Sunday, June 27, 2021

চলন্তিকা ও মৃত্যু ঘোর



চলন্তিকা ও মৃত্যু ঘোর
.. ঋষি 
চার শববাহকের ঘাড়ে করে আমি ফিরে যাবো
মানুষগুলো ঘেমে ওঠা হাতে তুমি অশ্রু ফেলো না,
আমার বুকের রোমের ভিতর অজস্র রাত্রি
না তুমি মুখ গুঁজে কেঁদো না, কোন একলা দিনে আগুনের শোকে,
আবারও মৃতদেহ পুড়িয়ে ফিরে যাবে ওরা
সমাজ কাঁদবে না আমি জানি, ওরাও কাঁদবে না। 
.
মৃত্যু বুকে শুয়ে থাকা ঘন মুহুর্ত 
তুমি এসে বসে আছো আমার দুই হাতের আঙ্গিনায়, 
আকাশে চাঁদে ধরা দিক অন্য গ্রহন 
আমি আকাশ খুঁড়ে এগিয়ে যাই অন্য গ্যালাক্সির খোঁজে, 
তুমি রাস্তা খুঁড়ে শহর থামিয়ে দিও 
তবুও তুমি রাস্তার দিকে তাকিয়ে থেকো না। 
.
আমার মৃত্যুর বিছানায় তুমি চলে এসো 
জলন্ত ঠোঁটে, ঠোঁট রেখো শহরের বুকে
শরীরের থেকে সত্যি হলো দামি, 
নিরিবিলি একলা ভাবনায় তুমি ঘুমিয়ে থেকো না 
জেগে ওঠো
           জাগুক সমস্ত মানুষ ।
চার শববাহকের ঘাড়ে করে আমি ফিরে যাবো
মানুষগুলো ঘেমে ওঠা হাতে তুমি অশ্রু ফেলো না,
বরং তুমি এগিয়ে যাও সূর্যের দিকে
মেলে দিও তোমার শাড়ীর আঁচল 
আমি থাকি কিংবা না থাকি
         কিছু স্তব্ধতা বুকের মাঝে বাজে জানি,
                    তবুও চলন্তিকা 
                তুমি থেমে থেকো না। 


ওরা ভালো থাকুক



ওরা ভালো থাকুক 
... ঋষি 
দুই রাত্রি নিয়ে বসে আছি শ্মশানের পাশে
মৃত মানুষের ভুল করা সুখে আজ পবিত্র পাপ,
দাউ দাউ করে পুড়ে যাওয়া মানুষের  শোক 
মৃত মানুষ 
আজ ছাব্বিশ মাস হলো 
লোডশেডিং সারা শহর জুড়ে সময়ের কারফিউ। 
.
দিনের ভিতর রাত্রি ঢুকে পড়ে আজ 
পাহাড়ের চুড়ায় সুর্য ক্রমশ ঢলতে থাকে  অন্ধকার স্বপ্নে,
নিরিবিলি বইতে থাকা বিষাক্ত বাতাস 
কানে কানে বলে
ওরা ভালো নেই, তুমি ভালো নেই, আমিও না। 
.
পাশাপাশি দুই রাত্রি
অন্ধকারে সব রঙ আজ কালো কোনো ছায়া
সারাবেলা ঘোরে
ফিসফিস করে কথা বলে একলা বাতাসে। 
এই শহরে এখন বৃষ্টি বাতাস এলো , নোনা স্পর্শে
মরচে পড়ে রঙিন দুনিয়ায়। 
আজ বহুদিন এই শহরের বুকে শুধু মৃত কনভয় 
আজ বহুযুগ এই হৃদয়ের ঘরে স্বপ্নের কিছুদিন 
একলা অন্ধকারে,
প্রতীক্ষা
শ্মশানে পাশে দুই অন্ধকার মৃতদেহ 
যদি আবার সংসার খোঁজে।
.
তবে আলো হোক মানুষের ভালো থাকা মানুষের ভীতে
বৃষ্টির ভাবনায় নিভে যাক হৃদয়ের চিতা
ওমঃ নমঃ স্বা ঃ
ওরা ভালো থাকুক। 


শুধুই করোনা

শুধুই করোনা 
.. ঋষি 
.
দরজার বাইরে দরজা খুলে বসে আছি
আমার ঘরে, বাইরে -ভিতরের ঘরে 
করোনা? 
করোনা, কে করোনা? 
আমি, তুমি, আমরা সকলে আজ দেশসুদ্ধু করোনা। 
.
পেটে ভাত নেই,
শিক্ষা ব্যবস্থা অসুস্থ হয়ে শুয়ে করোনার বালিশে
দরজার ভিতর মৃত মায়ের পচা, গলা শরীর
দরজার বাইরে ভীত,সন্ত্রস্ত থেমে যাওয়া শহর,
কর্মহীন হাজার বেকার ,ভীত সন্ত্রস্ত আমাদের চিৎকার
প্রতিক্রিয়াশীল রাজনিতীর কহর 
শুধুই করোনা,
 না আমরা দায়ী এক সাম্রাজ্যবাদী করোনার সাম্রাজ্যের। 
.
তবু থামছে কই মানুষের সন্ত্রাস, জম্মু, কাশ্মীর, তালিবান
অনন্ত মানুষের বুকে স্বার্থপর ষরযন্ত্র , 
মৃত সন্তানের মুখে এই সময়ের হেরে চলা সময়ের  চুমু, 
ভ্যাক্সিনের নামে প্রতারনা
অক্সিজের নামে বিজনেস 
মানুষের নামে মুনাফা 
শুধুই মুনাফা। 
.
মানুষ হাত পাততে পাততে ভুলে গেছে নিজের অস্তিত্ব 
মানুষ ভয় পেতে পেতে ভুলে গেছে মনুষত্বের মানে 
মানুষ একলা থেকে হারিয়ে ফেলেছে সম্পর্কের ভীত
মানুষ খিদের কারনে হারিয়ে ফেলেছে আগামীর পৃথিবী।
শুধু লোভ, শুধু ধ্বংস, শুধুই অহংকার 
শুধু রিপু,শুধু কথা, শুধুই আমি 
শুধুই মিথ্যা, শুধু স্বার্থ, শুধুই কাঁটাতার।
.
কে কারন ?  করোনা
আমি, তুমি, আমরা সকলে আজ দেশশুদ্ধু করোনা।







