Tuesday, March 31, 2015

হাতদুটো যাতে বাঁধা থাক

হাতদুটো যাতে বাঁধা থাক
............. ঋষি
==========================================
হাতদুটো যাতে বাঁধা থাক
সামুদ্রিক বোল্ডারে ফেলে এসো জীবন নোনা জলে।
জল গড়াচ্ছে যেদিকে ঢাল
যুগযুগান্তর অনন্ত ধারাপাত অপরিবর্তনশীল।
চোখের আলোয় নোনা হাওয়া
মানুষ বড় কাঁদছে এখানে।

কেটে নিয়ে যাচ্ছে হৃদপিন্ড দৈনন্দিন ক্যানভাসে
মস্তিষ্কের নিউরনে ছড়ানো ভাইরাসে।
ঘাস খাক সভ্যতা প্রেমের নামে যৌবনের দিন
কিংবা শরীরে যত্নে লাগানো থাক প্রেমিক তকমা।
অন্ধকারে চুমুচাট্টি শহরের পবিত্র কোনে
ঝলছে উঠছে তলোয়ার বারংবার।

হাত বাঁধা থাক আগত যৌবনের  কামার্ত  মিডিয়ার ঝংকারে
হাত বাঁধা বার্ধক্যের বাকিটুকু কাটানোর কামনায়।
সময় কেটে যাচ্ছে ,যেমন কাটছে দিন
মধ্যবিত্ত দিন গুনছে খিদের সকালে দুগ্ধবতী মায়ের।
শিশু দিন গুনছে আগামীর স্বপ্নে দেখা নতুন ভোরের
তবু হাত বাঁধা থাক আমাদের নিজস্ব সম্বলে।

হাত দুটো বাঁধা থাক
সামুদ্রিক প্রবল ঝড়ে বোল্ডারে আছড়ে পড়া ঢেউ।
আঁচড়াচ্ছে  কেউ বুকের ভিতরে
ঢুকে যাচ্ছে নখ সভ্যতার জঙ্গলে টেরাকোটা চিতা।
আর রক্তে ভাসছে মানুষের দিন
মানুষ বড় কাঁদছে এখানে।

প্রথম শৈশব

প্রথম শৈশব
................. ঋষি
=========================================
বিরক্তিটা রাত জাগা কবিতার মত
আকাশের দেওয়ালে বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকে।
শব্দটা সহস্র প্রাচীন হৃদয় কার্নিসে
ভাঙ্গাচোরা  লালচে ইটের কারখানার গুঁড়িয়ে যাওয়া মাটি।
আর আমি মাটি মাখা প্রথম শৈশব
নিত্য অনিত্যের গুঁড়িয়ে যাওয়া প্রথম ভগ্নস্থুপ।

জীবন্ত মিছিলে সামিল অনেকে
কামনা ,বাসনা ,রাগ ,হিংসা ,কাম ,লোভ।
সহবাস শরীরের উত্তপ্ত কারখানায় অনিদ্রার সাথী
ভীষণ যান্ত্রিক কারখানার ভো বাজলো
ছুটি,ছুটি..... ছুটি জীবন।

আবারও একটা কবিতার জন্ম
যে কবিতা লিখি নি আমি আমার শৈশবে।
তার প্রথম লাইনে বিরক্তির শবদাহ যৌবন
জুড়িয়ে যাওয়া ঠান্ডা ভাতে চাহিদার খিদে বিরক্তিকর
সিলিঙে পুরনো পাখার হাওয়ায়।

মশারির ভিতর ঘুমিয়ে পরা শহরের নিস্তব্ধতা
জানলার বাইরে অসংখ্য জ্যালজ্যালে সভ্যতার ছবি।
ভোতা বাল্বের হলুদ আলোয় প্রশস্ত হাতছানি
ভাঙ্গাচোরা লালচে ইটের কারখানায় কালো ধোঁয়া।
শৈশব ডাকছে পিছনে ফেলা আসা দিন
আরেকবার আরেকটি নতুন দিন।

লোডসেডিং

লোডসেডিং
.......... ঋষি
========================================
তোকে কেড়ে নিয়ে কি করবো
বাজারের মাছের ব্যাগে শুকিয়ে যাওয়া দিনযাপন।
কোথায় রাখবো তোকে
শরীরের থেকে সহস্র প্রকোপে আমার জ্বর।
মোমবাতির নাকি মিছিলে চলে যায়
আর লোডসেডিং অন্ধকার আমার শহরে।

স্তূপ হয়ে পরে থাকা খবরের ঢিপিতে
উইপোকাদের নিত্য ধর্ষণ।
ভীত খবর পাল্টে যায় শরীরের লুকোনো লজ্জায়
খোলা আকাশের নিচে অনামী সভ্যতায়।
হাসি পায় ,হাসি পায়
ভগবান নাকি যুগে যুগে দূত পাঠিয়েছে চেতনার পারে।
সর্বশিক্ষা মিশনের সবুজ ডগা চিবিয়ে খাই
অথচ বোবা সভ্যতায় বদল কোথাই।

তোকে কেড়ে নিয়ে কি করবো
বাজারে সদ্য গজানো নারীকে বলি স্যানি লিওনা।
কোথায় দেখবো তাকে শরীর জ্বর
নীল শরীরে মিডিয়ার সার্চ ইঞ্জিন গর্জে ওঠে মস্তিষ্কের বিক্রিয়া।
আর লোডসেডিং আমার শহরে গা সওয়া
খবরের কাগজের বিক্রি বাড়ছে। 

রণক্ষেত্র

রণক্ষেত্র
........... ঋষি
===========================================
শহরের বুকে দাঁড়িয়ে ফ্লাইং কিস তোমাকে
সবুজ আর অবুঝ অরিগামি।
অনন্ত শয্যায় ভীষ্ম শুয়ে খরখরে রৌদ্রে মুকুটের প্রতিধ্বনি
সকলে সম্রাট হয় না।
সকলে জীবিত থাকে না
রৌদ্রে পুড়ে কাগজের নৌকো তোমার হাতে।

নিত্য অনিত্যের চাবিকাঠি ,সোনার কাঠি ,রুপোর কাঠি
কোনো ম্যাগাজিনে দেখা খোলা বুকে।
লোম খাড়া হওয়া শিহরণ তুমি নাকি পবিত্র
শিবের মাথা ছিঁড়ে নেমে আসো মাটিতে পবিত্র জল।
জন্মান্তরের গাঁথা আটকে থাকে দৈনন্দিন
নেশার পেগে লাল জল।
তোমার নাভি বিকরিত করে লালনীল আলো
আর অন্তর গহ্বরে ঝড়তে  থাকে  নেশা।
বেঁচে থাকা একটা জীবন
একা হয়ে।

শহরের বুকে দাঁড়িয়ে দিনান্তের রোমন্থন সূর্যের আগুন
পুড়ে যায় পৌরানিক হস্তিনাপুর আবার।
সুঁচের মাটির গুনগান গায় ভিন দেশী তারা
প্রশ্ন ছিল ওরা কারা।
সকলে সম্রাট  নয়  তোমার মত
খোলা রণক্ষেত্রে।

ইচ্ছা জীবন

ইচ্ছা জীবন
............ ঋষি
============================
ইচ্ছা জীবন পাড়ি দেওয়া
এক আকাশ নীলচে নৌকো ভাসছে।
ছাদের সিলিঙে আটকানো দরজা
খুলছে শব্দদের না বলা আস্ফালন।
এক ঘেয়ে ভালো লাগা
তাঁতে বোনা আদরের নৌকা।

হাসছি দেখ
আজ বৃষ্টির  শরীর বেয়ে নোনতা স্পর্শ।
তোর দূরত্ব বোধ হয় কয়েক আলোকবর্ষ
অথচ স্পর্শ সুখে পাগল
আমার ঐতিহাসিক পদক্ষপে।
এগিয়ে যাওয়া মুহুর্তদের জানলায় সোনালী বিকেল
নিশ্চিন্তে মাড়িয়ে যাওয়া ছায়াদের ভিড়ে।
মুহুর্তদের ঘনঘটা মেঘলা আকাশ
আকাশ ডাকছে বৃষ্টিকে ,হাসছে সে
বৃষ্টিতে ভিজে তোর সাথে।

ইচ্ছা জীবন পাড়ি দেওয়া
আমার শহরের ভিজে হাইওয়ে ধরে.
অসংখ্য আলাপন জড়িয়ে থাকা আঙ্গুলের স্পর্শে
খুলছে শব্দদের সাথে হৃদয়ের জানলায়।
বাড়ানো হাত ,ছোটো বিশ্বাস
আকাশ আর বৃষ্টি একসাথে।

শবের মিছিল

শবের মিছিল
............... ঋষি
======================================
লালচে আকাশের নিচে বিছানো
অন্য পৃথিবী।
সার দিয়ে হেঁটে চলেছে শবের মানুষ মিছিল
ব্যস্ত পৃথিবীর কায়দায় প্রাচীন প্রাগৈতিহাসিক  মানুষ।
ডারউইনের বাদর সবাই খিদে খোঁজে
উঁকি মেরে দেখে অলিতে গলিতে বাড়ির জানলায়
কেউ কি অবশেষ আছে জীবিত এখানে।

কয়েকশো মাইল লম্বা সাক্ষাতকারে
বেশ কিছু খিদে ঘুরছিল আকাশে বাতাসে।
শুকনো তৃষ্ণায় পৃথিবীর মাটি ধুকছিল
কেউ বোঝে নি ,আসলে বুঝতে  চাই নি।

মৃতের মিছিলে আজকাল চেতনাও সামিল জ্যান্ত পরিহাসে
স্কেলিটন হাসে।
হেসে যায় সভ্যতার বুকে ঢুকে যাওয়া ছুরি
আমরা মৃত হয়ে গেছি।

লালচে আকাশের নিচে লালচে মোরাম বেছানো
অন্য পৃথিবী।
শব্দবহুল পরাধীনতার সাথে শবের মোমবাতি মিছিল
ব্যস্ত সময়ের সেলিফোনে এই মাত্র শেষ কল ঈশ্বর পৃথিবী।
আর আরমোড়া ভাঙ্গা নতুন সকাল
ধোঁয়ায় ধন্য বিবেকের শেষদিনে রক্তাক্ত যোনি
মা আমি কবেই মরে গেছি।


Sunday, March 29, 2015

নাটুকেপনায়

নাটুকেপনায়
................ ঋষি
======================================
অপার্থিব তোকে পার্থিব চাইছি
বিপদজনক অভ্যাস।
ঠোঁটে কাছে আটকে আছে আয়নার ঠোঁট
নিশ্চিন্তে বিপ্লব শুয়ে আকাশের গায়ে।
আমি কেন এত বদলে যাচ্ছি
বদলানো সময়ে নাটুকেপনায়
জীবন থেকে আমি পালিয়ে যাচ্ছি।

