কাছে দাঁড়িয়ে আমি ধাতস্থ হতে পারি
বুঝতে পারি আমি কোথায় দাঁড়িয়ে 
কে আমি 
আর কি আমার যোগ্যতা। 
.
শুধু সময়ের দরজা খুলে আমি ঢুকে পড়ি সেই বাড়িটায়
যেখানে আমার চারপাশে হাজারো  মানুষের চিৎকার,
সন্তান হারা মায়ের কান্না,ধর্ষিতার যুবতীর কান্না 
কান্না সেই সাংসারিক মহিলার 
যাকে নিত্য ব্যাবহার করে সমাজ তার নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে,
যাকে নিয়মিত নিসব করে সম্পর্ক দায়িত্বের আছিলায় । 
আমার ছাকনি চোখে উঠে আসে অসহায় মানুষের হাহাকার
হাহাকার কর্মহীনতার, হাহাকার খালিপেটে মিডডে লাইনে দাঁড়ানো মানুষগুলোর
হাহাকার সেই সন্তানের যার হাতে স্লেটের বদলে সমাজের পাপ 
হাহাকার সেই ছেলেটা যে জানে না তার পরিচয়। 
.
এর পরও আমি জানি  আপনারা বলবেন আমি হুমদোমুখো গম্ভীর
অনেকেই বলবেন আমি দুতিন কলম আঁচড় কাটি বলে আমি কবি,
আসলে কি জানেন এই সব যন্ত্রনার আমার উপশম নেই
তাই আমার চিৎকার, চেঁচামেচি আর ভালো লাগে না
ভালো লাগে না অন্যের মতো বিনা কারণে দাঁত কেলিয়ে হাসতে। 
তাই আমি সময়ের বাড়িটার দরজা বন্ধ রাখি
জুতোগুলো খুলে রেখে আসি রাষ্ট্র নামক নিচের তলার সিঁড়িতে,
আর পোশাক সব খুলে পড়িয়ে দি আমার রাষ্ট্রের হাভাতে মানুষগুলোকে , 
তারপর চলন্তিকাকে বলি দেখ আমি নগ্ন 
দেখ আমি শিশু । 
চলন্তিকা আমার হাতে তুলে দেয় কলম 
বলে লেখ সময়
নিজের মতো করে
বলে লেখ ধ্বংস সময়ের পাপের আর মানুষ জন্মের । 



মন পাখি

মন পাখি 
... ঋষি 
.
তোমাকে খুঁজতে গিয়ে আমি যেন  সবুজ চোখে একলা কোনো মন পাখি, 
মাটিপোকাদের নিস্তেজ শরীরে লুকিয়ে থাকা অভিব্যাক্তি 
আমি বুঝতে পারি। 
উপনিষদকে উল্টেপাল্টে নিলাম
উল্টেপাল্টে নিলান সময়ের বুকে বুক আঁকড়ে থাকা অভিমান, 
আজ এতদিন পর, আজ এতযুগ পর
তোমাকে খুঁজে পাওয়া  ঝড়জলের রাতে,সময়ের জরায়ু জুড়ে
আজ শুধু ফেলে আসা দাগ।  
.
স্থির সরোবরে ঢিল ছুঁড়ে  বলয় খুলে বারংবার  ছুঁয়ে যায় কূল 
মানুষের স্বপ্ন , 
তির চোখে পাখি, মাছ লোভী দৃশ্য  কেঁপে কেঁপে ওঠে
মানুষের ভয়, 
সময় নেমে আসে ছোঁ মারে 
তারপর হারিয়ে যায় সব। 
হঠাৎ মুহুর্তের  পদ্ম পাতায় কিছু জল পড়ে পথ ভুল করে
কিছুটা ছলকে পড়ে অসময়ের কাব্যে দৈনন্দিন, 
জল শাড়ির নীচে নীলসাদা কোমল আদিম  স্বাচ্ছন্দ্য
এক অপার রহস্যময় খণ্ডিত বোধ, 
মরীচিকা মনে হয়। 
.
তোমাকে খুঁজতে গিয়ে আমি যেন  সবুজ চোখে একলা কোনো মন পাখি, 
আজ সারাদিন শুধু গভীর আকাশে একলা হয়ে ঘুরেছি 
নিজের জাবরকাটা প্রক্রিয়ায়। 
রুটির মানচিত্রে এক দেশ আর পাঁজরের হাড়ের খণ্ড খন্ড করেছি 
ভাবনার সরোবরে সময়ের ঘুম। 
পিঠ লেগে গেছে রাষ্ট্র
পিঠে লেগে গেছে সময়ের সফরে বেদুইন উদ্দেশ্য
ইচ্ছেভাত বুড়ো আঙুল দেখিয়েছি ডানায় ভর করে  সভ্যতার মুখে।

