Friday, September 30, 2022

একলা

 একলা 

... ঋষি 


একলা একটা কবিতার ঘর 

“You smile, but you wanna cry. You talk, but you wanna be quiet. You pretend like you’re happy, but you aren’t.”

.

একলা হতে হতে একদিন সাগর হয়ে যাবো 

একলা হতে হতে একদিন ঠিক মরুভূমির মাঝে দাঁড়াবো 

সব একলার কোনো বাঁচা থাকে না 

শুধু থাকে বাঁচার মতো কিছু ,

সমস্ত একলাই পৃথিবীতে কারণ  ছাড়া অবশিষ্ট 

শুধু মনের কোনে কিছু। 

.

আমাদের মাঝে যে কথাগুলো একলা  

              সেগুলো কখনোই বলা হয়ে ওঠে না 

আমাদের মাঝে যে কথাগুলো না বলার 

              সেগুলো আমরা বলি 

একলা বাঁচি ,একলা মরি 

শুধু দিনান্তে কিছু স্বপ্ন তবুও মরে না কিছুতেই। 

.

একলা হতে হতে একদিন তোমার হয়ে যাবো 

একলা হতে হতে একদিন এই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবো 

সেদিন কি থাকবে জানি না 

সেদিন কি বাঁচবে জানি না 

শুধু জানি প্রতিটা একলা একটা না জন্মানো যন্ত্রণার কবিতার মতো 

শুধু জানি প্রতিটা একলা শব্দটা উচ্চারণে ব্যাকরণ বিঘ্নিত দুর্ঘটনার মতো। 

তবু কিছু এসে যায় না 

দিন কাটে ,তবু কাটতে চায় না 

মাঝ সাগরে উঠতে থাকা ঝড় 

বড্ড বোকা একলা গুলো মুহূর্ত আর সময় নির্ভর ,

ঘুম আসে না জানি 

মরুভূমিতে যাদের ঘর 

তারা একমাত্র জানে জীবনের  তৃষ্ণা  মৃত্যুর থেকেও ভয়ঙ্কর।  

ভোলা পাগলা

ভোলা পাগলা
.. ঋষি 
উৎসবের মেজাজে হাত পা ছড়িয়ে গা চুলকাচ্ছে ভোলা পাগলা
সামনে ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে চলেছে দর্শনার্থী, 
আলো ঝলমলে শহরের গায়ে আজ নতুন পোশাকের গন্ধ
ভোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে হা হা করে হাসছে 
তার সারা শরীরময় ধুলো, অপরাধের গল্প 
ভোলা হাসছে ঠিক কিন্তু তার চোখের কোনে জল।
.
তোমরা কজন ভোলাকে চেন? 
তোমরা শুধু জানো এই পৃথিবীতে পুরুষ খোঁজে যৌনতা,
কিন্তু ভোলার মত কেউ কেউ আছে 
যে খোঁজে মানুষ, মনের মানুষ, বাঁচার মানুষ। 
এই সাজানো নাটকের মুখোশে 
যেখানে ভালোবাসা খোঁজে কারণ, 
সেখানে কেউ কেউ ভোলার মত ভালোবেসে পাগল হয়ে যায়। 
.
ভোলার সামনে পথচলতি কেউ ছুঁড়ে ফেলে একটা জ্বলন্ত সিগারেট 
ভোলা তুলে নেয়, চেপে ধরে তার বুকের উপর
তারপর চিৎকার করে বলে তার প্রেমিকার নাম, 
পথ চলতি অনেকে ভয় পায় একটা পাগলকে জন্তুর মত চিৎকার করতে দেখে।
হঠাৎ একদল চ্যাংরা যুবক ঢিল ছুঁড়তে থাকে ভোলাকে লক্ষ করে
ভোলা হাসতে থাকে,
তার প্রেমিকার নাম নিয়ে চিৎকার করতে থাকে, 
কিন্তু বোকা ভোলা বুঝতে চায় না তার প্রেমিকা আর ফিরবে না
বোকা ভোলা বুঝতে পারে না প্রেমিকার নাম করে চিৎকার করাটা অপরাধ। 
আমিও জানি তাকে কেউ বুঝবে না সে প্রেমিক
আমি জানি তাকে কেউ জানবে না 
শুধু সময় কাটবে, উৎসব আসবে, উৎসব যাবে
কিন্তু বোকা ভোলার আর ভালো থাকা হবে না
সে পাগলই থেকে যাবে। 


Thursday, September 29, 2022

হেলিকপ্টারের ডানা

হেলিকপ্টারের ডানা 
.... ঋষি 
.
মাঝে মাঝে মনে হয় গতজন্মে বেঁচে আছি 
কি ছিলাম, না হে মনে পড়ে না,
সত্যি হলো আজকাল নাম, ধাম, পদবী সব মিথ্যে মনে হয় 
গত জন্মে তুমি এসেছিলে মনে হয়,
তোমাকে চিনেও আজকাল নিজের গভীরে লুকিয়ে রাখাটা কষ্টদায়ক
তাই এ জন্মে লোডশেডিং জীবনভর। 
.
জানতাম তুমি এই ভাবেই তাকাবে 
আসলেএই বয়সে নতুন করে হওয়ার কিছু থাকে না
শুধু মাথার উপর দিয়ে হুশ করে উড়ে যায় বাঁচা
যেন হেলিকপ্টারের ডানা
কিছু বদলায় কিনা জানি না,শুধু সম্পর্ক বদলে যায়
আর ক্রমশ বদলাতে থাকে জন্ম মৃত্যুতে । 
.
ক্রমশ ফুরিয়ে আসা  আমাদের  কথার মেয়াদ
ক্রমশ বাড়তে থাকা আমাদের প্রাচীন পাপ ,
অশান্তিকেই কাছের লাগে বড় আজকাল
শান্তিকে মনে হয় ডিকশনারীর ভিতর কোনো এক নারী 
যাকে পাওয়া যায় না তোমার মতো 
আর ছোঁয়াটা যেন আকাশের চাঁদ। 
নতুন নতুন আপদবিপদ,প্ৰাচীন কিছু হিসাবনিকাশ 
ছিঁড়ে যাওয়ার পরেও নিখুঁত গিঁটের অভিনয়
দারুন মুখোশ আর 
                     মুখোশের মানুষ। 
এ এক অদ্ভুত সময়ে বাস করছি আমি আর তুমি 
যে লোক কোনোদিন চিঠি লেখে নি 
সে হঠাৎ আজকাল চিঠি লেখা শিখিয়ে হাততালি কুড়োচ্ছে ,
যে লোক ভালোবাসাকে এতদিন শুধুমাত্র প্রয়োজন মনে করেছে 
সে হঠাৎ ভালোবাসি বলে নিজেকে সম্পর্ক প্রমাণিত করছে। 

শুভ শারদীয়া (২)

