Thursday, August 26, 2021

প্রতিধ্বনি



 প্রতিধ্বনি 

.. ঋষি 


তোমার কাছে  দীর্ঘতম পথচলা  আছে 

আছে নাভিতে কৃষি বিপ্লব 

তোমার জরায়ু জুড়ে থানা পুলিশের ছায়া,আছে সঙ্গম ,আছে বিচ্ছেদ 

 আর আমি তোমার  ঘামে রোপন করে চলেছি সোনালী স্বপ্ন ,

আমাদের দাম্পত্যে শুঁয়োপোকার আনন্দের প্রজাপতি 

অকৃতজ্ঞ চাঁদের সাথে প্রেমালাপ এখানে আলোচনার বিষয়। 

.

তোমার যোনি দখল হয়ে গেলো জ্যামিতিক সূত্রে 

নারীঘটিত অভিধানে ঈশ্বর  শব্দটা কেটে দিয়েছি আমি আজ বহুযুগ 

বরং  তোমার নিতম্বে মঙ্গলপ্রদীপ 

তুমি



আমার এক ন্যাংটো ঈশ্বরী,

শুধুমাত্র বেঁচে থাকার ছলে আমি পতাকা হয়ে উড়ছি 

আর তুমি চলন্তিকা আমার মৃত্যুপ্রস্তরে খোদাই করছো নিজের নাম।

.

তোমার মনখারাপ হলে আমি  রাষ্ট্রের কাছে এ্যানকাউন্টার ভিক্ষে করি

তোমার পিরিয়ড হলে ফসল উৎপাদন শুরু হয় গ্রামে গ্রামে 

 হঠাৎ সময়ের বস্তিতে তখন সবুজ তোহার। 

আমি জেনেছি সময় হলো মহাকাল 

ধরো ৭৬ যখন দুর্ভিক্ষ লেগেছিলো 

কলকাতার পথে ঘাটে তখন ছড়ানো লাশে আমিও ছিলাম 

তুমি তখন সম্ভ্রান্ত গৃহস্থের গৃহিনী 

তোমার অনুভবে তখন  ভেঙে যাচ্ছিল সময় , ভাতের মাড় চিৎকার করছিল 

ভাত নেই শহরে।

তাইতো বলা তোমার কাছে দীর্ঘতম পথচলা আছে 

আমার কাছে মৃত্যুর 

আর মৃত্যুর প্রতিধ্বনিতে অজস্র উত্তর 

তুমি চলন্তিকা। 


সিনেমা চলছে

 সিনেমা চলছে 

.. ঋষি 


তুমি কি জানো চলন্তিকা তোমার মেয়েলি শরীরটা 

শুধু আদরের ঘুমে ব্যস্ত ,

রাতদিন তোমার উপাখ্যানে  মিশে থাকা হাজারো দিনের ক্ষুধা 

ক্ষুধা শরীর নয় 

মনের কোন আত্মহত্যা। 

আমাদের আত্মহত্যার মুখোশ সরে গেলে  

আমাদের দোষারোপগুলো ঘাস খাবে পুরোনো সামাজিক জাবনায় 

অথচ  এই  পৃথিবীর সময়ের কাকগুলো ছিড়ে খাচ্ছে তোমার গাল

তোমার স্লিভলেস ভাবনায় আমি পাথর হয়ে জমে আছি 

কারণ পুরুষের রক্ত কখনো বদলায় না। 

মেঘেরা ঘুরতে যাবে 

এই আছিলায় এই শহরে বৃষ্টি পড়া বন্ধ হয়ে যাবে এমন নয় ,

তোমার প্রথম নারী স্বত্বার অনুভবে 

যেমন বেড়ে গেছিল হঠাৎ মেডিসিন দোকানের সেল 

চলন্তিকা তোমার  মেঘেদের খবর কি ?

তারাও কি বৃষ্টিতে ভিজছে আমার মতো। 

.

আমি জানি প্রেমিকার যোনিতে একাকিত্ব বড় কথা নয় 

বিপ্লব সেখানে সদ্য জেগে ওঠা সময়ের খোকা ,

তোমার মনখারাপ  হলে আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না 

চলন্তিকা মনে হয় উলঙ্গ এই শহরটা কেন 

সত্যিকে মিথ্যে বলে। 

৫ 

এখন কটা বাজে ?

মহাজাতি সদনের গেটে যে মেয়েটা দাঁড়িয়ে থাকে প্রেমিকের উদ্দেশ্যে 

বারংবার ঘড়ি দেখে 

তার কাছে এই শহরটাকে বড় একলা মনে হয় 

বারংবার মনে হয় ওই বোধহয় সারা শহর জুড়ে লেগে গেছে চাকা জ্যাম 

আর তার প্রেমিক বোধহয় তার মতো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। 

শরীরের শহরে দেখি  গন্ধমাখা এলাচ

তোমার যুদ্ধগুলো এককালীন কোনো তিতুমীরের প্রতিবাদ হতে পারে না 

ভালোবাসা শরীরের ঘামেও থাকে অসময়ে

একলা ধর্মঘটে এই শহরে কিছু বদলায় নি কোনোদিন 

আসলে আমাদের গল্পটা যে হিট সিনেমার গল্প নয়। 


তোমাকে তোমার মতো

 


তোমাকে তোমার মতো 

... ঋষি 


তোমাকে তোমার মতো করে ভালোবেসেছে যে 

তোমার প্রতিটা কথা যে শুনতে চেয়েছে ,জানতে চেয়েছে তোমায়

তাকে সোঁপে দেও  ভারতবর্ষ। 

সাঁওতালপরগনার সেই হাফিজা বিবি যার কোনো নাগর নেই 

অথচ বাড়িতে আছে ছটা বাচ্চা 

তার হাতে সোঁপে দেও ভারতবর্ষ।  

.

শুধু অনেক যন্ত্রনা কাঁদে একলা মায়ের বুকে শুয়ে  

শুধু অনেক মায়েরা কাঁদে ফাঁকা হাঁড়ি আর সমাজের গন্ধ বুকে 

তাদের বলা দরকার শুধু কান্নায় ভারতবর্ষ বড় হবে না 

শুধু কবিরাজের ওষুধে এই রোগের চিকিৎসা হবে না 

কান্না দিয়ে নদী হতে পারে 

কিন্তু নদী মানে যে গঙ্গা নয়। 

.

কান্না দিয়ে আসলে কিছু হয় না 

কেঁদেছিলাম তাইতো আজ ভারত আর পাকিস্তান 

কেঁদেছিলাম তাইতো আজ ভগবান আর আল্লাহ 

কেঁদেছিলাম তাইতো আজ উর্দু আজ বাংলা 

শুধু কেঁদেছিলাম 

কিন্তু শুধু কেঁদে আমরা বুঝি নি 

কোনটা চেতনা

কোনটা মুক্তিযুদ্ধ

কোনটা ধর্ম

কোনটা আন্দোলন 

কোনটা গুজব

আজকাল কাঁদতে কাঁদতে আমরা ভুলে চলেছি রোজকাল বাঁচা 

সম্পর্ক আর সময়। 

.

তবুও বলা তোমাকে তোমার মতো যে ভালোবেসেছে 

সে হলো তোমার দেশ 

তোমাকে বদলায় নি সে 

তুমি বদলেছো তাকে বিকৃত মানসিকতায়। 

মিথ্যা এই বিজ্ঞাপন

 মিথ্যা এই বিজ্ঞাপন 

... ঋষি 

তোমার শাড়িতে ,শায়ার  দড়িতে ,ব্লাউজের হুকে ,অন্তঃবাসের নিস্তব্ধতায় 

 বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ফিরে এলো  চুপচাপ সঙ্গম, 

তার গন্তব্য নিউটাউন বিশ্ববাংলার গেটে লাগানো বিজ্ঞাপন 

বাংলা ,সোনার বাংলা ,

একটা বল হারিয়ে গিয়েছে আজ বহুদিন বাংলার 

শুধু স্তম্ভটা রয়ে গেছে। 

.

পৃথিবীর সব হাসপাতাল হয়ে যাক  ঈশ্বরের দরজা 

পৃথিবীর সব কারাগার হয়ে যাক রক্তের দাগ 

পৃথিবীর সব মহীরুহ গাছ হয়ে খুলে দিন লাইব্রেরির দরজা 

পৃথিবীর সব তুমি হয়ে যায় সত্যি 

এ সব যন্ত্রণার জন্তুগুলো আর যাতে ছিঁড়ে খেতে না পারে আমার বাংলা 

বাংলার ভাষা থেকে ভাষান্তর ঘটুক বেদ পর্যায়। 

.

আমি তো চিৎকার করছি 

তোমার শাড়িতে ,শায়ার  দড়িতে ,ব্লাউজের হুকে ,অন্তঃবাসের নিস্তব্ধতায় 

 বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ফিরে এসেছি বহুদিন একাকী সঙ্গম, 

কোমরে তুলে নাও আমাকে

তোমার কোমরের উচ্চতায় একলা কাঁদছে আমার শৈশব। 

তোমার পাশে শুয়ে পড়ি, ঘুমিয়ে পড়ি 

তোমার গর্ভে হত্যা হয় আমার না জন্মানো সন্তান,

যেমন হৃদয় বলছে আমি একটা গাছ 

যেমন সময় বলছে তুমি আমার মাটি 

আর বাংলা ,

আমার সোনার বাংলা 

পাকসার্কাসের মা ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে গুনে চলেছে 

একটা ,দুটো ,তিনটে 

তারপর 

মিথ্যে এই বিজ্ঞাপন। 

বলাৎকার

 বলাৎকার 

... ঋষি 

কেউ কি কখনো খুঁজে পেতে চেয়েছে পৃথিবী ?

                                                                        এই মহাবিশ্বে 

কৃষ্ণ গহবর?

                                          সেটা কি স্ট্যালিনের তৈরী একটা থিওরি ,

কেউ কি কখনো কুড়াতে চেয়েছে  নিজেদের বিগত জন্ম?

না কুড়োনোর স্বভাবে প্ৰাৰ্থনা সংগীতে সকালের শিশুদের শেখানো হয়েছে 

মিথ্যে ভদ্রতা। 

.

আমি স্কুলে যাই নি 

তবুও জানি পৃথিবীর আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের থেকে বেশি 

আমি ইতিহাস  পড়িনি

তবু জানি কোলকাতার  দুর্গ কেন ভেঙে পড়েছিল পলাশীর মিথ্যেতে 

আর সাহিত্য 

সে হলো লেজকাটা সেই কুকুর যে নিজের বিরক্তিতে নিজেকে কামড়ায়।  

.

কেউ কি কখনো খুঁজে পেতে চেয়েছে পৃথিবী ?

সকলেই তো খুন করেছে এই সভ্যতা থেকে নদীর দেশের গল্পটা 

যারা হিটলার থিওরিতে বলাৎকার করে চলেছে চাঁদকে 

প্রশ্ন করেছেন কখনো 

তারা কতজন ছিল  যারা নিজের মায়ের চাঁদেও গ্রাফিক্সের পূর্ণতা দেখে। 

এসব ভেবে ভেবে আমি পৃথিবী খোঁজার কথা ভুলেছি

বরং বেশ এনজয় করি আকাশের চাঁদের কলঙ্ক ,

সত্যি বলতে কি সাফল্যের স্তন চুষে ভালোবাসতে শুরু করাটা একটা মিথ 

তারজন্য সামাজিক ব্যাকরণ দরকার নেই 

এই সভ্যতা বেশ্যার যোনিতে পৃথিবীর পুজো করে। 

 

ট্রেন

 


ট্রেন 

... ঋষি 


মাথার ভেতরে একটা ট্রেন দৌড়োচ্ছে 

দৌড়োচ্ছে বিজয় পতাকার পিছনে আমার মৃত মায়ের মুখ। 

.

প্রধানমন্ত্রীও চাকুরীজীবি, 

সামাজিক অক্ষরে বড় বড় হরফে লেখা নিয়মের স্লোগান ,

আমি রেলপথের লাইন ধরে পৌছে যাচ্ছি  মায়ের দুগ্ধবতী স্তনে

চাঁদকে নেশা  বানিয়ে প্রকাশ্যে দেওয়ালে লিখছি 

এই পৃথিবী আমার বাসযোগ্য নয়। 

কে যেন লিখেছিল লাইনটা ?

.

আমি ছাড়া অন্য কেউ  প্রেমিকার স্তনে হাত দিলে 

আমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে উঠি 

বিক্রি করি পুরো দেশটা নগ্ন মিথ্যা মিছিলে শরীর ভরিয়ে ট্যাটু আঁকি 

আর আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে মৃত সভ্যতার মা

তার সাক্ষীতে সই করে আমার কবিতার লাশ। 

.

