Saturday, January 29, 2022

তাসের ঘর

 তাসের ঘর 

... ঋষি 


হঠাৎ দেখা হতে পারে বাস বদলানো গড়িয়াহাট 

                           কিংবা শেয়ালদা স্টেশনের পাশে 

আমার সেও প্রথম পাওয়া সেই স্কুলের প্রেমিকার সাথে

অথচ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি সেই মেটে চালের ইস্কুলবাড়িটা নেই ,

তার চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা ,সিঁথিতে সংসার 

তবু চিনে ফেলে ছুটে গিয়ে ডাকবো নাম ধরে 

কিন্তু নামটা এখনো তার আছে 

কিন্তু সেই সময় আর নেই। 

.

নিমেষে সব কেমন অন্ধকার 

চোখের সামনে ভেঙে পরে সেই মেটে চালের ইস্কুলবাড়িটা 

একের পর মন্তাজে ফুটে ওঠে স্কুলের টিফিন ,প্রেমিকার বিনুনি 

স্যারেদের বকা ,বানান ভুল 

পুরো ক্লাসরুমটা হঠাৎ ফাঁকা হয়ে যায় 

সে বলে এই শুনছিস এই না ফোন নাম্বার 

আজ একদম সময় নেই রে ,ফোন করিস। 

.

আমি হাসি 

সময় হাসে 

এগিয়ে যাওয়া এই শহরে প্রতি মোড়ে হাসতে থাকে ভিড় করা স্মৃতিরা 

মিথ্যা বলবো না তার মধ্যে কেউ কেউ কাঁদে 

আসলে আজ এতগুলো বছর যেন একটা পরিখা টেনেছে জীবন আর সময়ে 

আর আমি পরিখার ওপাশ থেকে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়তে চাই 

কিন্তু ভুলে গেলে চলবে কি করে 

সময় শুধু মুহূর্ত জুড়ে একটা তাসের ঘর 

একটু হাওয়া দিলেই ভেঙে যাবে। 


ভীষণ কাছের

 


ভীষণ কাছের 

... ঋষি 


মাঝে মাঝে আজকাল কবিতায় বিরক্তি আসে


        আমি আর আমি আর সাথে রানী,


রক্তে জ্বালাপোড়া ,চামড়া ভাঁজে বয়সের আতংক ,অমীমাংসিত সন্ধি 


সেই সমুদ্র ,সেই মেঘ ,সেই ঝড় ,বৃষ্টি,শীতের শুকনো পাতা ,ময়েশ্চরাইজার ক্রিম


সামাজিক সমস্যা জড়ানো নর্দমা ,শান্তির রুমাল  


কিন্তু কবিতাকে খুঁজে পাই না আজকাল 


শুধু চর্বিত চর্বনে একটা বিরক্তি মাথার চারপাশে হেলিকপ্টারের মতো ঘোরে। 


.


আর লিখবো না ভেবে কলম তুলে রাখি 


আসন্ন কবিতাগুলো পায়খানার কমোটে ফ্ল্যাশ করে উঠে দাঁড়াই  ,


শব্দের বদলে নকল শান্তি মেখে ঘুমোতে যাই 


ঘুম আসে না ,


কেমন একটা মনখারাপ ,চশমার কাঁচে অকারণে ঝাপসা 


দেখি অন্ধকার জানলার বাইরে তারা দাঁড়িয়ে আছে 


শব্দরা ,যন্ত্রণারা  ,ভাবনারা । 


.


আমি ওদের দিকে তাকাই 


দেখি মুখ ভার করে শব্দরা ,ভাবনারা দাঁড়িয়ে আশ্রয় খুঁজছে 


বড্ড কষ্ট হয় 


যেন কতদিন খেতে পাই নি ,কত দিন ঘুমোয় নি 


চোখে মুখে কালি 


বৃষ্টিতে ভিজে ,অনেকটা রাস্তা পেরিয়ে তারা আমার কাছে এসেছে 


আমি কবিতার খাতা খুলে দি আবার সযত্নে 


ওরা নিজের মতো করে বসিয়ে নেয় নিজেদের 


আমি হাসতে থাকি আমার প্রতিটা কবিতার জন্মের পরে 


বোধহয় কবিতারা আমার ভীষণ কাছের। 

মিথ্যা বলতে হয়

 


মিথ্যা বলতে হয় 

... ঋষি 


মাঝে মাঝে নিজেকে মিথ্যে কথা বলা ভালো 


কি যে ছাই  শিখিয়েছিল ছোটবেলা আর বর্ণপরিচয়


মিথ্যে বর্ণের মুখোশের বেঁচে থাকাগুলো যেখানে বড্ডো  নিয়মিত  


সেখানে  নিজেকে ভালো রাখতে বারংবার  মিথ্যে বলতে হয়। 


.


তোমাকে শেষবারের মতো ছুঁয়ে দেওয়ার পর ধর্মতলার ভিড়ে 


হারানো আমি ,


" ভালো থেকো " বলে মিথ্যে বলা নিজেকে ,


কি মনে হয় ? খুঁজছি প্রতিদিন  তোমাকে ?


 তোমাকে কি আর খুঁজছি শীতার্ত দিনের শেষে সেই গোধূলি আয়নায় ?


কিংবা গরমের উষ্ণতায় সেই লম্বা বারন্দায় ?


কিংবা রাস্তার ফুটপাতে 


আমি কি আর দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্য  ?


.


সবকথা বলা হয়ে গেলে মিথ্যেরাও বিদ্রোহ করে


এখন বছর শেষের দিনে শপিং মলের এস্কেলেটরে 


মিলিনিয়াম পার্কের ফুরোনো সন্ধ্যের সেই বেঞ্চে 


কেন যে মনে হয় তোমার অস্তিত্ব পাচ্ছি ,


স্বর্গের দরজায় দাঁড়িয়ে এক কাপ চা আর ফাঁকা হাইওয়ে 


ছায়ার মতো জানান দেয় ওই তো তুমি ,


অথচ আমি মানতে চাই না 


বুকের সিন্দুকে জমানো নথিগুলো বিদ্রোহ করে আগের মতো। 


সত্যি বলে

 

নিজেকে বলি নিজে অজান্তে মিথ্যা  "তুমি কোত্থাও নেই" 


তুমি ছিলে না কোনোদিন কোথাও।  

পালাবো একদিন

 .


পালাবো একদিন 

... ঋষি 


পালাতে চাইছি আমি খুব বিচ্ছিরি ভাবে 

চলন্তিকা ,তুমিও তো পালাতে চেয়েছিলে একইভাবে আমার মতো 

তোমার সদ্য ছাড়া শাড়ি ,পাউডারের পাফ ,কাজলের গল্প 

রান্নাঘরের আচার ,বিছানার চাদর ,মেয়েলি দাগ ,

জানি তুমিও ভেবেছিলে আমার মতো 

জানলার ওপারে যারা তারা কেন যে দৃশ্য হয়ে গেল ?

.

চলন্তিকা আমার মতো তুমিও বলো নি কাউকেই ঘর ছাড়ার আগে 

ঘরে থাকবার জন্য একটা কারণ দরকার ,

দরজার ওপর গামছা ,তোমার সাজার আলমারীর কাঁচে হরেকরকম টিপ্ 

তোমার রান্নাঘরে অজস্র ষ্টেনলেসস্টিলের ঠোকাঠুকি 

না এগুলো ঘরে থাকার কারণ হতে পারে না 

কারণ যা তাকে তো কবিতায় লেখা যায় না। 

.

আজকাল চলন্তিকা তুমি কোত্থাও থাকো না 

বাথরুমের দেরাজে রাখা একধিক ব্রাশ ,আলনায় রাখা  শাড়ি 

দেওয়ালে টাঙানো অনেকগুলো ফটোফ্রেম 

সব বেরঙিন 

শুধু কারণ খুঁজছে ?

কারণ খুঁজছো তুমি আমার মতো নিজের ভিতর নিজের প্রতিবাদে। 

চলন্তিকা তুমি বোধহয় জানো না 

কারণ  ফুরিয়ে গেলে মানুষ পালায় রোজ নিজের থেকে 

সময়ের থেকে ,

তাই চলন্তিকা আমিও  পালাতে চাইছি তোমার  মতো খুব বিচ্ছিরি রকম 

অথচ দরজা খুললেই পায়ের হাওয়ায় চটিগুলো বেমতলব প্রশ্ন করছে 

আমরা কি শুধু বস্তু ছিলাম ?


গর্ভপাত


গর্ভপাত 

... ঋষি 


আমি দেখি ভাবনা শুরু হওয়ার আগে 

এক গভীর জঙ্গল 

সারি সারি সাদা চাদরের উপরে সার দিয়ে পরে নারী শরীর 

কারোর তাদের উন্মুক্ত যোনি ,উন্মুক্ত পেট ,উন্মুক্ত চোখ 

প্রত্যেকের চোখের কোনে জল 

প্রত্যেকে বলছে

ভালোবাসা থাকলেও যে জন্ম দেওয়া যায়  না বারংবার। 

.