.

Saturday, June 26, 2021

তবু বেঁচে আছি

তবু বেঁচে আছি
... ঋষি 

জাগছি জাগছি করে ঘুমিয়ে কাটিয়েছি
এরগুলো মাস, এতগুলো বছর 
আত্মঅহংকারে রাস্তার ধুলো কুড়িয়ে মেখেছি একলা চড়াই পাখি
বাঁচিনি 
তবু বেঁচে তো আছি। 
.
গরম ভাতের থালা, নুন, লংকা আর ঘি ভাত 
বদহজম হয় 
হজম বলতে তোমার বুকের গন্ধে একটা নিঃশ্বাস 
নিসন্দেহে
গরিয়ে যাওয়া জল, এতদুর
কতদূর? 
.
প্রশ্ন করি না আজকাল 
বুকের ভিতর রাশিফল বলে দেয় বাঁচার গতি, 
অগতির গতি,
সুন্দরী গাছের মত অক্সিজেন আজ কেন বালুচরি? 
নিম্নবিত্ত বোধ
ভুলিয়ে দেয় সন্মান, বেঁচে থাকা ভুলিয়ে রাখে বাঁচার মানে।
কত কথা বলা হয় নি
খুন হয়ে যাওয়া দৈনন্দিন, ধর্ষিত মানে
এক বার 
দুবার 
একশো আটবার, 
যে সব মাকড়সার জাল বাড়িয়েছে বয়স
জন্ম থেকে হিসেব সেখানে, 
নুন খাই, পান্তা,  শুকনো পেঁয়াজে
জীবন এখানে বাসি হয়ে যায়। 

Thursday, June 24, 2021

মানুষের মতো না

মানুষের মতো না
.. ঋষি 
বাবা বলেছিলেন বড় হয়ে কি হবে? 
উত্তর দিতে পারি নি, সত্যি কি আজও উত্তর পাই নি,
আমার শহরে জন্ম 
আর আমার জন্মের দিনে চাঁদ ওঠে নি 
তাই সবুজ বলতে আমি ছোট মাছের আকোরিয়াম বুঝি
আর বাঁচা বলতে একটা বনসাই। 
.
আমাকে মা বলতেন, সারাদিন কি ভাবিস বলতো? 
আমি তখনও জানতাম না আজও জানি না
শুধু ক্যালেন্ডারের পাতায় দিন কেটে যায় 
শুধু চামড়ার ভাঁজে বয়স আর উদ্দেশ্যহীন শহর সাক্ষী 
দৌড়,দৌড় আর দৌড় 
যেন দিনগুলো ম্যারাথন রেস আর আমি তাসের জোকার। 
.
আমাকে চলন্তিকা বলে 
গাছের সাথে আমার মিলগুলো আসলে একটা ক্ষোভ
অনেকটা দংশন, 
অনেকগুলো দিন কাগজ কলমে শুয়ে থাকা বেকারত্ব 
অনেকটা সময় শুধু আঁচড়ে ফুটে ওঠা আমার শহর। 
আমার ছেলে বলে বড় হয়ে আমি কি হবো? 
আমি বলি আমার মতো না 
আমি বলি গাছের মতো না
আমি বলি সময়ের মতো না
না আজকের মানুষের মতো না
তবে মানুষ হোস। 


Wednesday, June 23, 2021

গাছ

গাছ 
.. ঋষি 
অহল্যার বাতিস্তম্ভ, বাড়তে থাকা রেত
রামের ভাই লক্ষণ, লক্ষণের ভাই.......... ? 
রামপদ সান্যাল নির্বাচিত নয়, খুব সাধারণ 
কিন্তু সে যে গাছ হতে চায়
আমার মতো। 
.
আমিও গাছ হতে চাই 
আমার গভীর শিকড় তোমার হাত পৌঁছোবে না, 
তোমার ধর্ম পৌঁছোবে না অতদুর
শুধু বৃহন্নলা আমি আর রামপদ 
আমাদের দরজায় জনতার নির্বাচিত সদস্য 
রাষ্ট্র যে চুরি হয়ে যাচ্ছে মশাই বাড়তে থাকা মশার জ্বালায়। 
.
ও মশাই, আমি না হয় সাধারণ 
রামপদ আর আমি না হয় স্বপ্ন দেখি গাছ হবার 
কিন্তু মশা 
না প্লিস মারবেন না। 
আর মশাই যা দিন কাল নুন আনতে বৌ পালায় 
প্রেম মশাই কাব্যে ভালো লাগে 
আর ধর্মগ্রন্থ রামায়ন, পাষান অহল্যা, লক্ষণের দাদা রাম
উফ এ রাষ্ট্রে রাম নেই তবে, মশা আছে 
রাবণ নেই, তবু মশা আছে
আর অহল্যা 
পাথরের চোখে সাধারণ জনতা। 
.
আমি রমাপদ মুখোমুখি স্বপ্ন দেখতে পারি গাছ হবার 
কিন্তু রাষ্ট্রে পচা শিকড়, কিন্তু গভীর 
আমাদের আর গাছ হওয়া যাবে না, শুধু বাল্মিকী ছাড়া। 