এ হে ,এ যে জীবনের দোষ
মুহুর্তদের কুঁড়ে খাওয়া ভাবনারা আকাশের তারা,
তবে কি এ চোখের দোষ।
আকাশের শেষ সীমানায় অন্ধকার ডার্করুম
সদ্য প্রিন্ট হওয়া ছবির শিরোনাম
জীবন থেকে  আমি হেরে যাচ্ছি ,
এ কি শুধু আমার দোষ।

অপার্থিব তোকে পার্থিব চাইছি
বিপদজনক অভ্যাস।
মস্তিষ্কের বারান্দায় দাঁড়িয়ে একলা আমি
রাস্তায় চোখ।
জীবন বদলে যায় জীবনের কিনারায়
অজস্র স্রোত ,
নিশ্চিন্তে একটা জীবন নাটুকেপনায়।

Saturday, March 28, 2015

সত্যি প্রবাহ

সত্যি প্রবাহ
........... ঋষি
==================================
কি বলবো তোকে
জীবিত প্রবাহে নিয়মিত কবিতার মৃত্যুকে,
কিংবা তোকে ভালোবাসি আরেকবার।
বল কি বলি তোকে
তোকে শেওলা রঙের শাড়িতে দারুন দেখতে।
হবে না, হয় নি কোনদিন
আমি তোকে ভালোবাসতে পারি ,
কিন্তু সাজাতে না।

তোকে আমি জড়িয়ে চুমু খেতে পারি
নিয়মিত কবিতার কলমে তোর নাম।
তোকে আমি জড়িয়ে নামতে পারি ঝরনার মত
ভেজাতে পারি তোকে প্রতিদিন বৃষ্টিতে।
কিন্তু তোকে নগ্ন করতে পারবো না
যেমন পারবো না সাজাতে।
যেমন পারবো না কোনদিন বলতে তোকে ভালোবাসি
ভীষণ ভালোবাসি ,
মিশে যেতে তোর আত্মায় ,
আমার কবিতার নতুন জন্ম হয়ে।

কি বলবো তোকে
জীবিত প্রবাহে নিয়মিত রক্তক্ষরণের কথা,
কিংবা প্লিস আমায় একটা জীবন দিবি।
বল কি বলি তোকে
আসলে আমার তোকে কিছু বলার নেই।
যতটুকু সবটুকু হৃদয়ের রঙে
আমি তোকে রঙিন করবো হৃদয়ের সাজে
কিন্তু মিথ্যে সাজাতে পারবো না।

চামড়ার চাঁদ

চামড়ার চাঁদ
........... ঋষি
==========================================
পিছন ফিরে দেখতে পাই না তোকে মন
সবটুকু চোখের সামনে ফ্যাকাসে রঙের চামড়ার মুখ।
শুকিয়ে যায় ভিতরে ভিতরে চামড়ার বয়স
ভাঁজ পড়ে ,খড়ি ওঠে
তবু কেন জানি রুপোলি দরগা  মনের ভিতরে।

রাস্তায় ডবল ডেকার বাসের জানলায় লেপ্টে থাকা মুখ
ডবল দেকার বাস দেখি না আজকাল রাস্তায়।
আমার বারো তলার ফ্লাটের রেলিঙে আটকে থাকে তোর  মুখ
চাঁদটা আজকাল বড় ফ্যাকাসে  লাগে।
কি করি বল
আজকাল কবিতার কলমে থাকে রক্ত ক্ষরণ।
অনিদ্রার বিরক্তিকর সাক্ষী পাখার ব্লেডে
আর নিয়মিত তোর মুখ জ্বলন্ত সাক্ষী
আমার চিতায়।

পিছনে ফিরে দেখতে পাই না তোকে মন
সবটুকু ঝাপসা চোখে দেখা নিয়মিত নেশার পৃথিবী।
সিগারেটের রাংতায় ,হ্যালুয়েসান
কয়েকশো কবিতায় নিয়মিত জীবিকায়।
হৃদয়টা জ্বলতে থাকে
আর তোর মুখ ঝলসানো চামড়ার চাঁদ। 

আমার মতন কেউ

আমার মতন কেউ
.............. ঋষি
========================================
আজকাল আমার মতন দেখতে কেউ বাড়ি ফেরে
চেনা পথ ঘাট ,চেনা হাইওয়ে ধরে।
আমার মতন কেউ চেনা দরজায় টোকা দেয়
নিয়মিত চেতনার দরজা খোলে।
নড়ে যায় ভিতের উপর সাজানো ঘরদোর ,সংসার
জীবন কেমন জানি ঘুমের ঘোরে,
একলা  থাকে।

এ আর এমন কিছু না
নিজের স্কেলিটনের সাথে সন্ধি ,বিশাল আকাশ।
জীবন দাবার কয়েকটা ঘর
ঘর বদলায় না রাজা স্থির ,
সাম্রাজ্য বদলে যায় সাদা কালো ঘরে।

এ আর কিছু নয়
রোজকার কবিতার খাতায় নিয়মিত রক্তক্ষরণ।
জীবন জীবিকার মৃত প্রবাহ
অলিন্দের ভুকা আস্ফালন ,
জবাব চাই ,জবাব চাই।

আজকাল আমার মতন দেখতে কেউ বাড়ি ফেরে
চেনা পথ ঘর ,চেনা জীবিত প্রবাহ ধরে।
আমার মত কেউ নিজস্ব সত্বার সাথে ছেলে খেলা করে
নিয়মিত ফুটপাথ ঘেঁষা লাইট পোস্টে জীবন আঁকড়ে থাকে।
নিভে যায় আলো বারংবার অন্ধকার রাস্তায়
পথ হারায় ,
আমার মত কেউ প্রতিদিনের শেষে।

শুধু তোমাকে


শুধু তোমাকে
............... ঋষি
============================================
আমার আজকাল জানতে ইচ্ছে করে মন
তুমি সুখী কিনা।
সময়ের প্রবল ঝড়ে আমার হৃদয়ের শুকনো পাতাগুলো মাটিতে
মিশে যা ,মিশতে চাই সময়ের সাথে।
তবু জানতে ইচ্ছে করে বারংবার
তুমি ভালো আছ  তো।

মহামারী ,কাটাকাটি প্রবল বিদ্রোহে
তোমার শহর জুড়ে আমার অজস্র পদশব্দ।
আমার জানতে ইচ্ছে করে
তুমি শুনতে পাও সেই পদশব্দ।
তুমি শুনতে পাও মন ঋতুদের সরে যাওয়ার শব্দ
একলা কফিনে পরে থাকা অজস্র স্মৃতিদের আলাপনে
আমার ফিরে আসার গান ।
আমার বড় জানতে ইচ্ছে করে তোমার না বলা কথাদের আস্ফালন
মুখোশের আড়ালে লোকানো তোমার নরম হৃদয়টাকে।

আমার আজকাল জানতে ইচ্ছে করে মন
তুমি কোথায় আছ।
সময়ের সাথে বদলানো জীবনের নানান রঙে পচতে থাকা আমি
মিশে যেতে চাই মাটির সাথে ,
তবু শেষবার আমার জানার ইচ্ছা মন
শুধু তোমাকে। 

দৈনন্দিন আদম ইভ


দৈনন্দিন আদম ইভ 
................. ঋষি
==========================================
ছেলেটি গেয়ে উঠলো পথচলতি মেয়েটির উদ্দেশ্যে 
ও মেরি ছম্মক ছাল্লু ,ও মেরি ছম্মক ছাল্লু।
ছেলেটি একটু ভুল করেছিল 
সে জানতো না একেবারে 
আজ সৃষ্টির সপ্তম দিন ঈশ্বর সৃষ্টিতে মত্ত। 
মেয়েটি ঘুরে দাঁড়ালো 
ছেলেটির গালে সপাটে এক চড়,
তোর বাড়িতে মা বোন নেই। 

লিলিথ কে দেখতে পেলাম আমি 
আদমের প্রথম স্ত্রী লিলিথ। 
যিনি তৈরী হন ঈশ্বরের শরীর থেকে আদমের সাথে ,
আদমের সহ্য হয় নি 
নারীকে দেবে সমক্ষমতা,বিতারিত হন লিলিথ। 
ঈশ্বর আদমের পাঁজরের হাড় দিয়ে তৈরী করেন ইভকে 
ইভ যে আদমের আশ্রয়ে চিরকালীন। 
আজকের সমকালীন নারী 
অথচ নিজেকে বাঁচাবার জন্য ইভের লিলিথ কে দরকার। 

ছেলেটি ইচ্ছাকৃত কনুইটা এগিয়ে দিলে বাসের ভিড়ে 
উত্তক্ত মেয়েটি সরে গেল একটু দুরে। 
ছেলেটি কোনো ভুল নেই 
সে তো আদম হতে চেয়েছিল। 
আজ সৃষ্টির সপ্তম দিনে ঈশ্বর দাঁড়িয়ে নেই 
তাই ইচ্ছাকৃত পিষে চললো মেয়েটা বাসের তুমুল ভিড়ে। .
আমি লিলিথকে দেখতে চেয়েছিলাম আরেকবার 
কিন্তু তাকে আমি খুঁজে পাই নি। 

Friday, March 27, 2015

হৃদ মাঝারে

হৃদ মাঝারে
,,,,,,,,,, ঋষি
==========================================
প্রচুর জ্বালাচ্ছি তোকে
কাল থেকে আর জ্বালাবো না।
শুধু পোড়াটুকু  থেকে যাবে কোথাও গভীরে
আবারও  বৃষ্টি নামবে আকাশের মুখ ভার।
অথচ কিছুই বদলাবে না
যেমন বদলায় না অস্তিত্ব পুড়ে যাওয়ায়।

জীবন থেকে হারাবার মুহুর্তে
জড়িয়ে ধরা বাঁচবার  তাগিদে জানলার বাইরে আকাশ দেখেছি।
কিন্তু নিজে পুড়েছি তোকে পোড়াতে চাই নি কখনো
আরেকবার হাসবার তাগিদে প্রেম তোকে জড়িয়ে ধরেছি।
কিন্তু বৃষ্টি নেমেছে আকাশের মুখ ভার
ক্ষনিকের অভ্যাসগুলো বেখেয়ালে রান্না বাটি খেলে গেছে।
স্মৃত্মির মাঝে কথাও আত্মারা থেকে গেছে
যেমন আমার বদভ্যাস,
প্রেম তোকে খুঁজে পাবার।

প্রচুর জ্বালাচ্ছি তোকে
কাল থেকে আর জ্বালাবো না।
চেনা পথ ধরে হেঁটে যাওয়া অভ্যাসটা আমার চিরকালীন।
তবু কেন জানি মনে হয়
প্রেম তোকে বদলাবো না ,
তোকে রাখবো হৃদ মাঝারে ছেড়ে দেবো না।

  

পরিবর্তনের কবিতা

পরিবর্তনের কবিতা
................ ঋষি
=====================================
প্রতিটা প্রতিবাদের রঙ লাল
আজ থেকে নয়, পৃথিবীর বিপ্লবের বলছে সে কথা।
ইতিহাস কোনো বই নয়
মানুষের প্রাচীন অস্তিত্বের কঙ্কাল।
অথচ কঙ্কাল মিশে যায় মাটিতে বিশ্বের অহংকারে
আসলে মৃত্যুর কোনো জায়গা নেই বেঁচে থাকায়,
অথচ বেঁচে থাকা মানে জীবিত নয়।

