Tuesday, June 30, 2020

এমন করে ছিঁড়িস না



এমন করে ছিঁড়িস না
... ঋষি 
বাবু গো মোদের গতর বিছাই খেতি হয়
বাবু গো মোদের গতর হলো মোদের পরাণ, 
যতদিন বাবু গতর আছে 
ততদিন পেটের খিদে মিটবে  
ততদিন ঘরে পোলা পাইনের ভাত মিলবে গো। 
এ দুনিয়ায় আমাগো দাম শুধু গতরে
তুই জিজ্ঞাস করিস  কেমন আছি আমি। 
.
কি যে বলিস আমাগো আবার নাম 
কি যায় আসে আমাগো নামে,
তুই বড় ভালো মানুষ বাবু, অন্যেরা এমনটা না
খদ্দের আসে, এসেই হামলে পড়ে এই শরীলটার উপর 
শেয়ালের মতো ছিঁড়ে, খুঁড়ে দিয়ে যায়, 
তুই বলিস নাম 
শরীলের আবার নাম হয় নাকি বাবু। 
কি যে বলিস আমাগো আবার কষ্ট 
মাইয়া মানষের জীবন সে তো এমনি,
বাপটা মাতাল ছেল, বিয়া দিলো আরেক মাতালের সাথে।
সেই বছর যখন তুমুল জলে গাঁটা  ডুইবা  গেল নদীতে
মরদটাও গেলো 
লাশটা পাওয়া গেছিল ভরা গাঙে, 
সত্যি বলছি বাবু তখনও আমি ডরাই নি দুটো ছানা বুকে করে। 
.
খিদে বাবু, খিদে
ডরাইছি সেদিন,যেদিন ফাস  আমি এ লাইনে নামি
যেদিন আমাগো গাঁয়ের শেতলা তলার হাবুল মিস্ত্রী আমাকে শহর দেখাল ,  
হাবুল বলেছিল কাঁনদিস ক্যান সোয়ামী খাগী  
গতর আছে 
শহর চ গতর বেচে খাবি খন। 
সত্যি বলি বাবু সেদিন আমি  পোথম ডরাইছি 
এ তো পাপ
কিন্তু প্যাটের জ্বালা। 
যেদিন পোথম এক ঢ্যামনা খদ্দের আমার শরীলে চড়ে সুখ নিচ্ছিল 
আমার পরাণটা জইলছেল সেদিন 
সেদিন ভেইবেছিলাম এই জান আর রাখুম না,
কিন্তু ছানাগুলার মুখের পানে চেয়ে আজও আছি। 
.
কিন্তু একটা জিজ্ঞাস আছে বাবু 
আচ্ছা এই যে এত্তোবড় শহর, এই এত্তো মানুষ এখানে 
সেখানে কি আমাগো মতো মাইয়ামানষের, মানষের মতো বাঁচার জায়গা নাই?
এই যে শুনি দুগগিপ্রতিমার শরীলে আমাগো মাটি থাকে 
সে কি সত্যি ? 
তাই মনে হয় মাঝেমদ্দি এক একটা খদ্দিরকে আমার অসুর লাগে
ইচ্ছে করে বাসুলি দিয়ে কোঁপ মারি গলায় 
তারপর রক্ত মেখে ন্যাংটা হয়ে দাঁড়ায়, 
আর এই যে এইখানে,এই যে এইখানে  ঢুকিয়ে নি এই ঢ্যামনা মরদগুলোকে, 
তারপর চেঁচিয়ে বলি
ওরে এইটা রক্তমাংসের মানষের শরীল রে.. এমন করে ছিঁড়িস না আমায়।

Monday, June 29, 2020

পরজন্মে রাধা


পরজন্মে রাধা 
.... ঋষি
মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ
এই মৃত্যু আমার খনিজ আত্মার গভীরে শুয়ে থাকা নারী স্পর্ধার। 
জানি আমার জমানো পুরুষ  সারফেসে শুয়ে থাকা নারী হৃদয় ঘুমন্ত
ঘুমন্ত এই শরীরে পুরূষ হয়েও  নারী স্পর্শের সাধ।
জানি আমার মতো  এক শরীরে পুরুষ ও নারী, যুগেযুগে পাপ
পাপ আমার পুরুষ স্তনেতে খুঁজতে থাকা নারীর মতো পিরামিড 
পাপ আমার পুরুষের কাছে চাওয়া নারীর মতো আদর
পাপ আমার পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী ভাবা।  
.
আমি জানি পুরুষ তুমি কখনোই আমাকে ভালোবাসি নি
আমি জানি তুমি কখনোই আমাকে তোমার প্রিয় নারী শরীরের মতো আমায় জড়িয়ে ধরো নি, 
তবুও আমি সেজেছি রোজ তোমার কথা ভেবে
তবুও আমি নিয়ম করে শাড়ি, সায়া, ব্লাউজ পরেছি ছোটবেলা থেকে 
ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়েছি, হাতে চুড়ি পড়েছি, কপালে টিপ
চুল বাড়িয়েছি ঠিক নারীর মতো করে। 
স্তন নেই তো কি বুকে  কাপড় গুজেছি 
কাপড় গুজেছি মুখে যখন তুমি পিশাচ হয়ে গুঁজে দিয়েছো পৌরুষ আমার আদরে, 
চোখে জল নিয়ে হেসেছি 
শুধু তোমাকে খুশি করবো বলে
আমি রোজ রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়েছি  সেজেগুজে নিয়ম করে
একদিন তোমায় পাবো বলে। 
.
আর তুমি 
প্রতিবারে আমাকে কোন হোটেলের বিছানায় কিংবা কোন রাস্তার ধারে
শুধু পিষেছো, 
তারপর ছুঁড়ে দিয়েছো কিছু বেচাকেনার  কাগজ কুত্তার মতো। 
আর আমি প্রতিদিন পাগলীর  ছুটে গেছি তোমার কাছে 
শুধু পুরুষ তোমায় পাবো বলে
একটু ভালোবাসা পাবো বলে,
প্রতিদিন ভেবেছি আজ নতুন সুর্যোদয়, আজ নিশ্চয় তুমি আসবে
তুমি আসোনি আজ অবধি 
আমি ফিরে এসেছি বারংবার কালসিটে শরীর নিয়ে। 
তুমি পুরুষ আমাকে ব্যাবহার করেছো শুধু নারী কল্পনায়
কিন্তু কেউ আমাকে সম্পুর্ন নারী ভাবো নি 
ভাবো নি আমিও ভালোবাসতে পারি নারীদের মতো। 
.
তুমি পুরুষ
তোমরা পুরুষ 
প্রতিদিন আমাকে মৃত্যু দিয়েছো  
প্রতিদিন আমার নারী আত্মার ধর্ষন করেছো নিজের প্রয়োজনে
তবুও আমি অপেক্ষা করেছি। 
তবুও আমার অপেক্ষা তোমাদের দেওয়া মৃত্যু দিনের
তবুও আমার অপেক্ষা তোমাদের দেওয়া যন্ত্রনার 
তবুই আমার অপেক্ষা পুরুষ তোমার ভালোবাসার 
এই জন্মে আমি কৃষ্ণ ও রাধা 
তবুও আমার অপেক্ষা পরজন্মের 
যখন আমি শুধুই রাধা, শুধুই একজন নারী । 
.
“But you can only lie about who you are for so long without going crazy.”
...
..........ঋষি


 
 


  

গ্যালিলিও

গ্যালিলিও
... ঋষি 
গোল বাটিতে পৃথিবী ঘুমিয়ে
সীমান্তে বাড়তে থাকা সংলাপ মাঝে মাঝে হিস মাষ্টার ভয়েস।
বণ্যতা খুলছে 
কালো প্লাস্টিকে মোড়া ডেডবডিগুলো
প্রাদেশিক ভারতবর্ষে গর্জে ওঠা গাজর, বীটের মতো স্বাধীনতা,
প্রাম্ভিক ইতিহাস লেখা হয়ে গেছে আমাদের প্রথম লকডাউনে। 
.
চিরসিন্ধুর ওপাড়ে
গ্যালিলিও ধর্মের কোট গায়ে দিয়ে মিথ্যে বলছে বাধ্য হয়েছেন, 
বাঁচতে তো সকলেই চায়। 
কে কার পিছনে ঘুরছে, কে কার চারপাশে 
সত্যি বদলায় নি কোনদিন 
অথচ সত্যিকে মুখবেঁধে গাধার পিঠে চড়িয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
উপেন্দ্রকিশোরের  গল্পের পাতা জুড়ে। 
.
গোল বাটিতে পৃথিবী ঘুমিয়ে
দুর থেকে দেখলে একবাটি মাংস,
নিরামিষ মানুষের সংগ্রামে নিহত ভারতবর্ষ
অথচ আমরা আমিষ খুঁজছি সারা পৃথিবী জুড়ে। 
ধর্মে পাপ ছিল না কোনদিন
পাপ ছিল মৃত মানুষগুলোর চুরি যাওয়া হৃদয়,টয়লেট আর হজমের থলিতে,
সত্যি বলতে কি, পাপ আছে এই সময়ের মানুষের কেঁচোর জীবনে
আর প্রতিদিনকার বাড়তে থাকা না বলা মৃত্যুর সংখ্যায়। 
আমাকে প্রশ্ন করো না চলন্তিকা এই সব রাষ্ট্র চুরি 
কিংবা ভারতবর্ষ নিয়ে
বলো না কবি তুমি কি কিছুই করতে পারো না ? 
আমি বলবো আমি চেষ্টা করতে পারি কলমের আগায় জাগরণ লিখতে
কিন্তু মিথ্যে ধর্ম লিখতে গিয়ে আমি গ্যালিলিও হতে পারবো না। 


 
 
 

মন কেমন

মন কেমন
.... ঋষি
পরিণত ইচ্ছের মতো জানলার কাঁচে লেগে থাকা বৃষ্টি
টাপুরটুপুর  
…..….........মন কেমনের  বেলা। 
.
মেঘ বলেছে গড়িয়ে নামা সন্ধ্যে
বুকের জানলায় দাঁড়ানো একলা মুখ যেন চুঁয়ে নামা  মনের কার্নিশ বেয়ে বৃষ্টি ফোঁটায় অভিমান, 
আমার শহরের রাস্তায় এক হাঁটু জল
একলা আকাশ, 
কাদা মাখামাখি মন 
তোমার হাতের আঙুলে আজও ধরা আমার জন্মের রেত। 
.
জীবন ঈশ্বরের নামে প্রহসনের দরজায় প্রশ্ন খোঁজে
খোঁজে চোখের আলোয় লেগে থাকা পবিত্র সুখ সময়ের মাটি ছুঁয়ে, 
সমস্র জীবনযাপন যখন একলা হয়ে যায়
ঠিক তখন বৃষ্টি পড়ে 
মাটির সোঁদা গন্ধে
...….................আর বৃষ্টি ফোঁটায় 
মন কেমন।    

  

Sunday, June 28, 2020

দেশলাই


দেশলাই
....ঋষি
আমার রাক্ষস জন্মের পর
কলকাতা হঠাৎ পুরনো ট্রাম লাইন ছেড়ে মেট্র হয়ে গেল,
রেডিওর গোলাম আলি খাঁ গজল ছেড়ে সনম রে গাইতে শিখে গেলেন
পুরনো হারমোনিয়াম বদলে কখন ইউটিউব হয়ে গেল,
আমি কখন যেন হাফপ্যান্ট ছেড়ে ভারতবর্ষ বলে রাষ্ট্রের জনগণ
খুব সাধারণ নাগরিক হয়ে গেলাম।
.
বাড়ন্ত সময়ে হাঁড়ির টান
আমার জন্য বাবা,মা বন্ধু হয়েছিলেন, হয়েছিলেন সমাজ।
আজ অন্ধকারে টর্চ হাতে দেখি
বাবার পুরনো বইয়ের আলমারিতে আরশোলার বাস,
আর আমার ভিতর সমাজ
শুধু ঘুনপোকায় কাটা পুরনো রংচটা পারিবারিক ছবি। 
.
সমাজ খুঁজছি
খুঁজছি ভারতবর্ষ নামক মানচিত্রের সংবিধানে পরিবারের মানে, 
দেখছি আমার ছেলের আঁকার খাতায় রাষ্ট্রের পতাকার অগোছালো রং
আর সময় লিখছে সমাজ ছোট ছোট দেশলাইয়ের কৌটোতে জমানো বারুদে। 
ভেজা আগুন 
আমার রাক্ষস জন্মের নিয়ন্ত্রণের অভ্যেস,
অভ্যেস সাজানো শহরের মুখবন্ধ অভিধানে শান্তি শব্দে বাঁচবার।
অভ্যেস বদলায়
সময় পুরনো হয়ে যায় নতুন সময়ের  লালিপপ মুখে,
শহরের বারান্দায় আকাশটা ইদানীং ছোট মনে হয়। 
মনে হয় চিৎকার করে বলি 
পরিবার মানে সীমান্তে চলতে থাকা গুলির শব্দ নয়
আর সমাজ মানে নয় দেশলাইয়ের কারখানা।  
  
