Sunday, May 22, 2016

২২ শে মে


২২ শে মে
................ ঋষি
=======================================================
চিনতে পারছো আমাকে
২২ শে মে  ১৯৮৮ ,গঙ্গার ধারে তখন তুমুল ভিড়।
পুলিশের গাড়ি ,আমবুলেন্স ,মানুষের উপছে  পরা আকাঙ্ক্ষা
একজন গৃহবধুর লাশ পাওয়া গেছে।
পুলিশ বলছে খুন ,বডি যাবে ময়নাতদন্তে
বাড়ির লোকজনকে পুলিশ খুঁজছে।

চিনতে পারে নি সেদিন আমাকে কেউ
আমার স্বামী খবরের কাগজে আমার ছবি দেখে চেনে নি।
আমার শ্বশুর ,শাশুড়ি ,আমার ভাসুর  কেউ চিনতে চাই নি আমায়
কারণ আমার আত্মহত্যা ছিল না ,ছিল খুন।
আমার মা ,বাবা ,ভাই , বোন হয়তো কেঁদেছে খুব
কিন্তু চিনতে চাই নি আমাকে।
গরিবের টানাটানির সংসার আবার তার উপর পুলিশ ছুঁলে  আঠারো ঘা
না চিনতে চাই নি কেউ আমাকে।
আমার লাশটা  চলে গেল পুলিশ কাস্টাডি থেকে মর্গে
তারপর কিছুদিন খবরের পাতা ,নিউস চ্যানেল।
শহরের খবরের ভিড়ে
আমি হারিয়ে গেলাম অন্য এমন হাজারো  মৃত্যুর ভিড়ে।

তারপর আজ ২২  শে মে ১৯১৬,,এতগুলো বছর পর
 স্বামী আমাকে স্বপ্নে দেখলেন ,আবার বিয়ে করা বৌকে জড়িয়ে ভয় পেলেন খুব।
তবু চিনতে চাইলেন না আমাকে
সকাল হতে ছুটে গেলেন কোনো নামী ওঝার কাছে।
অথচ  সেদিন মাঝরাতে অতর্কিত মারধোর আমার উপর
বিয়ের পন এখনো পাই নি তারা।
আমি বলতে পারি নি স্বামীকে যে তিনি দেখে আমাকে বিয়ে করেছেন
আর তার  বিয়ের আগেই আমার কোকে ছিল তার সন্তান।
কিন্তু আমার স্বামী অস্বীকার করেন তাকে ,আমি নাকি নষ্ট
তারপর আমার গলা টিপে ধরলেন আমার স্বামী।
আমার মৃত শরীরটাকে নিয়ে গিয়ে গঙ্গার জলে
যাক অমঙ্গল বিদেয় হলো।

চিনতে পারছো  আমাকে
আমি সেই গৃহবধু কোনো যুবতীর স্বপ্ন।
এটা একটা কবিতা হতে পারতো ,কিন্তু গল্প  হলো
কারণ মেয়েটা কবিতা লিখতো নিজের মনে বেঁচে থাকার ।
সংসার ,স্বামী ,সন্তান ,শ্বশুরবাড়ি আর সমাজ
আজ ২২ শে মে  ১৯১৬ এটা শুধু গল্প হয়ে রইলো। 

No comments:

Post a Comment

তুমি শব্দটা

কিছু মুহুর্তের প্রহসন বার্তায় স্বভাববিরুদ্ধ নীরবতা আখরোট ঠোঁটে গুছিয়ে রাখা ক্ষতের কবিতারা ইদানীং লিপস্টিকে গুছিয়ে হাসছে, আমার স্বভাববিরুদ্ধ ...