Tuesday, December 31, 2019

সত্যি বলতে নেই


সত্যি বলতে নেই
.... ঋষি

কি হলো দুঃখ হচ্ছে
কি ছেড়ে গেলে ,কি ভুলে গেলে।
দুঃখ হচ্ছে সীমান্ত পেরিয়ে সমবায়ুতে বাড়তে থাকা ভুলগুলো ,
কোথাও দীর্ঘশ্বাস ফেলছে কি ?
বছর শেষে সেলফিতে মুখটা কি ঠিক করে দেখেছো
কি হলো চিনতে পারছো তো ?

শুনেছি পৃথিবীর উষ্ণতা কমে গেলে
বাড়তে থাকে শরীরে ধাপ ,প্রতিটা স্তরে মানুষের আগুন খোঁজে।
একবার খোঁজ নিয়েছো
এই বছরে ক জন আত্নীয় জন্মালো তোমার আর ক জনের মৃত্যু হলো।
 তুমি কি জানো  এই বছরের শেষে
তুমি কোথায়  দাঁড়িয়ে ,ক বার তোমার মৃত্যু হয়েছে নকল বাঁচার ফাঁকে ?
কবর থেকে উঠে এসে
তুমি  জন্মালে কবর।

কি বলছি ?
কেন বলছি ?  কি উঠে আসছে এই কবিতায়।
আসলে আমি সাহস করে শেষ না হওয়া একটা উপপাদ্য খুলছি
খুলছি পেঁয়াজের খোসায় বাড়তে থাকা আতংক।
মানুষের আতংক
একটা প্রশ্ন করছি ক বার তুমি এই বছরের বাতাসের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে।
হিন্দু -মুসলিম -শিখ -খ্রিশ্চান
কারা গেলো চলে ,কারা গেলো রয়ে ?
তোমার মা
কিংবা ত্রিশুলের মুখে শুয়ে লাল রাষ্ট্র। 
কি যাতা
মানুষ শিখে গেছে
বাঁচতে বাঁচতে মরতে ,নিঃশ্বাসে বিষ ভরতে
আর প্রতিবাদ শব্দের নাটকে বিশ্বাস করতে সত্যি বলতে নেই। 

Sunday, December 29, 2019

চিনতে পারছেন




চিনতে পারছেন
... ঋষি

কই কখনো শুনি নি তো  
ভালোবাসলে কাপড় খুলতে হয়,
ভালোবাসল শরীর থ্যেতলাতে হয় জোরকদমে।
কাপড় পরেও  ভালোবাসা যায়, স্পর্শ না করেও  ভালোবাসা যায়,
যেমন ধরুন আপনি মাথায় হাত রাখলেন 
কিংবা হাত দিয়ে চিবুক স্পর্শ করলেন।

অবাক হলেন
বুঝলাম আপনার রাজদন্ড খাঁড়া না হলে ভালোবাসা জাগে না
বুঝলাম আপনার একটু রসালো না হলে আর কি
ভালোবাসা জমে না।
না ঠিক এমন না, আসলে কি.... 
হ্যা বুঝেছি আপনার কাছে ভালোবাসা একটা শরীরের নাম,
শুধু রকমফেরে রোগা, মোটা, লম্বা এই আর কি।

আচ্ছা আপনি এখানে এই গলিতে, এত রাতে আপনার স্ত্রী জানে ?
ও আচ্ছা  কি করবে জেনে, ঘরের কাজ করে,ছেলে মেয়ে মানুষ করে
ওর কি সময় আছে এই সব করার,তাই তো বলবেন ।। 
আপনি আমায় ভালোবসেন তাই না
বেশ
বলুন আপনি আমাকে ভালবেসে কি করতে পারেন নগ্ন করা ছাড়া?
পারবেন আমাকে নিয়ে পালাতে আপনার স্ত্রী, সন্তান ছেড়ে  ? 
এই সমাজ ছেড়ে৷? 
কি যা তা,টাকা দেবো বল্লাম তো, লাগলে আরো দেবো,
 ভালোবাসা পেলে আমার আবার এত কথা ভালো লাগে না।
আচ্ছা আপনি ফোরপ্লের মানে বোঝেন? 
কি প্লে ?  
ধুর মাগি এতো কথা ভালো লাগছে না,শাড়িটা খোল
আমাকে চিনতে পারছেন দেখুন তো ভালো করে? 
এ কি তুমি এখানে, আর বাচ্ছারা? 

 

 

 

একলা আকাশ

একলা আকাশ
... ঋষি

এই শব্দ ভেজা বিকেলে আমি হেঁটে চলে এসেছি তোমার ভিতর
সিঁড়ি ভেঙে নেমে গেছি গভীরে ,
অবাক  হয়ে দেখেছি স্মৃতি নামের অনেকগুলো ঘর।
একটা ঘরে ঢুকে দেখি চেয়ার রাখা
চেয়ারে ভর করে খুব গম্ভীর মুখে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক অংক করাচ্ছে
সামনে একটা ফ্ৰক পড়া মেয়ে
ক্রমশ খুলছো তুমি ভূগোলের বই ,ইতিহাসের।

আরেকটা ঘরে ঢুকি
অবাক হয়ে দেখছি একটা স্নানঘরে একজন অষ্টাদশী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
খুব মনোযোগ সহকারে তাকিয়ে দেখেছে বুকের দিকে
এক চিলতে হাসলে তুমি ,প্রেমিকের মুখ মনে এলো বোধহয়।
টাওয়েল জড়িয়ে তুমি বেড়িয়ে এলে
তোমার চোখের সামনে থেকে সরে যাচ্ছে হাইওয়ে ,দুপাশে জঙ্গল
স্পিডোমিটারে  বাড়ছে গতি
তোমার আয়নায় ।

আমি আরেকটা ঘরে ঢুকলাম
তুমি লালপেড়ে শাড়ি ,চন্দন লেপ্টে বসে আছো অন্য ঘরে ,
তোমার চোখে বোধহয় জল।
তারপর দেখি রান্নাঘর ,শুনতে পাই হাতিখুন্তির শব্দ
তোমার শীৎকার।
অবাক হচ্ছি অন্য ঘরে ঢুকে তোমার কোলে একটা পুতুল 
তুমি কাঁদছো  ,তুমি হাসছো
তারপর দিন ,তারপর রাত্রি
আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি তোমার ভিতর। 
রুটিনের রুট জুড়ে অসুখের সুখ ,সুখের অসুখ
আমি হাসছি খুব।
তুমি অন্য ঘরে বারান্দায় একলা দাঁড়িয়ে
তোমার সামনে থেকে সরছে রাস্তা,
কত লোকের আসা যাওয়া।
তুমি উপরের দিকে তাকালে 
তুমি আকাশের দিকে তাকালে,হাত বাড়ালে আকাশের নীলে 
আমি তোমার ভিতরে লিখলাম একলা আকাশ।

বুকের ভেতর ২০২০


বুকের ভেতর ২০২০

.... ঋষি



তিন মিনিট ছত্রিশ সেকেন্ড তোকে টাইপ করার পর

হঠাৎ রাত্রি এলো।

শিয়রে দাঁড়ানো তুই হেসে বললি  নতুন বছর ভালো থাকিস ,

আমি হাসলাম

কি রে তুই ,তুই না হিমালয়ে চলে গেছিলিস

কি সব বাঘ ছালটাল

তুই বিষাদ থেকে হেসে উঠলি

চলে যাওয়া মানে ফুরিয়ে যাওয়া নয়।



ফুরিয়ে যাওয়া বলতে মনে পড়লো

বছর ফুরোলো।

বুকের ভেতর ২০২০,আর কোথাও অন্য শোক কিছু হারানোর

আসলে হারানো মানে হারিয়ে যাওয়া নয়

ফিরে আসা বারংবার স্মৃতিতে।

কান্না ,হাসির তকমা আটকানো মানুষের অনুভূতিগুলো

পৃথিবীর স্তর ছিঁড়ে ফেলে নি কখনো

পৃথিবীতেই মানুষ হেঁটেছে হয়তো কিছুক্ষন

কিছুক্ষন তারা অন্য গ্রহে।



তিন মিনিট ছত্রিশ সেকেন্ড আমি তাকিয়ে ছিলাম রাতের আকাশের দিকে

তোর দিকে ,চিনতে পেরেছি ঠিক

কারণ চেনাগুলো বুকের পাঁজরে রেখে যায় হৃদস্পন্দন।

আমার এক শহর আদিমতা

আমার শরীরে অসংখ্য পাথর জমা তিস্তার গা ঘেঁষে ,

পাথরে জমি কর্ষণে  সেখানে তুই বানিয়ে ফেলেছি চায়ের সবুজ বাগান।

তারপর চায়ের কাপ

তোর ঠোঁট।

এখন বছরের শেষ  রাত্রি

 আমি দাঁড়িয়ে এয়ারপোর্টের পাশে আমাদের পরিত্যক্ত চায়ের দোকানে

হাতে কবিতার পাণ্ডুলিপি আর কবিতায় তুই

কিছুই বদলায় নি।

শীতের রৌদ্র

শীতের রৌদ্র 
.... ঋষি

আমার এই মৃত্যুতে কোন ক্ষোভ নেই
যা আছে তা শুধু বেঁচে থাকা।
তুমি মেরে ফেলবে আমাকে আকাশের বুকে বৃষ্টি  হয়ে
আকাশ থেকে অপেক্ষা নামবে পাগলের মত। 
 তোমার হাতে শানিত তলোয়ার, তোমার ঠোঁট,তোমার চোখ,
তোমার স্পর্শরা এগিয়ে আসছে আমার ইতিহাসে রৌদ্র হবে বলে ।
তোমার তোলোয়ার ঢুকে যাচ্ছে বুকে 
অভয়ারণ্যের  জংলী হাতি উঠে আসছে আমার বাউন্ডুলে চোখে।
 
তুমি ক্রমশ নিয়ম নষ্ট করছো আমার
ক্রমশ তৈরী করছো নিয়ম নিজের করে। 
মাথার ভিতর দেওয়াল ভাংচুর, স্বপ্নের ভিতর আগুনে দাবানল
ক্রমশ একটা রক্তাক্ত কবিতা বদল হচ্ছে বেঁচে থাকায়।
একটা মেঘলা বিকেল ক্রমশ  রুপান্তরিত শীতের  রৌদ্রে
অথচ আমার এই মৃত্যুতে কোন  ক্ষোভ নেই।

 প্রেমকে হত্যা করে অরন্যের নাভি থেকে জন্ম নেওয়া অভিশাপ
সাবেকি সনাতনী  সংকীর্তনে  উঠে আসা চিৎকার,
সময়ের গানে উঠে আসা উচ্ছিষ্ট
যেগুলো জন্ম দিচ্ছিলাম আমি এক একটা বেশ্যার ম্যানিফ্যাস্টো
সেগুলো তুমি ছিঁড়ে ফেলে সৃষ্টি করছো জন্ম।
কি লিখছি,কেন লখছি
জানি না,
তবে বুঝতে পারছ ক্রমাগত তুমি হামাগুড়ি দিয়ে উঠে আসছো আমার বুকে
ঠোঁটের তলোয়ারে ছিঁড়ে দিচ্ছো আমার এই বুক   
ছিন্নভিন্ন করে চিৎকার করছো রাক্ষসীর মত।
তোমার মুখে রক্ত, তোমার চোখে প্রেম 
আমি কিছু করতে পারছি না
শুধু চোখ বন্ধ করে তোমাকে ভাবছি   
অথচ আমার এই মৃত্যতে কোন ক্ষোভ নেই।
   
       


         

Friday, December 27, 2019

সিরিয়াস কেস

সিরিয়াস কেস
..... ঋষি

সময়ের বাতিস্তম্ভ পার করছি
পার করছি বিপদজন সেতু ম্যানুফাকচারিং বাই টাইম
পার করছি মাতাল সময় টলোমলো পায়ে।
হঠাৎ লোডশেডিং লেগেছে রাষ্ট্রে ,সময় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে শরীরে মতো
খদ্দের বিক্রেতা হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ
আর বিক্রেতারা সময়ের গলিতে বেশ্যার দালাল।

আমি মগজের ভিতর স্পাই ফিট করছি
গিয়ে দাঁড়াচ্ছি ফেলুদার মুখোমুখি একটা সিরিয়াস কেস সল্ভের দরকার ,
পিছনে টানছে সুতো ,
আমি ভেজাচ্ছি ,ভেজাচ্ছি আমাদের  অভিশপ্ত না পাওয়া সময়ের শীৎকারে।
রাষ্ট্র দাঁড়াচ্ছে ,
কলা দেখাচ্ছে  বিজ্ঞাপনে
বেশরম সভ্যতা বিছানায় সুখ খুঁজছে হিজড়ে হয়ে। 

আমাদের আবার নতুন বছর
রাষ্ট্রের অলিগলিতে নর্দমায় পরে থাকার মতো মানুষের মুখ ,
সময়ের শিশু  গড়িয়ে নামে অন্ধকারের উরু বেয়ে   অনাকাঙ্খিত আগুনে
চলন্তিকা  ভালোবেসে নর্দমা  হয়ে যায়।
অনধিকার প্রবেশের মতো কোনো কুড়ি বছরের যুবতীর সাথে শুয়ে দেখেছি 
অথচ মানুষ এখনো সময়ের  সাথে শুতে পারলো কই।
মিউজিয়ামে আটাত্তর নম্বর কঙ্কালের গায়ে অনেকেই জানে না
ভয় লেগে।
সময় ফুরিয়েছে মানুষের ,ফুরোয়নি আজও ভয়
সময়ের শরীরে কালমার্কস লেগে ,লেগেছে লাদেন
কিছুই বদলায়নি এখনো।
আমি সেই কাজের মেয়েটাকে হাজারোবার সেলাম করি যে দিনের শেষে
ক্ষুদার্থ সন্তানের মুখে তুলে দেয় কষ্টের বুক।
আমি বলছি না ভারতবর্ষ নামক নারীটাকে সন্মান করতে হবে
তবে ধর্ষণ করাটা অবৈধ ,যতই হোক তোমার দেশ ,
আমি বলিনি তোমাদের সব  মানুষকে  নিরামিষ হতে হবে
বাড়িতে তো মা বোন আছে সকলের।

কবিতায় সাত দফা

কবিতায় সাত দফা
.... ঋষি

কবিতা লিখবো বলে গিলে ফেলেছি সময় ,মানচিত্র ,মানুষ
এখন শুধু রক্তবমি
কবিতায় সময়।

আমি নক্ষত্র পরিবারের সদস্য তাই আমার তারা খসা সত্যি
মেঘলা আকাশে সাময়িক বৃষ্টি
সময়ের বৃষ্টি চিরকাল।