অথচ জানো ইতিহাস বলছে
প্রতিবাদ কখনো আসে না জন্মের সাথে।
নিত্য দৈনন্দিন বেঁচে থাকার যন্ত্রণার নাম বিপ্লব
তবে এটা ঠিক বিপ্লব মাঝে মাঝে ঘুমিয়ে পরে ,
একটু চেতনার দরকার।
একটু ঝাঁকানো দরকার
বিপ্লব জাগবে ঠিক যখনি দেওয়ালে ঠেকবে পিঠ।
প্রতিটা বিপ্লব এসেছে মানুষের রক্তে
আর পরিবর্তনের জন্য বিপ্লবের জরুরী,
যেমন জরুরী আমাদের একটা মেরুদন্ডের।

প্রতিটা বিপ্লবের রঙ লাল
আজ থেকে নয় ,প্রাচীন বিশ্বের ইতিহাস বলছে সে কথা।
তবে কি আমরা ইতিহাস ভুলে গেছি
তবে আর কতদিন ,কবে সোজা  বিশ্বের মারুদন্ড।
একটা বিপ্লব ভীষণ দরকারী
নিজেকে মানুষ বলার তাগিদে,
কিংবা মনে করতে আমরাও জীবিত।

হরিশের মা

হরিশের মা
..................... ঋষি
=====================================================
শরীরটা অনেক্ষণ পড়ে আছে টেবিলের উপর
চাটাই দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা শরীরটার পা দুটো বেরিয়ে।
আমি দেখছি অনেক ক্ষণ ধরে
এটা লাশ কাটা ঘর।
আমি প্রহরী বুড়ো হরিশচন্দ্র
হরিশ আমার নাম।

কেউ কোথাও নেই রাতের দরজায় অগনতি ছন্দপতন
কেউ কোথাও নেই আমার চোখে গাজার নেশায় লাল পৃথিবী।
দুচারটে মাছি উড়ছে লাশটার উপর
লাশটার সাদা ধবধবে পা দুটো বেরিয়ে চাটাইয়ের বাইরে।
অদ্ভূত সুন্দর পা
আসতে আসতে খুলে ফেলছে হরিশ চাটাই মোড়া লাশটা।
ওমা একটা পঁচিশ ,চব্বিশের মেয়ে
মেয়েটা চোখ খুললো ,হরিশ প্রশ্ন করলো।
তুমি কে মা ?
উত্তর আমি নারী এটা পরিচয় ,কিন্তু মা নামে আমায় কেউ ডাকে নি আগে।
চোখের জলে ভরে গেল লাশকাটা ঘর
হরিশ ডুবে যাচ্ছে।

মেয়েটার সারা শরীরে চাবকানো দাগ
মেয়েটা দেখাচ্ছে হরিশকে পৃথিবীর লুকোনো পাপগুলো।
মেয়েটা দেখাচ্ছে হরিশকে অসংখ্য লুকোনো  বেদনায়  নারী রূপটাকে
অসম্ভব সুন্দর মেয়েটা হরিশের ঠিক মায়ের মত.
হরিশ হাত বোলাচ্ছে মেয়েটার মাথায়
মা তোর কষ্ট হচ্ছে।
মা তোর  কষ্ট কিসের
মা কাঁদছে।
হরিশ আজ অবধি তার মায়ের মুখ দেখে নি
সত্যি পৃথিবী ভুলে গেছে মায়ের কথা।
লাশ কাটা ঘর ভিজে যাচ্ছে রক্তে মেয়েটার কাটা লাশ
হরিশের মা কাঁদছে আজ।

শরীরটা সারা রাত পড়ে ছিল টেবিলের উপর
পায়ের কাছে মুখ থুবড়ে পরে নিথর বুড়ো হরিশের লাশটা।
সে কোনদিন দেখে নি মায়ের মুখ
টেবিলের উপরে তার মা শুয়ে।
সেই মা, যে নিয়ে গেছে তাকে পৃথিবী থেকে
চাই না তাদের আর নোংরা পৃথিবী ।

Thursday, March 26, 2015

শীতল ছায়া

শীতল ছায়া
................. ঋষি
=======================================
প্রেম ঝরনার মত ঝরে পরুক
মুক্ত অঙ্গনে মুক্তমুখী তুমি  আনত দৃষ্টিতে।
শাড়ির ভাঁজ থেকে লুকোনো বুকের ভাঁজে
জড়ানো মায়া ,তরল নেশা
একসমুদ্র বিষ আমার চোখের পাতায়।

আমি নেশা খুঁজি নি
জড়িয়ে নেমেছি তোমায় প্রাচীন বৃক্ষের মত।
বৃক্ষের কোটরে বাসা অসংখ্য স্পর্শগুলো সম্পর্কের জাল
মাকড়সার আনাগোনা ,উদ্ভট ভাবনায়।
এই বিকেলবেলা
হাতের কফিকাপে উষ্ণ তৃষ্ণা তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে
আমার ঠোঁটে বাঁচার ইচ্ছা।
কিছুটা প্রাচীন স্তবকে তোমার শরীরের প্রতি আলোরণে।
কাঁপতে থাকা হৃদয়ের বেগ
প্রাচীন আবেগ তোমাকে ছুঁয়ে।

প্রেম ঝরনার মত ভিজে যাওয়া  শরীরে তরঙ্গ
মুক্ত অঙ্গনে মুক্তমুখী তুমি লাজুক ভঙ্গিতে।
বিদ্যুতের স্পর্শে শিহরণ শিরায় শিরায়
জড়ানো মায়ায় ,সহস্র প্রাচীন বৃক্ষের ভূমিকায়,
তুমি শীতল ছায়া আমার হৃদয়ে।

পল পল দিলকে পাস

পল পল দিলকে পাস
................... ঋষি
==================================
প্রতিদিন ভাবতো ছেলেটা এবার ঠিক পৌঁছে যাবে
সেই ভেবে সিঁড়ি ভাঙতো দিনের পর দিন,
তোমার কাছে যাবে।
সে যত সিঁড়ি ভাঙ্গে ,দূরত্ব ততো বেড়ে যায়
সময় এসে দাঁড়ায় নীল আকাশের গোড়ায়।
পিছনের দিকে তাকায়
গভীর খাদ ,ফিরে আসে পিছে ,
দূরত্ব টুকু সিঁড়ি থেকে যায়।

বাইরে বইতে  থাকে ধুলোর পৃথিবী
হাওয়ায় হাওয়ায় গন্ধ হেরে যাওয়া জীবনের গান
পল পল দিলকে পাস ,তুম রেহতি হো।
আর জীবনের কবিতায় অন্য গান
তুই ফেলে এসেছিস তারে ,ও মন রে আমার।
সবটুকু বাকি ,বাকিটুকু সব
এই ছিল ছেলেটার জীবন কলরব।

প্রতিদিন ভাবতো ছেলেটা আবার ঠিক পৌঁছে যাবে
সেই ভেবে সে দিন গুনতো দৈনন্দিন ক্যালান্ডারে,
তোমার কাছে যাবে।
সময় যায় সময় আসে ,প্রতি ঋতুতে প্রকৃতি হাসে
মাঝখানে ব্যবধান জুরাসিক এজে জীবন।
কয়েকশো যুগ পিছনে ছেলেটা দাঁড়িয়ে থাকে
মেয়েটা হাসে আর বলে
সামনে সিঁড়ি ,আমার কাছে এসো। 

Wednesday, March 25, 2015

তুই ভিজবি বলে

তুই ভিজবি বলে
............... ঋষি
==========================================
ভালোবাসা শব্দটা লেখা আছে আকাশের গায়ে
আকাশে নীল ছিঁড়ে দুচার মুহুর্তের কবিতারা বাঁধন ছাড়া বৃষ্টি।
নেমে আসছে  আকাশ থেকে
আমার কপাল বেয়ে তোর হৃদয়ের তৃষ্ণা নদী।
আজ মেঘলা আকাশে
বৃষ্টি আসছে ,তুই ভিজবি বলে।

বৃষ্টি তুই সৃষ্টি ছাড়া  আমার ভিজে শার্টে
আমার খোলা বোতামে ঝড়ো হাওয়া স্পর্শ আদুল ঠোঁটে।
আমি হাসছি আজ  দুহাত তুলে আকাশে দিকে
আমাকে ভিজিয়ে দে ,হৃদয় ছুঁয়ে দে আজ বৃষ্টি দিন।
নরম আদর ,নরম শহরে আজ ভিজে পথ
আমি একলা প্রেম শহরের পাড়ে।
আর ওপাড়ে তুই একলা এক ঝড়ো হওয়া
ভিজে বৃষ্টিতে।

ভালোবাসা শব্দটা লেখা আকাশের গায়ে
জানলার বাইরে দেখ তুমুল বৃষ্টি রক্তাক্ত পৃথিবীর মাটি।
গড়িয়ে নামছে স্পর্শরা সব বৃষ্টি ধারা
আমার ঠোঁট ছুঁয়ে তোর ভিজে চুলে জলের বিন্দু।
আজ সকাল থেকে আকাশের রং লাল
তুমুল বৃষ্টি ,তুই ভিজবি বলে। 

স্বাধীনতা আজকাল

স্বাধীনতা আজকাল
.............. ঋষি
====================================================
আমি সুভাষ বলছি
প্লিস দয়া করবেন আমি সুভাষচন্দ্র বোস না।
নেহাত দিন আনি  দিন খাই একজন ধর্মতলার টিকিট ব্ল্যাকার
দমদমের ট্রেনলাইনের ঝুপড়ির  সুভাষ হালদার।
লোকে আমাকে সুভাষচন্দ্র বোস বলে ডাকে
কি দিনকাল বলুন তো।

 রাত্রে বাড়ি ফেরার পথে
চোখ চলে যায় ওনার দিকে ,সুভাষ বাবু একলা দাঁড়িয়ে থাকেন ক্লাবের সামনে।
আপনাদের বলছি মাঝে মাঝে লজ্জা হয় আমার
বাবা, মা নামটা এমন দিল।
ওনার সম্বন্ধে জানি না বিশেষ কিছু
শুধু এতটুকু শুনেছি ১৫ ই আগষ্টের বক্তৃতায় সুভাষচন্দ্র  বলেছিলেন
তোমরা আমায় রক্ত দেও আমরা তোমাদের স্বাধীনতা দেব।

কাল রাত্রে ভালো  ঘুম হয় নি বোধহয় মালটা চড়েছিল
বাড়ি ফেরা হয়নি পড়েছিলাম সারারাত মালের ঠেকে।
একটা স্বপ্ন দেখলাম
প্লিস আপনারা বলবেন না কাউকে আমি দাঁড়িয়ে স্ট্যাচুর মত ক্লাবের মাঠে।
এক হাত আকাশের দিকে তোলা
আমি বলছি তোমরা আমায় রক্ত দেও আমরা তোমাদের স্বাধীনতা দেব,
কিন্তু বিশ্বাস করুন  স্বাধীনতাটা  কি  সেটা যে অজানা।

