Wednesday, February 28, 2024

কষ্টের কবিতা

দস্যুর মতো ঝাঁপিয়ে পরার অভ্যেসটা নিরুত্তর
কিছুতেই যারা পালাতে পারে না, আসল তারাই হেরো 
তারাই  মিডিয়ায় গোটা ৯৭ প্রানপণ ট্যাগের পরও
জিততে চায়,,, কবি। 
মগজ থেকে কবিতার উন্নয়ন বোধহয় পালাতে চাওয়া
কিন্তু কিছু কথা, কিছু মুহুর্তের জন্য অপেক্ষা
সে বোধহয় ভালোবাসায় পাওয়া। 
.
কথা,  সব আঁকিবুকি! 
যারা এই  বসন্তে আজও  হো হো করে হাসছে 
তারা ঢোঁক গিলেও উচ্চারণ করতে পারে না ভালোবাসার নাম
অথচ তাদের সেভিংস একাউন্টে জমা আছে নিশ্চিন্ত বার্ধক্য
কারণ তারা বাঁচতে চায়, 
অথচ ভালোবাসা যে মরে, যেমন আকাশে বোকা চাঁদ দাঁড়িয়ে থাকে। 
.
ভালোবাসার আগুন ভিতরে দাউদাউ, বাইরে ঝর্নার হাসি
হেরে যাওয়া মানুষগুলো তবু পালাতে শেখেনি
তারা অকাতরে নিজের রক্তেবিন্দুর বুদবুদে তোরী করে
জড়ানো ওম,
ভালো না বাসলে কবি হবে কি করে? 
যদি বলতেই হয়, আমাকে পড়ো তবে কিসের কবিতা? 
কবিতার রুপ দেখো কবির রক্ত বিন্দুতে,
ভুলে যেও কবিতা  লিখতে গেলে কবিকে হারতে হয় বারংবার 
মরুভুমিতে এক বিন্দু জলের অপেক্ষায় দিন কাটাতে হয় 
তবে তো কবিতা আসে
তবে তো কবিতা আসে
কিন্তু পাঠক ভুলো না কবিতার কষ্টগুলো তোমাকে ছুঁতে চায়। 
.
কবিতার কষ্টগুলো তোমাকে ছুঁতে চায়
.. ঋষি 
 

Tuesday, February 27, 2024

চুমু বনাম কবিতা

একটা চুমু দিবি ?
সোজা একটা পাঁচিল তুলে দিলে আমার সামনে ,
বললি  তুই ঠিক মানুষের মতো ডেইলি প্যাসেঞ্জার নোস
তোকে চুমু খেতে গেলে পাথর হতে হবে 
কেন জানিস 
পাথর কখনো জায়গাবদল করে  না। 
.
প্রেমিকের আবদার আছড়ে পড়লো তোমার শরীরে 
তুমি হাসলে বললে তুই কুত্তার মতো চুমু খাস বুঝি  
আমার চাহুনিতে একটা পাগলামি 
তুমি বললে বুঝলি, পশুই ভালো মানুষের থেকে  স্বার্থহীন। 
আমি বললাম  কবিতাও তো স্বার্থহীন রে 
তুমি বললে শব্দ আছে তাই কবিতা ,বর্ণ আছে তাই কবিতা 
শব্দ হলো  স্বার্থ। 
আমার ঘুম ভেঙে গেলো 
আমি মধ্যরাতে আঁতকে উঠলাম তোমার উদ্দেশ্যে 
বললাম তোমাকে ,এই শোন কবিতার যদি  শব্দ স্বার্থ হয় 
তবে চুমু তবে ভালোবাসার স্বার্থ 
আমি তোকে চুমু খাবোই ,আর খাবো কুকুরের মতো। 
.
চুমু বনাম কবিতা 
... ঋষি

