Monday, August 29, 2022

ম্যাজিক শুধু কোলাহল

 ম্যাজিক শুধু কোলাহল 

... ঋষি 

.

তোমার দু চোখের ভিতর আজকাল নিজেকে পাই না 

শুধু দেখি  শরতের আকাশ ,স্নিগ্ধ দুটি চোখে 

আর তথাস্তু ,

চারিদিকে প্যান্ডেল ভর্তি লোক ,ভীষণ উৎসবের তৈয়ারি  

ভীষণ এক কোলাহল মাথার ভিতর 

কিন্তু তোমাকে পাই না। 

.

তোমার দু চোখের ভিতর আজকাল দেখি সবুজ শস্যের মাঠ 

কোনো অজানা চাষি বৌয়ের মুখ 

দেশ জুড়ে শুধু অনাচার ,খিদে ,

তুমি সকলকে আস্বস্ত করছো সব ঠিক হবে 

সকলে ভালো থাকবে 

কিন্তু আমি ভালো থাকতে পারি না। 

.

তোমার দুচোখের ভিতর আজকাল নিজেকে পাই না 

দেখি এক শান্ত ,শীতল নদী তিরতির করে বয়ে যায় একলা মনে  ,

বয়ে যায় কোনো অচেনা সন্ধ্যায় আমাদের প্রতিশ্রুতি 

সুখে ,দুঃখে 

সময়ের স্রোতে, 

কিন্তু শুধু আমি বসে থাকি নদী ধরে 

জল বাড়ে ,জল কমে 

এ যেন আশ্চর্য এক ম্যাজিক ,

কিন্তু বিশ্বাস করো  আমি আশ্চর্য হতে চাই নি 

চেয়েছি অসংখ্য রেখাপাতে একটা বিশ্বাস 

একটাই আশ্বাস 

আমি আছি তুমি আছো তাই।  


উদাসীনতা

 উদাসীনতা 

... ঋষি 


প্রতিটা মানুষ তার ভাবনার দোতারায় বেঁচে থাকে 

ভালো কিংবা খারাপ 

ঠিক কিংবা ভুল, 

এর বাইরে কেউ কখনো ভাবতে পারে নি,

মানুষগুলো হৃৎপিণ্ডের উপর মাথা রেখে শুনুন 

প্রতিটা মানুষ ঠিক নিজের কাছে। 

.

আমি দেখি অমিতের মুদির দোকানের সামনে দুটো কুকুর 

একটা সাদা ,একটা কালো ,

অমিত কাজের ফাঁকে কিংবা কোনো কোনো খরিদ্দার  ছুঁড়ে দেয় কিছু খাবার 

কালোটা জেতে ,সাদাটা জেতে ,

আমাদের ভাবনাগুলো ঠিক এমনি যে জেতে মনের দাবি তার 

তার অহংকার। 

.

আমি আমার বাবাকে দেখেছি সারাজীবন সংসার করে দিনপাত করেছে 

মা খবর রেখেছে বাবার পকেটের ,বাবার সংসারের 

হয়তো বাবারও খবর রেখেছে ভিতরে ভিতরে 

কিন্তু বাবা সারাজীবন কি করলো ?

না শিল্প ,না সম্ভোগ ,শুধু উদাসীনতা ,

শুধুই সংসার 

আর আমি বা আমরা যারা লিখি 

তারা কি করি ?

হঠাৎ কবিতা লিখতে লিখতে যুদ্ধ বেঁধে যাচ্চে সাদা আর কালো কুকুরটার 

কে জিতছে বুঝতে পারছি না 

তবে বুঝতে পারছি 

আমার বুকের হৃদপিন্ডে কোথাও শব্দরা প্রতিবাদ করছে 

এই ভাবনার কোনো সম্ভবনা নেই। 

 


খতিয়ান



খতিয়ান  

... ঋষি 

.

আমরা কেউ নিখুঁত কিংবা সম্পূর্ণ নই 

সূর্য নিখুঁত ,চন্দ্র নিখুঁত ,নিখুঁত হোসেনের ছবি ,শক্তির কবিতা 

আমাদের জন্মগুলো নিখুঁত হওয়ার চক্করে 

কিন্তু কোথাও কিছু কম তো ছিল ,

কম তো আছে আমাদের নিখুঁত ভাবনার আর বাস্তবের মাঝে। 

.

নিখুঁত একটা একলা রাত 

নিখুঁত তোমাকে মিস করার কবিতারা 

তবু আমি নিখুঁত নই 

আমি কোনো রাতজাগা চোখের গভীর অভাব নই 

শুধু আমার ভাবনারা কোথাও গা ভাসায় এই শহরের কবিতায় 

আর চলন্তিকা তোমার মাঝে। 

.