সময়  তুমি কেন বিক্রি হয়ে যাচ্ছ মিথ্যা হয়ে 

ফুলে ঢাকা কর্পোরেশনের গাড়িতে আমার কবিতার পৌঁছচ্ছে শ্মশানে ,

তোমার শরীর বেয়ে গড়িয়ে নামছে একটা পাহাড়ি ট্রেন 

যেন জড়িয়ে রেখেছে পাহাড়টাকে 

আমার মাথার ভিতর ট্রেন দৌড়োচ্ছে 

তোমার স্তনের শরনার্থীদের মাঝে একটা স্টেশন যেন আমার দেশ ,

তুমি শাড়ি দিয়ে মাছ ঢাকছো 

আর আমি জ্যান্ত  জোৎস্নাতে নগ্নতায় লিখছি  

হোমিওপ্যাথি আর অলিওপ্যাথির তফাৎ। 

কয়েকটি বুলেট

 


কয়েকটি  বুলেট 

... ঋষি 


১ )

কবিতা লিখে

উঠে দঁড়াতে চায় কবি রাষ্ট্রের মুখে থাপ্পর মেরে 

আর আকাশ দেখে কবি ভাবে 

ভালোবাসা এত বড়।  

.

২)

পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বাসী মিথ্যের নাম ঈশ্বর 

আপনি যদি বুঝতে চান 

একবার ঘুরে আসুন দাঙ্গার সেই দিনগুলোতে 

ভারতবর্ষ তখন মিথ্যা ঈশ্বরের দেশ। 

.

৩)

কবি, এ্যাম্বুলেন্স আর সময় 

তিনখানি পাশাপাশি রাখলে হাসপাতালে মর্গে একটা মৃতদেহ উঠে  দাঁড়ায় 

বলে বাঁচতে চাই ,হাসতে চাই 

আমার একটা দেশ দরকার বুলেটপ্রুফ। 

.

৪)

আমাদের সকলের মাথা আছে 

কিন্তু শান্তি নেই ,দেশ নেই, মাটি নেই

শুধু বর্ণমালা দিয়ে দেশ তৈরী হয় না 

দেশ লিখতেও সাধারণ মানুষের রক্ত লাগে। 

.

৫)

আমাদের চোখে ঘৃনা

ভালোবাসা শব্দটা তাই যখন তখন পঞ্চায়েত বিধানে মাথা ন্যাড়া করে 

ভালোবাসার মাথা কাটা যায়  

সারা দেশ জুড়ে বাড়তে থাকে বস্তি আর অর্ধউলঙ্গ মানুষ। 

.

৬))

কবিতা লিখে কিছু হয় না জানি 

শুধু বুকের বারুদগুলো সীসের টুকরোয় ভরে ফায়ার 

সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যে 

আর মিথ্যে মানুষের তৈরী একটা দেশের নাম।   


অনবদ্য বৃষ্টি

 অনবদ্য বৃষ্টি 

... ঋষি 


অনবদ্য শব্দটা অনন্ত 

অলৌকিক হাসি হেসে যতটা গোপনীয়তা তুমি ছুঁয়ে গেছো 

সেই স্পর্শ ছুঁয়ে আমি বুঝতে পারি 

আমার সমস্ত উপন্যাসের পাতাগুলো এতদিন শুধু জ্যালজ্যালে প্রেম ,

একটা কংক্রিটের দেওয়াল 

বোতামখোলা বিষন্নতা আর আংশিক চাহুনি। 

.

অনবদ্য ঘরে ফেরার আগে এসো

এইখানে এসো, 

এখানেই ছড়িয়ে আছে আমাদের সত্তার একটা শহর ,সময় ,মুহূর্ত 

মেঘের ছায়ায় একটা গোপন মেঘলা দিনে 

এসো আমরা বৃষ্টি লিখি। 

.

এই যে চারিদিকে এত ভাঙ্গাচোরা মুহূর্ত

ভেঙ্গেচুরে যাওয়া শহর , রাস্তা ঘাট , মন ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্ন 

 হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি

এসবের থেকে এবার আমাদের মুক্ত হতে হবে। 

বলেছিলাম তোমায় চলন্তিকা অনবদ্য শব্দটা অনন্ত 

স্তব্ধতা আর নীরবতা ভেঙ্গে বৃষ্টি এসেছে এই শহরে

তোমার চুল স্পর্শ করে ভেতরের বৃষ্টিতে ভিজতে চাই আজ ,

যে ধর্মগ্রন্থে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে

আমি অনুভব করছি 

চারিদিক এখন ভিজে যাচ্ছে

ভিজতে দাও। 

জানালার দিকে ওভাবে তাকিও না

ভিজতে দাও ওদের নিজের মতন করে

এসো আমরাও অন্তর্বর্তী বৃষ্টিতে ভিজি তুমুল

এই সময়  হোক কবিতাময়

অনবদ্য বৃষ্টিতে। 


Wednesday, August 25, 2021

আমার জন্য



আমার জন্য 

... ঋষি 


জীবন্ত মৃত্যুর ভিতর আমার স্বপ্নরা ঘুমিয়ে থাকো 

তুমিও ঘুমিয়ে থাকো চলন্তিকা সেখানে 

নরম স্মৃতিতে মাথা রাখো ,কাঁধ রাখো নির্বাসনে

ঘুমোও এবার 

ঠিক যেন স্মৃতির ঘাসে সদ্য জমে থাকা একফোঁটা হৃদয় 

সকাল হতে দেরী এখন। 

.

স্মৃতি এক অসম্পূর্ণ   নারী

যার কোলে মাথা রেখে আছে এই পৃথিবীর আবর্তন 

যার স্তনে ঠোঁট ছুঁয়ে আছে একের পর এক অপেক্ষা 

যার খোলা চুলে আগুন 

বুক পুড়ে যায় 

প্রতিবারে স্বপ্নে চলন্তিকা আমি তোমাকে  জড়িয়ে বাঁচতে চাই। 

.

তুমি কি চেয়েছো ?

আমি পাষন্ড কবিতার শব্দে তোমাকে মুড়ে রাখি দমবন্ধ করে 

নিজেকেই কবি  বলি - স্বপ্নের মাঝে হত্যা করি তোমার ঘুম

একটা স্বপ্নের মেয়ে তোমার ভিতর বেঁচে থাকা আমার বাঁচায়। 

তোমাকে ঘুমোবার অধিকার আমি দিতে পারি 

তোমার ঘুম আমি কেড়ে নিতে পারি

এই মাটির পৃথিবীতে আমি এক ঈশ্বর 

যে তার সময়ের কংকালে ফুল ফুটিয়ে তৈরী করে চলন্তিকাকে।   

আমার মৃত্যুর মাঝে  আশ্চর্য রঙিন এক হাওয়া 

 মাথা রাখো কাঁধে 

ভালবাসা রাখো

আমি বলছি তুমি ঘুমিয়ো আমার জন্য 

তুমি জেগো আমার জন্য। 

ঈশ্বর ও অবলুপ্তি

 


ঈশ্বর ও অবলুপ্তি 

... ঋষি 

অনেকটা ইংরেজি আলফাবেট  এল এর মতো আমরা 


সম্পূর্ণ নগ্ন দুটো শরীর ডেসিমেল গুনছে ,


কিছুক্ষন আগে হয়ে যাওয়া ঝড়ে উড়ে গেছে আমাদের ঠিকানা আর ঈশ্বর


আমরা নির্বাক 


আমরা বুভুক্ষু 


দুটোর শরীর চোখ দিয়ে স্নেহ মাখতে চায়। 


.


শরীর যে এখানে পর্বত আরোহী 


পাশে পরে থাকা তোমার অন্তর্বাসে গতজন্মের স্নেহ ছুঁয়ে আছে ,


বৃষ্টির সাথে শরীরের সম্পর্ক বড় মায়াময় 


শরীর ভেজে 


শরীরে শরীর ভেজে 


এ যে ঈশ্বরের তর্ক করা সমাজ। 


.


কতটা সময় তোমার তোমার তর্জনী বেয়ে 


বৃষ্টির জল 


দুর্দান্ত আবেগ ক্রমাগত সিন্ধুঘোটকের মতো বুকে শুয়ে আছে 


এক সভ্যতার  নগ্ন রোমের দুই মূর্তি।


ঘাড় ,চোখ ,নাক সমস্ত মুহূর্ত সাক্ষী রাখছে সময়ের প্রতিজ্ঞা 


আমরা ক্ষয়ে গিয়ে  হয়তো মিশে যেতে পারি 


আমরা পায়ে পায়ে গায়ে গায়ে প্যাঁচ দেওয়া শরীর বেয়ে নেমে যেতে পারি 


ঈশ্বরের মন্দির সেখানে 


সেখানে শুয়ে অবলুপ্তি 


আসলে নগ্নতা অনেকটা মৃত্যুর মতো 


অনেকটা বৃষ্টির জলে ভেজার মতো একটা আবেগ 


নিজের মানুষ যখন শরীর ছাড়িয়ে তোমাকে ছুঁতে চায় 


তখন নগ্নতা ঈশ্বর আর অবলুপ্তি।  


 

Sunday, August 22, 2021

সত্যির সন্ধানে

 সত্যির সন্ধানে 

... ঋষি 


সুরের দেমাকে বন্দিশ 

সুরের রেখে যাওয়া যতিচিন্হ ,প্রশ্নচিন্হ ,প্রায়চিত্ত 

দাঁড়ি ,কমা আর যন্ত্রনা। 

অযাচিত টিউনিংয়ে গিটারের তারগুলোতে  আজ পৌরাণিক জং 

নির্ভরশীল মাথার হ্যালিপ্যাডে আচম্বিক ল্যান্ডিং 

বিস্ফোরণ 

আমি কিছু শুনতে পাচ্ছি না। 

.

আমি হেঁটে চলেছি একটা টানেলের মতো ভাবনার বুক দিয়ে 

আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার আত্মীয় ,আমার সন্তান ,আমার প্রেমিকা 

আর আমার যন্ত্রনা ,

সকলের হাত,পা  মোরা করে বাঁধা,মুখে কাপড় গোঁজা 

আমরা কেউ চিৎকার করতে পারছি না 

ছিঃ চিৎকার করতে নেই। 

.

ওস্তাদ জাকির হোসেন অনবদ্য শব্দের ঝংকার 

মাথার শব্দকোরককে অস্তিত্বহীন একটা দরজার সামনে দাঁড় করাচ্ছে 

আমার শরীর নেই 

আমাদের শরীর নেই 

আর মন ,না আমাদের থাকতে নেই। 

পাঁচতলার ছাদের উপরের রেলিঙে আমি হাঁটছি 

আমরা সকলে হাঁটছি 

ভয় লাগছে 

মৃত্যু ভয়। 

.

ওপর থেকে দেখা পৃথিবীর চারিদিকে শুধু ফর্মুলা দৌড় 

ভাঙছে ,গড়ছে না মরছে না 

হারছে না 

কষ্ট পাচ্ছে 

সত্যি বলতে পারছে না।  


আমি ভালো নেই

 আমি ভালো নেই 

.... ঋষি 

দুঃখগুলো কিলবিল করছে মাথার ভিতর 

হাজারো দোষারোপ 

হাজারো দুর্বলতা যেন কেঁচো খুঁড়ছে কাঁচা মাটির সময়ে ,

আমি সত্যি বলতে পারছি না 

আমি সম্পর্ক বলতে পারছি না 

বিশ্বাস করো চলন্তিকা আজ বহুদিন আমি কবিতা লিখতে পরিচয় না। 

.

সাজানো দ্রাঘিমাংশে নিজস্ব অক্ষরেখার উপর দাঁড়িয়ে 

আমি আলমারি খুলছি সময়ের 

হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছে দুঃখ ,দুর্বলতা ,সম্পর্ক 

আর চলন্তিকা। 

চলন্তিকা আমার কোনো দেশ নেই ,আমার কোনো সময় নেই 

আমার শহর ,আমার সভ্যতায় আজ হাজারো দুরারোগ্য দুঃখ বাস করে। 

.

আমি সত্যি বলতে পারছি না 

আমি সত্যি বাঁচতে পারছি 

এক শহর ঢাকা মেঘ যখনতখন ভিজিয়ে দিচ্ছে আমার কংক্রিটের দেওয়াল 

গড়িয়ে নামছে কান্না ,অজস্র স্নেহ ,উপচে পড়া প্রেম 

সবটুকু কেমন জানি বাতিলের খাতায় 

কবিতা লিখছে আমি ভালো নেই। 

সাজানো সংগ্রহের বইয়ের তাকে এখনো কত অদৃশ্য কবিতার বই 

কত নামকরা কবি 

কত অজানা শব্দ আমার জন্য অপেক্ষা করছে 

তবুও আমার জানতে ইচ্ছে করছে না 

আমার বাঁচতে ইচ্ছে করছে না 

ডিপ্রেশনের মেঘে আজকাল কারণ ছাড়া বৃষ্টিতে 

আমি একলা দাঁড়িয়ে জীবনের রাস্তায়। 

নারী প্রশ্ন

 নারী প্রশ্ন 

... ঋষি 


ভিতরের ঘর থেকে শব্দ আসছে সমাজ 

শরীরের ভিতরের থেকে নিউরোলোজিক সংকেত নিয়ম 

সময়ের ভিতর থেকে হাজারো উদাহরণ হিসেবে 

আর আমি 

লাল টকটকে আগুনের সিঁদুরের নামে  পরিচত একটা সমাজ 

যাকে সামাজিক থাকতে হয় স্ত্রী পরিচয়ে। 

.