শহরের গল্প

ক্রমাগত কুড়িয়ে চলেছি এই শহরের অভিশাপ 
ভালো থাকা আর না থাকার মাঝে দাঁড়িয়ে শহরের নাগরিকত্ব 
চশমার কাঁচের  আড়ালে প্রতিটা সম্পর্কের দরজা 
সবটাই বেশ একটা দিন কাটানো গোছের ,
হাসছি ,কাঁদছি ,খেলছি ,উঠছি ,পড়ছি ,তবু দাঁড়াচ্ছি কই ?
শহরটা যেন দৌড়চ্ছে এক অতৃপ্তির পিছনে। 
.
সাজানো সংসার ,বাড়ি ,গাড়ি ,সন্তান ,সন্ততি 
তবু সকলেই কত একা ,
এ শহরে এমন কোন গল্প আমার জানা নেই ,যেখানে কোনো পর্দা নেই 
এ শহরে এমন কোন সম্পর্ক আমার জানা নেই, যেখানে মুখোশ নেই 
একটা অদ্ভুত ওঠাবসা ,হাসিকান্নার জীবন 
তৃপ্তি সে যেন সাজানো বাগানের পিছনে অন্ধকার দিয়ে ঢাকা। 
.
হাতের মুঠোফোনে হাজারো যোগাযোগ 
স্যোসাল মিডিয়াতে সারাদিন ইমোজিরা অনুভূতিগুলো সব আরামপ্রদ 
তবে সাধারণ জীবনের পিছনে পোষা এক অসাধারণ স্বপ্ন দাঁড়িয়ে সকলের 
হাতড়াচ্ছে জীবন যাত্রা অনুভূতিদের নিয়মাবলী। 
ফুটো পকেটে শুয়ে থাকা ভালোবাসা স্বর্গ খুঁজছে ,
সম্পর্কের অভিশাপ সন্তানহীনতা ,পরগামিতা  ,দীর্ঘশ্বাস 
শরীরের কোনে  বাসা বাঁধা তুমুল অভিযোগ 
অথচ রোগের শহরে প্যারাসিটামল  যেন অহংকার 
আর ফুটো কনডমের সুখে রাজনীতি ভুগছে।  
কাছের মানুষ খোঁজে ফেরে মন  
একটা আশ্রয়ের সন্ধানে সকলের বার্ধক্য ছুঁয়ে যাচ্ছে একটু আগেই 
তবু তৃপ্তির আকাঙ্খায় মানুষ পাখি হয়ে চায় এই শহরে
অথচ সিগারেটের ধোঁয়ায় শহর পুড়েচলে ,
          আমরা ফ্যাক্টরি প্রোডাকশন  ।  
.
শহরের গল্প 
... ঋষি

পাথেয়

শব্দের পাশে বসে শব্দরা অপেক্ষা করে অন্য সকালের 
অক্ষরে দাগে লেগে থাকে সংগৃহিত যাপন 
প্রতিবারেই কালপুরুষের পাশে যেমন নিজেকে কল্পনা করে মানুষ 
ঠিক তেমন  এই শহরের কল্পনায় থেকে যায় স্বপ্নচিত কথন। 
ডুবে থাকা জীবন, রাতভোর ডুবে থাকার  জন্য যথেষ্ট নয়
প্রেমিকের হাত দুটি কাটা পড়ে সুশীল নাগরিকত্বের দায়ে 
সময়ে  লেগে থাকে  দাগ 
চাল ,ডাল ,খিদে অনন্ত কোনো রাহুগ্রাসে । 
.
আকাশ নক্ষত্র  জন্ম দেয়
অন্ধকার ছোট ছোট নীড়ে আমাদের রাতগুলো অনন্ত 
টুপটাপ নক্ষত্রের মতো ঝরে পরে জীবনের অজস্র সুর 
পাথেয় জীবন,তবুও মাথার ভিতর বিকারগ্রস্থ দিন ,
এই শহরে প্রতিদিন ছায়ারা হাতে হাত রাখে হাজারো কর্মব্যস্ততায় 
মানুষের মতো তাদেরও বাঁচার প্রতীক্ষাতে মানুষের দৌড়।  
মানুষ ঘুমের ভিতরে বাঘে -হরিণে একসাথে  ঘাস খায় 
সম্পর্কের আঁচল ভরে ওঠে খিদের তারতম্যে 
আমরা শুধু  হাঁটতে শিখেছি সম্পর্কের মাঝে 
আঁকতে চাইছি নক্ষত্রের ঘর ,
যেখানে বাঘ আর বুনো মহিষের পরিভাষা আলাদা হয়
তবুও ঘুম ভেঙে গেলে—উঠে দেখি, 
মৃত নক্ষত্রের মাটিতে আমাদের বিছানা ভরে গেছে।
.
পাথেয় 
... ঋষি

