Wednesday, December 28, 2022

ক্যালাইডোস্কোপ

ক্যালাইডোস্কোপ
.. ঋষি 
.
চারিদিকে উৎসবের রোশনাই
বুকের কাছে কালপুরুষ সেই রোমান স্কালপচারের মতন, 
দোষরোপ 
উপঢৌকন সাজানো আমার শহর 
ভিতরের ডাকে সাড়া দেয়
অস্থিরতা। 
.
আব্বপুলিস জীবন 
শৈশব থেমে যায় ভীড় করা উপলব্ধিরা কথা বলে
মানুষের কথা 
চলন্তিকার কথা
সেই বোবা রাজ্যে এক পৃথিবী মায়া আমায় পথ দেখায় 
ফিরে যেতে বলে
আমি আটকে থাকি স্বপ্ন আটকে অমাবস্যার চাঁদে। 
.
বাঁশি বাজে দূরে কোথাও
সবকিছু পেয়ে গেলে মানুষ যেমন ভীষণ বোকা
আর না পেলে সেও এক বোকা মানুষ, 
কে, কোথায়, কখন লিখে ফেলে জীবন কিংবা আস্তাকুঁড়? 
কে, কোথায়, কখন লিখে ফেলে বানান ভুলের সঙ্গম? 
সব আশ্চর্য 
অতি আশ্চর্য হলো কেউ কেউ বাঁশির শব্দ শোনে
আবছা অবয়ব আগলে জীবন লেখে।
সত্যি হলো মানুষের জীবন শব্দটাই বড় মায়াবী
অনেকটা ক্যালাইডোস্কোপে দেখা রঙিন সম্পর্ক 
আর সম্পর্কের গভীরে মৃত মানুষ। 

স্টেথিস্কোপ

 


স্টেথিস্কোপ 
... ঋষি 
.
রানী বলছে তুমি উলঙ্গ 
মোমবাতি বলছে আলো ফুরিয়ে গেছে 
আজকের আমি ,কালকের তুমি 
তফাৎ শুধু বোঝাপড়ায়  ,
আমরা অনবদ্য স্থাপত্যে শুধু ভালোবাসা আঁকি 
কিন্তু মানুষ আঁকে সামুদ্রিক আস্ফালন 
স্থির ,ধীর নতমস্তকে সম্পর্কের মোমে পোড়া প্রতিদিন। 
.
আজকের ঘুম কালকে হারিয়ে যায় 
সামনে আসমানী সামুদ্রিক ঢেউ পায়ের পাতা ছুঁয়ে যায় ,
অসম মুহূর্ত ,হারানোর ভয় 
আমার আকাশ খোঁজার আকাঙ্খা ,
তবু রানী তুমি উলঙ্গতায় আকাশ পেলে 
আমি পেলাম একলা দহন হৃদপিন্ড রাতে। 
.
মানুষের কথা ভাবছি 
চোখের পাতায় ভিড় হয়ে আসছে অসংখ্য তোমার মুখ ,
আমি আবৃত কবিতার শব্দে 
তবু কবিতা আসছে না 
যারা ধরা দিচ্ছে বুকের স্টেথিস্কোপে একটা শব্দ 
             ধুকপুক। .....ধুকপুক।  
রানী বলছে তুমি উলঙ্গ ,তোমার উলঙ্গতায় সুখ 
অথচ সময়ের ভিড়ে আমার স্বপ্ন দেখার অসুখ
আর সুখ 
না হে নগ্নতা আমি ঈশ্বরের পূজারী 
তোমার হাজারো বাজারী সঙ্গমে দাঁড়িয়ে আমি মানুষ আঁকি নি 
এঁকেছি নিজের গভীরতায় একটা মুখ 
অথচ মোম গলে আজ রক্ত 
বদলাচ্ছে সুখ  ।  


Wednesday, December 14, 2022

দূরে কোথাও

সমুদ্র আত্মা খুলে মাঝে মাঝে দেখি একাকিত্ব 
সমুদ্রের জলে মাঝে মাঝে দেখি চোখের জল 
ঘুম আসে না
সমুদ্রের কিনারায় মানুষগুলো থেকে যায়
পায়ের পাতা ছুঁয়ে জীবন আসে 
আবার চলে যায়। 
.
আমি কার কথা ভাবছি? 
আমি কার সাথে আছি? 
আমার বুকের রেলিংটাতে আমার শৈশব 
আজও কাঁদে
আজও অন্ধকার হাতড়ায় আমার ঝাপসা দৃষ্টিতে
অস্তিত্ব  খাবি খায়, হয়তো প্রশ্ন করে
সম্পর্ক? 
.
সমুদ্র আত্মা খুলে দেখি আমি
দূরে, দূরে মিটমিট করে পুড়তে থাকা জেলে নৌকো 
কেমন যেন ভবিষ্যতবাণী মানুষের
কেমন মনখারাপের দেশে নোনা হাওয়া ছূঁয়ে যায়, 
ইদানীং আর ঘুম আসে না
ইদানীং ভাবতে ইচ্ছে হয় না ভালো থাকা, 
শুধু হঠাৎ দূরে কোথাও 
কেউ যেন ডাকে,
আমি বুঝি আমার ছেলেটা বড় হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

Sunday, December 11, 2022

পালক মানুষ

 পালক মানুষ 

... ঋষি 


It is true that people want to forget old touches

Yet they keep coming back

Maybe they want to live.........


প্রথম যেদিন কোনো  অনুষ্ঠানে প্রাইজ পেয়েছিলাম 

একটা আলাদা অনুভূতি ছিল 

প্রথম যেদিন প্রেমিকার ঠোঁটে চুমু খেয়েছিলাম 

সেদিনও আলাদা অনভূতি ছিল 

যেদিন প্রথম নিজের সন্তানের মুখ দেখেছিল 

সেদিনও একটা অনুভূতি বুকের ভিতরটা আঁকড়ে ধরেছিল। 

.

আজ এতগুলো বছর 

আজ এত সব সম্পর্ক ,এত সব উৎসব ,এত আয়োজন 

সবকিছু ভিতর ভিতর কোথাও স্পর্শ করে 

হয়তো করে না 

তবুও বুকের ভিতর কি যেন একটা আঁকড়ে ধরে 

অকারণে অভিমান ,না আনন্দ 

চোখের পাশটা ভিজে যায়। 

.

ছোটবেলায় মায়ের বুকে জড়িয়ে ধরা 

পরীক্ষায় ভালো করে পাশ  করায় নতুন সাইকেল 

প্রথম কোনো নারী শরীর ,অবাক হওয়া 

প্রথম কোনো বৃষ্টির দিনে তোমার হাত ধরে হাঁটা 

প্রথম সিগারেট 

সব কেমন বুকের ভিতর এক একটা অনভূতি ,

মানুষ বোধহয় অনুভূতির শব্দকোষ 

কিছু স্পর্শ অকারণে হঠাৎ আনমনে এখনও কাঁদায় 

কিছু হাসায় 

কখনো বন্ধু ,কখনো প্রেম ,কখনো নারী ,কখনো সুখ 

সব যেন ভীষণ অসুখ ,

ক্ষুধা ,তৃষ্ণা ,ক্ষত ,প্রিয়জন ,প্রিয়মুখ সব ভুলতে চাই 

সব ভুলতে চাই 

কোনো স্পর্শও না ,আর অনুভূতি না 

একটা মানুষ ,শুধু একটা মানুষ 

সমস্ত গাণিতিক জ্যামিতির পরে একলা পালক মানুষ।  


Thursday, December 8, 2022

রাক্ষসের গল্প

 রাক্ষসের গল্প 

,,,, ঋষি 

.

এটা একটা রাক্ষসের গল্প 

সবাই পালাচ্ছে ,সবাইইইই ..............

কেউ আগলে রেখেছিল একটা ছোট্ট শৈশব বুকের ভাঁজে ,

কিন্তু শৈশব আজ যৌবনে 

সবার মতো সময় টের  পাচ্ছে অথচ  কেউ টের পাই নি আগে 

বাচ্চাটা রাক্ষসের ছিল। 

.

আলবাত একটা প্রহসন 

সবাই আমি খেঁজুরের গল্পে নিজের সুরক্ষা বলয়ে আবদ্ধ 

কেউ কেউ এক ছড়া বন্দুকের বুলেট 

কানে পাশ ঘেঁষে চলে যায়  

সকলে পালাচ্ছে ,সকলে পালায় 

আমি বারুদের গন্ধে আমার সিসের ঘরে বুক পোড়াই । 

.

রাম ,রহিম আর জেসাসের গল্প 

উত্তর সহজ 

থাকতে হলে থাকো ,না হলে রাস্তা মাপো ,

আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী নই 

তাই শয়তানের থানে নিজের রক্তে নিজেকে বলি দিয়ে আসে 

হাসতে থাকি 

সকলে পালাচ্ছে ,পালাক  

সত্যি হলো এই শহরটা একটা রাক্ষস পুরী 

অথচ 

রাক্ষসগুলো মায়াবী মানুষ। 

Wednesday, December 7, 2022

এত ছটফট করছো কেন


 এত ছটফট করছো কেন 

... ঋষি 

.

নিঃশব্দরা নিস্তব্ধ হলে 

মনের কোটরে অনির্দিষ্ট  দীর্ঘশ্বাস ,

বাঁচা সেটা নয় যা তুমি স্বপ্নের ওপারে একলা দাঁড়িয়ে দেখো 

বাঁচা সেটা যেখানে তোমার মানুষটা তোমার পাশে দাঁড়িয়ে বলে 

অনেক বেলা হলো এইবার বাড়ি ফিরতে হবে 

সত্যি বাঁচা শব্দটা আশ্রয়হীন বটে 

তবে পরিপূর্ণতায় বাঁচার নিশ্চয় একটা বাড়ি আছে। 

.

অদলবদল ধরণ 

নিরছন্ন উৎকর্ষতা ছড়িয়ে পরে শীতের রৌদ্র ,

মন কেমনে বেলা পেরিয়ে একলা রৌদ্রে দুটি শালিখ উড়ে এসে বসে ,

বিষন্নতায় বেজে ওঠে একলা মুঠোফোন

রিংটোন টা আমার প্রিয় 

অনুপমের সেই গানটা "এত ছটফট করছো কেন ?"

.

কি করণীয় ?

কেন যে বুকের ভায়োলিনে আজকাল একলা থাকার রোগ ,

কিছু কথপোকথন ,হাজারো দিনের অপেক্ষা 

উপন্যাসের শেষ পর্যায় অনেকগুলো অসমাপ্ত গল্প ,

কে কতটা স্বার্থপর ?কে কতটা মায়াবী  ?কে কতটা একলা? 

এই সব প্রশ্ন থাক আজ ,

আজ শুধু প্রশ্ন সব নিঃশব্দদের 

তারাও ভাষা খুঁজেছে 

খুঁজছে প্রশ্রয় এই ছড়ানো রৌদ্রমাখা একলা সকালের বিছানায় 

ঘুম আসছে না 

তোমার জ্বরের কবিতায় আজ শুধু অপেক্ষা। 

Tuesday, December 6, 2022

প্রহসন


 প্রহসন 

... ঋষি 

.

সমস্ত  চলে যাওয়ার পরে 

 মানুষগুলো গিয়ে দাঁড়ায় সময়ের ধারে একলা নদীর পাশে 

প্রশ্ন করে নিজেকে 

সত্যি তো ? সত্যি ছিলাম তো ? না কি !

.

অদ্ভুত এক আহরণ নিয়ে রোজ দিন কাটানো 

মানুষ জানে না তার আগামী ভোর 

মানুষ জানে না সময় অন্তরে কিছু প্রহসন কিংবা আয়োজন 

কোনটা দরকারি ?

দীর্ঘশ্বাস মানুষের বুকের পাতালে অজস্র জলছবি 

মানুষের পায়ের ছাপগুলো বুকের উপর শব্দজট। 

.

কথার পর কথা সাজিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে 

মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ কি শুধু কথাদের ঘর করে, 

কথার বাইরে কি আমরা কি মহাসমুদ্রে ভাসতে থাকা সেই একলা নৌকো 

যার মাছ ধরার জালে শুধুই কথা। 

আমার বিশ্বাস ছিল মানুষ ঘর করে শধুমাত্র নিজের সাথে 

আমার বিশ্বাস ছিল মানুষ কথা বলে শুধুমাত্র নিজের সাথে 

আয়নায় দাঁড়ানো তোমার মুখটা আমার মতো দেখতে 

কেউ আলাদা নই ,

শুধু মিলেমিশে দিন কাটানো 

একটা প্রহসন 

একটা আয়োজন 

মানুষের চোখের পাতায় আজও স্বপ্নের বাস 

একলা নিশ্বাস 

মানুষগুলো বোধহয় বাঁচতে ভুলতে চায়। 


Friday, December 2, 2022

রোজ

রোজ
.. ঋষি 
তোমার বাড়তে থাকা ব্যস্ততায় আমি হারিয়ে যাচ্ছি রোজ 
তোমার বাড়তে থাকা কারণগুলোতে আমি গিলতে চাইছি রোজ
তুমি, তুমি, তুমি চিৎকার করছি 
রক্ত ঝরাচ্ছি
তবুও জিতছি কই? পিছিয়ে যাচ্ছি রোজ। 
.
আমার মাত্রাছাড়া অভিমান আমাকে দূরে করছে রোজ 
আমার মাত্রাছাড়া ভালো থাকা 
আমাকে খারাপ রাখছে রোজ 
আমি, আমি আমি,কিছু বলতে চাইছি
আয়নায় মুখ রাখছি 
তবুও ভালো থাকছি না,একলা হচ্ছি রোজ। 
.
আমাদের একলা কিছু স্বপ্ন চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে রোজ
আমাদের একলা কিছু আশা 
শীত জড়াচ্ছে রোজ,
আমরা বাঁচছি, ঝগড়া করছি
তবুও ভালো বাসছি 
তবুও একা হাসছি 
নিজেকে প্রশ্ন করছি রোজ। 
.
তবুও কিছু বদলাচ্ছে না
তবুও দিন বদলাচ্ছে না
রক্তক্ষরণে অনবরত কিছু দিন বদল
রাতের স্বপ্ন আঁতকে উঠছি, হাত বাড়াচ্ছি 
আকাশের চাঁদ বলছে টাটা
তবুও বাঁচছি, হয়তো বাঁচার মত কিছু 
আমিই বদলাচ্ছি রোজ। 

বোকা হিম্মত

 বোকা হিম্মত

......... ঋষি 

 

হিম্মত আলী মারা গেছে 

দুদিন নিখোঁজ থাকার পর তার পচা ,গলা দেহটা পাওয়া গেছে হাঁসখালির খালে 

সবাই জানতো লোকটা ভালো ছিল 

সবাই জানতো লোকটার সাহসের কাছে যমও মাটি আঁকড়াতো 

আমি হিম্মত আলীকে চিনি 

আপনারাও তাকে চিনতে পারবেন জিভকাটা হিম্মত আলী ডাকতো সবাই  । 

.

হিম্মত কোলমাইনে  কাজ করতো 

সেইবার শ্রমিকদের ঠিক  পারিশ্রমিক না পাওয়ায় সে স্ট্রাইক করেছিল কোলমাইনে

সে সেদিন চিৎকার করছিল বুর্জোয়া নিপাত যাক 

আমাদের দাবী মানতে হবে ,

সেই কোলমাইনে সেই দাবী মানা হয়েছিল কিনা জানি না 

  কিন্তু সেই রাতে কিছু দুষ্কৃতী তার জিভ কেটে  তাকে ফেলে  রেখে যায় কারখানার গেটের সামনে। 

.

