Tuesday, December 31, 2024

বছর শেষের স্যিগনেচার


 বছর শেষের কাব্য লিখতে বসি 

কি পেয়েছি ,কি চেয়েছি ,কোথায় ভুল ,কোনটা ঠিক 

সব কেমন গুলিয়ে যায় 

এক বছর শেষের স্যিগনেচারের কবিতায় ,

যে শহরে মানুষ চুরি হয় ,যে শহরের চুরি হয় বিশ্বাস 

সেই শহরের ঈশ্বর কখনো ভালোবাসা লেখে নি 

অনবরত লিখেছে স্বার্থ আর অপঘাত

সে শহরে আবার  শুরু সময় ,দিন আর তারিখ । 

.

তবুও হ্যাপি নিউ ইয়ার 

একটা নতুন শুরুর কবিতায় মানুষের যাপন 

যেখানে মোটামুটি প্রতিদিন নিয়ম করে ২ ঘন্টা কাটে  অফিসের জ্যামে

৮ থেকে ৯ ঘন্টা কেটে যায় এক পুরোনো জানলার ব্যস্ত শহরে

শুধুমাত্র খিদের অভিশাপে ,

তারপর ঘন্টা দুয়েক নিয়মিত মোবাইল স্ক্রলে জীবন 

তারপর সংসার কিংবা ভালোবাসা কিংবা সন্তান 

বলুন না কতটুকু বাঁচে  ?

.

এইতো হলো শুরুর গল্প 

এবার মোটামুটি বছরের মাঝে পকেট বুঝে দী-পু-দা

কিংবা রাতের নেশায় সিগারেটের ধোঁয়া আর  কয়েক পেগ 

যেখানে নিজের প্রেমিকা যেন করিনাকাপুর,

ল্যাস্টভেগাস থেকে গোয়া ঘুরে আসা স্বপ্নে ,  

একটা ঘোর 

আসলে এই শহরই পারে মানুষকে ভুলিয়ে রাখতে

কিংবা মানুষের বাঁচার স্বপ্ন আগুনে পোড়াতে ।

.

কি নেই এ শহরে ?

চুরি ,রাহাজানি ,বেশ্যা থেকে হাজারো ব্যালকুনি 

কি নেই বলুন তো 

মেরে দেশ মহান ,স্লোগান ,নিয়মিত  ধর্ষণ 

প্ল্যাটফর্মে যাত্রী ,রবীন্দ্রসদনে হাজারো সাহিত্যের ভীড় 

লোকাল বাস -মিনিবাস ,গলায় দড়ি দেওয়া প্রেমিক কিংবা সংসারী

আছেন রবীন্দ্রনাথ ,শঙ্খ ঘোষ ,সুনীল গাঙ্গুলি কিংবা গান্ধীজি 

কিন্তু সত্যি কই ?

.

শিক্ষা বিক্রি ,স্বাস্থ্য বিক্রি ,নারী শরীর বিক্রি ,সময় বিক্রি 

সব বিক্রি আছে এ শহরে 

ভালোবাসা থেকে কন্ডোম সবটাই কেমন ভীষণ সস্তা। 

দরদাম করুন ,মিথ্যা বলুন , ধর্মের গান গান 

আপনি সেরা ,আপনি হিরো ,আপনি ধার্মিক ।

মশাই এই শহরই পারে মুখোশে মানুষ গড়তে

জানেন তো ঈশ্বর এখানে ভীষণ একলা 

আর একলা এই নতুম শুরুর কাব্য।  

.

বছর শেষের স্যিগনেচার

.... ঋষি 



 

   