Friday, February 23, 2024

বাঁশির শব্দ


অফিসের ডেস্কটপ টপকে হঠাৎ ঢুকে পড়ো তুমি 
একটা গোটা বিকেল ,
কিছুই  কথা বলা হয় না শুধু দেশপ্রিয় পার্কের শহরের শব্দের অছিলায় 
হঠাৎ দেখা হয়ে যায় ,
সেই তুমি ,সেই আমি ,সেই দূরত্ব ,সেই দুর্বলতা 
একটা বাঁশি বাজে বুকের ভিতর কেউ শুনতে পায় না। 
.
চারিপাশে এই শহরে সালোকসংশ্লেষের ভীষণ অভাব 
অভাব সবুজের 
বেঁচে থাকা আর বাঁচিয়ে রাখার মাঝে একটা কংক্রিটের বারান্দা 
বারান্দাময় টবে কতরকম গাছ ,গাছেদের সংসার 
শুধু মাঝে মাঝে বড় শ্বাসকষ্ট হয় 
এই শহরে কবিতার ভিড়ে তুমি চলন্তিকা নিদ্রাহীন বড়। 
.
ইদানিং থেকে থেকে মনে হয় আমার বোধ হয় এক্যুরিয়াম দরকার 
দরকার মাছের জীবন 
কারণ ঘুম আসে না ,চোখ বন্ধ হয় না কিছুতেই ,
একটা মাৎস্যন্যায় প্রথা এই শহরে আকাশে ,বাতাসে চোরা চর্চায় 
শুধু কিছু যেন তাড়া করে সর্বক্ষণ। 
অদ্ভুত একটা স্পর্শ ,অদ্ভুত সেই চাহুনি ,অদ্ভুত তুমি চলন্তিকা 
তোমার চুলের ঝুলফিতে হঠাৎ ভাঙা বিকেলের চাঁদের আলো 
আকাশে তখন একটা সম্পূর্ণ  চাঁদ ,
জানি মাছেদের সংসারে কোনো চাঁদ নেই 
শুধু জলে শুয়ে থাকে চাঁদের ছায়া ,
আর গাছেদের সংসারে শুধু বিশাল আকাশ 
আর চাঁদ সে তো শুধু সবুজ ভেজাতে চায় 
কিন্তু এ শহরে সবুজের বড় অভাব ,সবটাই শুধু মুহূর্তের। 
.
বাঁশির শব্দ 
... ঋষি

Thursday, February 22, 2024

তামাশা

 এ অন্ধকার স্বেচ্ছাকৃত
 এ নির্বাসন সপ্ন অর্জিত
 আর্তনাদ ক্রমশ চিৎকার থেকে বদলাচ্ছে পশু কান্নায়
একফালি অসময়ের বৃষ্টি যেন এশহরকে শান্তনা দিচ্ছে,
আসলে কিছু হারাবার আগে অনেককিছু হারিয়ে যায়
সম্পর্কের দলিলে এ শহরে মিসিসিপি মিসৌরী
এক প্রাচীন সভ্যতার ফসিল শুধুই কি  প্রত্নতাত্ত্বিক?
.
প্রথমবার নয়,অথচ শেষবার নয়
অথচ বারবার
কাহিনির লতাপাতা এক, শুধু সময়কাল বদলায়
যা তামাশার মতোই বাজতে থাকে‌,
কাল যা সত্যি, আজ অন্যকিছু, পরশু আরওকিছু
বাইরে তখন কড়া প্রহরা
অথচ প্রাসাদের ভিতর হাম, তুম ওর হামারে। 
.
তবূও  সেই কড়া প্রহরায় 
প্রান ভ্রমরার সোনার কৌটো চুরি হয়ে যায় 
কেউ টের পায় না ? 
মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করে, হঠাৎ শীত করে
আডজাস্টমেন্ট মানে কি নিজেকে ভুলে যেতে হয়?  আমার সারেঙ্গীর তার ছিঁড়ে গেছে
বাঁয়া গেছে উলটে
ইদানীং কোন সুর থাকে না এ জীবনে
এ শহরের ম্যাএফিলে শুধু  শোনা যায় ভালোবাসার রিমিক্স,
সৃষ্টির ঈশ্বর ঘুমিয়ে পড়ে অসময়ে
অসময়ে বৃষ্টি নামে শহরে
জানি ঘুম ভাঙে ভালোবাসার  অচেনা কোন বিছানায়
শুধু প্রত্নতাত্ত্বিক  কোন সাক্ষী থাকে না । 
.
তামাশা
.. ঋষি 

