Sunday, February 28, 2021

জিন্দেগী ওর কুছ ভি নেহি

জিন্দেগী ওর কুছ ভি নেহি 
... ঋষি 
.
পাহাড়ের চুড়ায় একলা দাঁড়িয়ে 
আমার বড্ড বেশি তুই পায়, 
কানে তখন শুনতে পাই "জিন্দেগী ওর কুছ ভি নেহি 
তেরি মেরি কাহানী হ্যা। "
হাসি পায় আজকাল চলন্তিকা তখন, পাগলের মতো হাসতে ইচ্ছে করে
সর্বনাশা পাহাড়ের চুড়া থেকে তলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। 
.
কোন তুই?  
সেই তুই? 
যে আমাকে খুব সহজ পদ্ধতিতে পাঠ দিতে পারে 
আমার অস্তিত্ব, আমার পায়ের তলার মাটি।
আসলে এই পৃথিবীতে তুই পাওয়ার একটা ব্যাকরণ আছে 
অথচ আমার মতো তুইগুলো গলার কাঁটা চিরকাল। 
.
সমুদ্রের ধারে একলা দাঁড়িয়ে 
আজকাল আমার তুই পায় বড্ড বেশি,
ঢেউয়ের তুমুল স্রোত পাড়ে এসে ছুঁয়ে আমার পায়ের পাতা
তারপর কোথায় যেন সরে যায়।
আজকের এই জামানায় মানুষের সম্পর্ক খুঁজতে কারন লাগে
সম্পর্ক ভাঙতে লাগে লাগাতার কিছু অকারণ, 
আজকের এই দুনিয়ায় সম্পর্ক একটা ক্লাউন
যার হাসি কান্না ঘড়ির কাঁটা, শুধু সরে,
সরে যায়। 
কৃষ্ণেন্দুকে মনে আছে, মনে আছে ডেসডিমোনাকে
ওদের বোধহয় সিনেমাগ্রাফিতে দর্শন আসনে ভালো লাগে, 
কিন্তু ভালো লাগে না ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে 
একলা বৃষ্টিতে ভিজতে। 
.
আমি বলি নি ভালোবাসা বলে কিছু নেই 
আমি বলি নি লায়লা, মজনু, রোমিও জুলিয়েট সব মিথ্যে, 
মিথ্যে আদমের বুকের হাড়ে ইভের জন্ম।
আমি শুধু খুঁড়েছি আজকের মাটি 
যেখানে খুঁজে পাওয়া জীবাশ্মরা বলছে 
পাহাড় থেকে আচমকা ঠেলে ফেলার নাম ভালোবাসা 
সমুদ্রের মাঝে হাত ছেড়ে দেওয়ার নাম ভালোবাসা।
আসলে ভালোবাসা একটা মিথ 
যা শুনতে ভালোলাগে, 
আসলে ভালোবাসা  একটা মিথ্যে 
যা সত্যি ভাবতে ভালো লাগে। 
আর আমার তুই পাওয়া আর মরে যাওয়া দুটোই সমান 
কারণ আমার মৃত্যুতে চলন্তিকার কোন দুঃখ নেই। 


জ্যোৎস্না

জ্যোৎস্না 
...ঋষি 
এমন একলা গাছ দেখি নি বহুদিন 
আকাশের জ্যোৎস্না সবুজ পাতায় লেগে ঠিকরে পড়ছে
তোমার নখের উপর,
বহুবার বিভাজিত হয়েছি নিজের গভীরে সে রাতে 
 তোমার আত্মার কাছে বিক্রি আমি 
পরে আছি মৃত শরীরের মত এই শহরের ফুটপাথে। 
.
আজ এতগুলো বছর পর 
আমার সারা শরীর বেয়ে গড়িয়ে নামছে রক্ত ধারা, 
রক্ত আর তুমি পরিপুরক এই  সময়
তোমরা দুজনেই আমার চোখে তৈরি  করছে লোভ, 
জীবনের রসায়নগারে সময়ের দ্রাব্যতা 
সময় শেখাচ্ছে বুকের বারুদে স্কেলিটন পুঁততে। 
.
গলার কাছে জমা হয়ে আছে প্রশ্নগুলো 
কেন?  
আমি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে উপড়ে ফেলতে চাইছি সময়ের রাহাজানি।
চিৎকার করছি আমার যখন মৃত্যুতে তোমার দায় নেই 
শুধু বেঁচে থাকাটুকু কেন প্রশ্ন,
এমন একলা গাছ আমি দেখি নি বহুদিন 
আকাশের জ্যোৎস্নায় গড়িয়ে নামছে স্নেহ, আদর আর যন্ত্রনা
সবুজ পাতা বেয়ে চিকচিক আমার চোখের পাতায়।
জীবনানন্দ বোধহয় আমার মতো অপাংতেয় চিরকাল 
আশ্রিত, 
আমার আর সম্রাট হওয়া হলো না। 



অনেকগুলো উ চ্চা র ন


অনেকগুলো উচ্চারন 
... ঋষি 
অনেকগুলো উচ্চারণ  দরকার ছিল 
দরকার ছিল দরিদ্র ভারতবর্ষের ভোটের স্পিকারে মিথ্যা কথাগুলো, 
গদি বদল হবে কি হবে না তাতে আমার কি। 
আমার কি এই দেশের জনগন না খেয়ে মরুক 
কিংবা  
বাঁশি বাজাক। 
.
আমাকে অনুচ্চারিত থাকতে হবে
থাকতে হবে সাঁরে জাহাসে আচ্ছা বুকে নিয়ে, 
আপনারা বোঝাবেন হুজুর 
আমি বুঝবো,, 
আপনারা যেভাবে রাখতে চাইবেন আমি থাকবো হুজুর 
জনগন হয়ে আছি , সাধারন হয়ে আছি। 
.
ভোট আসছে 
হঠাৎ  এতদিনের নোংরা, গন্ধময় গলিগুলো পরিষ্কার হচ্ছে,
তৈরি  হচ্ছে নতুন সড়ক, গ্রামে জল আসছে 
পঞ্চায়েতের পাঁচ টাকায় ডিমভাত।
লরি ভর্তি করে জনগন ধর্মতলার মাঠে বিরিয়ানির গন্ধে ভাসছে
বাতাসে ভাসছে আমি, আমি আর আমি 
অথচ কোথাও আমি ছিলাম না কোনদিন।  
গনতন্ত্র নামে ভন্ডামি ছিল 
সাংস্কৃতির নামে রবীন্দ্রনাথ 
ফুঁর্তির নামে ধর্ষন 
ভালোবাসার নামে টাইমপাশ
উপার্জনের নামে দিনগুজরান 
ধর্মের নামে প্রফিট লশ
আর সময়ের নামে ভোট ছিল নিয়ম করে। 
.
অনেকগুলো উচ্চারন বাকি ছিল 
দরকার ছিল দরিদ্র ভারতবর্ষের প্রগতীর  নামে শোষন,
মধ্যরাতে মুল্যবৃদ্ধি পেট্রোলের ধোঁয়ার 
আলু, পেঁয়াজের দামের,
আমরা তখন ঘুমোচ্ছি, সারা দেশ ঘুমোচ্ছে 
শুধু আজকাল ঘুম আসে না আমার 
সময়ের ভবিষ্যত, মিথ্যের বিশ্বাস  আর সাধারনের বোকামিতে
গান্ধীজীর দেশে আমি দেখি ষড়যন্ত্র। 



Saturday, February 27, 2021

মমি



মমি
..ঋষি 
আয় আমার কাছে, এখানে বোস 
ফুলের দূঃখ, ভাঙা বুক, এ সব না হয় থাক আজ, 
আমার চোখের দিকে তাকা
পড় সময় আর লুকোনো কথা। 
না কাউকে বলবো না আমি ছাড়াও পৃথিবী চলে
অবাক পৃথিবী, আর স্মৃতি কথা। 
.
আয় আমার কাছে, হাতটা দে
শক্ত করে জড়িয়ে ধর আমাকে বুকে, 
আমি কিছু মনে কোরবো না অভিমান সে কথা জানে। 
রাখ মাথা এ বুকে 
অবাক শান্তি, অবাক গন্ধরা 
অবাক পৃথিবীর চৌরাস্তায় আমি একলা দাঁড়িয়ে। 
.
আয় আমার কাছে, আয় সমুদ্রে খুলে আয় 
তুমুল তুফান, শান্ত হ, আয় হাত বুলিয়ে দি তোর মাথায়, 
কষ্ট হচ্ছে, আমারও হচ্ছে 
না আর কখনো বোলবো না বুক ভাঙলে সত্যি বলে সময়। 
আজ এ সব কথা না 
ভুল বুঝিস না
সামনে তাকিয়ে দেখ কারোর অপেক্ষায় মমি জেগে উঠছে বুকে 
নেমেসিস মৃত, 
না তোকে কোন দোষ দেবো না।
ভালোবাসা একটা ধর্মের নাম 
ভালোবাসা একটা বর্মের নান 
আমি আছি দেখ, আমি থাকবো দেখ, একইরকম 
না তোকে কিছুতেই ছাড়বো না 
লুকিয়ে রাখবো এই বুকে।

আক্রোশে

 আক্রোশে 

... ঋষি 

.

সময়ের দরজায় দাঁড়িয়ে সময়ের  মধ্যে বেলা পড়ে যায়

তুমি জানো সব। 

অন্ধকারে ভাবনার  থেকে উঠে আসে পুরোনো  দেবীর কাঠামো

শেওলা ধরা মুখ হারানো মুখ ,

এক পেট খিদে দাঁড়িয়ে থালে একা 

সারা সময় জুড়ে শুধু ছড়ানো পুজোর মন্ত্র 

আর আলাপচারিতায় 

নষ্ট হয়ে যাওয়া ভোরের ফুল আর মৃত চাঁদমালা। 

.


ঘন পুকুরের পরিষ্কার  জলে মেয়েটির প্রতিবিম্ব ভেঙেচুরে দেয়

অন্ধকার সাঁতরে ঘাই মারে রাঘব বোয়াল 

অচল সময়ের ফরমান 

নিথর একটা শরীর শেওলা মাখা শরীর ভেসে আছে জলের অনেক নিচে 

যেখানে সূর্য চন্দ্র সব তোমার কবিতায় 

শুনতে পাওয়া বিমর্ষ নূপুরের শব্দ।  

.

উঠে আসা গ্রহ নক্ষত্র 

 সিং রাশিতে আমাকে ঘিরে ধরে জঙ্গলের জন্তু, জানোয়ার

এত সহজে রাজা হওয়া যায় না কবি ,

রাজা হতে গেলে তোমার সময়ের দরজায় নিয়মিত বাঁচা দরকার। 

কেউ একটা ছিঁড়ে নিয়ে যায় আমার হৃদয় 

কেউ আমার ছাল ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে শরীরটা শহরের খাঁচায় ,

তারপর আমি স্পষ্ট দেখতে পাই 

কবির মৃতদেহ। 

মুখে সেই অমলিন হাসিতে কিছু পরিচয় লুকিয়ে 

লুকিয়ে  কিছু অবশিষ্ট বাঁচা ,

নদীর জলে বান আসে 

আমি ভেসে যায় সময়ের বাড়িঘর অদ্ভুত আক্রোশে। 


দায়

 


দায় 

... ঋষি 

.

সময় খুঁজতে শব্দসুখ 

ভাঙা  হাঁড়ি খেদিয়ে ফ্যেন ভাতের গন্ধ চিরকাল ,

আমরা শুধু কথাবলি 

ঘরের ভিতর খুঁজতে থাকি খিদে আর খিদে ,

শোক চিন্হ আর যোতি চিহ্নের মাঝখানে জীবন 

নাটকের পৃথিবীতে গদ্য লিখতে নিউরোন চমকায় কই। 

.

কলেজস্ট্রীট থেকে হেঁটে ফিরছি বঙ্গভাষী ঘেঁষে 

এই শহরে বাসে ,ট্রামে ওঠা দায় ,

পৃথিবী প্রদক্ষিণে যাবো ,

কবে যাবো ,কেন যাবো ,না জানি না শুধু দায়ধরা বেঁচে থাকা। 

তুমি ভালো থাকবে ,তোমার সন্তান পিতৃ পরিচয়ে 

আমার মতো বাউলের গন্ধ তার শরীরে যাতে না থাকে ,

না থাকে কোনো শব্দের বাড়ি 

অজস্র শিকল পায়ে। 

.

ভালোবাসা কোনোদিন কেন্দ্রবিন্দুতে জমাট বাঁধেনি জীবন 

বরাবর ছিটকে ফেলেছে আমায় আশ্রয়হীন। 

কলেজস্ট্রীট হেঁটে ফেরা  গলিতে আমার নাকে শুধু কাগজের গন্ধ

তোমার গন্ধ ,তোমার স্পর্শরা ,

তুমি তো ছিলে চলন্তিকা কিছুক্ষন ওই প্রিন্টিং প্রেসে 

যেখানে পৃথিবী নামক শব্দটা কি সহজে ছাপা হয় কবিতা ,গল্পে। 

কিছুক্ষন 

হাসি পায় ,মানুষের জীবনগুলো কিছুক্ষন 

পাশে হেঁটে চলা একলা সরণি বেঁয়ে এই শহর 

আজ হাজারোবছর শুধু পথ হাঁটা। 


এই সময় মানুষের বেঁচে থাকার কোনো নিয়ম নেই চলন্তিকা

নিয়ম শুধু বাঁচার ধরণে ,

আমাকে পৃথিবী প্রদক্ষিন যেতে হবে 

তুমি সামলে রেখো তোমার গার্হস্থ্য জীবন ,সন্তানের স্তন 

আমি ফিরবো ঠিক 

কারণ কিছু দায় এখনো রয়ে গেছে।   



প্রিয় শব্দরা



প্রিয় শব্দরা, 
.
বুক খুলে রেখেছি আজ বহুদিন তোমার কাছে 
আর তোমার বুকের আশ্রয়ে আজ বহুদিন 
আমার মতো বাপ,মায়ে খেদানো সন্তানরা আশ্রিত। 
চলন্তিকা বলে আমাদের আয়নাটা এবার ভেঙে ফেলার সময় হলো
চলন্তিকা বলে বুকের ধুকপুকটা আজকাল বড় বেওয়ারিশ  রঙের 
আর রঙের সভ্যতায় তাই আমার কবিতারাও আজকাল মুখাভিনয়ে। 
.
আমি মৃত্যুতে খুলে ফেলেছি গালমন্দ 
প্রিয় শব্দরা, আমি অশ্লীল  রাশির পুরুষ যার হাতের নখে রক্ত,
ভিজে মাটির আঁশটে গন্ধে আমার শোক 
আমি দেবী তৈরি করতে চাই। 
একলা এই সময় তাই মুহুমুহু বিপ্লব লিখছি সময়ের বিরুদ্ধে আমি শাহজাহান 
শুধু ছান্দিক জীবনের বিরুদ্ধে। 
.
আমার যোগ্যতায় সারি দেওয়া লাশ 
শব্দ ব্রমহের দরজা খুলে দাঁড়িয়ে কোন আর্যপুরুষ শুধু সভ্যতার খোঁজে, 
কিন্তু এই সভ্যতা আমার নয়, 
এই নিষ্ঠুর সময়ের জনগনের ক্ষুদার্ততা আমার কানে 
চিৎকার করে, 
চিৎকার করে দুষিত ভাবনার সময়ের কুকুরগুলো।
আমি হৃদপিন্ড খুলে অলীক হতে চাই 
আমার পৌরুষের  কাছে আমি নিরামিষ হয়ে যাই। 
.
যাইহোক শব্দরা, 
তোমাদের  ডাকবক্সে এই চিঠি ঠিকানা পাবে কিনা জানি না
এও জানি না চলন্তিকা কতটা দোষ দেবে এই শব্দের পুজারীকে
কিংবা হাসবে নিশ্চিত পাগল ভেবে,
কিন্তু সময় জানে আমি প্রেমিক, আমি সাধারণ 
কিন্ত মোটেও মৃত্যুমুখী  নই।
.
ভালো থেকো আমার প্রিয় শব্দরা
ভালো রেখো আমায়, 
.
শুভেচ্ছা 
শব্দসুখী ঋষি। 



