Monday, November 11, 2024

তোমার শব্দদের শুভেচ্ছা

তোমার প্রতি অব্যক্তকে শুভেচ্ছা 

শুভেচ্ছা তোমার কেটে যাওয়া কথপোকথনের রেশটুকুকে

শুভেচ্ছা আমার আলো -কাদা ঘাঁটাঘাটি করে

ভুল পথে হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এসে দেখা

অন্য পাথুরে তুমিটাকে

করিডোরের একপাশে পরে থাকা স্মৃতিটুকুকে শুভেচ্ছা।

.

এভাবেই ঢেউখেলা ধানক্ষেতে তুমি শহর ছড়াও

এভাবেই অনবদ্য কবিতায় তুমি মৃত্যু আঁকো

এভাবেই আমি অবাক হই প্রতিবারে, হই স্তব্ধ 

তোমার অপার্থিব মুখে ফুটে ওঠে আমার যোগ্যতা,

আহত পাখির মতো আমি ডানা ঝাপটাই

তবূও বলতে ভুলি না অনন্ত শুভেচ্ছা এভাবে তোমার ভালো থাকাকে ।

.

ইদানীং  মনে হয় বহুদূরে আছি

কিছু মনে থাকে না আমার এই জীবনের ভুমিকায়

তবু থেকে যায় তোমার বেঁকে ওঠা ভুরুতে হঠাৎ বিরক্তি

তোমার নিঃশ্বাসে অকৃত্রিম  মৌরির নেশা

আর অনবদ্য কবিতার শব্দে এক অন্ধ বিপন্নতা।

জানি সময় নেই,

একদম সময় নেই একটা না ফুরোনো গল্পের কাছে

চরিত্ররা লণ্ঠনে মধু ঢেলে বেড়িয়ে পরে অবেলায়

আমদানি রপ্তানি হিসেবের শেষে

তোমার অসমাপ্ত গানে আমি অসম্পুর্ণ থেকে যাই,

তবু বলতে ভুলি না

শুভেচ্ছা তোমার বেঁহুশ শব্দগুচ্ছকে ।

.


তোমার শব্দদের শুভেচ্ছা

... ঋষি

Thursday, November 7, 2024

গর্ভপাত


সময়ের সমান্তরালে চলতে চলতে
সারা শহর জুড়ে ইদানীং  পচা গলা দুর্গন্ধ নাকে লেগে
চেনা আয়নায় পরিমাণ মতো দিনযাপনের পর
সারা শহর ঘুড়ে দেখি কিলবিলে হাজারো জোঁক
রক্ত শুষছে মানুষের
এই শহর জানে কি ভাবে মানুষ ভোলাতে হয়। 
.
আশ্বিন ফুরিয়ে গেলে শহর আর ইতরের মাঝে  তফাৎহীন, দূরত্বহীন এক ভাগাড়ে নিঃশ্বাস 
এ যেন নিয়তি ও অভিশাপ,
ভেঙে পড়ে মেয়েটার অভিমান
আলতা হাতে উঠে দাঁড়ায় ফটোফ্রেমে তার পায়ের ছাপ
এই শহরই পারে একটা জ্যান্ত শরীরকে গিলে খেতে।
.
ইদানীং মনে হয় সমস্ত মায়ের কোল খালি হোক
তবে আর ভুলবে না কেউ,
সেই ধর্ষিত মেয়েটার চিৎকারে শ্মশান হোক শহর
তবে আর মনভোলাতে উৎসবে মাতবে না কেউ
এতগুলো জাদুবীজ, আইন আদালত, মিডিয়া 
হিজিবিজি সাজানো সময়
তবে আর মিথ্যা জাস্টিস খুঁজবে না কেউ।
শুধু অসংযত অন্ধকার, তারপরও বারবার
মিথ্যে তবে নদীর গর্ভপাতে শ্মশানের হাহাকার
অন্ধকার পাহাড়মুখে সে চোখ বিলুপ্ত সামিয়ানা
যাই হোক, সবটুকুই মিথ্যা তবে
মিথ্যা এক অসুখের অভিনয়ে থমকানো শহর  জাতিশ্বর বীজ
কিছু বদলায় না
পুরোনো আতরের মতো মিশে রয়েছে অবশেষ
সব্বাই ভুলছেন কি করে ?  ছি....।
.
গর্ভপাত
... ঋষি 