Tuesday, February 20, 2024

আলো ছায়া

আলো ছায়া মেঘ 
একটা মেয়ে আগুন খুঁচিয়ে উঠে এসেছে ভুখা মানুষের ভিড়ে 
একটা মেয়ে বর্ণমালা হয়ে লেগে আছে আমার বুকে
আবার সেই বাংলা ভাষা ,মায়ের ভাষা ,সময়ের ভাষা 
বাঙালির ভাষা ,কবিতার ভাষা ,মর্যাদার ভাষা 
" মোদের গরব ,মোদের আশা ,আ মরি বাংলা ভাষা।" 
.
সেই মেয়েটা যাকে আমি ভালোবাসি 
সেই অনবদ্য কোনো স্নেহের ভাবনায় আমি কবিতায় লিখি 
ইদানিং তুমি হাসো না,তুমি ক্লান্ত 
যত্ন করতে চাই, কবিতা ,গানে আর পাশে থাকায়
"বাংলা আমার জীবনানন্দ, বাংলা প্রাণের সুখ
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ॥"
.
সেই ক্লান্ত মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার  গোঙানির শব্দ 
খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে লড়ে চলেছে সেই মেয়েটা বর্ণপরিচয় 
আমাদের লজ্জা নেই ,ঘৃণা নেই ,কোনো বোধ নেই 
শুধু অধিকারের গল্প লিখি, 
ভুলে যাই আবুল বরকতদের রক্তের ইতিহাস
শুধু বিজ্ঞাপনী প্রোফাইলে ট্যাগ করে লিখি আমি বাঙালি। 
অথচ দিনান্তে প্রতিদিন  সেই মেয়েটা ক্রমশ মৃতপ্রায় 
চারিপাশে বেড়ে চলা ভাষাদের আদরে কবিতা উৎসব 
গানের উৎসব ,সাংস্কৃতিক পরিবেশ 
মেয়েটা হাঁপাচ্ছে, বাঁচতে চাইছে, তার বহুদিনের অনিদ্রায় সময়ের ভয়
কিন্তু  এই ভাবে কি মেয়েটাকে বাঁচানো যাবে? 
যদি মন থেকে ভালো না বাসো তাকে 
যদি রক্তের বর্ণগুলোকে যত্নে স্বদেশে জড়িয়ে না রাখো। 
.
আলো ছায়া 
... ঋষি

অন্ধকার মানুষ

কোন সময় পড়েছে? 
এখান তো  উপরওয়ালার পারমিশন বিনা  নিঃশ্বাস নিতেও মানা
ইদানিং মানুষ অন্ধকার খুপরিতে  মুখ লুকিয়ে রাখতে ব্যস্ত 
সেখানে কোথাও জানলা নেই, কোন কথা বলার মানুষ নেই 
আর এই দমবন্ধ পরিবেশে দরজার কথা ভাবাটা  বাহুল্য। 
বাতাস নেই বলে এখানে হিন্দু ,মুসলমান হাজারো জাতিভেদ  
শান্তি নেই  বলে এখানে অভিমান ,ভয় ,খিদে ,অহংকার,ভালোবাসা  
রাজত্ব বেঁচে  আছে , তাই পার্টি অফিস ,বিভিন্ন রঙের পতাকা 
পঞ্চবার্ষিকীতে নতুন ঈশ্বর। 
.
মানুষ জানে মুঠো খালি রাখতে নেই
তাই  ফুল,বেলপাতার কাজ শেষ হয়ে গেলেও 
হাতের কাছে যা পাওয়া যায়
পাথর, ধুলো, মরা মানুষের চামড়া ,নষ্ট মেয়েছেলের শাড়ি 
সবকিছু মানুষ  জাগ্রত ঈশ্বরের নামে  দু-হাত ভর্তি করে নিয়ে আসে ,
মানুষ জানে কিছু না কিছু তাদের মানতে হবেই 
সে সময়ের জোরে হোক ,বাহুর দমে হোক 
কিংবা সামাজিক অথবা  শাসনতন্ত্রের চাপে। 
সত্যি হলো আমরা সুস্থ নাগরিকের বেশে অন্ধকার ঈশ্বর স্থাপন করি 
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে গঙ্গাজলে মুখ ধুয়ে ফেলি 
কিংবা চাটি কোন ঈশ্বরের জুতো 
যদি কৃপা পাই ,তবে বেঁচে যাই 
তবে এটা সত্যি এখন সবই ঈশ্বরের রিমেক ,সৃষ্টি নেই 
এখন শুধু মৃত ঈশ্বর আর অন্ধকার মানুষ  । 
.
অন্ধকার মানুষ  
... ঋষি