Monday, July 13, 2020

ছ-টুকরো



ছ- টুকরো 
.... ঋষি 
মেঘ, শহর, জীবন 
অদ্যপ্রান্তে লেখা হ য ব র ল নিরুপায় ভাবনায়, 
ঋতু চক্র চিরকাল বেহিসাবি
তবুও সময় মাত্রা ছাড়ে না।  
মহাসমরোহে বাড়তে থাকা সময়ের চামড়ায় অতীতের কালো দাগ
কিছু দাগ তুলে ফেলা মুশকিল, 
কিছু বদলানো 
তবুও সময় একলা থাকে না। 
শহরে বাড়তে থাকা মৃত লাশ
অজস্র হৃদয়গুলো ঘরের চারাগাছে সবুজ খুঁজতে থাকে,
সাজানো সংসার
তবুও সময় ভালো থাকে না।
ফিরে আসছি শহর ধরে
দুপাশে ঝাঁ চকচকে রাস্তায় অসংখ্য একা ফেরা, 
অসংখ্য ইতিহাস 
তবুও সময় ঘুম আসে না। 
আজ রাতে বৃষ্টি সারা শহর জুড়ে
এক হাঁটু জল, মাথার সিলেবাসে  কাদা কাদা ভাবনা, 
আগামীর সেল্ফিতে তবুও বেঁচে ফেরা
তবুও সময় মরতে পারে না। 
মেঘ, শহর, জীবন 
শেষে লিখতেই হয় একটা পুড়তে থাকা  সিগারেট, 
তবু স্বপ্ন দেখা, ভাবনার মায়াজাল
তবুও সময় ছিঁড়তে পারে না।    

City Light



City Light 
... ঋষি 
.
একজন্ম বুকের ভিতর আঁকিবুকি 
একজন্ম শুধু মাত্র জীবিত ও মৃত শহরে অজস্র মৃত অসুখ। 
ইচ্ছে ছিল তোর বুকের পাহাড়ের গভীরে কবিতা লিখবো 
ইচ্ছে ছিল এক আকাশ সমুদ্র ঢেলে দেব 
কোনো ক্লান্ত  ছায়ায়
সময়ের মায়ায়। 
.
তিলোত্তমা বদলালো 
ঘরে ফেরা মেট্রো আজ সারা শহর জুড়ে সাপের নগরী ,
ঘোড়া ট্রাম বদলালো 
ক্রমশ হিসেবের টাইমটেবিল বদলে গেলো ইলেকট্রিক রিলেশনশিপ। 
উঠে গেলো বাবু সমাজ 
এখন কেতাদুরস্থ ভদ্রতার মুখোশে লুকোনো অভিশাপ। 
.
অভিশাপ আমার বুকে একবিংশ শোক 
সহস্র সফরের মুসাফির তার ঝোলা ব্যাগ খুলে একের পর এক ম্যাজিক ,
কর্পোরেট স্টাইল 
ম্যানিকুইন সাজানো সভ্যতার মুখোশে। 
খবরের পাতায় শুয়ে আছে হাজারো মৃতদেহ 
পরিসংখ্যান বদলায় 
নোংরা সভ্যতায়। 
আমিও কখন যেন মানুষে থেকে রক্তলোভী ভিখারি 
আকাশের খোঁজে 
চিৎকার করি 
বাঁচতে চাই 
বাঁচতে চাই সময়ের বুকে মাথা রেখে আমার সাজানো তিলোত্তমা ,
বলতে চাই আমার শহর
আমার সাম্রাজ্য 
আমার তুই 
শুধু আমার। 
 
 