আমার অবাক ঈশ্বর 

সময়ের নর্দমা বেয়ে চলে যাচ্ছে নষ্ট কিছু ভ্রুন ,কিছু মুহূর্ত 

তুমি প্রশ্ন করলে চলন্তিকা 

তুমি না জেনে কি লেখে চলেছো কবি ,কখনো জন্ম দেখেছো? 

আমি হাসলাম, বুঝলাম

কবির ঠোঁটে জন্মের শোক 

মৃত ভ্রুনের মতো কিছু একটা কবির মুখেচোখে। 

.

স্বপ্নের মতো জ্যোৎস্ন্যা ,ভাবনার সিঁড়ি বেয়ে কেউ একটা দাঁড়িয়ে 

হে ঈশ্বর তোমার সাজানো পৃথিবী ভরে যাচ্ছে ভ্রুণে 

গর্ভপাতের নষ্ট রক্ত ঢেকে দিচ্ছে এই সময়

ভালোবাসার মৃত্যু হচ্ছে বারংবার ,

আমি জানি এই পৃথিবীতে শুধু সকলে শরীরের কথা বলে 

আর জন্মরা আমার মতো অহেতুক 

ঐদেখো চলন্তিকা সময়ে মাতৃত্ব 

তার পা গড়িয়ে নেমে চলছে নষ্ট রক্ত 

ধ্বংস বর্ণনায়। 

 

ইতিহাস খুঁজে ফেরা

 ইতিহাস খুঁজে ফেরা 

... ঋষি 


শান্তিনিকেতন হোক কিংবা রোমান কলোসিয়াম 

আমি মিউজিয়ামের কথা বলছি 

ঘুরেছি ,ঘুরছি ,অবাক হচ্ছি ,

ইয়া লম্বা হাতির দাঁত ,মমির শরীর ,তিমি মাছের দাঁত 

খড় গুঁজে রাখা প্রাগৈতিহাসিক আমি ,কিংবা পাখি কিংবা বাঘ 

অবাক লাগে ভাবতে এই পৃথিবীটাও কোনোদিন জ্যান্ত ছিল। 

.

অথচ সময় হলো বালিঘড়ি 

সে ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গন হোক ,নন্দনের সিঁড়ি হোক কিংবা হাওড়া ব্রিজ 

সেদিনও উড়তো শাড়ির আঁচল ,চোখে চোখে হাসি ,অভিমানী জল 

অথচ আজ 

কেন যে মিউজিয়ামের দেওয়ালে বড় করে লেখা থাকে 

ইতিহাসকে খুঁজে ফেরা। 

.

জানি ভবিষ্যতে কোনো একদিন এই শহরে ভালোবাসার মিউজিয়াম হবে 

হরেক রকম প্রেম 

শরীরের ,সময়ের ,প্রাপ্তির ,অভিযোগের ,অহংকারের 

কিন্তু সেখানে কষ্ট থাকবে না ,থাকবে না তুমি 

তাই তখন আমি কোনোদিন যাবো না সেই মিউজিয়ামে ,

সত্তর দশকের কিংবা তার আগের দেশপ্রেম 

চট্টগ্রাম বিপ্লবের রক্ত ভেজা বন্দুকের নল 

সেখানে থাকবে না 

আসলে ভালোবাসা প্রদর্শিত হলে সুখদায়ক চোখে 

কিন্তু বিজ্ঞপনী প্রেম আর উত্তাপের তফাৎ অনেকটা।  


Thursday, January 27, 2022

সাইড প্লিজ

 সাইড প্লিজ 

... ঋষি 


একটা রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জীবন 

নিয়ম মতো ,নিয়মিত 

চিরাচরিত মনখারাপের রাস্তা পেরিয়ে 

খানাখন্দ ,গলি পেরিয়ে ,

লেরো বিস্কুট আর দুধ ছাড়া চায়ের কাপ ছাড়িয়ে 

জীবন তার নিজস্বপথে ধার করা এক ওড়না জড়িয়ে 

এগিয়ে চলেছে। 

.

একদিন মোড় ঘোরাতে হবে 

ভাবতে ভাবতে বুকেতে জমা শুকনো পাতা জড়িয়ে 

না লেখা কবিতা শিরদাঁড়া সমান 

এই দেশ শহর আর গ্রাম পেরিয়ে 

কোনো এক অজানা দেশে ঘাটে লেগেছে জাহাজ 

সেই জাহাজের চেনা ,অচেনা নাম পেরিয়ে 

একদিন। 

.

তাড়াতাড়ি হে বদল করো হে নাবুক 

বুকের খাঁজে যুদ্ধ জাহাজ মৃত্যু সমান 

চেনা ,অচেনা গল্পের সব ঘুম ভাঙা আজ 

হৃদয় জুড়ে যুদ্ধ যে আজ মৃত্যুকামান। 

একদিন ঠিকানা পেরিয়ে হেঁটে যেতে হবে ঘুমের দেশে 

মাটিটাকে আঁকড়ে নিয়ে প্রবল সুখে 

একদিন তাসের ঘরে গোলাম রাজা হবে 

একদিন দেশ খুঁজতে কোনো শৈশব বলবে না প্রেসেন্ট প্লিজ 

বরং সময় বলবে অনেক হলো সাইড প্লিজ।  

ঘর পালানো শব্দরা



 ঘর পালানো শব্দরা 

... ঋষি 


ঘর থেকে পালাই রোজ নিজের মতো 

কিন্তু নিয়ম করে ঘরে ফিরি কজনে ?

বয়স আর সময়ের মাঝে তফাৎ আছে 

অনবদ্য স্তব্ধতায় জীবন লিখি কজনে ?

.

লজ্জা আর ব্রণের মতো কি সাংকেতিক 

জাদুকরের প্রলেপ নামে সময় ধরে ,

বিশুদ্ধ এই স্নানের ঘরে অসংখ্য জল 

ভাবনারা যে অসংখ্য তা বোঝে কজনে ?

.

অবুঝ মেয়ের রাতের ঘরে মনখারাপি 

স্বপ্ন পুরুষ মোমের দেশে আগুন জ্বালায় 

সবাই যদি আগুন ধরে দেশকে খোঁজে 

টোপর পরে সমাজ কেন সাজনা তলায়। 

.

সবার জন্য শিল্প,কর্ম  নিত্য দিনে 

গাঁ ফুরোতে চোখের জলে অশ্রু কেন ?

খেলনা বাটি বিক্রি যে হয় রাত ফুরোলে 

সংসারেতে সাজানো সব মিথ্যে কেন ?

.

নতুন সময় রং লাগাতে ফুলের কলি 

দেশ শুধু এক হিপোক্রেসি শব্দ যে আজ 

শিল্প যে আজ  বিক্রি যে হয় নেশার দরে 

ও মেয়ে তোর ভাবের ঘরে গল্প যে আজ। 

ভালো হয়ে যাবো

 


ভালো হয়ে যাবো 

... ঋষি 

.

প্রতিদিন ভাবি এইবার ভালো হয়ে যাবো 


অনেক তো হলো 


এইবার আর নিকোটিন পড়া ঠোঁটে আর তোমাকে চুমু খাবো না। 


.


প্রতিদিন ভাবি তোমার চিবুকে আর তর্জনী ছোঁয়াবো না 


এই তর্জনীতে লেগে আছে জন্য একলা থাকার সুখ 


শব্দের ঘুম ভাঙা ঘরে আর কখনো তোমার দিকে তাকাবো না 


আর লিখবো না তোমাকে সার্বজনীন কবিতার মতো 


বরং এই বার একটা পাঠশালা খুলবো 


যেখানে পড়াবো আমি ভালোবাসার পাঠ। 


.


প্রতিদিন ভাবি এইবার ভালো হয়ে যাবো 


ভাবি ভাবনার বাড়িটাকে চাঁদের আলোয় মুড়িয়ে দেব 


তারপর বারন্দায় ইজিচেয়ারে  একসাথে বসে চা আর মুড়ি খাবো 


আর ভালো লাগে না পাশের বাড়ির ছাদে দড়িতে মেলা  ব্রায়ের দিকে তাকিয়ে 


ভাবনার ভিজে বাথরুমে একলা ঢুকতে। 


আর ভালো লাগে না আচমকা ভিড়ের মাঝে কারোর বুকের খাঁজে 


অন্ধকার কবিতা খুঁজতে 


বরং মনে হয় আজকাল রামায়ণ পড়ি 


চোখকে বলি সীতার পাতাল প্রবেশ মিথ্যা ছিল 


কানকে বলি রাম একজন সত্যিকারের পুরুষ 


আর নাককে বলি ওটা আসলে তোমার শরীরে গন্ধ না 


তোমার উপস্থিতি। 


এখনো বেঁচে

 


এখনো বেঁচে 

... ঋষি 


কাল রাতে তারা স্বপ্নে এসেছিল মাথার বালিশের কাছে 

অদ্ভুত ভাবে আমাকে আঁকড়ে বলছিল বাঁচতে চাই 

আমি চিনেছিলাম তাদের 

সেই শব্দগুলোকে 

যাদের মানুষ বুকের খাঁজে লুকিয়ে রাখে। 

.