কেয়ার অফ জলবায়ু




কেয়ার অফ জলবায়ু 
... ঋষি 
শব্দের বুননের অগোচরে অজস্র মেঘ 
ঝুলিয়ে দেয় বুকের মাঝখানে একটা অদ্ভুত খাঁড়া, 
বৃষ্টি ভালো লাগে চলন্তিকা? 
বৃষ্টিতে ভিজে একলা দাঁড়াতে ভালো লাগে? 
"পারছি না "শব্দটা নিজের ওয়কাতের কাছে প্রশ্নচিনহ।
আর সেই শিশুকাল
সকলে যদি তোমার মতো নির্জন হতে পারতো। 
.
প্রতিটা বিচ্ছেদের পরে আমার শহরে বৃষ্টি  নামে 
স্যেলুলয়েডে ভাসতে থাকে সেই বৃষ্টি ভেজা রাস্তাটা, 
প্লাস্টিক শহরের হঠাৎ জবরদখল 
ভাবনার ডানা খুলে ফেলে তোমার ব্যস্ততম মুখ ও তিলোত্তমা। 
মুঠোফোন প্রশ্নচিনহ রাখতে থাকে
কন্ঠস্বরে প্রয়োজনের ঝলক রাখে আপাদমস্তক সমাজ। 
.
আমি আরও একলা হতে চাই
কোন ঝুলন্ত টিলার উপর বসে তাকিয়ে দেখি তোমাকে চলন্তিকা
তোমার শহর, 
তুমি ভালো আছো তো চলন্তিকা? 
 একটা নতুন ফ্ল্যাট কিনে তুমি বোধহয় শহর বদলে ব্যাস্ত, 
তোমাত প্যাকিংবক্সে আবারও উঁকি মারছে
রক্তে রাঙা সেই আঁশবটি, 
 বিবর্ন তোমার সেই জানলার পাশে, 
আমি দাঁড়িয়ে চোখ রাখছি আরও গভীরে
তবে কি আমার সময় হলো? 
সত্যি কি তুমি আবারও ব্যস্ত হতে চাইছো আমাকে ছাড়া
এই বিশাল শহর তোমার আহবানে জয়ধ্বনি দিচ্ছে 
আর আমি শাড়ি, ঘোমটায়,কপালের সিঁদুরে শাঁক বোজাচ্ছি 
জয় ভবানী। 



Friday, February 26, 2021

অন্ধকার ঘুম

 


অন্ধকার ঘুম 

... ঋষি 

গভীর অন্ধকারে ঘুমে  চোখ রাখি 

পেঁচার চোখ বুকের মাঝে জ্বলে ,

ঘুম চোখে শহরের আনছান হাতছানি 

আমি মূর্খের মতো চেয়ে আছি এক অবলা প্রেমে ,

ভালোবাসা ,প্রেম শব্দগুলো 

কেন যে রাতজাগা পাখি। 

.

মাথার উপর ঝুলতে থাকা চলন্ত জীবন 

ছায়ার শব্দরা ঘোড়া চালায় সমাজের দেওয়ালে বল্গাহীন ,

আমি মুর্মুষ রোগীর মতো হাসপাতালের বেডে 

শব্দ খুঁজে যায় ,

আমার শব্দদের অপারেট করবে আমার প্রিয় মুখ 

আর প্রিয় সম্বল। 

.

কতখানি ভিখিরি হলে এই শহরে ল্যাম্পপোস্টগুলো একলা জ্বলে 

কতখানি অপারক হলে আমাকে কান পেতে শুনতে হয় 

হাসির সংবাদ,

নিরিবিলি বলে এখানে কিছু থাকে না 

পাখিদের ঘরে বাতাস থাকে চিরকাল 

আর মানুষের থাকে নিস্তব্ধতা। 

নিস্তব্ধতা কোনো শব্দ নয় 

নিরেট বুননের সোয়েটারের উপর আজকাল ঋতুবদলের দাগ 

দরজার কাছে দাঁড়িয়ে গনগনে রোদ 

সারা শরীর বেয়ে নামতে থাকে সময়ের নোনতা জল। 

ভালোবাসা প্রেম ,শব্দগুলো অসহায় 

শুধু ভাষান্তরে আমরা বলি সুখ। 

প্যাস্টেল কালার

 প্যাস্টেল কালার 

... ঋষি 

.

প্যাস্টেল কালারের কলোনি দিয়ে হেঁটে চলেছি একলা 

গড়িয়ে পড়ছে ভিড় ,

একটা হলুদ শহর লুকিয়ে আছে চেতনার বুকে 

সকলেই কবি হতে চায় না 

সকলেই কবি হয় না 

বুকের বন্দরে ছয়হীন  নৌকো এসে দাঁড়ালে মানুষ কবি হয়ে যায়। 

.

সবুজ ডোরাকাটা মেট্রো 

সপ্নের সিঁড়ি বেয়ে ফেলে আসা আসনের ঈশ্বরের খোঁজ ,

ট্যাকসি এসে দাঁড়িয়ে থাকে রোজ আমার ঘরের উঠোনে 

হলুদ ট্যাক্সিতে মন ভরে না ,

সর্বনাশ শব্দটা বোধ হয় আমার কলমের নিবে 

ভাবনা নামে বাঁচে। 

.

পুরোনো কবিদের ফটোফ্রেম থেকে আজকের তিলোত্তমা 

বস্তি হারা মন ,ঝাঁ চকচকে শহর ,

তবুও প্রতিটা ঋতুর ভিতর শ্রাবন দাঁড়িয়ে থাকে 

দাঁড়িয়ে থাকে সেই লোটাকম্বলের লোকটা ,

নিঃস্ব নিজের কাছে 

চুইংগামের রোগ। 

প্যাস্টেলের প্রতিটা আলাদা রং 

আলাদা সব অর্থ ,

সকলের ফ্যান্টাসিতে বাস করা দাঁতের রোগ 

রোগ মাংসের 

সকলে জনার্দন হতে পারে না মাতাল শব্দের খোঁজে 

কেউ কেউ মাতলামিতেও মৃত্যু খোঁজে। 

অনিন্দ্য (৯)

অনিন্দ্য (৯)
....ঋষি 

অনিন্দ্য বহুদিন ফোন করে না আমায় 
তখন অনেকদিন কোন খবর ছিল না সেই মানুষটার,
আমার দিন কাটছিল বেশ 
আমার দিন কাটছিল বুবুন, অনিকেত আর সংসারী নিয়ম, 
সামনে বুবুনের পাঁচ বছরের জন্মদিন 
অনিকেত এক্সাইটেড, সকলেই আশে পাশে খুশি
আমি খুশি
আমি মা যে। 
.
বুবুন সুন্দর বড় হচ্ছিল
কিন্তু সময় সময় বড্ড বেশি ওই মানুষটার মতো ব্যাবহার করছিল, 
হুহু তার মতো পা মুড়ে বসতো, 
সেদিন আমি চমকে উঠেছিলাম ওর হাতে সুনীলের নীরা,
আদো আদো  গলায় সে পড়তে চেষ্টা করছিল 
বইয়ের নামটা,,,, নী,,রা। 
.
পাঁচ বছরের জন্মদিন, প্রচুর আমন্ত্রিত, প্রচুর লোক 
কিন্ত কেন জানি মন আনছান করছিল সেদিন, 
হ্যাঁ ঠিক সন্ধ্যের মুখে এসেছিল সেই পাগলাটে মানুষটা 
আমার হাতে তুলে দিয়েছিল সুনীলে অর্ধেক জীবন 
 বুবুনকে কোলে তুলে ছল ছল চোখে এসেছিল আমার কাছে
খুব কাছ ঘেঁষে আমাকে বলেছিল 
আমি বুঝে গেছি, আমি সব জানি। 
আমি অবাক হয়ে চমকে উঠে বলেছিলাম চলে যা, চলে যা
আর আসিস না আমার কাছে 
আমি ভালো আছি, আমাকে বাঁচতে দে। 
অনিন্দ্য বারান্দা দিয়ে যেতে যেতে আবৃত্তি  করছিল উঁচু কন্ঠে
"সিঁড়ির মুখে কারা অমন শান্তভাবে কথা বললো?
বেরিয়ে গেল দরজা ভেজিয়ে, তবু তুমি দাঁড়িয়ে রইলে সিঁড়িতে
রেলিং-এ দুই হাত ও থুত্‌নি, তোমায় দেখে বলবে না কেউ থির বিজুরি
তোমার রঙ একটু ময়লা, পদ্মপাতার থেকে যেন একটু চুরি,
দাঁড়িয়ে রইলে
নীরা, তোমায় দেখে হঠাৎ নীরার কথা মনে পড়লো। "

অনিন্দ্য (৮)

অনিন্দ্য (৮)
...ঋষি 
অনিন্দ্যকে নিয়ে তখন আমি চাপাডাঙায় বেঁড়ার ঘরে থাকি 
কেন থাকি জানি না, 
অনিন্দ্যকে আমি ভালোবাসিনি কোনদিনই
শুধু অনিন্দ্যের ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়ার মধ্যে এক অদ্ভুত আনন্দ অনুভব করি, 
অনিন্দ্য সারাদিন শুধু কবিতা লেখে 
আমাকে শোনায় 
আমি শুনি অদ্ভুত এক তপস্যা যেন অনিন্দ্যেত কন্ঠে। 
.
বেশ কাটছিল দিনগুলো 
আমার জমানো টাকা, আমার গয়না বিক্রির টাকা তখন প্রায় শেষ, 
অনিকেত এলো একদিন 
প্রশ্ন করলো আমায় এই সব বেলাল্লাপানা, 
আমি চিৎকার করে বলেছিল অনিন্দ্য আমার কেউ নয় 
তবু কেন জানি অনিন্দ্য আমাকে টানে। 
.
ফিরে গেছিলাম সেদিন 
অনিন্দ্যকে ফেলে বুবুনের মুখের দিকে তাকিয়ে, 
অনিন্দ্য শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে ছিল আমার দিকে
একটা সামাজিক নিয়ম যখন খুব সত্যি 
তখন হৃদয় বোধহয় ফালতু সেখানে। 
অনিন্দ্য  সেই পুরুষ যাকে আমি ভালোবাসিনি
অনিন্দ্য সেই পুরুষ  যে আমাকে ভালোবাসতো।
আমি অনিন্দ্যকে ছেড়ে বেরিয়ে আসছি সেদিন 
ঠিক সাড়ে দশটা তখন 
অনিন্দ্য আমাকে ডাকলো কাছে, শুধু বল্লো ভালো থাকিস 
তারপর খুব শান্ত হয়ে আমাকে বল্লো 
"এখন অসুখ নেই, এখন অসুখ থেকে সেরে উঠে
পরবর্তী অসুখের জন্য বসে থাকা। এখন মাথার কাছে
জানলা নেই, বুক ভরা দুই জানলা, শুধু শুকনো চোখ
দেয়ালে বিশ্রাম করে, কপালে জলপট্টির মতো
ঠাণ্ডা হাত দূরে সরে গেছে, আজ এই বিষম সকালবেলা
আমার উত্থান নেই, আমি শুয়ে থাকি, সাড়ে দশটা বেজে যায়। "

Thursday, February 25, 2021

সিন্ধু সভ্যতার নারী (১)

 


সিন্ধু সভ্যতার নারী (১)

... ঋষি 

.

সময় বনাম নারী 

অতি ছান্দিক পদ্ধতি চলতে থাকা নিয়ম ,

নিয়ম অবতার 

নিয়ম রক্ত মাংসের পৃথিবীতে একলা দাঁড়িয়ে কন্যাভ্রূণ ,

আবিষ্কারের দরজা 

আগামী প্রজন্ম বলে দেবে যোনির পৃথিবীর দরজা শুধু কি জবানিতে। 

.

আমি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে ?

প্রশ্ন রাখে সিন্ধু সভ্যতার আদিম কোনো নারী ,

কেড়ে নেওয়া অধিকার 

বুকের স্তনের মাপের প্রযুক্তি পৃথিবীতে মাদার ডাইরির নতুন সংস্করণ ,

না এমন নয় 

নারীর বুকের মাপের বিশ্ব এই পৃথিবীর দরবারে খুদা গাওয়া 

শান্তি ,শান্তি। 

.

ফ্রোয়েডের  পৃথিবীতে একলা দাঁড়ায় শুধু  আট ইঞ্চি আরো বারো ইঞ্চিতে  

শুধু ইঞ্চিতে পৃথিবীর অধিকার ?আর নারী ?

প্রশ্ন করে সেই সিন্ধু সভ্যতার নারী ,

যে পৃথিবীর আলো ছুঁতে দিতে 

পুরুষের সূর্যে ,পুরুষের বীর্যে  ঢুকে পরে আধিপত্য ,সাম্রাজ্যের রোগ 

শুধু বাৎসন্যায়। শুধু পরিচয়। 

অসম্ভব সেই  পরিচয়। 

নারী মানে আগামী সময়ের কাছে জন্মদাত্রী 

নারী মানে বিভাজিত নদীর কাছে সঙ্গমে বিলীন পৃথিবী 

নারী মানে একটা বিশ্বকোষ 

নারী মানে শক্তি। 

নারী মানে পুরুষ তুমি  বোঝ তো শুধু অধিকার 

কিন্তু কখনো তো বুঝতে চাও না

নারী মানে অর্ধনারীশ্বর ,এক ঈশ্বর ,যার হাজারো রূপে 

পৃথিবী বিলীন।  

.

