Sunday, July 31, 2022

একটা সুইসাইড নোট

একটা সুইসাইড নোট
.. ঋষি 
আমি স্বনামধন্য নই, খুব সাধারন 
আমার ঠিকানা দেওরা,উত্তর চব্বিশপরগনা প্রত্যন্ত কোন গ্রাম 
না ভারতবর্ষের,না সময়ের কোন মানচিত্রে আমাদের ঠিকানা নেই,
আমার নাম নেত্রমনি, ক্ষেতমজুর বাবার একমাত্র সন্তান
একমাত্র কারন, আমার জন্ম তিন দিদির পরে 
এখানে মানা হয় একমাত্র ছেলেরাই সন্তান আর মেয়েরা বোঝা। 
.
আমার মা আর তিনদিদি পাশেরগ্রামে ইটভাটায় কাজ করে 
আমি গ্রামের পাঠশালায় পড়াশুনা করে সদ্য শহরের কলেজে পড়তে এসেছি,
গ্রামে সবাই বলতো আমি নাকি পড়াশুনায়  ভালো
আমি নাকি গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করবো। 
আমি এই শহরে এসে অবাক হয়েছি
 অবাক হয়েছি  এখানকার মানুষগুলো দেখে, এই শহরটাকে দেখে 
ইয়া বড় বড় গাড়ি, বাস, কত লোক, 
আমাদের গ্রামে একমাত্র ইটভাটার বাবুর একটা গাড়ি আছে। 
.
আমি যেদিন প্রথম কলেজে আসি 
আমাকে দেখে কলেজের ছেলেমেয়েগুলো অবাক হয়েছে 
দূরত্ব  রেখেছে 
আমিও দুরত্বে থেকেছি ওদের থেকে।
ওরা বাবু ঘরের ছেলে মেয়ে আমায় দেখে হেসেছি
হাসতেই পারে 
ওরা তো বদলে বদলে জামাকাপড় পড়ে 
আমার তো একটাই জামা একটাই প্যান্ট,পায়ে হাওয়ায় চটি। 
.
সেদিন ব্রেকের সময় আমি কলেজের সিঁড়িতে বসে মুড়ি খাচ্ছিলাম 
আমার ক্লাসে পড়া একটা মেয়ে আমার সাথে সেদিন প্রথম কথা বললো
 এই তোর বাড়ি কোথায় রে? 
আমি বলেছিলান দেওরা, মেয়েটা বললো সেটা কোথায়? 
আমার খুব ভয় করছিল কেন জানি,বুকের ভিতরটা চিনচিন করছিল তখন 
আমি তাই পালিয়েছিলাম । 
কিন্তু পালাতে পারলাম কই? 
সেদিন ছুটির সময় কতগুলো ছেলে আমাকে ধরেছিল 
তারপর সে কি মার,পেটে লাথি মুখে লাথি
আমি বলছিলাম আমায় কেন মারছো, আমি কিছু করি নি
ওরা শোনে নি ওরা মারতে মারতে আমার পোশাক ছিঁড়ে দিচ্ছিল 
তারপর ওরা প্রায় ন্যাংটো করে মোবাইলে একটা ছবি তুললো। 
.
আমি নেত্রমনি, আমার ক্ষেতমজুর বাবার একমাত্র সন্তান 
আমার গ্রামের আমি ভালো ছেলে
কিন্তু পারছি না আর আর পারছি না সহ্য করতে
সারা কলেজ জুড়ে এখন আমার ওই ছবি 
আমি পারছি না আর ভালো ছেলে হতে 
তাই আমি চল্লাম
আমার মৃত্যুর পর আমার আমার শরীরটা পৌঁছে দিও তোমরা দেওরা গ্রামে
আমার গ্রাম, আমার ক্ষেতমজুর বাবা,আমার মা, আমার দিদিদেরর কাছে 
ওদেরকেও বলা হলো না
আমি ভালো ছেলে হতে পারলাম না। 

AI GOLPOTA AMAR

 


এই গল্পটা আমার

....  ঋষি  

তোমার ঠোঁট থেকে তুলে নিতে চাই শেষ মুক্তি 

                     কারণ আমি সত্যি ছিলাম,

কলকাতার  বাসে ,ট্রেনে ,রাস্তায় ,শোভাবাজারের গলিতে 

হাজারো মুখ ,হাজারো দুঃখ 

তাদেরকে প্রত্যেককে  প্রশ্ন করতে চাই 

বন্ধুত্বের মানে ,ভালোবাসার মানে আর বিশ্বাসের মানে ?

.

সে আমাকে ভাঙতে চাইছিল ,চাইছিল তোমাকে সরাতে 

সে আমাকে একলা করতে চাইছিল ,চাইছিল তোমাকে বোঝাতে 

এই কলকাতার হাজারো অলিগলিতে 

তাদের মতো মুখ ,তাদের মতো মুখোশ 

এই শহরের গল্পে তোমার আমার সম্পর্কের বিজাতীয় ভাবনারা  

তাদের কাছে শুধু বেচাকেনার কারণ । 

.

তোমার শরীর থেকে মুছে দিতে চাই শেষ পুরুষের স্পর্শ 

তোমার জন্যে লেখা কবিতায় আমি আবারও বোকামি লিখতে চাই 

শহরের প্রতিটা প্রায়চিত্তে আমি আজকাল মৃত্যু দেখতে চাই 

যা ঘটছে তা হওয়ার ছিল 

যা ঘটবে তাও অবসম্ভাবী। 

আমার আগের থেকেই জানা ছিল এই গল্পটা আমার না 

তবে তোমাদের জানা ছিল না 

এই গল্পের লেখক আমি 

চরিত্ররা নাগরিক 

আর সে আমার,

তোমরা মুখোশের আড়ালে অভিমুন্যকে বধ করতে পারো 

কিন্তু এও তোমাদের জানা দরকার অর্জুন শুধু পুরুষলিঙ্গ নয়। 

Friday, July 29, 2022

অভ্যস্ত

 অভ্যস্ত 

... ঋষি 


কতক্ষন আমি ?

প্রবচন বলে অন্ধকারে আমি ,সহমরণে আমি 

তারপর এই শহরের ব্যস্ততায় ,তোমার দর্জির মাপে 

তোমার জনস্বার্থে প্রচারিত ভাবনায় 

আমি কোত্থাও নেই। 

.

বিষাক্ততা বাসা বাঁধে বুকের কেবিনেটে বাবুই পাখির বাসায় 

অভ্যস্ত হতে হয় 

সার দেওয়া দুরচক্রবালে সময়ের সান্নিধ্য 

অভ্যস্ত হতে হয় 

নির্বাসিত জীবনে বিষয়বস্তু নির্বাচনে 

আমাদের গোপনে। 

.

কতক্ষন আমরা ?

একটা অন্য সকাল ,অপেক্ষা বিকেল ,ফিরে যাওয়া সন্ধ্যায় 

তারপর পিংপং বলের মতো বিরক্তিরা  সঙ্গ নেয়

অথচ কতটা নিঃসঙ্গ আমরা। 

নিঃসঙ্গতা একটা অসুখ আমাদের বুকে 

নিঃসঙ্গতা ভালো থাকার  পিৎজা সফরে একলা ঠোঁট ছুঁয়ে যায়,

আমি অপেক্ষা করি ফিরে আসার 

আমি অপেক্ষা করি আকাশের ধ্রুবতারার মাটিতে নেমে আসার 

তোর ঠোঁট তিরতির কাঁপে 

তোমার শব্দরা আমাকে মুগ্ধ বারংবার 

তবুও তুমি শুধু ছুঁয়ে থাকো 

কতক্ষণ  ?

যতক্ষণ আমাদের পথ চলা স্বপ্ন দেখে। 

 

 


জীবন মানে যুদ্ধ

জীবন মানে যুদ্ধ 
বেঁচে থাকা মানে সিগেরেটের আগুনে নিজেকে অল্প অল্প করে পোড়ানো, 
সময়ের যন্ত্রনাবোধ 
যত্রতত্র ছেটানো জীবনের মল, মুত্র, বমি। 
যারা হেরে যায় তারা হারতেই থাকে 
যারা পাওয়ার দলে তারাই জীবিত। 
.
রোজ নিয়ম করে কান্না পায় 
বাঁচবার হাতছানি আর বেঁচে থাকার তফাৎ
সে যে মৃত্যু, 
রোজ নিয়ম করে তোমার গন্ধ পাই জীবন
তোমার শাড়ীর গিঁট, তোমার চোখের কাজল, তোমার গলার আওয়াজ
বাঁচবার চেষ্টা করি জানো 
তবু কেন জানি মরে যাই বারংবার। 
.
জানি আমার মতো আরো অনেকে আছে 
অনেকে আছে তোমাদের মতো
কিন্তু আমাদের মতো কজন আছে? 
কজন আছে বুকের ভিতর আগুনের  কারখানা নিয়ে দেশলাই কাঠির খোঁজ করি, 
কজন আছে নিজেকে আগুনে রেখে 
বলি ওম শান্তি, 
সকলের ভালো হোক। 
সবটাই জানি, সবটাই বুঝি 
বুঝি বোকামী, বুঝি সার্থ, বুঝি অর্থ, বুঝি বিদ্রোহ, বুঝি প্রতিবাদ 
কিন্তু প্রতিবাদগুলো প্রতিদিন এই শহরে দমবন্ধ হয়ে মরতে দেখি 
মরতে দেখি তোমাকে
কান্না পায় জানো, ভীষন কান্না পায় 
একটা হাফপাউরুটি জীবন চা, ওমলেট সহকারে সাজিয়ে পরিবেশিত হয় নিয়মিত
কিন্তু হজম হয় না আজকাল।

কালো মেয়ের ডাইরি



কালো মেয়ের ডাইরি 

... ঋষি 

.

আমি জন্মের পর ঠাকুমা বাবাকে বলেছিল 

বুঝলি বাবু কপাল পুড়লো ,এই মেয়ের বিয়ে দিতে কষ্ট 

মা ,বাবাকে বললো হ্যা গো আমরা তো কেউ এতো কালো না 

আমাদের নাক ,ঠোঁট তো ওর মতো নয় ,

একমাত্র শুধু বাবা মানুষটা সেদিন বলেছিল 

কালো তো কি ,জানো না  কালোই তো জগতের আলো। 

.