বরফ গলছে মেরুতে ,নর্থ  আফ্ৰিকান জঙ্গলে দাবানল হঠাৎ
খবর পুড়ছে কম ,পুড়ছে রক্তের গন্ধ
যা নিমতলার শ্মশানে দৈনন্দিন।

নারী খুললেই কেন যেন নদী চলে আসে জলপ্রপাত জড়িয়ে
দশমিক পদ্ধতিতে একাধিক উপপাদ্য
সঙ্গম ,নাকের উপর ঘাম ,লিপস্টিক ,ঝগড়া।

পুরুষ সমাজের ভিটেমাটি  তবু  আশ্রয় খুঁজছে মেয়েছেলে
শাড়ি খুলছে ,পুরুষ দাঁড়াচ্ছে
ধীরে ধীরে পুরুষ ডুবে যাচ্ছে অনিয়মিত মেরুদণ্ডে।

রাষ্ট্র সে যে আকাশের গায়ে চাঁদ ,চাঁদের গায়ে কলঙ্ক
রাজনীতি শুয়ে বেহায়ার বালিশে
সত্যি বললেই গর্দান যাবে।

কবিতা লিখছি সে তো অনেকেই লেখে রাজকাহনে
আমি লিখছি যন্ত্রনা
মানুষ জুড়ে মানুষের ভিড়ে। 

আর ২০২০


আর ২০২০
... ঋষি

যথারীতি ফিরে আসা
ক্যালন্ডারের পাতা জুড়ে  দাড়িওয়ালা সান্টার দেশ
আর বছর শেষের উপাখ্যান।
কি পেলাম ,কি না পেলাম ,কতটা পেলাম ,কিভাবে পেলাম
এই নষ্ট দুঃখদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় ,
তোমার সামনে দাঁড়িয়ে চলন্তিকা শুধু তোমাকে জড়াতে ইচ্ছে করে।
তোমার দেড় ইঞ্চি বুকের গভীরে আমার ঘুমন্ত স্বপ্নরা দেশ খোঁজে
আর  কবিতার শব্দরা খোঁজে খোলা আকাশ।

আমি কিছুই খুঁজে পাই না আজকাল
আমার হরিণ ছুট জঙ্গলে আজ শুধু একশো আট ঈশ্বরের একত্রে চিৎকার
আরো সবুজ।
জানি চলন্তিকা তুমি তোমার দশ আঙুলের নিবে স্পর্শ করছো সময়
আমার বুক জুড়ে নেমে আসছে জলপ্রপাত।
জানি পুরোনো ফেলে আসা সময় কেমন ছিল
কেমন ছিল অভিশাপ ,কিংবা আশীর্বাদ এই  শহরের মানুষের পদচিহ্নে।
এতটা জানি মানুষ বাঁচে আগামীতে
আর আমি বাঁচি তোমার গভীরে ,আরো গভীর কবিতায়।

ক্যালেন্ডারের উজ্বল নতুন পাতা
সময়ের শুকনো পাতাগুলো আজ শুধু ক্লান্ত করছে ভাবনা।
আমি ফিরে যাচ্ছি তোমার গভীরে
তোমার শরীরের প্রতিটা কার্নিশে ,প্রতিটা পরিখায় ,প্রতিটা দেওয়াল জুড়ে
বীজ রোপন করছি ,আগামী সবুজের।
কি পেলাম ,কি পাবো ,আসলে ভুলে গেছি ভাবতে গভীর মুখোশের ভিতর
আমার আমিটাকে।
আজকাল  স্বপ্নে শুধু তুমি আসো
আর বয়স বাড়ে,বাড়ে লোভ তোমাকে কাছে পাবার
তারপর
আর কি
শুধু এইটুকু ভালো থেকো,ভালো রেখো
চলন্তিকা শহর আর ২০২০। 

Thursday, December 26, 2019

মৃত্যু এলে


মৃত্যু এলে
.... ঋষি

আমার মৃত্যু এলে হাজারো সভ্যতা ঝুঁকে থাকে আমার মুখে
আমার প্রিয় কবিতার লাইন ,আমার প্রিয় কবিরা
এসে দাঁড়ায় আমার মাথার কাছে।
আমার পুরোনো প্রেমিকারা ,আমার ছেড়ে যাওয়া প্রেমগুলো
হাওয়ায় উড়তে থাকে প্রজাপতি হয়ে,
আমি আলোয় ভাসতে
আমার চারপাশে বর্ণরা কবিতায় লিখতে থাকে মানুষ।
.
আমার মৃত্যু এলে
ম্যানহোলে বাঁচতে থাকা হাজারো মানুষ আমার পাশে দাঁড়ায়।
আমার পাশে এসে দাঁড়ায় একলা সেই গৃহস্থ বধূ
যে সংসার চালাতে রাস্তায় দাঁড়ায়।
হাজারো ধর্ষিত মুখ আমার চারপাশে চিৎকার করে
জাস্টিস বলে ,
আমি কাঁদতে থাকি নিজের গভীরে ,আরো অসুস্থ হয়ে পরি
সভ্যতাকে চিৎকার করে গালাগাল দিতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে নষ্ট সমাজ পুড়িয়ে
ভালোবাসার মানুষ গড়তে।
.
সময় আসে না ,সময় যায় না ,সময় এসে ঝগড়া করে আমার সাথে
আমার জন্য যারা কষ্ট পায় ,আমার মৃত্যু এলে
সূঁচসুতো দিয়ে সেলাই করতে ইচ্ছে করে কষ্টগুলো।
ইচ্ছে করে নতজানু সময়কে একবার শিরদাঁড়া দিতে
দিতে বিদ্রোহ ,
আরো আগুন সভ্যতার নামে যারা করে চলেছে মানুষের নিগ্রহ।
আমার মৃত্যু এলে
আমার কাছে আমার ধর্ম আসে ,যা বিভাজনের নয়
যা বর্ণান্ধতায় নয়
যা একটা সদ্য জন্মাতে চাওয়া ভ্রূণের হত্যার  নয়
শুধু মাত্র মানুষের ,মনুষত্বের ।

রুপোলী মাছ

রুপোলী মাছ
.... ঋষি

সময়ের খোরপোষ দিয়ে গেছে শরীরের ধাপ
আঘাতের খবর নিয়ে গেছে অজস্র রুপোলী  মাছেরা।
আর্তনাদ আর ফুপিয়ে ওঠার মাঝে
কখন যেন বুঝতে পারি না মানুষের কান্নাগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকে
মিহি সুর
কান পেতে শুনতে হয় একলা সময়ে।

রেলওয়ে ট্রাকের পাথরের টুকরো আর্তনাদ
শোনা যায় না সময়ের ট্র্যাকে ,
অথচ আমরা কত বুঝি ,কত জানি ,জ্ঞানীগুণী চারপ্রহর
কিছুতেই মনটাকে জানতে পারি না।
রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাবার পর ,কিংবা নেশার দোকান
সময়ের নেশার পাগল করে
যেমন পাগল করে কিছু ছুঁয়ে থাকা মুখ
কিছু দূরে থাকা।

নিভুনিভু সময়ের পেছনে দাঁড়ানো সময় নিশ্চুপে গিয়ে দাঁড়ায় প্রজাপতিতে
তারপর নগ্ন সময় ,শরীর ,সংসার।
তারপর সময় চলে যায় উড়ন্ত সেই রুপোলী মাছের স্বপ্নে
বাস্তবের রসুইঘরে মাছ রান্না হয় তেলেসর্ষে।
ঝলসে ওঠা সময় ,তক্তপোষ ,বিছানা বালিশ
মধ্যাহ্নে ওঠা সূর্যের দৈনন্দিন অধঃপতন।
কোনটা সত্যি ,কেন সত্যি আমরা জানি
কোনটা নয় সেটাও জানি।
জানি না কোনো অজান্তে দেখা হয়ে যাওয়া মায়াবী চোখ
অন্ধকার থেকে হেঁটে আসা হরিদ্রাভ প্রেম
কখন যেন
রুপোলী  মাছ হয়ে চোখে লাগে
জন্ম দেয় লোভ
বাঁচার ইচ্ছায়।   

চারটে অক্ষর

চারটে অক্ষর
.... ঋষি

চারটি  অক্ষর চুরি হয়ে যাওয়া জীবন
এমন আমি অনেককে চিনি ভালোবাসার অহংকারে
 চিনতে পারে নি শববাহী ঐতিহ্যশালী সেই গাড়িটাকে।
ঘোড়ায় টানা ট্রেন হারিয়েছে যে শহরে
সেই শহরে ভালোবাসার গাছ পুঁততে সবুজ স্পর্শ  করতে হয়
ডিক্লিয়ার করতে হয় ভালোবাসার দিন।

অধ্যুষিত মানুষ
নিজেদের সভ্যতায় শহর লিখে চলেছে সময় হারানোর দৃষ্টান্ত।
শহরের গা দিয়ে বয়ে চলেছে পবিত্র প্রাচীন নদী
নদীর ভিতর জন্মানো প্রতিটা বীজাণু সাক্ষী হারানো ভালোবাসার।
আশ্চর্য রঙিন শোক
শহরের চোখের কাজলে লেগে আজ শুধু রাস্তায় দাঁড়ানো কিছু নগ্নতা।
মানুষের হাতের ফাঁকে
মানুষের  ছায়ারা বুদ্বুদের মতো অসীম সীমান্তে
বিকেলের আলোর মতো ভালোবাসা হারাচ্ছে শহর থেকে।

মানুষের জীবন থেকে চুরি যাওয়া চারটি অক্ষর
মানুষের অজান্তে হেঁটে চলেছে মাথা  নিচু করে  মানুষের গভীরে
 একলা অন্ধকারে আলোর খোঁজে।
মানুষের অজান্তে পোঁতা বিষ গাছ
আজ জন্ম দিচ্ছে বিষ সময় ,
মানুষ পুড়ছে নকল হাসিতে ,সাজানো পোশাকের ফেব্রিকে
লিপস্টিকের রঙে।
বেপরোয়া নেশার মতো ভালোবাসা কাঁদছে
সময় পারফিউমে ,বিলাসী জীবনে ,সাজানো সময়ে।
মানুষের হারানো ঘামের গন্ধ
ভরসার বুক ,বিশ্বাসের কাঁধ  সর্বোপরি স্পর্শ সবটাই আজ শুধু গল্প
আর বাকিটা
সকলের জানা
আমরা ভালোবাসাকে জড়াবার নামে  ক্লান্ত শরীর আগলাচ্ছি।




পারদ নামছে শহরে



পারদ নামছে শহরে
.... ঋষি

সময়ের ডাকটিকিট খুলে
খুলে ফেলেছি রানী ভিক্তোরিয়ার মুকুট ,
আমার পড়ার টেবিলে চুঁয়ে পড়া সিগারেটের ছাই ঘষে তুলতে গিয়ে
বানিয়ে ফেলেছি তোমায় ঠিক কবিতার মতো।
তোমার চোখে শীতের বাতাস
তোমার আঙ্গুল ছুঁয়ে কনকনে শীত আমার শরীরে।
.
তোমাকে লিখতে গেলে দুর্বলতা দরকার হয়
তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে আমি খুঁড়ে চলেছি এনসাইক্লোপিডিয়া হোমস্যাপিনেন্স
আবিষ্কার করছি স্পর্শের মানে ,গভীরতার মানে।
সময়ের হিমঘরে নাম না জানা বাঁশিওয়ালা আমি
যে ভাড়া করা রাজার পোশাক পরে লিখে চলছে প্রেম
তোমার লাল লিপস্টিকে
বাঁশির শব্দে ।
.
সেই থেকে আমার খুব শীত করছে
মেঘেদের দেশে হঠাৎ পারদ ছুঁয়ে বৃষ্টি নেমেছে অযাচিত ভাবে
অযাচিত ভাবে আমার লেখার ডেস্কের জানলায়
তুমি চলে আসছো সুখ পাখির মতো।
চূড়ান্ত খ্যাপামো থেকে উঠে আসা আমার এই কবিতায়
ছাই  রঙের অপেক্ষায় একটা বাড়ি বানাচ্ছে।
সেই বাড়ির কোনো ছাদ নেই
বিছানায় শুয়ে দেখা যায় খোলা আকাশ।
হঠাৎ কেন যেন তোমাকে জড়াতে ইচ্ছে করছে
শীত করছে
পারদ নামছে শহরে। 


এক মুঠো আকাশ


এক মুঠো আকাশ
... ঋষি

হঠাৎ সব সরে যায়
খুব চেষ্টা করে জাহির করতে হয় উপস্থিতি অন্ধকারে।
অন্ধকারে পথ চলা
আচমকা পৃথিবী থেকে সত্য হারিয়ে মিথ্যে জাহির হয় ,
জাহির হয় মানুষের বুকে
ভয় করো ,না হলে মরো।
.
পৃথিবীর সমস্ত জলপ্রপাত থেকে হঠাৎ যদি জল সরে যায়
হঠাৎ করে যদি রামকিঙ্কর বেজের হাতের হাতুড়ি ,ছেনি কেড়ে নেওয়া হয়
হঠাৎ যদি পৃথিবী থেকে রেনেসাঁস সরে যায়
কোথায় দাঁড়াতাম আমরা।
এই প্রশ্নগুলো করা ভুল
মানুষ বাঁচতে চায়
তাই সহজে অন্ধকারে হারায় ,করে সন্ধি
আসলে মানুষ অন্ধকারের নজরবন্দী।
.
মানুষ ভয় করে
মানুষ ভয় করে কারণ মানুষ বাঁচতে চায়।
মানুষের বাঁচার খোঁজ ,মানুষের হাসির খোঁজ
খোঁজ এক মুঠো আকাশের
তাই মানুষ সন্ধি করে অন্ধকারে
তাই বন্দী অন্ধকূপে।
তবু সময়ের পাঁজরে রক্ত ,মানুষের হৃদয়ে ক্ষত
সেখানে জমছে পুঁজ
বঞ্চিত হওয়ার  যন্ত্রনা
একা হওয়ার যন্ত্রনা 
মানুষ চিৎকার করতে চায় তাই ,বলতে চাই সত্যিগুলো। 
ভালো করে দেখলে তোমরাও চিনতে পারবে
মানুষের মুখোশগুলো
ভালো থাকার। 

গোপন শহর

গোপন শহর
... ঋষি

আজ খুব গোপনে ডাকবো আবার
শীতের কুযাশায় ভেজানো শহর আর জিভে চন্দ্রগ্রহন লেগে ,
অসমাপ্ত ক্রিয়া।
বছর শেষে উৎসবে মেখে মুখোশ
আজ শুধু হাসিতে ব্যস্ত ,ব্যস্ত দিনভর মানুষের ঘোর
সময়ের জোর
মানুষ একলা দিনে রাতে।