অলীক হিসেবকুসুম

স্ত্রী মানে সামাজিক পুরুষের ফ্রী  সেক্স জোন 

স্ত্রী মানে হিসেবের পুরুষের সামাজিক রিংটোন 

স্ত্রী মানে এক নিয়মের ডাইরি 

যার সামনে পিছনে লাগানো সময়ের  কালিতে মৃত নারীর ইচ্ছা

একটা ফটোফ্রেম পারিবারিক প্রতিষ্ঠা। 

.

প্রশ্ন করি সমাজ 

একজন পুরুষ যদি হাজারো নারী সঙ্গ করতে পারে ,তবে নারী নয় কেন 

একজন পুরুষ যদি যখনতখন হাসতে পারে ,তবে নারী  নয় কেন

সিঁদুর হলো নারীর পরিচয় ,তবে পুরুষের কোনটা ?

ঘোমটা ,পারিবারিক সম্মান শুধুই নারীর ,তবে পুরুষের কি ?

পুরুষের ইচ্ছা হলো ইচ্ছা আর নারীর  ইচ্ছা ?

পুরুষের বাঁচা বাঁচা আর নারীর বাঁচা ?

হাজারো প্রশ্ন 

অথচ উত্তর তুমি নারী 

তুমি স্ত্রী 

তুমি কন্যা 

তুমি ভার্যা। 

তোমার কোনো প্রশ্ন  থাকতে পারে না 

তোমার কোনো ইচ্ছা থাকতে পারে না 

তোমার কোনো বাঁচা থাকতে পারে 

তোমার জন্য শুধুই  স্বামীর ঘর আর সিঁদুর 

তোমার জন্য রান্নাঘরের জানলা 

তোমার জন্য বিকেলের মনখারাপ 

তোমার জন্য সন্তানের দেখভাল 

তোমার জন্য স্বামী সেবা 

তোমার জন্য রাতের রমন 

তোমার জন্য মেনে নেওয়া 

কারণ তুমি নারী তোমাকে সহ্য করতে হয়।  

   

আমি রাধিকা বিশ্বাস

 আমি রাধিকা বিশ্বাস 

... ঋষি 


আমি রাধিকা বিশ্বাস 

যে বছর কোলমাইনের বিস্ফোরণে  আমার স্বামী মারা গেলো 

আমি তখন সদ্য সিঁদুর  কোড়াঁনো তেইশ ,

বাঁচতে শেখা সেটাও যে নারী  ভাবনায় একান্নতলা বাড়ি

নারীর একান্নটুকরো শরীর ,

নারীর আদৌ কোনো বাড়ি থাকে না 

থাকে না ঘর। 

.

প্রথম যেদিন সাদা কাপড় ঢাকা স্বামীর শরীরটা আমার বাড়িতে 

সেদিন বোঝাতে পারবো না কতগুলো হাত যে  আমার দিকে এগিয়ে এসেছিল 

নানান ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিল আমাকে নারী মানে শরীর 

নারী মানে কোনো মন নয় 

নারী মানে কোনো দীর্ঘশ্বাস নয় 

নারী মানে একটা শারীরিক চুক্তি শুধু পুরুষের সমাজ। 

.

বেশ কিছুদিন কাঁদার পর আমি বুঝেছিলাম 

এই পৃথিবীতে কাঁদে তারা যারা বোকা ,যারা থামতে চায় 

আর নারী মাত্র যে এই সমাজে একটা সহজ বোঝপড়া 

যদি সেই নারী বাঁচতে চায়।  

আমিও বুঝেছিলাম 

হ্যা আমি রাধিকা বিশ্বাস বুঝেছিল বিধবা শাড়ি সেটাও একটা সামাজিক পরিচয় 

আসলে এই শাড়ির তলায় লুকিয়ে থাকে এক মৃত নারীর শরীর 

আর সমাজের কাছে সেই শরীর সহজলোভ্য,

আমিও এগিয়েছিলাম আমার এই শরীরকে অস্ত্র করে ধাপে ধাপে 

আমি বিলিয়েছিলাম এই শরীরকে বিক্রি করে সমাজের কাছে। 

আর দেখুন 

আজ আমি রাধিকা বিশ্বাস না 

একজন ছত্রিশ বছরের একটা বোঝাপড়া 

যে এই সমাজে বুকে দিয়ে ,কয়েকশো পুরুষের বিকৃত কামে 

একজন বেশ্যা। 

.

হু হু ঘাবড়াবেন না 

আমি বেশ্যা বটে তবে আমাকে বেশ্যা বলে সামনে ডাকে না কেউ 

বরং আমার শরীরের গলিতে হাভাতে পুরুষগুলো হামলে পরে বলে 

জানু কেন যে তোমায় আগে পাই নি ,

আর আমি লিপস্টিকের আড়ালে ,চোরা মেকাপের আড়ালে থেকে হাসি 

আর ভাবি 

আমি রাধিকা বিশ্বাস একজন বিধবা

যে বেঁচে আছে শুধু শরীরের একান্নটুকরোর বোঝাপড়ায়। 

তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা..

 তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা..

.... ঋষি 

.

তোমার ঘরে বাস করে কারা ও মন জানোনা

তোমার ঘরে বসত করে কয় জনা.

.

অনবদ্য ভবনাদের সাথে চুক্তি করে এক লাইনে দাঁড়াই 

আমাকে মেনে নিতে হয় -বোঝপড়া ,

মুখোমুখি কলকাতার কোনো হাইরাইজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে নেমে আসবো 

পাখির পালক ,হালকা 

তুমি থামতে শেখো নি 

দেখো এই কলকাতা শুয়ে আছে আমার রক্তে ভিজে। 

.

৭১ কিংবা ৭৬ নয় 

এগুলো সব সাংবিধানিক দুর্ভিক্ষের দিনযাপন 

আসল মানুষ চিরকাল ভিখিরী নিজের নিজের কাছে ,

তুমি দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছো 

আমি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে পৃথিবী শুষে নিচ্ছি 

তোমার যোনির মৃত তিলে কিছু উত্তপ্ত স্মৃতি। 

.

অনবদ্য ভাবনার মতো এই কলকাতা 

অথচ আমার বুকে বাঁচার কলকাতা 

মানুষগুলো এখানে হাসতে ভুলেছে ,বাঁচতে ভুলেছে 

তুমি হাততালি দিচ্ছো 

দেখো আমার মতো সারা শহর জুড়ে লোকডাউন 

আমি মুখোমুখি তোমার 

অন্যদের মতো আমিও শুধু একটা প্রয়োজন এই পৃথিবীতে। 

চলন্তিকা দরজা খুলছে 

আমি দরজার ভিতরে লুকিয়ে নিয়ে কলকাতার লাবণ্য 

চলন্তিকার বুকে ঠোঁট  ঘঁষছি 

আমি পুড়ছি 

আমি পুড়ছি। 

.

এক জনে ছবি আকে এক মনে

ও রে   মন

আর এক জনে বসে বসে রং মাখে। 

.


বিজ্ঞাপন ,চলন্তিকা আর সৃষ্টি

 বিজ্ঞাপন ,চলন্তিকা আর সৃষ্টি 

... ঋষি 

.

শেষ পাখিটার মতো উড়ে যাবো 

এই কবিতার শেষে শুয়ে থাকবে বিজ্ঞপন মোরা একটা মৃতদেহ 

হাজারো হোক সে আমাকে বাঁচতে শিখিয়েছে 

হাসতে শিখিয়েছে 

ভাবতে শিখিয়েছে ভালো থাকার জন্য বিজ্ঞাপন দরকার। 

.

আমি আকাশে পা দিয়ে উঠে দাঁড়াবো 

লাইন দিয়ে পায়ে পায়ে এগিয়ে যাবো সূর্যোস্তের পরে 

কিন্তু জীবন যে একটাই সূর্যাস্ত 

অথচ সূর্যাস্তের পর কোনো সূর্যোদয় নেই ,

নেই কোনো ভাবনা 

বিজ্ঞাপন শুধু একটা সাময়িক বেঁচে থাকার নাম। 

.

প্লাস্টিক মোরা আতংক 

রবীন্দ্রনাথ টুইস্ট করে হরেকরে কম্বা 

পুরোনো বেলবক্স ,জুলফি ,আলোকের ওই ঝর্ণা ধারা 

ঘটনা হলো রবীন্দ্রনাথ আর ফিরলেন না 

ফিরলেন না জীবনানন্দ এক কলকাতা দুঃখে ,

কিটসের কবিতার পুরোনো খাতায় পোকা লেগে গেলেও 

মানুষের সাজানো হাসিগুলো একইরকম বড্ড অহংকারী 

আর চলন্তিকা 

তোমার জন্য আমি বিজ্ঞাপন কি ,মৃত্যু নিতে পারি ,

তবে আজও মানি  পাখির একটা আকাশ  দরকার

সৃষ্টির দরকার এক কলস নদী ভাবনা 

ক্রমাগত প্রবাহিত 

আর ভাবনায় বিজ্ঞাপন হলে মৃত সৃষ্টিগুলো বড় বেদনাদায়ক।  


Thursday, August 19, 2021

sedin at likhbo na kobita

 


সেদিন লিখবো না কবিতা 

... ঋষি 


সব ঠিকঠাক হবে ,তুমি ভেবো না চলন্তিকা 

নর্মদা আবার ঝাঁপিয়ে পড়বে কোনো প্রতিবাদে 

দুরন্ত উৎসবের মেজাজে আমার শহর আবার ফিরে আসবে 

চোখ খুললে দেখবে শৈশবের হাসি ,

গ্রামে গ্রামে তখন সবুজ তোলার ভিড় 

সবুজ চোখে নারীরা হাসবে ,হাসবে তাদের গভীরে আগামী পৃথিবী। 

.

চলন্তিকা তুমি মোটেও ভেবো না আর 

আকাশ আবার দিগন্ত ছুঁয়ে মাটির গন্ধ নেবে

অমলকান্তি ঠিক রোদ্দুর হতে পারবে 

রবিঠাকুরকে প্রণাম করতে শুধু মাত্র স্মরণ করতে হবে না 

পঁচিশে-বাইশ

পুরো বারোমাস এই শহরে হবে রবিঠাকুরের গান। 

.

বিশ্বাস করো সব ঠিক হবে চলন্তিকা 

এক কাপ চায়ে আবার  তুফান উঠবে কফিহাউসের সেই স্বপ্নের চোখে 

কৃষ্ণচুড়া খুনসুটি করে লুটিয়ে পড়বে অমল বলে সেই মেয়েটার বুকে 

স্বপ্নরা আঙ্গুল ছুঁয়ে দেবে এই শহরের ঘাসে ,

কলেজের পথে চোখাচোখি হবে,

একলা রেলিং ধরে অপেক্ষা করবে কোনো প্রেমিক। 

.

সব ঠিকঠাক হবে চলন্তিকা ,আগের মতো 

পার্লামেন্টে, বিধানসভায়,কথা কাটাকাটি তর্ক বন্ধ হবে 

বন্ধ হবে দেশ নিয়ে কেনা বেচা খেলা 

মানুষ আবার হাসবে। 

নিঝুম রাস্তায় একলা দাঁড়ানো ঘুম না আসা চোখে 

অপেক্ষা করবে না ,ঘুমোবে জড়িয়ে। 

.

সব ঠিকঠাক হবে ,তুমি ভেবো না চলন্তিকা 

সব ঠিক হলে চিঠি লিখবো আমি তোমার ঠিকানায় 

পথের বাঁকে খুঁজে নেবো মনের ঘর 

একুশে উনিশে বাংলা ভাষা নয় বাংলা তখন স্বর্গ 

কোনো  কথা কানাকানি নয় ,নয় মুখ চাপা হাসি 

বরং আনন্দে গাইবো " আমার সোনার বাংলা "। 

.

সব ঠিক হলে জেনো আমি তোমায় নিয়ে বেরিয়ে পড়বো

লালনের গানে, মনের গানে ,জীবনের বানে 

বাকি জীবনটা বিশ্বাস করো আমি কাটিয়ে দেব তোমার সাথে 

একলা আকাশে নিঃস্ব হয়ে ,

সেদিন আর লিখবো না কবিতা 

সেদিন আর লিখবো না কবিতা। 


আর কিছু না

 আর কিছু না 

... ঋষি 


অগোচরে গজিয়ে উঠেছে একটা গাছ 

অজস্র ডালপালা ,অজস্র পাখিদের সাথে একটা সম্পর্ক 

আমার জানলার বাইরে আকাশটা বরফে ঢাকা চিরকাল 

চারকোল দিয়ে আকাশে বর্ডার টানে লোভ

অথচ মেঘের ভিতর কোন ঘর নেই 

আছে কিছু বৃষ্টি ,,,,এটাই সত্যি। 

.

