Monday, September 25, 2017

শহর

শহর
........... ঋষি
============================================
তোমার রোদ ভেজা শহরেরা
এই সময় ঘুমিয়ে আছে আমার গভীর জঙ্গলে।
পেন্ডুলামের খুচরো কিছু শব্দ বড় বড় পা ফেলে হেঁটে আসছে
আসলে তোমাকে বড় দেখতে ইচ্ছে করেছে।
আমার কাছে উদযাপন মানে তুমি জানো চলন্তিকা
কোনো উৎসবের আগুনে আমার ফেলে আসা পারিজাত সময়।

তোমার বারান্দায় এখন উৎসবের রেশ
চারিপাশে গা ঘেঁষে বেড়ে ওঠা অজস্র উৎসবমুখর মানুষ।
তুমি হয়তো হাসছো
কিন্তু তোমার ওই হাসির আড়ালে ,তোমার ওই আখরোট ঠোঁটে তুমি জানো
আমি বাঁচছি আমার  শহরে।
শহরের ঠিকানা কোনো আকাশ মেঘে পুরোনো জংধরা জানলার কাঁচে
গড়িয়ে নামা অসময়ের বৃষ্টি ,
তুমি জানো চলন্তিকা আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আমার শহরে এইবার দূর্গা পুজোয় খুব বৃষ্টি হবে।
তুমি জানো চলন্তিকা আমার না বলা ইচ্ছাগুলো এই বৃষ্টির জলে জমে
ঠিক একহাঁটু জল তোমার শহরে।

তোমার স্লিভলেস আয়নার চশমার কাঁচে
এই সময় জেগে আছে আমার দেখানো আলো।
পুরোনো ফাদার ক্লকের দুলতে থাকা সময় আজ বড় অস্থির
সারাদিন ভালো করে কথা হয় নি যে।
আমার কাছে বেঁচে থাকে  মানে তুমি জানো তো চলন্তিকা
একগাদা স্বপ্ন ,শুধু তোমার সাথে। 

উড়োচিঠি

উড়োচিঠি
............ ঋষি
================================================
সময়ের আঙিনায় সাময়িকী
হারানো উড়োচিঠির কিছু স্মৃতি আজ ফ্লায়িং কিস হয়ে তোমার বারন্দায়।
সময়টা বদলে গেছে অথচ সাদা ফ্যাসফ্যাসে শরতের রৌদ্র এখনো কাগজে কলমে
হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছে উদযাপনের ,সামনের বাড়িটা খুব চেনা।
চেনা বারান্দা ,চেনা পাড়া
কিন্তু ভীষণ অচেনা আমি।

সামনের মাঠে দূর্গা পুজোর ঢাক
সাময়িকী সংবাদ আমার কবিতার কিছুক্ষন আগে মঞ্চস্থ।
তোমার নামটা এখনো আমার কবিতা
আসলে কেউ জানে না চলন্তিকা আজও আমার বেঁচে থাকা তোমারি জন্য।
সময়টা বদলে গেছে
আমাকে দু চার জন কবি বলে ডাকে।
অবাক হই চলন্তিকা আদৌ কি আমি এই সম্মানের যোগ্য
আমার যে সব কবিতা তোমারি জন্য।
তোমার মনে পরে সেই  তোমাদের চিলে কঠোর ছাদ ,তোমার পুতুলের বাক্স
সেই রংচটা পুতুলটা আজও আমার কাছে আছে ,যেটা তুমি দিয়েছিলে।
কোনো এক শারদীয়ার সকালে তুমি হঠাৎ আমার বাড়িতে
ঘুম থেকে তুলে লম্বা একটা চুমু।
আমি অবাক হয়ে দেখেছিলাম তোমায় সেদিন সারাবেলা
প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ,তোমারি হাত ধরে।

সময়ের আঙিনার সাময়িকী
হারানো উড়োচিঠির টুকরো টুকরো কাব্য আমার শরতের আকাশে কাগজের এরোপ্লেন।
সময়টা বদলে গেছে ,শুধু আমি অতীতের কোনো পাইলট
সারা আকাশ জুড়ে পাঁক খাচ্চি ,আসলে চিৎকার করছি তোমার নাম ধরে।
তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে ফিরতে ফিরতে
আমার আজ বড়ো কান্না পাচ্ছে চলন্তিকা। 

Friday, September 22, 2017

গভীরে আয়

গভীরে আয়
............. ঋষি
================================================
তোর খোলা বুকে মুখ ঘষে তপ্ত নিশ্বাস
তোর উজানে ওঠা আগুনের ঢেউয়ে একটু আশ্বাস।
আমার গভীরে আয়
তোকে ছুঁয়ে দি এমন করে যাতে তুই পরশ পাথর।
আমার হৃদয়ে আয়
তোকে মেখে নি এমন করে যেন স্বপ্ন বাসর।
.
কোনো আদরের দুপুরে
বেখেয়ালে লিখে দেওয়া চেনা আবদার যখন সময়ের বাঁচা।
কোনো এক একলা দিনে
মনের মাঝে ঝিলিক ওঠা সেই লুকিয়ে একা।
আমি আছি কাছে ,তুই আছিস তাই
আমি আছি বেঁচে কারণ তোর ঠোঁটে লেগে আছে লবঙ্গের স্বাদ।
আরো কাছে আয়
যেখান থেকে স্বপ্নগুলো সব সময়ের দুঃখ
আর বেঁচে থাকা তোর স্বপ্নের সুখ।
.
তোর জঙ্ঘায় ঠোঁট ঘষে বলি বেঁচে আছি
তোর ঠোঁটের  আদরে  ঘুম ভেঙে বলি ভালো আছি।
আমার গভীরে আয়
তোকে ছুঁয়ে দিয়ে আমি হয়ে যায় এক সমুদ্র স্রোত।
আমার হৃদয়ে আয়
তোকে নিয়ে ভেসে যায় তোর চোখে কাজলে আদরের স্রোত। 

অন্যগল্প

অন্যগল্প
......... ঋষি
============================================
আমার নিজস্ব কোনো গল্প নেই
যত গল্প সব তোমাকে জুড়ে আমার কাগজের কালির টান।
অজস্র হরফে,অজস্র শব্দে অজস্র বর্ণনায়
আমি যুগ যুগান্তরে লিখে চলি তোমায় আমার না শেষ হওয়া উপাখ্যান।
তোমার কাছে আমি  গল্পের সাতরঙা রং ধার করি
আমার আনন্দে বিষাদে, যন্ত্রণা অভিমান তৃপ্তি সব তোমাকেই অর্পণ করি।