আমার শহর পুরোনো জানলা খুলে হাজারো স্বপ্ন তৈরী করে
তাই এই শহর বুকের শহর ,মনের শহর ,ভিজে নদীর শহর ,
অজান্তে হাজারো হিসেবে লেখা শহরের বাতাসে
শুধু কবর খোঁড়ে না শহর
এই শহর ভাঙতেও জানে
মানুষের মন ,মানুষের ঘর ,মানুষের বাঁচা
এমনকি একটা আস্ত মানুষ।

অর্ধেক মানুষ এখন শীতের শহর ছেড়ে অভয়রণ্যে ,আরো গভীর সমুদ্র
শীতের শহর খুঁজছে ছুটি
মানুষ খুঁজছে নিশ্বাস শহরের বাইরে একটু সবুজে।
কেন এমন হয় ?
মানুষ শহর ছেড়ে বাঁচতে যায় অন্য কোথাও
কিন্তু আবারো  মানুষগুলোকে ফিরতে হয় পুরোনো শহরে ।
কেউ জানে না
এই শহরের দুঃখ হয় ,মন ভাঙে
অজান্তে কুয়াশায় ভিজেই দেয় রাজপথ।
আমার এই কবিতা কুয়াশা তৈরী করছে
তৈরী করছে মনখারাপ
তাই বলা
আমাদের চোখে অসহায় শহর ছন্দহীন
আমাদের বুকের ছায়াপথে জন্ম নিচ্ছে অজস্র সৃষ্টি
আমরা বদলাতে চাইছি
অথচ ফিরে আসছি সাজানো শহরের মুখোশের গোপনীয়তায়। 

রাজদ্বীপ তুই ডাকিস না আর

রাজদ্বীপ তুই  ডাকিস না আর
... ঋষি

রাজদ্বীপ প্লিস ডাকিস না এইভাবে
এখন বছর শেষে আমেজ আমার শহরে ,সান্তা ,নাইটপার্টি
সব ঠিক চলছে।
আমরা ঠিক আছি ,আমি ,রতন ,অসিত ,অমর
আমরা আমাদের আত্নীয় নিয়ে
বেশ ভালোআছি নিজেদের মাঝে।

প্লিস রাজদ্বীপ তুই এই ভাবে ডাকিস না
ভীষণ কষ্ট হয় ,
হঠাৎ মনে পরে হাফ প্যান্ট ,ফুটবল মাঠ ,ভাঙা জামার বোতাম ,নীল সোয়েটার
প্রথম চুমুর ঠোঁট ,লুকিয়ে দেখা প্রথম নীল ছবি
আর তোকে।
তোর সেই নীল সাইকেল ,তোর হাসি ,তোর ভাঙা গলায় গান
আর তোর মায়ের শেষ কান্না
বাবু প্লিস ছেড়ে যাস না আমায়।

রাজদ্বীপ প্লিস ডাকিস না এইভাবে
রাজদ্বীপ  তোর বারংবার আমার মনে পড়া আমাকে দুঃখ দেয়। 
ক্রমাগত সেই মথ ভাঙা প্রজাপতির আকাশে ওড়ার আকুতি
তোর মৃত স্বপ্নদের নিয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া
নিজেকে খুব অসহায় লাগে ।
রাজদ্বীপ তুই জানিস তোর বুকের ভিতর আমি প্রায় হেঁটে যায়
খুঁজে পাই তোর পুড়ে যাওয়া স্বপ্নদের
তোর ছোট রাজদ্বীপ কে।
ছোট  রাজদ্বীপের দিকে তাকালে তুই জানিস
আমার কান্না পায়,
দূরভাষে ভেসে ওঠে তোর হাসির শব্দ,তোর ইয়ার্কির টুকরো। 
প্লিস রাজদ্বীপ তুই এই ভাবে ডাকিস না
আমার শক্তি নেই তোর মুখোমুখি দাঁড়াবার
শব্দ আর দৃশ্যের বাইরে তোর বেঁচে থাকাটা আমাকে স্তম্ভিত করে।
আমার আর সহ্য হয় না
প্লিস রাজদ্বীপ তুই এই ভাবে ডাকিস না আর
আমি ,আমরা ভালো আছি
তুই ভালো থাক এটাই চাই।    

অন্য ঘর


অন্য ঘর
... ঋষি

অন্য ঘরে আমরা বাস করি
তুই অপেক্ষা তৈরী করিস 
আর আমি  অপেক্ষার বিছানায় শুয়ে স্বপ্ন দেখি গভীর সঙ্গমের।
তোর চোখে সুরমার গভীর টান
আমার হৃদয়ের গভীরতায় সময় বাস করে
আগামীতে শুয়ে আমাদের সন্তান।

মনীষীদের ইতিহাস আমি লিখে চলি অন্য পাতায়
অথচ আমাদের জীবনের বইয়ের প্রতিটা পাতা বাচ্চাদের রংপেন্সিলের আঁচড়।
তুই গল্প লিখিস ,গল্পে লিখিস মানুষের অভাব
আর আমি কবিতায় তোকে ছুঁয়ে বেঁচে থাকি।
আমার দানাপানি সব কবিতা
জানি আমি তুই আমাকে পাগল ভাবিস
ভাবিস আমার বেঁচে থাকা কবিতা।

আমরা অন্য ঘরে বাস করি
আমাদের ঘরের আলমারিতে অনেক ময়লা কাপড় ,ন্যাতা ,অসংখ্য অভাব।
আলমারির উপরে আয়নায়
আমরা দুজনেই তাকিয়ে হাসতে থাকি ,
তুই লাল  লিপস্টিক লাগাস ঠোঁটে ,মুছতে থাকিস আমার বুকে।
আমাদের বিছানায় সঙ্গম নিয়মিত
তুই ঘোড়া চড়িস ,আমি নাবিক দূর সমুদ্রে খুঁজি মণিমুক্তো।
আমাদের সঙ্গমে উঠে আসে যন্ত্রনা
তোর ঠোঁটে আমার দাঁতের দাগ ,
তোর প্রসব যন্ত্রনায় আমার ভাবনারা ক্যামোফ্লেজ করে।
তবু আমরা হাসি
কারণ আমাদের পাথরের বিছানার রাত্রে স্বপ্নরা আসে
আমাদের ভালোবাসে। 

মানুষ সভ্যতা

মানুষ সভ্যতা
... ঋষি

সময়ের গভীরে রাখা লাল মাটির পথ বেয়ে
হৃদয়ের গভীর সাঁকোটা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া সময়ে ,
শহরের শীত ঘুম খুলে অন্য একটা দিন
শুভ শুরুওয়াৎ
এক নতুন বছর
তোমাকে সেলাম।

মানুষ সময়কে সেলাম করেছে আজ বহুযুগ ধরে
মানুষ সময়কে উদযাপন করেছে আলোর ছটায় ,রঙের ছটায় সময়ের সাথে ,
সময় নিজেকে নষ্ট করেনি কোনোদিন
মানুষ সময়কে নষ্ট করেছে নিজের প্রয়োজনে।
নিজের অবহেলে
নিজের অকৃতজ্ঞতায়
নিজের ব্যভিচারে
আর হয়তো কিছুটা সময়ের প্রকৃতির কারণে।

মানুষ আর সময়ের মাঝখানে পুরোনো সাঁকোটা সেদিন তৈরী
যেদিন যীশু জন্মেছে প্রেম বুকে।
কংসের পৌরুষের বুকে  লেগে থাকা শীতল রক্তে
যুগে যুগে কৃষ্ণ জন্মেছে।
জন্মেছে অভিশাপ বরাবর নিয়ম মাফিক
সময়ের নামে ,ধর্মের নামে ,কালোবাজারির পেঁয়াজের নামে।
মানুষ সাক্ষী থেকেছে সময়ের
শুধু এই সময়
সেই সময়
বদলেছে অনেক কিছু মানুষ বদলায় নি। 
যীশুর ঠোঁটের গড়িয়ে নামা রক্তে বারংবার সময়ের সব্যতায় ধ্বনিত হয়েছে
প্রভু এদের ক্ষমা করো।
হয়তো আগামীতে মানুষ নামক জীবটা হৃদয় হয়ে উঠবে
হয়ে উঠবে কোনো মানুষ সভ্যতার সাক্ষী। 

Sunday, December 22, 2019

হাসছে সময়

হাসছে সময়
..... ঋষি

ভালোবাসলে আঘাত আসে
বুকের ভিতর দরজায় খিল লাগিয়ে কেউ অনবরত চিৎকার করে।
আমি চিৎকার শুনি ,শুনতে পাই অভিশাপ এই পৃথিবীর বুকে
ভালোবাসা নাগরিক হলে বড্ডো বেশি সাজানো হয়ে যায় ,
আর ভালোবাসা অভিমানী হলে বড্ডো বেশি এলোকেশী হয়ে যায়।
আমি খুব সাধারণ তাই আমার কাছে
ভালোবাসা ভীষণ নগ্ন ফুটপাথে শোয়া সেই শিশুটার মতো।

তোমার সব অভিযোগ মেনে নিয়ে আমি জলে নামলাম
দূর থেকে যেসব অভিশাপগুলো আগুন মনে হয়
তাতে নিজেকে পুড়িয়ে
দাঁড় করালাম নিজের আয়নায়।
আয়না হাসছে
হাসছে সময়
ভুলে গেছে পৃথিবীর প্রথম নারী রাত্রিকে 
ভুলে গেছে পৃথিবীর প্রথম পুরুষ ঈশ্বরকে।

ভালোবাসলে আঘাত আসে 
বুকের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোমার লুকোনো ঠোঁটগুলো এগিয়ে আসে।
রাতে স্বপ্ন দেখি
তোমার মুখে ফুটে ওঠে আকাশ ,অসংখ্য নক্ষত্র
আমি আকাশের দিকে মুখ করে শুই
অদ্ভুত সবুজ আমাকে নিয়ে চলে যায় তোমার গভীরে।
আমার তখন চিৎকার করতে ইচ্ছে করে
চিৎকার করতে ইচ্ছে করে তোমার নাম ধরে ,
জানতে ইচ্ছে করে আমার পরিচয়।
ভালোবাসা পরিযায়ী হলে শুধু শরীর বদলায়
বদলায় শরীরে আদলে সময়ের মুখ
অথচ তুমি চিরকাল
আমার আকাশে নক্ষত্র। 

সমুদ্র স্নান

সমুদ্র স্নান
..... ঋষি

সমুদ্রের গভীর শব্দরা মনে হয় সময়ের
গভীর রহস্য বুকে ,
সমুদ্রে নোনতা আছড়ে পড়া ঢেউ বারংবার আঘাতে মনে করিয়ে দেয়
এই তো জীবিত আমি ,
এই তো বেঁচে আমি ,
তাইতো যখনি বুকের শব্দ শুনি কান পেতে
শুনতে পাই সামুদ্রিক কোলাহল।
.
সমুদ্রের দিকে আমি যখনি তাকাই
আমি বিশ্বাস করতে চাই জীবনের অতৃপ্তিগুলি আসলে সাময়িক
জন্ম ,মৃত্যু ,বাঁচা সবটাই আসলে মানুষের ভাবনায়।
সমুদ্রকে আমার স্নেহবতী নারী মনে হয়
মনে হয় আজীবন খুঁজতে থাকা সেই অদ্ভুত নারীকে
যার বুকের ভাঁজে মুখ লুকিয়ে
অদ্ভুত তৃপ্তি।
.
আসলে সমুদ্র আমার কাছে দৃশ্যের মতো খালি চোখে দেখা নয়
দেখতে চাওয়া মানুষের বেঁচে থাকা গভীর নীলে।
সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে
আমি গভীরে দেখতে পাই তৃষ্ণা নামক বিশাল জনপদ ,
ব্যস্ত খুচরো নদী
একটা বিশাল মানচিত্রকে।
সমুদ্রের গভীরে আমি খুঁজে পাই সভ্যতার জন্ম আর ধ্বংসের কারণ
দেখতে পাই সমুদ্রের বুকে অন্ধকার রাতে চাঁদের আদর।
 সমুদ্র আমার কাছে নারীর মতো
ছুঁয়ে যায় পায়ের পাতা
যেন দিন হেঁটে যায় রাত্রির স্তনে অমোঘ সঙ্গমের দিনে
আমার সমুদ্র স্নান।

একদিন চলে যেতে হবে


একদিন চলে যেতে হবে
.... ঋষি

একদিন চলে যেতে হবে
পানপাত্রে রেখে যেতে হবে প্রিয় প্রেমিকার মুখ।
নিজের আত্মজ
আর অসংখ্য অতৃপ্ত আমি
আমরা।
.
একদিন সকলের অলোখ্যে নিরিবিলি চুপচাপ মরে  যেতে হবে
উৎসবের সকাল ছিঁড়ে বুকের পোড়া  পাণ্ডুলিপি বুকে কেটে পড়তে হবে
হেরে যেতে হবে
পুড়ে যেতে হবে
একদিন ঠিক নিজেকে পুড়িয়ে আরো একলা হতে হবে
দুঃখ নয়
সুখ নয়
না শান্তি
শালবনি মেঘে লেগে থাকা আকাশ
সেদিন আমায় মিস করবে কি ?
.
একদিন ঠিক চলে যেতে হবে
বুকের মধ্যাহ্ন বুকে আজকাল সূর্যোদয় খুব কম হয়।
পুরোনো প্রেমিকা মুখ
পুরোনো সময়
তোমার হাসির ছটা  ,আখরোট ঠোঁটে লেগে থাকা স্ট্রেবেরি
সব পরে থাকবে।
তখন আমার ছেলের হাতে প্ল্যাকার
তাতে লেখা বিদ্রোহ ,
ছেলের ভাবনায়  বাবা লোকটা বিদঘুটে ,চুপচাপ ,সারাদিন শুধু স্বপ্নে
ছেলেকে জানানো যাবে না আমার হেরে যাবার কথা
আমার বুকে শুয়ে থাকা মৃত বিপ্লবীদের।

বড় জানতে ইচ্ছে হয়
সেদিন আমার এই কবিতা পড়বে  কেউ ,
কেউ মনে করবে আমায়
একজন কবির কল্পনায় শুয়ে থাকা রক্তাক্ত স্বপ্নদের। 