তোমার হাসির ওপরে হিমালয় এসে দাঁড়ায় 

তোমার হাত এই যে আমার হাতের মুঠোয় মুহূর্ত ছড়িয়ে রেখেছে 

একটা সুগন্ধের অপেক্ষাতে আমার পা ডুবে আছে পাথরের গভীরে 

অথচ আমার হাতের রেখাতে তুমি স্পর্ষ্ট 

স্পষ্ট আমার উচ্চারণ 

তোমার খামখেয়ালি হাসির কাছে আমি গাছ হয়ে থাকি। 

.

উদ্ধারের পথ নেই তাই লুকিয়ে একটা নদীর গভীরে 

তবুও আছে উদ্ধারের আশা 

ঝুঁকে থাকাএকটা  গাছ নদীর জলে মুখ ধুয়ে একলাদাঁড়িয়ে 

কেউ জানে না। 

গাছেদের কেন কোনো চলন থাকে না  

নদীর জলের কেন কোনো আঙুল থাকে না 

পাখিদের কেন কোনো আকাশ থাকে না  

শুধু ছুঁয়ে থাকা মাটি

আর কিছু নয়। 


Wednesday, August 18, 2021

জব চার্ণক

 



জব চার্ণক

.... ঋষি 


চলন্তিকা  কোনো মন-মরাবিকেলের  নাম নয়

ট্রান্সফর্মারের মধ্যে দিয়ে লক্ষরাশি বিদ্যুৎ বয়ে গেলে

পুরোনো সুতানুটি  শহরে জ্বলে ওঠে সব সাঁঝ-বাতি

তবু কি তার কাছাকাছি কেউ আসতে পারে  

স্মৃতির মফঃস্বলে মায়াবী ধুলো ওড়ে

তবুও তার কাছাকাছি কেউ নেই। 

.

যে ইমেইল এসে আটকে পরে ছিল ইনবক্সের ভিতরে 

লাল মাটির দেশে রবীন্দ্রনাথ ছুঁয়ে কাব্য 

সে কাব্য জানি কোনোদিন  হবে না আমার ,

কোনো  রঙচটাদুপুরে একলা চিলেকোঠায় আমাদের কথাগুলো 

জানি কেউ লিখবে না গীতবিতান 

শুধু মানুষের ঠোঁটে স্মৃতির গান " পুরোনো সেই দিনের কথা "

.

আসলে সত্যিটা হলো সোশ্যাল লাইফ আর কবিতার মাঝে  চরম হিপোক্রিসি

শব্দ আসলে খুব কিনতে হয় না বলে বলে মানুষের এতো ঝগড়া  

চলন্তিকা  বহুদিন আর মন দেয়না প্রসাধনে

চলন্তিকা আজ বহুদিন হাসে না স্বপ্নের রঙে 

তার মুখে কালসিটে 

তার মুখে জমে আছে অজস্র ভাবনা।

পুরোনো গোবিন্দপুর কখন যে জব চার্ণকের কল্যানে কলকাতা শহর 

কলকাতার ইতিহাসের  উপর আজ বহুদিন বরফ জমে আছে

এই বরফের উপর দিয়ে অটুট হেঁটে যেতে কে বা কারা ?

আমি শ্বাস-বন্ধ করে পড়ে আছি

 আমার লাশের ভেতর

আর একটু একটু করে চলন্তিকার  ঠোঁট ছুঁয়ে বলছি

খুব ভুল পৃথিবীতে আমরা এসে পড়েছি

আমি জব চার্ণক হতে পারবো না

কারণ শব্দ দিয়ে শহর তৈরী হয় না। 

আমি আফগানিস্তান থেকে বলছি

 

আমি আফগানিস্তান থেকে বলছি 

... ঋষি 


ভালো নেই আমি 

ভালো নেই আমার গোলোকে একটা দেশ 

ভালো নেই মানুষ এখানে ,ভালো নেই গাছ ,ভালো নেই পাখি 

ভালো নেই আমার আফগানিস্তান 

ক্রমশ বুক ফেটে ছড়িয়ে পড়ছে চিৎকার 

তার থেকে বেশি চিৎকার করছে  ধামাচাপা দেওয়া একটা সময় 

তালিবান রাজ। 

.

এই রাজত্বে কোনো কবি থাকবে না 

এই রাজত্বে কোনো সৃষ্টি থাকবে না 

এই রাজত্বে গুলি করে হত্যা করা হবে একজন মুখাভিনয় শিল্পীকে 

এই রাজত্বে প্রত্যেককে মাথা নিচু করে মানতে হবে শাসন 

এই রাজত্বে শুধু গর্জাবে এ কে ফোর্টি সেভেন 

এই রাজত্বে কেউ গান করবে না ,তৈরী হবে না কোনো ভাস্কর্য 

সারা শহর জুড়ে পড়ে থাকবে মৃত মানুষের ছিন্নভিন্ন অঙ্গ 

সারা শহর জুড়ে চিৎকার করবে ইসলাম 

স্বাধীনতা এখানে  ইসলাম তৈরী করবে রক্তের দাগে। 

.

আমি সময় থেকে বলছি 

আমি আফগানিস্থান থেকে বলছি 

আমি সভ্যতার রক্তাক্ত  মুখ 

একটা পাঁচ বছরের শিশুকের এখানে  হত্যা করা হবে আলোর  মুখ দেখার অপরাধে 

একজন নারীর চোখ উবরে নেওয়া হবে চাকরি করার অপরাধে 

ইচ্ছে মতো মাথার চুল কেটে তাদের শেখানো হবে 

নারী মানে পর্দা 

আর পুরুষ মানে সেই পর্দার অধিকার।  

ইচ্ছেমতো নারীদের রেপ হবে ,প্রকাশ্যে তাদের শরীর থেকে আলাদা করা হবে 

নারীত্বের অধিকার 

চারিদিকে গুলি চলবে ,ভয় রাঙাবে বুলেটের তপ্ত সীসা 

কামানের সামনে দাঁড় করানো হবে হাজারো নিরুপায় মানুষ 

আর সবাই চুপ থাকবে 

চুপ থাকবে রাষ্ট্রমন্ত্রক 

চুপ থাকবে মানুষের অধিকার 

চুপ থাকবে মানুষের স্বাধীনতা 

আর সেই সময় চিৎকার করবে হাজারো এ কে ফোর্টি সেভেন ,কামান ,মিসাইল 

সারা সময় জুড়ে শুধু রক্ত ,শুধু ধ্বংস।

আমরা শুধুই সাক্ষী 

গোটা জাতির জন্য এটা একটা গর্বের মুহূর্ত তাদের

আমরা শধুই নপুংসক সব রাষ্ট্র ,সময়ের পৈশাচিক আয়নায় 

পিশাচের দল 

আমাদের ঠোঁটেও যে মানুষের রক্ত

আর চোখে লোভ।  

প্রাক্তন



 প্রাক্তন 

... ঋষি 


অনবদ্য প্রাক্তন হতে পারি নি 


পারি নি হতে বিলিতি সেন্টের মতো গন্ধ বিভোর 


আসলে প্রাক্তন শব্দটা নিজের কাছেই একটা প্রশ্ন 


প্রাক্তন শুব্দটা নিজের আয়নায় ভাবনাবহুল 


অনেকটা জলছবি 


অনেকটা আগুন লাগা বুকে অপরাহ্নের আলো। 


.


আলো ফোটে আমার শহরে রোজ 


কেউ আজও দাঁড়িয়ে থাকে গঙ্গার ধারে সেই চেনা বিকেলের  চয়েরদোকানে,


আসলে অপেক্ষা ফুরিয়ে গেলে মানুষগুলো একা 


আসলে একলা থাকাটা নিজের কাছেই একটা আবিষ্কার 


আর সেই আবিষ্কারে সাথে থাকে 


সুরোজকা সাতমা ঘোড়া 


কিংবা 


বিবর্তন। 


.


অনবদ্য প্রাক্তন হতে পারি নি 


আমার বোতাম খোলা বারান্দায় আজকাল একলা দাঁড়ানো সেই মেয়েটা 


সেই হাসিটুকু কুঁড়িয়ে আমি একা হয়ে যাই 


হঠাৎ  পথচলতি সেই ব্যস্ত ফুটপাথে আমি দেখি তাকে। 


আসলে বদলানো দিনের কাছে আমরা  সকলেই কমবেশি ভিখিরি 


আসলে একলা থাকার কাছে সকলেই সময়ের কাঙাল 


আর প্রাক্তন না কোনো শব্দ নয় 


একটা আবিষ্কার ,


ফোনের ওপারে আর কেউ থাকে না আজকাল 


একটা নিস্তব্ধ অপেক্ষা শেষের খাতায় 


বড় বড় হরফে লেখা প্রাক্তন। 


.


সুতরাং ফিরে আসা কবিতার খাতায় 


প্রাক্তন একটা ফুরিয়ে যাওয়া বিকেলের নাম কিংবা রাত্রের। 

Tuesday, August 17, 2021

শব্দ

 শব্দ 

.. ঋষি 


শব্দরা কাটারির মতো ধারালো 

শব্দরা মিছরির মতো মিষ্টি 

শব্দরা অনবদ্য ভূমিকায় মানুষ তৈরী করে 

শব্দরা মিসাইলের ভূমিকার সম্পর্ক  ধ্বংস করে। 

.

আমি শব্দ প্রেমিকা 

আমি শব্দ শ্রমিক 

আমি পিঁপড়ের মতো জড়ো করি খিদে  শব্দের ভূমিকায়  

আমি ধংসাত্মক অহংকারী শব্দদের ভয় করি 

আমি বাঁচার শব্দদের ভালোবাসি নিজের করে। 

.

আমি জড়িয়ে যাই 

আমি ভেসে যাই 

আমি পোড়ায় নিজেকে শব্দদের মাঝে। 

আমি একলা শহরে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে খুঁজি শব্দদের 

আমি নিয়ম করে ফিরে দিনান্তে পকেটে কিছু শব্দ নিয়ে ফিরে আসি 

আমি গাছদের ফিসফিসে 

আমি পাখির কলরবে 

আমি ঘাসের জলফরিঙে শব্দ শুনি 

অবাক হই ভেবে শব্দদের শক্তি ,শব্দদের ধ্বংস ,শব্দের সৃষ্টি ঈশ্বরের মতো।  


১৭ ই আগস্ট



১৭ ই আগস্ট 

.. ঋষি 


অনেক্ষনের জন্য আলাদা হয়ে আছি 

কবির  অণুবীক্ষণের চোখে লেগে আছে মুহূর্তের স্বপ্নঘোর 

কি বলো চলন্তিকা ?শেষ অবধি বছর ঘুরলো ?

আমি গিয়ে দাঁড়ালাম বৃত্তের শেষ বিন্দুটাতে 

তুমি তাকাচ্ছো 

দেখছো আমায় 

আমি ফুরোচ্ছি না। 

.

একটা ফুরোনোর গল্প লেখা ছিল আমার অন্নপ্রাশনের ঠিকানায় 

অথচ আজ ১৭ ই আগস্ট, 

 তুমি হাত রেখে দাঁড়িয়ে তোমার বাড়ির সাদা মাউসের উপর 

একটা ক্লিক মানে অনেকটা আকাশ

অনেক পরিজন,

অর্কিডের পিঠ বেয়ে নেমে আসছে বৃষ্টির জল 

তোমার ডেস্কটপে একটা জ্যান্ত জীবন। 

.

অনেক্ষন আলাদা হয়ে আছি 

দুঃখ সেটা নয় 

দুঃখ শব্দটা বুকের পাঁজর আঁকড়ে হঠাৎ বলে দেয় তুমি 

একটা না শেষ হওয়া কবিতা। 

আজ ১৭ ই আগস্ট কিছুটা হলেও সত্যি লেখা হলো তোমার বুকে 

তবু জানি জল জমবে তোমার বুকে 

সেই জলে মুখ ধুঁয়ে তো সকালে দাঁত ব্রাশ করবে সময়। 

অথচ কবির  মুখে দুর্গন্ধ 

বাসি কিছু  রক্তের দাগ আর আজকের কবিতা ,

ভাঙ্গাচোরা কিছুটা বেঁচে থাকা জড়ো করে কবি গিয়ে দাঁড়ায় কবিতার শেষে 

যেখানে মানুষের পৃথিবীর জীবন লিখছে অধ্যায় 

আর কবিতা 

সে তো শুধু সময়ের সাক্ষী। 

 


Sunday, August 15, 2021

দিলদরিয়া

 দিলদরিয়া 

... ঋষি 


" দিলদরিয়া রে তোরে  কিসের কথা কই 

ওরে মাঝি রে মাঝি রে কোথা  ভাসলি "

.

এ শহরের বৃষ্টির সাথে আমার দূরত্ব শুধু ঋতুকালীন 

হয়তো হাত বাড়ালে তাকে ছুঁতে পারি না 

হয়তো মনে প্রাণে তাকে মনে করলেও  সে এসে ভেজায় না 

কিন্তু সত্যিটা হলো 

আমি ভিজি 

হ্যা আমি ভিজি রোজ ,দিনেরাতে ,যখনতখন। 

.

