Friday, April 29, 2022

অন্তর্বাস

 





অন্তর্বাস


.... ঋষি 


পরকীয়া আকাশের ডাঙায় পাখি 


পরকীয়ায় প্রেম খোঁজে  পাখির ঠোঁট ,আকাশের ডানা ,


পরকীয়ার বুকে তিন প্রহরের উৎসব চলে 


তাই প্রেমিকার  বুকে পাখি মেরে ফেলা সম্ভব


স্নান করে নিংড়ে কুঁচি কুঁচি করে ছড়িয়ে ফেলা  ।  


.


পরকীযায় পুরুষ হয় ,পরকীয়ায় নারী হয় 


পরকীয়ার জিহ্বায় স্বাদ খোঁজে মানুষ ,তবু বেদুইন হতে থাকে 


তবু পরকীয়ায় শরীর ডিঙিয়ে ন্যাংটো শরীরে সাপ আর ঈগল খেলা করে


আর শরীরের নিচে চাপা পড়া আত্মা আকাশ খোঁজে 


তবুও নিশ্বাস খোঁজে ফেরে পাখির আস্তানা। 


.


পরকীয়ায় লোকে বই কেনার থেকে কন্ডোম বেশি কেনে 


পরকীয়ায় পরস্ত্রী ,সমাজ ,গোপন অন্তর্বাস ,সময়ের ব্লাউজের মাপ 


সব কেমন গুলিয়ে যায় ,


সত্যি মানুষের বুকের মাপ নেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। 


পরকীয়ায় নারী সর্বদা উলঙ্গই থাকে 


নারীর বুকের স্তন তখন অন্নভূমি


সেই স্তন যখন শুকিয়ে যায় ,চাপা পরে পরকীয়ায় 


হাজারো ফুলের মালা 


হাজারো নারী একলা তখন। 


আমি ভাবছি পরকীয়া কি শুধু মানুষের শরীরে থাকে 


কারণ পরকীয়ায় কেউ কবিতা লেখে না 


পরকীয়ায় কেউ কাউকে আদর করে না 


পরকীয়ায় পুরুষ নারীকে বলে তুমি ফুলের থেকে সুন্দর 


আর নারী বলে আমি শুধু তোমার গোপন অন্তর্বাস। 


কবিতার পাতা

 কবিতার পাতা 

... ঋষি 


মায়া একটা টলটলে জলের পুকুর 

স্নান একটা অনবদ্য কবিতার পাতা 

 বুকের পাশে শুয়ে  আমি সর্বদা। 

জীবন থেকে দূরে একটা শরীর 

হিসেবে করে চলতে হবে প্রতিদিন 

না পাওয়ার হিসেবে কবিতার পাতা। 

এখনো তোমার স্তনে দুধ আছে 

তাই গভীরে কবিতারা মা খুঁজছে 

আমার কবিতার পাতাতে বেজন্মা জন্ম । 

তুমি আজকাল বদলানো কবিতায় থাকো 

দোষ দেও আমাকে দশের মাঝে 

অথচ আমার কবিতার পাতায় নিস্তব্ধতা। 

ঝগড়া করবো বলে কবিতা লিখছি 

তবে আজকের সংসারেরা  শুধু শব্দবাজ 

আর কবিতার পাতায় ব্যক্তিগত সংলাপ।  


এমন কিছু ঘটনা



এমন কিছু ঘটনা
.. ঋষি 
যেদিন রফিককে পুড়িয়ে মারলো ওরা
সব বুদ্ধিজীবী চুপ ছিল 
শুধু চুপ থাকতে পারে নি  রফিকের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী তনয়া।
তনয়া ছুটে গেছিল পুলিশের কাছে 
সম্ভ্রান্ত পুলিশ পান চিবোতে চিবোতে বলেছিলেন 
কেসটা নেওয়া যাবে না, উপর মহলের চাপ আছে। 
.
তনয়া ছুটে গেছিল ধর্মের কাছে 
ধর্মের মাতব্বরেরা তখন আমে দুধে এক 
তনয়াকে তারা বলেছিল কষ্ট হয় জানি কিন্তু ধর্ম বলে তো কিছু আছে, 
পার্টির লোকেরা বলেছিল সামনে ভোট 
এখন তোমাকে সাহায্য করতে গিয়ে হেরে যাই আর কি 
তাছাড়া মুসলমানের হিন্দু বউ 
একি ধর্মে সয় বলো। 
.
তনয়া ক্লান্ত, শ্রান্ত পায়ে ফিরে এসেছিল রফিককে দফন করে
তারপর চিৎকার করে কাঁদছিল সে 
কেউ দাঁড়াই নি তখন তার পাশে 
তার বাবা,মা, রফিকের দিকে কেউ, কেউ না, 
শুধু রাত অন্ধকার হলে তনয়া ক্লান্ত শরীরটার উপর হামলে পড়েছিল কিছু জন্তু 
তনয়া স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিল কেউ তাকে বলছে
হিন্দুরা কি পারে না মাগী, তুই গ্যেছলি মুসলমানের কাছে।
.
সকালের আলো ফুটেছিল সেদিনও  নিয়ম করে
শুধু তনয়ার ধর্ষিত বিকৃত শরীরটা পাওয়া গেছিল গ্রামের পাশে পুকুরে
অনেকে দাঁড়িয়ে দেখেছিল সেদিন 
অনেকে মন্তব্য করেছিল আহারে এত অল্প বয়স। 
থানার অফিসার তদন্তে নেমে একটা কাজ করেছিলেন সেদিন বুদ্ধিমান ভাবে 
ফাইল ক্লোজ, 
বিশ্বাস করুন এই খবরটা কখনই সামনে আসে নি কোনো খবরে
আসলে কেউ জানতেও চায় নি 
কিন্তু আমি জানতে পেরেছি 
কারন আমি জানি যাহা কিছু  ঘটে তার কিছু তো বটে। 

Thursday, April 28, 2022

খিদে

 খিদে 

.. ঋষি 


খিদে পায় ! খিদে পায় ঠিক 

জন্মের আগে জন্মের পরে এক সময় খিদে আমাদের বুকে ,

আন্টি ক্লক ওয়াইশে কিছু সময় একলা সর্বদা 

তাদেরই মনে পরে 

যাদের ভোলা যায় না। 

.

মেয়েদের শরীরে একইসাথে আকাশ আর একটা বিশাল গাছ 

অথচ তোমরা সর্বদা গুপ্তহত্যা খুঁজছো 

খিদে !

জেদী কোনো ধারালো দুপুরে তোমরা নিজের নারীকে ধর্ষণ করো 

তারপর ঠান্ডা ফ্রীজে খুঁজে পেতে চাও খিদে। 

.

আমার কোনো ঈশ্বর নেই 

কারণ আমার খিদে পায় 

তোমাদের ঈশ্বর মাতাল ? যেখানে সেখানে চেটে বেড়ায় 

তোমাদের ঈশ্বর প্রেমী ? মুখোশ 

তাই তোমাদের খিদে শুধু লেলিনের পুরনো ছবিতে দাঁড়ির মতো। 

.

সবাই তোমার চোখের প্রশংসা করে 

কেউ কেউ পাপী ,কারো কারো গোপন খিদে ?

সবাই দেখছে বৃন্দাবন 

কিন্তু বৃন্দাবনও শাড়ি পরে 

কৃষ্ণ বুকে মাতাল তুমি জানি ঈশ্বর বিরোধী 

তবু খিদে তোমারো পায় জানি। 

রাষ্ট্র বনাম আমি

 


রাষ্ট্র বনাম আমি 


.. ঋষি 




আমি রাষ্ট্রের সাথে সন্ধি করে তোমাকে হারাতে পারবো না 

পারবো না নিজের রক্তের সাথে সন্ধি করে 

দরজা বন্ধ করে সঙ্গমে কোন অপরাধীর জন্ম দিতে । 

আমি যে সময়ের রক্তকে চিনেছি 

সে শুধু আমার সন্তানের 

সন্তানের মৃত মুখে আমি জীবিতের পতাকা পুঁততে পারবো না। 


.


বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের সহবস্থান দরকার 

সহবস্থান দরকার বেশ্যালয় আর মন্দিরের পূজারীদের  ,

যে সমাজ মাগী শব্দের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারে না 

আমি পারবো না সেই সময়ের সাথে সন্ধি করতে। 

আমি পারবো না কালো পতাকা হাতে প্রতিটা ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে

পারবো না মোমবাতি হাতে মিছিলে দাঁড়াতে 

কারণ এই মিছিলের বিজ্ঞাপনগুলো হারিয়ে যায় হাওয়ার থেকেও তাড়াতাড়ি। 

.


