Thursday, August 25, 2016

ইনকিলাম জিন্দাবাদ

ইনকিলাম জিন্দাবাদ
................ ঋষি
==================================================
সময়টা আজ থেকে পিছিয়ে দেব
আমি এগিয়ে যাবো সেই ঐতিহাসিক পলাশীর প্রাঙ্গনে।
সামনে দাঁড়িয়ে আমার বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর
আর পরগাছা সেই লাল মুখ বাদরগুলো।
তারপর কামানের গোলাগুলো ছুটিয়ে দেব আবার বাঁচার আশায়
এই দেশে যাতে অন্ধকার না নামে।

আমি দেশ বলি
তোমরাও তাকিয়ে থাকো আজ টুকরো থেকে টুকরো দেশে।
ছোট ছোট ভাঙাচোরাগুলো জুড়ে আমি কবিতা লিখি
কখনো পদ্মা কিংবা গঙ্গার পবিত্র জলে আজ গ্যালন গ্যালন বীজাণু।
আমি সবুজ লিখতে গিয়ে
দাঁড়িয়ে পড়ি আইনের দেবীর বন্ধ চোখে।
যেখানে ধর্ষিত হয় সদ্য যুবতী নারী ,কিংবা কোনো আশ্রয়হীন পাগলী
হাওয়ায় ফুলতে থাকা জীবন বিজ্ঞানের পাতা আর সামাজিক রাষ্ট্র নীতি।
সভ্যতা কাঁদতে থাকে কোনো শৈশবের হাত ধরে চায়ের দোকানে
আমি সবুজ হারিয়ে ফেলি আর রক্তের ধারা জালানওয়ালাবাদ।
আমি পুড়তে থাকি নিজের ভিতর ধর্মের কাপুরুষতায়
আমি উলঙ্গ কোনো দিনে ,অনাবৃত্ত সময় লিখে ফেলি।

সময়টা আজ পিছিয়ে দেবো
আজ থেকে  সত্তর বছর আগে সদ্য জন্মানো দেশে।
বিপ্লবীদের  মতো গর্জে উঠবো ইনকিলাব জিন্দাবাদ
এক পাশে থাকবে সময়।
আমি সময়ের মানুষের অন্তরে কবিতা লিখে দেব
জানো তোমরা ইনকিলাবের মানে ?

আগামী ঊনত্রিশ

আগামী ঊনত্রিশ
.................... ঋষি
======================================================
কবিতার আগামী ঊনত্রিশ দিনে
আশা করি সবকিছু ভালো হবে।
কিংবা আরো ভালো ,হয়তো আরো ভালো হতে পারে
কিছু তো চলন্তিকা খারাপও হতে পারে।
কিন্তু খারাপের থেকে খারাপ কিছু হতে পারে
সেটা আমার অজানা।

এক রৌদ্র দুপুরে কোনো স্টেশনে একলা দাঁড়ানো ট্রেন শহর ছাড়তে থাকে
আমার বুকের ভিতর ঝিকঝিক শব্দে কেমন একটা হাতছানি।
জানি না কেন সেই মুহূর্তে শহর থেমে যায়
শহরের প্রাক্তন সমস্ত অবয়বে একটা আদলে নিস্তব্ধতা।
ট্রেন ক্রমশ গতি বাড়ায়
শহর এগিয়ে গিয়ে মুখ থুবড়ে পরে একসময়।
তারপর আরো অনেক সবুজ পেরিয়ে একগাদা সিঁদুরে মেঘ
আমার মাথায়।
ঠিক তখনি চলন্তিকা আমি আকাশ দেখি
আর মেঘের কোনে খুঁজতে থাকি আশ্রয়।

কবিতার আগামী ঊনত্রিশ দিনে
আশা করি সেই ট্রেন ক্রমশ গন্তব্যে আমার বুকের ভাঁজে আছে।
বুকের কেবিনে ছোট ছোট কুঠুরিতে হাজারো ব্যস্ততা
চাওয়ালা ,সিঙাড়া ওয়ালা ,ঝালমুড়ি আরো কতকিছু।
কিন্তু আমি স্টেশনে বসে কোনো কবিতার খাতায় একদম স্থির
দেখি ট্রেন ছাড়ে প্রতিবারে আর শহর থিম যায়। 

যখন বৃষ্টি পরে

যখন বৃষ্টি পরে
.................. ঋষি
===============================================
লেখাগুলো জমে আছে রে
তোর বুকের পিরামিডে নিচে কোথাও আমি দাঁড়িয়ে
আজও  আকাশ দেখি।
উল্টো দিকে অন্য একজন আমাকে দেখে
সময় বলে তাকে গালাগাল দেওয়া যায় না
শুধু ফিরে আসে পুরোনোটা।

অনেকগুলো দিন কেটে গেছে
আগামী অনেকটা কেটে যাবে যেমন যাচ্ছে সময়।
আমরা তো  শুধু সময়ের দূত
শুধু রাত্রি বাড়লেই আজ কাল খোলা জানলা দিয়ে বৃষ্টির ছাট আসে
তারসাথে ফিরে আসে পিছনের পথ।
আমি হাঁটি তো রোজ সেই পথে
যেখানে সেই কষ্টগুলো জমে তোর কালো টিপে লেগে থাকা নেশা।
তোর কালো রঙের শাড়ির আড়ালে
কোনো আগামী শারদীয়ার কবিতার রঙিন পাতা।
তবু সবটাই কবিতা নয়
যেমন তুই আমাকে বারংবার কবি বলে ডাকিস।

লেখাগুলো জমে আছে রে
তোর বুকের পিরামিড ছুঁয়ে সন্ধ্যের নিভে যাওয়া আলোয় আলেয়া।
হাতছানি দেয় এগিয়ে আসে
সিগারেট ঠোঁটে লেগে যায় লিপস্টিকের গাঢ় লাল।
হয়তো রক্ত ঝরে হৃদয়ে
অন্য কোনো দিনে এই সময় যখন বৃষ্টি পরে। 

কোনো নারীত্বের

কোনো নারীত্বের
................ ঋষি
==========================================
তবে তোর ক্যালেন্ডারে তারিখ কোনটা
এই তো বললি বদলে গেছে দিন।
বছরের ২৮ দিন যদি প্রতিবার একবার আসে
তবে কেন বারো মাস ?
থাক এই প্রশ্ন
বরং তোকে শুভেচ্ছা আগামী কোনো নারীত্বের।

সব কেন কি ?
কোনো সামাজিক নিয়মের দরজায় লাগানো তকমা?
এখানে বৃষ্টি হয় বারোমাস
এখানে ফসল ফলে সবুজ আলিঙ্গনে ভিজে মাটি।
এখানে জীবিত থাকে সফর
সেই নারী যাকে আমি কখনো শ্রদ্ধা করে মা বলি।
অপেক্ষায়  আছি
তোর ক্যালেন্ডারের পাতায় পয়লা মাসের পয়লা দিন।
আরো রঙিন
কোনো রঙিন  আদরের দিনে।


তবে তোর ক্যালেন্ডারে তারিখ কোনটা
জানি না তো বদলাতে বদলাতে এতগুলো দিন।
বছরের ৩০ কিংবা ৩১ ফাঁকে শুধু কিছুদিন
তবে কেন বৃষ্টি মাস ?
থাক এই প্রশ্ন
বরং তোকে শুভেচ্ছা আগামী কোনো নারীত্বের।

একসাথে


একসাথে
............. ঋষি
==========================================
কোনো হালকা রেশমি জ্যোৎস্না
অন্ধকার ছায়াময় প্রচন্ড উত্তাপ ছড়িয়ে যাচ্ছে শরীর।
কানের গিরিখাতে ক্রমশ দামামা বাজছে
আরো কাছে।
ফিস্ ফিস্ মিশে যাচ্ছে বুক ,স্পন্দন ,নেশা
সবকিছু একসাথে।

জোনাকির ছলে আলো গুলো
তোর কপাল বেয়ে ,চোখ ছুঁয়ে ,তোর ঠোঁটে ,ক্রমশ তোর গ্রীবা
হয়ে উন্নত হাতছানি তলিয়ে যাচ্ছে তোর নাভিদেশে।
আমি শহরে বসে অন্ধকার বুনছি
আর তুই অন্ধকারে বসে বারংবার জ্বলছিস আর নিভছিস
সমস্ত বায়ুমণ্ডলে কালকের ভূমিকম্প ।
কম্পন মাত্রায় মায়ানমার মাপতে গিয়ে আমি অবাক
সেখানে একটা শিহরণ ।
ভীত মানুষের মতো সকলে পালাচ্ছে
আর আমি একা দাঁড়ানো অনুভবে ।

কোনো বেগুনি চাদর মাখা অনেকটা আদর
পায়ের শব্দ তোলা জংলী পাতা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে।
শুনতে পাচ্ছি আমি কানের কাছে আগুন
আরো কাছে।
ফিস্ ফিস্ আলোর দেশে অন্ধকার শহরে আর একটুপর
আমি ,তুই একা।
.

সমস্ত চেনা

সমস্ত চেনা
................. ঋষি
=========================================
সমস্ত চেনা গুলো আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখা
হৃদয় আমার প্রকাশ হলো অনন্ত আকাশে।
আকাশ ছুঁতে চেয়ে চাতক হয়ে থাকা
তারপর রবিঠাকুরকে স্পর্শে কাদম্বরী একা।
কেন বারংবার। ..... ?

এই সব কবিতায় ছুঁয়ে লেখা যায়
সত্যি কি আয়নায় তোকে ছোঁয়া যায় আদুরে  মেঘে।
নির্ভীক ক্লিভেজের মেঘ ভেঙে
বৃষ্টি যখন তোর দোয়ার ছুঁয়ে আরো গভীর হয়।
যখন আরো হাতছানি
তোর চোখে কাজলে লুকিয়ে ফেরে অনেককিছু না বলার মতো।
তখন আমি বুঝি
তুই ছুঁয়ে নামবি বলে আকাশের মেঘ।
আমাকে ভেজাবি বলে
এক হাঁটু জল শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে একা।

সমস্ত চেনা গুলো দরজা বন্ধ করে একা রাখা
সেই ভালো সেই ভালো, আমারে না হয় না জানো।
আকাশ ছুঁতে চেয়ে শুধু বৃষ্টিতে ভেজা
তারপর রবিঠাকুরের স্পর্শে কাদম্বরী আকাশে থাকা।
কেন বারংবার। ...... ?

মানুষের দিকদর্শন

মানুষের দিকদর্শন
.............. ঋষি
=================================================
সর্বত্র একটা আলোর মতো কিছু স্পর্শ করে
কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে একলা।
রাস্তার মোড়ের পাশে সেই মিষ্টির দোকান ,মিষ্টির হাঁড়ি ,হারু মইরা
মনে পরে সেই কালো ,মোটা লোকটাকে।
সে মারা গেছে
কিন্তু চলন্তিকা তুই তো আছিস ,এই তো আমার কাছে।

মিষ্টির হাঁড়ি আছে
শহর জুড়ে রসগোল্লার ভিড় গড়িয়ে ,চুঁয়ে নামে।
আমিও আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি ,,সেই ভূতের হাঁড়ির মতো
আয়রে আয়রে আয়,মন্ডা মিঠাই হাঁড়ি হাঁড়ি।
শুধু গুপিগাইন ছেলে বেলায় রয়ে গেলো
কখন যেন যৌবন পেড়োনো আমি সীমান্তে দাঁড়িয়ে শহরের ভিড়।
বেড়ে যাচ্ছে
ক্রমশ আরো রসগোল্লার মতো প্রিয় আদর।
হারিয়ে যাচ্ছে
সব জানিস তো তুই চলন্তিকা।

সর্বত্র একটা মশারির জাল হতেও পারে মাকড়সার
কারণ ,যুক্তি সাজিয়ে লাস্ট সাইনটিফিক এটমোসফিয়ারে ক্রিটিকাল
আমি আর তুই চলন্তিকা।
সম্পর্ক শুধু জড়িয়ে যাওয়ার নাম চ্যাট চ্যাটে
সেখানে আমি তুই চলন্তিকা অস্থির কবিতার মতো ক্রমশ ভাসমান
কোনো শান্তির  দিকদর্শন মানুষের অন্তরে।
 

ট্রাফিক জ্যাম

ট্রাফিক জ্যাম
............ ঋষি
===============================================
সকাল থেকে সূর্য দেখা
সেটা নাকি সময়ের লুকোনো অবয়বে ছায়া।
আমার সাথে অনেক ছায়া আছে
তুই চলন্তিকা
বুঝি নি ,,কি বুঝলাম না ছায়া না মায়া।

রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হবে যে
অনেকটা চলার পর আমি ঠিক বাড়ি ফিরে যাবো।
পিছনে তাকিয়ে দেখবো
আকাশের চাঁদ।
ধুস আজ আকাশে মেঘ ,মনখারাপ শহরে বৃষ্টি
নিঝুম অলংকারের মতো সন্ধ্যের শাখা প্রশাখা ক্রমশ আরো গভীর।
একটা ট্রেন ছুটছে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে
গন্তব্যে দাঁড়িয়ে অনেকটা আলোকময় স্বপ্ন।
চুপ আমি ঠিক বাড়ি ফিরে যাবো
শুধু অপেক্ষা শহরের ট্রাফিক জ্যাম।

সকাল থেকে রাস্তা দেখা
তারপর রাস্তাগুলো জালের মতো ছড়িয়ে পরে শহরের জঞ্জালে।
হাঁটু জল দাঁড়াবে তারপর বৃষ্টি
তুই চলন্তিকা
বুঝি না ,,এই শহরের দিন আর রাত আলাদা করে। 

Saturday, August 20, 2016

কমপ্লিট মেকওভার

কমপ্লিট মেকওভার
................ ঋষি
================================================
কমপ্লিট মেকওভার
কপালে ভ্রু পরিমান মতো কাটা,একটা কালো টিপ্  ,ঠোঁটে লিপস্টিক।
আর মনের কোনে  একটা বাঘ বসে
হ্যা মশাই আজ আমার প্রথম ডেটিং।
এর আগেও ডেটিং হয়েছে রবিবাবুর সঙ্গে তবে সেটা স্বপ্নে
এটা ঘোর বাস্তব ,একবার চিমটি কেটে দেখি নিজেকে।

যথারীতি সদ্য কলেজ পাস মধ্যবত্তি কন্যা আমি
প্রেমে পড়ি নি এর  আগে তবে উপন্যাসে প্রেম বেশ জমিয়ে পড়েছি।
যথারীতি কোনো পরপুরুষকে মুখ তুলে দেখি কোনোদিন
কিন্তু আজ চললাম নিজের মনপুরুষের খোঁজে।
মনের কোন অবধারিত কোনো বাসনা ,আর এই কমপ্লিট মেকওভার
ঠিক যেন আমার ভিতরে ,বাহিরে শিহরণ।
আয়নায় নিজেকে চিনতে পারি নি
কিন্তু আমার অপরদিকে যে পুরুষ বসে সে কেমন আমার প্রতি উদাসীন।
আমি বললাম কি রে কেমন লাগছে ?
বললো সবটাই তো জানা ,তোকে নরম্যালি বেশ ভালো লাগে ,
তবে এটাও ভালো
কিন্তু তোর মতো নয়।

কমপ্লিট মেকওভার
এমন করে অপমান গর্জে উঠলো মন।
নিজেকে শান্ত করলাম যাক পৃথিবীর সবুজ রং সকলেরই পছন্দ
আমার পছন্দ হলো ছেলেটাকে।
হ্যা মশাই আজ আমার প্রথম ডেটিং
এর আগে কখনো কমপ্লিট মেকওভার নিজেকে আমি দেখি নি। 

অমরত্ব

অমরত্ব
............... ঋষি
===================================================
ভালো রাখতে পারিস নি
প্রতিটা কবিতার পাতা জুড়ে চলন্তিকা এক আকুতি।
হাজারো কবির বুকে এক যন্ত্রনা
সে কখনো নীরা ,কখনো আকাশলীনা ,কখনো বনলতা,কখনো বা চলন্তিকা।
কেউ কখনো ভালো থাকে নি
শুধু কবির বুকে নিজস্ব ভঙ্গিমায় হেঁটে চলে গেছে সময়।

