সতী (২)
.. ঋষি
মানুষের যে বুকে চলন্তিকা বাস করে
সে বুকে সতী শব্দটা দরজার বাইরে দাঁড়ানো সমাজ
সেখানে আগুনে পুড়তে থাকা মধ্যরাতের কলকাতায়
কুকুরগুলো ফুটপাতে হঠাৎ চিৎকার করে
ঠিক তখন কোনো ঘুম ভাঙা শিশু মাকে আঁকড়ে ধরে
আর স্বপ্ন দেখে ফুটপাতে শুয়ে থাকা মানুষ বাঁচার অধিকারের।
.
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে চলন্তিকা কে ?
জানলার ফাঁক থেকে উঁকি মারা একলা চাঁদ চলন্তিকা হতে পারে
চলন্তিকা হতেই পারে কর্পোরেশনের নলে চান করা বস্তির আর দশটা মেয়ের মতো মেয়েটা
কিংবা সেই মেয়েটা যে ভীষন কালো বলে তার কোন মানুষ নেই
কিংবা কোন স্বাধীনচেতা ফেস্টুন হাতে নিয়ে মিছিলে হাঁটা সেই মেয়েটা
অথবা ধরুন বিবাহিত কিংবা ডিভোর্সি সেই মেয়েটা
যে বাঁচতে চায়
সুতরাং প্রতিটা প্রতিবাদ ,প্রতিটা সময়ের নারী
আমার প্রেমিকা
সেই তো চলন্তিকা।
.
কিন্তু আমি জানি যে সব মানুষের বুকে চলন্তিকা বাস করে
তারা প্রত্যেকেই প্রেমিক কিংবা কবি,
সামাজিক নিয়ম মোড়া হিসেবের বাইরে সেই মানুষগুলো
সতী শব্দের আড়ালে কখনোই যোনি পর্দা খোঁজে না
খোঁজে কুন্তী কিংবা দ্রোপদীর কষ্ট
পিতামহ ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা।
অনন্ত যাত্রা থেকে যে ধর্ম যুধিষ্ঠিরের কুকুর সেজে সেদিন স্বর্গের দরজায়
আমি সেই কুকুরের ধর্ম মেনে বিশ্বাস করি
সতী কিংবা অসতী সনদগুলো শুধু সাদা পাতায় কতগুলো সামাজিক নির্বাণ
এর পিছনে লোকানো গল্পগুলো আসলে
এক একজন চলন্তিকা।
No comments:
Post a Comment