স্কুলে যাবার পর বন্ধুরা আমাকে কালী বলে ডাকতো 

বন্ধুদের বাবা মারা আমার থেকে দূরে রাখতো তাদের 

পাচ্ছে ওরাও কালো হয়ে যায় ,

কলেজে পড়তে দেখতাম  ছেলেরা মেয়েদের হাত ধরে ঘুরছে 

ক্যান্টিনে ,বাসস্টপে যত্রতত্র গল্প করছে ,

এ ওকে আই লাভ ইউ বলছে ,ও ওকে ভালোবাসি বলছে 

কিন্তু আমাকে এসব কেউ বলে নি কোনোদিনও ,

আমাকে সকলে এড়িয়ে চলতো 

তবে সেই সময়ে কলেজে একনামে সকলে আমাকে চিনতো 

কালো মেয়েটা। 

.

আমি যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটেছি লোকজন অবাক ভাবে তাকিয়েছি 

আমি যখন বাসে চড়েছি সকলে এড়িয়ে গেছে কি বিশ্রী,

আমার আত্মীয়রা ,আমার বন্ধুরা ,আমার শহুভাকাঙ্খীদের 

সকলের মনে দুঃখ আমি কালো তাই। 

আমার জীবনের প্রথম পুরুষ ,আমার প্রথম প্রেমিক 

বেবাগ আমাকে ছেড়ে চলে যায় অন্য এক ফর্সা মেয়ের হাত ধরে 

আমাকে নিয়ে নাকি সমাজে হাঁটা যায় না 

তবে তার সহানুভূতি ছিল যাতে আমার ভালো হয়। 

হাজারো সান স্ক্রিন ,বডি লোশন ,সাবান সব বেকার হয়ে গেলো 

আমাকে বাড়ির থেকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও বিফল হলো 

পাত্রপক্ষের বক্তব্য মেয়ে ভালো ,গান জানে ,পড়াশুনা জানে

কিন্তু কালো ,বাড়ির বৌ হবে লক্ষী ঠাকুর 

কালো হলে চলে। 

.

এখন আমি টরেন্টোতে 

আমার রিসার্চ পেপার যথেষ্ট সম্মান পেয়েছে এখানে 

আমাকে এখানে অনেকে বিয়ে করতে চায় 

কিন্তু আমি করিনি 

আর করবোও না 

হ্যা বলা হয় নি আমি এখন সিঙ্গেল মাদার 

আমার মেয়ে যেদিন আমার কোল জুড়ে এসেছিল 

মা ,আত্নীয়স্বজন সকলেই একই কথা বলেছিল 

মেয়েটা কি কালো ,

বাবা আর বেঁচে নেই 

কিন্তু আমি বলেছিলাম বাবার মতো 

কালো তো কি ,জানো না  কালোই তো জগতের আলো।   

Thursday, July 28, 2022

কবির যন্ত্রনায়

কবির যন্ত্রনায় 

... ঋষি 


তার চাওয়ার ছিল অনেক কিছু 

কিন্তু পাওয়ার হিসেবটাই ঈশ্বর লিখে দিয়েছে পাগলামি চিরকাল ,

দশটা ,পাঁচটা চাকরী ,সুখী গৃহকোণ ,সন্তানের মুখ 

বাসের ভিড় ,অগুনতি মানুষের মুখ,উনুনের কয়লার রান্না 

মাসিক রোজগার আটহাজার ,বিড়ি ধরাতে বাধ্য করে 

বিস্কুটের এজেন্সি কিংবা ইন্সুরেন্সের এজেন্ট 

নিয়মমাফিক আকাশ 

ধুর ভালো লাগে না। 

.

তার এই পৃথিবীতে  পাওয়ার ছিল অনেক কিছু

সুখী গৃহকোণ ,একটা জীবন জৈবিক চাহিদার অনুকরণে 

চল্লিশটাকা কেজি চাল ,আঠাশ টাকা কেজি পেঁয়াজ 

দুটো চড়াইয়ের ছানা পরস্পরকে ঠোকরাতে থাকে সারাক্ষন 

একটা সুস্থ জীবন আলোর বারান্দায় 

সামুদ্রিক গাঙচিল খুঁজে পাওয়া যাবে একদিন 

একটা স্বপ্ন 

ধুর ভালো লাগে না। 

.

সে বোবার মতো কলমে মুখ গুঁজে বসে থাকে 

সে কলমকে ভালোবাসে 

সে কবি 

সে নাথ গুঁজে সময়ের গভীর যন্তনা জিভ দিয়ে চেটে খেতে চায় 

সে পুড়ুক তার বুক। 

আমি নিস্তব্ধে বাড়ি ছাড়ি একদিন 

রাত্রির কোলাহল ,

অন্ধকারে মিশে যেতে চাই নাগরিক ধুলোবালির ভিতর।   

কালজয়ী

 কালজয়ী 

... ঋষি 


তোমার সঙ্গে যে ঠিক কতটা মিল 

কতটা অমিল 

আমি কবির কলমে তুলে দিলাম ঝলকে ঝলকে রক্ত 

ভিজে যাক এই সময় ,

জানি আমার এই অস্থিরতায় তোমার মাথা ব্যাথা নেই 

আসলে যারা বাঁচতে পারে একা  

তারাই তো হাসতেই  পারে। 

.

হাজার বছর লিখলেই কলমের নিব হোঁচট 

কাল জয়ী কিছু শব্দ 

কিছুতেই পুরোনো হচ্ছে না 

কবির আঙ্গুল বেঁয়ে ভাবনারা পিঁপড়ের মতো করে হেঁটে গেছে চিরকাল 

সময় বদল হয়েছে 

অথচ কবির কবিতা বদলায় নি। 

.

এই পৃথিবীতে সমস্ত দুঃখ সংগ্রহ করা যায় 

কিন্তু শান্তি ?

থাকবে না জেনেও আমি হেঁটে চলেছি সেই পুরোনো পুকুরের পাঁড় ধরে ,

খসে যাওয়া পাখির পালক 

জীবন যেন হাজারো বছর। 

বর্ষা চলে যাবে ,হয়তো কোনোদিন কবির কলম থেকে খসে যাবে বসন্ত 

তবু মাটি ধরে রাখবে কিছু পার্থিব ,

জানি কালজয়ী শব্দটা আজকাল হাস্যকর ভীষণ 

আমি আছি ,আমি থাকবো 

তুমি থাকবে তো ? 


স্বপ্ন ,সত্যি না বাস্তব

স্বপ্ন ,সত্যি না বাস্তব

... ঋষি 

 

একটা সময়ের  কুয়োতে আগুন লেগে আছে

দাউ দাউ করে কি যেন পুড়ে চলেছে আমার ভিতর চিরটাকাল , 

অতৃপ্তি ,ভাবছি ঝাঁপ মারবো কিনা 

ভাবছি আরেকবার ইতিহাসের প্রত্যাবর্তনে নিজেকে প্রমান করবো কিনা সত্যি ,

সারা  শরীর পুড়ে চলেছে ইতিহাসের অভিশাপে 

ক্রমশ আমি দেখতে যেন পাচ্ছি আমার নিয়মবদ্ধ মৃতদেহ। 

.

 একবার মনে হয় ঝাঁপ মারলাম 

বোধহীন ,সারা শরীর ,আমার হৃৎপিণ্ড টের পাচ্ছি পুড়ে চলেছে আগুনের শিখায় একবার মনে হলো আমার দৈনন্দিন দাঁত ব্রাশ ,সকালের বারান্দা 

আমার বউকে স্টার্ট ,চোখের রোদচশমা ,পকেটে ড্রাইভিং লাইসেন্স 

আমার সচিত্র পরিচয়পত্র 

আমার সন্তানের জন্য না কেনা সেই খেলনাটা 

প্রেমিকার মুখ ,

লুকোনো সম্ভার ,অভ্যাস। 

.

একবার হাত বাড়াতে চাই উপরের দিকে 

দাউ দাউ আগুন আমাকে পুড়িয়ে চলেছে আমার ভিতর ,বাইরে 

বুকের ভিতর আকুতি 

বাঁচতে চাই 

বাঁচতে চাই 

হঠাৎ কেমন একটা অন্ধকার হয়ে আসা 

যন্ত্রণার এপাশ আর ওপাশ 

ঘুম ভেঙে উঠে বসি 

কি ছিল এটা স্বপ্ন ,সত্যি না বাস্তব। 

প্রতিশ্রুতি


 

প্রতিশ্রুতি 

... ঋষি 

যেটা করছি সেটাই উন্নয়ন  

বুঝালেন মশাই আমি খেলছি কচি মেয়েদের শাড়ির তলায় 

বুঝলেন মশাই খেলছি হাজারো বোকা বানানো জলের দরে 

সাইজ দেখবেন না 

শুধু কি গুঁজে দিচ্ছি আমি  জনতার পিছনে জানেন ? 

প্রতিশ্রুতি। 

.

বুঝলেন মশাই আগুন নিয়ে বারুদ বানাচ্ছি 

ধর্ম নিয়ে বানিয়ে ফেলছি বারুদের ঘর 

মন্দিরে আমি আছি ,মসজিদে আমি আছি ,গির্জায় আছি 

ভোটের দুর্গে আমি বিজয়ী 

কাৰণ  ভোট  মানে বোঝে না জনতা

তারা বোঝে শুধু বাঁচতে চাই 

আর আমি বুঝি তাদের বাঁচা মানে আমার দেখানো কিছু মিথ্যা স্বপ্ন।  

.

নারদ খুলছে ,গারদ খুলছে আবার বন্ধ হচ্ছে 

বুঝলেন সব ক্ষমতার  জোর 

সি আই ডি আসছে ,ইডি আসছে,আসছে মোটা পাইপে বেনো জল 

ফাইল খুলছে বন্ধ হচ্ছে 

কারণ আমার টাকার জোর।  

বন্ধ ঘরে ফিরদের  মাস্তুতো ভাই আমরা 

আমার সময় ,আমার সমাজ ,আমার নিয়ম ,আমার অনিয়ম 

আমি রাজা ,আমি মন্ত্রী ,আমি ষড়যন্ত্রী ,আমিই পার্থ ,আমিই অর্জুন 

কি করবেন আপনি ?

অর্থনীতি খেয়েছি ,স্বাস্থ্য খেয়েছি ,শিক্ষা খেয়েছি 

শুধু সাক্ষী রেখেছি আপনাকে। 

বুঝলেন মশাই তবুও পেট ভরে নি 

জ্বালিয়ে দিয়ে পার্টির নাম আরেকটা ছিয়াত্তর 

বুঝলেন মশাই তবুও মন ভরে নি 

গণধর্ষণ করেছি  আপনার মা বোন আর গোটা সমাজকে

কি করবেন আপনি ?

  .