শুভ শারদীয়া (২)
.. ঋষি 
একটা উৎসবের মত ঝলমলে দিন 
একটা দিন যেদিন তোমার সমস্ত ব্যস্ততার পর শুধু আমি 
হঠাৎ দেখা রাস্তা পারাপারে 
কি রে তুই? সেই মুখ,সেই ঠোঁট, ঠোঁটটা নড়ছে
কি যেন বলছে
ঢাকের শব্দ, সময়ের সম্মোহন, আমি কিছু বুঝতে পারছি না
ঠিক এমনি হবে। 
.
কোন এক অষ্টমীর বিকেলে যে শব্দরা, যে শাড়ীর রং, যে টিপ আমার পছন্দের 
যে বলতো আজ কি পড়বো শাড়ি না সালোয়ার? 
সে আজ হয়তো কোথাও নিজের সংসারে ধুলো ঝাড়তে ব্যস্ত 
সে হয়তো আজ বাঁচছে অন্য কারো সাথে
আসলে মানুষ যখন হাত ধরে তখন প্রতিশ্রুতি নেয় 
আর যখন হাত ছাড়ে তখন শুধু স্বার্থ। 
.
একটা রাত, শহরের অলিগলি ভেসে যাচ্ছে টুনি লাইটের আলোতে
সব তো আছে এখানে 
সেই প্যান্ডেল, সেই ঠাকুরের মুখ,বিশাল লাইন 
ফুচকা,আইস্ক্রিম আর আমি, 
আমি জানি তুমিও আছো কোথাও মা দুর্গার সংসারে,
শুধু আমি হারিয়ে গেছি মানুষের ভীড়ে
এক পদবীহীন ভালোবাসা
শুধু অপেক্ষায় কোন এক দিন দেখা হবে উৎসব ঠাসা মহানগরীর ভীড়ে কোন সন্ধ্যায়
হঠাৎ রাস্তা পারাপারে
তুমি হয়তো বলবে শুভ শারদীয়া
আমি কিন্তু সেদিনও বলতে পারবো না
আমার কাছে উৎসব মানে তুই।


Tuesday, September 27, 2022

শারদীয়া


 শারদীয়া 

.. ঋষি 


সাথে আছি ,যতটুকু থাকা যায় 

তারপর খাদ ,তারপর মৃত্যুফাঁদ ,কাছে ডাকে 

আয় আয় 

তারপর আমাদের আর কিছু করার থাকে না ,

প্রতিবারের মতো 

ফিরে আসা জীবন শহরের পথে ,ব্যস্ততার ভিড়ে। 

.

আবার উৎসব 

উৎসব মানে পূজাবার্ষিকী ,নতুন কিছু গল্প ,হয়তো কিছু উপন্যাস 

ততক্ষন ,ঠিক যতক্ষণ কথা থাকে 

তারপর পুরোনো পুজোর গল্প ,স্মৃতিখামে আমি ,তুমি ,তোমরা 

ছবিগুলো অন্ধকার হয়ে যায় 

প্রতিটা কথার পরে কি বা কিসের প্রয়োজন মনে হয়। 

.

সাথে আছি ,যতটুকু থাকা যায় 

তুমি শুধু স্থায়ী ,বাকি সব যন্ত্রণা আর ক্ষত 

আমার বুকের ভাঁজে তোমার পায়ের আলতা ছাপ 

ঠিক মা দুর্গার মতো। 

এক হাতে সময় ,অন্যহাতের তোমার হাত  

কতদিন বসে আছি শুধুমাত্র রোগীর বিছানায় হাসপাতালের গল্পে 

একটা ট্রিটমেন্ট দরকার 

দরকার সাথে থাকা ,পাশে থাকা। 

সেই টিউশনের পয়সায় গীতবিতানে লোকানো পুরোনো গোলাপ 

কাউকে দেওয়া হয় নি 

শুধু তোমাকে দিতে চাই এই শারদীয়ার অন্য সকাল 

আর ঘুমিয়ে পড়া স্বপ্নদের অধিকার। 

শারদীয়া (১)

 শারদীয়া (১)

... ঋষি 


ভালোবাসা মানে কত কিছু 

ভালোবাসা মানে তার পরে কিছু নেই 

কিন্তু পালাচ্ছি আমরা 

রান্নাঘরে ,চায়ের পাতায় ,উৎসবের ভিড়ে ,মানুষের মুখোশে 

শুধু আয়োজন আর প্রয়োজন 

আর আমাদের ভালোবাসা মরে যাচ্ছে । 

.

তোমাকে ভালোবাসার যোগ্য  নই আমি 

তাই মিশে থাকি মানুষের ভিড়ে ,

উপছে পড়া মানুষের ভীড় ,পুজো  প্যান্ডেল ,ঢাকের শব্দ 

কানে বড় লাগছে ,

আমি দাঁড়িয়ে শেষ প্রান্তে এক দর্শনার্থীদের ভিড়ে 

সকলে এগোচ্ছে ,আমি পিছিয়ে যাচ্ছি কেন ?

.

উৎসব তো আসলে আমার কাছে তোমাকে দেখার অজুহাত মাত্র 

উৎসব তো আসলে একটা ভালোবাসার কবিতা 

যা আমি লিখতে চেষ্টা করছি  

একটা দমকা হাওয়া তোমার চোখে চোখ,এক পলকা বৃষ্টি  

                     চোখ সরিয়ে নাও তুমি 

বলো ছোটোলোক ,এইভাবে হ্যাংলার মতো কেউ দেখে। 

আমি দেখি যতবার তুমি রঙিন শাড়িতে সময়ের মাঝে দাঁড়াও 

আমি দেখি যতবার  তুমি আমার হাত ধরে তুমুল ভিড়ে  হাঁটো 

তোমার প্রতিটা হাতছানি ,প্রতিটা মুহূর্ত আমি চিনি  

জানি তুমি দুরন্ত স্রোত ,মাতাল বৃষ্টি ,অনবদ্য কবিতা।  

যখন ভিড়ের মধ্যে  তুমি শক্ত করে চেপে ধরো আমার হাত

ঠিক ওই মুহূর্তগুলোতে

এত আলো, এত শব্দ, প্যান্ডেল ,প্রতিমা ,সময়ের ভিড়  

সব থেমে যায় 

শুধু থাকো তুমি আর একটা  অজুহাত উৎসব। 


Monday, September 26, 2022

চিরকালীন

 চিরকালীন 

... ঋষি 


আমাদের পৃথিবী ,পরিবেশ সব আলাদা হলেও

একটা মিল আছে 

সে হলো সম্পর্কের ভিতর আমরা খুনোখুনি করি 

কিন্তু একে অপরকে খুন করতে চাই না কখনো

সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার জন্য আমরা কামড়াকামড়ি করি 

কিন্তু তোমাকে ভালোবেসে কামড়ালে আমার দাঁতের দাগ পরে না । 

.

তুমি হয়তো বেড়ে উঠেছ গুলাম আলী কিংবা দেবব্রত শুনে 

আমি বেড়ে উঠেছি পাড়ার চায়ের ঠেক কিংবা পাড়ার ক্রিকেট ক্লাবে 

হয়তো তোমার নরম হাতে তখন অস্ট্রেলিয়ান পারফিউম 

সেই বয়সে আমার হাতে  বাজারের থলে ,দুটাকার পাট শাক ,

তোমার ডাইনিংটেবিল যেমন আলুখোসা ভাজার স্বাদ পাই নি কোনদিন 

তেমনি আমি পাই নি ব্রেড এন্ড বাটার সকালের টিফিনে 

তাতে কি ?

তফাৎ তো থাকে ,তফাৎ তো থাকে বোধন আর বিসর্জনে 

তফাৎ তো থাকে  আর্থিক আর পরিপার্শিক হিসেবের।

.