হিম্মত তবুও হারে নি

তার কোলমাইনের চাকরিটা চলে গেছিল বহুদিন ,

সে রাস্তার পাশে একটা ঘুগনি ,পাউরুটি ,চা ডিমটোস্টের  দোকান খুলছিল 

একলা মানুষ বেশ চলছিল 

ব্যবসাও তার জমে যাচ্ছিল ধীরে ধীরে। 

একদিন এক পার্টির ছেলে এসে হিম্মতকে বলে দোকান তুলে ফেলতে হবে 

দুদিন সময় 

এখানে পার্টি অফিস হবে। 

হিম্মত সেদিন ছুটে গেছিল থানার দারোগার কাছে 

দারোগা সব শুনে তাকে বলে তোমার ওই নাড়ানিতে কিছু বুঝছি না বাপু 

তুমি লিখে দেও 

কোলমাইনে খাটা নিরক্ষর হিম্মত কি লিখবে ?

হিম্মত ফ্যালফ্যাল করে চেয়েছিল দারোগার মুখের দিকে। 

কিন্তু ডরাই নি সে 

সেই রাতে হিম্মত জানতো আজ তার দোকান ভাঙা হবে 

তাই সে দোকানেই ছিল,

গোটা দশেক ছেলের সামনে সে একলাই রুখে দাঁড়িয়েছিল 

সে বেঁচে থাকতে তার দোকানে কেউ হাত লাগাতে পারে নি 

কিন্তু শেষে হিম্মতকেও  হিম্মত হারাতে হলো 

এই পৃথিবীতে প্রতিটা সত্যের হিম্মতের দাঁত সময় হাতুড়ি দিয়ে ভাঙে 

শ্রমিকের হাতুড়ি সত্যি হলেও তা শুধু আজ অভিধানে থাকে  

মানুষকে সময়ের কাছে প্রতিবারই হিম্মত  হারতেই হয়। 

.

থানার দারোগা হিম্মতের শরীর সারজেমিনে এলো 

পানের পিক মাটিতে ছুঁড়ে রিপোর্টে লিখতে বললো আননোন বডি 

তারপর পুলিশের জিপে উঠতে উঠতে ড্রাইভারকে  বললো

হিম্মতটা বড্ড বোকা ছিল। 


 

 


Thursday, December 1, 2022

সেই দিনও


Sometimes we think we are lonely
But truth is that 
We are lonely coZ we think that way ..

সেই দিনও আবার গল্পটা শুনেছি আমি
সেই দিনও তোমার থেকে সরতে সরতে
দূরে হারিয়েছি আমি
সেই দিনও আকাশের চাঁদে শ্যাওলা ধরা বিষন্নটা
সেই দিনও এই শহর ছিল মুক 
ছিল কাক, শকুনের বদান্নতা।
.
সেই দিনও ঈশ্বরের পোশাকে মানুষ ছিল বুদ্ধিমান 
সেই দিনও সম্পর্কের মুখোশে মানুষ আমরা দুজন মুর্তিমান
সেই দিনও পরদেশী আকাশে হাজার হাজার শব্দকোষ 
সেই দিনও ভালোবাসা ছিল কিন্তু কথা ছিল না  ছিল কথাদের দোষ। 
.
সেই দিনও আবার গল্পটা শুনেছি আমি
এক যে ছিল রাজা আর ছিল এক রানী
সেই দিনও সেই গল্পটায় ছিল এক রাক্ষসের দেশ
ছিল মুখোশের মুখ আর ছিল মনখারাপের রেশ
সেই দিনও তারা ছিল কিন্তু আমরা ছিলাম না কখনও
সেই দিনও হাজারও নিয়ম ছিল কিন্তু সত্যি ছিল না তখনও
.
আজ আমরা নেই,আজ তারাও নেই
আজ সুখ নেই অথচ আমাদের দুখও নেই
আজ সেই গল্পটা পুরনো রুপকথায় পড়া
আজ সেই ভাবনাটা সময়ের শব্দদের ছাড়া
আজ আর গল্প লিখি না আমি
শুধু জানি সম্পর্ক আসলে মনভোলানো পাড়া। 

.


Monday, November 28, 2022

চারটে দেওয়াল মানে নয় তো ঘর


 চারটে দেওয়াল মানে নয় তো ঘর

... ঋষি 


সবকথা বলে দিলে যেমন সময়ের মুখ ভার 

সবকিছু পেয়ে গেলে একলা অভিমান ,

কি আর বয়স তো নেই ?

এখন তো চোখের চশমায় সময়ের ভিক্তোরিয়া হ্রদ 

বুকের ভিতর সাইবেরিয়ান পাখি 

আর শীতকাল যেমনি হোক ময়শ্চারাইজিং ক্রিম। 

.

কারো কারো ক্রোমজোমের প্রব্লেম থাকে 

কারো কারো অধিকাংশ কিংবা লঘু রক্তকণিকার দোষ 

কিন্তু কিছু দোষ যে সময়ের ,

এই শহরের বুকে বাড়তে থাকা সীসা 

কোথাও ক্ষুদার্থ মানুষকে পিছনের দিকে হাঁটায়

ভাবতে বাধ্য করে পাখিদের অধিকার । 

.

কলমের নিবে আজকাল জমে থাকে দিনক্ষয়ী প্রতীক্ষা 

আর ভয়ঙ্কর কিছু স্বপ্ন যা সময়কে রক্তাক্ত করে ,

কোথায়  আমি তো অঞ্জন দত্তর মতো সত্যি গাইতে পারি না

" চারটে দেওয়াল মানে নয় তো ঘর" ,

আমি তো সুমনের মতো গেয়ে উঠতে পারি না 

"এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই"

আমি এডেল ,জাস্টিন বিবার , সেরিন কারোর মতো গাইতে পারি না 

পাখিদের গান। 

আসলে সত্যি হলো আমি সত্যি লিখতে পারি না 

শুধু শব্দের জাগলিংয়ে একের একের পর এক রক্তাক্ত কবিতা 

ফিরিয়ে দেয় ১৯৭১ কিংবা জালিয়ানওয়ালাবাগ 

মনে করিয়ে দেয় 

এ শহর বেঁচে আছে ,এ শহরকে বাঁচতে হবে 

না হলে জেসাস খ্রাইস্টের সত্যটা মৃত্যুতে বদলাবে।  


Thursday, November 24, 2022

নিদ্রা

নিদ্রা
.. ঋষি 
.
নিদ্রা তুমি কেমন আছো? 
অনেকদিন হলো রাত্রে আর জড়িয়ে ধরো না আমায় 
আমাকে বলো না আর একটু আদর করবি 
ঘুম আসছে না কিছুতেই,
আজ অনেকদিন হলো তোমার শরীরের গন্ধটা আমি অন্ধকারে হাতড়াই 
কিন্তু কিছুতেই ঘুম খুঁজে পাই না।
.
নিদ্রা বহুদিন যাওয়া হয় না তোমার স্বপ্নের বাড়িটায় 
জানি না তোমার ছোটবেলার লজেন্সকাকু আর কতটা বুড়িয়েছে এতদিনে, 
জানি না তোমার বাড়ির সামনে নিমগাছটা আছে কিনা
শেষবার শুনেছিলাম তোমার বাড়ির  রাস্তাটা চৌড়া হবে
তাই গাছটাকে কাটতে হবে। 
.
নিদ্রা ইদানীং তোমাকে আমি কোত্থাও খুঁজে পাই না
তোমার কি আজও আমাকে মনে পড়ে?
অকারণে আগের মত মনখারাপ হয় তোমার? 
নাকি আমার মত তোমারও আজ ভাঙা দুপুর আর এক পশলা বৃষ্টি। 
নিদ্রা তুমি কি আজও সেই ফেরিঘাটে আসো
আজও কি তোমার খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায়
তারপর ব্যাস্ত শহরের চিৎকার আর  সারাদিন খাটাখাটুনির পরে রাতের অন্ধকারে কান্না পায়,
ঘুম আসে না কিছুতেই, 
আজও কি মনের না বলা কথাগুলো তুমি কবিতায় লেখো
তারপর মনে মনে ঠিক আমার মত বলো 
একদিন ঠিক হবে 
একদিন ঠিক ঘুমিয়ে পড়তে হবে। 
তবে কি জানো নিদ্রা
সেদিন সেই শান্তির ঘুমের জন্য নরম বিছানা কিংবা তোমার বুক কোনটাই থাকবে না
থাকবে আগুনে পূড়তে থাকা কিছু অতৃপ্তি আর কিছু অভিমান। 



Monday, November 21, 2022

স্বপ্ন সংক্রান্ত

 স্বপ্ন সংক্রান্ত 

... ঋষি 

.

স্বপ্নের আগে 

..........

একটা লম্বা রাস্তা দাঁড়িয়ে রেসের মাঠে 

আমি সাদা ঘোড়া ,তুমি কালো ,আরো কেউ কালো সাদা 

কত রং ,

উজবুক আমরা সবাই 

ছুট.....ছুট........ছুট................ছুটি 

হচ্ছে না। 

.

স্বপ্নের পরে 

.............

সেই যে কবিতার নামে বাড়িটা 

আমাদের গৃহপ্রবেশ ,সময়ের পুরোনো দরজাটা খোলা হয় নি

আমরা সকলেই কমবেশি চিড়িয়াখানা। 

নির্ভেজাল স্লোগানে সকলেই শুধু সুখ খুঁজি নিজের অবচেতনে 

অসুখ আমাদের 

বুকের ব্যারিকেটে স্বপ্নরা বড়ো ভিখারী। 

.

যদি স্বপ্ন না দেখি 

.................

সৃষ্টির লাগোয়া আদমের বুকে আজও ফুল ফোটে 

পামীর উপত্যকা নারী শরীর না 

ইভের আগের যে জন তাকে মনে রাখার দরকার কি ? 

ঈশ্বরের বাগানে কবিতা চুরি হচ্ছে রোজ 

আমরা সকলে কবিতার গাছ 

আর আমাদের শস্যে সভ্যতা সত্যি হচ্ছে। 

.

হঠাৎ মৃত স্বপ্ন 

...................

পিছন ফিরে ঘোড়ারা দৌড়োয় না 

শুধু ট্রেনের দরজায় দাঁড়ালে পৃথিবীটা পিছনের দিকে হাঁটে 

আমরা তো মিথ্যে পৃথিবীতে বাঁচতে চাই না কেউ 

তাই মৃত স্বপ্নগুলোকে কবর দিয়ে ফেলি 

কিন্তু সময় সময় কুকুরের মাটি খুঁড়ি

কারণ স্বপ্নরা মরে না কখনো।  


ভয়ংকর চাঁদ

 ভয়ংকর চাঁদ 

... ঋষি 


আমরা কি ভয়ংকর বোকা বলুন তো 

সেদিন আকাশের বাইরে দাঁড়িয়ে একজন দেশপ্রধান বললেন দেশ বদলাবে 

সেই শুনে কবি লিখলেন 

যদি কোনোদিন আমি দেশনায়ক হয় 

তবে সবার সংবিধানটা কবিতার মতো করে দেব 

করে দেব মানুষগুলো কোনো  ভালোবাসার কবিতার শব্দ। 

.

এই সব মঞ্চস্থ হচ্ছে যখন 

তখন এক ধেনো মাতাল পা টলাতে টলাতে একই  স্টেজে এসে দাঁড়ালো

মঞ্চের নিচে দাঁড়ানো জনতা হাততালি দিলো 

মাতাল বলে উঠলো ওরে কে আছিস ধর ধর

এরা ইংরেজি খেয়ে বাংলার মতো কিছু বলছে 

বমি হয়ে যাবে যে। 

.

আমাদের কি অপরাধ বলুন তো 

আমরা চাঁদ দেখে নিজেরদের লিঙ্গকে শ্রদ্ধা করি 

শ্রদ্ধা করি রেড লাইট এড়িয়াতে  দাঁড়ানো সেই কন্ডোম বিলানো সমাজসেবীকে 

তবুও ওই গলিতে ঢুকলে মনে থাকে না 

কন্ডোম ছাড়া সঙ্গম কতটা মারাত্নক 

কতটা মারাত্নক লোভী নপুংশকের সংসারে নিয়মিত দেশের জন্ম নেওয়া। 

আমরা সাধারণ মঞ্চের নিচে দাঁড়িয়ে হাততালি দি 

কিন্তু মঞ্চের ড্রপসিনের ভিতর অভিনেতার মুখে গিরগিটি দেখেও হাসি 

সময় মতো নিয়ম করে আঙ্গুল ঠেকিয়ে চাপ দি  বোতামে

নিজেদের পোশাকের বোতামগুলো খুলে ফেলি 

তারপর সময়কে বলি পোশাক বদলাতে। 

কবি সব বুঝলেন তবু লিখলেন 

আমি যদি সাধারণ জনতা হতাম 

তবে রাস্তায় ন্যংটো হয়ে দাঁড়াতাম তারপর চিৎকার করে হিসু করতাম 

আর লিখতাম সময়ের শহরে মানুষগুলো সব অন্ধ 

যারা মানুষ দিয়ে দেশ মোছে তারাই রাজা এবং ভন্ড। 


বেআব্রু কবিতা

 বেআব্রু কবিতা 

... ঋষি 


অশান্ত এক সকাল ,ভাবনার ক্লান্তি পেরিয়ে 

চেয়ে আছি খুব দূরে 

এইবার এক বিদ্রোহের আগুন জ্বলতেই হবে 

ক্লান্ত শরীর 

শরীর পেরিয়ে একের পর এক নির্ঘুম রাত বিছানা আঁকড়ায় 

একটাই স্খলন ,একটা  বেআব্রু কবিতার দরকার। 

.

খোঁজ খোঁজ খোঁজ 

বিছানা ,বালিশ ,খোলা  তক্তপোষে ওইপাশে কতগুলো বই 

ভাঙা দুপুর ,কাক ডাকছে ,

আমি চেয়ে আছি খুব দূরে 

একটা পরিবর্তন দরকার ,দরকার মানুষের অন্ধকারে জোনাকির আলো 

বড্ড এবড়োখেবড়ো 

ভাই সব এইবার লণ্ঠন জ্বালো ,হাতে লাঠি ,বেরিয়ে পরি চলো। 

.

কোথায় যাচ্ছি 

কাদের বিরুদ্ধে একলা চয়ন 

তিতুমীরের কাঠের স্বপ্ন ,গ্রিসের সেই কাঠের ঘোড়া 

সব সাময়িক ,আগুন লাগিয়ে ছুঁড়ে ফেলে  দেও ,বাঁচতে হবে 

মানুষ হয়ে মানুষের পাশে ,

নতুন জন্ম ,নতুন আকাশ ,নতুন ভাবনা ,নতুন সৃষ্টি 

শিক্ষা ,স্বাস্থ্য আর উন্নয়ন 

অথচ পিছনে আজও ছুরি মারছে মানুষের মতো কেউ 

ওরা করা ?

ছেঁড়া তক্তপোষ ,একলা পাশ বালিশ ,বিশৃঙ্খল সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে 

মারাত্নক বিরক্তি হাত পা ছুঁড়েছে 

জবাব চাইছে, নেই 

আর কতক্ষন ?

.

তুমি এলে অবশেষে 

বললে একি অবস্থা কবি ,খাওয়া নেই ,নাওয়া নেই 

সারা সময় জুড়ে শুধু কবিতা 

তুমি কবিতা দিয়ে মানুষে দুঃখ মোছাতে পারবে ?

পারবে ক্লান্ত মানুষগুলো আলোর পথ দেখাতে ,

আমি বললাম 

আর পারছি না  ,আর পারছি না   ...........

Wednesday, November 9, 2022

অস্বস্তি

 অস্বস্তি 

... ঋষি 


সময়ের ঘর থেকে মৃত্যুর ঘরের দূরত্ব তুমি গুলিয়ে ফেলছো বারংবার 

আমি বুদ্ধিমান ছিলাম না কোনোদিন ,

তুমি গাছের পাশে দাঁড়িয়ে চাঁদের স্বপ্ন দেখছো 

সেও ভালো 

কিন্তু আমি যা জানি তুমি জানো না 

যে সবুজ পাতাগুলো তুমি নিশ্বাস বলে জড়িয়ে ধরো 

সেগুলো আসলে পাথর। 

.