আমার একান্ত নিজস্ব কোনো সংলাপ নেই
সব কথোপকথনে, ভাবনাতে জিভে আসা নরম গরম স্বাদে তুমি থাকো।
আর আমার ভূমিকায় আমার মতো কেউ এই প্রথিবীর মঞ্চে
একলা পায়চারি করে।
মনে মনে  চিত্রনাট্যে লেখে স্বপ্নে দেখা ঢেউ আছড়ে পরে বুকে
ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায় তোমার কাছে।
এই পৃথিবীতে একা থাকাটা একটা রোগ মানুষের
আমিও একা থাকি ,তুমি থাকো কাছে ,খুব কাছে
যেখান থেকে পাওয়া যায় তোমার চুলের গন্ধ।
আসলে আমার কোনো নির্দিষ্ট জন্ম ,মৃত্যু নেই
আমি এই কবিতার গল্পে ,তোমার সাথে বাঁচি আর মোর যাই।

আমার একলা বাঁচায় একটা অভিমান লেগে আছে
ভিড় এড়িয়ে যখনই আমি নির্জনে চলে আসি,একলা সমুদ্র তটে তখন তুমুল ঢেউ
আমার স্মৃতি ও চেতনায় ঢেউয়ের মতো উঠে আসে সেই সব মুখগুলো
যার মাঝে তুমি বারংবার এগিয়ে আসো নোনতা ঠোঁটে চুমু খাও।
বাড়িয়ে দেও আশার  হাত ,মনে হয় স্বপ্নরা আমাকে ডাকছে
তখন আমি পাগল হয়ে যাই ,এই গল্পের শেষ খুঁজতে থাকি।

বাড়ি ফেরা

বাড়ি ফেরা
............ ঋষি
=============================================
তোকে নিয়ে কবিতা লেখাটা
আমার আস্পর্ধা।
ভেঙেচুরে যাওয়া  চেনা নগর, ধুলো পড়া চশমার কাঁচ ঝেড়ে
তোকে কাছে পাওয়াটা  আমার প্রিয় বেঁচে থাকার অনুরণ।
 শহরের প্রিয় পার্ক এর বেঞ্চে হাত ধরে বেঁচে থাকা প্রেম
আসলে কিছু স্মৃতি যাকে জড়িয়ে বাঁচতে থাকা।

ফানুসের  যন্ত্রণার আগুন ভরে কোনো অভিশপ্ত শহরের প্রহরী
যদি রাতজাগা চোখে স্বপ্ন দেখে  তবে সেটা সময়ের অভিশাপ।
শহরের আকাশে এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলা গাংচিল
স্বপ্ন দেখে সবুজ যন্ত্রণার।

বাসি পাউরুটিতে আজস্র ছত্রাক দখল করে  যখন
তখন ঘুম পাওয়া চোখে খিদে পায়।
কিন্তু মাখনের প্রলেপে  ভালোবাসা খুঁজে ফেরা অনর্থক
কারণ এই শহর থেকে অনেক দূরে
আমার মতো কেউ অপেক্ষায় কোনো একলা দিনের।

তোকে নিয়ে কবিতা লেখাটা
আমার আস্পর্ধা
তোর চোখের নিমেষে রেখে যাওয়া আলো আঁধারি না বলা  আমার যন্ত্রনা
আর যন্ত্রণার প্রলেপ কোনো স্পর্শকাতরতা।
টুকরো হয়ে যাওয়া নগরে বাড়ি ফেরা অভ্যেস সকলে
কিন্তু বাড়ি ফেরাটা আসলে কোনো স্বপ্নের খোঁজ। 

Wednesday, September 20, 2017

ট্রিগার

ট্রিগার
.............. ঋষি
=========================================================
অনিবার্য কোনো তোমার ফোরামে
ট্রিগারে আঙ্গুল রেখে চিরন্তন ছায়ারা এইবার  যোনিদ্বার পেরোবে।
আকাশে বাতাসে শব্দ " ফায়ার "
তারপর নিশুতি রাতে পেঁচা ডাকবে ,আমার সিলিং জুড়ে অশরীরি মুখ , বুকের ভিতরে অতৃপ্তি।
অনি তখন তুমি পাশফিরে বালিশ জড়িয়ে গভীর ঘুমে স্বপ্ন দেখছো
তোমার ব্যাংক ব্যালান্স বোধহয় আরেকটু সংযোজনের।

আমার চারিদিকে দাবানল
প্রতিবার এমন হয়  যখন তোমার সারা শরীরে  সুগন্ধী আতরের সুবাস ।
সম্পর্ক শুধু তোমার কাছে বিছনার সুখ আর তোমার স্বার্থের সংসার
তোমার কাছে ফিলিংসের কোনো মানে নেই ,মানে নেই স্বপ্নের আঁকিবুঁকিতে প্রেম শব্দটা বোনার।
শুধু হিসেবের সিঁড়ি ধরে তুমি সম্পর্ককে দেওয়া নেওয়ায় বোঝো
বোঝো না স্পর্শের গভীর মানে।
স্পর্শ  রোদ নকশায় প্রজাপতি ডানা মেলে  কারনিশ বেয়ে নেমে যাবে মেরুদণ্ড বেয়ে
অন্ধবিন্দুতে প্রথম পাওয়া একটা আবিষ্কার।
তোমার কাছে আবিষ্কারের কোনো মানে নেই ,সবটাই বিকোনো কারবারে
তুমি অনায়াসে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলতো পারো আমাকে বিছানার চাদরে।
অনায়াসে তুমি আমাকে বলতে পারো
আর কি চাই ,খেতে পারছো ,পরতে পারছো ,গা  ভর্তি গয়না ,দামি মোবাইল
কিসের অভাব তোমার এই সংসারে।

"অভাব " তুমি কি বুঝবে অনি
প্রতি রাতে তুমি মদ খেয়ে এসে আমাকে ব্যবহার করো যেন মাংসপিন্ড।
ভুলে যাও ,আমি একটা মানুষ ,আমার  ব্যক্তিগত কিছু চাহিদা আছে
আছে এমন অনেক কিছু ,যা শুধু তোমার এই বিছানার সম্পর্কে মেটে না।
তোমার ট্রিগারের উষ্ণতায় তুমি সুখী হতে পারো,ভাবতে পারো আমিও সুখী
কিন্তু তুমি বোঝো না আমার চোখের তোলার কালি ,আমার অতৃপ্তির মাসুল।   