জানি এখনতো জনতার শরীরে রক্ত 

জানি এখনতো জনতার বুকে ভয় 

আর যদি বেশি বাড়াবাড়ি করেন 

আপনার পিছনে গুঁজে দেব 

একটা ফায়ার ,তারপর  ..................

জানি আপনার ইজ্জতের ভয় 

জানি আপনার মা ,বোন ,আর সংসার আছে 

আর আপনি জানেন আমি আপনার তৈরী ঈশ্বর এবং অসুর 

কিন্তু আপনি  জানেন না আমার মুনাফা ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই 

আপনি আর আপনারা  হলেন সব  বোকার বাচ্চা

আর আমি হলাম রাজা ,আমিই  ঈশ্বর ,আমিই কাঁকড়া ,আমিই নিয়ম 

মানতেই  হবে আমাকে যতদিন .............। 

Wednesday, July 27, 2022

আমার মা তো

 আমার মা তো 

... ঋষি 


আবার এক নিয়মমাফিক সন্ধ্যে 

আবার এক স্তব্ধতা মেখে উনি উঠে দাঁড়ালেন 

চান করলেন ,চুল বাঁধলেন

সস্তার পাউডার মাখলেন মুখে শরীরের শীর্ণ হাতে ,

সারা ঘর জুড়ে এক অন্ধকার আর অগরুর গন্ধ 

উনি গিয়ে দাঁড়ালেন ফুটপাথে পছন্দসই জায়গায়। 

.

আমি এখন বারান্দার ঘরে 

চোখ জ্বালা করছে ,তবু ঢুলে ঢুলে পড়ছি মানুষ হওয়ার পদ্ধতি 

মা বলেন  পড়াশুনা কর  সোনা মানুষ হতে হবে ,

আর ঘরের ভিতর পদ্ধতি 

ঘরের ভিতর আমার নগ্ন মা কোনো অচেনা পুরুষের সঙ্গে 

আমার পড়াশুনার দাম ,আমার বাঁচবার দাম 

আমার মানুষ হওয়ার দাম। 

.

জানি ভোররাতে কটা টাকা 

আমি ঘুমের মধ্যে বুঝতে পারি 

মা আবার চান করবেন ওই সকালে ,তারপর পুজো 

তারপর বিছানায় আমায় জড়িয়ে কাঁদবেন 

আমি সব বুঝবো চোখ খুলবো না 

তাকে কিছুতেই কষ্ট দেব না 

বরং ঘুমের আড়ালে মায়ের চামড়া ওঠা বুকে খুঁজবো আদর 

আমার মা তো।  


চৌরাস্তা

 চৌরাস্তা 

... ঋষি 


পিছিয়ে যাচ্ছি ক্রমশ 

   ঝুলে আছি কোনো ক্রমে পাহাড়ের শেষ ঢালে ,

তুমি ঠেলছো  আমাকে 

    ভালো থাকছো না কিছুতেই। 

.

সূর্যের ওঠানামা 

তোমার নাভিশ্বাস পুরোনো জামা পরে 

একলা সময়ের অবকাশে খুঁজে ফিরছো বুক 

খুঁজে ফিরছো শৈশব 

খুঁজে ফিরছো সময়ের হাত ধরে হাঁটা সেই চৌরাস্তা। 

.

আমি আগমনী গান গাই 

তুমি গাইছো বিসর্জন তোমার নাভি বিন্দুতে জমানো অভিশাপ 

একটা বিন্দু খুঁজছো তুমি 

যেখানে সবকিছু এমন আলগা হয়ে যায়। 

তোমার আলনায় ঝোলানো শেষ বায়না 

তোমার বাড়ির বাইরে সেই পুরোনো বাগান ,পুরোনো পুরুষ 

হাঁপিয়ে উঠছো জানি 

কিন্তু আমার বুকে পাহাড়ের উচ্চতা 

তোমার প্রতিটা ভেঙে যাওয়ায় আমি নামছি হাওয়ায় ভর করে 

আমি দাঁড়িয়ে চৌরাস্তায়। 


কি স্তি মা ত

 


কি স্তি মা ত 

.... ঋষি 


ঈশ্বরের সাথে দাবা খেলতে বসেছি 

ওই তো বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে বসানো বোরেগুলো 

ওই তো ঘোড়া আড়াই প্যাচে বেশ কাত  করে রেখেছে ঈশ্বরকে 

হাতি বেশ নিজের তালে এগিয়ে চলেছে 

নৌকা কোনাকুনি বেশ ধুরন্ধর 

মন্ত্রী জীবিত 

আর আমার চিন্তা কি ?

.

ঈশ্বর হাসছে ,ঈশ্বর চালছেন 

ঈশ্বর খেলছেন 

আমি গর্বিত এই দাবা খেলায় আমার প্রতিপক্ষ ঈশ্বর 

আমি খুশি ঈশ্বর একটু বিব্রত 

আমি অবাক হচ্ছি বারংবার 

ঈশ্বৰ পিছিয়ে যাচ্ছেন  ,মানে হারছেন বোধহয়। 

.

আমি বেশ কনফিডেন্সের সাথে ঈশ্বরকে বললাম 

কি হলো ? চালছেন না কেন ?

ঈশ্বর মুচকি হাসলেন 

নিমেষে উড়ে গেলো সাজানো দাবার ছক 

নিমেষে সব ফাঁকা ..............

কি স্তি মা ত। 

তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যা বাবা

 তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যা বাবা


.... ঋষি 




আমি আর আমার সন্তান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে 


আমরা দেখছি


 গলির পাড়ার ভিতর থেকে হাই তুলতে তুলতে বেরিয়ে আসা বেশ্যা 


আমরা দেখছি


 কাশতে কাশতে রক্তবমি করে মারা যাচ্ছেন এক কালীন এশিয়া কাপ জয়ী 


আমরা দেখছি 


   টিভি পর্দায় কন্ডোমের এড দেওয়া সানি লিওনিকে 


আমরা দেখছি 


   রাজনৈতিক মিটিংয়ের পিছনে ক্রমশ হর্ন দেওয়া  এম্বুলেন্স। 


.


আমি আর আমার সন্তান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে 


আমরা  শুনছি 


  ঝোপের ভিতর থেকে আসা অশ্লীল মাতালের গালাগাল 


আমরা শুনছি 


   এ দেশের শিক্ষা মন্ত্রী একজন খারাপ মানুষ এবং চোর 


আমরা শুনছি 


   ক্রমাগত গুলির শব্দ সত্যি আদর্শের বিরুদ্ধে 


আমরা শুনছি 


     রাজনৈতিক মিটিং থেকে কিভাবে টাকার ছাপাখানা তৈরী হয়। 


.


আমি  আর আমার সন্তান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে 


  সন্তান প্রশ্ন  করে 


       বেশ্যা কে ? অপ্রাপ্তি  কি ? কন্ডোম কাকে বলে ?


এম্বুলেন্সটা এগোতে পারছে না কেন ?


বাবা কাকুগুলো এমন টলছে কেন ?   


বাবা চোর কাকে বলে ?


বাবা  ভয় লাগছে গুলির শব্দে  ,


আমি কিছু বলতে পারি  না আমার সন্তানকে 


শুধু চুপ করে মুখের দিয়ে চেয়ে থাকি 


অনেক্ষন পর আস্তে আস্তে বলি তাকে  


                    তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যা বাবা। 


Monday, July 25, 2022

তোমায় পাচ্ছি না কিছুতেই

সৃষ্টির ঈশ্বরেরা জানে নগ্নতা ছাড়া সৃষ্টি অসম্ভব 
আর স্রোষ্টা যখন ঈশ্বর 
তখন অশান্তি সর্বক্ষন 
কারণ তোমাকে পাচ্ছি না কিছুতেই। 
.
আগাপাছতলা রক্ত, নাভী, পুরুষ, তোমার ঠোঁটের পাঁচবছর 
প্রতি রক্তকোষে সারেঙ্গী বাজছে 
তুনি বলছো বাদ্যযন্ত্রটা কেমন দেখতে 
আমি হাসছি 
তোমায় পাচ্ছি না কিছুতেই। 
.
হ,য, ব,র, ল 
সুনীল, শক্তি, রামকিংকর বেজ, ডক্টর ফ্র‍্য়েড
সব্বাই কি যেন খুঁজছে, 
খুঁজছে মিষ্টার প্রদোষ মিত্র শুনতে পাচ্ছি,
....... ডাকছে টিকটিকির মতো 
কেন? 
কেউ পাই নি, কেউ পাচ্ছে না, কিছুতেই না
হাতরাচ্ছে, অপেক্ষা করছে, পুড়ছে 
সামথিং মিসিং 
তোমায় পাচ্ছি না কিছুতেই। 

Sunday, July 24, 2022

যদি ছবি তুলতে পারতাম

 যদি ছবি তুলতে পারতাম 

... ঋষি 


আমি ঠিক ছবি  তুলতে পারি না 

ছবি  তুললেই ক্রমশ সরে সরে যায় মুহূর্তদের মৃত্যুগুলো 

বিশ্বাস  করো। .....

.

যদি ছবি  তুলতে পারতাম 

সবার আগে তুলে রাখতাম আমার শৈশবের স্মৃতিকোঠা 

ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে আজও শুনতে পাই আমি 

মায়ের নুপুরের শব্দ ,

মা   ......

যদি পারতাম একটা ছবি তুলে রাখতাম আমি। 

.

বিশ্বাস করো আমি ছবি তুলতে পারি না 

ছবি তুলতে গেলেই আমার ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা হয়ে যায় ,

ছবি তুলতে পারলেই আমি ভবা পাগলার মনের ছবি তুলতাম 

যে সারাদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে নিশ্বাস খোঁজে ,

ছবি তুলতে পারলে 

আমি ঠিক তুলে রাখতাম চলন্তিকা তোমার টিপ্ পড়া 

তোমার চোখের কাজল দেওয়া বিশ্বাস 

কিংবা তোমার সেই হাতের ছবি 

যে হাত আজ ঈশ্বরের পতাকা হয়ে আমাদের মন্দিরের শিরোস্ত্রাণে ,

বিশ্বাস করো 

আমি ছবি তুলতে পারলে হয়তো 

হরপ্পার মতো হাজারো সভ্যতা ,মোনালিসা মতো আরো ছবি 

ক্লিওপেট্টার মৃত্যু ঘোর 

সব তুলে রাখতাম 

একটা নমুহূর্তের ডিকশনারিতে আমি রেখে দিতাম প্রতিটা মৃত্যুর মুহূর্ত। 

সমাজ সচেতন

সমাজ সচেতনা

... ঋষি 


সমাজ সচেতন আর নিষ্পাপ আত্মহত্যা 

দুটো শব্দ হৃদয়ের বাক্স ভেঙে বার করে 

আধ ভাঙা সময়ের অজস্র কামড়ে সাজিয়ে রাখি 

জানি তুমি হাসবে 

নিষ্পাপ মানুষ 

কিংবা তোমার মতো দেখতে মানুষ। 

.