তারপর তারা শূন্য বালিশের মধ্যে পায়চারী করছিল ভাবনার মতো 

জনতার দেশ 

নাকি জনতা সেলুনে কেটে ফেলা চুলের অধিকার চাইছে তারা 

বুঝতে পারছিলাম না ,কি চাইছে তারা 

একটা বাসযোগ্য সমাজে অক্সিজেনের শহর 

নাকি খিদের শহরে কিছু অভুক্ত ইচ্ছা। 

.

আমি জানি প্রতিটা মানুষ বালিশে মাথা রাখে শান্তির জন্য 

কিন্তু কি হচ্ছিল জানিনা 

তারা ঠিক হেঁটে বাড়ছিল অন্ধকার ছিঁড়ে বেড়ালের মতো 

অনেকগুলো লাল। নীল ,বাদামি স্বপ্নরা পা দোলাচ্ছিল 

আমি চমকে উঠছিলাম 

তারা বলছিল আমাকে দেখো ? আমাকে দেখো ?

তারপর কি জানি হলো সারা স্বপ্ন দাবানল 

পুড়ে যাচ্ছে শহর ,পঞ্চায়েত ,গ্রাম 

তারপর 

আমার সাদা বালিশের অনেকটা দীর্ঘশ্বাস আমাকে বললো 

আমি এখনো বেঁচে।  


তোমাকে

 তোমাকে 

... ঋষি 


তোমাকে একটিবার ছুঁয়ে দেখি 

তারপর স্বার্থপর কাকের মতো জানান দি বারংবার নিজেকে 

বেঁচে আছি ,

মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে কি করা যায় 

আসনপিঁড়ি পেতে তোমাকে বসিয়ে লিখে ফেলি এ যুগের শ্রেষ্ঠ কবিতা 

ঠিক তোমার গোলাপি স্বপ্নিল  ঠোঁটের গড়নে। 

.

মাঝে মাঝে ভাবি তোমাকে নিয়ে কি করা যায় 

ইচ্ছে করে তোমার সামুদ্রিক চোখে ডুবুরি হয়ে ডুব সাঁতার দি 

তুলে আনি বেঁচে থাকার মানে 

তারপর না হয় তোমার উষ্ণতায় পৃথিবীর শীতার্তদের কথা ভাবা যাবে।  

Wednesday, January 26, 2022

শব্দের স্বাধীনতা

 


শব্দের স্বাধীনতা 

... ঋষি 

.

কদম কদম বড়াহে যা ,খুশিকে গীত 

বাবা কেন বাজছে এই গানটা ?

আমি চমকে উঠি আমার নবছরের ছেলের কথায় 

সত্যি তো ?

কেন বাজছে এই গানটা ?

তবু ছেলেকে বলি বাবা আজ নেতাজীর জন্মদিন। 

.

বাবা নেতাজী মানে সেই ফ্রিডম ফাইটার 

সত্যি তো নেতাজী মানে আজ শুধুই ফ্রীডম ফাইটার ,

এই হাল ফ্যাশনের শহরে নেতাজীর জন্মদিন মানে শুধু একটা ছুটির দিন 

একটা দিন যেদিন উইকেন্ডে যেতে হয় ,

বেধক মাতাল হয়ে নাচতে হয় সস্তার হিন্দি গানে 

কিংবা মনের কোনে ভাবতে হয় ভারতবর্ষ আমার দেশ 

কিন্তু শুধু এই দিনটাই ?

.

তবু আমি ছেলেকে বলি 

নেতাজী হলেন সেই ফ্রিডম ফাইটার যিনি তৈরী করেছিলে আজাদহিন্দ বাহিনী

যিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম পতাকা তুলেছেন 

আমাদের বুঝিয়েছিলেন স্বাধীনতার মানে ,

নেতাজী  বলেছিলেন 

'তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব....!'

ছেলে শুনলো সবটা কি বুঝলো ?আমি জানি না 

আমার মনে হঠাৎ প্রশ্ন এলো আমি কতটা জানি আজকের দিনটা মানে ,

শুধু মাত্র ছুটির দিন ছাড়া। 

পাড়ার ক্লাবের মাইকে বেজে উঠলো " এ মেরে বতনকে লোগো "

মনে পড়ছে  রবীন্দ্রনাথের সেই কটা লাইন 

"সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী 

রেখেছ বাঙালি করেমানুষ করনি"


    

Saturday, January 22, 2022

দাসত্ব

 দাসত্ব 

... ঋষি 


আমি অবাক ছিলাম 

ছোটবেলায় মা বলতো ঘুমোলে হবে না 

পড়তে হবে ,

অনেকরাত জাগা চোখের পর জেনেছি মায়ের সাথে একটা পুরুষ 

কিভাবে বাবা হয়ে যায়। 

.

আমার সারা শরীরে আজ অনেক রাত  জাগা কবিতা 

আমার জানা হয়ে গেছে বাবা ধর্ম 

তবুও ঘুম আসে না এখনো ,

আমার সারা রাত আজকাল শব্দরা মা হতে চায় 

আমি অবাক হয়ে দেখি 

কল্পনার হাসপাতালে এক একটা সন্তানের জন্ম। 

.

আমি অবাক হই 

কবে তো জানা হয়ে গেছে জীবন ধর্মের যাঁতাকল 

কল চলবে ,শব্দ হবে না 

শুধু ধর্ম হবে। 

আজকাল আমার চোখ জ্বালা করে প্রতি রাতে 

সারা সিলিংজুড়ে ঘোড়ারা সম্পর্ক খোঁজে মা ,বাবারা 

সদ্য জন্মানো কবিতারও তাকিয়ে থাকে সিলিঙে 

যদি চুরি যাওয়া জীবনে আবারও অপেক্ষা ফুরোয়। 

শুধু আমার জন্মদের জানানো হয় না 

পুরুষ মানে শুধু বাবা না 

আর মা মানে নয় শরীর 

কঠিন দাসত্ব।  

 

এদিন -সেদিন

 


এদিন -সেদিন 

... ঋষি  

.

আমার ফিরে যাওয়া নিয়ে তোমার দুঃখ 

                   তোমার ফিরে আসা নিয়ে আমার দুঃখ ,

একটা দরজা আমি প্রায় দেখি আমাদের মাঝে 

                 আমাদের অপেক্ষার । 

কাকপক্ষী টের পায় না 

কাছে থাকা মানে আমন্ত্রণ না 

                আর দূরে থাকা মানে নিমন্ত্রণ না । 

.

আমার কাছে খবর আছে 

আমার মৃত্যুর পর একটা বৃত্ত টানা হবে আমার চারপাশে,

            বৃত্তের  ভিতর একটা নিয়ম 

আর বৃত্তের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে কেউ 

আসলে রামায়ণ এখানে শুধুমাত্র মহাকাব্য না 

                       বরং একটা কঠিন সভ্যতা। 

.

আমি আপ্লুত  হয়ে বারংবার বলি ভালোবাসি তোমাকে 

তুমি হাসো 

রহস্য, আমার সমাধির উপর নেমপ্লেট লেখা হয় ,

কেউ বোঝে না 

সেই নেমপ্লেটের প্রথম পেরেকটা তোমাকে পুঁততে হবে 

                             শুধু আমি মরে গেলেই হবে। 

.

আমি কাছে আসা মানে একটা দেন - সেদিন 

আমি দূরে থাকা মানে অন্য দিন - যেদিন 

কিন্তু আমরা ?

একটা কুকুর সারা রাত্র চিৎকার করছে -অসহ্য 

একটা কুকুর গলায় বকলেসে গৃহস্থ - সহ্য 

শুধু কবিতা পড়ে  অসাধারণ বললে হবে না 

বুঝতে হবে। 


Thursday, January 20, 2022

আমি জীবন খুঁজছি

 আমি জীবন খুঁজছি

... ঋষি  


আমি রৌদ্র খুঁজি তোমার কোমরে 

তোমার পাতায় ছুঁয়ে  আছে ছু মন্তর কবিরাজি 

আমি আকাশের গায়ে হাত বুলিয়ে ভাবি তোমার খোলা চুল 

তোমার স্বপ্নের দখলে অনবদ্য কিছু মুখরতা 

আমি পাখিদের পোশাকে হৃদয় মুড়ে রাখি সুনীল নীরবতায় 

তবে এতটুকু বুঝি এই কবিতায় একমাত্র মিথ্যে আমি। 

.