আমি বিশ্বাস করি 

আমার লাশের কোনো হেডফোন থাকবে না  ,থাকবে না  সিগারেটের কথোপকথন, 

আমি জানি আমার আগামী  মৃত্যুর উপর কালো গোলাপ পোঁতা 

এই দুঃখ সময়ের না ,সমাজের। 

আমি বিশ্বাস করি 

রাষ্ট্র তৈরী করে কর্মঠ  ঘর্মাক্ত কিছু মানুষ আর তাদের রক্ত 

আমি বিশ্বাস  করি এসি রুমে বসে রাষ্ট্রের উন্নতিসম্ভব নয় 

সম্ভব নয় গরীব সেই ন্যাংটো ছেলেটাকে রাষ্ট্র শেখানো, 

আসলে সত্যি হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মানুষ হওয়া দরকার 

কিন্তু মানুষের মুখোশের বিনময়ে তা  সম্ভব না। 

আমি ঘুমোতে চাই

 আমি ঘুমোতে চাই 

... ঋষি 


হ্যা আমি তোমার ভিতর ঘুমোতে চাই 

কারণ আমার ছোটবেলার সেই মিনতি বৌদিকে মনে পরে যখনতখন 

হয়ে আমি তোমার ভিতর ঘুমোতে চাই 

কারণ আমি দেখি মিনতি বৌদি পুকুরে চান করছে যেন মাছের শরীর 

আর সেখানে লুকিয়ে আছে সেই ছেলেটা 

যে আত্মহত্যা করেছিল মিনতি বৌদি যেদিন গলায় দড়ি দিল। 

.

আমার কি স্পর্শ করেছিল জানি না 

তবে সেই বয়সে বুঝেছিলাম মিনতি বৌদির শরীর ছাড়িয়ে কিছু একটা রয়ে গেছে

তাই দিনে দিনে আমার ঘুম বেড়েছে,

তাই আমাকে দেওয়া প্রতিটা ঘুমের প্রস্তাব আমি বিচার করে দেখেছি 

সেখানে সমুদ্র থাকলেও 

সেই পুকুরটা নেই ,যেখানে মিনতি বৌদি চান করে ,

.

আমি তোমার ভিতর ঘুমোতে চাই 

কারণ প্রতিদিন রাত্রি হলে তোমার স্তন মরুভূমি হয়ে যায় 

প্রতিদিন সকালে তোমার স্তন সাজানো 

কিন্তু আমি কাফকার গল্পে পড়েছি তোমার শরীর ভোরের শহর 

ঘুম ভাঙাতে চাইলেও 

সকালে আমি ঘুমিয়ে থাকি তোমার সাথে। 

আমার ঘুম না আসা চোখে যখন সেই বছর কুড়ির ছেলেটা 

সংসারের দরজায় খুলে দাঁড়ায় 

আমি দেখি মিনতি বৌদির শরীর হওয়ার থেকে হালকা 

আমি চাই  তোমার শরীরে একটি মধ্যবিত্ত সাহসী শহরের জন্ম দিক 

যেখানে কোন নারীকে স্নান করতে দেখাটা অন্যায় নয়।  


না ফুরোনো শহর

না ফুরোনো শহর 

... ঋষি 


কলকাতা আমার প্রিয় শহর 

যদিও কলকাতার বুক জুড়ে আজও হারানো ট্রামলাইন 

যদিও কলকাতার বুকে প্রায় হারানো সেই হলুদ ট্যাক্সি 

তবে চিৎকারটা ঠিকঠাক আছে 

ঠিকঠাক আছে এই শহরের পড়ন্ত রৌদ্রের গড়ের মাঠ 

কিংবা ভিক্তোরিয়া ঘেঁষা বাদাম চেবানো প্রেম। 

.

কলকাতা বদলাচ্ছে 

যেমন বদলাচ্ছে সি বি আই রোজ রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের হাতে 

এখন টিভিতে সেই প্রভাতি সুর নেই 

শুধু সারাদিন ব্যাপী ব্রেইন ওয়াশ আর টাকার বিজ্ঞাপন 

এখন আর খবরের কাগজ পড়ে না বেশিরভাগ 

সকলেই এখানে খবর হতে চায়। 

.

কলকাতা আমার প্রেমিকার শহর 

গঙ্গা ঘেঁষে মেয়ে ,তার বুকে আমি নাবিকের কম্পাস 

তার স্তন পুরুষলোক ,সাজতে থাকে গভীর সমুদ্র। 

এই শহরে এখন সবাই উঁচু স্বরে কথা বলে 

এখন এই শহরে বই বিক্রি কমলেও ,বেড়ে গেছে বইয়ের সংখ্যা

এখন এখানে আর কেউ কবিতা লেখে না নিজেকে ছাড়া 

বিনয় ,বাদল ,দীনেশ অনেকদিন মরেছে রাইটার্সে। 

এখন এই শহরের বৃষ্টির জল খুব ধারালো 

এখন এই শহরের মানুষগুলোর সব মনখারাপ 

কিন্তু লেগে আছি তবু আমি  এই শহরের গায়ে 

লিখছি রোজ শহরটাকে 

কারণ এই শহর এখনও ফুরোতে জানে না।  


একটি সাধারণ কবিতা



একটি সাধারণ কবিতা 

... ঋষি 


চুল ঝেড়ে উঠে দাঁড়ায় সেই মেয়ে 


তার শরীরের  উজ্জ্বল জলের বিন্দুগুলো ছড়ায় দীপ্তি


তার  ছড়িয়ে পড়া চুলের শাসনে ,তার অবাধ্য স্তনের অবিচল শৈশবী হাওয়া 


তার উরুর  সাথে তার সেঁটে থাকে আলোকভেদ্য একটি কাপড়


সামান্য আনত হয়ে, চকিতে দৃষ্টি দেয় সে নদীর জলে 


জল থেকে উঠে আসে মেয়ে ।


.


আমি অবাক হয়ে ভাবি 


এ এক বর্ণনা কোনো বৌদ্ধ ভিক্ষুকের কলমে উঠে আসা নারী 


সৌন্দর্য সেটা নয় শব্দে যা প্রকাশিত


বরং না বলে যে বলা, সৌন্দর্য সেখানে,


উন্মোচিত নয় বরং অবগুণ্ঠনের ভিতর দিয়ে ফুটে ওঠা ঈশ্বর 


লোভনীয়  করে তোলে  কল্পিত নারীর স্তনদ্বয় ।


.


তুমি হাসছো 


আমাকে বলছো এ সব কি ভাবা হচ্ছে কবি ?


আমি বললাম সংস্কৃত কবি বিদ্যাকরের কবিতা 


তার ভাবনা 


নারী 


শরীর 


আর মুগ্ধতা। 


তুমি বললে এতো মুগ্ধ হলে আমার কি হবে কবি ?


কে দেখবে আমাকে ?


আমি বললাম ঈশ্বর যে ধ্যান দিয়ে তোমাকে তৈরী করেছে 


আমি সেই ঈশ্বরের ধ্যানের পূজারী 


তুমি আর তোমার ভাবনারা সে তো এক ঈশ্বর 


আর আমি খুব সাধারণ ,তাই আমি তোমাকে কবিতায় লিখি। 


কবিতার শরীর

 কবিতার শরীর 

... ঋষি 


কবিতাকে আমার কোনো সুন্দরী মহিলা মনে হয় 

যাকে দেখলে শ্রদ্ধা হয় 

কিন্তু কাম জাগে না মনে। 

অথচ আজকাল কিছু কামার্ত নারী কবিতা হওয়ার চেষ্টা করে 

জ্যালজ্যালে শাড়ির আড়ালে কবিতা লিখতে চায় 

আমার রাগ হয় 

আমি ভাবি বেশ্যার কবিতা লেখার জন্যও শরীর দরকার হয় না। 

.

সত্যি যদি স্তনের কবিতা লিখতে হয় 

তবে কান পেতে শুনতে হবে বীণার তাল 

দৈপায়ন হ্রদের কাছে মৃতপ্রায় দুর্যোধন সেদিন খুঁজেছিল কবিতা 

হয়তো বুঝেছিল নারী শরীরের কবিতা হয় না 

কবিতা হয় ভাবনায় 

যেখান শরীর ছুঁয়ে থাকে ঈশ্বরের চোখে। 

.

এই যে তুমি বললে বয়স হচ্ছে ,জিনিসপত্র বদলাচ্ছে 

চর্বি উঁকি মারছে 

আমি ভাবলাম আমার প্রেমের বয়স কমে গেছে 

কারণ শরীর থেকে বার্ধক্য 

বার্ধক্য ছুঁয়ে তুমি ,সোনালী ফ্রেমের চশমা ,জুলফির পাকা চুল 

কেমন মোহময় 

ঠিক আমার কবিতা যেন আমার আগামীতে শুয়ে। 

এপিটাফে লেখা আছে কবিতাকে মৃত্যুর দূত করে রেখো 

কবিতাকে ভালোবাসার চিঠি করে রেখো 

কবিতাকে জন্মান্ধ তৃষ্ণার মতো লেখো 

কবিতাতে শরীর লেখো 

কিন্তু শরীরের কবিতা ,ছিঃ 

সে যেন খুব সস্তায় একটা নর্দমার যোনি এই শহরে। 

.

যারা কবিতা দিয়ে শরীর খোঁজে 

আর যারা শরীরের খোঁজে কবিতা খোঁজে 

দুজনকেই আমার ঘৃনা হয় 

কারণ কবিতার শরীরে ঈশ্বরের বাস। 

 

অশ্লীল অথচ তুমি



অশ্লীল অথচ তুমি


... ঋষি 




আজকাল ব্রার দোকানে ঢুকলে অবাক হয়ে যাই  

চারিদিকে ঝুলন্ত এত স্তন 

মেসার্স হোসিয়ারী থেকে মেয়েরা লাল দাম দিয়ে 

 নিজের সুবিধা মতো বুক খুঁজে নেয় ,

আজকাল মনে হয় না মেয়েদের বুক ওঠে না  সেরম করে 

সবই কেমন যেন টাইটফিট ব্রা।


.