বাংলার মুখ

বাংলার মুখ
............. ঋষি
======================================================
আমার শব্দের ভিতরে লুকিয়ে  আছো নীরব
থাকো।
অনন্তকাল ধরে যে  সোনালী  মাটির স্বপ্নে আমি বিলীন
আকাশের গাংচিল ,শস্য ভরা পাকতে থাকা ধান ,তোমার গর্ভের সন্তান  ।
আগুন জ্বলছে বুকে
প্রতিবাদগুলো তালগোল পাকিয়ে সব মাথা ঠুকছে দেওয়ালে।

আমার বাংলা
এই আমার শব্দটার ভিতর কেমন একটা স্পর্শ ছুঁয়ে থাকে
কিন্তু পাচ্ছি না খুঁজে বদলানো সময়ের আবর্জনা পূর্ণ কটু গন্ধে
সবটাই কেমন যেন গোলমেলে সাজানো।
চড়াই শালিখের দেশে-আজকাল বিদেশী  কিছু পরিকল্পিত অনুপ্রবেশ
ঘরের চালেতে মুষ্টিভিক্ষা ,শুধু ঘুমপাড়ানি গান।
ঘরের শিশু হঠাৎ কেঁদে বলে " মা খিদে পেয়েছে ভাত দে "
গর্জে ওঠে সময় ,মায়ের শুকনো মাইটা বুক ঠুকরে খায় হা ভাতে সন্তান।
বুকথাবড়ে আমার বাংলা কেঁদে ওঠে মায়ের চোখে
মা বলে আর কিছুক্ষন খোকা,আর কিছুক্ষন খোকা আর কিছুক্ষন
খোকা কখন যেন ঘুমিয়ে পরে।
রাতের শহরে উপকূলে হোটেল ,রেস্তোরা ,সরাইখানায় তখন  তুমুল তুফানে
 প্রেমিকেরা আছে,লং ড্রাইভ আছে ,আছে গেট টুগেদার ।
কিন্তু আমার বাংলা তখন একলা দাঁড়িয়ে রাস্তায়
স্ট্রিট লাইটের আলোয় হঠাৎ নিশুতি রাতে অন্ধকার খোঁজে বাংলার মুখ।

আমার শব্দের ভিতরে লুকিয়ে  আছো নীরব
শুধু বেঁচে থাকো।
স্বপ্নের চোখে শিকড় উবড়ে জীবন প্রদক্ষিণ অনেকটা সফর
আকাশের গাংচিল সোজা নেমে আসে বাংলার বুকে।দৃষ্টি আরো গভীর খোঁজ।
মৃত সংবাদ পত্রের ভিড়ে হারিয়ে যায় ছোট্ট খবর
কাল রাতে অচেনা কোনো ফুটপাথে না খেতে পেয়ে মারা গেছে বাংলার মুখ। 

এই তো জীবন

এই তো জীবন
........... ঋষি
====================================================
প্রথমেই বেছে নি তোমার তুমুল গহ্বর
স্পন্দনে উঠে আসুক আমার আমার তৃষ্ণার কোনো বৃষ্টি দিন ।
প্রচ্ছদটি ছিঁড়ে  প্রথম আলাপের অনবরত চর্বনে
দেখতে দেখতে বেশ কিছু দিন ।
তারপর পুস্তক উৎসর্গ ভূমিকার পাতায় তোমার নাম
চলন্তিকা ,,,,একটা আগুন আমার বুকের ।

নতুন নতুন হাজারো  পৃষ্ঠার কবিতার সংস্করণ
আমি আছি চলন্তিকা।
চরিত্ররা, এতদিন ধরে যারা চেনা রাস্তায় হেঁটে চলে গেছে বহুবার
এতদিন ধরে যার খোঁজে নিউরোনের উথাল পাঠাল মস্তিষ্ক
পেয়েছি ।
সব সারি বেঁধে দাঁড়ানো ,দাঁত কেলানো চরিত্রদের ফাঁকে আলাদা দ্যুতি তোমার চোখে
ফ্রেম চশমার দৃষ্টির বাইরে দৃষ্টি আটকানো পরিসরে।
রুমাল উড়িয়ে বিদায় জানাচ্ছি পৃথিবী
একটু একটু করে ক্রমশ বিলীন হতে চাইছি তোমার তুমুল গহ্বরে।
যেখানে প্রতিটা মন্থন উঠে আসা অমৃত স্বাদ
সবগুলি চিতাগ্নি সেরে  এই বার খুঁজে পাচ্ছে গাঢ় শান্তিজল
মনে ভাবি এই তো জীবন।

প্রথমে বেছে নি তোমার তুমুল গহ্বর
স্পন্দনে বুক আঁকড়ানো চিৎকারগুলো সব ভ্যানিস কিছু মুখ।
ঈশ্বরের  সে বই বলে পাঠ করছে কিছু রসিক কবিতার পাঠক
আর আমি হতক্লান্ত পথ চলা তোমার আরো কাছে।
কবিতার প্রথম লাইনে লিখলাম তোমার নাম
আর শেষে তুমিই থাকলে চলন্তিকা। 

অলিখিত কবিতা

অলিখিত কবিতা
.......... ঋষি
=============================================
যে কবিতা লিখি নি কোনোদিন
চলন্তিকা তোকে ছুঁয়ে দিলে ঘটে যাবে এই সময়ের দুর্যোগ।
আকাশ ভেঙে পরবে সেদিন
ভেঙে পরবে সময়ের ইতিহাসের সব আশ্চর্য সফর।
তুমুল ,ঝড় বৃষ্টি আর তোর নোনা ঠোঁট
সব ডুবে যাবে আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে থেকে।

নোনা শরীরে সেদিন বাঁধভাঙা ঢেউ
জিভ চুষে খাবে তোর শরীরে আদুরে ঘাম।
গড়িয়ে নামবে আদর সেদিন নিজের আবর্তে লাগা চেনা সময়
অচেনা মানুষের ভিড়ে সেদিন ঠিক খুঁজে পাবে।
স্পর্শ
কোনো মেঘভাঙা নিরাভরণ ঢেউ আমার চোখে মুখে।
তোর নাভির ভাঁজে
তোর বুকের ধুকপুক জুড়ে তখন সোনালী ঢেউ আছড়ে পড়ছে তুমুল আদর।
সেদিনও  বৃষ্টি হবে ,মাস ,কাল ,ঋতু সব যেন কবিতার সাথে
ঝরে পরবে ,জড়িয়ে ধরবে আমায় কোনো গভীর আদর।