কিন্তু সম্পর্ক 

একটা তিন টাকার ইউজ এন্ড থ্রো ভাবনা আর থাউজেন্ট  ডলার 

দুটোই যে পৃথিবীর ,

সম্পর্ক চাইলে আমি আঙ্গুল ছোঁয়াতেই পারি তোমার আঙুলে   ,

সামঞ্জস্য যেমন আছে তেমন আছে অমিল 

তফাৎ তো আছেই ,কিন্তু তাতে কি ?

এই পৃথিবীতে কেউ কারো মতো হয় না ,হতে  চেষ্টা করে 

ভালোবেসে কনভেন্টে পড়া তুমি  যেমন রান্নাবান্না শিখলে  

তেমনি আমি সহজেই  শিখে ফেলেছি  কোটের টাই বাঁধা। 

আমি জানি শুধু একটা প্রচেষ্টা যখন পৃথিবী বদলাতে পারে 

তেমনি ভালোবাসা বদলাতে পারে মানুষ 

একপাশে যেমন ভালোবেসে মানুষ ঈশ্বর হয়ে যায় 

তেমনি অন্য পাশে মানুষের ঘুমের ভিতর হাহাকার বাড়ে

মানুষ হয়ে যায় খুব সহজে ভিখিরি।

 





দীর্ঘশ্বাস



দীর্ঘশ্বাস
.. ঋষি 
(১)
কে কার ভাগের কথা বলে ফেলছে আগেভাগে
আর কিছু কি বাকী? 
কথারা ক্রমশ এই পৃথিবীর অক্সিজেনের মতো কমে আসছে 
আফসোস নয় 
বরং শুধু বারংবার মনে হচ্ছে 
সত্যি যদি শেষ হবার ছিল শুরু হলো কেন? 
(২)
মাথার ভিতর নিয়মিত শেষ নিঃশ্বাস নিয়ে ঘুরি
একটা বেড়াল পাহারায় থাকে
এই যে হঠাৎ হঠাৎ দমবন্ধ হয়ে আসে আমার
এটাও তো বাঁচা,
সত্যি হলো বাঁচা ফুরিয়ে গেলে মানুষের বাঁচার ইচ্ছা হয়
তাই বোধহয় বাঁচা শব্দটা একটা অসীম । 
(৩)
হাত পা ছোঁড়াছুঁড়ি করে কিছু চাওয়ার বয়স ফুরিয়ে গেছে আমাদের,
এখন একটা ফুলপ্যান্ট কিংবা স্কার্ট পড়তে চাওয়াটা বোকামী,
বরং এসো আমরা উলঙ্গ হই 
জানি নীরেন্দ্রনাথ আর লিখবেন না রাজাদের কথা
বরং আমরাই সামাজিকতা লিখি। 

(৪)
ইদানিং কোনও অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলে ভাবি
এই বুঝি শুনতে পাবো তোমার কন্ঠস্বর,
যেমন খাঁচায় বন্দী পাখি
বারান্দায় শৈশবের  ছায়া পড়লে ভাবি
বাঁচাটুকু উড়ে যাচ্ছে দীর্ঘশ্বাসে নিয়ে।

তোমাকে চাই



তোমাকে চাই 

... ঋষি 


ঠিক কেমন করে তোমাকে চাই ?

ভাবনার অন্তরে যখন ভাবনারা ঘুমিয়ে পরে 

যখন পৃথিবীর আগুনে সমস্ত তৃপ্তির পরে আগুন জ্বলে 

ঠিক তেমন করে ,

হয়তো বোঝাতে পারবো না 

হয়তো উৎসবের আদলে মাতোয়ারা শহরে না হারানো কবিতার মতো। 

.

ঠিক কেমন করে তোমাকে চাই  ?

উত্তর ,দক্ষিণ ,পূর্ব ,পশ্চিম ,সমস্ত দিক্চক্রবালে একটা লালচে আভা 

পড়ন্ত বিকেল ,বাউল পথ ,হাতে সেই একতারা 

ঠিক তেমন করে ,

হয়তো বোঝাতে পারবো না 

হয়তো প্রতিদিন বাঁচার গভীরে সবুজ পাতার মতো তোমাকে চাই। 

.

বড্ড ফিল্মি ,বড্ড রিমেকি 

এক নিঃশ্বাসে চুইংগাম চেবানো শৈশব ,যৌবন ,বার্ধক্য 

জানি না তারপরে কিছু আছে কিনা 

হয়তোবা তেমন করে তোমাকে চাই। 

কিংবা ধরো এক সমুদ্র ঢেউ যেমন করে বুকের উপর আছড়ে পরে

কিংবা বৃষ্টির ফোঁটা যেমন শরীর থেকে গড়িয়ে পরে 

একলা দিনে আয়নায় দাঁড়ানো অভ্যেসে মতো 

তোমার রান্নাঘরে হাতাখুন্তির আওয়াজের মতো, 

গ্রীষ্মের ছাতা ,শীতের সোয়েটার ,জ্বরের থার্মোমিটার 

কিংবা এই শহরে হাজারো অভিমানের একলা কবিতার মতো 

রামকিঙ্কর ,সুনীল ,শক্তির সৃষ্টি ,ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলায় 

কোনো প্রতিবাদী মিছিলের সামনে সারিতে 

ঈশ্বরের উঠোনে ,আজানের সুরে ,বার্ধক্যের লাঠিতে 

আমি তোমাকে চাই। 

জানি না ঠিক কেমন করে তোমাকে চাই ?

হয়তো বোঝাতে পারবো না 

হয়তো আমার দৈনন্দিন বোঝাপড়ার ঝগড়ায় তোমাকে চাই

তবে আমার তোমাকেই  চাই 

এটাই শেষ কথা 

কারণ প্রতিটা মৃত্যুর পরে কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা জরুরী। 

 


..

Sunday, September 25, 2022

শুভ মহালয়া

 


শুভ মহালয়া 

... ঋষি 


"জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণ ধারিণী, 


অভয়াশক্তি বল প্রদায়নী তুমি জাগো "   


.


চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে 


কোনো এক ঐশ্বরিক নারী ,কোনো এক পদকমলে সমর্পিত হৃদয়,


নির্ভীক দৃষ্টি ,অনন্ত গভীরতা 


এই পৃথিবী লেহনের বাইরে যা কিছু তাই সমর্থক নয় 


বড় বেশি অবহেলিত সময় বেদনার দূত। 


.


একটা রাত কাটে ,অন্য রাতে 


ঘুম আসে না 


স্বপ্নে জেগে থাকে নারী ,সে অহংকারী ,সে বুদ্ধিমতী ,


এই পৃথিবী সুজলা ,সুফলা কাণ্ডের ওপাশে এক নারী 


আমি প্রশ্ন করেছি সেদিন চলন্তিকাকে 


সত্যি পুরুষ কি আছে ?


.


উৎসবের মরশুমে  আমার শহরে ঘুম ভাঙা মহালয়ার সুর 


পিতৃপক্ষের শেষক্ষণ ও দেবীপক্ষের সূচনাকাল


অশুভ শক্তির বিনাশ ,


সারা শহর জুড়ে মাতোয়ারা উৎসবের গন্ধ 


কুমোরটুলির প্রতিমার চোখে এখন বোধহয় মানুষের আনন্দ 


আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয় চলন্তিকাকে 


আচ্ছা এই সময়ের  কি সত্যি শান্তি আছে ?