সকলেই সময় লিখে গেছে
সকলেই মানুষ লিখে গেছে আর লিখছে।
কিন্তু ঈশ্বর ?
না  তাকে কেউ কখনো ছুঁতে পারে নি ,না লিখতে।
মনে মনে শুধু ভেবেছে হে সময় তুমি ঈশ্বররূপে নিজেকে সংযত করো
হে সময় তুমি আদর্শ হয়ে কৃপা বৃষ্টি করো।
কিংবা হে সময় তুমি প্রেম হয়ে স্পর্শের কবিতা লেখো
সকলেই অমর হতে চেয়েছে নিজের নিজের সৃষ্টিতে।
কেউ কেউ অমর হয়ে গেছে
কিন্তু অমরত্ব সত্যি কি শুধু ঈশ্বরেরি প্রাপ্য।

ভালো রাখতে পারিস  নি
তোর শেষ কবিতার লাইনে চলন্তিকা একটা যন্ত্রনা ধরা।
এটা মানি আমি প্রতিটা সৃষ্টির একটা যন্ত্রনা থাকে মাতৃত্বের
কিন্তু তারপর যে সৃষ্টি হাসে ,ভালোবেসে বাঁচে।
আমিও তো বেঁচে চলন্তিকা তোকে জুড়ে
তোর কবিতায় আর তোর বেঁচে থাকায়।

বাঁচতে চাই

বাঁচতে চাই
................ ঋষি
==================================================
২ মিনিট নীরবতা কাম্য
আমার মৃত্যুর পর জমে থাকা আকাশে বিকেলের সূর্য।
আমার কবিতার চলন্তিকা হয়ে যাক
শুধু  ২ মিনিটে  একটা জীবন শেষ
আর শান্তি জমুক সময়ের  মনে।

না মশাই হয় না
শেষ কদিন তোর আমাকের দেওয়া প্রতিটা ১৬ মিনিট
বড্ড বেশি পাওয়া মনে হয়।
যেখানে দশমিনিট সমস্ত গল্পের উপসংহার লেখা যায়
সেখানে ১৬ মিনিট চলন্তিকা।
তোর দিকে তাকিয়ে নিশ্চিন্তে আমি আকাশ লিখতে পারি
লিখে দিতে পারি প্রেমের গদ্য।
কিন্তু ১৭ তম মিনিট থেকে  আমার কাছে নাগাসাকির মৃত্যুর মতো
বয়ে চলা প্রতিদিন মরা।

২ মিনিট নীরবতা কাম্য
আমার মৃত্যুর পর নতুন সকাল আসুক শৈশবের টলমল পায়ে।
আবার আমার চলন্তিকা হাসুক আমার বুকে
যেমন প্রতিদিন আমি রোজরাত্রে শুনতে পাই আমার কান্নায়
আসলে ওই ২ মিনিট পর আমি যে মরে বাঁচতে চাই। 

Thursday, August 18, 2016

মানুষের দুর্বোধ্যতা

মানুষের দুর্বোধ্যতা
...... ঋষি
==================================================

সাবধানে থাকিস
দিন ভোর ,সময় রাত ,একটা সম্পূর্ণ দেশ
টুকরো করে শহর ,গ্রাম ,আরো হাজারো টুকরো অলিগলি
সম্পূর্ণতার মোড়কে মানুষ সাবধান
ভাঙতে ভাঙতে ,গড়তে গড়তে মাকড়সার  জাল
আর আমরা সকলে খাদ্য

ভবা পাগলার ঘুম ভাঙলো
অবাক চোখে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার।
মা ,মা
কে মা ?
আশপাশ দিয়ে সকলে হেঁটে চলে যাচ্ছে এই সময়
ছেঁড়া ময়লা জামা ,এক গাল দাঁড়ি ,প্রায় অর্ধনগ্ন মানুষটা পৃথিবীর কাছে অপরিচিত।
আর পরিচিত যারা তারা কি মানুষ ?
ভবা পাগলা মাকে খুঁজছে ঈশ্বরের মন্দিরে ,মসজিদের দরজায় ,গির্জার মোমে
না মা নেই ,মা হারিয়ে গেছে মানুষের দুর্বোধ্যতার।

সাবধানে থাকিস
ভবা পাগলা চিৎকার করছে মানুষের উদ্দেশ্যে।
সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে হাজারো অলিগলি ,গ্রাম ,শহ
আর একটা সম্পূর্ণ দেশ।
ক্রমশ মাকড়সার জাল ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের অন্তরে
মানুষ আজ মানুষের খাদ্য।  

শুধু তোমাকে

শুধু তোমাকে
................. ঋষি
====================================================
তোমাকে আমি দেখি নি কোনোদিন তেমন করে
রোজ নিয়ম করে বাস স্ট্যান্ডে  পাশে এসে দাঁড়াতে।
গায়ে সিগারেটের উগ্র গন্ধ ,ছেঁড়া প্যান্ট,পিন আটকানো চটি
মনে হতো আহত প্রেমিক তুমি।
তোমার সামনে জামার উপরের বোতাম গুলো যেন কোনো গভীর অরণ্য
আমি তাকাতাম না তোমার দিকে ,হয়তো ভয় পেতাম।

তোমাকে পুরুষ হিসাবে ভাবতে আমার ঘৃণা করতো
পুরুষ কখনো এমন হয় ?
আমার মনে হতো এই বিশ্ব সংসারে তুমি এক আজব পাগল
যার কোনো গন্তব্য নেই ,নেই কোনো চাওয়া।
আর হোপলেস লোক আমার পছন্দ নয়
তাই তোমাকে দেখিনি আমি কোনোদিন।

তারপর এতগুলো বছর তুমি হঠাৎ তুমি ভ্যানিস সেই বাস্টস্ট্যান্ড থেকে
হয়তো কোনো প্রয়োজীন ছিল না তোমাকে মনে করার।
আজ ফিরে এলে তুমি হঠাৎ করে আমার পাশে
হাতে দামি সিগারেট ,স্যুটেট বুটেট পারফ্যাক্ট ম্যান।
কেন জানি আমার তোমার দিকে তাকাতে ইচ্ছে হলো
খুঁজতে ইচ্ছে হলো সেই আহত প্রেমিককে।
তোমার খোলা বুকের আড়ালে লোকানো ঘামের গন্ধটা ছুঁতে চাইলাম
না সেখানে তুমি নেই।
মুখে একটা সুখী সুখী হাসি
অদ্ভুত এক  পরিতৃপ্তি তোমার চশমার আড়ালে চোখে।
বিরক্তিতে চোখ ফিরিয়ে নিলাম
আমার ঘুম ভেঙে গেলো। 

খারাপ কথা

খারাপ কথা
.................. ঋষি
==============================================
আচ্ছা তবে খারাপ বলি আয়
বুকের উপর গন্ধমাদন আর মিস্টার হনুমান দে ছুটে।
বাঁচাতে হবে ?
আয় বাঁচবি ? কিন্তু কিভাবে সেটা তো বল।
দরজা খোল ভিতরে ঢুকবো
ধুপ ধুনো আর পুজোর কিছু মন্ত্র ,,,,ধুস নাস্তিক আমি।

হ্যা রে শোন পুরো অসামাজিক আমি
আমার কোনো জন্ম নেই ,নেই কোনো পিতার ভিটে।
আসলে জানিস তো আমার কোনো মাটি নেই
নেই কোনো বেঁচে থাকা এই চরাচরে সবটাই জীবিত আর যাপন।
কি বললি ? এগুলো খারাপ কি ?
আয়  তবে দুচারখান খিস্তি দি আমি ,রাম খিস্তি।
আরে জানিস না রাম গেলেন বনে ,ঝাড়া চৌদ্দো বছর
কিন্তু আমার না আছে বছর ,না আছে মাস।
সবটাই পরিহাস
আর এই বাঁচার অভিমান ,তুইও অভিমানী বড়।

আচ্ছা তবে খারাপ বলি আয়
তোর বুকের সাইজ কত ?কত তোর শরীরের  মাপ ?
হাসছিস যে ,আরে দুচারখান রাম  খিস্তি
কি বললি ? শরীরে নাম মহাশয় ,যাহা সহাবে। .....
ঠিক তাই আমি এক অসমাপিকা ক্রিয়া
যার সমাপন নিজের অন্তরে। 

বৃষ্টি এলো না

বৃষ্টি এলো না
................  ঋষি
=============================================

অনেকগুলো সম্ভাবনা ছিল বৃষ্টি আসার
তবু বৃষ্টি এলো না চলন্তিকা।
ইচ্ছাগুলো এলোমেলো ঝোড়ো হাওয়া খোলা জীবনের মাঠে
শুকনো পাতার মতো কিছু ইচ্ছা উড়ে চললো।
ছুঁয়ে এলো  তোকে
কিন্তু সত্যি ভালোবেসে হৃদয় ছোঁয়া হলো না।

তোর কালো টিপের আড়ালে আকাশের চাঁদ
তোর বুকের ধড়ফড়ে কোনো ইচ্ছে পাখি।
আমি শুনছি তো তোর ডানার  শব্দ ,তোর খোলা আকাশ
কিন্তু হাঁটতে  পারছি  কই ?
পরে যাচ্ছি , আবার উঠছি ,আবারও পড়ছি
হাত বাড়িয়ে তোকে ছোঁয়া হলো না।
এইভাবে জমা মেঘে দুর্বলতা জমতে জমতে আকাশের চাঁদ আড়ালে
কথা ছিল ,কথা আছে ,কথা থাকবে
কিন্তু চলন্তিকা তোকে বলা হলো না।

অনেকগুলো সম্ভাবনা ছিল বৃষ্টি নামার
তবু বৃষ্টি অন্য কোথাও তুমুল বর্ষণে ভিজিয়ে গেলো মাটি।
ইচ্ছে নদী  ভাসতে ভাসতে সোঁদা গন্ধ
ভিজে মাটি, গুমরে ওঠা কান্না।
তবু  কেন জানি আজকাল বৃষ্টি আসে প্রকৃতির প্রাঙ্গনে
আমি ভিজি ,কিন্তু তবু ভালোবাসা ভেজানো হলো না। 

Wednesday, August 17, 2016

অন্ধকার খেলা

অন্ধকার খেলা
............... ঋষি
===================================================
চলো একবার অন্ধকার অন্ধকার খেলবো
কি সমাজ চোখ বন্ধ ?
অরে পায়জামার ফিতেতে হাত দিলাম সবে ,এখনো অনেক বাকি
কি ভয় করছে ? বলছি তো লুঠ করবো।
ধুস জীবন দিয়ে কপাল ঠুকে দেওয়ালে পিঠ
তুমিও তো সমাজ  জীবিত থেকে কইমাছের মতো কড়াইতে নিলজ্জ।

নুন ,লঙ্কা ,হলুদ
স্তন ,যোনি ,জন্মমূলক বায়োলোজিকার সার্ভের  পাতা।
অরে শহরে শুধু মেয়ে কেন ,ছেলেরাও দাঁড়িয়ে লালচে সুতো বেঁধে
কি খুলবে ?
খুলছে তো সকাল সন্ধ্যে শাড়ি ,অন্তর্বাস ,নিয়মের সঙ্গম
মাংস আর মাংস ?
হৃদয় খুলছে কি কেউ ? ভীষণ ভিখিরীর মতো দেখতে
মানুষ হৃদয় হলে আরো বেশি ভিখিরী হয়ে যায়।

চলো একবার অন্ধকার অন্ধকার খেলবো
কি সমাজ দেওয়ালে পিঠ দিয়ে কি করছো ? ব্লুফিল ? নগ্নতা ?
আজকের আবহদপ্তরের খবর
শহরে নাকি জল বাড়ছে ,শুধু শরীর ভেজাবার।
কিন্তু বারুদ কই
কেউ কি পুড়তে চাইছে ,,,উফস চোখ বন্ধ। 

কমপ্লিট ওম্যান

কমপ্লিট ওম্যান
............. ঋষি
===============================================
শক্তি জমছে ভিতর
অন্ধকার আর মনের ভিতর অজস্র খুচরো শুক্রাণু।
তোমার দিকে তাকাবো না
শুধু স্বপ্নের ভিতর ঢেউ তোলা ভূগোলের ভারতবর্ষ এঁকে যায়।
আর নিজের ভিতর
অনেক রাত জাগা তুমি নাকি কমপ্লিট ওম্যান।

কাকে যেন বলেছিলাম
বন্ধু জাগতে রোহো ,সামনে শুন্যতায় অনেকগুলো শরীর রাখা আছে।
মৃত শব,মৃত আলনায় সাজানো তোমার শরীরের গন্ধ
তুমিও শুয়ে সেখানে নিজের সাথে।
মৌমাছির হুলে বেড়ে যায় বুকের যন্ত্রনা
একটা ১৯/১১ নাকি মানুষ বদলাতে পারে।কিন্তু অমানুষ।
শরীর জুড়ে অমানুষের স্পন্দন
সামনে শরতে চলন্তিকা তুমি নাকি  গা জ্বালা করা মহিষ মর্দিনী।
জেরবার মানছি না ,মানব না
না আমাকে অমানুষ বোলো না চলন্তিকা।

শক্তি জমছে ভিতরে
তোমার শরীরে প্রতি অঙ্গে স্পর্শগুলো চলন্তিকা একলা কবিতা।
আমি হাঁটছি ঠিক জীবন ভর তোমার পিছনে
আর আমার পিছনে  অনেকটা ফেলে আসা যন্ত্রনা।
স্বাধীনতা দিবস সদ্য পেরিয়ে তোমার গেরুয়া  রঙের পোশাকে
ভারতবর্ষ তুমি নাকি নারী ,কিন্তু কতটা কমপ্লিট ?