যে কবিতা আমার লেখা হয় নি
সেই কবিতার সাথে আমি তুই অর্ধনারীশ্বর অন্য পৃথিবীর খোঁজে।
উষ্ণ নিঃশ্বাসে মিশে থাকা অনন্ত খোঁজ
সেদিন তৃপ্ত তোর ঠোঁটে হাসিতে।
আমিও হাসবো সেদিন পাগলের মতো তোকে জড়িয়ে ধরে
তুই বলবি পাগল কবি এবার ছাড় আমায়। 

পুতুলের গল্প

পুতুলের গল্প
.............. ঋষি
===========================================
এই পোড়া জমি ,দুপাশে উঠে যাওয়া অনন্ত অসীম
কোনো পুতুলের কবিতা লিখবো আজ।
নিয়মিত একটা অভ্যাস যখন বদলাতে বদলাতে সময় হয়ে যায়
তখন কিছু না বলা কাঠের পুতুল।
সময়ের নীরাদের মতো কিছু অবিনশ্বর তখন চলন্তিকা
আমি স্পষ্ট দেখতে পাই তোমায়।

কিছু কিছু কাঠের পুতুল অন্ধকারে হাতড়াতে হাতড়াতে একলা হেঁটে চলে
বিছানা ,বালিশে লেগে থাকে স্বপ্নের কিছু আশা।
পুতুলের ঘর
শেষ পর্যন্ত  পুরুষেরা  পুতুলের সাথে শোয় ,কামড়ে ধরে কাঠের বোঁটা
কাঠের  যোনীর ভেতরে দু’পংক্তি কবিতা লিখে হয়ে যায় সামাজিক সংসার।
অথচ পুতুল বলে ভালোবাসো,বলে সংসার ,পায়ের তোলার জমি
খুঁজতে খুঁজতে কখন মন ভাঙে।
জ্যোৎস্নার ঘাটে আরামি চাঁদটা কখন যেন জানলার পর্দা সরিয়ে দেখে
একটা পুতুল।
দীর্ঘশ্বাস—সময় দাঁত ,নখ বের করে খামচে ধরে
আর চাঁদেরও স্বপ্ন আসে।

পুতুল খুব ভালো করে ঋতুগুলো ,চেনে হেমন্ত
 যখন পাতা ঝরে, সে তার নিজের ভেতরেই ঝরে।
পৃথিবীতে শুধু তার হলুদ আভাস
আর আমার এই বিকেলে অদ্ভুত এক পুতুলের গল্প।
আসলে সময়ের পুতুলের সব সামাজিক
শুধু নিজেকে লুকিয়ে মৃত্যুর জুতো পরে হেঁটে যায়। 

সময়ের দূর্গা

সময়ের দূর্গা
............. ঋষি
===================================================
দূর্গা এই দূর্গা শোন তো একবার ?
মৃত কফিনের ভিড়ে জমে থাকা আফিমকে মানুষ আশা বলে।
দূর্গা এই দূর্গা তোর বাড়ি কোথায় রে ?
অনন্ত কোনো আকাশে স্বপ্ন খোঁজা চিলটাকে মানুষ বাসা বলে।
দূর্গা এই দূর্গা কে কে আছে তোর বাড়িতে
সম্পর্কের ভিড়ে টুকরো হওয়া চারদেয়ালে মানুষ ভালোবাসা বলে।
.
ঠিক এই ভাবে একটা কাঠের পুতুল
মাটি লেপে ,আদর করে ,তেলরং আরো সময়ের  মা দূর্গা।
আর কটা দিন তারপর
মনে পরে পথের পাঁচালির দুর্গাকে কোনো অসমাপ্ত কবিতা জ্বরে হারাতে থাকা।
কিছু অস্তিত্ব আমরা তৃতীয় নজরে ঈশ্বর করে তুলি
আবার কিছুকে খুব সহজে নগ্ন করে বাজারি ব্যবসা করি।
তুলনা থেকে যায়
আরাধনা আর আবর্জনার স্টোরি লাইনে তফাৎ থেকে যায়।
যখন কোনো অভিশপ্ত কবিতা উদযাপন হয়ে যায়
তখন অন্ধকারে এগিয়ে কালো লোমশ হাত সময়ের মাতৃত্বের দিকে
আর ইঙ্গিতে দেবীর দিকে।
.
দূর্গা এই দূর্গা শোন তো একবার ?
সভ্যতার মৃত সফরে হাজারো দূর্গা আজ পর্ণ কোনো সিস্টেমে।
দূর্গা এই দূর্গা তোর বাড়ি কোথায় রে ?
অনন্ত হৃদয়ে আজও কিছু না বলা বুকে কাঁদতে থাকে যোনিজ জীবের।
দূর্গা এই দূর্গা কে কে আছে তোর বাড়িতে
স্তনবৃন্তে লেগে গেছে মৃত্যু বিষ ,আগামী পুরুষ তোমরা মৃত।

Saturday, September 16, 2017

ছাঁচে তৈরী মূর্তি

ছাঁচে তৈরী মূর্তি
.................ঋষি
======================================================
ছাঁচে তৈরী মূর্তি
বুঝলে সময়ের বড় অভাব তোমাকে বুঝতে।
ওই তো কাঠের কাঠামো ,তারপর মাটি লেপে ,মুখটা বদলায় না
আসলে সময়ের চিৎকারে চলন্তিকা। শেষে গর্জন তেল রং।
খুব স্বচ্ছ কোনো ভূমিকায় নারী তুমি দেবী
পূজনীয় ,কমনীয় ,,,,,,,,,,,শুধুই রমণীয় ,,,,,,বাকিটা .....
.
সময়ের চিৎকার মিশে যায় জনতার উদযাপনে
সময় লুটিয়ে পরে ফুটপাথে হকারের চিৎকার ,,নিয়মিত পণ্য।
নতুন জামা ,নতুন সময় ,,,,আর কিছুদিন তারপর তিনি আসছেন সন্তান সন্তনি সহ
এই সমাজ, এই সময় লুটিয়ে পরবে দেবী আগমনে ,,,,আশীর্বাদ প্রার্থী পুণ্যার্থীর ভিড়।
অথচ এই সমাজ কোনো নারীকে খুব সহজে বলবে নষ্ট
করবে নষ্ট।
নিজের প্রয়োজনে প্রণম্য সেই দেবীকে বিসর্জন দেবে ভয়ানক রূপে
ধর্ষণ।
বুঝবে না চলন্তিকা তোমার বয়স কত
ষোলো ,ছাপ্পান্ন ,,নাকি জীবিত  নাকি মৃত ,,শুধুই মাত্র শরীর প্রয়োজন।
বুঝবে না  তোমার জঙ্ঘাসন্ধি স্থলে অবশেষে নেমে আসা  তরল সে কি  রক্ত ? নাকি জন্ম ?
কি আসে যায় ?সময়ের অভিসন্ধি শুধু শরীর।
এই সময় ,,এই সমাজ আসলে  জানোয়ারের চিড়িয়াখানা
এইবার জানোয়ার গুলো বন্দী করার সময় হলো।
.