ভালো আছি


ভালো আছি
.... ঋষি

ঈশ্বরে ভোগাচ্ছে
আত্মায় বিশ্বাসী আমি এমন  তো ভাবতে পারি না কখনো
ভাবতে পারি না  ছাপোষা ডাল ভাতের জন্য
আত্মা বিক্রি করতে হবে  সময়ের কাছে।
সার্বিক দুনিয়া
ডট কম খুলে ,খুলে ফেলতে ইচ্ছে করে তাই  নাটকের শব্দকোষ
সময়ের জন্ম দোষ।

একটা সময় ছিল আড্ডা চলতো পরেশদার চায়ের দোকানে
আমি ,অসিত ,রাজদ্বীপ,রতন
আজ পরেশদার চায়ের দোকান ভেঙে স্কাই রাইসিং ভ্যলক্যানো।
আগে তবু আকাশ দেখা যেত
এখন আকাশ দেখতে আমাদের ছাদে উঠতে হয়।
উঠতে হয় সিঁড়ি ভেঙে
নিজেদের কাছে ,বন্ধুদের আড্ডা দেবার জন্য
যেতে হয় কফিশপে
সবাই আসে না সেখানে রাজদ্বীপ মারা গেছে ,অসিত টরেন্টোতে
তবু বন্ধুত্ব আছে।

তাইতো মাঝে মাঝে আমি আয়নার সামনে দাঁড়ায়
খুলে ফেলি মানচিত্র সময়ের।
মাঝে মাঝে সময়কে আমার নারী মনে হয়
ছলনাময়ী কিংবা মায়াময়ী।
তাইতো মাঝে মাঝে আমার রাষ্ট্র লিখতে ইচ্ছে করে
হঠাৎ হঠাৎ দোষ  দিতে ইচ্ছে করে
তোমাকে।
জানি না কেন যে আমি ছাপোষা বাঙালি
যার সত্যি বলতে নেই
যার লিখতে নেই পিরিয়ডের ন্যাপকিনে ভেজা সমাজ।
যার খাটতে হয় সময়ের ফরমাস
যার পড়তে হয় কিছু অসমাপ্ত কবিতা গল্প।
যার শুধু সহ্য করতে হয় সময়কে
হাততালি দিয়ে
বলতে হয়
বাহ্ ভালো আছি।



আমি কোত্থাও যাবো না



আমি কোত্থাও যাবো না
... ঋষি

আমি কোত্থাও যাবো না
শুনছো চলন্তিকা
কোথাও আমার যাওয়ার নেই বাতাসে যতই থাকুক মৃত মানুষের গন্ধ
সময়ে যতই থাকুক অবিশ্বাস ,
যতই লাথি মারুক আমায় রাষ্ট্র
আমি অভ্যস্ত হয়ে যাবো,হয়ে গেছি
কিন্তু তোমায় ছেড়ে কোত্থাও যাবো না।

আমি কোত্থাও যাবো না
পাথরের মতো থেকে যাবো তোমার পাঁজরে ,
কোত্থাও যাবো না
এই শহর ,এই শহরের গলিপথ ,এই শহরের শৈশব ,
এই শহরের ধুলোবালি ছেড়ে।
ওই দূরে দেখতে পাওয়া আমার ফিরে পাওয়া বাড়িটার প্রতি ভীষণ লোভ
আমি কোত্থাও যেতে পারবো না তোমাকে ছেড়ে।

আমি কোত্থাও যাবো না
ঈশ্বরের জুতো করে পরে আমি  তোমার পিছলে পড়া যোনির ভিতর দেখে এলাম
শহর জ্বলছে ,রাষ্ট্র জ্বলছে ,জ্বলছে মানুষের মতো দেখতে ধর্ম।
আমার ধর্ম ভালোবাসা
আমি তোমাকে ছেড়ে  কোথাও যেতে পারি।
ক্ষুধা নিয়ে জন্ম মানুষের ,ক্ষুধা নিয়ে জন্ম মানুষের
বাঁচার খিদে
সর্বোপরি মানুষ নামক জীবগুলো আজ অতিথি নিজের রাষ্ট্রে
রাষ্ট্র ভাঙছে ,ভাঙতে চাইছে লোভ।
আমারও  লোভ হয়
শিকড়ে পৌঁছোবার ,পৌঁছোবার তোমার গভীরে
তাই তো এই রাষ্ট্র ,এই সময় ,এই বেঁচে থাকা ছেড়ে
আমি কোত্থাও যাবো না।


Saturday, December 21, 2019

তোমায় চায়


তোমায় চায়
..... ঋষি

এত মুখ
চিনতে পারছি ,নাম মনে করতে পারছি না,
ডিমেনশিয়া নাকি
না না এগুলো সব ভালোবাসার চিতা।
পাথরে আঁচড় টানছি এক ,দুই ,তিন। ..সাতচল্লিশ ,আটচল্লিশ ,ইনফিনিটি
পর পর সরে যাচ্ছে সময়
হিসেব মেলাতে  পারি নি।

কত চোখ ,সবগুলো চেনা ,তাকাতে পারছি না
সময় বললো এগুলোকে ভালোবাসা বলে।
এগিয়ে আসছে ঠোঁট ,তারপর আবার লাইনদিয়ে দাঁড়িয়ে
নরম নরম মাংস
সর্বনাশ
চুম্বন
আর পারছি না দমবন্ধ ,সব বন্ধ
নিকুচি ভালোবাসা।

এই সংখ্যাগুলোকে ছাড়াই এইবার ভালোবাসতে চাই অন্তত একবার
হাত ধরতে চাই ,এগিয়ে যেতে চাই
তারপর মুখস্থ নেই।
তারপর মনে রাখতে চাই না অনেক কিছু
খোলা আকাশের গায়ে লেখা থাক
অজানা নেশা।
এক ,দুই ,তিন। ..সাতচল্লিশ ,আটচল্লিশ ,ইনফিনিটি
সব দ্বিতীয় নয়
প্রতিটা প্রথমে আমার তোমায় চায়।

চুপকথা


চুপকথা
...... ঋষি

যেতে হয় ,চলে যেতে হয়
আগুন ছুঁয়ে বলে দিতে হয় সত্যিকারের মিথ্যেগুলো।
সময় করছে দংশন
জীবন ভাঙছে পবিত্র ঈশ্বরের কাছে নিরামিষ বিশ্বাস।
ঈশ্বর বলে কি আদৌ কিছু বর্তমান
নাকি সবটাই খবরে শুনতে পাওয়া মানুষের অহিংসার শব
মিথ্যে। ...... যত্তসব।

ভিজছে মাটির বুক ,অদৃশ্য ঝর্ণায় ভিজছে শহরের সেতু
ভিজে চলেছে সহস্র প্রাচীন প্রেম।
যেতে হতো পাহাড়ের কাছে
প্রশ্ন করার ছিল কিসের এতো অহংকার  পাহাড়ি তার শীতলতার ?
যাওয়ার ছিল সমুদ্রের কাছে
জানার ছিল কিসের এতো গভীর গাম্ভীর্য ওই বিশালতার বুকে ?
চলে এসেছিল তোমার কাছে
তোমার গভীর চোখের ভিতর লিখতে চেয়েছি চুপকথা মেঘ
ভিজছে আমার কবিতা।

যেতে হয় ,চলে যেতে হয়
সময়ের কাছে ,চুপটি করে গিয়ে বসতে হয় তোমাকে জানতে না দিয়ে
তোমার হৃদয়ের আনাচে কানাচে।
জানি এই প্রবেশের নেই কোনো দুর্যোগের অনুমতি
জানি এই আমন্ত্রনের জেগে ওঠে সুপ্ত অনুভূতি।
তাই যেতে চাই
আর ফিরতে নয় ,
এখন আর ফেরার কথা নয় কোনো
শুধু ঈশ্বর বোধে তৈরী হওয়া সময়ের মন্দিরের দরজায়
চুপটি করে বসা। 

পাগলামি


পাগলামি 
... ঋষি

কি দেখেছিলে তুমি ?
ওরা মাকে  ধরে মারতো ,খুব মারতো ,
কারা  ?
আমার দুই দাদা। আমাকেও মারতো প্রতিদিন রাতে নেংটো  করে
এসব কি বলছো তুমি
লোকে আমাকে পাগল বলে তো।  সারাদিন হাসি ,কাঁদি।
 আমার খুব লাগতো জানেন
আমার মুখ চেপে আমার ধরে তলপেটে ওরা নোংরা কাজ করতো ,
তুমি কিছু বলোনি কেন কাউকে ?
মা বলতো কাউকে বলিস না না রাক্ষসী
ওরা আমাদের খেতে দেবে না রে,বের করে দেবে বাড়ি থেকে।

তারপর  ?
তারপর সেদিন রাতে ওই দুই দাদা আমাকে চুলের মুঠি ধরে ন্যাংটো করছিল ,
মা এসে বললো ,ছি ছি তোরা মানুষ হোলি না ,
তোদের বাবা থাকলে পারতিস ।
ওরা মাকে খুব মেরেছিল সেদিন ,আমাকেও মেরেছিল
আমি কিছু করতে পারলাম না
মা রাতে গলায় দড়ি দিল। 

পাগল।
কে পাগল ?
পুলিশ অফিসার বুড়িটার মৃত্যুর তদন্তের পর
কারণ স্বরূপ লিখলেন আত্নহত্যা।
পাগলীটাকে সমাজ থেকে দূরে পাগলাগারদে পাঠিয়ে দিলেন ,
দুই দাদাকে ওয়ার্নিং দিয়ে ছেড়ে দিলেন।

কে পাগল ?
মানুষের যন্ত্রণাগুলো কখন যেন পাগলামি হয়ে যায় মানুষের গভীরে।
বিশ্বাস করুন
আমার বুক জ্বলছে ,কান জ্বলছে ,চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে
সামনে সেই পাগলী মেয়েটা হাসছে।
হাসছে ওর চোখগুলো
বুর্জোয়া সমাজ ,পুরুষের ভিড় ,সম্পর্কও যেখানে কারণ
সম্পর্ক যেখানে নষ্ট
সমাজ সেখানে পাগলাগারোদি বটে ।
আর আমরা সকলেই পাগল
কিন্তু আমাদের পাগলামি শুধু  সত্যি লুকোতে।




Friday, December 20, 2019

সাময়িক


সাময়িক
.... ঋষি

আমার উল্টোদিকে অপেক্ষা দাঁড়িয়ে
তোমার রাস্তার ওপারে তোমার সময় দাঁড়িয়ে।
তবু সময় রাস্তা নয়
তবু অপেক্ষা একলা থাকা নয়
কোথাও আমরা আছি যেমন আছে আমাদের বাঁচা।
.
আমি সময় ,রাস্তা ,আর  অপেক্ষা
সব একসাথে জুড়ে দিলাম ,
তোমার গত হয়ে যাওয়া শতাব্দির সময় আমি ফিরিয়ে দিতে পারি ,
দিতে পারি এক আকাশ স্বপ্ন তোমার আগামীতে ভরে।
ভালো থাকা আর ভালোবাসা
সর্বদা স্ববিরোধী।
মানুষের স্ববিরোধী স্বভাব ,
সময় ছেড়ে আমি একলা মানুষ চলে যেতে অপেক্ষায়
সময়ের অপেক্ষায়।
.
একটা পাহাড়ি রেল আমার মাথার ভিতর শহর জুড়ে ঘুরছে
মাঝে মাঝে এমন হয় ,
বন্য আদলে সবুজগুলো একলা গুমরে মরছে
বাঁচার অভাব ।
পাহাড় কখনো মানুষের হয় না ,মানুষ কখনো সময় হতে পারে না
কিছু চরিত্র আসে যায়
কিছু চরিত্র রয়ে যায়।
দাগ টানে হৃদয়ের মাটিতে বোবা শব্দের ভিড়
বোবা মুখ পাহাড় খোঁজে
স্বপ্নের বুক ,
সময় খোঁজে
মানুষ চিরকাল সময় নির্ভর সাময়িক যে। 

পরিত্যক্ত হাতঘড়ি


পরিত্যক্ত হাতঘড়ি
.......... ঋষি

ফিরে আসতে চায় কেন
তোমার চোখের নিচে ঠিকানা লিখছে পরিযায়ী।
কমফোর্ট জোন ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস
আর নিঃশ্বাসে লেগে যাচ্ছে জ্যোৎস্ন্যা রাত।
জানি এই কবিতা দাঁড়াবে না
তোমার হাতঘড়ির মডেল চেঞ্জ করলে সময় থামবে না।
.
ফিরে  আসতে চায় কেন
প্রশ্ন করেছি নিজেকে ? প্রশ্ন করেছি আমার অমিকে ?
আয়নায় দাঁড়ানো মুখ
স্যাতস্যাতে ,
মেঝেতে ছুঁয়ে থাকা সঙ্গম বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে অন্ধকার হয়ে গেছে
সারা শহরে আঁধার।
মানুষের তৃপ্তি জুড়ে অসংখ্য ছোটছোট চাওয়া পাওয়া
কেউ কারোর মতো হয় না
শুধু  মতাদর্শে বিপ্লব আসে ,বিপ্লবী চিরকাল শ্রেণীশত্র সময়ের।
.
হাতে প্ল্যাকার নিয়ে দাঁড়িয়ে সারা ধর্মতলা মোড়
পরিযায়ী দিক বদলাচ্ছে ,আরো গভীরে মরছে আমার কম্ফোর্টজোন।
ওসব বুঝতে চাই না
শুধু জানতে চাই ফিরে  আসতে চায় কেন ?
চোখ বন্ধ করলে ভেসে ওঠে পবিত্র মন্দির ,গির্জার ঘন্টা ধ্বনি ,বিকেলের নামাজ
কেমন একটা ঈশ্বর ছুঁয়ে যায় তোমার স্পর্শে।
আমার কোনো ধর্ম নেই
শুধু আছে ছায়াছবির মতো  আমার পরিত্যক্ত বেঁচে থাকা।
আমি কখনো জানতে চাই নি
ফিরে আসতে চায় কেন ?
কিন্তু জানতে চায়
পরিযায়ী যদি স্বপ্ন দেখে বাঁচার নেশায় ?
পরিত্যক্ত দেশ ,শহর ,সময়
আমি
পরিত্যক্ত হাতঘড়ি তখন।

Thursday, December 19, 2019

পদবী

পদবী
... ঋষি

অদ্ভুত প্রলেপ
অদ্ভুত থার্মোমিটার পুরুষের ,
মাথায় হাত রেখে যে অবহেলে বলতে পারে ভালোবাসি
বিয়ের আগেরদিন অবধি যে খুব সহজে বলতে পারে আমি মরতে পারি। 
যে বিয়ের মন্ত্রে ভাগ করে নেয় নারীকে অর্ধেক জীবন
আমি সেই সমাজ থেকে বলছি।

প্লিস একবার ভাববেন
কোনটা সত্যি ?
কি সত্যি ?
এই সমাজে নারী নামক জীবটি ঠিক কোন পদবীতে বাস করে।
এগুলো তিরস্কার না
ম্যাডাম আপনাদের যন্ত্রণাগুলো শুধু আপনাদের নিজেদের। 
ভাবুন তো
আপনার সন্তান জন্ম দেওয়ার দিন
বিয়ের পর  যেদিন শেষ বারের মতো আপনি ছেড়ে এলেন মায়ের ঘর।

এটা অবস্থানের প্রশ্ন নয়
প্রশ্ন আপনার নারীত্বের ?
এই যে আপনি সুখী সুখী মুখে সংসার করছেন
এই যে আপনি গুছিয়ে নিয়ে সংসারের রান্নাঘর থেকে বিছানা ম্যানেজ করছেন
কে আপনি ?
এই যে আপনাকে বলছি ,আপনি চাকুরীরত
আপনাকে সংসার ,সন্তান ,কর্মস্থল সব একসাথে সামলাতে হয়
কে আপনি ?
এই যে আপনাকে বলছি আজ বিয়ের চল্লিশ বছর পর
যখন  আপনি আয়নার দিকে তাকান তখন কি মনে হয়  ?
কেন মনে হয় ?
কি আপনার পদবী ?