লাথ খেয়ে ঘুম ভাঙ্গলো  কি রে শালা সুভাষচন্দ্র বোস
কিন্তু তখনো স্বাধীনতা মানে খুঁজছিল ট্রেনলাইনের ঝুপড়ির সুভাষ হালদার।
স্বাধীনতা মানে কি মাইকের চিত্কার
স্বাধীনতা মানে কি তোলাবাজি ,গাজোয়ারি, মুখে খারাপ ভাষা।
স্বাধীনতা  মানে কি ধর্ষণ ,নারী অত্যাচার ,নারী পাচার ,অশিক্ষা
প্লিস একটু বলে দেবেন কি মানে স্বাধীনতার আজকাল ।

ভালোবাসি

ভালোবাসি
........... ঋষি
=================================
ভালোবাসা মিথ্যে সাক্ষী হয়ে জীবিত থেকে যায়
দুচারটে কল্পনায় ছায়াগুলো আসে যায়।
অথচ ভালোবাসা মিথ্যে মোড়কে
মিথ্যে বলে যায়।

আমি যাকে ভালোবাসি,তুমি যাকে ভালোবাসো
সেই ভালোবাসাটুকু  আকাশের নীলে স্বপ্ন দেখে।
আনন্দেতে সাঁতার কাটে
কেউ জানে না ভালোবাসা বাঁচতে যে চাই,
ভালোবেসে জীবন কখনো অমর হয়ে যায়।

সে তো গদ্য কথা
সাজানো ব্যাথার উন্মুক্ত কবিতা।
সকলেই হাত বোলায়
অথচ ভালবাসা কেন জানি একলা থেকে যায়।

ভালবাসার মিথ্যে সাক্ষী হয়ে জীবিত থেকে যায়
দুচারটে ডানপিটে হাওয়া স্পর্শ করে যায়।
ভালোবাসা চুপি চুপি কানে কানে
ভালোবাসি বলে যায়। 

Tuesday, March 24, 2015

অজগর ভ্রষ্ট

অজগর ভ্রষ্ট
........... ঋষি
=======================================
রাতের প্রথম প্রহরে  অজগরটা জড়িয়ে ধরলো
দমবন্ধ ,খুলে যাচ্ছে শাড়ির টুকরো টুকরো লজ্জা অন্ধকারে।
বুঝি নি বুঝতে পারি নি
আমিও যে নারী হয়ে উঠেছি।
আমার তের ,চৌদ্দ বছরের মাংসের শরীর
আকৃষ্ট করছে অজগরের চোখ।
সদ্য ফোঁটা যৌবনের বিলাপে আমি আজ অজগর ভ্রষ্ট
সদ্য ফোঁটা ফুলটা আজ লালচে চোখে।

খুলে যাচ্ছে শরীরের দরজাগুলো
অপছন্দের প্রচেষ্টায় বিরক্ত অজগর মহাশয়।
প্রচন্ড শক্তিতে পিষে চলেছে আমার শরীরটাকে
ঢুকে যাচ্ছে  তলপেট দিয়ে যন্ত্রণার দাবীদার।
আমি লড়ছি সমস্ত শক্তি নিয়ে অজগরের সাথে
কে হারছে ,কে জিতছে সেটা প্রশ্ন নয়,
প্রশ্ন অজগর খুশি হলো কিনা।
শেষবার, শেষবার শক্তিশালী আস্ফালনে অজগরটা নেতিয়ে পরলো
আর আমি হলাম অজগর ভ্রষ্টা কুমারী নারী।

পুরো গল্পটা আমি বলি নি এখনো
অজগরের গুহায় বাস করে এমন অজস্র সদ্য ফোঁটা যৌবন।
আর এই যৌবনে হুল বসায় কেয়ারটেকার দাদারা
এটা যে হোমলেস জোন সমাজের ঠিকানায়।
আমার সাথে বাস করে পিতৃ ,মাতৃ হীন অজস্রকন্যা
এটা একটা সরকারী আবাসন।
সমাজের বোঝা কমানোর দায় এই আবাসনের উপরে
সমাজের চোখে এটা সেবার ভূমিকায় ,
অথচ এখানেই দলাই মোচড়ায় চলে শিশুদের সর্বস্ব  ।

তারপর গল্পটা নিয়মিত
কাউকে বলা যাবে ,কাউকে শোনানো যাবে না।
দিনান্তে ইচ্ছেমত অজগর পিষে চলবে সদ্য ফোঁটা কুঁড়িকে
আওয়াজ করা চলবে না ,না হলে গলা টিপে ধরবে মহান অজগর।
মরে গেলে ক্ষতি নেই
হোমের খাতার হিসেবে কমে যাবে একটা শরীর।
মরে গেলে ক্ষতি কি
কেউ জানবে না বিল্ডিংএর মাটিতে মিশে যাবে শরীরটা।

 

মিশরীয় প্রচেষ্টা

মিশরীয় প্রচেষ্টা
.............. ঋষি
==========================================
নিজেকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে ফেলেছি ঘুমের ঘোরে
নিজেকে তন্ন তন্ন করে খুঁড়ে ফেলেছি ঘুমের ঘোরে।
অজস্র বসন্তের হাতছানিতে
পড়ে ফেলেছি সহস্র প্রাচীন হিরগ্লিফিক লিপি।
কিছুই পাই নি
পাওয়ার কিছু ছিল না ,যতটুকু জীবাশ্ম।

মিশরীয় সভ্যতা থেকে কিছুই শেখার  নেই
সে  কথা  বলি  নি কখনো।
সামান্য প্যাপিরাসের লিপিতে লেখা সাম্রাজ্যের ওঠা পরা
ভাঙ্গা গড়া জীবন পিরামিডের ভিতর।
শত সহস্র যুগের বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা
সবটুকু ফাঁকি।
কিছুই বেঁচে থাকে না
কিছু প্রাচীন চামড়ে মোরা শরীরে।
হৃদপিন্ডের ধুকপুক থাকে না
শুধু বেঁচে ফেরা জীবিতের প্রচেষ্টা।

নিজেকে টুকরো টুকরো করে খুঁজে দেখেছি শ্মশানের ছাইয়ে
নিজেকে টুকরো টুকরো করে খুঁড়ে ফেলেছি মাংস আর রক্তের মিশ্রনে।
অজস্র জীবিতের হাতছানি
পুড়িয়ে ফেলেছি নিজেকে প্রাচীন মিশরীয় হৃদপিন্ডে।
আমার সারা শরীরে ছড়ানো হলুদ বালি খা খা
আর অন্তরের তৃষ্ণা নীলনদের জল এক ফোঁটা ।


অন্য পৃথিবী

অন্য পৃথিবী 
.............. ঋষি
===================================
আজকের আর কালকের তফাৎ
মাঝখানে শুয়ে আছে সহস্র প্রাচীন ইঙ্গিত ।  .
আমি রানী  ,আমাকে বলবে তোমরা আমি জানি 
আমি জানি আমাকে কেউ ভাববে না ,আমি রানী। 
অথচ আমিও আছি মানুষের মাঝে 
আলাদা জীবিত নটি বিনোদিনী  হয়ে ,
জানোতো রাজু আমার অন্য নাম। 
সকালের বাসস্ট্যান্ডে কমল হাত পাতে 
জানো তো ওকে আমরা কমলিনী বলি। 
বিকেলের শেষ ষ্টেশনে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি
লোকে আমাদের ছক্কা বলে। 
প্রতি জন্মের পরে দরজার গোড়ায় আমরা যাই 
শুভেচ্ছা জানাই তোমরা জন্মেছো আলাদা হয়ে ,
অথচ তোমরা আমাদের হিজরে বোলো। 
দুঃখ কিছু নেই 
আসলে  দুঃখ বলে কিছু থাকতে নেই আমাদের। 
জন্মের পরে আমাদের তুলে নিয়ে যায় হিজরে মাসি 
যেখানে আমাদের দেওয়া  হয় অন্য পৃথিবী। 
যেখানে আমাদের বোঝানো হয় তোমরা আলাদা 
তোমাদের দেখে মানুষ মজা করবে ,
তোমাদের দেখে মানুষ হাততালি দেবে। 
আমি রানী ,আমি  যেখানেই যাব সেখানেই টিটকিরি 
কানাকানি ,মুখ বেঁকিয়ে হাসি 
সব গা সওয়া,সব জানি। 
তবু প্রশ্ন জাগে বুকের মাঝে ,একটা ইচ্ছা জাগে বাঁচার
আমার  ইচ্ছা হয় সমান  অধিকারে থাকার। 
আমার বাঁচার অধিকার আছে তোমাদের শহরে,গ্রামে 
তোমাদের দেশে ,তোমাদের বিশ্বে আমিও যখন বেঁচে আছি। 

Sunday, March 22, 2015

চির সখা হে

চির সখা হে
.............. ঋষি
=====================================
সকাল থেকে রৌদ্রমাখা পথে সময়ের গোলযোগ
পথের সাথে পথ মিশে যায়।
অথচ পথ হেঁটে যায় বহুদূরে সময়ের সাথে
একি সময়ের দোষ
নাকি পথের যে একলা থাকে।

আমি পথ হতে চাই না
আমি যে পথিক তোর একলা পথে।
খালি পায়ে ,একতারা সম্বল পৃথিবীর মাটিতে
আমি যে ফকির হৃদয়ের কাঠগড়ায়।
এই পাশে জজসাহেব  বলে মৃত্যু উচিত শাস্তি
আমি হাসি।
মৃত্যু সে শ্মশানের পথ
চির সখা হে।

সকাল থেকে রৌদ্রমাখা পথে সময়ের গোলযোগ
পথে ভীষণ জ্যাম ,চাকা জ্যাম।
আর আমার কলমের নিবে রক্তের ধারাপাত
পথ এক পথ ,পথ দু গুনে পথ।
জীবন এক তৃষ্ণার পথ। 

আমার মুক্তি

আমার মুক্তি
................. ঋষি
=========================================
অসুখের খোঁজে তোর জানলার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম
শব্দ পাই নি ,শব্দ হয় নি।
নিস্বার্থ কষ্টের মত ঝরে পড়েছে অবুঝ ধারা
কেন যেন মুক্তি চেয়েছিলাম জীবন থেকে।
উদাত্ত কন্ঠে সেই রবিঠাকুরের গান
আমার মুক্তি আলোয় আলোয়। ওই আকাশে.........