এইবার বদলাক সময়ের ভিতে জাগ্রত কোনো নষ্ট অভিশাপ
চলন্তিকা তুমি পূজনীয় হও,,,,শুধু মাত্র দেবী নয় ,,শুধু মাত্র প্রয়োজন নয়
শুধু মাত্র মাংস রুপী অধিকারের ভিতে নয় ,
তুমি পূজনীয় হও মাতৃরূপী ,সত্যিকারের সন্মানে,সত্যি অধিকারে।
যাতে তোমার আগামী  কোনো চিৎকার মিশে না যায় কোনো ছ বছরের শিশুর কান্নায়
আর কোনো বধূ আত্মঘাতী না হয় ,,,লজ্জা ও শোকে।

Friday, September 15, 2017

অনেক কথা

অনেক কথা
............. ঋষি
=================================================
কথা দিলাম শ্রাবন
আমি ঠিক ফিরিয়ে আনবো তোমাকে সময়ের ঠিকানায়।
কথা দিলাম তোমার ভিজে বাহারে সবুজ পাতায়
আমি ঠিক আঁকিবুঁকি টেনে জংলী সভ্যতা ফিরিয়ে আনবো।
ফিরিয়ে আনবো মৃত্যুর মুখ থেকে
এক আঁচলা জীবন স্বপ্ন লিখবো বলে।

শ্রাবন তোমার অনবরত পতনের শব্দ
আমার জীবিত গন্ধে আমি বাঁচিয়ে রাখবো রঙিন প্রজাপতি।
কেঞ্চের দেওয়ালে গড়িয়ে নামা দু এক ফোঁটা জল
আমি এই বুকে ধরে রাখবো।
স্বপ্ন দেখবো ভিজে যাওয়া তোমার কবিতায় আনন্দের অনবরত ঝিরঝির
হাজারো ঋতু বদলালেও ফিরিয়ে আনবো তোমাকে।

কিছু অন্ধকার মেঘলা করা দিন
আমার বারান্দায় কফি কাপে সন্ধ্যে নেমে আসে।
বাইরে তখন অনবরত তুমি
ভিজিয়ে চলেছো মাটির সোঁদা গন্ধে  স্বপ্নের অধিকারে।
আর আমার ভিতরে লিখে চলেছো কোনো ঝড় বাদলের দিন
এক নির্জন প্রাপ্তি আমার।

কথা দিলাম শ্রাবন
আমি ঠিক ফিরিয়ে আনবো সময়কে তোমার দরজায় অন্তত একবার।
ঋতুবদল ,সভ্যতার সম্পর্ক ,নিয়মিত আঠা
সবকিছু ভুলে গিয়ে আমি ভিজবো তোমাতে।
তখন শুধু নির্জন কোনো মেঘলা দিন ,আমার কফি কাপে তুমি
পাহাড় লিখছো শেষ সন্ধ্যার তোমার অটোগ্রাফের কবিতায়।



একা কোপারনিকাস

একা কোপারনিকাস
.... ঋষি
========================================
অনেকদিন আজ  গুছিয়ে উঠতে পারি নি নিজেকে
তোমার সেই স্বপ্নে দেখা সমুদ্রের ধরে ছোট্ট ঘরটা
আমি স্বপ্নে দেখি নি।
কেমন একটা ব্যবসায়ীদের মতো হিসেবে কষছি
করছি নিজের সাথে ঝগড়া
অনেকদিন তোমাকে কাছ থেকে দেখিনি।

তুমি বলো শরীর ছাড়া প্রেম হয় না
আমি ভাবি স্পর্শটা খুব জরুরী।
তুমি বলো সম্পর্ক শুধু আগুনে পুড়তে থাকা মৃতদেহ
আর দৈনন্দিন বাকিটুকু মৃত ছাই,
আর আমি ভাবি একটা স্বপ্নে তো বাকিটুক বাঁচা যায়।
ঠিক এমন করে
আমার না ফুড়োনা রাতে অনেক গল্প
ছায়া সঙ্গী তুমি বাড়তে থাকো কোনো সমুদ্র ধারে নিরালা ঘর।
কিন্তু কি জানো তো
অনেকদিন স্বপ্ন দেখা হয় নি তোমার
অনেকদিন তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কথা বলা হয় নি।

অনেকদিন আজ  গুছিয়ে উঠতে পারি নি নিজেকে
তোমার শরীরের গন্ধে আদুরে শরতে নিজেকে ভাসতে পারি নি।
তবে কি আমি বদলে গেছি ?
নাকি বদলানো সময়ের আঙিনায় দাঁড়িয়ে আবিষ্কার করছি নিজেকে।
একা কোপারনিকাস তার নিজস্ব ভাবনায়
পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে ,,,খুব সত্যি। 

Sunday, September 10, 2017

কাকলি ম্যাডাম

কাকলি ম্যাডাম
................ ঋষি
================================================
কাকলি ম্যাডাম তোমার কথা আর ভাববো না
ভাবলেই কেমন অদ্ভুত ভাবতে ইচ্ছে হয়
তুমি শেষ  এক সপ্তাহ স্কুলে আসো নি ,তোমার নাকি জ্বর
অথচ আমি রোজ স্কুলে আসি ,অপেক্ষা করি তোমার  ক্লাসের
তুমি আসো নি আজও
শুধু ক্রিং করে ছুটির ঘন্টা বেজে গেলো এক পিরিয়ড আগে

কাকলি ম্যাডাম তোমার হাওয়ায় ওড়া চুল ,তোমার লালচে কালো শাড়ি
তুমি খুব গম্ভীর ,কিন্তু হাসলে যেন পরী।
আমি তোমাকে অসম্ভব নরম তুলতুলে একটা চিঠি লিখছি
তুমি তাকে যত্ন করে তোমার তোমার বুকের কাছে রেখো,
খাবার আলো জল দিও।
তোমার পড়া দশটা সেরা কবিতার একটাও আমি পড়ি নি
অথচ কেন যে তোমাকে পড়তে ইচ্ছে হয়।