নিয়মিত আমি

নিয়মিত আমি
.............. ঋষি
==========================================
যে কাজটা আমি নিয়মিত করতে পারি
সেটা তোমার সাথে বাঁচা।
প্যাস্টেলে ,আর্ট পেপারে  খুব সহজে এঁকে দিতে পারি
তোমার মুখ ,আসলে হৃদয়।
কিংবা কোনো কবিতায় তোমাকে মনে করতে পারি চলন্তিকা
মুহূর্তের আলিঙ্গনে একটা গোটা শহর।

ঠিক ধরেছো
আমি শহর লিখতে পারি যদি তুমি চাও।
তোমার হাত ধরে নন্দন কিংবা বইমেলার মাঠে একলা হাঁটতে পারি
রাত্রি দিন।
পৌষের মেলায় খুব সহজে গেয়ে উঠতে পারি বাউলের গান
কিংবা তোমার ভাবনায়  আমি ২৪  X  ৭ একলা থাকতে পারি।
যদি সময় ফুরিয়ে যায়
যদি ঈশ্বর অবাক চোখে আমার দিকে তাকায়।
আমি বলবো তাকে ,
বাঁচতে চাই শুধু মাত্র তুমি আছো বলে।
ঠিক ধরেছো শুধু তোমার জন্য আমার কবিতার পাতায় রক্ত বৃষ্টি হয়
আমি ভিজি চলন্তিকা এই শহরে একলা শুধু তোমার হাত ধরে ।

যে কাজটা আমি নিয়মিত করতে পারি
সেটা তোমার জন্য বাঁচা।
কোনো পাহাড়ের চূড়ায় অবিরাম তোমার নাম ধরে চিৎকার করতে পারি
কিংবা লাফ দিতে যদি তুমি চাও।
সকাল ,সন্ধ্যে তোমাকে ভেবে আমি কবিতা লিখতে পারি
যদি চলন্তিকা আমার সাথে তুমি একলা হও। 

অন্য ঠিকানায়

অন্য ঠিকানায়
................... ঋষি
=============================================
বড় সাধ হয় তোমার পাখি হতে
আকাশ থেকে এই সময় দেখার একমাত্র উপায় চলন্তিকা।
তুমি হিসেবে বোঝো না
বোঝো না সময়ের দুর্দিনে ভেসে যায় প্রিয় শহর।
শুধু তোমার বাঁচতে ইচ্ছে হয়
পাখি হয়ে ,ওই বিশাল আকাশে ,একলা জীবিত ইচ্ছায়।

আচ্ছা চলন্তিকা তুমি যদি পাখি হও
আমি কে তবে ?
আমাকে তোমার  আকাশ করতে পারি ,শুধু তোমার।
আমার নীলের সাথে মিলেমিশে ক্যামোফ্লেজে তুমি একা হতে পারো
আমার মতো।
তোমার নীল পালকে ভর করে তুমি আকাশের সাথে
ছবি আঁকতে পারো কোনো স্বপ্নের।
যেখানে সব চুক্তি শেষে মিলবে না কোনো পথ
তুমি আকাশে মিশে ,আকাশে হেঁটে ,ঠিক আমার কাছে।
এই তো
তোমাকে ছুঁয়ে দিলাম আমি।

বড় সাধ তোমার চলন্তিকা পাখি হয়ে বাঁচার
ছোট্ট নিজের কুঁড়ে ,ছোট স্বপ্ন চোখে এই সময় হাসার।
আসতে পারো তুমি আমার কাছে
ভাসতে পারো তুমি ডানায় ভর করে আকাশের কবিতায়।
কিন্তু না তোমাকে যেতে দেবো অন্যকোথাও
আকাশের বুক ছেড়ে অন্য ঠিকানায়। 

এই সমাজ

এই সমাজ
................ ঋষি
===================================================
আমি সেই মেয়েটার কথা বলছি
যাকে সমাজ ধর্ষণ করবে বলে চেপে ধরে বিছানার সাথে।
যাকে সমাজ নিয়মিত ধর্ষণ করবে বলে চেপে ধরে সামাজিক বন্ধনে
আমি সেই হিসেবে থেকে বলছি।
অগুনতি বার ছিন্নভিন্ন সেই শরীর আজও ধর্ষিত হয়
আজও সংসারী হয় ,সন্তান জন্ম দিয়ে হয়ে যায় সামাজিক নারী।

আমি সেই কামুক পুরুষ
যার ধারালো তলোয়ার নিয়মিত ভোগ করেছে কোনো নারীর শরীর।
যার কামার্ত বীর্যে ভিজে গেছে উরুর জন্মসন্ধি বারংবার
ঠিক তো  সামাজিক আমি , ধর্ষণ করেছি বারংবার।
এই সভ্যতার অবুঝ কল্পনায় সেই মেয়েটা স্বপ্ন দেখে বারংবার
প্রিয় পুরুষ ,প্রিয় সংসার ,প্রিয় সময় আগামী।
সেই আগামী কখনো আসে নি
শুধু বুকের চোরা গলিতে অনবরত বয়ে চলেছে রক্তাক্ত যাপন।
আর জীবনে অলিতে গলিতে হাস্যকর  সামাজিকতা
হ্যা আমি সেই কামুক সমাজ।
আজও বদলানো সময়ের আঙিনায় যে নারীকে সামাজিক সাজিয়ে  
অনবরত করে চলেছে নিয়মিত ধর্ষণ।

আমি সেই মেয়ের কথা বলছি
যে মুখ চিপে প্রতিবার ধর্ষণের সময় আঁকড়ে ধরে বিছানার চাদর।
যে প্রতিদিন নিজের হাতে সংসার সাজিয়ে হাসতে থাকে
কিন্তু পায় কি খুঁজে নিজের জমি ? নিজের দেশ ?
নিজের পরিচয় ?
হ্যা পরিচয় ?অট্টহাস্যে ফেটে পরে সেই মেয়ে ,হায় এই সমাজ। 

সারারাত

সারারাত
............ ঋষি
====================================================
সারা রাত ধরে নিজের কাছ থেকে পালাচ্ছি আমি
বাইরে সুনসান শহরের কবিতায়
কলম নামছে বৃষ্টি হয়ে।
কোথাই যাচ্ছি ,আর কতটা হাঁটা ,আর কতদিন এই ভাবে
সামনে মোহনা দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু আমি উৎসে ফিরে যেতে  চাই,
চিরকালীন প্রবণতায়।

শহরে বৃষ্টি চট করে মুছে যে যেতে চাই না
আমি জানি কাল সকালে দেখা  যাবে প্রতি রাস্তার মোড়ে জমা জল।
সেই জলের কোনো মোহনা নেই
আছে শুধু অপেক্ষা।
শুকিয়ে যাওয়া কোনো রৌদ্র মুখর দিন
কিংবা ফুরিয়ে।

সারারাত ধরে  বুকের কাছে আঁকড়ে আছি অনেকটা বালিশের নরম
অনেকটা আদ্রতা ছড়ানো উড়তে থাকা মেঘলা হাওয়ায়।
ঘরের জানলায় পর্দাটা পাল তোলা কোনো নৌকার মতো
অবিরাম উড়ছে ,সারা ঘর ময় বৃষ্টি ছুঁয়ে দিতে চাইছে নরম।
ঠিক যেমন মোহনায় লেগে থাকে একটা স্পর্শ
কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করছি
মানুষের কোনটা প্রয়োজন উৎস না মোহনা। 

Monday, August 15, 2016

নীল রং

নীল রং
............. ঋষি
=================================================
অনেকটা সন্ধি করে চলন্তিকা
আমার বিকেলের এই কবিতায় দারুন বাহারি তুই।
সন্ধ্যাঝুঁড়ির মতো কোনো ব্যস্ত দরবারে
পঙ্কজ উদাসের গলায় সেই গজল কিসি নজরকো তেরা ইন্তেজার।
লং প্লেয়ারে বাজতে থাকা হৃদয়ের সুর
ঈশ্বর এসে দরজা খোলে , দরজায় তোর মুখ।

আমাকে ছেড়ে যাওয়ার থেকে
আমাকে মেরে ফেলা ভালো এমনি বলেছিল সময় আর দরকারি।
শহরের শেষ ট্রামে সময় চুরি করে শহরের সাথে
আমি রাস্তা দেখি।
ভাবতে থাকি চলন্তিকা হঠাৎ যদি এই ট্রাম বুকে উঠে যায়
তারপর আমিও কি জীবনানন্দ।
সেই আহত শালিখের দেশে শঙ্খচিলের বেশে
ফেলে আসা খৈ।
আর চারিপাশে হরি বল আর হরি বল
আর তারপর   .......

অনেক দিনের পরে হঠাৎ মনের জানলায়
তুই দাঁড়িয়ে সেই প্রিয় আকাশ রঙের শাড়িতে।
আমার দিকে তাকিয়ে বলিস মনখারাপ
আমি হাসি হেঁটে যায় তোর দিকে ,হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাই।
দেখি আকাশের নিচে আমি একলা দাঁড়িয়ে
আমার মুঠোয় আকাশের নীল রং। 

ব্যস্ত শহর

ব্যস্ত শহর
............. ঋষি
========================================================
তোর শহর ব্যস্ত এখন
আমার শহর তোর মতোই গাড়ি ,ঘোড়া ,রিকশার হর্ন।
তোর শহরে সদ্য এখুনি জ্বলে উঠলো রাস্তার আলো
আমার শহরে আমি বুঝি না কখন আর কখন অন্ধকার।
ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত নাগরিক হয়ে
আমি খুঁজি তোকে আর তোর মাঝে ব্যস্ততা।

ফোন টা কেটে গেলো
আশেপাশে গজিয়ে উঠলো ঘাস আমি যেন কোনো প্রাচীন বৃক্ষ।
বুকের পাটাতনে অনবরত কাঠঠোকরা আবদার
ঠুক ঠুক ,ঠুক ঠুক ,খোদাই চলছে।
নিজের ভিতর নিজেকে খোঁড়াতে কখনও ব্যস্ততা নয় জানিস
সেটাকে বলে অভিনয়।
আর আমি অভিনিত শহরের প্রকোষ্ঠে বসে
প্রাচীন বৃক্ষ।
শহরের ধুলোয় ,শহরের অন্ধকারে ,জঞ্জালের স্তূপে দাঁড়িয়ে ভাবছি
তুই আর নেই ফোনের ওপাশে।

তোর শহর এখন ব্যস্ত
ব্যস্ত শহরের নাগরিক আমরা নিজের নিজের চেষ্টায়।
কিন্তু  তোর শহরে যখন রাত্রি
আমার শহরও ঘুটঘুটে অন্ধকার কোনো যন্ত্রণার মতো।
আরেকটা দিন ফুরোচ্ছে বুঝলি
সমস্ত বিশ্ব চরাচরে আর কিছুক্ষন তারপর ব্যস্ততা খতম।   

নেহাত ভারতীয়

নেহাত ভারতীয় 
................ ঋষি 
===========================================
পতাকায় পতাকায় ভেসে গেলো একটা দিন 
চলন্তিকা এই শহরে স্বাধীনতা পণ্য। 
আর তারসাথে পতাকার রং গেরুয়া ,সাদা ,সবুজ
সবটাই সাজানো মনে হয়।
আমি মিথ্যে আশ্রয় নিতে পারি নি
তাইতো আমার মতো কেউ কেউ আজ গৃহবন্দী নিজের সাথে।
.
সমস্ত মিডিয়ায় ,সমস্ত দেশের আবরণে
আজ মনে হচ্ছে সবটাই নষ্টামী।
অজ সন্ধ্যে নামছে শহরের প্রতিটা অলিতে গলিতে পতাকা সাক্ষী রেখে
মাইকের আওয়াজে কান পাতা দায়।
শুনতে পারছো স্বর্ণ কণ্ঠ এ মেরে ব্যাতন কে লোগো ,যারা ইয়াদ করো কুরবানী
চলন্তিকা আজ কুরবানী ইয়াদ করার সময় কই ?
নেতাজী,ক্ষুদিরাম ,ভগৎ সিংহ কে সাক্ষী রেখে
আজ দেশে একটা ছুটির দিন, আর ভাগ্যক্রমে সেটা সোমবার ।
সরকারি কর্মচারীরা লম্বা উইক এন্ডে প্রমোদে ব্যস্ত
আর সাধারণ মানুষ যারা সংসারী তার সংসার করতে।
দেশের পতাকা হাতে নিয়ে একদল আলোচনায় ব্যস্ত
রাতের পার্টিতে কি মেনু হবে আর কি মদ।
.
পতাকায় পতাকায় ভেসে যাওয়া একটা দিন
যার রং আজও রক্তের মতো লাল মানুষ পরিচয়ে।
এটা কোনো ছুটির দিন হতে পারে না ,এটা কোনো আনন্দের দিন নয়
এই দিন স্মরণ করার শহীদকে ,এই দিন নেহাত ভারতীয়।
ভারতের গত সত্তর বছরের ইতিহাস
আগামীর সন্তানকে বোঝানোর, যে এটা ভারতবর্ষ ,তোমার দেশ।

গাছেদের কথা

গাছেদের কথা
.................. ঋষি
=====================================================
ভুল করে একদিন লিখেছিলাম গাছেদের কথা
আমি চারা গাছ না ,সদ্য যুবক ,এম এ পাশ।
আর একটা তকমা আছে বেকার
আরো আছে আজ দু বছর রিটায়ার্ড বাবার ঘাড় ভেঙে খাওয়া।
সংসারী আর পাঁচটা মায়ের আঁচলে বাঁচা
আর এক জন গার্লফ্রেন্ড ,না নাম বলবো না।

আসল তো বলি নি
আমার অনেক স্বপ্ন আছে একটা আস্ত গাছের মতো আকাশ ফুঁড়ে দাঁড়ানোর।
আমার অনেক স্বপ্ন আছে বাবা মায়ের মতো সংসার করার
তারপর আবার  গাছ।
না বলতে লজ্জা করছে তবু বলি
আমার গার্লফ্রেন্ডটি সুন্দরী ,ছুঁয়ে দেখেছি ,হ্যা চুমু খেয়েছি।
তবে এর বেশি না
ও আমাকে ভালোবাসে বলে
আর আমার মনে হয় ওকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।
এর বাইরে পরশু একটা ইন্টাভিউ ছিল
গিয়ে দেখি আমার মতো আরো অনেকে রয়েছে এই জঙ্গলে।
সকলে তো আর আকাশ ছোঁয় না
কেউ কেউ পরগাছাও হয়।

ভুল করে একদিন লিখেছিলাম গাছেদের কথা
আজ আমি লিখলাম নিজের কথা।
জানি না কি হবে ,শুধু বাবাকে দেখি
একমনে লাল কালিতে দাগিয়ে যান খবরের কর্মখালির  পাতা।
চারা বড়ো হবে ,আকাশ ছোঁবে ,তারপর আরো স্বপ্ন জীবন
কিন্তু বাবা জানে না এখন শহরে গাছ ছাটাই চলছে। 

নিঃশব্দ

নিঃশব্দ
................ ঋষি
================================================
নিঃশব্দ নৈঋত কোন ঘেঁষে দাঁড়ায়
আর মানুষ অন্যপাশে নিঃশব্দ।
উঠোনে বাড়তে থাকা ফুলের গাছটা আজ বড়ো সবুজ
দুদিন আগেও জল দিতে হতো সবুজ রাখতে।
কিন্তু এখন রোজ বৃষ্টির আসে ভিজিয়ে যায় নিয়মকরে
তাইতো ফুলে ভোরে গেছে।

আবছায়া জালনার কাঁচে আজ লেগে আছে কোনো মৃত শহর
জঙ্গলে মানুষ বাস করে কিন্তু সময়।
প্রশ্ন করেছিলে কোনোদিন আমার হাত ছুঁয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি
দেওয়াল সরে দাঁড়ায়।
কিন্তু চারটে দেওয়াল মিলেমিশে যখন ঘর হয়ে যায়
কিন্তু চারটে দেওয়াল মিলেমিশে যখন বাঁচা হয়ে যায়।
তখন সময় টিটকিরি দেই
গায়ে মাখা রৌদ্রেও শরীর পুড়ে যায়।
নাকে লেগে  থাকে মৃত মানুষের গন্ধ
বোধহয় তখন সম্পূর্ণ কোনো সময় নিঃশব্দ।

নিঃশব্দ চুপিসারে পায়ের ছাপ ছেড়ে যায়
পরিষ্কার ধোঁয়া মোছা মেঝের উপর অদৃশ্য কোনো দিনে।
উঠোনের বাড়তে থাকা ফুলের গাছটা আজ সবুজ
শাখায় শাখায় লেগে আছে পরাগের ছোঁয়া স্পর্শ।
আচ্ছা স্পর্শ কি নিঃশব্দ হয় ?
যেমন নিঃশব্দ হেঁটে যাওয়া মানুষ সময়ের পরে।

Sunday, August 14, 2016

আর এই সীমান্ত


আর এই সীমান্ত
............... ঋষি
--------------------------------------------------------------------------
হাত বাড়িয়ে দূরে নদীর ওপারে দেখালো শিশু কন্যা
ওটা জায়গাটা  কি বাবা ?আমি যাবো ,
বাবা বললেন ওটা বাংলাদেশ মা  ,ওপারে যেতে নেই।
মেয়েটি প্রশ্ন করলো কেন ?
উত্তরে বাবা বললেন ভারতবর্ষ আমাদের দেশ
শিশু কন্যা বললো ,তবে বাংলাদেশ ?
.
উত্তর দেওয়ার কিছু ছিল না
আসলে লজ্জিত হওয়া ছাড়া উত্তর দেবার কিছু থাকে না।
আমরা ভারতবাসী ,এটা বোধহয় একটা আলাদা  ধর্ম নয় , একটা জাত
আর ওটা বাংলাদেশ ,ওটা কোনো দেশ নয় বোধহয় আলাদা পৃথিবী।
প্রশ্ন ছিল?
প্রশ্ন আছে ?
প্রশ্ন থাকবে ?
আগামী সকালগুলোতে আজকের ১৫ই আগস্ট বারংবার ফিরে আসবে।
কিন্তু একটা সম্পূর্ণতা ,একটা ভাতৃত্ব ,এক মনুষত্ব
দাম নেই না।
" ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ
ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি "।।
সব মিথ্যা ,সব মিথ্যা আজকের দিনে।

.