Saturday, February 17, 2024

কুড়নো বসন্ত

একটা নিদ্রাহীন তুমিময় রাতের পরে  কাকভোরে শহরটা জেগে ওঠে 
আমি তখন সামুদ্রিক জাহাজের মাস্তুল খুঁজি ভাঙা শহরের কবিতায় 
নিঃশব্দে বেলা বেড়ে যায় ,বেড়ে চলে বুকের ভিতর প্রতীক্ষার ঢেউ।  
বেলা গড়ালে কে যেন মুঠোফোনের ওপার থেকে সামুদ্রিক ঝড় তোলে 
তখন এ শহরে কোনো শব্দ থাকে না 
শহরটা কেন যেন ঘুমন্ত ,
ঠিক তখন আমার ঠিকানাহীন শর্তে হঠাৎ কিছু কষ্ট লেগে যায়। 
.
প্রত্যক্ষ কষ্টগুলো কেমন গা সওয়া , যেন বহুকালীন 
সকাল জুড়ে আমার আঙিনায় ঋতুবদলের রোদ  , 
আমার বুকের গভীরে সেই একান্ত নোনা জলে একান্তে বেঁচে তুমি 
কেমন আছো চলন্তিকা ইদানিং জানতে ইচ্ছে করে ,
আমি তো বস্ত্রহীন,অস্ত্রবিহীন হেঁটে চলেছি ,ভেসে আছি বিশাল সমুদ্রে 
যেখান থেকে আমি তোমাকে দেখি , ঢোক গিলি 
মনলোভা সেই সাধের সংসার ,আমার তুমি 
আর কুড়নো বসন্ত। 
.
এ বয়সে যে  মৃতসঞ্জীবনী আর  কবিতা হতে পারে না 
এখন শুধু স্বচ্ছন্দ বোধ করি নিঃশব্দতায়  ...
তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে ,ভালো লাগে মরতে 
শব্দহীন কোনো সমুদ্রে একলা ভেসে আমি ক্রিস্টোফার কলম্বাস 
যার কাছে ‘রহস্যময়’ এক মানচিত্রে তুমি ,
যার সাথে বহুদিন পরে দেখা হয় বারংবার ,প্রতিদিন অভিমান ভরা বিশাল সমুদ্রে 
কিন্তু বিশ্বাস করো চলন্তিকা সমুদ্র কোনো অভিনয় জানে না 
আর নোনা জল 
এই অনর্থক জীবন আর নিজেকে খোঁজে না। 
.
কুড়নো বসন্ত
... ঋষি

Friday, February 16, 2024

গোপন বসন্ত

একটা ঘুমের ভিতর হেঁটে যাচ্ছে শহর 
সকলেই এখানে পাখি হতে চাইছে ,
ইদানিং একে একে খসে পড়ছে সমস্ত মেঘের পালক 
একটা অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে বেঁচে আছে সকলে
তুমি বলছো ভয় আর আমি ভাবছি
বেঁচে থাকার এক নির্ভরশীলতার গল্প। 
.
ইদানিং চারিদিকে এতো অধিক রং 
মনখারাপ লাগে আয়নার মুক্তির পথে আকাশ ঢাকা শহরে, 
সময়ের শরীর ভেঙে আসে 
হঠাৎ ফুরিয়ে যায় নিয়ম করে আমার বরাদ্দ বাঁচাটুকু 
টস করে জীবন খুঁজতে গিয়ে 
ইদানিং কয়েনটা আকাশে হারিয়ে যায়। 
.
হাজারো রঙের মাঝে নিজেকেও রঙিন করতে ইচ্ছে করে যখন
চলন্তিকার চোখে তখন একটা শান্ত কাজল ,
একটাই অভাব 
তোমার ছোঁয়ার ইচ্ছেগুলো অপেক্ষায় থাকে এই শহরে 
সবকিছু তো বলা হয়ে ওঠে না তোমাকে  কিছুতেই। 
ভালোবাসা আছে কিনা বেঁচে সে সমন্ধে আর কোন প্রশ্ন নেই 
প্রশ্ন হলো এ শহরে বসন্তের সমাগম 
হাজারো রঙের রঙিন মানুষ, হাজারো কবিতায় 
জীবন লিখতে গিয়ে তোমাকে খুঁজে চলে
আর আমি খুঁজি গোপন বসন্ত। 
.
গোপন বসন্ত
... ঋষি 