তুমি তোমার স্তনদুটোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখো 

আমি জানতে চাই বারংবার কষ্ট হয় না ওদের ?

তুমি স্নানের ঘরে গিয়ে ওদের খুলে দেও 

ওরা বাচ্চার মতো খেলাধুলা করে ,

আমার জানার ইচ্ছা রইলো 

ওদের এমন দড়ি দিয়ে দমবন্ধ করে রাখলেও 

ওরা বাড়ে কি করে ?


.


এদিকে গরম প্রায় ছুঁইছুঁই বিয়াল্লিশ ডিগ্রি 

এরপর একটা বজ্র বিদ্যৎ  সহ বীর্যপাত দরকার 

এরপর নিয়ম কোটর সকাল হবে পৃথিবীর পাড়ায় গৃহস্থ্য বেশ্যালয়গুলো 

ছিমছাম শোবার ঘর হয়ে যাবে ,

তুমি বলছিলে আগামী সাত আটদিন আরও তাপমাত্রা বাড়বে 

আমি ভাবছি তোমার বুকের বাচ্চারা রাত্রে ঘুমোবে কি করে। 


.


গতরাতে এত অন্ধকার ছিল না 

ঘুম ছিল না তাই 

ধর্ষিত জ্যোৎস্ন্যা যোনি বিছিয়ে  শুয়ে ছিল আমার পাশে, 

বেজন্মা শিশুর মতো জীবন খুঁজছিল আমাকে 

আমি আঁকড়ে ধরেছিলাম তোমার বুক দু হাত দিয়ে 

তারপর কখন যেন ক্লান্ত হয়ে ঘুম এলো 

সকালে উঠে দেখি  ভিজে কন্ডোমের খামে তোমার রসসিক্ত  যোনি। 


.


আমি অশ্লীলতার সুখে লিখে ফেলেছি প্রেম 

এরপর সকালের গনগনে আগুন পেরিয়ে তোমার শরীরটা সিমেন্টের মেঝে খুঁজবে 

আমি খুঁজবো তোমার কাপড় ঢাকা বুকে তোমার বাচ্চাদের 

তুমি জানো বোধহয় প্রতিটা মুখোশের ভিতর বিষাদ বন্ধু 

আর বিষাদের ভিতর লুকনো যৌনতা আশ্রয় খোঁজে ,

বুঝতে পারি না যৌনবিমুখ লোক যদি সন্ন্যাসী হয় 

তবে রাত হলেই তুমি কেন চলে আসো আমার কাছে। 


  

পিরামিড

 পিরামিড 

... ঋষি 

.

তুমি পাহাড়ের পাশে বসে আছো 

আমি মুগ্ধ তোমার বুকের পিরামিডের মুখে অদৃশ্য বরফে ,

তুমি মেঘে উড়ে যাও  

উড়িয়ে নিয়ে যাও আমাকে তোমার আঁচলের স্বাধীনতায় রোদ্দুরের কাছে ,

দ্রুত বাতাসেরা একলা সময়ে  বন্দি থাকে 

তুমি তোমার স্তনের পাশে একটা খরগোশ পোষো 

আমি জানি তার নাম হৃদয়। 

.

আমি জানি তোমার স্তনের যে অংশতে মাতৃত্ব বাস করে 

আমি চিনি  তোমার স্তনের যে পরিধিতে অগ্ন্যুপাত 

আমি জানি তাই দাঁত রাখি 

শুধু জানতে চাই তোমার অশ্রুর কতটুকু তোমার 

আর ঠিক কতটা আমার। 

.

তোমার বুকের পিরামিড একটা শাসন আছে 

তাই তো তুমি বলো কামড়াস কেন লাগছে তো !

বেঁধে রাখা দূরত্বে থেকে তোমার পিরামিডে  ফ্যারাওর বাস 

আমি শেষ সম্রাট মিশরের 

তাই বারংবার পিরামিডের দিকে তাকাই ,মুগ্ধতায়।

গতকাল বেঁধে রেখেছি মিশর 

আমার ভাবনার পোশাকে আমি ঢেকে রেখেছি তোমায় 

শুধু রৌদ্র নয় 

বেঁধে রেখেছি আমার একাকিত্বে এক বালির শহর  

তোমাকে বলা হয় নি কখনো 

মিশর এক রহস্যের দেশ। 

রমণীয়

 রমণীয় 

... ঋষি 


সেই সুখ ছিল সময়ের ভিতর 

সেই সুখ ছিল শৈশবের ভিতর 

আকাশের চাঁদ মাটিতে নামিয়ে সারা রাত্রি আঁকড়ে ধরতাম 

মায়ের বুক 

নাকি নারী ওম ?

.

নারীকে কেন রমণী বলে ?

যার স্পর্শ সুখে লোম খাঁড়া হয় ,সে রমণী না নারী ?

যার স্তন যুগলে চোখ আটকে থাকে আঠার মতো সে কি রমণী নাকি নারী ?

সভ্যতার উত্তর রমণ যোগ্য প্রতিটা শরীর নারীর 

আর এই সময় দাঁড়িয়ে 

রমণী কিংবা নারী কিংবা শিশু কি এসে যায় 

সবই তো শরীর।

.

সেই সুখ ছিল সময়ের ভিতর 

তখন সদ্য  যৌবনের আগুন দাঁত বসিয়েছে কোনো কামরাঙ্গা বুকে 

প্রশ্ন করা হয় নি সে কি নারী নাকি রমণী ,

বিছনার চাদর বদলেছি 

রঙিন বুদবুদের মাছ ,তাজা মাংস ,সুপ্রিয় নেশার ঘ্রান 

সব কেমন গুলিয়ে ওঠে 

প্রথম কবে চুমু খেয়েছিলাম মনে নেই 

প্রথম কবে আমি স্নান করি নি মনে নেই 

প্রথম কবে কাঁচা আমে দাঁত লাগিয়ে টকিয়েছিল দাঁত 

মনে নেই যৌবনের মিথুন প্রথম কবে ঘটেছিলাম 

মনে নেই অনেককিছু 

শুধু এখনো অবধি বুঝতে পারি আকাশের চাঁদে কেন হাত দিতে ইচ্ছে করে 

ইচ্ছে করে জানতে নারীরা কিভাবে রমণী হয়ে ওঠে।  


  

 

Tuesday, April 26, 2022

রীতিশা তোকে

  রীতিশা তোকে 

... ঋষি 


কিছু কিছু কথা 

         সম্বল  কবিতার পাতা ,

কি উপহার দেব তোকে রীতিশা ,শুভ জন্মদিন 

ভাবছি একটা গাছ উপহার দেব 

সবেমাত্র একটা দুটো পাতা ,সদ্য জন্মানো ডালপালা 

সত্যি একটি জীবন যদি দেওয়া যেত। 

.

সবাই বলে তুই এখনো বড়ো হোসনি 

আমি ভাবি আমরা  ভাইবোনের জন্মছিল না কোনোদিনই 

শুধু ছিল বড় হয়ে যাওয়া 

তাই বোধহয় আমাদের বড় হওয়াগুলো আমাদের শরীরে গাছ হয়ে গেলো 

আমাদের ভালোলাগা গুলো অনেকদূরের নিশ্বাস 

হয়তো আকাশ 

তবে বিশ্বাস কর বোন আমিও তোর মতো বাঁচতে চেয়েছি চিরকাল। 

.

কি উপহার দেব তোকে 

অনেক ভেবে ভাবলাম একটা গাছ উপহার দি 

তোর জন্য আকাশ ,তোর জন্য হাওয়া 

আকাশ ছাড়িয়ে তোর ঝাঁকড়া চুলের মাথা , 

ভালোথাকা ,ভালো বাঁচা ,আলোর অধিকার 

শুধু চিৎকারগুলো আরো জাগ্রত হোক তোর 

তোর লাগানো আগুনে কবিতার পাতা পবিত্র হোক 

পবিত্র হোক তোর জীবনের ব্যালকনিতে আগামীর দৃপ্ত আলো 

এই কামনা করি 

ভালো থাকে,শুধু এতটুকু 

শুভ জন্মদিন বোন । 


Sunday, April 24, 2022

মেনুফেস্টো

মেনুফেস্টো
.
সময় বলেছে “কর্মন্যে বাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন”
বাক্যটি চরিত্র ভেঙে দিচ্ছে
মিথ্যা মেনুফেস্টো 
লোক হাসছে, লোক হাসাচ্ছে। 
.
আসলে বুকে কোন দাঁত, মুখে সাজানো মার্জিত হাসি