                          আর আনন্দ ?


  .


" আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে  উঠেছে আলোক মঞ্জির, 


ধরনীর বর্হিআকাশে-অন্তরিত মেঘমালা "


পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ ,মানুষের স্বপ্নগুলো 


মানুষের বেঁচে থাকাগুলো আজ বড় বেশি ব্রাত্য।  


সময় বদলায় 


সে যে থামতে শেখে  নি 


তবুও হতাশা ছাড়িয়ে মানুষের ভালো থাকার ইচ্ছা 


বেঁচে থাকার ইচ্ছা। 


.


প্রাক উৎসবের মরসুমে সেই যে ন্যাংটো ছেলেটা হঠাৎ দৌড়ে এসে মাকে জড়ায় 


প্রশ্ন করে মা মহালয়া কি ?


মা হাসে বলে চুপ করে শোন 


রেডিও তখন জানান দেয় এখন শুনুন মহালয়া ১৪২৯


শুরু হয় 


"যা চণ্ডী মধুকৈটভাদিদৈত্যদলনী যা মাহিষোন্মূলিনী

যা ধূম্রেক্ষণচণ্ডমুণ্ডমথনী যা রক্তবীজাশনী ।

শক্তিঃ শুম্ভনিশুম্ভদৈত্যদলনী যা সিদ্ধিদাত্রী পরা

সা দেবী নবকোটীমূর্তিসহিতা মাং পাতু বিশ্বেশ্বরী ।। ।"


ছেলেটা মহালয়া শোনে ,মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে যেন কখন 


পৃথিবী আবারও ফেরে নিয়মমাফিক 


 বেদনা সরিয়ে আবারো টেলিফোনিক বার্তায় শোনা যায় শুভ মহালয়া।

Tuesday, September 20, 2022

শহরের কবিতা

 শহরের কবিতা 

... ঋষি 

.

তোমার চোখে  কলকাতা ঢেলে দেবো 

আমি লুকিয়ে যাবো পুরোনো কলকাতার ট্রামডিপোর ঘুমটিতে  

তুমি চোখ খুলবে যখন সকালের শহরে তখন জাগছে 

আমি দেখতে  পাবো তোমার আদরের চোখ   ,

কলেজস্ট্রিটের পুরোনো বইয়ের দোকানের তখন কলরব 

শক্তি ,সুনীল ,শ্রীজাতরা তখন সকালের কবিতায় তোমায়  খুঁজছে। 

.

শ্যামবাজার মোড় থেকে ক্রমশ বাড়তে থাকবে ভিড় 

কোনো অসময়ের মিছিল থেকে আমি শুনতে পারবো মানুষের চাওয়াগুলো ,

তুমি তখন সদ্য স্নান সেরে পুজোর ঘরে 

সংসারের শব্দ লুকিয়ে শান্তি খুঁজবে কিছুক্ষন ,

ঈশ্বরকে বলবে সময়ের ভালো হোক 

কিন্তু জানলার বাইরে তখন দুটো শালিখ হয়তো ঘর বদলাবে। 

.

ধর্মতলার কড়া রৌদ্রে মোড়ে পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক যুবক

বিশ্ব শান্তি খুঁজতে  চায় সে 

তার পাশে অন্য এক পাগল ফস করে বিড়িতে আগুন ধরায় 

তুমি তখন রান্নাঘরে ব্যস্ত শেষের খিদেতে।

বড়বাজারের টানা রিকশার ফাঁকে দুরন্ত বেচাকেনা 

শহর কিনতে চাইছে সুখ পুরোনো অভ্যেসে ,

একপাশে চায়ের দোকানে ধুঁকতে থাকা কুকুর হাওড়া ব্রিজে 

একটু রৌদ্র লুকোচ্ছে। 

এইভাবে ক্রমশ অন্ধকারে আকাশের তারারা স্নেহ খুঁজছে ভিক্তোরিয়ার পরীতে 

তখন পরী সেজে অপেক্ষা করছো 

পাশে তোমার সন্তান 

আর মনে মনে ভাবছো এই শহর ঘুমোয় না অনেকদিন।

.

আসলে দিন গুলো কাটে এই শহরে অনবদ্য কবিতার মতো 

আসলে বয়স বাড়ে এই শহরে হাজারো অপেক্ষায় ,

সময় ফুরোয় রোজ 

ময়দান থেকে নবান্ন ,সেখান থেকে মানুষের সুখ ,দুঃখ 

ভালো দিন কুড়োতে চায়। 

আমি  চাই শহরের কবিতায় মানুষগুলো জেগে উঠুক 

তুমি চাও নিজের মতো সাজানো একটা শহর 

কিন্তু বয়স বাড়ে ক্রমশ 

আর কমতে থাকে মানুষের গভীরে একলা সুখ। 

 


Monday, September 19, 2022

তোমার ঘরে বাস করে কয়জনা

 


তোমার ঘরে বাস করে কয়জনা 

.... ঋষি 

.

একটা সত্যি বলতে পারো চলন্তিকা 

ভালোবাসা নামক  ভদ্রলোক  গায়ে কি রঙের পোশাক পরে 

কিংবা আদৌ পোশাক পরে কিনা সেই ভদ্রলোক ?

ভালো -বাসা ,বলতে পারো চলন্তিকা 

এই বাসা মানে কি ?

এই বাসা মানে আমার  উপলব্ধি বলে তুমি অতিরিক্ত 

তুমি অপ্রয়োজনীয়। 

আর ভদ্রলোক হাসে হয়তো মনে মনে বলে 

তবুও আমায় ছাড়া বাঁচতে পারো না বাছা। 

.

চলন্তিকা তোমার নীল রঙের শাড়ি ,এক পৃথিবী ভাবনা 

চলন্তিকা তোমার স্বপ্নের শহর ,স্বপ্নিল বাঁচা 

চলন্তিকা তুমি এগোতে  জানো 

আর আমি পিছোতে ,

চলন্তিকা শেষ আধ ঘন্টায় তোমার ফোনে হাজারো আলপন

চলন্তিকা জানি  হাজারো মুখের মিছিলে তুমি হাসতে পারো 

চলন্তিকা তোমার মনের ঘরে শান্তি 

আর আমার মনের  ঘরে একটা প্রশ্ন ,বড়োই অশান্তি

আচ্ছা যারা ভালোবাসে ,তাদের কি কোনো ঘর থাকে  ?

যারা ভালোবাসে তারা কি কখনো ভালো থাকে ?

চলন্তিকা তুমি জানো সবই 

তবুও কেন জানতে চাও  who I'm in love with? 

আমার মনে হয় বোধহয় তুমি এটা জানো না 

What we have once enjoyed we can never lose. All that we love deeply becomes a part of us.

 .