এ শহরে অজস্র ভাবনার সাথে তার দূরত্ব অনেকটা 

বিছানার বালিশের ফাঁকে বেঁচে আছে কথারা 

সময়ের রেলগাড়ি ঝমঝম করে ছুটতে থাকে মাথার ভিতর 

সেটশন পেরিয়ে একটা কাঁচের শহর 

অজস্র কাঁচের মুখ 

আর অজস্র গুঁড়ো গুঁড়ো কাঁচের মতো ভাবনা। 

.

তুমি বলবে আমি বৃষ্টির কবিতা লিখছি 

অথচ আমি লিখছি সময়ের পাতা জুড়ে বড় অক্ষরে বৃষ্টিফোঁটা 

অজস্র গড়িয়ে নাম জল। 

সত্যি আর মিথ্যের মধ্যে তফাৎ 

একজন প্রিহিস্টোরিক্যাল মানুষ কেন যে হঠাৎ ঝর্ণার তলায় একলা দাঁড়ায় 

চোখবন্ধ করে 

চোখ খোলে সে যে নিজের বাথরুমে সম্পূর্ণ নগ্ন। 

একভাবে একদিন এক একটা গল্প শুরু হয় 

শেষ হয় 

আর বৃষ্টির সাথে আমার যোগাযোগ বাড়ে 

আর বাড়ে দূরত্ব। 

লোহার দরজা



 লোহার দরজা 

... ঋষি 

.


এই মহানগরে শুয়ে আছে হাজারো গল্প 

আর গল্পের গরু ,

শালিখের ঘরে ,শহরের দরে ভিটেমাটিহীন এক আজব দাম্পত্য ,

ক্রমশ ক্লোজসার্কিটের অণুবীক্ষণিক পরীক্ষা 

মানুষের মাংসের স্তরে শুয়ে আছে পারমাণবিক লোভ 

আর ডিসপ্লেতে বাঁধানো দাঁত। 

.

তোমাকে পড়তে হে মহানগর শুধু দারিদ্রতা দরকার 

আসলে মানুষ দারিদ্রতা না থাকলে মানুষের  বুকের ম্যানহোলে ঢুকে যায় 

ঋতুকালীন অনিদ্রা। 

তোমাকে জানতে হে মহানগর কোনো রবীন্দ্রনাথ কিংবা জীবানন্দ নয় 

শুধু কষ্ট দরকার। 

.

এই মহানগরে শুয়ে আছে হাজারো গল্প 

গল্প মানুষের ,গল্প স্বপ্নের ,গল্প দূরে সরে থাকা রেডরোডের 

কিংবা ভিক্তোরিয়ার চাঁদে কেন আজও জল নেই 

তবে সত্যি প্রতিটা গল্পের ভিতর আজ পচন 

প্রতিটা গল্পে আজ এঁকেবেঁকে এগিয়ে যাওয়া মাটির তলায় মেট্রো 

কিংবা ট্রাম। 

আসলে এই শহরের মানুষগুলো স্বপ্ন আছে 

সামর্থ নয় 

খিদে আছে প্রতিটা চারদেয়ালের অনবদ্য ভূমিকায় মানুষগুলোর 

কিন্তু স্পর্শ নেই 

এ সহজে আকাশে পাখি আছে ,আছে ধূলিকণায় স্টেইনলেসস্টিলের লোভ 

কিন্তু মানুষ নেই 

আকাশ নেই 

বাঁচা নেই 

শুধুই কতগুলো মানুষ বাঁচার মানে ভুলে 

লোহার দরজা বন্ধ করছে। 

Friday, August 13, 2021

তবুও স্বাধীনতা




 তবুও স্বাধীনতা 


... ঋষি 


.


সারা সময় জুড়ে আজ গেরুয়া ,সাদা ,সবুজ 


কি বলতে চাইছে আপনার ভারতবর্ষ ?


কান পেতে শুনুন ,কি শুনছেন 


আকুতি ,কান্না ,


শ্বাপদের অধীনে থাকা স্বাধীনতা আজ মৃতপ্রায়। 


৭৫ বছরের একটা মানচিত্র ,


৭৫ বছরের ধুঁকতে থাকা এক বৃদ্ধ মা আজ চোখের জলে 


আপনার উনুনের ধোঁয়ায় 


আপনার চোখের পলাশে আজ শুধু মৃতপ্রায় রাষ্ট্র 


ব্যাধিতে ধুঁকতে থাকা মৃতপ্রায় মানুষ 


তবুও স্বাধীনতা। 


.


গাছের জীবন ,সময়ের জীবন ,নদীর জীবন ,আকাশের জীবন 


সব কেমন ঝিমিয়ে আছে এই সময় 


তবুও স্বাধীনতা। 


তবুও আজ দিল্লি গেটে কুচকাওয়াজ ,কামান দাগা 


মিথ্যে বুলি কদম কদম মিলায়ে যা ,


মাইকে চিৎকার ভারত হ্যামকো জানসে  প্যাযারা হ্যা 


মিথ্যে স্বপ্ন সোনার ভারতবর্ষ। 


কোনো দেশ ,কোনো শতক ,কোনো সভ্যতা মিথ্যের উপর দাঁড়িয়ে 


কখনো ভালো থাকতে পারে না ,


যে দেশের আজও সত্তর শতাংশ লোক ঠিক করে খেতে পায় না 


যে দেশে রেশনের চাল ,বন্যার টাকা চুরি হয়ে যায় 


যে দেশে কমতে থাকা শিক্ষা ,কমতে থাকা কর্মসংস্থান আর বাড়ন্ত জনসংখ্যা 


সেই দেশের নাগরিক আমি 


সেই দেশের আবার স্বাধীনতা ! না লজ্জা। 


.


একটা মৃতপ্রায় দেশে স্বাধীনতা মানে খিদে 


একটা জ্বলন্ত চিতাকাঠের কাছে প্রশ্ন করুন স্বাধীনতা কি ?


দেখবে বুকের যন্ত্রনায় সে চিৎকার করছে 


বলছে স্বাধীনতা মানে বাঁচতে চাই  


স্বাধীনতা মানে মুক্তি 


স্বাধীনতা মানে সম্পর্ক মানুষের 


স্বাধীনতা মানে একটা অনুভব যেখানে দেশ মানে গর্ব। 


.


কি আপনার গর্ব হচ্ছে তো ?


তবুও স্বাধীনতা


তবুও স্বাধীনতা !




Tuesday, August 10, 2021

একলা রং

 


একলা রং 

ঋষি 

.

অসুখ

.

দুখঃগুলো পায়ে হেঁটে উঠতে চায় সুখের  দালানে 

দুদণ্ড হেলান দিয়ে বসে ,গল্প করতে চায় সুখের সাথে 

তবুও কেন যে দুঃখগুলো সুখী হতে চায় না ,

মানিয়ে গুছিয়ে ছিয়াত্তরের কবিতায় শহর লিখতে চায় না। 

না খেতে পাওয়া ভুখা মানুষের 

ভেঙে যাওয়া গভীর আয়নার মতো বলতে চায় সুখ কে 

দিন তো শেষ হলো 

ঠোঁটে রক্ত নিয়ে আসতে হবে আমার ঘরে। 


.

অন্ধকার 

.

সময়ের  ভেতরে অন্ধকার ,তার ভিতরে অনুজ্বল ঘড়ি কাঁটা 

আলোগুলো নিভিয়ে দাও

রাতের চুলে পাক ধরলেও ঘুম আসে না, ঘড়ির শব্দ

বুলেট  হয়ে তাড়া করে

সারারাত।

.

মেমোরী 

.

বন্ধ দরজার কপাট  ছুরির মতো এসে বিঁধছে

খাতার পিছনের পাতায় প্রিয়  যন্ত্রনাদের ছবিঘরে 

পুরনো ছবির ফোল্ডার, আলোর পথের যাত্রী 

কপি রাইট  ভিন ফেসবুক মেমোরী 

আলোগুলো, নিভিয়ে গেছে ।

.

একলা রং 

.

একলা রঙের  সন্ধের বুকে ফুটে ওঠা এক কাপ মাটির ভাঁড়ে চা 

চেনা দোকান? কথোপকথন? 

গৃহদের  ছায়ায় শিশিরের মতো জমে থাকা বিস্মরণ?

বিষাদ ছাড়া কতদিন কিছু দেখিনি তথাগত…

একটা বিকেল দিতে পারো 

 যে বিকেলে মানুষ শুধু ভালবাসবে। কারণ খুঁজবে না ।

.

পথ চলা 

.

সূর্যাস্তের মতো বিষণ্ণ এক গিটারের সুর ছুটোছুটি করে আমার ভিতরের ঘরে 

ভেতর দিয়ে পথ খোঁজে এক নিখুঁত নিশানার ভাবনা ,চলন্তিকা 

 সে কোথায় পৌঁছতে চায় কে জানে…

প্রেম থেকে অপ্রেমে? 

দৃশ্য থেকে দর্শনে ? 

শব্দ থেকে নীরবতায়? 

বিক্ষোভ থেকে ক্ষমায়? 

কিন্তু… তারপর?

পথের শেষে কী থাকে?

.


ইদানিং কবিতা

 ইদানিং কবিতা 

.... ঋষি 

.

মনে করতে পারছি না -শেষ কবে কবিতা লিখেছি 

ইদানিং আর লিখতে ইচ্ছে করে না 

শেষ কবে অসন্তোষ জানিয়েছি প্রকাশ্য-চিৎকারে?

চিৎকার ফুরিয়ে যাচ্ছে 

গলার আওয়াজে আজকাল বিগাড়নো রেডিওর চিৎকার 

আমি কি তবে সুখী খুব ?

কেন তবে আজকাল চিৎকার করতে ইচ্ছে করে না আর ? 

.

আনাচেকানাচে ঘোরে হাওয়ায় কিছু প্রশ্ন 

চলন্তিকা তোমার মৃত্যুর আশংকায়  আজকাল সবুজ পাতারা  শুকিয়ে যায়   

ক্রমাগত কবিতা বদল হয়। 

ক্রমাগত 

অন্ধকার হয়ে আসে, হাওয়া হয়ে সরে যায় প্রতিবাদ মানুষের ।

অথচ, বলার ছিল,প্রতিবাদ সময়ের অঙ্গীকার 

মানুষের বাঁচা 

শহরে-নগরে-গ্রামে, মাঠে ও নদীতে।

.

মনে করতে পারছি না -শেষ কবে কবিতা লিখেছি 

ইদানিং যা লিখি তা কবিতা হয় না ,হয় ঘোরের মতো কিছু 

এখন বেইনটিংস্ট্রিটের সেই রেস্তোরায় অঞ্জনদত্ত থাকেন না 

কারণ মানুষ জানে 

মানুষের বেঁচে থাকায় লকডাউন লেগেছে। 

তবুও কেন বলতে ইচ্ছে হয় 

‘ভালো আছি, ভালো থেকো’ 

রাজ্য থেকে দেশ থেকে, পৃথিবীর থেকে পথে ও প্রান্তরে

সকলের ভালো হোক। 

.

আর কবিদের জন্য বলা 

কবিতা গ্রীস ,লন্ডন ,ভেনিস ,গড়ের মাঠ ,বাড়ির ছাদে যেখানেই হোক 

তার কারণ একটাই 

মানুষের চোখের জল 

.

হয়তো-বা সিন্ধান্ত এই—কবিতার  থাবার তলায়

কিছু মানুষ বাঁচে ,কিছু মরে। 


পুনশ্চ প্রেম


 পুনশ্চ প্রেম

.... ঋষি  


তুমুল বৃষ্টি দিনে হঠাৎ করে ভিজে যাই  আমি 

ভিজে যাওয়া শহরের শিরায় তখন পুনশ্চ প্রেম ,

প্রশ্ন ঠিক নয় 

একটা উত্তর ভিজে স্যাতস্যাতে আদুরে ভাবনায়, 

ভিজিয়ে দিয়ে কানে কানে বলে 

ভালোবাসি ,আমি আছি। 

.

সমস্ত জন্মের সূত্র ধরে শহরের ধারাবাহিক নিয়মাবলী 

অথচ ভালোবাসার নিয়ম ?

নদীর বহতা ,পাখির কিচিরমিচির ,গাছের বেড়ে ওঠা 

গাছদের প্রেম 

পুনশ্চ কি ?

.

তুমুল বৃষ্টি দিনে এই শহর ভালোবাসে 

এই শহর কাঁদে 

প্রতিটা বাসস্ট্যান্ড ,প্রতিটা ম্যান হোল ,এঁকে বেঁকে চলা মেট্রো 

শ্যামবাজার ,পার্কস্ট্রিট ,গড়িয়াহাট 

আর বৃষ্টি। 

শরীর বেয়ে একটা প্রশ্ন বইতে থাকে 

ভালো আছি ? কতটা ?