প্রতিবাদ কুড়াচ্ছে 
আর পুড়ে মরে যাচ্ছে।

তোমাদের ঈশ্বর



তোমাদের ঈশ্বর 
..ঋষি 

তোমাদের সত্যি কোন ঈশ্বর নেই
নেই কোন উর্বর ভাবনা, নেই রাজনীতি , নেই যৌনতা
নেই প্রতিবাদ, নেই আগুন, নেই আয়না
তোমরা সকলেই চুপ করে বসে ভদ্রলোক সেজে ,
আসলে সময় তোমাদের ভয় দেখিয়ে চুপ করে থাকতে বলে
তুমি কুষ্ঠিয়ায় থাকো, তুমি ত্রিপুরায় থাকো কিংবা আসাম অথবা পশ্চিমবঙ্গে
সত্যি হলো তোমরা সকলে মুখস্থ বলো।
.
হ্যা হ্যা তোমাদের বলছি
তোমরা সকলেই ব্যক্তিগত বড়,
তোমাদের নিজেদের কোন বিপ্লব নেই, এমনকি সিগারেট ধরাতেও তোমরা আগুন খোঁজ,
তোমরা ২০২২ এ দাঁড়িয়ে ছাত্রদের সাথে বসে মুখস্থ করো
গোয়াইজুলাইকে মানুষ সাজো
তোমরা সব বুঝলেও কিছুই বোঝো না।
.
তোমরা মুখস্থ করো
বিদ্রোহ আর করোনা ঝাড়ো
বাজার ফেরত ব্যাগ ভর্তি প্রতিবাদের বদলে নিজেদের অক্ষমতা আনো ,
তেলে ভাজা বাজারের কড়াইয়ে ভেসে ওঠা স্তন দেখে বোঝার চেষ্টা করো
কোনটা সত্যজিৎ আর কোনটা ঋতুপর্ণ।
তোমারা জানতে চাও না চাষের জমি মানে পোকার বাড়বাড়ন্ত
তোমরা মানতে চাও না ঈশ্বর শুধু এক শেষ না হওয়া শান্তি
তোমরা মানতে চাও মানুষের ঘর মানে শুধুই রোমান্স
তোমরা মানতে চাও ভালো বান্ধবী মানে শুধু প্রেম।
আমার শুধু এতটুকু বলার
এইভাবে আর নিজের কান কেটো না
এইভাবে আর শেষের লাইনে দাঁড়িয়ে জেতার স্বপ্ন দেখো না
বরং বিশ্বাস করো এটা তোমার দেশ
বরং বিশ্বাস রাখো নিজের উপর তুমি মানুষ, তুমিও দিন বদলাতে পারো
আর ঈশ্বর তোমরা মন্দির, মসজিদ, গির্জায় যেখানেই সাজাও না কেন
বিশ্বাস করো তিনিও একজন তোমাদের মাঝে ।

পোড়া গন্ধ

পোড়া গন্ধ
.. ঋষি 
চামড়ায় দগদগে আগুনের লহমায় লিখে দেবো সমুদ্র
সেখানে পা ডুবিয়ে বসে আছে মানুষ,
একটাও কবিতা লেখা হলো না আমার নিরক্ষর কবিদের জন্য 
একটাও কবিতা আমার হলো না,
শুধু যে কবিতা লিখতে পারে না 
তার জন্য কান পাতলে শুনতে পাই বাতাসে নির্জন পোড়া গন্ধ। 
.
 বাতাসে রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথ গন্ধ 
জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে মনে পড়েছিল একবার তোমার কথা, 
আমার আঠাশ বাই দুই কালীপার্কের বারান্দায় দাঁড়িয়েও আকাশে দেখি " তুমি", 
তোমার মুখ নিকোটিনে  ভিজিয়ে জমিয়ে রাখি বুকে,
বুঝতে পারি না রবীন্দ্রনাথ করে আর কতদিন বাঙালী
কবিতার মঞ্চ খুঁজবে। 
.
মানুষের সাথে কতদিন মানুষের বুক ফাটা সম্পর্ক
বুঝতে পারি না তোমার ব্ল্যাক হোলের ভিতর কবিতারা শব্দ হয় কেন, 
তুমি কত সহজে আমাকে একলা করতে পারো
কত সহজে তুমি জড়িয়ে ধরো কাদম্বরী।
দু চামচ হৃদয় নিসৃত আবেগ
আর হৃদয় মিশ্রিত নিশাচর প্রেম 
এই চটচটে সমুদ্রের নোনতা বাতাস 
তোমার আঙুল ছুঁয়ে আছে স্পর্শ আমার বুকের কেবিনেটে
বুঝতে পারি না এই নোনা বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ কি করে ভালোবাসার কবিতা লিখতেন। 



রক্তের ছোপ

 রক্তের ছোপ 

.... ঋষি 


এই সময় শুধু নিরুপায় হয়ে বেঁচে থাকো 

তর্কযুদ্ধের পরে আবারও কলংকিত করো কোনো নারীকে ধারালো দাঁতে 

বুকচেরা অনর্থরা চিৎকার করে ফিরুক 

মুখ বন্ধ রাখো 

ধারালো নামটার নিচে আঙুলের ভাঁজে লিখে রাখো 

আগামী কোনো সভ্যতা ধ্বংসের সমন। 

.

পৃথিবীতে আজ শুধু অস্ত্রের গান 

যেসব ভ্রূণে বেড়ে চলেছে আগামীর ঘুম ভাঙা সন্তানেরা 

যাদের আগমন ধ্বনি কান পাতলে পাওয়া যায় 

তাদের বলে দিও 

এখনো জন্মানোর কি দরকার,এ যে মৃত্যুপুরী বুকে নেমেসিস্ 

খোদাই করছে মৃত্যুর যন্ত্রনা সাধারণের বুকে। 

.

এই সব রাত  কান পাতলে শোনা যাচ্ছে লোভের হুংকার 

এই সব রাত কান পাতলে শুধু আগামীর ধ্বংসের এগিয়ে আসা 

শুধু সময়ের রক্ত হোলির নিচে চিৎকার করছে মানুষ 

আর মিনার থেকে মোটিভের পরীক্ষায় 

পাশ করছে ধ্বংস। 

মাটির করোটির ভিতর শুক্রাণুর বীজ পুজঁছে ধ্বংস ,লোভ আর ব্যাভিচার 

সাইরেন বাজছে মাথার ভিতর 

ভেঙে পড়ছে মাথার ভিতর ধাতব শব্দে যুধ্বের দামামা 

আর পারছি না 

মা যারা শিশুদের রক্তে ভিজিয়ে নষ্ট করছে যোনি 

কিংবা সেই যোনিতে ধংস পুঁতছে চাইছে লোভী কিছু মানুষ 

শরীর থেকে সভ্যতায় আজ শুধু রক্তের ছোপ।  

Thursday, April 21, 2022

সুখ দুঃ

দুঃখ এটা নয় আমি পৃথিবীতে একা
সুখ এটা  যেখানে চলন্তিকা বলে কেউ আমায় জড়িয়ে আছে, 
দুঃখ এটা নয় সে আমার থেকে কত দূরে 
সুখ এটা যে সে আমার দূরে থেকেও আমার সাথে আছে। 
.
এখন প্রশ্ন একটা থাকে 
এই ভাবে কি বাঁচা যায়?  
সেখানে হাজারো উত্তরের একটা উত্তর
কাছে থাকা মানে, সাথে থাকা নয় 
আর সাথে থাকা মানে কাছে।
.
দুঃখ এটা নয় চলন্তিকা আমাকে তাড়িয় দেয় যখন তখন
সুখ এটা চলন্তিকা আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সকাল থেকে রাত, 
একটা অজানা দৃষ্টি সবসময় আমাকে অনুসরন করে
আয়নার সামনে দাঁড়ালে চলন্তিকা হাসে, 
বলে আছি তো। 
এখন প্রশ্ন হলো 
চলন্তিকা কে? 
আর উত্তর হলো যাকে আমি ভালোবাসি চলন্তিকা সে।
প্রতিটা আলো আমার কাছে চলন্তিকা 
প্রতিটা প্রতিবাদ আমার কাছে চলন্তিকা
প্রতিটা সময়ের অভিমান, দুঃখ, তোমার না বলা কথা
সব তো চলন্তিকা৷
চলন্তিকা সুর্য সমান দৃপ্ত একটা নাম 
চলন্তিকা মানুষের কান্না
চলন্তিকা মানুষের হাসি 
চলন্তিকা আমার ভিতর বাড়তে থাকা একটা উত্তর 
এই ভাবেও ভালোবাসা যায়। 

.






উত্তর খুঁজছি

 উত্তর খুঁজছি 

... ঋষি 

গোটা বারো ফোন করার পরও  

     তুমি কেটে দিলে 

দরজা খুলে দেখতে ভুলে গেছি আজ বহুদিন হলো 

বড় ভয় তাই ,পাছে দেখে ফেলি ,

      যদি বুঝে ফেলি। 

.

কিছু উত্তেজিত কথোপকথন ,কিছু দোষরোপ 

আমি ঠাঁই তাকিয়ে ছিলাম তোমার ঠোঁটে,

তোমার ঘামে ভেজা শাড়ির আঁচলে খুঁজে নিয়েছি আমার মুক্তি 

আমার যে আর কোনো চাওয়া নেই 

     ক্লান্তি নেই ,ক্ষমা ভিক্ষা নেই ,আশা নেই ,পরিতাপ নেই 

শুধু আছে এক নিষিক্ত আকাশ। 

.