আমার বাংলা

আমার বাংলা 
.. ঋষি 
বাংলায় ফিরছি বিংগো থেকে বারাসাত
উত্থিত লিংগ আর ব্রেসিয়ারের স্ট্রাপ আর কবলিত, 
আমি বাংলা থেকে বলছি 
বনগাঁ থেকে শালবনী তারপর উত্তরে উঁচু পাহাড় 
তোমার, আমার 
বঙ্গভঙ্গ চাইছে। 
.
প্লিস শায়ার দড়ি আলগা করো না
খুলে পড়বে বাংলা
সি বি আই আসবে তুলে নিয়ে যাবে তোমার লোকানো মণিমুক্ত
বরং তুমি আমার সাথে ছাড়া কারো সাথে শুয়ো না
বাংলা ভাগ করলে, ভাগ বাড়বে
কিন্তু কমবে তোমার আমার বাড়তে থাকা চর্বি। 
.
ফিরে আসছি বাংলায় 
ও মা কোথায় হাত বাড়া-চ্ছো,বাড়িয়ো না প্লিস,
কষ্ট হয় 
যতই হোক আমার বাংলা, আমার ভাষা, 
তোমার শরীরের প্রতিটা টুকরো আমার খুব নিজস্ব। 
জানো না একবার যখন আমার বলেছি, ছুঁয়েছি 
তখন সবটাই আমার,
হাসছো কেন?  তোমাকে কাছ দিয়ে পেতে চায় সবাই 
প্লিস দরজা বন্ধ করো, 
এইবার শুধু তুমি আমার 
বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া, সুন্দরী থেকে সুন্দরবন, 
লাইট বন্ধ করো 
সবটাই তুমি আমার, আমার বাংলা। 

Tuesday, June 22, 2021

নীলকন্ঠ

নীলকন্ঠ
...ঋষি 
চলে যাবো বলে তোর দিকে তাকিয়েছি 
দেখছি দূরে একটা নীলকন্ঠ পাখি উল্কি আঁকছে আকাশের গায়ে, 
আসলে কাছে আসাগুলো ভিষন সহজ অহরহ 
আর দূরে যাওয়াটা আরো সহজ এই কারনের পৃথিবীতে,
সকলে তো আকাশ হতে পারে না চলন্তিকা
আর লিখবো না আমি তোকে নিয়ে। 
.
শুধু স্তব্ধতা রেখে যাচ্ছি এক সন্ধ্যার আঁচলে ধ্রুবতারা 
শুধু আকাশটা ছেড়ে যাচ্ছি এক সময়ের সাথে পথ চলা,
আমি জানি 
সব পাখি ঘরে ফিরে আসে 
আর সব ঘরগুলো এই শহরে দাঁড়িপাল্লার বিষন্নতা। 
.
চলন্তিকা নিজের বুকে এক্সরে প্লেটে আজকাল একটা ফুটো দেখতে পাই 
আর সেই ফুটো দিয়ে গলে যায় আমার মুহুর্তদের কথাকলি, 
আমি জানি কথাগুলো একা থেকে যায় 
আর কাজ ফুরোলে মানুষের কথা ফুরিয়ে যায়, 
আমি শুধু আকাশ খুজতে চাই 
চলন্তিকা তোর বুকে শুধু পাথরের শব্দ 
পাথর এই সমাজ 
পাথর এই গোত্র
পাথর নিয়ম দিয়ে সাজানো বন্ধ আকাশ। 
আর না 
আর না 
কান্নার মুহুর্ত 
এই বার মুক্তি  নীল আকাশ আর একলা নীলকন্ঠ। 

টিকটিকি আর পর্যায়ক্রম

টিকটিকি আর পর্যায়ক্রম 
... ঋষি 
চন্দ্রবিন্দু চ এর মতো জীবন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে
এক, দুই,তিন, চার
অন্ধকার, 
কাহাতক জীবন নিয়ে আঁকিবুঁকি 
বারংবার প্রশ্রয়, আশ্রয়ে লেগে থাকে দেওয়ালে টিকটিকি। 
.
সম্পর্ক  বলতে অগণতি হৃদয়ের  দেওয়ালের রক্তকোষ
পাটিগণিতের হিসেবে এক,দুই, তিন,চার, 
অন্ধকার,
আমি হিসেবে কাঁচা বরাবর 
নিয়ম করে বুকে উঠে আসে সম্পর্কের ট্রাকটর 
যাতে কোন ফসল ফলে না সময়ে
শুধু একটা টিকটিকি সারারাত জাগে অন্ধকার গায়ে। 
.
অদ্ভুত প্রহসন 
মানুষ মাত্র সকলেই আদম, ইভের সন্তান 
সকলেই সম্পর্কজাত 
আদম ইভ কি জানে সম্পর্ক একটা টিকটিকির নাম? 
যা সারারাত একলা অন্ধকার দেওয়ালে খাওয়ার খুঁজে বেড়ায়
খোঁজে বাঁচার রসদ, 
ঘুম আসে না 
বুকের গভীরে আদম, ইভকে প্রশ্ন করে
 সম্পর্ক বলে সত্যি কিছু ছিল কিনা?
দেওয়ালে টিকটিকি ডেকে ওঠে তিনবার, খুব সত্যি 
আর চারবারের বার
শুধুই অন্ধকার। 