আর বৃষ্টির জলে উত্তরগুলো চিৎকার করে 

কেউ বোঝে না 

বুঝতে চায় না 

শুধু একলা কার্নিশে একটা চড়াই বৃষ্টির জলে একলা ভেজে। 

Monday, August 9, 2021

অন্ধত্ব

 অন্ধত্ব 

... ঋষি 


বালি 


ক্রমশ সরে যেতে চাই 

সারাদিন মুহূর্তজুড়ে তোমাকে ভালোবাসার পর 

রাতের অন্ধকারে আঁকড়ে ধরতে চাই 

মুঠো খুলি ,মুঠো বন্ধ করি 

আঙ্গুল বেয়ে গড়িয়ে যায়। 

.

নিষেধ 

.

তোমার ভিতর অনেকটা অস্বস্তি 

নীল পাঞ্জাবীর হাতের কাজে লেগে আছে তোমার আঙ্গুল 

সব কাহিনী পুড়তে থাকা পোশাক 

নিষেধের দেহে শুয়ে আছে 

ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। 

.

বাঘ 

.

সমস্ত অনিশ্চয়তাগুলো পাগল করে আমায় ঘুমের ভিতর 

সমস্ত প্রলেপের পরে বিছানার চাদর ,মাংসের শরীর 

জানি ঘুম আসছে না 

একটা বিশাল সবুজ ঘন জঙ্গলে আমি বাঘ 

আর তুমি পশুপ্রেমিক। 

.

আঁশটে গন্ধ 

.

আমার কৈশোরের পকেটে কয়েকটা পুরোনো খুচরো 

হারিয়ে যাওয়া বিকেলের হাওয়ায় আজকাল কেমন আঁশটে গন্ধ 

নিরিবিলি নির্ভরশীলতা 

মলাটের উপরে লেখা 

একার গল্পগুলো বড়ো অনিয়মের এই শহরে। 

.

সঙ্গম 

.

এই সভ্যতা সঙ্গম ছাড়া আমাকে মানবে না 

প্রতিটা চামড়ার ভেজা অঙ্গে কেমন একটা সামাজিকতা 

বরং বলা ভালো আমি ফুরিয়েছি 

আমার ছাদের উপর আকাশে আজকাল আঁধ খাওয়া চাঁদ 

তোমার মতো দেখতে জীবন। 

ধ্বংস সভ্যতা

 ধ্বংস সভ্যতা 

... ঋষি 

.

শব্দ করে সভ্যতা আজকাল প্রমান করে করতে চায়  একটা মিথ্যাকে 

জোর খাটিয়ে একটা সময় প্রমান করতে চায় একটা মিথ্যে অবস্থানকে 

এই জিন্স সভ্যতার যুগে ছন্দহীনকোন মির্জাগালিব আমরা আওড়াচ্ছি  

যার শরীরে অজস্র রক্তের সেল ,

দানবীয় ভূমিকায় সভ্যতা হেসে উঠছে 

কেঁদে  উঠছে আমার আমার ভিতর কিছু মৃত্যুগামী মুহূর্ত।  

.

সামনেই দেখি বাইশ কেজি ওজনের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হেঁটে আসছে

শিক্ষার সভ্যতা,

রাস্তার পাশে ছেঁড়া শাড়িতে বসে ভিক্ষে করছে আমাদের কারো মা 

একলা সভ্যতা,

অনবরত ছিঁড়ে খুঁড়ে যায় কিছু মিথ্যা স্পর্শ রাতের অন্ধকারের হোটেলের ঘরে 

মর্ডান সভ্যতা,

অনবদ্য শিক্ষার নামে ,অনবদ্য সৃষ্টির নামে ,অনবদ্য বেঁচে থাকার নামে 

একটা পুঁজিবাদী রাষ্ট্র রিমেক করছে

 ধ্বংস  সভ্যতার  

.  


আর আমি 

তখন থেকে ভাবছি কেন এতদিন ইংলিশ শিখি নি 

কেন এতদিন কোনো ইউরিওপিয়ান কায়দায় চলন্তিকাকে বলতে পারি নি 

আই লাভ ইউ ,

 আর কেনই বা দৌড়ে যাইনি

টেমস নদীর ধারে আমার সবুজ নদীমাতৃক  মুক্তি ছেড়ে।

বড্ডো পিছিয়ে আমি 

কিছুতেই কায়দায় পড়তে পারি নি মার্ক্স্ ,টলস্টয় 

বরং আমি রবীন্দ্রনাথ ,বিভূতিভূষণ ,সমরেশ  ,সুনীল ,বিমল কর 

এদের কাউকেই এখনো পড়ে শেষ করতে পারি নি।  

বড়ই বিমর্ষ লাগে নিজে 

বড়োই ছোট লাগে নিজেকে 

কিসের অভাব ,কেন ছুটছে সভ্যতা এক রিমেকের ময়দানে 

কূলহীন ,কিনারাহীন। 


তবু মনে রেখো

 


তবু মনে রেখো 

... ঋষি 

.

মৃত রাজার খোঁজে জীবন গেয়ে উঠলো 

আমি চিনি গো চিনি তোমাকে ,

ঠিক তখনি কোথাও একটা নষ্ট গল্পের পাতায় চোখ আটকে গেলো কবির 

একটা রৌদ্রতপ্ত দিনে ,একটা ব্যাধিগ্রস্থ বিছানায় 

উপন্যাসের রাণী খুঁজে ফিরছে মৃত রাজাকে। 

.

রোজ দিন বদলায় 

রোজ সকাল থেকে ভাবনার স্রোতে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ে ক্লান্তি,

জানি এই শহরে ভাবনার বাস নেই 

জানি এই শহরে ভালোবাসার ভাত নেই 

শুধু আছে ভিক্তোরিয়ায় মাথায় একলা পরী 

আর স্মৃতি। 

.

মৃত রাজার খোঁজে একের পর এক বিতৃষ্ণা 

তেতো হয়ে যাওয়া শহর থেকে ক্রমশ এগিয়ে চলা উপন্যাস 

শহরের তুমুল ভিড়ে প্রতিদিন হারিয়ে যায় 

শহর কাঁদে 

জীবন কাঁদে 

কাঁদে মানুষের মূল্যবোধ 

তবু কোন এক সকালে শহরের  তিনতলার ঘরের ভিতর পাওয়া যায় 

মৃত রাজার গলা পচা শরীর ,

রানী কাঁদতে থাকে 

আর কোথাও অচিনপুরে বেঁচে ওঠে ভীষণ চেনা সমাপ্তি 

তবু মনে রেখো। 

Sunday, August 8, 2021

চিনতে পারছেন আমাকে


চিনতে পারছেন আমাকে
.. ঋষি 
রাতের দরজায় থাপ্পড় এসে পড়ে, দরজা খুলি 
চিনতে পারছেন আমাকে ? 
আপনি ?  হ্যা ২২ শে শ্রাবন 
একটি মৃত্যুর তরজায় একটা দিন শুধু স্মরণে
মনে পড়ছে আপনাকে? 
.
আপনি কে? 
জানি মৃত্যুতে সব শেষ হয় না, 
জানি জন্ম মৃত্যু ভাবনাগুলো সুর্য যাত্রার শুরু আর শেষ 
আপনি সুর্য পুরুষ
আপনার আলো অনন্ত এক পথচলা
মানুষের ভাবনায়। 
.
রাতের দরজায় থাপ্পর এসে পড়ে, দরজা খুলি 
চিনতে পারছেন আমাকে? 
অন্ধকার হাতড়ে কোপাইয়ের খেয়া সাঁতরে আমি ফিরতে চাই 
গিয়ে উঠি চেনা বজরায়,
বড় চেনা এই দাঁড়িওয়ালা ভদ্রলোক, বড় চেনা এই আত্মীয় পুরুষ। 
যে মৃত্যুর কোন মৃত্যু হয় না
যে জন্মের কোন জন্ম হয় না
তার ভাবনায় আচমকা ছড়িয়ে পড়ে সাদা পাতায় অজস্র রক্তকরবী 
নষ্ট নীড়ের চার অধ্যায় ছেড়ে আমি গিয়ে দাঁড়াই
পোষ্টমাষ্টারের সেই ছোট্ট মেয়েটার কাছে
তার ছলছল চোখে আমি দেখতে পাই আজ ২২ শে শ্রাবণ
তার চলে যাওয়া। 





Wednesday, August 4, 2021

সারেঙ্গির বিষন্নতা

 


সারেঙ্গির বিষন্নতা 

... ঋষি 

.


সারেঙ্গিতে একটানা বাজতে থাকা বিষন্নতা 

আমি ভালো আছি চলন্তিকা 

সকালে সূর্য ওঠে আগের মতো ,অস্ত যায় নিয়মিত ,

একটা চাকরি পেয়েছি চলন্তিকা 

এখন আমার হাতে মুঠোফোন ,দু চাকার একটা গাড়িও আছে 

শুধু দক্ষিণের তোদের বাড়ির বারন্দায় সেই মেয়েটি আর দাঁড়ায় না । 

.

সেই মেয়েটা 

যে আমাকে বলতো আর কতদিন ফোনবুথ 

আর কতদিন পায়ে হেঁটে বাদাম ভাজা খাইয়ে হাঁটবি ,

জানি তুই ভালো আছিস 

তোর বিলেত ফেরত স্বামী ,যার শরীরে বিদেশী সেন্টের গন্ধ 

আর আমারতো শুধু ঘামের 

তবে জানিস আজকাল তোর জন্য কখনো কখনো দুএকফোঁটা সস্তা সেন্ট আমিও ব্যবহার করি। 

.

না দোষ দি না তোকে 

শুধু মনখারাপ হলে আগের মতো তোর বাড়ির চক্কর কাটি 

একলা গিয়ে বসে ফাঁকা সেই পার্কটায় 

তোকে খুঁজি না তা না ,কিন্তু জানি তো 

তুই এখন সিঁদুরের ঘর করিস। 

আমি জানি আমার স্বপ্নের ঘরের থেকে ,আমার ভালোবাসার থেকে 

এই সময়ের ,এই নিয়মের দাম অনেক বেশি  ,

জানিস আমি আজকাল কবিতা লিখি 

কিন্তু বুঝতে পারি না এগুলো আদৌ কবিতা কিনা 

আসলে কবিতা গুলো আমার চিৎকার 

আসলে কবিতাগুলো আমার প্রতিবাদ 

আসলে কবিতাগুলো তোকে নিয়ে আমার সংসার 

যে কথাগুলো আমি কাউকে বলিনি কখনো 

সেগুলো আমি লিখে ফেলি সাদা পাতায়। 

.

সারেঙ্গিতে আমার একটানা বাজতে থাকা  বিষন্নতা 

আমি ভালো আছি চলন্তিকা ,

জানি এই কবিতা তুই পড়বি না কখনো 

তোর এখন সময় কোথায় ,ভরা সংসার ,স্বামী ,পুত্র। 

আমি জানি চলন্তিকা আমি যাকে ভালোবাসি সে আসলে তুই নোস্ 

কারণ  আমাকে ছাড়া চলন্তিকা ভালো থাকতে পারে না।  


হয়তো পরের জন্মে

 


হয়তো পরের জন্মে 

... ঋষি 

.

তুর দিকে তাকালে মুর বুক শুকিয়ে যায় 

তুর দিকে তাকলে মুর সুখ শুকিয়ে যায় 

আগুন লাগে গতরে 

আগুনে পুড়ে মরি আমি আর মরে না তুর চোখ।

 

.

আর রাধা দাঁড়িয়ে আছে হাইরুটের গা ঘেঁষে খদ্দেরের অপেক্ষায় 

ছেলে না মেয়ে , নিজেকে দেখেছিলো সে বুক খুলে 

কিন্তু নিজের গালের  দাঁড়িতে   হাত দিয়ে কেঁপে ওঠে রাধা রোজ ,

ঘুম আসে 

ঘুম স্বপ্ন সুখ ,স্বপ্ন সুর 

নধর নারী শরীর ,সুমধুর মিলন ,মনের পুরুষ। 

.

একটা লরি এসে থামে 

কত লিবি ? নিতে পারবি তো ?

রাধা মেয়েলি ভঙ্গিমায় বলে ,কত দিবি বাবু। ...তুই ভালোবাসা ,

তারপর কোনো নিষিদ্ধ ডেরায় রাধার অর্ধনারীর  শরীরটায় হামলে পরে প্রেম ,

বুকের ডানা গুলো দুহাত দিয়ে ডলতে থাকে 

আর পিষ্টন চলে পিছনের কামরায় 

রাধার চোখে জল ,

সব কিছু ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় পাঞ্জাবী ড্রাইভার ছুঁড়ে দেয় একটা একশো টাকা। 

রাধা বলে বাবু ভালোবাসা পেলি তো ? 

ড্রাইভার বলে এই ছিনাল তুর আবার ভালোবাসা ,যা মলম লাগা। 

.