চলন্তিকা জানো ভালোবাসা নামক ভদ্রলোক বড়ো বাউন্ডুলে 

জানি তার কোনো বাড়ি নেই ,নেই কোনো ঘর 

তার কোনো লোভ নেই ,নেই স্বভাব ,নেই সমাজ ,নেই চরিত্র 

তার চলার পথে কোনো দেওয়াল নেই  ,নেই অধিকার বোধ,

তার শুধু আমার নামে একটা আকাশ আছে 

আর আছে চোখ ভরা স্বপ্ন ,

আমি সব জানি চলন্তিকা , তবু জানো শুনতে পাই দূরে কোথাও বাঁশি বাজে 

আর বাঁশির সুরে সেই বাউলের  ধ্বনি 

"তোমার ঘরে বাস করে কারা

ও মন জান না,

তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা,

মন জান না। "  


 


Friday, September 16, 2022

তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো

তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো 
.. ঋষি 
.
সত্যি কি কেউ কারো হাত ধরতে পারে
বলতে পারে আমি আছি, 
সকলের তো নিজের নিজের অধিকার আছে 
সকলের তো নিজের নিজের সময় আছে 
কেউ কি ন্যাংটা হয়ে মাঝরাস্তায়  দাঁড়িয়ে 
চিৎকার করে বলতে পারে ভালোবাসি। 
.
ভালোবাসি একটা শুধু শব্দ নয় 
একটা মায়াজাল, 
একটা হাতছানি যা সকলের বুকের কাছে আলেয়া 
মানুষ ছুটে বেড়ায় 
মানুষ ভেসে বেড়ায়
এই হিসেবের শহরে কজন ভালোবাসি বলতে পারে। 
.
একটা মেরুদন্ড 
একটা নিরক্ষরেখা বরাবর কজন ছুটতে পারে
জানে পৃথিবীটা গোল
তবু ছোটে।
পাগলের মতো ক্রমশ বেখালী মাঝরাস্তায় 
সম্পর্ক যখন মিথ্যে কথা বলে
তখন কথা ফুরিয়ে যায়
ফুরিয়ে যায় নিঃশ্বাস  উপস্থিত হিসেবি বইয়ের পাতায়, 
তখব মুখগুলো আবছা হতে থাকে 
সাথে থাকার প্রয়োজনটা ফুরিয়ে যায়।
আমি জানি ভালোবাসা আসলে একটা বাউলের ঘর 
আমি জানি ভালোবাসা হলো আকাশের পাখি 
যে হিসেব মানতে চায় না, 
তবু মানুষ হিসেব করে ভালোবাসে,হিসেব করে কাছে আসে 
হাত ধরে 
তারপর হাঁপিয়ে যায় 
কথা ফুরিয়ে যায়, 
কিন্তু বাউল মন বোঝে না 
সে গেয়ে ওঠে 
খ্যেপা ছেড়ে দিলে সোনার গৌর আর তো পাবো না
তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো 
ছেড়ে দেবো না। 


Thursday, September 15, 2022

চুপকথা

চুপকথা
.. ঋষি 

আমি মাতৃগর্ভ লিখতে লিখতে 
ছিঁড়ে ফেলেছি নিজের মাথা,
রোজ অনেকটা রাত্রি করে, অনেকগুলো আয়োজন আমাকে ঘিরে ধরে
আমি সারেঙ্গিতে টান মারি
যা বাজে তা আর মানুষকে শোনানে যায় না। 
.
তোমাকে বারংবার বলি ভালোবাসি 
তুমি প্রতিবাদে প্রতিবারে আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেও, 
আমি কাছে আসি
তুমি গুঁড়ো গুঁড়ো কাঁচে সাজিয়ে ফেলো উৎসব 
আমার হাত কাটে,কাটে মন
তুমি বলো আমি স্বার্থপর একটা সুবিধাবাদী। 
.
ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আমি জানি না
তবে আজকাল ভীষন ভয় করে,
মায়ের গর্ভের শোক হারিয়ে আমি আজ  পুরুষের ভুমিকায়
বোবা কিছু মুহুর্ত লিখি,
জানি মুহুর্তরা কথা বলে, ঝগড়া করে
কিন্তু তুমি কথা বলতে বলতে চুপ হয়ে যাও। 
আজকাল ঠিক তোমায় বুঝতে পারি না
ভালোবাসা মানে কি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কলিংবেল টেপা
আহামরি একটা জাকজমক নিয়ে সময় হাসতে থাকে
কিন্তু আমি বুঝতে পারি ভালোবাসা কাঁদে 
কিন্তু চোখ মোছাতে সকলে অসুখের দরকার পরে,
তুমি বহুক্ষন পরে দরজা খোলো 
তারপর চুপ করে যাও৷ 


খেলাঘর





আমি হাত রেখেছি, মাথা রেখেছি 
কিন্তু সে কথা রাখে নি, 
আমি কথা ধুয়ে খেলনাবাটি খেলেছি
দিনান্তে খেলছি খেলা ঘরে
কিন্তু সে ঘর রাখে নি। 
.
ঘর কাকে বলে? 
অন্ধকার কাকে বলে? 
বোধহয় একগাদা স্বপ্নের নাম ঘর, 
আর স্বপ্ন যখন ধুলোর সাথে মিশে যায় 
তখন অন্ধকার। 
.
অন্ধকার একটা পথের নাম 
যার শুরু আছে আর কিন্তু শেষ নেই, 
নিন্দুকে বলে রাতের পরে দিন 
আর আমি  বলি 
রাতের পরে অপেক্ষা অন্য রাতের। 
.
আচ্ছা অপেক্ষা কাকে বলে? 
আমার মনে হয় অপেক্ষা হলো শান্তির খোঁজ,
অপেক্ষা হলো মোহন বাঁশীর সুর।
একটা ভিজে বালিশে ঘুম আসে না ঠিক 
কিন্তু ঘুমোতে গিয়ে বালিশ ভেজানো যায়। 
আমি বালিশে ঘুমিয়েছি,ঘুমিয়েছি বালিশ ছাড়া
কিন্তু ঘুম আসে নি আজ বহুদিন,
তুমি যে দূরবীনে চোখ ঘষে আগুন জ্বালাতে চাও
আমি সেই আগুনে বাস করি 
আর ঘর সে তো আগুনের সমার্থক মাত্র।

Wednesday, September 14, 2022

একদিন

ঠিক একদিন পালাতে পালাতে আমরা পৌঁছে যাবো ধৈর্য্যর কিনারায় 
সেদিন কিছু থাকবে না শুধু বোঝাপড়া ছাড়া
সেদিন দুজনে মুখোমুখি দুটো মুখোশ পড়বো 
কেউ হাসবো, কেউ মিথ্যে বলবো 
কিন্তু বিশ্বাস করো সেদিন বাঁচবো না কেউ।
.
যে শব্দগুলো রাত বারোটার টেলিফোনে একলা হয়ে বাজে
আরেবাবা একটা নিয়ম তো আছে, 
তবে যেখানে অন্যের দেওয়ালে কেঊ থুথু ফেলতে পারে 
সে তো বলতেই পারে অধিকারের কথা
সে তো মুখ ঢাকতেই পারে মুখোশে৷ 
.
ব্যার্থতা প্রাসঙ্গিক একটা শব্দ 
কেউ কেউ মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাততালি দেয়
কারোর আবার হাত থাকে না
অজুহাত থাকে। 
একদিন দেখো আমরা উল্টোপথে চলতে শুরু করবো 
চলার পথে আর আমাদের শরীর থাকবে না
ইচ্ছে থাকবে না
শুধু যৌনাঙ্গ  থাকবে
আর সেখানে থাকবে বোঝাপড়া
আর ইতিহাস। 