Wednesday, February 14, 2024

একদিন না

হঠাৎ হাওয়ায় ভেসে এলো আমাকে ভালোবাসবি 
আমি বসন্ত সমাগমে আগুন দেখলাম 
ভয় পেলাম 
প্রশ্ন করলাম কেন ? কেন ভালোবাসবো ? কিভাবে ভালোবাসবো ?
উত্তর এলো ভিতর থেকে চলন্তিকা 
ভালোবাসবো। ভালোবাসবো। আত্মায়। 
.
তার পর কেউ জানি বললো কোনোদিন তো বলিসনি আমাকে ভালোবাসিস 
আমি শুনতে পেলাম বুকের ভিতর ঘোড়ার খুরের শব্দ 
ভালোবাসা।  বলতে হয় তবে। 
ভালোবাসলে নিশ্চয় ছুঁতে হয় ,চুমু খেতে হয় ,জড়াতে হয় 
কিন্তু 
আমি যে চলন্তিকায় ,আমি যে সারাক্ষন ,আমি যে ভালোবাসায়। 
.
আবার কেউ ভিতর থেকে বললো আমাকে তোর মতো কেউ ভালোবাসেনি 
আমার ভিখিরির ফুটপাথে ছড়িয়ে পড়লো অসংখ্য বসন্ত 
তোর সাথে কাটানো আমার অতি গোপনীয় একলা অসংখ্য রাত্রি 
অসংখ্য সহমরণের পর আমার বুকের ভিতর কেউ চিৎকার করলো 
এইভাবেও ভালোবাসা যায় তবে 
এভাবেও বেঁচে ওঠা যায় ,এভাবেও চলন্তিকা।
নিঃশ্বাসের আগুন তোর বুকের হাঁপরে ,তোর ঠোঁটের আকৃতিতে 
তোর তানপুরা জুড়ে শুধু সুরের ঝংকারে ,
আমি তোর মাথায় রাখলাম 
বললাম শান্ত হ ,ভালোবাসি তো ,ভালোবাসি তো 
তবে এমন সস্তার ভ্যালেন্টাইন দিনের মতো একদিন না 
প্রতিদিন ,প্রতিমুহূর্তে ,প্রতিক্ষনে ,
বুকের  ম্যাগাজিনে জমানো অসংখ্য বুলেটের মতো 
কোল্ড ০.৪৪ রিভলভারের গুলিতে মৃত একজন প্রেমিকের মতো। 
.
একদিন না 
... ঋষি

it's a wonderful life

তোমরা কি চেয়েছিলে সকলে ,তোমরা কি চাইছো  
একটা জীবন ,ভালো চাকরী ,সুন্দরী বৌ ,একটা দুটো ছানাপোনা 
তারপর একটা নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের ওপারে পেনশন 
সকলের ছেলে ,মেয়ে বিদেশে চাকুরীরত ,
ইটস আ ওয়ান্ডারফুল লাইফ 
সত্যি  কিনা , অসাধারণ একটা জীবন পুরো সিনেমা। 
.
কান পাতলেই শুনতে পারছি 
পাশের বাড়িরই মিরা বৌদি কাজের ঝিকে বলছে দেখ দাদা বিবাহবার্ষিকীতে এই হারটা এনেছে 
কিন্তু বলতে পারছে কি গত দুরাত্রে দাদা বাড়ি ফেরে নি ,
অনন্ত দার  মাছ কিনতে গিয়ে ইলিশমাছ দেখে চোখ চকচক করলেও 
মাছওয়ালাকে বলছে আমাদের বাড়িতে ইলিশ মাছ কেউ খায় না ,
চিরঞ্জিত দাদু চায়ের দোকানে বলছে আমার ছেলেটা ব্রিলিয়ান্ট বিদেশে থাকে 
কিন্তু বলতে পারছে কি শেষ দুমাস ছেলে একটাকাও বৃদ্ধ বাবাকে পাঠায় নি। 
.
এতো ভালো ,এতো আলো সবকিছু  
তবুও  অন্ধকারটা ,আর অন্ধকারগুলো কে নেবে ,কে দেবে 
খুব সত্যি করে বললে ইদানিং মানুষের সম্পর্কগুলো সব প্রয়োজন 
একটা বোঝাপড়া। 
প্রয়োজন বাঁচা ,তাই মানুষ বাঁচে 
অনুভূতিগুলো আগুনে পুড়িয়ে লাল গলন্ত লোহা 
যেমন প্রয়োজন ,তেমন আয়োজন ,তেমন আকৃতি। 
এই শহর জানে প্রতিদিন অনুভূতি আর মিথ্যে বাসর সাজিয়ে 
স্বপ্ন দেখতে 
তাই তো খুব সহজে কুশল বিনিময়ে মিরা বৌদি ,অনন্ত দা ,চিরঞ্জিত দাদু আরো অনেকেই এই শহরে  বলে ভালো আছি 
অথচ সারা শহরের মানুষ আজ হাসতে ভুলে গেছে। 
তবুও দিনের শেষে কেউ বিবাহিত বিছানায় ,কেউ নেশার গ্লাসে 
কেউ রান্নাঘরে ভাতের হাঁড়িতে,কেউবা অন্ধকার শহরের একলা রাস্তায়
কেউ মৃত স্বামীর ছবির পাশে ,কেউ ফোনের ওপারে ,কেউ সন্তান আঁকড়ে  
নিজেকে খুঁজছে 
সকলেই বলতে চাইছে সত্যি করে মিথ্যেটা 
ইটস আ ওয়ান্ডারফুল লাইফ
কিন্তু সত্যিটা হলো আমরা সকলে বোতল বন্দি সেই দৈত্য । 
.
ইটস আ ওয়ান্ডারফুল লাইফ 
... ঋষি