গোটা বারো বার ফোনের রিংটোন ফিরে এলো 

যেই ব্যক্তিকে আপনি এখন কল করছেন ,তিনি এখন উত্তর দিতে পারছেন না

আমি উত্তর খুঁজছি 

খুঁজছি কারণ 

দরজার ওপাশে রাখা আমার মুক্তির শেষ আকাশ 

তুমি ছুঁয়ে দিলে চুইংগাম চিবিয়ে পার করে দেব একলা সময় 

তোমার কপালের টিপে ,তোমার রাতের জঙ্ঘায় 

তোমার মিহিন চুলের ফোঁটা ফোঁটা জলে 

ঠিক সংগোপনে কাটিয়ে দেব একটা জীবন।   


তুমি বলেছিলে আসবে

 


তুমি বলেছিলে আসবে 

... ঋষি 


অবিরাম অজস্র দৃশ্যপটের দিনবদল 

রবীন্দ্রসদন থেকে ময়দান অবধি প্রভাতফেরি 

সদ্য খোলা অবিরামদার চায়ের দোকান 

আমি দাঁড়িয়ে ,

কারা  এলো ,কারা চলে গেলো জন্মরাস্তা ছুঁয়ে 

জানা সম্ভব নয় ,হাঁটা সম্ভব নয় আর জন্মরাস্তা ধরে 

শুধু নীল রঙের শাড়ি  আমাকে বলেছিল " আসবে"।

.

সেই কলেজের ছাদ ,পুরোনো দেওয়াল 

তুমি ছুঁয়ে অপেক্ষার দেওয়াল ঘেঁষে মনের ভিতরে শ্যাওলা 

মনে হলো ,ওই তো তুমি 

বেশ কয়েকবার চায়ের ভাঁড় ,সস্তা বিস্কুট ,সিগারেটের ধোঁয়া 

কলেজ ফেস্টের ভিড়ে আমি তোমায় খুঁজছি 

বলেছিলে " আসবে"।

.

এই ধুলোমাখা শহরের হাজার শব্দবহুল মানুষ মেশিন 

দুপুর পরে সন্ধ্যে ,ক্লান্ত শরীরে পথ পেরিয়ে ফুটপাথে 

তুমি এলে ঠিক হয়ে যেত সব ,

হয়তো পথ পেরিয়ে ধাপে ধাপে বৃষ্টি এগিয়ে আসতো আমার দিকে 

ভিজে কাক ,একলা শ্রাবন ।                                        

চোখের ঝাপটায় প্লাস্টিক পলিথিনে উপরে তোমার পায়ের ছাপ 

শব্দবহুল ,তুমি বলেছিলে "আসবে"।

.

এখন অনেক নিশ্চিন্ত 

এই দানব শহরের একের পর এক দরজা বন্ধ 

নাটকের চরিত্ররা যে যার মতো এগিয়ে গেছে গন্তব্যে 

সামনের রাস্তা সেই একই ফুটপাথ ,বৃষ্টি জানি আসবে আবার,

তুমি আমাকে নিয়ে ভেবো না

তুমি বলেছিলে " আসবে "  

ধীরে সুস্থে ,হাতে বেশ খানিকটা সময় নিয়ে এসো 

আমি আছি। 

   

শাওনি

 শাওনি 

... ঋষি 


এক অন্য সকাল আর নদীর রচনা 

লিখলেই বয়ে যাচ্ছে কুল কুল নদী  ,ইচ্ছা ঘোর 

নদী তো স্থির থাকে না 

তবে কি হবে লিখে এক অন্য ভোর ?

.

ওই ৰামধেনু মাঠে ঘোর লাগা দুপুর 

শাওনি তর উদলা বুকে মুখ গুঁজি ,

লহমায় বল ধারাপাত ,এক ,দুই ,তিন 

খুব লাগছিল বুঝি ,

তুই তখন ল্যিখতে বইলতিস না কক্ষনো ,চাঁইদনী রাইতের ,কবিতা 

বইলেই  ল্যিখতাম তোর বুকের কবিতা। 

.

আরে অন্ধকার ,তোর উদলা গা 

শাওনি তুই নদী হবি ?

তুই তো উদলা কইবে থ্যেকেই 

তোর নাভির গা ঘিনষ্যে জমাট  অন্ধকার 

তুই শাওনি সেই ছাঁদনাতলার গপ্পোটা শুনলি তখন।

শাওনি রে বড় যে উদোম হয়ে শরীলে শরীল মেলালি 

ক্যান রে ?

তোর ডর লাগে না পর মানুষে,

তোর ডর নাই ,তুই না বইলেও 

আমি কবিতা লিইখ্যা দিমু তোর শরীলের।   

 


তাজমহল

 তাজমহল 

... ঋষি 


এখানে একটা মাঠ ছিল অনেকদিন আগে 

সেখানে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম ,তারপর সুখ ছিল 

ছিল গাছের পাতায় শান্তি ,

সেখানে শরীর ছুঁয়ে ছিল সুখ ,পায়ের তলায় ভিজে সমুদ্রের বালি 

সেখানে মহাভারতের চরিত্ররা ঘুরে বেড়াত 

ঘুরে বেড়াত আফজান ফকির খালি পায়ে। 

.

এখানে একটা মাঠ ছিল অনেকদিন আগে 

সেখানে ছিল আলতা পায়ে হাঁটা প্রথম নারীর চোখ 

ছিল সম্ভ্রম ,অভ্যর্থনা 

ছিল মন খুলে ভালোবাসা ,ঘাসের খুনসুঁটি 

উষ্ণ শহরের রাতে তখন বিস্তীর্ণ কোনো নদী 

তার কুল কুল শব্দ আজও আমি শুনতে পাই। 

.

এখানে সেই মাঠে ,একটা সাদা ধবধবে স্মৃতিচিন্হ , তাজমহল

তুমি আমাকে হারিয়ে দিলে 

তৈরী হলো তোমার সাধের তাজমহল 

আর সেই মাঠ যেখানে স্বপ্ন ,যেখানে শান্তি ,যেখানে ভিজে বালি 

সব ছু মন্তর 

নেই কিছু 

শুধু আমি অমর হয়ে গেলাম 

            কিন্তু বিশ্বাস করো এমন করে আমি অমর হতে চাই নি।  


চলো একটু গল্প করি

 


চলো একটু গল্প করি 

... ঋষি 


দিন ফুরোয় ,সময়ের বেচা কেনা শেষ হলে 

জমা ,খরচের খাতার হিসেবে মিলে যাওয়ার পরে 

যখন রৌদ্র মুখ লুকোবে মায়াবী অন্ধকারে 

তখন চলো সবাই খুঁজি নিজেদের ,

নিজেদের মুখের সামনে একবার নিজেরাই বসি 

কিছু স্যালাড আর কিছু অনিয়মিত নেশার পরে 

চলো একটু গল্প করি নিজের সাথে ।  

.

এঁটো জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার গল্প 

নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ ,সময় আর সময়ের ষড়যন্ত্রের গল্প 

সমস্ত ভয় এড়িয়ে মৃত্যুর তোয়ালেতে মুখ মোছার গল্প,

চলো একবার উদোম হয়ে দেখায় নিজেদের হৃদয় 

হৃদয় সে তো কিছু বাছাই করা নিকোটিন ভেজা দুঃখ ছাড়া কিছু নয়  

তবু সেখানেই সুখ। 

.

চলো একবার আনন্দ করি আমরা নিজেরা নিজেদের সাথে

চকচকে লোভের তাড়নায় কিছুক্ষন না দৌড়ে 

চলো আমরা বসি মুখোমুখি নিজেদের সাথে। 

তারপর না হয় ফিরে যাবো নিজেদের বাড়িতে

নিজেদের স্বামী, স্ত্রী ,সন্তান 

গলা অবধি ভাত ,ডাল আর স্বপ্নের উদ্গার 

আবার সেই পুরোনো আমি 

পুরোনো তুমি 

তবে কিছুক্ষন নিজেদের এই মায়াবী সংসারে 

আমি তুমি মুগ্ধ 

                         নিজেদের সাথে

         তারপর না হয় মরীচিকায় বাঁচবো আবার। 


   

পুনর্জীবন



 পুনর্জীবন 

,,,, ঋষি 


একটা রাত্রির জন্য অপেক্ষা কিংবা প্রশ্নের 

                   প্লাস্তিকবিহীন  রজনীগন্ধা আঁকা

কোনো এক সমাপ্তির অধীর অপেক্ষা।  

                              জ্যোস্নায় ভেজা পর্দার ধূসর রঙ 

এ জীবন পুরোনো বারান্দার শ্যাওলার মতো প্রমান রাখতে চায় 

একটা অসমাপ্ত বিলাসবহুল বাঁচার।  

.

তোমার ঠোঁটের লবঙ্গগুলো ফুরিয়ে যাক 

এই আশায় ,

প্রাচীন বীণার তারে মৌসুমী প্রেম আবার পুনর্জীবিত হোক 

ময়দানে নামুক সেই পুরোনো প্রেম ,

ভুলতে চাই বারংবার 

আমরা সকলেই ভীষণ একা নিজের নিজের কাছে। 

.