Monday, September 12, 2022

চলন্তিকা ,প্রেমিক ও আগন্তুক

 চলন্তিকা ,প্রেমিক ও আগন্তুক 

... ঋষি 


চলন্তিকা আর তার প্রেমিক বসে আছে প্রায় ফাঁকা পার্কের এককোনে গঙ্গার ধারে বেঞ্চটাতে।   সময়টা রাত্রি তখন ,মৃদুমন্দ বাতাস ,চোখে চোখ ,হাতে হাত ,দুজনের মনের কোনে তখন সেদিন  দুজনে দুলেছিনু বনে কিংবা এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় ।

০ 

চলন্তিকা : এই একটু আস্তে কথা বলো ,কে যেন আসছে আমাদের দিকে। 

প্রেমিক : যে আসছে আসতে দেও ,কুছ পরোয়া নেহি  ,হাম কিসিকো ডরতে নেহি। 

চলন্তিকা : দেখো লোকটা কি বিশাল লম্বা। 

প্রেমিক : তাতে কি ?আমিও তো পালোয়ান ,তুমি তো আছো আমার পাশে। 

আগন্তুক : এত রাত্রে ,এই সময়,তোমরা কারা এখানে ?

প্রেমিক : আপনি কে মশাই ? এত রাত্রে ,এই সময় এখানে ,আর আমাদের দেখে

আপনি নিশ্চয় বুঝতেই পারছেন ,আমরা ভাই বোন নিশ্চয় নই। 

 আগন্তুক : তোমরা ভাই বোন তো নও ,কে তোমরা ? 

চলন্তিকা : লোকটা ক্ষেপা নাকি ,নাকি টাইমপাস করছে বলোতো ?

প্রেমিক : আমরা মানুষ এবং ভালোবাসি একে অপরকে ,এবার বলুন তো আপনি কে ? চেহারা দেখে তো মনে হচ্ছে না পার্কের   ওয়াচম্যান  ,তবে এত কৌতহল কিসের আপনার বলুনতো ? 

আগন্তুক : যারা বিশ্বাস করে আমি কেঊ ,একমাত্র তাদের জন্য  আমি আমিই    ,এটাই আমার পরিচয়। 

প্রেমিক : মশকরা করছেন মশাই ,অনেক দিন অনেক কষ্টে অফিস পালিয়ে নিজের মনের মানুষটার সাথে একটু সময় কাটাবো ,কেন বলুন তো আমাদের সময়টা আপনি নষ্ট করছেন। দেখলে তো আপনাকে পাগল মনে হয় না ,মনে হয় ভদ্রলোক। প্লিজ দাদা আপনি এবার আসুন। 

আগন্তুক : হ্যা আমি তো সময় কাটাতে চেয়েছিলাম তোমাদের সাথে তাই তো আমার এখানে আসা।

চলন্তিকা : তখন কি আবোলতাবোল বলছেন বলুন তো। 

আগন্তুক : আবোলতাবোল ,শুনেছি ওই নামে একটা বই আছে ,যার কবিতাগুলো বিশ্বাস করলে হাসতে ইচ্ছে হয় ,হ্যা যা বলছিলাম তুমি চলো চলন্তিকা তো ? আর মশাই আপনি একজন অখ্যাত কবি তো ?

চলন্তিকা : আপনি কি করে জানলেন ? 

প্রেমিক : হ্যা আমি কবিতা লিখি ,সেই অর্থে আমি কবি। 

আগন্তুক : যে হাওয়াতে আছে ,যে সময়ে আছে ,যে মুহূর্তে আছে ,আসলে যে সাথে সাথে চলছে সেই তো চলন্তিকা ,চলন্তিকা প্রেমিকা  হতে পারে,মা হতে পারে ,হতে পারে সেই ধর্ষিত মেয়েটা কিংবা সেই মেয়েটা যে প্রতিবাদ মিছিলের একেবারে সামনে হাঁটে ,হতেই পারে সে সময়ের প্রেমিকা কিন্তু তুমি লুকিয়ে এই অন্ধকারে পার্কের বেঞ্চে বসে  কি করছো ?ভালোবাসা ,সে তো লুকিয়ে রাখার নয় ,সে তো অন্ধকার থেকে ফুটে বেড়োনে এক যন্ত্রনা ,সে তো সময়ের অধিকার। আর আপনি মশাই কবি ,কবিত্বের মানে কি সাদা পাতায় অজস্র স্পর্শহীন  আঁকিবুঁকি  ,যা শুধু টাইমপাস ,যা কোথাও কোনো দাগ রাখবে না। আমি তো জানি কবির কবিত্ব মানে সময়ের আগুন ,মানুষের চিৎকার ,দিন বদলের কতগুলো অভ্যাস। আর আপনি অন্ধকারে চলন্তিকাকে নিয়ে এইভাবে সময় কাটাচ্ছেন।আপনি যদি প্রেমিক হন তবে আলোতে আসুন কারণ প্রতিটা চলন্তিকার জন্ম আলোতে ,অন্ধকারে রাখলে আপনি আপনার ভালোবাসা হারিয়ে ফেলবেন। 

চলন্তিকা : কে আপনি ?এই ভাবে হাসছেন কেন ?

আগন্তুক : এখনো সময় আছে ,এখনো মুহূর্তরা জীবিত ,এখন সময় তোমার নিজেকে এই পৃথিবীতে পরিচিত করার ,যদি ভালোবাসো তো ভালোবাসাকে আলোতে নিয়ে আসার ,আর কবি মশাই আপনি লিখুন কবিতা আলোর ,চলন্তিকার কিন্তু অন্ধকারে না। 

প্রেমিক : এই যে শুনছেন আপনি কে ? আপনাকে বড়ো পরিচিত লাগছে ,প্লিজ যাবেন না ,বলে যাবেন কে আপনি ?

আগন্তুক :যারা বিশ্বাস করে আমি কেঊ ,একমাত্র তাদের জন্য  আমি আমিই    ,এটাই আমার পরিচয়। তবে আমার পরিচয় জানতে হলে তোমাকে নিজেকে জানতে হবে আগে। 

চলন্তিকা : এই তো ছিল ,কোথায় গেলো লোকটা ,কোথায় ? আমার ভয় করছে গো চলো উঠি এখান থেকে ,ওই ল্যাম্পোস্টের আলোর নিচে সিটটাতে বসি গিয়ে চলো। 

প্রেমিক : কুছ পরোয়া নেহি ,হ্যাম তো হ্যা না ,কিন্তু চলন্তিকা তুমি বলছিলে না অনেক কবিতা হলো এবার একটু একটু করে এবার একটা উপন্যাস কিংবা  নাটক লেখো,পেয়ে গেছি ,পেয়ে গেছি প্লটটা। 


 

চরিত্রহীন

 


চরিত্রহীন 

... ঋষি 

..

চরিত্র কথন 

পুরুষ ,নারী অবশেষে এক অন্ধকার অংশ ,

তুমি বলতেই পারো 

সময়ের বাইরে পা রাখা মানুষগুলোর  চরিত্র ভালো না 

তুমি ভাবতেই পারো 

বোধহয় সংবিধানের বাইরে সম্পর্কে  সবাই চরিত্রহীন। 

.