দায়সারা কিছু আফসোস 

তোমার ঠোঁটের লহরে জড়ানো আমার সিগারেট পোড়া মুহূর্তে 

ফিসফিসে কিছু অজুহাত 

উনিশ ,কুড়ি কিংবা একুশের পুরোনো ডাইরিতে কবিতা বদল 

শব্দরা সব সময়ের পোশাকে তুমি হয়ে দাঁড়িয়ে 

আমি জীবন খুঁজছি তোমার কবিতায়। 

.

বিকেলের  নৈঃশব্দে 

ঠুনকো চায়ের কাপে ক্যালোরি যাপন 

মুহূর্তের জঙ্গলে সূর্য নিপাত যায় হ্যারিকেনের আলোয় ,

আমার চারপাশে দাঁড়ানো স্ট্রিট লাইট আমাকে কামড়ে মনে করায় 

জীবন কবিতা না 

জীবন পায়ের নূপুরে বাঁচতে থাকা ব্যাকুলতা না 

জীবন স্থির অনবদ্য আখ্যানে এক খানা বই 

যার প্রতিটা পাতায় অপেক্ষা সুদিনের।  



হিংসা হয় জানো

 হিংসা হয় জানো 

.... ঋষি 

.

হিংসা হয় সত্যি 

তোমার সর্ষে ফুলের বড়া ,তোমার চিকেন কাবাব 

আর তুমি। 

অনবদ্য সময়ের প্রেমে হিসেবের বাইরে দাঁড়িয়ে আমি জুতোর কারিগর 

সারাজীবন শুধু জুতো তৈরী করে গেলাম 

কিন্তু আমার পায়ে ছেঁড়া হাওয়াই চটি। 

.

হিংসা হবে না কেন 

তোমার বাড়ির বারান্দায় অযাচিত ভাবে ঋতুকালীন ফুলেরা 

আর সময়ের কথাকলি। 

দরজা খুলছো তুমি ,চুল আঁছড়াচ্ছো ,শাড়ি বদলাচ্ছো 

সবাই দেখতে পায় নিজের মতো করে রোজ 

অথচ আমি বাদ ,হিসেবের কালি আমার সারা গায়ে। 

.

তুমি হাসলে আকাশ হাসে 

তুমি কাঁদলে এই শহরে হঠাৎ লেগে যায় ভীষণ জ্যাম ,

সময়ের চিৎকার ফুরোয় না 

সময়েরও জ্বর আসে একলা সারা রাত একলা শীতে ভিজে।  

আমি কেতাদুরস্ত কর্পোরেট সেজে গাড়ির কাঁচ তুলে দি ভীষণ শীতে 

নিয়ম মাফিক তোমাকে ভুলতে গিলে ফেলি অন্ধকার নেশা 

নেশা হয় মানুষ যখন 

কিন্তু হিংসা ফুরোয় না জানো ,

বুকের ভিতর একলা বুককেশে তোমার নামের বইটার 

প্রথম পাতা খুলতে পারি না আমি সময়ের ঘরে ,

ধুলো জমে বইয়ে উপরে  ,পাতাগুলো ক্রমশ পুরোনো হয় 

সময়ের বেড়ে চাপ রক্তচাপ 

তোমার হাঁড়িকুড়ি আর কড়াইয়ের শব্দে আমার ঘুম আসে না। 

বাঁচতে চাওয়া শহর

 বাঁচতে চাওয়া শহর 

... ঋষি 

.

ঘুম ভাঙা শহর ভালো থাকতে চায় 

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে শীতের সকাল  শিশির পায়ে হাঁটা 

ভিজে যাওয়া বুকের ভাঁজে মুখগুলো আজকাল  অকারণে হাসতে চায় ,

কথা বলতে চায় সময়ের ভিতরে লুকোনো সম্পর্ক 

নিজেকে  ভালো রাখার দায়ে। 

.

আমি সমুদ্র খুঁজছি এই শহরের একশোতলা কংক্রিটের ইটে 

আমি যন্ত্রনা লুকোচ্ছি বুকের দরজায় একলা থাকা চশমায় 

সময়ে মুখে ভাঁজ ,একটা দুটো পাকা চুল 

সাক্ষী থাকছে নিজের গভীরে কিছু আহ্লাদীক্ষন 

ভালো থাকার বিছানা ,বালিশ নিয়ে আমি চলে যাচ্ছে স্বপ্নে 

নিজেকে একা রাখার দায়ে। 

.

এমন করে তুমি তাকিয়ো না আমার দিকে 

আমি ভুলে যাই এই শহরের হিসেবের বাস 

ভালো থাকার তত্ব তালাশ,

তোমার টেবিলের উপরে সাজানো ম্যানিপ্ল্যান্ট 

তোমার হৃদয়ের বাক্সে রোজকার ঘুম চুরি 

সারা সিলিং জুড়ে তখন আমার সর্বনাশ। 

চোখের জমতে থাকা শহর ,ব্যারিকেড ,জেব্রা ক্রসিং 

ঠোঁটের ভাঁজে জড়িয়ে থাকা ঠোঁট ,অনিয়ম 

ঘুম ভাঙে তোমার 

ঘুম চুরি হয় রোজ 

শুধু ভালো থাকার দায়ে ভালোবাসার ঘরে শূন্য সকাল 

দরজা খুলে শহর বাঁচতে চায়।  


Tuesday, January 18, 2022

আরো গভীরে

 আরো গভীরে 

... ঋষি 


কোথায় হাঁটব ? প্রশ্নটা আমার 

উত্তর দিলে তুমি নেমে এসো ,আরও নিচে 

না হে মুহূর্তরা মিলছে না ,

জন্মের কসম আমি সিংহ রাশি , এত পাঁক ,এত দুর্গন্ধ 

আমি সার্বজনীন হতে পারবো না। 

.

কোথায় হাঁটবো বলো তুমি ?

তুমি বললে উপরে উঠে এসো ,আরও ওপরে ,আরও ....

আমি পারছি না ,অক্সজেন পাচ্ছি না 

চারিদিকে দূষিত ধোঁয়া ,চারিদিকে শ্বাসরোধ করা কতগুলো ছবি 

ওপর দিয়ে পৃথিবী দেখা 

এর চেয়ে বরং পায়ে হেঁটে মৃত্যুতে যাওয়া ভালো। 

.

বলো তুমি কোথায় হাঁটবো ?

বললে আরও গভীরে এসো ,আরো গভীরে ,আরো   .....

আমি হাঁটছি ,আমার কষ্ট হচ্ছে না 

পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি তোমার হৃদপিন্ড ,কিডনি ,তোমার মেরুদন্ড 

আমি খুব সহজে হেঁটে যাচ্ছি আরও গভীরে 

পাশে দেখতে পাচ্ছি তোমার ছায়া 

আমি বললাম আগে বলতে পারতে ,তুমি হাসলে। 

.

কিন্তু 

কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আরও গভীরে হাঁটতে চাই 

তুমি ছায়ার মতো আছো 

তুমি ছায়ার মতো থাকো 

তবে আমাকে আর ভুল পথে হাঁটতে বোলো না।  

সংগোপনে

 


সংগোপনে 

.. ঋষি 


চুমুতে তোর কানের লতির লালচে আভা 


বুকের দাগে উপছে ওঠা সমুদ্র ঢেউ 


চোর পুলিশের খেলায় নেভে সাঁঝের আলো 


আরেকটু প্রেম জড়িয়ে বাঁচে আমাকে কেউ। 


.


দগ্ধ চুমু আধখানা খাই ,আধখানা সুখ  


আমার কাছে বাঁচার মানে বৃদ্ধ সকাল 


নরম পিঠে সোনা  রোদের নোনতা এ স্বাদ


বাঘবন্দী খেলায় রাখা পোক্ত সে চাল। 


.


দরজা খুলে উঠছে আগুন ,জানলা খুলে বিপন্নতা


লালায় লেগে অগ্ন্যুপাত  ,মনের ভিতর কৃপণতা 


সব খুলছে নিজের মতো ,সময় এখন নগ্ন দরাজ 


অলকানন্দা নদীর যে নাম, আমার নামটি ব্যাকুলতা। 


.


ফরসা  উরু দেখায় এখন একলা আগুন 


প্রেম আসলে বাস্তুভিটায় মেঘের পালক 


আগুন নিয়ে খেলছি আমি দিনে রাতে 


রাতদুপুরে  এখন আমি মেঘের চালক।


.


ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিশে যায় একলা হলে 


বুকের ভিতর জমানো সুর সারেঙ্গিতে 


শরীর যদি না হয় প্রেম একলা সুখে 


আমার সময় কাঁপায় তোকে আচম্বিতে।   

Saturday, January 15, 2022

ভয় করে

 


ভয় করে 

... ঋষি 


২০২২ এবং আগামী  লিখতে আজকাল আমার ভয় করে 


ভয় করে ঘুমের মধ্যে তাকিয়ে নিজের  জমা হাঁড় ,পাঁজর দেখতে  


আরো ভয় করে থরে থরে সাজানো নারী শরীরের দিকে তাকাতে 


আমার ভিতর কেউ প্রশ্ন করে 


এগুলো কি ? মোহ না অধিকার 


আমি চুরি যাওয়া মুখে তাকিয়ে থাকি ,যেন কোন অপরাধী। 


.