জেগে আছে আমার বুকে 

এক সভ্যতা ,এক সময় আর এক যুগ ,সিন্ধু সভ্যতার নারী 

তোমার পাটাতনে ,সাত সমুদ্র বিলীন 

তবু শোক ,

নারী মানে কোনো নারীবাদ নয় 

নারী মানে শুভ সবুজ সময়ের গতিতে প্রগতির পায়ের ছাপ। 

Wednesday, February 24, 2021

একলা শহর

 একলা শহর 

... ঋষি 


সবাই খুলছে জীবন 

আকাশ গাছের নিচে আমার একলা দাঁড়াতে ভয়।  

পাওনা একটা ছিল 

বুকের বৃহত্তরে স্বার্থে ,দমবন্ধ ঘর 

কেউ বাঁচছে এখানে 

কেউ মরছে আসন্ন দুপুরের স্বার্থে লগ্নিতে শহর। 

.

ক্রমশ চোখের তারারা আবছা এই সময় 

হয়তো বলতে চাইছি কিছু 

হয়তো নিজের থেকে বেশি কিছু অভিমানী সময় ,

নিরুদ্দেশে কাটছে একটা দিন 

প্রতিদিন 

শুধু বলা হয় না চলন্তিকা ভাবনার ঘরে আমি বড্ডো একা। 

.

এই কবিতাটা আমি লিখতে চাই নি 

দেওয়াল ভাঙা শব্দগুলো আমি কিছুতেই শুনতে চাই নি, 

তবু ভাঙা কাঁচে দুপাশে দাঁড়িয়ে আমি, 

স্বার্থ একটা ছিল 

একপাশে আমার অমিটাকে  বলার ছিল ভালো থাকিস 

খুব ভালো। 

উত্তরোত্তরে একটা শিহরণ জীবনের গল্পে 

তোর নির্ভীক ভাবনার সাথে ছকে মোড়া বেঁচে থাকার গল্প,

বেঁচে তো আছি 

রাস্তার জ্যাম কুড়িয়ে জীবনের শিশি খুলে শেষ অর্ধেক  

তোর ভিতর রেখেছি 

আর বাকিটা এই একলা শহরে। 


অনিন্দ্য (৭)

 অনিন্দ্য (৭)

..... ঋষি 


আমি কি ফিরে পাচ্ছিলাম আমি জানি না 

আমার প্রেমিক স্বামী সেই সময়  আমাকে অন্যচোখে দেখে ,

তখন কোন এক  রাতে শুতে শুতে অনিকেত বললো 

তুমি ঠিক আগের মতো নেই ,তুমি আর আমার নেই 

তোমার শরীরে অন্যের গন্ধ ,

আর আমি কাপড় গুছিয়ে আয়নায় গিয়ে দেখলাম 

আমার চোখে অনিন্দ্য। 

.

অনিন্দ্যর শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না 

তবু তখনও তার কালিপড়া অন্ধকার চোখের তারায় আমি আগুন দেখতাম 

কাজের ,সংসারের ফাঁকে পালিয়ে বেড়াতাম 

ছুটে যেতাম অনিন্দ্যর কাছে ,

ভালোবাসা এমন হয় ,ভালোবাসা তেমন হয় 

অথচ অদ্ভুত হলো অনিন্দ্যর ভিতরে আমার প্রতি ভালোবাসা ছিল 

কিন্তু কখনো কোনো মুহূর্তে সে বলে নি সে কথা আমাকে। 

.

সেদিন হঠাৎ মাঝরাতে ফোন

অনিন্দ্যর করুন কণ্ঠ ,বুকে ব্যাথা করছে রে খুব 

আমি ছুটে গেছিলাম 

অনিকেত বলেছিল যাচ্ছো যাও ,কিন্তু আর ফিরো না ,

আমি কিছু ভাবি নি

হাসপাতালে অনিন্দ্য আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরেছিল 

আমি জানতাম তুই আসবি ,

আমি বললাম তোকে বারণ করি ,তবু এতো সিগারেট খাস

অনিন্দ্য বলেছিল 

"নীরা, তুমি নিরন্নকে মুষ্টিভিক্ষা দিলে এইমাত্র

আমাকে দেবে না?

শ্মশানে ঘুমিয়ে থাকি, ছাই-ভস্ম খাই, গায়ে মাখি

নদী-সহবাসে কাটে দিন

এই নদী গৌতম বুদ্ধকে দেখেছিল

পরবর্তী বারুদের আস্তরণও গায়ে মেখেছিল

এই নদী তুমি! "   

অনিন্দ্য (৬)

 অনিন্দ্য (৬)

... ঋষি 


আমি অনিন্দ্যকে ভালোবাসিনি কখনো 

কিন্তু অনিন্দ্য সেই পুরুষ যে আমাকে ভালোবাসতো ,

অথচ বুঝতো না সে ভালোবাসার মানে 

শুধু বলতো ভালোবাসতো ঈশ্বরের পুজো 

আর মানুষের শরীর 

সে হলো কবিতার মতো ছন্দে জীবন বলে সামাজিক পুস্তক। 

.

আমি তখন হাসপাতালে ভর্তি 

আমার কোল আলো করে বুবুন ,

অনিকেত আমার আত্মীয়রা  ভেসে যাচ্ছে সাগরের সুখে 

আর আমি তখন ডুবে চলেছি অনিন্দ্যতে ,

অথচ অনিন্দ্য সেই পুরুষ যে আমাকে ভালোবাসতো 

কিন্তু বুঝতো না ভালোবাসার মানে। 

.

একদিন পাগলের মতো দেখতে এলো অনিন্দ্য আমাকে হাসপাতালে 

আমাকে দেখে বললো কি রে আমার নীরার কি অসুখ হলো 

মুখ শুকনো কেন ,

তারপর বুবুনের দিকে তাকিয়ে পাগলের মতো হাসতে লাগলো 

এটা কে রে ?

এতো আমি ,দেখ আমার মতো দেখতে ,

আমি বললাম চুপ কর  কেউ শুনে ফেলবে যে 

অনিন্দ্য বললো 

" বাহান্ন তীর্থের মতো এক শরীর, হাওয়ার ভিতরে. 

তোমাকে দেখছি কাল স্বপ্নে, নীরা, 

ওষধি স্বপ্নের. নীল দুঃসময়ে।.

 দক্ষিণ সমুদ্রদ্বারে গিয়েছিলে কবে, কার সঙ্গে? "

অনিন্দ্য (৫)

 অনিন্দ্য (৫)

.... ঋষি 


সবকিছু শেষ হয়ে যায় 

সব পাখি ঘরে ফিরে আসে ,

এক সমুদ্র আকাশ যখন মাথার ভিতর বজ্রপাত ঘটায় 

তখন জন্ম হয় অনিন্দ্যর মতো কারো। 

জীবনের কিছু মোরে কেউ যেন দাঁড়িয়ে থাকে দমকা হাওয়া নিয়ে 

আর সেই হাওয়ায় উড়ে যায় মানুষের অস্তিত্ব। 

.

আমিও ভাসছিলাম তখন 

অনিন্দ্যর চোখ, সে যেন অন্ধকার আকাশে ধ্রুবতারার মতো কিছু 

অনিন্দ্যর বুকের জঙ্গলে শুয়ে থাকা আমার ঠোঁট 

তখন গভীর মরুভূমিতে ওয়েসিস ,

আমি বোধহয় পাগল হয়ে উঠেছিলাম অনিন্দ্যর গভীরে বাঁচতে ,

তখন আমি বিবাহিত ও সামাজিক 

অথচ ভীষণ অসামাজিক এক চূড়ান্ত অসময়। 

.

আমি ছুটে গেছি বারংবার তখন অনিন্দ্যর কাছে 

অনিন্দ্য গভীর ঋষির মতো আমার পানপাত্রে ঠোঁট রেখে লিখে চলেছে 

বাঁচার কবিতা ,

অথচ অদ্ভুত হলো আমি কবিতা হতে চাইতাম না তখন 

ভাবতাম যদি সত্যি .........,

না সম্ভব নয়। 

অনিন্দ্য আমার বুকে মাথা রেখে বলতো 

তুই আমার জ্যান্ত কবিতা 

অথচ আমি তখনও তাকে বলতে পারি নি 

অনিন্দ্য আমার ভিতর তুই বাঁচছিস আজকাল। 

আমার স্বামী অনিকেত তখন বৌ পাগল 

আমাকে মাথায় করে রাখতো আগামী পিতৃসুখে ,

আর অনিন্দ্য আমার গাল টিপে বলতো 

“নীরার অসুখ হলে কলকাতার সবাই বড় দুঃখে থাকে”। 

অনিন্দ্য(৪)

অনিন্দ্য(৪)
... ঋষি 
.
যে সময় সমাজ নিয়ম  আঁকতে থাকে 
সেই একইসময় অনিন্দ্য  লিখে ফেলতে চাইতো তার অজস্র সুখ,
অজস্র শব্দের ঝোঁপজংগলে সে ছবি আঁকতে চাইতো সবুজের
ভাঙতে চাইতো অনিয়ম তার অজস্র চিৎকারে। 
অনিন্দ্য প্রেমিক ছিল সময়ের গভীরে
কিন্তু সেই গভীরতায় দমবন্ধ পাগলামিতে আমি থাকতে পারি নি। 
.
না এটা দুঃখ নয় 
আমার প্রেমিক এবং স্বামী  অনিকেত আমার সময়ের সীমানায় নিয়মিত পুরুষ, 
আর সীমানার বাইরে নারীবুকের স্বপ্ন অনিন্দ্য
অদ্ভুত চোখের চাহুনি, 
এক মাথা না আঁচড়ানো ঝাঁকড়া চুল যেন আফ্রিকার জংগল
আমি জানতাম অনিন্দ্যর বুকে আগুন আছে
তাই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতাম সমাজের আলিংগনে নিয়মবদ্ধ ভুমিকায়। 
.
শেষ অবধি পারি নি আমি 
নিজেকে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিগেছিলাম ঈশ্বর  হওয়ার স্বপ্ন, 
স্বপ্ন বিহবল সেই দিন ছিল ২২ শে শ্রাবন 
বিশ্বভারতীর দরজায় হঠাৎ  খপ করে আমার হাত ধরে
অনিন্দ্য বলেছিল হবি আমার নীরা
আমি বলেছিলাম শুরু হলো পাগলামী। 
অনিন্দ্য কিছু শোনে নি সেদিন 
ভাড়া করা এক হোটেলের পর্দার আড়ালে আমাকে পর্দাহীন করেছিল 
আমার বুকে মাঝখানে নাক ঘষতে ঘষতে পাগলেত মতো বলেছিল 
" এই কবিতার জন্য আর কেউ নেই, শুধু তুমি নীরা। "

দীর্ঘায়ূযাত্রা




দীর্ঘায়ূযাত্রা

.... ঋষি 

.

অনাসক্ত শরীর

অভিষিক্ত মন ক্রমশ মৃত্যুর সুখে পারি দেয় ,

আমার প্রেমিকা জানে সে কথা 

সাত সমুদ্র সুখ খুঁজে পাওয়া বিলাসব্যাঞ্জন ,

মনের অধিকার 

নির্ভীক দহনে সকাল সাজের কাব্য শুধু মাত্র দীর্ঘায়ূযাত্রা। 

.

বাঁচতে চায় কে 

বলতে চায় কে 

অহিংসার ভাষণ মানুষের অক্ষমতার অন্য দরজা ,

বিশেষণ  খুলে শিক্ষা 

আর আমার প্রেমিকার ঠোঁটে আজকাল 

আমার মৃত্যুর মন্ত্র। 

.

চলন্তিকা 

আমি দীর্ঘায়ু না, অমর হতে চাই ,

হতে চাই বিভীষিকার বাজারে খুব সস্তা বিকোনো সেই মূল্যের মতো 

যাকে ছাড়া তুই বাঁচতে না পারিস। 

কাঁচের দেওয়ালের ওপাশে যে মুখটা আমি দেখি 

সেটা আমি ছিলাম না কোনোদিন 

ছিল একটা ইট ,কাঠ ,পাথরের দেওয়াল 

ছিল আসন্ন গ্রীষ্মের দেওয়ালে গড়িয়ে নামা ঘামের মতো অতৃপ্তি।

আমি তো শুধু তোর হতে চাই 

মাথার হেলিকপ্টারের ডানাটায় আমি উড়ান ভরতে চাই ,

.

যদি সত্যিগুলো সব মিথ্যে হয়ে যায় 

আর লুকোনো মিথ্যেগুলো সত্যি 

তবে হয়তো আর মৃত্যু খুঁজবে না সুখ 

আর দুঃখ নিয়ে কেউ লিখবে না 

মৃত্যুর শুভেচ্ছা তোমায়

শুভেচ্ছা শর শয্যার। 

গোপন শহর

 


গোপন শহর 

... ঋষি 


কলম তুলে রাখবো ভেবেও তোলা হয় না 

এই শহরের দুঃখের কাছে আমি অসহায়  বড় ,

দ্রাঘিমাংশে ধরা পরে অসময়ের ঢেউ 

একলা ল্যাপটপ স্মৃতি ধরে রাখে আদিম শহরের 

পুঞ্জীভূত ধোঁয়ায় 

কোনো একলা চিন্হ ,প্রশ্নচিন্হ বটে। 

.

কোথায় দাঁড়িয়ে এই শহর 

গঙ্গার পাশে শুয়ে থাকা অপেক্ষারা আজকাল অভিমানী বড় ,

রাত জাগা চোখে ঝগড়া লিখে দেয় 

শূন্য এই ঘরবাড়ি। 

ঈশ্বর হাসে আমার বুকে ভিতর এঁকে দিয়ে একান্নবর্তী সংসার ,

আমি পাখি হতে পারি 

তবে আকাশের লোভে এই শহরে আমার ঘর নেই। 

.