চলন্তিকা বলে সম্পর্কের গায়ে ডোরাকাটা দাগ 

আমি বুঝি না ,বিশ্বাস করি  ,ঠকি ,

অথচ মানুষেরা যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়ে যায় হঠাৎ সত্যি দেখি 

আমি হাসি ,হিসু পায় 

টয়লেটে ফ্ল্যাশ করে দুর্গন্ধ দূর করি 

কিন্তু মানুষের স্বভাব মানুষ নোংরা ছড়াতে ভালোবাসে। 

.

বেশি করে লিখি কিংবা কম করে 

দূরপাল্লার বাসে দেওয়াল ঘেঁষা জানলায় চেপে বসি 

পায়ের তলা শহরে সরে যায় 

সরে যায় বিজ্ঞাপনে কন্ডোমের কিছু একলা মুহূর্ত 

গ্লোসাইনে চকচক করে হৃদয়ের মুখ 

দুপায়ের ফাঁকে জুড়ে থাকে দুই শহরে এক একলা ব্রিজ 

সমাজ সচেতনা ভালো 

                         কিন্তু আত্নহত্যা তার থেকে ঢের ভালো,

এমন নিষ্পাপ মানুষ 

প্রেমিকাকে বিক্রি করে গ্লোসাইনের শহরে মুখোশের লোভে 

আমি বুঝি না সমাজ সচেতনা কাকে বলে। 

Tuesday, July 19, 2022

আমি ইহুদীর বাচ্চা


অনবরত দারিদ্র্যতা
পাতার পৃথিবীতে পাতার মুকুট পরে সবাই 
জেসাস ক্রাইস্ট তুমি ইহুদীর বাচ্চা তোমার দোষ 
তুমি ঈশ্বর  তোমার গুণ 
তোমার মৃত্যু, তোমার পরিনতি। 
.
আগুন খুঁজছি
ছেঁড়া কসমিটকস মোড়া মুখ আমার কলকাতায় 
শ্বাস কষ্ট , শবসাধনা
মৃত্যুর গৌরব খুলে গতজন্মের কিছু পাপ
অভুক্ত মানুষ 
সাদা পাতায় কবিতার রক্ত। 
.
আমি ইহুদী হতে চাই নি 
আমি কবি হতে চাই নি
আমি দেখতে চেয়েছিলাম ঈশ্বর মানুষের বুকে,
আমি মুখোস পরতে চাই নি 
চাই নি চার্নক হয়ে কলকাতা খঁজতে 
চাই নি পাতার মুকুট পরে, পাতার পোশাকে ঈশ্বর হতে, 
মুখে রক্ত তুলে সন্তানের সুখ 
নকল মুখোশে সাজানো শহরের মুখ 
আমার কলকাতা আমি ইহুদীর বাচ্চা
কিন্তু জীবিত। 

Sunday, July 17, 2022

যতোটুকু জানি

 যতোটুকু জানি 

... ঋষি 


আমি শুধু জানি 

আমার পাশের জায়গাটা শূন্য হয়ে গেলে 

আমার শব্দগুলো  ভীষণ অন্ধকার হয়ে যায়। 

.

এ কি কাব্য ?

না কি যন্ত্রণার মতো দেখতে কোনো কবিতার নারী ?

কোথায় আমি 

আকাশের চাঁদ খুলে পরে আজকাল যখন তখন 

চোখে পাতায় শুকিয়ে থাকা জলবিন্ধু কথা বলে 

কবিতা ফুরিয়ে গেলে আমি বাঁচবো কি করে ?

.

তুমি বাড়ি চলে গেলে 

                                  কিংবা না গেলে 

আমার দিকে বাড়িয়ে দিলে তোমার অনন্ত প্রেম 

আমার ছেঁড়া বোতাম 

ধরো ,

অন্ধকার পাঠাগার খুলে তুমি চিৎকার করছো বাঁচবার কবিতা 

আমি শুনতে পাচ্ছি না 

আমি দেখতে পাচ্ছি না 

জনতা তবু হাততালি দিচ্ছে 

কবিতাগুলো মুখ শুকনো করে আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে 

তুমি তাকাচ্ছো না আমার দিকে। 

তোমাকে আর চাইছি না

 তোমাকে আর চাইছি না 

... ঋষি 

.

তোমাকে আর চাইছি না 

অথচ তোমাকে ভালোবাসি নি কোনোদিনই এমন নয় 

তবে আজকাল তোমার নর্দমা ডিঙিয়ে বাড়ি ফিরে আসাতে 

                      আমার কেমন বিরক্ত লাগে ,

তবু আমি সরতে পারি  না কোথাও 

সযত্নে সহ্য করে  নি তোমার বহুকষ্টে অর্জিত সবজি ভাত 

ভাড়ায় থাকা আমাদের এই সংসার। 

.

আমার ভারী হয়ে আসা চোখের পাতার নাম জীবন 

শিখছি রোজ 

সরছি তোমার থেকে আরও দ্রুত ,

অসহ্য যন্ত্রনায় তোমার চোখের টানে আমাকে গিয়ে শুতে হয় তোমার পাশে ,

তোমার কোনো দোষ নেই 

বলতে গেলে সবটাই তুমি আমাকে দিয়েছো 

মাঝের মধ্যে ভালোবেসে কাছে টেনেছো

হয়তো বছরে একবার দুবার বলেছো ভালোবাসি 

কিন্তু তবুও তোমাকে  আর চাইছি না। 

.

উল্টে পাল্টে অনেক দেখা হলো আমার এই দাম্পত্য 

আর কত ?

পরজন্মের আর ভবিষ্যতের গল্প শুনতে আর তোমার মুখে ভালো লাগে না 

তাই বলে ভালোবাসি না তা না 

ভালোবাসলেই যে এক সাথে থাকতে হবে ,একসাথে শুতে 

কোথায় লেখা আছে সেই কথা ,

বিয়ে মানেই তো শুধু সহবস্থান ,শুধু সহ্য করা না 

তাছাড়া 

সত্যি বলতে কি এক পুরুষের কাছে কতটা আশা করা যায় 

এক মানুষের পক্ষে সবকিছু কি দেওয়া সম্ভব ?

.

তাই তোমাকে আর চাইছি না। 

পাচ্ছি না তোদের

 পাচ্ছি না তোদের 

.... ঋষি 

রাজদ্বীপ আছিস নাকি 

অনেকদিন হলো তোকে খুঁজছি আড্ডার মাঠগুলোতে ,

শুনতে পাচ্ছি তুই বলছিস  আছি ,

অমর আমি তোকে খুঁজছি 

দেখতে পাচ্ছি না ,হাজারো উত্তর খুঁজছি ,

তোর বাড়ির পাশের পুকুর ,সেই শ্যাওলা ধরা ঘাটে। 

.

রতন তুই আছিস ?

হারিয়ে যেতে থাকা ক্রমশ তোর গলার স্বর ,

অসিত তুই শুনতে পাচ্ছিস 

আমাদের সাইকেল ,ইংরেজি স্যার ,সেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগেরেট ,

রুবি তুই কোথায় আছিস 

কলেজস্ট্রিট ট্রাম রাস্তা এখনো পিছন ডাকছে ?

.

পাচ্ছি না 

পাচ্ছি না ,কিছুতেই 

সেই কবে থেকে তোরা ছিল আছিস 

গঙ্গার নৌকো ,প্রিন্সেপঘাট ,নিমতলার শ্মশান ,হাওড়ার ব্রিজ 

কলেজের ক্যান্টিন ,খেলার মাঠ 

ফেলে আসা সূর্য। 

সবাইকে আমি আবার একসাথে চাইছি 

এক জায়গায় 

কফি হাউস ,আড্ডা ,একাডেমী ,রবীন্দ্র চর্চা

সবকিছু .....

                পাচ্ছি না তোদের। .


দাম্পত্য

 দাম্পত্য 

... ঋষি 


একটু আগেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলাম 

অন্ধকার আচ্ছন্ন,ইথারে ডোবানো ছায়াতে রুদ্ধশ্বাস দাম্পত্য। 

.

তুমি কি চেয়েছিলে ,তুমি কি পেয়েছো 

ভিজে বালিশে চোখ রেখে ,তুমি ,আপনি ,নিজেকে 

কি বোঝাচ্ছো ,

আগুন খেকো জীবনের হাতে হাতে 

সঙ্গী না সঙ্গিনী

আ 

      ফ 

            শো 

                      ষ। 

.

এতদিন হৃদয়ে হৃদয় ঘষে ছাল চামড়া উঠে যাওয়া খসড়া 

আসলে কিছুই চাওনি দাম্পত্য 

না হাত 

না মাথা 

না বাঁচা 

না মুদির দোকানে সাজানো এক খালি গৃহস্থালি ,

কিছু একটা নেই 

কিছু একটা 

ভা 

     লো 

             বা 

                    সা। 

.

