Saturday, February 29, 2020

মনখারাপের এক থেকে দশ







মনখারাপের এক থেকে দশ
... ঋষি

উষ্ণতা ভাইরাল হলে
এক, দুই, তিন, মনখারাপের চিঠি তোমার উচ্চতায়।
আমি দাঁড়িয়ে থাকি তোমার বারান্দার নিচে
উপরে চোখ রাখি তোমার বাবার দেওয়া ট্রাংকে রাখা
তোমার স্বামী,তোমার সন্তানের পুরনো সোয়েটার,
তবু তোমায় আমি খুঁজে পাই চোখের উচ্চতায়।

 আসলে অনুভুবগুলো ভাইরাল হলে
তিন, চার, পাঁচ, দরজা আর জানলা বন্ধ অন্ধকার ঘর।
গাছেদের শুকনো শীতের কাছে ফুরিয়ে যাওয়া নষ্ট কাব্য
মুঠোফোনের স্ক্রিনে তোমার দিকে তাকিয়ে আজকাল ভয় করে
ভালোবাসার খসে পড়া আঁচল
আমাদের মন্দবাসায় যদি তোমার সংসার হয়ে যায়।

সমুদ্র চুরির গল্প থেকে যদি সেই মাঝি মাঝ মসনদে সমুদ্রে হারায়
ছয়,সাত,আট, তোমার আগুন ঠোঁটে সময় উধাও,
সমুদ্রের মাঝে আমাদের ঘর
ভীষন জল, ঝড়।
তারপর,
ভালোবাসা ভাইরাল হয়ে গেলে
স্মৃতির থেকে সমুদ্রের জলে শহর আঁকড়ে  মরি
তোমার কাছে রোজ হারি আমি সময়ের সাজানো ঘড়ি।

মনখারাপের ঘর
শুধু মাত্র দশ,,মানুষ সময়ের বশ।
নিয়ম করে খবর নিয়ো, জেনো আমি বেঁচে আছি।
আর তারপর
ভালোবাসা নিয়ম হয়ে গেলে কথা ফুরিয়ে যায়।

ঈশ্বর যখন জোকার


ঈশ্বর যখন জোকার
.... ঋষি

কতগুলো জোকার ঈশ্বর হয়ে গেলো
শহরের রাস্তায় পানের দোকানে বসা বিহারিটা ঈশ্বর হয়ে গেলো ,
হঠাৎ দুনম্বরি করে টাকা কামানো পচা ঈশ্বর হয়ে গেলো
ঈশ্বর হয়ে গেলো শহরের বেশ্যাপট্টির সেই খরিদ্দারটা।
ঈশ্বর শুধু দূর থেকে দেখলেন ,
হাসলেন
আর নিজেকে খিস্তি দিয়ে বললেন " শালা বেজন্মা আমি "।
.
পাশের বাড়ির কাকিমা তার প্রতিবেশী পঁচিশ বছরের কন্যার প্রতি
মুখ বেঁকিয়ে বললেন ,
ওই মেয়ে ঢলানি ,শুনেছি বারে কাজ করে।
আমি বুঝলাম ,আপনারা বুঝলেন
কিন্তু এইটা বুঝলেন না ওই মেয়ের কোমর দোলানো টাকায়
ওই বাড়ির কর্তার হাঁপানির ওষুধ কেনা হয়।
আমরা কেউ  ওই পাড়াতো কাকিমাকে বলতে পারলাম কই
আপনার বাড়িতে একই বয়সী মেয়ে আছে।
.
এমন তো অনেক আছে
ওই পাড়ার বুবাই সেদিন বসে উদোম মার্ খেলো পকেটমার বলে ,
সকলে বললো ওই ছেলের থেকে আর কি আশা করা যায়
অথচ আমরা কেউ জানলেন না মধ্যবিত্ত ঘরের বি এস সি পাশ ছেলে
আজ প্রায় পাঁচ বছর চাকরির জন্য ঠোক্কর খাচ্ছে।
সেদিন  ফরিদা গলায় দড়ি দিল
আমরা বললাম পেটে বাচ্চা ,অবিবাহিত মাগীর আর কি হবে ,
কিন্তু কেউ জানতে চাইলাম তার প্রেমিক তাকে কিভাবে ঠকালো।
অথচ সেই আমরা বিমল বাবুর বিয়েতে গিয়ে তার বৌমাকে  আশীর্বাদ করলাম
কেউ জানতে চাইলাম না এমন ধুমধাম করে বিয়ে কি করে সম্ভব।
শুধু পেট পুড়ে খেলাম ,ধন্য ধন্য করলাম
যেমন কে ঈশ্বরকে করা হয়
জানলাম না ওই টাকা গরিবদের বেকার ভাতা মেরে কামানো।
.
সব জানেন ঈশ্বর
তিনি তাকিয়ে দেখেন এই সব মানুষগুলো কেমন করে সময় হাসাচ্ছে ,
ঈশ্বরের মুখে তখন জোকারের হাসি থাকে।
ঈশ্বর ফিসফিস করে দাঁত  চেপে বলেন
পাপ আর মানুষ সহজাত
বেজন্মা এই  সময় গৃহপালিত ঈশ্বরের দাস।

নির্বাসন


নির্বাসন
.... ঋষি

নির্বাসিত ভাবনা
সোজা  খুলে দাঁড়ানো সম্পর্ককে ফাঁকে একটা অন্তরাল
দেশ ও দোহিত্র
শাস্তি এবং সংসদ।
নির্বাসিত বৈঠক শেষে সম্পর্কের মাঝে জমি
বিশ্বাস সরে যাচ্ছে নিতান্ত বেহায়ার মতো মিউজিয়ামের ঠিকানায়।
.
জমি মানে মাটি , মাটি মানে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে
সময় আজ শুধু নগ্নতা
নগ্নতা আজ শুধু অন্ধকারে।
অন্ধকার হাতড়ে শাস্তি পাচ্ছে দেশের বাইরে কেউ
কেউ বা দেশের মধ্যে থেকে জমি খুঁজছে।
অন্ধকার মানে সন্দেহ, মাকড়শা জাল
দুটো শরীরের মধ্যে থাকতে পারে অন্ধকার
কিন্তু মনে।
.
অন্ধকারে নগ্নতা যে পরিপূর্ণ
পরিপূর্ণতা  নগ্নতা নয় ,
সহজ পথে আলোর ঠিকানায় মানুষ সহজ অংক কষছে কঠিন করে
কঠিন করছে জীবন  আপোষ কিংবা  অভিনয়ে।
পাথরের মতো ঘর্ষণে আগুন
পাহাড়ে উঁচু নিচু খোঁচা কোথাও নিতান্ত সরল বায়ু করে যায় ,
প্রত্যেক মানুষের এমন একটা জায়গা দরকার
যেখানে সে নগ্ন হবে
যেখানে সে বলবে ভালোবাসি।
 যাকে আমরা ভালোবাসা বলি
সেই বৃত্ত ঘুরে এসে দেখি  – কী কেলেংকারি ?
পথ শেষ হয় না।
ভালোবাসা মানুষকে নির্বাসিত করে
কিংবা
ভালোবেসে মানুষ নির্বাসিত হয়ে যায়।

যদি আলো ফুরিয়ে যায়


যদি আলো ফুরিয়ে যায়
.... ঋষি

বর্ণ ,ভাবনা ,গর্ভ
কি ভয়ঙ্কর জুড়ে যাচ্ছে সময় ক্রমশ
তারপর কবিতা।
ভয় করে শব্দ জুড়তে জুড়তে যদি কখনো পাখি হয়ে যাই 
হঠাৎ আকাশ ভেঙে তুমুল দুর্দিন
আমার কলমের নিবে আর কোনো শব্দ নেই
নেই জীবন,নেই হৃদপিন্ড ।
.
ভাবলেই নিজেকে মৃত মনে হয়
চিনতে পারছি না আমার প্রিয় কবির মুখ ,প্রিয় কবিতা
চিনতে পারছি না সময়।
পৃথিবীটাকে তখন তুলোর তৈরী বাঘ মনে হবে 
যার পেটে লক্ষ-কোটি মৃত স্বপ্ন, যার পেটে লক্ষ-কোটি বোতাম
কথা হচ্ছে, স্বপ্নগুলো ঝলসে যাবে কিনা ?
আমি তখন ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকবো রাস্তার দিকে
চলন্তিকা কবে আসবে জানি না।
.
জানি এইসব কথার কোনো অর্থ হয় না
রাস্তায় বেরোলে হামেশাই চোখে পড়ে মানুষের ধড়ের ওপর প্লাস্টিকের মুখ
প্লাস্টিকের সাজানো হাসি।
শৈশবের হাত ফসকে, যে রঙিন বেলুনগুলো উড়ে গেল
 তার জন্যে দায়ী আমাদের না করা ভুল।
যিনি ইতিহাস প্রেমিক আর ভালোবাসেন অরণ্য
তারজন্য পৃথিবীর সময় নেই
সময় আজ দাঁড়িয়ে সস্তার প্রেমে ,মুঠোফোনের স্ক্রিনে আর লাল স্বপ্নে।
এখন কোনো বিদ্রোহ নেই
নেই মানুষের বুকের ভিতর ধুকপুক
শুধু মানুষের বুকে কান পাতলে আমি শুনি লোহালক্কড়ের শব্দ
আর চিৎকার
ঋত্বিক ঘটকের সময়ে শোনা " আমি বাঁচবো; আমার বাঁচতে বড় ইচ্ছে করে "।
.
জানি বর্ণরা  বেঁচে থাকে কবিতার অক্ষরে
কবিরা বেঁচে থাকে সময়ের ভাবনায় 
অথচ কবিদের কোনো ছুটিরদিন  নেই,
শুধু ভাবনা কবিদের  ঘুরে-বেড়ানোর জায়গা সময়ের অলিতে গলিতে।
জানি এইসব কথার কোনো মানে হয় না
অন্ধকার  থেকে আমাদের খুঁজে ফিরতে হয়  আলো।
কিন্তু আলো যদি ফুরিয়ে যায়
যদি লেখা না আসে আর
তবে  ......... ?

Friday, February 28, 2020

ঢেউ ব্যাখ্যান


ঢেউ ব্যাখ্যান
... ঋষি

ঢেউ -১
.
তোমার শহরে মেঘ ছুঁয়ে যায় ঢেউ
আমার বুকে নোনতা হলুদ স্বেদ ,
আমার শহর ভাঙতে ব্যস্ত ঘুম
শহর আলাদা ,সময়ের মতভেদ।
.
ঢেউ -২
.
মিষ্টি সময় বৃষ্টি বলে ডাকি
ঠোঁটের ঘরে রোগ ছুঁয়ে যায় কেউ ,
যদি তোমাকে বিবাগী বলে ভাবি
কেন বলছি বুঝবে সময় সেও।
.
ঢেউ -৩
.
আসলগুলো মিথ্যে হয়ে গেছে
চোখের ঘরে সময় শুয়ে আছে ,
আমি শুধু ভাবতে থাকি মনে
সময় বলে সত্যি কি  কেউ থাকে ?
.
ঢেউ -৪
.
ব্যস্ত আমি ,ব্যস্ত তুমি
বাঁচার গল্পে জীবন একটা দ্বেষ ,
স্বপ্ন ছুঁয়ে আদর আমার ঢেউ
আসল গল্প জীবনের বিদ্বেষ।
.
ঢেউ -৫
.
এখন আমি ভাবতে পারি মনে
ঢেউয়ের পরে ঢেউ ছুঁয়ে যায় কেউ ,
আসল গুলো মিথ্যে করে রাখি
মিথ্যে জীবন সত্যি জানে সেও।
.
ঢেউ -৬
.
এসব কথা বললে পরে জানি
নিন্দুকেরা সবজান্তা সব।
সমুদ্রটা একলা যত্নে রাখি
বুকের খাঁজে বাঁচার কলরব।




.