 

Friday, June 26, 2020

যন্ত্রণার পেরেক




যন্ত্রণার পেরেক 
.... ঋষি 

মৃত নারীর অভিশাপ বুকে নিয়ে 
অবিরত জমে থাকা রক্তক্ষরণ  ভারতবর্ষের খাদ্য কেলেঙ্কারি। 
ইতিহাস সাক্ষী 
খিদের পৃথিবীতে পোড়া রুটি আকাশের চাঁদ ,
সেখানে তোমার খিদে ....নারী 
তোমার নখের সীমানায় আমার বুকের রক্তবিন্দু। 
.
হাজারো হাতের  ছাপ তোমার বুকের তাজমহলে জমতে থাকা পলিউশন 
আমি নিতান্ত যমুনানদী , দেখা করবো তোমার সাথে,
মৃত মানুষের ভূগোলে সেদিন আকাশের চাঁদে অন্ধকার আকাশ।  
তুমি তো জানো নারী 
শুধু ক্ষত থেকে যায়  অন্ধকার থেকে  উঠে আসা পুরুষের থাবায়। 
.
যন্ত্রনা 
একশো আটবার তোমাকে স্পর্শ করার পর হয়তো ঈশ্বর জন্ম হবে 
আগামীতে হয়তো কোনো আকাশের চাঁদ তোমার হাতের মুঠোয় 
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থেকে প্রশ্ন করবে 
আচ্ছা ভালোবাসা কি অন্ধকার ?
জানি সেদিন তুমি হাসবে মিটিমিটি ,
আমার প্রিয় নারী 
সেদিন তুমি তাকিয়ে থাকবে যিশুখ্রিস্টের  যন্ত্রণার লোহার পেরেকের দিকে 
তাকিয়ে দেখবে তোমার হাতে আমার রক্ত। 
আমি অবাক হবো না মোটেই 
শুধু সেদিন তোমার কপাল থেকে মুছে দেব মধ্যবিত্ত শোক,
হাজারো বছরের পরে ভারতবর্ষের কোন অজ্ঞাত শহরে  
একটা ছোট্ট ভাবনা আবারো দৌড়োবে 
চিৎকার করবে তোমার নাম নিয়ে 
সেদিন জানি আকাশের চাঁদে আর কোন দাগ থাকবে না। 

 

বয়ঃসন্ধি



বয়ঃসন্ধি
...... ঋষি 
.
সমস্যা তো আছে 
সদ্য ফুটে ওঠা কোকিলের ডিম্ আর মুঠোফোনের পর্দা ,
নিমেষে মিশে যাওয়া সময়ের স্তরে 
যৌবন ব্যাকুল। 
যতো দূর চক্ষুলজ্জার দেয়াল
 ততোই স্বচ্ছ ফুটে ওঠা অবয়ব তোমার ক্লাসে এসে 
ভয় করে 
তাই শেষ বেঞ্চে বসে। 
.
ম্যাডাম তুমি ভূগোল পড়াও  বিঠোফেনকে ঠোঁটে নিয়ে
আর আমার নিউরন বয়সের পার্লামেন্টে ভূগোলকে রসায়ন পড়ায়।
অনন্ত শব্দে উঠবোস 
অন্তঃবিক্রিয়া খাতার কোনায় চড়াই-উৎড়াই আঁকে। 
জ্যান্ত সভ্যতার নেশার চোখে চামড়ার ভাঁজ 
ক্রমশ  চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়া গুঁড়ো  দুধের বিজ্ঞাপন ঝর্ণার মতো 
তোমার স্তনেতে ম্যাডাম ভারতবর্ষের ম্যাপ। 
.
এইভাবে প্রতিদিন সমস্যা বাড়ে 
এভাবেই প্রতিদিন বয়ঃসন্ধির ঘন্টা বাজার আগেই ক্লাশ শেষ হয়ে ,
অংকের খাতায় হিসেবে মতো ২৪-৩৬-২৪
তারপর মাপগুলো আরো স্বপ্নিল।   
সন্ধ্যাবেলা প্রতিটা অংকে জিরো ফিগার
ইতিহাসে উঠে আসে ক্লিওপেট্রা নির্মম হত্যায় 
বাংলায় লেখা বনলতা তুমি নদীর মতো 
তারপর  
মাঝরাতে
তার পর ভূগোল ম্যাডাম 
ঘুম ভেঙে যায় 
তুমি যেন অপ্সরা 
আর আমার ক্যালকুলেশন বলে  
কাঁপনের সাথে তাপমাত্রার সম্পর্কটা আসলেই সমানুপাতিক।

আরো গভীরে যাও


আরো গভীরে যাও 
.... ঋষি 

যতটা পারি লিখে রাখি 
সময় ফুরোলে স্লেটের চকে সহজপাঠ বড় দরকারি যন্ত্রনায় 
আমরা আসলে একলা গ্রহতেই থাকি। 
জানো  কবি 
আমাদের মতো আরো ,আরো অনেকে যারা তোমার স্পর্শে বাঁচে 
তাদের জন্য চিরকালীন একদা দাগ থেকে যায় 
কিছু দাগ মেটে না কখনো। 
.
আরো আলো আরো আলো। এই      নয়নে, প্রভু, ঢালো।
সুরে সুরে বাঁশি পুরে। তুমি    আরো আরো আরো দাও তান ॥ 
অদ্ভুত বিরহ ,অদ্ভুত প্রেম ,অদ্ভুত সৃষ্টি 
ঈশ্বরের অনুভূতিতে তুমি ,তোমার স্পর্ধা 
আমাদের প্রেমিক করে যায় 
আর সেই ছোট্ট  মেয়েটা তোমার কলমে হয়ে ওঠে কাবুলিওয়ালার মিনি । 
.
আসলে আদৌ কিছু শেষ হয় না কখনো 
আসলে আদৌ কিছু নিজের হয় না কখনো 
তোমার প্রতিটা যন্ত্রনা ,তোমার প্রতিটা রক্তক্ষরণে  তুমি ঈশ্বরের মতো 
সৃষ্টি করো পৃথিবী ,
তোমার সৃষ্টি অমল নামক ছেলেটা জ্বরের মধ্যে প্রলাপ বকে 
তোমার স্পর্শে শহরের পোস্টমাস্টার রতনের কাছে ছোট হয়ে যায়। 
তোমার নিভৃত ধ্যান 
তোমার সৃষ্টি শান্তিনিকেতন 
চেতনার বাস তোমার গভীরে ,
সত্যি কি কোনো একটা দিনে তুমি  আমাকে ছেড়ে যেতে পারো 
সত্যি কি কোনো  একটা দিনে তুমি আমাদের ছেড়ে যেতে পারো 
যেখানে আমাদের একই গ্রহে বাস 
সেখানে ২২ শে শ্রাবন কখনোই থাকতে পারে না। 

Thursday, June 25, 2020

তাজমহল

তাজমহল 
... ঋষি 

তাজমহল খুঁজছে কাব্য 
আমার বুকে শাজাহানের সুখ ছুঁয়ে আছে প্রেমিকা।
যমুনার পারে হঠাৎ দেখা  সেই মুখটা 
দিল্লির লালকেল্লায় হঠাৎ হারিয়ে ফেলা তোমার মুখটা 
আর দেশলাইয়ের আগুন বুকে 
জ্বলতে থাকা প্রতীক্ষা 
প্রতিটা জন্মের পরে তুমি ফিরে এসো তাজমহল বুকে। 
.
আমার বুকে বারুদের গন্ধ 
আমার রুক্ষ সিগারেট ঠোঁটে ঘষে যাওয়া তোমার গোলাপি অস্থিরতা ,
তুমি জানো আমি লিখতে পারি ভারতবর্ষ 
তুমি জানো তো আমার প্রতিটা কবিতায় মুখ বুজে কাঁদে আমার সময় 
আমার রাষ্ট্র চিরকাল বড় অসহায় 
অসহায় প্রতিটা নাগরিক জীবন আমার শহরে নিজের উপাখ্যানে 
সকলেই কম বেশি শাজাহান এই  শহরে ,এই রাষ্ট্রে 
সকলেই গৃহবন্দী একলা ইতিহাসে । 
.
তাজমহল খুঁজছে কাব্য 
চলন্তিকা তোমার শহর আগ্রার দূরত্ব যতটা 
ঠিক ততটাই আমার বুকে শুয়ে থাকা মুহূর্তরা তোমার নরম শরীরে।
দাগ টানা সীমান্তে 
আজও বড়ো অস্থির এই সময় যেন বৃদ্ধ শাজাহান 
 মমতাজ একলা শুয়ে পরম নিদ্রায় মৃত্যুর কল্পনা বুকে সাধারণ নাগরিক।
আমরা তো সেই মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস 
আমি যাকে ভাবছি সে যন্ত্রনা 
তুমি যাকে ভাবছো  সে প্রেম 
কিন্তু একবার ভেবেছো কি শাজাহানের প্রতিদিনকার মৃত্যু 
আর জন্ম তোমার হাসি ছুঁয়ে চকোলেট শহর 
কিন্তু আমার এই কাব্য একটুকরো মুঘল সাম্রাজ্যের দলিল। 

অদম্য সৃষ্টি


অদম্য সৃষ্টি 
... ঋষি 

শতসহস্র শোক যখন তোমাকে ছুঁয়ে নামে
তখন ক্লান্ত মানুষ এই শহরে মাটি মেখে ঘুমিয়ে পরে ,
না হে কবি 
এই সভ্যতায় মানুষের কোলাহল শুধু জেগে থাকে না 
ঘুমের মধ্যে ফিরে আসে 
আলোর খোঁজে,মুক্তির খোঁজে । 
.
কবি এই সভ্যতায় সমাপ্তি বলে কিছু হয় না 
এই সভ্যতা ধ্বংস শব্দটা শুধু সাময়িক এবং নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক ,
একটা অংকুরিত গাছ যখন ধীরে ধীরে ছেয়ে ফেলে অদম্য আকাশ 
একটা জীবন যখন সমস্ত আদিমতা ছুঁয়ে মিশে যেতে চায় মাটিতে 
তখন 
তফাৎ কোথায় ? 
কোথায় তফাৎ বেঁচে থাকা আর প্রেমের। 
.
শত সহস্র শোক কোন এক কালবেলায় মিশে গেছিল মাটিতে 
অথচ তোমার সৃষ্টি 
আকাশের বুকে নক্ষত্রের মতো উপস্থিত প্রতিদিন ,
সত্যি কি এমন কোন দিন থাকে 
যেদিন তুমি থাকো না। 
সীমান্তে কাঁটা তার দিয়ে ছিঁড়ে ফেলা সময়ের মাটি ,মানুষের হৃদয় 
গঙ্গা কিংবা পদ্মা 
সবটাই শুধু সময়ের মানুষের বিকৃত একটা প্রচেষ্টা 
অথচ কাঁটা তারে তোমাকে বাঁধতে পারে নি 
সময় তোমায় মারতে পারে নি  
অদম্য সৃষ্টি মাথা চারা দিয়ে তোমাকে জন্ম দেয় বারংবার। 
তবে আজ ২২ সে শ্রাবন 
না অন্য দিন। ...... তফাৎ কি  ?

.