আমি কিংবা আমরা সকলেই ধূর্ত ,জালিয়াত ,ভিখিরির মতো নিজেদের কাছে 

তবু সময়ের কাছে দাঁড়াই  অহংকারে 

আমি কিংবা আমরা প্রমান করার চেষ্টা করি আমি ঠিক ,আমি ভুল 

অথচ আমি কিংবা আমরা কিছুতেই বুঝতে চাই না 

আমরা  কেউ নিখুঁত নই। 

আমরা জন্মাই  ভুল স্বপ্নে ,ভুল কামে 

এই শহরে বেঁচে থাকার জন্য ,

আমরা মরতে থাকি 

ভুল মানুষকে ভালোবেসে ,আঘাত পেয়ে 

বুক ভেঙে মরার জন্য ,

অথচ আমরা সকলে নিখুঁত সাজতে চেষ্টা করি 

কিন্তু কিছুতেই বুঝি না আমাদের ভুলগুলো এত নিখুঁত 

যা আমাদের ভালো থাকতে দেবে না। 

Friday, August 26, 2022

নির্লিপ্ততা

নির্লিপ্ততা 
... ঋষি 
নিজের শরীরে হাত দিয়ে যখন মনে হয় তোমাকে ছুঁয়েছি
তখন মনে হয় নদী আর সমুদ্র বিপদজনক
তখন সত্যি তুমি মানে ঘুম না আসা রাত 
বাথরুম মানে পারমানবিক চুল্লি
নিজের ভিজে চুলে হাত দিয়ে মনে হয় শ্মশানের শোক। 
.
নিজের শরীরে হাত দিয়ে যখন মনে হয় তোমাকে ছুঁয়েছি 
তখন মনে হয় একটা বিস্ফোরণ জরুরী
তখন মনে বাস্তবতার শেষে একটা খোলা চিঠি তোমার উদ্দেশ্যে
তখন নিজের প্রতিটা রোমে প্রতিফলন 
একটা অন্ধকার রাত।
.
নিজের শরীরে হাত দিয়ে যখন মনে হয় তোমাকে ছুঁয়েছি 
তখন বুঝতে পারি একটা মৃত শরীর এক নারীর গভীরে 
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চশমা,বুককেশ, পড়ার টেবিল
অসংখ্য নিয়ম ছুড়ির ডগায়, 
তখন মনে হয় একটা বোতলের ভিতর একটা 
বন্ধ সমুদ্র 
অথচ বোতলের মুখে মোহনা
একটা মৃত পুরুষ শরীর ভাসছে সমুদ্রের অনেক নিচে
মাছেরা ঠোক্কর মারছে
আর তুমি ডুবুরি হয়ে খুঁজে চলেছো আমার মৃতদেহ। 

দুঃখ গাঁথা

দুঃখ গাঁথা 
ঋষি 
দুঃখগুলো পথেঘাটে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত ভিখীরি
অবসন্ন আকাশের প্রেমে মশগুল। 
কাহাতক যন্ত্রনারা মেসিন হয়ে জীবনকাটাতে পারে
বুকের গন্ধটা পাগলা চাহুনির মত তাড়িয়ে বেড়ায়। 
ছেঁড়া ফ্রক পরা রাস্তায় ঘোরা মেয়েটা মত দুঃখগুলো 
যার ভবিষ্যতে শরীর আছে কিন্তু সময় নেই। 
দুঃখরা মেঘেদের দেশে অভিমান খোঁজে 
সময় খোঁজে মাটি আর দুঃখরা আস্তানা খোঁজে। 
দুঃখদের আসলে কোন সঠিক ঠিকানা থাকে না 
তারা পথে দাঁড়ায় কারণ পথ দুঃখদের পথের শেষ থাকে না। 

উদ্দেশ্য শান্তিনিকেতন

উদ্দেশ্য শান্তিনিকেতন 
.. ঋষি 
সকাল সকাল বেড়িয়ে পরি
উদ্দেশ্য শান্তিনিকেতন, 
নতুন কেনা গাড়ি, কিছুদিন হুল্লোড়
সাথে আছে ফ্যামিলি,মা, বোন, শালা শালী বন্ধুরা
একটু রিফ্রেশমেন্ট 
গন্তব্য শান্তিনিকেতন। 
.
কিছু ব্যাপার - পৌষমেলা 
কিছু ব্যাপার - গ্রামের হাট
কিছু ব্যাপার -লাল  মাটির গন্ধ 
কিছু ব্যাপার- একটু বন্ধু বান্ধব, মালটাল 
কিছু ব্যাপার - একটু বাউলের গান কিংবা গার্লফ্রেন্ড। 
.
তারপর.. 
ভুবন ডাঙার মাঠ, শনিবারের হাট
বেশ কিছু আর্টিস্টিক স্থাপত্য ব্যাগস্থ করা
পোস্ট অফিস মোড়ে দুস্থ রিকশাওয়ালার সাথে রসিকতা
ডিয়ারপার্ক  কংকালীতলা
হঠাৎ রবীন্দ্রনুরাগ, হঠাৎ রবীন্দ্রসংগীত চড়া গলা
মিউজিয়ামে রবি ঠাকুরের চটি, তার ঘড়ি,আঁকার তুলি
হতভাগ্য বাঙালির হারানো নোবেলের 
খোয়াইয়ের অনবদ্য ভাষা
অমর্ত্য সেনের কিংবা কনিকাদির বাড়ি।
.
শুধু এতটুকু
শান্তিনিকেতনে রবি ঠাকুর খুব সস্তা, মাত্র দু টাকা কিংবা পাঁচ টাকায় পাওয়া যায় রবীন্দ্রনাথের মুর্তি। 

Tuesday, August 23, 2022

অশ্রাব্য

 অশ্রাব্য 

... ঋষি 


বুকের কাছ থেকে কি যেন গলে গলে পরছে 

অনেকগুলো বলা শব্দ 

বোধহয় কি অশ্রাব্য গালাগাল ,

অনবরত গড়িয়ে নামছে রক্ত ,অনিবার্য কিছু ভাবনাপ্রবাহ 

পিছু ছাড়ছে না 

পিছলে যাচ্ছে শব্দ। 

.

আজ আর কবিতা লিখবো না 

পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে ফাঁকা ফুটপাথ ,এই শহর 

হাজারো মানুষের শোকে ঘুমিয়ে পড়ছে গভীরে মানুষ ,

হাইড্রেনে পাওয়া গেছে সদ্য জন্মানো এক  মৃতদেহ 

গালাগালি দিতে ইচ্ছে করছে নিজেকে 

তোমাকে ,তোমাদের ,পুরো সময়টাকে ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে। 

.

মাঝে মধ্যে করে 

ভাবনাগুলো বেকার সময়ের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় ,

একের পর মৃতদেহ ,সময় ,মুখ বয়ে যায় 

না না নদী না ,অবশ্যই হাইড্রেন। 

সত্যি বলার অপরাধে মানুষকে নিজের ভিতরে বন্দি হতে হয় 

সত্যি বলতে না পারায় মানুষকে মাথা নিচু করতে হয় ,

হঠাৎ মনে হচ্ছে আমি সময়কে চটকাচ্ছি দুহাতে 

তবু পিছলে যাচ্ছে ,

কিছুতেই ধরা দিচ্ছে না সময়ের ঠোঁট বর্তমানের চুমুতে ,

সব কেমন ঝাপসা লাগছে 

আজ আর কবিতা লিখবো না। 

স্বাগতম বৃষ্টি ফোঁটায়



 স্বাগতম বৃষ্টি ফোঁটায় 

... ঋষি 


অনবদ্য গর্ভবতী মেঘেদের সম্ভাবনাকে স্বাগতম 

স্বাগতম মাঝ রাস্তায় দাঁড়ানো মানুষের অপেক্ষাকে ,

বৃষ্টি ঝরুক 

নিজের মতো ভিজিয়ে যাক সম্ভাবনা ,

সবুজ গাছেদের কথা শুনতে চাওয়া  মানুষ

স্বাগতম সবুজ কথাদের । 

.