বেলুনওয়ালা


বেলুনওয়ালা
.... ঋষি

কথা ছিল সাথে থাকবে
কথা ছিল না আমি লিখবো আগুন সময়ের পুরোনো কাগজে।
কথা ছিল একটা ছবি আঁকা হবে
আকাশে গায়ে বেলুন লাল ,সবুজ  ভাসিয়ে শহরটাকে বদলে দেওয়া হবে ,
কিন্তু আজও সেই বেলুনওয়ালা শহরের রাস্তায়
স্বপ্ন ফেরি করে।

আজও দেখো  ধ্বংসের পাশে জেগে আছে অনেক রাস্তা
আজ দেখো  কত পলাশের ফুল ,কতো  সবুজ স্বপ্ন শহরের মিউজিয়ামে রাখা ,
যে মফস্বলে  ট্রেনটা  বাতিল হয়ে গেছে বহুদিন
আজও দেখো  সেই ট্রেন স্টেশনে অন্ধকারে মাঝরাতে আসে
হুইসেল বাজিয়ে জানান  দেয়
আজও আশা বেঁচে  ,
প্যাটফর্মের পাশের চায়ের দোকানে তখন এক টানা বেজে চলে
" দিল তো প্যাগাল হ্যা ,দিল দিবানা হ্যা  " ।

কথা ছিল পাশে থাকবে
যেমন থাকে দিনের পাশে রাত আর সময়ের গভীরে নিশ্বাস ।
কথা ছিল না আমি একলা দাঁড়িয়ে মাঝরাস্তায় নিয়ন বুকে
শহর লিখবো ,
শহরের কোনো ছোট খুপরিতে তখন লোডশেডিং ,
ঘরের মাঝে একটা শিশু কাঁদছে
আর মা বলছে ভয় পাস্ না খোকন " আলো ঠিক চলে আসবে "।
আজ আর স্টেশনের নাম মনে পড়ে না
আজ আর ট্রেনের নামটাও মনে পরে ,
হঠাৎ মাঝ রাতে মনে পরে
এই শহরের রাস্তায় একজন বেলুনওয়ালা প্রেমিক হয়ে গেছিল
যে আজও আকাশে গ্যাসবেলুন ওড়ায় ,ওড়ায় জীবন
যে আজও অন্ধকারে আলো খোঁজে।


পুজো


পুজো
.... ঋষি

এভাবে হয় না পুজো
গোলাপী ঠোঁট ,লিপস্টিকের  ডাক ,তাঁতের শাড়ি ,
কোলকাতা আবার কলকাতা হয়ে গেছে
তবু মানুষের পুজোগুলো শুধুই ধর্ম আগলে ।
পৃথিবী গুগুল সার্চ ইঞ্জিনে আজ চাঁদের কাছে পৌঁছে গেছে
তবু পুজো করতে আজও গঙ্গাজল  লাগে।
.
পুজোর কথা মনে করতে
আমার মনে পড়লো মফস্বলের সেই পুজোর  মেলার কথা ,
যেখানে তোমাকে আমি প্রথম দেখি তোমার প্রেমিকের সাথে।
তোমার মুখের হাসি
খেলার মাঠের পাশে সেই ঝোঁপ আগলে তোমার প্রথম চুমু
প্রেমিকের বুক ঘেঁষে আকাশে দেখা স্বপ্ন ,
সবটাই আমি লুকিয়ে দেখি আমার ভাবনায়।
আজ সেই তুমি ,তোমাকে গভীর থেকে ছুঁয়ে দেখি হিংস্র অগ্ন্যুপাত
কতটা হিংস্রতা লেগে আছে তোমার গোপনে
কষ্ট নষ্ট হৃদয় ।
.
সময় আজকাল  বড় দু:খের কথা বলে
চুপিচুপি গাছেদের অন্ধকার শিশিরের ভালোবাসা লেগে থাকে জানি।
নি:সঙ্গতা চিরকাল  প্রেম জন্ম দেয়
জন্মানো অন্ধকার খুঁজতে থাকে অধিকার " খোলা আকাশ " ,
আকাশের গায়ে ঘরে ফেরা পাখিটা জানে সময়ের দুঃখ।
অন্ধকারে শাঁখ বাজতে থাকে
মানুষ আবার নিঃসঙ্গতায় ঈশ্বর খোঁজে নিজের গভীরে।
এগুলো গোপন কথা
বলতে নেই ,
আমরা দুজনে জানি
ভালোবাসায় ছুঁয়ে থাকা স্পর্শগুলো আসলে মানুষের পুজো।
আর পুজো বলে মানুষ যেটা করে সকাল ,সন্ধ্যা
সেটা আসলে ভয় ,
মানুষের মৃত্যুর।

সিস্টেম থেকে ষড়যন্ত্ৰ


সিস্টেম থেকে ষড়যন্ত্ৰ
.... ঋষি

সিস্টেম থেকে ষড়যন্ত্ৰ
বিশ্বাস হচ্ছে না জানি ,আমারও হয় নি।
কিন্তু সময়ের সাথে এমন কিছু হয়েছে বা করেছে সময়
আমি বাধ্য ,
ওই সিস্টেম ,ওই নিয়ম মেনে
মা কে মা বলতে,তোমাকে প্রেমিকা বলতে।
.
ওই একই সিস্টেম আমাকে আমার  সাত বছরের ছেলে
বাবা বলে ডাকে।
প্রশ্ন করি নি কখনো আমি বা আমার ছেলে
শুধু অনুসরণ করেছি বানানো সিস্টেম।
কিন্তু আমি ছেলেকে শিখিয়েছি সময় হলো বড় ভিখিরি
তাই বলে আমি আমার ছেলেকে রাষ্ট্র চেনায় নি
চেনাতে চেয়েছি সময়ের মানুষ।
.
আমি তোমাকেও বলছি চলন্তিকা ওই সিস্টেমের কথা
ভালোবাসা সময়ের গায়ের গন্ধ শোঁকা ,
ভালোবাসা স্বাধীন না হলে আবার সেই সময়ের স্বাধীনতা আন্দোলনে ফেরা
আবার সেই বন্দুক ,দেশভাগ ,খিদের মড়ক
রক্ত ,প্রেমিকের মৃত মুখ ,শুকনো গোলাপ ,ব্ল্যাক আউট,মন্বন্তর।
.
পৃথিবীতে তুমি সব থেকে বেশি ঠকেছো কার কাছে
আমি ভেবে দেখছি ,সময় মানুষকে সবসময় ঠকায়।
প্রতিবেশী নাটকের মুখোশে
আমরা শুধু যুদ্ধে যুদ্ধ খেলেছি
কিন্তু দুঃখ পেয়েছি ছক্কা পড়লো না বলে লুডোর দানে।
আসলে ষড়যন্ত হলো সিস্টেম
যা চক্রব্যুহ রচনা করে হত্যা করেছে বারংবার সময়ের অভিমুন্যকে।
তবুও মজার ব্যাপার হলো
মহাভারত আমাদের ধর্মগ্রন্থ আর ছেলেকে আমি ওই গল্পই বলি।


  

Thursday, February 27, 2020

নষ্ট ঈশ্বর


নষ্ট ঈশ্বর
... ঋষি



যেহেতু আমি সময়  কিংবা মহাকালে দাঁড়ানো সেই লোকটা
যার হাতের ডুমরুটা আজ বহুদিন নষ্ট হয়ে গেছে।
ঈশ্বর শব্দ করতে ব্যর্থ
তাই মানুষ আজ নিজের মতো করে ধ্বংসে ব্যস্ত।
ঈশ্বর নষ্ট তাই
সময়ের প্রসব বেদনায় যখন তোমার রক্তাক্ত জরায়ু
সেখানে  নোঙর ফেলেছিল তোমার অযোগ্য প্রেমিক।



আমার সাথে সঙ্গমকালে আমার কয়েক ফোঁটা মৃত্যু
তোমার উত্থান হতে পারে নি ,
জানলার পর্দায় রেখে আসা আমার অদ্ভুত সন্তানরা আজ মৃত
সভ্যতার চাকায় আজকাল সব ধুয়ে যায়
ধুয়ে যায় ডিটারজেনে লুকোনো ঈশ্বর।



আমাদের শেষ দেখাতে আমি তাকিয়ে ছিলাম সময়ের গভীর মাটিতে
তোমার ডানায় হাত রেখে আমি ভাসছিলাম
ওপর থেকে দেখা ঈশ্বরের চোখে সময়ের বুক ফাটা কান্নার জন্ম তখন।
হেঁটে এসেছিলাম আমি অন্ধকার শহুরে পথের গুহায়
আমার পায়ে লেগে জন্মের অভিশাপ।



নারী গুহার দাম বেড়েছে গত কয়েকবছরে
সেখানে নাকি জন্ম হয়েছে হাজারো সভ্যতার মৃত সন্তানের মুখ ,
জন্ম নিরোধকের দাম কমেছে
সভ্যতা নারীর হাতে  তুলেদিয়েছে জন্ম নিরোধক পিল।
সত্যি কি জানো
তোমার কষ্টের  মুখ আমাকে দিয়েছে কবিতায় যন্ত্রনা ,
আমি সেই নষ্ট ঈশ্বর
যে তোমার গভীর যোনি থেকে তুলে নিয়েছে সময়ের বিষ।



মন্দিরে আমাকে ঢুকতে চাই নি কখনো
আমার বিশ্বাস ঈশ্বর সর্বদা মানুষ হয়ে যায় মন্দিরে বসে।
আজানের ধ্বনি আমার ভালো লাগে
ভালো লাগে দূর শুনতে পাওয়া তোমার ফিসফিস মিষ্টি হাওয়ায়।
একজন ঈশ্বরের দালালের সাথে আমার কথা হয়েছিল একবার
সে বলছিল বিছানায় ঈশ্বরের ঘুম ভাঙে
নিজের ধ্বংসে
যেমন আমারও ভেঙেছে তোমার সাথে গভীর মিলনে।



আমার সমস্ত ঘৃণা ,সমস্ত অভিশাপ তোমার ডানায় লিখে দিলাম
আমি মানুষের মতো ভালোবাসতে পারবো না কোনোদিন
কারণ ভালোবাসলে আমি ঈশ্বর হয়ে যাই।
আমার ডমরুতে আজ বহুদিন নষ্ট ও নিস্তব্ধ
শুধু জানি না
আর আমার ভাবনায় তুমি কখন  গর্ভবতী হয়ে জন্ম দেও কবিতা।


প্রথম নারী ইভ


প্রথম নারী ইভ
... ঋষি
প্রথম প্রেম কবে জন্মালো?
সময়ের ক্যালেন্ডারে আঁচড় টেনে দেখি পৌরাণিক আমি,
প্রথম ইভ ছুঁয়ে ছিল আমায়।
অবাক হয়ে ভাবি প্রথম চোখের জল জন্মালো কবে
প্রথম জন্মের নারী ইভের চোখের কোনায় জলাশয়
আমার প্রথম প্রেমিকা।

নারীকে কেউ নীরা বলে,কেউ আকাশলীনা, কেউ বা চলন্তিকা
আমি ভাবি জন্মের শ্লোক,
তারপর যত বৃষ্টির জল, তাদের সুখ  দুঃখ দিয়ে তৈরী
কান্না রঙের আবির,,,,ফিরোজা।
প্রথম কষ্ট জন্মালো কবে?
যেদিন বিষফল, ইভ তুমি পোশাক পরতে শিখে গেলে।

আমার নষ্ট প্রেমের হাত ধরে নষ্ট বোধ
জলছবি,
বদলানো সময়ের হাত ধরে সন্ধ্যে নামছে  শহরে।
পাখিদের ঠোঁট কেঁপে উঠছে, ইভ তাকাচ্ছে না ফিরে আমার দিকে
আমার জন্ম প্রেমিকা,
সভ্যতায় লিপস্টিক, কাজলে সাজানো।
অভিশপ্ত না অভিশাপ
প্রেম ?
প্রতিশ্রুতি নদীর সেই কাঠের সাঁকোর ওপারে দাঁড়ানো তুমি
 ইভ তুমি আয়নায় চুল আঁচড়াচ্ছো
ডুবে যাচ্ছো নদীতে।

ছায়া মাখা মায়ার বিছানা,জ্যোৎস্না মাখা ঈশ্বর
বোধ,
ইভ তুমি আমার চোখে পৃথিবী দেখতে কোনদিন
আজ তোমার ঔরসে ঈশ্বরের সন্তান
ইভ সভ্যাতার প্রেম শব্দে তুমি এইভাবে নষ্ট হয়ে গেলে।


   

Wednesday, February 26, 2020

মৃত্যুর ফটোফ্রেম

মৃত্যুর ফটোফ্রেম
.. ঋষি

প্রতিটা মৃত্যুতে স্নেহ জড়ানো থাকে
স্নেহ পিতা,মাতা,সন্তান কিংবা স্মৃতির অধিকার।
প্রতিটা মৃত্যু  সময় ভেদে একলা থাকার ইতিহাস
শুধু থমকানো সময়ের কাছে মৃত ফটোফ্রেমের অবকাশ।
.
মৃত্যুর কোন দেশ হয় না
মৃত্যুর পরিচয় মানুষের পৃথিবীর কাছে শুধু হারিয়ে যাওয়া।
মৃত্যু নিজের কাছে নিজেই একলা
সেখানে হারানো পৃথিবীতে একটা প্রশ্ন থাকে
সব শেষ, এইবার?
.
কাঁদছে যারা নিতান্ত আপন
আমি, তুমি, আমরা সেখানে সব অন্যজন।
পুড়ে চলা  কটু চামড়ার গন্ধ
অগরু, আতরের সাথে মানুষ লুকোয় পরিচয়,লজ্জা আর
শেষটুকুতেও মানুষ সামাজিক সাজতে চায়।
.
মৃত্যু শুধু তোমার, আমার নয়
মৃত্যু নিজেই একটা পরিচয় প্রতিটা মানুষের কাছে।
সময় সেখানে মুল্যহীন
স্মৃতির ফটোফ্রেম  একটা অধিকার হয়ে থেকে যায়।
.
.
(গত রাতে আমার এক বন্ধুর বাবা মারা গেল, তার আত্মা শান্তি পাক।) 
.. ঋষি

বারুদের গন্ধ



বারুদের গন্ধ
... ঋষি
থাক না
আমাকে আর ছিঁড়িস না কুত্তার মত,
কি খুঁজছিস,কেন খুঁজছিস?
সময়ের দোষ, সবটাই আমার বুকের কেবিনে রাখা  বারুদ।
নাড়িয়ে দিলেই বিস্ফোরন,
তুই কি চাস আমি কাঁদি? চলে যাচ্ছে চলন্তিকা।

মাথার ভিতর আমার অন্ধকার সিঁড়ি
সিঁড়ির অপারে চলন্তিকা দাঁড়িয়ে আলো,আঁধারিতে,
আমি শুধু রৌদ্র খুঁজি
নিজের রক্ত শুকনো করতে আমাকে কুকুর হতে হয়।
কুড়োনো বুকের খিদে
খিদে লেগে থাকে সভ্যতার দেওয়াল চুলকিয়ে আমার কলমে
শুকনো রোগ
যোগ বিয়োগ।

থাক না
যেদিন মন খারাপের বৃষ্টি, যেদিন আয়নায় দেখা প্রেম আমার শরীরে
সেদিন বলবো।
আমি দেখছি ফুল ফুটছে অথচ শুকনো রজনীগন্ধা,
আমি দেখছি তুই নিজেকে খুঁজে পাচ্ছিস আমার শব্দ জব্দ  পৃথিবীতে।
তোর বুকে সুপ্ত বাঁচা
কারন গরম ভাতের মধ্যে প্রত্যেক মা বাবা উপুড় করে দেয় নিজেদের আকাশ,
তোর শুকনো চোখে ভয়
তোর সময় জুড়ে শুধু শুকনো রজনীগন্ধার গন্ধ