তুমি বন্যার ত্রানে ভেসে যাওয়া গাছেদের দেখে মায়া করো 

কেউ যদি বলে ভালোবাসি তাকে দেও মৃত্যুর দন্ড 

আমি জানি তুমি সময়ের ওপারে দাঁড়িয়ে সেই নেমেসিস্ 

যার অপেক্ষায় উত্তরগুলো প্রশ্নের মতো 

আর প্রশ্নগুলো 

স্কেচ পেন্সিলে আঁকা সেই ছবি 

যেগুলো তুমি স্বপ্নে দেখো। 

.

সময়ের ঘরে তুমি দাঁত দিয়ে চেপে ধরো অস্বস্তি 

বৃষ্টির ঘরে দাঁড়িয়ে জলের ফোঁটাকে কাঁচের গুঁড়োয় মিলিয়ে ফেলো,

সময়ে চোখ খোলো 

চোখ বুজে কল্পনায় দেখে ফেলো তুমি নিরুদ্দেশ ,

পথ খুঁজতে শত্রূর গোলা বারুদ ছাড়িয়ে হঠাৎ তুমি বাউলিনি হয়ে যায় 

হয়ে যাও একা 

গেয়ে ওঠো "আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে

তাই হেরি তায় সকল খানে "।।

সময়ের ঘর থেকে মৃত্যুর ঘরের দূরত্ব তুমি গুলিয়ে ফেলছো বারংবার 

আমি সময়ের ছিলাম না বারংবার 

কিন্তু আমি নিরুদ্দেশ নই 

কিংবা আমার উদ্দেশ্যে কোথাও কাঁচের বৃষ্টি হয় 

কারণ সবুজ দংশনগুলো কখনোই অস্বস্তিতে ভোগে না। 

তাসের সেই জোকার

 


তাসের সেই জোকার 

... ঋষি 

.

বেশ বলছে সময়, ভুল তবে ভালোবাসা 

বেশ বলছে সময়, ভুল তবে হাত ধরে হাঁটা 

মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে তুমি ইতিহাস বইতে আইসযুগের ম্যামথ হতে পারো 

কিন্তু আমি ইতিহাসে মাথামোটা সেই ছাত্র 

তাই প্রত্যাবর্তনেও বাঁচতে পারছি না 

কারণ আমি জানি আমি শুধু তোমার ভাবনায় আর অবসরে থাকি । 

.

মৃত্যুর আশংকা নিয়ে প্রতিদিন এই শহরে পথ চলি আমি 

আসলে অভ্যেসের দাস মানুষ ,

তাই তো খুব সহজেই তুমি আমাকে বলতেই পারো ইউসলেস স্পাইনলেস ফেলো 

তাই খুব সহজে মোমের আগুন নিজের শরীরে ফেলে 

আমি গিয়ে দাঁড়াতেই পারি প্রতিবার মৃত্যুর ওপারে 

তুমি তখন সংসারে খেলনাবাটি খেলো। 

.

ভালোবাসা অকশনে ওঠে বারংবার 

কয়েকশো প্রাচীর পেরিয়ে একটা বোবা পাগলাটে লোক ফ্যালফ্যাল করে তাকায় ,

ভালোবাসাও বিক্রি হয় তবে 

রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুড়িয়ে পাওয়া চারানা সকলের পক্ষে গোটা করে সম্ভব না 

কেউ কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে অপেক্ষায়,

সকলে বাদশা ,বিবি ,গোলামের খেলাটা খেলতে পারে না 

কেউ কেউ এক দানেই আমির হয়ে যায়। 

আমি আমির হতে চাই নি 

শুধু মনুষ্যত্ব চেয়েছি

বাঁচতে চেয়েছি সময়ের ওপারে সেই তাসের ঘরের অপেক্ষায়

সময়ের খেলাটা আমি বুঝি নি 

তবুও বোকা ,তবুও হাসছি আমি 

অথচ তুমি খুব সহজে বুঝে গেলে আমি তাসের সেই জোকার

তবুও আমার সাথে ভালো থাকতে পারছো না ।

Tuesday, November 8, 2022

অল্প কথার গল্প

 অল্প কথার গল্প 

.. ঋষি 


অল্প কথার গল্প হয় না 


তবু বলি তুমি বলছো দেশটা গোল্লায় যাচ্ছে 


একটা উনচল্লিশ বছরের লোক পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে মেরে দিলো গান্ধীকে 


আমি বলি মারলো কেন ?


কে শেখালো তাকে গুলি চালাতে 


আমি বলি মতবাদ আর সত্যির মধ্যে তফাৎ নিমিত্তের। 


.

বেঁচে থাকাটা একটা আর্ট 

তফাৎ বিস্তর বাঁচার সাথে মাইমের ভূমিকায় যারা ,

যেটা চোখ দিয়ে, ভুরু দিয়ে,ঠোঁটের বক্রতা, হাতের আঙুল দিয়ে-

পৃথিবীর সমস্ত মুহূর্তগুলোকে বুঝিয়ে দেওয়া যায় 

কি প্রয়োজন ,

অথচ আমরা কথা বলি বেশি 

মানতে চাই না মাইমও আর্ট। 

.

অল্প কথার গল্প হয় না 

তুমি বলছো মেয়েটা ওখানে শাড়ি তুলে দাঁড়ায় 

কিন্তু কখনো টমি বুঝতে চাইলে না মেয়েটা সন্তানহীনা কারণ তার স্বামী নপুংসক 

কিংবা এটাও বুঝলে না মেয়েটা বিধবা ও অশিক্ষিত 

মেয়েটার ঘরে বৃদ্ধ শ্বশুর এবং তিনটে সন্তান। 

আসলে আমরা যা দেখি বা যা বুঝি সেটা হলো সময়ের বিজ্ঞাপন

কারণ আমাদের মতো মাথামোটার দেশে বিজ্ঞাপনের থেকে বেস্ট অপশন নেই 

মানুষকে বোকা বানাবার। 

আমরা বুঝতে চাই না আমাদের চোখের বাইরে একটা সত্যি 

আমাদের বিশ্বাসের বাইরে একটা বিশ্বাস আছে 

আমরা ঈশ্বর বিশ্বাস করি 

কিন্তু কিছুতেই মানতে চাই মানুষের মাঝেও ঈশ্বর আছে 

সেই ঈশ্বর ক্ষুদার্থ 

সেই ঈশ্বর অসহায় 

সেই ঈশ্বর স্বজনহারা ,নিঃস্ব এবং একা ,

আমরা কারণে বিশ্বাস করি 

কিন্তু কারণের বাইরে কারণগুলো কখনোই খতিয়ে দেখি না। 

.


চরিত্রহীন

 চরিত্রহীন 

... ঋষি 

.

I am not Sure what I am supposed to be doing in life,but I will tell you this I am not doing anything......

মাঝে মাঝে এই দেশটার  উপর বড় মায়া 

এত ধুলো জমে আছে সারা দেশে 

সারা দেশময় লোডশেডিং 

তবু লোডশেডিং শব্দটা সকালে ডেলি প্যাসেঞ্জার ট্রেমে শহরের কাজ করতে আসা মেয়েগুলোর মুখেই শুনি বেশি ,

ইদানিং তো দেশপ্রেমিক শব্দটা থক by by by কেমন যেন পেচ্ছাবের গন্ধ আসে অথচ  মানুষগুলোর খোলা আকাশের নিচে প্রাতঃকার্যে নগ্নতা আঙ্গুল ছুঁড়ে দেয়। 

.pp

হাসবেন না মশাই 

দিনাআনি  মানুষের ঘরে সারা বছর শীতকাল থাকে ,

কারণ তাদের কাঁপতে হয় 

সে বৃষ্টি হোক ,সে দেশ বন্ধ হোক , খিদে হোক কিংবা কুকুর বিড়ালের প্রসবযন্ত্রণা

একটা ভয় তো থেকেই যায় 

কারণ এই দেশের ধুলোয় আজকাল মানুষের পোড়া চামড়ার গন্ধ থাকে। 

.

কখনো সময় কিনতে চাই নি ,তাই ঘড়ির প্রসঙ্গ এলেই 

আমি কবি হয়ে যাই 

সকলে বলে শালা কাজ নেই পাগলামি ,

আমার মনে পরে তুমি বেশ্যা ,তুমি সাধু ,আর আমি হলাম মুদির দোকানি 

আমি খিদেও বেচি ,ব্যাবসা বাড়াতে ধার দি 

আবার রাত হলে হাড়কাটা গলির মোড়ে চাঁদের দিকে তাকাই 

দেখি কিভাবে বেআব্রু হয় দেশ খিদের বদলে বেশ্যার দরজায়

অথচ কেউ জানতে চাই নি কোনোদিন 

জায়গাটার নাম হাড়কাটা হলো কেন ?

অনুমতি নেই জানি ,তবু মাঝ রাতে আমি চলন্তিকার কাছে দাঁড়াই 

তাকে প্রশ্ন করি ,তোর রাত হলেই আমার কথা মনে পরে 

চলন্তিকা হাসে বলে এই দেশে সব কবিতারা চিরকাল চরিত্রহীন। 

   



  

নীল পাহাড়ের ঘরে

 নীল পাহাড়ের ঘরে 

.. ঋষি 


তুমি কি আবারও সেই গল্পটা শুনতে চাও 

নীল রঙের পাহাড় আকাশ ছিঁড়ে মেঘেদের ঘরে গেছে 

সেখানে মেঘেদের ঘরটা ছোট 

তাই তুমি ঘরে বাইরে দাঁড়িয়ে আছো আজ বহুদিন 

আসলে তুমি মেঘেতেও আছো ,আছো নীল পাহাড়ের ঘরে 

বোধহয় সংসার শব্দটা এমনি ,স্বজনহারা। 

.

জীবন যাদের ওম দেয় নি 

দেয় নি মাথার উপর একটা কংক্রিট  ছাদ 

তাদের চুক্তি আর মুক্তির মাঝে বিশেষ তফাৎ নেই 

তফাৎ একটাই তুমি বাঁচতে চাইছো ,

অথচ ঘরের বাইরে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে তোমার জীবিত ঈশ্বর 

ইদানিং ব্যস্ততায় তোমাকে ভোলাচ্ছে। 

.

আমি গল্পের শেষটুকু লিখতে চাইছি 

আমি কারোর নাম না করেই বলছি 

আমি ঈশ্বরের কাছে প্ৰাৰ্থনা রাখি তুমি যদি জন্মাওআবার 

তোমার স্তনের মাটিতে আমাকে বুনতে দিও ফসল ,

এর থেকে বেশি নিলজ্জ আমি হতে পারি না 

তাই আমি চাই 

৭২ বছর বয়স্ক  সমরেশ যাতে আগামী জন্মে আর খুন না করে তোমাকে 

১২ বছরের তসলিমা ট্রেইনের কামড়ায় যাতে নগ্ন না হয় 

২৬ বছরের  ভ্যান গগ কান কেটে ভালোবাসি বলে পাগলামি না করে ,

তোমাকে যাতে আবারও মেঘেদের ঘরে না যেতে হয় 

তুমি যেন সংসারী হও তোমার নীল পাহাড়ের ঘরে। 


অবৈধ

 অবৈধ 

... ঋষি 


কি লিখবো ভাবছি 

লিখবো ঠোঁট ,লিখবি চোষাচোষি ,লিখবো বয়স তো মন্দ হলো না 

তবু কি লিখতে পারছি 

মানুষগুলো হা হুজুর করে দিন কাটাচ্ছে 

আর পাশের ঘরে ঈশ্বর হুইল চেয়ারে প্রথিবী ঘোরাচ্ছে 

তার পায়ের জুতোর রঙে মানুষের চামড়া। 

.

ঈশ্বর কোথায় থাকেন 

না হে মানুষের সিলেবাসে লেখা ছিল না কোনোদিন 

মানুষ নিজের মতো করে ঈশ্বর চটকেছে ,বানিয়েছে নিজেকে ঈশ্বর 

আমি বলি আকাশের রং কি 

আকাশের গায়ে নীলচে রঙের সম্মোহন 

মানুষ আকাশের দিয়ে তাকিয়ে তাই বোধহয় আজকাল বিপ্লব খোঁজে। 

.

বিপ্লব বলে ছেলেটার সাথে দেখা হয়েছিল সেদিন 

তার মায়ের শরীরটা ভালো না ,

অনেক জায়গাতে ইন্টারভিউ দিয়ে সে বুঝেছিল তার চাকরি হবে না 

তাই এবার মানুষ খুন করতে হবে 

মানুষ বাঁচাতে। 

স্বর্গটা কোথায়  জানিনা, নরকের বাজারে দোকানে প্রচুর ধার বাকি 

সব কথা খুলে বলতে নেই 

সব বোতাম খুলে দিলেই তুমি নগ্ন 

কোনখানে সত্য আছে আর কোথায় নেই 

না মানুষের সিলেবাসে লেখা নেই ,

সেদিন এক ইংরাজী মুভিতে থেকে নরকের দরজা খুলে গেছে 

সেখানে চাঁদের মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে 

অথচ পরিচয়হীন তার গর্ভে চাঁদের অবৈধতা। 


Friday, November 4, 2022

অন্য তোমাকে

 অন্য তোমাকে 

... ঋষি 

.

দৌড়োচ্ছি আমরা সকলে 

টেবিলে ওপরে,মেট্রোর গলিতে ,রাস্তার ওপাশে ,নিয়মের সাথে কিংবা অনিয়মে 

দাঁড়াচ্ছি আমরা হয়তো কখনো মুখোমুখি বোঝাপড়া, 

কবিতার কলম 

হঠাৎ মনে পড়া মুখ ,গহীন কালো চোখ 

অবিরত কিছু কবিতার খোলাপাতা নির্বাক হয়ে থাকে। 

.

যারা মনের ভিতর থাকে তারা মনে থাকে 

অথচ কখনো অভিমান কুঁড়িয়ে কেউ কেউ প্রয়োজনের হিসেব খোঁজে 

হিসেবে খোঁজে খোলা জানলার ওপাশে এক পল্টন মেঘ 

বৃষ্টি পাহাড়িয়া সুরে আলোআঁধারি পথ 

সূর্য ডুবে গেছে এ শহরে 

তোমার মনের গাছটা বোধহয় এতদিনে স্বাবলম্বী হয়ে গেছে। 

.