Saturday, February 10, 2024

শেষ অবধি

শেষ অবধি লক্ষ্মী মেয়ে হয়ে বসলে তুমি 
গিয়ে বসলে সন্তুষ্টির পাশে,সময়ের কাছে তোমার অনন্ত মুক্তিতে 
শেষ অবধি তবে তুমিও খুনি হলে বটে আমার মতো 
গিয়ে দাঁড়ালে পুরোনো রক্তাক্ত পিছলা স্মৃতিতে , 
এবার তবে তুমি ভালো থেকো 
এবার তবে তুমি  আবার একটা গল্প লিখো তোমার খেয়ালে। 
.
ভেবো না, আমি দাঁড়িয়ে থাকবো ঠিক 
আছি আমি, থাকবো তোমার দরজার দুপাশেই 
একপাশে যেখান থেকে দরজাটা ভীষণ রকম কষ্টদায়ক তালা লাগানো 
অন্যপাশে দরজাটা ভেজানো ,কিন্তু যেখানে নো এন্ট্রি লেখা
আর ভাবার দরকার নেই আমাকে নিয়ে 
আমি আর ভেজানো দরজাটা  খুলবো না।  
তবে কি জানো এখনো বুঝতে পারি নি , কোনটা তোমার গল্প 
সেই গল্পটার যেটা তুমি লিখতে চেয়েছিলে 
নাকি সেই গল্পটার যেটার লেখার অপেক্ষায় আমি চিরকাল। 
এইবারে আর বইমেলা যাওয়া হয় নি কারণ তুমি যাওনি 
এবার কোনো কবিতার বই আমার প্রকাশ হয় নি 
আসলে অনেক ভেবেও আমার কবিতার বইয়ের নামটা তুমি বললে না 
তবে এটা সত্যি আমরা দুজনেই আজ কবিতার কাছে ঋণী 
কারণ মন্দ ,ভালো ,সময় পেরিয়ে আমার কবিতায় তুমি চিরকালীন 
 তুমিই চলন্তিকা ।  
.
শেষ অবধি 
... ঋষি

কালো গোলাপ

কালো গোলাপ 
... ঋষি 
.
যে ফুলটা ফোটাবার কথা ছিল 
এক ঝটকায় শুকিয়ে আজ পরে আছে সেই পুরোনো ডাস্টবিনে 
যেখানে থেকে আমি কোহিনুর কুড়িয়েছিলাম ,
বাবার কাছে শোনা সেই গল্পের নায়িকা নাকি মৃত্যু খুঁজেছিল 
খুঁজেছিল নাকি  একটা যাপন অনবদ্য বাগানে। 
কিন্তু সত্যি কি এই শহরে কোনো ভালোবাসার বাগান আছে ?
যেখানে ফুল ফোটে নিয়ম করে ,ফোটে প্রতিশ্রুতি ,
নাকি সবটাই সুবিধাজন কোনো প্লাস্টিকের ফুল  । 
.
আজ জানতে ইচ্ছে করে চলন্তিকা তুমি কি চেয়েছিলে 
ভালোবেসে মুক্তি ,নাকি একটা গুপ্তহত্যা 
ইদানিং  একটা হাসিমুখ সর্বদা  বুকের মাঝে আগুনের মতো পোড়ে ,
আজ শুধু জানতে ইচ্ছে করে প্রতিশ্রুতি শুধু কি একটা কালো গোলাপ 
যা শুধু ভালোবাসার কবরে মুহূর্ত হয়ে ফোটে ?
বেশ তবে তাই হবে চলন্তিকা ...
আমার সমস্ত  আশা আকাঙ্খা ভালবাসা রক্ত হাড় 
মুহূর্তের সংলাপে পুড়ে মাটিতে মিশে যাক 
সেই মাটিতে তুমি  গোলাপের চারা বসিয়ে দিও,
দেখো কোনো একদিন ঠিক ফুল ফুটবে সেখানে 
সকলে বুঝবে কালো গোলাপ 
একমাত্র তুমি ঠিকই বুঝবে সেই বোকা লোকটা আজও কাঁদছে 
বলছে চলন্তিকা একটা তো অধিকার দরকার।