Monday, December 30, 2024

তুম ইতনা জো মুসকুরা রেহে হো

তার প্রিয় ঋতু গ্রীষ্ম, তবু এই শীত
তার প্রিয় রঙ অস্তরাগ,তবু এই ডিসেম্বর 
তার প্রিয় ডাক অধিকার,তবুও এই ইন্তেজার 
তার  প্রিয় গল্প বিচ্ছেদ,তবুও ঘৃণা ভালোবাসা
তার প্রিয় স্বপ্ন একলা,তবুও তো সাথে থাকা
তার প্রিয় অসুখ আমি, তবুও তো নিয়ে বাঁচা। 
.
এই অবধি ভাবতে ভাবতেই পেরিয়ে ফেলা আয়ু
এক উটকো ডিসেম্বর ফুরিয়ে আসে
শহরতলি থেকে তীব্র চেষ্টায় শীতের হাওয়ায় আনন্দ
এক নতুন বছরের আশায় বাঁচে,
প্রতিদিন ক্লান্তিরা চোখের পাতায় মোমবাতি জ্বালে 
আলো আসে, আলো যায়
শিখাটুকু কাঁপতে থাকে,
যেমন আসন্ন শীতের সুখে অন্ধকার মানুষের উৎসব। 
.
একটা অবাধ্য শীতের সাথে তোর কী সম্পর্ক ? 
একটা মুসাফির জীবনের সাথে তার কিসের পরিচয়? 
এক বুনো ঘোড়া যেন দৌড়চ্ছে 
আর এভাবে একটা গল্প ফুরোচ্ছে
আর খুব গভীরে জগজিৎজ্বী গাইছেন...
    " তুম ইতনা জো মুসকুরা রেহে হো
     ক্যা গ্যাম হ্যা জিসকো ছুপা রেহে হো ",
আর আমি অকপট মুখস্থ করছি এক ডিসেম্বরে 
তার প্রিয় গল্প, বিচ্ছেদ
তার প্রিয় সুখ,অভিমান
আর তার প্রিয় ক্ষত নিজেকে। 
.
তুম ইতনা জো মুসকুরা রেহে হো
.. ঋষি 

Tuesday, December 24, 2024

কবুল হ্যায়

চিৎকার করে বলেছি আমি বারংবার  ভালোবাসি
প্রকাশ্য চুমুর মতো একদিন বিকেলের রাজপথে 
প্রমান করেছিলে তুমি ভালোবাসি ,
এতো চিৎকার থেকে বুলেটের গরম সিসে ছিটকে 
মানুষ আবদ্ধ মানুষে,
আমি বসে আছি তোমার পায়ের কাছে 
তুমি বোঝোনি তফাতে বলেছিলাম ভালোবাসি। 
.
উদ্ধত যুবকের কলারে লিপস্টিকের দাগ ছন্নছাড়া 
প্রমাণ ভালোবাসা, 
বেপরোয়া যুবতীর শীর্ষসুখে সম্মোহন
আজীবন এক চরম মুগ্ধতা প্রমাণ ভালোবাসা,
ভালোবাসা অবিশ্বাস্য মন্ত্রে স্তব্ধ করে দেবে জানি 
জানি আমার মতো ব্যর্থ কবির সততার প্রামাণ্যদলিল
মিথ্যে হয়ে যাবে একদিন
জানি তুমি জিতবেই, ভালোবাসা জিতবে জানি।
.
এ কানা শহরে কোনও এক অসুখের সন্ধ্যায়
আমাকে তুমি ভালোবেসেছ বলে দু'একটা কাগজফুল
আমি গুছিয়ে রাখছি খুব যত্ন করে,
সময়ের বালাপোষে একটা মনখারাপের শীত থেকে
গুছিয়ে রাখছি কিছু অগোছালো স্মৃতি ।
জানিই তো বুকের ভেতর কিছুই তো আর রাখা নেই
অনেকটা পিছিয়ে গিয়ে শুরু করে হেরেছি বারংবার
তাই আর ভয় নয় বরং জড়িয়ে ধরেছি জীবন।
"কবুল হ্যায় " বলে বহুদিন একলা হেঁটেছি আমি
বহুদিন আজ নিজের ঠিকানায় শুধু সময়ে পরবাস
হাতের তালুতে ক্রমাগত বাড়তে থাকা রেখা,
জানি তবুও থেকে গেছি কারণ
তুমি শিখিয়েছো আমায় ভালোবেসে নষ্ট হওয়া যায় 
কিন্তু নষ্ট করা যায় না। 
.
কবুল হ্যায়
ঋষি 

Thursday, December 12, 2024

খাজুরাহের চিঠি

খাজুরাহোতে একটা চিঠি পাঠাবার কথা ছিল
পাঠায় নি, মনে হয়েছে অশ্লীল
কে পাঠাবে?
পাঠাবে অন্ধকার নিস্তব্ধ রাত, শীত কুড়োনো বিছানা 
শরীরে জমে থাকা লুকোনো ব্যাধি 
আর শহরের মন। 