সম্পর্ক

সম্পর্ক 
.... ঋষি 

একবার ভেবেছিস কখনো 
সমুদ্রের গভীরে লুকোনো শব্দরা চিরকাল গম্ভীর কেন ?
আমার আস্পর্ধাকে সময় চঞ্চলতা বলে 
আমি জীবনের পাতায় পাতায় মৃত্যু  লিখি রোজ প্রতি রাতে ,
পাথরের অভিমান 
সে কি ধ্বংসস্তূপে সাজানো অবিরত ক্ষত। 
.
চলন্তিকা হাজারো সভ্যতার ভিড়ে 
আজকাল মানুষের চাওয়া পাওয়াগুলো বড়ো বেশি আমি কেন্দ্রিক ,
সকলে সমুদ্র  দেখে
বোঝে না সমুদ্রের গভীরে আকুল আস্ফালন। 
শান্তিতে বেঁচে থাকা আসলে সময়ের সমুদ্রে গড়িয়ে আসা জল 
পায়ের কাছে। 
.
চলন্তিকা একবার ভেবেছিস কখনো 
তোর চলে যাওয়া ,তোর ফিরে আসা ,তোর গভীরে বাসা 
এই সমস্ত সমর্থনে 
চিরকাল জীবন যেন সামুদ্রিক চঞ্চলতা। 
কত সহজে তুই বলে  দিতে পারিস সমুদ্র নিষ্ঠুর 
কত সহজে  তুই বলতে পারিস সমুদ্র স্বার্থপর 
অথচ একবার কখনো ভাবিস নি 
সমুদ্র কত একা 
সমুদ্র কত দরিদ্র 
সমুদ্র কত গভীর।   
.
তুই সর্বদা সমুদ্রের দিকে চেয়ে বলেছিস গভীরে যাও ,আরো গভীরে 
আর আমি অভিমানে কখনো বলি নি 
সমুদ্র আর পাথরের সম্পর্ক। 

আলোকের এই ঝর্ণাধারায়

 
আলোকের এই ঝর্ণাধারায়
... ঋষি 

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা বেজে ১০ মিনিট,
কবি চলে গেলেন অমৃতলোকে। 
জানি, সত্যি বলে এই পৃথিবীতে কিছু হয় না 
জানি ,মিথ্যে বলে এই পৃথিবীতে কিছু হয় না 
যা হয় তা হলো 
" জীবিত ও  মৃত "।
.
আমার এই কবিতার দরজা খুলে সময় এসে পড়ুক 
ছোট মেয়েটার অপেক্ষা সময়ের  পরে দাঁড়িয়ে সবুজ শান্তিনিকেতন 
সাজানো ফটোফ্রেমে গলায় জুঁই ফুলের মালা পড়া দাঁড়ি ওয়ালা ভদ্রলোক 
চিনতে পারছো কি ?
আমি বলি কবি " তুমি রবে নীরবে,হৃদয়ে মম " 
আমি বলি কবি " দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার ,গানের ওপারে "।
কিংবা আমি বলি আধুনিক কবিতায়  
 "গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা "।
.
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা বেজে ১০ মিনিট,
কবি চলে গেলেন অমৃতলোকে। 
বুকের পাঁজর খুলে ভেঙে পড়া এক শতাব্দী শোক 
বুকের দরজা খুলে এসে পড়া অবিরত তুমি রবিঠাকুর। 
তোমার কোনো জন্ম থাকতে পারে না 
তোমার কোনো মৃত্যু থাকতে পারে  না,
শুধু তোমার সৃষ্টি
শুধু তোমার আনন্দ 
শুধু তোমার আলো 
সেই আলোতে মানুষের ব্যাকুলতা 
আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও ॥ 
আজ ২২ সে শ্রাবন 
স্বাগত তোমাকে তোমার সৃষ্টির ঝর্ণায় । 

Wednesday, June 24, 2020

মানুষ কনডোম



মানুষ কনডোম 
.... ঋষি 

এখন তো বিজ্ঞাপন মেপে সভ্যতা তৈরী হয় 
তৈরী হয় নারীর বুকবন্ধনী নিত্যনতুন স্টাইলে ,
আসলে এখন ইংরেজি করে বাংলা লিখলে মানুষ পড়তে পারে 
কিন্তু খাঁটি বাংলা কেউ বোঝে না। 
দিন বদলেছে 
এখন গরুর খাঁটি দুধ মানুষের হজম যোগ্য নয়। 
.
আমরা মশাই এখন বেশ শান্তিতে আছি 
এই কথা বলেছিল আমাকে ভারতবর্ষের পাঁচতারা হোটেলের মানুষগুলো ,
আমি ঘাবড়াই নি মোটেই, 
শুধু ভেবেছি শান্তি শব্দটা  আমার রাষ্ট্রে কেন 
সারা পৃথিবীতে দুষ্প্রাপ্য ,
আর মানুষ তো সেখানে খুব ছোট একটা শব্দ 
যার ঈশ্বর বোধে সর্বদা মৃত্যু লেখা থাকে। 
.
জানি আমার  এই হাজারো কবিতা একদিন অস্পৃশ্য পৃথিবীর বাতাসে 
দুর্গন্ধ ছড়াবে ,
রাষ্ট্র হয়তো আগুনে পুড়িয়ে দেবে মৃত কবির কাব্য। 
কিন্তু আমার কবিতা মাঝরাতে যন্ত্রণার ধ্বংসের  ছাই  থেকে উঠে দাঁড়িয়ে 
আপনাদের বলবে 
নষ্ট সভ্যতার আঙ্গিকে মানুষ এখন পৃথিবীর অন্যতম নিকৃষ্ট জীব
প্লিজ মুখ লুকোবেন না  । 
হয়তো জনতার আদালতে দাঁড়িয়ে সেদিন কোন ধর্ষিত চিৎকার করবে 
হুজুর এইভাবে ছুঁয়ে দেওয়াটা অপরাধ 
সে প্রধানমন্ত্রী হলেও অপরাধ ,সে ঈশ্বর হলেও অপরাধ 
আর আমি মোটেও নষ্ট মেয়ে নই। 
হয়তো সেদিন মাঝরাতে কোন যুবতীর যোনি ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে দলাপাকানো মাংসপিন্ড 
সে ভালোবাসার দিকে চেয়ে চিৎকার করবে 
আমি তো ভালোবেসেছি ,কিন্তু তুমি প্রেমিক শুধু ছুঁয়েছো 
যার ফল আজ এই নষ্ট সন্তান। 
আর তখনি টিভিতে বিজ্ঞাপনে  কোন সস্তার বেশ্যা বলবে 
মানুষ কনডম ,আপনার সৃষ্টি নিরোধক। 

ক্রিটিকাল সার্ভে



ক্রিটিকাল সার্ভে 
... ঋষি 
.

নতুন করে যদি প্রেমে পড়িস  ,
উহু কোনো দুঃখটুখ না ,সোজা পা ধরে ছুঁড়ে ফেলো দেব রেলিঙের বাইরে ,
আমি শান্তি কামনা কিংবা শোভাযাত্রায় বিশ্বাসী নই মোটেও। 
যেমন ছোটবেলায় বড়োদের বড়ো হবার কারণে 
ভেঙে যায় প্রিয় পুতুলের হাত 
কিংবা ঘরের এক কোন পরে থাকে ছেঁড়া আঁকার খাতা
ঠিক তেমন । 
.
আজ জানি পুরো ব্যাপারটা একটা মেগা সিরিয়াল 
ভালোবাসা একটা  কই মাছের জান ,
বারংবার ফিরে এসে প্রমান দেয় তার মৃত্যু নেই। 
এই যে  সাত  মিনিট সাতান্ন সেকেন্ড ধরে আমি তোর কানের দুল ঘাটলাম 
তার আসল মন্ত্রটা হলো 
আমি কি বেঁচে আছি তোর কাছে। 
.
এখন এই সব মৃত্যু নিয়ে নো ক্রিটিকাল সার্ভে 
ক্রিকেট খেলবো ,
প্রতিটা বাউন্ডারির পর বল কুড়িয়ে কবিতায় লিখবো ছক্কা। 
চিৎকার করবো বাথরুমের কমোডের ফ্ল্যাশের মতো 
কেউ বুঝবে 
চিতায় কেমন পট পট ফাটতে থাকে সময়
তুই ঠিক বুঝে যাবি তখন। 
.
হাসি পাচ্ছে 
তুই আসবি তখন দেখিস 
আমাকে প্রশ্ন করবি এতটা হৃদয় পোড়ালি কি করে ?
আমি তখন পুরনো কবিতা  ছেড়ে 
নতুন ফরম্যাটে লিখবো  
নতুন করে যদি প্রেমে পড়িস  ,
উহু কোনো দুঃখটুখ না ,পুরো গলা টিপে মেরে ফেলবো 
তুই ভাববি 
হলো কি আজ , পুরো বাচ্চা একটা,পুরো পাগল। 

আটতালি


আটতালি 
... ঋষি 
.
১)  তুমি 
.
 সমুদ্র বুকে স্তম্ভিত কিছু স্তব্ধতা 
বেড়িয়ে এলে দরজা খুলে নীল আকাশের পাখি 
আমি অপেক্ষায় ,
যেমন থাকি রোজ 
আজও আছি। 
.
২)নীল শাড়ি কিংবা আকাশি সালোয়ার 
.
আকাশ ছুঁতে ইচ্ছে করে 
ইন তমান্নামে কুছ উমিদ তুঝে ছুঁকে মুঝে  ছুঁ যাতি হ্যা ,
ইন হাওয়ামে তেরি ইয়াদে মুঝে তরপাতি হ্যা। 
.
তুমি হেঁটে আসছো আমার দিকে 
শুধু নীরব পৃথিবীতে একমাত্র 
আর তুমি 
.
৩)সব সত্যি ,সব মিথ্যা 
.
ডুবে যাচ্ছি কেন 
হঠাৎ তোমার শরীরের পারফিউম  ক্রমশ আরো গভীরে 
ঠোঁট ছুঁয়ে সোজা বুলেট 
ঢিচক্যাও। ......
সব যদি সত্যি হয়ে যেতো। 
.
৪)সিধি সি বাত 
.
কে তুমি প্রিয়ে 
আমি কোথায় ? এক সমুদ্র মেঘের উপরে দিয়ে ভাসছি 
ভাসছি 
তারপর দুম পটাশ 
জাদা তুমমে সামা জানা হানিকারক হ্যা 
but দিল তো বাচ্চা হ্যা জি। 
.
৫)পুরোনো এক্সের জন্য 
.
এতটা তুমি ,এতটা তুমি 
বাকি সব মিথ্যে ছিল ,এই জন্মে শুধু তুমি আমার ,
পুরোনো সিনেমামহল থেকে জনতা দিচ্ছে হাততালি 
আহারে  ......
আহারে মাই ফুট 
আমি তো থেমে থাকি নি। 
.
৬) প্রথম তুমি 
.
প্রতিবারে প্রথম তুমি 
তারপর বিপ ,তারপর বিপ ,,,তারপর শরীর এসে যায় ,
কিসের দোষ বলুন তো 
ভালোবেসে শাড়ি খোলা যায় না প্রেমিকার 
তবে বুকে হাত দিলে ,নিজেরও বুক কাঁপে ,
অভিশাপে 
না পাপে। 
.
৭) আশিকি 
.
আজ আড়ি কাল ভাব 
কোলবালিশ জড়ালেই ফুটে ওঠে অনবরত তুমি ,
আর চোখ বন্ধ করলে 
কমব্যক্ত ইশ্ক হঠাৎ তুমি হয়ে যায় 
সংজ্ঞায় বিভ্রম 
সব  তো নতুন এখনো। 
.
৮) বেঁচে থাকা অল আউট 
.
সমুদ্র বুকে স্তব্ধতা ,তুমি তাকালে নাকি ,
রাস্তার লাইটপোস্টের নিচে সিগারেটে পোড়াচ্ছে অবুঝ সময়। 
তুমি পেরিয়ে চলে গেলে  অপেক্ষা 
অথচ আমার  আগামীর দিনগুলোও এমনি দাঁড়িয়ে তোমার দরজায়।  
হাততালি সময় ,হাততালি  তোমরা 
বদলে 
আমার আটতালি। 

একটি ছেলের তিনটি প্রথম এবং সমাপ্তি




একটি ছেলের তিনটি প্রথম এবং সমাপ্তি 
.. ঋষি 
.
১)অনুসন্ধান :
.
কবে পাবো বলুন তো 
যার সঙ্গে কফিশপে শক্তি চট্টোপাধ্যায় কিংবা ঋত্বিক আলোচনা করবো 
আলোচনা করবো কবিতার জন্মে প্রেম। 
তারপর পরীক্ষা 
তারপর কৃষ্ণের মতো বাঁশি বাজিয়ে আরাধনা করবো 
অমর সভ্যতা। 
.
২)প্রথম চুমু 
.
তুমি যখন সাথে থাকবে না তখনও আমার সিগারেট পোড়া ঠোঁটে আগুন 
আর তুমি যখন সাথে থাকবে তখন কোনো ফ্রেঞ্চ কিসে 
আমি পৃথিবীর মাঝে একলা হয়ে যাবে 
সাথে থাকবে কবিতা ,আবৃত্তি ,সৃষ্টি আর অনুগল্প 
তারপর না হয় আর কবিতা লিখবো না। 
.
৩)প্রথম রাত্রি 
.
আঙুলের স্পর্শে খুলে যাবে অন্তর্বাস 
সব সত্যি যন্ত্রনা হয়ে জড়িয়ে ধরবে আদিম ঈশ্বর 
পূর্ণচাঁদে তখন কোনো চন্দ্রবিন্দু থাকবে না 
নগ্নতা সত্যি 
তবে আরো সত্যি ঈশ্বরের অধিকারে তোমাকে স্পর্শ। 
.
৪) এবং সমাপ্তি 
.
কি হলো বোলো তো কবি ? 
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে চলন্তিকা আমার বুকে মুখ ঘষছে।  
আসলে তোমাকে বলা চলন্তিকা 
ছেলেরা ফ্যান্টাসি চায় কিন্তু সত্যি কজন প্রেম চায় বলোতো ?
প্লিস কামড়িও  না এমন করে 
লাগছে তো
আচ্ছা আর লিখবো না বাবা। 