আজীবন কোনো প্রতিশ্রুতি 

পুরোনো কাব্যের বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা জুড়ে আঁকিবুকি 

মনের সেই ভাবনাটুকুকে স্বাগতম ,

স্বাগতম বাজতে থাকা শেষ পুরোনো গিটারের শব্দ

বার্ধক্যের কয়েকপশলা সাদা চুল 

স্বাগতম জীবন আগামী পর্যায়। 

.

স্বাগতম অনবদ্য ভাবনার মেঘ 

স্বাগতম আকাশের বুক ছিঁড়ে ছিটকে যাওয়া চোখ 

স্বাগতম  ভিজে মাটি ,বৃষ্টিতে ভেজা ফুটপাথ কিংবা আমার শহর 

বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটাকে স্বাগতম। 

স্বাগতম হঠাৎ ছুঁয়ে থাকা  মুহূর্ত ,সেদিন আমাদের

স্বাগতম তোমার তোমার নড়তে থাকা ঠোঁট 

তোমার ভিজে চুল 

হঠাৎ দূর থেকে দেখা সেই প্রিয় মুখকে। 

প্রতিটা বৃষ্টি ফোঁটায় আজ শুধু মন কেমনের কথা 

প্রতিটা সম্ভাবনায় আজ শুধু বাঁচার কবিতা 

তবু আমি চলন্তিকা বলিনি 

বলেছি আজ একটু কয়েক ফোঁটা  বৃষ্টিতে ভিজতে চাই

বলতে চাই স্বাগতম তোমাকে ভিজে শহরে ।  

       

Sunday, August 21, 2022

ঋতুকালীন









  
ঋতুকালীন
.. ঋষি 
কি বলি বর্ণমালা, মায়া
উত্তরের দরজাটা বন্ধ করা হয় না আজকাল 
শীত করে 
তবুও জড়ানো হয় না তোমায়। 
এই সব ঝড়, বাদলার দিনে তুমুল বৃষ্টিতে 
মেঘ জমে 
যাদের মনে পড়ার কথা না 
তবু মনে পড়ে। 
.৩
আগুনে দাঁড়িয়ে আছি 
আগুনের মাঝখানে আছি 
তবু শরীর পোড়ে না বোধহয় মৃত্যুর আগে 
আগুনে মন পোড়ে,শরীরে ঘাম হয়। 
শুকনো পাতার উপর দিয়ে হেঁটে চলেছি আমরা
শব্দ হয়, আনন্দ হয় 
কিন্তু পিচ রাস্তায় দাঁড়ালে নিজেকে একলা লাগে 
তোমাকে পাই না।
৫ 
একবার বৃষ্টিতে দাঁড়াবো আকাশের নীচে
শুধু ছাটে তৃষ্ণা মেটে না কিছুতেই, 
জানি অপেক্ষা ঋতুকালীন একটা শব্দ
যা শব্দের ইতিহাসে রেঁনেসাস। 



Thursday, August 18, 2022

বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা

 

বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা

...ঋষি 


 বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যা

সোঁদা মাটির গন্ধে মোড়া আমার কবিতা ?

সেই মেয়েটা 

চলন্তিকা তুমি আসবেই ,

আমি লিখবো না ভাবি ,তুমি বৃষ্টিতে ভিজে এসে দাঁড়াও 

আমার খড়ি ওঠা ভিখিরী হাতটা ধরো 

তুমি জানলা খোলো চলন্তিকা ,আমি কবিতা লিখি। 

.

অবিশ্রান্ত বৃষ্টি 

অস্তিত্বের সমস্ত অবয়ব জুড়ে তোমার নিঃশ্বাসের গন্ধ ,


সারা শরীর জুড়ে তোমার কবিতার ছাপাখানা 

ক্রমশ শব্দরা বৃষ্টি ফোঁটা হয়ে ভাবনার সাদা পাতায় 

তোমার মুখটা  দেখতে পাই 

কি করে যেন কবিতা লেখা হয়ে যায়। 

.

তুমি হাসো ,ম্যাজিক ,ম্যাজিক ম্যাজিক 

কানের কাছে ফিসফিস, 

কাল তুমি মস্ত বড় কবি 

কাল তুমি সাহিত্য পুরষ্কার 

কাল তোমার শব্দরা সব আমাকে  ভালোবাসার কবিতা 

আমি আছি আজ ,কাল ,পরশু ,মুহূর্ত ,দিন ,রাত ,সবসময় 

        আমি চলন্তিকা 

তুমি লেখো আজ আমার কবিতা 

         এই বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায়। 

আমার কাছে শান্তি

 আমার কাছে শান্তি 

... ঋষি 

.

যখন কোনো যন্ত্রণার দিনে 

তুমি মা মাথাটা চেপে ধরেছিলে তোমার বুকে 

অনুভূতি বোঝাতে পারবো না শান্তি 

সেই শান্তি আমি পাই নি যেদিন প্রথম চাকরির খবরটা আমি পাই। 

.

এই শহর 

মানুষের বন্দর

সকলে চোখ ছলছল করে দাঁড়িয়ে আছে 

সমুদ্রের জাহাজ ভেসে যাওয়ার আগে ডকে দাঁড়ানো লোকজন 

কারো চোখে জল 

কারোর চোখে অদ্ভুত এক আতংক 

অথচ আমার বুকে ব্যাথা ,আবার কোথাও শান্তি 

কি ভালো লাগছে। 

.

কিছুই স্বচ্ছ নয় 

সেই জাহাজ মাঝ সমুদ্রে ,আমার শরীর ক্রমশ হালকা 

কে তুমি রমণী ?কে তুমি রাধিকা ?

কিছুক্ষন আগে রাইস টিউবে খাওয়া খিদে গুলো 

আমার পেটের ভিতর একটা জীবন ,

জ্যামিতিক সূত্র মেপে ,নিয়মমাফিক ,সময় মাফিক ,

আমার কষ্ট ,আমার ক্ষত ,ক্রমশ চেনা মুখ ভ্যানিশ 

আমার শেষ লেখা কবিতা। 

.