শব্দরা সব কফিনে মোড়া দিনরাত্রি
তুই শুয়ে থাকিস।
পাশে খালি সিসিতে পরে থাকে জন্ম ,মৃত্যুগুলো
তুই মৃত্যু চাস অথচ
জন্মের দরজায় তুই  মুক্তি খুঁজিস ,
নেড়ে দেখিস ওষুধের সিসিগুলো।
জন্ম ,মৃত্যু একসাথে পবিত্র জানলায় খোলা আকাশে
নিদির্ষ্ট চেতনার সাথে হুমড়ি খেয়ে পরিস
ভুলে যাস সময় তোর নিজের বাইরে।

অসুখের  খোঁজে তোর জানলার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম
শব্দগুলো  গলার কাছে আটকে থাকে।
আমার কবিতার কলমে তোকে লিখবো বলে
কষ্টদের নোনা শব্দে বৃষ্টি আসে।
সেই বৃষ্টির জলে আমার গাইতে ইচ্ছে করে রিমেকের গান
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি।  কেমনে আসে  ...............

মিতালি বৌদি বলছে


আমার এই লেখা নিতান্ত আমার ভাবনার প্রতিফলন। কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত করা এর উদ্দেশ্য নয়। 

মিতালি বৌদি বলছে 
................... ঋষি
=================================================
পাড়ার চানের ঘাটে ভেসে উঠলো 
মিতালি বৌদির ঘুমন্ত,থ্যেতলানো নগ্ন রক্তাক্ত বডিটা। 
মিতালি বৌদিকে চেনো তো তোমরা সকলে 
আরে সেই গলির মহিলাটা যার বাজখাই গলা,
যার বুকে অর্ধের ঝুলন্ত চাঁদ  জ্বলতে থাকে মাংস হয়ে। 
তোমরা দেখেছো তাকে হাজারোবার শরীরের কামে
তোমরা খুঁজেছো যাকে হাজারোবার শরীরের নামে,
আমি তার কথা বলছি। 

চারিদিকে পুলিশ,মিডিয়া বৌদির পাড়ায়
লাশ তোলা হয়েছে। 
ইচ্ছে মত পুলিশের গাড়িতে  শরীরের নাড়াচাড়া
খবর বলছে। 
কাল রাতে ঢুকেছিল কোনো কুখ্যাত আততায়ীক খদ্দের মিতালির ঘরে 
পুলিশের ফাইল ,মিডিয়ার নোট তৈরী। 
কালে রাতে নষ্ট পাড়ায় খুন হয়েছে মিতালি নামে একে যুবতী 
যার বয়স ৩২ -৩৩ হবে। 

চেনা কনভয়ে পাড়ার দাদার গাড়ি এসে থামলো
সরুন সরুন দেখি। 
কি দেখবেন দাদা মিতালি বৌদির মাংস
কি শুনবেন  দাদা আরেকটা  নারী  অত্যাচারের  খবর। 
কি বলবেন দাদা এই অত্যাচারের সুবিচার হবে ,আমরা তো আছি 
খুনিকে খুঁজবেন দাদা ,খুঁজবেন সমাজকে। 
জীবিত মিতা বৌদিকে খুজবেন, না কি  খুঁড়বেন শরীরের মাংস
খিদের নামে ,সমাজের নামে ,সভ্যতার নামে। 

আজ সাতদিন হলো মিতালি বৌদি ঘুমিয়ে পড়েছে
সামনে ভোট ,সামনে সভ্যতার রঙিন পথ ধরে ,
এগিয়ে এলো  চেনা কনভয়। 
চেনা পরিচিত  সমাজের  মুখটা  বলে উঠলো 
একই কথা ,আমরা তো আছি। 
কেউ কিছু বললো না ,কেউ কিছু করলো না 
শুধু বৌদির ফাঁক করা থ্যেতলানো নগ্ন শরীরটা ঝলসে উঠলো 
বলে উঠলো ,ওরে শুয়োরের   .......রা   আয়। 


Saturday, March 21, 2015

এক পলকে

এক পলকে
............ ঋষি
=======================================
নিজেকে আটকাতে, শেষ পলকে লিখে দিলাম
একটু দেখা ,কয়েকশো মুহুর্তের রিংটোনে।
পুরনো আমাদের ক্যান্টিন সং
কার কথা যে বলি ,যুগটা যে কলি।
কোন পথে যে চলি ,যুগটা যে কলি , আমার কলম ঘেঁষে ওঠা
তোকে চিনতে পারে জন্মায় নি পৃথিবীতে
লালচে কালো শাড়িতে অদ্ভূত এক মহিমা। তোকে ছুঁতে পারে এমন মৃত্যু নেই পৃথিবীতে।
এঁকে বেঁকে নেমে যাওয়া স্বপ্ন কলমে মিষ্টি হাসি
অথচ আমি চেনেছি আমি ছুঁয়েছি কল্পনায় জড়িয়ে ধরে চুমু তোর তৃষ্ণা ঠোঁটে।
শেষ পলকে গেয়ে উঠলাম একটা পপুলার সং ,
আদুরে আগুনে মৃত্যু সামিল। নিজেকে আটকাতে ইচ্ছার সহবাসে
আরেকবার মৃত্যু সামিল ঘনঘটা বৃষ্টি আকাশে।
এক পলকে একটু দেখা আরো একটু বেশি হলে ক্ষতি কি।
প্রশ্ন উষ্ণ ঠোঁটে আঁকা আমার চুমু

বিশ্বাস করো

বিশ্বাস করো
....................  ঋষি
=====================================================
আমাকে তুমি যা খুশি তাই ভাবতে পারো
কিন্তু বিশ্বাস করো,
আমি তোমাকেই ভালোবাসি মন।
যেদিন নিজেকে জড়িয়ে ধরে আমি হেঁটে ছিলাম মৃত্যুর কাছে
সোজা বারোতলার ছাদের রেলিঙে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম তোমার মুখ।
ধা করে আকাশ থেকে নেমে এসেছিল উড়োজাহাজ।
সোজা মাথার ভিতর ঘুরপাক
আবার প্রেমে পরলাম  তোমার মন।

নতুন করে ভাবতে ভাবতে
দুম করে মনে পড়ল জন্মান্তরের থিওরিটা।
কি হবে পরের জন্মে
আচ্ছা পরের জন্মে না হয় আমি কুকুর হয়ে জন্মাব,
কিংবা হব তোমার প্রিয় শাড়ি।
তোমার আঁচল জড়িয়ে থাকলে নিশ্চয় বিশ্বাস করবে আমায়।
যদি তোমায় ভালোবেসে থাকি তবে তুমি মানুষ হবে
আমি না হয় তোমার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ,
এ জন্মে আমার কুকুর হওয়া হলো না।

আমাকে তুমি যা খুশি তাই ভাবতে পারো
কিন্তু বিশ্বাস করো,
আমি তোমাকেই ভালোবাসি মন।
যেদিন প্রথম দেখায় জড়িয়ে ধরেছিলাম তোমায় প্রেম বলে
সেদিনও সোজা বারোতলার রেলিঙে দাঁড়িয়েছি।
সেদিন বুঝতে পারি নি আমাকেও নামতে হবে ছাদের থেকে নিচে
সেদিন বুঝি নি আমাকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে সোজা মৃত্যুর বুকে
পরের জন্মে আমি কুকুর হব বলে। 

কিসের অভাব ছিল সুমন

কিসের অভাব ছিল সুমন
.............. ঋষি
========================================
ভবঘুরে পৃথিবীর পথে সুমন
তুই আমার একলা চলা পথ।
আমি কোনদিন চোখ খুলে দেখিনি সবুজ পৃথিবী
যতটুকু পৃথিবী দেখা
তা শুধু তোর চোখ দিয়ে।

নিত্য অনিত্যের সাথে আজ আট বছর তোর সাথে
সুখী গৃহিনী ,সুখী গৃহকোণ ,সুখী মাতা ,সুখী বিছানা।
অভাব তো কিছুই ছিল না সুমন
তবে আজকাল অভাবটা কুঁড়ে কুঁড়ে খায়।
জানিস কিসের অভাব
তোর সিগারেটের পাসিভ স্মোকার আমি
সেই গন্ধটাও আমার ভালো লাগে।
কিন্তু ভালো লাগে না তোর নিত্য দেরী করে ফেরা
ভালো লাগে না তোর শার্টে লেগে থাকা লিপস্টিকের রংটা
কিসের অভাব ছিল সুমন।

আজকাল তুই মিথ্যে কথা বলিস আমায়
বাড়ির বাইরে তোকে ফোন করলে তুই বলিস অফিসের কাজ।
আচ্ছা বল  তোর অফিস কি রাত দশটা অবধি খোলা থাকে
আচ্ছা বল তোর অফিস কি সিটি সেন্টারে খোলে মাঝে মাঝে।
আমার বন্ধুরা কি তবে মিথ্যে বলে
কি সুমন চুপ করে আছিস কেন।
তুই তো বিয়ের আগে বলতিস আমি তোর সকালের সূর্য ,রাতের চাঁদ
তুই বিয়ের পরে বলতিস আমায় ছাড়া তোর জীবন অন্ধকার।
এখন কি বলবি সুমন
আমি কে তোর,আমি কি তোর।

আমি আমার সমস্ত স্বত্বায় ,সমস্ত অধিকারে
শুধু তোকে ভালোবেসেছি বারংবার।
আমি চোখ খুলে দেখতে চাই নি কোনদিন অন্য পৃথিবী
কিন্তু তুই
কি উত্তর আছে তোর কাছে সুমন।

Friday, March 20, 2015

আবারও সূর্য

আবারও সূর্য
........... ঋষি
=================================
জানি বদলাবে
সময় ,ঋতু ,জীবন আর দৈনন্দিন।
বাসি ফুটপাথ শেষে আবারও সূর্য উঠবে
নতুন সকাল
অথচ জীবিত বাহানায় বেঁচে থাকাটা বদলাবে কি।

না হে জীবন
চলন্ত হেলেদুলে ট্রাম সকালের আনন্দে।
ট্রামে চেপে বস
জীবন এগোচ্ছে  ,অথচ বুকের উপর।
উঠে আসা ট্রাম ,দমবন্ধ
এক চিত্কার আকাশের দিকে তাকিয়ে।
ট্রাম চলছে ,জীবন যেন
সাদা কাগজে উঠে আসে মৃত্যু ফোঁটায়,ফোঁটায়
কবিতারা এগোনো জীবনের দূত।

জানি বদলাবে
সময়ের আগুনে পুড়তে থাকা চামড়ায় ফোস্কা।
আর চামড়ার ভাঁজে কোঁচকানো আগামী
নতুন সকাল
অথচ জীবিত বাহানায় নাটকের টিকিট হাউসফুল। 

আমি অনোয়ারা বলছি

আমি অনোয়ারা বলছি
............ ঋষি
===========================================
এই ছেলেটা বেল বেলেটা আমাদের পাড়ায় যাবি
যাবো বলে পা বাড়িয়েছিল ছেলেটা।
আমাকে চিনতে পারছো আমি আনোয়ারা
আমি চিনি ছেলেটাকে।
দৈনন্দিন হৃদয়ের দরজায় দাঁড়িয়ে সাইকেলের ক্রিং ক্রিং
ঘুম ভেঙ্গে যায় অবচেতনে
হৃদয় কথা বলে ,আসলে ভালোবাসে ছেলেটাকে।