আমি অংশ খুঁজছি না 

বাতাসে উড়ছে আজকের বিশেষ খবর 

একজন মহিলা  জানলার বন্ধ পাল্লা  খুলে বাইরে সবুজ গাছটাকে দেখছে 

সে ভালোবাসে গাছটাকে ,

আমি নিচে দাঁড়িয়ে সেই মহিলাকে দেখছি ,আমার মতো অনেকে দেখছে 

আমি ভাবছি মহিলার ভাবনা আর অন্যরা বলছে আলো খুঁজছে মহিলা 

নিশ্চয় চরিত্রহীন। 

.

শুনতে পাই মহিলার স্বামী নাকি দারুন চাকরি করেন 

তিনি নাকি এই সময়ে সেখানে কোনো অফিসের  মিটিং এ আছেন

তার সঙ্গে আছেন তার সিক্রিয়েটারি ,অবশ্যই মেয়ে। 

আমি দেখছি মহিলাটি  জানলার বন্ধ পাল্লা খুলে বাইরে সবুজ গাছটাকে দেখছে 

দেখছে গাছের পাতায় সবুজ নিশ্বাস আর আশ্রয়ের পাখিগুলোকে, 

আর সেই সময় বন্ধ কামরায় কামার্ত এক পুরুষ আঁচড়াচ্ছে এক নারীকে 

আমি চিনতে পারছি মহিলার স্বামীকে। 

.

দৃশ্যায়ন শেষে আমি স্তব্ধ 

কিন্তু আপনাদের মতো আরো অনেকে বলছেন মহিলাটি চরিত্রহীন

আমি চিৎকার শুনতে পাচ্ছি সময়ের 

সময়  বলছে সমাজ - পুরুষতান্ত্রিক 

সময়  বলছে মানুষ - সাংবিধানিক 

সময়  বলছে নিয়ম - পৌরুষের 

আমি কান্না শুনতে পাচ্ছি সেই মহিলার 

সে বলছে - আলো খুঁজছি 

সে ভাবছে - বাঁচতে চাই 

সে করছে - অপেক্ষা 

 আর আপনাদের মতো আরো অনেকে যারা বলছে  শুনছি

মহিলাটি চরিত্রহীন কারণ সে বাঁচতে চায়।  




  


Saturday, September 10, 2022

শেষ অবধি তবে ভাঙলো

 


শেষ অবধি  তবে ভাঙলো 

... ঋষি 


একটা নড়বড়ে মন্দির  


মন্দিরের দেওয়ালের গায়ে প্রাচীন জন্ম ফাটল 


এক বিশাল অশ্বত্থ মাটি আগলে বসে আসে বহু বছর,


মন্দিরটা  ভাঙছে না কিছুতেই 


অথচ চিড় বাড়ছে দিনে দিনে 


অশ্বত্থ গাছটার শিকড় আর  মাটি আগলে মন্দিরটা  বাঁচছে। 


.


পথ চলতি মানুষ নিয়ম করে ভাবে 


এই বোধহয় ভেঙে যাবে আজ ,এই বোধহয় ভীষণ ঝড়জলে গুঁড়িয়ে যাবে 


কিন্তু অদ্ভুত জোড় এক ,অদ্ভুত প্রসবিত ভাবনা 


মন্দিরটা  ভাঙছে না 


শুধু একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে বোধহয় সময়ের ভারে


শুধু একটু একটু করেবোধহয় মন্দিরটার সয়ে যাচ্ছে বদলানোর যন্ত্রনা। 


.


আমি কপাল খুলে দেখছি 


অন্যের মতো ভাবছি আজ বোধহয় আজ মন্দিরটার শেষ দিন 


আজ বোধহয় ঠিক গুঁড়িয়ে যাবে 


কিন্তু সত্যি হচ্ছে না সেটা ,


আমার দুঃখ হচ্ছে বটে 


এমন থাকার থেকে না থাকার তফাৎ কি 


এমন কাউকে বিশ্বাস করে ,আগলে বাঁচার তফাৎ কি 


আজ না হয় কাল ,কাল না হয় পরশু 


ঠিক ভেঙে পড়বে মন্দিরটা 


পথচলতি লোকজন তখন হয়তো খানিকটা বিরক্ত হবে 


কিছুটা হলে রাস্তা আটকাবে সেদিন প্রাচীন মন্দিরের দেওয়ালের  ধ্বংসস্তূপ 


হয়তো কেউ কেউ বলবে শেষ অবধি তবে ভাঙলো। 

Monday, September 5, 2022

জনগণ

 জনগণ 

.. ঋষি 


গোলাপী মাংস থেকে এখনো টাটকা রক্ত 

আমি দর্শক,আমি শ্রোতা ,আমি জনগণ ,

দুনিয়ার পাপ মুছে গেলে 

                 সকলে আত্মত্যাগ চায় ,

কিন্তু যে সময়ের মানুষ কাঙাল এবং অসহায় 

তার আত্মত্যাগ ?

.

অবাক হবার কিছু নেই 

প্রতিদিনকার মতো বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতি 

তার সাথে তাল রেখে বাড়তে থাকা জনগণের আতংক ,

আবার একটা উৎসব ,কেনা কাটি ,লোকলজ্জা 

জানি ভয় করছে জনগণ 

উপায় যে জগন্নাথ। 


.

আমি গোত্রের কথা ভাবছি 

মানুষের গোত্রগুলো সব বোধহয় একই জায়গায় জড়ো হয়েছে 

বাধ্যবাধকতা ,

মানুষকে  নিয়ে ভলিবল খেলেছে সময় 

মানুষের মাথার ঘুলিতে গুঁজে দিচ্ছে প্রতিদিনকার জি এস টি 

আজ তো খাদ্যে ,বস্ত্রে ,বাসস্থানে শুধু 

কাল হয়তো তোমার প্রদিনকার বাঁচায় 

কিংবা নিঃশ্বাসে। 

আমি অবাক হচ্ছি না মোটেই 

ধীরে ধীরে ভারপ্রাপ্ত হচ্ছে আমার দায়িত্ব ,আমার কারাগার 

ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হচ্ছে জুতো ছিঁড়ে যাওয়ায় 

শধু দূরত্ব কমছে 

জনগণের  জীবনযাপন বোধহয় আগামীকাল জাদুঘরে থাকবে

আর সেই ক্ষুদার্থতার সাক্ষী হবে কোনো ফটোফ্রেম 

যা এই দুনিয়া শ্রেষ্ঠ ফটোগ্রাফি হবে।  


Friday, September 2, 2022

কবিতা ভৌমিক

 কবিতা ভৌমিক 

... ঋষি 


কবিতা ভৌমিককে আপনি চেনেন না বোধহয় 

বছর চল্লিশের একজন বিধবা মহিলা 

আপনি দেখেছেন বোধহয় ,

নন্দনের উল্টোদিকের গলিতে চায়ের দোকান 

চা ,ওমলেট ,ঘুগনি ,সিগারেট সবই পাবেন , খেয়েছেন বোধহয় 

কিন্তু তার কবিতাটা পড়েন নি। 

.

নাম ?: কবিতা ভৌমিক ( ভালোবেসে স্বামীর দেওয়া )

বয়স: আগেই বলেছি 

পেশা : চায়ের দোকান,সাত বছরের ছেলে নিয়ে চালান  

গ্রাম : ফরিদপুর অধুনা বাংলাদেশে 

স্বামী : বছর বারো আগে ছেড়ে চলে যায় 

স্বামীর দেশ : কলিকাতা 

স্বামীর পেশা : কবি 

হ্যা মশাই বিশ্বাস হচ্ছে না তো একবার জিজ্ঞাসা করবেন কবিতা ভৌমিককে 

শুনবেন তার স্বামীর ছেড়ে যাওয়ার কথা। 

.