রোজ ভোর রাতে রাধা বাড়ি ফেরে 

রাধার সারা শরীরে থাকে ভালোবাসা 

আয়নার সামনে দাঁড়ায় রাধা নিজের ব্লাউজ খুলে  বুক  দেখে

চোখ ঘোরে ব্লেড দিয়ে চাচা লোমহীন শরীরটার দিকে  

হায় হায় 

.

তুর লাগি মুর  অঙ্গ জ্বলে সখি 

তোর বিহনে আগুন লাগে বুকে 

এ জন্মে রাধাবৃহন্নলা রূপে 

হয়তো পরের জন্মে ভালোবাসা। 


একটা রিমেক

 


একটা রিমেক 

... ঋষি 

.

মেয়েটার নাম ধর্ম 

ছেলেটার নাম ধর্ম 

মেয়েটার নাম সমাজ 

ছেলেটার নাম সমাজ 

মেয়েটার নাম ভালোবাসা 

ছেলেটার নাম ভালোবাসা। 

.

পাশ দিয়ে কে যেন বলে গেলো,যা যা বেহায়া পাখি যানা 

অদ্ভুত 

মেয়েটার নাম ফতেমা ,ছেলেটার নাম নিতাই 

মেয়েটার জেলা অজানা  ,গোত্র মুছলমানের ঘরের মেয়ে 

ছেলেটার জেলা অজানা ,গোত্র হিঁদুর  ঘরের ছেলে 

আরও অদ্ভুত প্রেম 

ছি এমনটা হয় নাকি !

.

ঘাবড়াবেন না ,গল্পটা বাকি এখন 

ফতেমা বললো নিতাই রে  ,চল রে পলাই মুরা  ,হেথায়  কেউ বুঝবে না কো মুদের  

পুরো দিলবালে দুলহানিয়া রিমেক ,

নিতাই  বললো কই যামু ,হেথায় আমাদের ঘর হেথায় আমাদের মাটি 

শুনলো না ,বুঝলো শুধু সময় 

ধরা পড়লো হাতে নাতে নিতাই আর ফতেমা ,

হিন্দু গ্রামের পঞ্চায়েত বিধান দিল 

এত বড় সাহস বামুন হয়ে চাঁদের গায়ে হাত 

ফাতেমাকে নগ্ন করে ,ন্যাড়া করে বেঁধে রাখা হলো গাছতলায়

রাতের অন্ধকারে বেশ কিছু গ্রামের জোয়ান পিষে দিতে দিতে  ফাতেমাকে বললো শালী জানি গতরে তোর আগুন ,মুরা আছি তো 

তাই বলে হিঁদুর ছেলে । 

.

সেদিন অন্ধকারে দুটো জিনিস ঘটলো সে গ্রামে 

ধর্ম বলে নিয়মের গল্পটা বদল হবে বলেও বদলালো না 

আর নিতাই বিষের সিসি হাতে রক্তাক্ত  ফাতেমাকে জড়িয়ে ধরে বললো 

আর বেঁচে কাম নাই রে ,চল পালাই,একসঙ্গে ঘর বাধুম ওপারে। 

 


ঈশ্বর ও চলন্তিকার কথোপকথন

 ঈশ্বর ও চলন্তিকার কথোপকথন 

ঋষি 

.

ঘুম আসছে না ,গভীর রাত ,বাইরে তুমুল বৃষ্টি ,আর চলন্তিকার মনে তুমুল ভাবনা ,অস্থিরতা। ঈশ্বরের মুখোমুখি চলন্তিকা। ...

.

চলন্তিকা : বলতে পারেন ঈশ্বর এই মহাবিশ্বে শান্তি কই ? শান্তি কি শুধুই একটা শব্দ  যা অভিধানে লেখা ?

.

ঈশ্বর : শান্তি সে তো প্রেমের আদিমরূপ,মানুষের প্রেমে শান্তি ,জন্মের প্রেমে শান্তি ,শান্তি মানুষের গভীরে এক তৃপ্তির নাম। 

.

চলন্তিকা : প্রেম কাকে বলে ? প্রেম বলতে এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র নরনারীর মিলনকে বোঝায়,বোঝায় একটা নিয়ম। 

.

ঈশ্বর : নরনারীর মিলন সে তো এই মহাবিশ্বের জন্ম নিয়ন্ত্রণের  কারণ সেখানে প্রেম কই। প্রেম হলো  ঈশ্বরের রূপ ,এক গভীর বোধ ,এক আত্মার শান্তি। তুমি যেখানে নিজেকে ফিরে পাবে ,তুমি যেখানে নিজেকে আলাদা করতে পারবে না ,

তুমি যেখানে নিজের আত্মাকে বলতে পারবে আর তো কিছু চাই নি ,এই তো আমি বেশ আছি বুঝবে সেটাই প্রেম। প্রেম কোনো নিয়ম নয় ,প্রেম কোনো অধিকার নয় ,প্রেম কোনো প্রাপ্তি নয় ,প্রেম হলো মুক্তির আরেক নাম,সে তো খোলা আকাশ। সে একলা সময়ের বৃষ্টি ,তোমার মুক্তি। 

.

চলন্তিকা : তবে বুকের মধ্যে এত কষ্ট কেন ?শান্তি নেই কোনো ?এই বৃষ্টির রাত কেন একা আমি ? ঘুম আসছে না কেন ?আমি কি পাগল নাকি আপনি হাসছেন এইভাবে ?

.

ঈশ্বর : আরে না না ,আমি হাসছি না। আসলে তোমার ভিতরে কোনো একটা যুদ্ধ চলছে ,সেই যুদ্ধটাকে তোমায় অস্থির করছে। তুমি পাগল না তুমি সাধারণ ,তুমি প্রেমিকা ,তুমি জানো না তুমি কেন বেঁচে ? তুমি জানো হয়তো তোমার গন্তব্য অথচ সেই গন্তব্যে পৌঁছোবার জন্য যে ত্যাগ তোমাকে করতে হবে ,তাই ভেবে তুমি ব্যাকুল। তুমি আরো গভীরে যাও ,তুমি শান্ত হও নারী। 

.

চলন্তিকা : কি বলছেন আপনি ? আপনি জানেন আমার প্রেমিক আমাকে কতটা ভালোবাসে ? আপনি জানেন আমি একমাত্র তার কাছে। আপনি কোন গভীরতার কথা বলছেন ,আপনি কোন প্রেমের কথা বলছেন ,আমি সব বুঝতে পারি। আপনি শুধুই নামেই ঈশ্বর ,আসলে আপনিও সাধারণ আর আপনিও একটা নিয়ম। 

ঈশ্বর : চুপ করো হে মূর্খ নারী ।  তোমার প্রেমিক তোমাকে ভালোবাসবে এটা সাধারণ ,তুমি অস্থির হবে এবং তোমার একলা দিনে ঘুম হবে না  তাও খুব সাধারণ। কিন্তু আসলটা হলো তুমি ভালোবাসতে পারো ,কিন্তু ত্যাগ করতে পারো ,

এই মহাবিশ্বে  সকলেই পাওয়ায় বিশ্বাসী ,কেউ ত্যাগে নয়। আর অস্থিরতা জীবনকে কলুষিত করে অপেক্ষা করতে শেখো। কালকে বা সময়কে বিশ্বাস করতে শেখো। আবারো বলছি প্রেম  মানে প্রাপ্তি নয় প্রেম  মানে মুক্তি। সময় হলো এইবার আমায় যেতে হবে। ...

.

চলন্তিকা : ক্ষমা করো প্রভু ,আমি ঈশ্বর চিনতে ভুল করেছি।   

Tuesday, August 3, 2021

ট্রাফিক স্যিগনাল

 ট্রাফিক স্যিগনাল 

... ঋষি 


যে দুটো চোখ আমাকে তাড়া করে রোজ 

যে দুটো চোখ অনবরত খুন করে আমাকে 

আমি কিছু বলতে পারি না তাকে 

ভালবাসা বিছানা বদলালে শুধুই শরীর বদলায় 

কিন্তু আত্মা বদলালে 

ফাঁকা শহরের এটিএমে চুরি হয়ে যায় বাঁচার মানে। 

.

আমাদের দেখা হবে কোনওদিন

এই কথা ছিল না

আমাদের আবার কথা হবে 

সেই কথাদের ভিড়ে হারিয়ে গেছে একটা গোটা বিশ্ব।

এখন রাস্তায় কোনও ট্র্যাফিক পুলিশ নেই

শুধু প্লাস্টিক জড়ানো দেহ প'ড়ে থাকে 

এই প্রথম বুঝলাম আমাদের বাড়িগুলো এতদূরে?

.

টিমটিম করছে বাল্ব

একলা শহরে হঠাৎ বৃষ্টিতে জল জমে যায় তোমার ঘরে 

আমি জানি তোমার ঘরে আজকে একটা পুরোনো শহর বাস করে 

বাস তোমার শরীরের ঘুলঘুলিতে বিষাক্ত কিছু ব্যাথা ,

অথচ আমি দোষী এই কথা মানতে আমার বুকে লাগে। 

একটা মাটির তলায় থাকা  প্রাচীন সভ্যতায় কোনো দাগ ছিল না 

ছিল না কোনো কারোর পায়ের শব্দ 

শুধু  একটি সবুজ আলো জ্বলে ছিল  

ট্র্যাফিক সিগন্যালে এ শহরে ।

.

তখন মানুষ ভূতুড়ে মুখে জানলা থেকে দেখতে চাইছিল 

কার ছায়া পড়ে আছে, খিদে না ব্যাধির?

আর আমি দেখি বিষাদ 

আসলে বিষাদ একটা ব্যাধির নাম ,বিষাদ একটা খিদের নাম 

বিষাদ একটা রাস্তার নাম 

আর আমি ট্রাফিক স্যিগনালে দাঁড়িয়েই ধৈর্য্য খুঁজি 

জানি তোমার ভাবনার  কাছে আমার বিষাদ কিছু নয়। 

আমাদের দেখা হবে কোনওদিন, এই কথা ছিল না 

এখন গোপনে জানি

তোমার আমার মধ্যে একপৃথিবী মৃত্যু শুয়ে আছে

আর আছে ট্রাফিক স্যিগনাল। 


গ্রহান্তর



 গ্রহান্তর 

... ঋষি 


গন্তব্য খুঁজছি আমি 

তুমি বুঝছো সব ,আবার বুঝছো না ,

তোমার বিরক্তির দুই ভ্রুর মাঝে অলক্ষনে সব ভাবনা ,

সত্যি হলো আকাশ আমাকে ছাড়তে চায় না 

ছাড়তে চাই না আমি আকাশকে 

শুধু আকাশ বুকে আমি আজকাল মরে যেতে চাই। 

.

জীবিকা খুঁজছে গ্রহ 

আকাশের বুকে গ্রহান্তর ,নামান্তর ঠিকানা বদল ,

তুমি ফেসবুক করো ,গান করো ,ছেলে বড়ো করো 

তুমি ভুলে যাও সময়ের ঠিকানা 

পৃথিবীতে কোনোকিছু অমর ,অপরবর্তনশীল নয় এই মহাবিশ্বে 

সত্যি হলো বায়ুশূণ্য কিছু থাকে না এখানে। 

.

হ্যা আমার আসতে দেরি হবে 

আসলে আমি তো বলতে পারি না আমি আসতে চাই না আর 

শুধু আকাশের বুকে একলা থাকতে চাই ,

এই দ্যাখো, ভুলে গেছি, তুমিতো আবার

মাউথ ওয়াশ নিয়ে বাথরুমে পাঠাবে আমাকে ,

কেমন সব ডিসেন্ট গালাগাল আছে তুমি গুছিয়ে বলতে পারো আমায় 

কিন্তু তুমি  তো জানো যারা মহাকাশে পাড়ি দেয় 

তাদের শুধু আবিষ্কারের নেশা 

তাদের মৃত্যু ভয় থাকে না। 

তোমাকে আমি কিছুতেই বোঝাতে পারি না 

আমি ফিরতে না চাইলেও ,ফিরবো রোজ 

কারণ আকাশের মধ্যে মানুষের বাড়ি থাকে না 

থাকে মনের বাড়ি। 


স্ত্রী

 


স্ত্রী 

... ঋষি 

স্ত্রী নিয়ে কথকতা 

প্রশ্ন করেছি নিজেকের এই পরমায়ুতে  স্ত্রী কাকে বলে ?

স্ত্রী হলো সকালের পাখির ডাকে ঘুম ভাঙার মতো একটা নিয়ম ,

স্ত্রী সময়ের খসে পরা অদ্ভুত নিয়ম 

সোসাইটি একলা হাততালি দেয় 

নিজস্ব সভ্যতায় 

আনুগত্য দাসের মতো সময় নির্দেশ করে বারংবার। 

.

ভালোবাসা গণিত নয় 

ভালোবাসা নিয়ম নয় 

সময়ের বরফের উপর আগে ছিল একটা হ্রদ 

এখন সেই হ্রদের বরফের স্কি করে শুধু এপাশ ওপাশ মাঝ রাতে ,

বরফের তলায় জীবন্ত মাছগুলো 

একলা জাগিয়ে রাখে সারা রাত। 

.