ঘুম ভেঙ্গে যায়
চমকে উঠে বসে মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণে দাঁড়ানো সমাজটা।
কি হবে ছেলেটার,সে যে হিন্দু
কি হবে  ছেলেটার ,সে  যে আলাদা জাতের।
বুকের মন্দির ,মসজিদ ,গীর্জার ফটকে বেজে ওঠে ঘন্টা
আচ্ছা ঈশ্বর ভালোবাসার জাত কি।
আচ্ছা ঈশ্বর ভালোবাসার ধর্ম কি
আচ্ছা ঈশ্বর ভালোবাসার যদি জন্ম হয় তবে সমাপ্তি কোথায়।
আমাকে চেনো আমি আনোয়ারা বলছি
উত্তর দেন না ঈশ্বর।

ঘুম ভেঙ্গে যায়
হৃদয়ের দরজায় দাঁড়ানো সাইকেলের সামনের রডে ফতেমা।
সাইকেল চলতে থাকে ,সময় কাটতে থাকে
একসময় পাশাপাশি ছেলেটা আর ফতেমা।
অন্যপাশে সমাজ
গা  ঝাড়া দিয়ে খেপাটে কুত্তা ঝাঁপিয়ে পরে ছেলেটার উপর।
রক্ত পড়তে থাকে ভালোবাসার রক্ত
আর পাপী মেয়েটাকে তুলে নিয়ে যায় সমাজের ভগবান।
তারপর লুঠ , ভালোবাসার মাংস
উত্তর দেন ঈশ্বর।

এই ছেলেটা বেল বেলেটা আমাদের পাড়ায় যাবি
পা বাড়িয়েছিল ছেলেটা।
আমি আনোয়ারা ,ধর্মের আড়ালে লুকিয়ে থাকি নি
ভালোবেসেছি সেই ছেলেটাকে।
কিন্তু আমার কি হলো ,কিন্তু ছেলেটার কি হলো
এই যে ঈশ্বর ,এই যে মহান সমাজ,এই যে দেশ ,সময় ,হৃদয়
আপনাদের উত্তর কই। 

তুই যা তো

তুই যা তো
............... ঋষি
=================================

তুই যা তো
চলে তো যেতে চাই বারংবার আরো দূরে।
পায়ে চটি গলায়
প্রিয় সিগারেটের ঠোঁটে শেষ চুমু
কিন্তু যাই কোথায়।

এক পা যায় ,দু পা যায়
আবার ফিরে আসি বুকের মাঝে বাঁচার লোভ।
হৃদয়ের  হাইওয়ে  ধরে অসংখ্য যাওয়া আসা
বুকের উপর।
অসংখ্য টানাপোড়েন জন্ম ,মৃত্যু একসাথে
মৃত্যুকে কাছে টানি ,নগ্ন করি।
অথচ কেন জানি আমি জন্ম দেখতে পাই
নিজে জন্মায় আবার বাঁচার লোভে ,
নাকে লেগে থাকে অগরুর আর চন্দনের গন্ধ।

তুই যা তো
চলে তো যেতে চাই খুব দূরে গভীরে।
আরো হৃদয়ের গভীরে
চেনা আকাশে শেষ ঠিকানায় চিঠি
জন্মানো রীতি। 

অচেনা তোমাকে

অচেনা তোমাকে
.................... ঋষি
========================================
নিজেকে টেনে বের করতে পারি নি বহুদিন
অনন্ত মিশিয়ে আস্কারা দেওয়া জীবনের পরিচর্যায়।
শুধু সাজিয়ে গেছি জীবন ,
চেনা বারান্দায়।
চেনা রৌদ্রে পুড়ে গেছে বৃষ্টি ভেজা রাত
আমার কবিতা পাতায় পাতায়।

তোর সেই হলুদ শাড়িটা আমার ভীষণ প্রিয়
ভীষণ প্রিয় তোর খোলা চুলের গন্ধ।
ঘুম ভেঙ্গে দেখিনি বহুদিন তোর মুখ
তোর ঠোঁটে অনন্ত তৃষ্ণা সামুদ্রিক ঝড়ো হাওয়া।
নোনতা স্বাদ
নোনতা বৃষ্টি চোখের পাতায়।
বিশ্বাস কর বহুদিন কাঁদি নি জড়িয়ে তোকে
শুধু হেসেছি বারংবার চেনা আয়নায়।

নিজেকে টেনে বের করতে পারিনি বহুদিন
অনন্ত তৃষ্ণা বুকে রোমন্হন অর্বাচীন পিছনের পাতা।
শুধু লিখে গেছি জীবন
চেনা বুকের ক্ষতে।
চেনা আবদারে বাড়তে থাকা উচ্ছল ঢেউ বুকের উপর
নোনতা স্বাদ তোর তৃষ্ণা। 

Thursday, March 19, 2015

প্রিয় নীল আকাশ


প্রিয় নীল আকাশ 
............. ঋষি
============================================
তোর জানলার বাইরে আকাশ দেখা যায় 
আমি জানি আকাশের গভীরতা,
কিন্তু কখনই ভাবি নি সত্যি আকাশকে বন্দী করা যায়। 
সেদিনও ভাবি নি 
যেদিন তোর শরীরের থার্মমিটারে লেগে ছিল জন্মের তৃষ্ণা। 
আমি ছুঁতে চাই নি বিশ্বাস কর 
তবে ছুঁয়েছি তোকে গভীর আকাশে। 

বারান্দায় রাখা ক্যাকটাসে কিছুটা দুঃখ মুড়ে থাকে 
বাজতে থাকে সভ্যতার আলোয় নিয়মের স্যাক্সোফোন। 
আমরা অরিগামি খেলি শিশুদের হাতে 
ছেঁড়া খাতায় জমানো কাগজের সম্পর্কের আড়ালে। 
আমরা বাসা বুনি নীল আকাশে 
আর কাগজের উড়োজাহাজে উড়তে থাকায়। 
স্বপ্নরা নেমে আসে চোখের ফাঁকে 
জমা আয়নায় বিবেকের মুখ। 

তোর জানলা দিয়ে আকাশ দেখা যায় 
আকাশ দেখতে পাই আমি নিজের হৃদয়ের মাঝে,
কিন্তু কখনো ভাবি নি সত্যি আকাশকে বন্দী করা যায়। 
সেদিনও ভাবি নি 
যেদিন তোর চেনা অভ্যাসে হেঁটে গেছিলাম নীলেদের সাথে। 
আমার প্রিয় নীল আকাশে 
আজকাল লুকোনো আমার প্রেমিকার মুখ। 


হৃদয় আলাপনে

হৃদয় আলাপনে
................. ঋষি
=======================================
তোর খোলা বুক থেকে খুঁজে পাওয়া
মাংসের গন্ধ।
আমি মাংস দেখিনি
শুধু দেখেছি উন্নত পর্বতের মাঝে শান্তির ছায়া।
মুখ ঘষেছি  বারংবার শান্তি খুঁজেছি
বেহায়া রৌদ্রের আড়ালে
তোকে আরো গভীরে জড়িয়ে ধরেছি।

বেশ তো ছিলাম এতদিন
নিজস্ব গর্বে আদুরে আনন্দে অসংখ্য আলাপনে।
আজকাল আমার বাঁচতে ইচ্ছে হয়
বুকের বোতাম খোলা জানলায় অদ্ভূত আশা।
এই বেঁচে থাকা আকাশের পাখি
নীলের মাঝে।
আমার আজকাল নীলকে ছুঁতে ইচ্ছে হয়
যেমন ছুঁয়ে ছিল প্রেম একলা নির্জনে
গভীর তোর হৃদয় মাঝে।

তোর ঠোঁটের গভীরতায় আমার ঠোঁট ছুঁয়ে তৃষ্ণা
যেন গভীর সাপ তোর নাড়ী বেয়ে।
জড়াতে থাকে ,ক্রমাগত পেঁচিয়ে ধরে আরো গভীরে
মিশিয়ে নেয় বুকের মাঝে।
বাঁচার ইচ্ছা
প্লিস শোন না একবার ভালোবেসে ,
আমাকে হৃদয় দিতে পারিস। 

Wednesday, March 18, 2015

সময়ের ভগবান

সময়ের ভগবান
.............. ঋষি
========================================
কদর্য সভ্যতার আলোকে
নারী তুই উন্মুক্ত সোহাগী নদী।
কেউ বোঝে নি ,বুঝতে চাই নি ওই অভিমানী চোখ
শুধু সময় তিরতিরে তোর গভীর নদীতে চান করেছে
সময়ের ভগবান।

ভগবান তুমি যুগে যুগে পাঠিয়েছে দূত সভ্যতার তরে
অথচ তুমি মিথ্যে ভেকে নিজেকে নামিয়েছে এত নিচে।
নিজের করে সৃষ্টি করেছ আদম ,ইভকে
অথচ ইভকে দিলে সহ্যক্ষমতা,
আর আদমকে দিলে অহংকার বেহায়া রঙে।
তুমি নারীকে করেছো উন্মুক্ত ইচ্ছে মত সৃষ্টির নদীতে ,
অথচ পুরুষ শক্তিমান ,বীর্যমান এই মহান বিশ্বে।

কেমনে সম্ভব
কেমন সম্ভব ভগবান।
তুমি যদি আড়াল না করতে পারো ,
উন্মুক্ত করার অধিকার তোমায় দিল কে।
পুরুষ যদি  ভালো নাই রাখতে পারে
তবে এমন করে নারীকে  উরুর মাঝের রাখার অধিকার দিল কে।
কেন এমনতর সভ্য নোলকে সাজানো সভ্যতায়
নারীর ধর্ষণ ইচ্ছা অনিচ্ছায় পৌরুষের পরশে।

কদর্য সভ্যতার আলোকে
ভগবান তুমি পরাজিত রেশ নারী হৃদয়ে।
তুমি বোঝো নি ,আসলে বুঝতে চাও নি সৃষ্টির আনন্দে
শুধু  সৃষ্টি করেছ বিশাল বিশ্ব
অথচ নারীর করে নারীকে চেনো নি। 

যুগান্তরের কবিতা

যুগান্তরের কবিতা
.............. ঋষি
===================================
প্রতিদিন ভাবি কেন লিখবো ,কেন লিখছি
নিজে হাসি মনে মনে।
আজ থেকে পাঁচশো  বছর পর কে পড়বে এই সব
কে রাখবে যত্নে সাজিয়ে কবিতার  খেরোপাতা
তখনি মনে পরে তোমায়।

আজ থেকে পাঁচশো বছর পরে  আমার মত
তোমাকে কেউ পাগলের মত ভালোবাসবে।
তোমার ভিজে লিপস্টিক শুষে খুঁজবে তৃষ্ণা বেঁচে থাকায়
তোমার খোলা বুকে নাক ঘষবে।
হেঁটে যাবে ফুটপাথ ধরে আগামী কয়েকশো যুগ
শুধু তোমায় ভালবাসবে বলে।