আমি সবুজ কুঁড়িয়ে ফিরি 

নিয়ম ভাঙি ,তোমার প্রোফাইলের ছবির দিকে তাকিয়ে দেখি 

আমাদের বয়স গিয়েছে ভেঙে 

একটা অগোছালো মনের আলমারির ভিতর অনুভবগুলো জমা আছে ,

জমা আছে সমুদ্রের মাঝের সেই কাঁচের ঘরটা 

যার চাবি হারিয়ে গেছে। 

আমি তোমার চোখে আজও সমুদ্র দেখতে পাই 

দেখতে পাই অনিয়মের নিয়মে কাটিয়ে ফেলা একটা জীবন শুধু মাত্র বুভুক্ষু 

সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে পার ভাঙে 

তোমার জমানো বাকি জীবনে কিছু কথা মনে থেকে যায় 

তোমার ছোট দাদু তোমাকে ওমরাওজান বলে ডাকতো

তবুও  জীবন ফুরিয়ে যাই না 

বরং একটা আহুতি খিলখিলিয়ে হাসে মনে করিয়ে দেয় অন্য তোমাকে।   


Thursday, November 3, 2022

জনতা

কষ্টগুলো মেরে ফেলার জন্য একটা রহস্য দরকার হয়
প্রাক্তন দড়ির উপর দাঁড়িয়ে ন্যেকা কান্না
স্তম্ভিত হিসেবের আগলের ভিতর মোমবাতি জ্বলে,
জল্লাদ তার শেষ আকুতিতে জীবিকা খোঁজে
জীবিকা হলো জীবন 
কিন্তু দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে সকলেই জনতা।

মাতাল

মাতাল 
..ঋষি 
.
নির্বাসিত জীবন
সাময়িক বাসস্টপে অপেক্ষামান যাত্রী আমি,
পথচলতি লাথি মারি নেশার বোতলে,
ভেঙে যাওয়া সম্ভ্রমে হিসেবি মানুষ বাঁচিয়ে চলে
সামাজিক নাগরিক ভুমিকায় যাতে কারোর   সময়ের দাগ না পরে। 
.
তুমি ঘুমিয়ে পড়ো রাত এগারোটায় তোমার ঘুমোবার অভ্যেস
তুমি পাখা মেলে ধরো সময়ের আকাশে তোমার ওড়ার অভ্যেস,
আমি একমনে দিনগুনি
বারংবার নিয়ম ভাঙি,ভেঙে ফেলি হিসেবের দোর
তারপর অপেক্ষারত যাত্রীশালায় অপেক্ষা করি
তুমি হয়তো আসবে। 
.
দূরে কোথাও তোমার হিসেবের বাজারে তখন 
সম্পর্কের বিকাশ
আমি তোমার বারান্দার নিচে দাঁড়াই 
চোখ বুজি, চোখ খুলি একটা ম্যাজিক খুঁজতে চাই
ওইতো তুমি
ওইতো তোমার পায়ের শব্দ 
তারপর বুঝি আমি ভুল বারংবার আর্যভট্টের গণিতে
চাণক্যের ভাবনায়।
আমি ভুল তবু  নিয়ম করে বাসস্টপে দাঁড়াই 
আমার টলমল পায়ের দিকে চেয়ে লোকে বলে আমি মাতাল
তারা দূরে সরে যায় 
তারা কবি বলে আমাকে আমার কবিতায় 
অথচ আমি বলতে পারি না কাউকেই মাতালদের পৃথিবীতে আমি রাজা
আমার কোন আর কোন দেনা নেই
নেই শোক,শুধু একটা অনিয়ম বাঁচা ।

Wednesday, November 2, 2022

ইদানিং বড় একা লাগে

 ইদানিং বড় একা লাগে 

,,,, ঋষি 


তোমার সাথে কথা কিছুতেই ফুরোয় না 

তবুও ভীষণ একলা লাগে ,

তোমার কথা বলতে গিয়ে আজকাল শব্দরা প্রতিবাদ করে 

কেন জানি ভীষণ একলা লাগে ,

ভালো আছি ,ভালো থাকবো বলে এই একলা থাকা 

তবুও জানো ইদানিং বড় একা লাগে। 

.

একা লাগাটা একটা অন্ধকার সড়ক ধরে হাঁটা 

একা লাগাটা একটা রোগ যার শেষে কোনো গন্তব্য নেই 

আজকাল মনে হয় আমি অসুস্থ 

আমার কবিতার শব্দরা বহুদিন হলো খেতে কিংবা ঘুমোতে পায় না 

দিন কাটে যেমন কাটে রোজ 

তবুও কেন জানি আমার এই একা থাকার রোগ। 

.

ইদানিং বড় একা লাগে 

একা লাগে এই চারদেয়ালের ঘরের মাঝের জায়গাকে 

একা লাগে রেলিং ভর করে রাস্তার দিয়ে তাকিয়ে থাকা সড়কটাকে 

একা লাগে একটা লোডশেডিং সন্ধ্যায় রবি ঠাকুরের গান 

একা লাগে হঠাৎ ফাঁকা বাসের সিটে একলা তোমাকে মনে করায়। 

ইদানিং  কেন জানি মনে হয় 

এই পৃথিবীর প্রতিটা ঋতুপরিবর্তন অকারণে 

অকারণে সমস্ত উৎসব ,সমস্ত অধিকার ,সমস্ত সম্পর্কের মাঝে আঠা 

সবটাই শুধু প্রশ্রয় আর আশ্রয় 

মাঝখানে সকলেই একা। 

তবু কেন জানি আজকাল তোমার গলার স্বর শুধু শুনতে ইচ্ছে করে 

তবু কেন জানি আজকাল তোমার ঠোঁটের নড়াচড়া শব্দহীন লাগে 

শব্দহীন লাগে এই পৃথিবীর ঘটে চলা প্রতিটা ঘটনার কারণ ও প্রতিবিম্ব 

শুধু মনে হয় ভালো থাকতে পারছি না কিছুতেই 

তবুও জোর করে নিজেকে বোঝাই এই তো বেশ ভালো আছি 

এই তো বেশ নড়াচড়া করছি ,ঘুরছি ,ফিরছি ,লিখছি 

তবুও যেন কেন জানি  ইদানিং বড় এক লাগে। 

.

“Loneliness adds beauty to life. It puts a special burn on sunsets and makes night air smell better.”


এক বৃদ্ধ ভালোবাসা

 এক বৃদ্ধ ভালোবাসা 

.... ঋষি 

.

অনেক কিছু বুঝে উঠলাম 

উঠে পড়লাম তোমার চোখের চাহুনির সেই বাসেতে 

বাসের জানলায় চোখ রাখলাম 

দেখলাম এক বৃদ্ধ ক্রাচ এ ভর করে রাস্তা পার হচ্ছে 

চারিপাশে আয়োজন ,প্রয়োজন ,নিবেদন ,আবেদন 

কিন্তু বুঝলাম না প্রশ্নটা 

ভালোবাসার বয়স কত ?

.

সমস্ত হিসেবের পর দরজা খুলে তোমার বুকের বন্ধনীতে আগল দিলাম 

বুক ঠেকলো কিনা জানি না 

তবে মিশে যেতে চেয়েছিলাম ,

হতাশা হাতড়ে তোমার বুকের গভীরে দেখলাম সেই বৃদ্ধকে 

চিনতে পারলাম নিজেকে, 

সময় বদলেছে ,মানুষ বদলেছে ,বুকের ক্যাবিনেটে বদলে গেছে পরিসংখ্যান 

তোমার চাহুনিতে আমি হয়তো একটা অভিজ্ঞতা 

কিন্তু বুঝলাম না প্রশ্নটা

ভালোবাসা শরীর ,সময় না অবান্তর কিছু বাড়তি সময় ?

.

অনেক দখলদারি ,অজস্র গাছের চারা 

                                  ওগুলো সব ভালোবাসা 

তোমার শাড়ির গিঁটে লেগে আছে অসংখ্য দাবার ছক 

ঘোড়া দৌড়োচ্ছে ,হাতি এগোচ্ছে ,তুমি তোমার বাদশা আগলাচ্ছো। 

আমি তোমার ঠোঁটের গ্লাসে নিয়মিত জীবন পান করছি 

তবু বসে আছি তোমার চোখের বাসের  জানলায়  

আমি দেখছি সেই বৃদ্ধ ক্রাচ ওয়ালা ভদ্রলোকের চারিপাশে জ্যাম জমে গেছে 

কোনদিকে যাবে বৃদ্ধ ?

পথচলতি কেউ হাতে গুঁজে দিচ্ছে মায়া ,স্নেহ আর ভালোবাসা 

আমার ভিতরে কেউ ধিক্কার দিচ্ছে 

                                     ভিক্ষা ,ভিক্ষা ?

আমি চিৎকার করছি ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমি ভিক্ষা চাই নি 

চেয়েছি শুধু এই জীবনের রাস্তাটা  পার করতে

কিন্তু একটা প্রশ্ন মনের মাঝে 

ভালোবাসা কি তবে কারণ খোঁজে ?   



জীবনের গল্প

 জীবনের গল্প 

,,,, ঋষি 


বহুদিন মানুষের দরজায় দাঁড়ায় নি 

দরজা খুলে দেখেছি  কিছু মৃত অনুভূতির মুখ 

কিংবা সেই মুখটা যাকে জানলা খুলে অন্ধকার রাতে দেখা যায় ,

সম্পর্কের চাদরে মোরা মানুষগুলো শীতকাল খুব আরামে কাটে 

কিন্তু গ্রীষ্মের প্রখর রোদে সকলকেই বাথরুমে শাওয়ারের তলায় দাঁড়াত হয় 

ভিজে যাওয়া শরীর কিংবা চোখ দুজনের মধ্যে নিয়মিত সমাজ লুকোতে হয়। 

.

আমি আগুন খুলে দেখিনি 

তবু সমাজের সতীত্বের প্রশ্নে বারংবার গিয়ে দাঁড়াই সময়ের মুখোমুখি 

আগুনে পুড়ে যাওয়া নারী যোনি এই সমাজের কাছে হীন 

কিন্তু বিলীনতার প্রশ্নে বারংবার দেখি 

নারী কিংবা পুরুষ কেউই সত্যি সতী নয় নিজের আয়নায় 

সকলেরই নিজেদের পর্দায় ধরা আছে ছায়াপথ। 

.

আমি সময়ের আগুনে পুড়ে জীবনকে দেখি কামারের অগ্নিকুন্ডে 

আসলে জীবন হলো সৃষ্টির আদিপুরুষ 

সমস্ত জ্ঞানের ভান্ডার ,

জীবনের অধিক কোনো প্রশ্ন মানুষের কাছে থাকে না 

মানুষগুলো জীবন কাটাতে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে। 

অজস্র ইতিহাস ঘেঁটে উঠে আসা সকল সৃষ্টি রহস্যের কারণ 

সেই নারী কিংবা পুরুষ 

শুধুমাত্র ধারক মাত্র ,

আসল সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের নাম চিরকাল জীবন 

যে শুধু আবর্তনে আর প্রবর্তনে ব্যস্ত। 

আমরাই  তো শুধু কাল্পনিক 

আসলে বাস্তব হলো মানুষের জীবনের গল্পগুলো 

এক একটা শিক্ষা পৃথিবীর দরজায়,

সকলে দরজা ভেজিয়ে রাখতে চাইলেও 

হঠাৎ ঝড়ের দাপটে দরজার পাল্লাটা খুলেই যায়, 

কিন্তু জানলা দিয়ে স্বপ্ন দেখা গেলেও 

জীবন দেখা যায় না।  


সৎকার

 


সৎকার 

... ঋষি 

.

আমার নাভি খুঁজে পাওয়া যাবে না আমার সৎকারে 

উজ্জাপিত জীবনের আঁতুড়ঘরে এক নক্ষত্রের মৃত্যু ঘটেছিল সেদিন 

লোকে বলে এমন প্রায়শই হয় ,

জন্মের সময়টুকু ছাড়া মানুষের পরিচয় তার আঁধারকার্ড 

আর তার চারিপাশের ঘিঞ্জি হয়ে থাকা বস্তির ঘর 

আর বাঁচাগুলো ঘরের ভিতর জ্বলতে থাকা কুপির আলোর মতো। 

.

ইদানীং  আর মনখারাপ হয় না 

আকাশ থেকে নিচে নেমে আসা নক্ষত্রের গতি দেখে হঠাৎ মনে পরে যায় 

বয়স তো হলো ,

জুলফির পাশের বরফ লেগেছে আগের শীতেই 

এইবার লাগছে শীতের কাঁপন 

কবিতার শব্দদের গিঁটে আজকাল অন্যমনস্ক দৈন্যতা। 

.

ইদানীং সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আমি চলন্তিকাতে হারাই 

এত বড় সমুদ্র 

আমার কবিতার  নোনা স্নানে এই শহরের মানুষ কাঁদে 

নিজের মানুষ হারিয়ে ফেলে মানুষের সমুদ্রে। 

আজকাল যখন ওপর দিয়ে এই শহরটার দিকে তাকাই 

দেখি এক ঝাঁকড়া চুলের কবি রোজ হাঁটতে থাকে মানুষের ভিড়ে 

তার ভালো থাকার খোঁজ 

তার কবিতার খোঁজ 

তাকে প্রতিদিন পিছিয়ে দেয় শেষ একটা কবিতার শব্দে ,

আসলে মৃত্যু শব্দটা যতটা সত্যি 

তার থেকেও সত্যি মৃত্যুর পর বাঁচা। 

Saturday, October 29, 2022

স্পটলাইট

 স্পটলাইট 

.. ঋষি 

.

লাইটার বের করি ,,,সিগারেট জ্বালাই 

অন্ধকার হাইওয়ের  উজ্বল সাইনবোর্ড তখন বেঁচে থাকা খোঁজে 

বাঁচার বিজ্ঞাপণ ,ক্লোজাপের হাসি 

বাঁচার বিশ্লেষণ 

সময় মাফিক কিছু পরিবর্তন ধুলো ধুলো মেঘের আড়ালে চাঁদ 

অনেকটা স্নেহের মতো মনে হয়। 

.

হাইওয়ে ঘেঁষা চায়ের দোকান 

অকারণের কয়েক কাপ মাটির ভাঁড় লুটোপুটি করে সম্পর্কে ,

চমকে আমি পিছন ফিরি 

একটা ট্রাক সজোরে ব্রেক কষে আমার মেরুদণ্ড জুড়ে ভয় 

নির্ঘুম রাতের মনের বারান্দায় অকারণে সিগারেট পুড়তে থাকে

একটার পর একটা মুখ যেন সিগারেটের লাল ঠোঁটে । 

.

আমরা দুঃখের বিজ্ঞাপন খুঁজি 

খুঁজি নিজের সুখী জীবনের আড়ালে গিলিগিলি যে চোখের জল 

একটা ম্যাজিক ,

আমি বাইকে স্টার্ট দি ,স্পিডোমিটারে তখন ৮০ ছুঁই ছুঁই ,

কানের পাশ দিয়ে বইতে থাকা বাতাস কেমন হুইসেলের মতো বাজে 

যেন একটা রেসের মাঠের এই পাশে আমরা 

ছুটছি ,

গতি বাড়ে ,বাইকের স্পটলাইটে একলা পথ গন্তব্য খোঁজে 

আমি এসে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ি তোমার বিজ্ঞাপনের সামনে 

তুমি হাসছো ঠিক 

কিন্তু আমিও অন্যের মতো চোখের জল খুঁজি ,

বিহারি ড্রাইভার ড্রাইভার চিৎকার করে বলে ,শালা শুয়ারকা বাচ্চা 

আমি দাঁত বের করি ঠিক তোমার মতো 

যেন বোঝাতে চাই আমিও তো ভালো আছি। 

তারপর

 তারপর 

,,,, ঋষি 


 তারপর তুমি আমাকে পাহাড় দেখাবে বলছো 

আমি চেয়ে আছি তোমার দিকে 

তুমি ভ্রূ বাঁকালে ,সেখানে অনেক দূর একটা রাস্তা 

রাস্তার ওপাশে পাহাড় 

আমি চেয়ে আছি ,তোমার চোখে কাজল ,তোমার ঠোঁট দুটো নড়ছে 

আমি কিছু আর দেখতে পাচ্ছি না 

চারিদিক ভীষণ শান্ত। 

.

কি দারুন দৃশ্য ,দেখো ,,,, দেখছো 

আমি দেখতে পারছি না ,আমি এই সময় অন্ধ 

শুধু আমার  চোখে আলো ,

মানুষ মুগ্ধ হলে চোখের দিক্চক্রবালে  অদ্ভুত এক সুখ 

আর আমার অসুখ ,,,, তুমি। 

.

তোমার পাঁপড়ির মতো ঠোঁট 

তোমার দিগন্ত ছোঁয়া পিঠ 

তোমার বাহুমূল 

তোমার বা গালের ঠিক পাশে ,,,,,,,

তোমার নাভি বৃন্তের গভীরে 

তুমি আমাকে তছনছ করো ,যখন তখন মুগ্ধ করো 

আমি অন্ধ হয়ে যাই ,

আমি বধির হয়ে যাই 

তারপর হঠাৎ শুনি তুমি বলছো " এই শুনতে পাচ্ছো "

আমি চমকে উঠি বলি " হ্যা তারপর"। 

আমরা কেউ না

 


আমরা কেউ না 

... ঋষি 

.

তুমি রাগ করেছো আমি জানি 

তবে তুমি জানো না বোধহয় একটা বয়সের পরে আর রাগ করতে নেই 

সবকিছু মেনে নিতে হয় ,

তবু সমুদ্রের তটে বসে বালির উপর নখ দিয়ে লিখে ফেললে তোমার প্রিয়  লুকোনো নামটা 

না লিখতে নেই 

কেউ দেখে ফেললে তোমাকে বলবে তুমি ভালো না। 

.