শহরতলিতে কোনো এক যুবক তার প্রেমিকার হাত ছুঁয়ে গেয়ে উঠলো
আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে,আছো তুমি ..........।
বাহ্ কি সুন্দর লাইনটা, প্রেমিকা বললো কার লেখা ?
আরে জানো না রুদ্রের লেখা ,বাংলাদেশি কবি।
প্রশ্ন একটা থেকেই যায় , দুটি দেশের জাতীয়সংগীত যদি রবিঠাকুরের হয়
তবে রুদ্র কেন ভারতের কবি নয় ?আর এই সীমান্ত ?

স্বাধীনতার মানে

স্বাধীনতার মানে
................ ঋষি
=====================================================
ঠিক কতদিন জানি না
উনি আমার চোয়াল ছুঁয়ে আদর করে বলেছিলাম, আর একদিন
আমরা স্বাধীন।
তখন আমি সদ্য বিবাহিত ,গ্রামে থাকি ,উনি তখন যৌবনে
সেদিন গ্রামের মোড়ে মোড়ে দেশের পতাকা ,রঙিন আলো ,বাদ্যি বাজছে
উনি খুশি হয়েছিলেন তাই আমিও সেদিন ।

পরের দিন পাড়া জুড়ে উৎসব
সকলে সকলকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে ,দেশের প্রধানমন্ত্রী শপথ নিলেন।
বললেন আমরা এগোচ্ছি ,এগোবো
আমাদের দেশ আমাদের গৌরব।
তারপর ধীরে ধীরে আমাদের গ্রামে আলো ,পাকা রাস্তা ,নলকূপে জল
নতুন সুযোগসুবিধা ,কলকারখানা ,ডাকঘর ,স্কুল ।
সব কেমন যেন বদলে যাচ্ছিল তারপর
বুঝেছিলাম আমরা এখন স্বাধীন, তাই।
কোনো এক পঞ্চায়েত ভোটে উনি দাঁড়ালেন সেইবার
সন্ধ্যেবেলা ফিরে এলেন আহত ,রক্তাক্ত হয়ে দুজনের কাঁধে ভর দিয়ে
আর উনি পায়ে দাঁড়াতে পারেন নি ,এখন মৃত্যুশয্যায়।

ঠিক কতদিন জানি না
উনি আমাকে শেষ আমার নাম ধরে ডেকেছেন
এখন শুধু হাত পা নেড়ে বেঁচে আছেন সেটা বোঝান।
আজ টিবিতে  খবরে শুনলাম কাল স্বাধীনতা ,আর একদিন
আমি গ্রামের গেঁয়ো অশিক্ষিত গৃহবধূ ,আমি স্বাধীনতা মানে কি বুঝি ?
কিন্তু এটা বুঝি সেদিন যদি স্বাধীন না হতো ,তবে হয়তো আজ উনি। ........


তেমন কিছু না

তেমন কিছু না
................ ঋষি
==============================================
তেমন কিছু ঘটে নি
গাঁয়ের সেই বটগাছের গায়ে ঘুঁটে দিয়ে চলে গেছে কতগুলি মেয়ে বৌ।
না তেমন কিছু না
সামনে গিয়ে দেখি এক বাংলার ছেলে দাঁড়িয়ে।
অবাক চোখে দেখছে
আর বাংলার মেয়ে বউরা লজ্জা পাচ্ছে।

তেমন কিছু ঘটে নি
গ্রামের ছোট নদী এঁকে বেঁকে অনেক দূরে বইছে কবিতার পাতায়।
নদীর ধারে নরম মাটির বুকে অজস্র পায়ের ছাপ
এক গ্রামবাংলা মিলিয়ে নিচ্ছে নিজের হৃদয়ের ফেলে আসা।
তেমন কিছু না
রাতের আকাশে তারাদের গায়ে জোনাকিরা জ্বলছে
আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না তারাদের পাড়া।
দূরে জেলে পাড়ায় ল্যান্ঠনে কোনো পেট জ্বলছে
না ঘরে ভাত নেই ,না নুন ,শুধু জ্বালা।
জ্বালা করছে আমার চোখ এই মুহূর্তে
হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ আর চির সরল সেই অন্ধকারে তারা।

তেমন কিছু ঘটে নি
নদীর উপর ভেসে উঠছে সময়ের শব।
নদীর প্রতি লিটার জলে বাড়তে থাকা কীটপতঙ্গ ক্রমশ ছড়াচ্ছে
শহর গজাচ্ছে আর আমার চান করতে ইচ্ছে করছে।
বাথরুমে আসে সাওয়ারটা চালিয়ে দিলাম ,মিষ্টি জল
কিন্তু না তেমন কিছু না।  

তার সাথে এক

তার সাথে এক
............... ঋষি
==========================================
ভালোবাসা
সে এক বাসাবাড়ি নিজের ভিতর।
বাবুয়ের মতো জমানো ইচ্ছাদের মতো ঝুড়ি গাছ
ক্রমশ প্রাচীন কোনো অন্ধকার থেকে উঠে আসা ইতিহাস।
কি বেশ নাম মমতাজ ,জুলিয়েট ,আরো আছে
তাদের স্মরণ করি আর ক্ষণিকে মিশে যায়।

এক
তার সাথে এবং পরে এক ছিল।
তাই না ভালোবাসা
ক্রমশ নিশুতি রাতে জেগে  ওঠে একসাথে থাকা।
মনের ইচ্ছা
ঝগড়া মাটি ,মেটো একটা আলাদা গন্ধ ,বৃষ্টি ভিজে যায়।
একা একা
নিজের সাথে বাস করে সহজিয়া কোনো কবিতার পাতা।
চলন্তিকা তুমি অসাধারণ কোনো সদ্য জাগা ভোর
মনের কাছে
ঝগড়া হয় ,কথাকাটাকাটি তবু একই রকম ,
এক
তার সাথে এবং পরে এক ছিল।

ভালোবাসা
সে যেন কোনো প্রত্যন্ত গাঁয়ে একা থাকা।
কেঁচোর মতো মাটিতে মিশে গিয়ে কখনো সিংহ ভর করে
জংলী খিদে জমে গিয়ে প্রার্থনা করে।
জাগো ,তুমি জাগো
একই শরীরে বাস করা তুমি ,আমি অপরূপা।

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত
.................... ঋষি
==================================================
আসলে আমি মধ্যবিত্ত
তাই আমি খুঁজে পেতে আঁকড়ে ধরি এক মধ্যবিত্ত জীবন।
বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হঠাৎ ভাবনাপ্রবণ হয়ে পড়ি
সেই আমি বাজারে গেলে দরদাম করে মাছ কিনি।
রোজ সকালে  বিরক্ত হয়ে অফিসে যাই
সেই আমি বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বাস মিস করি প্রতিদিন প্রায়।
.
আসলে মধ্যবিত্তের কোনো জাত নেই
এই ভীষণ চালাক  আর এই বোকা ,
আবার পথচলতি মধ্যবিত্ত কোথাও একা কিংবা কখনো দোকা।
মধ্যবিত্ত বেঁচে থাকে সাধারণ হয়ে
কিন্তু মনের কোন বাস করে কোনো অসাধারণ যাপন।
মধ্যবিত্ত সংসার করে জোকের  মতো
অথচ প্রতিদিন প্রায় স্বপ্ন দেখা সন্ন্যাসী হবার।
মধ্যবিত্ত  অবসরে সিনেমা দেখে
তারপর নিজেকে মনে করে নায়ক আর স্ত্রীকে প্রেমিকা ।
রাত্রে বেলা স্ত্রীর শরীরে ঠোঁট ঘষে
মধ্যবিত্ত হঠাৎ ভীষণ প্রেমিক  হয়ে ওঠে।

আসলে আমি মধ্যবিত্ত
তাই আমার ভাবনারা হাজারো বেঁচেও মধ্যবিত্ত থেকে যায়।
আকাশের দিকে চোখ রেখে স্বপ্ন দেখি জিতে ফেরার
অথচ ফিরে আসি  রোজ হেরে গিয়ে নিজের কাছে।
সেই আমি  কোনো কবিতা পাড়ায় যখন কবিতা ফেরি করি
মনের কোনে মিথ্যা কিছু  লিখে ফেলি রোজ। 

ঘুম ভাঙলো নারী

ঘুম ভাঙলো নারী
............. ঋষি
=======================================================
ঘুম ভাঙলো নারী
চির পরিচিত স্বভাবজাত লজ্জা তোমার ঘুম ভাঙলো কি ?
সকালের দরজায় চেনা আয়নাতে পরিচিত দাগ
অতি পরিচিত তুমি নিজের কাছে।
কিন্তু তুমি জানো না তোমাকে লজ্জা পেতে নেই ,না কাঁদতে
শুধু ব্যবহারের এক ঘর মানুষের তুমি সাক্ষী।

আকাশের  দিকে তাকিয়ে দেখো কোনো অনিদ্রার দেবী তোমাকে ছুঁয়ে
তোমার মননে যে কটা ফুল ফুটেছিল তার  আজ সবকটা তোমার বারন্দায় টবে।
সুন্দর পৃথিবী বানাতে গিয়ে ,তার স্বপ্ন দেখে
কোথাও কি তুমি নিজের পৃথিবী ক্রমশ ছোট করছো না।
অন্যের কথা ভাবতে ভাবতে ,সম্পর্কের তোয়াক্কা করতে করতে
তুমি কোথাও নিজেকে হারিয়ে ফেলছো না তো।
ভালো করে তাকিয়ে দেখো নারী
সমাজ তোমাকে বেআব্রু চাইছে না তো।
সময় তোমায় বিজ্ঞাপনে মাপছে  না তো
তোমার বুকের ,পাছার সৌন্দর্য্যতায়
 তোমাকে মানুষ ভাবছে না তো।
আর তোমার প্রিয় পুরুষ যে তোমাকে চিনেও
আজকাল চিনতে পারছে তো ?


ঘুম ভাঙলো নারী
চোখ খুলে আয়নায় মুখ দেখো সেই তুমি দাঁড়িয়ে।
তোমার মেয়েবেলা ,তোমার যৌবন ,তোমার জীবন কোথাও কি
মনে হচ্ছে না তো উৎসর্গকৃত।
কিন্তু তুমি যেন তুমি চিরকাল লাজুক ,চিরকাল অভিমানি
এই নারীত্বের দোহাইগুলো  তোমাকে ছোট করছে না তো। 

Saturday, August 13, 2016

কবিতার জন্ম

কবিতার জন্ম
..................... ঋষি
===============================================
কবির কি মৃত্যু আছে ?
না কোনো দিন কোনো মৃত্যু কবিতা স্পর্শ করে নি ।
হাজারো মৃত্যু নিয়ে চটকালেও
যেমন কবিতা হয় না।
তেমনি কবি চাইলেও মৃত্যু তাকে স্পর্শ করে না
এ হলো চিরন্তন কোনো আদর কবিতার  ।

স্পর্শের কথা যখন বললাম
তখন বলি কবিতার ভিতর প্রতিদিন কবিতার পাঠক বিলীন হয়।
কেউ আত্মহত্যা করে ,কেউ বেঁচে মরে ,কেউ বা মরে বেঁচে
কবিতার পাতা বহু  পুরোনো হলেও হারিয়ে যায় না।
কবিতার প্রেমে পরে হাজারো প্রেমিক বারংবার
কেউ দাঁড়িয়ে থাকে লম্বা লাইনে প্রিয় কবিকে দেখবে বলে ,
কেউ বা শুধু একবার ছোঁবে  বলে।
কবিতার সঙ্গে পিরিত ছিল বলে কবির বৌ পালায়
আবার কবিতা রাত্রে আসে কবিকে আদর করে যায়।


কবিতা কোনো মৃত্যু নেই ,শুধু জন্ম
আর প্রতিটা জন্মানো কবিতা কবির প্রসবযন্ত্রণা।
শিশু যেমন হাসে, কবিতা হাসে ,শিশু যেমন কাঁদে ,কবিতাও কাঁদে
কিন্তু কেউ জানে না পিছনে কবি কাঁদে হাসে।
তাই তো কবি হাজারো যন্ত্রনায় মৃত্যু লেখে বারংবার
যাকে ভালোবেসে সময় কবিতা বলে।  

নির্ভরশীল শহর

নির্ভরশীল শহর
,,,,,,,,,,,,,,,,,,, ঋষি
=================================================

চোখের ভিতর জ্বালা করছে ভীষণ
রাতজাগা ক্লান্তির পর দেওয়াল ঢাকা এই অস্তিত্ব।
নির্ভরশীল এই শহরের প্রতিটা রাস্তায় এখন সকালের কোলাহল
মানুষ মিছিক করে ব্যস্ততায় নিজস্ব বাঁচায়।
রাস্তার পাশে সেই নেড়ি কুকুরটা দাঁড়িয়ে অনবরত ডাকছে
তার সদ্য বড় হওয়া সন্তান কাল থেকে লাপাতা।

সকলে ফিরে এসেছিল কাল
সোনাই আর ফেরে নি নিজের বাড়িতে।
এটা কোনো খবর না যে খবরের পাতা  ঢালাও  করে বলবে
কিংবা কোনো রসদ না যা মানুষ মনে রাখবে।
কিন্তু  সোনাইয়ের মা আজ ও  দাঁড়িয়ে থাকে আশার জানলা ধরে
তার দুচোখ জ্বালা করে ,জ্বালা করে অন্তর।
বাপ মরা একমাত্র  ছেলেকে নিজের হাতে মানুষ করেছে  তার মা
একমাত্র ভরসা পড়াশুনা শেষে শহরে চাকরি পেলো
কিন্তু একদিন ফিরলো না।
শোনা যায় সোনাই বিয়ে করে সংসার পেতেছে শহরে
অনেকে বোঝাবার চেষ্টা করেছে  আজকাল কার ছেলেপিলে এমনি হয়।
কিন্তু মায়ের মন বোঝে ,দিন কাটে ,রাত কাটে
কিন্তু মায়ের সময় থেমে  থাকে
আজ  একটা সরকারী চিঠি এসেছে সোনাইয়ের বাড়িতে।

চোখের ভিতর জ্বালা করছে ভীষণ
কাল সারা রাত জাগার পর সকালের দিকে সোনাইয়ের বডিটা বাড়ি এলো।
শোনা যায় অনেকদিন শবঘরে ছিল ,শহরের রাস্তায় একটা দুর্ঘটনা
নির্ভরশীল শহরের রাস্তায় হাজারো মানুষের স্বপ্ন।
রাস্তার পাশে নেড়িটার কাল তিন ,ছাড়তে ছোট ছোট বাচ্চা হয়েছে
নেড়িটা চেটে চেটে পরিষ্কার করছে স্বপ্ন। 

পুরোনো কথা

পুরোনো কথা
........... ঋষি
================================================
কথা ছিল
তোমার মনের সুতোটা  হাতের মুঠোতে ধরে দিগন্তে হেঁটে যাওয়া।
কথা ছিল
উদাস বাউলের গলায় গেয়ে ওঠা মুক্তির গান।
কথা ছিল
সমান্তরাল সত্যগুলো একসাথে সামনে দাঁড়ানোর।

তারপর
তোমার দেওয়া সেই শেওলা রঙের শাড়ি ,শেওলা বিকেল।
সাইকেলের প্যাটেল লেগে থাকতো অনবরত ক্রিং ক্রিং
সময় ফুরিয়ে যেত।
অন্ধকার সময়েও সেই ক্রিং ক্রিং ক্রমাগত
আজও আছে।
বিস্তীর্ণ হৃদয়ের দেওয়াল জুড়ে অয়েল পেয়িংগেটিং
টুকরো টুকরো মুহূর্ত আলাপন।
আর আলোড়ন আজ বেঁচে
পুরোনো কথার।

কথা ছিল
তোমার মনের দেওয়ালে রামধনু রঙের কোনো স্বপ্নের।
কথা ছিল
খালি পায়ে শিশিরের উপর দিয়ে হেঁটে নতুন সকাল দেখার।
কথা ছিল
শুধু কথায় আজ হাঁটা পথ আলাদা কিন্তু বেঁচে থাকা ?  