Wednesday, November 6, 2024

ওদের কথা

পরিচ্ছন্ন আকাশ নিয়ে গোধূলি ফুরোলো আজ 
আন্তরিক শুভেচ্ছা নিয়ে সময়টুকু কেটে গেলো
আমি ওদেরকে জানি , দূর থেকে জানি
দূর থেকে জানা ভালো, ডানাভাঙা পাখির মতন,
উড়তে চাওয়ার আগে পাশাপাশি হাঁটাটাই স্বাভাবিক 
তাই আকাশের রঙে আমি একমনে সাহস মেশাই
সাহস মিশিয়ে দিই এই শহরের নির্ঘুম রাতের মিছিলে।
..
অথচ আমার সাথে তোমারও যে কি ভীষণ মিল
তোমারও গোপনে লুকোনো অনবদ্য চুপকথা
আর আমার চুপকথায় লেখা সময়ের রুপকথা, 
আমার বাড়ির জানলা থেকে দেখা  নিঃঝুম গাছগুলো ফাঁকা পাতা, দিনলিপি আর 
রাস্তার হাজারো বাঁক
তুমিও পথিক জানি, অতএব, ঐ কথা থাক।
.
শেষ ট্রেন চলে গেছে, কোথাও আর যাত্রী নেই
ছেঁড়া মাদুরের পাশে ছিঁড়ে যাওয়া কাঁথা
প্রাচীন শৈশবগাঁথা,
এর পর একাধিক মালগাড়ি যায় আসে
তাই বলে কথার অভাবে, কথারা ফুরোয় না
অথচ ট্রেনলাইনের সিম্ফনিতে শোনা যায়
ক্রমাগত ওদের কথা। 
.
দৃশ্যরা ঝরে যায়, ঝরে যায় সময়
আঙুলেরা ছুঁয়ে যায় সময়ের চামড়ায় স্মৃতিঘোর
আমি ওদের চিনি,ভীষন কাছ থেকে চিনি
কাছ থেকে চেনা ভালো,সমুদ্রের কচ্ছপের মতন
তাই একমনে তারা সময় সমুদ্রে  পাশাপাশি হাঁটে
রাতের আকাশে ক্রমাগত বাঁকা চাঁদ হাসে
ওদের যে প্রবেশ নিষেধ, জানে সমুদ্র নীল,
.
জানো তো ওদের সাথে আমাদেরও যে ভীষণ মিল...
.
ওদের কথা
.. ঋষি 

Tuesday, November 5, 2024

ওরা কবিতা হতে চেয়েছিল

বাটিতে হালকা কিছু সুখস্মৃতি আর কিছুক্ষনের ঝগড়া চিবিয়ে ওরা বারান্দায় বসে
হাতে ওদের উষ্ণ পুরোনো সেই দিনের কথা  
নিষ্প্রভ চোখে তাকাচ্ছে ওরা সময়ের নিচের ব্যাস্ত রাস্তার দিকে
 পিঁপড়ের মতো জীবন 
অথচ স্বপ্নরা মরেও মরে না 
ওরা দুজনেই কবিতা হতে চেয়েছিল 
কিন্তু কলম ওদের জীবিত করতে পারেনি।
.
বক্তৃতার মঞ্চের নীচে প্যাচপ্যাচে আত্মসম্মানের উপর দাঁড়িয়ে আছে ওরা 
ঠেলাঠেলি করছে খাবারের প্যাকেটের লাইনে
হাততালি শব্দ , মাইকে জয়ধ্বনিরা   হাই তুলছে
নিলজ্জ জীবন 
ওরাও  সকলেই চেয়েছিল কবিতা হতে
চেয়েছিল কোনো অজেয় কবির কলমে সত্যির পতাকা লিখতে 
কিন্তু পাঠক ওদের অগ্রাহ্য করে পাতা উল্টে চলে গিয়েছে।
.
পানশালার আনাচে কানাচে টেবিলেটেবিলে গেলাসের সামনে  ঘোলাটে মন 
ওরা কেউ হাসছে, কেউ কাঁদছে, কেউ বা  খিস্তি দিচ্ছে অদৃশ্য সময়কে 
ওদের অস্পষ্ট চেতনা বুঝবার চেষ্টা করছে কিংবা  ভোলবার চেষ্টা করছে 
নিজেকে আরো অচেতন করার চেষ্টা করছে 
অকৃতজ্ঞ জীবন ,
ওরা আমায় বলেছিল, ওরাও কবিতা হতে চায়।
কিন্তু একলা মেঘ,শহরের কলরবের ভিড়ে ওরা  হারিয়ে গেলো শেষমেশ।
.
আসলে সকলেই কবিতা হতে চায় 
সকলেই কবিতার মতো সুন্দর একটা জীবন চায় 
সকলেই কবিতার ছন্দে নিজেকে দেখতে চায় 
কিন্তু কবিতা বড় অশান্ত নিজে 
তার সংসারে চিরকাল অভাব ,খিদে আর যন্ত্রনা 
সেখানে আধপেটা খাওয়া  এই মানুষগুলো সব প্রেতাত্মা 
এ যেন ঈশ্বরের অভিশাপ ওরা কবিতা হতে পারবে না কোনদিন । 
.
ওরা কবিতা হতে চেয়েছিল 
ঋষি