পাশ ফিরে শুয়ে আছি  অনন্ত সকাল 

আর কত আপোস ,আপোস আর আপোস  ,সব মেনে নিতে হয় 

সন্তানের  সুখ ,সময়ের সুখ ,সময়ের বুক,

জানি কাঁদতে হয় ঠিক তোমায়  তোমার বাথরুমে জলের শব্দে ,

জানি তোমাকে হাসতে হয় ঠিক প্রতিটা উৎসবে সামাজিক আলোয় 

না তোমাকে বলতে নেই প্রেমিকের নাম 

তাহলে যে তুমি বদনাম। 

.

তুমি কেউ নও 

আমি কেউ নই 

তুমি স্বামী ,তুমি পুত্র ,তুমি স্ত্রী ,তুমি কন্যা 

তুমি মা ,তুমি পিতা ,তুমি সন্তান ,তুমি সময়।  

আসলে আমরা কেউ না ,শুধু আঁধার কার্ডে আমাদের পরিচয় 

আমাদের জমানো বারুদ ,আমরাই পুড়ি 

আমাদের দেঁতো হাসি , হাই পাওয়ারের চশমা ,মিথ্যের সহবাস 

আমরাই করি। 

আসলে সত্যি হলাম আমরা 

তবু কেউ না ,

তবু মানতে চাই না নিজেরা ,তবু মানে না কেউ ,

আমরা কেউ না থাকি 

থাকুক সময় আর সময়ের ঢেউ। 


পাপ = পুন্য = শূন্য

 পাপ = পুন্য = শূন্য

.. ঋষি 


আমি ততক্ষন চুরি করি না 

যতক্ষণ সুযোগ না পাই 

তবে সুযোগ পেলেই কোনো নারীর খোলা উরু চোখ দিয়ে চুষে খাই 

পথ চলতি ভিখিরি মায়ের স্তন দেখে আপ্লুত হই  ,

আবার মন্দিরের ক্যাশবাক্সে নিয়ম করে পয়সা ফেলি 

পাপ ধেয়ে ফেলি 

কারণ পাপ = পুন্য = শূন্য। 

.

আমি বাজার থেকে ১০০০ টাকার ইলিশ কিনি 

কিন্তু কাজের মেয়েটা  ৫০ টাকা মাইনে বাড়াতে বললে বদরখাস্ত করি ,

আমি ভোট দি না তবু 

ভোটে জিতে ফেরা প্রার্থীর মুণ্ডুপাত করি,

আমি দেশ বুঝি না তবু চায়ের আড্ডায় সমালোচনা করি 

আমি মসজিদে গিয়ে দোয়া মানি 

কারণ পাপ = পুন্য = শূন্য। 

.

আমি বাড়ির বেড়ালটাকে ঝ্যাঁটা পেটা করি 

রাস্তায় কুকুরের সঙ্গম দেখলে ঢিল ছুড়ি 

আমি সুযোগ করে অফিস থেকে উপরি কামায়, 

নিজের স্ত্রীকে ভালোবাসি 

তবু নিয়ম করে অন্য বিছানায় একটু গরম করে আসি।  

আমি সন্তানকে বলি সত্যি কথা বল 

অথচ নিজের পিঠ বাঁচাতে নিয়ম করে মিথ্যা বলি,

আমার খুব স্ট্রেস তাই আমি মদ খাই 

আমার খুব কষ্ট তাই আমি হস্তমৈথুন করি ,

তবু নিয়ম করে জেসাস খ্রাইস্টএর কাছে প্রার্থনা করি 

কারণ পাপ = পুন্য = শূন্য। 

 


আগুন লেগেছে ঠিক

 আগুন লেগেছে ঠিক 

... ঋষি 


ধর্ষণ দেখে দুর্বার হতে পারি ,কিন্তু কেন হবো 

দুহাত দিয়ে চুরি আটকাতে পারি কিন্তু কেন আটকাবো 

পাশের ফ্ল্যাটে কেউ একজন অসুস্থ কিন্তু কেন বেড়োবো 

কাগজে কলমে ঝড় তুলতে পারি কিন্তু কেন তুলবো 

আদতে চোখের সামনে অন্যায় দেখে ,প্রতিবাদ করা যায় 

কিন্তু কেন করবো ?

.

বরং লিখতেই পারি ,বলতেই পারি

করবো না আমার ভয় করে ,আমার সংসার আছে ,সন্তান আছে 

তাছাড়া আমার কি?আমার সাথে তো হচ্ছে না 

তোর হচ্ছে ,তোমার হচ্ছে ,তোমাদের হচ্ছে ,

আমার ঘরে আগুন লেগেছে ঠিক

কিন্তু আমি পুড়ছি না  ,এখন পিঠ ফিরে শুলেই হয়। 

 


Thursday, October 27, 2022

জতুগৃহ

জতুগৃহ
.. ঋষি 
নান্দনিক কিছুই না
জীবন মানে নেশার পাত্রে জড়িয়ে থাকা গা গরম
সব পবিত্র হয়ে যায় কান্নায় ডুবোনো মুহুর্তে
সব মেনে নেওয়া যায় আগুন পাত্রে ছেটানো ঘিতে
দাউ দাউ আগুন জতুগৃহে পরিবর্তিত
নির্লিপ্ততার কোন দেশ থাকে না কখনও। 
.
অসমাপ্ত একটা জীবন 
তবু দিনলিপিতে অসংখ্য অসঙ্গতি,
চলন্তিকা আছে, আছে আমার হাজারো কবিতা লেখা বাকি 
এখনও হাজারো মুহুর্ত, উপন্যাসের খোলা পাতা
এখনও সময়ের চরিত্ররা আগুনের গর্ভে জন্ম ব্যাকুল 
অথচ অসমাপ্ত খোলা পাতায় জীবন লেখা বাকি।
.
কি লিখছি? 
কেন লিখছি? 
বুকের কাছে জমা হয়ে আছে খালি নেশার পাত্র 
সময়ের গভীরে শুয়ে আছে সম্পর্কের মুখোশ, 
আমি জানি ভালো থাকতে চাওয়াটা একটা আর্ট
আর ভালোবাসতে চাওয়াটা কিছু কারণ, 
তবু পরিনতির মুখোশে সময়ে দাঁড়িয়ে মুখ ভেংচায় 
মানুষ বাঁচতে চায় 
কানধরে উঠবোস করব অতীতের ভুল 
কিছু বদলায় না
মানুষের ভালো থাকা হয় না
নেশার খালি পাত্র বাঁচার তাগিদে গড়াগড়ি যায়। 




Monday, October 24, 2022

আমার জন্মেত কোন কবিতা হয় না

আমার জন্মের কোন কবিতা হয় না 
.. ঋষি 

অনন্ত বাতায়নে পথ হারিয়েছি
হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে এই পথের ধুলোয় 
আমার জন্মের সত্যি কোন কবিতা হয় না
আমার জীবন আবৃত্ত এক হিমঘর যেখানে শব্দরা জন্মায়, 
শব্দরা জন্মায়, শব্দরা কাঁদে,আমাকে যন্ত্রনা দেয় 
যন্ত্রনা দেয় আমার চলন্তিকা সময়। 
.
আমার হাজারো উচ্চারণ 
আমার রক্ত কনায় আমার এই শব্দ সমাজ আর একলা মুহুর্তের বন্ধুরা আমাকে পথ দেখায়
চলন্তিকা হাত ধরে। 
আমি আপ্লুত হয়ে ভেসে যাই আমার প্রতিটা জন্মের সম্ভোগে
তবুও কোথাও যেন দুন্দুভি বাজে রোজ, তুমুল প্রলয় 
আমার কন্ঠে বিষাক্ততা আর আমার শব্দরা সব নবজন্ম। 
.
এইভাবে শুরু থেকে শেষ জন্মান্তর 
আমার জন্মের সত্যি কোন কবিতা হয় না,
যা হয় তা শুধু মুহুর্তদের স্তব্ধতা মোড়া একফালি ভগ্নাংশ
মুহুর্তের হাসিমুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায় তোমার প্রতিটা চলে যাওয়ায়
তবুও মুহুর্ত  ফুরোয় না।
তবুও বয়স বাড়ে,জুলফিতে অভিজ্ঞতা দিনপ্রতিদিনে
এই শহরে হাজারো মানুষের ভীড়ে আমি পুরাতন খোঁজ 
জন্মদিন আসে চলে যায় 
তবুও বুকের বারান্দায় একটা মানুষ অপেক্ষায় দিনগোনে
একটা সম্পুর্ন কবিতা লিখবে বলে
একটা জীবন লিখবে বলে। 

Sunday, October 23, 2022

শুভ দীপাবলি

 


শুভ দীপাবলি  

... ঋষি 

.

"অসতো মা সৎ গময়। তমসো মা জ্যোতির্গময়।

 মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়। ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ॥"

.

অযুত নিযুত শান্তির খোঁজে অন্ধকার থেকে খুব দূরে দাঁড়িয়ে 

আমার চারপাশের কান্নারা বলে দেয় আমরা ভালো নেই 

আমার চারপাশে উন্নয়ন বলে দেয় 

আমরা উন্নীত একটা প্রজন্ম শুধু অন্ধকার সড়কে। 

.

ভাবনার থেকে দূরে দাঁড়িয়ে দেখছি কানে ভেসে আসছে উৎসবান্তরের প্রতিধ্বনি 

"আমার মায়ের পায়ের জবা হয়ে উঠনা ফুটে মন"

অথচ বুকের প্রতিধ্বনিতে তুমি ঘুমিয়ে 

সময়ের বুকে পা রেখে তোমার হুংকার কিংবা প্রতিবাদ 

ভালো থাকতে হবে 

সে অন্ধকার হোক কিংবা আলোতে । 

.

আমি বুঝি শুধু মানুষের ভালো থাকা জরুরী 

আমি বুঝি শুধু বুকের রিংটোন একটা সময়ের হাসিমুখ শুধু অপেক্ষা ,

আগামীকে তাই বলে দিয়েছি আমি আসছি 

সময়কে বলে দিয়েছি আমি বাঁচছি  

আর তোমাদের মতো মানুষের দিকে তাকিয়ে বলতে ইচ্ছে হয়

উৎসব একটা  ভালথাকার আয়না অনেক অপেক্ষার 

উৎসব একটা ভেসে থাকার বার্তা মানুষ আর মানুষের প্রতি। 

তুবুও সময়ের কবিতায় 

আমিও উৎসবমুখী ,সময় বিমুখী এক কলমের আগুন 

শুধু পোড়াতে চাই নিজেকে আর পুড়তে 

আর তোমাদের বলতে চাই 

শুভ দীপাবলি  

বলতে চাই শুভ দীপাবলি চলন্তিকা 

সকলে ভালো থেকো আর সুখে রেখো তোমাদের অনুভূতিদের। 

Saturday, October 22, 2022

মনখারাপ

 মনখারাপ 

.. ঋষি 


মাঝে মাঝে মন খারাপ হয় 

শীতের প্রথম আমেজে যখন এক চাদরের তলায় আমি ,তুমি 

গ্রীষ্মের প্রকট তাপে কিংবা তুমুল বৃষ্টিতে যখন আমি ,তুমি এক ছাতায় 

বারান্দায় এক কাপ চায়ে  যখন আমি, তুমি এক ঠোঁটে  

কিংবা ধরো আকাশের বাইরে সিঁড়ি বেয়ে যখন আমাদের প্রাক্তনী সুর 

তখন মন খারাপ হয়। 

.

মনখারাপী মেঘের গায়ে তখন অতীতের ফোটোফ্রেমগুলো মুখ ভেংচায় 

মুখ ভেংচায় জীবন একলা রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে 

আসলে মানুষ যখন থাকে সেই মানুষটার কাছে ,খুব কাছে থাকে 

তখন সেটা শুধুই প্রয়োজন ,

কিন্তু প্রয়োজনের বাইরে মানুষের বাঁচাগুলো সুক্ষ তারে 

আমি বুঝি এই সংসারে দরকার হয় সেই মানুষটাকে 

যার জন্য বাঁচা। 

.

কেমন জানি চেপে ধরা দীর্ঘশ্বাস মনখারাপ  

প্রবাসি সেই পাখিগুলোর মত সময় সময় আমাদের দেশে,

হাজারো ছেঁড়া সময়ের সুর মনখারাপ মানুষের আয়নায়  

স্টেশনের রেলব্রিজের তলায় সেই মানুষগুলোর মতো অসহায়। 

তাই ভালোবেসে তাকিয়ে না 

তাই একলা দিনে ঝড়ের মতো এসো না 

এসো না তুমুল মনখারাপ কবিতার শব্দের মতো 

কষ্ট হয় ,

কষ্ট হয় বুকের গভীরে মৃত স্বপ্নের সাথে বাস করতে 

আসলে জীবনটা তো সিনেমার মতো নয় 

সবাইতো আর মুকাদ্দার কা  সিকান্দার নয় 

কেউ কেউ খুব সাধারণ মানুষও তো হয়। 


Friday, October 21, 2022

জাগরণ


 কার পুলিশ ,কিসের পুলিশ ,রাম ,রহিম না লস্করের

কার মন্ত্র ,আমন্ত্রন ,কিসের প্রয়োগ
সময়ান্তরে উৎরানো বিষ
নিরামিষ ,
জানা ছিল না বেআইনি ছিল আন্দোলন
বেআইনি ছিল মানুষের প্রতিবাদের মন্ত্র অনশন।
.
আমি পিছনে ফিরে দেখবো না
আমি বলবো সময় ,এই যুগের অসংখ্য শিক্ষামনস্ক মানুষকে জাগরণ
আমি বলবো এ হলো আমন্ত্রণ
আমি এ হলো এ হলো কোনো কুরুক্ষেত্র আবার
সামনে কে জানি না
শুধু জানি রবীঠাকুরে বাণী সেই " অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে। ......
.
কে করছে ,কিসের দাবি ,কিসের করুণাময়ী ,কিসের জালিয়ানওয়ালাবাগ
কে কংস ,কে বংশ ,কে হলো এ যুগের শেষ কুলপ্রদীপ
আমি জানি না বাংলা ,না ভুটান ,গুজরাট না তালিবান
শুধু জানি প্রতিবাদ দরকারী
আজ না ,কাল না ,সময় না ,ইতিহাস না,
অন্যায় আর সত্যের মাঝে কোনো সহবস্থান নেই
আছে জিত কিংবা আছে হার।
আমি আকাশের শব্দে বিশ্বাসী
আমি সময়ের অহংকারে বিশ্বাসী
এসো মুক্ত হও ,নির্মল হও , সত্য হও
শুধু মুখে স্বাধীনতা নয় এইবার বোধহয় রুখে দাঁড়ানোর সময় হলো
সময় হলো লড়বার
এইবার সত্যি মানুষের পাশে মানুষের মতো দাঁড়াবার সময় হলো।

Tuesday, October 18, 2022

দার্শনিক

 দার্শনিক 

... ঋষি 


মরতে চাওয়াটা  কি সত্যিই অসুখ?

এ কথা ভাবতে ভাবতেই এক জড়  জীবন পেরিয়ে এলাম আমি‌,

যে অসম মুহূর্ত থেকে আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে বার করা হয়েছে 

তাদের কখনো ক্ষতি চাই নি ,

বরং বেয়াড়া বিকেলে সেই সব সোমত্ত মুহূর্তদের পাশের সিটে বসেছি 

যারা মৃত্যুর কথা বলে। 

.

যারা অন্ধকার ঘরে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে ভাবে আহা কি দুঃখ 

যারা সাজানো দুঃখে সুখে থাকবে বলে চোখের জল ফেলে 

ভাবছি একদিন হাজির হবো তাদের বাড়ি,

একটু গল্প হবে ,চা সিঙ্গাড়া হবে কিংবা জন্মান্তরের কথা হবে 

তাদেরকে প্রশ্ন করার আছে বলতে পারেন 

সময়ের জন্মান্তরে সময় কি ভাষায় কথা বলে। 

.