আর ঠোঁটে রক্ত।
তুই রক্ত বমি করছিস
আমি চাটছি রক্ত কুত্তা হয়ে,চিৎকার করছি মাঝ রাত্রে
তোর পাড়ায় চোর এলো বলে।


আওদিপাওস


আওদিপাওস
... ঋষি

সময়ের মাটিতে প্রেমিকার লাশ পুঁতে লাউ ডগা গাছ
উঠে দাঁড়াতে হবে।
প্রেমিকের সৎকার
পুরনো অধিকারে ফ্লপ গল্প,শব্দগুলো চিৎকার করতে পারে  না
তাই বেশ
রোমান কাঠের ঘোড়ার গল্প আজও মহাকাব্য সারা পৃথিবীতে ।

চলন্তিকা তোর বুকের মাংসপিন্ডগুলোর মাঝখানে
একটা উপত্যকা
মুখ ডুবিয়ে দেবো মানুষরুপে শয়তানের দাঁতে গ্লাডিয়েটর।

ক্ত
লিখতে পারছি না আর সময়
ক্ষমা করিস আমায়,
আমার কবিতায় আমি ন্যংটো পুরুষ শুধু সময়কে মিথ্যা করতে চাই
বাকিটুকু রোজকার।

আমার জন্মের  ডাইরিটা ডাইনোসরস নিয়ে গেছে
একটা গা ছমছমে  রোমান্টিক বিকেলে আমি রোমান্স খুঁজছি,
বারংবার তোর কলঘরে
শুনতে পাচ্ছি তোর  চানের শব্দ।
গড়িয়ে নামছে জল, লাল শব্দে বালিশে মাথা রেখে তোর শীৎকার
ছোটলোক আমি।
তোর গোল গল্পের গোল মিটিং এ
আমি শুনতে পাচ্ছি সামাজিক,প্রাদেশিক, রাষ্টীয় জাতীয় সংগীত
সময় যেখানে আওদিপাওস
সেখানে আমি তোকে চেপে ধরছি তোর দুই উরুর ফাঁকে,
শব্দটা সময়ের চেনা
শুধু অধিকারে উঠে আসছে অন্য মুখ।

কথপোকথন


কথপোকথন
... ঋষি

একটা মধ্যবয়সী বিকেলে
একজন পুরুষ আর নারী কথপোকথনে  রত,
সম্ভাব্য কারণ শুধুই কিছুটা ভালো সময় কাটানো নয়
একটা অভাব কাজ করে।
অভাব সময়ের, অভাব উপস্থিতির কিংবা  অনেকটা না পাওয়া
কিংবা নিজেদের অতৃপ্তি ইতিকথা।

ওদের  কথোপকথনে  উঠে আসে  পাথরের শব্দ
ঝড়ের প্রকৃতি সামলে আবহাওয়া সংবাদে পাওয়া যায়
গাছ ভাঙার সংখ্যা , মৃত্যুর সংবাদ
কিংবা
উঁচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে একে অপরে চিৎকার করে নিজের নাম ধরে
নামগুলো মিলে যায়, পদবী বাদে।

সময়ের কথপোকথনে 
শহরের মধ্যে যতবার  সম্পর্ক ভাঙতে দেখেছি
তারথেকে বেশিবার অন্যদের হাত ধরে ঘুরতে দেখেছি।
ইতিহাসে কত প্রেমে, অজস্র মৃত্যু, প্রতিহিংসাতে
স্তরে স্তরে যুগে যুগে নেমে এসেছে গুপ্ত প্রস্তাব
গুপ্ত হত্যা।
সময় ইতিহাসকে সাক্ষী রাখে ভবিষ্যৎ পথচলায়
পথচলা ফুরোয় না
ফুরোয় না কথপোকথন ।
শুধু গুপ্ত সংখ্যাতে বাড়তে থাকে প্রচেষ্টা বেঁচে থাকা
আসলে পৃথিবীতে বায়ুশুন্য স্থান থাকে না কখনো।
শুধু কথপোকথন গুলো কখন যেন অভ্যেস হয়ে যায়
আর অভ্যেসগুলো বাঁচা।


Tuesday, February 25, 2020

মনখারাপের বিকেল


মনখারাপের বিকেল
... ঋষি

কতগুলো মনখারাপের বিকেল
আয়নায় মুছি কোনো দূরত্বের চোখে পড়ন্ত বিকেলের আলো।
তোমার রান্নাঘরে দুধ উতলে ওঠে
সভ্যতা ভাবে মাংস দিয়ে সাজানো নারী শরীরে কাম ,
আমি খুঁজি নিঃশ্বাস
কিন্তু গরম দুধে আমি ঠোঁট ঠেকাতে পারি না।
.
বহুদিনকার কথোপকথন
হঠাৎ হারালে জীবন যেন একটা শুকনো গাছ হয়ে যায়।
হৃদপিণ্ডের গোড়ায় জল দিয়ে
যদি হৃদপিন্ড সংসার হয়ে যেতো তবে নার্সিংহোমগুলো বিদ্রোহ করতো ,
তোমার ঘুমের ওষুধে তাই আজকাল আফিম লাগে
আমার নেশায় লাগে তোমার ঠোঁট।
.
নিতম্ব ছুঁয়ে নেমে যাওয়া স্নেহগুলো
তোমার বুকে হঠাৎ জন্ম নেওয়া  কালো ফুলটা আমি চিনি
আমি চিনি
জন্মের ভুল।
সেই ইলিউশানগুলোই খুঁজে পাওয়া যায় অনেকগুলো মায়াবী ব্যালকনির
আশেপাশে প্রজাপতি পুড়ছে মধ্যবর্তী দূরত্বে
তোমাকে চুমু খাবো কোনো একদিন
যেদিন পৃথিবীতে সমস্ত মতলবি সার্টিফিকেট ফেরার।
.
শেষ বিকেলের নিঃশ্বাস বেয়ে যে সিঁড়িটা
ঠিক তোমার বাড়ির আটকে যায় ,তোমার ব্যালকনি ,তোমার ফুলের টব ,
সেখানেই শুরু আমাদের  হাইওয়ের এই  প্রাচীন উপন্যাস।
আমার শিরা উপশিরায় কিছু নাস্তিক রক্তপ্রবাহ
আর মাত্রাধিক গভীরে  নেশা অদ্ভুত এই  স্নায়বিক আন্দোলন ছিঁড়তে চায়
ছিঁড়তে চায় তোমার জালিকাহীন রিংরোড
আর কিছুক্ষনের কথোপকথন।
ফেরোমেনার প্রসব বেদনায় ভিজে যাওয়া
এই আট মাস শুধু আমার কবিতায়।



জনসংকুল শহর


জনসংকুল শহর
.... ঋষি
লেখা ক্রমশ ঘিঞ্জি বস্তি
কে রাখে খবর?  কে পড়ে আজকাল?
বাজারের মত বয়সের ভার বেড়ে যাচ্ছে  জনসংকুল শহরে
যেন কুমারী মাতার না বলা কথাগুলো অনবরত উচচারিত জীবনে।
সময়ের থেকে উঠে যাচ্ছে পুরোনো ভাষা
 দৃশ্যের আলসেমি ভেঙে ক্রমশ এগিয়ে চলেছি আমি সময়ের জরায়ুতে।
.
সবটাই সময় আমার কাছে আর স্মৃতি
 পুরনো শহরের মতো কিছু আবিস্কার বাজারী বেঁচে থাকার  কাছে।
চলন্তিকা তুমি মিথ্যে বলতে পারো না
গোপন কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই আমি রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ায়
এটাই অভ্যেস।
 তুমি তো জানো চলন্তিকা ধানের ভিতর আমার প্রেমিক অভ্যেস
প্রতি রাত্রে বিছানা হাঁতড়ে আমি পাই সাদা ভাতের গন্ধ।
.
লেখা আমার ক্রমাগত রক্তাক্ত
সময়ের ব্ল্যাকআউট আর  নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রেম, পাখি আর আকাশ অপরাধ।
জীবনানন্দ শুয়ে আছে সময়ের শহরের নিচে
শক্তি বাবু আর জয় বাবু বৃষ্টিতে ভেজে এই শহরে নিয়মিত
সুনীলদা হাত বোলায়  কবিতার বুকে
 আর আমি লোভাতুর পুরুষ শুধু পুড়ি তোমার শাঁখা, সিঁদুরের আছিলায়।
 সেই নারী, সেই শহর
জানা মিথ্যে,  না বলতে পারা সত্যি
আমার কবিতা শহরের কাঠগড়ায়, শুধু নোংরা হয়ে যায়।
আসলে নিংড়ে ফেলা অনুভব, অভিব্যাক্ত,অন্ধকার সময়ের সাক্ষী
এগুলোর সত্যি কি কোন পাঠ হয়?
কে তবে পাঠক ?
কে তবে কবিতার পাঁজরে ঢুকতে চেয়ে তোমার মতো বেঁচে থাকতে চায়
শুধু  আলোর উদাহরণ হয়ে ? 

চলন্তিকা, আমি আর অনুভব


চলন্তিকা, আমি আর অনুভব
...ঋষি
অনুভব নিয়ে কথা হচ্ছিল চলন্তিকার সাথে
অনুভব নিজ মাত্রিক ভাবনায় সময়ের রজনীগন্ধা।
রজনীগন্ধা আমার প্রিয় ফুল
জন্ম থেকে বিবাহবার্ষিকী কিংবা মৃত্যু সাক্ষী সুগন্ধ
যেমন প্রতিটা অনুভবের আলাদা গন্ধ।

 যখন আমাদের আর দেখা হবে না
তখন অনুভব?
ইন্দনেশিয়া থেকে ভিয়েতনামে বোমা বৃষ্টি
না জানি না কি মনে হয় যখন নিজের দেশ, ফসল,মানুষ পুড়ে যায় যুদ্ধে।
কিংবা আফ্রিকার অরণ্য , মিশরের মাটিতে পা দিয়ে
কি ভাবে অবাক হয় মানুষ।

 ভ্যানগগের তুলির টান,ভাস্কোদাগামার পৃথিবী আবিস্কার
শান্তিনিকেতনে রাখা রবিঠাকুরের  কলম,শক্তি বাবুর হাতে দেশী মদ,
সেই বুলেট, সেই ট্রামলাইন,সেই কফিশপ,সেই কলেজস্ট্রীট,
সেই তুমি, আমি আর অনুভব।
পৃথিবীর সমস্ত তার সব দুম করে ছিঁড়ে গেলে,দুম করে শব্দহীন পৃথিবী
নদী আর বিশাল সমুদ্রের  জন্য অনুভব।
কত শব্দ এখনো অজানা,কত কবিতা পড়া বাকি
চাকদার যমুনা নিয়মিত শেয়ালদায় সব্জি বিক্রি করে
কত মানুষ এখনো অজানা।
সকালের ঘুম ভাঙা,তোমার মুখের হাসি চলন্তিকা
তোমার থেকে মাইলস্টোন দুরে দাড়াঁনো একা বাঁচা
সবটাই অনুভব তাই না।

Monday, February 24, 2020

শুনতে পারছো বাবু


শুনতে পারছো বাবু
..ঋষি

ও বাবু শুনতে পারছো ?
চিনতে পারছো গো আমায়,কেমন আছো বাবু?
.
জানতে ইচ্ছে করে রোজ
বলা হয় না শুধু ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে তোমার গাড়িটা  ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যায়।
রাত হলে তোমার প্রাসাদের পাশের বস্তিতে আমরা ঘুমোয়
আমরাও বাঁচি।
শুধু দুর থেকে দেখতে পাই তোমার প্রাসাদের বারান্দায় কতো আলো, পার্টি চলে রাতে
তুমি জানো না এ সব কিছু
শুধু খুব রাত্রে তোমার দারোয়ানরা আমাদের তাড়াতে থাকে
কেন বাবু এমন করে দারোয়ানগুলো?
আমরা তো শুধু তোমাদের ফেলে যাওয়া এঁটোগুলো
খেতেই যাই।
.
মাঝে মাঝে আমারও বসন্ত জাগে বাবু
যখন তোমার লোহার বিশাল দরজার ভিতরে সবুজ লনে তুমি  তোমার প্রজাপতিকে জড়াও
আমারও ইচ্ছে তোমাদের আমার পৃথিবীর এঁটো পাতা চাটাতে।
না বাবু লজ্জা করে না মোটেও
কারন বাড়ি ফিরে আমার রোজ শুনতে হতো পটার মার কাছে
দেখো কি ভাবে ভালোবাসতে হয় ?
কিন্তু আমি পটার মাকে কখনো  বোঝাতে পারি নি
ভালোবাসা সুগন্ধে জন্মায়
আর আমাদের মতো বাঁচাগুলোতে শুধু খিদে জন্মায় আর জন্মায় অভিশপ্ত কাম।

জানো বাবু পটার মাকে আমি বাঁচাতে পারলাম না
সেবারের শীতে করপোরেশনের হসপিটালে  পটাকে
জন্ম দিতে গিয়ে বউটা মারা গেলো।
ডাক্তার বলেছিল শক্ত ব্যামো,শরীরে নাকি রক্ত নেই,
অনেক টাকার ব্যাপার।
গেছিলাম তোমার কাছে মদত নিতে
কিন্তু তুমি দেখাই করলে না
তোমার চাকর এসে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিলো যেন আমি মানুষ না।
কেন দেখা করলে না সেদিন বাবু ?