Two face



Two face 
........ঋষি 
.
সেই মেয়েটাকে দেখেছিলাম নদীর মতো 
আজ যখন বজ্রপাত হয় আমি বুঝি প্রকৃতি জাগ্রত হচ্ছে 
সেই মেয়েটার মতো। 
আজ যখন ঘুম থেকে উঠে খবরে শুনি 
হাবড়া ট্রেন লাইনের পাশে পাওয়া গেছে বছর বারোর ধর্ষিত লাশ 
আমি বুঝি সেই মেয়েটা মৃত্যু চোখে তাকিয়ে পৃথিবীর দিকে। 
.
পৃথিবীতে দুটো জাত 
সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেছেন 
ঈশ্বর বলছেন অনেকটা ঘোর পথে এক হাঁটু জলে  দাঁড়িয়ে 
নারী  ও পুরুষ। 
এর মাঝে কোথাও কোনো প্রশ্ন নেই ,আছে পরিচয় 
ঈশ্বর ছাতা ছাড়া ,পায়ের কাপড় মাথায় তুলে ফিরে এসেছেন 
 ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স মতবাদে সিগমুন্ড ফ্রয়েড তুলোধোনা করেছে যৌনতা 
কিন্তু এর বাইরে 
সেই মেয়েটা শুধু চেয়ে ছিল আজ বহুযুগ একটা আশ্রয়ের খোঁজে। 
.
সেই মেয়েটাকেই  দেখছি 
চেনা মুখ ,চেনা ঠোঁট ,চেনা আঙ্গিকে 
অথচ ভীষণ অচেনা,
হাজারো মৃত পুরুষের বুকের উপর দাঁড়িয়ে সেই মেয়ে খোঁজে জ্বালা।  
তার চোখ জ্বলতে থাকে ,তার বুক পুড়তে থাকে 
হাতে তার নপুংসক পুরুষের রক্তমাখা  যৌনাঙ্গ। 
চোখে তার আগুন 
অথচ সেও প্রেম খোঁজে,
খোঁজে তৃপ্তি সিগমুন্ড ফ্রয়েডের বাইরে এক অন্য পৃথিবীর 
যেখানে ঈশ্বর ব্রাত্য,
ব্রাত্য সময়ের ভিড়ে জন্মানো কোনো নারী পরিচয় তার। 
আমি জানি সেও ভালোবাসতে পারে 
আমি জানি সেও ভালোবাসতে পারতো 
আমি চিনি তাকে জন্ম থেকে ,তার ফ্ৰক থেকে ,তার বিনুনি থেকে 
তার শাড়ি পড়া ,তার বড় হওয়া,তার সিঁথির সিঁদুর ,তার হাতের চুড়ি। 
এই শহরের বুকে খুব সাধারণ সেই মেয়ে 
এই সময়ের বুকে খুব সাধারণ সেই মেয়ে 
অথচ অসাধারণ কি জানো 
আমি চিনি সেই মেয়েটাকে  রোজ একটু একটু করে
কি ভাবে নিজেকে বদলায় রোজ সে সময়ের ভিতরে  । 