Thursday, February 8, 2024

কি নাম রাখি

কি নাম রাখি 
... ঋষি 

তোমার কি নাম রাখি ?
যন্ত্রনা ,অনুভব কিংবা  মৃত্যু ,
প্রস্তাবিত ভালোবাসার বসন্তে উড়তে থাকা শুকনো পাতা 
কি নাম দেবো তোমার এই শহরে  ? চলন্তিকা। 
.
দীর্ঘশ্বাসের সাথে  সহাবস্থান রাখতেই
ভেঙ্গে পড়লাম  কান্নায়
কান্নার নাম- কি রাখবো, কি রাখবো তোমার নাম 
ভাবতে ভাবতে গড়িয়ে এলো মুহূর্ত 
চুম্বনের কল্পনায় ,ক্রমাগত,ক্রমশ মনের গভীরে 
কি নাম দেব তোমার।  কি নাম  ? চলন্তিকা। 
.
অভিধানে পরে থাকা সামাজিক উপলব্ধি ,ভাঙা ঐকতান 
ভুলতে পারি না কিছুতেই তোমাকে  ,
ইদানিং মনকষাকষি ,একের পর এক পাঁচিল ভাঙা ভিড় 
কি নাম রাখবো সেই সব পাঁচিলের , অভিমানের ? চলন্তিকা। 
পাশ ফিরে শোয়ার নাম সহাবস্থান হতেই পারতো
ক্রমাগত ,ক্রমশ দূরে সরতে থাকা হাত 
দীর্ঘশ্বাসের ক্লোনে তৈরী হওয়া তোমার মুখ 
এ কোন অবসন্নতা ,এ কোন তদারকি ,এ কোন ভুল বোঝাবুঝি 
কোনো অবকাশে ভেঙে পরা ভালোবাসার বাড়িটার 
কি নাম রাখবো ? চলন্তিকা। 
আমি আছি ,তুমি আছো ,আছে তো আমাদের একটা বাড়ি 
অপেক্ষা ,অনুর্বর আগামীতে স্বপ্নের ঘাসফুল 
কেন বোঝো না ,তুমি। কেন ,চলন্তিকা তোমার নাম ।

Saturday, February 3, 2024

এই শহরটাকে আমি ভালোবাসি রোজ 
এর খারাপ, ভালো, শত ব্যস্ততা নিয়ে দৌড়ানো  স্বভাবে
আমি রোজ নিজেকে মরতে দেখি, আবার বাঁচতে। 
এই শহরে মানুষ প্রেমে পরে,
আবার ভাঙা প্রেম সেলোটেপ লাগিয়ে উঠে দাঁড়ায় 
হাজারো সম্পর্কের মাঝে হঠাৎ হাঁপিয়ে গিয়ে একলা দাঁড়ায়
অথচ এই রোজনামচায় বিশেষ কিছু বদলায় না
মানুষ ছাড়া। 
.
এই একমাত্র শহর যেখানে হলুদ ল্যাম্পপোস্টের ছায়ার পাশে
ফিরতে ফিরতে
হঠাৎ ভেসে আসে মুহুর্তের গান
কথা হয়েছিল, তবু কথা হলো না,,,,,,,,। 
এই এক মাত্র শহর যেখানে মানুষকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে
কিন্তু তার থেকে বেশি ইচ্ছে করে অবিশ্বাস করতে 
এই একমাত্র শহর যেখানে গত কদিন শহরে বইপ্রেমীদের ভিড় 
তারপর আবার সেই ভিড়ের শহর। 
.
এই শহরে হাজারো মানুষের ভিড়ে আমি অবাক হই 
কারণ এখানে কেউ হাত ছেড়ে ভিড়ে মিশে যেতে চায় ঠিক 
কিন্তু সে আবারো হাত ধরতে চায় প্রতি মহুর্তের ,
এই একমাত্র শহর যেখানে কোনো বিস্ময় নেই ,নেই কোন স্থিরতা 
সকলে ছুটছে নিজের অভিমানে ,কষ্টে ,একান্তে আনন্দের খোঁজে 
অথচ সকলেই ক্লান্ত। 
আমি এই শহরে অবাক হয়ে মানুষ দেখি 
দেখি অচেনা কেউ হঠাৎ আবার ফিরে আসে বহুদিন পরে 
হাত ধরে বসে কোথাও কোনো নির্জন পার্কে কিংবা মেট্রোয় বেঞ্চে 
তার পরে বলে কেমন আছিস আমাকে ছাড়া। 
আমি মুহূর্তে বিশ্বাস রাখি ,নিজের সাথে যুদ্ধ করি 
হয়তো জিতে  গিয়েও প্রতিবার হারতে চাই 
কিংবা হেরে গিয়ে জিততে ,
আমি জানি ইতিহাস  তাদের মনে রাখে, যারা জেতে
আর যারা হারে তারা হারিয়ে যায়। 
.
হারানো শহর 
... ঋষি

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...