জানি বাবু আমরা মানুষ না,কিন্তু বাবু আমরাও মানুষের মতো দেখতে
জানি বাবু আমরা শুধু এ দেশের ভোটার লিস্টিতে কিছু  বোকা সংখ্যা
আমাদের জন্ম মৃত্যু হিসেব কেউ রাখে না বাবু।
কিন্তু বাবু আজ সকালে তোমার গাড়িটা  পটার উপর দিয়ে চলে গেলো
একবার দাঁড়ালোও না।
আমি থানায় গেছিলাম রিপোর্ট লেখাতে
 তাড়িয়ে দিলো।
এখন কি করবো বাবু ?
আমার যে ক্ষমতা  নেই তোমাকে খুন করি
কিন্তু তোমাদের খুন করতে আমার খুব ইচ্ছে করছে।

সময়ের প্রেমিক


সময়ের প্রেমিক
...ঋষি

সত্যি জীবিত আমি
সাধ্য,অসাধ্যের মাঝে একখানা সেতু আছে বেচেঁ,
ক্রমশ চোখে ফুটে ওঠা জন্মের পাপ।
সময়ের প্রেমিক আমি
তারপর অনেক কথা বলা হয় না তোমায়
শুধু সময়ের কুঠরিতে একলা থাকা আমার অনেকগুলো বছর।
.
 তোমার জীবন বোধ আরো  গভীর হোক চলন্তিকা
জীবন হাঁটি, হাঁটি পায়ে হাসতে থাকুক আমার প্রতিটি বেঁচে থাকার আগে,
সময় লাইনে গিয়ে দাঁড়াক
আমার পুরুষ বুকে জন্ম নিও তুমি আজকের মতো।
 যাতে আমার  মৃত্যু চেতনা দ্রবীভূত হয় অনায়াসে
যাতে আমার অনুভূতির বিস্তারে সময়ের বুকে দাবানল,
পুড়িয়ে দিক সভ্যতা
পুড়িয়ে দিক মিথ্যা।
সত্যির কবিতা এটা
এটা সময়ের অন্য জন্মের কবিতা।
.
যন্ত্রনা পুড়ুক আমার মত্যু ঠোঁটে
 আগুন, অস্থি, গঙ্গাজল, বৃষ্টি, যা কিছু সবুজ ও সহজ, যা কিছু মিষ্টি,
সব জাগ্রত হোক তোমার কল্পনায়।
সময়ের প্রেমিক আমি
অন্ধকার কাপালিক হয়ে আমি নাচতে থাকি আমার আগামীর শবে,
 নিয়ম মানা আর না মানার মাঝে
তুমি জন্ম নিও বারংবার আমার আগুন ঠোঁটে ।
.
পড়ে যেতে যেতে উঠে দাঁড়াও, উঠতে উঠতে জিরিয়ে নিও তুমি সত্যি অভ্যেসে
সময়ের কপালে চুমু খেয়ে,সময়কে হাত ধরে টেনে নিও তোমার গোপনীয়তার  পাশে।
তারপর আগুন জ্বালো
পুড়িয়ে ফেলো আমায় ,
শুদ্ধ হোক বাঁচা
এই পৃথিবীতে মিথ্যে অনেককিছু আর সত্যি শুধু একা।
সেই সত্যির খোঁজে জীবন
সত্যি বলছি
পৃথিবীতে বহুদিন আগ্নেয়গিরি দেখেনি আমি।

Saturday, February 22, 2020

নদী ,মাঝি আর অন্ধকার রাত


নদী ,মাঝি আর অন্ধকার রাত
... ঋষি
.
আলো আর অন্ধকার
.
অনেকটা দিন মিশিয়ে দেখেছি
রাত কিছুতেই ছোটো হয় না।
সময় ফিরে আসে বারংবার অন্ধকার ক্যানভাসে গড়িয়ে নামে রংগুলোতে
মানুষ ভূল করে
ভুল করে অন্ধকার রাতকে দূর দূর করে
কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চাই না
অন্ধকার ছাড়া আলো বড় বেমানান এই পৃথিবীতে।
.
তুমি ও মাঝি নৌকো
.
সারা রাত্রি ধরে তুমি  আমাকে মাঝি করে তোলো
তুমি সেই  পুরোনো বাঁক।
পুরোনো নদীর সেই পুরোনো বাঁক
 তার ওপাশে আমাদের একটা শহর হয়তো তোমার অন্য।
হাজারো শব্দ ,অজস্র মানুষ ,আর চিৎকার
সব ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে আমাদের শহরে প্রতি রাতে
শুধু অন্ধকার জাগে
রাজ্যাভিষেক হয় অন্ধকারে মাঝি নৌকোর।
.
চাঁদ আর মোহনা
.
এতদিন পরে তুমি এলে
নৌকা নিয়ে গেলে মোহনায় বিশাল সমুদ্রে।
তখন সারা আকাশ জুড়ে চাঁদ
চাঁদের ভিতর সেই বুড়ি বসে সময় ঘোরাচ্ছে
ক্রমশ গুঁড়ো গুঁড়ো স্বপ্ন নৌকোর মাচায়।
এমনি আমি   জল দেখলে শান্ত হয়ে যাই
সেখানে চাঁদের বুড়িকে সাক্ষী রেখে আমার মাঝি গান
কখন যেন তোমার কথা বলে।
.
নদী ও কবিতা
.
বহু কিছু আসে
আয়নার মতো বহু কিছু ফুটে ওঠে অন্ধকার নদীর জলে। 
তারপর তরঙ্গ জলের আলতো আলতো রেশমের ঢেউ
আমার মতো অন্য কেউ
 নিজের পুরোনো শহরে বসে কবিতা লেখে
মুগ্ধ চাঁদ
তুমি
আর জ্যোৎস্ন্যা ভেজা মাঝি নৌকা।
 .
আমি আর নদি
.
হয়তো স্বপ্নের কবিতা লিখছি
 লিখেই চলেছি। অনন্ত লিখছি। আকাশ লিখছি।
জ্যোৎস্নাকামিনী ঊরুর ফুল বা লিঙ্গের প্রতিচ্ছবি
আমাকে আরও হারিয়ে দিচ্ছে শহর থেকে দূরে।
আমার শরীরে যা কিছু চিতার পর্বত আছে
সময়ের সবকিছু এখানে গচ্ছিত থাক।
আমি ফিরে যায় মাঝি নৌকোয়
আর আমার গভীরে লুকোনো নদীটায়।

আজ বিকেলে চায়ের কাপ


আজ বিকেলে চায়ের কাপ
.... ঋষি

কাপ প্লেট আঁকা আছে আজ বিকেলে তোমার ক্যানভাসে
তোমার ঠোঁটে কাপ ,
উষ্ণতায় আমি
কেন যে পুড়ে যায় বারংবার।
সামনে বসন্তের রং ,তোমার পাড়ায় কবিদের ভিড়
শব্দরা যখন রঙিন হয়ে তোমার গালে ,গলায়, চুলে
লাল ,সবুজ ,গোলাপি ফাগ।
আমার পিচকিরিতে তখন আকাশি রং
কেন যে আমি আকাশি ছাড়া তোমায় ভাবতে পারি না।
.
আমি এক মাছ আঁকতে চাই
তোমার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাবে হাতে পায়ে ব্যাথা।
তাই আমি একটা মাছ আঁকতে চাই
যাকে  খেতে খেতে, যার কাঁটা, সোজা বেড়ে উঠবে তোমার শিরদাঁড়ায় 
তোমার মাংস মজ্জা ফুঁড়ে ইস্তাম্বুল থেকে  আরবের দিকে
কোনো এক মরুভূমি জন্ম দেবে।
সত্যি যদি জন্মগুলো মরুভূমিতে হয়
আমি না হয় ওয়েসিস হবো।
.
পরাজাগতিক ছবির মতো কাঁপছো তুমি
গুহাচিত্রের মতো স্থির,
একটা ছবি অদ্ভুত ভাবে আমাকে নাড়িয়ে দেয় লিফটে গিয়ে দাঁড়ালে।
দরজা অটোমেটিক বন্ধ হয়
আবার খুলে যায় ,
বন্ধ দরজার ওপাশে অপরিচিত মানুষগুলো খুব চেনা হয়।
তোমার হাতে গোলাপ
আমার পুরোনো ডাইরির পাতায় শুকিয়ে যায়।
বারংবার সময় এসে দরজা খোলে
দরজার ওপাশে আলো
এখানে আলোর প্রসঙ্গ এলে, যীশুরও প্রসঙ্গ আসে
প্রসঙ্গত উঠে আসে যীশুর মাথায় সেই মুকুটের কথা।
.
তুমি ফুঁ দিচ্ছো চায়ের গরম কাপে
ম্যাজিশিয়ান ফুঁ দিচ্ছে ম্যাজিকে ক্রমাগত দিন কেটে যাওয়া ,
দূরে কোথাও বয়স বেড়ে যাচ্ছে অপেক্ষার
দেওয়ালে টাঙানো যীশুখৃষ্টের শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।

জন্ম ও অধিকার


জন্ম ও অধিকার
... ঋষি

ছেলেটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কাল রাত থেকে
কাল সারা রাত সে পথ হেঁটেছে নিজের গভীরে একটা গাছ জড়িয়ে।
ছেলেটার মা আগুনে পুড়েছে আজ বহুদিন
ছেলেটার বাবা চুরুটে সেই আগুন টেনে একদম হাওয়ায় ভাসছে ,
ছেলেটা কাঁদছে
ভয় পাচ্ছে
আবার যদি সে একা হয়ে যায়।
.
ছেলেটা পাখি হতে চেয়েছিল
ছেলেটা পাখির চোখে দূর থেকে দেখেছিল এক নারী নামক নদীকে।
পাহাড়ি নদী ,
সভ্যতার দৌড়ে সেই নদী সৃষ্টির চোখ।
সেই নারী চোখে ছেলেটা জন্ম দেখেছিল
সে অন্ধকারে রাতে বাড়ি ছাড়ার আগে গাছকে জড়িয়ে বলেছিল
আমিও তোর মতো সবুজ হতে চাই।
.
সময় ফুরিয়ে যায়
ছেলেটা সেই গাছকে জড়িয়ে একইরকম  শরীর হয়ে রয়ে যায়।
পথচলতি সময় গাছটার দিকে আজকাল তাকিয়ে হাততালি দেয়
কেউ কেউ থুথু ছিটিয়ে বলে
বলতো তোর জন্ম কোথায় ?
ছেলেটা নখ খুঁটে মাটিতে ঢুকতে থাকে
গাছের শরীরে ভিতর প্রাণ থাকলেও ,ছেলেটা পালাতে পারে না।
তারপর একদিন সভ্যতা গাছটাকে কাটতে আসে
ছেলেটা ভয় পায়
ছেলেটা ভয় পায় গাছের উপর বাস করা পাখির বাচ্চাদের জন্য।
সভ্যতা গাছটাকে টুকরো করে সেদিন ধারালো অধিকার দিয়ে
পাখির বাসাটা মাটিতে পরে ভেঙে যায়  .
ছেলেটার সারা শরীরে রক্ত
ছেলেটা চিৎকার করে বলতে থাকে " জন্ম আর অধিকার  " ।
রাতটা কেটে যায় সেদিন
কিন্তু ছেলেটাকে খুঁজে পায় না কেউ সেই রাতের পর ,
তবে কেউ কেউ বলে শুনেছি ছেলেটা নাকি নদী হয়ে জন্মেছে আবার।

চল মেয়ে

চল মেয়ে
... ঋষি

চল মেয়ে জলকে নামি
আমাদের শুধুই  নক্ষত্র আকাশ আর  অন্ধকার আকাশে চান।
জীবন মানে অনন্ত পথ আর পথিকের শুধু যন্ত্রনা
চল মেয়ে জলকে নামি ,
তোর শরীরে পুরুষ আর সময়ের ঘ্রান।
.
চল মেয়ে এইবার একটু আগুনে পুড়ি
উপাসনা আর গোঙানির তফাৎ খুঁজি শহর জুড়ে।
শহর মানে  মানুষ আর সময়ের ভীড়
চল মেয়ে এইবার  আগুনে  পুড়ি
তোর সময়ে উপসনা মানে নিয়মিত গৃহস্থালি অভ্যাস জুড়ে।
.
শোন আমি দহন জাত ছাই
আমি তোর গোপন আকাশে নিজেকে খুঁজে পাই।
আকাশ মানে বিশ্বাসে লেখা সময়ের সুখ
আমার অসুখ
শোন মেয়ে তোকে ভালোবাসতে আমি ভীড়ে হারিয়ে যাই।
.
চল মেয়ে এইবার শুয়ে পড়ি
নারী আর নাবিক শুধু সমুদ্রের স্রোতে ভাসা।
সমুদ্র মানে গভীর শব্দ ,অভ্যেসে রাখা ঢেউ
চল মেয়ে এইবার জড়িয়ে ধরি
আগুন ,শহর ,সমুদ্র ,ভালোবাসা।
.
চল মেয়ে তবে ছায়াপথ ঘুরি
সেরে নি চল  অপূর্ণ মৈথুন আলোকিত সময়ের রেশ।
সময় মানে পুরোনো অভ্যাস
চল মেয়ে তবে অন্ধকারে ঘুরি
মধুবংশীর গলি আর খাঁচায় জীবন শুনতে লাগে বেশ।  

Friday, February 21, 2020

বাংলা ভাষা

বাংলা  ভাষা
... ঋষি

 সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউর
মনে পড়ছে
চিনতে পারছেন 
নামগুলো আর মুখগুলো  চেনা চেনা তাই না।
নাকি রোজকার বাজার দোকান ,আর সময়  বিক্রির কারখানায়
এরাও আজ পণ্য।
.
১৯৫২ সাল তাইনা
মনে পড়ছে কারো কারো বোধহয় ,রক্তে ভেসে যাওয়া  কিছু ছাত্রের মুখ ,
কি চেয়েছিল তারা ?
একটা ভাষা আর সেই ভাষায় একটা সভ্যতা গড়তে।
কি চেয়েছিল তারা বলতে ?
বাঙলা  শুধু একটা ভাষা না ,একটা গর্ব বাঙালির
একটা সাক্ষী একটা সংস্কৃতির ,
তারা বলতে চেয়েছিল  বাংলা।
.
আর আমরা ?
আর আমরা ?
কি ভাবছো ?বুঝতে পারছেন  ?
ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে ?
কিসের উদযাপন আজ ? কেন উদযাপন ?
আজ আমরা ক্রমাগত সাক্ষী একটা ভাষা ফুরিয়ে যাওয়ার
আজ আমরা ক্রমাগত পরিচর্যায় বিদেশী সভ্যতার ।
বিদেশী চশমা চোখে লাগিয়ে আমরা পালিত  করছি একটা উদযাপন
একটা দিন ,
আসলে আমরা অন্ধ হয়ে সাক্ষী থাকছি একটা ফুরিয়ে যাওয়া ভবিষ্যতের ভাষার।
কে করবে  আগামীর  প্রতিবাদ ?
কে দেবে রক্ত  ?
কবে আবার কে  ? কোনো লজ্জা ছাড়া গাইবে
 " বাংলা আমার জীবনানন্দ
বাংলা প্রানের সুর
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ " ।