এ শহরে বাজারে বড়ো চড়া দাম অশ্লীল শব্দটার
ব্ল্যাকমার্কেটে পাওয়া যায়, 
শ্লীল, অশ্লীলের মাঝে এক টুকরো পাঁচিল আছে
মানুষ জানে সেটা, সুযোগ মতো দাঁড়ায় সেখানে,
অথচ মানুষের আড়ালে মানুষই সভ্যতার ভীত গড়ে 
খাজুরাহ গড়ে কেউ কেউ শরীরের বিছানায় 
জানি না এই প্রেম-টেম অযৌক্তিক কিনা 
তবে মৃত্যু অবধি শরীর তো থেকে যায় তাই না। 
.
খাজুরাহোতে একটা চিঠি  পাঠাবার কথা ছিল
কে লিখবে ?  শ্লীল না অশ্লীল?  কে সে? 
আমি বলি মানুষের শরীর।
শীত এসেছে বলে মানুষ আগেভাগেই মাফলার গলায়
তবে মানুষের বুকে  সুখে লুকোনো অন্য শরীরের ওম,
কমলালেবুর দাম নিয়ে,শ্লীল অশ্লীল নিয়ে দরাদরি
এ যেন জ্বলন্ত অম্বল উদগাররূপে জ্বালাপোড়া শরীর,
এ বোধহয় শরীরের স্পর্ধা
এক অশ্লীল সময়ের কবিতায় দ্রোহ
খাজুরাহ। 
অথচ আমার বর্তমানের বিশ্বাসবিষে শরীর সত্যি
তুমি শিখিয়েছো শরীর একটা শিল্প, একটা কবিতা
জানি তোমার বুকের খাজুরাহ এক ডাকবাক্স
এতদিন সেখানে চিঠি পাঠায় নি, মনে হয়েছে অশ্লীল
কিন্তু আজ লিখছি তোমার খাজুরাহের ঠিকানায়
.
শোনো আমি শীত পাঠাচ্ছি
তুমি বুক খুলে দাও...
..
খাজুরাহের চিঠি
.. ঋষি


Monday, December 9, 2024

পায়ের ছাপ

দৃশ্যের চৌকাঠ থেকে অদৃশ্য ব্ল্যাকহোল
কয়েকশো বালিঘড়িতে জীবন
জীবনের লুকিং গ্লাসে অনবরত সময়ের বায়োপসি 
একটা রুপকথা যেন এক তুমুল অতীত
জানি না কেন ঈশারায় ডাকে পিছনে 
বাঁচতে চায় না বাঁচাতে সেটাই কিছুতেই বুঝি না।
.
বর্তমান যেন এক মিরাকল কনসার্ট 
নস্টালজিয়া নেমে আসে জীবনের আলপথ বেয়ে
অসংখ্য অজানারা মাথার মই বেয়ে বেহায়া যখন
তবুও বুঝেও না বোঝা,জেনেও না মানা,
তবুও দু-চোখে  এক স্বপ্ন মাখা ভবিষ্যতের জন্ম
সত্যিতো হাতের ছাপ কখনও অধিকার বিস্তার করে না
তোমার অধিকার খোঁজে সময় থেকে যযন্ত্রনা।  
.
আমাদের পূর্বজন্ম বলে একটা অধিকার থাকে
কিন্তু পরজন্মে অধিকার শব্দটা অভিধানের বাইরে
আমাদেরর অগণিত স্মৃতির পিক্সেল থেকে
আলো, রঙ, মায়া মিলেমিশে একটা ভুলভুলাইয়া।
ফাইবার অপটিক্স সি আর ও ব্রেডবোর্ড হয়ে মনিটর
রক্ত মাংস ফুরিয়ে এখন রোবটিক্স আমরা,
আমাদের সম্পর্করা যেন প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা জীবন
যা ধুলো,মাটি,মাকড়সার জাল থেকে বাঁচানো 
কিন্তু সত্যিটা লুকোনো
ঠকছি আমরা
ঠকাচ্ছি আমরা
অথচ বারংবার বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন পায়ের ছাপ
ক্রমশ আমরা মুছে ফেলছি
       হয়তো মুছতে চাইছি.... 
.
পায়ের ছাপ
... ঋষি 
.