Monday, June 22, 2020

মৃত্যুকে খোলা চিঠি

 
প্রিয় মৃত্যু,
.
তোমার চোখে ইদানীং আমি ভয় লক্ষ্য করি
তোমার বুকের কোটরে বাস করা সেই আদিম পুরুষের লোভ 
অনন্ত অধিকার। 
আমি জন্ম থেকে খুব সাধারণ একটা মুখ  এই শহরের রাস্তায়  
শুধুই খিদের পৃথিবীতে হতভাগ্য আকাশের বুকে 
আমি এক নষ্ট চাঁদ। 
.
মৃত্যু তোমার চোখে আজকাল আমি গা ছমছমে ক্রাইম থ্রিলার 
আগাথা ক্রিস্টির কলমে আজকাল কেন যেন এক ঘৃন্য পুরুষ 
কেন তবু তুমি আমায় তোমার গল্পে  
সাজিয়েগুছিয়ে কোন নিরালায় মৃত্যু দিতে পারছো না? 
সময় তো তাই চায় 
সময় তো তাই চেয়েছে এতদিন। 
.
আমি জন্ম থেকে শুয়ে আছি এক আকাশ সমুদ্র বুকে বালির শহরে
তোমার পায়ের ছাপ রেখে যাওয়া হাজারো বালিয়ারি 
আমাকে টানছে তোমার আরও গভীরে।  
নিতান্ত কোন বৃষ্টি দিনে
আমি আকাশের নীলে তোমার চোখ দেখতে পাই
আমার প্রেমিকারা বলে আমার নাকি মেয়েদের চোখের প্রতি লোভ
জমানো সম্ভোগ 
আমি নিতান্ত কাপুরুষ যে স্বপ্নে কবিতা লিখতে চায়। 
জানি না  মৃত্যু আমার এই পাগলামী তোমার কাছে আদৌ পৌঁছোবে কিনা 
যদি পৌঁছোয় তবে প্লিজ আমাকে খুন কোরো তুমি 
যাতে বাইরের পৃথিবীর  সকলে বলতে পারে " ইটস আ পারফেক্ট মার্ডার "।  

.
মৃত্যু তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী
ঋষি
 
 

এমন অনেক কিছু



এমন অনেক কিছু 
ঋষি
" বলে দেবো "
সমুদ্র জাগুক, তোর জানলায় দাঁড়িয়ে অন্য সকাল
অন্ধকার ঘর, 
মেয়েটাকে বলে দেবো ভরা জলের গ্লাসে মিথ্যে ঘুমিয়ে সময় 
 এই ভাবে ভালো থাকা যায় না। 
.
" ভাববো "
একটা গুছোনো স্বপ্ন কুঁচি কুঁচি করে উড়িয়ে দেবো শহরের রাস্তায়
এফ এম ইন্ডিয়ায় তখন টিপসই দিয়ে লাইনে দাঁড়ানো মেরা দেশ মহান। 
মিথ্যে বলতে সত্যি লাগে না
অথচ সত্যিগুলো কত সহজে মিথ্যে হয়ে যায়। 
.
" জানবো "
প্রতিটা মৃত্যুর উপর ফটোফ্রেম লাগানো জীবন 
জীবন সিম্বলিক 
তবুও কি সত্যি মৃত্যুকে মনে রাখতে চাই 
রাখতে চাই মাথা বৃথা মৃত্যুর বুকে। 
.
" বলবো না "
এমন কিছু সত্যি লাইনে দাঁড়ানো জীবন নিয়মিত সংবিধানে। 
সেক্সপিয়ার পড়া মেয়ে
তবু কেন আঁকড়ে ধরতে চায় নিয়মিত অন্ধকার,
তবু আমার মৃত্যু শয্যায় তুমি হ্যামলেট নাটকে। 
  
 

সকাল থেকে রাত্রি

সকাল থেকে রাত্রি
... ঋষি
সকালে তুমি আমার সাথে থাকো
রাত্রে তুমি  অন্যকারো সাথে,
সকালে তোমার বুকে ফুটে থাকে সদ্য ফোটা সম্ভাবনা
বিকেলে ঠিক সেই টবে থাকে রজনীগন্ধার মৃত  গন্ধ।
আমি শুধু হারানো কবিতা ন্যথুলা পাস 
ফুরোনো আলোয় আমি আর তুমি চেনা অভ্যাস। 
.
সকালে তোমার গলায় রবীন্দ্রনাথ কিংবদন্তী সত্তরের কলকাতা
বিকেলে তোমার  নেশার পেগে বাইশে শ্রাবণ 
শুধুই মৃত্যুদিন। 
সকালে তোমার সংসার,বিছানার চাদর,হাতা খুন্তি
বিকেলে পুড়তে থাকা অন্ধকারে চাঁদ 
বাড়তে থাকা সময়ের ঋণ।
.
 সকালে তুমি আমার সাথে থাকো
রাত্রে তুমি  অন্যকারো সাথে,
সকালে তুমি আমার হয়ে থাকো 
বিকেলে তুমি অন্য কারো কাছে। 
এইভাবে সকাল থেকে রাত্রি একটা দিনের শেষে
এইভাবে খুন, জখম আর রক্ত, চোখের জলের দেশে, 
তুমি আমাকে মারো 
খুব মারো 
মারতে মারতে ক্রমাগত রক্তাক্ত আমি,
আমি জানি চলন্তিকা
তুমি আমার নও, অন্য কারোর। 

 

বারো নম্বর

বারোনম্বর ডেডবডি 
...,ঋষি 
.
আমাকে একটা নম্বর দিয়েছে রাষ্ট্র -বারো নম্বর
আমাকে একটা মৃত্যু দিয়েছে রাষ্ট্র, দিয়েছে ডেডবডি - বারো নম্বর, 
আমার মৃত্যুতে কেউ কাঁদে নি, কারণ আমি - বারো নম্বর 
আমাকে নিয়ে প্রচারে নেমেছে খবর, কারণ আমি - বারো নম্বর। 
বারো নম্বরের কোনো পদবী নেই 
নেই জাতি, ধর্ম, দেশ
শুধুই ডেডবডি - বারো নম্বর। 
.
বাবা ছিল না কোনদিন, তাই শহরের কোনো  ব্রিজের ফুটপাথে আমার আশ্রয়
মা কার হাত ধরে পালিয়েছে , তাই শহরের নদীতে আমার দুবেলা চান, 
খিদে ছিল পেটে, তাই শহরের রাস্তারা আমার খাবার
প্রেম ছিল বুকে, তাই রাস্তার কলে চান করা মেয়েদের শরীর 
আমার কোন বয়স নেই,
কারণ 
আমার কোন জন্ম নেই
শুধু এখন আমি ডেডবডি, তাই রাষ্ট্র দিয়েছে নাম 
বারো নম্বর। 
.
আমি শুধু বারো নম্বর 
যার কোন নাম নেই, মৌজা নেই,রাষ্ট্র নেই,শহর নেই, 
শুধু ডেডবডি।
যখন খিদে পেয়েছে চুরি করেছি ভাত হোটেল থেকে
যখন পেট গরম, শরীর গরম তখন হস্তমৈথুন করেছি আমি রাস্তায় বসে, 
যখন রাতে ঘুমিয়েছি কোন পার্কের সিটে,তখন পুলিশ এসে লাথি মেরে তুলেছে,
যখন পেটের জ্বালায় পকেটমারতে ধরা পড়েছি, তখন পাবলিক পিটিয়ে আমাকে  মেরে ফেলেছে। 
সেই আমি যার বাবাকে পাওয়া যায় নি,যার মাকে পাওয়া যায় নি
পাওয়া যায়নি মায়ের প্রেমিককে যে শহরের ভিড়ে তোমাদের মত মানুষ
শুধু আমি এখন বারো নম্বর, রাষ্ট্র দিয়েছে নাম
আমি একটা ডেডবডি। 

Sunday, June 21, 2020

জবাব চাই




জবাব চাই 
.... ঋষি
 
সমস্ত ধ্বংসের উপর ঈশ্বর সাক্ষী আছেন
সীমান্ত ছুঁয়ে দিপাক্ষিক খবর বুলেটের সাজে ঢুকে যায় ভারতবাসীর বুকে,
প্রশ্ন খুঁজছে সময় 
ঈশ্বর কি রাজনীতি বোঝে? 
আমি ঈশ্বর সাক্ষী নই
ধর্মাবতার কে তবে ঈশ্বর? প্রশ্ন সাধারণ, কাদের ঈশ্বর? 
প্রতিটা ধ্বংস, প্রতিটা বন্যা, প্রতিটা ভিতী মানুষের ঈশ্বর তৈরি করে
প্রতিটা সাধারণের খালি পেটে ঈশ্বর খিদে তৈরি করেন,
আর খিদের থেকে বড় ঈশ্বর      
মৃত্যুর শরীরে শুয়ে থাকা সাধারণের আগামীর সত্যি,
দরিদ্র ভারতবাসী । 
.
ঈশ্বর নাকি শ্রমিকের, ঈশ্বর তবে কমউনিস্ট
ঈশ্বর নাকি মন্দির, মসজিদ, গির্জায়,ঈশ্বর তবে আবাসিক
ঈশ্বর নাকি মানুষের,  ঈশ্বর তবে সামাজিক 
ঈশ্বর নাকি শব্দ, ঈশ্বর তবে কবিতা
ঈশ্বর নাকি আইনি , পুরোহিত, যাজক কিংবা রাষ্ট্রপিতা
ঈশ্বর নাকি ধানের ক্ষেত,সবুজ অরণ্য  কিংবা মোনালিসা
কে তবে ঈশ্বর? 
.
প্রতিটা মৃতদেহের পাশে ঈশ্বর শুয়ে থাকে
প্রতিটা ধর্ষনের সাক্ষী ঈশ্বর নিজে থাকে
পোখরানে পারমানবিক বিষক্রিয়া, সীমান্তে ক্রমাগত বোমাবর্ষণ
বাড়তে থাকা পেট্রলের দাম, বেশ্যালয়ে মানুষের কাম 
ক্রমশ বিক্রি রাষ্ট্র, ক্রমাগত পন্য সভ্যতা
মানুষের রাজনীতি না নিরপেক্ষ যোগ্যতা। 
.
কে তবে ঈশ্বর? 
কে তবে ত্রাতা? 
ক্ষুধার্ত ভারতবাসীর , কে তবে অন্নবিধাতা? 
ঈশ্বরের ভেকে মানুষ না মানুষের ভেকে ঈশ্বর? 
প্রশ্ন সাময়িক
কিন্তু জবাব  দেবে কে,  
ঈশ্বর নিজে না ঈশ্বরের সাজে যে?   





  
    
        

কম্পাস





কম্পাস 
... ঋষি 

মাথার ভিতর প্রতিটা কোষে শুয়ে আছে রাস্তা 
অসংখ্য দ্রাঘিমাংশ খুলে কম্পাসে কাঁটা দিকভ্রষ্ট উচ্চারণে। 
ঘুরে করেছি শহরের রাস্তায় অনবরত স্খলন  
খালি পায়ে ,ঝাপসা চোখে দেখা 
লাইভ টকিজ 
এইভাবে ভালোবাসবি তুই । 
.
অনুচ্চারিত বৃষ্টির মতো 
গড়িয়ে নামা স্বপ্নের ঢেউ আগামীতে তোর বুকের ভিতর স্নেহ,
কামার্ত পুরুষ যখন ভালোবাসে নারীকে 
তখন সেখানে দাবানল। 
অথচ শৈশব খোঁজে মায়ের স্তন 
কোথাও কি মিল পাস্ চলন্তিকা  বালিয়াড়ি আর সমুদ্রের।
.
মাথার নিউরোনের ভিতর অন্য মানুষ ঘুমিয়ে 
পরিযায়ী বিছানার চাদরে আমার আদরের ফটোফ্রেম ,
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে 
আমি গাছ আর তুই  অরণ্যের মাঝে একলা সবুজ।
বৃষ্টি আসে 
শহরের বারান্দায় অরণ্য তখন টব বন্দি ,
তুই আসিস 
বুকের দশ বই দশ দুটো রুম ,এটাচ বাথরুম সব নকল মনে হয় ,
মুঠোফোনে কাঁদতে থাকে মুক্তি 
আলোয় আলোয় ছুঁয়ে যাওয়া আমার একলা শহর আবার দিকভ্রষ্ট।  
এই কবিতায় কোথাও অরণ্য নেই 
সবখানে তুই 
আর আমি  শুধু কবিতার কম্পাসে রাস্তা খুঁজি। 
  

Saturday, June 20, 2020

ঠিকানাহীন



ঠিকানাহীন
... ঋষি 
মানুষগুলো আর কোনোদিন  শব্দ করবে না 
করবে না বুকের ধুকপুক শুয়ে থাকা আগামীকে আদর ,
ওরা তো মরে গেছে কবে 
যেদিন ভাঙা সূর্য বুকে একটা তৃতীয় বিশ্ব নির্ণীত করছিল সময় ,
যেদিন কোনো অভুক্ত মা খালি পেটে থেকে জন্ম দিয়েছিল 
রুক্ষ ,সুক্ষ এক মৃত ভারতবর্ষ। 
.
আমরা কি ছিলাম সেদিন কেউ বেঁচে ?
যেদিন কিছু হিসেবি মানুষ পৃথিবী নামক গোলকটা ভেঙে টুকরো করেছিল ,
আমরা কি তাদেরই একজন আজ 
যারা অনবরত লোভ ,হিংসা ,নাটকে  হত্যা করে চলেছি নিজের মানুষ। 
আমরা কারা ?
প্রশ্নের উত্তর ঈশ্বরের লেটেস্ট আবিষ্কার 
যন্ত্র মানুষ। 
.
যে মানুষগুলো শব্দ করবে না আর
যে মানুষগুলো আর  হাঁটবে না আগামী পৃথিবীতে মানুষের অধিকারে ,
আমি তাদের সম্বন্ধে ভাবছি না 
ভাবছি নিজেকে নিয়ে। 
আগামী কোনোদিনে আমার পচা গলা শরীরটা 
হয়তো আজকের মতো রড দিয়ে টেনে নিয়ে যাবে রাষ্ট্র।
.
বেঁচে থাকা শরীরগুলো সেদিন ভয় পাবে 
পোড়াতে দেবে না বডিটা অন্য মৃতদের পাশে,
আমি সেদিন ঠিকানা খুঁজবো 
সময় ডিক্লিয়ারেশনে উঠে আসবে আমার ঠিকানাহীন শরীর। 
সেদিন আমি কোনো শব্দ করবো না 
শুধু জানতে চাইবো ঈশ্বরের কাছে 
আচ্ছা এই মানুষের পৃথিবীতে মানুষের ঠিকানা কি  ? 