একবার ক্লাসে তুমি প্রশ্ন করেছিলে বড়ো  হয়ে কি হতে চাই
আমি বলেছিলাম ম্যানড্রেক।
সেই প্রথমবার তুমি আমাকে জড়িয়ে গালে চুমু খেয়েছিলে
শিরশির করে উঠেছিল সারা শরীর।
তারপর, আমার একলা ঘরে আমি অবাক হয়ে জানলার ধরে বসেছিলাম সেদিন
বাগানের পাখিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে চিৎকার করছিল কিচিমিচির
মনে হচ্ছিল আমি বুঝতে পারছি সব ,,,ভয় হচ্ছিল খুব।

কাকলি ম্যাডাম তোমার কথা ভাববো না আর
তবু তোমাকেই ভাবছি আমি।
ছুটি হয়ে গেছে অনেক্ষন
বাইরে সূর্যের আলো ছায়া ফেলছে স্কুলের লম্বা বারান্দায়।
বাইরে এলোমেলো হাওয়া
আমার জানতে ইচ্ছে করছে তুমি কেমন আছো ? কেমন আছো তুমি ?

স্বপ্ন নীল

স্বপ্ন নীল
..... ঋষি
=========================================================
আমার কোনো সঞ্চিত ঐশ্বরিক স্মৃতি নেই
আছে একটা দোমড়ানো মোচড়ানো অন্ধকার চলার পথ।
আমার কোন প্রিয় উপন্যাস নেই
হ্যাঁ গত দু দশকের লেখা,বর্তমান কিছু লেখকের লেখা আমার ভালোলাগে।
ভালো লাগে কোনো প্রিয় কবিতার রোমন্থনে
সময়টাকে স্বপ্নের নীল রঙে মুড়তে।

কোনো সিনেমার সিকোয়েন্স মতো
চলন্তিকা তোমার  হাইহিলের নীচে  কুড়মুড় করে ভেঙে গেছে আমার পুরোনো সময়।
মনে করলে মনে হয় বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে চলে গেছে
কেউই একটা স্বপ্ন।
আমার  নোনতা সেই চুমুর দিন পেরিয়ে
পরে আছে কিছু বাসি ,মরা,পচা স্বপ্নের ডাস্টবিনে বাঁচতে থাকা স্বপ্ন।
স্বপ্নের নীল আলোতে চলন্তিকা তোমার হাতছানি ডানা
মাঝে  মাঝে পা পিছলোয় ,তবে ফিরে আসে
বারংবার তোমার মুখ।
তোমার কল্পনায় কবিতাগুলো কখন যেন পত্রিকায় ছাপা হয়
কিছু আদর বোধ হয় ছড়িয়ে পরে পাঠক,পাঠিকার বুকে
কিন্তু বিশ্বাস করো আমার আর কোনো স্বপ্ন নেই।

আমার কোনো জীবিত ইচ্ছার অধিকার নেই
আছে সেই রুটিনমাফিক চাল ,ডাল,নুনের বেঁচে থাকা।
আমার কোনো খিদে নেই
তবু খাই আমি ,বাঁচি আমি ,স্বপ্ন দেখি রঙিন কোনো দিনের।
আমার ভালো লাগে তোমার কবিতা লিখতে
তাই অনবরত লিখে চলি বাসি ,পচা স্বপ্ন।

অসময়

অসময়
.......... ঋষি
===============================================
আমার কোনো জন্ম নেই ,নেই গন্তব্য
শহরের নাভিস্থলে আজকাল শরতের মেঘের আগমন।
এই শহর জানে না জীবন শুধু কোনো অদৃশ্য বন্ধনে ছুটে বেড়ানো
তাইতো এই শহরে উৎসব আসে।
মানুষগুলো সব বাচ্চা শিশুর মতো শুধু ভুলে যায়
শহরের না থাকুক ,মানুষের তো মৃত্যু আছে।
.
পাড়ায় ,পাড়ায়  প্যান্ডেলের সাজ
অসুরদমনী ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যের পথে।
সমস্ত অসুরদের মৃত্যু হবে
কেমন একটা বোকা বোকা কনসেপ্ট ,কেমন অদ্ভুত স্বপ্ন দেখছে মানুষ।
যে শহরের ছ বছরের কন্যার মৃত্যু ঘটে
যে শহরে প্রতি ২২ মিনিটে একজন মহিলা ধর্ষিত হয় ,
সেই শহরের বদলাবে ?

সময় চিৎকার করে মওকা মওকা করে
ইলেক্ট্রিনিক্স মিডিয়াতে সবচেয়ে সস্তায় বিক্রি হতে থাকে অজস্র লুকোনো কান্না
এই সেই সময় ?এই অসময়
মানুষ শুধু মেতে থাকতে চায় নিজেকে ভোলাতে ,নিজেকে মানাতে
একটা মিথ্যা বাঁচাকে আশ্রয় করে সত্যি লুকোতে চায়।
নিজের খিদে মেটাতে এই সময়
কোনো জন্মদাত্রী তার সন্তান বেঁচে দেয় ,,,,, লজ্জা।

আমার কোনো মৃত্যু নেই ,নেই বেঁচে থাকা
শহরের নাভিপদ্মে এখন শুধু সাজ সাজ রব।
আর কদিন কুমোর পাড়ায় কাঠামো তৈরী শেষ ,এখন মাটির লেপন
ঠিক এমনি মানুষের বেঁচে থাকা ,মিথ্যে ঢাকার চেষ্টা।
এই শহরের মানুষগুলো তো মরে গেছে কবে
শুধু এই কপট উৎসব আর উৎসবের ঘোর।



Sunday, September 3, 2017

পাগলামি (৭)

পাগলামি (৭)
............ ঋষি
============================================
নিস্তব্ধতা
বিকেলের চারিপাশে ছায়ামাখা শব্দদের ভিড়।
এই শব্দগুলো সব তোমার।
ক্রমশ গলতে থাকা মোম ,বিকেলের গঙ্গার ফেরীঘাটে ঘর ফেরা নৌকা।
তোমার গন্ধ ,তোমার গলার স্বর
বড়ো পাগল করছে।

নিজের চেতনার ভেতর
আকাশের মেঘের পাতলুন ছিঁড়ে খুঁড়ে দেখি বিশাল এক স্বপ্ন।
তোমার আদুরে মেঘের  ভাজে
ক্রমশ প্রকট নীল স্বপ্নের কোনো লালচে পিচকিরি শেষ আকাশের আলোয়
হলুদ পাতার মতো  ঘুরে ঘুরে ক্রমশ নিভে যাচ্ছে আলো।