ভীষণ শান্তি 

ক্রমশ চোখ বুজে আসা ,মুছতে থাকা জীবন 

পারাবার বোধহয় ওপারে কোথাও ,

লোকে বলে মৃত্যু 

কিন্তু আমার কাছে শান্তি।  

Sunday, August 14, 2022

মুক্তি

 মুক্তি 

,,, ঋষি 


কতজন মেঘ হতে পারে জানি না 

জানি না কতজন আকাশের মাঝে ভেসে বেরিয়ে তোমাকে খুঁজতে পারে ,

ঘুম ভাঙা চোখে 

চোখের দুর্বলতায় ধরা সেই মুহূর্তরা 

আমি ঈশ্বরের কাছে প্রশ্ন রাখছি 

বলুন মহান ঈশ্বর একজন নারী পুরুষের কাছে কি চায় ? 

.

ঈশ্বর হাসছেন 

বলছেন যাও একটু হাওয়া গায়ে লাগিতে এসো 

যাও চেষ্টা করো জেনে এসো সকলের কাছে ,

আমি সময় কাছে গায়ে দাঁড়ায় 

সময় হাসে উত্তর দেয় অধিকার,

আমি সমাজের কাছে গিয়ে দাঁড়াই 

সমাজের চিৎকারে কান ঝালাপালা 

কেউ বলছে অর্থ ,কেউ বলছে নির্ভরশীলতা ,কেউ বলছে সন্তান 

আমার কান বন্ধ হয়ে আসে। 

.

আমি আবার ঈশ্বরের কাছে এসে দাঁড়াই 

ঈশ্বর এক কুৎসিত মহিলা দেখিয়ে বলেন বিয়ে করবে 

আমি বলি আমি বিবাহিত 

ঈশ্বর তখন আমার প্রেমিকাকে দেখিয়ে বলেন ভালোবাসবে 

আমি বলি আমি তো ভালোবাসি ওকে 

ঈশ্বর তখন এক সুন্দরীকে দেখিয়ে বলেন বোন বলবে 

আমি বললাম ,আমার কোনো বোন নেই 

ঈশ্বর হাসলেন 

বললেন ওরে মূর্খ এক নারীর মাঝে সব কিছু থাকে 

শুধু খোঁজার চোখ চায় 

তুই বৃষ্টি হয়ে নাম ,তুই মেঘ হয়ে থাকে 

তাতে কি 

একজন নারী একজন পুরুষের কাছে বাঁচার মুক্তি চায়।  


বৃষ্টিভেজা

 বৃষ্টিভেজা 

... ঋষি 


বৃষ্টির ফোঁটাদের কোনো দেশ নেই 

কোনো নিয়ম নেই 

শুধু অনেকটা স্নেহ যেন একলা বুকের মাঝে  ধরা। 

উপর থেকে এই শহরটার দিকে তাকালে জ্বলে ওঠে সন্ধ্যের বাতি 

ফাঁকা বৃষ্টির লাইটপোস্টের নিচে ভাবনারা খেলা করে 

খেলা করে এক বিশ্ব শুধু ভালোবাসবে বলে। 

.

আমি নিয়ম বুঝি না 

বুঝি না দীপান্বিতার কেন মন খারাপ হয় 

কেনই বা একটা ফাঁকা ঘর আমার চলন্তিকার বুকে 

শুধু ধরতে গেলেই ছুটে বেড়ায় 

ধরা দেয় না একমুহূর্ত 

সারা শরীর আমার বেয়ে ভিতরে বাইরে শুধুই চলন্তিকা স্পর্শ। 

.

আমি মেঘ হতে পারি না 

আমি একা  হতে পারি না 

শুধু এই বৃষ্টির ফোঁটাগুলো কথা বলে

চুপিচুপি ধরা দেয় একের পর এক মুহূর্ত

জানি না কেন একা করে যায়। 

উপর থেকে এই ভিজে শহরটার দিকে তাকালে মনে হয় একলা বড় 

মনে হয় এই শহরের বুকে হাজারো গল্প মানুষের বুকে 

জানি না কত দীপান্বিতা লুকিয়ে এই শহরের স্রোতে 

জানি না চলন্তিকা কবে বলবে আমিও বৃষ্টিতে ভিজতে চাই 

জানি সে বাঁচতে চায় 

জানি সেও হাসতে চায় 

কিন্তু তার চোখের হাসিতে আজ শুধু বৃষ্টি ধরা থাকে 

আমি মেঘ 

ভালোবাসা বোধহয় বৃষ্টি ভেজা বাতাসে থাকে। 

পাবলিক টয়লেট



পাবলিক টয়লেট 

... ঋষি 

পাবলিক টয়লেট থেকে বের হই

ডাইনে দেখি আগস্ট মাস আর বা দিকে ১৫ ই আগস্ট 

নিজের পিছনে তাকালে অবাক হই 

অদ্ভুত উন্নয়ন ,

আর সামনে তাকালে রক্তহীন  ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া আগামী

আমি বেরিয়ে এলেও পাবলিক টয়লেট থেকে 

কিন্তু এমোনিয়া মেশানো ঝাঁঝালো গন্ধটা কিছুতেই  পিছন ছাড়ে না। 

.

জানতে ইচ্ছে করে ছিয়াত্তরে পা দেওয়া স্বাধীনতা  

একজন সুন্দরী যুবতী 

                    কিভাবে যেন বিগতযৌবনা এক  বুড়ি ,

জানতে ইচ্ছে  করে কে বা কারা  তার পুরুষ ?

কোন পার্টির ঘরে তার বাসস্থান ?

প্রশ্ন আসে ,প্রশ্ন ভাসে ,কানঘুষিতে শুনি 

বোধহয় বয়সকালে  লেসবিয়ান ছিল বুড়িটা ,

সকলেই চলে গেছে বুড়িটার অধিকার ছেড়ে 

শুধু মুকুট বদলেছে ,স্বাধীনতার যৌনাঙ্গে হয়তো চুল পেকেছে 

কিন্তু এই বুড়িটার  কিচ্ছু বদলায় নি বয়স ছাড়া। 

.

জানতে ইচ্ছে করে রাষ্ট্র শব্দটার লিঙ্গ কি ?

মনে হয় শিবলিঙ্গ,হতেই পারে পীরবাবা , 

         কিংবা চোখের সামনে কালো পর্দা লাগানো জনতার দরবার।

জানতে ইচ্ছে করে এক্সাক্ট কত লিটার রক্তের  বদলে স্বাধীনতা 

জানতে ইচ্ছে করে রক্ত বিন্দুগুলো  সত্যি ছিল তো  সেই বোকা মানুষগুলোর? 