Thursday, June 18, 2020

ভালোবাসো তো আমায়


ভালোবাসো তো আমায় 
...ঋষি 
.
তোমাকে সন্দেহ করার যথাযথ কারণ নেই
আমার মাথার ২৫০ গ্রাম অভিমান আর ১০০ গ্রাম কষ্ট নিয়ে
সত্যি কি তোমায় অবিশ্বাস করার কোন কারণ আছে? 
.
যে মেয়েটা রাত্রে অফিস থেকে সাড়ে সাততার বদলে নটায় বাড়ি ফেরে
যার বাড়িতে বিছানায় শোয়া অসুস্থ স্বামী, 
সেই মেয়েটাকে রাত্রে তার স্বামী  প্রশ্ন করে " ভালোবাসো তো আমায় "?
যে মেয়েটা কোন পার্টির হুল্লোরের পর তুমুল মদ খেয়ে  বাড়ি ফেরে 
তার প্রেমিক তাকে কোন গভীর মুহুর্তে আদর করতে করতে প্রশ্ন করে
" ভালোবাসো তো আমায় "?
.
" ভালোবাসো তো আমায় "?
এটা কি কোন প্রশ্ন হলো আজকের দুনিয়ায়,
ভালোবাসা কি বলে বোঝাবার জিনিস।
এটা আসলে একটা উত্তর যেটা প্রতিটা মানুষ ভালোবেসে পেতে চায়,
এটা আসলে  মানুষের একটা বাঁচতে চাওয়া
একটা গভীর অধিকার নিজের কাছে। 
.
আসলে  মানুষের পায়ের ফাঁকে একটা চাঁদ ওঠে মনের অন্ধকারে
প্রতিটা মানুষ চায় চাঁদকে অন্ধকারে আলোর মত দেখতে,
কেউ চন্দ্রগ্রহণ চায় না
কেউ চায় না নষ্ট চাঁদ। 
আসলে " ভালোবাসো তো আমায় "?
কোন প্রশ্ন নয়
একটা উত্তর দুজন নর নারীর  একে অপরের বিশ্বাসের।
আমার মাথার ২৫০ গ্রাম অভিমান আর ১০০ গ্রাম কষ্ট নিয়ে
আমি শুধু তোমায় এই প্রশ্নটাই করতে চাই
" ভালোবাসো তো আমায় "?





বাই দ্যা ওয়ে


বাই দ্যা ওয়ে
.... ঋষি 
.
 আমার বুকে ভারতবর্ষ লেখা আছে 
ঠিক এমনি একটা অদ্ভুত ভাবনা নিয়ে শ্যামবাজারের পাঁচমাথায় ,
ঘুম আসছে না ,
জোঁকের মতো তুই চুষে চলেছিস আমার নিশ্বাস। 
ক্লান্ত দেশ ,রাজ্য ,রাজত্ব, রাজা 
বাই দ্যা ওয়ে আমি চিরদিন ক্রীতদাস। 
.
চিনিস তুই গোর্কিকে ,চিনিস তুই চে কে 
আমার বুকের রক্তে ওঠা ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে মনুমেন্ট থেকে পৃথিবীর বায়ুস্তরে।
আমি মনুমেন্ট দেখেছি 
দেখেছি স্বপ্নে তোকে আইফেল টাওয়ারের তলায় 
নীল চোখের মেয়ে 
বাই দ্যা ওয়ে আমি কোনো পোয়েট নই  নিতান্ত প্রেমিক। 
.
কি বলছিলিস তুই জঙ্গলমহল 
তোর শরীরে লুকোনো বাঁকুড়ায়  বাস করা সেই শক্তপোক্ত যুবতী ,
তোর শীৎকারে ভারতবর্ষ দেশের জন্ম 
তোর কান্নায় সীমান্ত চলতে থাকা অনবরত গুলি বারুদের শব্দ,
আমি শুধু তোকে চিনি  চলন্তিকা 
আর জানি ভারতবর্ষ নামক একটা রাষ্ট্র আমার মুখের দিকে চেয়ে 
চিৎকার করছে। 
চিৎকার করছে শহরের পলিউশন ,এক্সটার্নাল পলিটিক্সে জ্বলন্ত বিশ্ব 
ভাইরাসে পূর্ণ মৃত শ্রমিক আর সীমান্তের সেই মৃত সৈনিক।  
একটা গোটা মানচিত্র আমার চোখের সামনে শ্যামবাজারের পাঁচমাথায় ,
উপর থেকে  নেতাজির স্ট্যাচুটা  কিছু একটা বলতে চাইছে 
আমি বুঝছি সেই কথা ,
আমার দেশের সমস্ত বিপ্লব ,
সমস্ত মায়ের কান্না 
পুরোনো  ইতিহাস থেকে উঠে আসছে আমার স্বাধীন ভারতবর্ষ 
বাই দ্যা ওয়ে আমি কোন প্যাট্রিয়ট নই নিতান্ত দেশবাসী।   

রোদ ,বৃষ্টি



রোদ ,বৃষ্টি 
.... ঋষি 
.

যখন বুকের ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে যায় 
আমি রোদ্দুর খুঁজি। 
আমার খুঁজে চলা বুকের ছন্দে অনবরত ক্ষরণ
আমার শহর, 
কোন এক বিকেলে বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে তোমার  বারান্দায়
আমি তখন ঠিক তোমার মতো তোমার পাশে তখন আকাশ খুঁজি 
খুঁজি মুহূর্ত অন্য কোন বৃষ্টি দিনে । 
.
চলন্তিকা তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছিলে 
প্রেম কি ?
আমি তোমাকে একঝলক সিগারেটের আগুন দেখিয়ে বলেছিলাম 
পুড়তে থাকা ,
পুড়তে থাকা নিজের ভিতর মুহূর্তের জ্বালাপোড়া 
অজস্র না বলতে পারা চিৎকার। 
চলন্তিকা তুমি বলেছিলে পরজন্মে গাছ হবো 
আমরা গাছের মতো চেয়ে থাকবো একে ওপরের দিকে ,
হাওয়া এসে ছুঁয়ে যাবে 
আলো এসে ছুঁয়ে যাবে 
ছুঁয়ে যাবে আমাদের সবুজ জন্ম অনবরত কোন অধিকার। 
.
তাই তো আমি আমার সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে  রৌদ্র  খুঁজি 
যখন বুকের ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে যায় 
খুঁজি আলো। 
আমার না বলা কথারা আকাশ হয়ে তোমাকে ছুঁয়ে থাকে 
মাঝে মাঝে বৃষ্টি আসে 
তোমার মতো আমার গভীরে তখন উথালপাথাল 
অনেক কিছু বলা যে  বাকি  থেকে গেলো। 

Wednesday, June 17, 2020

ভালোবাসলে এমন হয়




ভালোবাসলে এমন হয়
.... ঋষি
.  
মেয়েটা আমাকে বলেছিল মন ভালো নেই
তবু আমি আমার  চব্বিশ ঘন্টার অভ্যেসে ওর বুকের দিকে তাকালাম,
মেয়েটা আমাকে বলেছিল জানিস আমার বৃষ্টি ভালো লাগে
তবু আমি আমার ঘড়ির কাঁটার সাথে মাপ করে মেয়েটার বুকে হাত দিলাম। 
মেয়েটা বাইরে তাকিয়ে বললো দেখো কি সুন্দর অরণ্য
আমি এক টানে মেয়েটার বুকের কাপড় খুলে দিলাম।
.
ঘটনা এটা ছিল না
একটা বিয়ের যোগ্যি মেয়ে কোন এক রাতে তুমুল নেশা করে আমায় বলেছিল
আমাকে নেও কবি, আমাকে ভালোবাসো। 
আমি তার  শাড়ি, সায়া,ব্রা, প্যান্টি সব একসাথে জড়ো করে চিৎকার করেছিলাম
এই ভাবে ভালো বাসা যায় না,
এই ভাবে কাছে আসা যায় না 
শুধু পাওয়া মানে ভালোবাসা না। 
.
এই দুজন মেয়ের  কোনজনকেই আমি চিনি না
কারণ আমি জানি যাকে ভালোবাসবে তাকে আদর করা যায়,
কিন্তু ভালোবেসে শাড়ি খোলা যায় না।  
.
ঈশ্বর আর ভালোবাসার আমি তফাৎ পায় না 
তাই আমি সেই মনখারাপের মেয়েটাকে বলেছিলাম 
তুমি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ো না
বরং চলো হাত ধরে হাঁটি। 
তারপর আমি ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে মেয়েটার হাত ধরে হেঁটেছিলাম
তারপর শহর পেড়িয়ে কাঁচা রাস্তা ধরে সমুদ্র, তারপর অরণ্যে এসে রাত্রি হয়ে গেলো
মেয়েটা চাঁদের দিকে তাকিয়ে হাসছিল তখন
একে একে খুলে পরছিল তার শরীরের সব বাঁধন 
তারপর তুমি আমার মুখটা চেপে ধরলে
বললে সত্যি, 
ভালোবাসলে বুঝি এমন হয়। 

Tuesday, June 16, 2020

নষ্ট সন্তান



নষ্ট সন্তান
.. ঋষি
সত্যি বলতে পারছি না
তফাৎ থাকা হতদরিদ্র ভারতবর্ষ আমার মুখের দিকে চেয়ে,
আফজল তোমার প্রেমিক হতে পারে
হতে পারে উজ্জল তোমার নিহত নক্ষত্রের  ভিড়ে এককাপ ভাঁড়ের চা। 
আমি সত্যি বলতে পারছি না
বুকের বাদিকে তোমার  লেগে থাকা দাঁতের দাগটাকে মিথ্যে বলতে পারছি কই। 
.
বুক ফেটে সজনে ডাঁটায় লেগে থাকা মানুষ
এই শহরে সস্তায় বিকিয়ে যাওয়া খবর, 
কোনো মৃত্যুপুরীতে হঠাৎ পোস দিয়ে দাঁড়ানো  তোমার জন্ম ক্লিক ক্যামেরার 
মিথ্যে বলতে পারছি কই? 
সব যদি মিথ্যে হয়ে যায়
তবে আমার প্রেমিক বুকে আগুন শহরে দাবানল হয়ে বারুদের ঘর। 
.
সব সত্যি মিথ্যে নয়
মিথ্যে নয় বাহারী শোকে আকন্ঠ পান করা নীল বিষ, 
তুমি নগ্ন সভ্যতায় বিভুতিভূষন হাতে 
একলা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আমাকে স্বপ্ন ভাবতে পারো,
ভাবতে পারো এই ভারতবর্ষের তেত্রিশ কোটি দেবতা আমার মতো মিথ্যে  
কিংবা তুমি ভাবতেই পারো এ জন্ম আকাশ ছোঁয়া সামাজিকতা ।
শুধু সত্যিতে পেট ভরে না
ভরে না ভারতবর্ষের পেটে  বাড়তে থাকা আগামী সন্তানের খিদে,
আমি শুধু ধ্বংস খুঁজি সুখে
জন্মের সুখ নষ্ট হয়ে যায়  
নষ্ট সন্তান মৃত মানুষ আর ভালোবাসার বুকে।  