অদ্ভুত সমাজ
অদ্ভুত সামাজিক দৃষ্টি অর্থাৎ আমাদের।
আমরা সেই সেই রাত্রি করে অফিসফেরত মহিলাকে বলি চরিত্রহীন,
আমরা সেই সংসারী মহিলাকে চুন থেকে পান খসলে বলি অলক্ষ্মী ,
আমরা সেই বহুদিন ধরে সন্তানহীন মহিলাকে বলি বাজা
আমরা সেই মৃত সন্তানের মাকে বলি রাক্ষসী।
অথচ দিনের পর দিন সেই চরিত্রহীন , অলক্ষ্মী ,বাজা ,রাক্ষসীর
বুকে মাথা রাখি
প্রয়োজনে নগ্ন করি
ইচ্ছেমতো ব্যবহার করি
আর সাথে জুড়ে দি সামাজিক পদবী।

পুনশ্চ  কি ভাবছেন আপনার ব্যবহার। 

পাখির পালক


পাখির পালক
... ঋষি

আমি কিছুই শুনি নি ,আমি কিছুই বুঝি নি
শুধু এটা বুঝি পাখির পালকে কবিতা ভর করে হাওয়ায় ভাসতে ,
আমার লিখতে ইচ্ছে হয় ,তোমায় ভালোবাসতে
আর দূরে কোথাও
আকাশ থেকে নামতে থাকে একটা পাখির পালক।
.
তুমি কিছু দেখ নি, আমরাও কিছু দেখি না
শুধু শুনি সময়ের  কলরোল হৃদয়ের খুব  কাছাকাছি।
দূরাগত শব্দের মতো
সে প্রতিধ্বনিত
সে ভীষণ রকম একা বলে।
যাওয়া আছে আসা আছে
শিকড়ের শেষটুকু জুড়ে বাঁচতে চাওয়া আছে।
কিন্তু কি আছে
ভালোবাসা
সন্ধ্যের পরিধি ছিঁড়ে দূরে মিলিয়ে যাওয়া ধুনুচির গর্ভ থেকে কুন্ডলি পাকিয়ে
মিশে যাওয়া  দৈনন্দিন।
.
তুমি কিছু দেখ না, আমাদেরও কিছু দেখা হয় নি
সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে
সবার যখন ঘুম অতল সমুদ্রের মতো নিবিড়
আমি গোপন সিঁড়ি বাইতে থাকি।
সবার যখন অজস্র স্বপ্ন আর  স্মৃতি নিয়ে বালিশ কাঁদে
সবার যখন শোবার জানালা অন্ধকারে হাতছানি দেয় ,
আমি গিয়ে দাঁড়ায় একলা আকাশের নিচে
তাকিয়ে থাকি দূরে সেই তোমার দিকে।
সবার যখন ভোররাতে মনের মধ্যে অলীক ডাকে
সবাই যখন বলতে থাকে শব্দ নয় শোক নয় অন্যকিছু
আমি পা বাড়িয়ে ছাদের রেলিঙে
আকাশের দিকে  এগিয়ে যাই ভাসতে ভাসতে
ঠিক একটা পাখির পালক।


মানুষ চেনা


মানুষ চেনা
........... ঋষি

আমি নিখিলেশকে চিনি
চিনি রাজদ্বীপকে  , চিনি অমরকে
আমি জালিয়ানওয়ালাবাগ দেখেছি ,আমি নকশাল দেখেছি
আমি মানুষ হয়ে হেঁটে গেছি মানুষের সাথে
কিন্তু মানুষকে চিনেছি কতটা  ?
.
সম্ভবত এই কারণে আমি সেই ক্লান্ত মানুষটার সাথে হেঁটে ফিরেছি বাড়িতে
যে তার স্ত্রীর দুরারোগ্য ব্যাধিতেও  চুলে গুঁজে দিয়েছে রজনীগন্ধা।
সেই মানুষটা যে তার দশটা পাঁচটা চাকরির ফাঁকে
বারংবার ছুটে গেছে তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যার কাছে
শুধু একবার বাবা ডাক শুনতে।
সেই মানুষটাই আবার তার বসের কাছে খুব শান্ত হয়ে শুনেছে
এইবার একটু কাজে মন দিন
জানি আপনার স্ত্রী অসুস্থ ,মেয়ে ছোট
কিন্তু আমাকেও ওপরে জবাব দিতে হয়।
.
সম্ভত এই কারণে আমি গিয়ে দাঁড়িয়েছি একমাত্র সন্তান হারানো মায়ের পাশে
যে সন্তান বহুকষ্টে নিজের হাতে তিলতিল করে গড়ে তুলেছিল মা।
সেই সন্তান যে নিজের প্রেমিকার অবহেলায় গায়ে আগুন দেয়
সেই সন্তান যে নিজেকে প্রেমিক প্রমান করতে
ভুলে যায় তার আত্নীয়স্বজন ,বন্ধু ,সমাজ
এমনকি মাকেও।
সেই মায়ের চোখের জলে আমি দেখতে পেয়েছি পৃথিবী ভাঙার শোক
সেই মায়ের জ্বালায় আমি নিজেকে পুড়িয়েছি
খুঁজে পেয়েছি বাঁচার অভাব।
.
সম্ভবত এই কারণে আমি বিভিন্ন গুগুল সার্চে খুঁজে পেয়েছি নিলাজ সমাজ
খুঁজে পেয়েছি হাজারো একাকিত্বে ভোগা একলা রমণী। 
খুঁজে পেয়েছি মরে যাওয়া প্রেম ,হঠাৎ বাঁচা অধিকার
খুঁজে পেয়েছি বিছানায় শুয়ে থাকা নিলজ্জ কবিতা।
হাজারো সেই সব কামাসক্ত পুরুষ যারা বাড়িতে স্ত্রী রেখে
ইনবক্সে নিজের গড়িয়ে নামা কামেসিক্ত  নিলজ্জ ৱাতে ।
খুঁজে পেয়েছি এমন সব অদ্ভুত সমাজ
অদ্ভুত কিছু মানুষ
যারা এত ডামাডোলের মাঝেও সৃষ্টিতে মত্ত।
.
আমার এই কবিতা মানুষ চেনার 
সেই মানুষটার জন্য  ,সেই বাবার জন্য যাকে তার উপার্জনের ব্যস্ততায় 
ভুল বোঝে সংসার,ভুল বোঝে স্ত্রী সময় না দেবার জন্য ।
আমার এই কবিতা সেই মেয়েটার জন্য
যে মেয়েটা বাবার ওষুধের জন্য  নির্দ্বিধায় সমাজে শাড়ি খুলে দাঁড়ায়
যাকে কটুক্তি করে সমাজ ,যাকে বেশ্যা নামের পদবি দেয়।
আমার এই কবিতা সেই শৈশবের জন্য
যে জুলু জুলু চোখে চেয়ে থাকে সমবয়সী ছেলেটার দিকে
যাকে ফ্ল্যাটে থাকা ছেলেটার মা মিশতে দেয় না নিজের ছেলের সাথে।
আমার এই কবিতা সেই সমাজের জন্য
সেই ভদ্রমহিলার জন্য যে পাশের বাড়ির মেয়ে পালিয়েছে বলে গসিপ করে
ভুলে যায় তার মেয়েটি নিয়মকরে কোনো হোটেলে কারোর বিছানা সাজায়।




Wednesday, December 18, 2019

ভালোবাসা মাই ফুট


ভালোবাসা মাই ফুট
.... ঋষি

পুরুষ ঔরষজাত আর জন্মও
নারী ঔরষজাত আর জন্মও
তফাৎ একটা আছে ,পুরুষ শুধু ঔরষজাত
আর নারী যোনিজ।
কেন ?
যোনি কেন্দ্রিক সভ্যতায় সমস্ত উদ্দীপনাগুলো কোথাও যোনি ঘেঁষা,
ভালোবাসা সেখানে মাই ফুট।
.
ঠিক এই কথাটা বুঝতে চাইছিল ষোলো বছরের ক্লারা
যে গত ছয়মাস প্রতিরাতে
হওয়ার ক্যানভাসে তার প্ৰাক্তন বয়ফ্রেন্ডের উত্তেজনায়
নিজের যোনি ঘেটে ম ম গন্ধে ভরিয়ে দিয়েছে ভবিষ্যৎ ,
ভরিয়ে দিয়েছে স্বপ্ন।
নিজের ঠোঁট কামড়ে কামরসে ভরিয়ে দিয়েছে বাঁচা
যেটা একটা নেশা ছিল।
.
আর তার  প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড যার বয়স আঠারো
তার বিছানার চাদর যদি ফরেনসিক ল্যাবে  পাঠানো  হয়
পাওয়া যাবে তার অজস্র না জন্মানো সন্তানদের
পাওয়া যাবে ক্লারা নামে গরম উত্তপ্ত একটা শরীর
পাওয়া যাবে তাদের অল্প বয়সে পাকা কিছু আঠালো মিডিয়া
আর তাদের শেষ হয়ে যাওয়া প্রেম
যেটা আদৌ প্রেম ছিল কিনা প্রশ্ন  ।
.
প্রয়োজন ছিল ,প্রয়োজন আছে
শরীর।
পুরুষ আর নারী সৃষ্টির গভীর শুয়ে থাকা সেই আদিম কথা
শরীর কেন্দ্রীক কোথাও যোনি।
কিন্তু তাই বলে ভালোবাসতে শরীরের দরকার হয় না
কাছে আসতে ভীষণ দরকার ভালোবাসার।
আরো যদি গভীর কিছু থাকে
নিমেষে যদি মিশে যেতে চাও তবে শরীর জরুরী।
অথচ আমাদের যোনি কেন্দ্রিক সভ্যতার  সবটাই যোনি
সেখানে ভালোবাসা কোথায় ?
ভালোবাসা মাই ফুট। 

কিছুক্ষন

কিছুক্ষন
.... ঋষি

সকলেই যাই সকলের কাছে
আমিও যাই ,
আমি উন্মাদ পুরুষ ,তুমি আমাকে টেনে নিতে চাও অমোঘ প্রেমে
আমার লাল,নীল দুঃখদের বেলুনে ভরে উড়িয়ে দাও সুনীল আকাশে।
তুমি কিছুতেই বুঝতে চাও না
আমারও তোমার সময়  হতে ইচ্ছে হয়।

আমি ছবি আঁকতে পারি না
তবে গভীর রঙের আদলে আমি ডুবে যায় তোমার স্তনজ ইজেলে ,
ক্যানভাসে গভীর টানে নিজেকে ভুলতে থাকি।
আকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নীল রং
আমি তোমার বুকের বিভাজনে আঁকতে থাকি গভীর নদী
রং কম পরে যখন ,
লিখে ফেলি অনবরত ক্ষরণ
তোমার কবিতায়।

আমি বর্ণ  উন্মাদ
বর্ণরা আমাকে ঘিরে ঘুরতে থাকে তৈরী করতে থাকে অজস্র স্পর্শ ,
আমি সময় হারাতে থাকি
আমি তোমাকে মিস করতে থাকি মুহূর্তের ছবিতে।
দূরে কোথাও বাজতে  থাকে সময়ের  রিংটোন
রিংটোন বাজে তোমার হাতছানি।
আমার শীতের শহর তখন তোমায় ছেড়ে পাহাড়ি কুয়াশায়
হাতড়াতে থাকে অসংখ্য অনুভূতি ,অসংখ্য প্রয়োজন পাহাড়ি ঢালে।
পোশাকি সভ্যতা ছেড়ে
আমি তখন পাহাড়ি গোর্খা ,
তোমাকে প্রশ্ন করি
ম্যাডাম কষ্ট হচ্ছে না তো  ,এই তো আর কিছুক্ষন।  

Sunday, December 15, 2019

সমাজের ডাইরি থেকে



সমাজের ডাইরি থেকে
... ঋষি
.
যাপনকে যখন সময়ের দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখি
ঝুঁকে পরে  সমাজ নামক শব্দটা শুধু মৃত্যুর দিকে ,
তখন বুকের প্রতিবাদগুলো প্রতিরাতে বেশ্যা হয়ে যায় চারদেয়ালের সামাজিক আঙিনায়।
নিয়মধার্য্য  পুরুষের সঙ্গমে উঠে আসা জান্তব আঙ্গিকগুলো
মনে করিয়ে দেয় মৃত বেঁচে থাকাকে 
অথচ
আবহসংগীতে ছড়িয়ে পড়তে  থাকে মা শব্দের প্রতিধ্বনি।
নিয়মিত চুলচেরা বিশ্লেষণগুলো হাঁপরে পরে  উঠে  আগুন যাপন হতে থাকে
আর আমি বা আমরা
তখন নিয়মধার্য্য সামাজিক বেশ্যা।
.
পানপাতাদুটোর আড়ালে সম্পাদিত গল্পগুচ্ছ
কখন যেন আকাশের বুকে জমা করে অভিমান নিয়মিত সম্পর্ক্যের নামে।
স্নানঘরের কান্নাগুলো কখন যেন মিথ্যা রূপ ধারণ করে
ঘোমটার আড়ালে থাকা আলতা পায়ে।
একটা ঝাপসা বিকেলে রান্নাঘর থেকে অন্ধকার আকাশে বাড়ানো হাত
মনের কোন লুকোনো নক্ষত্রগুলো ঝরতে থাকে সাজানো পৃথিবীতে
সবটুকু মিথ্যে হতে থাকে পুরোনো শরীরে
ঝুলে যাওয়া বুকে দাঁত রেখে যায় সামাজিক কালসিটে
রেখে যায় সামাজিক রীতি
নিয়মিত পৃথিবীতে ।
.
তারপর ক্রমশ পা ফেলে এগিয়ে যাওয়া ভাঙা ছাউনিতে রাখা
সেই পুরোনো পাণ্ডুলিপির কাছে।
সত্যি লিখতে বিদ্রোহ করতে হয় সমাজের সাথে
শুনতে হয় মুখপোড়া ,অলক্ষ্মী।
আমি যখন লিখতে চাইছি একটা বাঁচার দৃশ্য
তখন দাউ দাউ করে আগুনে পুড়ছে নারী শব্দের কিছু গোপন কথা।
ক্রমশ চিতার কাঠ এগিয়ে আসছে  এক পা ,এক পা করে
ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে আলোতে ভরা স্বপ্নের দরজা।
আমি আরো পুরোনো হচ্ছি
সময়ের সাথে লোক লজ্জা।
৪.
.
পাংশুটে মেঘের দৃশ্য যখন মন খারাপের সময়
বাইরের বৃষ্টি শুধু সময়ের ঋতুতে  দেখতে পাওয়া যায় ।
কোলের সন্তান চিৎকার করে ওঠে খিদে  পায়
খিদে যে আমারও  পায়
বাঁচার।
চিৎকার করা যায় না
জীবন দেখতে পাই গঙ্গার ধারে শ্মশানের চুল্লিতে
দমবন্ধ সাজানো নিয়ম চারিপাশে
বলতে পারি না
প্লিজ আর নয় এইবার মরতে চাই। 