Monday, June 21, 2021

অনন্ত মিশ্র



অনন্ত মিশ্র
... ঋষি 
অনন্ত মিশ্র 
নামটা বোধহয় খবরের সকলের পাতার চোখ এড়িয়ে গেছে, 
সাঁওতাল পরগণার কোন এক অখ্যাত গ্রামের চাষীর ছেলে 
হ্যা বাড়িতে বউ আছে, দুই মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা মা, 
হ্যা সম্পর্কে ছিল 
কিন্তু আজ অনন্ত মিশ্র নেই কোথাও। 
.
তিন দিন, হ্যা তিন দিন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার 
পুলিশের কাছে তার বউ গিয়েছিল, 
পুলিশের বড়বাবু তাকে বলেছিল
ওরে তোর মরদের আর কি হওয়ার ছিল 
বড় লোকের গর্তে হাত দিলে, এমনি হয় 
গর্ত খিঁচে লয় রে ,,,, বলে হেসেছিল পান খাওয়া দাঁত বের করে। 
.
অনন্ত মিশ্র 
না লোকটার নাম খবরের পাতায় অনেকেরি চোখ এড়িয়ে গেছে
এমন খবর কে রাখে?
নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর অনন্তের পচা গলা বডিটা পাওয়া গেছিল 
ডোমঝুঁড়ির খালের পাশে, 
চোখ খুবলে নিয়েছে কেউ,একটা হাত পাওয়া যায় নি তার। 
পুলিশের বড়বাবু মৃতদেহ সারজিমিনে এসে বললো 
ফাইল ক্লোস, অনন্ত মিশ্র পাগল ছিল, 
অনন্তের পচা গলা শরীরটা তখন চিৎকার করছিল 
আমার বাপের জমি, আমার পরাণ থাকতে কাউকে দিমু না।
আর সেই একি সময় অনন্তের বাপ এক সাদা কাগজএ টিপ ছাপ দিয়ে
গিয়ে দাঁড়াল তার একরত্তি চাষের জমির পাশে,
চোখের জলে তার সেই চাষের জমিতে ফলেছিল তখন  অনন্তের রক্ত 
তার বাপ বললো বাবা অনন্ত এই শেষ বার 
কাল থেকে থেকে তুকে আর ছুঁতে পামু না। 



Sunday, June 20, 2021

রিমঝিম গিরে সাওন

রিমঝিম গিরে সাওয়ন
... ঋষি 
এক ছাতা বৃষ্টি কুঁড়িয়ে আমি ঢুকে পড়লাম চলন্তিকায় 
বৃষ্টির ছাটগুলো ভিজে বিকেলের গালিচায় 
সময় লিখছিল, 
আমি কুপমন্ডুক এই আকাশটাকে বস্তায় ভরে তখন ফেরিওয়ালা 
তখন শব্দরা আমার রক্তে কবিতা লিখছিল 
চলন্তিকা ভালো আছো? 
.
ভালো আছো এই শহর? 
ভালো আছো ভিজে শহরে একলা ভেজা চড়ুই পাখি? 
ভালো আছো রাস্তায় দাঁড়ানো প্রতিবছরের মানুষের বৃষ্টির দুর্ভোগ? 
আমি শুধু কাব্য লিখি বৃষ্টির জলে 
বারংবার শুধু জানতে ইচ্ছে হয়, কি করছো তুমি? 
চলন্তিকা তুমি কেমন আছো? 
.
রিমঝিম গিরে শাওন, সুলগ সুলগ যায়ে মন 
ভিগে আজ.... 
       আর না, 
 বন্দী শহরের দরজায় দাঁড়িয়ে এক বিষাক্ত জীবাণু 
শুধু মানুষকে কাঁদাচ্ছে। 
আমি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ভাবতে পারি মনে 
একটা বৃষ্টি দিনে রাস্তা, পাশাপাশি আমি, তুমি আর বৃষ্টির জল 
কান্না পাচ্ছে? 
আমারও। 
বারান্দায় ম্যানিপ্ল্যান্ট গাছটা  বৃষ্টিতে ভিজে আজকাল আকাশ ছুঁতে চায় 
আর আমি চাই
কুপমন্ডুক এই আকাশটাকে বস্তায় ভরে ফেরিওয়ালা হতে
শহরের অলিতে গলিতে হাঁক দিয়ে বলতে
আমি এসে গেছি হরেক সুখের স্বপ্ন নিয়ে তোমাদের জন্য
আর তোমার জন্য চলন্তিকা
কিছু স্বপ্নের কবিতা আর একটা বৃষ্টি ভেজা দিন। 