পেট খসিয়ে নেমে আসা শিশু 

হাত ছড়িয়ে দুধের বোতল হাত ছড়িয়ে 

                 তুমি ভালো থাকো সন্তান ,

দাম্পত্যের পর্দা সরিয়ে দেখো ,তুমি ,আপনি ,নিজেকে 

কুয়াশায় ঢাকা পথ 

জমাট পাথরের মত শরীরগুলো 

বুঝতে পারছো 

                দেখতে পারছো না।   

শপথ

বেশ বুঝতে পারছি তুমি ক্রমশ মৃতপ্রায়
বুঝতে পারছি তুমি আরো মৃত্যুর কাছাকাছি 
তোমার মুছতে থাকা হাসি, তোমার নাটকের বারোহাত 
তুমি আরও, আরও মাটির তলায় 
বুঝতে পারি আমার বুকের ভিতর ক্রমশ খালি খালি হতে 
শুধু যন্ত্রনা। 
.
তোমার বোধের উর্দ্ধে ওঠা যন্ত্রনাগুলো 
ক্রমশ ইনসেন্টিভ কেয়ার ইউনিট, 
তুমি চাইছো না শান্তিনিকেতন, তুমি চাইছো না নিভৃত প্রেম, 
চাইছো না ওয়াটসআপ ম্যাসেজ, অযাচিত ফোন কর্লস, 
শুধু একলা হতে চাইছো 
ক্রমশ কবিতার ভিতর তুমি ঘুমিয়ে পড়তে চাইছো " দ" এর মত করে। 
.
তুমি চাইছো স্মৃতিঘর
তুমি চাইছো না খাঁচার ভিতর অচিন পাখি 
তুমি চাইছো একলা একটা, অন্ধকার 
মনের মধ্যে শপথ করছো আর ফিরবে না তুমি, 
বুঝতে পারছি তুমি ক্রমশ মরে যাচ্ছো, 
তোমার মুখের মধ্যে ফুটে উঠছে অন্ধকার ঘর। আমি ক্রমশ বুঝতে পারছি তুমি কোমায় 
আমি সব জানছি, সব বুঝছি 
বুঝতে পারছি তোমার অন্ধকার ভাবনাটা ছুঁয়ে দিচ্ছে শেষের কটা দিন 
তোমার একলা হতে ভালো লাগছে। 

Monday, July 11, 2022

ছোট মনের লোক

আমার মৃত্যুর শরীরটাকে তুমি সেদিন কবিতায় মুড়ে দিও 
জানি আমি ভীষণ ছোট মনের লোক ,
জানি আমার স্পর্ধাতে আগুন শুকিয়ে যায় তোমার বুকে 
তোমার তখন অন্ধকার হতে ইচ্ছে করে। 
তবুও আমার মৃতদেহ দেখতে এসো নিশ্চয় তোমার প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে 
আমার মহান প্রেমের এপিটাফে না হয় সেদিন শুনিয়ে দিয়ো কিছু 
নজরুল ,রবীন্দ্রনাথ ,কিংবা বীরন্দ্রবাবুর কবিতা। 
.
আমার মৃত্যুর শরীরটাকে মুড়ে দিয়ো আমার কিছু অযোগ্য কবিতায় 
যেগুলো তোমার কাছে সেই একগুঁয়ে কান্না 
যেগুলো তোমার কাছে কারণহীন কিছু অযোগ্যতা ,
আমি হাসবো সেদিনও 
শুনতে চাইবো তোমার কণ্ঠে আমার কবিতা 
জানি আমি ভীষণ ছোট মনের লোক 
জানি আমার অযোগ্যতায় হাসে তোমার বন্ধুরা। 
.
আমার মৃত্যুর শরীরটাকে অতি অবশ্যই তুমি একবার দেখতে এসো 
দেখতে এসো কোনো দোষারোপ ছাড়া এক অসম্পূর্ণ গল্প ,
তোমার বন্ধুরা যারা আমি কবিতা লিখতে পারি না বলে দুর্নাম করে 
তাদের বলো আমি কবিতা লিখতে চাই নি কোনোদিন 
লিখতে চেয়েছিলাম জীবন। 
জানি সব প্রশ্নের উত্তর যেমন হয় না 
তেমনি কোথাও দাঁড়াবে  না আমার এই ছোট মনের কবিতা  
তোমার সাথে আগামীতে আর দেখা হবে কিনা জানি না 
তোমার সাথে আগামীতে কত দিন কথা হবে তাও জানি না, 
তবু আমার মৃত্যুর শরীরটাকে একবার তুমি দেখতে এসো  
মনে করে সেদিন আমার  মৃতদেহে একমুখ থুথু ছিটিয়ে দিও
আর খুব হেসো 
কারণ সেদিন একটা বেকার ছোট মনে মানুষ মারা যাবে 
যে তোমাকে ভীষণ জ্বালাতো।

জবাব নেই

আজকাল বুঝতে পারি না
মানুষের জেদ মানুষের পরাজয়ের কারণ 
নাকি  জেদের কাছে মানুষের পরাজয়। 
.
আজকাল মানুষগুলোকে বুঝতে পারি না 
যা করলে মানুষের সম্পর্ক নষ্ট হয় 
তা মানুষ করে কেন? 
কেনই বা অন্য মানুষ সম্পর্ক নষ্টের কারন হয়।
.
আজকাল বুঝতে পারি না 
মানুষের কাছে কি প্রিয়, অপ্রিয় সত্যি না মুখোশ 
কিংবা মুখোশ লাগানো মানুষের মতো কিছু সময় 
যারা সম্পর্ক হয়ে তো দাঁড়ায় 
কিন্তু মানুষের অসহয়াতার সুযোগ নেয়।
.
আজকাল অনেককিছুই বুঝতে পারি না আমি 
কিন্তু আমি এটা জানি 
চলন্তিকা আমার ভালো থাকার কারণ 
আর চলন্তিকাই আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র  দায়ী। 
.
বাকি উত্তর সময়ের হাতে 
মানুষ না মুখোশ 
নাকি সময়ের দোষে হয়ে যাওয়া কোন ভুল। 
.
জবাব নেই 
ঋষি

আ য় না

সমস্ত বোঝা পড়ার পরে 
সম্পর্ককে আয়নার সামনে দাঁড় করানো ভালো 
তবে প্রতিদিনকার মতো তবে কাঁচে দাগ পরে না। 
যে তোমার হবে সে তোমারি থাকবে চিরকাল 
যে তোমার হবে না 
তাকে ঈশ্বরের আসন দিলেও তুমি পরাস্ত হবে। 
.
আজকাল ভাবি 
মানুষ আগুন নিয়ে খেলে কি কারণ ?
সে কি মানুষের দোষ ,মানুষের রিপু ,মানুষের সময়ের বদল ,
কই সামনে দাঁড়ানো মহাবৃক্ষ 
        সে তো বদলায় না 
হাজারো ঝড় ,,বৃষ্টি মেঘ কি সহজে সয়। 
.
আমার মনে হয় 
প্রতিটা মানুষের মধ্যে আজকাল মিথ্যে বেড়ে গেছে 
মুখোশের শহরে সকলে কম বেশি মুখোশ পড়তে পড়তে 
আজ শুধু সকলের মুখোশটাই  রয়ে গেছে।
সকলে বোধহয় কম বেশি পুড়ছে নিজের মতো করে 
নিজেকে মিথ্যে বলছে 
বাঁচছে 
সত্যিটা হলো মানুষের আয়নার সামনে দাঁড়াতে ভয় 
কারণ মানুষ নিজের আয়নার বিভৎস্যরূপ সহ্য করতে পারবে না। 
.
সকলেই বড় সত্যবাদী 
সকলেই বড় নিরামিষাশী 
অথচ সকলের সুযোগের অপেক্ষায় 
সত্যিকে দাবিয়ে মিথ্যে দিয়ে সময় গড়বে বলে ,
অথচ মানুষ বোঝে না  সত্যি হলো 
মিথ্যে বেঁচে ,কিছুদিন হয়তো ভালো থাকা যায় 
কিন্তু মুখোশের আড়ালের মুখগুলোকে সকলকেই দেখতে হয়।

দমকা হাওয়া

হঠাৎ বৃষ্টি নামলে 
মানুষকে কেন ভিজতে হয় ছাতা বা রেইনকোর্ট থাকলেও? 
হঠাৎ অন্ধকার করে এলে মানুষ কেন মৃত্যু খোঁজে, 
একই শীতলতা, একই তরলতা, একই বৃষ্টি বিকেল 
বৃষ্টির মানেগুলো কেন বদলায় সময় সময়?
.
মানুষ কেন ক্রীতদাস আজ নিজের কাছে 
কেন হঠাৎ ওঠা ঝড় সম্পর্কের মানেগুলো বদলায়? 
কেনই বা ঝড়ের মাঝে প্রতিটা মানুষ একলা দাঁড়ায়? 
আমরা কি জঞ্জলে আছি? 
আমরা কি সংযমে আছি?
কিংবা আমরা কেউ কোত্থাও নেই শরীর ছাড়া। 
.
সব প্রশ্নের উত্তরগুলো দমকা হাওয়া
বৃষ্টির ছাট কথা বলে দূরে দিকচক্রবালে,
নিশ্চিত মানুষের ভুমিকায় মানুষ বদলায় 
কষ্ট হয় 
তবু হাসে দূর নীলাকাশে একলা মুখ। 
আমি সাক্ষী, তুমি সাক্ষী 
সাক্ষী বৃষ্টির স্পর্শে একলা ম্যাজিক 
আমরা কেউ কোত্থাও নেই শুধু এই শরীর ছাড়া
বাকিসব মিথ্যে 
মিথ্যে বৃষ্টির খাঁজে দমকা হাওয়া। 
.
দমকা হাওয়া
... ঋষি

আমাদের কথা

মুখোমুখি দূরত্বে দাঁড়ানো দুটো মানুষ অনেককিছু করতে পারে  

পিছনে ফিরে হেঁটে চলে যেতে পারে  সহাবস্থানে 

ঝগড়া করতে পারে ভবিষ্যতের শান্তির আশায় 

আরো কাছাকাছি হেঁটে আসতে পারে একে ওপরের দিকে 

কিংবা আরো দূরে চলে যেতে পারে এক ওপরের থেকে 

আবার তারা মিশেও যেতে পারে দূরত্বের দুর্বলতায়। 

.

প্রশ্নগুলো সাধারণ 

অথচ অসাধারণ ভাবনায় আমরা কেউ ভাবি না পরিণতি 

আমরা ভাবি আজকের কথা 

আমরা ভাবি কেটে যাওয়া সময়ের কথা 

কিন্তু খুব সহজ যেটা 

                 "  আমাদের কথা " আমরা ভাবি না। 

.