তবে এখন কেন বদলানো মানুষের শরীরে জন্তুর রক্ত।

বুঝতে থাকি ,হাঁটতে থাকি 

ঝাঁ চকচকে ভাঙা চোরা  পিচরাস্তা দিয়ে হুশহাশ করে গাড়ি ছুটে চলে 

তার পর গা-ড়ি   ,

আজকাল নিজের পিছনে হাত দিয়ে দেখি খুব ব্যাথা 

বুঝতে পারি মানুষের মেরুদণ্ডের ব্যাথাটা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ  

সময়ের রোগ। 

.

বুঝলেনা মশাই  আজ রাত্রি ধরে  ঘুমোতে হবে ভালো করে

কোমরের ব্যাথাটা বাড়ছে ক্রমশ ,

কাল সকালে  আবার সেই বুড়িটাকে আদিখ্যেতা দেখাতে হবে   

যেতে হবে পতাকা তুলতে ,

তবে মশাই বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না 

আজ পাবলিক টয়লেটের বাইরে আমি  ওই বিগতযৌবনা বুড়িটাকে দেখলাম

আর বুঝলাম রাষ্ট্র আজও পাবলিক টয়লেটের পাশে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছে

আর আমরা টয়লেটে ঢুকছি ,বেরোচ্ছি 

কারণ একমাত্র  মূত্রত্যাগ করাটাই আমাদের অধিকারের মধ্যে পরে।  

 



 

Friday, August 12, 2022

আব্বুলিশ



 আব্বুলিশ 

... ঋষি 


ভুল মুহূর্তের কিছু ছায়াছবি 

হঠাৎ আনছান করা চুপচাপ বিকেলে কিছু পুরোনো মাটির ভাঁড় ,

ভ্রান্ত গল্পগুলো মুখ খিঁচিয়ে বলে তফাৎ যাও 

অথচ আমি বোকার মতো হাসি 

হয়তো কিছু ভুলভাল স্বপ্ন দেখি জীবনের কবিতায়  

কিন্তু চলন্তিকা বিশ্বাস করো ইচ্ছে করলেই কবিতা লেখা হয় না। 

.

দিন কমতে থাকে ,চুল পাকতে থাকে 

আব্বুলিশ 

স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে দেখি একের পর সময়ের পতন ,

চলন্তিকা পতনের শব্দ আমিও শুনি 

ভয়ে দিনগুনি

কল্পনার আকাশ থেকে একমাত্র পালকরা নিচে নামতে পারে। 

.

ভুল মুহূর্তের ছায়াছবি 

ব্যাকফ্ল্যাশে দেখি দুটো চোখ আমার জন্য বেঁচে 

সামনে তাকাই দেখি রাস্তা ,ফাঁকা রাস্তা 

আমি একলা দাঁড়ানো কবি। 

ভালো লাগে ভাবতে আবারো আমি অন্ধকারে দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে 

প্রতিজ্ঞা লিখছি ,

লিখতে চাইছি অসংখ্য মুহূর্তদের সাক্ষী করে 

বেঁচে আছি। 

জানি না মানুষের বাঁচাগুলো এত সাধারণ কেন 

সাধারণ কেন মানুষের প্রতিফলনগুলো ?

জানি ঈশ্বরের কোনো দেওয়াল নেই 

তাই কষ্ট নেই।  

Thursday, August 11, 2022

তুই পাচ্ছে

 তুই পাচ্ছে 

... ঋষি 


একাধিক বার কপি আর পেস্ট 

কপি আর পেস্ট 

না হচ্ছে না ,সামলাচ্ছে না ,কিছুতেই না ,হবে না ,

বুঝি না কি দোষ 

মানুষের খিদে পায় ,ঘুম পায় ,হাগু ,হিসু সব পায় 

কেউ বলে না সম্ভব না 

কিন্তু আমার তুই পাওয়াতে এতো দোষ। 

.

তোর গলা শুনতে ইচ্ছে করে 

তোকে দেখতে ইচ্ছে করে 

তোকে জড়িয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে যখন তখন ,

কোনটা অপরাধ ?

কেন অপরাধ ?

কেনই বা তোকে ছুঁয়ে থাকতে পারবো না? 

.

যথার্থ সম্বল 

অজুহাত ,

দুভাগে ভাগ হয়ে যাক এই পৃথিবী ,

বাতাবী লেবুর মতো ছিঁড়ে ফেলতে চাই এই দুনিয়া 

এক নিঃশ্বাসে ,হ্যা নিঃশ্বাসে তোকে গিলে খেতে চাই 

তোর বুকে মাথা রেখে খুঁজে পেতে চাই নিজেকে 

অপরাধ ?

জানি তোর আর জন্মাতে ইচ্ছে করে না শুধু আমার জন্য 

জানি তোর আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না আমার জন্য 

পাগল আমি ,

এই মুহূর্তে সব নিজের চুল ছিঁড়ে আমি রাস্তায় 

একলা ভিজছি 

তোকে চাইছি আমার পাশে 

বুঝতে চাইছিস না কেন ?

কেনই বা এই আমার এই তুই পাওয়াটাকে শুধুই পাগলামি বলছিস।  

তোমাকে পাচ্ছি না কিছুতেই

তোমাকে পাচ্ছি না কিছুতেই 

... ঋষি 


আবার ঢুকে যাচ্ছে গুটির ভিতর 

প্রজাপতি জন্মাবে না আর ,এ আমার নিয়তি 

এ টি এমের বংশে একলা দাঁড়ানো বংশধর 

শুধু আকাশ খুঁজবে ,

আলাস্কা থেকে এক ফেরা  পাখিটা আবারও ফিরে যাবে সময়ের দেশে 

দূরত্ব বাড়বে ,দুর্বলতা কমবে ,আকাশের গভীরতা 

তোমার চাহুনিতে আর আমি সম্ভবপর নই। 

.

হঠাৎ করে কিছু একটা ভেঙে যায় 

বারংবার ভরসার হাত ছেড়ে যায় ,

সামনে দাঁড়ানো অন্ধকার  রাত নিয়মকরে বুক খোঁজে 

তার কোনো হিসেবে নেই ,নেই সম্ভাবনা 

পাখির পালকের ওম দিন গোনে 

অশনিসংকেত। 

.