নির্বোধ পাঠাগারে অসময়ের পুরোনো কিছু বই 

ধুলো ঝেড়ে মুছে নতুন করে পরা হয় না ,

শিয়ালদহ ছাড়িয়ে সেই কবরখানার গেটে জড়িয়ে ওঠা নির্ভরশীলতাকে 

বলা হয় না 

আদমিকা ঈমান ,সময়কে তুফান 

সব বকবাস হ্যাঁ। 

আমার ঈশ্বর খোঁজে পাথরের দেওয়াল 

অন্ধের কাছে আলেয়ার কথা 

বৃদ্ধ প্রেমের গায়ে উঁকি মারে মৃত কিছু আলাপচারিতা।

শহর ভালো আছে 

সম্বল ভালো আছে 

ভালো আছে আমার কলম 

শুধু আজকাল শহর লিখলেই গড়িয়ে নামে না ঈশ্বর ,

শুধু অজস্র সাপের ছোবল 

তবুও আমি এগিয়ে যায় অচেনাকে আবিষ্কারের আশায়

আমার নীল শরীরে এখন অপেক্ষার বাস। 

Tuesday, February 23, 2021

যোগ্যতা

যোগ্যতা 
.. ঋষি 
সুতোগুলো ছেঁড়ার আগে অন্তত একবার 
নিজের অহংকার মাপতে চাই, 
 সমগ্র উপন্যাসের শেষ  পাতায় দাঁড়িয়ে মুখোমুখি জীবন 
একবার অন্তত জানতে চাই 
সম্পর্কের গোলকধাঁধায় আমার মত আহম্মকগুলো 
কোথায় দাঁড়িয়ে। 
.
রংবেরঙের স্বাদ
বিস্বাদ জীবনের পাতায় তোর ঠোঁটের চুমুকে অনন্ত সুখ 
সেলাই করে মেপে রাখা যোগ্যতা
ঘড়ি মেপে দিনযাপন, 
আর মৃত্যুর গায়ে গড়িয়ে নানা অষ্টশত নাম 
এখনো তো ফুরিয়ে যায় নি! বাঁচাটুকু বাকি। 
.
প্রতিটা মানুষের ভিতর একটা পশুর বাস 
আমার ভিতর দূটো, 
একটা কুকুর যখনতখন ডেকে ওঠে আমার ভিতর
মাঝরাতে ঠাঁই অপেক্ষায় থাকে যদি একটুখানি জীবন পাওয়া যায়।
অথচ নিজের আয়নায় আমি দেখতে পাই একটা ষাঁড় 
যে শুধু দড়ি ছিঁড়ে  ছুটে  যেতে চায়
শুধু জাবনার জলে ঠোঁট চুবিয়ে জীবন চিবিয়ে খেতে চায়। 
.
সুতোগুলো ছেঁড়বার আগে 
চলন্তিকা আমি অন্তত একবার অহংকারী হতে চাই,
সমগ্র উপন্যাসের শেষে যাতে আমি পাগলের মতো হাসতে পারি
আর লিখতে পারি শেষের কথা
ভালো থাকতেও চলন্তিকা যোগ্যতা লাগে। 



Sunday, February 21, 2021

অনিন্দ্য (২)

অনিন্দ্য(২)
.. ঋষি 
অনিন্দ্য কোন স্তবকের ফুল নয় 
সে আসলে প্রজাপতি, 
আজ এতগুলো বছর, বছর আটেক তো হবেই
ভুলতে পারি নি তাকে।
অনিন্দ্য  আমার প্রেমিক ছিল না 
তবে সে আমাকে ভালোবাসতো। 
.
ভালোবাসা আকাশের প্রদীপ নয় 
ভালোবাসা সেই প্রদীপের জীন 
যার কাছে সব প্রশ্নের উত্তর থাকলেও 
সময় থাকে না,
ভালোবাসা শব্দে ঈশ্বর  থাকে,থাকে ভাঙাগড়া,
আমি বুঝেছিলাম সবই 
কিন্তু কখনো ভালোবাসিনি তাকে। 
.
সত্যি বলতে কি আপনি জানেন
বাস্তবতা জ্যান্ত পরিচয় খোঁজে, খোঁজে মুখোশ আর একটা সমাজ, 
কিন্তু ভালোবাসার কোন পরিচয় থাকে না, থাকে না মুখোশ 
সে তো আকাশ, 
কিন্তু আমরা সকলকে আকাশকে ভালোবাসলেও 
আমরা মুক্তিকে ভালোবাসলেই 
আমরা কজন আছি যারা খোলা আকাশের নিচে বাস করতে চাই? 
সকলের ভয় থাকে
কখন মেঘ হয়, কখন আকাশ ভেজায় সমাজহীন ফাঁকা রাস্তায়। 
তাই আমি ভালোবাসিনি অনিন্দ্য কে 
কাছে থাকতে চেয়েছি, তার মুখে ঈশ্বর  শুনতে চেয়েছি 
কিন্তু না আকাশের মতো অনিন্দ্যের উপর ভরসা করতে পারি নি। 
.
অনিন্দ্য  খুব সিগারেট  খেত 
মানা করলে বলতো ওরে এটা সিগারেট  নয় 
জীবন পুড়ছে, 
আর সিগেরেটের ধোঁয়া হলো ভিতরের অন্ধকার।
আমি টান মেরে ফেলে দিতাম অনিন্দ্যের ঠোঁট  থেকে
অনিন্দ্য  পশুর মতো আমাকে জড়িয়ে ধরতো 
তারপর চোখে চোখ রেখে বলতো 
" কেউ কথা রাখে নি,তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখে নি "
তারপর হঠাৎ ছিটকে ফেলে হাসতো পাগলের মতো, 
আমি অবাক হতাম 
বাস্তবিক অনিন্দ্যের বয়স বোধহয় তখন তেত্রিশ ছিল তখন।

অনিন্দ্য (৩)

অনিন্দ্য (৩)
.. ঋষি 
অনিন্দ্যর মধ্যে দুটো মানুষ বাস করতো
একটা অদ্ভুত পাগোল আরেকটা ছোট্ট শিশু, 
শুনলে অবাক হবেন আমার বিয়ের নিমত্রনে 
সে এসেছিল খালি হাতে, 
আমার ছোটবেলার প্রেমিক স্বামীকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল
যাক বাঁচলাম " নীরা" র গতি হলো 
তার পর শুনিয়েছিল " নীরার জন্য কবিতার ভুমিকা "। 
.
আমি অবাক হই নি অনিন্দ্যর এই আচরনে
অক শুধু বলেছিলাম আজকের তোর নীরার বিয়ে এমন পাগলের মতো কেউ আসে? 
খুব হেসেছিল, তারপর সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে বলেছিল 
আমার মুক্তি রে নীরা এবার, 
এবার আমি আকাশের গায়ে কবিতা লিখবো 
তুই তো এইবার ব্যাস্ত সংসারী 
এইবার আমি পাখি হয়ে আকাশে থাকবো। 
.
বাস্তবিক আমি জানি অনিন্দ্য একটা পাখি ছিল 
কোথাও এক মুহুর্ত স্থির থাকতো না
কি যেন খুঁজতো সাজানো শহরে অলিতে গলিতে ছেঁড়া চপ্পল পায়ে গলিয়ে,
কোত্থায় কোথায় চলে যেত হঠাৎ 
হঠাৎ  আবার একদিন ফিরে এসে বলতো 
বুঝলি তো এই পৃথিবীতে  শুধু কারণ লাগে বাঁচতে 
কেউ কারো জন্য বাঁচে না রে। 
.
অনিন্দ্য র মধ্যে একটা শৈশব দেখতাম
দেখতাম ঋতুবদল যেন অনিন্দ্যের চোখে একটা আশ্চর্য, 
সে অবাক চোখে মানুষ দেখতো 
রাস্তায় পথ চলতি হঠাৎ  কোন দৃশ্যের মাঝে সে দৃশ্য খুঁজতো
খুঁজতো সময়ের চোখে প্রতিবাদ।
অনিন্দ্যের জন্য মাঝে মাঝে আমার কান্না পেত
অনিন্দ্য তখন খুব সহজে উদাত্ত কন্ঠে আবৃত্তি  করতো
" ভালোবাসা নয় স্তনের উপর দাঁত? 
ভালোবাসা শুধু শ্রাবণের হা হুতাশ। "

অনিন্দ্য (১)

 অনিন্দ্য (১)

.... ঋষি 


শুনুন অনিন্দ্য আর নেই

অনিন্দ্য সেই পুরুষ যাকে আমি ভালোবাসি নি 

তবে সে আমাকে ভালোবাসতো। 

.

প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিল বইমেলার মাঠে  

প্রায় চিৎকার করে আপন মনে বলে চলেছিল সুনীলের নীরা ,

আমি প্রথমে অবাক হই 

ইট ,কাঠ ,পাথরের শহরে এমন একটা কিম্ভূতাকার  মানুষ,

কিন্তু কি যেন হয় ,এগিয়ে যাই আমি 

পরিচয় হয়। 

.

পরিচয় তো এই শহরের কতজনের সাথেই হয় 

পথে ঘাটে ,দোকানে ,বাজারে ,বাসে ,ট্রামে ,একলা শ্মশানে ,

কিন্তু এই পুরুষ্ট অন্যরকম 

শুধু দেখা করতে চাইতো ,

রাস্তার পাশে কোন চায়ের দোকানে ,গড়ের মাঠের সবুজ ঘাসে 

কিংবা একলা নির্জন ট্রাম ডিপোয়। 

না না ,সেখানে কোনো স্পর্শ ছিল না 

অনিন্দ্য অদ্ভুত ভাবে চেয়ে থাকতো আমার মুখের দিকে 

অবিরত কবিতা শোনাতো 

শোনাতো দেশ ,কাল ,শহরের অনেক গল্প ,

সময় কাটতো 

কাটতো দিন 

কিন্তু কোনোদিন অনিন্দ্য ভালোবাসার কথা বলে নি আমাকে । 

.

অনিন্দ্যর চোখে একটা কষ্ট ছিল 

কষ্ট ছিল তার পিতৃমাতৃহীন একলা বাস করা শহরের

তবে সে হাসতো ,খুব হাসতো ,  

তার চোখের  ,তার না কাটা দাঁড়িতে ,তার চান না করা গায়ের গন্ধে 

কিছু একটা ছিল 

তবে বিশ্বাস করুন সেটা প্রেম নয় আমার কাছে 

বরং পবিত্রতা। 

যেদিন সকালে ট্রেনের নিচে অনিন্দ্যর মাথা কাটা শরীরটা খুঁজে পাই 

না কাঁদি নি আমি 

শুধু বুঝেছিলাম ওর ভালোবাসাটা ঈশ্বরের পায়ের ছাপ। 

আজ এতগুলো বছর পরেও অনিন্দ্য হঠাৎ হেসে ওঠে আমার ভিতরে 

তারপর বলে তোকে ঠিক নীরার মতো দেখতে  

তারপর আমার চিবুক ছুঁয়ে বলতো 

" এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ

আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি ?


অধিকার



অধিকার 
... ঋষি 
.
সম্বলে অধিকার, 
ছোটবেলায় বাবা পাহাড়ের উপর একটা গাছ দেখিয়ে বলেছিলেন
  পোঁছোতে হবে,  দৌড়ো তুই,,,,, 
সেই এতগুলো বছর ছুটছি আমি গাছটার দিকে 
না পারি নি ছুঁতে। 
.
হয়তো কখনো মনে মনে পৌঁছেছি ওই পাহাড়টায় 
কিন্তু ঘুম ভাঙতেই গড়িয়ে নেমে এসেছি, 
বহুবার দেখেছি ওখানে বাবা দাঁড়িয়ে আছে 
আমাকে ডাকছে হাত নেড়ে, 
তারপর হারিয়ে গেছে বাবা 
শুধু বুকে পাঁজরে জমা হচ্ছে আজকাল শৌখিন  ব্যাথা 
চ ল ন্তি কা কা কা...
.
চারপাশে চিৎকার 
বুবুন বাবুর মেয়ে হারিয়ে গেছে আজ পাঁচদিন, 
পাড়ায় কান পাতা দায় অচিন্ত্যের বিধবাটা হঠাৎ প্রেগনেন্ট, 
সুভাষদার বৌটা নাকি পরপুরুষের সাথে পালিয়েছে 
চায়ের দোকানের হরিদার নাকি গলায় দড়ি দিয়েছে,
আরও চিৎকার 
কান পাতা দায়। 
আমি দুহাতে কান চেপে চিৎকার করে বলতে চেয়েছি 
ওদের কিছু হয় নি ওরা সকলেই ভালো আছে
ওরা সকলেই বাবার দেখানো গাছটার কাছে পৌঁছাতে পেরেছে, 
কেউ আমার কথা শোনে নি 
সকলেই বলেছে চলন্তিকা আমি একটা অসামাজিক 
একটা আস্ত পাগল। 

শুভেচ্ছা বাংলা ভাষা



 শুভেচ্ছা বাংলা ভাষা 

... ঋষি 

.

যারা প্রাণ দিয়েছে ,শুধু তাদের জন্য  ?

কৃষ্ণচূড়ার নিচে যেখানে আগুনের ফুলকির মতো ছড়িয়ে আছে 

আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামের রক্ত ,

শুধু ওদের জন্যই   ?

শুধু একটা দিন ,শুধুই একটাই ,,

আর বাকিদিন ?

.

না না আমি মশাই কাঁদতে আসি নি 

আমি আসি নি শুধুই কোনো ইতিহাস শোনাতে 

কিংবা শোনাতে কোনো দুঃখের কাহিনী।

আমার শুধু একটাই কথা জানার আছে 

যে ভাষার রক্তের পোশাক পরে আমরা উচ্চারণ করি মাতৃ সম্বল 

তার জন্য কেন শুধুই একটা দিন, কেন  ?

আর অন্যদিনগুলো তবে কার বা কিসের ?

.

না না মশাই আজ কোনো ফাঁসির দাবি নিয়ে আসি নি 

শুধু জানাতে এসেছি আপনাদের এটা আমাদের রক্তের ভাষা 

শুধু বলবার ছিল আপনাদের 

আপনার মাতৃভাষার জন্য আপনি কতটা দায়বদ্ধ ?

শেখাচ্ছেন তো আপনার সন্তানকে বাংলা ?

আপনার সন্তান ফরমাসি কায়দায় মাকে মামা কিংবা আপনাকে পাপা 

আর আপনাকে প্রশ্ন করছে না তো আজকে 

" ওয়াট ইজ ২১ শে ফেব্রুয়ারী ?"

.

না না আমি অন্য ভাষাকে ছোট করছি না 

সেই অধিকার আমার নেই ,

শুধু আপনাদের মনে করাতে  চাইছি আপনি বাঙালি, 

শুধু আপনাদের বলতে চাইছি 

বাংলা আপনার  শুধু রক্ত নয় ,বাংলা  ভাষা আপনার মায়ের। 

নিশ্চয় আপনার মনে আছে সেই সব ভাষা শ্রমিকদের কথা 

নিশ্চয় আপনার মনে আছে আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি ,

হ্যা ভাষা দিবস। 

শুভেছা আপনাকে ,শুভেচ্ছা প্রতিটা বাঙালিকে 

শুভেচ্ছা আমার রক্তের ভাষাকে,

আর আমার একবার বলার আছে

আমি বাঙালি তাই আমি গর্বিত 

বাংলা আমার মায়ের ভাষা তাই আমি গর্বিত।  

.