 নিবিড় খোঁপার ভেতরে তোমার ধারালো ছুরি

কিছু রেড স্পট পেরিয়ে পৃথিবী শুয়ে আছে আমার গভীরতায় 

ঐখানে যেয়ো না 

            না আমার মত বলবে না তোমাকে কেউ,

এই পৃথিবীতে প্রতিটা বসন্তে মুখোশ ছাড়া হাসতে চাই যারা 

তাদের জন্য এই কবিতা। 

আমার মতো সমাপ্তির অপেক্ষা শুয়ে আছে যাদের বুকে 

                     তাদের জন্য কিছু শব্দের আদানপ্রদান আরও গভীরে, 

আসলে যারা সম্পর্ক বলে  ভুল করে 

ভালোবাসার ,তারও তো মাপকাঠি আছে 

শুধু ভালো -বাসা বলা যায়। 




তশরিফ

 তশরিফ 

... ঋষি 


তুমি কি উগান্ডার সেই বিষাক্ত গেরিলা  বাতাস 

নাকি নাভিকুণ্ডে রমণীর সেই জংলী সুখ 

যার আদলে কবিতারা সুন্দরী ,

শেষ অবধি লিখতে পারি নি তোমার বিষ নখের গল্পটা 

জামার আড়ালে তোমার আয়ুর যোজনায় 

ছেঁড়া বোতামের গল্পটা । 

.

তশরিফ রাখো এ দিল মে 

ব্যাস এতটুকু বলতে চায় না  এই শহরের প্রেমিকরা  

আমি শুধু উগান্ডার কালো দেশে খুঁজি এক অপ্রকৃস্থ প্রেম 

যার নাবিক আমি 

যার স্রষ্টা আমি 

শুধু কলমের নিবে প্রেমিকার শরীরে আদর লিখতে চাই। 

.

পরমায়ু ছুঁয়ে যাক তোমার বিষাক্ত দহন

সময়ের আয়ুতে বাড়তে থাকুক বিষ এই মধ্যবয়স্ক ভাবনায় 

এই শহরের প্রতিটা প্রেম আগুন জ্বালুক তোমার যবনিকায় 

তবু মৃত্যু নয় ,

কারণ তুমি যাকে প্রেম বলে ভাবো 

আমি তাকে মধ্য শতকের আফ্ৰিকার ভিক্তোরিয়ায় হ্রদের জল ভাবি 

সময় ভেঙে যাক 

জল শুকিয়ে যাক 

দুর্বলতায় আরো দুর্বল হোক সম্পর্কের লকগেট 

জানি শেষটুকু ফুরোবেই একদিন।  

  

Wednesday, April 20, 2022

ডমরু



ডমরু
... ঋষি ঋষি 
সৌজন্যে বুকে বেঁধেছি ডমরু
অথচ বুঝতে পারছি না বাজনাটা বাজে কি করে,
প্রকৃতির কাছ থেকে শেখা 
 নারী তুমি হাজারো শতব্দীতে মোড়া দেবীরুপ
তবু বুঝতে পারছি না বাহান্ন দপ্তরে তোমায় ঘুরতে দেখে। 
.
ডেড বডিটা কোথায়? 
কজন ছিল? 
অবনী পুরনো হয়ে গেছে, তাই প্রশ্ন থেকে গেছে? 
কোনটা বাড়ি? 
সত্যি তোমার কি কোন বাড়ি আছে?
.
কে স্নেহ?  কে কবিতা?  কে স্ত্রী?  কে মেয়ে?  
কার শরীর?  
বুঝতে পারছি না মশাই আর কতবার? 
পুরুষ থেকে পৌরুষ 
বিছানার থেকে শরীর 
ওহে শিক্ষিত সমাজ,তাবড় সব মুখোশের মানুষ 
আর কত দিন? 
ওঠো, জাগো, জাগ্রত হও 
সব শালা কাব্যিক, আমিও
বুঝতে পারছি আমরা শুধু বাতেলা,ঘুমন্ত ঋতুবদল 
 বদলাচ্ছে না। 
.
তবু ডমরু বাজছে 
৷৷৷৷৷৷৷ ৷৷  পুরুষ ও সমাজ 
সৌজন্যে একটি পুরনো গল্প। 


Sunday, April 17, 2022

দহন

দহন 
... ঋষি 
দহন এটা নয় 
তুমি আমার ঠিক কতটা কাছে, ঠিক কতটা দূরে? 
দহন এটা সময়ের কান্ডে কলংকিত অধ্যায়রা জানে 
ভুল, ভ্রম আর স্বপ্ন, 
সবচেয়ে অদ্ভুত কি জানো চলন্তিকা
স্বপ্ন বদলাতে পারে, কিন্তু মরতে নয়। 
.
দাবদাহ এক বৈশাখী কবিতায় 
দহন মাত্রার মাপকাঠি রাখা আছে জলের কাছে 
কিন্তু জল বলতে আমরা কেন যে পুকুর, নদী আর সমুদ্র বুঝি? 
তবু এটা আগুনের কবিতা নয় 
সময় আমাকে মৃত্যু দিতে পারে মাথা পেতে নেবো
কিন্তু জেনো মৃত্যুর পাতায় তখনও থাকবে কিছু স্বপ্ন। 
.
আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রানে
অজস্র সুখ বর্ষিত হোক এই শহরের লুকোনো কিছু স্বপ্নে 
আর অজস্রবার মৃত্যু নেমে আসুক মানুষের একলা ভাবনায়, 
তবু এটা মৃত্যুর কবিতা নয় 
তবু এটা মানুষের কবিতা। 
তবু এটা সেই কবিতা যে কবিতায় দ্রোপদীকে কলংকিত হতে হয় বারংবার 
তবু এটা সেই কবিতা যেখানে কুরুক্ষেত্রের দংশনগুলো মৃত ইতিহাসের পরিচয়।
তবু আমি কোন ইতিহাস লিখছি না
লিখছি একটা ভাবনার কবিতা যেখানে রবীন্দ্রনাথ কোন কবি নন 
একজন বিতর্কিত মানুষ। 

Friday, April 15, 2022

ভাঙা দাঁত

 


ভাঙা দাঁত 

... ঋষি 


ভাঙা দাঁত ,দুমড়ানো মোচড়ানো কবিতার পাতা 

নিঃস্ব করছে আমায়,

আমার আমিটাকে খুঁজতে অভ্যেস করতে হয় বারংবার 

বারংবার গিয়ে দাঁড়াতে হয় রাস্তায় উলঙ্গ হয়ে,

তবে আমি বুঝতে পারি 

আমি ঠিক কতটা ভুল। 

.

ভুল শব্দটা ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয় রক্তমাখা দাঁত দিয়ে 

ভুল শব্দটাকে কেন যেন হিংসা হয় আজকাল ,

পার্কস্ট্রীটের সেই বাঁশিওয়ালার সুরগুলো আজকাল অচেনা লাগে 

অচেনা লাগে 

" ভালো আছি ভালো থেকো ,আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখো "

এই শব্দমায়াতে বিশ্বাস রাখতে। 

.

বিশ্বাসী বুক ,নিঃশ্বাসে লেগে আছে সময়ের স্বেদ 

আমার এই বমি হওয়া কবিতার পাতায় শব্দগুলো জানি চেনা হবে আগামীতে,

আরও আমি অচেনা হবো নিজের আয়নায় 

যে আয়নায় সর্বদা তুমিময়। 

আমি বারংবার ইলাস্টিক প্রসেসে ছুটে এসে ফিরে যাবো 

আমি বারংবার তোমার বুকে আছড়ে নিজেকে খুঁজবো 

আমি বারংবার মিশে যেতে চাইবো মাটির মতো 

তারপর আমি হারাবো 

আমি হারবো 

বিশ্বাস নিঃশ্বাসে তখন ভাঙা দাঁত 

আর আমার দুমড়ানো মোচড়ানো এই কবিতা।   


Thursday, April 14, 2022

দরজা

 দরজা 

... ঋষি 


চলে গেছো বহুদিন ঘরের দরজা আলগা করে 

কিন্তু উচিত ছিল তোমার দরজাটা ভেঙে যাওয়ার,

অনেকদিন তো বসন্তের উষ্ণ বাতাসকে ভালোবাসা 

আর ভালোবাসাকে নিজের বাড়ি বলে ভাবা। 

.

বুঝলে তো অনেকদিন 

সময়ের বিরহ অনবদ্য তালে পায়ে পায়ে মিথ্যে ছুঁয়ে 

অনেকদিনতো সকালকে ঈশ্বর বোধে পুজো করা 

এবার না হয় ভুলে যাওয়ার পালা ,

কিন্তু মানুষ ভুল করে 

        অথচ জানিনা না ভুলগুলো ভুলতে পারে না কেন ?

.

এখন কিছুক্ষন একলা থাকতে চাই আমি 

এখন কিছুক্ষন খোলা দরজার উপর একলা বসতে চাই 

           অনেক ভুলের ঘর করা হলো 

একটা মিথ্যেকে সত্যি ভেবে 

                সত্যিকে একলা করা হলো। 

নদী ,পাহাড় ,উপজাতি ,সভ্যতা 

                সত্যি বলো এখন আমি কি ভাবতে পারি 

ফিরতে চাইলেও ফিরতে পারবো না 

আর বাঁচতে চাইলে 

             সত্যিকি শ্মশানে বাঁচা যায়।  

     


কবিতার মানুষ

 



কবিতার মানুষ 


... ঋষি 


এখনোতো জোকারের হাসি আর অস্তিত্বে গরম রক্ত গড়িয়ে নামছে 


এখনোতো ভরদুপুরে শুনশান অলিন্দ সংবাদ, 


শুধু চোখের রোদ চশমার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে 


সত্যি লুকোচ্ছে সময় ,


এখনোতো বিমূর্ত ইতিহাস লুকোতে চেয়ে নালন্দার ধ্বংসাশেষ 


শুধু দর্শনীয় । 


.


