Sunday, February 21, 2021

অনিন্দ্য (১)

 অনিন্দ্য (১)

.... ঋষি 


শুনুন অনিন্দ্য আর নেই

অনিন্দ্য সেই পুরুষ যাকে আমি ভালোবাসি নি 

তবে সে আমাকে ভালোবাসতো। 

.

প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিল বইমেলার মাঠে  

প্রায় চিৎকার করে আপন মনে বলে চলেছিল সুনীলের নীরা ,

আমি প্রথমে অবাক হই 

ইট ,কাঠ ,পাথরের শহরে এমন একটা কিম্ভূতাকার  মানুষ,

কিন্তু কি যেন হয় ,এগিয়ে যাই আমি 

পরিচয় হয়। 

.

পরিচয় তো এই শহরের কতজনের সাথেই হয় 

পথে ঘাটে ,দোকানে ,বাজারে ,বাসে ,ট্রামে ,একলা শ্মশানে ,

কিন্তু এই পুরুষ্ট অন্যরকম 

শুধু দেখা করতে চাইতো ,

রাস্তার পাশে কোন চায়ের দোকানে ,গড়ের মাঠের সবুজ ঘাসে 

কিংবা একলা নির্জন ট্রাম ডিপোয়। 

না না ,সেখানে কোনো স্পর্শ ছিল না 

অনিন্দ্য অদ্ভুত ভাবে চেয়ে থাকতো আমার মুখের দিকে 

অবিরত কবিতা শোনাতো 

শোনাতো দেশ ,কাল ,শহরের অনেক গল্প ,

সময় কাটতো 

কাটতো দিন 

কিন্তু কোনোদিন অনিন্দ্য ভালোবাসার কথা বলে নি আমাকে । 

.

অনিন্দ্যর চোখে একটা কষ্ট ছিল 

কষ্ট ছিল তার পিতৃমাতৃহীন একলা বাস করা শহরের

তবে সে হাসতো ,খুব হাসতো ,  

তার চোখের  ,তার না কাটা দাঁড়িতে ,তার চান না করা গায়ের গন্ধে 

কিছু একটা ছিল 

তবে বিশ্বাস করুন সেটা প্রেম নয় আমার কাছে 

বরং পবিত্রতা। 

যেদিন সকালে ট্রেনের নিচে অনিন্দ্যর মাথা কাটা শরীরটা খুঁজে পাই 

না কাঁদি নি আমি 

শুধু বুঝেছিলাম ওর ভালোবাসাটা ঈশ্বরের পায়ের ছাপ। 

আজ এতগুলো বছর পরেও অনিন্দ্য হঠাৎ হেসে ওঠে আমার ভিতরে 

তারপর বলে তোকে ঠিক নীরার মতো দেখতে  

তারপর আমার চিবুক ছুঁয়ে বলতো 

" এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ

আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি ?


No comments:

Post a Comment

পঁচিশে বৈশাখ

যে শহরে তুমি নেই সেখানে তোমার  উদ্‌যাপন  হয় সকলে ছবি সাজায় , ধুপ জ্বালে, গলায় রজনীগন্ধা হারমোনিয়াম বাজে,স্যোসাল লাইভ,মঞ্চ গানে, গাঁথায় পঁচিশ...