পুনশ্চ :

যে ভাষার কোনো জন্ম ,মৃত্যু নেই

যে ভাষার পরিধি শুধু উচ্চারণ নয় 

যে ভাষা শুধুই গর্বের 

তার নাম বাংলা ভাষা। 



Saturday, February 20, 2021

অহেতুক



অহেতুক 
.. ঋষি 
.
জীবনের জানলার কাঁচ বেয়ে গড়িয়ে নামা দারিদ্রতা
সময়ের অহেতুক আক্ষেপ, 
" আচ্ছা সবাই যদি সত্যি হতে পারতো। "
সে সুনীল হোক,জীবনানন্দ, টলস্টয় কিংবা মেক্সিম গোর্কি
দরিদ্র সকলে নিজের মতো করে 
শুধু ফরমানে সাজানো তুঘলকি  রং। 
.
ফিরে আসা আঁচিল 
স্তবকে স্তবকে মাংসের ইতিকথা, সবটাই কি শুধু সাহিত্য 
তবে কি সত্যি বলতে নেই? 
নিয়মিত সাবান দিয়ে স্নানের ঘরে পরিষ্কার রাখা শরীরটা
শুধুই কি ভন্ড পৃথিবীতে হাসির পিছনে লুকোনো সময়
তবে চেতনার গভীরে ঈশ্বর  কোথায়? 
.
আমি আজকাল অহেতুক ঈশ্বর  খুঁজতে থাকি 
ইট, কাঠ, পাথরের চিৎকারের ফাঁকে চলন্তিকা বড় ব্রাত্য আমি
নির্বাক দর্শক, 
এই দুনিয়ায় হাজারো পোশাকের আড়ালে শরীরগুলো
সমাজের কাঠামোতে শুধুই সামাজিক,
আর গভীরে বনলতা,নীরা কিংবা চলন্তিকা। 
.
বারংবার ভুল প্রমানিত আমি একলা দর্শক 
ঝাঁ চকচকে টু ওয়ে রোড, রাতের শহর, একা ল্যাম্পপোস্ট
ক্রমশ আসা আর চলে যাওয়া, 
তার ফাঁকে হঠাৎ  চোখ চলে যায়  জীবনের জানলার কাঁচে
আমি দেখি আমার মত কেউ
তোর ব্রেসিয়ারের হুকে সামাজিক হয়ে উঠছে। 

ছেঁকা

 


ছেঁকা 

... ঋষি 


যেখানে ইশারা করেছো,থামাতে চেয়েছি সময় 

তবুও প্যাসিফিক সভ্যতার বাহুডোর আজ যেন সেই সিন্ধুতেই আটকে। 

যে ভাবে ঘেঁষে বসলে অকেজো হয়ে স্নায়ু 

ঠিক যে  ভাবে ছেঁকা দেয় বুকের ভিতর নিকোটিন প্রেম  

ঠিক সেই ভাবে এই সিন্ধু সভ্যতার দেশে 

ভিক্ষা রাজমন্ত্রে দীক্ষিত হয়। 

.

ছেঁড়া বিকেলের টুকরোয়, গট গট‌ করে আস্ত বিকেল হারায় 

জানি না কোথায় তার লুকোনো ,

তবুও প্রতিদিন  দাম্ভিক আচরণে বিরক্তির ল্যাম্পপোস্ট জ্বলে ওঠে

 খান কতক পোষা কুকুর রাস্তার পাশে গুঁড়ি মেরে অপেক্ষা করে 

এই শহরের খিদে বাড়ছে প্রতিদিন 

বাড়ছে সিন্ধু সভ্যতার শোক। 

.

কাউকে পাত্তা দেয় না এই কবিতা 

কাউকে পাত্তা দেয় না এই সভ্যতা 

সীমান্তে পরে থাকে অজস্র প্রেমিকার মৃত মুখ ,মৃত স্তন ,মৃত যোনি ,

অদ্ভুত শিহরণ 

কাঁপতে থাকে নিজের গভীরে এক দাম্ভিক মেরুদন্ড।  

ভাঙা কাঁচের গেলাস, দুমড়ানো চামচ, 

আধ খাওয়া বয়ামের ভেতর আরো আধ খাওয়া বিস্কুট

ডার্ক চকোলেটের সেই স্বাদ 

বিস্বাদ জীবন। 

ভয়ঙ্কর রকমের হাতটান নিয়ে একটা মেসিন চলেছে

 জং ঠেলে ঠেলে আল জিভ ছুঁয়ে যাচ্ছে তিন রোজ আগের সেই সাথে থাকা ,

কখন জানি না  শব্দের ছোট ছোট ডিম ফুটে,চিঁ চিঁ করতে করতে,

গলা সেজে উঠবে চিৎকার 

বলবে 

এই সভ্যতা আমার নয় ,আমার ছিল না কোনোদিনই। 

বারুদ



 বারুদ 

... ঋষি 


সময়ের বারুদের বিস্ফোরণ বাকি 

বারুদ নিয়ে আজও বাকি ছেলেখেলা ,

বারো দু গুনে চব্বিশ ,দু ডজন গল্পের হত্যাকারি ,

তবে দিন আর রাত। 

 অ্যান্টিবায়োটিকের ডিহাইড্রেশনে জমাট হ্রদের ওপর দিয়ে

গড়িয়ে যায় পবিত্র আত্মার বাথরুমের ফ্ল্যাশ। 

.

গোরি তেরা গাঁও বড়া পেয়ারা 

ঘন্টা -দুঘন্টায় জমাট বৃষ্টি হতে পারে আমার শহরে ,

গরমের দেশ এটা ফায়ার প্লেস দরকার নেই 

দরকার সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়া একটা নাতিশীতোষ্ণ সমাজ ,

তারপর বাকিটা কয়েকমুহূর্ত 

থিওরি অফ ভোকাবুলি ,মানুষ শব্দের খোরাক। 

.

আলোভরা জেল ;

কয়েক মুহুর্ত শুধু, 

আরবার,

গেরস্থের বাজার ছুঁয়ে আকাশ ছোঁয়া সেই পেঁয়াজ ,

তাইতো পেঁয়াজী সেও দামি। 

আমার মতো কেউ কেউ বোঝে না 

বসিরহাট বনাম কলকাতা কিংবা বনগাঁ থেকে কলকাতার ডেইলি ট্রেন 

আর জার্নি অফ খালিপেট। 

রাজমা ও কিডনির কলামকারি একেকটি ফ্লাইওভার ডিশ 

এই শহরে একলা থাকতে কেচাপ লাগে না

লাগে লোহালক্করের ক্রমাগত চিৎকার । 



আগুন পাখি



আগুন পাখি 
.. ঋষি 
আগুনের ভিতর একটা পাখি ঘুরতে ঘুরতে নেমে আসছে
সুখ খুঁজছে, বুক খুঁজছে 
খুঁড়ে ফেলছে নিজের গভীরে হৃদয়ের সংসার, 
পুড়ছে সময় 
আর বাড়ির ছাদে একটা সময় ক্রমাগত বিভীষিকা 
নির্গত ধোঁয়ায় হৃদয়ের গন্ধ। 
.
আমি দাঁড়িয়ে আছি গোরোস্থানে
অন্ধকার ঝোঁপের আড়ালে পূর্ণিমার চাঁদ নিয়মিত, সামাজিক 
আমি বুঝছি 
আজ আকশের চাঁদে এত কালি, 
এত প্রশ্নচিনহ কেন? 
উত্তরগুলো আমি জানি, সামাজিক। 
.
আগুনের ভিতর একটা পাখি ঘুরতে ঘুরতে নেমে আসছে 
সামনে পিকনিকের ধোঁয়া, 
মাইকে ফুল পাওয়ারে বাজছে " ও মেরি ছম্মক ছল্লু ",
আর কিছুক্ষন 
তারপর সেই বারবিকিউ,লেবু চটকানো তেতো
মদ, ছোঁয়াছে নেশা। 
আসলে এই গল্পটা ফ্লপ চিরকাল
"মেঘে ঢাকা তারা " র স্ক্রিনে অনেক ঋতবিক ঘটক 
অনেক ধৈর্য, অনেক যন্ত্রনা লাগে। 
সময় তুমি শুধু বারবিকিউ  নিয়ে ব্যাস্ত থাকো 
আর আমি না হয় সেই আগুনে পাখি 
পুড়ি সুখে 
পুড়ি দুঃখে। 

Friday, February 19, 2021

বারংবার

বারংবার 
..ঋষি 
বারংবার ভাবা, কেমন আছিস তুই? 
ভালো থাকবি?  আমার থেকে দূরে অন্যকোথাও, নিরাপত্তা, 
আকাশের ঘর, সময়ের আদর, পাগলামি 
বদলানো সুখ। 
জানো তো চলন্তিকা বারংবার নিঃশব্দ হতে ইচ্ছে করে 
ইচ্ছে করে শব্দদের হত্যা করে নিজের চিতা সাজাতে। 
.
হচ্ছে না, পারছি না
আর্তনাদগুলো, শহরের বাড়িগুলো,নতুন আপার্টমেন্টগুলো, 
একা শহরে সাজানো রাস্তার বাঁকে, কফি শপে 
সেই রাস্তার ধারে চায়ের দোকান, দাঁড় করানো সাইকেল, 
হাঁপিয়ে উঠছি মিথ্যে বলতে নিজেকে 
তোকে ছাড়াও ভালো থাকা যায়। 
.

বারংবার ভাবা কেমন আছিস তুই?  
ভালো থাকবি?  বুঝছি এখন রক্তপাত?  এখন আত্মহনন? 
তারপর তোর গল্পটা থুড়ি অন্যের গল্পটা
আমার সান্নিধ্যে  সুখ খুঁজছে, পুড়ছি আমি 
বুঝতে পারছি না কি চাইছিস তুই? 
দূরে আরো দুরে?  যোগ্যতা?  লোভ?  কার্পন্য? 
সময়ের যোগ 
তোর ব্যাস্ততা, আমার ব্যাতিক্রম, 
এগিয়ে যাওয়া সময়ে পুড়তে থাকা সময়ের পিঠ 
ঠিক এটাই তো আমার দরীদ্র ভারতবর্ষ।

আশিয়ানা



আশিয়ানা
... ঋষি 

শব্দ হচ্ছে না? 
ভালোবাসা টিনের চালে ঢিল পড়ার মতো শব্দ, 
ক্লান্ত সকাল 
রাস্তার পিচ রাস্তা বেয়ে ঋতু নামের নদী একলা বয়ে যায়,
সময় বদলায় 
বদলায় শহরের গতিতে অগণতি দেখা হওয়া মুখ। 
.
হাওয়ার বয়স 
নির্ভতে বেঁচে থাকা একা থাকার রসদ, 
সকলে জড়িয়ে ধরতে চায় 
আকাশের চাঁদ থেকে জ্যোৎস্নার দুরত্ব, বেকার হৃদয় খোঁড়াখুঁড়ি।  
বুকপকেটে তোর রান্নাঘরের শব্দ, সময়ের আশিয়ানা 
সত্যি করে মিথ্যে বাঁচার নাম বোধহয় ভালোবাসা। 
.
শব্দ হচ্ছে না? 
ভালোবাসা একটা মৃত মমি যে যুগান্তরে বারংবার অসংবিধানিক, 
আসলে হিসেবের বাইরে একলা দাঁড়ানো লোকগুলোই পাগল 
আর আমার পাগলামি 
শব্দ খুঁড়তে খুঁড়তে কখন যেন আমি তোকে বধ করেছি, 
অথচ এই মৃত্যু আমি চাই নি 
চাই নি এমন জন্ম, পাগলামি মন 
আর মনের আশিয়ানা। 
অথচ বিশ্বাস  কর এই কন্ঠ আমার শুধু দিনের থেকে রাত 
ওই যে ওই কালো কাজল চোখে আমার গভীর মন্তাজ, 
ভাবলেই মরে যাই 
সময় ঘড়ির কাঁটায় দাঁড়িয়ে হাঁপানো এই সময় 
সত্যি কি তবে ভালোবাসতেও যোগ্যতা লাগে? 

Thursday, February 18, 2021

কৃপাদাসী

 


কৃপাদাসী 

..ঋষি 


বলতে পারি না তোকে কৃপাদাসী 

আয় কেমন বেঁচে আছি দেখে যা এই পৃথিবীর আঁধারে ,

আয় দেখে যা আমার বুকের ১০৮ এ 

অজস্র কিছু অলিখিত চুক্তির কেমন করে দিনযাপন। 

.

কৃপাদাসী তুই জানিস আমার শহরে আজকাল ২২ সে শ্রাবন 

অনবদ্য ভালোবাসার মুখে ভাত দিয়ে 

আমার মতো কেউ অপেক্ষা থাকে যৌবনের ,

মুহূর্তের সঙ্গমের 

তারপরে কি করে জানি একটা গোটা দিন শেষ হয়ে যায় 

আমি বৃদ্ধ হয়ে ফিরে আসে নিজের ঘরে 

প্রতিবারে। 

.

প্রতিবারে কৃপাদাসী এই বুকের গ্রীষ্মে তৃষ্ণার্ত কাক 

ঈশপের গল্প খোঁজে 

খোঁজে জল। 

তোকে আর কি বলবো কৃপাদাসী 

আজ শত সহস্র বছর আগে যে মহাকথন মহাভারতে 

লেখা হয়েছিল অর্জুন ,

লেখা হয়েছিল কর্ণ 

লেখা হয়েছিল পাঞ্চালি ,কুরুক্ষেত্র আর সর্বনাশ ,

সেই সর্বনাশে ধর্ম আমার বুকে

তাই তো আজও ২২ সে শ্রাবনে হাজারো কবিতা জন্মায় 

অথচ কবির মৃতদেহ রওনা হয় একলার খোঁজে। 



সভ্যতা নারীতান্ত্রিক

 


সভ্যতা নারীতান্ত্রিক 

.... ঋষি 


বিকেলের পড়ন্ত আলো 

হৃদয়ের ট্রান্সমিটারে ধরা পরে হাজারো  যোজন দূরে এক সভ্যতা ,

সভ্যতা আসলে কোনো নারীর দত্তক ,

সভ্যতা ক্রমশ রূপসী কিংবা বিশ্রী কিছু নারীতান্ত্রিক কথোপকথন। 

ঈশ্বর সভ্যতার দাস 

আর আমার কবিতারা এই সভ্যতা থেকে অনেক দূরে

শব্দ কুড়িয়ে বেড়ায়। 

.

জানি তোমাদের বোঝাতে পারবো না 

মাথার ভিতর অতিমাত্রায় কম্পন ,

কম্পন সূত্র ধরে হাজারো যোজন দূরে আমি সৃষ্টি দেখতে পাই ,

দেখতে পাই নদী তান্ত্রিক সভ্যতার ভিতে 

বসে গেছে অকাল বিধি ,

আমার মৃত্যু শুধু শব্দদের শ্মশান হতে পারতো 

অথচ দেখো আমার ভিতর সৃষ্টিদের বসবাস। 

.