এখনোতো সত্যি লিখতে চেয়ে মিথ্যে লিখছি আমি 


এখনোতো আমি মানুষের প্রতি প্রতিশোধ ভুলতে পারছি না 


ভাবছি কয়েকটা কবিতা লিখে ফেলবো তোমার মৃত্যু চেয়ে 


                             কিংবা পুনর্জন্ম 


নতুন জন্মে তুমি কবিতা হয়ে জন্মাবে আবারোও মানুষের মতো 


লোভ ,লালসায় মাখামাখি জীবনকে সুখী বলবে। 


.


এখনোতো যন্ত্রনা লিখতে চেয়ে আমি তোমাকে লিখছি 


এখনোতো গালাগাল না দিতে পেরে ,কবিতা লিখছি 


ভাবছি কয়েকশো হিরোশিমা বোমা শুধু মাত্র পৃথিবী ধ্বংস করুক 


                           কিংবা সময়,


মিথ্যে আয়নায় ধরা তোমার মানুষের মতো হিসেবনিকেশ নষ্ট হয়ে যাক 


সবাই চিনুক তোমায় নষ্ট মানুষ। 


তোমার যে নাগরিক জীবন ,তুমি বলছো উল্লাস 


তোমার যে ধুলো ওড়ানো জানলা ,

                              যাকে তুমি বলছো নিয়ম 


আমি লাথি মারি তাতে 


                     এখনোতো  শেষ হয় নি গল্পটা 


এখনো কি বুঝতে পারো নি তুমি 


সময়ের আয়নায় কিভাবে কবিতারা মানুষ হয়ে যায়। 




জীবন বাবু



জীবন বাবু 

... ঋষি 


জীবন বাবু চলে যাচ্ছে 


পিঠে টোকা দিয়ে ডাকে সে ,বলে চেনো আমাকে , আমি সিধু ?


ভুলে ভরা পদক্ষেপ ,রক্তশ্রাব ,হু হু মিলে যাচ্ছে হুলিয়া,


কে সিধু ,কানু ,সুধাংশু ,ইয়াসিন ,ইয়াকুব 


চিনতে পারছি 


তবু কেন চিনতে চাইছি না। 


.


ওরা হাসছে ,


বেয়নেটের খোঁচায় ওদের শরীরে অজস্র ক্ষত ,


আমি কবে জানি মাছ ,ভাতে মোড়া কবি হয়ে গেছি 


চোখের সামনে কবিতারা  বদলাচ্ছে রোজ 


শহীদ মিনারের তলায় শুয়ে থাকা দিনগুলো শুধু পুরানে  পড়ছি 


কই একবারও তো জবাব চাই ছি না ,রাষ্ট্র ! 


.


জীবন বাবু চলে যাচ্ছে 


মিছিলের সারি দেওয়া সময়ের স্লোগানগুলো বদলে গেছে  কবেই ,


লোভ ,শরীর ,বিকোনো রাষ্ট্র 


প্রতিবাদ আজকাল কয়েকটাকে বিকানো পুরনো মাল বয়সের দোকানে ,


ফেরিওয়ালার গলার আওয়াজে আজকাল আর খবরের কাগজ থাকে না 


থাকে কম্পিউটার।



আমি ওদের চেনার চেষ্টা করছি অনেকক্ষন 


      ওদের শরীরে ,তলপেটে  বারুদের গন্ধটা অথচ আবছা অবয়ব ,


আমার চোখে জমে আছে সুখী মোটা চামড়ার মাইনে


বোমাবাজি ,আর্তনাদ ,রক্ত মাখা আমার সেই দিনগুলো শুধু মুখোশে 


বদলালো কই ? 


অথবা আমি এতটা বদলালাম কি করে ?


 

শুভ নবর্ষ



 শুভ নবর্ষ 

... ঋষি 


যদি কবিতায় বলতে হয় 

তবে তোমাকে বলবো চলন্তিকা " শুভ নববর্ষ " ভালো থেকো ,

কিন্তু যদি সময় বলতে হয় 

তবে বলবো ধর্ষিত মেয়েটার শরীর কিভাবে পুড়েছিল মুখোশের আড়ালে 

ইশ আপনারা প্লিজ নাকে হাত দেবেন না 

চামড়া পুড়ছে জানি ,

       কিন্তু এ যে এক সভ্যতা পোড়ার গল্প। 

.

যদি কবিতা লিখতে হয় তবে নিশ্চয় 

তোমাকে ভেবে লিখতে চাইবো আগামী বছরের স্বপ্নের চোখ,

কিন্তু যদি সময় লিখতে হয় 

তবে অতি অবশ্যই রাষ্ট্রপুঞ্জকে লিখবো একটা চিঠি 

যাতে লেখা থাকবে এই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে পেশী শক্তি সত্যি কি জরুরী 

নাকি জরুরী দূষিত সভ্যতার ক্ষতে মলম দেওয়ার,

জানি নতুন বছর এসব ভালো লাগে না 

             কিন্তু এ যে এক সভ্যতা পোড়ার গল্প। 

.

যদি কবির মতো বলতে হয় 

তবে অতি অবশ্যই মানুষ বলবো ,বলবো সময় ,বলবো শান্তি 

তারপর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে 

              তবে না হয় কোনো ব্যক্তিগত বিকেলে তোমাকে লিখবো চলন্তিকা। 

জানি এটা নতুন বছর 

কিন্তু কজন জানতে চায়  বলো এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে রমেনের কাজ নেই 

শেলীকে দাঁড়াতে হয় পার্কস্ট্রিটে নিয়ম করে বাচ্চাদের খাবার জোগাতে 

মসজিদের বাইরে বসা বৃদ্ধ  রহমত কাকার ছেলে আজও যুদ্ধ থেকে ফেরে নি 

আমার বন্ধু ক্রিস্টোফার আজও ভুলতে পারে নি তার প্রথম প্রেমিকা অঞ্জলিদিকে 

আপনারা বলুন এসব কি বলার কথা,

                              না আপনাদের জানার।  

তার থেকে বরং নতুন বছরে আপনারা সপরিবারে লাঞ্চে কিংবা ডিনারে যান 

কোনো সাহিত্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে আবৃত্তি করুন বিজ্ঞাপনের রেসিপি 

সেজেগুজে শেয়ার করুন আপনার দিনটা মুখবইতে 

কিংবা কিছুই যদি না হয় 

তবে একটা চুমু খেয়ে ফেলুন আপনার প্রেমিকাকে ,

কারণ আপনিও জানেন আমার মতো 

সভ্যতা পুড়ে গেলে আপনার কিছু যায় আসবে না

কারণ যারা পুড়ছে যন্ত্রনা তার 

আপনার কি তাতে ?

আপনি  বরং নতুন বছর সেলিব্রেশন করুন। 



 

Sunday, April 10, 2022

মৃত মানুষের গল্প

 মৃত মানুষের গল্প 

... ঋষি 


দেওয়ালের গায়ে অনবরত টিকটিক 

ঘড়ির বা দেওয়ালের ফাঁক থেকে হবে ,

অন্ধকারে দেখা যায় না ভালো 

তবে বোঝা যায় মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি ,

সব কথা শেষ হয়ে গেলে ,ভালোবাসা বদলালে 

ঘৃণার গায়ে অনবরত লেগে থাকে বিষাক্ত মুহূর্ত। 

.

চিন্তার মৃতদেহ পরে আছে আগামীর জন্মে 

বহুদিন মরে হেজে লেপ্টে আছে পচা গলা স্পর্শ সময়ের গায়ে 

শেষ একটা গল্প শুনেছিলাম সেই কৃষ্ণচূড়ার নিচে 

আর গল্প শুনতে চাই না ,

এইবার একটা সাহসী গল্প লিখতে চাই 

কোনো ঈশ্বররুপী মৃত মানুষের গল্পে। 

.

অনেকদিন আলো জ্বালানো হয় নি অন্ধকার লম্বা বারান্দাটার 

জানি এ সব কথা অন্তঃসারশুন্য,

সারাতারাত কেটে চলেছে একটা মানুষ চেনার গল্পে 

চিনতে পারছি না তাকে ,

শুধু বুঝতে পারছি একজন মৃত মানুষ মরন কামড় দিতে ব্যস্ত 

সে ধ্বংস করছে তাজমহল অতিমাত্রায় দূষণে। 

আমি বুঝতে পারছি ঠিক 

তবু চোখ বন্ধ রেখেছি 

কারণ মৃত মানুষের গল্পে শুধু অতীত থেকে যায় 

আর ভবিষ্যৎ সে তো শুনতেই পারছি দেওয়ালে কান রাখলে 

টিক ,টিক ,টিক। ..... বিরক্তিকর। 

 


ছাদ

 ছাদ 

.... ঋষি 

একটা ছাদ 

    তোমরা বলো আকাশ ,

খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকি দিক্চক্রবালে 

     তোমরা বলো পাগল দিন যে ফুরিয়ে যায় ,

পরস্পরের হাত ধরাধরি ,মুখ চাওয়া চাওয়ি ,ক্রমশ ডিলিট হওয়া ছায়াছবি 

তোমরা বলো সম্পর্ক বোধহয় আরো স্বচ্ছ হলো। 

.