Tuesday, June 15, 2021

তুমুল বৃষ্টি

তুমুল বৃষ্টি 
.. ঋষি 
বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি 
সারা শহরে ভিজে যাওয়া রোগ, একলা অসুখ 
তবুও বৃষ্টি,
চলন্তিকা বলে আমি দুঃখী দেশের নাগরিক। 
যে দেশের অর্ধেক লোক খেতে পায় না 
যে দেশের লোক মরে গরমে, বৃষ্টিতে, অদ্ভুত সব রোগে
সে দেশ দুঃখী নয় তো কি? 
.
চলন্তিকাকে প্রশ্ন করা হয় নি কখনো 
তার দেশে কি বৃষ্টি  পড়ে না শুধুই কি বরফ পরে? 
তার দেশে মেঘ করে না, ঝাঁ চক চকে আকাশ? 
তার দেশে কি মাটি ভেজে না?  মানুষ মরে না? 
আর মন 
না নেই কি সেখানে কোন মনের অসুখ? 
.
বাইরে তখন তুমুল বৃষ্টি 
বৃষ্টির ফোঁটা গুলো যেন শুকনো মাটির বুকে জীবন খুঁজছে, 
আমি এক মনে তাকিয়ে আছি দূরে
আর আমার শহর ভিজছে একা। 
ভিজছে লকডাউনে একলা দাঁড়ানো বাস, ট্রাম, ট্যাক্সি
ভিজছে অমিতের দোকানে লালু, ভুলু কুকুরগুলো খিদের দিকে তাকিয়ে 
দূরে একলা দাঁড়ানো গাছটা এক মাথা চুল নিয়ে ভিজে চলেছে
ভিজে চলেছি আমার ভিতরে আমি বলে দেশটা
জল জমছে রাস্তায় 
আমি দাঁড়িয়ে একা
ভাবছি 
চলন্তিকা তোমার দেশে কি আর বৃষ্টি পড়ে না?


Sunday, June 13, 2021

সহবত



সহবত 
.. ঋষি 
আমার সেই পার্কস্ট্রীটের বৃদ্ধকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় নি
সঠিক পথ বাতলাবার জন্য,
আমার সেই পানশালার ওয়েটারকে ধন্যবাদ জানানো হয় নি 
ঠিক মতো আমি আর বন্ধুদের সার্ভ করার জন্য। 
.
আজ অবধি কোন ফুলকে আমি বলি নি, ধন্যবাদ
কি সুন্দর তোমরা ফুটে আছো, 
আজ অবধি আমার সূর্যকে কখনো বলা হয় নি, ধন্যবাদ 
তোমার এত আলো, এত তেজ। 
.
এমন অনেককেই বলা হয় নি আমি দুঃখিত 
তোমায় কষ্ট দিলাম বলে,
আমার আঠাশতম প্রেমিকা স্টেশনে একলা দাঁড়িয়ে ছিল 
তাকে বলি নি আমি আর ফিরে আসবো না। 
আমার বাবা, মাকে কখনো বলা হলো না
ধন্যবাদ আমাকে জন্ম দেবার জন্য
দুঃখিত আমাকে সহ্য করার জন্য। 
চলন্তিকা আমি বারংবার বলেছি তোমায় ছাড়া বাঁচবো না
কিন্তু প্রিন্সেস ঘাটে তোমাকে চুমু খেয়ে বলা হয় নি 
তুমিই সেই একমাত্র 
যার জন্য আমি বেঁচে। 
.
অদ্ভুত মানুষ, অদ্ভুত আমাদের আলাপচারিতা
আমরা শব্দের আছিলায় সম্পর্ক ছুঁতে চাই 
অথচ সম্পর্কের ঠিক মানে বুঝি না। 
আমাদের সহবত আমাদের শিক্ষা দেয় নম্র আর ভদ্র হতে
অথচ আমরা নিজের গভীরে অহংকার পোষন করি 
অনেক সময় সামনে ধন্যবাদ বলি 
আর মনে মনে বলি " এটা তোমার কাজ "। 

সবটা ঠিক এমন নয়



সবটা ঠিক এমন নয়
... ঋষি 
যেখানে জন্ম ছিল সেখানে মৃত্যু থাকবে
যেখানো ভালো মানুষ সেখানে ভালোবাসা থাকবে 
সেটা ঠিক কথা নয়, 
তবে ভ্যানচালকের ছেলে ডাক্তার হতো না
তবে কোন সাহিত্যিকের ছেলে গাঁজাখোর হতো না
তবে হতো না শুধু ব্রেইল লিপিতে হেলেন কেলার। 
.
আমার জানা নেই 
আগামীতে কে, কি হবে? 
আমার জানা নেই এই পৃথিবী নামক গ্রহটা কতটা সত্যি
তবে জানা আছে প্রতিভা আর প্রতিভুর মাঝে তফাৎ, 
আমার জানা নেই ঈশ্বর বলে কেউ আছে কিনা
তবে বিজ্ঞান বলে ঈশ্বরকণা আছে। 
.
আমার শব্দটা আসলে একটা দত্তক 
আমরা ভাবি আমার শব্দটা আসলে একটা অধিকার, 
আমরা আমার বলি 
কিন্তু জানি না আমার শব্দটা কতটা নিজের হৃদপিন্ডের কাছে।
আমরা জানি না আমরা জন্মে কিছু নিয়ে আসি না
আমরা ভাবি আমরা মৃত্যুতে অনেক কিছু রেখে যাই
আসলে আমরা গীতা পড়ি না
পড়ি ল্যাসভেগাস আর ভাবি উন্মুক্ত নারী। 
আমরা মাংস নিয়ে খেলা করি,মুখোস দিয়ে স্বপ্ন গড়ি 
আমরা সস্তায় বড়লোক হতে চাই,ভালো থাকতে না
আমরা সাজানো সমাজ গড়তে চাই ম্যানিকুইনে রাখা
আমরা ভালো চাকরী করতে চাই, দেশের জন্য না, 
আমরা জানার জন্য বই পড়ি না, পড়ি খবরের কাগজ
আমরা সবার জন্য কেউ বাঁচি না, পৃথিবী একলা বাঁচুক। 
.
যেখানে জন্ম ছিল সেখানে মৃত্যু থাকবে
যেখানে ছন্দ ছিল সেখানে কবিতা থাকবে
সেটা ঠিক কথা নয়, 
রবীন্দ্রনাথ,সেক্সপিয়ার মরে গিয়েও বেঁচে আছেন
এক বিন্দু আলো যেমন সমাজ গড়তে পারে 
তেমন অন্ধকার সময় চাঁদ ঢাকতে পারে। 