Thursday, February 20, 2020

আমাদের গল্প



আমাদের গল্প
... ঋষি

এইভাবে কেটে যাবে দিন
নিভে  যাবে প্রিয় নারীর বুকে জ্বলতে থাকা নক্ষত্র।
একদিন পৃথিবী জনশূন্য হবে
অথচ আমরা চলন্তিকা এইসব নিয়ে কিছুই ভাববো না
আমি আর লিখবো না আর দীর্ঘ কোনো কবিতা
বরং ডিসকভারিতে চোখ রেখে খুঁজে নেবো
বাঘেদের জন্ম পদ্ধতি।
.
মার্চ এলে পরে তোমার মনখারাপ চলন্তিকা
বাইরে বাড়তে থাকা রৌদ্র ,তোমার ঘরের কোনে স্মৃতি ভিড়।
তুমি মুঠোফোনে আমাকে খবর দেবে
তোমার বারান্দায় আজকাল শুকনো রৌদ্র শুধু
তোমার ঠোঁট শুকনো।
তোমার বুকে বেড়ে যাবে কান্না নিজের পথে চলে
শুধু আমি এপাশ থেকে বলবো
সব ঠিক হবে ,সবকিছু ঠিক হতেই হবে একদিন। 
.
আমি তখন নিঃশব্দে হাঁটতে থাকবো তোমার থেকে বহুদূর
আমার জীবনে সমস্ত রং নিভে যাবে প্রতিবারের মতো।
হয়তো তখন তুমি আমার মুখ দেখতে চাইবে না
শুনতে চাইবে না আমার কবিতা ,
দুপুরের এফ এম জকি চিৎকার করে তোমাকে শোনাবে
তোমার প্রিয় গান।
হয়তো আমাদের বোতামখানা গল্পগুলো অসম্পূর্ণ তখন
হয়তোবা আমরা তখন ভীষণ ব্যক্তিগত।
ঠিক তখন
কোনো একলা দুপুরে সময়ের এক্স চ্যানেলে  দেখা যাবে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লেইলা ,মজনুর গল্প
কিন্তু তখন তো আমাদের গল্প শেষ। 

স্বর্গের দুয়ার



স্বর্গের দুয়ার
...... ঋষি

রাত হয়ে গেছে
বাড়ি ফিরতে হয় সকলকে ,আমিও ফিরবো। 
শুধু স্বর্গের দুয়ারে দাঁড়িয়ে অন্ধকার রাত আর লাইটপোস্টগুলো অবসন্ন
আমি বুঝি ওদের ভাষা ,ওদের দুঃখ
ওরা বলে
অন্ধকারে আলো দূর থেকে দেখা গেলেও
নির্দিষ্ট একটা সময়ে নিজেকে বিছাতে পারে।
.

বাড়ি ফিরি
পাশের ঘরে শুনতে পাই সিরিয়ালের শব্দ ,
থালা,বাটি আর গ্লাসের শব্দ।
আমার একলা লাগে
তোমাকে মনে পরে চলন্তিকা ,
কি করি বলো  ?
.
হঠাৎ দূরে দেখতে পাই আমার পূর্বজন্মের টেলিফিল্ম
মনে পরে সেই মেয়েটাকে যে রবীন্দ্র সংগীত গাইতো ,
আমাকে ভাবতো রবীন্দ্রানুরাগী
আমি তার স্তনে মুখ রেখে বলেছিলাম রবীন্দ্রনাথ থেকে শক্তি বাবু আমার প্রিয়।
মনে পরে সেই বান্ধবীকে যে তার প্রেম হারিয়ে আমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিল
তাকে গেয়ে শুনিয়েছিল রবি ঠাকুরের গান।
মাথাটা আমার গুলিয়ে আসছে
ভাবছি এইবার তোমার নামে হস্তমৈতুন শুরু করি
কিংবা বেশ কয়েক গ্লাস নেশায় ডুবে যায়।
আগুন জ্বলছে আর জরায়ু ছিঁড়ে জন্ম নিচ্ছে অভিশাপ
দূরে অলিপুর  আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে
তুমি আর আমি অন্ধকার চিরকাল
আর অহংকারী সময়। 

মরতে চাই


মরতে চাই
... ঋষি

খবরটা ছড়িয়ে পড়েছে কফি হাউস টু কামারপুকুর
আসানসোল থেকে শান্তিনিকেতন
মানুষের নির্বাসন থেকে অনন্ত বাঁচার স্পৃহাটুকুতে।
অনেকে হারিয়ে ফেলেছে জুতো
অনেকে অবাক হয়ে ভেবেছে এমনও সম্ভব
অনেকে আবার মাঝরাতে আঁতকে উঠেছে নষ্ট স্বপ্ন ভেবে।

পুরো কলকাতা কেঁপে উঠছে
পুলিশ পাড়ায় ঘুম চলে গেছে ,
অনেক হারামি আবার টয়লেটে বসে খুলে ফেলেছে সুখের স্বর্গ
অনেক প্রতিবাদ রাস্তায় ধর্নায় ঘুমিয়ে পড়েছে
কবিরা ফেসবুক ভরিয়ে ফেলেছে কবিতায়
চিন্তায় পড়েছেন ঈশ্বর।

আমার বন্ধু মহলে কিংবা চায়ের দোকানে চায়ের ঠোঁটে
একটাই খবর
এমনকি খবরের পাতা জুড়ে ছিঃ ছিঃ।
এমনও  হয়
একটা মেয়ে সিঁদুরের স্বপ্নে এমন করে পুড়ে যায়।
আমি সেই সিঁদুরের স্বপ্নের গল্প লিখছি
হাড় হিম  করা রোমান্সে যে  মেয়েটা নিজেকে নদী ভেবেছিল
সে হাত ধরেছিল নদীর ধরে একটা গাছের।
সেই মেয়েটা আজ আর নেই , চুপ করে গেছে অনেকদিন
শুধু তার শেষ দিনে তার মুখে শুনেছিলাম
ভালোবাসা ,সংসার মিথ্যে সব ,
আর
মরতে চাই। 

ঈশ্বর ও মুক্তি


ঈশ্বর ও মুক্তি
... ঋষি

তুমি কাল রাতে মাথা রাখো নি তোমার স্বামীর বুকে
তুমি কাল রাতে ঘুমোও নি কারণ জানি না
ঈশ্বর জানেন
ঈশ্বর কে ?
সময়ের চারদেয়ালে দীর্ঘ  চলতে থাকা সেলাই মেশিন
সেই সেলাইমেশিনে নিচে শুয়ে থাকা সময়
না শুধু যন্ত্রনা।
.
কেন লিখছি এমন
তোমাকে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরলো তোমার স্বামী
বুকে হাত রাখলো ,
কি হলো ?
সময়ের স্কেলে যন্ত্রনা মাপা যায় না
কিন্তু  যন্ত্রণার দেওয়ালে কি আশ্চর্য
সময় মুখ ভেংচায়।
.
চলন্তিকা তুমি,
তোমার দুকামরার সংসার ,বারান্দায় ওয়াশিং মেশিন ,
তবু আমি শুনতে পাই ওয়াশিং মেশিনের চলছে
তোমার মুক্তিগুলো ওয়াশিংমেশিনে ধুয়ে ক্রমশ আরো পরিষ্কার।
তোমার চলার পথে দুঃখগুলো তোমার একার
শুধু আমি বুঝতে  পারি তুমিও কাঁদো
যেমন কাঁদেন ঈশ্বর।
ঈশ্বর কে ?
সময়ের যন্ত্রনায় অন্ধকার রাতে যখন  শহর তোমাকে জড়ায়
তুমি জেগে ,তোমার চোখে স্বপ্ন
হয়তো গড়িয়ে নামা  দু ,এক ফোঁটা তার আমার বারান্দায়
.... মুক্তি। 

শব্দ লাশ

শব্দ লাশ
... ঋষি

শব্দের বিছানায় শুয়ে
মনে হয় নিজেকে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দি সময়ের কোলে।
তোমাকে বলি নি কখনো 
তুমি  আমাকে কিভাবে হত্যা করেছিলে 
শুধু কলকাতা থেকে ছশো আশি কিলোমিটার দূরে একটা অন্ধকার ডোবাতে
পাওয়া গেছিল আমার লাশ আজ থেকে প্রায় বছর কুড়ি আগে।
তার শুধু হৃদপিন্ড ছিল না ,শুধু একটা পচা গলা শরীর
ছিল না বাঁচা ,,,
শুধু একটা জ্যান্ত পশু তার বুকে।

তারপর এতগুলো বছর শুধু কতগুলো নাম আর
নারী শরীর।
সময়ের যোনিগুলোতে  আমি ছেড়ে রেখেছিলাম জ্যান্ত ছারপোকা
চুলকুনি ,জ্বালা।
ছারপোকাগুলো মরে চলেছিল।
আমি শুয়ে ছিলাম এতদিন  কর্পোরেশনের জলের কলের ভিতর
ঠান্ডা শীতল শরীরে
নিথর চোখে।

আমার চোখ খুলে দিয়েছিলে তুমি
আমার বুকের উপর একটা আস্ত ইলেকট্রিক ট্রাম তুলে দিয়েছিলে তুমি
সময়ের মতো হেলেদুলে সেই ট্রাম কখন যেন আমার শো কেশে সাজানো।
সাজানো আমার মতো মানুষের বাঁচা
তোমাকে বলা হয় নি
আজকাল আমাকে বুকে জড়াতে চায় বাংলাদেশের ফতেমা
সাঁতরাগাছির অপর্ণা আমাকে নিয়ম করে চিঠি লেখে
বাইপাশের অনিন্দিতা আমাকে গর্ভ দিতে চায়
আর আমি চিৎকার করি
আর না
এইবার প্লিস আমাকে বাঁচতে দেও
যেমন আমি বেঁচে তোমাকে ছাড়া ,তোমাদের ছাড়া
আমার কবিতায় চলন্তিকাকে জড়িয়ে।     

অনুরণন


অনুরণন
.... ঋষি

.
চোখের অপেক্ষা  এসে দাঁড়ায় দরজায় ,
ভাবনাগুলো ভেজানো থাকে জানলার কপাটে  গৃহস্থের সংসারে।
ঘুম তো মাতাল স্বামী
অনেক রাত করে ঘরে ফেরে, ভোর হলে
পালিয়ে যায় সময়ের দরজা খুলে।
.

.
কু-ঝিক কু-ঝিক ঝিক ঘুম আসবে ট্রেনের মতন
ট্রেনের কামড়ার দুলুনিতে।
সকলে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে ,শুধু শুনশান শ্মশান
দূর থেকে শুনতে পাই
জাগতে রহো
সকালের শেষ স্টেশনে ঘুম থেমে যায়।
.

.
জামার বোতাম ছিঁড়ে গেছে
সুতোয় সাজানো সভ্যতা এইবার নগ্ন হলো বলে ,
বেঁফাস উচ্চারণ সময়ের " মুক্তি চায় "
তারপরে বোতামঘরে নারী শুধু আঁকড়ে ধরে বুক
শুধু হস্তান্তরিত অধিকার
অমরত্বের সুখ।
.

.
না,দুঃখ করছি না তোমার উচ্চতায় মুখ গুঁজে
হারিয়ে গেছে আকাশের চাঁদ হাইওয়ে ধরে।
নারীটি পাহাড় হলে
পুরুষ সভ্যতায় সাজিয়ে দেয় ঝর্ণার জল ,
নারী নদী হয়ে জন্মায়
বদলায় সময় ক্রমশ মোহিত নীরবতায়।
.

.
ক্রমশ অশ্রুহীন ,অস্ত্রহীন কবি
শুয়ে দেখে আকাশের চাঁদ অন্ধকার অমাবশ্যায়।
কবি সভ্যতা তৈরী করে
না হলে মানুষের প্রেম ফুরিয়ে যাবে সময় থেকে ,
তাই যুগে যুগে কবি প্রকৃতি লেখে
মিলিত মানুষ এক ছাদের ঘরে।
.