অপরাধ নিজের ভিতর একলা থাকা এক আয়না 


অপরাধ সময়ের যন্ত্রনায় ছুঁয়ে থাকা আমার তাবৎ প্রেমিকা 


ভাঙা ঘর ,ভাঙা দরজা ,আকাশ খোলা চাঁদ 


আশ্রয় ?


উত্তর ছিল না কোনোদিন আমার কাছে 


তাই আমার বুকের ভিতর অজস্র পদশব্দ আমাকে বাউল করে। 


.


ভোরবেলা শিশিরের মতো আমার ঘুম ভাঙে নিজের তাগিদে 


সরাতে হবে ভাবনার মৃতদেহ 


আলাদা আলাদা জড়ানো শরীর আঁচল ,নিতম্ব ,হাসি ,দুর্বলতা 


সমস্ত মায়ার সুতো এইবার আলগা করতে হবে  ,


আমি এক অর্বাচীন পথিক 


যার সময় জুড়ে নেই কোনো আস্ফালন 


শুধু এক মৃতদেহ। 


তবুও আমার ২০২২ লিখতে ভয় করে 


ভয় করে নিশ্চিন্হ গোধূলির দিকে তাকিয়ে খুঁজে নিতে মৃত মাছের চোখ 


আসলে সত্যি হলো আমার মোহ  কিংবা অধিকার খুঁজতে ভয় করে।  


তোমাকে চাই

 


তোমাকে চাই 

... ঋষি 


মানুষ রোজ যেভাবে ঘাসে মুখ দিয়ে হাঁটে 

যে ভাবে হাঁটতে হাঁটতে হেমন্তের কণ্ঠের অনুকরণে  

          " পথ হারাবো  বলে এবার পথে নেমেছি "  গেয়ে ওঠে 

ঠিক সেই ভাবে আমি তোমাকে চেয়েছি। 

.

মানুষ যেভাবে মুঠোফোনে সেরে ফেলে সম্পর্ক 

যে ভাবে সময়ের সাথে হাঁটতে থাকে ঘড়ির কাঁটায় 

                        না চাইতে ছিঁড়ে ফেলে প্রিয় জুতো 

ঠিক সেইভাবে আমি তোমাকে চেয়েছি। 

.

মানুষ যেভাবে দামী ফোটোফ্রেমে সাজিয়ে রাখে নিজের অপমান বোধ 

নিজের কষ্টগুলো গুঁড়ো গুঁড়ো করে সাজিয়ে দেয় অন্ধকার আকাশে

                     ক্রমশ শিলাবৃষ্টি চেয়ে ,মাঘের শীতে লেপের ভিতর কাঁপে  

ঠিক তেমন করে আমি তোমাকে চেয়েছি। 

.

মানুষ যেভাবে সম্পর্কের নিচে চাপা পরে ভাবে এই তো জীবন 

ভীষণ একা থাকায় গেয়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথের " ভালোবাসি ভালোবাসি "

                  হঠাৎ দেশের দ্রোহ নিজের গায়ে টেনে সঙ্গমেরত প্রেম  

ঠিক তেমন করে তোমাকে চাই। 


            


ভালো থাকিস



 ভালো থাকিস 

... ঋষি 


পাছে তুমি চলে যাওয়ার সময় আমাকে বলো ভালো থাকিস 

তাই আমি মুখ ফিরিয়ে নি অভিমানে  

জানি এ দুনিয়ায়  আমার ভালো থাকা হবে না সময়ের হিসাবে ,

শুধু সময় বদলাবে 

বদলাবে সময়ের ভগ্নাংশে বুকের পাথর 

কিন্তু সত্যি হলো এ জীবনে আমাদের শর্তহীন আলোচনা শেষ হবে না। 

.

সত্যি যদি  তুমি আমাকে ডেকে নেও তোমার পাশে 

তাই আমি তোমার প্রতিটা যাওয়ার পথে বিছিয়ে দি আমার রক্ত

তুমি পিছল খাও ,পিছন ফিরে তাকাও 

অথচ আমি মুখ ফিরিয়ে নি 

শুধু মনে মনে নিজেকে বলি চলে যাওয়া মানে তো হারিয়ে যাওয়া নয় 

বরং আবারও এক আলোর দিনের অপেক্ষা। 

.

শুধু প্রতিদিনকার ভাত ,সবজি আর জীবন মিশিয়ে 

আমি ভালো আছি 

তুমি চলে যাওয়ার সময় আমি একথা তোমাকে জানাতে চাই না ,

শুধু তোমার চলে যাওয়ার পর আমি অন্ধকারে একলা দাঁড়াই  

নিজের আঙুল দিয়ে অন্ধকার ছুঁয়ে নিজেকে বিশ্বাস করাই  

তুমি চলে গেছো ,

কিন্তু বিশ্বাস হয় না জানো 

মনে হয় অন্ধকার ছায়ার মাঝখানে তুমি দাঁড়িয়ে 

আমাকে দেখছো 

বলছো মন খারাপ করিস না ,আমি আছি

ভালো থাকিস । 

 

 

কাঁচ ভাঙে

 


কাঁচ ভাঙে 

... ঋষি 


সারাজীবন নিজস্ব ইন্টারভেলে বুকের ভিতর  কাঁচ ভেঙেছে  


আগে কাঁচ ভাঙলে কষ্ট হতো 


আজকাল শুধু চিৎকার করতে ইচ্ছে করে ,


আগে কাঁচ ভাঙলে ছড়িয়ে পড়তো সময়ের মেঝেতে কুচি কুচি হয়ে 


আজকাল আমার ভিতর চিৎকারগুলো তোমার কাছে পৌঁছায় 


খুঁজে নেয় নরম বালিশ ঘুমোবার জন্য। 


.


ভুলে যেতে চাই  কবে শেষ দেখা হয়েছিল তোমার সাথে


শুধু মনে রাখতে চাই একটাই  দোমরানোমোচড়ানো হৃদয় আমাদের 


ভুলে যেতে চাই সেদিন বৃহস্পতিবার ছিল কিনা 


শুধু মনে রাখতে চাই কিছু মুহূর্তের লক্ষীর পায়ের ছাপ আমার বুকে 


মনে রাখতে চাই না কে কেঁদেছিলো কার বুকে মাথা রেখে 


শুধু মনে করতে চাই সেদিনও কাঁচ ভেঙেছিল নিজের মতো করে 


তবে সেদিন কষ্ট হয় নি। 


.


এমনটাই হয় 


কষ্টগুলো জমতে থাকে নিজেদের ডাকবাক্সে ভুল ঠিকানায় 


তোমার আঁচল লুটিয়ে পরে আলুথালু ভাবে 


আমি কুড়োতে থাকি 


আমি ছায়া ভেবে অন্ধকারকে জড়িয়ে ধরি আঁচলের মায়ায় 


ভুল হয় 


ভুল ভাঙে 


ভাঙে কাঁচ 


তারপর ইতিহাস ,ভূগোল ,দার্শনিক মতবাদের সমাপ্তি। 


আমি খবর রাখি কবে আল্পসের মাথায় বরফ গলে 


কবে টেম্স নদী হঠাৎ ছুটে আসে তোমার বুকে 


হঠাৎ কবে কাঁচ ভাঙে 


শুধু তোমাকে জানানো হয় না 


আজকাল কাঁচ ভাঙলে আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করে। 

Friday, January 14, 2022

চাওয়া পাওয়া

 চাওয়া পাওয়া 

... ঋষি 


একসাথে বাঁচা যাবে না জানি 

   তবুও জানো আমার অদেয় কিছুই নেই  তোমাকে ,

          ছিল না কোনোদিন। 

তুমি তালপাতা ছাওয়া এক স্বপ্ন চাইলে 

                 আমি দেখলাম 

তুমি অনবরত হাওয়ার সাথে আমার মুক্তি চাইলে 

                  আমি দিলাম 

তুমি রৌদ্র খুঁজে ক্রমাগত খুঁজে আনতে থাকলে আমার পথ চলা 

                   আমি হাঁটলাম। 

.

প্রশ্ন করি নি কখনো 

বিশ্বাস করো আজ চিরটাকাল আমি হেঁটে গেছি তোমার মতো করে 

বদলে শুধু চেয়েছি আশ্রয় ,

 কেন যে রবিঠাকুরের গানটা শুনলে হঠাৎ কেন কাঁদতে ইচ্ছে করে

" আমার মুক্তি আলোয় আলোয় " 

জানি না ,

আর আজকাল জানতে ইচ্ছে করে না মুক্তির মানে 

শুধু যখনি আমি তোমার কবিতা লিখি 

বিশ্বাস করো আমি  উড়তে থাকি 

        ভাসতে থাকি 

        হাসতে থাকি। 

.