কিছুতেই ফিরতে পারছি না 

তোমার বরফ শরীরে হাত বোলাচ্ছি আমি চিরকাল চোরের মতো 

সত্যি করে বরফ হতে পারছি না 

অনুভূতি ,

প্রেম ,বিরহ ,স্পর্শ ,রোবোটিক সম্পর্কের দেশে 

আমি বুক খুঁজছি ,

খ্যাপা পাগলের মতো চিৎকার করছি 

পারছি না 

পাচ্ছি না ,

শুধু তোমার ঠান্ডা শরীরে ,নিয়মের চোখে আমি অচেনা 

তোমাকে পাচ্ছি না কিছুই।

তিতুমীরের স্বপ্ন

 তিতুমীরের স্বপ্ন 

... ঋষি 


সন্তানের পাঠ্য বইয়ের মাঝে আমি দিশাহারা 

দিশাহারা আমার অতীত ,ভবিষ্যৎ আর এক্সরে বিম ,

মিথ্যা হয়ে পড়ছি ক্রমশ 

ব্যস্ত শহরের ভাঁজে আমি সেই মৃত তিতুমীর 

যার ইতিহাসে বাঁশের কেল্লা সামলানো

দূরে দাঁড়ানো স্বপ্ন একজোটে দেখতে পারছি না আর । 

.

পায়ের তোলার মাটি 

কাঁচের আয়না 

ভাঙাচোরা মুখ যেন খৈ ছেটাচ্ছে মৃতের শরীরে ,

চোখে তুলসী ,অগুরুর গন্ধ ,চন্দনের সুবাস 

এই মৃত্যু মিছে হয়ে গেলো 

তুমি এসে দাঁড়ালে না আমার মৃত্যুর পাশে। 

.

শুনেছি সবাই একা  হতে চায় 

তবে হাত ধরে কেন ?

কেনই বা খোলা আকাশের গায়ে কাটানো মুহূর্তটা মুখভার করে 

অভিমান করে ,

বৃষ্টির একলা সুবাসে পাশাপাশি তবে কেনই বা দুটো শালিখ ঝগড়া করে 

মুখভার করে। 

সব অসহ্য হয়ে যায় 

আমি একলা দাঁড়িয়ে দেখতে চাই না তোমার চলে যাওয়া 

বরং চলো পাশাপাশি দাঁড়ায় 

যদি অতীত ফিরে যায় পুরোনো বাঁশের কেল্লায় 

আমি তবে ফিরে আসি 

আবার হেসে বলি ষড়যন্ত না 

আমারও চোখে তিতুমীরের স্বপ্ন। 


শালা বেজন্মা



শালা বেজন্মা 

... ঋষি 


৬:২৭ না ৭:৫৪ এর ট্রেন আমি জানি না 

তবে জানি গন্তব্যের তারিখে একটা বিশাল চোঙ আমাদের অপেক্ষায় ,

হাঁটছি ,হাঁটছি ,আছড়ে পড়ছি 

আবার উঠছি 

রাশিফল বলছে শুক্রের শুক্রাণু আবারও ভেজাবে 

কিন্তু কি  জন্মাবে ?

জন্ম নেবে ,সম্ভাবনায় বেজন্মার। 

.

বেজন্মা একটা তারিখের  নাম

যে তারিখে পাঠকরা খুব সহজে নিজেদের বক্তব্য রাখবে 

তুমি আটান্ন বছরের বুড়ো 

অথচ তোমার প্রতিটা লোমকূপে বাড়ির বাইরে জল গড়িয়ে খাওয়ার স্বভাব ,

তুমি তোমার আত্নীয়দের ,বন্ধুদের বুকের ভিতর আটকে থাকো মাকড়শা 

তারপর জাল বিস্তার। 

.

এই স্বভাব চোঙটা ফেলে চলে যাচ্ছি 

চোঙের সাইজের জন্মকোষ ,চোঙের সাইজের রমণ  

রমণ থেকে রমণী 

শালা ত্রেমাত্রায় আমি শুধু ড্রাকুলা ও কবি 

আর তোমরা পুরুষ। 

ভালোবাসা সেই চোঙটা ভিতর নীল আলোতে হেঁটে যাওয়ার নাম 

আছড়ে পড়ার নাম 

সামনে তোমার সংসার ,তোমার জন্মকোষ ,

তোমার  আর ভালোবাসার তফাৎ লিখতে পারবো না 

তবে তোমার জন্মকোষে হাত ঢুকিয়ে নিজেকে তুলে আনবো একদিন 

শালা বেজন্মা।  


Sunday, August 7, 2022

মানুষের কবিতা

মানুষের কবিতা
.. ঋষি 
আমি বিশ্বাস করি সেই চুলদাঁড়ি না কাটা অন্ধকারে একলা কবিতা লেখা মানুষটাকে
যে মনে করে কবিতা দুনিয়া বদলাতে পারে,
আমি মনে করি কবিতার শব্দরা কেউ পুরনো না
বরং নতুন স্বপ্নের জন্য কবিতা হলো হাতিয়ার
আর শব্দরা হলো সময়ের সংকেত। 
.
শেষ কবে কবিতা লিখেছে মানুষ 
সময়ের দিন বদলের গল্প,রাগ, দুঃখ, নারী স্তন আর টি আর পি ছাড়া,
শেষ কবে মাথা উঁচু করে প্রতিবাদ করেছে মানুষ
শব্দরা কেউ কবির যন্ত্রনা নয় 
বরং একটা দিন বদলের খসরা। 
.
শুধু কিছু টিপিকাল রাস্তায় কবিরা হেঁটেছে
পথচলতি দেখা করেছে বনলতা, নীরা কিংবা চলন্তিকার সাথে,
শুধু কিছু ম্যাগাজিন আর পত্রিকায় ভাবনার দূরত্ব বাড়ানো সময় শুধু। 
মশাই আমরা কেউ বোঝাপড়া লিখছি না
আমরা লিখছি আলো, 
মশাই আমরা কেউ নিজেদের লিখছি না
লিখতে চাইছি মানুষ।
.
শব্দরা সব হেঁটে চলে যাচ্ছে প্রগতী নামে পার্টি মিছিলে 
ছাগলে রামদাঁড়ি রেখে রবীন্দ্রনাথ সাজছে
আমরা হাততালি দিচ্ছি। 
লাল, নীল, সাদা কাগজের রকমারী ফেস্টুনে 
লুকিয়ে প্রেমের কবিতা লিখছি, 
কিচ্ছু হচ্ছে না 
কিচ্ছু না
চর্বিত চর্বন ছেড়ে দেখুন ফুটপাথে লেখা হচ্ছে কবিতা
ন্যাংটো শিশুর সাথে,
সানগ্লাস খুলে দেখুন আকাশে লেখা হচ্ছে কবিতা আলো অন্ধকারে সাথে,
একটু জাগুন 
চোখ খুলুন
অন্তত একটা কবিতা লিখুন মানুষের বুকের মাঝে। 