মরতে চাওয়াটা  কি সত্যিই অসুখ?

এই কথা ভাবতে ভাবতে আজ আমি বোধহয়  হিউয়েন সাঙ 

যে  অসম  মুহূর্ত আমাকে পথের ধুলোয় খোলা আকাশের নিচে মুক্ত করেছে 

তাদের জন্য আমার সমবেদনা ,

একা ভিক্ষুকের কোনো মানচিত্র থাকে না 

একা ভিক্ষুকের কোনো সীমানা থাকে না 

থাকে দর্শন ,

আমি সেই দর্শন থেকে বলছি  কাঁদতে পারে যারা তারা সুখী 

নকল হাসতে পারে যারা তারা দুঃখী 

আর যারা সীমাহীন গন্ডির বাইরে তারা  স্থবির জড় দার্শনিক 

তারা হাত পা ছড়িয়ে ঘুমোতে না পারলেও বেঁচে থাকে 

কারণ  সেই সব সোমত্ত মুহূর্তদের পাশের সিটে বসে 

তারা মৃত্যুর কথা ভাবে। 


দুর্গন্ধ মাখানো শরীর

 দুর্গন্ধ মাখানো শরীর 

... ঋষি 


দিন যত পেরোচ্ছে, আবার আগের মতো হয়ে উঠছো তুমি

সকালের রৌদ্রের মতো ঝকমকে ,

ড্রইং খাতায় সদ্য আঁকা কিশোরী ,

জানি তুমি লক্ষী মেয়ে ছিলে  না কোনোদিনই

জানি অলক্ষীতেই বিশ্বাসী  

জানি তোমার কাছে মাটির মূর্তিগুলো ইউসলেস রিশন টু  লাফ

কিন্তু তোমার বদলানোগুলো ভালো চোখে দেখছে না কেউ। 

.

তুমি হয়তো টের পাচ্ছো না 

হয়তো ইগনোর করছো 

কিন্তু তুমি একদিন যে দরজাগুলো দিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছিলে 

তাদের পাঠাচ্ছো বেঁচে থাকার চিঠি ,

ইদানিং তোমার চোখের দিকে তাকালে আজ  বহু মানুষের চোখ নেমে যায় 

আজ তুমি নিজের লড়াইটা একলা লড়তে শিখে গেছো।  

.

তোমার সারা  শরীর জুড়ে ট্যাটু 

তোমার হাতে ওয়াইনের গ্লাস অনেকটা লেসভেগার্সের মতো মানায়

তোমার আঙুলে আজকাল জ্বলন্ত সিগারেট যেন দুরন্ত গতি   

তোমার চোখে এই বয়সে আজও নতুন জন্মের অভ্যাস 

সবটাই কেমন অদ্ভুত রকম চেঞ্জ। 

যে মেয়েটা এক সময় বাঁচার জন্য ,ভালো থাকার জন্য নিজের স্বামীতে নির্ভরশীল 

ছিল

আজ তার উপর নির্ভরশীল হাজারো পুরুষ তাকে  ভালোবাসতে চায় ,

যে মেয়েটা আজ থেকে বছর দুই আগেও ভালোবাসতে চোখের জল ফেলতো 

সে আজ খুব অবহেলে ভালোবাসার সাথে ডিল করে বাঁচার ,

সময় বদলায় জানি 

কিন্তু আমি  জানি তোমাকে আর বোকা বানানো সম্ভব নয় 

তুমি তোমার পায়ের হিলে আজ টিপে রাখার ভালোবাসার গলা 

কারণ তুমি জেনে গেছো ভালোবাসা একটা মরীচিকা 

আর তুমি একটা দুর্গন্ধ মাখানো মৃত শরীর ভালোবাসার।  



যুদ্ধটা ফুরোয় নি এখনো

 যুদ্ধটা ফুরোয় নি এখনো 

... ঋষি 


এটা ঠিক একটা ডট পেনে জীবন লেখা যায় না 

জীবনের সকলের সফলতায় মানুষ দেখতে অভ্যস্ত মানুষ 

কিন্তু একাকিত্বে তুমি একলব্য ,

নিশ্চিন্ত কোনো দ্রোণাচার্যের প্রয়োজনে যখন তুমি সময়ের দরজায় 

তোমার পরিচয় তোমাকে পিছিয়ে রাখে 

তোমার ইতিহাস তোমাকে হারিয়ে দেয় বারংবার। 

.

যেখান থেকে জীবন লেখার কথা ছিল 

ঠিক সেখানে দাঁড়িয়ে তুমি সাত পাঁচ ,আকাশের চাঁদ ভাবছো 

ঠিক তখনি আকাশ থেকে নেমে নেমে আসে ধূমকেতু 

তুমি জীবন ভুলে যাও ,

বাঁচার রাস্তায় তখন দাঁড়িয়ে তোমার প্রিয় মুখ 

তুমি তখন কর্ণ জগৎসভায়। 

.

"জগতের আনন্দযজ্ঞে তোমার নিমন্ত্রণ "

সকলেই কোথাও কোথাও না হেরে আছি আমরা 

সকলেই কোথাও কোথাও না কোথাও হেঁটে যেতে হয় মাথা নিচু করে 

তোমার চোখে জল আসে 

আমারও আসে 

তবু চেষ্টাটা চালানো একটা ডটপেনে জীবন লেখা। 

কালি ফুরিয়ে যায় 

ফুরিয়ে যাওয়া সম্পর্ক বিক্রি হয় সস্তা বাজারে ,

কারণের পৃথিবীতে আমি ,তুমি ব্রাত্য বারংবার 

তবুও যত্নে লেখা বেঁচে থাকার শেষে নিস্তব্ধ কিছু থেকে যায় 

আমরা বলি হেরে ফেরা মাথা নিচু করে 

সময় বলে যুদ্ধটা ফুরোয় নি এখনো। 

Sunday, October 16, 2022

চোপ

 চোপ 

... ঋষি 


নিরন্তর মুখ বুজে থাকা অভ্যাস 

কথায় বলে মানুষ অভ্যেসের দাস 

সে দাস ,বোস ,ঘোষ ,মিত্র , চৌধুরী সবার জন্য হিসেবে এক 

সে ছোট্ট বেলা থেকে 

কেঁদেছো কি ,বায়না করেছো কি ,,,,,,, চোপ। 

.

সে এক চোখ রাঙানি সকাল বেলা থেকে 

ক্লাসে গল্প করেছো কি ,,, চোপ 

যদি বন্ধুদের সাথে মারামারি করে জামা ছিঁড়ে ফেরো ,,,চোপ 

কিছু প্রশ্ন করলে ,,, চোপ 

তারপর হেড মাস্টারের সেই 

স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে অবধারিত চিরকাল লেখা ,,,চোপ  .

.

বাড়িতেও তুমুল পেঁদিয়ে ,,চোপ 

মা ,বাবা ,দাদা ,চুন থেকে পান খসলো কি ,,চোপ 

প্রথম সিগারেট খেয়ে ধরা পরা ,, চোপ  

প্রথম প্রেমিকাকে চুমু খেতে চাওয়া ,,চোপ 

পাড়াপড়শি চোখ রাঙানো ,,চোপ 

পরে বৌ এসে ,,চোপ  

সারা সংসার জুড়ে মেনে নেওয়া সাইনবোর্ড। .চোপ। 

.

আপিসের বস খেপে লাল ,,, চোপ 

অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছো তো ,,,চোপ 

রাস্তায় বালি ফেলা আছে ,,, পার্টির ছেলেদের চোপ 

রেশন দোকানে কারচুপি ,,,চোপ 

কলে জল নেই ,খারাপ রাস্তা ,,চোপ 

আমাদের কাজ চাই ,চাকরির নাম দুর্নীতি চলবে না ,,,চোপ 

আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক ,,,চোপ 

তথাকথিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের শাসন ,,,, চোপ। 

.

চোখরাঙানি সেই সকাল থেকে দিনভর 

শুধু এক মাত্রায় লেখা চোপ 

আর আমাদের অভ্যেস ,সহ্য ,সহ্য ,সহ্য ,,আজীবন ,,,,চোপ। 

তারপর


 তারপর 

... ঋষি 

 

বাতাসের থেকে হালকা একটা মুক্তি নিয়ে 

থ্রি চিয়ার্স ফর লাইফ ,

মশগুল একটা বিকেলের কবিতায় আমি মুক্তির থেকেও হালকা যখন 

তুমি তখন সময় চটকে কিছুটা ভালো থাকতে চাইছো ,

আমি অবাক হচ্ছি না মোটেও 

শুধু আজকাল ছোটবেলার ছাদ থেকে লাফ মারতে ইচ্ছে হয় 

যদি ভাসতে পারি পাখির খসা পালকের জীবনে  

যদি হাসতে পারি আগের মতো এমন এক নষ্ট অধিকার ছাড়া 

যদি চিৎকার করে তুমুল চুমুকে বলতে পারি 

থ্রি চিয়ার্স ফর লাইফ ,

তারপর। .....

মেয়েমানুষ

 মেয়েমানুষ 

... ঋষি 


ভাগ্যিস পৃথিবীতে মেয়েমানুষ বলে একটা শব্দ ছিল 

তা না হলে পাগল প্রেম পৃথিবী হারিয়ে ফেলতো ,

ভাগ্যিস আজও পৃথিবীর বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ স্মৃতিতে মাতোয়ারা 

মেয়ে মানুষের স্তন ,যোনি ,ভাবনা দিয়ে গড়া মাংসপিন্ড 

উত্তরের সাহারা ,দক্ষিণে সমুদ্র ,প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতা 

উচ্চতা ,উর্বরতা 

সৃষ্টি ,দহন আর কথকতা। 

.

ভাগ্যিস মেয়েমানুষের কপালে দুঃখ 

দরজার বাইরে পৃথিবীতে মেয়েরা সকলেই পণ্য ,

স্বামী হারা ,প্রেমিক হারা ,বিছানা ছাড়া ,যন্ত্রনা ছাড়া 

সব ,সমস্ত এক কথায় আহারে ,

কিন্তু আহারে কারা 

যারা যুক্তি নিয়ে চুক্তিতে সই করে ভালোবাসতে পারে। 

.

ভাগ্যিস মেয়ে মানুষরা কাঁদতে পারে 

ভাগ্যিস একমাত্র দেবীরই দশখানা হাত 

তার মধ্যে কে জানে ক খানা সত্যি আর কতখানি অজুহাত ,

মেয়েমানুষ ভালোবাসতে পারে 

দরজার ভিতরে দরজা বন্ধ করে জড়াতে পারে 

কিন্তু পৃথিবীতে এক হাত ঘোমটা ,এক হাত ঢুকে যায় 

জন্ম নেয় পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। 

মেয়েমানুষ জন্ম দিতে পারে কিন্তু আর জন্মাতে না 

কিন্তু ভালোবাসা  জন্ম আর জন্মান্তর 

ভাগ্যিস মেয়ে মানুষ  সহ্য  করতে পারে

কপালে সিঁদুর লুকিয়ে জন্মের দাগ । 

অভিমান আমারও হয়

 অভিমান আমারও হয় 

... ঋষি 

.

দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছি দৈন্যতা 

তবু অভিমান এখনো হয় ,

যখন তুমি অন্ধকার ছিঁড়ে এগিয়ে আসো পৃথিবীতে 

তখন আমি কোথাও থাকি না তোমার 

তখন কেউ নই আমি তোমার। 

.

সমস্ত রক্ত ,মাংস দুমড়েমুচড়ে একসাথে করে কবিতা লিখি 

কবিতার পাতায় রক্তফোঁটা তখন মাকালীর শাসন ,

সেই লাল চোখ ,খড়গ হাতে তুমি তখন সংহার দৃশ্য 

আমি হাসি অবাক হই ,

পৃথিবীর নাটকে আজও দেবীরা নগ্ন চিরকাল 

আমারও অভিমান হয় 

অন্তত একটা মৃত্যু তো দিতে পারো। 

.

তোমার সোনায় গড়া নথ ,তোমার আকাশ দিয়ে ভাবা রাস্তা 

তোমার উপছে ওঠা ভালোবাসা 

কিন্তু আমি    ........... ?

................. অজস্র উত্তরের পর একটা দূরত্ব এগিয়ে আসে 

বিশ্বাস করো বুকের কাছটা ফাঁকা ফাঁকা তখন। 

কিছু মানতে ইচ্ছে করে না 

দেবত্বের উপাখ্যান ,নিয়মিত লেখা কিছু বেঁচে থাকা 

চা ,পাউরুটি আর এক কাপ চায়ে আজকাল মন ভরে না। 

তোমার চারপাশে সবাই দৃশ্য 

আর আমি দৃশ্যের বাইরে একটা ছবি তোমার আলমারিতে তালানবন্ধ 

বহুদিন তোমাকে চুমু খাই নি 

বহুদিন তোমাকে পুজো করি নি তোমার রক্তমাখা ক্ষোভে 

শুধু ভেসে আছি 

শুধু বেঁচে আছি 

অভিমান জমাট বেঁধে কখন যেন অন্ধকার চিড়ে তুমি আমার বুকের উপর 

দেবী তুমি সেবিকা হতে পারো 

আমি দাস চিরকাল। 

মিথ্যে কিছু

 মিথ্যে কিছু 

... ঋষি 


মিথ্যে বলো ভালোবাসি 

নিষ্পাপ কিছু ফুল ছিঁড়ে গুঁজে দেও নিজের খোঁপায় ,

রাস্তা চৌওড়া করবে বলে কেটে ফেলো সবুজ গাছ 

গাছের উপর পাখির বাসগুলোকে একবার ভাবনা 

ভাবো না তোমার দাওয়ায় একটা কুকুর অভুক্ত 

তবুও তুমি ঘি দিয়ে ভাত খাও। 

.

মিথ্যে বলো সাথে আছি 

সারারাত ঘুমের চোখে মিথ্যে স্বপ্ন আমি আছি 

অজস্র মিথ্যের ফাঁকে নিজেকে লুকিয়ে তুমি ভাবো 

আমি ভালো আছি ,

আসলে তুমি যেন ঘর ছাড়া বাউল কেমনে গায় 

কেমনে কাঁদে আকাশে মেঘ দেখলে। 

.

মিথ্যে বলো এই শহর শুধু ভালোবাসার 

মিথ্যে বলো এই শহরে ভালোবাসার ঘর 

অঞ্জন দত্ত কবেই তো বলে দিয়েছেন চারটে দেওয়াল মানে নয় ঘর 

তবু মিথ্যে তোমার এই বাঁচার স্বয়ংবর। 

তুমি হাসো গাছের থেকে ফুল ঝরে পরে ঠিক 

কিন্তু সেই বিশ্বাস করো সেই হাসিতে আমি ছিলাম না কোনোদিন 

তুমি পথ চলতি আশ্রয়হীন বিড়ালগুলোকে দেখো 

আমি জানি সেই আশ্রয় নেই ,নেই মায়া। 

মিথ্যে তুমি ঘর ঘর খেলো ,খেলো এই সংসারে দাবা 

তুমি জানো না ভালোবাসা রাত জাগা পাখি 

একটা আশা 

ভালো থাকা। 

লংরুট

 লংরুট 

... ঋষি 


অস্তিত্ব বজায় রাখতে রাখতে ভুলে গেছি পরিচয় 

আমি অস্তিত্ব আর তুমি ভয়। 

.

আমাদের জীবন ইন্তেষ্টিক্রিয়ায় শুয়ে থাকা শরীর 

বাইরে জীবন ,যা বাঁচি আবার মরি। 

.

কথাকাটাকাটি ,প্রতিটা মৃত্যুর পর জড়ানো জরুরী 

তবুও আমরা জেদি ,একলা ঘড়ি। 

.

কেউ বলে তুমি প্রেমিকা ঠিক মায়ের মত 

তবু হারাবার ভয় ,লুকোনো হাজারো ক্ষত। 

.