আমি জানি তুমি জানো  না 

     আমি শুধু একটা রাত  চেয়েছিলাম - ধর্মের সাথে 

     আমি শুধু একটা হাত চেয়েছিলাম - মুক্তির  সাথে 

     আমি শুধু তোমায় চেয়েছিলাম - সময়ের সাথে 

কিন্তু কিছু পাই নি বলবো না 

      আমি পেয়েছি তোমায় - কবিতার সাথে 

       আমি  পেয়েছি মুক্তি - তোমার সাথে 

      আর পেয়েছি স্বপ্ন - অনেকটা ভালোবাসার সাথে। 

.

একসাথে হাঁটা যাবে না জানি 

          তবু আমার ওদের অদেয় কিছু নেই তোমাকে ,

                   শুধু আমার মৃত্যুতে তুমি অধরা থেকো। 

      

চিৎকার

 


চিৎকার 

... ঋষি 


অদ্ভুত আকুতি ,

       তুমি শুনতে পাও কিনা জানি না

আমি চিৎকার করি 

আমি আরো জোর চিৎকার করতে চাই তোমার নাম ধরে 

জানি না তুমি বুঝতে পারো কিনা। 

.

সিন্ধু সভ্যতার গভীরে তোমার পায়ের ছাপ 

মিশরের পিরামিডের ভিতর তোমার প্রাচীন সুগন্ধিত শরীর 

আটলান্টিকের শীতল জলে তোমার মুক্তি 

কোনো সকালের প্রথম দেখা সেই রুপোলি পাখি 

আমি জানি 

তুমি জানো ,কারণ তুমি খুঁজে পেয়েছো মায়া সভ্যতার কাজল। 

.

তোমার কাজলমাখা ও চোখে আমার মুক্তি 

তোমার গভীরে শুয়ে থাকা আমার কবিতায় আমাদের মুক্তি 

এই মহানগর ,হাজারো চিৎকার 

সব শুধু কাব্য 

কিন্তু আমি জানি তুমি জানো একমাত্র মহাকাব্যরা  জীবিত থাকে। 

জীবিত থাকে বুকের পাঁচিলে পুরোনো সেই শ্যাওলা 

পুরোনো কিছু মুহূর্ত 

আমি জানি তুমি জানো শহুরে জঙ্গল থেকে ব্যতিক্রমী এক ইতিহাস 

গভীর জঙ্গলের মাঝে এক এক শপিংমলের সিঁড়ি বেয়ে 

মানুষের আভিজাত্যের জুতোর ছাপ শুধু সম্পর্কের ঠিকানা খোঁজে 

আর খালি পায়ে হাঁটা সেই মন নামক বাউলটা খোঁজে মুক্তি  

সেখানে শুধু মাটি 

সেখান শুধু অনন্ত এক আকুতি 

          আর আমার চিৎকার সেখানে,শুধু তুমি ।  

কবিতার মেয়ে

 


কবিতার মেয়ে 

... ঋষি 


এখন সময় হলো 


আমার সদ্যসমাপ্ত কবিতার পাতায় ঘুমিয়ে আছো  তুমি ,


প্রশ্ন আসতেই পারে  কে তুমি ?


একটু আগে যাকে নিয়ে আমি  নিদারুন কাঁটাছেঁড়ার পর 


আবার জুড়তে বসেছি গর্ভবতী রূপে 


আমার কবিতার মেয়ে। 


.


কিছুতেই শান্তি আসে না 


অসংখ্য শব্দরা প্রথম পরা প্রেমের মতো ঘুরতে থাকে 


তাদের অসম্ভব চোখ ,অসম্ভব ঠোঁট ,অসম্ভব ভাবনা, 


আমি তার স্বপ্নের হাতছানিতে অবাক হই 


প্রতিটা কবিতাতে তুমি অর্থাৎ আমার কবিতার মেয়েটা  হাঁটতে থাকে 


তার পায়ের ছাপে ফুটে ওঠে সময়। 


.


আমি যে এক বদ্ধ পাগল 


অপেক্ষা করি তার জন্য ,ভয় পাই  যদি সে মুখ ফেরায় 


তাই ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকি তার অপেক্ষায় শহরের পথে ,ঘাটে 


তাই  তার জন্য অপেক্ষা করি প্রতিটা রাস্তায় ,


প্রতি মুহূর্ত সময়ের ভিতর আর বাইরে। 


আমি শুধু তাকে দেখি ,তার কথা ভাবি 


আমার কবিতার মেয়ে এক গর্ভবতী নারী ,এক স্বপ্নের প্রেম 


আমি শুধু এক গভীর ডুবুরি 


ভাবনার গভীরে শুয়ে থাকা অনভূতিতরা ঢেউ তোলে 


আমি মুগ্ধ হই  


আমার ভিতরের সেই মেয়েটা হেসে ওঠে 


হয়তো সে তার অভিমান ,দুঃখ ,আনন্দ ,প্রাপ্তি ,অপ্রাপ্তি 


সব এক জোট করে চিৎকার করে 


আমার কবিতা আসে 


   আমার কবিতা আসে।    

Tuesday, January 11, 2022

সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে

 

সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে
.. ঋষি 

ভিতরে ক্রমশ আগুনের ভিতর  বিস্ফোরন 
আমার মত কেউ পিঠ থাবড়ে আমাকে বলে সব ঠিক হয়ে যাবে
বৃষ্টি আসবে মাটি ভিজবে
শীত আসবে ঘা শুকোবে, কিন্তু সম্পর্ক? 
সে যে উড়বে শুকনো পাতার প্রাচীন কাব্যের দেওয়ালে
আর অনবদ্য ভুমিকায় জীবন কেতাদুরস্থ কর্পোরেট তখন।  
.
আমি সব বুঝি, ভীরু চোখে তাকাই চারপাশে 
আমার চেনা মানুষের চোখে তখন ভয় 
মমতাজ গোলাপ হাতে কতক্ষন দাঁড়ালো তাজমহলে 
ঠিক কতক্ষন? 
সদুত্তর পাই না
সবাই উন্মুখ হয়ে থাকে আমার মতো 
আমাকেই বলবে বলে সব ঠিক হয়ে যাবে। 
.
তাই অন্ধকার চোখে আমি অন্ধ হয়ে থাকি
তাকিয়ে থাকে দূরে তাজমহলে একলা দাঁড়িয়ে মমতাজ 
আমি শুনতে পাই চিৎকার করছে জাহাঙ্গির বাঁচার যন্ত্রনায়
আমি চোখ খুলি না
কারণ এই অন্ধকার আমার ভরসা 
          আর আলো হলেই 
              কেউ না কেউ জোঁকের মতো ছেঁকে ধরবে আমায়  
                                 বলবে সব ঠিক হয়ে যাবে। 
অথচ সত্যি হলো কিছুই ঠিক হয় না চলন্তিকা 
আমি প্রতিটা স্টেশনে নেমে কামড়া বদল করে দেখেছি
তুমি নেমে গেছো অন্য স্টেশনে, না হলে ট্রেনের সময় বদলেছে
কারণ তুমি সব কিছু ঠিক করতে চাও নি 
অনেকটা জেনেশুনেই হয়তোবা তুমি  ট্রেন মিস করেছো। 

দুটো মানুষ



দুটো মানুষ 
.. ঋষি 

ক্রমশ ক্লোজসার্কিটে মেঘ হবে
হবে এই মহানগরে ক্রমশ দুটো মানুষ আতশ কাঁচের নিচে
কেউ জানলো কি না জানলো, তাতে কি 
দু জন যে একইরকম দেখতে। 
.
ক্রমশ ইট ছুঁড়লে পাটকেল 
ক্রমশ দুটো মানুষ এই মহানগরে উল্টোপথে হাঁটবে 
তাদের হাঁটার পথে মেঘ হবে, অবশ্যই বৃষ্টি, কাদা, ঋতুকালীন প্রবেশ নিষেধ 
কেউ জানলো কি না জানলো তাতে কি 
দু জন যে একইরকম দেখতে। 
.
ক্রমশ দিন বদলাবে
এই মহানগরের রাস্তার ক্রমশ চুল পাকবে, চামড়ায় ভাঁজ
ক্রনশ চোখের চশমায় ধরা দেবে এক অসমাপ্ত বাঁচা, 
ক্রমশ মহানগর দোষ দেবে নিজেকে 
কেন এই অন্ধকার?
কেন লাইটপোস্টের নিচে পোশাক বদলানো ছায়ারা নিজেকে খুঁজছে? 
কেন পথ হারানো মাতাল এই মহানগরে আশ্র‍য় খুঁজছে? 
খুঁজছে নিজের মতো দেখতে অন্য একটা মানুষ 
কেউ জানলো কি জানলো না তাতে কি 
দুটো মানুষ বাঁচবে 
কারণ বাঁচাটাই নিয়ম
আর অনিয়ম ওই দুটো মানুষ একইরকম দেখতে।