মুখোমুখি দূরত্বে দাঁড়ানো দুটো মানুষ অনেককিছু করতে পারে

নারী ,পুরুষ ,প্রেম ,প্রকৃতি ,দূরত্ব ,দুর্বলতা ,নাড়ির টান ,

সব সত্যি 

তবে সবচেয়ে বড়ো সত্যি হলো " দুটো মানুষ "  

সেটাই বোধহয় আমরা ভুলে যাই। 

আমার তো মনে হয় এই পৃথিবীতে একটা পাতাও পরে না কারণ ছাড়া 

ঠিক তেমনি কারণ নিয়ে আর যাই হোক সৃষ্টি হয় না 

সে সম্পর্ক হোক ,সে প্রেম হোক ,সে কবিতা হোক

কিন্তু দুটো মানুষ শুধু কারণে দীর্ঘকালএকসাথে থাকতে পারে না। 

সমাজ বলে পারতেই হবে

সময় বলে ইতিহাস সাক্ষী একসাথে থাকতেই হবে 

আর যারা থাকে তারা বলে 

পারছি না আর কারণের সম্পর্কে থাকতে

এইবার মুক্তি চাই ।

দিনলিপি

প্রতিদিন ফিরে আসি ঈশ্বরী হাসবে বলে
ঘুম ভাঙে না পেস্টেলের কালো রঙের 
রঙের বদলে রঙ বদলায় 
দিনের বারান্দায় ছায়া পরে আসে,
সবকিছু একই থাকে
অথচ ভালো থাকা হয় না। 
.
প্রতিদিন ভাবি আজ বোধহয় মানুষ জাগবে
সময় মিথ্যে বলবে না 
আঁকার খাতায় প্যেস্টেলের শেডে খুশী লেগে যাবে 
আর অন্ধকার একা করবে না
তবুও ফিরি রোজ নিজেকে সাথে নিয়ে নিজের ভিতর
ভাবনার পাতায় বাড়ি ফিরি না। 
.
রোজ স্বপ্ন আসে 
একের পর এক ডাইনামাইট বিস্ফোরণ হয় 
ভাবনার স্তুপে জমা হয় পাথর, 
পাথরের ঘর,বাঁচার স্বয়ংবর 
সবকিছু থাকে কিন্তু সময় থাকে না 
মুহুর্তরা থাকে। 
.
প্রতিদিন ফিরে আসি ঈশ্বরী হাসবে বলে
 প্যেস্টেলের কালো রঙের ঘুম ভাঙে না
বাঁচার পাতায় লিখি জীবন 
অথচ কালো  রঙ বারংবার একা ফেরে, 
দিন বদলায় রোজ নিজের মত করে
কিন্তু অপেক্ষারা দাঁড়িয়ে থাকে ।
.
দিনলিপি
... ঋষি

কিছু একটা

কিছু একটা বলতে চাইছি 

             পারছি না ,পারছি না ,পারছি না 

বুকের কাছের মুখগুলো অনবরত পান চিবিয়ে থুকে দিয়ে যাচ্ছে 

মুখে না বললেও বুঝিয়ে যাচ্ছে 

          কবি তোমার এগিয়ে যাওয়ার সময় হলো 

          সুখ শব্দটা বোধহয় মানুষের শখের কারণ। 

.

কিছু একটা পেতে চাইছি 

          অতৃপ্তি ,অতৃপ্তি ,অতৃপ্তি 

বুকের কাছে দলা পাকানো কষ্টগুলো রাজার রাজা হয়ে আছে 

কেউ একটা আঙ্গুল দেখিয়ে বলছে 

           কবি তুমি ভীষণ ছোট মনের মানুষ 

           বড় মনের মানুষেরা বোধহয় মানুষের মতো দেখতে। 

.

কিছু একটা ঘটছে আমার চারিপাশে 

          কোথাও যুদ্ধ ,কোথাও যুদ্ধের ট্যাংকার ,বোমা বাজি 

           হাজারো মরছে আমার ভিতর 

তবুও রক্তের আঁশটে গন্ধ ,তবুও কষ্টের একলা গন্ধ 

            তবুও একলা হেঁটে যাওয়া 

ভালো লাগছে নিজের ভিতর নিজেকে জ্বালাতে পোড়া কাঠে। 

অদ্ভুত অনুভূতি 

              অদ্ভুত ভাবনা 

               ভাবনার  দেওয়ালে প্রেম ,পূর্ণতা ,নগ্নতা ,সম্পর্ক ,দেশ 

                সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে 

বলতে পারছি  না 

কিছুতেই বলতে পারছি না 

পা দিয়ে লাথি মারা খালি কোল্ড্রিংকসের বোতলের মতো 

অপ্রয়োজনীয় আমি।

কবুতর

আমি কবিতায় স্বপ্ন লিখি
চলন্তিকা বলে স্বপ্নের কবিতা হয় বটে 
তবে বাস্তবের চিত্রকল্পে মানুষ শুধু চরিত্র মাত্র 
চরিত্রের ঘর বদল হয় না। 
.
মাঝে মাঝে আমি শায়েরী লিখি
কাহাতক এ জিন্দেগী অব লে যায়ে মুঝে 
মে মুসাফির হু স্বপ্নকা,
চলন্তিকা বলে কবি তুমি আকাশে পা দিয়ে হাঁটো 
তোমার বাড়ির কোনো সিঁড়ি নেই
শুধু আছে কবিতা। 
.
আমি হাসি 
আমি বাঁচি 
নিজের পাকতে থাকা জুলফিতে হাত বুলিয়ে দেখি
রহিম কাকার কবুতরগুলো বসে, 
রহিমকাকা বলতো কবুতর শুধু আকাশ ছুঁতে চায়। 
আমি জানি আমার কবিতা পড়ে চলন্তিকা হাসবে 
তারপর বলবে এই কবিতায় কি মন্তব্য করবো 
এতো কবিতা নয় 
কবুতর 
           শুধু আকাশেই ভালো লাগে। 
.
.
কবুতর 
... ঋষি

Sunday, July 10, 2022

মনখারাপি বৃষ্টি

 মনখারাপি বৃষ্টি 

... ঋষি  


সোজা বৃষ্টি বুকে নিয়ে দাঁড়াই 

      হাসি পায়  ভাবলে আমারও বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে হয় 

প্রেমিক মেঘ জানে 

       এই শহরে বৃষ্টি হলেই জল জমে এক হাঁটু, 

মানুষ সাধারণ তাই বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটে 

      অসাধারণ যারা তারা হাঁটে না,গাড়ি চড়ে। 

.

তুমি ঘুমিয়ে পড়েছো বোধহয় 

ভেজা বালিশের কাছে বৃষ্টি এসে দাঁড়িয়েছে তোমার ঘুমে ,

স্মৃতির জেব্রাক্রসিং ছুঁয়ে বাঘ ভাবছে জঙ্গল 

তুমি স্বপ্ন দেখছো 

        জন্ম দিচ্ছো 

             ভালোবাসার মৃত শরীর।

.

সোজা বৃষ্টি বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে 

বৃষ্টির অসংখ্য ফোঁটা 

              নিস্তব্ধ তবু নীরবতা। 

আজকাল আর কাঁদতে ইচ্ছে করে না 

বৃষ্টি বোধহয় বারোমাস আমার মাথার উপর থাকে 

আমি দৌড়োতে থাকি 

    অফিস ,মানুষ ,তোমার রান্নাঘর ,ছেলের পড়ার টেবিল 

শুধু মাঝে মাঝে হাঁপাই 

বৃষ্টি তখন হয়তো কিছুদিনের জন্য মনখারাপি হয়। 

বিলুপ্তি

 বিলুপ্তি 

... ঋষি 


একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় শতকে 

সারা শরীর জুড়ে লোমে মোড়া বেড়াল ,

অত্যাধুনিক সময়ের ফসল 

পা টিপে হাঁটি ,কান পেতে শুনি ,নাকে খুঁজে পাই রক্তের গন্ধ ,

অসম্ভব ঝাঁপটানির শব্দ 

বেহুশ হয়ে পরে থাকে এই শহরের হাজারো কামড়া। 

.

শুনতে ভালো লাগে ,বুঝতে আরো ভালো 

আলপথ বেঁয়ে ছুটে যায় পুরোনো আশমানের দোকানে 

সেই গলি ,সেই বাড়ি 

জলকাদা মোড়া কিছু স্মৃতি ,,,,,সেই বালিকা ,

হাঁপিয়ে উঠছি ক্রমশ 

নিজের বুকের কাছে ,বুক খুলে রাখতে রাখতে। 

.

লাটিমের মতো ঘুরতে থাকা এই পৃথিবীর স্নেহ 

কে যেন দড়ি ধরে মারে টান 

হঠাৎ হৃদয় বদল নিজের বাড়িটার বলে গলি -দাগ নম্বর -ঠিকানা।

জলকাদামাখা গা

প্রেমিক দাঁড়িয়ে থাকে মূর্তির মতো

প্রেমিকের মরণ নেই , মূর্তির প্রাণ নেই 

মূর্তির প্রাণ নেই , প্রেমিকের মরণ নেই

শুধু মানুষটার সারা শরীর জুড়ে লোমে মোড়া বেড়াল

সদ্য জন্মানদের মাথা চিবোচ্ছে।    


Saturday, July 9, 2022

কিছু একটা


 কিছু একটা 

... ঋষি 

 কিছু একটা বলতে চাইছি 

             পারছি না ,পারছি না ,পারছি না 

বুকের কাছের মুখগুলো অনবরত পান চিবিয়ে থুকে দিয়ে যাচ্ছে 

মুখে না বললেও বুঝিয়ে যাচ্ছে 

          কবি তোমার এগিয়ে যাওয়ার সময় হলো 

          সুখ শব্দটা বোধহয় মানুষের শখের কারণ। 

.

কিছু একটা পেতে চাইছি 

          অতৃপ্তি ,অতৃপ্তি ,অতৃপ্তি 

বুকের কাছে দলা পাকানো কষ্টগুলো রাজার রাজা হয়ে আছে 

কেউ একটা আঙ্গুল দেখিয়ে বলছে 

           কবি তুমি ভীষণ ছোট মনের মানুষ 

           বড় মনের মানুষেরা বোধহয় মানুষের মতো দেখতে। 

.

কিছু একটা ঘটছে আমার চারিপাশে 

          কোথাও যুদ্ধ ,কোথাও যুদ্ধের ট্যাংকার ,বোমা বাজি 

           হাজারো মরছে আমার ভিতর 

তবুও রক্তের আঁশটে গন্ধ ,তবুও কষ্টের একলা গন্ধ 

            তবুও একলা হেঁটে যাওয়া 

ভালো লাগছে নিজের ভিতর নিজেকে জ্বালাতে পোড়া কাঠে। 

অদ্ভুত অনুভূতি 

              অদ্ভুত ভাবনা 

               ভাবনার  দেওয়ালে প্রেম ,পূর্ণতা ,নগ্নতা ,সম্পর্ক ,দেশ 

                সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে 

বলতে পারছি 

কিছুতেই বলতে পারছি না 

পা দিয়ে লাথি মারা খালি কোল্ড্রিংকসের বোতলের মতো 

অপ্রয়োজনীয় আমি।  

Thursday, July 7, 2022

বৃষ্টিতে ভিজছি একা

 বৃষ্টিতে ভিজছি একা 

... ঋষি 


বৃষ্টি হচ্ছে 

বৃষ্টিতে ভেজা গাছটাকে একা একা লাগে 

মানুষেরও লাগে,

এ জীবনে গাছে আর ইচ্ছা জাগে না 

সেহেতু যেতে হবে শিকড়ের কাছে 

এই মানুষ জীবন বেঁচে ফিরতে হবে। 

.