মানুষ মানুষের থেকে দূরে সরে গেছে আজ বহুদিন 

তবু ভাবি মানুষ দাঁড়াবে মানুষের পাশে ,কমাবে ঋণ। 

.

দুঃখ এটা নয় তুমি আমার থেকে দূরে 

দুঃখ এটা তোমাকে পাই না আমি আমার দুঃখ খুঁড়ে। 

.

চটজলদি ভাবনা ,অকারণে করে ফেলা বায়না 

জানি অনুচিত ,তবু সাথে আছি পাশে থাকা যায়না। 

.

চলে যাবে জানি ,যেমন কাটে দিন 

তোমার চোখে মৃত্যু ,বাঁচার আলাদিন। 

.

যে রুটে আমি আছি ,সেই রুটে কোনো পরিবহন নেই 

সময় ছিল বাঁচার কিন্তু তার আর প্রয়োজন নেই। 

.


দিন ফুরোনো কাব্য

 দিন ফুরোনো কাব্য 

... ঋষি 


দিন ফুরোচ্ছে রোজ নিয়ম করে  

দুতিনটে সিগারেট আর একলা ঘোরে 

দিন ফুরোচ্ছে  ডিমসিদ্ধ আলুসেদ্ধ ভাতে 

সকালের কোলগেট আর নিয়মিত দুচার পেগ রাতে  

দিন ফুরোচ্ছে  কারণ দিনের পরে রাত 

জীবনে দাবার ঘরে আমি রাজা আর কপালের বাজিমাত। 

.

মাসের প্রথমে  মাইনে পেয়ে ছোট কৌটো ঘি 

বাড়িতে কুয়ো আছে ,জল তোলা আর নিজের কাপড় নিজেই কেচে নি 

ঘরের জানলাটা খুব ছোট ,আজকাল ভালো থাকে না মন  

তাই দরজা খুলে রাখি ওটা অভ্যাস ,বাঁচার প্রয়োজন 

অসুখবিসুখ সে তো আছেই ,যেমন ছিল পাশে 

নিয়ম করে হিসেবে মতো তোমায় পাঠানো টাকা আমার প্রতি মাসে। 

.

নুন আনতে পান্তা । শুধু সাথে লেবুটা জোটে না

কবিতায় শব্দ জোটে কিন্তু আজও মুখ ফোটে না ,

আমার পাড়ায় বৃষ্টি হলে জল জমে যায় পথে 

আমি আছি বেশ ,তুমি আছো ঠিক নিয়ম করে সাথে। 

এখন বেশ বুঝতে পারি বোকার মানে টুকু 

চলবে জীবন যেমন চলে হিন্দি সিনেমা  বাকিটুকু ।

সবুজ কাঠের একটা আলমারি ঘুনে খাওয়া

নিয়ম করে অফিস আসি ,দিনটুকু কেটে যাওয়া। 

ঝড় উঠলে আলো যায়। ভালবাসলে লোডশেডিং 

কখনো কখনো বন্ধুরা আসে ,সাথে নিয়ে চাউমিন। 

চারটে বিড়াল আছে। আমি খেতে দেবো

জানি জীবনের এই বাকিটুকু একলাই বেঁচে নেবো।  

একলা মানুষ যদি  বাঁচতে শিখে যায় 

সে নিজের কাছে রাজা ,মৃত্যুকে আঙুল দেখায়। 



কজন কৃষ্ণ হতে চাই

 কজন কৃষ্ণ হতে চাই 

... ঋষি 


আমরা প্রত্যেকে নিজেদের আলাদা লড়াই লড়ছি 

কেউ ব্যবসায় দাঁড় করতে চাইছে নিজেকে  

কেউ অন্যকে ভালো রাখতে নিজেকে পরিবেশিত করতে চাইছি 

কেউ গান গেয়ে ,ছবি এঁকে নিজেকে প্রতিষ্ঠির করতে চাইছি 

কেউ লিখতে চাইছি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ একটা কবিতা 

কেউ চাইছি সংসার আগলে এই জীবনটা পার করতে। 

.

আসলে আমরা প্রত্যেকে লড়ছি নিজেদের জন্য 

আর প্রত্যেকের লড়াইগুলো আলাদা আলাদা 

কিন্তু সকলে আমরা জিততে চাইছি ,

আর এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে আমরা সকলেই অর্জুন একলা রথে 

আমরা একজন কৃষ্ণকে চাইছি 

যে বারংবার নিজের কাছে হেরে গেলেও ,ফিরে আসার শক্তি জোটাবে। 

.

আমরা সেই কৃষ্ণকে খুঁজছি  যে  পথ চলতে  হঠাৎ পরে গেলে 

শক্ত হাত ধরে দাঁড় করিয়ে বলবে " চলো আবার শুরু করো ",

তবে সমস্যা এটা নয় সেই মানুষটা  

সমস্যা এটা আমরা সকলেই সেই কৃষ্ণকে খুঁজি নিজের গভীরে 

কিন্তু হাতে গোনা কজন আছে বলুনতো 

যে কৃষ্ণ হতে চায়  ,

যে অর্জুনকে বাঁচাতে নিজের বুক পেতে নিয়ে নেয়  কর্ণের ব্রহ্মাস্ত্র। 

আমরা সকলেই চাই শূন্য থেকে একসাথে লড়াই শুরু করে

একে অপরকে সামাল দিতে দিতে একদিন সফল হওয়ার আনন্দ পেতে 

কিন্তু সত্যি কি তাই চাই আমরা ?

আমরা সিনেমায় দেখতে ভালোবাসি এই জেতাগুলো 

আমরা হিস্টরিকাল মিথে খুঁজে পাই এই  একসাথে থাকাগুলো 

কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসাকে অবলম্বন করে  বলুনতো কজন বাঁচতে চাই ?

 

চাবি

 


চাবি 

.. ঋষি 


মানুষ যখন একটা বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে একলা দাঁড়ায় 


তখন পাশের সম্পর্কগুলো একে একে সরতে থাকে অনেক দূরে  ,


কারোর ঘরে আগুন লাগলে সকলেই  ছুটে আসে 


কারোর ঘরে ঝগড়া লাগলে ঝগড়া মেটাতে অনেকে আসে ,


আসলে হারানো চাবির খোঁজ থাকে সকলের 


কিন্তু তালা ভাঙলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না দূর দূর । 


.


অপেক্ষার সুদীর্ঘ পথে একলা হাঁটাটা বোকামি তবুও হাঁটা  


দূরত্বের জলে পা ডুবিয়ে তবুও তো একলা থাকা  


কার জন্য বৃষ্টিতে ভিজে মাঝ রাস্তায় অপেক্ষা ?


কার জন্য রাতের পর রাত ভাত বেড়ে বসে থাকা ?


কার জন্য শেষ ট্রেন জেনেও প্ল্যাটফর্মে একলা দাঁড়ানো 


কার জন্য বিছানার ওপাশে চোখের জল?


.


সব উত্তরগুলো জানা 


আজ যার জন্য এত কিছু, কাল সে কে ছিলো


পরশুদিন সেকি আদৌ দাঁড়িয়ে থাকবে ?


আসলে যুক্তি আর আবেগের মাঝে বিস্তর তফাৎ 


বিস্তর টানাপোড়েন ভালোবাসা আর মুক্তির মাঝে। 


অনেকটা সময় কাটানোর পর উল্টোদিকের মানুষটা আঙ্গুল তোলে 


আঙুলের নিশানায় তুমি ,কিংবা আমি


সকলেই তখন চুপ করে অবাক হয়ে দাঁড়ায় কিছুক্ষন ,


তারপর সম্পর্কের তালা খুলেই ফেলে সকলেই  


চাবিটা ছুঁড়ে ফেলে দেয় জীবনের বাইরে। 


কিন্তু সত্যি হলো হারানো চাবিটা সকলেই খোঁজে মনে মনে 


আর একলা তালা সে শুধু সামাজিক।  


Friday, October 14, 2022

স্বাগতম

 স্বাগতম 

... ঋষি 

তোমার অস্তিত্বতে তোমাকে স্বাগতম 

তোমার তুমিতে তোমাকে স্বাগতম 

বড্ড ভুল হয়ে গেছে 

সমস্ত পৃথিবী জুড়ে যে গাছটা ছায়া দেয় 

সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে যে গাছটা ফল দেয় 

তাকে কাটতে চাওয়ার। 

.

তোমার পৃথিবীতে তোমাকে স্বাগতম 

তোমার ঘড়ির কাঁটাতে তোমার বাঁচাকে স্বাগতম 

বড্ড ভুল হয়ে গেছে 

পৃথিবীতে বাঁচার জন্য বায়ুশূন্য জায়গা দরকার 

অথচ আমিও সবার মতো বুঝেছি 

দূরত্ব শুধু নিয়ম মাত্র। 

.

তোমার প্রতিটা অভিযোগকে স্বাগতম

তোমার প্রতিটা কটূক্তি যা তীরের থেকেও ধারালো ,তাকে স্বাগতম 

স্বাগতম তোমার নতুন জন্মকে 

বড্ড ভুল হয়ে গেছে  

গতজন্মের হয়ে যাওয়া কিছু পাপ ,কিছু অধিকার 

আজ শুধু বিচলিত করে  

কষ্ট হয় ভাবতে 

তোমার প্রতিটি  স্বাগতমে তুমিই  ছিলে শুধু

আমি ছিলাম বটে একপাশে 

কিন্তু তোমার থাকাতে তুমি আমার ছিলাম না কোনদিন।  

 

কবি ও ঈশ্বর

 কবি ও ঈশ্বর 

.. ঋষি 

একদিন ঠিক এমন দেখতে আমাদের একটা বাড়ি হবে 

বাড়ির উপর নেমপ্লেট 

                  সেখানে ঈশ্বর ও প্রেম ,

একদিন এমনি একটা রাস্তা দিয়ে আমরা হেঁটে যাবো 

আমি আবারও হোঁচট খাবো ,

হয়তো সেদিনও তুমি আমাকে বলবে

তুই চিরকাল বোকা ,শুধু কবিতায় জীবন কাটালি। 

.

একদিন ঠিক এমনি এক গাছতলায় আমি আর তুমি বসবো 

আমার ,তোমার চশমায় সেদিন কোঁচকানো স্বপ্ন  

বাসি হয়ে যাওয়া সংসার ,পুরোনো স্বপ্নের ফুল আমাদের পায়ের ধুলোতে 

সেদিন তুই হয়তো বলবি আমাকে 

বয়স কত হলো? দিনকাল কেমন?

পিছনে পড়ে থাকবে ঘড়ির কাঁটা  কিংবা পাখির আকাশ  

একদিন আমরাও বলব, ভুল বাপু, সব ভুল ছিল। 

.

একদিন ঠিক এমনি এক বিকেলে আমি তুমি  পাশাপাশি হেঁটে যাবো 

পিছন থেকে আমি  তোমার হাত ধরে দাঁড় করবো 

সামনে বইয়ের দোকানে  আঙ্গুল দিয়ে দেখাবো 

চিনতে পারছিস ,এই সেই বইয়ের দোকান 

যেখানে তোর সাথে আমার প্রথম দেখা 

তুই হাসবি আজকের মতো ,বলবি 

শোন প্রথম বলে কিছু হয় নাকি 

বল তোর সাথে আমার শেষ দেখা 

কারণ তুই সে। 

.

একদিন ঠিক এমনি এক দিনে আমি তুই পাশাপাশি 

আমার  কবিতারা সেদিন হয় তো পাঠকের মন স্পর্শ করে বলবে 

অপেক্ষা শেষ ,

সেদিন হয়তো অনেকেই বলবে কবি আসলে প্রেমিক 

কিন্তু আমি জানি মনে 

কবি হতে গেলে ,শুধু প্রেমিক নয় 

ঈশ্বর হতে হয়। 


ফিরে আসতে হয়

 ফিরে আসতে হয় 

... ঋষি 


এবং বেশ খানিকটা এগিয়ে দিয়ে তোমায়  ফিরে আসতে হয় 

নিয়মিত ইন্টারভেলে  নিয়ম করে আমাকে দাঁড়াতে হয় ,

তারপর কিছুক্ষন ভীমসেন জোশি ,নীরেন্দ্রনাথ কিংবা শঙ্খ ঘোষ 

তোমার নাটকের স্ক্রিপ্ট ,তোমার সংসারের ছায়াপথ 

তারপর আর কথা থাকে না 

নিয়ম করে রোজ ফিরে আসতে হয়। 

.

হিসেবে মাফিক ,নিয়ম মাফিক ,ঘোড়ার আড়াই দান 

রাজা চেকমেট ,সব ঠিক আছে ,

এরপর মাঝরাত অবধি ঝড়ের বেগে মেসেজ চালাচালি

রিঙটোনের গলা টিপে, ফিরে যাওয়া ভাইব্রেট মোডে

 মানুষের কোলাহল , ফাঁকা গলির নির্জনতা অবধি হাত ধরে অবাধ যাতায়াত

তারপর ফিরে আসতে হয় ঠিক 

নিয়ম মাফিক। 

.

কোন কবির লেখা কবিতা অসাধারণ ,কোন কবি বড়ো নারীভিত্তিক লেখে 

কোন মোমোর দোকানে স্যুপটা ভালো বানায়

কার শরীরের কোন জায়গায় ছায়াপথের মতো লেগে রয়েছে জন্মদাগ

ক্যাফে-ট্যাফে হলেও, বাকি দিন ফুটপাতের চা-বিস্কুট

জানি সবটাই এমনি হয় 

তবুও প্রতিদিন নিয়ম মাফিক ফিরে আসতে হয়। 

ধীরে ধীরে, একটা যোগাযোগ, অনেকটা অধিকার অভিশাপগ্রস্ত গাছ যেন 

 কখন নীরবে আকাশ ছাড়িয়ে যায় , 

বেশ খানিকটা জীবন চুপ করে কাটিয়ে দেওয়ার পর

ভালোবাসি আর বলা হয় না 

শুধু দেখা হয় প্ল্যানমাফিক,নিয়ম মাফিক

প্রতিদিনকার বাড়ি ফেরার রাস্তায় পৃথিবীর সব অন্ধকার যেন এসে হাজির হয় প্রতিবার নিয়ম মাফিক তবু  ফিরে আসতে হয়।

অন্যমনস্ক ভূমিকায়

 অন্যমনস্ক ভূমিকায় 

... ঋষি 

.


জানি আর কিছুদিন পর 

আর কেউ বলবে না‌ চোখের জল মুছে নিতে

আর  কেউ বলবে না ঠিক সময়ে খেয়ে নেওয়ার কথা

দেখা হবে,আমার সাথে তোমার কিংবা তোমার সাথে অন্য কারও

অথচ সারারাত আমাদের শান্তিতে ঘুমোবার কথা ছিল একসাথে 

আর কোনোদিন  ঘুমোনো হবে না। 

 .

শুধু একটা বয়সের পর একটা অন্যমনস্ক সরু গলির একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে

আমি ভাববো তুমি সুখী হয়েছ

আর অন্যপ্রান্তে তুমি দাঁড়িয়ে ভাববে আমার গোঙানি কমে গেছে 

ভালো আছি নিশ্চয় ,

আমাদের  মাঝখানে খেলে বেড়াবে কমবয়সী ছেলেমেয়েরা

যাদের এখনও কেউ চোখের জল মুছিয়ে দেয় অঝোর কান্নায়।

.