Saturday, November 2, 2024

সবার ভালো হোক

সবার ভালো হোক
এর ওর তার সকলের 
আমার ওপর যাদের রাগ, যাদের হা  হুতোশের জ্বালা সব্বার ভালো হোক
একটা বয়সের পর এমন একটা ভাব আসে সকলের 
একটা সময়ের পর পৃথিবীর পবিত্রতা নিয়ে মাথা ব্যাথা হয় না 
বরং দিন গুজরানে দিনগুলো কেটে যাক এমন মনে হয় । 
.
তাই ইদানিং মনে হয় 
সবার ভালো হোক 
সেই মেয়েটার ভালো হোক যে প্রথম আমাকে বলেছিল ভালোবাসি 
কিন্তু ছেড়ে চলে গেছিলাম হঠাৎ কারণ ছাড়া, 
সেই টাকমাথা লোকটার  ভালো হোক যে আমাকে চাকরীর ইন্টাভিউতে বলেছিল 
আমি নাকি অতি সাধারণ ,আমার চাকরী হবে না 
সেই ছেলেটার ভালো হোক যে অফিসটাইমের বাস থেকে আমাকে ঠেলে ফেলেছিল 
সেই মহিলার ভালো হোক যে বলেছিল বাবা এই দুনিয়ায় আমরা সকলেই ক্রীতদাস
সেই বৃদ্ধের ভালো হোক যে শান্তিনিকেতনে আজও একতারা বাজিয়ে গান করে 
ভালো হোক সেই মাতালের ,সেই রিক্সাওয়ালার ,সেই রাস্তার 
ভালো হোক তোমার ,তোমাদের ,সারা দেশের ।  
,
কিন্তু যা কিছু নিভৃত
সেসব আমার থাক ,সেখানে আমি একলা থাকি 
কিন্তু যা কিছু যন্ত্রণার 
সে সব সময়ের  থাক ,সেখানে আমি একলা বাঁচি 
কিন্তু যা কিছু মুহূর্তের 
সে সব হৃদয়ে থাকে ,সেখানে আমি একলা কাঁদি। 
মনোরম দূরত্বের আকুলতা আরও গভীর হোক 
গভীর হোক আমার নিভৃত সমাধি নিজের গোপনে 
এই শহরের ব্যাকুলতার নতুন ঠিকানা হোক এডজাস্টমেন্ট 
এই হৃদয়ের নতুন ঘর হোক সাজানোগোছানো সফিস্টিকেট 
তবু মুখে হাসি থাকুক ,থাকুক মিথ্যে সফলতা 
সবার ভালো হোক 
নচেৎ দু'টি ঝরাপাতার দেখা যাবে না জীবনে 
হাঁটা যাবে না জীবনের অনুর্বর তোমার উপস্থিতিতে। 
.
সবার ভালো হোক 
... ঋষি

তোমার শব্দদের শুভেচ্ছা

তোমার প্রতি অব্যক্তকে শুভেচ্ছা  শুভেচ্ছা তোমার কেটে যাওয়া কথপোকথনের রেশটুকুকে শুভেচ্ছা আমার আলো -কাদা ঘাঁটাঘাটি করে ভুল পথে হাঁটাহাঁটি করে ফ...