এই শহরে এমন অনেক কবিতা আছে 

এই শহরে এমন অনেক না বলা শব্দ আছে 

এখন প্রশ্ন কেন খুঁজছি উত্তর ?

মশাই শেষ অবধি কবি ,

শুনেছি কবিরা আকাশের মতো হৃদয় নিয়ে জন্মায় 

শুনেছি কবিদের শরীরের রক্ত আগুনের মাঝে টগবগ করে ফোটে 

শুনেছি কবিদের প্রেম কল্পনায় নারী আর প্রকৃতি

শুনেছি কবিদের ঘৃণার কল্পনায় রাষ্ট্র আর সময় 

শুনেছি কবিরা বর্ণ চেবায় ,শব্দ দিয়ে পেট ভরায়

শুনেছি কবিরা কবিতায় ঘুমোয় ,কবিতায় বাঁচে  

শুনেছি কবিদের বেঁচে থাকা একটা বাউন্ডুলে জীবনা কবিতার খোঁজে  

তবে এ কেমন কবি ?

যে কবিতার খোঁজে অন্য কবিতাকে ছেড়ে যায় 

যে কবিতা লিখতে সময়কে পিঠ দেখায় 

যে কবিতা ভাবতে পালিয়ে বাঁচে ,

না হে মশাই লোকটা কবি হতে পারে না 

কবিরা যন্ত্রনা বইতে পারে 

কিন্তু কাউকে কষ্ট দিতে পারে না বোধহয়। 

.

আমি প্রশ্ন করেছিলাম কবিতা ভৌমিককে 

কেন আবার বিয়ে করলেন না ?

উনি বললেন,অপেক্ষা করছি ,পাগল মানুষ ঠিক ফিরে আসবে 

আমি বললাম যদি না ফেরে 

উনি বললেন ,কবি মানুষ ,কবিতা লিখছে বোধহয়  

লিখতে লিখতে এই কবিতাকে ভুলে গেছে ,

তার আর দোষ কি ?

দোষ আমার কবিকে নিয়ে  সংসারী করতে চেয়েছিলাম। 

আমি মোটেও অবাক হলাম না 

নারীরা বোধহয় এমনি হয় ,অপেক্ষা করে ফিরে আসার 

নারীরাই পারে এক মানুষে বাঁচতে 

সে যেমনি হোক। 

তবে মশাই আমি সেই কবিকে চিনি না 

তবে আমি খুশি কারণ আমার একটা কবিতা লেখা হলো 

লেখা হলো এই শহরের কবিতা ভৌমিককে। 

তোমার ভিতর



 তোমার ভিতর 

.. ঋষি 

.

তোমার ছবিটাতে  সব ঠিকই  আছে  

বুকের ম্যাপটাতে পরিমানমত  গ্রাম ,শহর ,নদী ,বসতি

না না সব ঠিক আছে ,

ঠিক আছে ভাবনার মতো একটা স্বপ্ন। 

আমি জুতো খুলে দাঁড়ালাম 

খুব সাবধানে তোমাকে কষ্ট না দিয়ে গিয়ে দাঁড়ালাম সীমান্তে। 

.

ঘুম পাচ্ছে জানো আমার 

অনেকদিন ঘুমোয় নি তোমার বুকে মাথা রেখে ,

প্রত্যন্ত গ্রামের ধারে একটা সবুজ মাঠ 

এক অত্যন্ত প্রকৃতি 

ভাবনার গভীরে শুয়ে থাকা নারী 

চলন্তিকা আমি চিরঘুমে যেতে চাই। 

.

দাঁড়িয়ে তো আছি 

একা  ফুটপাথ ,কালো পিচ দিয়ে বাঁধানো ঝাঁ চকচকে পথ

চৌরাস্তার সেই মুখ 

অপেক্ষারা যেখানে কথা বলে শান্তির ঘুমের, 

রাষ্ট্র যেখানে সাক্ষী থাকে তোমার সাথে কথোপকথনের। 

বিশ্বাস করো আমি আরো একলা হতে চাই 

তুমি থাকো কি না থাকো   

এই ভাবনাগুলো আস্তে আস্থে কংক্রিট স্থাপত্য 

আর সেই স্থাপত্য যখন কোনো ক্যানভাসে ফুটে ওঠে  ছবি 

ছবি  মনের ভিতর 

আমি একলা তোমার সাথে 

আমি চিরঘুমে যেতে চাই তোমার ভিতর। 

Thursday, September 1, 2022

শুধু তুমি ছাড়া



শুধু তুমি ছাড়া
.. ঋষি 

বুঝলেন প্রচুর পুরুষ দেখি চারপাশে ,কিন্তু প্রেমিক দেখি না,
                 পুরুষ মানে কি? 
              শুধুই বিপরীত লিঙ্গ নারীর 
আর প্রেমিক মানে কি শুধু যে ভালোবাসতে পারে
                        কিংবা জড়িয়ে বাঁচতে। 
আমার মনখারাপ করছে 
আমি আকাশ দেখছি তোমায় মনে পড়ছে, 
                 কে তুমি? 
শীত করছে বুকের কাছটা খালি 
আশ্রয় ?
বুঝলেন মশাই ভালোবাসার মানে আশ্রয়। 
.
আরে দাঁড়ান, দাঁড়ান, মেজাজ হারাচ্ছেন কেন 
                বলছি বলছি, শরীর তো? 
হ্যা জরুরী তো কিন্তু সবার আগে মানুষটা দরকার 
সেই মানুষটা যার হাত ধরে ছোট বাচ্চার মত ঘুরতে পারবো,হাসতে পারবো
যে বলবে শরীর খারাপ,আয় মাথায় হাত বুলিয়ে দি 
যে বৃষ্টিতে ভিজলে বকবে
যে সবসময় পাশে দাঁড়িয়ে বলবে আমি আছি 
সেই তো প্রেমিক, 
যে হাত ধরবে কিন্তু হাত ছাড়বে না। 
.
কিন্তু মশাই প্রেমিক হতে গেলে পুরুষ হতে হবে এমন কথা কি আছে,
                   শুধুমাত্র আশ্র‍য়টা দরকার 
সে ঝগড়া হোক, মন কষাকষি হোক 
                  সেই মানুষটাকে পাশে দরকার, 
আর দরকার একটা মনখারাপ 
                    তার থেকে দূরে থাকার জন্য। 
প্রতিটি পুরুষ প্রেমিক হতে পারে না যেমন 
প্রতিটা প্রেমিক যে পুরুষ হবে এমন তো কথা নেই ,
দিন বদলেছে 
      এখন সমকামী, সমলিঙ্গ, আরও কত কিছু
কিন্তু বিশ্বাস করুন প্রেমিক হতে গেলে যন্ত্রনাটা দরকার। 
.
আমি চলন্তিকার গাল টিপে বললাম তুই এত জানিস
চলন্তিকা আমাকে জড়িয়ে ধরলো
শুধু বললো  আমি কিছু জানি না 
কিছু জানতে চাই না শুধু তুমি ছাড়া।



অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...