Thursday, August 11, 2016

জার্নি টু দ্যা মুন

জার্নি টু দ্যা  মুন
................... ঋষি
======================================================
জার্নি টু দ্যা  মুন  লিখতে বসলাম
না তোমাকে আর ভালোবাসতে হবে না আমাকে।
শুধু কাছে আসতে হবে
হ্যা ঠিক বুঝেছো ততটাই কাছে যেখান থেকে বাবা হওয়া যায়।
না তোমাকে বাবা হতে কিংবা বিয়ে করতে বলি নি
বলেছি টাইম পাশ হ্যা মশাই সময় কাটানো নির্জনে।

তোমার হাত ধরে আমি ভিক্টরিয়া যাবো
গড়ের মাঠে হাওয়া বেলুন ছেড়ে তাকিয়ে থাকবো দুজনে শেষ বিন্দু অবধি।
না স্বপ্ন দেখবো না
কারণ আমি তো জানি পৃথিবীটা সম্পর্কে বেলুনের মতো।
শুধু ভাসছে
হালকা একটা চুমু মানে ছুঁচ লাগালেই ,,যা তা।
না মশাই তোমাকে এত ভাবতে বলি নি
তুমি চুমু খাবে আড়ালে আবডালে সুযোগ পেলে।
জড়িয়ে ধরবে যখন তখন ,শরীরে হাত দেবে
তুমি তো চাও এসব ,ভয় নেই বদলে কিছু চাইবো না।
শুধু টাইম পাশ !

জার্নি টু দ্যা  মুন  লিখতে বসলাম
আরে আমি তোমার ভালোবাসার অপেক্ষা করি না।
আমি চাঁদের কন্যা
এই পৃথিবীর যারা বোকা মেয়ে তারা স্বপ্ন দেখে ,ভালোবাসে ,ন্যাকামি।
সোজা সাপ্টা বলি আমি সেই ধরণের ভালো মেয়ে না
তোমরাই তো বানিয়েছো   আমাকে নষ্ট মেয়ে।

Wednesday, August 10, 2016

লেড়কি কভি দোস্ত নেহি বন সকতা

লেড়কি কভি দোস্ত নেহি বন সকতা
............. ঋষি
================================================
বন্ধু ,না সে সম্ভব নয়
আমার মেয়েবেলায় প্রথম ঋতুতে মা বলেছেন
বড় হলি ছেলেদের এড়িয়ে চলিস। ,
যৌবনে তো সিনেমার একটা ডায়ালগ কানে লেগে গেছে
ল্যাড়কা অউর লেড়কি কভি দোস্ত নেহি বন সকতা
তারপর আরেক থিওরি মোম আর আগুন।

বিজ্ঞাপনে  প্রায় দেখি একটা ছেলে আর মেয়ে হাত ধরে হাঁটছে
আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে ওরা কারা ?
ছোটবেলা থেকে শোনা
মেয়েরা মেয়েদের বন্ধু হতে পারে না,
আমার জানতে ইচ্ছে করে তবে আমাদের বন্ধু কে ?
বাবার কাছ থেকে স্বামীর ঘর তারপর আজ সন্তানের
শুধু প্রবাহের মতো ভূমিকা বদল
আমার জানা হলো না এখনো এদের মধ্যে বন্ধু কে ?
মনের কোনে আজও একটা ভয় কাজ করে
পুরুষরা বাঘ আর নারীরা  মাংস
একটু এদিক ওদিক হয়েছে তো প্রাণ সংকট।
শুধু আওড়ানো হলো নারীবাদ, পুরুষ আর নারী সহাবস্থানে
কিন্তু আমাদের মনের কোন ভয় লুন্ঠিত হবার ।

বন্ধু ,না সে সম্ভব নয়
যৌবনে শুনেছি পুরুষরা রকে বসে আড্ডা মারে বন্ধুদের সাথে
আর যে মেয়েরা রকে বসে তারা অন্যরকম তারা বাজে।
আসলে যেগুলো খুব স্বাভাবিক ভাবে সামাজিক হতে পারতো
সেগুলো মেয়েদের জন্য বাজারী
তাই তো আজও আমি বন্ধুহীন এবং ভীত।  

নিজের আয়নায়

নিজের আয়নায়
............ ঋষি
==================================================
বারংবার নিজের ছবির দিকে তাকাই
না ভুলতে পারা যায় না নিজেকে। এই তো আমি।
সেই ঠোঁট সেই ,সেই চোখ, সেই গাল
ঠিক তো, তুই ছুঁয়ে প্রথম বলেছিলিস ঠিক প্রতিমার মুখ।
প্রতিমা কিনা জানি না
এটা জানি তুই ছুঁয়ে ছিলিস আমাকে মনের চিলে কোঠায়।

জানি তুই ব্যস্ত এখন
আমিও তো খুব ফ্রী থাকি তা  না ,ছেলে ,স্বামী ,সংসার আর কতকিছু।
কিন্তু জানিস আজও যখন বৃষ্টি পরে মনের কোনে তুই
ঠিক এক আঁচলা জল সবুজ কচু পাতায়
টলমল টলমল আমার চোখে আয়নায় খুঁজে পাওয়া নিজেকে।
বহুবার চেষ্টা করেছি তোকে ফোনে ধরার
বহুবার ভেবেছি অদ্ভুত কথোপকথন
আরো অদ্ভুত কি জানিস আমার কাছে তোর ফোন নম্বর নেই।
ধর কোনোদিন আমি তুই মুখোমুখি
তুই একটু মুটিয়েছিস ,আমিও ,একে অপরকে দেখবো
তারপর কি বলবো বলতো।
সামাজিক কথোপকথন কেমন আছিস ,কটা ছেলেমেয়ে
আর তারপর  ..........

বারংবার নিজের ছবির দিকে তাকাই
ভাবি এই তো আমি কিংবা আমার মতন কেউ যে সংসারী।
নিজের আমিটাকে খুঁজতে ছুটে পালাই
সংসার ,সমাজ ,নিয়ম ,জীবন আর বন্ধনের কাছে।
কিন্তু তারপর একা মনে
আমি তুই হয়ে যায় বারংবার নিজের আয়নায়। 

নির্বাসন

নির্বাসন
............... ঋষি
============================================
বহুদিন জানা হয় নি কেমন আছো ?
বহুদিন আমার হাত ধরে হাঁটো নি সায়ন।
মনে হয় দুজনে আয়নার দুপাশে
একলা দাঁড়িয়ে কায়দা করে।
যাতে আয়না না ভেঙে পরে
নির্বাসনে।

রাতের বাতি নিভে যায়
ক্লান্ত তুমি তোমার অফিসের কাজ আর আমার সংসার।
কিন্তু এই সংসার শুধু কোনো  বাড়ি হয়ে থেকে যায়
যেন কোনো পাঁচিল।
আমি তুমি দুপাশে দাঁড়িয়ে যত্নে আগলে
শুধু এইটুকু।
রাতের সিলিঙে তারা ফোঁটে
আমার চলে যাওয়া পুরোনো সেই ভালোবাসার দিনে।
তুমি বলতে সায়ন
একটাও রাত তোমাকে ছাড়া ভাবা যায় না।
আজও আমরা একসাথে
কিন্তু বালিশের দূরত্ব কমে ভালোবাসায় ফেরা যায় না।

সামাজিক মোড়কে ঢাকা কোনো নিয়ম ভর করে
সকাল হয়।
আমি আটপৌঢ়ে শাড়ি ,তোমার অফিসের তারা
বাবানের স্কুল সব থাকে একইরকম।
শুধু আমাদের
কাছাকাছি থাকা হয় না।

সাজানো সংসার

সাজানো সংসার
........ ঋষি
======================================
বড় সাধ ছিল বাঁচার
এই সংসারে নিজেকে সাজাবার আর সাজবার।
সাজানো হলো ,
কিন্তু সাজা কই ?
সবখানে একলা রয়ে গেলো।

সাতপাঁকে ঘুরে বেশ ঘটা করে দায়িত্ব নিলে আমার
ভালো রাখা ,সুখে রাখা ,সুস্থ রাখা হয়তো জীবিত।
আজ সত্যি জীবিত এই কবিতা আমার
হয়তো সুস্থ কিন্তু আমার ভালো থাকা হলো না।
আজ পাঁচটা আসবাবের মতো আমি
শুধু রয়ে গেলাম।
শুধু দিয়ে গেলাম প্রয়োজনে
কিন্তু তোমার কাছে প্রয়োজনীয় হলাম না।
বিয়ের পুরোনো ছবিগুলো ,আমার চোখের স্বপ্নগুলো
সব রয়ে গেছে যত্নে যেমন থাকার।
শুধু আমি কই
আমি কেন জানি একলা এই বেঁচে থাকা।

বড় সাধ ছিল বাঁচবার
বেঁচে আছি আর পাঁচটা গৃহবধূ যেমন থাকে।
কিন্তু ওই রয়েছি
কারণ এই সমাজ ,এই নিয়ম সব শুধু সাজানো
যেমন আমার এই সাজানো সংসার।
.

আকাশ তখন শান্ত

আকাশ তখন শান্ত
,,,,,,,,, ঋষি
===============================================
বলতে ইচ্ছে করে
তুই সেই শ্রাবনে প্রথম ভিজতে থাকা নারী।
আমি তাকিয়ে ছিলাম আকাশের দিকে
তুই এলি।
আমি স্থির কবিতার মতো গড়িয়ে নামা জল ভিজের শরীর
আর আকাশ তখন মেঘলা।

না বলা হয় নি
ভালোবাসা যেহেতু পাশবালিশ শুয়ে থাকা সুখ।
না বলতে পারি নি
শ্রাবনের মেঘ তুই আমার ঘরের ভিতর আয়।
কোনো অপদার্থের মতো
আমি রাস্তার দিকে তাকিয়ে এই কবিতা লিখে যাই.
আমার দেখা প্রথম শ্রাবনে নারী
আর আমি কবিতার শব্দ তার শিরায় শিরায়।
না বলা হয় নি
ভালোবাসা কোনো শব্দ যা রক্তে ভিজে যায়।
না বলতে পারি নি
শ্রাবনে ভেজা নারী  তুই জীবিত এই কবিতায়।

বলতে ইচ্ছে করে
তুই সেই শ্রাবনের ভিজে কবিতার পাতা।
যার শিরায় শিরায় ছুঁয়ে থাকা স্নেহ অবিরত বেঁচে থাকা
ফিরে যায় ঘরে।
যদি কখনো সময়ের মেঘ হৃদয়ে বৃষ্টি পরে
আকাশ তখন শান্ত। 

ছায়ার লিরিক

ছায়ার লিরিক
.......... ঋষি
==============================================
আর কতদিন
বিগত বৃক্ষ ঝরে পড়া প্রশংসার পাতা
আর কতকাল
নবীন উচ্চারণে তুমি ঢাকা পড়া স্মৃতি সৌধ
জমা রাত বাকি
কিছু কথা চুপিচুপি ফিসফাস বলা ছিল বাকি

ভয়
খেলার  বিভ্রমে জমতে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা সবুজ কচি পাতা।
দৃষ্টি হারানোর আগে দৃষ্টি ভ্রম
ইতিউতি চাওয়া ,অনেকটা না পাওয়া।
তবু বাঁচা ছিল সাথী
যেটুকু মেঘের সঞ্চয় ছিল তা লুকোনো আড়ালের আকাশ।
এই ভাবে গল্প আসে
চলে আসে এক প্রত্যন্তে মেঘ।
তারপর বৃষ্টি
একহাঁটু জল
ভিজে যাওয়া সকালে ,হৃদয়ের হলাহল।

ছায়ার লিরিক থেকে গড়িয়ে নামা জল
আত্মার ঝুড়ি ,,কোনো অসমাপ্ত ক্রিয়ার স্খলিত গান্ধার।
যদিও প্রহরক্ষন গোটানো চাবুক
লুকিয়ে থাকা আঘাতে জীবনের যোগফল
কিছু কথা চুপিচুপি ফিসফাস বলা ছিল বাকি।

অবিরাম ও একা

অবিরাম ও একা
.............. ঋষি
============================================
বৃষ্টি এই  সময় অনেক রাত
বাইরে এখন  নিঝুম শহরে হেথা হোথা দুচারটে লাইটপোস্ট।
তুমি অবিরত ,অবিরাম প্রকৃতির ধারা
আমি ভিজে যায় মনের ভিতর
ভিজি কান্না।

একলা শহরের পাশে
শুয়ে থাকা মানুষ আর অভিলাষ সব মিলেমিশে ক্লান্ত।
রাস্তায় জমা জলে
বাড়তে থাকা আতঙ্করা অস্বাভাবিক আগামী।
জ্বর আসতে পারে ,বুকের ভিতর ফিসফিসে কাশি
কথা বাড়তে পারে।
কিন্তু কিছু ভাবতে চাই আজ এই রাতে
বৃষ্টি তুমি অবিরাম ভিজিয়ে যাও শহরের ভুলতে থাকা কান্না।
তবু মনখারাপ হয়
কান্না পায়
তুমি অবিরাম এবং  একা।

বৃষ্টি এই সময় অনেক রাত
ভিতরে জমে থাকা বালিশ দূরত্বে জীবন পাশ ফিরে শুলো।
কোথাও দূরে কোনো শিশু কেঁদে উঠলো
আবার চারপাশ নিঝুম ,ঘুম নেই
এই রাত বৃষ্টি শুধু তুমি আর আমি।

Tuesday, August 9, 2016

আমি আছি

আমি আছি
............. ঋষি
==================================================
যখন ক্রমশ নীল হয়ে যায়  শরীর
বিষাক্ত সাময়িক আগুনে চাও সভ্যতার বেণীমাধক।
তখন তুমি একলা ভীষণ সই
আমার কথা কখনো মনে করেছো চলন্তিকা।
মারাত্নক বৃষ্টি তখন
অথচ সামাজিক টিয়ার গ্যাসে তোমার চোখ বন্ধ।

মৃত শহরের গভীর শ্বাসে
তুমি আমাকে প্রশ্ন করো কেমন আছিস বল।
কেউ তো মরে যায় না চলন্তিকা
সকলে বেঁচে থাকে মুখে প্লাস্টিক স্মাইলে সাজানো দপ্তরে সরকারি মোহর।
গণতান্ত্রিক সভ্যতার কোনো একজন হয়
হরপ্পা থেকে মিসিসিপি শুধু লেগে থাকে প্রাচীন স্মৃতি সৌধ
ভালো আছি।
খুব ভালো নিজের অধিকারে চিরন্তন বাঁচা
আর প্রাচীন সভ্যতার গায়ে শেওলার ছোপ
পুরোনো না ফোড়ানো কষ্ট।

যখন ক্রমশ নীল হয়ে যায়  শরীর
সভ্যতার বেণীমাধব তখন অন্য কোনো দিনে স্মৃতির ঘর।
সেলাই কলে তখন এক ঘেয়ে চিৎকার
খিদে বেঁচে আছে মরে যায় নি।
সময় চলে গেছে ,থেমে যায় নি
আমি আছি যেমন করে চলন্তিকা তুই কোথাও বেঁচে। 

আবার আসবে

আবার আসবে
.................. ঋষি
==================================================
আবার আসছো তুমি
খড় মাটি রং ঘামতেল পেরিয়ে পৃথিবীর কাছে।
মণ্ডপে ছড়ানো শেষ হয়ে যাওয়া অবশেষ
শেষ রিংটোন মানুষের
বাজলো তোমার আলোর বেণু।
.
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র চিরকালীন ভদ্রলোক থেকে গেলেন
নিয়ম করে শুনিয়ে গেলেন মহিষ মর্দিনী রূপকথা।
মানুষ বিগলিত হৃদয়ে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় করে উপস্থিতি জানান দিলো
না ম্যাডাম ফুরিয়ে যায় নি আমরা।
হ্যা বাকি আছে তো
মা তুমি একবার তাকিয়ে দেখো সেই সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে
যেখানে কেউ দিন গুনছে মাতাল সন্তানের জননী হবার।
মা তুমি একবার চোখ রাখো সেই ধর্ষিত যুবতীর ক্লান্ত ,ভীত চোখে
যেখানে চোখ ডোবালি তুমি বুঝবে বাস্তব কি ?
কিংবা সেই ছেলেটা যে সময়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়
যাকে এই সমাজ অনাথ বলে করুণা করে।