Thursday, June 10, 2021

ঘাসেদের কবিতা




ঘাসেদের কবিতা
... ঋষি 
ইতিহাস আর ঘাসের গল্পটা লেখে নি কেউ
সকলে নিয়মিত পার্কে গেছে, 
হাঁটা চলা, খেলাধুলা আর ফস্টিনস্টি,গরুর খাবার 
এক জীবনে ইতিহাস বদলায় না ঘাসের। 
তবু ঘাসের ক্লোরোফিল থাকে
তবুও কপোত কপোতি গিয়ে বসে সবুজ ঘাসে। 
.
অনেকদিন আজ কলমে ধুলো জমেছে 
অনেকদিন আজ সময়ের গল্পে আজ মিথ্যা বাঁচার সুখ, 
সুখ ঘাস নির্ভর
হঠাৎ কোন এক সকালে পার্কে ফেলা হলো বিল্ডার্সের ইট 
তারপর আরও লড়ি সিমেন্ট বালি আর লোহা
হাজারো সবুজ স্বপ্ন চাপা পড়লো 
হলুদ হয়ে গেলো দিনান্তে পুরোনো ইতিহাসের পাতা। 
.
এই গল্পটা কেউ লেখে নি ইতিহাসে 
ইতিহাসে আমরা যা পড়ি তা শুধু সাম্রাজ্য বদলের কথা
কিন্তু ঘাসের কথা
সে তো সাধারণ । 
এই কবিতায় কোন প্রেম নেই 
আছে একগুচ্ছ অভিশপ্ত ইতিহাস,
অবাক হলো কবিতারও ইতিহাস থাকে?  হ্যা থাকে, আলবাৎ থাকে
কবিতা কেউ লেখে, কেউ পড়ে, কেউ আহা উহু করে
কিন্তু ঘাসেদের ইতিহাস লেখে না কেউ
কারণ ঘাস কখনো চিৎকার  করে বলতে পারে না 
শুধু সবুজ হারিয়ে হলুদ হয়ে যায়। 

Wednesday, June 9, 2021

রাক্ষসী



রাক্ষসী 
... ঋষি 
এক রাক্ষসীকে জন্মাতে দেখেছি আমি 
দেখেছি তার জুরুলের দাগে নিয়মিত একটা বাতিস্তম্ভ
সারা রাত আলো দেয়, 
সকালের আলোগুলো সমাজের আড়ালে থাকে এই শহরে 
তবু আলো নিয়মিত 
সময়ের কাব্যে গল্পগুলো হ্যাপি এন্ডিং চায়। 
.
ফিরে আসি তারপর 
জানলা খুলে আকাশের চাঁদে আমি অনেক দাগ দেখতে পাই,
তবু জ্যোৎস্না এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমায় 
আমি চুপ করে থাকি 
এক প্রাচীন মুগ্ধতায় নিয়মিত প্রত্যাবর্তন 
এ যেন চাঁদের দাগগুলো আমার বুকে ক্ষত তৈরী করে।
.
এক রাক্ষসীকে আমি চিনেছি তার গৃ্হস্থতায় ঢুকে 
এক রাক্ষসীকে আমি জেনেছি অদ্ভুত কোন একাকি দিনে, 
নিজের নিস্তব্ধতার সাথে 
সেই রাক্ষসীর করুন মুখ শুধু জন্ম খোঁজে ফিরে আসার। 
সব কাব্য মুখোরোচক নয় 
কোন কোন কাব্যের শেষে চাঁদ দাঁড়িয়ে থাকে বাতিস্তম্ভ বুকে 
শুধু আলো দিয়ে যায় 
একলা অবেলায়।
.
রাক্ষসী রাতের আকাশে তারা জুড়ে দেখে এক রাক্ষসকে,
রাক্ষস মিটি মিটি হাসে 
হঠাৎ আকাশের তারাগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ে রাক্ষসীর বুকে 
তখন প্রাচীন কোন মিথে বলা হয় 
এক সময় এই সারা শহরে রাক্ষসপুরী ছিল 
আর ছিল 
একটা অনেক পুরনো অসমাপ্ত  গল্প বাতিস্তম্ভ আর চাঁদের। 