চলন্তিকা বলে তোর শব্দদের আমি যত্নে আদরে জড়িয়ে রাখবো 

সময় আমার কবিতায় খাবার খোঁজে বেঁচে থাকার 

অথচ আমি মৃত্যুর বুক থেকে তুলে আনি সময়ের যন্ত্রনাদের। 

" সময় " 

এই একটা মাত্র শব্দ আমাকে বড় অস্থির করে ,

ডিকশনারি থেকে গ্লোবাল মিডিয়ার সমস্ত দার্শনিক তত্ব 

আমার একলা মনে। 

মনে হয় সময় শুধু একটা চলন্ত ট্রেন

যে ট্রেনের কোনো স্টেশন নেই ,নেই গন্তব্য 

শুধু গতি ,শুধু বদল ,

তাই তো আজকাল আমার হৃদয়ের  ট্রান্সমিটারে ধরা পরে

 হাজারো  যোজন দূরে এক সভ্যতা ,

 সভ্যতা আসলে কোনো নারীর দত্তক ,

সভ্যতা ক্রমশ রূপসী কিংবা বিশ্রী কিছু নারীতান্ত্রিক কথোপকথন। 


 

Tuesday, February 16, 2021

অবলুপ্ত

অবলুপ্ত
... ঋষি 
কিছুদিন অবশিষ্ট জীবনের শিষ্টাচার 
আমরা কে কতটা মিথ্যে বলতে পারি নিজের সাথে,
আমরা কে কতটা গভীরে বাঁচতে পারি নিজের সাথে
ছুঁয়ে থাকা  খেলনাবাটি, স্নানের ঘর 
সমাজবদ্ধ গড়িয়ে নামা জল, 
নিজের আয়নায়। 
.
পা টিপে টিপে পায়চারি 
সময়ের বারান্দায় বদলানো ঋতুর ইজিচেয়ার, 
অসংযমী শব্দ প্রয়োগ 
হিসেবের রোগ, 
আমরা কে কতটা কফিকাপে শরীরে শর্করা
 সীমাবদ্ধ রাখতে পারি সময়ের ঘরে। 
.
দৃষ্টি নিন্দুক বাঁচতে চাওয়া
অপরাধ নিজেকে সত্যি বলা, 
আজকাল জিরাফের মত উঁচু থেকে পৃথিবী দেখে সকলে
আমরা নিজেকে দেখি শুধু অন্যের আয়নায় 
অথচ নিজের আয়নায়, ক্রমশ  আবছা
ক্রমশ অবলুপ্ত আমরা জুরাসিক এজের নিরাপত্তা। 
আমিও তো জ্যোৎস্নার ঘরে রেখে এসেছি জীবনের ফুটিফাটা ছাদ 
আমার ভাঙা ঘরে প্রচুর বাতাস, 
বাউলের বাঁশির সুর নিয়মিত দূর থেকে আমার পৃথিবী প্রদক্ষিন করে
আর প্রতিক্ষারত চাঁদের বুড়ি 
যার সুতোর পোষাকে স্বপ্নরা বেলা চুরি করে। 

Sunday, February 14, 2021

ভালোবাসা



ভালোবাসা 
.. ঋষি 
ভালোবাসা কি খোঁজে? 
আজ অবধি বোঝা হয় নি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শ্রেষ্ঠ  নারী কে? 
ইতিহাস পড়েছি, পড়ে বুঝেছি 
নারী বুকে লেখা থাকে নিধন প্রাকৃতিক, 
আর পুরুষ লোমশ  জংগলে লুকোনো আশ্রয় 
সবুজের খোঁজ বোধহয় ভালোবাসা। 
.
ভালোবাসা শব্দটা দুষিত করে দেখেছি 
দেখেছি প্রেমিকার চোখে হঠাৎ সন্তান হারাবার ভয়, 
প্রেমিকার স্তনে দাঁত রেখে বুঝতে চেষ্টা করেছি ভালোবাসার মানে? 
অবাক হয়েছি কেন যে কষ্ট হয় চলন্তিকা
তোমাকে ভালো বাসায়। 
,.
আজ অজস্র সুখ যখন একটা দিনের মধ্যাহ্নে অপেক্ষায়
আজ যখন ফুলের স্টলে হঠাৎ এক বৃদ্ধ তুলে নেয় যত্নের গোলাপ,
আজ যখন শহরে চাকরীরত যুবকের হঠাৎ  শহরের ভীড়ে মনে পড়ে যায়
 দেশের বাড়ির সেই নতুন সিঁদুরমাখা মুখটা
তখন মনে হয় সত্যি ভালোবাসা বলে কিছু আছে। .
কিংবা সেই বৃদ্ধা যখন অসুস্থ বিছানায় খুঁজে নেয় তার সত্তর উর্ধ স্বামীকে
অথবা রাস্তায় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে  হঠৎ যখন বাসের জানলায়
 অচেনা মেয়েটাকে ভালো লেগে যায়,
বুকের ভিতর যখন কারণ অকারণে চলন্তিকা যখন তোমায় মনে পড়ে
হঠাৎ খুশির দিনে সকলের মাঝে যখন একা লাগে 
তখন আমি বুঝি সত্যি ভালোবাসা বলে কিছু আছে। 
.
ভালোবাসার জন্য গোলাপ, চকোলেট,টেডিবিয়ার,.
একটা দিন সত্যি কি খুব দরকার? 
ভালোবাসার সত্যি কি কোন দিন হয়? 
হ্যা অনেকেই বলবেন সেলিব্রেশন,
আমি বলবো সেলিব্রেশন,সে তো প্রতিদিন ,রোজকার দিন, রাত।
কিন্তু তুমি জানো চলন্তিকা ,
কোন দিন কিংবা মুহুর্ত  সত্যি আমার থাকে না
যখন তোমায় মনে পরে না ,কিংবা আমি তোমাকে ছুঁতে পারি না। 
আসলে আমার শিকড়ের লোভ চলন্তিকা
দুরন্ত খোঁজ, 
তোমার মেরুদণ্ডকে আমি ভালোবাসা বলে যত্ন করি 
ভালোবাসি, 
নিজেই মরি 
তোমার ভালোবাসার জন্য একটা জীবনও যে বড় ছোট লাগে।



Saturday, February 13, 2021

সমুদ্র ভাবনা

 সমুদ্র ভাবনা 

... ঋষি 


প্রতি সন্ধ্যার মতো সমুদ্রের ঢেউ 

তুমি দূরের দিকে তাকিয়ে খুঁজে নিচ্ছো চিতা, 

সব বুঝছি 

জ্বলে যাওয়া তোমার ভিতর থেকে সমুদ্রের ঢেউ 

ছুঁয়ে যাচ্ছে পায়ের পাতা

আমার মতো কেউ। 

.

কলম একা বসে আছে 

আকাশের ছাদে বসে কেউ আমার দিকে তাকিয়ে ,

দেখা হয়েছিল ,না প্রশ্ন ছিল না কোনো  

প্রশ্ন তখনি  যখন ঈশ্বর এক পায়ে অপেক্ষা করে 

তোমার দিকে তাকিয়ে। 

.

আজকাল নিঃশ্বাসের গায়ে বিশ্বাসের দুর্গন্ধ 

সেই দুর্গন্ধ তোমাকে ছুঁয়ে যাক আমি চাই না ,

আকাশের কবিতায় ছুঁয়ে আছে তোমার গভীরে গোপন প্রেমিক 

আর বাতাসের শব্দে হিমেল শরীর। 

মেঘ থেকে মানুষ 

কিংবা মানুষ থেকে জংলী জং ধরা ঘোড়া ,

শহর ছুটছে 

আমরা ছুটছি নিজেদের থেকে দূরে 

হয়তো আরো কাছে 

তারপর 

সমুদ্রের বিস্তীর্ণ নোনতায় কিছু বিষাক্ত ভাবনার ভিড় 

আমরা নোনতা ভাবনায় ভিজে যাচ্ছি 

শুধু জীবন সমুদ্রে তাকিয়ে। 

Thursday, February 11, 2021

নেগেটিভ ব্লাডগ্রূপ

 


নেগেটিভ ব্লাডগ্রূপ 

.. ঋষি 


সময় বদলের দিন এসেছে

রাস্তায় কুকুরের ছদ্মবেশে যারা রাজার গদিতে বসে ঈগলের চোখ ,

সন্ধ্যাকালীন তোষোমোদ, কারখানায় উৎপন্ন গরিবের ভীতি 

নেগেটিভ ব্লাডগ্রূপ। 

আজকাল আকছার গুলির শব্দ পাই শহরের প্রতিটা অলিগলিতে 

মৃত্যুকে মানুষ ডরায় বড় 

তার থেকে বেশি বোধহয় মানুষের ভয় প্রতিদিনকার মৃত্যুকে। 

.

আক্রান্ত শহর,দেশ ,গ্রাম ,পরিচয় আর পরিচিতি 

সকলেই পিছিয়ে আছি সময়ের এই নরসিংহ অবতারের আস্ফালনে ,

 বুকের কাছে আক্রান্ত আমি 

 প্রেমিকার ভাল্লাগে সময়ের অবগতিতে  দুঃখবতী রাত।

অনিবার্য প্রশ্রয় 

প্রশ্রয়ে আগুন বাড়ে 

প্রশ্রয়ে আগুন পোড়ায় 

প্রশ্রয়ে হয়তো একদিন গুম হয়ে যেতে পারে 

আপনার সতেরো পেরোনো মেয়েটা। 

.

সময় বদলের দিন এসেছে 

জানেন তো ভালোবাসা পাখির বাসার মতো ত্রস্ত এই সময়ে 

ঝড়ের ভয় 

প্রকৃতির জঠরে বাড়তে থাকা পলিথিনের ব্যাথা 

লুকোনো নষ্টের গান 

শুধু কান পেতে শুনলে একদিন সবুজ থাকবে না আপনার বুকে।  

যদি স্বার্থপর কবিতা লেখেন 

হয়তো টি আর পি বাড়বে 

কিন্তু কবির মান থাকবে না। 

.

 স্মৃতি অনেকটা মৃত  বাবা-মায়ের গলিত ,পচা দেহ

আর তার তৃপ্তিতে বুকের গভীর অন্ধকার ঘরটায় একলা বসে কাঁদা ,

আর কত কাঁদবেন 

সময় বদলের দিন এসেছে ,

উঠুন 

জাগুন 

স্বার্থপর সময়ের বিরুদ্ধে একটা আগুন দরকার 

দরকার ফুলকি 

জানেন তো প্রতিবাদের থেকে বড় রিভোলিউশান আর নেই 

আর মাথা নিচু করা বাঁচার লজ্জা 

আর না। 


 

বিষাক্ত সুখ

 


বিষাক্ত সুখ 

... ঋষি 


কোনো একদিন আমি বাড়ি ফিরবো না 

পড়ে নেবো কোন এক শেষ রাত্রে  নবারুণ বাবুর সেই কয়েকলাইন 

" এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না। "

দুঃখ তুমি যে নেলপালিশের শুকিয়ে থাকা হাজারো রং  

সব সয়ে যাও একটু একটু করে।

আমি না থাকলে বলো তুমি বাঁচবে কি করে ?

.

হে সোনালী দুঃখ,

জ্বলন্ত আগুনের বুকে ছুটে আসা সেই জোনাকির মতো 

তুমি ফিরে আসো মৃত্যু বুকে ,

তুমি লিখে ফেলো দিনলিপি নন্দনের সেই বাঁশি ওয়ালার সুরে 

এই সাজানো শহরে তুমি ভীষণ একা 

সব বয়ে চলো নিজের ভিতরে 

দুঃখ তুমি বলো আমি না থাকলে কে সইবে তোমায় ?

.

কোনো একদিন আমি আর বাড়ি ফিরবো না 

পড়ে নেবে সুনীলের জ্বলন্ত " মন ভালো নেই "

কিংবা ফসিলস এর সেই গান " একলা ঘর আমার দেশ।  "

দুঃখ তুমি কোনো একদিন বাসের জানলায় বসা সেই মেয়ে 

যার দূর দৃষ্টিতে এই শহর ভীষণ অচেনা ,

দুঃখ কোনো একদিন আমি বাড়ি ফিরবো না 

এই শহরের রাস্তায় একলা দাঁড়িয়ে সেই অচেনা আগুন্তুক 

খুঁজতে চাইবে চেনা সম্বল ,

আর আমার চেনা অজুহাত 

দুঃখ তুমি বলো আমি না থাকলে 

তুমি পথ খুঁজে পাবে কি করে ?



তোমাতে মুগ্ধ বরাবর

 


তোমাতে মুগ্ধ বরাবর 

... ঋষি 


অদ্ভুত এক অতৃপ্তিতে বাস করছি আজকাল 

তবে তোমাকে নিয়ে ভাবতে পারার তৃপ্তি অনবদ্য নির্বাণ 

শরীরের কোরকে  তোমার স্পর্শের দোলা

প্রতিমুহূর্তের ছুঁয়ে থাকার সুখ ,

মাঝে মাঝে মনে হয় ঈশ্বর আসলে তোমার মতো দেখতে 

 সেই তেল রং ,সেই আগুনে চোখ ,সেই বিস্তীর্ণতা 

তোমাতে যে  মুগ্ধ বরাবর। 

.

তোমার হাত, তোমার কণ্ঠ, তোমার তাকানোতে 

হৃদপিন্ড চিৎকার করে ,

চিৎকার করে সারা শহর রোজকার জনকলস্রোতে ,

মাঝে মাঝে তোমাকে মনে হয় সমুদ্র 

মনে হয় ঝাঁপ দিয়ে পরি 

তারপর ডুবসাঁতার দিয়ে পৌঁছে যায় তোমার হৃদপিণ্ডের কাছে 

তারপর সলিল সমাধিতে আমার সুখ 

তোমাতে যে মুগ্ধ বরাবর।

.

যারা ভেবেছে তোমার মধ্যে গভীর অন্ধকার 

কিংবা সর্বনাশ ,

আমার মনে হয় তাদের সাথে আমি ঝগড়া করি ,

তাদেরকে বোঝাবার চেষ্টা করি 

তোমরা হারিয়েছো সুখ 

আসলে তোমরাই চির দুঃখী সেই বিলাসব্যাসন। 

আমি তোমাতে চির  মুগ্ধ এক সময় 

যার চিৎকার এই শহরের চকোলেট ফ্রেমে পৌঁছয় না 

পৌঁছয় না এক সমুদ্র সুখ তাদের বুকে 

যারা মনে করে ভালোবাসা কিলোতে বিক্রি মাংসের কারবার ,

.

অদ্ভুত এক অতৃপ্তিতে বাস করছি আজকাল 

সেই পৌরাণিক সূত্র ধরে আমাদের সঙ্গম যেন গেরুয়া জল 

আমার পথ হাঁটা কাঠের খড়ম 

আর তোমাকে স্পর্শ 

সে যে ঐশ্বরিক জল ,

যার নোনতা প্রভাবে পৃথিবী নুনের সুখ পায়। 

মাঝে মাঝে মনে প্রেম হলো সন্ন্যাসীর এক বস্ত্রে গৃহত্যাগ 

এক যোগ ,এক মুহূর্ত 

এক অনুপম শেষ না হওয়া যাত্রা। 

 


Wednesday, February 10, 2021

ব্যস্ত এই শহর থেকে



ব্যস্ত এই শহর থেকে 

... ঋষি 


বিচলিত কিছু মুহূর্ত 

আমার জানলে পাশ দিয়ে হওয়ার মতো চলে যায় ,

ভিক্তোরিয়ার সিংহের দেওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে 

আমি খুঁজে পাই এই শহরের পরিচিত আত্মা। 

সাজানো ,গোছানো ফোটোফ্রেমের পরিচয়ে 

হাসি পায় জানো 

এই শহরের গৃহস্থের বিছানায় শুধু  ঘুনপোকা বাস । 

.