ভালোবাসা নামক গাছটা



ভালোবাসা নামক গাছটা
.... ঋষি

আঠারো বছর আগেকার মৃত প্রেমিকা
যে তার  প্রত্যাখ্যানের কারণস্বরূপ হাতে গুঁজে দিয়েছিল একটা চিঠি
সে আজ দাঁড়িয়ে তার হারানো প্রেমিকের সামনে।
এন আর আই স্বামীর টাকায়  কেনা জার্মানির কলম
সে তার প্ৰাক্তন প্রেমিকের হাতে গুঁজে দিয়ে বলছে
সব ঠিক তো কেমন আছেন ?
.
সামাজিক আর স্বাভাবিক
এই দুটোর শব্দের গঠনের মধ্যে বিস্তর একটা তফাৎ আছে।
মৃত প্রেমিকার মুখে আগুন দিতে
বুকের পাঁজরের বেশ কয়েকটা রিডে বেজে ওঠে বিসমিল্লাহ
কজন বোঝে ?
এখন প্রেমিকের সাইকেলের চব্বিশটা স্পোকে ভর করে জ্বলতে থাকা দিন রাত
কখন যেন গোটা জীবন শব্দহীন ছটা ঋতুতে বদলেছে কেউ জানে না।
.
জানি আমি কেন সেই প্রেমিকের আয়নায় দাঁড়িয়ে
দেখতে পাচ্ছি চোখের তলায় কালি ,সময়ের  ডাস্টবিনে পরিত্যক্ত মৃত প্রেমিককে । 
আমার প্রেমিকা কবিতা এখন বিদ্রোহিনী
ক্যালেন্ডারের পাতাগুলো এখন চুলের মুঠি ধরে ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে
ইচ্ছে করে চিৎকার করে বলতে  প্রেমিকা নামক মৃত শরীরটাকে
ভালোবাসা  আসলে একটা গাছ ,
যার প্রতিটা ঋতুবদলে একটা পরিবর্তন হয়
মাটির টান যদি মরে
তবে গাছ শুকিয়ে মরে যায়
স্মৃতিচিন্হ স্বরূপ পরে থাকে শুকনো শিকড় আর মৃত স্বপ্ন ।
সেই প্রেমিকার দেওয়া জাৰ্মান কলমে  আমার এখন লিখতে ইচ্ছে করে
ভালোবাসা কখনো মিথ্যে হয় না
মিথ্যে হয় ভালোবাসার বাড়ানো হাতগুলো
সত্যি হয় মৃত প্রেমিকের বেঁচে থাকা। 


পুরুষ বিদ্বেষী মন


পুরুষ বিদ্বেষী মন
... ঋষি

আমার প্রেমিকা কবিতা লিখলেই
ওর বুকের ভিতর ট্রেনের হুইসল বাজে
সময়  থেকে দৌড়ে আসা অপু দুর্গা দেখতে পায় শহরগামী ট্রেন।
আমি কবিতা হয়ে ঢুকে পড়ি ওর মাথায়
ধাক্কা দিলেই খসখস করে সাদা পাতায় ছড়িয়ে পরে ওর রক্ত
একটা হিংস্র ,খাদক  পুরুষ সভ্যতা  ওর সামনে দাঁড়ায়
ওর হাতে ছুরি
হত্যা করে আমায় সে পরম আক্রোশে।

আমি হাসতে থাকি
ও ঢুকে যায় রান্নাঘরে তুলে আনে এক কড়া গরম তেল
ঢেলে দিয়ে আমার পৌরুষে সে হাসতে থাকে।
অনেকটা রাক্ষসীর মতো দেখতে লাগে তখন
আঁতকে উঠে কামড়ে ছিঁড়ে নেয় আমার ঠোঁট। 
সেই সময় ওর চোখে আমি দেখতে পাই অবিশ্বাস ,চিতার আগুন
জ্যান্ত একটা প্রসূতি ওয়ার্ড ,নাম কে বাস্তে সাজানো নারীবাদ ,
সংবিধান আর নারী দিবসের ডিজিটাল আক্রোশ।

এই সময় ওকে আমি জড়িয়ে ধরি 
আমার প্রেমিকা ক্রমশ ঢুকে পড়তে থাকে কোমায় আরো অন্ধকারে।
আমি  আলো আবিষ্কার করতে চাই
বেড়িয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ কর্কশ কিছু সভ্যতা তার গভীরতায়।
আমি মাথার উপর হাত রাখি
আমার প্রেমিকা ক্রমশ আরো হয়ে ওঠে ব্যাকুল ছিন্নমস্তা
আমার বুকে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে ,কেটে নিতে  চায় আমার মাথা অবহেলে।
কখন যেন ভীষণ ক্লান্ত হয়ে লুটিয়ে পরে সে আমার বুকে
বুকের প্রতি ওর যে ভীষণ লোভ।
দূরে কোথাও বাজতে থাকে পন্ডিত রবিশঙ্করের সেতার
পুনশ্চ পুরুষ বিদ্বেষী মন। 

পরিচয়পত্র

পরিচয়পত্র
.... ঋষি

পরিচয়পত্র জানতে চেয়ো না
সব গল্প শেষ হয়ে গেলে
পরে থাকে দীর্ঘশ্বাস ,আর কিছু শীতের শুকনো পাতা ,
চামড়ার শুষ্কতা
সুতরাং কোল্ডক্রিম ,ভেষজ তেল সম্বল।

কিভাবে জন্ম হয়েছিল মানুষের
তবে আদমের সন্তানের বিষফল খাওয়াটা আজও সত্যি ,
বিষ থাকলে বিষক্রিয়া থাকবে
থাকবে বদহজম ,থাকবে পেট ব্যাথা ,থাকবে কন্ডোম
প্লিস কন্ডোম কন্ডোম বোলো না জনসমক্ষে
রাষ্ট্র নিতে পারবে না দেশভাগের প্রসব যন্ত্রনা। 
ইনজেকশন নিয়ো নিয়মিত
সত্যি  বোলো না ,বলতে নেই
জন্ম মিথ্যা হলে ,সত্যি অনিয়মিত হয় সর্বদা ।

উফস আবার ফিরে যাওয়া
বিশ্বাস করো আমি ফিরে যেতে চাই নি চৌষট্টিতে ,
প্রতারক যদি ঈশ্বর হয়ে যায় তবে ধ্বংস নিশ্চিত মানুষ সভ্যতার।
চিঠি লিখেছি জুলিয়াস সিজারকে
তিন তিনবার ফেরত পাঠালো ভদ্রলোক সম্রাট হওয়ার সুযোগ ,
অথচ  মানুষ সম্রাট চায় নি কখনো
চায় নি দাঙ্গা ,ধর্ষণ ,অনিয়মিত মুদ্রাস্ফীতি।
মাইকে ভেসে আসছে কোনো এক দল  শুয়োরের শব্দ ,
মানুষ রাষ্ট্র চেয়েছিল
চেয়েছিল ধর্ম   মনুষত্ব
অথচ মানুষ আজ সাবাসি তে ব্যস্ত
পিতৃ পরিচয়ের বিড়ম্বনা। 

Saturday, December 14, 2019

পুরোনো গিটার


পুরোনো গিটার
.... ঋষি

আমার ভিতর একটা গিটার আছে ,পুরোনো গিটার
পার্কস্ট্রীটের  পুরোনো রেস্তোরায়  বসে আমার মতো কেউ গিটার বাজায়
পুরোনো বৃদ্ধ ,
কিংবা বার্ধক্যের পাথর।
আমার ভিতর সময় বেড়ে ওঠে
বেড়ে ওঠে মরুভূমি ,দাবানল ,পুরোনো গ্রহ।

আমার শরীর চিৎকার করে পুরোনো গিটারের সাতটা তারে
সাতসমুদ্র পাড়ে
কলোনি ,চৌরাস্তা ,নর্দমা ,অগ্নিদগ্ধ মানুষ
আর দায়বদ্ধতা।
রোজকার ব্যস্ততা মুড়ে ফেলে একলা দাঁড়ানো গড়ের মাঠ
নাভিশ্বাস খোঁজে ক্লোরোফিলের  আশায়।

আমার ভিতর চিৎকার করে পুরোনো গিটারের শরীরের টুকরোগুলো
আমার প্রেমিকাদের চিৎকার
সংসার
আর রোজকার সামাজিক ধর্ষণে মিশে থাকা যোনি যোগ।
চিৎকার করে তাদের পুরোনো এলব্যামে হলদেটে মলাটে
বেঁচে থাকা মধুচন্দ্রিক
আর টুকরো টুকরো ছবিগুলো।
সত্যজিৎ রায় ,মৃনাল সেন ,ঋতুপর্ণ আরো অনেক হাজারো সিনেমার
মোড়কে ছুঁয়ে থাকা জীবনগুলো
সোনাঝুরির মেঘ চুরি করা কবিতার পাতায়
না লেখা কবিতাগুলো।

চারিদিকে হাততালি
নেশার চোখে পুরোনো রেস্তোরায় হাততালি দিচ্ছে  নতুন সমাজ
আমার গিটার চিৎকার করছে
হাততালি বাড়ছে ,
হঠাৎ নিস্তব্ধতা
তাল ভাঙছে। তার ছিঁড়ে যাচ্ছে পুরোনো গিটারের,
পার্কস্ট্রীটের রাস্তায় একপাশে বসে সেই বৃদ্ধ গিটার বাজক।

একফালি শহর


একফালি শহর
... ঋষি

নিজের একফালি ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে
একফালি শহর দেখা যায় ,
কিন্তু দেখা যায় না তোকে হাজারো কংক্রিটের ভিড়ে লুকোন জানলায়।
আমার এক ফালি জীবনের আকাশের নক্ষত্রদের খসে পরা
পর্বত প্রাচীন সত্যি
তোকে ভালোবাসতে কারণ লাগে নি কোনোদিন
বাঁচার কারণগুলো ভালোবাসায় বদলে গেছে।

ধরা যাক তোর মুখোমুখি সারি দেওয়া  ল্যাম্পপোস্ট
রাতের শহর ,
ধরা যাক বিশ জন তোমার কবি বন্ধু তোকে নিয়ে কবিতা লেখে
ধরা যাক সাত সাগর তেরো নদী বেসামাল
বেসামাল তোমার রূপের কাছে শীতের শহর ,
তুই  হাসলে
ছড়িয়ে পরে মণিমুক্তো ,ছড়িয়ে যায় সভ্যতার প্রথম দিনে  আদমের বীর্য ,
তুই হাঁটলে তোর সরে যাওয়া আঁচল আকণ্ঠ পান করে
নীলকণ্ঠ।

তবু নিজের একফালি ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে
একফালি শহর দেখি আমি ,
কিন্তু বুঝতে পারি না তোকে খোলা আকাশের ভিড়ে আমার অরণ্য মলাটে।
তুই  ভাবিস এইবার সময়
আকাশের দরজা বন্ধ করে আমি ঘুমিয়ে পড়বো সোহাগে
অথচ আমার রাত জাগা চোখ উৎস খোঁজে  বাঁচার।
তুই জানিস না
আমার এক ফালি শহরের আকাশের নক্ষত্ররা তোর চোরা গলিতে
একলা বাঁচে।
তোর শরীরের প্রতিটা রক্ত বিন্দুতে অধিকার খোঁজে
বাঁচার কারণ বদলানো  নিজেকে বদলে।

দ্বিতীয় দৃশ্য



দ্বিতীয় দৃশ্য
... ঋষি
.
ভয় পেতে দেখেনি তোকে আমি
পাখির আবার কিসের ভয় ,কিসের পরিধি
একটা গোটা আকাশ শুধু তো তারই ।
.
তোর বুকে একদিন ঠিক একটা গোটা শহর লিখে দেবো 
লিখে দেবো শত সহস্র যুগ ,
আজ থেকে শত বছর পর যখন তুই আর আমি কেউ নেই
সেদিন একটা পাখি উড়ে আসবে তুমুল ঝড়ে
নিজের ঘরে।
আমি ,তুই তখন  আমাদের শেষ  বার্ধক্যে হয়তো ফেলে যাবো
দ্বিতীয় দৃশ্য।
.
কাঁপতে থাকা বদলানো ঠোঁটগুলো
আজকের মতো চুষে নিয়ে আমি স্থির হয়ে  থেমে যাবো প্রাচীন পাথর।
পাথরের কি বয়স আছে
পাথরের কি মৃত্যু আছে ,
আমি অনবরত চেয়ে থাকবো তোর দিকে এক পৃথিবী পার
সত্যি সেদিন তুই ভয় পাবি।
.
ভয় পেতে দেখিনি তোকে কখনো আমি
তবে তুই বলিস তোর আমাকে ভাবলে ভয় হয়
আমি নাকি পাগল হয়ে যাবো।
আমার চারিপাশে থাকবে না কেউ ,আমার চারিপাশে বাঁচবে না কেউ
সারা শহর তখন শান্ত ক্যানভাসে আঁকা স্বপ্নের ঘর ,
আমি হেঁটে যাবো শহরের কবিতা বুকে
লিখবো এক সমুদ্র শান্তি।
সত্যি কি সেদিন আসবে যেদিন কেউ কোত্থাও নেই
পাখিদের বাসা ভর্তি চিঠি
কবি নীল আকাশের গায়ে রেখে যাবে ঘরে ফেরার ডাক
পাখিরা ফিরে যাবে শান্তির বাসায়।
.
ভয় দেখাস না প্লিজ আমাকে 
তুই আমার দিকে এইভাবে তাকাস না
সত্যি বলছি আমি পাগল হয়ে যাবো। 

