সবাই জানে না
কিন্তু প্রতিটা রেপ কেসে ঠিক এমনটাই হয়
ছেঁড়া খোঁড়া পোশাকের মেয়েটা বসেছিল হাসপাতালের করিডোরে
আঁচল মুখে জড়িয়ে রেখেছিল, যেন ওই এক কবচ দিয়ে
মুখটা লুকিয়ে রাখতে পারবে সে ,
কাউন্টারের ভিতর থেকে দিদিমুনি পেশাদারি গলায় ডেকে ওঠে
রেপ কেস কে আছে, ভেতরে যান, টেস্ট হবে।
.
এই মুহূর্তে মেয়েটা কাঠগড়ায়
দোমড়ানো ব্যবহৃত সভ্যতার আবর্জনার মতো দাঁড়িয়ে
সামনে কাছারিতে অসংখ্য ফিসফিস ,অসংখ্য কল্পনা ,অসংখ্য নিশপিশ করা চোখ
মেয়েটার সারা শরীর বেয়ে নামছে কৌতূহল আর চোখের অজগর।
উকিল সামনে ঝুঁকে পরেন, ওরা কজন ছিল ?
'ঢুকিয়েছিল বলছেন? কতটা ঢুকিয়েছিল?
বলুন?
নাহলে মহামান্য আদালত বুঝবেন কি করে?'
উত্তরের অপেক্ষায় জজসাহেব ,মেয়েটা কাঁদছে যে।
.
এই মুহূর্তের বিশেষ খবর
ঘূর্ণিবাদ রেপ কেসে তিনজন আসামী উপযুক্ত প্রমানের অপেক্ষায় মুক্তি
মেয়েটা কোর্ট থেকে বাড়ি ফিরছে সভ্যতার প্রশস্ত ঝকমকে রাস্তা দিয়ে ,
মেয়েটা সামনে ল্যাম্পপোস্টে তাকালো
একটা রঙিন ছিন্নভিন্ন পুরনো ঘুড়ির আটকে আছে বৈদ্যুতিক তারে।
মেয়েটা এখন সিলিংফ্যান থেকে ঝুলছে
পাড়ার অনন্তবাবু বলেন, বড় শান্ত ছিল হে মেয়েটি
পাড়ার মুদির দোকানে শ্যামল কাকা বলেন আহারে জীবনটা তো পড়েই ছিল
পথ চলতি অনেকে বাড়ির বাইরে পুলিশ ভ্যানে ইনস্পেক্টর কে প্রশ্ন করেন
কি হয়েছিল ?
চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিতে দিতে উত্তর দেন, ওই যা সব হচ্ছে আজকাল
কারা যেন রেপ করছে মেয়েটাকে।
.
বাড়ির বাইরে কর্পোরেশনের কাঁচের গাড়িতে মেয়েটার শরীর শোয়ানো
ওই যেমন প্রতিটা মৃতদেহ মৃত্যুর পর বডি হয়ে যায়
চোখে তুলসী পাতা ,মুখে চন্দন দিয়ে সাজানো ,সাদা কাপড়ে ঢাকা
হ্যা নিয়ম করে প্রচুর লোক জড় চারপাশে
হ্যা স্বাভাবিক ফিসফিস ,স্বাভাবিক ধূপের গন্ধ ,স্বাভাবিক চোখ ছলছল
একটা কাটা ঘুঁড়ি এসে পড়লো কাঁচের গাড়িটার উপর
মেয়েটার মা চিৎকার করে কেঁদে উঠলো
মনা আকাশের ঘুড়ি দেখতে ভালোবাসতো।
.
একটা রেপ কেস
,,,, ঋষি
No comments:
Post a Comment