বিশ্বাস

বিশ্বাস 
..ঋষি 
অদ্ভুত আহরণ, অদ্ভুত রোগ
জীবন যেন এক ভাস্কর্য, বোকা ফিনিক্সের খোঁজ, 
এ গ্রহে সমাধি শব্দটা ঈশ্বরের ঐশ্বর্য 
মানুষ মিথ্যে বলে, এগিয়ে গিয়ে পিছিয়ে যায় 
মানুষের দোষ নয় 
মানুষ বদলায়। 
.
আমার হৃদয়ের এক্সরে প্লেটে রাখা অজস্র নারী মুখ
সময়ের মুখ, 
খবর আছে আমার কাছে আল্পসে বরফ জমে আজকাল 
আর আখরোটে জমা থাকে বিষন্নতা। 
সব প্রশ্নের অদ্ভুত উত্তর মানুষ সাজিয়ে নেয় নিজের মতো করে
কিছু মনিষীদের উচ্চারিত শব্দদের পদলেহন করে
সময় বাঁচতে শিখিয়ে দেয় অস্থিরতার নামে। 
.
সময় বদলায় 
বদলায় না নারী পারদে বাস করা একলা বিষন্নতা, 
অর্ধ উন্মাদ প্রেম এ শহরে খুঁজে নেয় একলা শহর 
এখন প্রশ্ন হলো? 
ভালোবাসা কি সময়ের সাথে ঘড়ির কাঁটা
নাকি ঘড়িটায় থেমে নিজের মতো করে। 
আমি পাগলের চোখে কবিতায় খুঁজি একলা শহর
নিজের মতো করে শহরের পথে ঘাটে দেখি হাজারো চরিত্র
আর দেখি 
অপেক্ষা শুধু একটা শব্দ নয় 
বিশ্বাস 
কারণ জীবনের পথে বিশ্বাস বাঁচার আরেক নাম। 

চুপচাপ

চুপচাপ
... ঋষি 
সময় কেমন চুপচাপ শুয়ে আছে বিষন্নতার পাশে 
চুপচাপ স্বপ্নগুলো একলা দাঁড়িয়ে আজ বহুদিন, 
কেমন একলা হয়ে গেছে কবিতার পাতাগুলো 
কেমন একলা দাঁড়িয়ে আমি অপেক্ষায় 
চুপচাপ
একটা শব্দহীন শহর সাক্ষী নীরবতার। 
.
তুমি আজকাল কেমন চুপচাপ হয়ে গেছো 
চুপ হয়ে আছে গড়ের মাঠ, একলা গীর্জায় দাঁড়ানো ইহুদী যীশু,
খেলার মাঠ, ঝাঁপ ফেলা অনিলদার চায়ের দোকান 
চুপ করে তোমার চিলে কোঠা,কাটানো বেলা 
চুপ করে অনিচ্ছাকৃত ভুল, তোমার পোশাক 
চুপ এখন সরে যাওয়া আলো, ছায়া শরীর, স্বপ্নের চোখ। 
.
দেখো চুপ করে আছে বাতাসের গান, পাখিদের তান 
একলা শহরে ধুলোময় ফাঁকা ফুটপাত 
একের পর মর্গের গাড়ি, লিফটেরর দড়ি, দেওয়াল ঘড়ি 
সব নিস্তব্ধ। 
তুমি কি জানো চলন্তিকা? 
নিস্তব্ধতা এক ঈশ্বর, যার ছায়ায় মানুষগুলো শান্তি খোঁজে
খোঁজে একটা একলা পৃথিবী যেখানে সব শুনশান। 
আর ভালো লাগছে না
একটা গ্রহ বিকল হতে হতে কখন যেন বিকলাঙ্গ হয়ে গেলো 
একটা শহর বন্ধ থাকতে থাকতে কখন যেন একলা হয়ে গেলো
মানুষগুলো সব দূরত্বমাফিক সব আলাডা গ্রহ 
চারিপাশ নিস্তব্ধ 
চুপচাপ।

প্রথম কবিতা



প্রথম কবিতা
.. ঋষি 
প্রথম কবে কবিতা লিখি? 
না মনে পড়ছে না, মনে পড়ছে না প্রথম কবিতার লাইনগুলো,
আজ এত দিন কবিতা লিখি, পাতায় পাতায় 
কেন লিখি? 
যেন মনোপলি সিস্টেম আমার বুকের ভিতর হা করে বসে আছে
বসে আছে হাজারো সময়ের মুখ। 
.
প্রথম কবে চলন্তিকা এলো কবিতায় মনে নেই 
মনে নেই আমার প্রথম চুমু, প্রথম স্পর্শ, প্রথম আবেদন, 
রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাগলের মতো কবে থেকে আমি কবিতা খুঁজি? 
শব্দের আছিলায় কবে থেকে চলন্তিকা তোমায় ছুঁয়ে আসি?
ছুঁয়ে আসি ঘুমোঘোরে তোমার ঘুমের বড়ির মতো 
না মনে পড়ছে না। 

তবে আমি লিখে চলেছি প্রতিটা দুঃখ, গাছেদের প্রেম 
নারী কখন নদী হয়ে গিয়ে জলপ্রপাত 
তুমুল স্রোত, 
রাজদীপ মারা গেলো, অসিত অস্ট্রেলিয়ায়, নিখিল আজ চা বিক্রী করে
কফি হাউস বন্ধ হয়ে গেছে, সৌমিত্র চলে গেলেন 
এখন পৃথিবীতে লকডাউন।
শহরটা কেন জানি ছোট দেশলাই বাক্সের ভিতর পুড়ে যাচ্ছে 
আমি আগুনের আঁচ টের পাই 
টের পাই মানুষের চোখে মুখে একটা ভিতী বেঁচে থাকায়, 
আমি শুনতে পাই চলন্তিকা বলছে " সব ঠিক হয়ে যাবে "
আমি শুনতে পাই রাজনিতী বলছে আর কদিন 
আমি বুঝতে পারি গাছের মতো বাঁচার দুঃখ
সব কবিতা হয়ে যায় 
সব নেশার মতো অজস্র ভাবনা
একটা সাদা পাতা 
শব্দরা পিঁপড়ে সব 
শুধু ছড়িয়ে পড়ে, 
কেন লিখি কবিতা? কবে থেকে লিখি? 
কিছুই জানি না,
মনে হয় সব কবিতাই প্রথম আমার কাছে। 

Sunday, June 6, 2021

সম্পর্কের ফসিল

 


সম্পর্কের ফসিল 

... ঋষি 


একদিন, কোনো একদিন,

হয়তো তোমার বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া সোনালী ফ্রেমের চশমা 

তোমার সেই বাসন্তী শাড়ির শেকড় এসে খুঁজতে থাকবে এই কলকাতায় 

একটা কবিতা। 

সমস্ত শব  ঘর,সমস্ত মিউজিয়াম খুঁজে পাবে না সেদিন  

আমার মতো প্রাগৈতিহাসিক ,প্রোটোগনিস্ট কবিতাদের।  

.