Thursday, January 6, 2022

আত্মহত্যা



আত্মহত্যা
.. ঋষি 

কাল আমি কি খেয়েছিলাম মনে নেই 
তবে আজ সারাদিন তারজন্য আমি বমি করেছি সারা সকাল 
গ্রাম থেকে শহর 
শহর কলকাতার নোংরা এঁদোগলি, মরা কাক, ব্যবহৃত কন্ডোম
মানুষের মাথার ভিতর চলতে থাকা আগামীর ভাবনায়। 
.
আজ লিখছি, কি লিখছি, কেন লিখছি জানি না 
নেশার ঘোর 
খোলা বোতামের গায়ে আটকানো জামা কিংবা সাজানো পাউডার কেশে মানুষের মুখ,
একটা তরজা চলছে 
বুকের ভিতর বিদ্যুৎ রহর্ষের মানে 
চেনা ধুকপুক চিনতে পারছে না।
.
হয়তো আমি কাল খেতে চেয়েছিলাম
তোমাকে একটা চুমু কিংবা তোমাকে কোলে করে শোয়াতে চেয়েছিলাম আমার লোমশ বুকে, 
কিংবা আমি খেতে চেয়েছিলাম দোয়েল পাখির পালক
আলোর বন্যা, কুমারী ধান ,তোমার লাল লিপস্টিকে লেগে থাকা পশ্চিমি বাতাস
কিংবা জানলার বাইরে আমার শৈশবকে
পাই নি
তাই আজও আমি নেশা করতে চাই 
শব্দ মেশানো কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চাই নিশুতি রাতে,
কাল সকাল থেকে আমি আবার বমি করতে চাই 
এই শহরের প্রতিটা রাস্তায় একটা আত্মহত্যা প্রতিষ্ঠার জন্য।

আগামীকাল




আমি বল্লাম তৈরী হও নারী 
আগামী পৃথিবিতে তোমায় জন্ম দিতে হবে শয়তান এবং ঈশ্বর 
আমি বল্লাম সাবধান পুরোহিত ও ইমাম 
তোমাদের সত্যি ধর্মের পাশে মিথ্যের দরজা খুলতে হবে, 
আমি বল্লাম কারণ আমি মানুষ 
আমি আতশকাঁচে দেখতে পাচ্ছি পিঁপড়ের মতো হাজারো মানুষ যারা স্বার্থ খুঁজছে। 
.
মানুষ বুদ্ধিমান 
অথচ আমি দেখছি মানুষগুলো কতো বোকা তারা
লুকোনো সত্যির আড়ালে  বোকার মতো মিথ্যে খুঁজছে 
নিজেকে প্রতিপন্ন করছে ঈশ্বর 
অথচ ফুটে উঠছে মানুষের শয়তানের আদলে 
এক গভীর কাল। 
আমি বল্লাম নারী তুমি চোখ নামাও 
আমার ঐতিহাসিক কাব্যগ্রন্থের শেষটুকু লিখছি তোমার আঁচলে 
তুমি বল্লে দিন বদলেছে 
আমি তোমার আগামী সন্তানের গর্ভ হতে পারি কিন্তু মাতৃত্ব না, 
আমি বল্লাম ধর্ম এবার ভোল বদলাও 
সমস্ত ধর্মগুরুরা নিজেদের পোশাক বদলালেন 
কারন তারা খুঁজে পেয়েছেন ধর্মের থেকে লাভবান ব্যাবসা। 
আমি অবাক হলাম সত্যি 
মানুষ কত বোকা 
তারা কত সহজে স্বার্থপর শয়তান 
তারা কত সহজে বেহিসেবী ঈশ্বর 
আর নারী সে যে যুগ গর্ভ আগামীকাল। 

Tuesday, January 4, 2022

জানি না আর কতদিন

আমি জানি সে আমাকে দেখবে একদিন
হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে নেবে,
সেদিন ঘড়ির কাঁটায় যিশুখ্রিস্ট ঝুলে থাকবে আপন স্টাইলে
সেদিন আকাশের চাঁদে ঝুলে থাকবে মুহুর্ত মাংসের দোকানে মাংসের মতো 
আসলে সত্যি হলো এই শহরে সব বিক্রি হয় হৃদয়  ছাড়া। 
.
আমি জানি একদিন এমন আসবে 
সে আমাকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেবে, 
অথচ বিশ্বাস করুন এই শহরে যতো আলোরস্তম্ভ আছে
তাকে আমি ততবার চুমু খেয়েছি প্রতি রাতে 
কারণ আমি বিশ্বাস  করেছি তার কথা
গভীর ধ্যানের জন্য রাত্রের থেকে ভালো সময় নেই। 
.
একদিন এমন আসবে যেদিন সে আমায় দিকে আঙুল দেখাবে
বলবে ওই যে অসময় যে আমাকে বলেছিল ভালোবাসি, 
অথচ বিশ্বাস  করুন তাকে আমি চিনতে চেয়েছি আমার রক্তে
অথচ সে আমায় বলেছে তোর সংগে বেশিদিন থাকা যায় না
কারণ আমি জানি 
আমার মতো কেউ ভালোবাসেনি তাকে কোনদিন। 
আমি ভালোবাসতে পারি 
আমি চিৎকার করতে পারি অন্ধকারে তিনপায়ের সেই কুকুরটা মতো
আমি একলা দাঁড়াতে পারি এই শহরের অন্ধকারে তার অপেক্ষায়
কিন্তু কিছুতেই বলতে পারবো না
জানি না আর কতদিন।


Sunday, January 2, 2022

এক বোকার দিনলিপি



এক  বোকার দিনলিপি 

... ঋষি 

.

বোকা এবং ঈশ্বর 

.

সহজ কথা সহজ ভাবে বলা ভালো 

বোকা যারা তারা এমন কিছু বুঝতে পারে 

যা একমাত্র ঈশ্বর পারেন ,

মানুষ মাত্র সকলেই সময়ের অধিবাসী আমরা

অথচ সময়কে মিথ্যে করে ভালোবাসতে বুদ্ধিমানেরা পারে

আর বোকারা পারে বোকা সাজতে চিরকাল।

 .

শুকনো পাতা ও ঈশ্বর 

.

পাতার গল্প এটা কিংবা পাতা ছেঁড়বার 

সময়ের সাজে দূরে দাঁড়িয়ে বসুন্ধরা নাটকের মঞ্চস্থল 

আমি বোকা সাধারণ ,

মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে ঈশ্বর বলে চলেছেন সত্যি উপাখ্যান 

অথচ তুমি শুকনো পাতার প্রেমিকা 

সবুজ ছেড়ে  শুকিয়ে যাওয়ার গল্প লিখছো। 

.

ষড়যত্র এবং ঈশ্বর

.

সত্যি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্রে চোখ মেলাও 

চোখমেলাও ঈশ্বরের চোখে ,

যে কথা বলা হয়ে গেছে আজ ,কাল ,পরশুর গল্পে 

তাকে রাতের অন্ধকারে ভালোবেসে লাভ কি ? 

সত্যি যদি ঈশ্বর হতো 

তবে মানুষের ভাবনায় পূজারী শব্দটা থাকতো না।

.

মানুষ ও ঈশ্বর 

.

আদমের জীব হয়ে সত্যির জিভে অন্ধকার শুয়ে 

জানি সকলে পারে না রৌদ্র হতে 

সকলে পারে না লিখতে সত্যি একটা ভালোবাসার গল্প 

কেউ কেউ ভালোবাসাকে রাস্তায় পুজো করে বেশ্যার শরীরে 

আবার কেউ কেউ দরজার পাদানিতে লক্ষীর পেঁচা আঁকে  

অথচ বুদ্ধিমানরা বোঝে না বোকারাও বোঝে। 

Saturday, January 1, 2022

আমি জানি

 


আমি জানি 

... ঋষি 


আমি জানি এমন বিকেল আসবে ,তুমি ধরবে হাত 

বলবে এবার কবিতা ছাড়ো 

চলো হেঁটে আসি শব্দের রাস্তা ধরে নিস্তব্ধে শহরে,

অনেক অভিমান জমেছে 

অনেক হিসাবের উপঢৌকন শহর সাজিয়েছে 

এবার আমাদের নিস্তব্ধতা দরকার। 

.

আমি জানি এমন রাত্রি আসবে ,তুমি ধরবে হাত 

বলবে আর অন্ধকারের কবিতা নয় 

বরং চলো আজ আমরা ঘুরে আসি তারাদের দেশে 

অনেক অন্ধকার হেসেছে 

এখন খোলা আকাশের গায়ে শুধু অন্ধাকরে আমাদের কথা 

যে কথায় কোনো লোভ নেই ,শুধু বাঁচা। 

.