তেত্রিশ মিনিট




তেত্রিশ মিনিট
.. ঋষি
আজ এতদিন ধরে সুক্ত রান্না করার পর
আমি গিয়েছি তোমার কাছে,
তুমি বললে হাতে তেত্রিশ মিনিট আছে
তাড়াতাড়ি
আমাকে একটু ভালোবাস না পাখির মতো। 
.
সত্যি এখন আমাদের আকাশ দেখার সময় নেই
সত্যি এখন আমাদের অভিমান ঘাটার সময় নেই,
তাড়াতাড়ি
আমি তোমাকে বলতে চাইলাম জলদির কাজ সে তো শয়তানের,
তুমি হাসলে বললে
আমরা তো শয়তান এখন 
আমরা তো পাখি হতে পারে নি।
.
গুনে গুনে ঠিক তেত্রিশ মিনিট  
তুমি আমার কাছে আকাশ ধরে বৃষ্টি হয়ে ঝরছিলে, 
তোমার সময় বেয়ে গড়িয়ে নামা দুর্বলতা আমাকে এগিয়ে দিচ্ছিল  নেশার পেগে 
তুমি শীতল বরফের মতো আমার শরীরে সাক্ষর রাখছিলে ভালোবাসার,  
কানে কানে ফিসফিস করে বলছিলে ফিরে আয়
ফিরে আয় আমার কাছে। 
গুনে গুনে ঠিক তেত্রিশ মিনিট
আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম একে, অপরের দিকে
চেষ্টা করছিলাম যাতে বাসা বাঁধা যায় একে অপরের গভীরে।
তারপর তেত্রিশ মিনিট শেষ 
শেষ একটা জন্ম হাজারো অপেক্ষার পর, 
জন্মরা চিরকাল এমনি অপেক্ষার 
একটা  মৃত্যু ভেদী বাণ সোজা ছুটে এসে পা তুলে দেয় সত্যির বুকে,
সত্যিগুলো মরিচীকা হয়ে থেকে যায়
আর মিথ্যেগুলো গত হয়ে যাওয়া তেত্রিশ মিনিটের স্বপ্নে বাঁচা জীবন।  

 
 

বৃষ্টির ভাষা


বৃষ্টির ভাষা 
.... ঋষি 
সমস্ত অধিকারের পর যদি মৃত্যু আসে কোনো দিন 
তাকে বলে দিও চলন্তিকা 
এখনো পথ হাঁটা বাকি,
এখনো বাকি বৃষ্টিতে ভেজা তোমার হাত ধরে। 
শহরের এককোনে যখন জমতে থাকে জল 
আমার হৃদয়ঘরে তখন ভাঙা বাড়ির ছাদ ,ভাঙা আয়নায় মুখ
গড়িয়ে নামা  তুমি  
মনখারাপ যখন তখন। 
.
সময়ের দরজায় দাঁড়ানো অজস্র অচেনা মুখ ,হাজারো চরিত্র 
জানলা দিয়ে দেখা বৃষ্টি ,তুমি যেন রূপসী কন্যা 
আমার মনের ঘরে আলাপন, 
মেঘলা আকাশ 
ভালো লাগে চলন্তিকা তোমায় ভাবতে যখন তখন। 
.
জানি এই বৃষ্টি ছুঁয়ে যায় তোমার শহর 
জানি এই বৃষ্টি ভিজিয়ে যায় তোমাকেও। 
অজস্র আগুনে পোড়া মুহূর্তের মৃতদেহ 
অজস্র বাঁচার সম্বল 
সময় ফুরোলে চলন্তিকা একবার দাঁড়িয়ো আমার বুকে বৃষ্টি ভিজে।
সেদিন আমি লিখবো কাব্য 
সেদিন আমি  লিখবো একটা মৃত্যু গাঁথা ,তোমার সারা শরীরে  
 সেদিন তুমি বুঝবে, আমার একটা কথাও মিথ্যে নয়। 
মিথ্যে নয় আমার  বেওয়ারিশ লাশ 
অদ্ভুত  এই সময়ের জীবন্ত পরিহাস , 
মিথ্যে নয় এই নিয়মিত জনপদে আমার  হাঁটতে থাকা তোমার দিকে।
বৃষ্টিরা শুধু বোঝে না এই সব কথা  
কিন্তু আমি বুঝি  বৃষ্টির ভাষা ,
চলন্তিকা প্রতিটা বৃষ্টি দিন আমাকে মৃত্যু দিয়ে যায়
দিয়ে যায় মনখারাপ যখন তখন ।  
 

Saturday, June 13, 2020

যে শব্দরা একা



যে শব্দরা একা 
... ঋষি
 
উফস
এই পৃথিবীতে চিরকাল আমার অপ্রিয় কিছু শব্দ।
.
ঈশ্বর হিমালয় থেকে নেমে এলেন
তাকে প্রশ্ন করলাম, চেনেন মশাই এই শব্দগুলো ? 
উনি খুব গর্বের সাথে উত্তর দিলেন
আমি তোমাদের কন্ঠ দিয়েছি নিজেদের ভাব প্রকাশের জন্য
এর থেকে বেশি কৈফিয়ত আমি দিতে পারবো না। 
.
আমি চলন্তিকার কাছে  চরম সংগমকালে শুনলাম শব্দগুলো
জানতে চাইলাম শব্দগুলোর মানে, 
চলন্তিকা হাসলো অদ্ভুত ভাবে চোখে চোখে
 মাথায় হাত বুলিয়ে বললো এই শব্দগুলো চরম তৃপ্তির।
আমি তখন দেখতে পাচ্ছি আমার ঈশ্বর এগিয়ে যাচ্ছে ফেরিঘাটের দিকে
আমি ছুটে গেলাম তার দিকে, 
 শুধু একটা প্রশ্ন করবো বলে। 
.
আমি হিমালয় ঘুরে সারা ভারতবর্ষের ঘুরে 
খুঁজে পেলাম না আর ঈশ্বরকে,
শুধু সারা পৃথিবী ঘুরে আমি শুধু শুনতে পেলাম হাহাকার 
কোটি, কোটি অসহায় মানুষের চিৎকার 
আর 
উ 
উফস।
আমি সেদিন থেকে বুঝেছি এই শব্দগুলো আসলে শুধু কষ্টের 
আর যে কষ্টগুলো ভীষন একা,
কাউকে দেওয়া যায় না
শুধু অনুভব করতে হয়। 

  

Thursday, June 11, 2020

পভার্টি লাইন


পভার্টি লাইন 
... ঋষি
আমি তখন সম্পুর্ন  নগ্ন
এক আকাশের তলায় দাঁড়িয়ে খুঁজে চলেছি পভার্টি লাইন, 
পভার্টি লাইন মানে কী
প্রশ্ন করেছিলাম জংগলমহলে আকস্মিক মৃত্যুর কাছে
উত্তরে তুমুল ঝড় তারপর বৃষ্টি 
হাওয়ারা আমার কানে কানে বলে গেল " খিদে "।
.
আমি সম্পুর্ন নগ্ন 
পায়ের কাছে জমে আছে শতাব্দী সময় শুধুমাত্র বেঁচে থাকায়, 
আমি নীচু হলাম ফু দিলাম
সরে গেল কিছু শতাব্দী,
অবাক হয়ে চেয়ে দেখি এক মানবীর নাক,ঠোঁট, ভ্র
আবার ফু দিলাম
এবার স্তন, নাভি, উরু, ক্রমশ শতাব্দী সরে এক সম্পুর্ন মানবী আমার সামনে। 
.
মানবী উঠে দাঁড়ালো
আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমাকে বললো কি হলো আমাকে ভালোবাসবে না,
আমি মুখ চেপে ধরলাম তার স্তনে, জিভ ঠেকালাম তার স্তনাগ্রে
কিন্তু পেলাম পৃথিবীর রক্তের  স্বাদ, 
আমি নেমে এলাম তার পেটে, তার নাভিতে 
শুনতে পেলাম পৃকথিবীর হাহাকার, কান্না আর খিদে। 
আমি ছিটকে সরে এলাম
প্রশ্ন করলাম
 কে তুমি মানবী,  কি তোমার নাম? 
মানবী হাসতে লাগলো আকাশ, পাতাল কাঁপিয়ে 
আবার অন্ধকার হয়ে এলো প্রকৃতি, তারপর ঝড়, তারপর বৃষ্টি
আমি ভয় পেয়ে হাঁটু গেড়ে বসলাম,
এবার এক লাল শাড়ি কোথা থেকে উড়ে এসে ঢেকে দিল মানবীকে।
মানবী হেঁটে চলে যাচ্ছে সোজা রাস্তা ধরে
তার পায়ের ছাপে ফুটে উঠছে রক্ত 
আমি বুঝলাম মানবীর ওই সোজা রাস্তাটা   হলো পভার্টি লাইন। 


  

   
  

ভালো নেই তাই




ভালো নেই তাই 
... ঋষি 

ভার্চুয়াল মিডিয়ায় একশো পনেরো জনের সাথে কথা বলে দেখেছি
তারা কেও ভালো নেই।
এস্কিমোর দেশের এক  প্রতিনিধির সাথে কথা বলে দেখেছি
তারা আগামী সাতদিন ভালো আছে
কারণ আগামী সাতদিনেরই খাবার মজুত তাদের কাছে
তারা তাই আগামী সাতদিন সুরক্ষিত নিজেদের গভীরে ।
.
আমি এক গ্রামের সরকারী স্কুল শিক্ষকের সাথে কথা বলে জেনেছি
তার সংসারে অভাব থাকলেও তিনি খুশি
কারণ তিনি মনে করেন ভারতবর্ষ আগামীকালে জাগবে
তার ছাত্ররা ঘুম ভাঙাবে আগামী ভারতবর্ষের।
আমি জেনেছি এক রিক্সাওয়ালার কাছে   
সে খুশি কারণ তার আজ সন্ধ্যায় বাংলার বদলে ইংরাজি জুটবে। 
.
আমি শুনেছি স্কুলে যাওয়া সেই সব পীপিলিকার কাছে
তারা ভালো নেই,
কারণ তাদের মা- বাবা তাদের ভালও বাসে না
ভালোবাসে সময়ের নম্বরকে    
আসলে বাবা মারা মনে করছে নম্বর দিয়ে নাকি মানুষ তৈরি হয়। 
খবর নিয়ে দেখেছি বই পাড়াতে 
এই সময় নাকি শহরের কোন কবিই ভালো নেই, ভালো নেই তাদের কবিতা 
কারণ আজকাল কবিতার টি আর পি কমছে বিনোদনের কাছে
সস্তার মিডিয়ায় কবিতাগুলো শুধু কাঁদছে পাঠকের দরবারে। 
.
এখন প্রশ্ন হলো আপনি কি ভালও আছেন? 
আপনি যেই হোন না কেন এখন প্রশ্ন আপনি কতটা ভালো আছেন ? 
উত্তর দেওয়ার আগে আমি বলি 
আপনি কি দুবেলা খেতে পাওয়া মানুষগুলোর একজন কি ? 
যদি হন তবে প্লিজ লজ্জা পাবেন না
ভারতবর্ষের অর্ধেক লোক দুবেলা দুমুঠো খেতে  পায় না বলে, 
আর প্লিজ মিছে কাঁদবেন না আপনি ভালো নেই বলে। 
 

Wednesday, June 10, 2020

ক্রাইম থ্রিলার


ক্রাইম থ্রিলার 
... ঋষি 

সবকিছু আমার সহ্য  হয় 
সহ্য হয় না তোমার পিঠ বেয়ে গড়িয়ে নামা গরমের শহর ,
প্রচন্ড উষ্ণতার পারদ যখন  তোমার নাভি ছুঁয়ে শহরের তাপমাত্রায় ৩৭ ডিগ্রি লেখে 
আমি তখন সোজা ছুড়ি চালিয়ে কেটে ফেলি আমার আদর ,
গড়িয়ে নামা  তোমার ঘাম আর তোমার রক্ত মিশে  
আমি এই শহরে ক্রাইম থ্রিলার। 
.
মিথ্যা  লিখি না 
সিগারেটের এক টানে যখন সন্ধ্যা নামে 
তখন ঈশ্বরের দরজায় এক গজ এসে দাঁড়ায় আর সকালে কচ্ছপ 
আর আমি গজ কচ্ছপের লড়াইয়ে ক্লান্ত অধিকার ,
মনখারাপ খুঁজি 
তোমার মতো একলা দাঁড়িয়ে ক্লান্ত শহরে। 
.
সমস্ত সহ্যের বাইরে তোমার এমন ঈশ্বরের দৃষ্টি আমার অসহ্য চলন্তিকা 
অসহ্য তোমার চোখের না বলায় লুকিয়ে আমাকে ভালোবাসা,
আমি ভিক্তোরিয়ার গোড়ায় বসানো পরীর দিকে তাকাই 
তোমার সাথে মিল পাই  ,
আমি রামকিঙ্করের পাথরের ভাঁজে লুকোনো কষ্টের শরীরে তাকাই 
তোমার সাথে মিল পাই  ,
আমি সূর্যের দিকে তাকাই ,আমি বৃষ্টির দিকে তাকাই 
আমি জন্মের তাকাই 
তাকাই মৃত্যুর দিকে 
শুধু তোমার চোখে আমি আমার মৃত্যু দেখতে পাই। 
তুমি সেই ক্রাইম থ্রিলারের নায়িকা 
যার চোখে সময় শুধু মৃত্যুর দাঁড়ি ,কমাতে অজস্র প্রশ্ন
আর উত্তর  
.
পাথর ভাঙা স্বপ্নদের রক্তাক্ত হৃদয়।   