শুধু তোমায় ভালবাসবে বলে
করবে তোমাকে নগ্ন নিজের মত নিজের কবিতায়।
সামনে বসিয়ে ছবি আঁকবে
তোমাকে  আদর করবে জড়িয়ে ধরে আরো গভীরে।
তোমাকে বাঁচিয়ে রাখবে বলে
আমার কবিতার কলমে তোমার নাম।

প্রতিদিন ভাবি কেন লিখবো ,কেন লিখছি
নিজেকে কাঁদায় বারংবার।
আজ থেকে পাঁচশো  বছর পর কি হবে এই কবিতার
কে ভালোবাসবো কবিতাকে আমার মত
তখনি মনে পরে তোমায়। 

কিন্তু পুরুষ

কিন্তু পুরুষ
................. ঋষি
=============================================
তুমি আমাকে ভালোবাসো আমি জানি
কিন্তু কতটা বাসো।
কেমন করে বাসো জীবনের প্রতিদিনে
আমাকে ভালোবেসেছে বহু পুরুষ বিভিন্ন রঙে।
আজ থেকে নয় বহুযুগ ধরে
বিভিন্ন সময়ে ,বিভিন্ন স্থানে আমাকে ভালোবেসে এসেছে
কয়েকশো যুগ প্রাচীন ধ্যানী পুরুষেরা ।

প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ থেকে আজকের কবিতায়
কখনো দ্রোপদী ,কখনো সীতা,কখনো দেবী কখনো বেশ্যা।
আমাকে ভালোবেসেছে বহু পুরুষ বিভিন্ন নামে
তুমি কি নামে আমায় ভালোবাসো।

আমাকে ভালোবেসে সকলে শরীরে হাত রেখেছে
নিজের কাকু ,বন্ধু কত কেউ।
কতজন স্বপ্নে চেয়েছে আমায় বিছানার চাদরে
সকলে প্রেমিক হতে চেয়েছে।
আমার সারা শরীরে কালসিটে ,ভালোবাসার দাগ
আমার সারা শরীরে চাবকানো চাবুকের দাগ।
বারংবার রগলালে ,চান করলে ওঠে না
তুমি বল তুমি কি ভাবে আমাকে ভালোবাসো।

কেউ ভালোবেসে আমার শরীরে  বুনেছে অন্য শরীর
নিয়মিত বিছানার চাদর বদলেছে।
বদলেছে আমার রান্নাঘরে রাখা আয়নায় মুখ
আসলে পুড়েছে যুগে যুগে আমার অস্তিত্ব তোমাকে ভালোবেসে।

তুমি আমাকে ভালোবাসো আমি জানি
কিন্তু প্রশ্ন তোমাকে পুরুষ ,তুমি কি সত্যি ভালোবাসতে পারো।
তুমি সারা শরীরে হাত বোলাতে পারো
নগ্ন করতে পারো আমায়
তুমি আমাকে ছিঁড়তে পারো করতে পারো তোমার বীর্য প্রদান।
কিন্তু পুরুষ সত্যি করে বলো
কখনো ,কোনো মুহুর্তে তুমি হৃদয় ছুঁয়ে ছিলে কোনো দিন।

অদ্ভূত বিশ্বাস

অদ্ভূত বিশ্বাস
............ঋষি
======================================
মিথ্যুক বললি কেন 
কি বলবো তোকে ,কি বলা যায় 
জীবিত আকাঙ্খার আড়ালে দাঁড়িয়ে তোর নরকবাস
অদ্ভূত বিশ্বাস 
প্রেম নাকি মৃত শরীর পরে থাকে চেতনার পরে  

নিজেকে আয়নায় দেখেছিস কখনো 
একমুঠো আলো ছিটিয়েছিস চেতনার আবির রঙে
রক্তের হলি খেলেছিস দৈনন্দিন বেঁচে থাকায়
চুঁয়ে নামা ,ছুঁয়ে নামা রক্তবিন্দুর আড়ালে 
নিজেকে লুকিয়েছিস
একবার পাগলের মত হেসে দেখেছিস কখনো 
এক পশলা বৃষ্টি বুকে নিয়ে বৃষ্টি দেখেছিস 
কিন্তু  বৃষ্টির জলে ভিজেছিস  কখনো 
একবার একবার সত্যি ভালোবেসেছিস কখনো 


কেতাবি রঙে, স্পন্দনের অছিলায় 
তুই ছুঁয়ে যেতে পারিস দৈনন্দিন  বেঁচে থাকায়
ফুটপাথ ধরে রেলিঙে হাত রক্তাক্ত ক্যাকটাসের নেশায় 
তোর রক্তে চেতনার বাস 
তবে তুই মিথ্যুক নোস বল। 

এই যে সুমন

এই যে সুমন
........... ঋষি
=====================================
এই যে সুমন তুমি জ্বলছো
পুড়িয়ে ফেলছো  সিগারেটের পাহাড় অনন্ত সখ্যতায়।
এটা কি প্রেম নাকি
জীবিত থাকার মানে হারিয়ে গিয়েও ফিরে আসা
একথা ভুলছো কি করে তুমি
কি করে নিজেকে পোড়াচ্ছ নিজের অবচেতনে।

রুপালী রৌদ্র মেখে আমি গিয়ে দাঁড়াই বাসস্ট্যান্ডে
তুমি ফোর্থ গিয়ারে স্টার্ট আড় চোখে দেখো আমায়।
কিন্তু কোনদিন ,আজ অবধি সিগারেট ফেলে
এসে দাঁড়িয়েছো আমার কাছে।
আমাকে বলেছো তোমার না বলা কথাগুলো
আমাকে বলেছো তোমার হৃদয়ের রাক্ষস পুরীর কথা।
সোনার কাঠি ,রুপোর কাঠি ,রাজকন্যা
সব মিথ্যা নয়
একটু সাহস দরকার তোমার।

এই যে সুমন তুমি পুড়ছো
বিনা কারণে পোঁছে যাচ্ছ সাত সমুদ্র পার।
এটা কি প্রেম নাকি
জীবিত থাকার বাহানায় বারংবার  রক্ত ক্ষরণ হৃদয়।
একবার রাস্তায় নেমে সামনে এসে দাঁড়াও
দেখো পৃথিবী হাসছে আমার মুখে।

নদীর জীবন

নদীর জীবন
............... ঋষি
=======================================
মানুষের ভাবনারা যদি মিলে যায় বেখেয়ালে
তবে নদীর গতিটা  স্থির থাকে।
তবে হয় না অকাল প্লাবন মানুষের শিরায় শিরায়
কোনো অবিচল শুকিয়ে যাওয়া নদী।
শুকনো থেকে যায় ,শুধু দাগ ছাড়া
জীবন শুকিয়ে যায়।

কাব্য কথা নয়
জীবন এমনি হয় তিরতিরে নদী।
বয়ে যায় ,বয়ে যায় নিজের ছন্দে চেনা আনন্দে
অবিরত বুকের ভিতর স্রোতের আনাগোনা।
ছুঁয়ে ভিজিয়ে যায় মাটি
ভিজিয়ে যাওয়া সময়ের অলিন্দে অসংখ্য আলাপন।
বুকের গোপনে ছাই জমা হয় ,ভেসে যায়
অসময়ে চলা পথে নদী  সমুদ্রে হারায়।

মানুষের ভাবনাদের নেই ঘর ,নেই ভাবনা
বুকের আলাপনে  আবহ সঙ্গীত।
নিজেদের চেনা গান ভীষণ ছন্দে চেনার আনন্দে
এগিয়ে যাওয়া নদী বাঁচার নামান্তর।
ঋতুভেদে  হাজারো সভ্যতা সাক্ষী মানুষের জীবন
সময়ের রুপোলী মাটিতে নদীর জীবন। 

Tuesday, March 17, 2015

আবারও চিত্কার

আবারও চিত্কার
................. ঋষি
======================================
সে যে যন্ত্রণা ছিল আমার
এই কবিতায় কোনো প্রেম নেই।
শুধু বেঁচে থাকার অপরাহ্নে ঝড়ো হাওয়া
কয়েকশো গিগাহার্জের পৃথিবী থেকে চিত্কার।
তুই  শুনতে পাচ্ছিস
প্রেম অবলীলায় ধুলো মাখা আমার কবিতা।

বোতাম খোলা বুকের জঙ্গলে অসংখ্য শরীরের
মিশে যাওয়া  তোর বুকের গন্ধ।
ভীষণ দামী আতরের শেষ টুকু আমার হৃদয়ের
অন্তিম অভিযান।
তুই শুনতে  পাচ্ছিস
না চলা নাটকের শেষ সিনে প্রেমের  মৃত্যু।
ফাঁকা গ্যালারী ,ফাঁকা পথঘাট
শুধু ডিরেক্টর বলছে নাটক শেষ দাদা, শেষ দিন
আর হবে না পুনুরাবৃত্তি।

সে যে যন্ত্রণা ছিল আমার
এই কবিতার জন্ম আছে অথচ মৃত্যু নেই।
শুধু বেঁচে থাকা প্রেম ধুকছে বুকের মাঝে
অসংখ্য পথের ঘুলঘুলি মিলেমিশে আবারও চিত্কার।
তুই শুনতে পাচ্ছিস
শান্তি নেই এই যন্ত্রণার। 

সেই মেয়েটা

সেই মেয়েটা
.............. ঋষি
==============================================
সেই মেয়েটা পুরুষ খুঁজছিল পৌরুষের মাঝে
সেই মেয়েটা জীবিত তো ছিল
তবে জীবন খুঁজছিল জীবিতের মাঝে।
আমার কবিতার কলমে বারংবার পরাজিত ক্রীতদাস নির্বিকার
আমার কবিতার চয়নে কলঙ্কিত মেয়েটা অবচেতনে।
আমি চাইনি কখনো সে দুঃখ পাক
কিন্তু দুঃখরা  যে কবিতার সাথী।

আমার কি হয়েছে
প্রশ্ন করছে বারংবার সারা বেলা জীবিত এই যৌবনে।
আমি বলি নি কখনো মেয়েটাকে
আমি জীবিত ,আমি জীবিত এই জীবনের দর্পনে।
বাউলের মত
খালি পায়ে পথ চলা ,জীবিতের মত কথা বলা।
আমি বলি নি কখনো
আমি তো মরে গেছি কবে যেদিন স্মৃতিদের সাথে হাজতবাস।

সেই মেয়েটা পুরুষ খুঁজছে হাজারো পৌরুষের মাঝে
সেই মেয়েটা জীবিত তো আছে।
কারণ মনের কোনে আশা এই ভালোবাসা বারংবার
সকালের রৌদ্রের মত সরতে থাকে।
তবু মেয়েটা শান্তি পায় কবিতার শিরা উপশিরায়
বারংবার ধবনীতে ধুকপুক
আশারা যে মৃতপ্রায় আমার জমানো কবিতার স্থুপে। 