যেহেতু মরুভূমিতে  কোনো গাছ নেই  

যেহেতু ইচ্ছেদের কোনো বাস নেই 

যেহেতু ভাবনাদের কোনো নখ নেই 

যেহেতু ভালোবাসার কোন দেশ নেই 

ফিরে যেতে হবে 

মেঘেদের ঘরে। 

.

বৃষ্টি হচ্ছে 

        দাও ফোঁটা ফোঁটা স্তব্ধতা

          চারদিকে শব্দচূর্ণ ধূধূ মরুভূমি

নিস্তব্ধতার মাঝে ,বৃষ্টির শব্দ 

দেওয়াল গড়িয়ে নামতে থাকা বৃষ্টির জল 

জীবনের উপশম। 

.

ভুলে যাবো,সবকিছু ভুলে যাবো বলেই

অক্লান্ত ভেসে চলেছি

          ঢেউয়ের দখলে এই মৃত শরীরের মতো,

ভুলে যাবো,সবকিছু  ভুলতে চাই বলেই 

বোধহয় আরও একা হয়েছি 

বৃষ্টিতে ভিজছি একা।  


আমি চাই বৃষ্টি না হোক

 আমি চাই বৃষ্টি না হোক 

.. ঋষি 

সময় এককোনে তোমার শুকনো ভালোবাসা 

অন্যপাশে চল্লিশ ছুঁই এক পুরুষের গভীরতা 

মেঘ খুঁজতে পানকৌড়ি মেঘ সাঁতরে ওঠে ডিঙিতে 

আমার ভয় করে 

যদি মেঘ না সরে 

যদি বৃষ্টি  পরে। 

সহজ সরল কাব্যের সাথে জুড়ে থাকা দিনান্তের মেঘ 

গাছ কোটরে জমতে থাকা আরশি লাগানো  নোনতা প্রেম 

হলুদ প্রজাপতির ডানায় পাহাড়ি মেঘ 

তোমাকে চিঠি লিখবো বলে আকাশ খুলে বসি 

মেঘ জমে ,মেঘ সরে 

তবু বৃষ্টি প্রতীক্ষায় থাকে। 

দূর থেকে বুঝতে পারি তোমার স্তনের ডগায় এভারেস্ট ছুঁয়ে 

তার ওপরে তোমার রাজকীয় সম্ভ্রম তোমাকে আড়ালে রাখে 

মেঘ করে ,আগামী বসন্তের খোঁজে অভিমানী চোখ 

কে যেন, কারা যেন

লরিভর্তি বসন্ত উড়িয়ে দিয়ে যায় অস্তরাগের বারান্দায়,

আমার জ্বর আসে কাঁপুনি দিয়ে। 

সূর্য অস্ত গেলে আকাশে বৃষ্টির স্পর্শে লাগে অন্ধকার অভিমান 

অভিমান গুলো বৃষ্টি হয়ে নামতে চায় 

নামতে চায় ছাতিমগাছের গন্ধে মোড়া একলা রাত্রে 

জানি অভিমানদেরও জ্বর হয় 

মাথায় জলপট্টি ,বিছানার পাশে ভাবনার কাফ সিরাপ 

ইচ্ছে করেই কিছুতেই  রোগ কমে না তোমার। 

তোমার ঘর বেয়ে ঢুকে পড়ছে মেঘেদের  দল 

সারা সিলিং বেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মেঘ তোমার মাথার ভিতর 

বৃষ্টি চাইছে সময় 

কিন্তু আমি চাইছি বৃষ্টি না হোক 

তোমার বৃষ্টির শহরের মেঘেরা আমার  দেশে আসুক 

কারণ আমার জ্বরের কারণ তুমি ছিলে  না কখনো। 

আমাদের কথা

 


আমাদের কথা 

... ঋষি 

.

মুখোমুখি দূরত্বে দাঁড়ানো দুটো মানুষ অনেককিছু করতে পারে  

পিছনে ফিরে হেঁটে চলে যেতে পারে  সহাবস্থানে 

ঝগড়া করতে পারে ভবিষ্যতের শান্তির আশায় 

আরো কাছাকাছি হেঁটে আসতে পারে একে ওপরের দিকে 

কিংবা আরো দূরে চলে যেতে পারে এক ওপরের থেকে 

আবার তারা মিশেও যেতে পারে দূরত্বের দুর্বলতায়। 

.

প্রশ্নগুলো সাধারণ 

অথচ অসাধারণ ভাবনায় আমরা কেউ ভাবি না পরিণতি 

আমরা ভাবি আজকের কথা 

আমরা ভাবি কেটে যাওয়া সময়ের কথা 

কিন্তু খুব সহজ যেটা 

                 "  আমাদের কথা " আমরা ভাবি না। 

.

মুখোমুখি দূরত্বে দাঁড়ানো দুটো মানুষ অনেককিছু করতে পারে

নারী ,পুরুষ ,প্রেম ,প্রকৃতি ,দূরত্ব ,দুর্বলতা ,নাড়ির টান ,

সব সত্যি 

তবে সবচেয়ে বড়ো সত্যি হলো " দুটো মানুষ "  

সেটাই বোধহয় আমি ভুলে যাই। 

আমার তো মনে হয় এই পৃথিবীতে একটা পাতাও পরে না কারণ ছাড়া 

ঠিক তেমনি কারণ নিয়ে আর যাই হোক সৃষ্টি হয় না 

সে সম্পর্ক হোক ,সে প্রেম হোক ,সে কবিতা হোক

কিন্তু দুটো মানুষ শুধু কারণে দীর্ঘকালএকসাথে থাকতে পারে না। 

সমাজ বলে পারতেই হবে

সময় বলে ইতিহাস সাক্ষী একসাথে থাকতেই হবে 

আর যারা থাকে তারা বলে 

পারছি না আর কারণের সম্পর্কে থাকতে

এইবার মুক্তি চাই ।   


 


Wednesday, July 6, 2022

পাগলামি

 পাগলামি 

... ঋষি 


আমার বারোতম প্রেমিকা আমাকে বলেছিল 

আমি স্বার্থপর ,আমি কবি 

আমি শুধু কবিতার জন্য সময়কে নগ্ন করি আলোর বিছানায় 

সেখান থেকে খুঁজে বের করি ক্ষত 

তারপর সেই ক্ষতের প্রলেপের নামে লিখি কবিতা 

সে আমাকে বলেছিল আমি নাকি বদ্ধ পাগল। 

.

আমার আটত্রিশতম প্রেমিকা কোনো এক একলা দিনে 

আমাকে খুঁড়ে ফেলেছিল কোদাল দিয়ে 

তারপর বলেছিল 

এই মাটিতে কখনো চাষ হবে না কারণ নাকি আমার স্পর্শরা সব মন্বন্তর 

সেখানে নাকি এক ভিখিরী বাস করে

যে শুধু সময়ের গর্ভে কবিতা লেখে। 

.

আমার পঞ্চাশতম প্রেমিকাকে আমি বলেছি কোনসময় 

আমার প্রিয় ফল আখরোট 

সে হেসেছে বলেছে আখরোট কি আদৌ ফল 

যখন সে বুঝেছে সেটাও ফল 

সে হেসেছে ,সে হাসিয়েছে ,সে কাঁদিয়েছে কোনো বৃষ্টির মহল্লায়,

কিন্তু তাকে আমি বলতে পারি নি 

আমি বৃষ্টির দেশের লোক কারণ এখানে রোদ নেই 

বরং সে আমাকে বলেছে আমি দুঃখী অঞ্চলের বাসিন্দা 

কারণ আমি নাকি কবি 

আমি নাকি কলমের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত করি সম্পর্ক। 

.

কিন্তু আমি চিৎকার করতে পারি নি কোনোদিন 

বলতে পারি নি 

আমি কবিতা লিখি কারণ আমার কাঁদার ইচ্ছে হয় 

আমি কবিতা লিখি কারণ আমার হাসার ইচ্ছে হয় 

আমি কবিতা লিখি কারণ আমিও বাঁচতে চাই 

ওদের সবার মতো 

ওদের সবার সাথে 

আলাদা কোনো একলা নেপচুনের বাসিন্দা না হয়ে। 


অস্তরাগ

 অস্তরাগ 

.. ঋষি 


অস্তরাগ লিখতে বসছি 

লিখতে বসছি আমার ছেঁড়া আস্তিনে লুকোনো টেক্কার কথা ,

সম্পর্কেরা প্ৰাচীন বৃক্ষের মতো শিরাউপশিরা বিস্তার করে 

প্রশ্ন হাজারও 

কিন্তু হাজারো প্রশ্নের ফাঁকে একটা প্রশ্ন 

সম্পর্ক কি শুধুই স্বার্থ ?

.

সম্পর্ক কি মুখের আদলের পিছনে এক একটা কারণ

কিংবা অবাঞ্চিত আঁচিলের মতো কিছু 

শুধুই বয়ে বেড়ানো ,

আসলে আগুন না লাগলে ঘর পোড়ে না কারো 

কিন্তু ঘর পোড়ে লোকে দেখে 

কেউ হয়তো হাততালি দেয় কিংবা কেউ মুখে বলে আহা 

কিন্তু যার ঘর পোড়ে সে বোঝে 

ঘরের সাথে পুড়ে যায় মানুষের গভীর সম্পর্ক। 

.

সম্পর্ক কি কোনো লোভ ?

কোনো পরিচয় ?

কোনো দায়বদ্ধতা ?

বুঝতে বুঝতে মাথার কালো চুলে পাক ধরলো 

পেকে পচে গেলো গভীরে শুয়ে থাকা সম্পর্কের প্রতি আকুতি ,

রোজকার মতো অনেকে হাততালি দিল 

কেউ কেউ চিমটি কেটে বুঝিয়ে গেলো এক অন্ধকার কাব্য ,

আমি ব্যাকুল হলাম 

আমিও ক্লান্ত হলাম 

কিন্তু দিনের শেষে নিজের কলমে স্বভাবে লিখলাম 

অস্তরাগ 

সাহসী সম্বলটুকু। 


Sunday, July 3, 2022

পাখি

 পাখি 

... ঋষি 


তোমাকে দেখবো কোনোদিন পাখিদের সমাবেশে  

হাজারো উষ্ণতার বিকেল বাড়ি ফেরে যারা একই রকম সকালের আশায়

তাদের জন্য মোটেও এই কবিতা নয় । 

মানুষেরা  খুব গহীন কাব্যিকতায় আকাশ দেখে 

তাদের জন্যও এই কবিতা নয় 

আমার জানতে ইচ্ছে হয় তুমি কিভাবে আমার দিকে তাকাবে আকাশ থেকে। 

.