Sunday, July 12, 2020

আমি মিস্টার ভচ্চন নই

আমি মিস্টার ভচ্চন নই 
... ঋষি 
.
আমি মিস্টার ভচ্চন নই
নই কোন আজকের ভারতবর্ষের স্বপ্নের পর্দার উজ্জ্বল মুখ, 
আমি সাধারণ
তাই আমার মৃত্যুটাও খুব সাধারণ। 
মেডিকেল, এম্বুলেন্,  রাস্তায় রাস্তায় ঠোঁকর খেয়ে 
মৃত সন্তানের স্মৃতি আগলে আরও সাধারণ আমার মা,বাবা আর আত্মীয়রা। 
ভারতবর্ষের অলিতে গলিতে যে উপছে পরা একশো ত্রিশ কোটি
আমি তাদেরই একজন। 
.
আমি জানি ঈশ্বর মানুষ হতে পারে না
তাই বলে আমার ছোট্ট পৃথিবীর একশো ত্রিশ নম্বর ঢাকুরিয়া লেনে
যে মানুষগুলো কোভিডের সাথে যুজছে 
তারা ভালো করে খেতে পারে না আজ বহুদিন।  
কারণ আমার রাষ্ট্রের ঈশ্বরেরা খাবারের বদলে খবর বানাতে ব্যস্ত 
ব্যস্ত প্রতিদিনকার গনতন্ত্রে এঁকে দিতে রাজতন্ত্র। 
.
জানি আমরা সাধারণ, আমাদের  সত্যি বলতে নেই
বলতে নেই খালিপেটে আছি, বলতে নেই ত্রানের টাকা লুঠ হয়ে গেলেও, 
বলতে নেই আমার রাষ্ট্র  আজ শুধু বেশ্যাদের কবলে
যারা শরীর বদলাবার মতো গদিবদলের ধান্দা করে পার্টিঅফিসে বসে,
যারা ভোটের জন্য মানুষের বদলে মানুষ  খুন করে
খুন করে আপনার প্রতিদিন 
শুধু মিথ্যে কথায়। 
.
কিন্তু তাদের সম্বন্ধে বলতে নেই
বলতে নেই এই সময় আমাদের লজ্জা
বলতে নেই এই রাষ্ট্র মানুষের নয় মৃতদেহের 
বলতে নেই সত্যি কথা  রাষ্ট্রের ঈশ্বরের নামে। 
কারণ তাদের জনগন খেল না মরলো কিছু এসে যায়, 
কিছু এসে যায় সেই কুকুরের মতো গ্রামেগঞ্জে ফুটপাথে বাঁচা 
কিংবা আমাফানে ঘর হারানো মানুষগুলোর জন্য।
.
শুধু দিনবদল 
শুধু সুর্যকে দেখার চেষ্টা লন্ঠনের আলোয়,
আর আমরা সাধারণ
আর আমরা আঁধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রাষ্ট্রের কাছে সংখ্যা।
আর আমি অজানা শবঘরে শুয়ে থাকা কোভিড আক্রান্ত মৃতদেহ 
যার সৎকার সময়ের কাছে ভিতী
রাষ্ট্রের কাছে মাথা ব্যাথা, 
খবরের পাতায় মুনাফার হেডলাইন 
আর আপনাদের কাছে আহা, 
কিন্তু তবু আমি সত্যি বলতে পারছি কারন আমার আর মৃত্যুর ভয় নেই। 
.
বিশ্বাস করুন  
এই সময় যদি  মিস্টার ভচ্চনও  সিনেমার পর্দায় থাকতেন 
নিশ্চয় বলতেন 
সাজানো ডায়ালোগে 
মেরে প্যায়ারে ভারতবাসীও... 
.
( পুনশ্চ ঃ এই কবিতা নিতান্ত সময়কে দোষী ভেবে লেখা, এই কবিতার সমস্ত চরিত্র 
কাল্পনিক, সত্যের দায় সময়ের আমার দায় শুধু কলমে।) 

 


 
 
  

Saturday, July 11, 2020

ক্লান্ত বৃষ্টি


ক্লান্ত বৃষ্টি  
... ঋষি 

বৃষ্টিদের বলিনি সব 
সময়ের গন্ধে কৌটো বন্দি ছক্কা ,পুঁটের  বৃত্তান্ত। 
.
শুধু ঝড় ঝড়
শুধু অহরহ। 
সময়ের রৌদ্র মুড়ে কেমন এক স্যাতস্যাতে মেঘলা মন। 
.
শহর ভিজছে 
এক হাঁটু জল ভেঙে  বাড়ি ফিরে আসছে সেই সময়ের গল্প   ,
সামনে রিকশা এসে থামলো 
থামলো শহর। 
.
ক্রমশ চোখ বন্ধ 
ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্যাতস্যাতে কিছু উপন্যাসের জীবন আজ বৃষ্টিতে 
কলমের নিব বেয়ে জীবন যখন যন্ত্রনা হয়ে যায় ,
তখন একলা বৃষ্টিতে আমার শহর 
ক্লান্ত  ভীষণ। 
.
বৃষ্টিদের বলিনি সব
একলা দাঁড়িয়ে ভিজেছি শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চায়ের ভাঁড় ,
ক্রমশ পরিত্যক্ত এক আলো ফুরোনো কাব্য।  
গাড়ির ওয়াইপারে এখন শহর ভীষণ আলাদা 
ভীষণ অন্যরকম আবছা 
শহরের আলোর পোস্ট।  