কাফকার গল্প


কাফকার গল্প 
... ঋষি 

হঠাৎ সেদিন  পথচলতি আমার দেখা হয় ফ্রানৎস কাফকার সাথে  
Search Results
অবাক হবেন না প্লিজ।
অদ্ভুত এক গল্প ছিল সেই মেয়েটার  যাকে আমি চিনি 
এটা একটা পুতুল হারাবার গল্প 
সত্যি বিশ্বাস করুন এটা একটা পুতুলের গল্প। 

সত্যি বিশ্বাস করুন 
হঠাৎ এক বিকেল বেলা বার্লিনের কোনো পার্কে  দেখা হলো কাফকার সাথে 
আর কাফকার দেখা হলো  সেই বাচ্চা মেয়েটার সাথে যাকে আমি চিনি 
যার পুতুল হারিয়েছে। 
মেয়েটা কাঁদছে কাফকা এগিয়ে গেলেন  তার দিকে 
প্রশ্ন করতে কাফকা শোনালেন তাকে 
তার পুতুল দেশ ঘুরতে বেড়িয়েছে তাকে না বলে 
ফিরে আসবে খুব তাড়াতাড়ি। 

তারপর অজস্রবার কাফকার সাথে আমার দেখা 
আর কাফকার দেখা সেই মেয়েটার সাথে ,
প্রতিবার কাফকা মেয়েটাকে বলেছেন তার পুতুলের দেশ ঘোরার কথা 
বলেছেন সেই পুতুলের সাফল্যের কথা , 
মেয়েটা হেসেছে ,আর কাঁদে নি ,ভেবেছে পুতুলটা ভালো আছে। 
তারপর একদিন হঠাৎ কাফকা সাহেব 
মেয়েটার হাতে তুলে দিলেন একটা ঝাঁ চকচকে নতুন পুতুল 
মেয়েটাকে বললেন এইটা তোমার পুতুল। 
মেয়েটা অবাক হলো পুতুলের পরিবর্তন দেখে 
আমিও অবাক হলাম। 
কাফকা সাহেব বললেন 
এই জীবনে হয়তো তোমার অনেক কিছু হারাবে 
কিন্তু সবই ফিরে আসবে 
হয়তো অন্যরূপে ,হয়তো অন্যভাবে ,হয়তো অন্যসময় 
তোমায় শুধু চিনে নিতে হবে।
বিশ্বাস করুন এইসবের আমি সাক্ষী ছিলাম সেদিন 
ঈশ্বরের মতো ,মেয়েটার বন্ধুর মতো 
আর এক মহান স্রষ্টা কাফকার একনিষ্ঠ পাঠক হয়ে।   

ফিরে আসা শহর


ফিরে আসা শহর
... ঋষি

একদিন ঠিক ফিরিয়ে নিবি আমাকে
কমলা রঙের সকাল ,আজগুবি কোনো এক বিকেলের গল্পে
মুখোমুখি কফিকাপ।
তোর হাতে কাফকা ,আমার হাতে  শক্তি
কাটাকুটি খেলা হবে,
হার জিত  নেই ,কারণ আমি তো হেরে গেছি বহুদিন
তোর ঠোঁটের পাশে তিলের আদরে।
.
জানি না এই কবিতা কেন লিখছি
কেন আজকাল হঠাৎ দেখতে পাই সেই ফ্ৰক পড়া মেয়েটাকে
যে আকাশে উড়িয়ে দিচ্ছে টসের কয়েন
যার একপাড়ে বাঁচা ,অন্য পাড়ে মরণ।
জানি না এই কবিতা তোর শীতল শহরে হঠাৎ ছুঁয়ে যাবে কিনা
জানি না তোর দস্তানায় শেষ দাগে  ফায়ারপ্লেসের উষ্ণতা থাকবে কিনা।
শুধু জানি কিছু জন্ম মৃত্যু ছুঁয়ে থাকে
কিছু জন্ম শুধুমাত্র প্রথাগত।
.
একদিন ঠিক ফিরিয়ে নিবি আমাকে
হাজারো বছরের পরে পুরোনো কফিশপের  আদলটা বদলাবে
নাম রাখবে কেউ ফিরে আসা শহর।
কিন্তু কি বদলাবে
রিটা হাটসন কিংবা তার পেন ফ্রেন্ড  যে টরোন্টোতে থাকে
যার আসার কথা আছে আগামী কুড়িতে
যদি সে না আসে ?
সব গল্প কখনো শেষ হয় না
কিছু গল্প শেষ হয়েও বেঁচে থাকে বরফের দেশে
বরফ শরীরে রেখে যায় পুরোনো উষ্ণতা
ইফ টু পিপল লাভ ,দে উইল ফাইন্ড এ ওয়ে হাউ ইটস ওয়ার্ক।
জানতে চাই না কখনো
তোর সত্যি মনে পরে কি আমায়  ?

Friday, December 13, 2019

সুপ্রভাত

সুপ্রভাত
.... ঋষি

শীত করছে আমার শহরে
সকালের নদীর মতো রাস্তা কুয়াশায় ঢাকা।
কুয়াশায় ঢাকা রাষ্ট্র
সমস্ত সমান্তরাল সময়ের শীতের ডাক ,
ভালোবাসা ঘুমিয়ে আছে প্রাচীন কফিনে পেরেকের জং এ
নীরবতা ছাড়া এই সময় কি আছে চাওয়ার।

কম্পিউটাৰ ডেস্কটপে স্যান্টা নিয়মমাফিক শৈশবের মোজা নিয়ে হাজির
পুরোনো মোজাটা আজ ও যত্নে রেখেছে চলন্তিকা
তবু তার সময়ের গোঁড়ালিতে ফাটা দাগ।
হাঁটছে সময় পাল্লা দিয়ে রাষ্ট্রের দিনবদলের গানে
একটা ষড়যন্ত শুরু মানুষের সভ্যতায়
মানুষ মারার কল
মানুষ একলা থাকার চল 
সুপ্রভাত নতুন বছর,শুভেচ্ছা নতুন সময় ।


শীত করছে আমার শহরে
শীতের গন্ধে কমলালেবু ,শীতের গন্ধে ফুলকপি ,টমেটো লাল ,
চলন্তিকার একলা দাঁড়িয়ে রাস্তায়
পুরোনো জানলা ,
আজও আকাশের দিকে বাড়ানো হাত।
দূরে শৈশব জড়িয়ে ক্রমশ নামছে খেলনা পাহাড়ি ট্রেন
খেলনা  এক সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা
কেউ কোত্থাও নেই
অথচ
আমার এই কবিতা কুয়াশায়
২০২০ আর আমি।

Tuesday, December 10, 2019

বিষাক্ততা


বিষাক্ততা
.... ঋষি

পাশাপাশি থরে থরে নিথর দেহ
নেই কোনো বুলেটের দাগ ,নেই কোনো রক্ত শরীরে
শ্বাস নিচ্ছে ,হাঁটতে চলছে
প্রয়োজনে কথা বলছে ,হাসছে ,কাঁদছে
অথচ মৃতদেহ।
.
ওদের চোখে শুয়ে আছে স্বপ্ন
প্রত্যেকটা মৃত
অগণিত প্রেমের মৃত দেহ।
ওদের প্রত্যেকের  চোখে আঁকা হাজার দিনের বেঁচে থাকা
ঠোঁটে না বলতে পাওয়া অসহায়তা
পাশাপাশি শুয়ে ওরা একই আকাশের তলায় ,অজস্র নক্ষত্রের নিচে
নক্ষত্র বৃষ্টি দেখছে,
শ্বাস নিচ্ছে তবু ,বিষাক্ত মৃতদেহ।
.
ওদের বিষাক্ততার শেষ নেই
শরীরে কটু গন্ধ ,হৃদয়ের অজস্র ক্ষত ,মরা পচা প্রতিদিন
দুঃসহ না বলা।
ভালোবাসা ঘন হলে মোহের প্রলেপ ,বেঁচে থাকার প্রলেপ
ভালোবাসা মৃতদেহ হলে ,মৃত্যুর প্রলেপ ,শ্মশানের মৃত গন্ধ।
কিন্তু কোনো রক্ত নেই
কোনো শব্দ নেই ,নিঃশব্দ যেন কোনো মৃত বাঁচা।
.
কাকে বলছি ,কেন লিখছি ?
আপনারা কি বুঝছেন ,ভালোবাসা না মৃতদেহ ?
চোখ আগলে দেখুন ,দেখুন চোখ খুলে
ভালোবাসা অপরাধ না ,অপরাধ ভালোবাসার মানুষটার মৃত্যুর।
অপরাধ সময়ের ক্যানভাসে বাড়তে থাকা  সাবানের ফেনায়
প্লিস ভালোবাসুন
তবে  বুদ্বুদকে স্বপ্ন বলে ভাববেন না
ভাববেন না ভালোবাসা অপরাধ।
  

গাছ


গাছ
... ঋষি

তুমি যখন বুক দিয়ে আমাকে জড়াও
তোমাকে কেন জানি আমার গাছ মনে হয় ,
একটি প্রাচীন গাছ।
তুমি যখন আকণ্ঠ আমাকে গিলে নিতে থাকো পরম তৃষ্ণায়
তখন যেন তোমায় নদী মনে হয়
আমার সারা অস্তিত্বে ঝরতে থাকা তোমার জলপ্রপাত।
.
খালি পায়ে আমি হেঁটে গেছি বারংবার তোমাকে জড়াবো বলে
তোমার কাছে যাওয়ার সময় আমার কিছু থাকে না
সারা পৃথিবীতে কোনো লোক থাকে না
থাকে না কোনো শব্দ
যেন একটা বাঁচার তরঙ্গ আমাকে গ্রাস করে ,
তুমি হাসতে  থাকো
আমি তখন একটা পুরুষ মাছ ঘাই মারি তোমার বুকের ভিতর
তুলে  আমি রুপোলি স্বপ্ন বালির দেশে।
.
তুমি তখন আঠারো পেরোও নি
তুমি তখন শেখ নি কোনো শব্দ করতে মুখে  ,
তুমি তখন সবুজ পাতা
তুমি তখন তোমার শাখা  প্রশাখায় স্বপ্ন বুনছো।
আমি কেন জানি তখন মাটি হয়ে যায়
তোমায় আঁকড়ে থাকি ,তোমাকে আরো জড়াবো বলে.
আমি কেন জানি তখন চুপ হয়ে যায়
শুধু প্রতিমুহূর্তে তোমার কথাদের শুনবো বলে।
আমি কেন জানি কারোর দিকে তাকাতে ভুলে যায়
শুধু তোমায় দেখবো বলে।


পায়ের শব্দ

পায়ের শব্দ
.... ঋষি

বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে
সময়ের বাসে এইমাত্র চলে গেলো বেঁচে থাকা।
ফেলো গেলো পানের পিক ,থুথু ছেটানো বাসস্ট্যান্ড ,ঝালমুড়িওয়ালা 
আগামীর বাস
আর বাঁচতে চাওয়া।

বিষণ্ণ কালি মেখে সময়ে ফিরে আসি
ফেলে আসি পুরোনো চায়ের  ভাঁড়ে মিশে থাকা ঠোঁটের লিপস্টিক।
বিদায় এইভাবে লুকোনো বাস স্ট্যান্ডে
মনখারাপ ছেড়ে যায় ,
বিকেলের পাখিগুলো  দল বেঁধে ক্রমশ হারিয়ে যায় আকাশের গভীরে
বেশ লাগে
ভালো লাগে
পাখিদের শুভেচ্ছা ,ইচ্ছের ঘরে।

জীবন  এগিয়ে যায়
না চাইতে জীবন ছেড়ে চলে যায় প্রত্যেকটা বিদায়ে ,
বাসস্ট্যান্ড ,ট্রেনের হুইসেল ,ফেরির শব্দ
আমি দাঁড়িয়ে থাকি ,
আমি শুনতে থাকি
চলে যাওয়া পায়ের শব্দ।
সকলে মনে করে পায়ের শব্দ বোধহয় ক্রমশ ক্ষীণ হতে হতে হারায়
আসলে এই পৃথিবীতে হারায় না কোনো শব্দ
কোনো শব্দ আসলে হারাতে পারে না
থেকে যায়
বুকের ভিতর
হঠাৎ বিষন্নতায়। 

পাগলাগারদ

পাগলাগারদ
............ ঋষি

আমরা আসলে সকলেই ভীষণ অসুস্থ
আমাদের ভিতরে বাস করে এক একটা পাগলাগারদ।
সামনে দিয়ে আপনি দেখবেন সাজানো বাগান
আর পিছন খুললেই একটা ফুটো ,
এটা সমাজের নিয়ম
ভীষণ সামাজিক ।

বারংবার মেয়েটা ফিরে আসে তার প্রেমিকের কাছে
অথচ প্রেমিক হয়তো তখন তার হবু স্ত্রীর বুকে সংসার বুনতে ব্যস্ত।
সেই ছেলেটা যে হন হন করে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে
একটা চাকরি দরকার
বাড়িতে অবিবাহিত বোন,অসুস্থ মা।
সুটবুট পরে হেঁটে যাওয়া সেই ভদ্রলোক তার গাড়িতে জড়িয়ে ধরছে
তার সহকর্মীকে ,
সহকর্মী খুঁজছে একটু নিরাপত্তা ,একটা সারা স্বপ্নকে।
স্বপ্না বলে মেয়েটা রোজ নিয়ম করে বাড়ি বাড়ি বাসন কোসন ধোঁয়
কিন্তু সুযোগবুঝে তাকেও ধুতে হয় বাবুদের বীর্য।
রোজি ভোররাতে বাড়ি ফিরে আবার দুপুরে বিউটিপার্লার যায়
নিজেকে সাজাবে বলে
তাকে তুলতে হবে আগেরদিনের শরীরের কালি।

এরা কারা
আমি ,তুমি , আমরা
এরা প্রত্যেকে একজন করে আস্ত পাগলাগারদ
এরা প্রত্যেকের চোখে ঘুম নেই  কারণ  এদের বেঁচে থাকার সময় এইটুকুই।
সময় সুযোগ মতো প্রত্যেকে এরা বাথরুমে আওয়াজ না করে কাঁদে
আবার প্লাস্টিক স্মাইল সাজিয়ে সমাজের আলোতে দাঁড়ায়।
 নাটক করে নিজের সাথে
নাটক করে সমাজ নামক আয়নায় দাঁড়িয়ে।
নিজেরা রং মাখে ,আবার রং তোলে
ঠিক যেন জোকার।
এরা প্রত্যেকে নিজেদের প্রয়োজনে বড় অভাবী
অভাব এদের বেঁচে থাকার।
দেখুন না অমৃতা হাতের শিরা কেটে রক্তে ভাসছে এই সময়
কারণ  মেয়েটার বাঁচার আর ইচ্ছা নেই।
সত্যি এমন হয়
কি বলবেন মেয়েটাকে
পাগল ,পাগলামি,পাগলী।


Sunday, December 8, 2019

অলংকার


অলংকার
.... ঋষি

আপনি নিজেকে সবজান্তা মনে করেন মশাই
আপনি প্রেমিক পুরুষ ,বাঘের ছাতি ,
কিন্তু আপনি কি আদৌ জানেন
আপনার স্ত্রী ,আপনার প্রেমিকা ,আপনার নারী
সে কি ভালো আছে ?