আবার আসছো তুমি
মা তুমি সং সেজে আবার দাঁড়াবে মানুষের মনে আলোর মতো।
তুমি তো নিয়মিত আসো
আবার চলে যায় নিজের মতো
কিন্তু মানুষ এখনো যেতে পারে না ,ইচ্ছে করলে।

নিরাময়

নিরাময়
.................. ঋষি
===============================================
নিরাময় নিরাময় করে চিৎকার করে
পার্কসার্কাসের পাশে সেই মেয়েটা গোলাপ বিক্রি করে
নিরাময় চায়।
বেন্টিকস্ট্রিতে সেই মেয়েটা লাল শাড়ি পরে ,চোখে কাজল লাগিয়ে
আজও দাঁড়ায়।
দাঁড়ায় সময় সামরিক প্রাঙ্গনে যুদ্ধ ফেরৎ প্রতিশ্রুতির সাথে
প্রতিটা ক্ষত গভীরে নিরাময় চায়।

শহরের শেষ ফেস্টুনটা বাড়তে বাড়তে আজ বিজ্ঞাপনী হয়ে গেলো
কালো রোলসরয়েডে ভদ্রলোক আজকাল সুখী নয়।
সুখী নয় সদ্য বিয়ে হওয়া যুবতীর মন
তার পুরোনো প্রেমিকা আজ চিঠি লেখে ,আছে অপেক্ষায়।
শহরের এক হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে সাহিত্য নাকানি চোবানি খায়
কিছু প্রৌঢ় সাহিত্য প্রধান নাক সিঁটকে বলে
লিখেছে ভালো ,তবু এখনো পরিণত হওয়া দরকার।
ঈশ্বর সারাক্ষন সাদা ফর্মে টিক দিয়ে
উপস্থিতি জানান দেন  ,,,,,তিনি জীবিত।
আমার তোমার মতো মৃত মনে।

নিরাময় নিরাময় করে চিৎকার করে মানুষ
মানুষের ক্ষতের বাড়তে থাকা পুঁজ ,রক্ত সব নিজের কাছে প্রীতি।
নিরাময় চায়
চলে আসুন টিকি বাবার কাছে ১০০ পার্সেন্ট বুলেট প্রুফ সলুশনে।
তবু বুলেট বুকে ঢুকে যায় ,,,
মানুষের পবিত্র গর্ভে বিস্ফোরণ হয় নিয়মিত
ছিটকে পরে মৃত শরীর ,,যারা এতক্ষন জীবিত ছিল।


সময়ের মানুষ

সময়ের মানুষ
.............. ঋষি
===========================================

না হতে পারলাম সময়ের সঙ্গী
না হতে পারলাম না অসময়ের মানুষ।
পাতি মধ্যবিত্তের মতো স্বপ্ন দেখি বেঁচে থাকার
পাতি মৃত্যুর মতো স্বপ্নে দেখি বুড়িয়ে গিয়ে মরে যাবার।
লজ্জা নেই তবু সামনে তাকাই
খুব সাধারণের মতো আলো খুঁজতে চাই অন্ধকারে।

এই অন্ধকার চিরকালীন এক নিয়ম
চলন্তিকা বলেছিল
এই জীবনটা নষ্ট করতে পারিস ,যদি তুই চাস।
কিন্তু চলন্তিকাকে বলি নি কখনো
আসলে আমি অপেক্ষা করছি একটা মিছিল ফিরে আসার
বিনিময়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে ।
তারপর না হয় ফুরিয়ে যাওয়া কিংবা শেষের শুরু
তারপর না হয় বেঁচে মরা কিংবা মরে বাঁচা।
কে না জানে এই পৃথিবীতে সব সহজলভ্য
শুধু সত্যি বাদে।

না হতে পারলাম না সময়ের সঙ্গী
না হতে পারলাম না অসময়ের মানুষ।
শুধু ঘড়ির পেন্ডুলামের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে চাওয়া
ভাসতে চাওয়া প্রিয় স্বপ্ন।
চলন্তিকাকে কখনো বলি আসলে স্বপ্নরা সব মৃত চিরকাল
শুধু স্বপ্নের আলোরণে রঙিন আমার প্রতিদিন। 

মনের কবিতায়

মনের কবিতায়
.............. ঋষি
==============================================
এইভাবে ঠিক অযাচিত কল্পনায়
তুমি দেওয়াল ঘেঁষা কোনো আশ্রয়ের খোঁজে আমার জানলায়।
রোদ ,বৃষ্টি ,স্বাভাবিক ঋতু আশ্রয় চায়
আর আমি আশ্রয় খুঁজি নিজের ভিতর আমার অমিতে।
যেখানে তুমি মিশে থাকো
আমার এই আমি ,তুমি কবিতার পাগলামিতে।

সত্যি কি জাদু আমাকে ছুঁয়ে থাকে
মনে হয় এই শহর যেন কত সুখী ,কত  হাসি মাখা যাপন।
নিয়মিত ছন্দে আমি লিখতে থাকি
সুখ ,ভুলে থাকা কোনো আত্মার বেঁচে থাকা।
সকলে কি পাগল হয় নিজের ভিতর
আলবাত কোনো কবিতার সাথে।
অথচ জীবন কবিতা নয়
কবিতা জীবিত নয়।
মানুষ ছাড়া ,মন ছাড়া ,আরো ভাবনায়
বারবার ফিরে আসতে হয়।

এইভাবে ফিরে আসতে হয়
চেনা দরজায় ,চেনা জানলায় ,চেনা পৃথিবীর বাড়তে থাকা আতঙ্কে।
রিখটার স্কেলে পৃথিবীর ফাটলগুলো অনুভূতি ছুঁয়ে
নিজের ভিতর যন্ত্রনা বাড়ায়।
তখনি তোমায় মনে পরে ,আশ্রয় চায় তোমার জানলার বাইরে
বাড়তে থাকা অযাচিত মনের কবিতায়। 

তবু ভালো আছি

তবু ভালো আছি
......... ঋষি
===================================================
অগোছালো সময়ের পরে
পরে থাকে পুনর্মিলনের বিপ্লবী সুর।
প্রতিটা বিপ্লবের মননে গেঁথে যায় মালা ধ্বংস
নিজেকে ধ্বংস করতে হয়।
নিজের সাথে দিনরাত অ্যাকঘেঁয়ে কথা কাটাকাটিতে
আর এঁটে উঠতে পারা যায় না।

হাসি পাই ,হাসি
নিজের বিশ্বাসঘাতক অঙ্গপ্রতঙ্গের চলনে স্বাভাবিক জীবিত বাহানা।
কান্নাগুলো একসাথে জড়ো করে বেঁধে ফেলি বস্তায়
কিংবা ভাসিয়ে দিয়ে আসি একা নির্জন প্রাঙ্গনে।
গঙ্গার ফেরি ঘাটে সাঁতার কাটি
বাঁচতে চাই তাই।
অনেক্ষন সাঁতার কাটার পর চিৎ হয়ে শুয়ে আকাশের দিকে তাকায়
এত নিশ্বাস এখানে ,এটা বাহানা বাঁচার।
সবটাই চেনা ফর্মে উঠে আসা নিত্য বডি স্প্রের গন্ধ
নতুন বডি স্প্রে কিনে মানুষের মতো চেষ্টা বাঁচার ।

অগোছল সময়ের মতো
ক্যানভাসে আনমনে এঁকে চলা জীবনের পথে।
নিত্য সঙ্গী কাঁটা ,পায়ে ফোঁটা
পিছনে ফেলে আসা পায়ের ছাপ ফিরে আসে স্মৃতি নামে জংলী ইচ্ছাতে।
আর প্রতিদিন ঝগড়া জমে যায় নিজের সাথে
মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে ,তবু ভালো আছি।

Sunday, August 7, 2016

চায়ের দোকান

চায়ের দোকান
.................. ঋষি
=================================================
বাইরে তুমুল বৃষ্টি
বাইপাসের ধারে একটা ঝুঁপড়িতে চায়ের কাপে
দাঁড়িয়ে আছি।
আর অবাক হয়ে অনুভব করছি চা ব্যাটা কতটা কমুনিস্ট
ঝাল মুড়ি আর তেলেভাজা বড়ো ম্যার ম্যারে মশাই
সারা দেশ এখন জানি চায়ের দোকান।

অবাক  হয়ে শুনি
মৌলবাদীদের গুনকীর্তন ,তাদের প্ল্যান কি আগামী ?
ঠিক কোথায় এরপর আগুন লাগলো
আগুন লাগলো শুনে পাশের টেবিলে কেউ একজন একমনে বলছে
উফস শালা বৃষ্টি ,আজ বাড়িতে হবে।
কি সহজে এই চায়ের দোকানে কত সম্পর্ক ন্যাংটো দাঁড়িয়ে
কার পেটে কি আছে ,,ছেলে না মেয়ে।
বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইংরেজি সিলেবাস কমতে কমতে বাংলায় আসে ঠেকলো
আমি আরো অবাক হচ্ছি
আমার কবিতারা তখন বাইরে বৃষ্টি দেখছে
আর দেশ চায়ের দোকানে দুচারজন।

বাইরে তুমুল বৃষ্টি
বাইপাসের ধারে কজন পেড়িয়ে এসেছে আজকের সময়।
অনেকে উপস্থিত
একজন আবার বাউলের সুরে সুর মেলালো।
আজ দাঁড়ানো যাচ্ছে না মশাই
আজ বৃষ্টি ভিজে বাড়ি ফিরতে হবে।

রজনীগন্ধা

রজনীগন্ধা
............. ঋষি
===========================================
হাতের মুঠোয় ডাউনের টিকিট
মারা যাবার আটচল্লিশ ঘন্টার পর শরীরটা বাসি
ঠিক যেমন রজনীগন্ধা
আমাকে যেতে হবে ডাউনের ট্রেন ধরে আরো গভীরে
জানি মরেও যেতে হবে
ঠিক যেমন রজনীগন্ধা সন্ধ্যে

মিস ইউনিভার্স দাঁড়িয়ে নিজের লাস্যময়ী ভঙ্গিমায়
সারা সময় উঁকিঝুঁকি ক্লিভেজের পাশে।
মিস ইউনিভার্স  শুকিয়ে যাবে ঝোলা চামড়ার কি আর দাম
মশাই সময়।
উঁকি ঝুঁকি ফুরিয়ে যাবে
সামনে দুটো রাস্তা একটা ডাউন একটা আপ।
আমার হাতে ডাউনের টিকিট
ফুরিয়ে গেলে আরো নিচে যেতে হয়।
মিস ইউনিভার্স তার অন্তর্বাসে পারফিউমে মাখলেন
গন্ধটা চেনা
রজনীগন্ধা।

হাতের মুঠোয় ডাউনের টিকিট
মারা যাবার আটচল্লিশ ঘন্টা পর আমি দাঁড়িয়ে স্টেশনে।
আসলে মানুষের মৃত্যু নেই
আমার মতো হাজারো কেউ এখনো উঁকিঝুঁকি মারছে।
যদি একবার ,,,,না জীবন
শুধু রজনীগন্ধা শুকিয়ে গেলে বোঁটকা গন্ধ। 

বাঁশিওয়ালা

বাঁশিওয়ালা
................... ঋষি
================================================
বাঁশি বাজাবে কবি
হরিপ্রসাদের মতো না বাজুক , কিংবা কৃষ্ণের মতো।
কলমের নিবে কি বাঁশির শব্দ ?
ইঁদুরগুলো  সব ভীষণ জব্দ  হ্যামলিনের শহরে।
মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়
কবিতা তার নিজের উপত্যকায়।

একি  কথা কবি
তুমি বাঁশি বাজাতে পারো না।
নন্দন প্রাঙ্গনের সেই বাঁশিওয়ালাকে দেখি মধুর সুর
চোখ বন্ধ করলে পাহাড়ি কোনো প্রকৃতি ,
মন ভিজে যায় ,আরো ভিজতে চাই
কিন্তু বাঁশিওয়ালা ,একটা চেঞ্জার বাঁশি চারশো  টাকা দাম।
বাজাতে পারবো তো ?উদাস মনে একটা সিগারেট ধরাই
আর শুনতে থাকি কবিতার সুর।

কবি তুমি টাকায় শিল্প মাপো ?
না বাবু আমি খালি পেটে কবিতা লিখি।
আমার শিল্পে বাঁশি বাজে তো ,খুব করুন সুর
আমি যে মানুষের কবিতা লিখি।
আমি যে জীবনে কবিতা লিখি ,লিখি সময়কে
আমিও নিজে কোনো পাহাড়িয়া বাঁশির সুর শব্দের ফাঁকে।

বর্ষার বৃষ্টি

বর্ষার বৃষ্টি
.............. ঋষি
=============================================
তোমার উঠোনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
বর্ষার রোদ
ঠিক আমার ইচ্ছারা আগামীর দাবি নিয়ে কুইকমার্চে।
সত্যি বলতে কি ?বর্ষার  বৃষ্টি অনিয়ন্ত্রিত
কিন্তু বর্ষা কাল। তাই বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

বৃষ্টি হবে উঠোন জুড়ে
আর নদীর মোহনায় বাস করা জন বসতি ভেসে যাবে।
বৃষ্টি বড়  প্রেম নির্ভর
ঠিক তোমার বারান্দা থেকে বাড়ানো হাতে দু এক ফোঁটা ছিঁটে।
এখন আমাকে বলতে পারো ভাবনাকে প্রশ্রয় না দেওয়া ভালো
কিন্তু তুমি কি জানো ভাবনার কোনো সিস্টেম নেই।
ঠিক বর্ষার বৃষ্টি
আর উঠোনে  ভিজে যায় কোনায় জমে থাকা জল।
জনবসতি ভেসে যাক
কিন্তু সবুজ হয়ে ফিরে আসবে এই আশায়
আমার চোখ মেঘের ঘরে

তোমার উঠোনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
ভালোবাসার রোদ।
কোনো মরিয়া বাঁচতে চাওয়া চাতক আকাশের দিকে তাকিয়ে
আনমনে বলে উঠি
আয়  বৃষ্টি ঝেঁপে ,জীবন দেবো মেপে।

Saturday, August 6, 2016

নিয়মিত চিড়িয়াখানা

নিয়মিত চিড়িয়াখানা
............ ঋষি
=============================================
সামনে পরে আছে বিস্তীর্ণ কোনো বোবা রাস্তা
নগ্নতা মোড়া শহরের ফাঁকে বেআব্রু বিজ্ঞাপন।
আমি শহর দেখতে পাই
সভ্যতা তাকিয়ে কাঁচের ঘরের ভিতর কোনো তাসের ঘরে।
হুড়মুড় করে কাটছে একটা শতাব্দী
মানুষ যেখানে শুধুই জীবন।  

তোমার চোখের মায়াময় ছায়া আমাকে দিও
দিও এক রুমাল ভর্তি তোমার শুকিয়ে থাকা ঘামের রেনু।
নির্বাক আমি শহরের রাস্তায়
সামনে বিজ্ঞাপন নীরবতা যা চারদেয়ালে পাওয়া যায়।
সেপ্টিপিন জুড়ে থাকা সভ্যতা
আমার বুকের বোতাম খোলা নগ্নতার ইচ্ছা।
আমি হাসতে পারি
একটা চওড়া মেঘভর্তি  আকাশের চিঠি আমার কাছে।
এই শহর কোনো প্রয়োজনহীন যাপন
আর আরো দূরে সভ্যতা কর্মরত
এখন দিন।