ভোকাট্টা রতন

ভোকাট্টা রতন
................ ঋষি
==========================================
তোকে মনে পরলেই আমার আজকাল
সেই পোস্টমাস্টারের  রতনের কথা মনে পরে।
এলো চুলে যে মেয়েটা বসে থাকতো দরজার কাছে
অদ্ভূত দৃষ্টিতে আকাশ দেখতো জানলার বাইরে।
তার হৃদয়ের কোথাও ,কোনো ভাঙ্গা ঘরে
স্বপ্ন ছিল মাটির ঘর ,সাজানো সুখ
আর স্বপ্নের মানুষের।

সেই স্বপ্নের মানুষ
যে জীবনের বাইরে অতি গোপনে তোকে আদর করবে।
কাঁচের এপারে লেগে থাকা জলবিদুগুলো
সব স্ট্যাচুর  মত দাঁড়িয়ে পড়বে।
আর এ পাড়ে গড়াবে রঙিন সুখ
নীল আকাশে ঘুড়ি উড়বে সেই স্বপ্নের মানুষের হাতে লাটাই
ভোকাট্টা ,ভোকাট্টা রতন  ভোকাট্টা।

তোকে মনে পরলেই আজকাল আমার
রতনে ভিজে চোখটা মনে পরে নোনতা শ্রাবনে দিনে।
চারিদিকে তুমুল বৃষ্টি হৃদয়ের ভাঁজে জমা অভিমান
তুমি চলে গেলে।
পোস্টমাস্টার ফিরে তাকায় নি শুধু যাবার আগে বলে গেছে
তোকে আমি কখনো কিছু দিতে পারি নি,
আজ যাবার সময় তোকে কিছু দিয়ে গেলুম।

মাংসের গল্প


মাংসের গল্প
................... ঋষি
================================================
কি জানি কত ছিল বয়সটা
মনে পরছে না যুগের হাওয়ায় লাগা মাংসের গন্ধে।
হবে পঁচিশ কি পঞ্চাশ  কি এসে যায় তাতে
মোদ্দা কথা সে মেয়ে ছিল।

কোনো এক সকালের রৌদ্রে  সে জড়িয়ে নিয়েছিল স্বপ্নের শাড়ি
অদ্ভূত এক মায়া জড়িয়ে নামছিল সারা শরীরে আলোর মত।
অদ্ভূত আঠালো আকর্ষণ স্তনের ভাঁজে ,ঠোঁটের লিপস্টিকে মাদকতায়
মেয়েটা আয়নায় মুগ্ধ হচ্ছিল বারংবার।
মেয়েটা ভার্জিন ছিল কিংবা ছিল না তা  জানি না
মেয়টার জাত,ধর্ম,দেশ কিছুই জানি না।
শুধু জানি মেয়েটা শরীরে মাংসের গন্ধ ছিল
আর দুচোখে ছিল সভ্য সভ্যতার স্বপ্নের মায়া।

তারপর গল্পটা সবার  জানা
চেনা  ফ্লাইওভারের অন্ধকারে কিংবা অচেনা অন্ধকারে।
বেশ কিছু শহুরে মানুষ ,বেশ কিছু সভ্য মানুষ
এক বা একাধিক  সভ্যতার সন্তানেরা  খুবলে খেলো মেয়েটার শরীর।
খুলে গেল স্বপ্নের শাড়ির আড়ালে যত্নে লোকানো মাংসগুলো
ঝুলে পড়লো মেয়েটার তাল তাল মাংস সভ্যতার চোখে।
কাঁচা মাংসের গন্ধ সভ্যতার মুখে, ঠোঁটে লেগে সভ্যতার রক্ত
তারা হাসছিল।

কারা ছিল তারা ,জাত ,ধর্ম ,দেশ কিছু জানা নেই
শুধু জানা তাদের সবার পুরুষাঙ্গ ছিল  ।
জানা এতটুকু মেয়েটার শরীরে সভ্যতার নক্সী কাঁথা  বোনা হয়েছিল
বোঝানো হয়েছিল মেয়েটাকে বাজারে মাংসের চাহিদাটা।

তারপর আমরা তো ভদ্রলোক
ওই সব বাজে মেয়েদের দিকে তাকায় না।
জানলার বন্ধ করি ,চেতনার শার্সিতে কুলুপ আঁটি
শুধু  নিউস পেপারে কিংবা  খবর চব্বিশ ঘন্টায় চোখ রাখি সভ্য সমাজে।
আড় চোখে খুঁজতে থাকি মেয়েটার ন্যাংটো শরীরটা
যদি কিছু মাংস অবশিষ্ট থাকে।
কিন্তু ভুলে যায় প্রতিবারে যে এমন করেই
প্রতিদিন কোনো মেয়ে পড়ছে স্বপ্নের ছেঁড়া শাড়িটা।

নোনতা তৃষ্ণা

নোনতা তৃষ্ণা
...................... ঋষি
===========================================
এই মেয়ে শুনছিস
তোকে নিয়ে একবার সমুদ্রেতে যাব।
যাবি আমার সঙ্গে
সামুদ্রিক নোনতা জলে পা ভিজিয়ে আস্কারা পাবো।
যাবি
জানি সময় খুব কম তোর হাতে ,
ঠিক আছে একলাই যাব আমি।

এই মেয়ে শুনছিস
সামুদ্রিক অভিশাপ লেগে আমার গায়ে।
জানি সামুদ্রিক তুফানের আঁচ তোর নোনতা শরীরে
ভিজে ঠোঁটে লেগে তৃষ্ণারা মারাত্মক।
তবু বুজে যাওয়া চোখে সমুদ্রের নোনতা হাওয়া
একলা হওয়া জীবনের দর্পণ।

সামুদ্রিক গায়ে ভেজা লবনাক্ত মায়া
সমুদ্র আঁধার রাতে জমে থাকা চেনা ডিপ্রেশন দরজার বাইরে।
ঘুম ভেঙ্গে যাবে
জানি সময় চলে যাবে তোর সাথে।
তবু আমি যাবো একলা সমুদ্রে
পুরনো ঝিনুকে কুড়িয়ে নেব তোর শরীরের বালি মেয়ে
আমার চোখে লেগে নোনতা তৃষ্ণা।

Sunday, March 15, 2015

ঝাপসা চোখ

ঝাপসা চোখ
............ ঋষি
=======================================
সহজ নেই  কিছুই
যে দিকে দুচোখ যায়  ,হেঁটে যাওয়া।
পর্বত পেরিয়ে ,সিন্ধু সভ্যতার আদিমতায়
আমি খুঁজে চলেছি  অনন্ত আমাকে।
ঈশ্বর বোধ হয় আজকাল অপুষ্টিতে ভুগছেন
যেমন মৃতপ্রায় আমি আমার সভ্যতায়।

হাসছে দেখো
আমার অবধারিত আগামী মৃত্যুর প্রাচীনতায় হাসছে।
ঘড়ির কাঁটায় লেগে থাকা মুহূর্তরা সরতে সরতে
শ্মশানের ধোঁয়ায় পোর খাওয়া চোখের জল।
নিত্য পরে থাকা দুঃখগুলো অলিতেগলিতে
বাংলা মদের ঠেকে হামাগুড়ি দেয়।
কিংবা আরেকটু সস্তা বেঁচে থাকার খিস্তি খামারি
হাড়গোর স্মৃতি কর্পরেসানের  মৃত পরিবহনে।

সহজ নেই কিছুই
পায়ের ছেঁড়া চটির ফোস্কায় সদ্যজাত  বেদনা।
বেদনারা নাকি আজকাল প্রেমে পরে ,স্বপ্ন দেখে বাঁচার
কিন্তু আমি জানি মৃত্যুর পর বাঁচা যায় না।
সে যে বাহানা বাঁচার
কিংবা অনন্ত সময়ের ছবি ঝাপসা চোখে।

শেষ চুমুক

শেষ চুমুক
............ ঋষি
======================================
তোকে ভালোবাসি
বারংবার জীবন বলেছে ,জীবিত বলেছে।
অথচ মৃত্যু
 ফিল্টার উইল্সের শেষ চুমুকে লেগে থাকা
রক্ত কনা আমার ঠোঁটের ফাঁকে।

হাসিতে হাসিতে উত্তাল পৃথিবীর ঢেউতে
আমার কবিতারা তোর প্রেমের শরীর সাদা পাতায়।
উন্মুক্ত তোর  বুকের কালিমায়
আমি লিখে চলেছি নক্সী কাঁথা হৃদয়ের সাথে।
তোর  উরু বেয়ে সোনালী সভ্যতার শেষ আলোয়
জীবন লুকিয়েছিল বহুদিন।
অবাক হলাম সেদিন, যেদিন বুঝলাম
বেঁচে ছিল  প্রেম সেদিনও স্বপ্নের মতন ,আদুরে হাওয়ায়
যেদিন শেষ চুমুকে উঠে এলো রক্ত আমার মুখে।

তোকে ভালোবাসি
আজ বহুদিনপর জীবন বলছে ,জীবিত বলছে।
কফিনের শেষ পেরেকে লেগে যাওয়া অন্ধকার কালি
ভীষণ খালি
চেনা ফিল্টার উইল্সের আদুরে ধোঁয়ায়।

শেষ ইচ্ছা

শেষ ইচ্ছা
................... ঋষি
========================================
যে চোখ দেখে কবিতা লিখবো বলে
কোনো ক্যাফেটেরিয়াতে আমার আয়না রাখা ছিল।
কি যেন,কেন যেন
নিজের অদৃশ্য কারণে কাঁটাছেঁড়া বুকের মাঝে।
সেখানে কফি ছিল ,আলসেমিতে পরে থাকা মিঠে রৌদ্র
তোর ঠোঁটে লিপস্টিক হালকা ছুঁয়ে ছিল।
 পরে থাকা সময়ের অনন্ত আগামী
অথচ আমি হারালাম।

সামনে বাসস্টপে দাঁড়িয়ে যে
যার লাল ওড়নার পিছনে বিশাল মরুভূমি।
ডেস্কটপে পাওয়ার পয়েন্টে তৈরী সরে যাওয়া মুহূর্তরা
সেখানে ঠিক তার পাশে একটা ছায়া।
তোকে ফলো করতে করতে ,
তোকে জীবিত করতে করতে প্রেম।
ব্রেকফেল আছড়ে পড়লো সময় বুকের উপর
চলন্ত ট্রাম অনন্ত আগামী।

যে শরীরে আমি শরীর রাখবো বলে
ঠোঁটের ত্রিসীমানায় কোথাও ছিল না ক্লান্তি।
শুধু তৃষ্ণা হেঁটে গেছে যুগের পর যুগ
শুধু পাগুলে কবিতার কলমে অনন্ত হৃদয় পাতা।
সেখানে সময় ছিল ,
ছিল ফেলে রাখা সময়ের ফিস ফিস বুকের ভিতরে।
তোর ধ্বংসস্থুপে রাখা আমার খেরো খাতার
আমার বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছা। 

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...