Friday, July 10, 2020

শেষ মাটি

শেষ মাটি
... ঋষি 
.
আমার মৃত্যুর পর শেষ মাটি দেওয়ার আগে 
কোনো প্রশ্ন রেখো না মনে, 
কারণ প্রশ্নরা বড় কনফিউসিং
বরং আমার মৃতদেহের উপর লেপে দিয়ো সামাজিক নিয়ম। 
আমি জানি সমাজ শব্দটা একবিংশ নাটকে 
বর্তমান মৃত্যুর সমার্থক
একটা হিসেব মাত্র,একটা নাটুকে ক্রাইসিস। 
.
আমার মৃত্যুর পর আমার বেজন্মা চারহাজার কবিতাকে
আগুনে পুড়িয়ে দেয়ো,
না হলে রাষ্ট্র পুড়ে যাবে, 
না হলে পুড়ে সাজানো সমাজের মুখ একবিংশ নাটকে। 
রাস্তায় মিছিল করবে বেশ্যাদের পুরো ইউনিট
খুলে দেবে যোনি
সারি দেওয়া তাদের  যোনিমুখে জন্ম নেবে আগামীর ভাইরাস আক্রান্ত ভবিষ্যত। 
.
আমার মৃত্যুর পর আমার  জীবিত প্রেমকে 
একটা গোলাপ দিও, 
যেখানে শুকনো মুখে চিঁড়ে ভেজানো সমাজ একটা মঞ্চ মাত্র
যেখানে প্রেম মানে ভগ্নাংশের জীবনে অজস্র প্রশ্ন উত্তর। 
যেখানে রাষ্ট্র হলো পাঁচ মাথার মোড়ে দাঁড়ানো পাগলা নিতাই
যে প্রতিটা শব্দের শেষে জুড়ে দেয় মৃত রাষ্ট্র অশ্রাব্য ভাষায় 
যে প্রতিটা কান্নাকে মুড়ে দেয় জন্মের আশায়। 
.
আমার মৃত্যুর পর আমাকে আগুনে পোড়াবার আগে 
প্রশ্ন করো, কে আমি, কি ধর্ম ? 
দেখবে আগুনের শিখায় জন্ম নেবে আগামী ভারতবর্ষ 
সেখানে উত্তরে জন্মাবে প্রতিটা মানুষের মুখে, 
মৃত মানুষ
মৃত সময় 
মৃত ভবিষ্যাত 
আর জীবিত একটা ভাবনা
সব ঠিক হয়ে যাবে,বদলাবে সমাজ, বদলাবে মানুষ। 
.
আর তখনি ঈশ্বর হাসবেন 
বলবেন এই জীবনে একটাই সত্যি
মৃত্যু, 
আর বাকিসব নাটক 
সাজানো স মা জ ।  


 



Thursday, July 9, 2020

নমস্তুতে


নমস্তুতে 
... ঋষি 
.
বিবর্তন আর আবর্তনের তফাৎ এ 
কিছু প্রশ্ন পুরাতন ,
আধুনিকতার নিলজ্জ আগ্রাসন সময় যেখানে পণ্য 
বন্ধ খাঁচার ভিতর জীবন বড় নগন্য। 
.
চেনা আসবাব 
চেনা আবর্তন 
ফিরে আসা সময় শুধু মাত্র পা বাড়ানো একবিংশ। 
সভ্যতা ফিরছে নারী 
তুমি শক্তিরূপে নমস্তুতে 
তুমি ধাত্রী রূপে নমস্তুতে ,
তুমি মাতৃ  রূপে নমস্তুতে 
তুমি প্রেমের রূপে নমোস্তুতে 
নমস্তুতে আমার বুকের মাটিতে তোমার সাধন
আমার দেশের মাটিতে সাধন 
সাধন ঈশ্বর রুপী জন্ম। 
.
তবু জানো কান্না পায় 
বিবর্তন আর আবর্তনের তফাৎ এ 
সময় বদলায় ঠিক ,
কিন্তু বদলায় না প্রাচীন হস্তিনাপুরে দ্রৌপদী। 

কেউ কারো নয়

হঠাৎ করে কেউ হারায় না যে মেয়েটা বাড়িতে রোজ শাঁখ বাজিয়ে পুজো করে তার ও ইচ্ছে করে আকাশ ছোঁয়ার, ব্যাগ ভর্তি স্বপ্ন নিয়ে যে ছেলেটা বাজারে এসে দা...