মিথ্যে স্বচ্ছতা 

একটু কান্না তলিয়ে যায় শেষ হয়ে যাওয়া নদীর পলিতে 

তুমি হাসছো ,তোমরা হাসছো 

এই কবিতার নিঃশ্বাসে লেগে আছে অনেকটা বেঁচে থাকে ,

তোমাদের হাসি আর আমার কান্না

এই হলো আসলে সম্পর্ক বলে একটা মিথ্যে সাজগোজের বেশ্যার গলি। 

.

সেই এক মাটি 

  তোমরা মেঝে বলো ,

                   আমি বলো এক বর্গফুট জমি দরকার 

      শুধু এক বর্গফুট 

দাঁড়াবার জন্য ,কিংবা বাঁচবার জন্য তার থেকে বেশি কি দরকার। 

       তোমরা সহাস্যে ঘোষণা করো আমার মৃত্যুর দিন 

তোমার বাঁচো 

      আমি তো মৃত মানুষেরই কবিতা লিখতে চাই 

বদলানো দিনে 

     সম্পর্কের নথিতে বাউলের শব্দগুলো ছুঁতে চাই। 


Sunday, April 3, 2022

কোন তুমি

 


কোন তুমি 

... ঋষি 

সময়ের ভিতর আমাকে একটা আসন পেতে দাও 

আমি দুদণ্ড একটু স্থির হয়ে বসি তোমার ভিতর

তোমার কবিতা লিখবো বলে কলম খুলি 

ভাবতে বসি 

কোন তুমি ?

সময় ,মানুষ ,চলন্তিকা ,আলো না অন্ধকার। 

.

জানি এই কবিতার কোনো ঘর নেই 

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবানন্দকে ডেকে আনি 

ডেকে আনি শক্তি বাবু , আন্দ্রে ব্রেতঃ, বোদলেয়ারকে কবিতা লিখতে ,

মাঝে মাঝে মনে হয় রবীন্দ্ৰনাথকে প্রশ্ন করি 

কোথায় ,কোথায় ,কোথায় কবিতা ?

আজ কতদিন বলুনতো আপনারা কবিতা লেখেন নি ?

.

সময়ের ভিতরের ঘরে আমি তুমি ,বসে 

মুখোমুখি   আলাপনে ভেসে ওঠে সময়ের কল্পনায় মানুষ,

মাঝে মাঝে মনে হয় তোমাকে নিয়ে কতজন লিখছে 

আমি কেন ?

তারপর বুঝি তুমি চিৎকার করছো আমার ভিতর 

একদিন না লিখলেই তোমার মুখ ভার 

একদিন না লিখলেই আমার বদহজম 

একদিন না লিখলেই কি যে যাতা সব বলো তুমি আমাকে। 

তবু এখনো অবধি বুঝি নি কোন তুমি ?

সময় ,মানুষ ,চলন্তিকা ,আলো না অন্ধকার।

ভিতরের ঘর



 ভিতরের ঘর 

... ঋষি 


জলের ভিতর নৌকা 

বাঁশের ভিতর বাঁশি 

সময়ের গভীরতায় শুয়ে আছে অন্ধকার ঠোঁট 

আর তার ভিতর প্রেম। 

.

ভাবি কবিতার ঠোঁটে ভাত রাখবো 

ভাবি কবিতার ঠোঁটে মানুষ 

ভাবি কবিতার ঠোঁটে একটা রাষ্ট্র লিখবো গণতান্ত্রিক স্বপ্নে 

কিন্তু ভাবলেই পেট ভরে না 

এমন কবিতা জন্মায় না যেখানে মিস্টার ভ্যান গগ একটা ছবি আঁকবেন 

তার ছেঁড়া কানে শুধু প্রেমিকের পাগলামি। 

.

বাড়ি আছে? বাড়ি নেই? ঘরের ভিতরে আছি ? ভিতরে যে ঘর সেখানে নেই 

ভেসে যাও জলে, প্রেমিকের শহরের শব

ভেসে যায় বসন্ত রাঙা কোনো গভীর কোনো পথে

বাউন্ডুলে এক জীবনের কাব্যে বেকারের ছায়াছবি ফুটে উঠুক। 

একটা কবিতা লিখতে চাই 

জলের ভিতর ,বাঁশির শব্দে গভীরে প্রেমিকের ঠোঁটে,

মানুষ আজও কাঁদছে 

ইউক্রেন থেকে আনিস অবধি অনেকগুলো সভ্যতার পতাকা 

শুধু লোভের রক্তে ভাসছে। 

কবিতার শব্দে প্রতিবাদ আসছে 

মানুষের চিৎকারে জনতার চোখবন্ধ 

মানুষ আজও কাঁদছে 

ভাবছি শক্তি বাবুকে সাথে নিয়ে চলে যাবো অবনীর বাড়ি 

" ভাবছি, ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো "।



Saturday, April 2, 2022

সুখী আয়না

 সুখী আয়না 

.... ঋষি 

.

সুখী আয়না বিক্রি করে যারা 

তাদের সংসারে ঝুলোনো অনির্দিষ্ট কিছু ছেঁড়া রুমাল ,

তারা বিজ্ঞান জানে না 

জানলেও না জানার মতো করে মাথা নুয়ে শুয়ে পরে সময়ের দরগায় ,

তারা ওষুধের শিশিতে যত্ন করে নিজেদের ঘুমপাড়িয়ে রাখে 

মনে মনে বলে ভালোআছি -খুব ভালো। 

.

যারা শান্তিতে ঘুমোয় 

তারা আসলে চোখ খুলতে চায় না কিছুতেই 

কিংবা চোখ বুজে ভাবে আমরা তো হিমালয়ের পাখি ,

তাদের আয়নাতে প্রশ্ন থাকে না 

হৃদয়ের কোনো গুজব থাকে না 

তাদের কিছুতেই হয় করতে হয় না আয়নার হাসি। 

.

সুখী আয়না বিক্রি করে যারা 

তাদের খিদে মরে গেছে বহুদিন 

তারা  খিদেকে ভাঁজ করে খুব যত্নে পাউডার লাগিয়ে আয়নায় রাখে

আমাদের মতো ফলিডল খেয়ে ঘুমোতে যায় না । 

আমিও তো সুখী হতে চাই 

তবুও তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে রাত করে বাড়ি ফিরি 

ছেলেটা জেগে থাকে 

এগিয়ে দেয় একটা ছেঁড়া রুমাল ,

রাতে শোয়ার আগে আয়নায় দেখি অন্য একটা মুখ 

ছেলে প্রশ্ন করে আমাকে 

আমাকে কেন চেনা যায় না আজকাল ?

আমি বলতে পারি না 

ছেঁড়া রুমাল। 



হিসাব

 


হিসাব 

.. ঋষি 

হিসেবের জটিলতা ক্রমশ বাড়তে থাকে আমাদের

ক্রমশ দেনার খাতা আমাদের জীবনটাকে গিলে খায় ,

মনে হয় একদিন সকাল হবে না ,সূর্য উঠবে না

একদিন কিছুতেই আর ঋতু বদলাবে না, 

শুধু দেনার দায়ে মৃত্যু খুঁজবে বারুদ 

সেদিন  বারুদের সেই বিস্ফোরণ, অনবদ্য হত্যা প্রেমের । 

.

বিশ্বাস করতেই হবে তোমার হৃদয়ে ডুব দিচ্ছে বিকেলের খোলা জানলায়  

আর জানলায় লোকানো স্মৃতিপট 

টাইটানিকের শেষ সেই দৃশ্যে,

নিয়মিত একটা সভ্যতার ছবি আঁকার চেষ্টা করে নাগরিক ফুটপাথ  

অথচ ফুটপাথে লাগানো সস্তা সিনেমার বিজ্ঞাপনে 

জীবন হাততালি দেয়,দুঃখগুলো গিলে খায় 

মানুষ আর মানুষের সিনেমায়    ।  

.

হিসেবের বাড়ন্ত খাতায় অনেকগুলো ফটোফ্রেম  মানুষের

পলাশের লাল বুক ছিঁড়ে বসন্ত কাঁদছে আকাশের বুকে

এটাও একটা ফটোফ্রেম ,

অনুভূতি বলে নারী শরীর আর ভালোবাসার তফাৎ 

মানুষের  না ঘুমোনো চোখের অসুস্থতার বলিরেখা। 

হারানো বসন্তরাও কথা বলে ইদানিং মুদ্রাদোষে কবিতায়  

ভা লো বা সা য় ,

তুবুও নিয়ম করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ঠিকানা হারায় সত্যি 

মানুষ মিথ্যে বলে দেনা না শুধতে পারলে 

মানুষের চিতাকাঠে সময়ের ঝলসানি ,

আসলে চামড়া পোড়ে রোজ মানুষের 

শুধু পোড়ার গন্ধটা পাওয়া যায় না । 

অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...