এক শালিখ দেখলে আমার  দিন খারাপ যায়

জানি তুমি জানো ,

চোখ বন্ধ করলেই আমি দেখতে পাই

তুমুল চিৎকারে ফুলে উঠছে তোমার গলার শিরা ,

আসলে জোড়ে কথা বললে তোমার শ্বাসকষ্ট হয় 

এটা আমি জানি

কিন্তু এই জন্মে, অন্যমনস্ক হওয়ার বয়স পার করে এসেছি আমরা

এখন সময় সাবধানে পা ফেলার, সামনের দিকে এগোনোর।

বহুদূর থেকে ভেসে আসা গান, যেভাবে মাঝবাতাসে হারিয়ে ফেলে তার কথাকে,

তোমার জীবন থেকে আমিও হারিয়ে গেছি সেভাবে। 

মানিব্যাগের ভিতরে যারা কাছের মানুষের ছবি নিয়ে ঘোরে

আমি তাদের মতো নই 

আর তুমি কোনোদিনই আমার মতো ছিলে না। 

মানুষটাকে খুঁজছি

 মানুষটাকে খুঁজছি 

... ঋষি 


মানুষটাকে  খুঁজছি 

খুঁজছি এই শহরের বুকের চাষে অজস্র প্রজাপতি 

ঠিক কবিতার মতো দেখতে হবে তোমায় 

ঠিক কবিতার মতো তুমি আসলে ভালো থাকার বৃষ্টি হবে 

তোমার মেঘলা রঙের শাড়িতে তখন পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ 

তোমার চোখের কাজলে তখন আমার রাত জাগা কবিতারা  

মানুষের বাঁচার কথা বলবে। 

.

ভালোবাসা ,যন্ত্রনা ,বিরহ সবকিছু শেষ হয়ে গেলে 

ভাবনাদের ফোল্ড করে সরিয়ে রাখতে হবে তোমার সংসার সংসার খেলায় ,

তোমার হাত ধরে হেঁটে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ 

হয়তো অতীত ,

তুমি বলবে তোকে মানুষ করতে করতে জীবনটা কেটে গেলো 

অনুভূতিদের কখনো পাতপেড়ে খাওয়ানো হলো না

আমি বলবো বেশ তো এখনো তো অনেকটাই বাকি । 

.

আমি মানুষটাকে খুঁজছি 

এই শহরের অলিতে ,গলিতে ,নর্দমা পেরিয়ে সেই দুর্গন্ধময় বস্তিতে ,

তুমি তখন অর্ধনগ্ন, তোমার স্বামীর ঠোঁটে তুলে দিচ্ছ ভালোবাসার স্তন 

কিংবা তুমি তখন তোমার রোজকার হাঁড়িতে খুঁজে নিচ্ছো দুমুঠো খিদে 

হয়তো তোমার স্বামী আজ তুমুল নেশা করে করে তোমাকে পেটাচ্ছে 

তারপর সোহাগ করে বলছে 

বুঝলি তো সোনা নেশার ঘোরে কিছু খেয়াল থাকে না  

আর হবে না ,বিশ্বাস কর , 

তুমি হয়তো তখন আদরের খিদেতে ঠোঁট ঘোষছো স্বামীর বুকে 

আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি 

তুমি কাঁদছো ,তুমি হাসছো। 

.

এই ভাবে রোজ দিন ফুরোচ্ছে এই শহরে 

আমার কলম রোজকার খিদেতে লিখে চলছে গোটা শহর 

ধর্মতলার মোড় ,শেয়ালদা হয়ে আমার কলম চিৎকার করছে বাঁচার তাগিদে 

রোজদিন আমি মানুষটাকে খুঁজছি 

অথচ প্রতিদিন শুনছি শুধু সকলের মুখে বেঁচে আছি 

কিন্তু এখনো শোনা হলো না একটা মানুষ যে সম্পূর্ণ একটা  আয়নায় দাঁড়িয়ে  বলছে  ভালো আছি। 

আমি মানুষটাকে খুঁজছি 

সেই মানুষটা যার বুকে একটা সবুজ গাছ রাখা আছে 

সেই মানুষটা যার খোঁজে সময়ান্তরে ছুটে আছে সাইবেরিয়ান পাখিরা 

সেই মানুষটা 

সেই আশ্রয় ,যেখানে বলা যায় খুব সহজেই  ভালো আছি। 


ভালো আছি

 


ভালো আছি 

... ঋষি 


অনেক কথা লেখার ছিল তোমায় নিয়ে 

খাতার উপর বৃষ্টি এলো ঝমঝমিয়ে ,

অনেক কাছে যাওয়ার ছিল একলা দিনে 

কথাটা ঘরে মেঘ করেছে ঘুম জমিয়ে ,

সবকিছু কি কাব্য লেখা এতই সহজ 

তাই মনখারাপের ঘর ছেড়েছি বৃষ্টি নিয়ে।  

.

ঠিক এইভাবে পিছন ফেরা যায় না 

ঠিক এই ভাবে সময় করে ইচ্ছেমতো তোমায় পাওয়া হয় না ,

বৃষ্টি হয় ,ঝড় ,তুফান সব মনের ঘরে 

তবু ঠিক এইভাবে অন্ধকার ভাবনায় ভালো থাকা যায় না 

সত্যি কিংবা মিথ্যা সব যেন এক রকমফের 

দোষরোপের ডাইরি খুলে সত্যি আর জীবন লেখা যায় না। 

.

ফিরে আসি মনের ঘরে 

তোমার শাড়ির আঁচল ,একলা গিঁটে আমিও আছি  

জানি এইভাবে সাথে থাকা যায় না 

তবু বেঁচে  আছি কারণ এখন আমি একলা আছি। 

ভালো থাকাটা নিজের কাছে একটা আর্ট 

ভালো থাকাটা আসলে নিজের কাছে নিজের একটা জিত 

মানুষ বোঝে তবুও বোঝে না 

ভালো থাকতে গেলে একলা থাকাটাকে মেনে নিতে হয় ,

মেনে নিতে হয় সময়ের আগে ঘটে যাওয়া কারণগুলো 

মেনে নিতে হয় নিজের ভিতর একলা সেই বৃষ্টি গুলো 

বৃষ্টিতে একলা ভিজতে হয় 

ভালো থাকি বলতে নিজেকে আরেকটু মরতে হয়,

মারতে শিখতে হয় চাওয়াগুলো 

আর একলা জানলায় বৃষ্টি দেখতে দেখতে ভাবতে হয় 

ভালো আছি 

কারণ ভালোথাকাগুলোকে লুকিয়ে ভালো থাকতে হয় ।

.

every moment  when you feel some one wating for you 

you will lose your life 

every moment when you dream you are live alone 

you will die cause you  dont have any reason to breath .

Thursday, October 13, 2022

আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই

 আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই

... ঋষি 


ধরো একটা ছবি আঁকছি 

আকাশের নিচে কিছু মানুষ ,সামনে উত্তাল সমুদ্র 

এক রুগ্ন মেয়েমানুষ,চিৎকার করে সামনে কোনো মাঝি নৌকার জোয়ানকে বলছি 

ওলো শুনছিস ,আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই 

একটু খোঁজ লিয়ে দেখবি। 

.

আকাশে নিচে মানুষ 

কিংবা মানুষের মতো কিছু আধমরা ,সামনে বিশাল সমুদ্র 

উত্তাল ঢেউ ধেয়ে আসছে 

চিৎকার শুনতে পাচ্ছেন আপনারা কে যেন বলছে 

ওরে জল ঢুকিছি রে ,ঐখানে চল উঁচু থানে সবাই 

কে যেন কাঁদছে 

আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই। 

.

গাছের সাথে মানুষের ,মানুষের সাথে সাপের সহবাস 

বাড়িঘর ,তুলসীদালান ,খাটাল সব ডুবছে 

গতরাতে পাড়া ডুবেছে নিঃস্ব মানুষের আর্ত চিৎকারে

কিন্তু তার সাথে অন্য এক নারী কণ্ঠের চিৎকার 

আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই। 

ছোট্ট ছৈয়ের উপর এক বৃদ্ধ মোড়ল বলছে 

হাইদে ,বাতাসে বড়ো টান আজ ,মুখ বুজে থাকা 

আল্লার কৃপায় সব ঠিক হবে  ,

ছোটো  মেয়েটাকে বুকে চেপে যৌবন চাপা এক মেয়েমানুষ কেঁদে ওঠে 

সব ভেসে গেলো 

মানুষটা এখনো বাড়ি ফেরে নাই 

আহমেদ এখনো বাড়ি ফেরে নাই। 

এক যে ছিল রাজা

 এক যে ছিল রাজা 

... ঋষি 

.

এক যে ছিল রাজা 

যতসব গাঁজা খোর ,মাতালের ভিড় আমাদের চারপাশে 

চুপ রহ কমরেড 

এটা সব পুরুষ মানুষের গল্প আকাশ ফুঁড়ে ,মাটি ফুঁড়ে 

এক যে ছিল রাজা। 

.

কিছুটা গল্প এগোচ্ছিল বেশ 

তারপর তারপর। ..সোজা কন্ডোম কিনে বিছানার চাদর 

তারপর। ...ধৈর্য্য ধর কমরেড 

হাজারো যৌনতার গল্প চটি বইতে পড়া 

আমরা বাঙালি আর পড়তে না চাওয়া 

তারপর বেশ এগোচ্ছিল গল্পটা। 

.

বেশ কিছুটা এগোচ্ছিল গল্পটা 

তারপর তারপর। ১,২,৩ রঙিন কাঁচের ভিতর দিয়ে দেখা হিঁজড়ার দল 

আর তুমি ?

আমি রাজা বোঝার চেষ্টা করো কমরেড ,

তার শরীর সটান ,শরীরের তাপমাত্রা হিমালয় ঘেঁষা ঘাম পুঞ্জ 

এগোচ্ছে না 

আমি ড্রাইভার চেষ্টা করছি চালাতে 

আমিই রাজা। 

.

বেশ কিছু বুর্জোয়া মিটিং মিছিল। .পারছি না ,পারবো না 

বেশ কিছু ঝড় ,দাবানল ,কারফিউ, নোটবন্দী ,ঘর বন্দী ,চাকরি ছাটাই 

তারপর তারপর। .. জমছে না গল্পটা 

চুপ রহ কমরেড ,বুঝতে চেষ্টা করো 

ভোগের খিচুড়ি খেতে কাঙালি লাইনে দাঁড়ানো 

ব্রিজের তলায় দাঁড়ানো মেয়েটাকে অপরাঙ্গে দেখা 

মানছি না মানছি না 

পকেটে টান ,তবুও সিগারেট একটা দরকার ভীষণ 

তারপর মহালয়া ,নতুন পোশাকে সপরিবারে মায়ের পাশে আমি 

পারছি না আর পারছি না 

কনফিউসড রাজা জাপানি  তেলের বিজ্ঞাপনে। 

.

কেমন শুনছো কমরেড ?

এইভাবে প্রতিদিন ,রোজদিন এক একটা গল্পের শুরু হয় 

কেঁদে লাভ নেই ,শুধু অনুভবে 

এক যে ছিল রাজা।   

বলিকাঠ

 বলিকাঠ 

... ঋষি 


আচ্ছা ভালোবাসা কি মানুষের জন্য ?

প্রশ্নটা মনে করেই বাথরুমে ঢুকতে হয় 

সাবান মেখে চান করতে হয় , দাঁড়ি কামাতে হয় 

নিপুন ভাবে ,নিপুন সাজে পোশাকের আড়ালে ক্ষতগুলো ঢেকে 

কোনোমতে মুখে পুড়ে দৌড়। 

.

এ যেন এক অদ্ভুত ব্যাপার 

সামনে বলিকাঠ ,পা দুটো চেপে ধরে মুখ গুঁজে দাও জয়মা বলে 

রক্তজবা মায়ের চোখ আরো লাল হোক ,

মায়ের কথা ভাবিনি অনেকদিন ,ভাবিনি নিজের কথা 

শুধু ভালোবাসা ,শুধু ভালোথাকা 

এই কি বেঁচে থাকা ?

.

প্রেমিকার চোখের ভাষা পড়েছি বহু 

তবু দেখিনি কখনো মায়ের চোখের কোনে কালি ,

দিন ফুরিয়ে বৌয়ের কোলে তুলে দিয়েছি হাজারো সংবাদ 

কিন্তু সত্যি সংবাদে উঠে এসেছে 

আমি ভালো নেই। 

তারপর সময়ে বলি কাঠে মাথা 

ছুটে এসেছে ঝলকে এক হাজারো রক্ত আমার পাঞ্জাবিতে ,

রক্ত ভেজা পাঞ্জাবী মানুষ দেখতে পারে 

কিন্তু দেখতে চায় না ভালোবাসার মৃত্যু 

আমি দুটোই দেখেছি 

তাই বাড়ি ফিরি ক্লান্ত দরজা ঠেলে সব বুঝে 

তবু বলি ভালোবাসা মানে বলিকাঠ নয়। 


কবি কিন্তু প্রেমিক

কবি কিন্তু প্রেমিক
.. ঋষি 

এখন প্রহসন মনে হয় 
কেউ যদি বলে আমি তোমাকে ভালোবাসি খুব কিংবা তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না
কেউ বলে না
আমার শুধু তুই আর কেউ না
খুব কম বলে
আর যাই হোক তোর হাত আমি ছাড়বো না।
.
অনেকগুলো কবিতার রাত অন্ধকারে ডুবে যায় 
আসলে কবিতাকে বোধহয় অন্ধকারে তুই মনে হয়, 
সেই গভীর ওম, সেই আদুরে চোখ 
সেই অভিমান 
লোকে আমাকে কবি বলে
আমি বলি কবি হলেও আমি মানুষ কিন্তু প্রেমিক। 
.
অদ্ভুত কবিতা আর কবিতার রাত
শব্দরা সব ছায়াময়ী শরীরের মত আমাকে জড়াতে থাকে
বুকের ভিতর অভিমানগুলো তখন মাটি চাপা পড়ে
কোথাও যেন আমার কবরে ফুল ফোটে
অকারণে কেন জানি আমার বাঁচতে ইচ্ছে হয়। কবিতার পাতা তখন তোর ভাবনা
কবিতার শব্দরা তখন তোর শরীর
একটার পর একটা সৃষ্টি সে যেন তুমুল ঝড়, বৃষ্টির রাত, আমাদের  সঙ্গম
ক্রমশ সকালের আলো ফোটে
তুই হারিয়ে যাস ঠিক কিন্তু আমার কবিতাগুলো থেকে যায় 
লোকে আমাকে কবি বলে
আমি বলি কবি হলেও আমি মানুষ কিন্তু প্রেমিক।

ভালোবাসি তাই



ভালোবাসি তাই
... ঋষি 

যখন দেখি ভালোবেসে এক বৃদ্ধা তার স্বামীর হাত ধরে রাস্তা পার করে
যখন দেখি ভালোবেসে এক তরুন ঘামে ভেজা তরুনীর মুখ নিজের রুমাল দিয়ে মুছিয়ে দেয়
যখন দেখি ভালোবাসা ধর্ম পেরিয়ে মানুষকে ভালোবাসে
যখন দেখি ফাঁকা রাস্তায় কোন পথিক পথ হারিয়ে ঈশ্বরের বদলে তার ভালোবাসাকে ফোন করে
তখন মনে হয় আমরা আছি বেঁচে।
.
প্রতিদিনকার ঘুমের ওষুধ, পার্সের ভিতর লূকোনো প্রেমিকার মুখ
বুকের খাঁজে আটকানো হাজারো প্রতিশ্রুতি
সেই বহুদিন আগে দাঁড়িওয়ালা সেই ভদ্রলোকের গানটা
" আয় আরেকটি বার আয় রে সখা প্রানের মাঝে আয় "
শুনলে মনে হয় এই তো বেশ ভালো আছি
ভালোবাসি।
.
সব প্রশ্নের উত্তর ফুরিয়ে যায়
সব পাখি ঘরে ফিরে আসে
কিন্তু ঘর শব্দটা একটা লুকোনো ধাঁধা মানুষের মনে
ঘরের স্বপ্নে তুমি বুক হাতড়াও একলা বিছানায়
ঘরের স্বপ্নে আমি রাত জাগি ক্লান্ত কবিতায়
তবু কথা ফুরোয় না জানো
ভালো লাগে কবিতার শব্দের, শব্দের ভালোবাসিতে তোমায় অনুভব করতে
আর ভাবতে
ভালোবাসি তাই তো আছি বেঁচে।

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...