.
প্রিয় অভ্যেস চলন্তিকাকে স্পর্শ করে
যেন নদীরে প্রতি মুহূর্তে জন্ম লেখা থাকে তুমি হাসলে
আর তোমার অভিমানে পৃথিবী ফুরিয়ে যায়
কবিতা ফুরোয়
চুপচাপ মৃত্যু আসে
চেনা অভ্যেসে তোমার পায়ের ছাপ আমার বুকে।

উনুন

উনুন
... ঋষি

পৃথিবীর সমস্ত মহিলাদের বাড়ির সামনে উঁচু রাস্তা
নাক উঁচু করে নিতম্বে শহর লাগিয়ে হেঁটে যায়
যেন কিছু যায় না এসে।
পৃথিবীর সমস্ত মহিলাদের বাড়ির সামনে মনে হয় জল জমে ঋতুকালীন
শাড়িটা এক হাতে কোঁচ মেরে ,নাক সিটকে সময় দেখায়
যেন মনে হয় মোমের গলা।
.
ছেঁকা লাগলো চলন্তিকা
চামড়া পুড়লো ,আমি বলি নি তুমি সেই মহিলা ,
আমি কখনো কি বলেছি তুমি আমার দিকে তাকালে নিজেকে নগ্ন মনে হয়।
সব বলতে নেই জানি
তবু শালা মহিলাদের দিকে তাকালে আমার কেমন একটা করে।
তুমি তো জানো
পৃথিবীর সমস্ত মহিলা আমার কবিতায় নদী হয়ে যায়
আর পৃথিবীর সমস্ত নদী আমার শহরে মিষ্টি হাওয়া।
.
প্লিজ গালাগাল দিও না চলন্তিকা
আমি তো আর বলি নি পৃথিবীর সমস্ত মহিলা আমার কাছে প্রেম ,
কিংবা আমি তো শেখাতে যায় নি মহিলাদের তাদের জীবন যাপন।
বরং তুমি আমাকে আদর করতে পারো
বলতেই পারো  তুই কেন লিখিস এমন কবিতা   ?
আমার যে জ্বলে।
আমি হাসি জানো আমারও শরীরে বড় জ্বালাপোড়া
আমার শহর জুড়ে অগুনতি মহিলাদের উনুন বসানো
সেখানে পুড়ছে আমার মৃতদেহ।
সকলে ভাবে প্রেম
কিন্তু চলন্তিকা তুমি জানো
আমার কাছে প্রেম মানে তুমি
আর
আমার মৃতদেহ। 

আজকের সময়



আজকের সময়
.... ঋষি

ভাবো যদি পৃথিবীর সকল মানুষের চেহারাগুলো একরকম হয়
ভাবো যদি পৃথিবীর সব মানুষের ঠিকানাগুলো এক হয়ে যায়
ভাবো তোমার মা ,বাবা ,প্রেমিক ,তুমি সকলে একইরকম দেখতে
তবে কেমন হতো
পৃথিবীর সমস্ত ক্রাইসিস শেষ।
.
ভাবো পৃথিবীর সব মানুষের ধর্ম একই
ভাবো পৃথিবীর সব নদী ,পাহাড় ,পাখি সব একই রকম
ভাবো পৃথিবীতে সব আইডেন্টিটিগুলো শুধু  লিঙ্গভেদে আলাদা
কিন্তু একই দেখতে ,
তবে পৃথিবীর একটা বড়ো ক্রাইসিস মিটে যেত। 
আমরা তখন সকলেই রাজা ,
র্ববিবাবুর সেই বিখ্যাত গানটা " আমরা সবাই রাজা " সত্যি তখন।
.
কেউ আর কারো চেয়ে বেশি সুন্দর থাকবে না, কমও নয়
কোনো সুন্দর ,অসুন্দরের কম্পিটিশন নেই ,
তখন আয়নাকে বদলাতে হবে
মানুষের মতো আয়নারও বদল জরুরী তখন।
ব্যাপারটা সাংঘাতিক রকমের বোকাবোকা কল্পনার হলেও
এই পৃথিবীতে জরুরী
এইভাবে  ঈশ্বরের অনেক ভুলের মধ্যে অন্তত একটির সংশোধন হবে।
দেখবেন যেভাবে বছর বছর ব্যবসায়ীরা  একই ট্রেন্ড ধরে ব্যবসা করে
যাতে মার্কেটে একটা সমবস্থা বজায় থাকে
ঠিক তেমন।
ঈশ্বরও  যদি ব্যবসায়ীদের ভাবনা ভাবতে পারতেন
তবে এমন একটা  গোঁজামিল দেওয়া পৃথিবী বানাতেন না  .
.
পুনশ্চ :অতীত কখনো  ভবিষ্যৎ এর কাছ থেকে সুবুদ্ধি নেয় নি
              তার প্রমান আজকের মানুষ আর পৃথিবী। 

যোগাযোগ


যোগাযোগ
... ঋষি

সব তো আছে ,
ট্রেন বাস এরোপ্লেন ,চিঠিডাকঘর,ইমেইল,মুঠোফোন,রেডিও,টেলিভিশনে
তবুও।
দুনিয়া করলে মুঠঠিমে শ্লোগান চড়ে আমাদের ছুটোছুটি
তবুও
এতদূরে ।
.
হাইটেক সময়
এম্বুলেন্স , হুইসেল সাইরেন জ্বলে উঠছে বেজে উঠছে
তবুও
মৃত্যু চোখে দেখাচ্ছে ভবিষ্যৎকে।
রাস্তায় রাস্তায় চেকপোস্ট ট্রাফিক,জেব্রাক্রসিং
লাল ,সবুজ ,গোলাপি
তবুও
তোমার খোলা আকাশে  নিঃসঙ্গতা জমাট বাঁধছে।
.
ব্যস্ত ইঁদুর দৌড়
ইঁদুর দৌড়োচ্ছে সময় নামক জঙ্গলে সময়ের মুখের থেকে দূরে
তবুও ,
আমাদের দূরত্বে নিয়ম বাড়ছে  ক্রমশ এগিয়ে যাওয়া প্রিয় অন্ধকারে।
কাগজের এরোপ্লেন সারা আকাশে
ধাক্কা খাচ্ছে আকাশ ছোঁয়া নিয়মের বাড়ি
আর সারি দেওয়া নিয়মমাফিক নাগরিক পথ চলায়।
.
যোগাযোগ ক্রমাগত ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর
তরঙ্গমাত্রায় মনের তোড়ঙ্গে বন্দি মন
তবুও ,
শুধুমাত্র মনে মনে আমাদের রোজ আসা যাওয়া সেড়ে নেওয়া।
যোগাযোগ আমাদের প্রথম প্রতিবার
হাজারো  বছর আর এতটুকু কথোপকথন ছাড়া আর কি ?
আমাদের কেন আগ্রহ এত সাজানো ভিড়ে ?

Tuesday, February 18, 2020

তথাস্তু


তথাস্তু
...ঋষি

জমি আর নদীর মাঝে আমি ধৃষ্টতা খুঁজি
কবিতা আর কবিতার শব্দের মাঝে আমি সময়কে খুঁজি।
খুঁজি অধিকার,খুঁজি নারী
কবিতার পাতায় কখন যেন আমার চোখ বন্ধ হয়,
আশ্চর্য সময়
আমি মরতে না চাইলেও আমি মৃত্যু খুঁজি আমার কবিতায়।

এ হলো দৃষ্টিভ্রম
গভীর অরণ্যে চলন্তিকা হলো বন হরিণি,
আর আমি  মন্তাজে ভেসে ওঠা মৌহুয়া ফুলের নেশায় আজকাল।
রাশি রাশি শব্দ, অসাধার, অসামান্য রক্ত প্রবাহ
 মনের নদীতে চলন্তিকা তুমি জলকেলিতে ব্যাস্ত কৃষ্ণ ঘোর
আমার হাতে বাঁশী।
আমি শহরের রাস্তায় সেই বাঁশীওয়ালা
যার বাঁশীর শব্দে শহরের প্রতিটা রাস্তায়,পথের ধুলোতে
চলন্তিকা এসে দাঁড়ায় ঈশ্বরের কবিতায়।

সময় আর স্মৃতির মাঝে আমি খুঁজি ভিন্ন দেশ
ঘম থেকে ওঠা আর ঘুমের মাঝে তফাৎ কোথাও আছে কিনা
আমি বুঝি না।
 অন্ধকার রাতে আমার সারা মশারি জুড়ে আজকাল নক্ষত্র কবিতায়,
 কবিতায় ঈশ্বর আসেন
তথাস্তু বলেন সময়কে, আরও বলেন তোদের ভালো হোক  ।
আমি জানি না সত্যি না মিথ্যে,তবে আমার ঘুম আসে

আমার ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে  হয়।
চলন্তিকা তুমিও তখন থাকো সেখানে,আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলো
বোকা ছেলে
কেন লিখিস কবিতা ?  কেন মরিস তুই রোজ ?
আমি হেসে উঠি ঘুমের মধ্যে ঈশ্বরকে বলি
"তথাস্তু"।

নিশ্চিত ভালোবাসা

নিশ্চিত ভালোবাসা
...ঋষি
নিশ্চিত ভালোবাসা ,নিশ্চিত তাই
যখন দেখি আটষট্টিতে দাঁড়ানো কোন বৃদ্ধ সন্ধ্যে  সময়ের অস্তে
হঠাৎ ফিক করে হেসে ফেলে আমি বুঝি ভালোবাসা।
যখন দেখি কোন ভদ্রলোক পার্কের কোন শিশুর দিকে নির্বাক তাকিয়ে থাকে
আমি বুঝি তার নিজের সন্তানের কথা মনে পড়ছে " ভালোবাসা" ।

যখন দেখি কোন নারীকে তার পুরুষ জড়িয়ে কপালে চুমু খেলো
কিংবা কোন নারী পুরুষের বুকে মাথা রেখে,
অথবা কোন দাদা তার বোনকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো
কি রে কলেজ পৌঁছেছিস?
কিংবা কোন মেয়ে দুপুরে ফোন করে তার বয়ফ্রেন্ড কে প্রশ্ন করলো
খেয়েছিস তুই?
আমি বুঝি ভালোবাসা,নিশ্চিত ভালোবাসা।

আচ্ছা ভালোবাসা কেমন হয়? কাকে বলে?
প্রশ্ন পুরনো, উত্তর হাজারো।
ভালোবাসার হাজারো ধরন,ভালোবাসার হাজারো মানে।
আমি চিনি সেই মিস্ত্রিকে যে রোজ সস্তার নেশা করে বৌকে পেটায়
রাত্রে আবার তাকে জড়িয়ে কানে কানে বলে " তোকে ভালোবাসি"।
আমি চিনি সেই মাকে যে অন্যায় করলো বলে নিজের ছেলেকে উদোম পেটায়
তারপর চোখের জলে ছেলেকে জড়িয়ে বলে " এত দুষ্টুমি করিস কেন ? "     
আমি চিনি সেই লোকটাকে যার স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত,
বাঁঁচবে না জেনেও রোজ স্ত্রীকে বলে  "তোমায় ছাড়া বাঁচবো কেমন করে বলোতো? "
এমন হাজারো দৃষ্টান্ত, এমন হাজারো দৃশ্য
আমি বুঝতে পারি ভালোবাসা,নিশ্চিত হই এটাই ভালোবাসা
কিন্তু ভালোবাসার মানেটা বুঝতে পারি না।
বুঝতে পারি না মানুষ কেন ভালোবাসে?
বুঝতে পারি না আমার সাত বছরের ছেলে আমার গলা জড়িয়ে বাবা বলে ডাকলে
কিংবা চলন্তিকা তুমি আমায় বুকে জড়িয়ে মাথায় হাত বোলালে
কেন আমার কান্না পায়?
  

মানুষের মৃত মুখ


মানুষের মৃত মুখ
... ঋষি
এই সভ্যতায় ঘুম চলে গেছে
চলে গেছে লাজ, সরম আর সত্যি বলার আদর,
অদ্ভুত এই যে,
মানুষ আয়নাতেও আজকাল মিথ্যে বোঝায় নিজেকে।
একলা দাঁড়ানো এই সভ্যতার মাটি
পরিপাটি
সাজানো।

আমার নিজের ঘর,
ঘরের ভিতর নারীর বাহান্ন টুকরো পুরান থেকে আদর খুঁজি,
আদর খুঁজি রাস্তায় দাঁড়ানো লাইট পোস্টের হলুদ আলোতে
তোমার মুখ চলন্তিকা।
এই সভ্যতায় ভালোবাসার মতো বাঁচাগুলো মরে গেছে
অবশিষ্ট যা তা শুধু মানুষের মতো দেখতে
আসলে সময়ের মানুষগুলো আজ বহুদিন মরে গেছে।

 এই সময় প্রতিবেশী বাড়ির আলো সুইচ অন হলে
আমি নিজের মনে করে ফেলি পাপ
লতা বৌদির ভিমরুল শরীরটা আমাকে পথ দেখায় অন্ধকারে
আমি হারিয়ে চলি সভ্যতার পাপে।
সভ্যতার নগ্নতায় কালো কাক ডানা মেলে অন্ধকার আকাশে
চিঠি বিলি করে
আমাকে পোঁছে দেয় হাড় জিরজিরে গোপনীয়তায়
শ্মশানের নিভন্ত চুল্লীর ঠোঁটে।
এই সময় আমার ভেতর কয়েকশো নিষিদ্ধ পিয়নোর শব্দ
সভ্যতার   মাউথঅরগ্যানের  গুঁড়িয়ে ফেলে
একশত নদী, পাখিদের ভুল  আর হাজারো সভ্যতার লাশ।
মানুশের আয়নায় তখন
মানুষের মৃত মুখ আর গুঁড়ো গুঁড়ো কাঁচ।


নষ্ট মানুষ


নষ্ট মানুষ
...ঋষি
আজ বহুদিন হয়ে গেছে রাস্তায় হাঁটি নি
বহুদিন বসি নি পাপুদার দোকানের পাশে সেই বেঞ্চিটাতে,
চা খাই নি লতাদির হাতে,
শুনি নি কি রে পাগল আজকাল আসিস না তো।
দক্ষিনে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো কুল গাছটার সাথে চোখাচুখি হয় নি বহুদিন
আজ প্রায় দেড় বছর সাইকেলের প্যাডেলে পা দিই নি আমি।

আজ বহুদিন কালাদার দোকানে পাউরুটি ঘুঘনি খাই নি
শম্ভুর সিডির দোকানে কাউতালি বুনতে বুনতে ছুঁড়ে দি নি লালু,ভুলুকে
সস্তার লেড়ো।
আজ বহুদিন পাড়ার মন্দিরে বসে থাকা পাগলীটাকে দেখি নি
পথচলতি ক্লাবের পাশে কালীমন্দির ঘন্টার শব্দ শুনি নি
শুনি নি ভাঙা গলায় ভোলা ভিখীরির কিশোরের গান।