ইতিহাস মনে রাখবে না

ইতিহাস মনে রাখবে না
.. ঋষি 
.
আমি মোটেও আশ্চর্য হবো না
      যদি ইতিহাস আমাকে না মনে রাখে, 
এই শহরের কালিতে ইতিহাস মনে রাখবে তাদের 
যাদের জন্য খুন করা জলভাত 
কিংবা যারা মানুষের মাথা নিয়ে তবলা বাজায়। 
.
আমি মোটেও আশ্চর্য হবো না
যদি তলোয়ার, বারুদ, বুলেট, ষরযন্ত্রকে ইতিহাস মনে রাখে
মনে রাখে নীলনাদের ধারে পিরামিডগুলোতে যারা শুয়ে,
কারণ আমি জানি ইতিহাস মনে রাখে না
যারা ওই পিরামিড তৈরি করেছে
কিংবা যারা ওই তাজমহল তৈরি করেছে। 
.
সমস্ত হারেম 
সমস্ত যুদ্ধ,সমস্ত দেশভাগ, সমস্ত ষরযন্ত্রকে ইতিহাস মনে রেখেছে
মনে রেখেছে মানুষের  সমস্ত ভয়ের কারণগুলোকে, 
সেখানে ইতিহাস আমাকে কি করে মনে রাখবে? 
আমি তলোয়ার নই 
আমি হত্যাকারী বা বন্দুক নই 
আমি কোন অন্ধকার পতাকা বা দিন নই
নই যুদ্ধের ট্যাংকার কিংবা পারমানবিক মিশাইল 
আমি কবি, 
আর আমার কবিতারা সব ঈশ্বরের সাদা পায়রা,
তাছাড়া আমাকে মনে রাখার মতো স্পর্ধা ইতিহাসের ছিল না কোনদিন 
ইতিহাস শুধু ফ্যাকাসে হতে থাকা তিতুমীর। 




Saturday, August 6, 2022

হাফডজন

হাফডজন 
.. ঋষি 
.
(১)
গন্তব্য শুন্য অহংকার 
তবু মানুষের মাঝে আছি আয়নার সাথে 
হাজারো বায়না 
তবুও আমি এখনো বেঁচে। 
.
(২)
ঘুমহীন শ্মশানে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি 
তোমার শাড়ীর পাড়ে আজও লেগে গন্তব্যের চোরাকাঁটা 
জানি সবাই বিশ্বাস করতে পারে না
সবাই ভাবতে পারে না আয়নাও একটা থিওরি। 
.
(৩)
সামনে যে আছে সে ভবিষ্যত আর পিছনে অতীত 
আমি কোথায় আছি জানি না
সবাইতো অতীত ছাড়িয়ে ভবিষ্যত বাঁচতে চাই 
কিন্তু আমার ইন্সুইরেন্সে আমার জন্ম দাগ। 
.
(৪)
নারী তোমার গর্ভোকোষে আগামীর ডিম্বাণু 
তবুও তোমার অতীত লেখা পুরুষের দেওয়ালে 
অথচ আমি পুরুষ হতে পারলাম না
সময়ের দেওয়ালে লিখতে চাইলাম আবারও নারী। 
.
(৫)
ভুল, ভবিষ্যত আয়না
অতীত রাস্তা ছাড়ে না,
চিৎকার একটা পুড়নো হতে থাকা বইয়ের নাম
যার নামটা থাকে কিন্তু লেখকের নামটা সময়হীন। 
.
(৬)
হাফডজন পাগলামী জানি কোথাও দাঁড়াবে না
সারারাত বিছানা লিখবে আজ এক কবিতা
কবির আয়নায় আজও থাকবে অতীত 
আর ভবিষ্যতের জন্য না হয় তোলা থাক আয়না।

Thursday, August 4, 2022

আমি চাই নি



আমি চাই নি
.. ঋষি 
আমি তোমার নিয়ম হতে চাই নি
আমি তোমার অভ্যেস হতে চেয়েছিলাম, 
আমি চাই নি তুমি শুধু নিয়ম মাফিক তুমি  মুখোশ পরে থাকো 
আমি চেয়েছিলাম তুমি আমার কথা ভাবো,
আমি চাইনি তুমি আমার পরিচয়ে বাঁচো
চেয়েছিলাম শুধু তোমার লোকটা হতে। 
.
আমি চাইনি তুমি আমার জন্য রান্না করো 
আমার কাপড় কাচো 
শুধু চেয়েছি শুধু  আমার শরীর খারাপ হলে আমার পাশে বসে আমাকে বলো
বলেছিলাম বৃষ্টিতে ভিজিস না,অত সিগারেট খাস না
আমার কথা শুনছিস না তো
আমি তোর কাছে থাকবো না। 
.
আমি চাইনি সমাজের সাজানো  মুখোশে তুমি নিয়মিত ঘরকন্না কর
বরং চেয়েছি তুমি আমাকে বলো
তোর কি খবর বলতো,
   আমাকে আর জড়িয়ে চুমু খাস না কেন? 
কিংবা হঠাৎ বৃষ্টি  দিনে বৃষ্টির জলে ভিজে আমার সামনে এসে দাঁড়াও 
আমাকে বলো দেখ আমার শরীরের প্রতিটি জলবিন্দু এগুলি আসলে তুই। 
আমি কোন সংবিধান চাই নি 
চাই নি এই বোবা শহরের মুক নাগরিক হয়ে বাঁচতে
আমি তোমার সাথে কাদা মাখতে চেয়েছি
চেয়েছি তোমার সাথে হাসতে 
 তোমার সাথে কাঁদতে 
তোমার সাথে কথা বলতে
আমি তোমার মুখ দিয়ে শুনতে চাই নি নিয়মমাফিক ভালোবাসি 
শুনতে চেয়েছি মন্দবাসি কিন্তু তোর সাথেই বাঁচি।
.
আমি তোমার নিয়ম হতে চাই নি
চেয়েছি একটা বুক যেখানে মাথা রেখে আমি বলতে পারি এটা আমার
আমি তোমার মিথ্যে হতে চাই নি 
চেয়েছিলাম তোমার স্পর্ধা,
আমি তোমার খাঁচা হতে কখনো চাই নি 
চেয়েছিলাম আকাশ হতে
যেখানে তোমার মুক্তি,
কিন্তু আমি তোমার কিছুই হতে পারি নি 
শুধু পায়ের বেড়ি ছাড়া
এই সমাজে হাজারো মুখোশের মাঝে একটা পরিচয়ের মুখোশ
কিছু সাদর সম্ভাসন, কিছু অধিকার, কিছু নিয়ম
না না আমি এগুলো চাই নি
আমি চাইনি শরীর, চাইনি বিছানা বালিশ, চাইনি সংবিধান 
আমি শুধু তোমার সেই লোকটা হতে চেয়েছিলাম। 