আমাকে প্রশ্ন করছো তুমি ,জানতে চাইছো
আমি বলি
মানুষ বৃক্ষ নয়।
তাই ঝরে যাওয়া মানে পরিসমাপ্তি, অবশেষে সব শেষ নয়
ফিরে আসা মাটির আদরে
ক্রমশ রাস্তার পাশে বাতিস্তম্ভগুলো উঠছে জেগে।

নিস্তব্ধতা
বিকেলের চারপাশে ক্রমশ অন্ধকার কোনো বোবা শহর।
তুমি জানো প্রতিটা শব্দ এই সময় মনে করাচ্ছে তোমায়
তোমার রঙিন আবদার।
ক্রমশ সূর্যের শেষ ফিতে টুকু গিলে খাচ্ছে একলা সময়
তোমাকে খুঁজছে পাগলের মতো।

তুমি তখন

তুমি তখন
................ ঋষি
===================================================
একবার ভালোবাসতে বাসতে
আমি সমুদ্রের ধারে গিয়ে বসি ,সামনে তোমার হাতছানি।
একবার তোমাকে আদর করতে করতে
আমি সমুদ্রের জলে ভাসি ,সমুদ্রে তখন মন্থন।
আর তুমি তখন
আমার কানে কানে চাইছো ,আরো বেশি।

বেশ ছিল প্রশ্নটা তোমার
ভালোবাসা আর প্রেম ,মাঝখানে তফাৎ কোথায় ?
কোথায় দেওয়াল ?
কিন্তু আরো অদ্ভুত কি জানো মানুষের দেওয়ালে ভালোবাসা মাথা ঠোঁকে
একটু আশ্রয় ,কিন্তু চারদেওয়াল হয়ে যায়।

তোমার লাল ,আকাশি নীল স্পর্শগুলো
যখন আমার কবিতায় ,ভূমিকম্প এসে পরে যখন তখন।
আমার স্বপ্নের নীরবতায় বলতে ইচ্ছে হয়
হাত বাড়ানো আকাশ ,আমাকে নিয়ে চলে যা সমুদ্রে।
আর তখনি সমুদ্র আছড়ে পড়ে আমার বুকে
নোনতা স্বাদ ,গুঁড়ো গুঁড়ো স্বপ্ন ,নিয়মের চারদেওয়াল
তারপর কষ্ট। ....

একবার ভালোবাসতে বাসতে
আমি সমুদ্রের বুকে মাথা রাখি ,পরম আশ্রয়ের আদর।
চোখের উপর তোমার খোলা চুল যেন আমাকে আরো গভীরে নিয়ে যায়
ঘুটঘুটে অন্ধকার।
আমি হাতড়াতে থাকি ,পাশে দেওয়ালে মাথা ঠুকে যায়
চিৎকার করি ,,,,,,কোথায় তুমি ? কোথায় ?

কবিতার মানুষ

কবিতার মানুষ
............. ঋষি
============================================
একদিন মানুষ এসে দাঁড়াবে কবিতার ভিতর
সমস্ত কবিতার শব্দগুলো তখন মানুষের ভালো,মন্দ।
একএকটা কবিতার ছন্দে
মানুষ জাগবে ,মানুষ বাঁচবে।
ফ্রোয়েড থাকবে সেদিনও ,কিন্তু থাকবে না ভেদাভেদ
আর কোনো অভিমানী নারী।

অবহেলার খামে ,হাটখোলা বাজারে
আমার শহর নিয়মিত পণ্য কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থার।
বদলাবে সেদিন
মানুষের কবিতা মানুষকে ঘুম থেকে তুলে ,শেখাবে বাঁচতে মানুষের মতো।
জোয়ার-ভাঁটা, ওঠা-পড়া
জীবন ছন্দে মানুষের দিনরাত্রি যাপনীয়তা সব কবিতা সেদিন ।
পাখি ডাকবে সেও কবিতা ,গাছের ফুলে তখন কবিতার প্রলেপ
আর তুমি সে তো চিরকাল কবিতাই ছিলে।
চোখের কাজলে ,তোমার ঠোঁটের  হাসিতে,আলতো সেই গলার তিলে
তখন তুমি ভালোবাসার কবিতা।
সকলে সেদিন কবিতা গাইবে আর কবিতা
সে তো চিরকালই মানুষের।

একদিন মানুষ এসে দাঁড়াবে কবিতার ভিতর
সারি দেওয়া নামি দামী কবিরা আর কারো চাপরাশি নয় ,কবিতা লিখবে।
তখন আকাশে শুধু কবিতা ,বাতাসে কবিতার শ্বাস
কবিতা আর পণ্য নয় এই সভ্যতার মতো।
মানুষ সেদিন কবিতা হয়ে যাবে
আর কবিতা ,,সে তো চিরকালই মানুষের।

খোঁজ

খোঁজ
........... ঋষি
====================================================
আরো কিছু গল্প জমে আছে ,কিন্তু খসড়া নেই
নেই হিসেবের খাতায় এমন কিছু শর্তের যার কোনো বাজার নেই।
তার সাথে দেখা হওয়ার ভোরে
কখন যেন একটা ঠোঁট ছুটে এলো আমার দিকে।
তা প্রায় নয় মাস হলো আমার ক্যালাইডোস্কোপে কি যেন নাম ছিল স্বপ্নের
অরিত্রিকা কিংবা অন্য কোনো। ..ঠিক মনে নেই।

বলেছিলো
আপনার দেশের রেপ আইন এবার বদলানোর সময় এসেছে ,
শুধু মাত্র নারী শরীরকে পণ্য নয়
একটু অন্য আয়নার দেখুন এবার।
এরপরে সেই সকালের কারখানার ভোঁ,চলে গেলো সে।
সমস্ত দ্রাঘিমাংশ ,অক্ষাংশ কোথাও আর খুঁজে পাওয়া গেলো না তাকে
শুধু বারান্দায় গিয়ে দেখি
পাশের বাড়ির ছাদে একটা লাল টুকটুকে ব্রা।