ওরা আমার কে হয় জানি না,
জানি না ওরা কেমন আছে  ?
আমি জানি আন্তর্জাতিক দেশের পরিস্থিত,
জানি মন্দির,মসজিদ,গীর্জা,দেশ,রং আর মুখোশ।
ওরা জানে এ সব?
 মাঝে মাঝে মনে ওদের সাথে না মিশে আমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছি
হয়ে যাচ্ছি কংক্রিটের গোলোকে নষ্ট মানুষ।
আজ কতদিন রাতের প্ল্যাটফর্মে পায় নি দেশী মদের গন্ধ,
চা, সিঙারা,মশলা মুড়ি আর ট্রেনের শব্দ।
শুনি নি লতাদির মুখে কি রে পাগল, কাল আসবি তো।

যাব লতাদি,
না হলে শব্দ আর সময়ের ভীড়ে আমি নষ্ট হয়ে যাবো।
আমাকে যেতেই হবে
 না হলে কোটি, কোটি ভাবনা আমাকে নষ্ট করে দেবে।

Monday, February 17, 2020

জীবন ও আজীবন

জীবন ও আজীবন
...ঋষি

আমি পথ হারিয়েছি
তোমার চোখ বেয়ে গড়িয়ে নামা জ্যোতস্ন্যা রাত শেষ কুয়াশার মাঝে,
আমি কুড়িয়ে চলেছি সমুদ্রের গভীরে মুক্ত।
সমুদ্রের জলে ভেসে আসা সুনামির গন্ধ বুকে
আমার এই অভিনয়
আমার এই মানুষ, মানুষ খেলা  কেন?
তা বড় অজানা আমার।

ভালোবাসার জন্ম, মৃত্যু কিছু হয় না কখন
কিন্তু আমি জানি  আমার ভালোবেসে মৃত্যু অনিবার্য। 
নদী, পাহাড়,অরণ্য কখনো প্রতারণা করে নি
প্রতারণা মানুষের,প্রতারণা সময়ের ।
মানুষ এতদিন ভুল বুঝিয়েছে নিজেকে
ভালোবেসে নিজেকে হত্যা করা যায় প্রতিদিন, প্রতিমুহুর্তে
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের বৃষ্টি ভেজা অনিবার্য।

আমি পথ হারিয়েছি চলন্তিকা
অন্ধকার আসলে তোমার মত চিরকালীন সময়ে। 
তোমার গভীরে আমি অসময়ে বৃষ্টি দেখেছি
তাই আমি ভালোবেসে  মেঘ হতে চেয়েছি আজীবন,
চেয়েছি সুজলা,সুফলা পৃথিবী। 
চলন্তিকা তোমার চিবুক ছুঁয়ে কাব্য লেখা ছেলেটা
নিজের পৃথিবীতে শান্তি লিখতে চেয়েছিল,
সে মেঘ হতে চেয়েছিল, সে রৌদ্র হতে পারে নি
সে জীবন হতে পারে নি
কিন্তু সময়ের গোপন বৃষ্টিতে সে ভিজেছিল আজীবন।
ভালোবাসলে বৃষ্টিতে ভেজা অনিবার্য
কিন্তু এই কারনেই কবি 'র কাব্য অসম্পুর্ন  আজ মৃত্যুতে মিলিত
জীবন আর আজীবনের খেলায় কবি আজ সম্মোহিত ।

ভালো আছি

তোমার জন্য শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা
আর কি বলবো জানি না,জানতেও চাই না,
সময় যেন সমুদ্রের ধারে আছড়ে পরা স্রোত
সময়ের ঢেউ পাক খেয়ে  খেয়ে তোমার থেকে অনেক দুর
অনেক দুর আমি।
সময়ের ইতিহাস আজ আমি কি বলবো ? কাকে বলবো?
কেউ বুঝবে কি আমায়?

এতদিন তোমাকে যা আমি বলেছি,ভবিষ্যতে যা  বলবো
সেগুলো ফেরানো সম্ভব নয়,
কিংবা হারিয়ে যাওয়া ক্লান্ত পাখির শব্দে পালক গজানো সম্ভব নয়।
শুধু সকালের সেই চড়াই পাখিকে বলেছি আমাকে ভুলে যেতে
আমি এখনো জীবিত, ভালো আছি আমি।
আমার বয়স এখন ত্রিশ বছর ছাড়িয়ে গেছে
আমি এখন রোজগার করি, আমি এখন সিগারেট খেতে খেতে
দেওয়ালে হেলান দিয়ে প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করি।

আমার কান্না পায় কেন জানো?
বাবার জন্য,
বাবা আজও তোমার ছবির সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে
অন্যমনস্ক, বিড় বিড় করে কি সব বলে
আজকাল বাবা বড় চুপচাপ হয়ে গেছে।
আজ রাতে মা তোমাকে কেন মনে করলাম কে জানে?
আকাশ,,বাতাস,, মনের প্রতি কোন জানে তুমি নেই
তবু তুমি চলে আসো এমন করে,
হঠাৎ করে।
আমি ভালো আছি মা,জানি তুমিও ভালো আছো
আমার মতো অন্য কোথাও তুমিও ব্যস্ত,
তবে আজকাল তোমায় ছাড়া মন খারাপ করে। 

Sunday, February 16, 2020

চুপকথা




চুপকথা
.....ঋষি
হঠাৎ মৃদুমন্দ বাতাসে মনকেমন
চুপকথা।
তাকিয়ে আছি সময়ের দিকে, তাকিয়ে আছি মুক্তিতে
ফাগ,আবিরের ব্যাকুলতা অন্য বাঁচা,
তোর হাসি
হাসির শব্দ, মন ভালো করা সময়ের অসুখ।

তোর হাসিতে পবিত্রতা
তোর হাসিতে ফুলের ফুল্লোর,চুপকথা,
আমি কি পাগল হয়ে যাবো ?
বুনোফুল আর প্রাচীন আদর আমাকে একলা করছে আরো।
দুরে দাঁড়নো পাহাড়ি  ঢেউ আমাকে মুক্ত করছে
গড়িয়ে নামা সন্ধ্যে।

আকাশে ওই পরিযায়ী ঠিকানা
ঘরে ফেরার ভিড়, নিজের ভিতর চুপকথা।
উজ্জ্বল কোন দিন, ফ্যাস ফ্যাসে মনখারাপ,মেঘলা আকাশ
দুর থেকে তোর হাসির শব্দ,
বদলে দিচ্ছে দিন নিজের ভিত, সকালের ঘুম।
ঘুম ভাঙছে না,ঘুম ভাঙতে চাইছে না
দুরে কোথাও তোর হাসির শব্দে সারা সময় জুড়ে তুবড়ি
কত আলো।
 উন্মাদ পাঠশালা, সমস্ত মহাবিশ্ব জুড়ে তালা বন্ধ
কিছু শুনতে পাচ্ছি না
কিছু দেখতে পাচ্ছি না
নিসর্গ  সময়, ফুল, নদী আকাশের গায়ে লেপ্টে তোর হাসিমুখ। 

ঈশ্বরী গাছ


ঈশ্বরী গাছ
... ঋষি

বুঝে শুনে ঈশ্বরী একটা গাছ পছন্দ করেছিল স্বয়ংবরে
সেই কারণে মেয়েরা চিরকাল একটা গাছের মতো।
গাছ হলে একটা শান্তি
কারণ মেয়েরা জানে অন্ধকার রাতে গাছেদের স্বপ্ন জাগে
জাগে আশ্রয়
তাই মেয়েরা অন্ধকারে আঁকড়ে ধরে বুকের কাপড়
পুরুষের বুক।
.
মিথ্যা বলি নি ,বলতে পারি না
মেয়েদের গাছ হবার আরো কাৰণ আছে
কারণ গাছের মতো মেয়েরা পারে রোদ্র দিনে নিজের আঁচল বিছাতে
বিছিয়ে দিতে শান্তি পৃথিবীর বুকে।
যাতে কোনো ক্লান্তি না থাকে সময়ের ঠোঁটে
যাতে পৃথিবীর কোনো পুরুষ নিজের মাকে না খোঁজে
সময়ের পরে।
.
বুঝে শুনে ঈশ্বরী একটা গাছ পছন্দ করেছিল  স্বয়ংবরে
কারণ মেয়েরা চিরকাল পৃথিবীর প্রকৃতি ,,,এবং সবুজ।
যদি বৃষ্টি না হয়
যদি জন্ম না হয়
যদি অকারণে পৃথিবীর বুকে নেমে আসা ক্ষরা
তখন মেয়েরা বৃষ্টি হয়ে নামে পৃথিবীতে
বৃষ্টিতে ভিজে গাছের মতো হাসতে থাকে হাওয়ায়
জড়িয়ে ধরে পুরুষকে ,
সঙ্গমেরত হয় জন্ম দেবে বলে
আরো গাছ
আরো সবুজ
সবুজ মানুষ। 

বাঁচার কবিতা


বাঁচার কবিতা
.... ঋষি

ঠোঁটে রক্ত তুলে যে মানুষটা নিজেকে বাঁচাতে
নিজের সংসার আর সন্তানের জন্য দুমুঠো ভাত রোজকার করছে ,
তাকে কবিতার কথা বললে
বলবে ন্যাকামি
শালা খালি পেটে কবিতা হয় না।
.
দাঁতে দাঁত পিষে প্রসূতিগারে যে নারী সন্তান জন্ম দিচ্ছে
যার শরীর থেকে এই মুহূর্তে শুধু জন্ম নিচ্ছে আগামী
তাকে যদি কবিতার কথা বলি
বলবে খ্যাপামি
শুধু শব্দ দিয়ে ভবিষ্যৎ তৈরী হয় না।
.
দূরে কোথাও আবছা কোনো আত্মায় মানুষ তৈরী করছে
যন্ত্রণার প্রতিষেধক ,
ময়লা জীর্ণ সভ্যতায় কাগজকুড়ানি পাগলী মাগীটা পেট বানাচ্ছে
সময়ের নিয়মে।
তবু অহংকারী শব্দ উন্নাসিক চোখে মেপে চলেছে সময়ের শরীর
ছাপিয়ে চলেছে কবিতা ,
মানুষের কবিতা
মানুষের সুখ ,দুঃখ আর বেঁচে থাকা
সৃষ্টি সুখে মগ্ন কবি ছবি আঁকছে
রক্তে ভাসছে সাদা কাগজ ,,,,,জন্ম ,,,,জন্ম
কবিতা।
.
যে কান্না গড়ায়নি মুখে ,যে হাসি আজ অবধি  হাসে নি কেউ
তারজন্য অঙ্গীকার কবিতা।
স্নানের ঘরে প্রেম আর বিশ্বাস আর গড়িয়ে নামা ঋতুরক্ত
সবটাই সময়ের কবিতা,
মানুষের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো মানুষের যোগ্যতা।
কবিতা অকারন নয়
কবিতা ভাবনায়
কবিতা যন্ত্রনায় ,
কবিতা মানুষের
কবিতা সময়ের।
কবির কলম কখনও শুধু সময় নষ্ট নয়
কবি হলো সেই সব মুহূর্তের সাক্ষী যারা সময়ের কাছে নষ্ট
কবির কষ্ট
সাদা পাতায় সেই সব মানুষ
যারা কবিতা নয় শুধু বাঁচতে চায়।

মহাকালের জরায়ু


মহাকালের জরায়ু
... ঋষি

খুঁজছি শুধু খুঁজছি
এইবার এক চিলতে আমার ছাদের পাশে একটা গাছ হব
আকাশ ছোঁয়া।
একটুখানি শান্তি চাই
তারজন্য মহাকালের দরজায় কাটিয়ে দেবো মৃত্যুমুখী জরায়ু ,
জন্ম দেবো অজান্তে করা পাপ
গর্ভমুখে আগ্নেয়গিরি লাভ  ঢেলে দেবো
ধ্বংস সব সময় মানুষের।
.
ডুবছে ভাসছে নরকের আকর্ষণীয় যন্ত্রনা
ব্রেনে ব্রাউনকে প্রেমের প্রস্তাব দেব কি না ভাবছি ,
দাঁড়িয়ে আছি নিজস্ব স্নানাগারে
সেখানে কুলকুচি করে তুলে দিচ্ছি গতরাত্রের বীর্যের দাগ।
মানুষ ফুটছে না ডিম ফেটে
শিশু হাসছে না
যন্ত্রনা তৈরী হচ্ছে ,
খবরের কাগজের টি আর পিতে দাঁড়িয়ে ধর্ষিত টুকরো টুকরো শরীর।
.
জীবনে প্রহসনের থেকে বেশি শীৎকার পাগলের প্রলাপে
ঈশ্বরের বাজারে দর কষাকষি নিয়ে আজ বসবো মাছের বাজারে ,
মেছো রমণীর উপছে ওঠা আঁশটে গন্ধ
ঝুলে থাকা লুকিয়ে দেখা চাঁদ
আঁশ বটিতে ছাড়ানো মানুষের চামড়া সব বিক্রি হবে
কারণ আজকাল দুঃখ খুব সহজেই বিক্রি হয়।
মৃত্যুর কাছে মায়া
জীবনের কাছে আনন্দ
রাজনীতি আর সমাজের কাছে বাঁচা
মিথ্যে ডাইরিতে লেখা চলন্তিকা তোমায় ছাড়া বাঁচবো না।
কাল ভোরবেলায় কেউ যদি আমার আঙ্গুল চায়
যদি বলে আমাকে স্পর্শ করো আমি তোমার কবিতায় হারায় ,
সত্যি বলছি মায়ের দিব্যি  আমি তাকে জ্বলিয়ে দেব
কারণ যন্ত্রনা আর কবিতার পরিচয় শধু ভাবনায়।   