Friday, December 6, 2024

আ্যলজাইমার


আ্যলজাইমার এক অসুখের নাম
শরীরে বাসা বাঁধা অসুরেরা চাইছে অন্তিম ছোঁবোল
সুপ্ত-গুপ্ত ইচ্ছার প্রকাশ এযাবৎ কবিতায় লেখা,
তোমার কবিতার অভ্যেসেরা ধরন বদলাচ্ছে
তাই আমি পিছিয়ে চলেছি ক্রমশ
ক্রমাগত সম্পর্কের রক্ত শুষছি
জানি তুমি নেই এ শহরে
তবু আমি ভ্যামপায়ার  দূর্গ সামলাচ্ছি। 
.
কবির কবিতায় প্রেম পাহাড়ি নদী উচ্ছলতা
আত্মকথনে সময়ের চারফর্মা এ শহরের দিনলিপি
প্রেম, পরকীয়া বা স্বকীয়া  ছোঁয়াচে নয়
শুধু সম্পর্ক শব্দটা কবিতাগত ছন্দমিলে অন্তমিল। 
সিলেবাস শেষে এক অন্তিম মুহুর্তে থমকে দাঁড়ানো 
দু-চার পেগ ধোঁয়া আর কোন পাণ্ডুলিপি সিরিজ
কবিতায় যেন  ত্রিকালদর্শন খোঁজা। 
.
কবিতার শেষ চরণে কিছু নৈর্বেদ্য, জবা ফুল 
আর হাইপারথট,টেনসন, মুক্তি
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি এই ফটোফ্রেম
স্মৃতির বায়োপিকে চৌষট্টিকলা আর কালপুরুষ 
সময়ের কবিতার পাতায় প্রেম আর আমি। 
তোমাকে মিস করাটা অভ্যেস নয় আমার
আসলে একটা রোগ  আ্যলজাইমার,
বসন্ত বাহার ও রাগ এর মূর্চ্ছনায় থমকে যাব জানি
তবু তোমার নুপুরের শব্দটুকু আমার কবিতারা পাবে না
পাবে না শীতের রৌদ্রের আমজে
শুধু সেমিকোলন আর কলমের একটু আগে
আমি লিখছি
জানি তুমি পড়বে না। 
.
আ্যলজাইমার
..ঋষি 


Tuesday, December 3, 2024

শূন্য

শূন্য' একটা নিউমরিক শুরু অথচ শক্তিশালী ভাবনা
আগে থাকলে দাম নেই আর পিছনে থাকলে নতুন শুরু
সম্পর্কের জুড়ে থাকায় যেমন শূন্য' আছে
সম্পর্কের দূরত্বতে সেই শূন্যই' থেকে যায়। 
আমরা আছি, আমরা থাকবো 
এটা একটা অসীম, একটা শূন্য'
আবার আমরা আছি শুধুই থাকতে হবে বলে
সেটাও শূন্য',একটা অস্থিরতা। 
.
ইদানীং এই শূন্যর খেলায় শহরটা দৌড়চ্ছে
কেউ শূন্য সময়ের  মধ্যে হেঁটে যায়
আবার ক্লান্ত হবে বলে,
কেউ আবার এই শূন্য সময়ে দাঁড়িয়ে টাকার পিছনে শূন্য বাড়ায়
কেউবা অকাল ব্যারিকেডে এপারে দাঁড়িয়ে খোঁজে
দূরে কোন শূন্য স্বপ্নের জাস্টিস
কেউ পিছু ফিরে অতীতপ্রিয়তায় বোঝে শূন্য।
.
তাই শূন্য ভীষন জরুরী এই সময়
কারণ আমরা শূন্য সাঁকোর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে 
আয়েসি বিপ্লবের মতো জীবনটাকে ভাবি।
শূন্য হলো ভীষণ সেন্সিটিভ 
সে আসলে প্রতিটা মানুষের ভিতর মুক্তি
শূন্যর কোলে কোন হিংসা,রাজনীতি,ঠকানো
ছোট, বড়, ধর্ম,,ভালোবাসা,প্রেম, মুক্তি
না কিছু নেই
কারণ শূন্যর পরে যে কিছু পরে থাকে না। 
তাই শূন্য একটা একলা গন্তব্যের নাম
শূন্য মানে মুক্তি
শূন্য একটা অনুভুতি,
শূন্যর স্থপতি হলো সময়ের নির্লিপ্ততা
যা মানুষকে আজন্ম পোড়ায়
তাই  শূন্যকে মেনে নিও
        মেনে নিতে হয়।
.
শূন্য
..ঋষি 

তুমি শব্দটা

কিছু মুহুর্তের প্রহসন বার্তায় স্বভাববিরুদ্ধ নীরবতা আখরোট ঠোঁটে গুছিয়ে রাখা ক্ষতের কবিতারা ইদানীং লিপস্টিকে গুছিয়ে হাসছে, আমার স্বভাববিরুদ্ধ ...