সামনে পরে আছে মেঘ ভর্তি অনেকগুলো ভাবনা
আজ ,কাল ,পরশু সব নিয়মের পসরা সাজানো অভ্যেসে বায়না।
আমি শহরে আছি
আর এই  শহুরে সভ্যতার ভিতর একটা বাঘ বসে
আমি আমরা নাগরিক
কোনো নিয়ম ভর্তি চিড়িয়াখানার। 

অন্ধকার শহর

অন্ধকার শহর
........... ঋষি
==============================================
হাতির পাল ভেঙে চলেছে পাহাড়ি জ্যোৎস্ন্যা
ক্রমশ সবুজ  পেড়িয়ে শহরের সঙ্গম।
পেন্সিলের নিবে ঘষে চলেছি একমনে হাতির পা
শহর আঁকতে গেলে কৃত্রিমতা দরকার।
কিন্তু আলো জ্বলছে সবুজে
শহর অন্ধকার।

চলন্তিকা এই সব ক্যানভাস শুধু তোমার মনে আঁকা
ছোঁয়া লাগে।
কেঁপে উঠতে থাকে শ্রাবনের তুমুল ঝাপ্টা
শ্রাবন তো তোমার নাম চলন্তিকা।
কোনো প্রকৃতির বয়ে যাওয়া জলতরঙ্গে তুমি স্নান করতে নামলে
তোমার সরে যাওয়া বুকের কাপড়ে আলোড়ন ঢাকা।
আবার শহর হয়ে যাচ্ছে সব
এই ছবিতে আমি হৃদয় আঁকতে চাই।
কোনো লিপস্টিক  ছাড়া ঠোঁট চলন্তিকা
আমাকে কাছে ডাকছে।

চলন্তিকা ভালো লাগছে তোমার শরীরে শ্রাবনের ধারা
আর শ্রাবনের মেঘের মতো মনের ইচ্ছা।
পেন্সিলের নিবটা ঘষে যাচ্ছে ক্রমশ ডার্ক থেকে আরো অন্ধকার
আমি শহরে বসে চলন্তিকা।
কোনোদিন কি তুমি সবুজ হবে না
কিংবা আমি সবুজ শহর।

সময় পুড়ছে

সময় পুড়ছে
................... ঋষি
===============================================

সমস্ত অবয়ব জুড়ে প্রদীপের শিখা
আলো  ফুরোচ্ছে আর ক্রমশ অন্ধকারে পোড়া গন্ধ।
মানুষের বুক পুড়ছে
............................... প্রতিবাদ দরজায় দাঁড়িয়ে।
মুখ নিচু করে আঙ্গুল চুষছে
আর প্রদীপের বুক পুড়ছে।

আলো যখন ঝগড়া করে অনবরত অন্ধকারের সাথে
তখন দু চার খান খিস্তি আলোর প্রাপ্য।
কিন্তু অন্ধকার আজ সবজান্তা কোনো লোভী সাহেবের মৃত চামড়া
শালা তবু জিতছে। .....সময় পুড়ছে ।
প্রতিবাদ নাকি দরজায় দাঁড়িয়ে সেই থেকে ফেউ ধরছে
হিসেবে চাইছে। ,,,,,,মানুষ কূপমণ্ডুক।
.....মানুষ হিসেবী আবার স্বার্থপর
আবার নির্ভর কোনো অযাচিত মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে পরনির্ভর।
ওদের ডেকে দেবার কেউ নেই
তাই। .......প্রতিবাদ মাথা ঠুকছে।

সমস্ত অবয়ব জুড়ে প্রদীপের শিখা
তেল শেষ ,,দপ করে নেভার আগে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
মানুষ কাঁদছে
................................. প্রতিবাদ যে বদহজম।
পেটে ব্যাথা ,,আর দাঁড়ানো যাচ্ছে না
শেষ চেষ্টা একবার করবেন নাকি। 

Friday, August 5, 2016

একলা সময়

একলা সময়
.............. ঋষি
=============================================
সোজা সাপ্টা বলে দিতে পারিস
মাংস ঘাটতে  চাস।
এত ঘুরিয়ে বলার কি আছে ,সোজা সাপ্টা ভালো
আজকাল সহ্য হয় না।
সময় কই  এতো সোজা সাপ্টা সময়ের জীব
সোজাসাপ্টা ভালো।

সম্পর্ক তলিয়ে গিয়ে আজ নিয়ম
এটা কোনো চলচিত্র নয় বুঝলি খোঁজ না  বাড়ি বাড়ি।
অফিস আর বাড়ি
আর তার ফাঁকে ওই যে বাড়াবাড়ি।
না তোকে বললে বুঝবি না ,বড়  অশান্তি
শান্তি গেছে পিসির বাড়ি।
এই ফাঁক
হা হা সোজা সাপ্টা কি বলা যায়
মাংস সে যে বড় সুস্বাদু
হোক না বাড়াবাড়ি।

সোজাসাপ্টা বলে দিতে পারিস
আচ্ছা শোন তাড়াতাড়ি কর ,,হমম একদম সময় নেই।
বাড়ি ফিরতে হবে যে
খুব যে তাড়া ,আমি কি বেশ্যা।
না আমার প্রিয়
তুমি বেশ্যা নও একলা দাঁড়িয়ে সময়।

Thursday, August 4, 2016

মৃত শহর

মৃত শহর
............. ঋষি
=============================================
পাগলী তোর হাসিটা আজকাল
বিকেলের শুয়ে থাকা শেষ রৌদ্রের মত ম্রিয়মান।
আর তোর শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁটে
গড়িয়ে নামা রক্ত  সূর্যের তাপে জ্বলতে থাকা চামড়া।
যদি কিছু বদলায় বদলাক
তবু পাগলী আকাশের চাঁদ আর সূর্য আলাদাই থাক।

এই কবিতার কোনো শিরনাম নেই
আছে যেটা সেটা একটা স্বর্গ দূত তোর কাছে।
জীবনে যেদিকে তাকাস না কেন সেটা কোনো শ্মশানের ছাই নয়
কবি তো বলছে অনেক আগে
মনে আছে।
সেই রাতে ফুরিয়ে যাওয়া তারাদের ভিড়ে
তুই লিখে দিয়েছিস আমার নাম।
আমি এখন মাটির সাথে মিশে লিখে চলেছে শহরের খবর
আর সেই খবরের শিরোনাম
পাগলী তুই আমার কাছে শহর।

পাগলী তোর হাসিটা কেমন ম্রিয়মান
চোখের কোনে জমে থাকা অন্ধকারে সুইচ অফ করা স্বপ্ন।
কিছুই বদলায় না কিছুই বদলাবে না
আমার এই কবিতা ছাড়া।
আমি কবিতা লিখছি কারণ বেঁচে আছি
অথচ চোখে পাগলী আমার মৃত শহর। 

লুকোনো খাতা

লুকোনো খাতা
................... ঋষি
=============================================

আমাকে দুঃখ দিতে পারিস
না ভুলেও সুখ কখনো আমার উঠোনে পাখির দানা খায় নি।
আমাকে দূরে ঠেলতে পারিস
এই হৃদয়ের দেওয়ালে অজস্র ক্ষতের ফাঁকে।
আরেকটা ক্ষত বাড়ুক ক্ষতি নেই
শুধু আমাকে জড়িয়ে ধরিস না বাঁচার আশায়।

আমি তো মরে গেছি কবে
আমার কফিনের শেষ পেড়েকে সম্পূর্ণ ঈশ্বরের উপস্থিতি ছিল।
এই পৃথিবীর পথে আমি হেঁটেছি জেসাসের মতো
আমি প্রতি ঝরে পড়া রক্তবিন্দু শুধু  শান্তির ছিল।
আমি যে পথে হেঁটেছি
সেটা শুধু ঈশ্বরের খোঁজ ,যেন কোনো অধিকার
আমি যে পথে ফিরেছি
সেটা শুধু ঈশ্বরের চোখে ,পিছু ফিরে দেখবার
আসলে আমার কোনো শোক নেই ,নেই কোনো উপস্থিতি
আমি তো মৃত কোনো শহরের মতো জনবসতিহীন

আমি দুঃখ দিতে পারিস
না ভুলেও সুখ আমাকে কখনো স্পর্শ করে নি।
আমার বুকে জ্বলতে থাকা ভিসুভিয়াসের লাভা সভ্যতাকে নয়
শুধু আমাকে পুড়িয়েছে।
আমি ফিরে গেছি নিজের সাথে ঈশ্বরের মত কোনো স্পর্শহীন
শুধু আমার এই কবিতা লুকোনো খাতায়। 

সেই ছেলেটা

সেই ছেলেটা
.............. ঋষি
========================================
ভালোবাসা চাই
ভিখিরীর মতো সেই ছেলেটা দাঁড়িয়ে জন্মের দরজায়।
ইতিহাস খুলে মন্দির মসজিদে আজ শুধু আপেক্ষিকতা
পৃথিবীর আবর্তনের সাথে।
এক একটা দিন ভোলবদল করে মানুষের মনে
সেই ছেলেটা আজও মানুষ হতে পারলো না।

কবিতার গড়িয়ে নাম রক্ত
যখন অলিন্দের খামে ছোট ছোট  আনন্দ তৈরী  করে।
তখন ছেলেটা হাসে বাচ্চাদের মতো
হাত বাড়িয়ে খুঁজতে চায় প্রিয় ওম।
কবিতার সাথে যদি কোনো দুঃখ হৃদয় স্পর্শ করে
সেই ছেলেটা কাঁদে।
হাত বাড়ায় আবার খুঁজতে থাকে স্পর্শ বাঁচার তাগিদে
সে তো এখনো বড় হলো না।
শুধু সময় চলে গেছে
পাতার পর পাতা শুধু হৃদয়ের আলাপন
সেই ছেলেটা নিজেকে খুঁজে গেছে।

ভালোবাসা চাই
না এই ভালোবাসা কোনো শরীর কিংবা রিপু ঘটিত নয়।
এই হলো অধিকার ,এই হলো পরিচয়ের
যে মাটিতে বুক ফুলিয়ে ছেলেটা বলে তুমি আমার।
এই আমার মধ্যে কোথাও ছেলেটা
হয়তো নিজেকে খোঁজে পাগলের মতো। 

Wednesday, August 3, 2016

ঘর ভর্তি সংসার

ঘর ভর্তি সংসার
.............. ঋষি
==============================================
শেষ দাগটা টেনে দিলি
চিঠিপত্র ,আদর সহ বিছানা বালিশ, আর এই শ্রাবন।
যখন তখন মধ্যবিত্ত বলে গালাগাল দিবি
যখন তখন  কোলের ছেলেটাকে মাটিতে শুয়ে বৃষ্টি ভিজবি।
কি তুই
কোনো দস্যি রাজকন্যার স্বপ্নে বিভোর।

বাইরের দেওয়াল থেকে নেশার পেগে লেগে আছে চোখ
বিশাল কোনো ঝিলে ছোঁ মেরে নেমে আসে মাছ রাঙা।
মাছ ধরবি
এই ঝিলের গভীরতায় সাগর শুয়ে আছে।
শব্দ শুনছিস
গভীর কোনো আলিঙ্গনে তোর বুকের ছোঁয়ায় বিস্ফোরণ।
ইচ্ছা জাগা শহরটাকে রাত্রি করে দি
আর তোকে আদর করে উত্তমের লিপে গেয়ে উঠি
দেখুক পাড়া পড়সিতে ,কেমন মাছ ধরেছি ........
রুপোলি কোমড়,ছিপছিপে আদর ছোঁয়া উষ্ণতা
যেখানে অন্ধকারে আমার চোখ।

শেষ দাগটা টেনে দিলি
বাস্তবের ওমে শুয়ে স্বপ্নের নীল শহরে আজ আতঙ্ক।
যখন তখন মধ্যবিত্ত বলে গালাগাল দিবি
আর শহরের বৃষ্টিতে হাঁটু জলে একলা দাঁড়াবি।
কি তুই
বাড়িতে তোর ঘর ভর্তি সংসার।





চাঁদের হাসি

চাঁদের হাসি
........... ঋষি
================================================
কবি আর কবিতার ফাঁকে
অষ্টাদশী চাঁদ আজ প্রেমিকার মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে।
জানতে চাইছে সে
চাঁদের গায়ে যে কালো দাগ সে কি কলঙ্ক।
আর কবি কবিতা লিখছে আকাশের অন্ধকারে তারাদের ফাঁকে
চাঁদের মুখে তখন রুপোলি হাসি।

হাসছে চাঁদ ,হাসছে সারা আকাশ
অন্ধকারময় জীবনের ভূমিকায় জ্যোৎস্ন্যা এসে হাত বাড়ায়।
জানতে চাই গভীর সে দাগ
যাকে গভীরে রেখে চাঁদ হাসে ,আরো হাসি দিয়ে অন্ধকার ঢাকে।
গভীর সেই দাগ
যা নিয়ে চাঁদ বাঁচে ,একলা অক্ষের গায়ে তখন অজস্র তারা খসা।
চাঁদ তুমি কি উজাড় হতে পারো না
জোস্ন্যার মতো আমার কবিতার পাতায় জীবন লিখতে পারো না।
হতে পারো না
কোনো বাউলের গান হৃদয়ের কবিতায়।

কবি আর কবিতার ফাঁকে
হালকা একটা আত্মিক সুর, গোটা আকাশ রাখা আছে।
চাঁদ তুমি একটু থাকো ,এখনই  যেও না
আমার কবিতা এখনো  বাকি।
আচ্ছা তবে যাও তুমি আকাশের গায়ে হাসতে থাকো
কবি কবিতা লিখুক ,চাঁদ মলিন তোমার হাসি। 

আলোর রাত

আলোর রাত
................. ঋষি
===============================================
চাদরে ঢাকা যাপন আর জীবিত সেই হাসি
ক্রমশ আলোকরশ্মি বাড়তে বাড়তে তুবড়ির রাত।
তারপর হঠাৎ হাসি ফুরিয়ে
পরে থাকে মৃত  বারুদের গন্ধ মাখা কিছু স্মৃতি।
হাতড়ানো সময়ের আলো
সে তো বছরে একবার আর বাকি সময় ?