নেমেসিস

আমরা যেটা দেখি 
      আমাদের বিশ্বাস সেটাই 
কিন্তু বিশ্বাসের পিছনে দাঁড়িয়ে নেমেসিস 
সে নখে ধার দেয় 
তুমি বোঝ ঠিক আমি জানি 
তবুও বুঝতে চাও না মানুষের গভীর বিশ্বাসে কিছু তো লোকানো। 
.
আমি নিয়ম করে নিতাইদার চায়ের দোকানে দেখি
কালু আর লালু বেড়াল দুটোকে
লালু সাদা আর কালু কালো 
নিন্তু বিশ্বাসে চোখে নিতাইদা দুটোকেই যত্নে পোষে 
নিতাইদা জানে কে প্রতিদিন দুধ চুরি করে খায় 
তবুও ওরা যে নিতাইদার বিশ্বাসী। 
.
আমি এই শহরে প্রতিদিন মানুষগুলোকে পুড়তে দেখি
অফিস টাইমের বাসে, বসের গালাগালিতে,সংংসারের চাপে 
তবুও তারা হাসে
বিশ্বাস করে বাঁচবে তারা একদিন,
অথচ বিশ্বাসের পিছনে নেমেসিস
তার অপেক্ষা একটা মুহুর্তের
কাঁচ ভাঙে শব্দ হয় আর বিশ্বাস ভাঙলে মুহুর্তে মৃত্যু 
নেমেসিস হয়তো হাসে মনে মনে
অপেক্ষা শুধু একটা মুহুর্তের। 

Wednesday, August 3, 2022

এক বিপ্লবী হুংকার

এক বিপ্লবী হুংকার 
.. ঋষি 
পতাকার রং  পুড়তে দেখেছি
আজও কাঁপে এই বুক, 
ওদের লাঠি, গুলি আর বোমায়
মৃত্যুতে ছিল সুখ, 
মা গো তোমাকে দিই নি ছুঁতে 
সময়ের রংরুটে
সময়ের ঘরে সময়ের পরে সময়কে করেছি বশ
বিপ্লবী মোরা স্বাধীন হৃদয়
বীপ্লবের নাম যশ।
.
বিশ্বাসকে রাজসাক্ষী করেও
ওরা পারেনি ছাড়াতে ভাষা, 
তোমার শাড়ীর আঁচল জুড়ে
ইতিহাস সব ঠাসা,
মা গো তোমাকে দিই নি ছুঁটে
সময়ের রংরুটে
হাজারো মায়ের কান্না ভিজানো 
তোমারি বুকের ক্ষত, 
আবারো তারা আসছে যে ফিরে 
হতে হবে সংযত। 
.
মাগো তোমার ডাকেতে উঠেছি যে জেগে
নতুন জন্মে তোমাকে পেতে
তোমার আঁচলে মুখ মুছে মাগো আবারও নির্ভয়
বিশ্বাস রাখি ইতিহাস ধরে 
আমাদেরি হবে জয়।
ওরা তখনো পারে নি ছুঁতে 
সময়ের রংরুটে
বিদ্রোহী মোরা সময়ের ঘরে, সময়ের সাথে সুখ
বিশ্বাস রাখো আবারো ফিরবো মেটাতে তোমার দুঃখ।
.
আবারো বলবো বন্দে মাতরম 
আবারো দেবো রক্ত
আবরো গাইবো বাংলার মাটি 
যতই সময় শক্ত।
মাগো তোমাকে দেবো না ছুঁতে 
সময়ের রংরুটে,
সময়ের চিতা,মাটি, ঘর ছিঁড়ে 
আমাদের চিৎকার
পাপের ঘড়া পুর্ন যে ওদের 
এইবার সংহার।


রাজার রাজত্ব

রাজার রাজত্ব
..ঋষি 
অনেক হয়েছে 
আর না
অনেক খেয়েছো, চাটাচাটিও তো কম হলো না
কম হলো না চোষাচুষি,
ভেজ, ননভেজ অনেক হলো
এবার ডেটে দাঁড়িয়েছি
, এবার ছাড়ো তো 
ভাত চাই, নুন, লংকা, পেঁয়াজ চাই 
চাই মাথার উপর আকাশ ঢাকা ছাদ। 
.
কেন পুজো করছি রোজ তোমাকে? 
যে ছ বছরের মেয়েটা বেলা শেষে ভেসে ওঠে খালের ধারে
সেই পরিবারের ভোটে তুমি ঈশ্বর, 
যে লোকটা কাল অবধি সন্তানকে বলতো 
ভালো করে পড়াশুনা কর 
তার কালি পড়া চোখেমুখে আজ প্রশ্ন? 
যে মায়ের সন্তান সেদিন তোমাকে বিশ্বাস করে, তোমার পতাকা ধরে দাঁড়িয়েছিল রাস্তায়
সেই মা কাঁদছে আজ সন্তানের মৃতদেহ ধরে। 
.
এইবার দাঁড়ানো ডেটে 
মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর চোখরাঙানিতে কাজ চলবে না, 
শিক্ষা, স্বাস্থ্য,শিল্প সব তো গোল্লায় 
আর তুমি রসগোল্লা খাচ্ছো 
খাচ্ছো মানুষের রক্তে ভিজিয়ে বিরিয়ানি, পোলাও 
এবার আর কাজ চলবে না
আমাদের এবার সবকিছু লাগবে,
একটা মানুষের যা যা লাগে ন্যুনতম বেঁচে থাকার জন্য , 
আর ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে পেট ভরবে না
ওই সব তোমার মানুষ বোকা বানানো শিল্প 
নিজের পেটে রাখো, 
কে তুমি রাজা জানতে চাই না
এক তুমি মানুষের কথা ভাবো 
না হলে রাজা গদি ছাড়ো। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...