ধারণা তো ছিল ,এখন বদ্ধ ভূমিকায় 

আসলে আমার চারিপাশে এক গভীর পরিখা ,

জানো তুমি?

আমিও এতোদিন ,কোনোদিন তোমায়  খুঁজিনি শুধু সাজানো রিমেকে  

খুঁজেছি কবিতাদের। 

তবে এটা সত্যি কবিতায় এসেছো তুমি বারংবার 

আর আজ এই বয়সে 

আমার চলন্তিকা ভাবনায় এক অদ্ভুত জাগরণ 

গভীর কথা। 

.

তুমি ধরবে আমাকে?

চোখে কাজল ,শপিং মল আর টাইট জিন্স ,

কনফারেন্স প্রটোকল ,উন্মাদ সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা উন্নত নারী 

স্তন ,যোনি সর্বস্ব কাতলা 

আমি সব জানি 

উপত্যকার বন্দরে নিয়মিত যাওয়া আসা ছিল আমার। 

আমি খুঁজেছি মৃগনাভি 

খুঁজে প্ৰয়েছি আল্পস পাহাড়ের ডগায় আমার বরফের হাত 

আমরা ঠান্ডা আঙ্গুল  ছুঁয়ে নেমে গেছে আজ শত সহস্র বছরের তপস্যা 

চলন্তিকা 

সেই নাম --- সর্ব ---- নাম।

সমুদ্র নাইবা হলে তুমি 

গভীর বিপ্লবে তুমি রণক্ষেত্রে আমার বন্ধু ছিলে 

ছিলে  সহবত। 

.

সব দিন শেষ হলে, কুয়াশারা জড়াবে এসে অবশেষে

মায়াবী রাত সাগরের কথা লিখে যাবে কোনো অলিখিত স্থাপনে। 

এগিয়ে যাও তুমি 

প্রস্তর সভ্যতার হাতে মশাল নিয়ে জয়গান হোক আগামীর। 

আমি বিভুক্ষু কবি 

ক্রমশ চোখের ডগা কিছু আস্পর্ধা গ্রিজলি বিয়ারের মতো চিঁড়ে দেয় আমার বুক, 

এটাযে তুমিও জানো, সব দিন শেষ হলে আর

কোনো কথা থাকে না  পাথরের গায়ে,

আমার এই পাথরের গায়ে নখের দাগ 

সম্পর্কের ফসিল। 

বৃষ্টিতে সৃষ্টি

বৃষ্টিতে_সৃষ্টি 
..ঋষি 
আমি বৃষ্টির সাথে কথা বলি
কথা বলি জলের শব্দে একলা দাঁড়ানো নীরবতার সাথে 
আমি কান পেতে শুনতে পাই ঈশ্বরের শব্দ, 
শব্দ যেখানে বন্দী হয়ে যায় 
সেখানে একলা দাঁড়িয়ে চলন্তিকা আমার গায়ে থুথু দেয় 
তাও যেন আমার বৃষ্টিতে ভেজা। 
.
অমরতা বলে বৃষ্টিতে সৃষ্টির কথা
সারা শহর তবু জলবন্দী তখন শুধু ভিজে যায় 
ভিজে যায় ফাঁকা বাইপাস, ভিক্টোরিয়ার উপর সেই একলা পরী,
আমি তবু বৃষ্টি কাতর এক নিরিবিলি সন্ধ্যা 
ছবি আঁকি জলের গভীরে লুকোনো সময়ের গায়ে
চলন্তিকা বলে ভালোবাসা, চাওয়া, পাওয়া সব বৃষ্টির জল। 
আমি বৃষ্টির সাথে কথা বলি 
কথা বলি মুখবন্ধ এই শহরের যাতনার সাথে, 
সারি দেওয়া লাইট পোস্ট, ফাঁকা বাসস্ট্যান্ড, একটা রোগাক্রান্ত শহর।
এই মুহুর্তে বাস করছে অপেক্ষা বুকে নিয়ে ঘুলঘুলিতে পাখিগুলো 
ডানা চাইছে স্বাধীন আকাশ
ভিজতে থাকা গাছগুলো আশ্রয় চাইছে একলা আকাশ 
সময় চিৎকার করছে নীল আকাশ 
মুক্তি 
আমি চাইছি বৃষ্টিতে ধুয়ে  যাক সময়ের যন্ত্রনা।
,
আমার বৃষ্টির সাথে বলা কথাগুলো জানি চলন্তিকা তুমি শুনতে পাচ্ছো 
অথচ কিছুতেই বুঝতে চাইছো  না আকাশ আর বৃষ্টি, 
ঈশ্বর যেখানে জলছবি আঁকতে চায় বৃষ্টির জলে
সেখানে এই শহর বড় অসহায়, 
অথচ  তুমি চলন্তিকা আকাশকে একলা করে
বৃষ্টি নিয়ে বাঁচতে চাইছো। 

  

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...