এইভাবে সময় পেরিয়ে
চামড়ার কেবিনে লেগে যাবে কিছু বেঁচে থাকা।
কিন্তু জানিস মানুষ বাঁচাটাকে মনে রাখে না
শুধু মরতে ভালোবাসে।
মরার আগে মরে যাওয়ার জীবিত রেওয়াজ সাজানো প্লাস্টিক স্মাইলে
দিয়ে যাবি অসংখ্য ফ্রেমে আগামীর ইচ্ছা।
আর আমার কলমে ফুটে উঠবি তুই ঠিক যতটা দামি
যতটা কমদামি এই সময়ে রূপ।
আরো আলোর দিনের প্রতীক্ষা
এত আলো ,আরো আলো ,তোর প্রিয় হাসি মুখ।

চাদরে ঢাকা যাপন আর জীবিত সেই হাসি
আলমারির কোনো গভীর দেরাজে থরে থরে সাজানো স্বপ্ন।
জানিসতো সবটা সত্যি নয়
কিছু জীবন জীবিত থেকে কামড়ায় মানুষের ভিতর।
ঠিক তেমনি এই অন্ধকার রাতে
নীল  আকাশের না শেষ হওয়া কবিতা আলোর রাত। 

খিদের পৃথিবী

খিদের পৃথিবী
.............. ঋষি
==================================================
যে গল্পটা শুরু হতে হতে শেষ হয়ে গেলো
তাকে সামাজিকতা বলে।
আর যেটা শুরু হলো সেটা সমাজের বাইরে একটা আকাশ
এই সময় আমার ঈশ্বরকে মনে পড়লো।
আকাশ পথে চলতে চলতে আনমনে পুস্প বৃষ্টি
ঈশ্বর হেরে গেলো ,স্বর্গতে অন্ধকার।

সমাজের মোজা পরে জুতো ছাড়া হাঁটা
পথে লেগে থাকে জুতো ফার্স্ট ক্লাস ব্ল্যাক ড্যাসিং কালি।
আরো আছে
মামলা করে পথ বলে ধর্মাবতার
ঈশ্বরও কি জুতো পরে হাঁটে ?
আমি অবাক চোখে বলি পৃথিবী আমি খালি পায়ে
জুতো ছাড়া ,কাঁটার পৃথিবীতে হাঁটি।
এই ভাবে সময় গেলো একটা গল্প শেষ হতে হতে
সমাজ হয়ে গেলো
আর আমি সামাজিক কোনো  ঈশ্বরের মতো।

যে গল্পটা শুরু হতে হতে শেষ হয়ে গেলো
তাকে আদতে বেঁচে থাকা বলে।
আর যেটা শুরু হলো সেটা সামাজিক কোনো নিয়ম
অভ্যেসের দাঁত মেজে ঈশ্বর মন্দিরে।
অপেক্ষা জীবনে খিদে
ঈশ্বর যদি মানুষ হয়ে যায় ,তবে খিদে পৃথিবী।

ভালোবাসার লজ্জা


ভালোবাসার লজ্জা
.................. ঋষি
=============================================
ভালোবাসা বংশ বিস্তার করতে করতে
স্ত্রী ,পুত্র ,নাতিপুতি নিয়ে পেল্লায় এখন সময়ের হাওয়ায়।
ভালোবাসা থাকা না থাকাটা নাকি আজ স্ট্যাটাসের মত
তার আবার নামকরণ বয় ফ্রেন্ড আর গার্ল।
এত বুঝি না মশাই
এটা বুঝি আজকাল সকাল সন্ধ্যে সকলের ভালোবাসা পায়।
.
পার্কস্ট্রিট দিয়ে হাঁটছি সেদিন
অবাক হলাম এক রঙিন যুবক ,যুবতী চুইংগামের মত সেঁটে
এটা নাকি ভালোবাসা।
ভালোবাসা দরিদ্র হলে যে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়
কিংবা কোনো ফাইভস্টারে ডিনার করে শহরের রাত্রি বেলায়।
ডিনারে মেনু হরেক
ভালোবাসা পেলে নাকি মানুষের আগে  শরীর পায়।
অবাক হলাম মশাই
সেদিন ভিড় বাসে এক বুড়ো ভদ্রলোক ভালোবেসে হাত বাড়ায়
হর্ন বাজায় তারপর ভালোবাসা চেপে ধরে।
সামনে দাঁড়ানো মেয়েটা ভালোবাসায় লাল হয়ে যায়
তারপর চিৎকার
কি দিনকাল ভালোবেসে  মানুষ এইভাবে নিলজ্জ হয়ে যায়।
.
ভালোবাসা বংশ বিস্তার করছে সময়ের হাওয়ায়
ভালোবাসা বলাৎকার করে ,ভালোবাসা ভালোবেসে অ্যাসিড ছড়ায়
তারপর প্রতিটা খবরের পাতা সুসময় হয়ে যায় ।
তারপর আবার ভালোবাসার দিন ,চুমুর দিন ,চকোলেটের দিন
এত বুঝি না মশাই
এই ভালোবাসা দেখে আজকাল আমার লজ্জা পায়।


Tuesday, August 2, 2016

পাশাপাশি হাঁটা

পাশাপাশি হাঁটা
.............. ঋষি
===============================================
কোন জন্মের কথা বলছিস চলন্তিকা
তোর জন্মের পরেই তোর জন্মে আমার পায়ের ছাপ।
তোকে আমি জন্ম দিতে পারি নি সেটা আমার অক্ষমতা
কিন্তু জানিস তোকে ছুঁয়ে আমি মরতে পারি।
কিংবা ধর বাঁচতে
যোজন দূরে ,যোজন আয়োজনে কোনো স্বপ্ন সুখে।

চলন্তিকা এই পথে কেউ নেই
শুধু তোর হাত আমাকে ছুঁয়ে হেঁটে চলা চেনা হৃদয়ে পা রেখে।
এখানে জন্ম ,মৃত্যু কেউ কোত্থাও নেই
আছে শুধু নিজের সাথে অবিরত কথা বলা।
চেনা সুখ ,অচেনা দরবারে সারেঙ্গির তার ভাঙা গান
চেনা অসুখ ,অচেনা রাস্তায় গোলাপের সুবাস হৃদয়ে ধরা।
আসলে কাউকে চাই না আমি চলন্তিকা
তোর সাথে ,তোর কাছে ,কিংবা পাশাপাশি পথচলতি সময়ের লোকালে।
স্টেশন ছেড়ে স্টেশনে অচেনা গন্তব্য অনির্দিষ্ট বাঁচা
আর কোনো অচেনা স্টেশনে নিয়মিত কোনো রেললাইন ধরে
পাশাপাশি আমাদের হাঁটা।
কোনো শব্দ নয় ,নিস্তব্ধ কোনো মেঘলা দুপুরে
আমাকে মনে করতে লাগে না তোকে ,তুই সম্পূর্ণ।

কোন জন্মের কথা বলছিস চলন্তিকা
মৃত্যুর পরে যদি কোনো জীবন থাকে সেখানে অজানা আতংক।
তাই একটাই অনুরোধ
আর কোনো জন্ম নয় ,না আর কোনো মৃত্যু।
শুধু প্রয়োজনটুকু রেখে। জীবন সঙ্গত
পাশাপাশি হাঁটা। 

এক কাপ চা

এক কাপ চা
................... ঋষি
============================================

এক কাপ চা
বিকেলের ঘুমিয়ে পড়া সূর্যের সাথে।
নেশা কমে যায়
ঠিক দিনের ফুরিয়ে যাওয়া আলো আর প্রতি রাতে।
দিন প্রতিদিন বাড়তে থাকা সময় তন্ত্র
হাতে খালি চায়ের কাপ আর  উষ্ণতা লেগে জিভে।

এই ভেবে জিভের সাথে
ছাঁকনি ছাঁকা চেনা অভ্যেস  অতি প্রিয় বিকেলের আলো।
প্রিয় যদি পরিচিত হয় সেটা নেশা
আর অপরিচিত নেশা মানুষের ভালোবাসা।
জানিস তো
এক কাপ চায়ে শুধু তোমাকে চায়।
আর তারপর প্রতিদিন নিয়মিত অভ্যেস
এক কাপ চা।
আর সেই বিকেলে ইচ্ছেদের জুড়ি মেলা ভার
যদি ঠোঁটে আমার অভ্যেস বিকেলের ঠোঁট।

এক কাপ চা
আরেকটু পরে সূর্যের দরকার পরে চার দেওয়ালে।
চারিদিকে জোনাকিরা সূর্য নয়
আর চা শুধু গরম নয় যদি প্রিয় ফ্লেবারের হয়।
নিশ্চিন্তে লেগে যায় ঠোঁট
বাহ্ ,,উফফস এক কাপ গরম চা। 

নিয়মক সময়

নিয়মক সময়
............ ঋষি
==============================================
সময়কে দেখেছিস  দাঁড়িয়ে থাকতে
আইফেল টাওয়ার থেকে তাজমহল সকলেই স্থির আর গম্ভীর।
আমিও হয়তো সেই সময়ের মত
একলা দাঁড়িয়ে জীবন।
আর দরজার ভিতর অনেক ঘর ,অজস্র চিৎকার ,গোলকধাঁধা
বাঁধা ধরা নিয়ম।

এ কি শুধু বাঁচতে চাওয়া
না কি জড়িয়ে বাঁচা শেওলা ছুঁয়ে কোনো সবুজ ইচ্ছা।
মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখি আমি জলের তলায় সম্পূর্ণ নগ্ন কোনো সময়
চারিপাশে তারা।যারা যাওয়া আসা করে।
আমাকে ঠোকরায় ,আমাকে কামড়ায় হয়তো হৃদয়ে
কিন্তু আমি সময় স্থির কোনো কবিতা।
এই কবিতা আমার ক্ষতস্থলের ব্যান্ডেজ কিংবা ডেটল নয়
নেহাত কোনো রাতজাগা সময়ের স্বপ্ন।
আনার মত আরো অনেকে সবুজ থেকে যায় চিরকাল
অথচ তাদের একমাথা পাকা চুল।

সময়কে দেখেছিস  দাঁড়িয়ে থাকতে
ঔরঙ্গজেব থেকে তিতুমীর সকলেই সময়ের কান্না।
কোনো হাহাকার কখনো জীবিত নয়
ফুরিয়ে যায় ,আবার অন্য সকালে ,অন্য কবিতায়।
তাবু সময় দেখতে থাকে ঘুম ভাঙা চোখ
আর চোখের কোন না শেষ হওয়া কালো রাস্তা। 

তুই তো মেয়ে


তুই তো মেয়ে
.................. ঋষি
================================================

ও কি মেয়ে
অমন করে লুটিয়ে পড়লে  কি করে  হবে ?
উঠে দাঁড়াতে হবে ,আরো ধাক্কা খেতে হবে
ছোটবেলায় শুনেছিস তো মায়ের কাছে মেয়ে হয়ে জন্মেছিস।
সত্যি রে তুই মেয়ে হয়ে জন্মালি
আর পৃথিবীর একটা সুখ বেড়ে গেলো।

কাঁদছিস কেন ?
শুনিস নি মেয়েদের কপাল ,সে কি রে এমন তো হওয়ারই কথা।
বাবা চেয়েছিল না  ছেলে হোক,মাও হয়তো
তুই হলি তোর দাদু ,ঠাকুমা ,আত্মীয়রা মুখ বেঁকালো , মেয়ে হলো।
কাঁদিস না সেই তো শুরু
তারপর তুই বড় হতে লাগলি মা বললো এমন করে বসতে নেই।
বাবা বললো না  গাছে উঠতে নেই।
 ঠাকুমা বললো  অমন করে শুতে নেই তুমি বড়ো হয়ে গেছো
দাদু বললো না ছেলেদের সাথে কথা বলবে না।
তারপর তুই ফ্ৰক ছেড়ে নারী হয়ে উঠলি
সেই ছেলেটা তোর হাত ধরে তোকে প্রথমবার স্বপ্ন দিল।
তুই ভাবলি এই তো বেঁচে আছিস
কিন্তু মরলি আবার মুখপুড়ি  ,,,,তুই তো মেয়ে।

ও কি মেয়ে
অমন করে লুটিয়ে পড়লে  কি করে  হবে ?
শাস্ত্রে লেখা মেয়েরা  কৈ মাছের জান আর না তোর মৃত্যু নেই।
ওঠ ওঠ উঠে পর এই পৃথিবীর চোখে তুই হোলি সুখ
আর তোর জন্মের মুখ সে হলো  তোর দুঃখ
চুপ কর মুখপুড়ি আর ন্যাকামি নয়,,,, তুই তো মেয়ে।

সুখ নিদ্রা

সুখ নিদ্রা
.................. ঋষি
====================================================
ক্লোজসার্কিট নিজস্ব জোনে
আজ কোনো বড় মাছ জল থেকে তুললাম।
চারিদিকে চিৎকার জীবন আর জীবিত
আমি কবিতায় কলম চুঁইয়ে নেমে আসা রক্ত সাদা পাতায়।
ভিজে থাকা মুহূর্তরা
আকাশে বৃষ্টি নামে পরিচিত।

ক্লান্তির চোখে নিজস্ব খোলা দরজায় পা
আরেকটু এগিয়ে গিয়ে সুখের বিছানা ,একথালা গরম ভাত ,সুখনিদ্রা।
না ঘুম আসে না আজকাল
প্রায় চমকে উঠে আমি বৃষ্টি হতে চাই।
হৃদয়ের দেওয়ালে ক্রমশ সুখ ঝিল্লির পিউরিফাইং প্রসেস
সময় থামতে চায়।
আমার আর বাড়ি ফেরা হয় না
সোজা কোনো নেশার জিভে ,জিভ চুবিয়ে ,
তোমাকে চুমু খেয়ে একা হওয়া যায়
আর আমার সময় চির অজানা ঘুমে।

ক্লোজসার্কিট নিজস্ব জোনে
আরো কাছে সরে আসে সময়ের দুর্বলতার দু কদম হাঁটা।
পায়ের সাথে পা মিলিয়ে
কেন যে জীবন বারংবার তোমার দরজায় ?
চির পরিচিত আয়নায় নিজেকে দেখে বলে ওঠা
আমার আর ভালো থাকা হলো না। 

সময়ের নির্লিপ্ততা

সময়ের নির্লিপ্ততা
............... ঋষি
০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

আমাকে কাছে টেনে নিও
শহরের পথে পথে সময়ের ভিখারী আজ সাময়িকী।
দেওয়ালে দেওয়ালে বিজ্ঞাপনে মানুষের পণ্য হৃদয় দরকারী
সবটাই ভীষণ সোজা সহজ বেঁচে থাকা।
ইঁদুর আর কূপমণ্ডুক মানুষের মাংসের আঁশটে গন্ধ
মানুষ ডুবে আছে মানুষের রক্তে।

এই ইতিহাস আমি লিখে চলেছি আমি  চলন্তিকা
তোমার বুকের মাঝে দাগ টানা সমাজের বিভাজন ভুলতে চেয়ে।
তোমার মাখন রঙের স্বরথলিতে
আজ লেগে যে রক্ত ,,আমিও ভিখিরী বড়,
তোমার ফুরিয়ে যাওয়া দিন ,প্রতিদিন।
আমাকে কাছে টেনে নিও
কারখানার শেষ ছুটিতে মেশিন থেকে বাঁচতে চাওয়া মানুষ
আমি এগিয়ে যাবো উঁচু নিচু উপত্যকা ছুঁয়ে তোমার গভীরে
একদিকে রুজিরুটি বেঁচে থাকা
অন্য প্রান্তে তোমায় ছুঁয়ে একা থাকা কোনো বাঁচা।

আমাকে কাছে টেনে নিও
শহরের পথ থেকে হেঁটে যাওয়া সবুজ শিশিরে পা।
যেখানে সভ্যতার সমাপ্তিতে প্রান্তিক কোনো দরজা
বাইরে পাতা চাওয়া নিলিপ্ততা।
আমি থেকে যাবো তোমার নিজস্ব কল্পনার বাড়িতে
তোমার মত ,,হয়তো কোনো মানুষ। 

প্রহেলিকা

প্রহেলিকা
............... ঋষি
===============================================
সবকিছু থেকে যাবে
এই জন্মসূত্রে থাকা জীবনের প্রাপ্তি নির্দেশিকা।
তবু সময় তুমি রেখে যাবে
স্মৃতির অন্তরে গভীরে ফিসফিস করে বলা।
প্রহেলিকা তুমি গভীর ন্যুনতম মুহূর্তের কান্না
গড়িয়ে নামা নোনতা জল।

এই লেখা
এই ইজিচেয়ার ,এই কলম ,এই কাগজ , এই স্বগোত্রীয় পরিচয়।
সবটাই ফাঁকি
কিংশুক কোনো বিকেলের আলোয়।
নিভে যাবে সব একমুহূর্তে
সময়ের সামাজিক ভিতে নিজের ক্ষতের উপর শুয়ে থাকা হৃদপিন্ড।
আরো গভীরে যাবে প্রহেলিকা
সবটাই জানা।
ফিরে এসেও ফিরে যাওয়া যায় না
আর যাওয়ার আগে হাজারো উত্তরে মানুষ অচেনা ।

সবকিছু থেকে যাবে
এই জন্মের ইতিহাস হয়তো কোনো মানুষরুপি পরিচয়।
তাবু কিছু ছবি রয়ে যাবে
মনের আনাচে কানাচে জমে থাকা দীর্ঘশ্বাস।
ফিরে আসা প্রসাদী ফুল ,,চুপচাপ
খালি হাতে মানুষ তো ফিরে যাবে।    

.একটা কবিতা আমি তুমি

আমার কবিতা পেলেই আমি তুমি হয়ে যাই তোমার মতো আটপৌরে শাড়ি পরি, হাতে কলম কোমড়ে আঁচলটা গুঁজে তোমার মতো উনুনে আঁচ দি  হাঁড়িতে পরিমাণ মত শব্দ, জল...