এ শহরের কোনো উপপাদ্য নেই 

নেই ঘাড়ে মানুষের মাথা 

এই শহরের সিংহরা শুধু দিন গোনে আলিপুরের খাঁচায় ,

আর এ শহরের ব্যাথায় 

অগুনতি সিগারেটের ফিল্টার পোড়ে যন্ত্রণার নিকোটিনে

দূর থেকে চলে যায় জীবন বলে ভদ্রলোক 

কিন্তু ঘড়ির কাঁটায় কারোর অধিকার ছিল না কোনোদিন। 

.

আসলে অলস দুপুরের আলসেমি 

বাংলাভাষার শব্দের যন্ত্রণারা ছড়িয়ে পড়ছে সময়ের কেলেঙ্কারিতে ,

ধুস ভালো লাগছে না 

ঠিক এমন একটা ভাবনা বোধহয় মানুষের সবচেয়ে কাছের 

আর তারপর 

ঘুমহীন অন্ধত্ব। 

নীরবতা ,শ্রদ্ধা ,অঞ্জলি জীবনের চর্যাপদ 

ছোটবেলায়  সেই গীটারের স্ট্রিংগুলো আজকাল বড্ড বুড়ো হয়ে গেছে,

বুড়ো হয়ে গেছে মানুষের ভিতর  শুয়ে থাকা মানুষগুলো 

কেমন যেন অসহায় যোদ্ধা সব ,

সময়ের এপারে দাঁড়িয়ে কারোর শুধুই অহংকার 

আর কারোর আবদার 

অথচ কি যেন গৃহস্থ পুতুলগুলো আজকাল এই শহরে 

খেলনাবাটি ছেড়ে রাজনীতি শিখছে।     


সময় ঘুমোয় না

 


সময় ঘুমোয় না 

.... ঋষি 


সময় ঘুমোয় না 

আসলে কেউ ঘুমোতে চাই না ফ্রীজের ভিতর শীতল বরফে ,

নেপচুনের কিছু লোক আজ সময়ের অতিথি 

আমি চিনতে পারি না তাদের ,

তাদের চোখে স্বপ্ন নেই ,ঘুম নেই ,নেই বাঁচার স্বর 

শুধু মাটির নিচে কবরে কিংবা শ্মশানের আগুনে তারা একলাই থাকে। 

.

সময় ঘুমোয় না 

আসলে কেউ ঘুমোতে চাই না ফ্রীজের ভিতর শীতল বরফে ,

দূরে একটা মৃতদেহ শুয়ে আছে 

তার সামনে হাঁটুগেড়ে বসে আছে বছর আটেকের একটা ছেলে ,

খুব কাঁদছে সে 

তাকে শান্ত করতে কিছু নিয়মের জীব কুকুরের মতো চিৎকার করছে। 

.

জীবন একটা স্বপ্ন নয় 

সাবধান। সাবধান। সাবধান 

জীবন একটা সমাধান আজ এতগুলো বছর শুধু ভেজামাটির স্বাদ 

বরফের হৃদয়। 

জীবনে হেরে যাওয়া বলে কিছু নেই ,স্বপ্ন বলে কিছু নেই 

আছে অস্তিত্ব মাংসের স্তর ,বাড়তে থাকা প্রেশার ,সুগার লেভেল 

আর চুমুর মতো কিছু মুহূর্তের তৃপ্তি। 

.

সময় ঘুমোয় না 

আসলে কেউ ঘুমোতে চাই না ফ্রীজের ভিতর শীতল বরফে ,

একদিন থেকে নেপচুনের মানুষগুলো পৃথিবী বুঝবে 

একদিন আমরা বন্দি  প্রজাপতিগুলোকে  দেখবে মৃতদেহ থেকে উঠে আসবে ,

আমরা দেখবো প্রেম 

স্পর্শ থেকে খুঁজে পাবে পোড়া চামড়ার গন্ধ 

সাবধান। সাবধান। সাবধান।  

 .

সময় ঘুমোয় না 

আসলে কেউ ঘুমোতে চাই না ফ্রীজের ভিতর শীতল বরফে ,

দূরে সেই মৃতদেহের বুকে অনেকগুলো প্রজাপতি 

এত বছরের ছেলেটা ঠিক আমার মতো দেখতে ,মমির হৃদয়ে জন্মেছে 

অথচ দেখো সবাই বলছে 

বাবা ,মা সকলের থাকে না চিরকাল 

তার চারপাশে চিৎকার করছে নিয়মের কুকুরগুলো ,

অদ্ভুত 

কেন যে ঘুম আসে না আজকাল আমার । 


গো ল



 গো ল 

... ঋষি 


লাট খেয়ে পরে আছি 

লাশ হয়ে পরে আছি এই শহরের জমানো জঞ্জালের স্তুপে ,

নির্ভীক আলোচনা 

পৃথিবীর এক আশ্চর্য সঙ্গদোষ আবিষ্কার করেছি। 

অন্ধকার ঘরে শরীরটাকে সার্কাসের মজাদার ক্লাউন মনে হয় 

চোখ বুজছি, চোখ খুলছি।

.

এযাবৎ অনেককিছু আবিষ্কার করা হলো 

মনে হয় এ শহরের প্রতিটা  ঘরের ভিতর একটা মাঠ

মাঠের ভিতর হাজার ভাবনার জোনাকি ।

আলো জ্বলছে, আলো নিভছে।

জিভ ভেঙচে তাকিয়ে আছে পরস্পর, 

আমি আর এ শহর। 

.

পরম্পরায় মাঠের খসে পড়ছে তারা 

না জোনাকি 

না স্বপ্ন,

ভাবনার মতো মনখারাপের রঙে আজকাল ছড়িয়ে পড়ছে ব্ল্যাক জেদ অন্ধকার ,

বেয়ারা অন্ধকার।  

অন্ধকার একটা একাকিত্বের গান 

চোখের সামনে ঘরের ভিতর মাঠগুলো হঠাৎ জনকল্লোলে ফিরতে পড়ছে 

গোল ,বাইপাসে দাঁড়িয়ে জীবনটা ছিটকে পড়লো লক্ষ্যে 

গোল। 

.

অন্ধকারের ভাবনা 

ভাবতে ভালো লাগছে মানুষ নেই এ শহরে ,

এখন কোথাও সত্যির মিছিল নেই,বিদ্রোহ নেই 

সব কেমন বাসি পচা এক কবিতার মতো পরে আছে শব্দের জঞ্জালে । 

তোমায় ভালো বাসছি পাচ্ছি না 

মাঠের ওপাড়ে ঘর ঈশ্বর শব্দটা মাইকে দাঁড়িয়ে একলা 

চিৎকার করছে জনরোষ 

গোল ,

অনশনে জীবন, ঘুম নেই 

তুমি নেই তাই ,কোথাও যেন লক্ষভ্রষ্ট গোল পোস্টের দিকে কিক। 

Tuesday, February 9, 2021

মৃত্যু ফাঁদ



মৃত্যু ফাঁদ 
.. ঋষি 

সময়ের তীরন্দাজী 
বুক ফেটে রক্তাক্ত কিছু মুহুর্তের ছায়াছবি, 
সার্বিক সময়ের দরবারে সুরের বন্দিশ দরবারী কানাড়া
আমি শুনতে পাই, 
তুমি শুনতে পাও কি? 
এই শহরে অসময়ে রক্তবৃষ্টি হয়,তার শব্দ।  
.
নিরাসক্ত বুক 
রাতের বিছানা পিছিয়ে যায় আজ থেকে বহুযুগ সময়ের ওপারে, 
আমি অসহায় মানুষের মিছিলে একলা দাঁড়ায়
তুমি তখন বিন্দাস আমার বুকে ছুড়ি গাঁথো,
আসলে শান্তি শব্দটার ব্রেকেটে আজও অবিশ্বাসী মেঘ তোমার মুহুর্তে 
তুমি শহর খুঁড়ে নিজেকে খুঁজতে ব্যাস্ত থাকো। 
.
সময়ের তীরন্দাজী 
সম্পর্ক শব্দটা আসলে আমরা বুনে ফেলি আমাদের অতীতের তীব্রতায়, 
আমরা খড়কুটো  দিয়ে পৃথিবী গড়তে চাই 
গড়ে ফেলি এপিটাফ নিজের অজান্তে। 
গড়তে থাকি অভিশাপ 
একলা থাকা 
আসলে অন্ধকার আধিপত্যে আলো শব্দটা আমাদের যোগ্যতায় 
ধবংস খোঁজে। 
তুমি বলো অসহ্য, তুমি খোঁজ অসহ্য, তুমি ভাবো অসহ্য 
আমি খুঁজি জীবন 
অথচ বারংবার ফিরে আসি একলা বিছানায় 
হাতড়ায় অন্ধকার, 
তারপরও ফিরে আসি নিজের কাছে রক্তাক্ত চিতার মতো 
তুমি বুঝতেই পারো না
আজকাল আমার বুকের জংগলে শিকারীর উৎপাত
আর মৃত্যু ফাঁদ।



কল্পনার রং

 



কল্পনার রং 

... ঋষি 


বিন্দাস কিছু একটা কল্পনা করো 

আমি তো কল্পনায় রংতুলি নিয়ে এঁকে ফেলতে পারি একটা জীবন ,

তুমি না হয় প্রফেসর শঙ্কুর ডাইরি খোলো 

খুঁজে পেতে জানতে চেষ্টা করো নিউটন কে ?

আমার কল্পনায় নি উ টন কখনো একটা বেড়াল হতে পারে না ,

বরং তুমি ঈশ্বর খোঁজ। 

.

সার্বিক দুনিয়ায় 

জিন্দেগী  কুছ গমকি চিঠি লেকে  আতি হ্যা 

লেকিন গলতি  এহি হ্যা  কি 

জিন্দেগিমে সির্ফ গলতিয়াহি রেহ যাতি হ্যা

ওর সির্ফ কুছ পল । 

.

জানি তুমি পাগলের প্রস্তাবে ত্রস্ত 

কিন্তু পাগলামির আকাশে যে রামধনুর রংগুলো মানুষের বুকের ক্যানভাস 

ঠিক করে ভাবো 

প্রতিটা রং আসলে সৃষ্টির দরজায় নজর কাড়া,

আবিষ্কার 

আনন্দ 

আর ধৈর্য্য। 

হা ঈশ্বর ,আমার এই কবিতায় তুমি অর্থ খুঁজছো 

বরং তুমি খুঁড়ে ফেলো হরপ্পার মাটি 

কিংবা কোনো বৃহন্নলার শাড়ি তুলে দেখতে পারো ইভোলুশন,

না না প্লিজ সলুইশান খুঁজো না 

বরং তুমি খুঁজে দেখতে পারো হৃদপিণ্ডের স্পন্দন। 

..

চুপ 

কেউ যাতে শুনতে না পায় ,

কল্পনার রং।  

 


গাছেদের বাণী

 


গাছেদের বাণী 

.... ঋষি 

.

মধ্যাহ্নে কবি দরজা খুলে টুকে রাখে কবিতার গাছটাকে 

মধ্যাহ্ন নারীর মতো কিছু একটা হবে ,

আমি জানি ধুঁয়ে ,মুছে ক্রমশ সাফ হয়ে যাওয়া হৃদয় বিদারক তানটুকু 

আমার ছেলের গিটারে সদ্য নবস্ফুত আঙ্গুল। 

আমি জানি প্রেমিক শব্দটা এই শহরের প্রতিটি অলিগলিতে জনপ্রিয় 

কিন্তু প্রেমিক হতে গেলে যে গাছ হতে হয়। 

.

মধ্যাহ্নে কবি শব্দসুখে শুনতে পায় প্রেয়সীরের পায়ের শব্দ 

ক্রমশ এগিয়ে আসা প্রেয়সীর মুখ,

ঘরের দরজার এপাড়ে একজন ঈশ্বর তখন পৃথিবীতে দানাপানি খোঁজে 

হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে পরে বেঁচে থাকা ,

ঈশ্বর দরজা বন্ধ করে ,

বাইরে হাহাকার এক করুন শহর,

ঈশ্বর বলে তথাস্তু। 

.

মধ্যাহ্নের প্রেম তখন আগুন ছুঁয়ে ঠোঁট রাখে প্রেয়সীর নদীতে 

ঈশ্বর তখন শান্ত হয়ে মিশে যেতে চায় নোনতা জলে ,

শব্দরা আগুন হয়ে ওঠে 

আগুন হয়ে ওঠে এতদিনের জমে থাকা বিপ্লব।

ঈশ্বর আবারো বলেন তথাস্তু 

মারাত্নক শব্দে ঝড় ওঠে সময়ের অলিতে গলিতে 

অশ্রাব্য নিয়মকানুন 

রাষ্ট্রের অভিশাপ 

নারী নির্যাতন ,মুখোশের সভ্যতা ,প্লাস্টিকের সমাজ 

সব সাজানো মিথ্যেগুলোতে  কার্লমার্কস ছুঁয়ে যায়

"History repeats itself, first as tragedy, second as farce."

.

হাসি পায় ভাবতে  

ঈশ্বর আর মানুষের মাঝখানে কবি এক মরুদ্যান খোঁজে 

খোঁজে আগুন মানুষের বুকে 

সময়ের সুখে 

অবিরত রক্তক্ষরণ আর খিদে।   

 

 


হুকুম মেরে আকা



 হুকুম মেরে আকা 

.... ঋষি 


পুরোনো রোগের বোতল থেকে গড়িয়ে নামছে অন্ধকার 

চলন্তিকা বলে স্থবির আকাশে নক্ষত্রের মানেটা নিজের মতো সকলের কাছে 

কারণ আলাদা  

ঠিক তাই। 

আজকাল কেন যেন লিখতে ইচ্ছে করে না 

ইচ্ছে করে না রক্ত ভেজানো কলমকে গর্ভবতী করতে সময়ের বীর্যে 

আজকাল কেন যে হঠাৎ আকাশ মনে আসে। 

.

সামনের রাস্তায় পরে আছে মাইলফলক 

আর রাস্তার শেষ দেখতে কেন যে ভয় করে আজকাল ,

কেন যে সমুদ্রের সাদা সফেনকে  অন্ধকার রাতের ধৈর্য মনে হওয়ায় 

মনে হয় আমার সবুজ শস্যবতী লক্ষী দেশটা 

কেন যে হঠাৎ কুলটা উপাধি পায় 

কেন যে হঠাৎ অবেলায় নিজেকে গাংচিল মনে হয়। 

.

পুরোনো রোগের বোতলে  বন্দি সেই জিন 

যে আকাশ খুঁজতে নিজেকে বেঁধে রাখে অস্তিত্বের কারচুপিতে ,

ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত হয়ে পরে আকাশের নক্ষত্র 

মানে বদলায় 

কেন সাদা কাগজে আজকাল চিৎকার লিখতে ইচ্ছে করে। 

জানি আমার এই কবিতা কোথাও দাঁড়াবে না 

কেউ অপেক্ষা করবে না এমন রোগের রাজ্য অভিষেকের ,

চলন্তিকা বলে তোর জন্য আমি সময়ের গায়ে ফুটিয়ে তুলবো পুরোনো নিজেকে 

চলন্তিকা বলে অন্ধকার থেকে আলোতে আসার পথে হৃদয়ের কাঁটাগুলো 

সব দিক্দর্শনের কম্পাস। 

আমি হাসি 

সময়ের জিনের আবার কম্পাস ,

ক্রমশ আমার হাসি আত্মচিৎকারে বদলায় ,বদলি অট্টহাসিতে 

আমি চলন্তিকাকে বলি হুকুম মেরে আকা।    

শাহজাহানের প্রেমিকা

 



শাহজাহানের প্রেমিকা 

.... ঋষি 


তাহলে কি বুঝলে ভালোবাসা মানে ?