Tuesday, June 9, 2020

হারানো মানুষ

হারানো মানুষ
... ঋষি 

শতক আসে শতক যায় 
আমি রৌদ্র হারিয়ে ছায়া খুঁজি চলন্তিকা।
সহস্র অধিকার ছাড়িয়ে আমি ফিরে প্রিহিস্টোরিকাল জামানায়
যেখানে হারানো রৌদ্রে তোমাকে ছুঁয়ে থাকে সবুজ পৃথিবীতে,
কোন লোভ নয়, কোন রিপু নয়
শুধামাত্র তোমার স্তনে তখন হারানো মানুষ। 
.
সত্য বলছি আমি মানুষ খুঁজি
একটা পাঁচ ফুট, এগারো ইঞ্চি ঘটনা যখন বড় একলা এই পৃথিবীতে,
তখন মানুষের গোষ্ঠী সংক্রমনের খবর 
শুধু মাত্র কোন ভাইরাসের দাপটে ভয়াবহ নয়। 
ইতিহাস ছুঁয়ে সাক্ষী রেখেছে সময়
 মানুষের সংক্রমন আজ শুধু দুরে সরে থাকবার।
.
রেস্তোরাঁয় লাইন দিয়ে পরে থাকা শূন্য কিছু পথ চাওয়া
কিছু অসম্পুর্ণ রাজনীতি এই শহর,এই রাষ্ট্র
মানুষের পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা, 
আগামী দিনের খবরে সন্তানদেরর লাশ গোনে মা 
আর রাষ্ট্র গোনে মৃতদেহ।  
.
আমি শুধু মানুষ খুঁজি চলন্তিকা
দৃশ্যের বাইরে তাকিয়ে আগামী দৃষ্টিতে আমি দেখি প্রিহিস্টোরিকাল মাতৃতন্ত্র, 
যেখানে সভ্যতা মানে মায়ের স্তন 
খিদে মানে মায়ের কান্না
আর বেঁচে থাকা সবুজ পৃথিবীতে সময়ের সন্তান,
সব মিথ্যে হয়ে যায় চলন্তিকা
যখন এই কবিতা মানুষের মৃতদেহে শুধু মাত্র পাগলের প্রলাপ। 


   
  

Monday, June 8, 2020

পাঁচ পাঁচকে , ফিলিং সন্ন্যাসী


পাঁচ পাঁচকে,  ফিলিং সন্ন্যাসী 
... ঋষি 
হতাহতের দৃশ্যের ভিতর আমি নেই 
আমরা নেই ,
রাষ্ট্র নেই। 
আছে অনেকগুলো জমে থাকা মৃত  শব 
আর সময়ের চোখে টার্গেট। 
.
.
কনসেপ্টচুয়াল পৃথিবীর ভিতর অন্ধকারে চাঁদ ,ভিজে তোমার ঠোঁট 
আর প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত ,
দৃষ্টান্ত মূলক শান্তি  চাঁদে খরগোশ থাকতে পারে 
তোমার কল্পনাও 
কিন্তু জল নেই ,শুধু তৃষ্ণা। 
.
.
পকেটের ভিতর শুয়ে আছে অসংখ্য না কেনা স্বপ্ন 
সম্ভব না 
যেমন  আকাশের চাঁদ কেনা। 
বরং এক প্যাকেট কন্ডোম কিনে নেবো জনসংখ্যা রুখতে 
পুরুষের শরীর আর যোনির খিদের উত্তর ডিসপোসাবলে সঙ্গম এই মুহূর্তে । 
.
.
বৃথা খিদে দাঁড়িয়ে আছে ভারতবাসীর উঁকি মারা আদুল শরীরে 
যে দেশ পৃথিবীর তিননম্বর বিছানায় শুয়ে রোগগ্রস্থ 
সেখানে শরীরের মৃত্যু স্বাভাবিক।
যে দেশে অন্যের বৌ নিজের হয়  
সে দেশে বন্টনের চালে লুটতরাজ স্বাভাবিক। 
.
.
রক্ত দেখলে মাথা ঘোরে মানুষের  ,
তবে ঋতুর রক্ত চলন্তিকা শুধু মাত্র ১১ টাকার স্যানেটারি প্যাডেই লাগে না 
আর যাদের প্যাডের বদলে পেট ,
তাদের সবটাই রক্তাক্ত 
আর আমাদের মতো ,রাষ্ট্রও অপারক ,ফিলিং সন্ন্যাসী। 
 

Saturday, June 6, 2020

প্রেমিক এবং অপ্রেমিক

প্রেমিক এবং অপ্রেমিক
.... ঋষি  

আমার তো বাঁচার জন্য তোমাকে চায় হে পৃথিবী
চারিদিকে মেলোড্রামা, 
পুরোনো কাসুন্দি ঘেঁটে রৌদ্রে শুকোনো আমের আচার সময়ের খোলা ছাদে।
ঘুমিয়ে আছে জীবনের সহজ পাঠ জটিল বায়োস্কোপে
রবিঠাকুর শুধু ঠাকুর বাড়ির দালানে কিংবা ঝোলানো ছবির ফ্রেমে রিপুদের  সাথে 
মুক্তি খোঁজেন কাগজে কলমে।
.
সাত রিপু, পঞ্চবান, হাজারো গল্প লুকিয়ে তোমার অপ্রেমে
জানি তুমি আমায় ভালোবাসো চলন্তিকা, 
এও জানি মেয়েদের ভালোবাসা যেখানে যেখানে পড়ে সেখানে গাছ জন্মায়। 
তোমাকে ছুঁয়ে আমি পৃথিবীর মাটিতে শুয়েছি 
সামনে সভ্যতা পর্যন্ত যতদুর চোখ যায় সেখানে আমাদের জাতকের গল্প
গাছেদের গল্প,
 সবুজ ভাবনায় আজও দাবানল ছুঁয়ে ঘুমিয়ে থাকে চুপকথা
অনন্ত আগামীতে। 
.
আমার যে বাঁচার জন্য তোমাকে চায় হে পৃথিবী
তুমি যে আকাশপথে,বৃষ্টিপথে,ভাবনায় যখন তখন এসে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছো,
তোমার মুখেতে আবেশ,তোমার মুখেতে স্পর্শ
তবু ঘুম আসে না আমার চলন্তিকা,
গাছের দিকে চেয়ে
ঝরে  যাওয়া পথের দুপাশে শুকনো পাতাদের দিকে চেয়ে
ঘুম আসে না আমার। 
আমার ঘুম উড়ে গেছে হাজারো বছরের পুরনো পৃথিবীতে
তোমার না লেখা ভাবনার খাতায়
অনুচ্চারিত আমি 
প্রেমিক এবং অপ্রেমিক গাছের কল্পনায়।  
  


   

আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে



আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে
.... ঋষি 

কিছুই ভালো লাগছে না 
কিচ্ছু না ,
বিপর্যস্ত বিকেলে কবিতার মেয়েটি  সোনালি আলোর হাতছানি ,
স্বচ্ছ রোদে একটু একটু করে খুলতে লাগলো পুরানো স্যাঁতসেঁতে ভেজা বিকেল
মেঘরাত,বৃষ্টিগল্প
জানো তো চলন্তিকা আমি ঘুমোয় নি আজ বহুদিন 
.
সদ্য লিখে ফেলা গল্পের মতো 
আমি ধীরে ধীরে পান করে ফেললাম তোমার ঠোঁটে লেগে থাকা জলের বিন্দু ,
তোমার নাভির গভীর মই নামিয়ে লেগে 
আমার শব্দের অসামাজিকতায় আমি ছুঁয়ে ফেললাম আগুন। 
পুড়ে যাচ্চে চলন্তিকা 
মাথার ভিতর লেগে থাকা ঘুম চোখে একটা স্বপ্ন বারংবার 
আমি অন্ধকারে হারিয়ে যাই  যদি। 
.
কিছুই ভালো লাগছে না 
মাঝে মাঝে আমি আমার চারপাশে আমি খুঁজে পাই বাসি মড়ার গন্ধ।  
ধ্বংসস্তূপ থেকে মুখ লুকিয়ে আমি খুঁজে পাই বুকের পাহাড়ি ঢালে 
ব্যক্তিগত বিকেল 
যেখানে বন মুরগি রোস্ট করে নেশার চোখে কিছু পাহাড়ী যুবক ধর্ষণ করে 
আমার কবিতার নারীকে ,
শীৎকার না চিৎকার বোঝার আগে চোখের সামনে অন্ধকার 
আমি নিজের মৃত্যু কামনা করি। 
 
অনাবিষ্কৃত আমি 
আমার কবিতার মেয়ে  স্বপ্ন আঁকছে আগামী শ্রাবনের কোনো দিনে 
চারিপাশে ঝিরিঝিরি ,রূমঝুম 
আর আমি মেঘ তাড়াচ্ছি- জোগান দিচ্ছি উড়ানি হাওয়ার। 
আমি শুনতে পারছি চলন্তিকা তুমি গাইছো
"আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে
বসন্তের বাতাসটুকুর মতো " ।

Friday, June 5, 2020

ট্রেজেডি



ট্রেজেডি 
... ঋষি 

যোগ  ,বিয়োগ ,গান্ধীজি ,ট্রাজেডি 
সব জুড়ে কি দাঁড়াচ্ছে বুঝতে পারছি না ,
বাড়ির পাশের নারকেল গাছটা ঝুঁকে পড়েছে তোমার দিকে 
তুমুল ঝড়ে সব কটা ডালপালা ভেঙে গেছে। 
এত জোর 
সময়ের দুর্বলতার আগে মানুষ জীবটা মিথোজীবী। 
.
গান্ধীমূর্তিটা তৈরী হয়েছে এই রাষ্ট্রে কোথাও দাঁড়াবে বলে 
সবরমতি আশ্রম ,গঙ্গার ঘাট ,মহারাষ্ট্রের গান্ধী মার্কেট ,
দেশ সংশয়ে 
কোথায় দাঁড় করাবে মূর্তিটা ? 
মহান গান্ধীজী   ভাবছেন আমার কি  দাঁড়াবার  জমি টুকু নেই এই ভরতবর্ষে
না হিংসা নয় ,ত্যাগ   
গঙ্গার ঘাট ধরে গান্ধীজী   হেঁটে যাচ্ছেন জমির খোঁজে  
নিজের জমি। 
.
যোগ ,বিয়োগ ,ত্রিভুজ ,বৃত্ত আর সরলরেখা 
আমার  যোগটাই ভালো লাগে 
ভালো লাগে বৃত্ত ধরে তোমার চারপাশে সরতে ,
সেকেন্ড ,মুহূর্ত ,ঘন্টা। 
ঘড়ির কাঁটা ,পুরোনো ঘড়ি ,বালি ঘড়ি ,ক্রমশ হুড়মুড় করে 
ভেঙে পড়া নারকেল গাছটা তুমুল ঝড়ে ,
জানি শিকড় সরে না 
জানি আরো গভীরে যাওয়া আটকাতে পারে না তুমুল ঝড় 
তবুও গাছ ভাঙে। 
লেগে থাকে মাটি ছুঁয়ে শিকড়ের বাঁচা 
কিংবা বাঁচতে চাওয়া ,
ট্রেজেডি এটা সালোকসংশ্লেষে যুক্তি তৈরী হয় না 
তৈরী হয় জীবন। 

Thursday, June 4, 2020

নজ্জা না লজ্জা





নজ্জা না লজ্জা
....  ঋষি 
প্রধান মন্ত্রী ঘোষনা করলেন সোনার ভারতবর্ষ
আর সেদিন তিন সন্তানের মা ফুলমনি বিক্রি করলো তার তেরো বছরের মেয়েটাকে।
চেনেন আপনারা ফুলমনিকে
আসুন পরিচয় করিয়ে দি 
নাম ঃফুলমনি, বয়সঃউনত্রিশ, গ্রামঃমানুষের, জাত ঃ মানুষ। 
স্বামী চুরির অপরাধে  জেলে আজ তিনমাস 
দুই সন্তান অথচ তার পেটে আরেকটা পাঁচ মাসের। 
.
নিজস্ব সংবাদদাতা ভারতবর্ষ  পত্রিকা থেকে প্রশ্ন গেলো ফুলমনির কাছে
ছি !  আপনার লজ্জা করলো না আপনি না মা? 
ফুলমনির উত্তর দিল 
অ বাবু গো তুকে কি বুলি   ,তু বোল বাবু ? 
খাললি  পিট্যে  কি মা হউয়া হয়য় ?
 মা  হউয়া যায় পিট্যের খিদায় ? 
মরদ টা জিলে  গিছে পরান জুড়ায়ে ,
কি  কুরবঅ  গ্যেরামের মুড়োলের বুরাবর চুঅখ  ছিলঅ
গো ঝরণার দিকা ।
জানিস  তুঅ বাবু  ঝরণা মিয়াটা  গো ভালো দিখত্যে , 
গায়ে  গতরে আমার মুতো  ছিবরা লয় ।
দিলম বিগরি কুরে । 
খিত্যে পাবিয়ে ভালো বাঁইচবে ....
 আর ছিলাটা আর পিট্যের টও তু বাঁইচতে হবেক আমাদিগে ,
আর কি বুলিস গরিব মানুষের আবার নজ্জা , ন্যাংটা লুক্যেদের  নজ্জা
 হাসাইলি বাবু ,