আমি জানি এমন সকাল আসবে ,তুমি বাঁধবে আমায় 

বলবে ঘুম খোলো হে কবি 

তুমি কি বোঝোনা আমার  খোলা বুকে আজ আগুনের দাবানল

তুমি কি বোঝো না সময়ের ঘরে শব্দরা আজ নিস্তব্ধ 

আজ তোমার কবিতা না 

এইবার শুধু তোমাকে দরকার।.

   

স্বপ্নপুর

 খবর পেয়েছি তুমি স্বপ্নপুরে আছো 

আমি ছুটে গিয়ে ধরে ফেলি বসিরহাটের ট্রেন 

জীবন আর বেশ্যার পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে দুলি 

অপেক্ষা গন্তব্য। 

.

অথচ আমি জানি পৃথিবীর মানচিত্রে  স্বপ্নপুর বলে কোন দেশ নেই 

শুধুই আছে গন্তব্য। 

...


ঋষি 

বিস্ময় বাউল

 


বিস্ময় বাউল 

... ঋষি 


" আমায় ডুবাইলিরে আমায় ভাসাইলিরে
            অকুল দরীয়ায় বুঝি কুল নাইরে। "
.


জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে এ জীবন 


কারা যেন ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে মিথ্যা প্রগতির নামে   ,

কারা যেন তুমুল ঝড়ের এগিয়ে আসছে আমার দিকে 


কাল্পনিক সময়, লোকাল মেইল ট্রেনের মতো আমার পিছনে 


সময় সরে যাচ্ছে দূরে দৃষ্টির বাইরে 


আমার ঝাপসা কাঁচে রাতঘড়ি স্বপ্ন হয়ে যাচ্ছে। 


.


ক্রমশ গাছে থেকে ঝরে পড়ছে শুকনো পাতা 


কাল রাতে শেষ ফুলগুলো তুলে নিয়ে গেছে এই অন্ধ শহর ,


অনেকদূরে মালগাড়ি বলে চলে গেলো কাল সে ফিরবে 


আমি কি তবে সব ছেড়ে লাল মাটির পথে বিস্ময় বাউল ?


আমি তৃষ্ণার্ত শুস্কতায় কবিতার দিকে তাকাই 


দেখি জীবন আর যৌনতার মাঝের সেতুটা হঠাৎ দুলতে থাকে। 


.


জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে এই জীবন 


তুমি হাসো ,বলো 


         কবি তুমি বিস্ময় বাউল তোমার দুহাতে স্পর্শ ,


আমি বলি আমি ঈশ্বর হতে চাই নি চলন্তিকা 


আমার তো মানুষের খোঁজ 


জীবনের খোঁজ। 


কি সাধ্য আমি  ভাবনা তুলে রাখি সময়ের কুলুঙ্গিতে 


কি সৌভাগ্য আমার আমি জীবনের পাতায় তোমায় লিখি 


তুমি ছল ছল চোখে তাকিয়ে বলো 


            কবি তোমার আঙুল তুমি একলা রেখো সযত্নে 


             যে হাতে তুমি শব্দের গৃহস্থালি সাজাও 


 সে হাতে জানলার কপাটে ওপারে সময়কে রেখো 

আমি সেখানে ব্রাত্য 

আমাকে রেখো চিরকাল তুমি বাউলের পথে। 

সেই মেয়েটা

 


সেই মেয়েটা 

.. ঋষি 


সময় জানে আমি কাকে চাইছি 

যেখান পাহাড় আর সমুদ্র মিশে যায় এই পৃথিবীতে 

কিংবা যেখানে আলো আর অন্ধকারে মেশে 

ঠিক সেখানে দাঁড়িয়ে সেই মেয়ে ,

আমার ওকে চাই

ওই সে গতশতাব্দীর হারিয়ে যাওয়া তৃষ্ণা ,ওই সে । 

.

ওর নগ্ন শরীর আমি ঢেকে দেব আমার কবিতার শব্দে 

তোমরা কি জানো 

ওর ত্বক কুয়াশার থেকেও নরম ,ওর বুক ছুঁয়ে নেমে গেছে অজস্র পবিত্র যদি 

ওর ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে আজ এত সময় কেটে গেলো 

তোমরা কি চেনো তাকে 

আমার ওকেই চায়। 

.

সময়ের প্রতি স্তরে এই সভ্যতার হাজারো স্তর ছুঁয়ে 

আমি তাকে দেখেছিলাম গত বর্ষায় একলা দাঁড়িয়ে ভিজতে 

কোথায় সে ?

ওই ধরো প্যারিসের কোনো শহর 

কিংবা সিন্ধু সভ্যতার দরজায় সেই পোড়া মাটির মেয়েটা 

মেক্সিকোর কোনো গ্রাম ,মায়া  সভ্যতার সিঁড়ি 

এই মহাবিশ্বে কোনো ব্ল্যাকহোল 

যার সংজ্ঞা হয়তো আছে 

কিন্তু উত্তর কারোর জানা নেই 

সেই মেয়েটাকে আমি চাইছি। 


তুমি বেঁচে থাকবে আমার ভিতর

 


তুমি বেঁচে থাকবে আমার ভিতর 

... ঋষি 

দেখো আমি ঠিক ফিরে এসেছি তোমার কাছে 

তোমার সাজানো  গৃহস্থালি 

পিঠ করে বাঁধা বিনুনি আর তোমার অধিকারের গল্পে। 

.

দেখো এখন শীতের শেষ বেলার রৌদ্র ছুঁয়ে ফেলতে চাইছে তোমায় 

সদ্য ফেলে আসা পার্কস্ট্রিটে পাশাপাশি পেংগুইন হাঁটছে 

অথচ আমি হাঁটছি তোমার মাঝে ,

বদলানো ক্যালেন্ডারের পাতা খুলে সাল ,তারিখ ,ঘড়ির কাঁটা 

কেউ আমার ছুঁতে পারছে না 

কারণ আমার মতো কেউ অবাক হতে পারে না। 

.

আমি অবাক হচ্ছি 

আমি অবাক হয়ে দেখছি কবরখানা ,শ্মশানের আগুনে  

ভিড়ের মধ্যে হারাচ্ছি ডাকপিয়নের ভাবনা ,

জানি মৃত্যুর ভিতর আমার শরীর 

জানি সেই শরীরে তোমার ছায়াস্নান 

জানি সেই শরীরে তোমার কবিতা আর কণ্ঠ 

জানি সেই শরীরে অনুপাতে ঘোরে ফেরে তোমার গৃহস্থালি 

তুমি ছুঁয়ে আছো আমায় 

ফাঁকা বিছানার পাশে আমার শরীর এখন শীতল 

বুঝতে পারছি 

আমি না থাকলেও 

তুমি বেঁচে থাকবে আমার ভিতর। 


সন্ন্যাসী

 


সন্ন্যাসী 

... ঋষি 


তুমি কি ভাবতে পারো ,আমি ভেবে রেখেছি অনেক আগে 


আমার অনুপস্থিতির সুযোগে কেউ তোমার বিছানায় উঁকি মারবে 


কিংবা অনবরত আদিখ্যেতা লিখে দেবে তোমার চারপাশে 

চলবে না ,


জানি সেই আমি বেঁচে নেই তোমার ভিতর 


তোমার বুকের কেবিনেটে সবকটা হাড় দিয়ে 




আমি বানিয়েছি শকুনির পাশা 


যতই কলিযুগ হোক না কেন  জিত আমারি হবে। 


.


তুমি ভাবতেই পারো আমি আমি সন্ন্যাসী মানুষ 


আমার আবার ঘর 


সত্য ,দ্বাপর আর কলি ,যুগান্তরে আকস্মিক পরিবর্তন 


আমার সন্ন্যাসে আজকাল গেরস্থ ছুঁয়ে আছি ঠিক 


কিন্তু তুমি জানো না বোধহয় 


তোমার ঘরের কলিংবেল আমিই লাগিয়েছি। 


.


তুমি চাইতেই পারো 


ওদের কাউকে তোমার পাশে বসিয়ে খেলে ফেলবে তোমার  মেয়েলি  রহস্য

কিন্তু তোমাকে অনেক আগেই  নোটিশ দেওয়া হয়েছে 


যে হ্যাঙ্গারে আমি জামা ঝোলায় 


সেই জামা কিংবা হ্যাঙ্গারে আমি ছাড়া কারোর গন্ধও থাকে না ,


ভেবো না তোমার গীতবিতান শুকনো গোলাপ 


কিংবা ঠোঁটে লেগে থাকা সিগারেট পোড়া ঠোঁট 


রহস্য লিখছে 



লিখছে সন্ন্যাস 


নিজের ভিতর এক 


এক অন্য আমির। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...