নষ্ট সময় মানুষের



নষ্ট সময় মানুষের
... ঋষি

বড় কবির  দলে ভিড়ে  নোংরা ঘাঁটবে কে
কে বলবে শালা বানচো ...  মানুষের পেটে  খিদে
আর মুখে আটকে আছে সময়ের বুলি।
কে বলবে রাষ্ট্র মানে হাভাতে সেই মানুষগুলো
যারা  স্বপ্ন দেখে তাদের সুদিনের ,
কারা তিলে তিলে  রক্তে মাংসে তৈরী করলো দেশ।
.
ন্যাকামি লিখতে পারবো না
মিথ্যে বলতে পারবো না  ,
আমার কলমে শুধু নষ্ট কবিতা হোক।
আমার কলমে জামা পড়ুক সেই ভিখিরিটা যার শীতে কষ্ট ,
কিংবা আমার কলম  দাঁড়াক সেই প্রতিবাদ মিছিলে
যেখানে সত্যি বলতে শিরদাঁড়া লাগে
আর লাগে রক্ত।
.
আমার কি আর সেই লিটলম্যাগের মাঠে ন্যাংটো হলে হবে
কিংবা কবিতা বললেই নিজেকে কবি বললে হবে ,
বরং সেই রিকশাওয়ালার কথা লিখি
যাকে খেটে খেতে হয় ,
আমি সেই শরীর বিক্রি করা শরীরটা কথা লিখি
যাকে সন্তান আর পঙ্গু স্বামী সামলাতে হয়।
কিংবা আমি বলি সেই ছেলেটার কথা যার চাকরি নেই বলে
আজ কথা শুনতে হয় সময়ের কাছে  ,
কিংবা সেই নারীকে যাকে নিয়ম করে তার স্বামীর বন্ধুদের সাথে শুতে হয়।
আমি পারবো না সোহাগের কথা লিখতে
আমি পারবো না মিথ্যে রাষ্ট্র লিখতে।
আমার কবিতার হোক আকাশের গায়ে ,মানুষের সময়ের
আর  নিয়মিত হিংসার বিরুদ্ধে ,
আমি শালা পারবো না সতী সাবিত্রী সেজে নোংরা ঘাঁটতে
কিংবা কবিতার নামে বেশ্যা সাজতে। 
বরং আমি নষ্ট কবি হই
আমার কবিতার হোক পাগল ,উন্মাদ ,সময়ের আওয়াজ
নষ্ট সময় মানুষের ।   

Sunshine makes me happy

Sunshine makes me happy
........ঋষি

পৃথিবীতে ভালোবাসা লিখতে পারি নি
অদ্ভুত ডিপ্রেশন।
Sunshine on my shoulders makes me happy
Sunshine in my eyes can make me cry
হ্যালুয়েশন সময়ের বিছানায় সাড়ে ছশো কোটি ভারতবাসী
ভালোবাসি জানাতে পারি নি ,
Sunshine on the water looks so lovely
Sunshine almost always makes me high
.
ভালোবাসি বলতে পারি নি প্রিয় নারী ,প্রিয় সম্পর্ক
ভালোবাসি লিখতে পারি নি মগজে জমা ঘোর ,নেশা ,সভ্যতা 
শীত ,গ্রীষ্ম ঋতুকালীন গ্লোসাইন।
রীতিনীতি ভালোবাসা অদ্ভুত মনোস্কাম
সময়ের সাইরেন ,নাভির থেকে জন্ম যৌবন ও যৌনতা
শুধু সময়ের খেলা ,গড়িয়ে নামক শারীরিক রসায়ন।
.
ভালোবাসা লিখতে পারি নি সময়ের জরায়ু জুড়ে
নক্ষত্র বুকে আগুন ,
মুর্মুষ প্রতারিত নারীর বুকে ,ধর্ষিত সমাজের হাসিতে
বিপন্ন সন্তানহারা মায়ের ঠোঁটে কিংবা সামাজিক চারদেয়ালে নিয়মে।
ভালোবাসা লিখি নি বহুদিন সভ্যতার নগ্নতায়
অন্ধকার সেই শহরের নষ্ট রাস্তায়
সব শুধু প্রয়োজন -আয়োজন ব্যস্ততায়।
Sunshine on my shoulders makes me happy
Sunshine in my eyes can make me cry
ধর্মাবতার শুনুন
সাড়ে ছশো কোটি ভারতবাসীর হাঁড়িতে ফুঁটতে থাকা যন্ত্রনা
সাদা সেদ্ধ জীবন ,নুন আর তেল
রিফাইন না হলেও সেদ্ধ হলেও চলবে
তবে প্লিস ভাতের মুখে চোখের জল মানুষের মানায় না সময়ে ,
Sunshine on the water looks so lovely
Sunshine almost always makes me high

Friday, February 14, 2020

চোখের বালি

চোখের বালি
.....ঋষি

বাঁধন ছিঁড়ছে,ছিঁড়ছে অন্যমনস্ক বেঁচে থাকা
মানুষগুলো অবচেতনায় সন্ধি করে,
সন্ধি করে অন্ধকার শহর, গলি মনেতে মানুষের সাথে।
ফ্ল্যাসব্যাকে ঝলসে ওঠে চোখের বালি
মানুষ সত্যিগুলো ভুলতে পারে না স্মৃতি চিহ্নে।

চামড়া পুরনো হয়ে গেলে খড়ি ওঠে
শুকিয়ে যাওয়া সময়ে জল দেওয়া,সার দেওয়া
মানুষের বোকামি।
তবুও আশায় মরে চাষা
তবুও মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে অসময় বৃষ্টি ফোঁটা খোঁজে
যদি এক ফোঁটা জীবন ফিরে পাওয়া যায়।

আমি আকাশ দেখেছি চলন্তিকা
রেল লাইনের কামড়ায় " হঠাৎ দেখা " রবি ঠাকুর তোমাকে বুঝতে চেয়েছি।
জীবন হলো সময়ের যোগফল
জীবন মানে শুন্যস্থান নয়,
অথচ আমি সময় আঁকতে আঁকতে ভুলে গেছি আমি সাধারণ।
সাধারণ শব্দটা এত সহজ যে মানুষ বুঝতে ভুল করে
গুলিয়ে ফেলে
তখন সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়
আর মানুষগুলোকে ফিরতেই হয় অন্ধকারে।
জানি এই হত্যাগুলো হাজারো মৃত্যুর মতো খুব সাধারণ
অথচ অন্ধকার শহরের রাস্তায় আজও নিয়ন  পোড়ে।

Thursday, February 13, 2020

সময়ের জবানবন্দি



সময়ের জবানবন্দি
... ঋষি

প্রত্যেকটা সময় হারিয়ে যাওয়া অবিশ্বাসী
নষ্টবুকের সাক্ষী শুধু অন্ধকার রাত আর বালিশের কান্না ।
প্রত্যেকটা চলে যাওয়া  আর্তনাদ করে উড়ে যায়
আর খাঁচার  পাখির কাছে পৃথিবীটা বাসযোগ্য নয়।
তখন একজোড়া অন্ধকার চোখ  জ্বলতে থাকে আকাশের নক্ষত্র নিয়ে  
সময়ে  সাজিয়ে রাখা দুঃখ প্লেট, কষ্ট গ্লাস— ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট।
এখনোতো শপিংমলেই কিনতে পাওয়া যায় দুরারোগ্য রোগ
তবুও তো প্রকৃতির কাছে আমরাও  শিখছি উদার হতে।
.
পৃথিবীর  বৃষ্টির ঘরে মুখ লুকিয়ে বসে আছি 
ভিজে বৃষ্টি  হাওয়ায়,স্মৃতি নোনতা হাওয়ায় ,
অথচ দীর্ঘশ্বাসের সুতোয় আমাকে বন্দি করে  দুরন্ত ঘোড়ার গতিতে
হৃদয়  পচে গেলে ,গন্ধ বেরোয় না।
কেউ কেউ নাকি যৌবনের গন্ধে মাতাল হয়ে
তীব্র আঘাতে ভেঙ্গে দিতে চায় নারীর সাজানো নগর— বন্দর।
অবশেষে শুধু একটা নদী থাকে
বুকের জনপদ ভাসিয়ে সকলেই মোহনায় মিশে যেতে চায়।
.
পূর্বপুরুষ আগুন নিয়ে খেলতে খেলতে  ভালোবাসতে ভুলে গিয়েছি,
সম্পর্কের অস্থিরতা কীভাবে ছড়িয়ে দেয় সময়ে  সংক্রামক রোগ
আমি জানি ।
সঙ্গম শেষে  যে লোকটা  মারা গেল আমি চিনি তাকে
আর যে লোকটা জন্মালো
এটা তার নদীজন্ম
আর নদীপথ ধরে পুরুষের এগিয়ে বাঁচার কারণ হলো নারী ।
নরম হাতের তালুতে রাখা অদ্ভুত সময়ের  কারসাজি
প্রার্থনারত আমি এবার খুলে বসেছে পবিত্র সুখের দোকান।
নরম পাখির পালকে লিখে রাখছি  একটা স্বপ্নের দিনের ইতিকথা ,
শুধু নেশা হয় না আজকাল
শুধু বাঁচতে ইচ্ছে করে।

ভাবনা আর দশাবতার

ভাবনা আর দশাবতার
.... ঋষি 

আয়না

ঈশ্বরীয় ভবনায় অনুযোগের অনুমতি নেই
অনুমুতি নেই সম্পর্ক নামক সেই রংচংগে মোড়কের।
সেখানে প্রবেশের কোনও গোপন আইডেন্টিটি নেই
নেটে ফুল সিগনাল তবুও কোনো স্পর্শ নেই।
কবিতার নেশায়, কবিতার কারনে যেখানে আমি অন্য মানুষ
সেখানে অন্য কেউ।

জীবন

ফুঃ মেরে পালাও জীবন যেমন মৃত্যু বুকে বাঁচা
থুথু ফেলে চাটা,  সম্পর্ক শুধু একলা নির্জন বেঁচে থাকা।
ছিঁড়ে ফেলা ব্রায়ের ফিতে
 সংগ্রহে উঠে আসা জানোয়ার শুধু জন্ম খোঁজে
জন্মও তো সৃষ্টি
তবে জীবন এমন।   

কান্না

কবি যখন কবিতা পড়ছেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে
তখন হল ঘরের সব আলোগুলো সময়ের বুকে পেরেক পুঁতছিল,
দর্শকদের ভালো করে কবি দর্শন করেন
সারি দেওয়া সময়ের লাশ,
কি দেখছেন কবি দূর থেকে আতশকাঁচ ধরে হাওয়ার উপর
সময়ের গায়ে কুষ্ঠ আর কষ্টের দাগ,চোখে জল।

নদী

হারামি মানুষ শুকনো স্তনেও রাখে মুখ
নদী কেঁদে যায় শুকনো শরীরে সময়ের মৃত ঠোঁট।
নারী নদী
নারী খাল নয়।
নোংরা মানুষ, নোংরা সময় ভাবছে তাই
নারীকে সময় মনে হয়।


প্লাবন

তোমাকে ছুঁলে প্লাবন আসে
ভাসানো কথা,ভেসে যায় আমার ঠোঁট গোপোন নেশায়,
তুমি নেশা নও
সে কথা কেউ বোঝে না,সময় বোঝে না,
ভাসিয়ে দিই নৌকা করে চোখের জলে
কেউ কোথায় কি সেসব ধরার চেষ্টা করে।

ক্রিয়া

ভাবনাকে শুধুই উপর আর নীচে বসিয়ে রেখো না
ওদের আলো দাও জল দাও,স্পর্শ দিয়ে প্রাণ দাও
মাতৃত্ব দাও ,দাও স্তন। 
কারণ সুস্থ ভাবনা রাষ্ট্র তৈরী করে ,তৈরী করে সময়
 ভাবনার সন্তানেরা পুষ্টি পাক
তবে পেট ভরবে ,তবে সাদা ভাত
তবে না মানুষ। 


কবিতা ও জীবন

এ-কার , ও-কার এবং বারংবার , হাইফেন  কিন্তু
এগুলোই জীবন।
নরমকে কঠিন,কঠিনকে নরম করে বলা
মনের ভিতর ঘর করা
মানুষের গল্পে ,মানুষের সময়ে ভাবনা 
সে হলো কবিতা।


চলন্তিকা

তুমি ছাড়া আমি অনেকটা ভিখিরীর মতো দেখতে
একটি ই-মেইল !একটি ফেসবুক বা টুইটার লিঙ্ক
না তুমি না।
চারপাশে এত তা না না না না-র মাঝে
অদৃশ্য কিছু দীর্ঘশ্বাস এবং দৃশ্যমান কিছু ভাবনা
স্পর্শ কাতরতা
তুমি।



আমি

‘তাহার’ নামটি রাখি ক্লিওপেট্রার মৃত্যুতে
কিংবা মৃত শরীরে লুকোনো হাজারো কালসিটেতে।
নূরজাহান, ক্লিওপেট্রা,বনলতা বা নীরা এটসেট্রা-সেট্রা,
তাতে কার কী!
সময়ের সফরে সব আছে ,শুধু চলন্তিকা তোমার হাত
আজকাল প্রতক্ষদর্শীরা বলে
চলন্তিকা আমি তোমার জন্য পাগল।


আমরা

লাইক-লাবণ্যের বন্যায় ভাসবে বলে মেরুন লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙিয়ে
তোমার ছবি।
বর্ণনায় যাবো না ,কারণ আমি জানি
সব চুম্বক চুমু হয় না
সব চুমু চুম্বক না ,
তবে সময় সময় চুমুর ধরনগুলো সকলকে শিখতেই হয়।

প্রেমিকের ডাইরি

তোমাকে নিয়ে লিখতে বসলে ইদানিং  বৃষ্টির রেইনকোট, পুরনো ডাইরি আর গীতবিতানের ভালোবাসা লিখে ফেলি,  লিখে ফেলি একটা আনত চোখ, সমুদ্র মোরা ভারতবর্ষ ...