বুঝলাম আপনি বলবেন কি আমি জানি তো কোথায় তিল আছে
কবে তার পিরিয়ডের ডেট ,
তার ব্রায়ের সাইজ আপনি জানতে পারেন
কিন্তু আপনি জানেন কি আপনার কাছে সে কতটা সুখী
আপনি বলবেন
এই তো হাসছিল আপনার সাথে
এই তো বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছিল ,
আরে বিছানায় সেদিন শীৎকার করছিলো।

আমি বলছি
আপনার নারী  আপনাকে ,আপনার অস্তিত্বকে বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছে
আপনি যে বাথরুমে জলের যে শব্দ শোনেন
তার আড়ালে তার কান্নার শব্দ শুনতে পান না।
মাঝরাতে যখন আপনি তৃপ্ত কামে ঘুমিয়ে পরেন
তখন সে তার পুরোনো প্রেমিকের বুকে মুখ চিপে কান্নায় ভাসিয়ে দেয়।
আপনি জানেন তার পুরোনো প্রেমিকের কথা
 আপনার মতো টাকা ছিল না বলে আপনাকে সে বিয়ে করতে বাধ্য হলো।
কি যাতা বলছেন
কি আপনার মাথা ঠিক আছে তো ?
আসলে কি জানেন আমরা সকলে সত্যি ভালোবাসি
কিন্তু বলতে পারি না।
আমরা সকলে খাঁচার মধ্যে বাঁচি
স্বপ্ন দেখি বাঁচবার
কিন্তু বাঁচতে পারি না।
মিথ্যেকে সত্যি বানিয়ে ,সত্যকে মিথ্যে করে নাটক করি
বেঁচে থাকার
কিন্তু আপনি বলুন তো কজন সত্যিকারের বেঁচে
নাকি বেঁচে থাকাটা আজকাল অলংকার মাত্র ।


যোগ্যতা

যোগ্যতা
........ ঋষি

মানুষের  যোগ্যতা একটা বড় প্রশ্ন
প্রশ্ন সময়ের দরজায় কোথায় আপনার জন্ম ?
ভেবে দেখুন
আপনার পদবীটা আপনাকে শুধু বর্ণান্ধ হওয়া থেকে  আটকায় না
বাঁচিয়ে দেয় আপনার পিতার যোগ্যতা আপনি ফুটপাথে কিনা
কিনা কোনো দিন আনা  মুটে।
.
খেটে খাচ্ছেন এতে অসুবিধা নেই
আজকাল তো প্রায়ই শুনি মুচির ছেলে ডাক্তার হয়েছে
কিন্তু একবার প্রশ্ন করবেন সেই ছেলেকে
সেই ডাক্তার হওয়ার পথটা।
হয়তো আপনি হবেন ,আপনার যোগ্যতা কি হবে
এটা আপনি স্থির করতে পারেন,
কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই ব্যাপারে সময় ঠিক মাথা গলাবে
দুচারটে বাজে কথা আপনাকে শুনতেই হবে।
.
যোগ্যতা একটা বড় প্রশ্ন আজকের বাজারে
আপনি ঠিক কত টাকা ইনকাম করেন ,আপনার নিজস্ব গাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে কিনা
পাত্রীপক্ষের কাছে খুব জরুরি ,
কিন্তু কোনদিন কেউ জানতে চাইবে  না
আপনি মানুষটা কেমন।
আপনার যোগ্যতা নেই বলে আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনাকে রিজেক্ট করতে পারে
আপনার যোগ্যতা নেই বলে সমাজ আপনাকে শুয়োরের বাচ্চা বলতে পারে
বলতে পারে একটা ছ বছরের শিশুকে
তোর এই বাবা তোকে ভালোবাসে তো।
আপনার পদবি ,ব্যাংকব্যালান্স ,আপনার হাইট এগুলো প্রমান করে যোগ্যতা
কিন্তু আপনি মানুষ হিসেবে কতটা যোগ্য
কেউ জানতে চায় না কখনো। 

ভালো থাকা ,খারাপ থাকা

ভালো থাকা ,খারাপ থাকা
.... ঋষি

আসলে এই পৃথিবীতে শেষ বলে কিছু হয় না
ধরো তোমার প্রেমিক তোমাকে হঠাৎ না বলে উধাও ,
তুমি কি করবে ?
খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়ে কান্নাকাটি ,অনেকটা না পাওয়া যন্ত্রনা ,
শেষে ভাববে প্রেম তোমার যোগ্য নয়
চলো পাথর হয়ে যাই।
কিংবা চলো ধ্বংস করি সেই প্রেমিককে
কিংবা নিজেকে।
অথচ সেই তুমি আজ বিশ  বছর বাবা মার্ দেখা পাত্রের সাথে সুখে ঘর করছো
বছরে দুবার বিদেশে যাচ্ছো ,ফ্যামিলি প্ল্যানিং করছো
বরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোচ্ছ।

যে ছেলেটা নিজের প্রেমিকার নাম নিজের বুকে খোদাই করে লেখে
বাস্তবে দেখা যায় সেই ছেলে বিয়ের আগে ট্যাটু রিমুভিংয়ের হিসেব কষে।
আদতে সে ভালোই থাকে
আসলে এই পৃথিবীর কিছু ছেঁড়া যায় না নিজের কারণে
সবটাই ভাবনায়।
ভাবনা গুলোকে হত্যা করতে পারলে তুমি ভগবান
না হলে তুমিই সেই মূর্তিমান শয়তান
যে আত্মহত্যা করবে।

আসলে কি আমরা সকলে ভালো থাকার চেষ্টা করি মাত্র
ভালো থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন সব করি
আর অদ্ভুত ভালোবাসলে তো আমরা নিজেকেই ভুলে যাই।
তাই কষ্ট হয়
ভালো থাকতে অভ্যস্ত মানুষ
না ভালো থাকায় অনভ্যস্ত।
বুকের পাথর ভাঙে ,ভেঙে পরে আকাশের চাঁদ
যুদ্ধ শুধু নিজের ভিতর
বাঁচার চেষ্টায়।
আসলে কারোর জন্য কিছু এসে যায় না কারোর
আমরা সকলে ভালো থাকতে চাই নিজের মতো করে
আর তারজন্য আমাদের কারণের দরকার
আর দরকার দায়িত্বের।
খারাপ থাকলে  ভালো করা যায় না
আর ভালো থাকলে খারাপ শুধু অভিধানে থাকে
আক্রমণের অপেক্ষায়।

পুতুলখেলা


পুতুলখেলা
... ঋষি

আজকাল তোমার সাথে কথা বলতে কারণ লাগে
কারণ লাগে তোমার সাথে বেঁচে থাকার।
আজকাল তোমাকে জড়িয়ে ধরতে কারণ লাগে
কারণ লাগে তোমার সাথে কথা বলার।
সব কারণগুলো যেদিন বেআব্রু হয়ে যাবে
সব কারণগুলো যেদিন অকারণ হয়ে যাবে
সেদিন কি হবে ?

সেদিন এমন ছিল না ,আজ থেকে দশ বছর আগে
হঠাৎ তুমি বুকের কাছে থুতনি ঘেঁষে বাচ্চা খুকির মতো আদর চাইতে।
সেদিন এমন ছিল না
যেদিন তুমি সদ্য পাড় ভাঙে শাড়িতে এসে হঠাৎ জড়িয়ে ধরতে
প্রশ্ন করতে আমায় কেমন লাগছে ?
সেদিন এমন ছিল না যেদিন তোমার আমার পৃথিবীটা
ঠিক স্বপ্নে জড়ানো আদরের মতো ছিল।

তারপর বাবু হলো ,
তারপর তুমি ক্রমশ ব্যস্ত তোমার সংসার ,তোমার ঠাকুরঘর ,তোমার সিঁদুর
তোমার রান্নাঘরের খুন্তি ,সব আছে
কিন্তু আমি কোত্থাও নেই।
কখন যেন আমাদের রান্নাবাটি খেলায় আমরা মানুষ পুতুল হয়ে রয়ে গেলাম
সংসারটা ক্রমশ পুতুলের।
সময় খেলছে
সময় মতো আমার  অফিস ,তোমার রান্নাবাটি খেলা সব চলছে
অথচ আমরা কোত্থাও নেই।
আজ শুধু শব্দ হয় কথা কাটাকাটি,বাসনকোসন ইট পাথরের
অথচ আমাদের সম্পর্কে প্রাপ্য কিছু নেই
নেই কিছু অবশিষ্ট
নেই কিছু জীবিত
শুধু কিছু সাজানো নিয়ম আর সমাজ ছাড়া।
   

Saturday, December 7, 2019

ঠিক হয়ে যাবে

ঠিক হয়ে যাবে
.... ঋষি

সময় হেসেছে ,ছেলেটা হেসেছে
ঘুমের মধ্যে আজও হেসে ওঠে তার না জন্মানো সন্তানেরা ,
পাতায় পাতায় সবুজ হয়
শোনা যায় বৃষ্টি আসবে কোনো ভোরে
সেদিন হয়তো তৃষ্ণা মিটবে।

বছরের সাতের ছেলেটার মা বাবার ডিভোর্স হলো
নিয়ে গেলো সময় মায়ের সাথে ,
নতুন সংসার ,
সময় বললো ঠিক হয়ে যাবে
সেই সময় ছেলেটা বুঝতো না ঠিক হওয়ার মানে ।
.
সময় বদলালো
প্রেমিকা এগিয়ে দিলো লুকোনো চুমু
ছেলেটা ভাবলো এই তো ঠিক হচ্ছে ,এইভাবেই ঠিক হয় বোধহয়।
বেশ কিছুদিন ঠোঁটে ঠোঁট
সাজানো শহর
অভ্যস্ত জীবন
ঘুম ভাঙা চোখে একদিন খবর এলো
বিয়ে হয়ে গেলো তার প্রেমিকার।
সময় পিঠ থাপড়ে বললো ঠিক হয়ে যাবে ,এত ভাবিস না
ছেলেটা বুঝতে চাইলো ঠিক হয়ে যাবে বোধহয়
ঠিক বোধহয় এই ভাবে হয়।

তারপর একদিন ছেলেটা সাহসী হয়ে পরে
হাতে গোলাপ জড়িয়ে কোনো নারীকে সত্যি সত্যি জড়িয়ে ধরে ,
বিয়ে করে
সন্তান হয়।
কিন্তু বিয়ের বছর দশেক পরে
ছেলেটা খেয়াল করে সে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ,
একই জায়গায় ভীষণ একলা।

ছেলেটা পিঠ ফিরে শোয়
সময়কে খুব সামলে নিয়ে বলে একদিন ঠিক সব ঠিক হয়ে যাবে।
আসলে সব ঠিকগুলো এমনি হয়
পোশাকি কাব্য,
ঠিক আমার এই কবিতার মতো
সাজানো গোছানো একপাতায় লেখার চেষ্টায় অন্য জীবন ।  

Thursday, December 5, 2019

রান্নাবাটি


রান্নাবাটি
.... ঋষি

তুমি যতবার এসেছো আমার কাছে
মনে হয়েছে আমি রানী আর তুমি সেই পুরুষ যে আমাকে ভালো রাখতে চায়।
তুমি যতবার বলেছো ভালোবাসি
যতবার ঠোঁট রেখেছো ঠোঁটে
আমি ভিজে গেছি ,আমি ভালো থেকেছি তোমার মতো ,
কখনো জানতে চাই নি
সত্যি তুমি কতটা।

আজ তোমায় বলছি
আমি ভালো নেই ,আমি ভালো থাকতে পারছি না ,
প্রতিদিন নিয়ম করে আমি আর সমাজ সেবিকা সাজতে পারছি না ,
পারছি না অন্যের বিছানা সাজাতে
খুলে দিতে সিঁথি দু ভাগ করে একটা সামাজিক লোকের কাছে।
আমার সারা শরীরে মনে হয় ব্যাধি
আয়নার সামনে দাঁড়ালে
তোমার ছোঁয়াগুলো আজকাল জড়াতে ইচ্ছে হয়
সবসময় তোমায় পেতে মন চায়
তুমি ছুঁয়েছো অজস্রবার কিন্তু বুঝতে চাও নি কখনো।

যদি বলি প্রতিবারি তুমি আমার শরীরটা চেটে খাও
নিজের অভাব ভরাবে বলে ,
যদি বলি প্রতিবার তুমি আমার যৌনাঙ্গে চেপে ধরে চিৎকার করো
নিজের কষ্টগুলো লুকোবো বলে।
যদি বলি তুমি আমাকে ভালোবাসো না
শুধু নিজেকে লুকোতে চাও নিজের হেরে যাওয়ার কাছে।
আমি জানি উত্তরে তুমি বলবে পাগলী
বলে আমাকে আবার আদর করবে ,আমিও ভিজবো পাগলীর মতো
কিন্তু কিছু বদলাবে না
আমি জানি কিছু বদলানো যাবে না।
তবু জানো আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে সত্যিগুলো সময়ের কাঠগড়ায় বলতে ,
তোমার বুকে মাথা রেখে
আমার ইচ্ছে করে সত্যিকারের রান্নাবাটি খেলতে । 

অবান্তর

একটা নির্জন বিকেলের সাথে আছি   এইমাত্র ঝুপ করে কফির কাপে সন্ধ্যে নামলো শহরে  শহরের রাস্তায় ডেসিবেলের হিসেবে এই সব অবান্তর  অবান্তর শহরের ভিড়...