পাখি ওয়ালা ও খাঁচার  মধ্য পার্থ্যক্যসূচক আলাপে

আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে আমি আর ভালোবাসা মধ্যে 

কোনটা পাখি আর কোনটা খাঁচা ?  

.

পাখি বাজারে কেউ কেউ সুন্দর মুখোশে বিক্রি করে স্পর্শ 

মুখে তাদের বাঁশি 

        যার থেকে ভালোবাসি ,ভালোবাসি শব্দ বেরোয় ,

হয়তো কোনোদিন পেংগুইন ও বিক্রি হবে এই শহরে 

পৃথিবী বদলাবার ইতিহাসে 

সেদিন আর পাখিদের ডানা থাকবে না। 

.

তারপর আমার জানতে ইচ্ছে করে  পাখিরাও কি চুল বাঁধে?

তাদেরও কি সংসার থাকে 

আমি জানি পাখিদের শুধু আকাশ থাকে 

আর থাকে 

দুটো ডানা। 

সত্যির বলাৎকার

 সত্যির বলাৎকার 

... ঋষি 


শেষমেশ 

ওরা ধরে ফেললো আমাকে 

কজন ছিল অন্ধকারে ঠিক দেখতে পাচ্ছি না 

তবে বুঝতে পারছি অনুভূতিতে 

ওরা ছিঁড়ছে আমাকে 

ওরা ছিঁড়ে ফেলতে চাইছে আমার আত্মা আমার শরীর থেকে। 

.

কি যন্ত্রনা 

আমার চিৎকার বোধহয় এই অন্ধকার ছিঁড়ে আলো ফোটাতে পারবে না সময়ে ওরা বলাবলি শুরু করল :

না না ডানদিকটায়

আরেকটু উপরে...

উঁহু,

ঠিক পেছনে

একটু নীচে

আরে ঠিক খাঁজের ভেতরটায়

টেরোরিস্ট খোঁজার মত করে ওরা আমার চল্লিশের শরীরটাতে কি খুঁজছিল। 

.

ওরা প্রথমে উপড়ে আনল হৃদয়

সেখানে আমার সন্তান,স্বামী আর যৌবনকে তারা বলাৎকার করলো 

তারপর ওরা উপড়ালো  চোখ

যে চোখ দিয়ে আমি সাক্ষী দিয়েছিলাম কোর্টে সত্যির 

ওরা ওই সত্যিটাকে বলাৎকার করলো

শেষে আমার অনুভূতিগুলোকে চটকাতে লাগল আমার বুকে 

দুহাত দিয়ে আমার স্তনের সন্তানদের হত্যা করলো,

ওরা বলে উঠল : সাবধান সময়ের বিরুদ্ধে সত্যি বলাটা অপরাধ 

ওরা আমার তলদেশে তখন জোর করে মিথ্যা পুঁতে দিচ্ছিল

পুঁতে দিচ্ছিল মাথা উঁচু করার প্রতিশোধ ।

 .

একসময় সমস্ত কিছু শেষ হলো 

ওরা আমার নগ্ন ,থেঁতলানো শরীরটাকে টুকরো টুকরো করে বস্তায় পুরছিল 

আমি তখন জীবন্ত প্রতিবাদে বলছিলাম 

ওরে তোরা শোন 

আমার হৃদয়টা যে পরে রইলো ,ওটাকেও পোড়াতে হবে 

না হলে আগামীতে আবারও কেউ সত্যি বলবে যে। 

 

Friday, July 1, 2022

বেশ্যার বাজার

 বেশ্যার বাজার 

... ঋষি 


ধর্ষণ এখন জাতীয় পতাকার গায়ে সবচেয়ে উচ্চারিত শব্দ 

এখন ঠোঁটের চামড়া ছিঁড়ে ,চোখে লজ্জা ছিঁড়ে 

গভীরতার তৃপ্তিতে ঝরে পড়ছে কাম 

মৃত মায়ের মুখ ,

সারা সময় জুড়ে দশ মাসের কাঁথায় ঘুমিয়ে

এখন হাজারো বেজাত শুক্রাণু। 

.

এখানে রক্ত আর ঘাম 

সভ্যতার মসৃন নালীকে ধারাবাহিক ভাবে আরো পিচ্ছিল করছে

হস্তমৈথুন এখন রাতজাগা অন্ধকার আগামী ,

বিশ্বাস ঘাতকের জীবিত নখের দাগ 

বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মুখোশে 

আজ সভ্যতাকে ধর্ষণ করছে কিছু মাথায় ফেট্টি বাধা লোক। 

.

এখানে কেউ নেই 

এখানে কেউ জীবিত নেই 

এখানে  শুধু সারি দেওয়া ভীত ,সন্ত্রস্ত কিছু বাঁচতে চাওয়া মানুষ 

এখানে লকলকে ঝুলন্ত জন্মের গোড়ায়  

জনপ্রিয়তাপ্রবণ জ্ঞানী অন্ধ প্রজন্ম।

এখন পথ দেখাবার যারা তারা

তারা নিজেরাই স্বার্থের সন্ধান একেক আকাশ হয়ে বসে আছে

অন্ধকার সময়ে বুকে নিজের পেরেক পুঁতবে বলে। 

কি সব লজ্জাবতী গাছ একেকটা

সনেটের পাতায় পাতায় হেমলক অথচ আরো জোরে ,আরো জোরে 

কিন্তু তল তো পায় না। 

নির্বিঘ্নে নির্বিকার নির্বিবাদী ধর্ষণমূখর সংবিধানে,

জাতীয় পতাকার গায়ে ছিটকে পড়ছে বারংবার মানুষের রক্ত 

মানুষ বাঁচছে কই 

মানুষ থাকছে কই 

সারা দেশ জুড়ে ,সারা সময় জুড়ে 

আজ শুধু বেশ্যার বাজার। 

মানুষের কবিতা

 মানুষের কবিতা 

... ঋষি 


প্রতিদিন ভাবি একটা মানুষের কবিতা লিখবো 

লিখবো মানুষের স্বপ্ন 

অথচ সকালে বাজারের থলে হাতে চাল ,ডাল ,নুনের হিসাবে 

নিজেকে হারাই 

হারিয়ে ফেলি মানুষ নামক একটা মহান পাঠ্য 

কেন যেন শুধু দুঃখ লিখতে ইচ্ছে হয়। 

.

প্রতিদিন ভাবি আজ একটা কবিতা লিখবো মানুষের জন্য 

লিখবো মানুষের প্রতিবাদ ,মানুষের কষ্ট ,অনুভূতি 

অথচ খবরের কাগজে চোখ রেখে আমি নিজেই মরে যাই বারংবার 

বারংবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ধর্ষিত ছবছরের মেয়ের মুখ 

বারংবার অদৃশ্যের  মাঝে দেখতে পারি বন্যা পীড়িত মানুষ 

ভয় করে 

বলে যাই কবির কলমে প্রতিবাদ দরকার। 

.

প্রতিদিন ভাবি আজ একটা মানুষের কবিতা লিখবোই

লেখা হয়ে ওঠে না ,

চারিপাশের সম্পর্কের মাঝে তাকাই দেখি হাহাকার 

চলন্তিকার চোখের দিকে তাকাই দেখি নিস্তব্ধতা 

ঋতু  বদলায়

বদলায় সময় 

আমি আবিষ্কার করি নিজেকে কিংকর্তব্যবিমুখ।  

বড়ো একলা লাগে

সময়ের চাপে লাগে খুব ক্লান্ত  

কবিতার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমোতে ইচ্ছে হয় 

আমি ঘুমিয়ে পরি ,

ঘুমিয়ে পরে আমার কলমে মানুষ আমার সাথে।

তবে অপেক্ষা ফুরোয় না 

ফুরোয় না আশা 

আমি ঘুমের চোখে স্বপ্ন দেখি মানুষ 

আর আমার বর্ণরা মানুষের চিৎকার ,প্রতিবাদ।     


পরম্পরা

 পরম্পরা 

... ঋষি 


প্রতিটা

 মুহূর্ত 

তুমি কবিতা। 

.

প্রতিটা আকাশ 

লাল

ঝরে পরে লালা ক্রমশ লোভাতুর নিশ্বাস। 

.

বিশ্বাস 

প্রহসন 

আর ক্রমশ নিস্তব্ধ ভাষা। 

.

ক্লান্ত 

কথার 

এই মুহূর্তের কবিতা ,পাঠক শূন্য। 

.

সাদা 

কাগজে 

কয়েকফোঁটা রক্ত যখন কবিতা 

চটি জোড়া

 চটি জোড়া 

... ঋষি 


কথাটা হলো কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না 

দুটো পুরোনো  ক্ষয়ে যাওয়া চটি জোড়া ক্লান্ত হয়ে দেওয়ালে ঠেস  দিয়ে দাঁড়িয়ে

  আলো হেঁটে চলেছে পাশ দিয়ে 

               আর আলোর ছায়া চটি দুটোর একে ,ওপরের গায়ে ,

আমি আবিষ্কার করছি মাথাটা ক্রমশ ধরে আসছে 

                      চল্লিশের কাঁচে বোধহয় লেগে আছে মৃত্যুর তারুণ্য। 

.

কথাটা হলো আজ অনেকদিন ঘুমোচ্ছি না 

বুঝতে পারছি 

নিজেকে সারাজীবন ধরে বলে এসেছি মিথ্যে ভালো থাকার কথা ,

চলন্তিকা বলে বাঁচতে তো হবে 

পথ খুঁজতে হবে তাই 

কিন্তু প্রশ্নটা  সেদিনকার মতো আজও একলা বড়। 

.

কে যেন বলেছিল ছায়ার ভিতর ভালোবাসা নেই 

ভালোবাসা শব্দটা শরীরের ভিতর 

আমার আজও বিশ্বাস হয় না এই কথা ,

শুধু ছায়াজল আর জল ছায়া আরও নিঃশব্দ ক্রমশ

এই পৃথিবীর ভাষায় ভালোবাসা ছায়াহীন চিরকাল।

আমি দেওয়ালে হেলানো চটি জোড়ার  দিকে তাকাই 

দেখি ক্রমশ শেষ বেলার আলোটুকু মুছে চলেছে 

আমার ভয় করছে 

অস্বস্তি বাড়ছে 

সত্যিটা হলো শব্দহীন ভালোবাসা নিঃশব্দ চিরকাল।  

  


অনবদ্য কবিতা

আমরা কেউই অনবদ্য কবিতা নই আমরা সাধারণ যারা তারা শুধু বেঁচে আছি বেঁচে থাকবো বলে, আমাদের কবিতারা আকাশে উড়তে পারে না শুধু ডানা ঝাপটায়, হঠাৎ  অব...