সামনে পড়ন্ত রৌদ্রে পশম ওঠা শীত 

বাক্সবদল। 

পেয়ারকা মৌসম 

আর ধৃষ্টতা 

ভালোবাসা প্রেমিকার জানাজায় ফুল ছোঁয়ায়ন ক্লান্ত শাহা জাহান । 

.

মোঘল যুগ না 

যুগ বদল ,স্প্যানিশ ভাবনায় বাহান্নরকম চুমু ,

তোমার চোখের তীব্রতায় মৃত্যুর পদক্ষেপ 

শুধু আক্ষেপ 

ভালোবাসলে মানুষ যে বাউল হয়ে যায় 

ভালোমন্দ সব মন্দবাসায় হঠাৎ এ শহরে ঋতুবদলায়। 

.

বিছানার পাশে পরে থাকা অভ্যস্ত রতির বাসি কাপড় 

ভালোবাসা পুরোনো হলে অনেকটা ম্যাকালান স্কচ হুইস্কির মতো ভীষণ ঝাঁঝালো ,

আরো ঝাঁঝালো তোমার স্নানের ঘরে আমার গন্ধ। 

তাহলে কি বুঝলে ভালোবাসার মানে ?

সামনে শেষ হওয়া দিনগুলো ক্লান্ত শাহজাহানের কয়েকবিন্দু চোখের জল 

বন্দী দশায় দেখা সেই তাজমহল ,

যুগে যুগে ঔরঙ্গজেব বাঁচে ,বুকের মোঘলে রক্তক্ষরণ 

পুরুষ মাত্রই যে ঔরঙ্গজেব ,না ঠিক এমন নয়। 

প্রতিদিন কাটে 

যুগ বদল 

বাক্স বদল 

আর বাক্সের গায়ে পেয়ারকে মৌসম তাজমহল।  

কতজন পারে বলতো চলন্তিকা ভালোবাসাকে সকলের চোখে আশ্চর্য করতে ?

কতজন পারে বলোতো চলন্তিকা ভালোবাসাকে অমর করতে ?

শুধু গোলাপে গন্ধ থাকে 

কিন্তু গোলাপের কাঁটায় কজন গোলাপ খুজঁতে পারে এই শহরে। 


 

Sunday, February 7, 2021

মিথ্যা বুলি


 মিথ্যা বুলি 

... ঋষি 


সভ্যতা বাঘের নখে ,হাতির শুরে 

আমার ভারতবর্ষ 

সারে জাহাসে আচ্ছা ,হিন্দুসিতা হামারা ,

না চলন্তিকা হচ্ছে না ,হচ্ছে না ,আসছে না প্রতিবাদ 

মানুষের দুঃখী মুখের দিকে তাকিয়ে 

ভিক্ষে করতে ইচ্ছে করছে। 

.

কোলে বসে আন্দোলন 

কঙ্কালসার মানুষগুলো আজ বহুদিন খেয়ে দেখে নি জীবন ,

শুধু গড়িয়ে নামা সাজানো বুলি 

ভোট দখল ,বুথ দখল ,ক্ষমতা দখল ,

মিথ্যে অহংকার ভারতবর্ষ গণতন্ত্রের পোশাকে 

লুকিয়ে থাকা রাজতন্ত্র। 

.

এখানে গাছের দরকার কি 

পরিষ্কার একটা ছবি যখন কবিতা হয়ে যায় 

নোংরা একটা দেশ যখন সময়ের কাছে সাজানো লন্ডনের সমতুল্য ,

যখন অক্সিজেন সিফিলিস যোনিতে জন্মের কবিতা 

সেখানে আমরা 

নেহাত অসহায়। 

কোন জাগবে মানুষ ?

না চলন্তিকা হচ্ছে না ,আসছে না প্রতিবাদ 

শুধু পাতার পর পাতা স্বার্থপর কলম চেবানো বমি আটকাচ্ছে 

আটকাতে পারছে কেউ কই সহবাস 

পাতার পোশাক পরে ,বোবার ঠুলি আটকে 

আমরা সকলেই মৃত জনগণ 

সেখানে মিথ্যা বুলি 

সারে জাহাসে আচ্ছা ,হিন্দুসিতা হামারা। 

সময়ের জলছবি

 সময়ের জলছবি 

... ঋষি 


তুমি বাঁশি  বাজাতে জানো?

এটাও জানো বাঁশির শব্দটা আমি নিমেষে খান খান,

ভেঙ্গে ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করতে পারো

ডেস্কটপে খুব সহজে কপিরাইট আমাকে টুকরো টুকরো করতে পারো। 

একটা আকাশ পাতাল খাতার শেষ পাতায় 

তুমি কি সহজে একলা থাকতে পারো আমায় ছাড়া। 

.

জানি আমার নিষিদ্ধ শব্দরা তোমাকে আরো বিব্রত করবে 

তোমার মাথায় খুব সহজে খুলে ফেলতে পারে হ্যালিপ্যাড 

আমার ভয় সেখানে 

চুরি হয়ে যাওয়া সোনালী ভোর 

না ভাবনায় শুধু কবিতার তুমি ছাড়া আমি  কিছুই ভাবতে পারে না 

আর বাস্তবে নরক গুলজার আমার ভারতবর্ষ। 

.

আমাকে তাহলে পাথর করেই গড়ো

নোনাজলে যার ক্ষয় নেই যখন জানো। 

ঈশ্বর বোঝে না পবিত্রতা ,শুধু সরগরম রিস্তাতে   নিয়ম গেঁথে দেয়। 

জানি এই কবিতা বদলাবে না 

সময়ের  তালু থেকে গড়িয়ে নামবে ছায়া ,আরো গভীর ছায়া 

আরো প্রগাঢ় অন্ধকারে একটা নদী এগিয়ে যাবে সমুদ্রের দিকে ,

সমুদ্রের খোঁজ ফুড়োবে না 

ফোরাবে না চলন্তিকা 

একটা সমুদ্র যেখানে শেষ হয়ে যায় 

ঠিক সেখানে একটা জগদ্দল আমার বুকে চলন্তিকা ,

নারী ও প্রেমিকা 

শুধু জলের চোখে সময়ের জলছবি। 


বড়শি



 বড়শি 

.... ঋষি 


বড়শিতে গাঁথে যে মাছ 

সে তো বাঁচে নি মুহূর্তের জলের গভীরে নিঃশ্বাসের বুদবুদে ,

এই ভাবে কারণ খোঁজা হয় এই শহরের অনবদ্য জীবনে 

ঘর বদল ,বিছানা বদল ,মানুষ বদল 

না অশ্লীলতা নয় 

শুধু কার্যক্রমে নগ্নতা মানুষগুলোকে একলা করে। 

.

চোখের সামনে তুমি ,আমি 

অথচ সম্পর্ক 

নষ্ট ডাস্টবিনে জমতে থাকা বহুদিনকার প্রাচীন ফসফরাসের গন্ধ ,

ঘুমকে আজকাল মৃত্যু মনে হয় 

আর মৃত্যুকে মনে হয় একটা সংগ্রাম 

বহুদিন না খেয়ে বেঁচে থাকা আকাঙ্খীত ঈশ্বর। 

.

বড়শি দিয়ে এই শহর 

কর্পোরেট ঘুমে লেগে আছে সিমেন্ট বালি আর চাকচিক্য ,

আমি তোমার বুকে একটা জমি খুঁজছি 

বুকের মরশুমে খুঁজে চলেছি প্রিয় জীবনের মতো কিছু 

তবু ঘুম আসছে না 

তোমার ,আমার মাঝে দূরত্ব আজ বালিশ ছাড়িয়েও সামাজিক

শুধু সম্পর্কের ফসিলদুটো 

দুটো আলাদা ঘরে ছিঁটকিনি দেওয়া পরম্পরা ,

কেউ খুলছি না 

কেউ দরজা খুলবো না 

শুধু আলাদা গ্রহে বাড়তে থাকা পারোদে 

একটা করে দিন কেটে যাবে ঠিক 

শুধু ঘুম থাকবে না। 


সেন্ট ভ্যালেন্টাইন

 

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন

,,,, ঋষি 


নিরীহ দুপুর কাটে পাশের ফ্ল্যাটের দেওয়াল ধরে 

দেওয়ালের ওপাশে আমার প্রেমিকা থাকে ,

কস্তুরী নাভি ,

মাইকেল এঞ্জেলো ,ক্লোডি মনেট ,পিকাসো

তুলে  নেওয়া প্রাচীন তুলিতে ,টুকে নেওয়া নতুন কাগজে 

কিছু দাগ সারা শরীর জুড়ে হৃদয় নিংড়ে নেয়। 

.

সহমরণে যাবো 

প্রাচীন অন্ধকার পৃথিবীর পাতায় হেঁটে চলা নরনারী যুগল ,

গাধার জীবন 

অথচ ব্যস্ততা নিয়ম করে মনে করিয়ে যায় কর্পোরেশনের জল ,

তোমার স্নানের ঘরে 

আমার মতো আজকাল রক্ত বৃষ্টি হয়। 

.

অলস সূর্য ,ক্রমাগত বোঝাপড়ায় সৈন্যদের ঘুম 

সামনে পাতা দাবার বোর্ড ,

ভালোবাসা কেন যে প্রেমিকের রক্ত চায় 

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন 

একহাতে তুলে নেন স্টেথোস্কোপ অন্য হাতে ধর্ম 

অথচ আমাদের বর্ম 

সাজানো গোলাপ ফুল। 

গোটা পাড়া কৌতূহলে যায়,পানশালায়  অনবরত ব্যর্থতার চিৎকার  

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন মারা যান 

চিৎকার করে মন 

একটা ভালোবাসার দিন ,কেন যে একটাই। 


Saturday, February 6, 2021

শ্রদ্ধাঞ্জলি কালো লোকটাকে



শ্রদ্ধাঞ্জলি কালো লোকটাকে 
.. ঋষি 

দাশের ঘরে গেছিলাম
বসেছিলাম পুরনো খাটের চৌকিতে কয়েকশত কবিতা নিয়ে, 
এমন হয়, হয় না 
সেই কালো লোকটার কলমে এত ঈশ্বর  ঘুমিয়ে!
আমি ডুব দিয়েছিলাম তার কবিতায় 
আকাশের চাঁদ, ধানের মাঠ, সোনালী ঈগল, 
ঈশ এ যেন ঈশ্বরের চোখে অজস্র কেলায়ডোস্কোপ। 
.
পরিচিত হয়েছি কবে কবির প্রেমিকার সাথে 
একলা হাজারো রাতে, 
হাজারো বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে 
লেখা হয় নি এমন আমার প্রেমিকাকে। 
বনলতা, সুরঞ্জনা,সুচেতনা তোমরা কোথায়? 
না তেমন করে বুঝি নি আমি কবির প্রেমিকাকে 
শুধু বুকের অক্ষরে আজকাল তাই  অসহায় পোড়ে। 
.
এমন আমি লিখতে পারি নি কখনো 
একটাও কবিতা না, 
সত্যি একবারও সেই কালো লোকটার মতো ভাবতে পারি নি
আলোর পৃথিবী। 
"দু-এক মুহূর্ত শুধু রৌদ্রের সিন্ধুর কোলে তুমি আর আমি
হে সিন্ধুসারস,"
অসম্ভব, কি করে লেখা যায় এমন 
প্রাপ্তির পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে এম ভিখিরি, না হতে পারি নি 
হতে পারি নি আমি দাশের মতো। 
"যে আমাকে চিরদিন ভালোবেসেছে
অথচ যার মুখ আমি কোনোদিন দেখিনি,
সেই নারীর মতো
ফাল্গুন আকাশে অন্ধকার নিবিড় হ’য়ে উঠছে। "
না না এমন প্রেম, এত প্রকৃতি, এত খিদে, এত সময় 
শুধু ওই লোকটা লিখতে পারতো 
কবি ও প্রেমিক ছিল লোকটা। 
আমি হারিয়ে যাবো তাই বেড়িয়ে আসি আমার চলন্তিকা বুকে 
ঈশ্বর  ও মৃত্যুর খোঁজ 
ঘষ ঘষ করে লিখে ফেলি সাদা পাতায় 
শ্রদ্ধাঞ্জলি দাশ তোমায় 
হাজারো নক্ষত্রের ভীড়ে তুমি ঈশ্বরের  মতো আছো। 
.
( কৃতজ্ঞতা জীবনানন্দ নামে ঈশ্বরের  সৃষ্টির)

স্টেথোস্কোপ



স্টেথোস্কোপ 
.. ঋষি 
নারী সংবেদনশীল সামাজিক সম্পদ 
প্রতিটা নারীর গভীরে একটা স্টেথোস্কোপ থাকে 
নারী ক্লান্ত হলে কুহকিনী হয়ে যায় 
যা স্পর্শকাতর মৃত্যুর সামিল। 
.
ফিরে আসি যন্ত্রনার কাছে
ফিতে কাটি নিজের বুকে শুয়ে থাকা অজস্র অনিয়মের, 
ঘুম ভেঙে যায় হঠাৎ 
সবুজ কলা পাতার বৃষ্টি ফোঁটা তখন  তৃপ্তির মতো দেখতে। 
.
নারী পুরুষের কাছে আবিষ্কার 
প্রেমিকের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অপেক্ষা গভীর ক্ষরনে, 
নারী চরিত্রে লুকিয়ে থাকে ঘড়ি 
কিংবা ঘড়ির কাঁটা, আসলে সময়ের বদল। 
ধীরে ধীরে দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে 
জিজ্ঞেসাতে পরা মাছের চোখ বন্ধ হয় না কখনো, 
সপ্তাহের হাটে সারি দেওয়া মাছের গঠনগুলো
আজকাল বুঝি না বেঁচে না মরে। 
বরফ ছুঁয়ে থাকে নারীর চোখে 
বুঝে উঠতে পারি না কে আসলে ক্লিওপেট্রার প্রেমিক, 
শুধু সমাজ উঠে দাঁড়ায় 
সংবেদনশীল নারী রাতে স্টেথোস্কোপে হাসে আমার হৃদপিন্ডে। 

মধ্যবর্তী

একটা বিস্ফোরণ দরকার ছিল  দরকার ছিল একটা সীমা ছাড়ানো চিৎকারের  তোমার বুকের কাপড় সরে গেছে ,আমি রয়ে গেছি মধ্যবর্তী  তোমার নাভির থেকে দাগগুলো যদ...