যা তা আর কি
সভ্যতার অংশ জুড়ে তখন বড় আপেল।
মানুষ ক্রমশঃ হারিয়ে গেল বিপণন সংস্থার লাইকের ভিড়ে
পুরোনো অথচ চিঠিপত্রের অভিসার বংশ
তাৎক্ষণিক ছোট ছোট বাক্স জুড়ে দেওয়াল জোড়া নীল আলো।
বহুদিন বাদে অজ্ঞাতঘুম থেকে রিপুগুলো জেগে উঠে বলে
‘আমাদের আর কোনো ভয় নেই।
সকল কবিতার ভিতরেই আমাদের বাসযোগ্য বরফ, এই-ই সত্য’
কিন্তু কি বেশ নাম ছিল ,,হ্যা অরিত্রিকা তাকে  আর  পেলাম না।

Saturday, September 2, 2017

ভালোবাসি

ভালোবাসি
.......... ঋষি
===============================================
তোর ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বলবো
ভালোবাসি।
তোর বুকে বুক ঘষে বলবো
ভালোবাসি।
আগামী কোনো একলা দিনে তোকে কোলে তুলে নিয়ে বলবো
ভালোবাসি।

ভালোবাসি সেই একলা গাছটাকে
যাকে সবাই দেখে দূর থেকে শুধু  ফলে আশায়
আর আমি দেখি তোকে আদর করবো বলে।
ভালোবাসি সেই ডিঙি নৌকো
যা হাজারো জল ,বাদলে ভেসে চলে নীরব কোনো ইচ্ছার মতো ,
যাকে সকলে মৃত্যুর রূপররেখা আঁকে
আর আমি দেখি তোর চোখে আমার মৃত্যু বারংবার।
ভালোবাসি তাই
মিশে যেতে চাই এক শরীরে ,এক শব্দে
অর্ধনারীশ্বর।

তোর শরীরে শরীর মেখে বলবো
ভালোবাসি।
তোর চোখে চোখ রেখে বলবো
ভালোবাসি।
আগামী কোনো  দিনে তোকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলবো
ভালোবাসি। 

Some rain blows me and let some touch you. ........as love....

Some rain blows me and let some touch you. ........as love.....
.
সবটুকু আমাকে দিবি চলন্তিকা
এই জন্মের সব স্পর্শ গুলো আমাকে দিবি চলন্তিকা।
তোর দুংখের পুড়তে থাকা গর্ভ গৃহের কিছু আগুন
তুই আমাকে দিবি চলন্তিকা।
যদি স্পর্শ বলে কিছু থাকে
তবে আকাশের মেঘে তোর নীল রঙের উপলব্ধি আমাকে দে প্লিজ।
.
অন্তত একবার
এই জীবনের পর্যায়ে জমে থাকা কালো মেঘের বৃষ্টিতে আমি ভিজতে চাই।
কোনো অনন্ত তৃষ্ণার নীরবতার মাঝে
আমি তোকে কানে কানে ,ফিস্ ফিস্ বলতে চাই
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
.............. জীবন দেব মেপে।
কোনো পদ্য নয় ,অনেকটা জীবনের না বলা শব্দের ঝড়
বুকের কাছে আটকে,
একবার তোর বুক খুলে আমাকে শান্তি দিবি।
দিবি কোনো অদেখা সকালে প্রথম ঘুম জড়ানো চোখে
দিবি কোনো তৃষ্ণার ঠোঁটে এক গোছা সোনালী মেঘ।
আজ খুব বৃষ্টি হোক
আমি ,তুই শুধু ভিজি মনের বারন্দায় কোনো অচেনা আদরে।
.
সবটুকু আমাকে দিবি চলন্তিকা
এই বেঁচে থাকার পারদে বাড়তে থাকা উত্তাপের সমস্ত ভাবনাগুলো।
বারান্দায় সদ্য ভেজা বৃষ্টি সবুজ হয়ে যাওয়া ম্যানিপ্ল্যান্টের মতো
কোনো সবুজ জীবন আমায় দিবি।
আমি যে বৃষ্টিতে ভিজতে চাই
ভালোবেসে তোকে দিতে চাই কোনো বৃষ্টি ভেজা দিন।
.
........ ঋষি
================================================

সাধারণ উপাখ্যান

সাধারণ উপাখ্যান
.............. ঋষি
============================================================
বেঁচে থাকা কোনো উপাখ্যান
এই অনুভূতির ভিতর একটা তুমি আছো চিরকাল।
যেখান থেকে আমি সবসময় একটা চিৎকার শুনতে পাই
দেখতে পাই তোমার পুড়ে যাওয়া বুকে ,ক্রমশ লুকোনো কালসিটে।
কিন্তু কি অদ্ভুত ,
এই চিৎকার শুনতে পায় না সময় ,শুনতে পাই না সমাজ
আর তোমাদের জীবিত ইচ্ছারা।
.
চলন্তিকা একটা চৌদ্দ বছরের মেয়ে
এই সময় মা হতে পারে।
কোনো আইনের বড়ো রক্ষক নিয়ম করে
বিয়ের পরের জোর করে সঙ্গমকে ধর্ষণ নয় সামাজিক নিয়ম আখ্যা দিতে পারে।
খবরের কাগজে প্রতিদিন চলন্তিকা তোমার শরীর বেআব্রু হতে পারে
হতেই পারে তোমার মৃত্যু ,কিংবা ধর্ষণ
খুব স্বাভাবিক তাই না।
.
ধর্ষণ ,লজ্জা আর নিয়মিত দু চারটে প্রতিবাদ
আচ্ছা একবার ভেবে দেখেছো কি যে মোমবাতি মিছিলে সময়ের যে  সব সত্যি গুলো সামিল,
ঠিক একই সাইজের পুরুষাঙ্গে চলন্তিকা তোমার মৃত্যুগুলো মুখ থুবড়ে মরে।
প্রতিটা মুহূর্তে ,প্রতিটা সেকেন্ডে
কি সহজে তোমাকে নগ্ন করে দাঁড় করানো যায় একা রাস্তায়
তোমাকে করে দেওয়া যায় নষ্ট মেয়েছেলে।
কি আছে যুক্তি সময়ের এই শ্রেণীকরণের ?


বেঁচে থাকা কোনো উপাখ্যান
তোমাদের  মাটির খোঁজ এই সময়ে শুধু মাত্র হস্তান্তর।
চলন্তিকা তোমাদের বেঁচে থাকা আজ শুধু পুরুষের উপকরণ
আর তোমাদের মৃত্যু শুধুই কি তোমাদের কপাল ?
কিন্তু কি অদ্ভুত
যে ঈশ্বর তোমার জন্ম গুহা স্পর্শ করে বলে তৃপ্তি
সেই জন্মগুহা সময়ের  বাড়তে থাকা গু মুত আজ শুধুই ডাস্টবিন। 

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...