স্ত্রী আছে? স্ত্রী নেই?

 স্ত্রী কাকে বলে?

হয়তো পুরুষকেন্দ্রিক এই শব্দটায় নারীবাদ নেই 

স্ত্রী আসলে এই সভ্যতার কাছে একটা নিয়মিত রমন 

গ্রিক স্ক্যাল্পচারের সেই সঙ্গম যা সকলে দেখে 

কিন্তু শিল্পীর সেই হাত চুমু খায় শিল্পীর প্রেমিকা গভীর সুখে। 

বিমর্ষ হলুদ হয়ে ঝরে যায় 

রঙ মেলে কি মেলে না কে জানে

স্ত্রী হলো এক ধরণের রংমিলান্তি খেলা ,আশ্চর্য রমন 

তৃপ্তি সভ্যতার মুখে সাদা ভাত আর সন্তানের মুখ। 

হৃদয়কে ম্যারিনেট করে ডিপ ফ্রীজে একধরণের সামাজিক আশ্রয় 

তার বাইরে স্ত্রী শব্দটা বড্ড বেশি কাঙাল 

আসলে সম্পর্কের নিয়মে আমরা সকলেই অসহায়। 

.

পুনশ্চ :

নিয়মিত জীবন 

জীবনের বাইরে আকাশ দেখাটা পরকীয়া 

ধরো আমি কবি নই ,একলা প্রেমিক। 

তারপর একটা মৃতের বাসি গন্ধ বায়ুতে ছড়িয়ে দূষিত করে সময় 

আর বাকিটা 

গন্তব্য। 

পরম্পরা

 


পরম্পরা 

.... ঋষি 

.

কেউ হেঁটে যাবে তোমার হাত ধরে 

কেউ হঠাৎ অন্যমনস্কতায় এই শহরে খুঁজবে তোমাকে 

চিরকালের গল্প এটা। 

ক্লোরোফিলে লেগে আছে এই শহরের দূষণ 

সবুজ গড়িয়ে নিশ্বাস ছাড়া বাঁচার নামা ভালোবাসা

অবিশ্বাসের নাম বেঁচে থাকা ।

.

পাখি ডাকবে ,

একের পর এক বাঁধ ভাঙবে ,গ্রাম ভেঙে শহর 

সবুজ ফুরোবে 

তুমি শুনতে পাবে না তোমার প্রিয় পাখির কলরব হঠাৎ একদিন 

জানি বেঁচে থাকবে সেদিনও 

এই পৃথিবীতে নিয়মমাফিক অনিয়মে। 

.

কেউ বেঁচে থাকবে সেদিনও তোমার পাশে 

তুমি আকাশের বুকে মাথা দিয়ে খুঁজে নেমে গভীর পরশ 

অথচ রাতের বালিশে তখন তোমার সিঁদুর। 

কেউ কানে কানে বলবে তোমার 

চলন্তিকা আর পারছি না ,আর না....... ,পারছি না বাঁচতে। 

জানি কিছু বদলাবে না 

জানি কিছু বদলায় না 

শুধু তোমার চুলের  রেলিং বেয়ে আমি থেকে যাবো 

শুধু তোমার শাড়ির আঁচলে আমি বায়বীয় 

আর তো কিছু নেই ,

সময়ের আর সময়ের অধিকার 

বাকিটুকু পরম্পরা।  


Monday, August 2, 2021

একটি অধার্মিক প্রশ্ন

 একটি অধার্মিক প্রশ্ন 

... ঋষি 


ধর্ম ও অধর্মের থেকে দূরে যেখানে মানুষ দাঁড়িয়ে 

প্রশ্ন করি ,ধর্ম কি ?

প্রাচীন একটা গাছ ,পাখিদের স্যানাটোরিয়ামে ফোটা একটা ফুল ,

এক বৃদ্ধ দূরে তাকিয়ে খুঁজছে শৈশবের শিমুল গাছ

কী গভীর ফুটে আছে লাল হয়ে 

ধর্ম তবে কি ?

.

তোমাকে যেখানেই দেখি,অবসন্ন হয়ে পরে বর্তমান

দূরে কোথাও  কোনো দেশে কৃষ্ণচূড়া ফোটে,

সাইরেন নিভিয়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স চলে যায় বাইপাসের পাশে জ্বলন্ত রোগ ছেড়ে 

আকাশে তখন এক নক্ষত্র খোঁজ ,

তোমাকে যেখানেই দেখি মনে হয় 

মাশআল্লা ধর্ম বোধহয় দাঁড়িয়ে আছে ইন্তেজারের পাশে। 

বাইরে একটানা ডেকে যাচ্ছে ফেরিঅলা পুরোনো খবর কাগজ খোঁজে 

কাগজের ভাঁজে সভ্যতা শুয়ে থাকবে ঝালমুড়ির ঠোঙায় ,

জানি তুমি দাঁড়াবে না 

ফিরতে হবে ব্যস্ত সময়ের ট্রেন 

আর আমি  টিকিট চেকার। 

.

ধর্ম ও অধর্মের মাঝে যখন যখন তোমার কথা উঠল

আমি খেয়াল করলাম তিলফুলে ভরে গেল মাঠ

তুমি এলে

তারপর আর কিছু নাই ,শুধু মেঘ, আর শাদা শাদা মেঘ

উড়ে যাচ্ছে। 

 অন্তত এটুকুই সান্ত্বনা হোক--মেঘের ওপারে 

আমাদের বাড়ি-- ঈশ্বরে বাড়ি 

ঈশ্বর তবে  ধর্ম না অধর্ম ?

যে মেয়েটা মরণের দড়ি হাতে জীবনকে পাশ কাটাতে চায়

তার চোখের কাজল 

রোজ মরণ, 

দূরে দাঁড়িয়ে একটা কৃষ্ণচূড়ার গাছ 

রক্তাক্ত হয়ে উঠছে একা  

জীবনকে পুলিশ ভেবে পালিয়ে যাচ্ছি আমি। 


নো বডি



 নো বডি 

... ঋষি 


হি ইজ নো বডি 

এইভাবে শুরু হয়েছে একটা জীবনের পথচলা 

এক্স বীমায় শুয়ে আছে কিছু বেঁচে থাকা ,কিছু মরে যাওয়া ,

আমি দেশ কাল পাত্র কিছু বুঝিনি কোনোদিন 

শুধু ভালোবেসেছি 

এই শহরের অলিতে গলিতে ছুঁয়ে থাকা বাঁচার রোগ। 

.

মারাত্নক একটা ব্যাধি নিয়ে সময় চলে গেলো 

সেও কবিতার পাতা জুড়ে আমার ভাবনাদের নিয়ে ফেললো সমুদ্রে ,

সমুদ্রে হারিয়ে  যাওয়া মাটি 

কালান্তর 

সুখ ছিল কবিতা লিখছি তাই 

আজকাল কবিতার পাতাগুলোও আমাকে চিবিয়ে খায়। 

.

হি  ইজ নো বডি

তবুও একটা দিন আমি একা থাকি না তোমায় ছাড়া 

তবুও মুহূর্তদের আখরোটে আজও লেগে আছে কলাপাতার নির্যাস 

তবুও ব্যতিক্রান্ত বুকে একের পর এক হিম  পাহাড়,

বরফ গলে 

পাহাড়ের হাঁড় ,আমার শিরদাঁড়ায় রুখে দেয় নিজেকে। 

ব্যাধির শহরে আজকাল কান পাতলেই শুনি মৃতদেহ 

একার শহরে আজকাল পা বাড়ালেই শুনি সভ্যতার কান্না 

কোথায় যাই বুঝতে পারি 

কোথাও আছি বুঝতে পারি না 

মাঝে মাঝে আমারও তোমার মতো মনে হয় 

হু এম আই ?

নো বডি। 

  


ডার্কস্পট

ডার্কস্পট
..ঋষি 
রিজেক্টেট ডার্কস্পট
ক্রমবিবরর্তিত চিন্তাগুলো ক্রমশ ঘুরছে বর্তমান থেকে ফাঁকা পার্সে 
তারা সকলে ইভনিং শোয়ের পরে ডার্কস্পট
ক্রমশ সেল্ফিতে চিনতে পারছি বহুকোষী নিজেকে।
.
ল অফ অর্ডার 
গোলাপি তৃপ্তিতে একলা দাঁড়িয়ে আমি আদিম পুরুষ 
এক আটপৌরে বচপন
সাদা পায়রার গুঁড়োগুলো শুধুই বাকুম বাকুম, 
না বদলানো শ্যামাসংগীত একরোখা হৃদয়ে বলি খুঁজছে 
আহুতি, জয় মা কালী। 
.
ল অফ নেচার 
চুরি যাওয়া আঁচিল তোমার জিভের নোনতা গন্ধ 
গুপ্তকায়দায় খুন করছি নিজেকে রোজ গ্লিসারিন ঢেকে,
হাসছে সভ্যতা 
তোমার ব্রেসিয়ারের স্ট্রাপে দাঁত আঁকড়ে জীবন খুঁজছি 
শরীর না, 
উঁচু পাহাড়ের ওপারে হাতছানি দিচ্ছে ডার্কস্পট।
জীবন বলছে 
ক্লোজ দ্যা ডায়েরি,
নোবডি দেয়ার ফর ইউ
ইটস আ টাইম, ম্যাচিওর ইউর গোলস। 



ক্যালাইডোস্কোপ



 ক্যালাইডোস্কোপ

... ঋষি 

 

রাত 

প্রতিটা রাতের আলাদা গন্ধ আছে 

আলাদা গন্ধ আছে একলা শহরে শুয়ে থাকা নরনারী ,রাতের বিছানায় 

আমি হিংসা করি তাদের 

যারা ঘুমোতে যাবার আগে আর ঘুম থেকে উঠে মুখ দেখে 

আবার দাঁত ব্রাশ করে মানুষ হয়ে ওঠে। 

নির্ভরতা 

.

আদর নিয়ে নির্ভরশীলতা আমার চিরকালীন 

বুকের রেলিঙে তোমার খোলা চুলের আগুনে অন্ধকার 

আমি জ্বলি ,মরি 

সকলেই এই শহরে মানুষ নিয়ে খেলে 

কেউ কেউ জানা অজানায় খেলে ফেলে মন নিয়ে। 

.

জেব্রাক্রসিং 

.


নিয়মিত কিছু কথা খুব সামাজিক এই সময় 

রাস্তায় হাঁটার সময় জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করুন 

অথচ কেউ বলে না 

একটু আলাদা করে জীবনটাকে দেখুন 

কিংবা বাঁ চু না। 

.

বিষন্নতা 

.

কঙ্কালের গায়ে ভালোবাসা লাগলে ঘুম ভাঙে রাত 

আর বিষন্নতার গায়ে লাগলে 

সময় বলে ধুস ,কয়েকফুট জীবনে কয়েকশো অজুহাত ,

হাসি পায় ভাবলে 

মানুষ মানুষকে ভালোবাসে আজও বাঁচবে বলে। 


জাস্ট ফর নাথিং

 


জাস্ট ফর নাথিং

,,,ঋষি 

  • We can know only that we know nothing. ...
  • .

কষ্ট হয় 

কষ্ট বুঝতে আজকাল  আসলে নিজের আয়না যথেষ্ট ,

স্নানঘরে ভিজে চলা আকুতিগুলোর রিয়ালিটি আসলে জাস্ট ফর নাথিং। 

জানি পৃথিবী বদলাবে না 

জানি কলম্বাসের পৃথিবী প্রদক্ষীন প্ৰচলিত হলেও সময়চিত নয় 

সব কথা শুধু সমুদ্রের ফেনার মতো ফুরিয়ে যায় 

ভালোবাসা শব্দটা আসলে চারদেয়ালে যতটা রঙিন 

দরজা খুললেই সরে যায়। 

.

কেন লিখছি ?

কষ্টদের কোনো ঘর কোনোদিন ছিল না 

ছিল না আশ্রয় ,

এই পৃথিবীর একটা মাহাত্ব হলো যারা বাঁচে তারা বাঁচে 

আর বাকিরা মরে। 

মৃত্যুর কোনো দেশ হয় না 

উদ্দেশ্যহীন পথচলায় পথিক হয়তো মৃত্যুর মুসাফির ,

সময়ের কবিতায়  সত্যি বলাগুলো সাহিত্যের পাতায় সেক্সপিয়ারে হ্যামলেট 

জনতার হাততালি আসলে বাঁচার সাক্ষী ,

সকলে হাততালি দিয়ে বাঁচতে চায় 

কিন্তু কজন মৃত্যু বুকে নিয়ে কষ্টের কবিতায় নিজেকে কফিনের শহরে দেখে। 

.

কষ্ট হয় 

স্পর্শগুলো বৃষ্টি ফোঁটার মতো শুধু মেঘসময় 

আর বাকিটুকু কষ্ট  হয় , নিদারুন মৃত্যুর সাক্ষী হয়ে। 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...