.
প্রধান মন্ত্রী সেদিন ঘোষনা করলেন সোনার ভারতবর্ষ
তার বছর পাঁচেক পরে মানুষের গ্রামে  গিয়ে জেনেছি
ফুলমনির মেয়ে ঝর্ণার খোঁজ পাওয়া নেই গ্রামের মোড়লের কাছে
জিজ্ঞেস করায় মোড়ল বলেছে 
বদচরিত্র মেয়েছেলে মরেছে, মরেছে হয়তো কোথাও গিয়ে,
ফুলমনির স্বামীও ফেরে নি জেল থেকে,পালিয়েছে শহরে। 
এই ব্যাপারে ফুলমনিকে প্রশ্ন করায় জানতে পারলাম
ভালো আছে সে, শুধু তার পেটে যেটা ছিল বাঁচে নি
শুধু তার পেটে নাকি পৃথিবীর খিদে
আর গলায় একটু ব্যাথা
কারন গত রাত্রে আচমকা তার গলা চেপে ধরে ছেলেটা বলেছে
খিদে পেয়েছে, খেতে দে। 
 



পৃথিবীটা খুব সুন্দর



পৃথিবীটা খুব সুন্দর
.. ঋষি
 
পৃথিবীটা খুব সুন্দর তাই না
যান প্রশ্ন করুন গঞ্জের ঘাটে খালি পেটে নদীর  জলের দিকে তাকিয়ে 
থাকা বারো বছরের গরীব ছেলেটাকে,
যান প্রশ্ন করুন ওই বাগানের ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকা ওই মেয়েটাকে
যার ওই ফুলটা ভালো লাগছে না
তবুও সে তাকিয়ে ওই বাগানের রাস্তায় হয়তো তার সেই প্রেমিকের অপেক্ষায় 
যে ফিরবে বলে আর ফেরে নি আজ প্রায় দেড় মাস। 
.
একটা গুলির শব্দ 
শুনলেন সকলে,কিন্তু আপনারা মিস করলেন দৃশ্যটা
সে কারনে খগেন মাস্টারের শরীরটা পাওয়া গেল হাসনাবাদের কোন পচা পুকুরে
কারন তার  রাস্তার ধারের কুকুরগুলোকে কুকুর বলা উচিত হয় নি। 
পৃথিবী খুব সুন্দর তাই
আপনি এখানে সত্যি বলতে পারবেন না
অথচ ভোট দেবেন নিয়ম করে
কারন ভোট দেওয়া আপনার গনতান্ত্রিক অধিকার। 
.
পৃথিবী সুন্দর বলেই বোধহয়
আপনি মেনে নেন আপনার মায়ের মৃত মুখ পয়সার অভাবে, 
আপনি তাই প্রতিদিন ক্রমাগত অভ্যস্ত পেজ থ্রির যৌন কেলেংকারী শুনতে।
বাসের গাদাগাদি,বসের গালাগালি
একফোঁটা রক্ত আর ঘামের তফাৎ এ উপার্জনের মানেটা আপনি বোঝেন
অথচ তবুও মুখ বুজে মাসের শেষে সংসারে মুখঝামটা আপনি নিয়মিত শোনেন । 
.
দেখুন সেই বারো বছরের ছেলেটা এখনও কাঁদছে গঞ্জের ঘাটে বসে
ভাবছে জল থেকে উঠে আসবে তার মা
সে তার মাকে  জড়িয়ে ধরে বলবে দেখো বাবা আজ ঠিক চাল আনবে
দেখো আর কষ্ট হবে না মা। 
আমার কি মনে হয় বলুন তো 
আমাদের পৃথিবীটা এই কারনে খুব সুন্দর 
কারন আমরা আমাদের বাড়িতে আজও সাদা ভাতের গন্ধ পাওয়া যায়
অথবা এই সময়েও আপনি নিঃশ্বাস নিচ্ছেন বলে। 

গতজন্ম



সম্পর্ক (৩)
...ঋষি 

তোমার প্রাক্তনরা কোথায় ?
প্রশ্ন করেছিলে ,
প্রচুর পাপ করেছি চিরকাল আমি তোমার কাছে ,
সত্যি বলতে কি মানুষের পৃথিবীতে লুকোনো ভ্যলকানোতে  
কিছু পাপ ফিরে আসে বারংবার,লুকিয়ে পোড়ায় । 
কিছু মিল পাচ্ছো 
আসলে বর্তমানে বর্তমান এক ছাদের নিচে আত্মসমর্পন করে বাস করে 
বাস করে সমঝোতা। 
.
চলন্তিকা  বলে আমি নাকি কবিতা পাগল 
আমি অতি সহজে লিখে ফেলি আমাদের মাঝের কথা কবিতায় ,
কলকাতায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে কমবেশি ১০ হাজার লোকের বাস 
সেই শহরে আমি নাকি আকাশ পেতে দি বৃষ্টি ধরতে। 
আমি জানি না এসব 
আমি জানি   তুমি চিলে কোঠায় বসে মাঝে মাঝেই চুপচাপ আকাশ দেখো 
 কখনো কখনো খুঁজে বের করো তোমার পুরোনো লুকোনো চিঠি 
তোমার প্ৰাক্তন  প্রেমিক  
অথচ তুমি আমার উপর রাগ করে থাকতে পারো না
বলতে পারো না মিথ্যে আমায়। 
.
সত্যি বলো তুমি, আমাকে দেখতে পাও  না 
আমার দ্বিচারিতায় আমি আমার চলন্তিকার কাছে ধরা পরে মেঘ হয়ে যাই
তারপর বৃষ্টি। 
তবু সত্যি বলি আমি চলন্তিকাকে 
কে তুমি ?
.
কিছু সম্পর্ক তুমি হয়ে থাকে ,নামকরণ জরুরী নয় 
কিছু সম্পর্ক বুকের গভীরে থাকে তাকে সম্পর্ক বলা জরুরী নয়। 
গতবছর তুমি তোমার বর্তমান ছুঁয়ে ঘুরতে গেছিলে শিলং এ 
মেঘের শহর তুমি একলা দাঁড়িয়ে কি পেলে  ?
হাত পেতে দিয়েছিলে বৃষ্টিতে 
এক আঁচলা  জল 
চোখ টলমল 
তোমার বর্তমান আর প্ৰাক্তন শুধু চিঠি লিখে ছুঁয়েছে তোমায় 
কিন্তু তোমাকে লিখতে পারে নি।
.
আমার কাছে তুমি  ,চলন্তিকা সকলেই কবিতায় জীবিত থেকে যায় 
কিন্তু বিশ্বাস করো  
কিছু কিছু সম্পর্ক সত্যি লেখা যায় না। 

Wednesday, June 3, 2020

মানুষের শেষকৃত্য


মানুষের শেষকৃত্য 
... ঋষি 

যন্ত্রনাদের জন্য বুকে ছাপ্পান্ন ইঞ্চিতে অনেকটা ক্ষত 
আর বাঁচার জন্য মানুষের মানসিকতায় লুকোনো বিপন্নতা ,
খবরটা শুনলাম একটা হাতির মর্মার্ন্তিক খুন মানুষের জঙ্গলে। 
যে জঙ্গলে রোজ সকাল থেকে মানুষের বাঁচাটা একটা যুদ্ধ 
আর যুদ্ধে তো হারজিত থাকে 
বোকা হাতিটা বুঝতে পারে নি সে কথা। 
.
বোকা হাতিটা জানে না 
মানুষ নামক জীবটা দুটো ভয়ে বাঁচে প্রতিদিন ,
এক রোজ সকালে সে চোখখুলে পৃথিবীর আলো দেখবে কিনা 
আর দুই মানুষের জঙ্গলে অন্য কোন মানুষ তার ক্ষতি করবে কিনা। 
বোকা হাতি বোঝে কি সে কথা 
মানুষের বাঁচার এখন ভীষণ পছন্দের রং হলো লাল 
আর মোটেও সবুজ নয়। 
.
মানুষের নিশ্চয় এখন লজ্জা করছে 
একটা হাতি আর তার বাচ্চা আর দেখবে না কালকের পৃথিবী। 
তবে কালকের পৃথিবীতে 
খুব জোর লাইভ শো হবে ,হবে কথামৃতের  মতো হাজারো সভা ,
এতক্ষন নিশ্চয় হাতিটার শেষকৃত্য হয়ে গেছে 
কিন্তু কথায় আছে মরা হাতির দাম লক্ষ টাকা ,
এতক্ষন বোধহয় হাতির থেকে পাওয়া টাকা জঙ্গলের গর্ভমেন্ট ডিক্লিয়ার করেছে 
করোনা ত্রানে যাবে। 
কি বুঝছি আমরা ?
হাতিটা ভীষণ ভুল করছে ,ভুল করছে  গাছ ,পাখি ,পাহাড় ,নদী
তাই সবাইকে মেরে ফেলতে হবে। 
শুধু মানুষ বাঁচবে অন্ধকার একটা মৃত পৃথিবীতে 
আর মানুষ তাদের বুকের ছাপান্ন ইঞ্চি ঠুকে দাবি করবে 
তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এবং শক্তিশালী জীব 
তারপর সবশেষে পৃথিবীতে যদি আর কেউ জীবিত না থাকে  
মানুষ হত্যা করবে একদিন মানুষকে। 



সত্যি জীবন আর মিথ্যে শান্তি




নিমতলার চিতার আগুনে মানুষের বডি পোড়ে
অথচ কিছুতেই পোড়ে না নাভি, 
শুনেছি নাভির ভিতর মানুষের অভিমান লোকানো থাকে
আর একরোখা অভিমান কিছুতেই পুড়তে চায় না।
আরো অবাক কি জানো চলন্তিকা 
যে মানুষগুলোর আজ 
নাম আছে  মৃত্যুর পর সেগুলো সব বডি। 
.
চৌরাস্তার মোড়ে ভিখিরি মা তার চোদ্দ মাসের সন্তানকে চুমু খাচ্ছে
সেই সন্তানের বাবা অজানা,
সেই চোদ্দ বছরের শিশুটার বুকে, পিঠে ঘা পাঁচড়া
তার সারা শরীরে মাছি ঘুরছে 
তবু ভিখারি মা তার সন্তানকে চুমু খাচ্ছে। 
পথচলতি মানুষগুলো ভাবছে এর থেকে সুন্দর দৃশ্য কি হতে পারে 
অথচ জানো চলন্তিকা 
খিদের থেকে সত্যি কিছু হয় না।
.
অভিমান, সুখ, কষ্ট সব স্পর্শগুলো আজকাল আবছা লাগে বড়
মাকে দেখেছি আমাদের দুই, ভাইকে গলা অবধি গিলিয়ে
নিজে উচ্ছিষ্ট খেতে
তারপর বাসন মাজতে মাজতে চোখের জল ফেলতে, 
আর জানো চলন্তিকা আমার চোখের জল অসহ্য লাগে ।
আর সত্যি কি জানো চলন্তিকা  কোন জাতি উঠে দাঁড়াতে
মাথা, মন কিংবা গায়ের জোর ছাড়াও দরকার  বাঁচার ইচ্ছা। 
.
আমার খুব ইচ্ছে মৃত্যুর পর আমার নাভিটা তোমায় দেওয়া হোক 
কারণ আমি জানি তুমি ছাড়া কেউ বুঝবে না আমার অভিমানের মানে,
কি লাভ বলোতো  শ্রাদ্ধ, শান্তি করে আমাকে শান্তি দেওয়ার
বরং আমার অভিমানগুলো নাম বদলে শান্তি রাখা হোক। 
আসলে কি জানো চলন্তিকা শান্তির থেকে মিথ্যে কিছু হয় না
শুধু  আমরা ছুটি মিথ্যে শান্তির পিছনে 
সারাজীবন ছুটি,
শান্তি আগে আমরা আমাদের  জীবন নিয়ে  পরে থাকি অনেক  পিছনে 
হাঁপিয়ে যায় তবুও ছুটি 
কিন্তু দূরত্ব কিছুতেই কমে না আমাদের শান্তি আর জীবনের। 

কেউ কারো নয়

হঠাৎ করে কেউ হারায় না যে মেয়েটা বাড়িতে রোজ শাঁখ বাজিয়ে পুজো করে তার ও ইচ্ছে করে আকাশ ছোঁয়ার, ব্যাগ ভর্তি স্বপ্ন নিয়ে যে ছেলেটা বাজারে এসে দা...